বাঙালি নারীর সৌন্দর্য ধারণার সঙ্গে বহুকাল ধরে মিলেমিশে আছে কপালের টিপ।
‘বহুদিন পরে তোমার সঙ্গে দেখা হলে ঝর্ণার জলের মতো
হেসে উঠবে, কিছুই না জেনে।
নীরা, আমি তোমার অমন
সুন্দর মুখে বাঁকা টিপের দিকে চেয়ে থাকবো।
কবি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় ‘নীরার জন্য কবিতার ভূমিকা’ কবিতায় এভাবেই বিশেষায়িত করেছেন টিপকে। দ্রোহের কবি কাজী নজরুলের ইসলামও ‘প্রিয় এমন রাত’-এ ‘চাঁপা ফুলের শাড়ি খয়েরি টিপ’-এর বন্দনা করেছেন।
সেই টিপ হয়েছে আক্রোশের শিকার। কপালে টিপ পরে শনিবারের নিজ কর্মস্থলের দিকে হেঁটে যাচ্ছিলেন তেজগাঁও কলেজের শিক্ষক ড. লতা সমাদ্দার। রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় লতা সমাদ্দারকে উদ্দেশ করে কটূক্তি করেন একজন পুলিশ সদস্য।
প্রতিবাদ করতে গেলে ওই পুলিশ সদস্য তাকে হত্যার চেষ্টা করেন বলেও অভিযোগ করেছেন থিয়েটার অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের প্রভাষক লতা সমাদ্দার। থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন তিনি।
জিডির সেই কপি ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। আর ঘটনাটির প্রতিবাদে কপালে টিপ পরা ছবি পোস্ট করছেন অসংখ্য নারী। প্রতিবাদের এই ধরন রাঙিয়ে তুলেছে ফেসবুককে।
তিন নারী সহকর্মীকে নিয়ে হাস্যোজ্জ্বল মুখে ছবি পোস্ট করেছেন ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের নির্বাহী প্রযোজক পিয়া রহমান।
বিদ্রূপের ভঙ্গিমায় তিনি লিখেছেন, ‘আসুন, সবাই টিপ পরি আর দলে দলে ইভটিজিংয়ের শিকার হই! ইভটিজিংকে এনজয় করা শিখি😄!’
সংবাদকর্মী খাদিজাতুল কোবরা ইভা নিজের ফেসবুকে টিপ দেয়া ছবি পোস্ট করেছেন অন্তত ২৯টি।
সঙ্গে লিখেছেন, ‘একটা রাষ্ট্র টিপ পরতে পারবে না/ এই ঘোষণা দিয়াই আমারে মাইরা ফেলতে পারবে।/ আমি লোনলি হয়া যাবো, শূন্য হয়া যাবো।’
ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে নিজের প্রোফাইলে টিপ পরা ছবি দিয়েছেন কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ফারহা তানজীম তিতিল। ক্যাপশনে লিখেছেন, ‘কপাল আমার, টিপ পরা না পরার সিদ্ধান্ত আমি নেব। আপনি নিজেকে নিয়ে মগ্ন হোন। অন্যকে নিয়ে উদ্বিগ্ন হবেন না বন্ধু।’
বাহারি রঙের টিপ পরা নয়টি ছবি পোস্ট করেছেন ট্রান্সজেন্ডার অ্যাক্টিভিস্ট ও সংবাদপাঠক তাসনুভা আনান। ক্ষোভের সুরে ক্যাপশন লিখেছেন, ‘টিপ পরবই,/ যত খুশি ততবার।/ কি করবি কর।’
সঙ্গে #justiceforlota, #stopjudging, #mybodymychoice এই হ্যাশট্যাগও যুক্ত করেছেন তাসনুভা।
টিপ নিয়ে নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছেন অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী নৃবিজ্ঞানী ও গবেষক সাদিয়া আফরিন। মা ও ছেলের টিপের ছবি পোস্ট করেছেন তিনি। নিজের কৈশোর বয়সের ঘটনা তুলে ধরে সাদিয়া লিখেছেন, “টিপ পরছোস ক্যান? এই চিন্তার সাথে আমার যোগাযোগ হয় ১৯৯৫ সালে। আমাদের ক্লাস টিচার আপা একদিন জানালেন ‘টিপ পরা হারাম’, কারণ আমাদেরই এক সহপাঠী ক্লাসে টিপ পরে এসেছিল।”
ক্লাসশিক্ষকের বলা ধর্মীয় ঘটনার উল্লেখ করে তিনি লিখেছেন, ‘ইসলামের ইতিহাসে এই তথ্যের সত্যতা যাচাই করিনি আমি। তবে একজন পছন্দের শিক্ষকের মুখে এই গল্প শুনে আমি খুব ভয় পেয়ে গেছিলাম। আমার পাশে বসা হিন্দু বন্ধুটির মনের অবস্থা কী হয়েছিল আমি জানি না। তবে ওর দিকে তাকাতে কেমন অস্বস্তি হচ্ছিল। তারপর অনেক দিন আমি টিপ পরি নাই। ভয়ে। আগুনের ভয়ে। অপবিত্রতাবোধ থেকেও....।’
তিনি আরও লেখেন, ‘বাঙালি নারীর সাজসজ্জার সাথে টিপ কখন, কীভাবে যুক্ত হয়েছিল আমার জানা নেই তবে এইটুকু জানি টিপ আমার ভালবাসা। আরও জানি মাসিকের লাল রক্তও আমার ভালবাসা (পেইনটুকু বাদে) কারণ যে মাসিকের রক্তে আমি জন্ম দেই আমার সন্তান, যে রক্ত প্রাণপূর্ণ করে তোলে ঊষর এক পৃথিবীরে সেই মাসিকের রক্ত অপবিত্র নয়, বরং আমার শক্তি....আমি তাই টিপ পরি...পরবোও।’
বাসন্তীরঙা শাড়ির সঙ্গে লাল টিপ পরা একটি ছবি নিজের প্রোফাইলে দিয়েছেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক নেত্রী আফরিন নুসরাত। সঙ্গে লিখেছেন, ‘টিপ দেখলেই নাকি কাদের জ্বলে উঠছে! তাদের জন্য...।’
তিনি আরও লেখেন, ‘রক্ষক যখন ভক্ষক হয় তখন তাদের শাস্তিটাও দৃষ্টান্তমূলক হওয়া উচিত। পুলিশ কর্মকর্তার শুধু চাকরি থেকেই বরখাস্ত নয়, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। যাতে আরো কেউ নারীর প্রতি এমন নিপিড়নের চিন্তাও করতে পারে না।’
পুলিশের বিরুদ্ধে ইভটিজিং ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ আনা লতা সমাদ্দারের সঙ্গে সংহতি জানিয়েছেন গণমাধ্যমকর্মী মৌসুমী আচার্য্য। টিপের ছবি পোস্ট করে তিনি লিখেছেন, ‘একরাশ ঘৃণা ঐ নরপশুর জন্য যে টিপ পরার অপরাধে একজন নারীকে আহত করতে, আক্রমণ করতে দুবার ভাবেনি। ক্ষমতাসীনদের প্রশ্রয়ে জনগণের আয়করের টাকায় বেতন পাওয়া, প্রজাতন্ত্রের স্বার্থে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মচারীর দুঃসাহস দেখে ঘৃণায়, লজ্জায়, অপমানে ক্ষতবিক্ষত হচ্ছি। এ লজ্জা আসলে কার??’
মৌসুমী আরও লেখেন, ‘টিপ ছাড়া তো কোনদিনই আমার মতো অনেক সাধারণ নারীর সাজ সম্পূর্ণ হয় না, তাহলে কি এরপর আমাদের পালা??’
শহীদ বুদ্ধিজীবী আলতাফ মাহমুদের কন্যা শাওন মাহমুদও টিপ পরে নিজের একটি ছবি ফেসবুকে দিয়েছেন। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘টিপ কাহাকে বলে, কত প্রকার ও কি কি?/ ছবিতে উত্তর দেয়া আছে।‘
পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে শুধু নারীরা সরব হয়েছেন, তা নয়। পুরুষেরাও এর প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। তাদের মধ্যে কিছুটা আলাদা ছিল সংগীতশিল্পী ও সমাজচিন্তক অরূপ রাহীর প্রতিবাদের ভাষা।
নিজের কপালে টিপ পরেছেন তিনি। সেই ছবি ফেসবুকে দিয়ে ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন এই শিল্পী।
অরূপ রাহী লেখেন, “না, পুরুষ হইয়া টিপ পড়লেই বুঝা যাবে না ভিন্ন লিংগের উপর ‘৯৯ ভাগের দেশে’ চলা পুরুষতান্ত্রিক পুলিশি। এই পুলিশি সমাজের ‘পুরুষরা’ খালি আত্মীকরণ করে না, নিজেরাও ভুগতে থাকে পুরুষ পারফর্ম করতে গিয়া, অবশ্য সেটা সবাই টের পায় না বা বুঝে না- কেন কীভাবে তারা পুরুষতন্ত্রে ভুগতেছে। তাদের ‘ভালোবেসে’ ঠিক করার দরকার নাই। তাদের প্রতি দরকার আক্কেল গজায়ে দেয়া আচরণ। আমার ক্ষেত্রে হইলেও। ভালোবাসা, প্রেম নিজেদের রূপান্তরের সাধনা, সমাজ রুপান্তরের সাধনা।’
বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের মার্কেটিং ম্যানেজার মাঝহারুল ইসলাম ওয়াসিম তার মেয়ের ছবি পোস্ট করেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘টিপ আমার খুব পছন্দের আত্মজা, জায়া বা জননী যার কপালেই হউক।’
#ধর্মেরনামেঅসভ্যতাবন্ধহোক হ্যাশট্যাগ যুক্ত করেছেন তিনি।
ঘটনার বিশ্লেষণ করতে গয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জিয়া রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘একটি ঘটনার ওপর প্যাটার্ন দাঁড় করানো যায় না। তবে এ ধরনের ন্যক্কারজনক ঘটনার মানসিকতা এবং সাইকোলজিক্যাল স্টেট কিন্তু পুলিশের মাঝে বিরাজ করছে।’
পুলিশ বাহিনীকে কার্যকর সেবা প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিণত করা যায়নি, এই ঘটনা তারই একটা উদাহরণ বলে মনে করছেন এই অধ্যাপক।
অপরাধবিজ্ঞানী জিয়া রহমান বলেন, ‘পুলিশ ফোর্স এটা ছিল ব্রিটিশ আমলে। কিন্তু সারা পৃথিবীতে এখন বলা হয় পুলিশের সার্ভিস। এই সার্ভিসের ফিলোসফিটা যে পুলিশের মাঝে এখনও ডেভেলপ করেনি সেটা এই ঘটনার মধ্য দিয়ে প্রমাণ হয়েছে।’
তবে সব পুলিশ সদস্যকে এক পাল্লায় ফেলতেও রাজি নন জিয়া রহমান।
তিনি বলেন, ‘যারা এ ধরনের কাজের সঙ্গে জড়িত নিশ্চিতভাবে বলা যায়, এটি একটি রাষ্ট্রদ্রোহী কাজ। ভুক্তভোগী একজন নারী, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ এবং শিক্ষক। সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে আমি মনে করি পুলিশের পক্ষ থেকে তাকে সিরিয়াস পানিশমেন্টের আওতায় আনা উচিত। তার চাকরি থাকা কোনোভাবেই উচিত না।’
এ ঘটনাকে নারীর প্রতি যৌন হয়রানি, সাংস্কৃতিক আগ্রাসন এবং ধর্মীয় গোঁড়ামির বহিঃপ্রকাশ হিসেবে দেখছেন ‘আমরাই পারি’-এর নির্বাহী সমন্বয়কারী জিনাত আরা হক।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময়েও টিপ নিয়ে বিরোধিতা ছিল। পূর্ব বাংলার নারীরা কেন টিপ পরে, তা নিয়ে পশ্চিমা শাসকরা ক্ষুব্ধ ছিল। কারণ তারা এটাকে ভাবত হিন্দুয়ানি প্রথা হিসেবে। মুক্তিযুদ্ধ এ কারণে গুরুত্বপূর্ণ ছিল, কারণ তারা আমাদের সংস্কৃতিকে পরিবর্তন করতে চেয়েছিল।
‘সেই প্রেতাত্মা এখনও মরেনি। বরং দিনকে দিন আরও শক্তিশালী হচ্ছে।’
ঘটনাটি কে ঘটিয়েছে, কার মাধ্যমে হয়েছে, সেই বিষয়টিকে বেশ গুরুত্বের সঙ্গে দেখছেন এই অধিকারকর্মী। তিনি বলেন, ‘এটা করেছে রাষ্ট্রের একজন পোশাকধারী কর্মচারী। সে পুলিশের পোশাক পরা, সে কোনোভাবেই এটা করতে পারে না। যখনই আমি রাষ্ট্রীয় আইডেনটিটি নিই বা ইউনিফর্ম পরি তখন কিন্তু আমার কিছু রেসপনসিবিলিটি থাকে- কী করতে পারব, কী পারব না।’
অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য একাধারে ওই কলেজশিক্ষককে যৌন হয়রানি করেছেন, সাংস্কৃতিকভাবে এবং ধর্মীয় গোঁড়ামির জায়গা থেকেও আঘাত করেছেন বলে জানান জিনাত আরা হক।
তিনি বলেন, ‘তিনি আমাদের সংবিধান পরিপন্থি কাজ করেছেন, আইনের পরিপন্থি কাজ করেছেন। তাকে অবশ্যই বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।’
আরও পড়ুন:আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপনের অংশ হিসেবে হুয়াওয়ে নারী কর্মীদের জন্য একটি স্বাস্থ্য সচেতনতাবিষয়ক কর্মশালার আয়োজন করেছে।
ঢাকায় হুয়াওয়ের সাউথ এশিয়া রিপ্রেজেনটেটিভ অফিসে এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
এ বিশেষ উদ্যোগ কর্মীদের সুস্থতা ও একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক কর্মক্ষেত্র নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে হুয়াওয়ের প্রতিশ্রুতিকে তুলে ধরে।
হুয়াওয়ে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এই কর্মশালার লক্ষ্য ছিলো নারী কর্মীদের ইউরিনারি হেলথের ওপর কাউন্সেলিং প্রদান করা। কাউন্সেলিংয়ে বিশেষভাবে গুরুত্ব পায় ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন (ইউটিআই), যা নারীদের একটি সাধারণ সমস্যা।
ইউনাইটেড হসপিটালের চিকিৎসক সরকার কামরুন জাহান ঝিনুক এ সমস্যার ঝুঁকি, লক্ষণ, প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা ও চিকিৎসার উপায় নিয়ে আলোচনা করেন।
তিনি বলেন, ‘ইউরিনারি ট্র্যাক্টের ইনফেকশন জীবনযাপনের কিছু সাধারণ অভ্যাস পরিবর্তনের মাধ্যমে প্রতিরোধ করা সম্ভব। প্রচুর পরিমাণে পানি পান, ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা, আটসাট পোশাক পরিহারের মাধ্যমে আর্দ্রতা ও ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি রোধ করে ইউটিআই হওয়ার সম্ভাবনা কমানো সম্ভব।’
হুয়াওয়ের এইচআর ডিরেক্টর লিনজিয়াও এ কর্মশালার সূচনা করেন। হুয়াওয়ের অন্যান্য কর্মকর্তারাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
লিনজিয়াও বলেন, “হুয়াওয়েতে আমরা কর্মদক্ষতাকে অগ্রাধিকার দিয়ে থাকি। একজন কর্মী পুরুষ বা নারী যাই হোক না কেন, আমরা তাকে তার দায়িত্বশীলতা ও কর্মদক্ষতার মানদণ্ড দিয়েই বিচার করি। আমরা দেখেছি যে, পুরুষ এবং নারী উভয়ই দক্ষতার সাথে কাজ করতে সক্ষম। হুয়াওয়ের কর্মীদের সুস্থতার দিকেও আমরা মনোযোগ দিয়ে থাকি।
‘তাই আমাদের কর্মীদের জন্য ওপিডি ও আইপিডি বিমার সুবিধা রয়েছে। আমরা কর্মীদের জন্য নিয়মিত স্বাস্থ্য সচেতনতাবিষয়ক কর্মশালারও আয়োজন করি। আজকের কর্মশালা নারী কর্মীদের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করার প্রতি আমাদের প্রতিশ্রুতিকে তুলে ধরে।’
হুয়াওয়ের ভাষ্য, প্রতিষ্ঠানটি অন্তর্ভুক্তি ও ক্ষমতায়নে বিশ্বাস করে। প্রতিষ্ঠানটি প্রতি মাসে কর্মক্ষেত্রে বায়ু, পানি ও খাবারের গুণমান পরীক্ষা করার মতো উদ্যোগের মাধ্যমে স্বাস্থ্যকর কাজের পরিবেশ নিশ্চিত করে। এ ছাড়া হুয়াওয়ের পরিবেশ, স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তাবিয়ষক নীতি অনুযায়ী নিয়মিত ফায়ার ড্রিলসেরও আয়োজন করা হয়ে থাকে।
আরও পড়ুন:অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, সম্প্রতি নারীদের ওপর যে জঘন্য হামলার খবর আসছে, তা গভীরভাবে উদ্বেগজনক। এটি নতুন বাংলাদেশের স্বপ্নের সম্পূর্ণ বিপরীত।
তিনি বলেন, ‘নতুন বাংলাদেশে নারী-পুরুষ সকলের সমান অধিকার প্রতিষ্ঠায় আমরা আমাদের সকল শক্তি প্রয়োগ করব।'
আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে শনিবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ‘অদম্য নারী পুরস্কার’ বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে বাংলাদেশের ছাত্র-শ্রমিক-জনতা মিলে যে অসাধ্য সাধন করেছে, তার সম্মুখসারির ভূমিকায় ছিল এ দেশের নারীরা। ফ্যাসিবাদী শক্তির প্রাণঘাতী অস্ত্রের সামনে হিমালয়ের মতো দাঁড়িয়েছিল আমাদের মেয়েরা।’
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সর্বোচ্চ আত্মত্যাগকারী ও অংশগ্রণকারী ও আহত নারীদের স্মরণ করে তাদের দ্রুত সুস্থ-স্বাভাবিক জীবন কামনা করেন তিনি।
ড. ইউনূস বলেন, ‘গণ-অভ্যুত্থানে সম্মুখসারিতে থাকলেও আমাদের সমাজে এখনও অনেক ক্ষেত্রেই নারীরা পিছিয়ে আছে। নারীদের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নে সরকার সবসময় সচেষ্ট। এ জন্য বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ চলমান।
‘দুস্থ মায়েদের আর্থিক সহায়তা প্রদান, নারীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা, ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচি, কর্মজীবী নারীদের থাকার হোস্টেল, ডে কেয়ার সেন্টার সুবিধাসহ নানান ধরনের উদ্যোগ অন্তর্বর্তী সরকার নিচ্ছে। এ সংক্রান্ত আরও উদ্যোগ নিয়েও আলোচনা চলছে।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘নারীর প্রতি সহিংসতা রোধ সরকারের অন্যতম অগ্রাধিকার। অনেক সময় নারীরা নির্যাতনের শিকার হলেও তারা বুঝতে পারেন না কোথায় অভিযোগ জানাবেন। নারীরা যেন তাদের অভিযোগ জানাতে পারেন, সে জন্য হটলাইন চালু করা হয়েছে।
‘আইনি সহায়তা দেওয়ার জন্য আমরা পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইন, ২০১০ হালনাগাদ করার উদ্যোগ নিয়েছি। যৌন হয়রানি প্রতিরোধ ও সুরক্ষা আইন, ২০২৫ প্রণয়নের কাজও আমরা হাতে নিয়েছি। আমরা একটি নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন করেছি। তারাও তাদের সুপারিশগুলো দেবে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশের মেয়েরা অত্যন্ত সাহসিকতার সঙ্গে তাদের নিজ নিজ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। শত বাধা পেরিয়ে দেশের রাজনীতি, অর্থনীতিসহ সার্বিকভাবে দেশকে এগিয়ে নিতে অবদান রাখছে।’
আরও পড়ুন:বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, বাংলাদেশের প্রতিটি মেয়ে ও নারীর ক্ষমতায়ন ও সমর্থন পাওয়ার অধিকার রয়েছে।
আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে শনিবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে তিনি এ আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের তরুণী ও নারীরা তাদের চারপাশের মানুষদের কাছ থেকে ক্ষমতায়ন ও সমর্থন পাওয়ার যোগ্যতা রাখে। প্রত্যেক নারীকেও পুরুষের সমান মর্যাদা, নিরাপত্তা ও সুযোগ পাওয়া উচিত।’
তিনি উল্লেখ করেন, তার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তিনজন অসাধারণ ব্যক্তি হলেন তার মা, স্ত্রী ও কন্যা।
তারেক রহমান ফেসবুক পেজে স্ত্রী জোবাইদা রহমান, মেয়ে ব্যারিস্টার জাইমা রহমান, মা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ছবিও শেয়ার করেন।
পোস্টে তিনি লিখেন, ‘আমি সবসময় তাদের জন্য প্রতিটি সুযোগ, সাফল্য এবং সুখ চেয়েছি। আমি নিশ্চিত যে আপনারা যারা এটি পড়ছেন তাদের অনেকেরই একই অনুভূতির সঙ্গে সম্পর্কিত হতে পারে।’
আন্তর্জাতিক নারী দিবসে তারেক রহমান বলেন, ‘আমি আবারও দৃঢ়তার সঙ্গে ঘোষণা করছি যে, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বিএনপি সরকারের মতো আমাদেরও উচিত একটি ন্যায়পরায়ণ, সহিষ্ণু ও শ্রদ্ধাশীল সমাজ গঠনে নিরলসভাবে কাজ করে যাওয়া, যেখানে ধর্ম, লিঙ্গ, বর্ণ, ধর্মের ভিত্তিতে বৈষম্য করা হবে না।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সব মেয়ের ছেলেদের সমান সুযোগ থাকা উচিত এবং তাদের বাড়ির বাইরে পা রাখা উচিত। হয়রানি ছাড়াই ইন্টারনেট ব্যবহার করা উচিত এবং নির্ভয়ে তাদের কণ্ঠস্বর প্রকাশের সুযোগ নেওয়া উচিত।’
তারেক রহমান আরও বলেন, “বিএনপির নীতি প্রণয়নে একটি নিরাপদ ও সুরক্ষিত সমাজে নারীর অব্যবহৃত সম্ভাবনাকে স্বীকৃতি দেয়, যেখানে দলের ‘ফ্যামিলি কার্ড’ কর্মসূচি, নারী উদ্যোক্তাদের জন্য এসএমই ঋণ, তরুণীদের শিক্ষার জন্য অ্যাকাডেমিক ও বৃত্তিমূলক প্রকল্পের মতো উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।”
উপসংহারে তিনি বলেন, ‘আসুন আমরা একসঙ্গে নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন, রাজনৈতিক অংশগ্রহণ এবং ব্যক্তিগত আকাঙ্ক্ষাকে সমর্থন করি।’
আরও পড়ুন:নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা একটি আধুনিক রাষ্ট্রের অন্যতম নির্ধারক বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আন্তর্জাতিক নারী দিবসকে সামনে রেখে শুক্রবার সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এ মন্তব্য করেন তিনি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘একটি আধুনিক রাষ্ট্রের অন্যতম নির্ধারক হচ্ছে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। আসুন, আমরা নারীদের প্রতি উগ্রতা, বিদ্বেষ এবং অশ্রদ্ধামূলক সকল আচরণকে না বলি এবং এই লক্ষ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা সুসংহত করার জন্য আহ্বান জানাই।’
গত ১৫ বছরে হাজার হাজার পুরুষ, নারী গুম, খুন, অত্যাচারিত হয়েছে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিগত বছরগুলোতে অমানবিক সংগ্রাম করেছে ওই পরিবারগুলোর নারীরা। জুলাইতেও আন্দোলনের শুরু এই বাংলাদেশের নারীদের হাতেই। শহীদ হয়েছে আমাদের সন্তানরা, ছোট শিশুকন্যাও। হিন্দু, মুসলিম, খ্রিস্ট্রান, বৌদ্ধ, সকলেই এই আন্দোলনের শরিক।’
মির্জা ফখরুল আশা করেন, ‘আমরা এমন বাংলাদেশ গড়তে চাই যেখানে নাগরিকদের নিরাপত্তা দেওয়াই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সর্বোচ্চ লক্ষ্য থাকবে। লিঙ্গ, বয়স, পেশা নির্বিশেষে প্রতিটি নাগরিক যেন রাস্তাঘাটে চলাফেরা করতে নিরাপদ বোধ করে, এমন বাংলাদেশই আমাদের কাম্য। বাড়ি থেকে রাস্তায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে, অফিসে, সর্বত্র তাদের আত্মসম্মানকে মূল্যায়ন করা উচিত।’
তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ‘আজকের ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশে উগ্রবাদের কোনো জায়গা নেই।’
তিনি বলেন, ‘আগামীকাল (শনিবার) আন্তর্জাতিক নারী দিবস। নারীরা আমাদের উন্নয়ন এবং অগ্রগতির অংশীদার। আন্তর্জাতিক নারী দিবসের প্রাক্কালে আসুন আমাদের অগ্রগতি দ্রুততর করতে পদক্ষেপ নিই।’
আরও পড়ুন:পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, নারীর ক্ষমতায়নে সবার আগে পরিবার থেকে নারীকে সাহস দিতে হবে। যেকোনো সংকটে নারীর পাশে ঢাল হয়ে থাকতে হবে।
তিনি বলেন, পরিবার পাশে না থাকলে রাষ্ট্রের পক্ষে নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়ে। পরিবার নারীকে সাহস দিলে রাষ্ট্রও নারীর পাশে থেকে সাহস জোগাতে পারে।
উপদেষ্টা বলেন, ‘নারীর প্রতিবন্ধকতা কখনও শেষ হয় না। সমাজে একটা গোষ্ঠী আছে, যারা নারীকে ক্ষমতায়িত করতে চায় না। দুর্বল নারীকে যত পছন্দ করে, সবলচিত্তের নারীকে তারা পছন্দ করে না। এটাই বাস্তবতা।’
আন্তর্জাতিক নারী দিবসকে (৮ মার্চ) সামনে রেখে জাতীয় বার্তা সংস্থা বাসসকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাতকারে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এসব কথা বলেন।
এবারের নারী দিবসের প্রতিপাদ্য ‘অধিকার, সমতা, ক্ষমতায়ন: নারী ও কন্যার উন্নয়ন’।
উপদেষ্টা বলেন, ‘একজন নারীকে দক্ষ ও যোগ্য করে গড়ে তোলা হলে সে দেশের কাজে ভূমিকা রাখতে পারে। এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্র ও পরিবারের পাশাপাশি সমাজেরও দায় রয়েছে। নারীর চলার পথ পুরুষের পাশাপাশি নির্বিঘ্ন ও নির্ভরতার হতে হবে।’
তিনি বলেন, “নারী এখন যে অবস্থানে রয়েছে, সে অবস্থানে থেকে নারী বলে বিতর্কিত নয়, কাজে সে বিতর্কিত হোক, অদক্ষ বলে বিতর্কিত হোক, শুধু নারী বলেই ভূল, নারী বলেই অদক্ষ, এ কথাটা বলা যাবে না। আমি বলব ‘স্কাই ইজ দ্য লিমিট।
“তাই তার চিন্তার গন্ডিটাকে তার পারিপার্শ্বিকতার নেতিবাচক মনোভাবে আটকে না রেখে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে তাদের পাশে নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। অভিভাবককে বুঝতে হবে, ছেলে ও মেয়ে দুজনই পরিবারের সম্পদ। পরিবারের উচিত নারীকে ক্ষমতায়িত করা।”
আরও পড়ুন:বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ফলে একটা দায়বদ্ধতা তৈরি হয়েছে মন্তব্য করে নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রধান শিরীন পারভীন হক বলেছেন, দেশের সব ক্ষেত্রে নারীর প্রতি বৈষম্য নিরসনে কাজ করতে হবে।
আন্তর্জাতিক নারী দিবসকে সামনে রেখে বৃহস্পতিবার রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে একশনএইড বাংলাদেশ আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা নিয়ে শিরীন হক বলেন, ‘আমাদের মূল ধারা হবে সকল ক্ষেত্রে নারীর প্রতি বৈষম্যের নিরসন এবং নারী-পুরুষের জেন্ডার বৈষম্য কমাতে কাজ করতে হবে। নারীর উন্নয়ন বিকাশে বাধাগুলো নিয়ে বিষয় চিহ্নিত করা।
‘অন্য সকল সংস্কার কমিশনে নারী অধিকারের প্রাধান্য নিশ্চিত করতে হবে। এটা আমরা চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিচ্ছি। ক্রান্তিকালে নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা ও অগ্রগতির জন্য কাজ করার সর্বোত্তম সুযোগ।’
অনুষ্ঠানে সমাজে যৌন হয়রানি, সহিংসতা ও বাল্যবিয়ে বন্ধ এবং জলবায়ু, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা ও সবুজায়ন এবং ক্রীড়াঙ্গনে নারী নেতৃত্ব বিকাশে বিশেষ অবদান রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ তিন ক্যাটাগরিতে দেশের প্রান্তিক পর্যায়ের তিনজনকে ‘নাসরীন স্মৃতিপদক ২০২৫’ পুরস্কার প্রদান করা হয়। এ বছর পদক গ্রহণ করেন ডনাইপ্রু নেলী, রিনা খাতুন ও আফরোজা খন্দকার।
দিবস উদ্যাপন আয়োজনে নারীদের সাফল্য প্রদর্শন ও পুরস্কার প্রদানসহ ছিল আলোচনা সেশন।
একশনএইড বাংলাদেশ-এর কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ্ কবিরের সঞ্চালনায় এ আলোচনায় অংশ নেন বিভিন্ন খাতের বিশেষজ্ঞরা। ওই সময় দেশের সব ক্ষেত্রে নারীদের ক্ষমতায়ন নিশ্চিতে বর্তমান অবস্থা, চ্যালেঞ্জ, সম্ভাবনা ও করণীয় বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়।
আলোচনা সভায় বক্তাদের একজন বলেন, দেশে নারীর ক্ষমতায়নে সামগ্রিক চিত্রের অগ্রগতি হলেও তা উল্লেখযোগ্য নয়। এখনও অনেক পিছিয়ে আছেন নারীরা। ন্যায়সঙ্গত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গঠনে বিভিন্ন স্তরের নারীদের সামনে থাকা কাঠামোগত চ্যালেঞ্জগুলোর বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। একই সঙ্গে নারীর ক্ষমতায়নের প্রতি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তোলা এবং সম্মিলিত পদক্ষেপ গ্রহণকে উৎসাহিত করাসহ নারী ও কন্যাশিশুরা যেন সমান সুযোগ পায় এবং উন্নতি করতে পারে, সে লক্ষ্যে সব ক্ষেত্রে পদক্ষেপের গতি বাড়াতে হবে।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নারীদের উল্লেখযোগ্য নেতৃত্বের কথা স্বীকার করে নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রধান ও নারীপক্ষের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য শিরীন পারভীন হক বলেন, ‘নারীদের অগ্রগতিতে পেছনে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। এটা কারা করছে, কেন করছে সেটা বের করা দরকার। জুলাইয়ের আন্দোলনে মেয়েরাই রোকেয়া হল থেকে সবার আগে বের হলো। কিন্তু পরে এত দ্রুত মেয়েরা সরে গেল কেন?
‘জায়গা কেউ ইচ্ছে করে ছেড়ে দেয়নি। চাপ সৃষ্টি করে জায়গা ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় নারীদের অন্তর্ভুক্তি আমরা নিশ্চিত করতে পারিনি। মেয়েদের পেছনে রাখার প্রবণতা দেখা গেছে।
‘আমরা দেখেছি আন্দোলনে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে নারীরা দারুণ সাহস দেখিয়েছে। এত তাড়াতাড়ি মেয়েদের মাঠ থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে আশা করিনি।’
নারীদের ব্যক্তিগত পর্যায় থেকে শুরু করে কমিউনিটি উন্নয়নে একশনএইড কীভাবে অবদান রেখে চলেছে তা তুলে ধরেন ফারাহ কবির।
তিনি বলেন, ‘দেশের নারীদের অগ্রগতিতে প্রাধান্য দিয়ে কাজ করে চলেছে একশনএইড বাংলাদেশ। নারী সুরক্ষা, অবৈতনিক কাজের স্বীকৃতি, জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধে অবস্থান ও নারীদের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নসহ সমানাধিকারভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করে চলেছি আমরা। আমরা চাই, নারী ক্ষমতায়ন কার্যক্রমে আরও গতি আসুক।’
ওই সময় নারী উন্নয়নে সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত ও বৃদ্ধির আহ্বান জানান তিনি।
আরও পড়ুন:বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বেগম রোকেয়া এ দেশের নারী জাগরণের পথিকৃৎ। নারী সমাজে শিক্ষার আলো পৌঁছে দিতে তিনি যে ভূমিকা পালন করেছেন তা বৈপ্লবিক।
বেগম রোকেয়ার জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে সোমবার এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আমি তার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই। তার রুহের মাগফিরাত কামনা করি।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন নারী সমাজে শিক্ষার আলো পৌঁছে দিতে যে ভূমিকা পালন করেছেন তা বৈপ্লবিক।
‘বেগম রোকেয়ার জীবন ও তার আদর্শ বাস্তবায়ন এদেশের নারী সমাজকে আলোকিত ও আত্মনির্ভরশীল করতে প্রেরণা যোগাবে।’
মন্তব্য