যৌনক্ষমতা বৃদ্ধির ওষুধ হিসেবে গিরগিটির তেলের পসার রয়েছে পাকিস্তানে। ভায়াগ্রা নিষিদ্ধ হওয়ায় এ তেলের ব্যবসা এখন রমরমা। বাজারের চাহিদা পূরণ করতে অকাতরে মারা হচ্ছে বিপন্ন প্রজাতির গিরগিটি। স্থানীয়ভাবে তেলটি পরিচিত ‘সান্ডার তেল’ নামে। নিউজ ও কারেন্ট অ্যাফেয়ার্সভিত্তিক সাইট ভাইসের প্রতিবেদন অবলম্বনে পাকিস্তানের সান্ডার তেলের বাজার নিয়ে লিখেছেন রুবাইদ ইফতেখার।
নোংরা ফুটপাতের ওপর এক লোক ছোট একটি চুলায় প্যান চাপিয়ে কী যেন ভাজছেন। প্যানে ময়লা সোনালি রঙ্গের মিশ্রণের ওপর তিনি কোনো এক ভেষজ ছিটিয়ে দেন। সঙ্গে সঙ্গে চর্বি পোড়ার তীব্র গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে আশপাশে। একপাশে পরিপাটি করে সাজানো অদ্ভুত সব উপকরণ। জাফরান, দারুচিনি এবং বিড়াল ছানার আকারের একদল গিরগিটি।
ওনার নাম মোহাম্মদ নাসির। নাসির গিরগিটির তেল বিক্রি করেন। পাকিস্তানে এ তেল পুরুষাঙ্গের উত্থানসংক্রান্ত জটিলতার চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়। এর ব্যবহার অনেকটা তরল ভায়াগ্রার মতো। নাসির পাঁচ বছর ধরে রাওয়ালপিন্ডির ঐতিহাসিক রাজা বাজার এলাকায় এ তেল বিক্রি করছেন। স্থানীয়ভাবে এটি ‘সান্ডার তেল’ নামে পরিচিত। ভারতীয় প্রজাতির গিরগিটির (ইন্ডিয়ান স্পাইনি টেইলড লিজার্ড বা Saara hardwickii) চর্বি ভেজে এ তেল বের করা হয়। স্থানীয় কবিরাজ ও ফুটপাথের হকাররা এটি বিক্রি করেন।
নাসির বলেন, ‘এ তেল পুরুষাঙ্গে মাখতে হয়। এতে যৌন অক্ষমতা ঠিক হয়ে যায়। সেই সঙ্গে পুরুষাঙ্গ লম্বা, মোটা ও শক্ত হয়। এটি ব্যবহারে পুরুষাঙ্গ অনেকক্ষণ উত্থিত থাকে এবং দ্রুত বীর্যপাত হয় না।’
তেল বানানোর সময় নাসিরকে ঘিরে ছিলেন উৎসুক অনেক দর্শক। কেউ কেউ মজা করছিলেন বিষয়টি নিয়ে, কেউ নোংরা মন্তব্য করছিলেন। তাদের এ আচরণের পরেও বোঝা যাচ্ছিল, বিষয়টি নিয়ে তারা বেশ আগ্রহী।
পাকিস্তানে ভায়াগ্রা নিষিদ্ধ এবং সামাজিক বিধিনিষেধের কারণে অনেকে পুরুষাঙ্গের উত্থানহীনতার চিকিৎসা নিতে ভয় পান। আর এ কারণেই এ ধরনের তেলের চাহিদা অনেক বেশি। ভায়াগ্রাকে বৈধ করার পদক্ষেপে দেশটির ধর্ম মন্ত্রণালয় বাধা দিয়েছে। তাদের ভাষ্য, এটা পাকিস্তানের সাংস্কৃতিক মূল্যবোধের বিরোধী। আর এই নিষেধাজ্ঞার ফলে কবিরাজ ও বিক্রেতারা জরুরি একটি চাহিদা মেটানোর আরও ভালো সুযোগ পেয়েছেন।
পাকিস্তানে এই তেলের সরবরাহ প্রক্রিয়ার মধ্যে থাকা শিকারি, বিক্রেতা ও কবিরাজদের সবাই পুরুষের এ সমস্যার ফায়দা লোটেন। পুরুষত্বহীনতা ছাড়াও পুরুষাঙ্গের আকৃতি বড় করা, উর্বরতা বৃদ্ধি ও বাতের ব্যথার জন্য এ তেল ব্যবহার করা হয়।
ইসলামাবাদের ইউরোলজিস্ট (মূত্রনালি বিশেষজ্ঞ) আসিম খান বলেন, ‘আমার রোগীদের মধ্যে প্রায় ৬০ শতাংশ এসব ওষুধের ভুল ব্যবহার করেছেন।’
যেসব গিরগিটি থেকে এই তেল সংগ্রহ করা হয়, সেগুলো বিপন্ন প্রজাতির ও ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনসারভেশন অফ নেচারের লাল তালিকাভুক্ত। শিকারিরা গিরগিটিগুলো ধরার পর এদের পিঠ ভেঙে দেন, যাতে তারা পালাতে না পারে। জীবন্ত অবস্থাতেই এদের নাড়িভুঁড়ি বের করে ফেলা হয় এবং চর্বি আলাদা করে চুলায় চড়ানোর জন্য প্রস্তুত করা হয়। তেলের সঙ্গে জিনসেং, শুকনো আদা, জাফরান, দারুচিনি ও ব্রাহ্মী বীজ মেশানো হয়। অনেক সময় বিপন্ন প্রজাতির কস্তুরি হরিণ থেকে আহরণ করা কস্তুরি সুগন্ধিও ব্যবহার করা হয় মিশ্রণে।
রানা ফরিদ ওয়াজিরাবাদ শহরের একজন হাকিম। যিনি তার দোকানে ১৮ বছর ধরে এই তেল বিক্রি করছেন। তার ক্লিনিকের লিফলেটে গিরগিটি, সাপ ও বিভিন্ন সরীসৃপের সাহায্যে পুরুষাঙ্গের চিকিৎসার ওপর জোর দেয়া হয়।
ফরিদ বলেন, ‘সমগ্র পাকিস্তান থেকে আমার গ্রাহক আসেন। কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, স্পেন ও ইংল্যান্ড থেকেও আসেন। আমার এ ওষুধের কথা তারা তাদের পাকিস্তানি আত্মীয়দের কাছ থেকে শুনেছেন।’
ওয়াজিরাবাদের বাসিন্দা হাফিজ পাঁচ বছর ধরে ফরিদের কাছ থেকে এ ওষুধ নিচ্ছেন। স্পর্শকাতর বিষয়টি নিয়ে কথা বলার সময় হাফিজ নিজের পুরো নাম জানাতে চাননি।
তিনি বলেন, ‘এটা ব্যবহারের আগে আমি ও আমার স্ত্রী দীর্ঘদিন সন্তান গ্রহণের চেষ্টা করেছি। তবে মিলনের সময় আমি বেশিক্ষণ উত্থান ধরে রাখতে পারতাম না। আমি আগেও অনেক অর্থ খরচ করেছি, লাভ হয়নি। তবে এটা কাজে দিয়েছে। আমি এখন পুত্রসন্তানের বাবা।’
তবে চিকিৎসকেরা এটা মানতে পারছেন না।
‘অলৌকিক ওষুধের’ ওপর যথেষ্ট গবেষণা না থাকায় তারা এর কার্যকারিতা ও নিরাপদ ব্যবহার নিয়ে যথেষ্ট সন্দিহান।
ডা. খান বলেন, ‘এখন প্রমাণভিত্তিক ওষুধের যুগ। বাজারে বিক্রির আগে কোনো ওষুধ সম্বন্ধে সঠিক গবেষণা করতে হবে। এ চিকিৎসাগুলোর সমস্যা হচ্ছে যে আমাদের কাছে যথেষ্ট পরিমাণ উপাত্ত নেই।
‘ধরে নিলাম, তারা ৫০০ জনকে এই তেল একটা নির্দিষ্ট সময়ে বিক্রি করেন। এক মাস পর তাদের কী হয়? তাদের কিডনি কীভাবে কাজ করে? লিভারের ওপর এর প্রভাব কী? আমরা এগুলো জানি না।’
পুরুষাঙ্গের উত্থান জটিলতার বিভিন্ন কারণ রয়েছে। জৈবিক, মানসিক ও জীবন যাত্রাগত নানা কারণ রয়েছে। হরমোনে সমস্যা, দুর্বল হৃদযন্ত্র ও এক জায়গায় দীর্ঘক্ষণ বসে কাজ করার সঙ্গেও এর যোগ রয়েছে।
ডা. খান বলেন, ‘যতক্ষণ না আপনি সমস্যার মূল কারণ চিহ্নিত করেন, ততক্ষণ এর স্থায়ী সমাধান করা খুব কঠিন। পুরুষাঙ্গের উত্থান জটিলতা বা দ্রুত বীর্যপাতের সমস্যার তাৎক্ষণিক উপশমের জন্য কিছু ভেষজ ওষুধ ও হাতুড়ে চিকিত্সা রয়েছে। তবে এগুলো সাময়িকভাবে সমস্যার সমাধান করতে পারে। রক্ত, হরমোন ও আল্ট্রাসাউন্ড পরীক্ষা না করলে আমরা এই রোগের সঠিক চিকিত্সা করতে পারব না।’
পুরুষাঙ্গের উত্থান জটিলতা নিয়ে পাকিস্তানে খুব কম তথ্য পাওয়া যায়। ২০০৩ সালে করা এক সমীক্ষায় দেশের ক্লিনিকগুলোতে পুরুষদের ৪০.৪ শতাংশ এ সমস্যার কথা জানিয়েছেন। গত বছর প্রকাশিত একটি সমীক্ষা যা করাচি শহরের রোগীদের মধ্যে করা হয়েছিল, তাতে দেখা যায়, একটি স্থানীয় হাসপাতালে ৪৫০ জন রোগীর মধ্যে এই জটিলতায় ভোগার হার ছিল ২১ শতাংশ।
এমন পরিসংখ্যানের পরেও ভায়াগ্রার মতো মূলধারার যৌনশক্তি বর্ধনকারী ওষুধের বিক্রি ঠেকাতেই বেশি জোর দিচ্ছে দেশটির গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। তবে নিষিদ্ধ এ ওষুধের বিরুদ্ধে ক্র্যাক ডাউন থাকার পরেও ভায়াগ্রা সারা দেশে অনলাইন ও স্থানীয় ওষুধের দোকানে কিনতে পাওয়া যায়।
সরকারি এই নিষেধাজ্ঞা ও গোপনীয়তার সংস্কৃতির সুবিধা নিচ্ছে সান্ডা বা গিরগিটির তেল।
রাওয়ালপিন্ডির নৃতাত্ত্বিক আব্দুল কাদের বলেন, ‘পুরুষের যৌনতা প্রকাশ করার ক্ষেত্রে এবং বৈবাহিক সম্পর্কেও সাধারণ ধারণা হচ্ছে নারী সঙ্গীকে জয় করতে হবে। যৌনতার এমন ধারণা থেকেই পুরুষ বিশ্বাস করে, তাদের যৌনশক্তি বাড়াতে হবে।’
এ বিশ্বাস থেকেই তারা গিরগিটির তেল ব্যবহারে আগ্রহী হচ্ছেন। হাকিম ফরিদের মতে, এ তেল সব বয়সের মানুষের কাছেই আকর্ষণীয়। স্ত্রী বা সঙ্গীকে আনন্দ দেয়ার জন্য তরুণরাও এর ব্যবহার করছেন। বিয়ের আগে নিজেদের যৌনক্ষমতা নিয়ে উদ্বিগ্ন তরুণরা তার সঙ্গে যোগাযোগ করেন বলে দাবি ফরিদের।
তিনি বলেন, ‘তারা যৌন সক্ষমতা নিয়ে চিন্তিত, কারণ স্বমৈথুনের সময় তাদের দ্রুত বীর্যপাত হয় এবং একজন নারীকে সন্তুষ্ট করতে পারবে কি না- সেটি ভেবে তারা ভয় পায়।’
সেক্স থেরাপিস্ট ও মনোবিদ তাহিরা রুবাবের মতে, অনেকে পৌরুষত্ব নিয়ে উদ্বিগ্ন থাকেন। কারণ তারা পুরুষের যৌনক্ষমতা সম্পর্কে সমাজের প্রচলিত ধারণা দিয়ে প্রভাবিত।
রুবাব বলেন, ‘সমাজ পুরুষদের বলে, তারা যদি যৌনক্ষম না থাকে তাহলে তারা পুরুষই নয়। এ চাপ তার সঙ্গীর কাছ থেকে আসে না, আসে সমাজের কাছ থেকে। এটি শেষ পর্যন্ত পুরুষদের আত্মসতর্ক করে তোলে ও মানসিকভাবে পুরুষত্বহীনতার একটি চক্রের মধ্যে তাদের ফেলে দেয়।’
যৌনক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য হতাশা ও চাহিদা নানা সামাজিক শ্রেণি ও ভিন্ন ভিন্ন শিক্ষার স্তরেও দেখা যায়।
ডা. খান বলেন, ‘এটা শিক্ষার বিষয় নয়, সচেতনতার অভাব। একবার আমি ইসলামাবাদে এক রোগীকে পেয়েছিলাম, যিনি ২০তম গ্রেডের সিভিল অফিসার ছিলেন। হাকিম তার কাছে চিকিৎসা বাবদ ৪৫ হাজার রুপি (২২ হাজার টাকা প্রায়) নিয়েছিলেন।’
পাকিস্তানের ড্রাগ রেগুলেটরি অথরিটি ও প্রচলিত ওষুধের বিভিন্ন সংস্থা সান্ডার তেলের ওপর নজরদারি রাখার চেষ্টা করেছে। তারপরেও এর বিক্রি অনেকটাই অনিয়ন্ত্রিত। ফলে সরবরাহকারী ও পরিমাণের ওপর নির্ভর করে এর দাম একেক জায়গায় একেক রকম।
রাস্তার হকাররা ছোট এক শিশি তেল বিক্রি করেন ৩০০ রুপিতে, আর বড় বোতলের দাম ২০০০ রুপি পর্যন্ত হতে পারে। গ্রামে ও আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায়- যেখানে হাকিম ও কবিরাজ ছাড়া চিকিৎসার গতি নেই, সেখানে রোগীরা বেশি দাম দিতে বাধ্য থাকেন। একেক বোতল ১০ হাজার রুপিতেও বিক্রি হতে পারে।
এই প্রতারণার তথ্য জানার পরও ক্রেতারা দামি ওষুধ খাওয়া বা বেআইনি ভায়াগ্রার চেয়ে এই তেল পছন্দ করেন। ফুটপাথের হকারদের সঙ্গে প্রচুর দরদাম করেন ক্রেতারা, বিশেষ করে যারা কবিরাজদের কাছ থেকে নিয়মিত ওষুধ নেন।
নৃতাত্ত্বিক কাদের বলেন, ‘হাকিমদের সঙ্গে ক্রেতাদের বন্ধুত্বপূর্ণ ও অপেশাদার এক ধরনের সম্পর্ক রয়েছে। তারা এমনকি চার মাসের জন্য অর্থ ছাড়াই ওষুধ চাইতে পারে। এটি দর-কষাকষির ধারণাটিকে সহজ করে তোলে এবং গ্রাহককে আরও আগ্রহী করে তোলে।’
পাকিস্তানের মরুভূমিতে এ গিরগিটিগুলো বেশি দেখা যায়। গত কয়েক বছরে চোরাশিকারিদের বিরুদ্ধে অভিযান ও গ্রেপ্তারের হার বাড়লেও ‘পুরুষত্ব’ বাড়ানোর তেলের ব্যাপক চাহিদা মেটাতে গিরগিটি ধরে কবিরাজ ও রাস্তার বিক্রেতাদের কাছে দেদার বিক্রি করা হচ্ছে।
মাদক নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও পুলিশ এ বাজার নিয়ন্ত্রণে আনতে তেমন কিছুই করছে না। পাকিস্তানের বন্য প্রাণী কর্তৃপক্ষই একমাত্র পদক্ষেপ নিয়েছে।
নাসির তেল বিক্রির পাশাপাশি তার ভাইকে নিয়ে গিরগিটি শিকার করেন। তিনি বলেন, ‘পুলিশ আমাদের কিছুই বলে না। কেবল বন্য প্রাণী বিভাগ আমাদের পেছনে লাগে। আমাকে বেশ কয়েকবার জরিমানা করেছে তারা। তবে আমার কিছু করার নেই। এটাই আমার জীবিকা।’
নাসির ভাইসকে তার ১০ হাজার রুপির জরিমানার রসিদটিও দেখিয়েছেন।
আটক গিরগিটিগুলো সারা দেশ থেকে পাঞ্জাব প্রদেশে আসে। বন্য প্রাণী কর্মকর্তারদের মতে, এ এলাকা সান্ডার তেলের ব্যবসার কেন্দ্র। গত বছরের অক্টোবর পর্যন্ত পরিচালিত পাঁচটি অভিযানে বন্য প্রাণী কর্মকর্তারা সিন্ধু প্রদেশের শিকারিদের কাছ থেকে ৯৭৮টি গিরগিটি উদ্ধার করেছেন। ২০২০ সালে সিন্ধের করাচি ও থাট্টা শহর-শহরতলি থেকে আড়াই হাজার গিরগিটি উদ্ধার করা হয়। দুর্ভাগ্যবশত একবার ধরার পর গিরগিটির পিঠ ভেঙে গেলে, বনে ছেড়ে দিলেও তাদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা কম।
সিন্ধ ওয়াইল্ডলাইফ ডিপার্টমেন্টের সংরক্ষক জাভেদ আহমেদ মাহের বলেন, ‘তেলের চাহিদা না কমা পর্যন্ত চোরাশিকার অব্যাহত থাকবে। চোরাশিকারিদের অধিকাংশই অত্যন্ত দরিদ্র যাযাবর সম্প্রদায়ের। অর্থনৈতিক উন্নতির জন্য তাদের আর কোনো ভালো সুযোগ দেয়া হয়নি। এ কারণেই তারা অসহায় নিরীহ প্রাণীদের ধরতে এখানে এসেছেন।’
আরও পড়ুন:ভারতের তেলেঙ্গানা রাজ্যের হায়দরাবাদে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারেন টেনিস তারকা সানিয়া মির্জা।
অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (এআইএমআইএম) প্রধান আসাদুদ্দিন ওয়াইসির বিরুদ্ধে কংগ্রেস তাকে প্রার্থী করার কথা ভাবছে বলে সূত্রের বরাতে বৃহস্পতিবার জানিয়েছে হিন্দুস্তান টাইমস।
বুধবার গোয়া, তেলেঙ্গানা, উত্তরপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ড এবং দমন ও দিউ- এই চার রাজ্যের প্রার্থীদের নিয়ে আলোচনার জন্য কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিটি (সিইসি) ১৮ জনের নাম অনুমোদন করেছে।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, কংগ্রেস সানিয়া মির্জার জনপ্রিয়তা ও তার সেলিব্রিটি স্ট্যাটাসের দিকে নজর রেখে এই সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। কংগ্রেস সর্বশেষ ১৯৮০ সালে হায়দরাবাদে জিতেছিল এবং কে এস নারায়ণ সাংসদ হয়েছিলেন।
সূত্রের খবর, সানিয়ার নাম প্রস্তাব করেছিলেন সাবেক ভারতীয় ক্রিকেট অধিনায়ক কংগ্রেস নেতা মহম্মদ আজহারউদ্দিন। ২০১৯ সালে সানিয়া মির্জার বোন আনাম মির্জার সঙ্গে বিয়ে হয় ক্রিকেটারের ছেলে মহম্মদ আসাদুদ্দিনের।
আজহারউদ্দিন সম্প্রতি অনুষ্ঠিত তেলেঙ্গানা বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন, যেখানে তিনি জুবিলি হিলস আসন থেকে ভারত রাষ্ট্র সমিতির (বিআরএস) মাগন্তি গোপীনাথের কাছে ১৬০০০ ভোটে হেরে গিয়েছিলেন।
এআইএমআইএম-এর একটি শক্ত ঘাঁটি হায়দরাবাদ, এই অঞ্চলে ২০২৩ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ‘গ্র্যান্ড ওল্ড পার্টির’ (কংগ্রেস) সাম্প্রতিক পুনরুত্থান এআইএমআইএমের আধিপত্যের কাছে একটি উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। যা একটি তীব্র কঠিন লড়াইয়ের পরিস্থিতি তৈরি করেছে।
১৯৮৪ সালে সুলতান সালাহউদ্দিন ওয়াইসি হায়দরাবাদ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে এবং পরে ১৯৮৯ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত এআইএমআইএম প্রার্থী হিসেবে জিতেছিলেন।
এর পর আসাদ্দুদ্দিন ওয়াইসি ২০০৪ সাল থেকে এই আসনটি ধরে রেখে উত্তরাধিকার বহন করছেন। ২০১৯ সালে ওয়েইসির বিরুদ্ধে ১৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। তিনি তার আধিপত্য বজায় রেখে মোট প্রদত্ত ভোটের ৫৮.৯৪% পেয়ে আসনটি জিতেছিলেন।
এই লোকসভা নির্বাচনের জন্য হায়দরাবাদে বিজেপি মাধবী লতাকে প্রার্থী করেছে, এবং বিআরএস গদ্দাম শ্রীনিবাস যাদবকে প্রার্থী করেছে।
৫৪৩টি সংসদীয় আসনের নির্বাচন সাত ধাপে অনুষ্ঠিত হবে, যা ১৯ এপ্রিল থেকে শুরু হয়ে ১ জুন শেষ হবে। তেলেঙ্গানায় ভোট হবে ১৩ মে।
পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের শাংলা জেলার বিশাম এলাকায় মঙ্গলবার গাড়িবহরে আত্মঘাতী বোমা হামলায় চীনের পাঁচ নাগরিকসহ কমপক্ষে ছয়জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে দি এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।
মালাকান্দ পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মোহাম্মদ আলি গান্দাপুরের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসলামাবাদ থেকে খাইবার পাখতুনখোয়ার দুসু এলাকার ক্যাম্পে যাওয়ার পথে চীনের প্রকৌশলীদের গাড়িবহরে বিস্ফোরকভর্তি গাড়িটি উঠিয়ে দেয় আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী।
তিনি আরও বলেন, ‘হামলায় চীনের পাঁচ নাগরিক ও তাদের পাকিস্তানি চালক নিহত হন।’
হামলার পরপরই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য ঘটনাস্থলে গিয়ে এলাকাটি ঘিরে ফেলেন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ঘটনার তদন্তে নামায় এ পথে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ইসলামাবাদে চীনা দূতাবাস গিয়ে রাষ্ট্রদূত জিয়াং জ্যায়দংয়ের কাছে শোক প্রকাশ করেন।
এক বিবৃতিতে শাহবাজ শরিফ বলেন, ‘চায়না-পাকিস্তান ইকোনোমিক করিডরের (সিপিইসি) শত্রুরা আরও একবার এ ধরনের কাপুরুষোচিত কাজ করে একে ব্যাহত করার চক্রান্ত করেছে, কিন্তু অশুভ অভিলাষ পূরণে কখনই সফল হবে না তারা।’
আরও পড়ুন:বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ক্রিকেট ফ্র্যাঞ্জাইচিগুলোর একটি ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল)। কাড়ি কাড়ি টাকা খরচায় এই টুর্নামেন্টে যেমন দেখা যায় তারকার ছড়াছড়ি, তেমনই কোটি কোটি টাকার জুয়া বাণিজ্য চলে আইপিএল চলাকালে।
তেমনই আইপিএলে বাজি ধরে বারবার হেরে কোটি রুপির বেশি ঋণী হয়ে পড়েছিলেন ভারতের কর্ণাটকের দর্শন বাবু নামের এক ইঞ্জিনিয়ার। তবে টাকা সময়মতো পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় পাওনাদারদের ক্রমাগত হয়রানিতে তার স্ত্রী আত্মহত্যা করেছেন।
আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জুয়ার নেশায় টাকা ধার করতে করতে ঋণের পরিমাণ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায় দর্শনের। তার পরও ধার করে বাজি ধরতে থাকেন তিনি।
দেড় কোটি টাকা ধার নেয়ার পর পাওনাদাররা তার বাড়িতে এসে টাকা আদায়ের জন্য চাপ দিকে শুরু করেন। শুধু তা-ই নয়, ওই প্রকৌশলীকে বাড়িতে না পেয়ে তার স্ত্রী রঞ্জিতাকে হেনস্থা করা হয়েছে অভিযোগ উঠেছে।
আর পাওনাদারদের হয়রানি সহ্য করতে না পেরেই রঞ্জিতা আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। গত ১৮ মার্চ কর্ণাটকের চিত্রদুর্গায় নিজের বাড়িতে ঝুলন্ত অবস্থায় তাকে পাওয়া যায়।
স্থানীয় পুলিশের বরাতে সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, এ ঘটনায় রঞ্জিতার বাবা ১৩ জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছেন।
চিত্রদুর্গের বাসিন্দা দর্শন সেচ দপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত।
স্থানীয়দের দাবি, দর্শন মাঝেমধ্যেই অনলাইনে জুয়া খেলতেন। সেই নেশার কারণে ধারের বোঝা বাড়ছিল তার।
যদিও দর্শনের শ্বশুরের পাল্টা দাবি, তার জামাই নির্দোষ। তাকে এই জুয়া খেলতে বাধ্য করা হয়েছিল। বাধ্য করা হয়েছিল টাকা ধার নিতেও। যাদের কাছে থেকে টাকা ধার নিয়েছিলেন, তারাই এই কাজ করিয়েছিলেন তার জামাইকে দিয়ে।
তিনি আরও জানিয়েছেন, দ্রুত অর্থ উপার্জনের জন্য দর্শনকে লোভ দেখানো হয়। তারপর তাকে ফাঁদে ফেলা হয়েছে।
এ ঘটনার ব্যাপারে পুলিশ জানিয়েছে, দর্শনের ঘর থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়েছে। সেটি রঞ্জিতা লিখেছেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। ওই সুইসাইড নোটে ১৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন রঞ্জিতা।
তার বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে এরইমধ্যে শিবু, গিরিশ এবং ভেঙ্কটেশ নামে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।
ভারতের বিহার রাজ্যের সুপাল এলাকায় শুক্রবার নির্মাণাধীন সেতু ধসে একজন নিহত হওয়ার পাশাপাশি বেশ কয়েকজন আটকা পড়েছেন।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে জানানো হয়, মরিচা এলাকার কাছে সকাল সাতটার দিকে এ ধসের ঘটনায় নির্মাণাধীন স্থাপনা এলাকাটিতে বিশৃঙ্খলা ও ধ্বংসলীলার কেন্দ্রে রূপ নেয়।
দুর্ঘটনার পর স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ও স্বেচ্ছাসেবীরা তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধারকাজ শুরু করে।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ধারণা, ধ্বংসস্তূপের নিচে ৩০ জন শ্রমিক আটকা থাকতে পারেন।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, কোসি নদীর ওপর সেতুটি নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৯৮৪ কোটি রুপি।
এর আগে বিহারের ভাগলপুরে একইভাবে ধসে পড়েছিল নির্মাণাধীন একটি সেতু, যা নিয়ে কথার লড়াই শুরু হয় রাজ্যে ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে বিরোধীদের।
ভাগলপুরের ঘটনায় গঙ্গা নদীর ওপর নির্মাণাধীন চার লেনের সেতুটি তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে।
আরও পড়ুন:ভারতের গুজরাটের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের হোস্টেলে শনিবার রাতে বিদেশি মুসলিম ছাত্রদের ওপর উচ্ছৃঙ্খল লোকজন হামলা চালিয়েছে বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।
সংবাদমাধ্যমটির খবরে বলা হয়, রমজানে তারাবির নামাজ পড়ায় এ হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ করেন ছাত্ররা। ওই হামলায় আহত হন পাঁচ ছাত্র।
এনডিটিভির খবরে বলা হয়, হামলায় আহত ছাত্ররা আফ্রিকা ও এশিয়ার বিভিন্ন দেশের।
গুজরাটের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হর্ষ সাংভি গুজরাটের শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেপ্তার এবং ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
বিদেশি ছাত্রদের ভাষ্য, আহমেদাবাদে অবস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়টির ক্যাম্পাসে মসজিদ নেই। এ কারণে তারা হোস্টেলের ভেতর তারাবির নামাজ পড়তে জড়ো হন।
তাদের অভিযোগ, নামাজের জন্য জড়ো হওয়ার পরপরই লাঠি ও ছুরি হাতে একদল উচ্ছৃঙ্খল লোক হোস্টেলে ঢুকে তাদের ওপর হামলা চালান এবং কক্ষ ভাঙচুর করেন।
তারা আরও জানান, হোস্টেলের নিরাপত্তারক্ষী উচ্ছৃঙ্খল লোকজনকে আটকানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
আফগানিস্তান থেকে ভারতে পড়তে যাওয়া এক ছাত্র বলেন, উচ্ছৃঙ্খল লোকজন স্লোগান দিতে থাকেন এবং ছাত্রদের জিজ্ঞাসা করেছেন যে, হোস্টেলের ভেতর তাদের নামাজ পড়ার অনুমতি কে দিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘তারা কক্ষের ভেতরেও আমাদের ওপর হামলা চালান। তারা ল্যাপটপ, ফোন ভেঙে ফেলেন এবং বাইকের ক্ষয়ক্ষতি করেন।’
ওই ছাত্র বলেন, আহত ছাত্রদের একজন করে আফগানিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও তুর্কমেনিস্তানের। বাকি দুজন আফ্রিকার দুটি দেশের।
তিনি আরও বলেন, ‘পুলিশ আসার পর উচ্ছৃঙ্খল লোকজন পালিয়ে যান। আহত ছাত্ররা হাসপাতালে আছেন এবং তারা দূতাবাসকে বিষয়টি অবহিত করেছেন।’
হায়দরাবাদের এমপি ও অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়াইসি হামলার ঘটনার নিন্দা জানিয়ে এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ হস্তক্ষেপ করবেন কি না, তা জানতে চেয়েছেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেয়া পোস্টে তিনি লিখেন, ‘কী লজ্জার। মুসলিমরা শান্তিপূর্ণভাবে ধর্মচর্চা করলেই আপনাদের ভক্তি ও ধর্মীয় স্লোগান চলে আসে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এটি অমিত শাহ ও নরেন্দ্র মোদির রাজ্য। শক্ত বার্তা দেয়ার জন্য তারা কি হস্তক্ষেপ করবেন?’
আরও পড়ুন:লোকসভা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে ভারত। সাত ধাপে অনুষ্ঠিতব্য এ ভোটগ্রহণ আগামী ১৯ এপ্রিল থেকে শুরু হয়ে চলবে ১ জুন পর্যন্ত। ফলাফল ঘোষণা হবে আগামী ৪ জুন।
শনিবার ভারতের প্রধান নির্বাচন কমিশনার রাজিব কুমার এ ঘোষণা দেন।
দেশটির নির্বাচন কমিশনের ঘোষণা অনুযায়ী, এবারের লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফায় ভোটগ্রহণ হবে ১৯ এপ্রিল, দ্বিতীয় দফার ভোটগ্রহণ ২৬ এপ্রিল, তৃতীয় দফা ৭ মে, চতুর্থ দফা ১৩ মে, পঞ্চম দফা ২০ মে, ষষ্ঠ দফা ২৫ মে এবং সপ্তম দফার ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে ১ জুন।
আনন্দবাজারে প্রকাশিত খবর থেকে জানা গিয়েছে, প্রথম দফায় (১৯ এপ্রিল) পশ্চিমবঙ্গ, জম্মু ও কাশ্মীর, উত্তরাখণ্ড, রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, ছত্তিসগড়, তামিলনাড়ু, পুদুচেরি, লক্ষদ্বীপ, আন্দামান নিকোবার, বিহার, সিকিম, মেঘালয়, ত্রিপুরা, মিজোরাম, মণিপুর, নাগাল্যান্ড, আসাম ও অরুণাচলপ্রদেশে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
দ্বিতীয় দফায় (২৬ এপ্রিল) ভোট হবে কেরালা, কর্ণাটক, মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ, ছত্তিসগড়, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ, জম্মু ও কাশ্মীর, আসাম, মণিপুর ও ত্রিপুরায়।
তৃতীয় দফায় (৭ মে) জম্মু ও কাশ্মীর, গুজরাট, মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, ছত্তিসগড়, গোয়া, দাদরা-নগর হভেলি ও দমন-দিউয়ে নেয়া হবে ভোট।
চতুর্থ দফায় (১৩ মে) মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ, তেলাঙ্গানা, অন্ধ্রপ্রদেশ, ওড়িশা, উত্তরপ্রদেশ, জম্মু ও কাশ্মীর, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ ও ঝাড়খণ্ডে ভোটগ্রহণ হবে।
পঞ্চম দফায় (২০ মে) ভোট হবে লাদাখ, জম্মু ও কাশ্মীর, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, ঝাড়খণ্ড, পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা ও মহারাষ্ট্রে।
ষষ্ঠ দফায় (২৫ মে) দিল্লি, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড ও ওড়িশায় ভোট হবে।
সপ্তম দফায় (১ জুন) হিমাচল প্রদেশ, পঞ্জাব, চণ্ডীগড়, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড ও ওড়িশায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
উল্লেখ্য, বিহার, গুজরাট, হরিয়ানা, ঝাড়খণ্ড, মহারাষ্ট্র, রাজস্থান এবং তামিলনাড়ুসহ একাধিক রাজ্যের ২৬টি বিধানসভা আসনের উপনির্বাচনও অনুষ্ঠিত হবে ওই সময়ের মধ্যে।
নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুয়া খবর প্রচারের বিরুদ্ধে শক্ত বার্তা দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। তিনি বলেছেন, রাজনৈতিক দলগুলোকে সোশ্যাল মিডিয়ায় দায়িত্বশীল আচরণ নিশ্চিত করা উচিত।
রাজিব কুমার বলেন, ভুয়া খবর প্রচার আইন অনুযায়ী কঠোরভাবে মোকাবিলা করা হবে। ভারতের তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৭৯ (৩) (বি) ধারা প্রতিটি রাজ্যের নোডাল অফিসারদের বেআইনি বিষয়বস্তু অপসারণের ক্ষমতা দিয়েছে।
২০১৯ সালের নির্বাচনে জিতে দ্বিতীয়বারের মতো কেন্দ্রের ক্ষমতায় আসে বিজেপি। তারা জয় পায় ৩০৩টি আসনে। আর বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট পায় ৩৫৩ আসন। ওই নির্বাচনে বিজেপির প্রাপ্ত ভোটের হার ছিল ৩৭ দশমিক ৩৬ শতাংশ। পরিসংখ্যান বলছে, ১৯৮৯ সালের পর ভারতের কোনো রাজনৈতিক দল এত বেশি ভোট আর পায়নি।
ওই নির্বাচনে মাত্র ৫২ আসনে জয় পেয়েছিল শতাব্দীপ্রাচীন দল কংগ্রেস। আর কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ইউপিএ জোট জিতেছিল ৯৮ আসনে।
আরও পড়ুন:ভারতে চলতি বছর অনুষ্ঠেয় লোকসভা নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হবে শনিবার বিকেলে।
দেশটির নির্বাচন কমিশন (ইসিআই) শুক্রবার এ তথ্য জানায় বলে এনডিটিভির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে ইসিআইয়ের পোস্ট করা সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়, লোকসভা নির্বাচনের মধ্যে অনুষ্ঠেয় চার বিধানসভা নির্বাচনের তারিখও আজ ঘোষণা করা হবে।
নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার সময় থেকে নির্বাচনি আচরণবিধি কার্যকর হবে।
এর আগে ২০১৯ সালে সাত ধাপে ১১ এপ্রিল থেকে ১৯ মের মধ্যে লোকসভা নির্বাচন হবে। এর চার দিন পর ফল ঘোষণা করা হয়।
এপ্রিল থেকে মে মাসের মধ্যে যেসব রাজ্যে নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে, সেগুলো হলো অরুণাচল প্রদেশ, অন্ধ্র প্রদেশ, ওড়িশা ও সিকিম। এর বাইরে চলতি বছরের শেষের দিকে ভোট হওয়ার কথা আছে মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা ও সিকিমে।
মন্তব্য