× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য ইভেন্ট শিল্প উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ কী-কেন ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও ক্রিকেট প্রবাসী দক্ষিণ এশিয়া আমেরিকা ইউরোপ সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ শারীরিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্য যৌনতা-প্রজনন অন্যান্য উদ্ভাবন আফ্রিকা ফুটবল ভাষান্তর অন্যান্য ব্লকচেইন অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

জীবনযাপন
Unparalleled cannabis in the treatment of long covid
google_news print-icon

লং কোভিড চিকিৎসায় ‘অতুলনীয়’ গাঁজা

গাঁজা
লং কোভিডের চিকিৎসায় গাঁজার কার্যকারিতার প্রমাণ মিলেছে বেশ কিছু গবেষণায়। ছবি: এএফপি
যুক্তরাজ্যে সরকারিভাবে লং কোভিডের জটিলতায় ভোগা রোগীদের চিকিৎসায় গাঁজা ব্যবহারের ঘোষণা দেয়া হয়েছে। সেখানে ওষুধ পরামর্শক কমিটিসংক্রান্ত বেসরকারি সংস্থা ড্রাগ সায়েন্সের করা গবেষণাটি ছয় মাস চলবে এবং ৩০ জন রোগীর ওপর এ পরীক্ষা চালানো হবে। পরে বাড়ানো হবে ট্রায়ালের আওতা।

কোভিড-পরবর্তী দীর্ঘ জটিলতা বা লং কোভিডে আক্রান্তদের চিকিৎসায় গাঁজার ব্যবহার নিয়ে আশাবাদী হয়ে উঠেছেন বিজ্ঞানীরা। বেশকিছু পরীক্ষায় ইতিবাচক ফলও মিলেছে। এই চিকিৎসাগ্রহণকারীরা বলছেন, তারা হতাশাপূর্ণ শারীরিক জটিলতা কাটিয়ে নতুন জীবনের দিশা পেয়েছেন। কারেন্ট অ্যাফেয়ার্সভিত্তিক সাইট ভাইস-এ প্রকাশিত নিবন্ধ অবলম্বনে লিখেছেন রুবাইদ ইফতেখার

কোভিড-পরবর্তী জটিলতায় প্রায় এক বছর মারাত্মক ভুগেছেন অ্যান্ড্রু ভাস। অবশেষে চিকিৎসকের পরামর্শে গাঁজার দ্বারস্থ হন তিনি। নির্দিষ্ট করে বললে ঔষধি গাঁজার ৫ শতাংশ ক্যানাবিডিওল (সিবিডি) ও ০.২ শতাংশ টেট্রাহাইড্রোক্যানাবিনোল (টিএইচসি) তাকে দেয়া হয়। এই ওষুধের সুফল ছিল তাৎক্ষণিক।

লন্ডনের ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে কাজ করেন ৪২ বছরের ভাস। এর আগে জীবনে মাত্র দুবার গাঁজা সেবন করেছেন। দুবারই তার প্রচণ্ড মাইগ্রেনের ব্যথা হয়েছিল। ফলে পথ্য হিসেবে এবার গাঁজার দাওয়াই পেয়ে শুরুতে সন্দিহান ছিলেন ভাস। তবে জটিলতা এড়াতে আর উপায়ও ছিল না।

কারেন্ট অ্যাফেয়ার্সভিত্তিক সাইট ভাইসকে ভাস বলেন, ‘আমার কোনো প্রত্যাশা ছিল না। কারণ একে আমি কখনও কোনো পথ্য বলে ভাবতাম না। ডাক্তারের সঙ্গে বেশ কয়েকবার কথা বলেছি। তৃতীয়বার আলোচনার পর আমি রাজি হই।’

চিকিৎসকের পরামর্শে গাঁজা সেবনের পর বিষয়টি নিয়ে ধারণা পালটে গেছে ভাসের।

তিনি বলছিলেন, ‘কোভিডে আমি বেশ জটিলতার মুখোমুখি হই। যা করতে চাইছিলাম, একদম পারছিলাম না। তবে গাঁজা সেবনের পর থেকে সমস্যাগুলো কেটে গেছে। আমি এখন শারীরিক জটিলতাগুলোকে পেছনে ফেলতে পারছি।’

কোভিড-পরবর্তী জটিলতা ও প্রভাবের চিকিৎসার জন্য ঔষধি গাঁজার কার্যকারিতা পরীক্ষার প্রাথমিক একটি ট্রায়ালে অংশ নেয়া মানুষদের একজন ভাস। এটি করোনাভাইরাসের ওপর গাঁজার প্রভাব বোঝার জন্য চলমান গবেষণাগুলোর একটি।

কোটি কোটি কোভিড আক্রান্তদের মধ্যে দীর্ঘ কোভিডে (লং কোভিড) ভোগেন প্রায় ১০ থেকে ৩০ শতাংশ মানুষ। এর উপসর্গের মধ্যে আছে ক্লান্তি, মাথাব্যথা, শ্বাসকষ্ট, পেশি দুর্বলতা, জ্বর ও জ্ঞানীয় কর্মহীনতা বা ‘মস্তিষ্কের অস্পষ্টতা’। এর কোনো সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই। কারও মধ্যে ১২ সপ্তাহের বেশি এ উপসর্গগুলো থাকলে তাকে কোভিডের ‘দীর্ঘ বাহক’ বলা হয়।

লং কোভিড চিকিৎসায় ‘অতুলনীয়’ গাঁজা
লং কোভিডের জটিলতা দূর করতে ব্যবহৃত হচ্ছে গাঁজার তেল

২০২০ সালের মার্চে ভাস কোভিডে আক্রান্ত হন। এক মাস পর তিনি লক্ষ করেন, তার শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। আগে তিনি রাতে আট ঘণ্টা ঘুমাতেন, সেটি কমে দুই ঘণ্টায় নেমে আসে। এরপর তার অ্যাসিড রিফ্লাক্স ও হাঁপানির আক্রমণ শুরু হয়।

সেপ্টেম্বরের পর তার পেশির ব্যথা শুরু হয়। পেশি হঠাৎ করেই সংকুচিত ও প্রসারিত হওয়া শুরু করে। ওই মাসেই তিনি প্রথমবারের মতো কোভিড-পরবর্তী অবসাদ ও ক্লান্তিতে পড়েন।

ভাস বলেন, ‘কোভিডের আগে আমি বেশ কর্মক্ষম ব্যক্তি ছিলাম। প্রচুর ফিটনেস ক্লাস ও এ রকম অনেক কিছুতে অংশ নিয়েছি। কোভিডের পর প্রতি রোববার আমি খুব সাধারণ একটা ব্যায়াম করার সিদ্ধান্ত নিই, কারণ অনেক দিন ধরে কোনো ব্যায়াম করিনি।

‘পরদিন বিছানা ছেড়ে উঠতেই আমার সমস্যা হচ্ছিল। পা মনে হচ্ছিল কনক্রিটের তৈরি। বিছানা থেকে গোসলখানা মাত্র ৪ মিটার দূরে। আমি সেটুকুও যেতে পারছিলাম না। কোনোমতে গোসলখানায় ঢুকে ঝরনার নিচের বসে ছিলাম। ছয় দিন বাসা থেকে বের হইনি। এরপর একরকম জোর করে বের হয়েছি।’

এ লক্ষণগুলো ওই বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। যুক্তরাজ্যের এক চিকিৎসক ভাসকে অনিদ্রার চিকিৎসা হিসেবে অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট অ্যামিট্রিপটাইলাইন খেতে বলেন। এটি কাজ করছিল। তবে দীর্ঘমেয়াদে সিন্থেটিক ফার্মাসিউটিক্যাল ওষুধ ব্যবহার করার ব্যাপারে অনাগ্রহী ছিলেন ভাস। পরে অস্ট্রেলিয়ার চিকিৎসক অঞ্জলি দিদি তাকে গাঁজা চিকিৎসার প্রস্তাব দেন।

এখন প্রতিদিন ঘুমাতে যাওয়ার ০.১ মিলিলিটারের গাঁজার তেল একটা সিরিঞ্জে নেন ভাস। তারপর তেলটি জিহ্বার নিচে রাখেন। এটা নেয়ার আধঘণ্টার মধ্যে তিনি ঘুমিয়ে পড়েন।

ভাস বলেন, ‘এটা ছাড়া আমি আর কোনো ওষুধ নিই না। শুধু রিফ্লাক্সের জন্য একটা ওষুধ খেতে হয়।’

আপাতত এ চিকিৎসা চালিয়ে যেতে চান ভাস।

যুক্তরাজ্যের এনএইচএস রিসার্চ ইথিকস কমিটি ও মেডিসিনস অ্যান্ড হেলথকেয়ার প্রোডাক্টস রেগুলেটরি সংস্থা গত মাসের শুরুতে ঘোষণা দেয়, লং কোভিডের জটিলতায় ভোগা রোগীদের চিকিৎসায় তারা গাঁজার ব্যবহার করতে যাচ্ছে। ওষুধ পরামর্শক কমিটিসংক্রান্ত বেসরকারি সংস্থা ড্রাগ সায়েন্সের করা গবেষণাটি ছয় মাস চলবে এবং ৩০ জন রোগীর ওপর এ পরীক্ষা চালানো হবে।

ট্রায়ালে প্রত্যেক অংশগ্রহণকারীকে একটি নন-সাইকোঅ্যাকটিভ গাঁজা তেলের ওষুধের দৈনিক ডোজ নির্ধারণ করে দেয়া হবে, যা মেডিকাবিলিস নামে পরিচিত। এটি তৈরি করেছে বিওডি অস্ট্রেলিয়া নামের একটি প্রতিষ্ঠান, তারা এ গবেষণাটিও পরিচালনা করছে। অংশগ্রহণকারীদের প্রতিদিন নিজেদের অবস্থা জানাতে হবে, স্বীকৃত দীর্ঘ কোভিড উপসর্গগুলোর মূল্যায়ন করতে হবে। আর চিকিৎসার কার্যকারিতা নির্ধারণে গবেষকরা সেসব ডেটা বিশ্লেষণ করবেন। ফল সন্তোষজনক হলে গবেষণাকে দৈবচয়ন ভিত্তিতে একটি বড় আকারের ট্রায়ালে পরিণত করা হবে। এই ট্রায়ালে যুক্তরাজ্যের অনেক রোগীকে যুক্ত করা হবে।

ড্রাগ সায়েন্সের প্রধান নির্বাহী ডেভিড ব্যাডকক বলেন, ‘লং কোভিড নিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে এবং সেটা খুব দ্রুত করতে হবে। গবেষণার মাধ্যমে আমরা সবচেয়ে কার্যকরী পদ্ধতিটি বের করতে পারব। এতে গাঁজার মতো ওষুধগুলোর কার্যকারিতাও পর্যালোচনা করা হবে। যুক্তরাজ্যে ২০১৯ সাল থেকে গাঁজা বৈধ। এর সম্বন্ধে এখনও মানুষের পরিষ্কার ধারণা নেই এবং চিকিৎসকেরা এটি খুব বেশি ব্যবহারের পরামর্শ দেন না।’

গত বছরের এপ্রিলে বায়োমলিকিউলার স্ট্রাকচার অ্যান্ড ডাইনামিকস জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা যায়, গাঁজায় থাকা ক্যানাবিনয়েড (সিবিডি) ও ক্যানাবিভারিন (সিভিএন) কোভিড-পরবর্তী জটিলতার চিকিৎসার অংশ হতে পারে। এর পরই বিজ্ঞানীরা গাঁজাকে কোভিড-পরবর্তী চিকিৎসার গুরুত্বপূর্ণ ভেষজ হিসেবে স্বীকৃতি দেন।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অফ অরেগনইউনিভার্সিটি অফ শিকাগোর দুটি গবেষণায় দেখা যায়, গাঁজায় বিদ্যমান অ্যাসিড মানবদেহে কোভিড বা সার্স কোভ টু রোগের জন্য দায়ী ভাইরাসের সংক্রমণে বাধা দিতে পারে। তবে পরীক্ষা দুটির কোনোটি মানুষের ওপর করা হয়নি।

অবশ্য এর মানে আবার এটা নয় যে গাঁজা খেলেই কেউ কোভিড থেকে সেরে উঠবেন বা তার কোভিড হবে না। গত বছরের জুনে বিজ্ঞানভিত্তিক পত্রিকা সাইকোলজি টুডেতে প্রকাশিত এক গবেষণায় লেখা হয়েছে, ‘ক্যানাবিনয়েডগুলোর কার্যকারিতা প্রমাণের জন্য আরও অনেক গবেষণা প্রয়োজন।’

মেডিকাবিলিসের পাশাপাশি গাঁজাভিত্তিক আরও কিছু ওষুধ নিয়ে গবেষণা চলছে।

গত বছরের নভেম্বরে ব্রাজিলের সাও পাওলো ইউনিভার্সিটি মেডিক্যাল স্কুলের হার্ট ইনস্টিটিউট, ইনকোর ঘোষণা দেয়, তারা গাঁজা কোম্পানি ভার্ডেমেড উৎপাদিত একটি ফার্মাসিউটিক্যাল-গ্রেড সিবিডি নির্যাস ব্যবহার করে লং কোভিডের চিকিৎসার গবেষণা পরিচালনা করবে।

ব্রাজিলের গবেষকরা দেখার চেষ্টা করছেন, দীর্ঘদিন ধরে কোভিডে আক্রান্তদের জীবনমানে গাঁজার তৈরি ওষুধটি উন্নতি ঘটাতে পারে কি না। আগামী এপ্রিলের মধ্যে তারা একটি উত্তর পেয়ে যাবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

গবেষণা দলটির প্রধান এদিমার বোক্কি ল্যাটিন অ্যামেরিকান বিজনেস স্টোরিজকে বলেন, ‘মহামারিসংক্রান্ত তথ্যের ওপর ভিত্তি করে প্রস্তাব করা হয়েছে, লং কোভিড উপসর্গগুলো পরবর্তী জনস্বাস্থ্য বিপর্যয় ঘটাতে যাচ্ছে। আমাদের গবেষণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এতে আগে কখনোই সিবিডির কার্যকারিতা পর্যালোচনা করা হয়নি।’

ইংল্যান্ডের শেফিল্ডের নিউরোহ্যাবিলিটেশন কনসালটেন্ট এলিজাবেথ আইভসনও বোক্কির সঙ্গে একমত। তিনি বলেন, ‘লং কোভিডের দীর্ঘমেয়াদি প্রভাবে ভুগতে থাকা অনেক রোগী এখন দেখা যাচ্ছে।’

এদের অনেকেই তরুণ, আগে সুস্থ-সবল এবং ভাসের মতো সুস্বাস্থ্যের অধিকারী ছিলেন। এখন তাদের হাঁটাচলা করতে সমস্যা হয়, দুর্বলতা ও উদ্বেগে ভোগেন। আইভসনের মতে, লং কোভিডের চিকিৎসায় গাঁজার প্রভাব নিশ্চিত করতে জরুরি ভিত্তিতে আরও ট্রায়াল করা প্রয়োজন।

আইভসন বলেন, ‘গাঁজা সেবনের পরামর্শ ও বিভিন্ন উপসর্গের সঙ্গে আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলা যায়, লং কোভিড রোগীদের চিকিৎসার অংশ হিসেবে ঔষধি গাঁজা কার্যকর হতে পারে। তবে এখনও এসব ওষুধের জোগান খুব সীমিত ও খরুচে।’

আইভসন লং কোভিডের মতো উপসর্গে ভুগতে থাকা রোগীর ওপর ঔষধি গাঁজার প্রভাব নিজেই দেখেছেন। যুক্তরাজ্যে তার প্রথম গাঁজা চিকিৎসার রোগী কাইল এসপ্লিন। তিনি অবশ্য কোভিড নয়, অন্য ক্রনিক ডিজিজে ভুগছিলেন।

স্কটল্যান্ডের শহর ফোরফারের বাসিন্দা ৪০ বছর বয়সী এসপ্লিন বলেন, ‘স্পেনের মায়োরকায় আমার একটি বাড়ি ছিল। পুরো বিশ্বে আমি ঘুরে বেড়াতাম এবং বিভিন্ন ক্রুজ শিপে শো করতাম। আমার জীবন চমৎকার ছিল।’

এরপর ২০১২ সালে তার শ্বাসতন্ত্রে ভাইরাল ইনফেকশন হয়। ছয় মাসের মধ্যে অবস্থা এত খারাপ হয়ে যায় যে তিনি বিছানায় পড়ে যান। পোস্ট-এক্সারশনাল ম্যালাইস নামের জটিলতায় পড়েন এসপ্লিন, যেটি প্রচণ্ড শ্রান্তির জন্ম দেয়।

তিনি বলেন, ‘এ থেকে সেরে ওঠার প্রক্রিয়া খুব কঠিন। চিকিৎসকদের কাছে এর কোনো প্রতিকার ছিল না। গাঁজার তেল গ্রহণ না করলে আমার মনে হয় না আমি আবার আগের শারীরিক সুস্থতা ও সক্ষমতা ফিরে পেতাম।’

ভাসের মতো এসপ্লিনও একাধিক চিকিৎসাপদ্ধতি গ্রহণ করেও কোনো সুফল পাননি। শেষ পর্যন্ত ঔষধি গাঁজা গ্রহণ শুরুর পর তিনিও এক সপ্তাহের মধ্যে কার্যকারিতা দেখতে পান।

এসপ্লিন বলেন, ‘সব উপসর্গ কমিয়ে এনেছিল গাঁজা চিকিৎসা। দুই মিনিট হাঁটার পর আমি আর পড়ে যাচ্ছিলাম না। কিছুটা শক্তিও পাচ্ছিলাম।’

লং কোভিডের প্রভাব হিসেবে অবসাদ ও অন্যান্য জটিলতার সাধারণ একটি নাম ক্রনিক ফ্যাটিগ সিনড্রোম (সিএফএস)। এ ক্ষেত্রে সিবিডি তেলের কার্যকারিতা নিয়ে খুব বেশি গবেষণা না হলেও দেখা গেছে, এর উপসর্গ নিয়ন্ত্রণে গাঁজার সাফল্য রয়েছে।

২০১৬ সালের এক গবেষণায় এটা দেখা গেছে, গাঁজানির্ভর চিকিৎসা মাইগ্রেন ও ফাইব্রোমায়ালজিয়ার (পেশির ব্যথা ও অবসাদজনিত রোগ) ক্ষেত্রে কার্যকর। ২০১৭ সালে আরেক গবেষণায় দেখা গেছে, সিবিডি অতিসংবেদনশীল স্নায়ু ব্যবস্থাপনার চিকিৎসায় সহায়তা করে। আরেক গবেষণায় দেখা গেছে, পেশির দুর্বলতা ও শারীরিক দুর্বলতার অন্যতম কারণ মাইটোকনড্রিয়াল ডিসফাংশন ও অক্সিডেটিভ স্ট্রেসকে এটি দূর করতে সক্ষম। ২০০৯ সালে করা একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, সিবিডি নানা ধরনের প্রদাহের বিরুদ্ধে লড়াই করতে ও শরীরে হোমিওস্ট্যাসিস বজায় রাখতে সাহায্য করতে পারে।

এপস্লিন এখন প্রতিদিন ঔষধি গাঁজা গ্রহণ করেন ও বাকি জীবন চালিয়ে যেতে চান। তিনি বলেন, ‘গাঁজাকে ওষুধ হিসেবে নেয়ার পর আমি কখনও অসুস্থ হইনি। এমনকি ফ্লু বা ঠান্ডাও লাগেনি।’

এ চিকিৎসার প্রভাব জীবনে কীভাবে পড়েছে তা বলতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন এপস্লিন।

ধরা গলায় বলেন, ‘ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। আমি ভাবতেও পারি না এ ওষুধ ছাড়া আমার জীবন কেমন হতো। যতটা সুস্থ হয়েছি এতটা হতে পারতাম না। জীবনে যা করতে ভালোবাসি ও উপভোগ করি সেগুলো করতে পারতাম না। আমি খুবই ভাগ্যবান এখন সেগুলোর প্রায় ৯০ শতাংশ করতে পারছি।’

অন্যদিকে ভাস বলেন, ‘লং কোভিডের বিষয়টি আগে কেউ শোনেননি। আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা হলো, চিকিৎসকদের এটা বিশ্বাস করাতেই কষ্ট হতো। তবে এখন লং কোভিডের বিষয়টি স্বীকার করা হচ্ছে।

‘গাঁজার ব্যবহার শারীরিকভাবে শুধু নয়, মানসিক দিক থেকে আমার নিজেকে পুনরায় গড়ে তুলতে সাহায্য করেছে।’

ভাস বলেন, ‘এটা সত্যিকারভাবেই আমার জীবন ফিরিয়ে দিয়েছে। আগে যেমন ছিল তার পুরোটা হয়তো নয়, তবে ৯০-৯৫ শতাংশ। অন্যদের ক্ষেত্রেও যদি একই ধরনের ফল আসে তাহলে আমার মতে সেটা হবে অসাধারণ।’

আরও পড়ুন:
স্বাস্থ্যে প্রশাসনের কর্মকর্তা চান না চিকিৎসকরা
নতুন ভ্যারিয়েন্ট আসতে পারে, প্রস্তুত হোন: স্বাস্থ্যমন্ত্রী 
সচেতনতার অভাবে গ্লুকোমায় অন্ধত্ব
বুস্টার ডোজের বিশেষ ক্যাম্পেইন শুরু শিগগিরই
‘নগরায়ণে বাড়ছে কিডনি রোগী’

মন্তব্য

আরও পড়ুন

জীবনযাপন
Corona has reduced the average life expectancy by one and a half years

করোনায় গড় আয়ু দেড় বছর কমেছে

করোনায় গড় আয়ু দেড় বছর কমেছে কোভিড বিশ্বব্যাপী মানুষের আয়ু কমিয়েছে দেড় বছর। ফাইল ছবি
গবেষক অস্টিন শুমাখার বলেছেন, ২০২০ থেকে ২০২১ সময়কালে ২০৪টি দেশ ও অঞ্চলের বিশ্লেষণে ৮৪ শতাংশে আয়ু হ্রাস পেয়েছে। এই সময়ে ১৫ বছরের বেশি মানুষের মৃত্যুর হার পুরুষদের জন্য ২২ শতাংশ এবং মহিলাদের জন্য ১৭ শতাংশ বেড়েছে।

কোভিড-১৯ মহামারির প্রথম দুই বছরে বিশ্বব্যাপী মানুষের গড় আয়ু ১ দশমিক ৬ বছর কমেছে।

একটি বড় গবেষণায় মঙ্গলবার এ কথা বলা হয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা বাসস।

যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক ইনস্টিটিউট ফর হেলথ মেট্রিক্স অ্যান্ড ইভালুয়েশনের (আইএইচএমই) তথ্য অনুসন্ধানকারী গবেষকদের মতে, এক দশক ধরে বিশ্বব্যাপী আয়ুষ্কাল বৃদ্ধির পর এটি এখন উল্টো দিকে ঘুরছে।

আইএইচএমই গবেষক এবং দ্য ল্যানসেট জার্নালে প্রকাশিত গবেষণার প্রধান লেখক অস্টিন শুমাখার বলেছেন, ‘বিশ্বব্যাপী প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য, কোভিড-১৯ মহামারিটি অর্ধ শতাব্দীতে সংঘাত এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ দেখা যেকোনো ঘটনার চেয়ে আরও গভীর প্রভাব ফেলেছে।’

তিনি একটি বিবৃতিতে বলেছেন, ২০২০ থেকে ২০২১ সময়কালে ২০৪টি দেশ ও অঞ্চলের বিশ্লেষণে ৮৪ শতাংশে আয়ু হ্রাস পেয়েছে, যা নতুন ভাইরাসগুলোর ‘বিধ্বংসী সম্ভাব্য প্রভাব প্রদর্শন করে।’

এই সময়ে ১৫ বছরের বেশি মানুষের মৃত্যুর হার পুরুষদের জন্য ২২ শতাংশ এবং মহিলাদের জন্য ১৭ শতাংশ বেড়েছে।

গবেষকরা অনুমান করেছেন, মেক্সিকো সিটি, পেরু এবং বলিভিয়ায় আয়ু সবচেয়ে বেশি কমেছে।

কিন্তু আইএইচএমইয়ের ল্যান্ডমার্ক গ্লোবাল বার্ডেন অফ ডিজিজ স্টাডির আপডেট করা হিসাবে কিছু ভালো খবর পাওয়া যায়।

২০১৯ সালের তুলনায় ২০২১ সালে পাঁচ বছরের কম বয়সী প্রায় অর্ধ মিলিয়ন কম শিশু মারা গেছে, যা শিশু মৃত্যুহারের দীর্ঘমেয়াদি পতন অব্যাহত রেখেছে।

আইএইচএমই গবেষক এই ‘অবিশ্বাস্য অগ্রগতি’কে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, বিশ্বকে এখন পরবর্তী মহামারি এবং বিভিন্ন দেশে স্বাস্থ্যের বিশাল বৈষম্য মোকাবেলার দিকে মনোনিবেশ করা উচিত। গবেষকরা বলেছেন, ১৯৫০ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে গড় আয়ু ২৩ বছর বেড়ে ৪৯ থেকে ৭২ বছর হয়েছে।

কোভিড ২০২০ থেকে ২০২১ সময়কালে সরাসরি ভাইরাস থেকে বা পরোক্ষভাবে মহামারী-সম্পর্কিত কারণে অতিরিক্ত ১৫.৯ মিলিয়ন লোকের মৃত্যু হয়েছে।

আরও পড়ুন:
২৪ ঘণ্টায় দেশে ৩৪ জনের করোনা শনাক্ত
করোনায় আরও একজনের মৃত্যু
করোনায় একজন মারা গেছেন
২৪ ঘণ্টায় আরও ১৩ জনের করোনা শনাক্ত
২৪ ঘণ্টায় ২২ জনের করোনা শনাক্ত

মন্তব্য

জীবনযাপন
Coronavirus The death toll in the world stood at 69 lakh 22 thousand

করোনায় বিশ্বে মৃত্যু ৬৯ লাখ ২২ হাজার

করোনায় বিশ্বে মৃত্যু ৬৯ লাখ ২২ হাজার ছবি: সংগৃহীত
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনাবিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তির তথ্য অনুযায়ী, দেশে সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে কারও মৃত্যু হয়নি। ওই সময় নতুন করে সাত জনের শরীরে এ ভাইরাসটি শনাক্ত হয়েছে।

বিশ্বে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৯ লাখ ২২ হাজার ৩৭২।

এদিকে সর্বশেষ বৈশ্বিক পরিসংখ্যান অনুসারে, মঙ্গলবার সকাল ১০টা পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৯ কোটি ৬০ লাখ ৫০ হাজার ৪৬ জন। খবর ইউএনবির

বিশ্বব্যাপী করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ৬৬ কোটি ৮০ লাখ ৬৬ হাজার ৫১৪ জন।

করোনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ যুক্তরাষ্ট্রে শনাক্তের সংখ্যা ১০ কোটি ৮৭ লাখ ৫৮ হাজার ৬০৫। এখন পর্যন্ত দেশটিতে মারা গেছে মোট ১১ লাখ ৭৭ হাজার ৭৯৩ জন। মৃত ও আক্রান্তের সংখ্যায় শীর্ষে রয়েছে দেশটি।

ভারতে এখন পর্যন্ত মোট শনাক্ত হয়েছে ৪ কোটি ৪৯ লাখ ৯৮ হাজার ৮৭৪। মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৩১ হাজার ৯৩০ জনে।

বাংলাদেশ পরিস্থিতি

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনাবিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তির তথ্য অনুযায়ী, দেশে সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে কারও মৃত্যু হয়নি। ওই সময় নতুন করে সাত জনের শরীরে এ ভাইরাসটি শনাক্ত হয়েছে।

এখন পর্যন্ত দেশে করোনায় ২৯ হাজার ৪৭৭ জনের মৃত্যু হয়েছে ও শনাক্তের সংখ্যা ২০ লাখ ৪৫ হাজার ৭৪১ জনে পৌঁছেছে।

আরও পড়ুন:
ফেনীতে সেপটিক ট্যাংক ভেঙে দুই শ্রমিকের মরদেহ উদ্ধার
চলে গেলেন উকিল আবদুস সাত্তার
লক্ষীপুর-৩ আসনের এমপি শাহজাহান কামালের মৃত্যু
গুলশানে বাসের ধাক্কায় নিহত নারীর পরিচয় মিলেছে
সেন্টমার্টিন যাওয়ার পথে স্পিডবোট ডুবে নারী ইউপি সদস্যের মৃত্যু

মন্তব্য

জীবনযাপন
Corona infection is increasing 61 people have been identified

বাড়ছে করোনার সংক্রমণ, ৬১ জনের দেহে শনাক্ত

বাড়ছে করোনার সংক্রমণ, ৬১ জনের দেহে শনাক্ত
গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তদের মধ্যে ৫৭ জনই ঢাকার বাসিন্দা, চারজন সিলেটের।

দেশে করোনাভাইরাসে সংক্রমণের নিম্নগতি ছিল, দৈনিক শনাক্তের হার ছিল এক শতাংশেরও নিচে। কিন্তু ফের ভাইরাসটি মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে।

গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষায় ৬১ জনের দেহে ভাইরাসটি শনাক্ত হয়। সংক্রমণের হার ৬ দশমিক ৫৭ শতাংশ।

শনিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রতিবেদনে জানানো হয়, ২৬ মে সকাল ৮টা থেকে ২৭ মে সকাল ৮টা পর্যন্ত ৯২৯টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এ সময়ে কারও মৃত্যু হয়নি।

এর আগে সর্বশেষ গত ২৮ মার্চ একজনের মৃত্যুর তথ্য দিয়েছিল অধিদপ্তর। সে হিসেবে দেশে এখন পর্যন্ত করোনায় মৃত্যু হয়েছে ২৯ হাজার ৪৪৬ জনের এবং ভাইরাসটি শনাক্ত হয়েছে ২০ লাখ ৩৮ হাজার ৮৯৮ জনের দেহে।

গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তদের মধ্যে ৫৭ জনই ঢাকার বাসিন্দা, চারজন সিলেটের।

এদিকে শুক্রবার শনাক্তের হার ছিল ৪ দশমিক ৩১ শতাংশ। বৃহস্পতিবার ৫ দশমিক ২৫ শতাংশ আর তার আগের দিন ছিল ৪ দশমিক ১৪ শতাংশ।

দেশে নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে মোট রোগী শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ২২ শতাংশ, শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯৮ দশমিক ৪০ শতাংশ এবং মৃত্যুহার ১ দশমিক ৪৪ শতাংশ।

দেশে ২০২০ সালের ৮ মার্চ প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত তিন রোগী শনাক্ত হবার কথা জানায় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান ( আইইডিসিআর)। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চে করোনাতে আক্রান্ত হয়ে প্রথম রোগীর মৃত্যু হয়।

করোনার বিভিন্ন ধরণের মধ্যে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে দেশে একদিনে ২০২২ সালের ২৮ জুলাই সর্বোচ্চ ১৬ হাজার ২৩০ জন রোগী শনাক্ত হয়।

২০২১ সালের ৫ ও ১০ আগস্ট একদিনে সর্বোচ্চ ২৬৪ জনের মৃত্যু হয়।

আরও পড়ুন:
১০ দিন পর করোনায় আবার মৃত্যু
করোনা শনাক্ত কমে ৪৮
মৃত্যুহীন দিনে করোনায় শনাক্ত ১৮৩
একদিনে করোনায় শনাক্ত ৯৪, মৃত্যু ১
করোনায় এক দিনে ৪ মৃত্যু

মন্তব্য

জীবনযাপন
Travelers returning from abroad in China will not need quarantine

চীনে প্রবেশে লাগবে না কোয়ারেন্টিন

চীনে প্রবেশে লাগবে না কোয়ারেন্টিন কোয়ারেন্টিনের বিধান তুলে নেয়ায় বেইজিং বিমানবন্দরে উচ্ছ্বসিত যাত্রীরা। ছবি: সংগৃহীত
২০২০ সালের মার্চ থেকে চীনে পৌঁছানোর পর দেশটির সরকারের অধীনে কোয়ারেন্টিনে থাকতে হতো বিদেশিদের। প্রথম দিকে এ কোয়ারেন্টিনের মেয়াদ ছিল তিন সপ্তাহ। গত গ্রীষ্মে সে সময় কমিয়ে এক সপ্তাহে আনা হয়। পরে নভেম্বরে তা আরও কমিয়ে পাঁচ দিন করা হয়।

করোনাভাইরাসের বৈশ্বিক মহামারি শুরুর প্রায় তিন বছর পর চীনে প্রবেশের পর কোয়ারেন্টিনের বিধিনিষেধ তুলে নিল দেশটির সরকার।

স্থানীয় সময় রোববার থেকে দেশটিতে ঢোকার পর আর কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে না বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

বিক্ষোভের মুখে গত মাসে কঠোর করোনা বিধি থেকে সরে আসে চীন। এর পর থেকেই দেশটিতে ভাইরাসটির সংক্রমণ বড় পরিসরে বাড়তে থাকে।

রয়টার্স জানায়, ২০২০ সালের মার্চ থেকে চীনে পৌঁছানোর পর দেশটির সরকারের অধীনে কোয়ারেন্টিনে থাকতে হতো বিদেশিদের। প্রথম দিকে এ কোয়ারেন্টিনের মেয়াদ ছিল তিন সপ্তাহ। গত গ্রীষ্মে সে সময় কমিয়ে এক সপ্তাহে আনা হয়। পরে নভেম্বরে তা আরও কমিয়ে পাঁচ দিন করা হয়।

করোনার কঠোর বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার পরই চীনের জনগণ জনপ্রিয় ভ্রমণ ওয়েবসাইটগুলোতে বিদেশে ভ্রমণ নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করেন, তবে এক ডজনেরও বেশি দেশ চীন থেকে আসা যাত্রীদের ওপর বাধ্যতামূলক কোভিড পরীক্ষাসহ নানা বিধিনিষেধ আরোপ করে। এ পদক্ষেপকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে আখ্যা দিয়েছে বেইজিং।

চান্দ্র নববর্ষের ছুটিতে চীনে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।

আরও পড়ুন:
তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে চীনা নাগ‌রি‌কের মৃত্যু
চীনে করোনার দৈনিক হিসাব প্রকাশ বন্ধ
করোনা সংক্রমণ বাড়লেও চীনের সঙ্গে চালু থাকছে ফ্লাইট
সামাজিক মাধ্যমে ছড়ানো তথ্যে চীনে ‘করোনা আক্রান্ত ২৫ কোটি’
করোনা: চীনের সমাধিতে দুই ঘণ্টায় ৪০ মরদেহ

মন্তব্য

জীবনযাপন
New strain of corona BF Dotseven in Bangladesh

করোনার নতুন উপধরন বিএফ ডটসেভেন বাংলাদেশে

করোনার নতুন উপধরন বিএফ ডটসেভেন বাংলাদেশে
আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক তাহমিনা শিরীন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘একজন চীনা নাগরিকের শরীরে ওমিক্রনের নতুন উপধরন বিএফ ডটসেভেন শনাক্ত হয়েছে। তবে তিনি ভালো আছেন।’

চীন থেকে বাংলাদেশে আসা দেশটির এক নাগরিকের শরীরে করোনাভাইরাসের নতুন উপধরন বিএফ ডটসেভেন শনাক্ত হয়েছে।

রোববার দুপুরে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) জানিয়েছে, ওই চারজনের করোনা পরীক্ষার পর একজনের শরীরে উপধরনটি শনাক্ত হয়েছে।

বিএফ ডটসেভেন করোনাভাইরাসের ওমিক্রন ধরনের নতুন উপধরন।

আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক তাহমিনা শিরীন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘একজন চীনা নাগরিকের শরীরে ওমিক্রনের নতুন উপধরন বিএফ ডটসেভেন শনাক্ত হয়েছে। তবে তিনি ভালো আছেন।’

এর আগে গত ২৬ ডিসেম্বর চীন থেকে আসা দেশটির চার নাগরিকের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়। চীন থেকে তারা কোভিড নেগেটিভ সনদ সঙ্গে এনেছিলেন। তবে বাংলাদেশে র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষায় তাদের শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত হয়।

সম্প্রতি চীনে আবার করোনার সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে। এ নিয়ে বিশ্বজুড়ে উদ্বেগের মধ্যে রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আবার চীনসহ কয়েকটি দেশ থেকে আসা যাত্রীদের করোনা পরীক্ষা শুরু হয়েছে।

আরও পড়ুন:
করোনায় এক দিনে ৪ মৃত্যু
মৃত্যুশূন্য দিনে শনাক্ত ১৯৬
একদিনে করোনা শনাক্ত ১৮৫, মৃত্যু ১
করোনায় আরও ৬ মৃত্যু, শনাক্ত হার ৬.৯৭
একদিনে করোনা শনাক্ত ৪৫৬, মৃত্যু ২

মন্তব্য

জীবনযাপন
The publication of the daily account of Corona is stopped in China

চীনে করোনার দৈনিক হিসাব প্রকাশ বন্ধ

চীনে করোনার দৈনিক হিসাব প্রকাশ বন্ধ চীনের হাসপাতালগুলোতে করোনা আক্রান্ত রোগী বাড়ছে। ছবি: এপি
চীনের ন্যাশনাল হেলথ কমিশন গত তিন বছর ধরেই প্রতিদিন করোনা আক্রান্তের হিসাব প্রকাশ করে আসছিল, তবে রোববার থেকে এ তথ্য আর প্রকাশ হবে না বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

বিক্ষোভের মুখে বিধিনিষেধ শিথিলের পর চীনে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ হু হু করে বাড়ছে বলে খবর প্রকাশ করছে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম। এর মধ্যেই দেশটিতে দৈনিক করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা প্রকাশ বন্ধ করা হলো।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, চীনের ন্যাশনাল হেলথ কমিশন (এনএইচএস) গত তিন বছর ধরেই প্রতিদিন করোনা আক্রান্তের হিসাব প্রকাশ করে আসছিল, তবে রোববার থেকে এ তথ্য আর প্রকাশ হবে না বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

বিবৃতিতে এনএইচএসের পক্ষ থেকে বলা হয়, রেফারেন্স ও গবেষণার জন্য করোনাসংশ্লিষ্ট তথ্য চীনের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন সেন্টার প্রকাশ করবে।

কী কারণে করোনার দৈনিক হিসাব প্রকাশ বন্ধ করা হলো, তা নিয়ে এনএইচএসের পক্ষ থেকে কিছু জানানো হয়নি।

ব্লুমবার্গ ও ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের বরাত দিয়ে সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি মাসের প্রথম ২০ দিনে চীনে ২৫ কোটি মানুষ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে থাকতে পারেন বলে আশঙ্কা করছেন দেশটির শীর্ষ স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা।

ওই প্রতিবেদন সঠিক হলে চীনের ১৪০ কোটি জনগণের প্রায় ১৮ শতাংশই চলতি মাসে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে, তবে সিএনএন এই দাবির সত্যতা যাচাই করতে পারেনি।

আরও পড়ুন:
করোনা: চীনা ভ্যারিয়েন্টে সতর্ক ভারত
অরুণাচল সীমান্তে ভারত- চীন সেনাদের সংঘর্ষ, কয়েকজন আহত
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে জাপান-চীনের বিদায়ী রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ
কোট পরলেই হ্যারি পটারের মতো অদৃশ্য
করোনায় ১ মৃত্যু, শনাক্ত ৩২

মন্তব্য

জীবনযাপন
Corona 40 dead bodies in two hours in Chinese tombs

করোনা: চীনের সমাধিতে দুই ঘণ্টায় ৪০ মরদেহ

করোনা: চীনের সমাধিতে দুই ঘণ্টায় ৪০ মরদেহ চীনের হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী। ছবি: এএফপি
চীন সরকারের নতুন নিয়ম অনুযায়ী, করোনায় মৃত্যুর তালিকায় তাদেরই অন্তর্ভুক্ত করা হবে, যারা করোনা পজিটিভ ছিলেন এবং শ্বাসকষ্টে মারা গেছেন।

চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় চংকিংয়ের পিপল হাসপাতাল। চীনে করোনাভাইরাসের ব্যাপক সংক্রমণের খবরের মধ্যে শুক্রবার স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানটিতে যান এএফপির এক প্রতিবেদক। সেখানে রোগীর চাপে বারান্দাকে বানানো হয়েছে অস্থায়ী করোনা ওয়ার্ড।

হাসপাতালটিতে প্রতিরক্ষামূলক গিয়ারে থাকা এক কর্মী ‘মৃত, মৃত’ বলে চিল্লাতে চিল্লাতে এক নার্সের হাতে ডেথ সার্টিফিকেট বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন।

একটি কক্ষে প্রায় ৪০ জন বৃদ্ধ ও মধ্যবয়স্ক ব্যক্তি হাতে স্যালাইন লাগানো অবস্থায় ছিলেন, যাদের মধ্যে কেউ কেউ দিচ্ছিলেন কাশি।

হাসপাতালের এক নার্স এএফপিকে জানান, ওয়ার্ডের সবাই করোনা রোগী।

ওই কক্ষটির পাশেই নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটের (আইসিইউ) বিছানায় শুয়ে ছিলেন তিন রোগী।

হাসপাতালটির জরুরি বিভাগেও ৫০ জনের সারি দেখা যায়, যাদের মধ্যে অনেকে করোনা রোগী। সেখানে থাকা একজন জানান, তারা এক ঘণ্টার বেশি ধরে অপেক্ষা করছেন।

চংকিংয়ের আরেকটি হাসপাতালের জরুরি বিভাগেও একই চিত্র দেখা যায়। সেখানে ৩০ জন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিকে হাতে স্যালাইন লাগানো অবস্থায় দেখা গেছে। তাদের মধ্যে অনেকেই কৃত্রিম উপায়ে শ্বাস নিচ্ছিলেন, অনেকের হাতে পালস অক্সিমিটার লাগানো ছিল।

হাসপাতালটির এক পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও এক নার্স এএফপিকে জানান, সরকার করোনার বিধিনিষেধ শিথিলের পর প্রতিদিন বেশ কয়েকজন মারা যাচ্ছেন।

মৃত ব্যক্তিরা সবাই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কি না, তা নিশ্চিত করে বলতে পারেননি হাসপাতালটির কর্মীরা।

এএফপির প্রতিবেদকের চোখে করোনাভাইরাসের যে চিত্র ধরা পড়েছে, তার সঙ্গে মিলছে না দেশটির সরকারের দেয়া মৃত্যুর হিসাব।

করোনাভাইরাসে মৃত্যুকে নতুন করে সংজ্ঞায়িত করেছে চীন। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, করোনায় মৃত্যুর তালিকায় তাদেরই অন্তর্ভুক্ত করা হবে, যারা কোভিড পজিটিভ ছিলেন এবং শ্বাসকষ্টে মারা গেছেন।

‘বেশির ভাগের মৃত্যু করোনায়’

এএফপির টিম বৃহস্পতিবার একটি সমাধি পরিদর্শন করে, যেখানে দুই ঘণ্টায় ৪০টি মরদেহ নামানো হয়। মৃত ব্যক্তিদের স্বজনরা জানান, তাদের বেশির ভাগের মৃত্যু হয় করোনায়।

এক নারী জানান, তার বৃদ্ধ আত্মীয় ঠান্ডাজনিত উপসর্গে ভুগছিলেন। তার করোনা পরীক্ষার ফল নেগেটিভ আসে, কিন্তু অবস্থা খারাপ হওয়ার পর সময়মতো অ্যাম্বুলেন্স না পাওয়ায় মৃত্যু হয়।

২০ বছর বয়সী আরেক নারীর শঙ্কা, তার বাবাও করোনায় মারা গেছেন, যদিও পরীক্ষা করানো হয়নি।

আরও পড়ুন:
কোট পরলেই হ্যারি পটারের মতো অদৃশ্য
করোনায় ১ মৃত্যু, শনাক্ত ৩২
বিক্ষোভের মুখে কঠোর করোনাবিধি থেকে সরল চীন
সৌদি-যুক্তরাষ্ট্র দূরত্বের মধ্যে রিয়াদ যাচ্ছেন চীনের প্রেসিডেন্ট
রাশিয়া-ইউক্রেনের মতো বিপর্যয় এড়িয়ে চলা উচিত: চীনের রাষ্ট্রদূত

মন্তব্য

p
উপরে