× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য ইভেন্ট শিল্প উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ কী-কেন ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও ক্রিকেট প্রবাসী দক্ষিণ এশিয়া আমেরিকা ইউরোপ সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ শারীরিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্য যৌনতা-প্রজনন অন্যান্য উদ্ভাবন আফ্রিকা ফুটবল ভাষান্তর অন্যান্য ব্লকচেইন অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

জীবনযাপন
Hear stories of motherhood and perseverance from Naomi Campbell
google_news print-icon

মাতৃত্ব আর দৃঢ়তার গল্প শুনুন নাওমি ক্যাম্পবেলের কাছে

নাওমি ক্যাম্পবেল
কন্যাসন্তান নিয়ে ব্রিটিশ ভোগের প্রচ্ছদে সুপার মডেল নাওমি ক্যাম্পবেল। ছবি: ভোগ
নাওমি বলেন, “ম্যান্ডেলা আমাকে একটি কথা বলেছিলেন, সেটি আমি সব সময় মনে রাখি। তিনি বলেছিলেন, ‘তখনই ঘুমাব, যখন আমি চলে যাব। যতক্ষণ বেঁচে আছি ও শক্তি আছে আমি কাজ করে যাব।”

ব্রিটিশ সুপার মডেল নাওমি ক্যাম্পবেল মা হয়েছেন সম্প্রতি। নতুন মা হওয়ার পরও আগের মতোই ব্যস্ত ৫১ বছর বয়সী এ তারকা। দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন মিলান, লন্ডন, প্যারিসের নামিদামি সব ফ্যাশন শো। কাজ করছেন বিশ্বসেরা ব্র্যান্ডগুলোর সঙ্গে। ৯ মাস বয়সী মেয়েকে সামলে নাওমি কীভাবে পেশাগত কাজ সমানতালে করে যাচ্ছেন, সেটি জানতেই তার মুখোমুখি হয়েছিল বিশ্বখ্যাত ফ্যাশন ও লাইফস্টাইল ম্যাগাজিন ভোগ। ভোগে নাওমি ক্যাম্পবেলের ব্যস্ত দিনলিপি নিয়ে লিখেছেন সারাহ হ্যারিস। আর সেটি অবলম্বনে নিউজবাংলার পাঠকদের জন্য লিখেছেন রুবাইদ ইফতেখার

নাওমি দেরি করে ফেলেছেন। ৩৪ দিন, ২ ঘণ্টা, ১৫ মিনিট দেরি। ঠিক এতটা সময় আগে তার সঙ্গে আমাদের দেখা হওয়ার কথা ছিল। এখন যখন দেখা হচ্ছে, তখন নাওমি কাতার থেকে লন্ডনগামী এক ফ্লাইটে। আমাদের জন্য তিনি নিজের ব্যস্ত ও কোলাহলপূর্ণ জীবন থেকে এটুকু সময়ই বরাদ্দ করতে পেরেছেন। বিমানের ওয়াই-ফাইয়ের ওপর ভরসা করতে হচ্ছে আমাদের। এ কারণে তার সঙ্গে ভিডিও কল করাও সম্ভব হয়নি।

তবে আমাদের ফটোগ্রাফার স্টিভেন মেইজেল ভোগের জন্য তার যে ফটোশুট করেছেন, সেসব ছবি দেখার পর নাওমিকে আমার সামনাসামনি না দেখলেও চলবে। ৫১ বছর বয়সেও নাওমি এক দেবীর মতো। নিঁখুত ত্বক, অসাধারণ চুল ও অবিশ্বাস্য চেকনাই ধারালো দেহ।

মাতৃত্ব আর দৃঢ়তার গল্প শুনুন নাওমি ক্যাম্পবেলের কাছে

বিমান থেকে কথা বলার সময় যে বিষয়টি সার্বক্ষণিক বোঝা গেছে তা হলো, ৯ মাসের মেয়েকে নিয়ে কথা বলার সময় তার মাতৃত্ববোধ। নাওমির মেয়ে তার সঙ্গেই ছিল এবং অবাক করার মতো বিষয় হলো, আমাদের কলের সময় সে একদম চুপচাপ ছিল।

নাওমি গর্বভরে বললেন, ‘আমি খুব ভাগ্যবান যে ও আমার সঙ্গে ঘুরতে ভালোবাসে। টেক-অফ বা ল্যান্ডিংয়ের সময় এতটুকু বিরক্ত করে না। খুব ভালো মেয়ে। ঠিকঠাক ঘুমায়। একেবারেই কান্নাকাটি করে না। বয়সের তুলনায় ও খুবই বুদ্ধিমান। কিছুদিন হলো হাত নাড়ানো শিখেছে। খুবই মজার। অনেক হাসে। আর অল্প কয়দিনের মধ্যেই কথা বলা শুরু করবে।

‘আমার মনে হয় হামাগুড়ি দেয়ার আগেই সে হাঁটা শুরু করবে। ওর এরই মধ্যে ছয়টি দাঁত উঠে গেছে। দাঁত নিয়েও একদম কোনো বিরক্ত করে না।’

সত্যিই আদর্শ ও একটা শিশু। এক সুপার মডেলের আদর্শ শিশু।

২০২১ সালের মে মাসে নাওমি তার ও ছোট কন্যাশিশুর ছবি ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করে মা হওয়ার ঘোষণা দেন। ছবিতে মেয়ের ছোট্ট তুলতুলে পা নিজের হাতে ধরে রেখেছিলেন। মেয়ের জন্মের বিস্তারিত এখনও কাউকে জানাননি তিনি।

এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি নিশ্চিত করেন, ‘ও দত্তক নেয়া নয়। ও আমার মেয়ে।’

বাকিটুকু নিজের বইয়ে বিস্তারিত লিখবেন বলে জানান নাওমি। বইয়ের কাজ এখনও শুরু করেননি, মেয়ের নামও কাউকে জানাননি। খুব কম মানুষই জানতেন, নাওমি মাতৃত্বের পরিকল্পনা করছেন।

তিনি বলেন, ‘ওর জন্মের খবর জানতেন এমন মানুষের সংখ্যা একবারে হাতেগোনা। তবে ও আমার জীবনের সবচেয়ে বড় আশীর্বাদ। আমার জীবনে ঘটে যাওয়া সেরা বিষয়।’

নাওমি তার জীবনের আনন্দের এ উৎসকে ভোগের প্রচ্ছদে নিয়ে এসেছেন। ক্যামেরার সামনে শিশুটি ছিল একেবারে স্বাভাবিক।

মাতৃত্ব আর দৃঢ়তার গল্প শুনুন নাওমি ক্যাম্পবেলের কাছে

নাওমি বলেন, ‘ও আলো খুব পছন্দ করে। সবার দিকে তাকাচ্ছিল। ও মানুষের চোখের দিকে অনেকক্ষণ তাকিয়ে থাকে। সবকিছু বোঝার চেষ্টা করে।’

অবাক করার মতো বিষয় ছিল, স্টিভেন মেইজেল তার অন্যতম কাছের বন্ধু ও সহকর্মী। নাওমি তাকে ১৬ বছর বয়স থেকে চেনেন। তবে এবার তার সঙ্গে ভোগের ফটোশুট করার সময় নাওমি নার্ভাস হয়ে পড়েছিলেন।

তিনি বলেন, ‘স্টিভেনের সঙ্গে কাজ করতে গেলে আমি সব সময় নার্ভাস হয়ে পড়ি। আমি অনেক বেশি মনোযোগ দেয়ার চেষ্টা করি। চেষ্টা করি নতুন কিছু একটা ঘটাতে। স্টিভেনের চোখে নতুন কিছু পড়তে এবং তার নির্দেশনা বুঝে শতভাগ দিতে আমি চেষ্টা করি।’

১৯৮৯ সালের ডিসেম্বরে নিউ ইয়র্কে প্রথম দেখা দুজনের। সে স্মৃতি এখনও নাওমির মনে উজ্জ্বল।

তিনি বলেন, ‘আমি অ্যাপলো স্টুডিওতে ঢোকার পরই তাকে দেখি। সঙ্গে সঙ্গে আমার মনে হয় মানুষটা কী দারুণ! সে সত্যিই ভেতরে ও বাইরে একজন সুন্দর মানুষ। খুব বুদ্ধিমান ও সপ্রতিভ। স্টিভেন আমার কাছে পরিবারের মতো।’

চলতি মৌসুমে নাওমি প্যারিস, মিলান ও লন্ডনে ভারসাচে, আলেক্সান্ডার ম্যাককুইন, বালমেইন ও ল্যানভিনের হয়ে র‍্যাম্প করেছেন। এখনও ফ্যাশন শোতে অংশ নেয়া উপভোগ করেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘আমি এখনও মজা পাই, কিন্তু খুব নার্ভাস লাগে! আমার বয়স এখন ৫১। আর আমি যে মেয়েগুলোর সঙ্গে র‍্যাম্পে হাঁটছি তাদের বয়স ১৮।’

অতীত বা বর্তমানে কেউ-ই নাওমির মতো র‍্যাম্পে হাঁটেননি। পুরোটাই যেন তার নখদর্পণে। আগের দিনের সঙ্গে এখনকার সময়ের তুলনাও করলেন এ সুপার মডেল। নিজের স্বর্ণযুগের বান্ধবী ও প্রতিদ্বন্দ্বী অন্য তিন সুপার মডেল লিন্ডা এভানজেলিস্তা, সিন্ডি ক্রওফোর্ড ও ক্রিস্টি টার্লিংটনের কথা বললেন নাওমি।

বলেন, “অবশ্যই এখনও ভালো লাগে। বিশেষ করে যখন আমার বান্ধবীদের সঙ্গে অংশ নিচ্ছি। একই সঙ্গে এ বয়সে তরুণদের সঙ্গে অংশ নিতে পারাটা দারুণ। তবে বেশ কয়েকটি শোতে আমার মনে হয়েছে আমি ওদের বলি, ‘আরে মেয়ে! কী করছ! দ্রুত হাঁটো। এত ধীরে হাঁটছ কেন?’ তবে আমার সময়টা আনন্দময় ছিল। আমরা হাসাহাসি করেছি। আমাদের ব্যক্তিত্বের দিকগুলো তুলে ধরতে পেরেছি।”

নাওমি, লিন্ডা, সিন্ডি ও ক্রিস্টি এ চার গ্ল্যামারাস, উচ্চাকাঙ্ক্ষী ও জেনেটিক্যালি নিখুঁত নারী তাদের সময়ে ফ্যাশনকে পাল্টে দিয়েছিলেন। তাদের অবস্থান ও খ্যাতি এত শক্তিশালী ছিল যে, বিখ্যাত যে সব ব্র্যান্ডের জন্য তারা কাজ করতেন সেগুলোর চেয়ে তাদের নাম অনেক সময় বড় হয়ে উঠত।

নাওমি বলেন, ‘অবিশ্বাস্য একটা সময় ছিল। আমরা অনেক কষ্ট করেছি। যত শো থাকুক, যতবারই পোশাক বদলাতে হোক না কেন, আমরা কখনও বলিনি যে ক্লান্ত লাগছে। আমরা সবাই কাজটিকে ভালোবাসতাম এবং একে অপরকে চাঙা রাখতাম।

‘এমন সময় ছিল যখন একদিনে আমরা আটটি শো করেছি। এরপর সন্ধ্যায় ডিজাইনারের সঙ্গে উদযাপন করেছি। আমি ভাবি, এখনকার মডেলরা আমাদের সঙ্গে পেরে উঠতেন কিনা।’

মাতৃত্ব আর দৃঢ়তার গল্প শুনুন নাওমি ক্যাম্পবেলের কাছে

তিন দশকের বেশি সময় পর তারা এখনও বন্ধু। নাওমি জানালেন, তাদের একটা চ্যাট গ্রুপ আছে। তার মেয়ে যখন মাত্র কয়েক দিনের তখন সিন্ডি ক্রওফোর্ড প্রথম দেখা করেন। ক্রিস্টি টার্লিংটনের সঙ্গে নাওমির মেয়ের দেখা হয় যখন ওর বয়স সপ্তাহ দুয়েক। আর লিন্ডা এভানজেলিস্তা এখনও ওকে দেখেননি।

এই চারজন এখন কাজ করছেন অ্যাপল টিভি প্লাসের ডকুমেন্টারি সিরিজ ‘দ্য সুপারমডেলস’ নিয়ে। এর পরিচালক অস্কারজয়ী পরিচালক বারবারা কোপল। সিরিজে এই চার মডেলের ৯০ দশকের রাজত্ব মনে করিয়ে দেয়া হবে। রন হাওয়ার্ডের সঙ্গে চারজনই সিরিজটির নির্বাহী প্রযোজকের ভূমিকায় আছেন।

সিরিজ নিয়ে নাওমি বলেন, ‘এটা আমাদের চার জনের জীবন, ক্যারিয়ার, নারীত্ব ও মাতৃত্ব নিয়ে। মডেল হিসেবে আমাদের নিজের ইমেজের স্বত্ব আমাদের কাছে থাকে না। যে কারণে আমাদের নিজেদের মতো করে নিজেদের গল্প বলতে পারাটা আনন্দের।’

দক্ষিণ লন্ডনের স্ট্রেদমে নারীবেষ্টিত পরিবেশে বেড়ে উঠেছেন নাওমি। তার মা ভ্যালেরি মরিস-ক্যাম্পবেল একজন নৃত্যশিল্পী ছিলেন, যিনি বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় পারফরম করতেন।

নাওমি জানান, তার বেড়ে ওঠার সময় পারিবারিক সহায়তা পেয়েছেন। খালারা তাকে মিলান ও প্যারিসে বিভিন্ন কাজের জন্য উৎসাহ দিতেন। পরিবারের প্রধান ছিলেন তার প্রিয় নানি জ্যামাইকান।

তিনি বলেন, ‘নানিই আমাকে রান্না করা ও ঘর পরিষ্কারের কাজ শিখিয়েছেন। স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পর আমার জুতা ও নাচের পোশাক পরিষ্কার করতাম। শৃঙ্খলা আমার মতে খুবই জরুরি। আমার বেড়ে ওঠার সময় সেটা ছিল এবং আমিও এ রকমটাই চাইব।’

তিনি ১২ বছর বয়স পর্যন্ত বারবারা স্পিক স্টেজ স্কুলে পড়াশোনা করেন। সেখানে নাচ ও নাটক ছাড়াও বক্তৃতা দেয়ার প্রশিক্ষণ পান। এক কথায়, যে ধরনের শিক্ষা একটি তরুণ মেয়েকে তীব্র প্রতিযোগিতামূলক শিল্পে আত্মবিশ্বাসী করে তুলতে পারে সেগুলো তিনি পান এ স্কুলে।

নাওমি বলেন, ‘আমি দৃঢ়চেতা নারীদের পরিবার থেকে এসেছি। পরিবার ও আমার স্কুলে শিখেছি, কীভাবে নিজেকে রক্ষা করতে হয় এবং নিজের অধিকারের জন্য ঘুরে দাঁড়াতে হয়।’

সামাজিক বিভিন্ন বৈষম্যের বিরুদ্ধে নিবেদিত থাকা, নিজের ও অন্যদের পক্ষে দ্বিধাহীনভাবে কথা বলা, পরিবর্তনের শক্তি হয়ে ওঠা এবং বৈচিত্র্যহীনতার অভাবে ভুগতে থাকা একটি শিল্পে কৃষ্ণাঙ্গদের অংশগ্রহণ বাড়ানোর পক্ষে তার দীর্ঘদিনের ভূমিকার পেছনে কারণও এটি।

৯০-এর দশক থেকেই অচেনা ডিজাইনার ও ফ্যাশন পত্রিকার সম্পাদকদের বিষয়ে তিনি কোনো বাছবিচার করতেন না। নাওমি বলেন, ‘যারাই ফোন ধরতেন তাদেরই কল দিতাম। কোনো অভিযোগ করার জন্য নয়, মানুষকে সচেতন করে তোলার জন্য।’

তিনি নিজে থেকেই জানান, তার কোম্পানি উইমেন ম্যানেজমেন্টের এজেন্ট আকিম রাসুল একজন কৃষ্ণাঙ্গ। রাসুলের সঙ্গে মিলে নেওমি চান আফ্রিকা, ভারত ও মধ্যপ্রাচ্যের মতো নতুন বাজারগুলোর উদীয়মান তরুণ প্রতিভাবাদের সঙ্গে কাজ করতে। তাদের জন্য একটা প্ল্যাটফরম তৈরি করতে চান তিনি।

আডুট আকেচ ও উগবাদ আবদির মতো এখনকার দারুণ সফল কৃষ্ণাঙ্গ মডেলদের কাছে তিনি অনেকটা মাতৃসুলভ এক ব্যক্তিত্ব। আকেচ ও আবদির মতো আফ্রিকান মডেলরা বর্তমানে ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রি দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। একই সঙ্গে তারা সৌন্দর্যের ধারণাও বদলে দিচ্ছেন।

নাওমির কী ধারণা? তাদের সময়ে এমন পরিবর্তন সম্ভব ছিল?

উত্তরে তিনি বলেন, ‘সবার যাত্রাপথ লেখা থাকে। আমার যাত্রা এটা, এভাবেই এটা লেখা ছিল। তবে হ্যাঁ, অনেকবারই এমন হয়েছে, আমি র‍্যাম্পে হেঁটেছি কিন্তু আমাকে বিজ্ঞাপনে পরে আর নেয়া হয়নি। তখন কষ্ট পেতাম। অনেক কষ্ট পেতাম। এগুলোকে আমাদের টপকে এগিয়ে যেতে হবে। এখনকার মতো তখন যদি আমি সমর্থন পেতাম তাহলে দারুণ হতো। তবে এখন যা হচ্ছে সেটার জন্য আমি গর্বিত।

‘ভিন্নতা দেখতে পেয়ে আমি গর্বিত। তবে আমি আন্তরিকভাবেই বলছি, আমরা এখন কোনো ট্রেন্ড তৈরির চেষ্টায় নেই। অনেক কোম্পানিই বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে, কারণ তারা আলোচনার বাইরে থাকতে চায় না। আমি বলব, এভাবে কাজ করার দরকার নেই। এটা যে সঠিক সেটা বুঝে কাজ করা উচিত। সেটি অর্জনে এখনও দীর্ঘ পথ বাকি।’

মাতৃত্ব আর দৃঢ়তার গল্প শুনুন নাওমি ক্যাম্পবেলের কাছে

আগের মতোই নাওমি কাজের ক্ষেত্রে নিরলস। গত সেপ্টেম্বরে, তিনি দ্য কুইন্স কমনওয়েলথ ট্রাস্টের বৈশ্বিক দূতের দায়িত্ব নেন। তার কাজের মধ্যে রয়েছে দাতব্য সংস্থাটির তহবিল সংগ্রহের চেষ্টাকে সাহায্য করা এবং এর তরুণ অধিকারকর্মীদের প্রচারের আলোয় নিয়ে আসা।

নাওমি এ প্রসঙ্গে বলেন, “ম্যান্ডেলা আমাকে একটি কথা বলেছিলেন, সেটি আমি সবসময় মনে রাখি। তিনি বলেছিলেন, ‘তখনই ঘুমাব যখন আমি চলে যাব। যতক্ষণ বেঁচে আছি ও শক্তি আছে আমি কাজ করে যাব।”

মা হওয়ার পর নাওমি কাজ করার নতুন উদ্যোম ও শক্তি পাচ্ছেন বলে জানালেন।

তিনি বলেন, ‘আমি ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার আন্দোলনের সমর্থক। যে কোনো ইতিবাচক পরিবর্তনের প্রতি আমার সমর্থন আছে। এ সমস্যাগুলো যতদিন ধরে আছে আমি তার চেয়ে বেশিদিন ধরে এ নিয়ে কথা বলছি। আমার জন্য এটি নতুন কিছু নয়।’

জীবনে সন্তান আসার পর এই পরিবর্তনগুলো ঘটানোর জন্য আরও কারণ খুঁজে পাচ্ছেন নাওমি।

বলেন, ‘আমি জানতাম কোনো একদিন মা হব। আমি ভাবতেও পারিনি বিষয়টি এত আনন্দের। আমি জানি, ওকে পেয়ে আমি কতটা ভাগ্যবান।’

নাওমির উদ্যোম এতটাই যে, তার ও তার মেয়ের মধ্যে যে ৫০ বছরের ব্যবধান সেটি একেবারেই বোঝা যায় না। নাওমি মাত্র কয়েক ঘণ্টা ঘুমিয়েই তরতাজা থাকতে পারেন ও কর্মশক্তির দিক থেকে হয়ত এখনও ২০ বছর বয়সী যে কাউকে হারিয়ে দিতে পারেন। তিনি এখন তার বয়সী সব বন্ধুদের বলছেন, সন্তান গ্রহণ করতে।

তিনি বলেন, ‘আমি তাদের সবাইকে বলেছি, সন্তান নিয়ে নাও। এত চিন্তা করো না।’

নাওমির মেয়ে তার সঙ্গে সব জায়গায় যায়। বড়দিন তারা উদযাপন করেছেন পরিবারের সঙ্গে দক্ষিণ ফ্রান্সে। নিউ ইয়ার্স ইভে তারা দুজন গেছেন কাতারে, তারপর কয়েক দিনের জন্য লসএঞ্জেলেসে যাওয়ার আগে কয়েক ঘণ্টার জন্য লন্ডন ও প্যারিস গেছেন।

নাওমি প্যারিসে অতিথি হিসেবে গিয়েছিলেন, তবে সেখানে লুই ভুইতনের হয়ে ছেলেদের জন্য করা ভার্জিল আবলোর শেষ শোতে র‍্যাম্পে অংশ নেন। নাওমি ও তার মেয়ে আসলে কোথায় বাস করেন জানতে চাইলে তার তড়িৎ উত্তর, ‘আমরা বিশ্ব নাগরিক!’

তিনি এখন এই মুহূর্তগুলোর সর্বোচ্চ ব্যবহার করতে চাইছেন। নাওমি জানেন, তার মেয়ে স্কুলে পড়া শুরু করলে এই স্বতঃস্ফূর্ততা ও স্বাধীনতা শেষ হয়ে যাবে।

নাওমি ‘এক অসাধারণ ন্যানি’ পেয়েছেন, যিনি তার মেয়ের জন্মের দিন থেকে তার সঙ্গে আছেন। মেয়ের সেই ন্যানি দুজনের এই পুরো বিশ্বে ইয়ো-ইয়োর মতো ঘুরে বেড়ানোকে সহজ করে তুলেছেন। এই ন্যানিকে খুঁজে পেতে নাওমিকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় নষ্ট করতে হয়নি। এক ঘনিষ্ঠ বন্ধুর সুপারিশে তিনি তাকে নিয়োগ দেন।

নাওমি তার মেয়ের চোখ দিয়ে নিজের জীবনকে উপভোগ করছেন।

তিনি বলেন, ‘আমি আবার একটা বাচ্চার মতো হয়ে গেছি। নার্সারি রাইমস পড়ছি আবার, কত ধরনের নতুন খেলনা আছে সেগুলো শিখছি এবং সেগুলো দিয়ে খেলছি! কত ধরনের যে পুতুল আছে! এত কিছু আছে যা আমি আগে কখনও ভাবিনি।’

তিনি জানান, তার মেয়ে মিউজিক বক্স পছন্দ করে। ও বিভিন্ন রঙ, আকার এবং নকশা নিয়ে খেলতে পছন্দ করে। এছাড়া বাচ্চাদের জামা-কাপড় তো আছেই! শিগগির তার মেয়ে জামার সংখ্যার দিক দিয়ে মায়ের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবে।

নাওমি বলেন, ‘ওর ক্লজেটে খুব সুন্দর সুন্দর কিছু জামা আছে। আমার বন্ধু ও ডিজাইনাররা ওকে সেগুলো উপহার হিসেবে পাঠিয়েছে। অবাক করার মতো ব্যাপার, শিশুরা কত তাড়াতাড়ি বেড়ে ওঠে! তাই না?’

নাওমির নিজের কাছেও রয়েছে আলাইয়া, শ্যানেল, ভারসাচের মতো ব্র্যান্ড। এগুলো নিয়ে তিনি নতুন একটি প্রজেক্ট শুরু করতে যাচ্ছেন। আপাতত এটুকুই শুধু জানালেন।

নাওমি ফোন কেটে দেয়ার আগে আগে তাকে জিজ্ঞাসা করি, মা হওয়ার পর সবচেয়ে বড় চমক কী ছিল?

বিনাদ্বিধায় তিনি উত্তর দেন, ‘সবার আগে আমার মেয়ে। আমি এখন যা করি, তার জন্যই করি- এটাই। এটা সম্পূর্ণ নিঃস্বার্থ, তাই না?’

আমি জিজ্ঞাসা করি, ‘ও কি আরও চায়?’

নাওমি হাসিতে দমকে উঠে উত্তর দেন, ‘অবশ্যই। কেন চাইবে না?’

আরও পড়ুন:
তিনি প্রখ্যাত ফ্যাশন ডিজাইনার নীল রানাউত
বিদেশি ভাষার দাসত্ব করা যাবে না: যতীন সরকার
তারকাদের জমজমাট ফ্যাশন শো
তাজরীনে আগুন: ৪৫ জন কি ক্ষতিপূরণ পাবে না
সন্তানকে অর্জন হিসেবে দেখার বিভ্রান্তি

মন্তব্য

আরও পড়ুন

জীবনযাপন
Refusal to board a plane because of obesity

স্থূল হওয়ার কারণে বিমানে নিতে অস্বীকৃতি

স্থূল হওয়ার কারণে বিমানে নিতে অস্বীকৃতি এয়ার নিউজিল্যান্ডে হয়রানির শিকার হওয়া এঞ্জেলা হার্ডিং। ছবি: ওয়ান নিউজ
ভুক্তভোগী এঞ্জেল হার্ডিং বলেন, ‘আমার ভীষণ খারাপ লেগেছে। আমার চেহারার কারণে, আকারের কারণে তারা আমাকে নামিয়ে দিল। খোলসা করে না বললেও আসলে এটাই ছিল তাদের অসুবিধার কারণ।’

স্থূল হওয়ার কারণে নিউজিল্যান্ডের একটি ফ্লাইট থেকে দুই নারী যাত্রীকে নামিয়ে দেয়া হয়েছে। এয়ার নিউজিল্যান্ডের এমন আচরণে মর্মাহত এবং অপমানিতবোধ করছেন তারা।

গত শুক্রবার দেশটির নেপিয়ার থেকে অকল্যান্ডে যাওয়ার উদ্দেশে ওঠা ফ্লাইটে এমন বিব্রতকর পরিস্থিতির সম্মূখীন হন এঞ্জেলা হার্ডিং ও তার বন্ধু।

নিউজিল্যান্ডের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ওয়ান নিউজের প্রতিবদনে বলা হয়েছে, ফ্লাইটটিতে ওঠার পর হঠাৎ বাঁ হাতে ব্যথা অনুভব করেন এঞ্জেলা। এরপর একজন নারী ফ্লাইট অ্যাটেনড্যান্টকে ডেকে হাতের কব্জিটি নীচে নামিয়ে দিতে অনুরোধ করেন তিনি।

তা না করলে তিনি সিটে ঠিক করে বসতে পারছিলেন না। এদিকে তারা না বসা পর্যন্ত পাইলটও বিমান ওড়াতে পারছিলেন না।

এমন সময় বিমানের স্পিকারে ঘোষণা শোনার পর বিভ্রান্তি আরও বেড়ে যায়। ঘোষণায় বলা হয়, সমস্ত যাত্রীদের সুবিধার্থে এঞ্জেল হার্ডিং ও তার বন্ধুকে বিমান থেকে নেমে যেতে হবে।

পরে ফ্লাইট অ্যাটেনড্যান্ট এসে জানান, তাদের স্থূলতার কারণে দুজনের দুটি করে মোট চারটি আসন বুক করা উচিত ছিল।

এঞ্জেলের দাবি, এর আগে আকাশপথে ভ্রমণকালে এমন অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হয়নি তাদের। এমনকি তিনি বা তার বন্ধু কারোরই দুটি আসনের টিকিট কেনার সামর্থ্য নেই বলে অ্যাটেন্ড্যান্টকে জানান তিনি।

তিনি বলেন, ‘আমার ভীষণ খারাপ লেগেছে। আমার চেহারার কারণে, আকারের কারণে তারা আমাকে নামিয়ে দিল। খোলসা করে না বললেও আসলে এটাই ছিল তাদের অসুবিধার কারণ।’

এ ঘটনার পর অবশ্য ওই যাত্রীদের কাছে ক্ষমা চেয়েছে এয়ার নিউজিল্যান্ড।

এক বিবৃতিতে এয়ার নিউজিল্যান্ডের মহাব্যবস্থাপক অ্যালিশা আর্মস্ট্রং বলেছেন, ‘ওই দুই যাত্রীর সঙ্গে যা হয়েছে, তা নিয়ে আমরা দুঃখিত। সকল গ্রাহকের সম্মান রক্ষা এবং তাদের সঙ্গে যথাযথ মর্যাদায় আচরণ করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

মন্তব্য

জীবনযাপন
Mim a job student asked the president for justice

যৌন হয়রানির বিচার চেয়ে রাষ্ট্রপতির দ্বারস্থ জবি ছাত্রী মীম

যৌন হয়রানির বিচার চেয়ে রাষ্ট্রপতির দ্বারস্থ জবি ছাত্রী মীম বুধবার বঙ্গভবনের সামনে আবেদনপত্র হাতে জবি শিক্ষার্থী মিম। ছবি: নিউজবাংলা
শিক্ষার্থী কাজী ফারজানা মিম বলেন, ‘অভিযুক্ত শিক্ষকরা আমাকে বহিষ্কারের ভয়ভীতি, পরীক্ষায় ফেল করানো, অন্য শিক্ষার্থীদের থেকে আমাকে বিচ্ছিন্ন করে মানসিকভাবে নির্যাতন এবং মৃত্যুর হুমকি দিচ্ছেন। আমাকে আত্মহত্যার পথে ঠেলে দিচ্ছেন।’

শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়ন ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের হুমকির বিচার এবং নিজের নিরাপত্তা চেয়ে রাষ্ট্রপতির দ্বারস্থ হয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগের ছাত্রী কাজী ফারজানা মীম।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ও রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে দেখা করতে মঙ্গলবার বঙ্গভবনে মীম একটি আবেদন জমা দেন। আবেদনে তার সঙ্গে ঘটে যাওয়া যৌন নিপীড়ন ও বুলিংয়ের তিনি বিচার চেয়েছেন। পরীক্ষায় কম নম্বর পাওয়ার কথাও আবেদনপত্রে তুলে ধরেছেন তিনি।

আবেদনে মিম তার একাডেমিক জীবনের ঘটনা উল্লেখ করে বলেন, ২০২১ সালের ডিসেম্বরে উপাচার্যের কাছে বিচার চেয়ে আবেদন করে তিনি এখনও বিচার পাননি। তার বিভাগের অভিযুক্ত শিক্ষক তাকে যৌন নিপীড়ন করেন। ওই শিক্ষকের সমর্থনে বিভাগের চেয়ারম্যান তাকে স্নাতক পরীক্ষায় একাধিক বিষয়ে ফেল করিয়েছেন।

সহপাঠীদের কাছ থেকে তাকে বিচ্ছিন্ন করে মানসিকভাবে নির্যাতন করেন। তারা মৃত্যুর হুমকি দিয়ে মানসিক নির্যাতনের মাধ্যমে তাকে আত্মহত্যার দিকে ঠেলে দিচ্ছেন। ফলে তিনি বিষয়টি গণমাধ্যমের সামনে নিয়ে আসেন।

যৌন হয়রানির বিচার চেয়ে রাষ্ট্রপতির দ্বারস্থ জবি ছাত্রী মীম
রাষ্ট্রপতির সাক্ষাৎ চেয়ে বঙ্গভবনে জমা দেয়া মিমের আবেদনপত্রের অনুলিপি।

সবশেষ আশা-ভরসা নিয়ে তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করেছেন। বুলিং ও যৌন নিপীড়নের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চান মিম। পাশাপাশি প্রশাসনের জবাবদিহির জন্য ব্যবস্থা গ্রহণে তিনি আবেদন জানান। তাকে ফেল করানোর বিষয়গুলো বিশেষ কমিটির মাধ্যমে পুনর্বিবেচনার মাধ্যমে পরীক্ষার ফল প্রকাশ করে তার জীবন পুনরুদ্ধারের আরজি জানান।

আবেদনপত্রে তিনি উল্লেখ করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম ওই সময়ে যৌন নিপীড়ন বিরোধী সেলের দায়িত্বে থাকলেও তার কাছ থেকে তিনি বিচার পাননি।

এদিকে ভুক্তভোগী মীম তার আবেদনের অনুলিপি বিশ্ববিদ্যালয়কে দেননি বলে জানিয়েছেন রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. আইনুল ইসলাম।

তিনি বলেন, ‘সে হল থেকে বের হওয়ার পর আর কোনো খোঁজ পাচ্ছি না। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে তার সঙ্গে যোগাযোগের অনেক চেষ্টা করেছি। কিন্তু তার কোনো সাড়া পাইনি। তাকে ফোন দিলে ফোন বন্ধ পাই। আবার অনেক সময় ফোন ঢুকলেও সে ধরে না।’

উপাচার্য যা বললেন

এ বিষয়ে চানতে চাইলে উপাচার্য সাদেকা হালিম বলেন, ‘আমি আসার আগের ঘটনার দায়ভার আমি নেব না। তবে আমি এখন সেগুলো নিয়ে সোচ্চার হব। পরবর্তী সিন্ডিকেট সভায় এসব বিষয় উত্থাপন হবে। সবার বিরুদ্ধে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়া হবে। বিভাগের চেয়ারম্যানের পরীক্ষায় কেন সে ৩ পেল এ বিষয়টি দেখার জন্য ওনার সঙ্গে মিটিংয়ে বসব। আর তার পরীক্ষা নেয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’

এদিকে এক শিক্ষক ও সহপাঠীকে দায়ী করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনা নিয়ে ক্ষোভ-বিক্ষোভের মধ্যেই যৌন নিপীড়ন ও বুলিংয়ের এই অভিযোগ সামনে এনেছেন মিম।

এছাড়াও অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনায় যৌন হয়রানিসহ নানা নিপীড়নের বিরুদ্ধে এই শিক্ষার্থী সোচ্চার হন। সেখানে অবন্তিকার ব্যাপারে কথা বলতে গিয়ে নিজের প্রসঙ্গ টানেন তিনি।

শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ দেয়ায় হত্যাসহ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের হুমকি পেয়েছেন বলে অভিযোগ করেন মিম। এ অবস্থায় তিনি সোমবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখায় (ডিবি) গিয়ে নিজের জীবনের নিরাপত্তা চান।

ফারজানা মীমের অভিযোগে যা রয়েছে

শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ দেয়ায় হত্যাসহ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের হুমকি পেয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন কাজী ফারজানা মীম।

তিনি বলেন, ‘আমার বিভাগের শিক্ষক আবু সাহেদ ইমন আমাকে যৌন হেনস্তা করেছেন। এই অভিযোগ দেৱয়ার পর থেকে বিভাগের চেয়ারম্যান জুনায়েদ আহমেদ হালিম ও অভিযুক্ত শিক্ষক আবু সাহেদ ইমন আমাকে সেটি তুলে নিতে নানাভাবে চাপ দিয়ে আসছেন।

‘আমি রাজি না হওয়ায় তারা আমাকে হত্যাসহ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের হুমকি দেন। আমাকে একঘরে করে দেয়া হয়। আমাকে বিভিন্ন পরীক্ষায় ফেল করানো হয়। অনার্সের ফাইনাল ভাইভায় আমাকে ফেল করানো হয়।’

‘স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারছি না’ উল্লেখ করে এই শিক্ষার্থী বলেন, ‘কখন আমাকে মেরে ফেলা হয় সেটা জানি না। শুধু আমি নই, তারা আমার পরিবারকেও নানাভাবে হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন এবং হেনস্তা করছেন। বর্তমান এই অবস্থা থেকে বাঁচতে ডিবি কার্যালয়ে অভিযোগ নিয়ে এসেছি।’

এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কাজী ফারজানা মীম সোমবার একটি অভিযোগ করেছেন। এর ভিত্তিতে আমাদের সাইবার টিম কাজ করছে। অভিযোগকারী মীমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। আমরা জবি ভিসির সঙ্গে কথা বলেছি। ভিসি অনেক কথা বলেছেন। এ অভিযোগের অনেক বিষয়ের অনেক কিছুই আমাদের হাতে নেই।’

তিনি বলেন, ‘ওই ছাত্রীর যে সমস্যা সেটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের মাধ্যমেই সমাধান করা হবে। প্রশাসনিক বিষয়গুলো আমরা সমাধান করতে পারব না। তাকে কেন বার বার ফেল করানো হচ্ছে সেগুলো বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দেখবে। তবে তাকে আটকে রাখা বা হুমকি দেয়ার বিষয়গুলো আমরা তদন্ত করছি।’

অভিযুক্ত দুই শিক্ষক যা বললেন

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত শিক্ষক আবু শাহেদ ইমন বলেন, ‘এসব অভিযোগ পুরোপুরি ভিত্তিহীন। এখন অবন্তিকার মৃত্যুতে তার সহানুভূতিকে পুঁজি করে মীম গণমাধ্যমের মনোযোগ পাওয়ার চেষ্টা করছে। বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন। মীম এসব বিষয়ে মিডিয়ায় কথা বলতে পারে না। এ ব্যাপারে আমি আর বেশি কিছু মন্তব্য করতে চাই না।’

প্রসঙ্গত, মিম অভিযোগ করার পর তদন্ত কমিটি আবু শাহেদ ইমনের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দিয়েছিল। তখন তিনি উচ্চ আদালতে যান।

অপর অভিযুক্ত বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক জুনায়েদ হালিম বলেন, ‘ইচ্ছাকৃতভাবে ফেল করিয়ে দেয়ার অভিযোগ মিথ্যা। মীম ঠিকমতো ক্লাসই করত না। ক্লাসে তার ৬০ ভাগ উপস্থিতিও ছিলো না। সেখানে আমরা তাকে পরীক্ষা দিতে দিয়েছি। ক্লাসে উপস্থিত না থাকলে তাকে নম্বর দেয়ার তো কোনো সুযোগই নেই।’

আরও পড়ুন:
জবিতে শিক্ষার্থীবান্ধব সক্রিয় যৌন নিপীড়ন বিরোধী সেল কার্যকরের দাবি
জবি ছাত্রীকে আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলা: সহকারী প্রক্টরের জামিন নাকচ
অবন্তিকার আত্মহনন: জবি প্রশাসনকে শিক্ষার্থীদের লালকার্ড
জবি ছাত্রীকে আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলা: সহপাঠী, সহকারী প্রক্টর রিমান্ডে

মন্তব্য

জীবনযাপন
Bangabandhukanya created the environment for womens progress Food Minister

নারীদের অগ্রযাত্রার পরিবেশ তৈরি করেছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা: খাদ্যমন্ত্রী

নারীদের অগ্রযাত্রার পরিবেশ তৈরি করেছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা: খাদ্যমন্ত্রী আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে শুক্রবার সকালে নওগাঁর সাপাহার উপজেলা মিলনায়তনে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। ছবি: নিউজবাংলা
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশে নারীর সংখ্যা অর্ধেক নয়, বরং অর্ধেকেরও বেশি। ভোটার তালিকা দেখলে সেটা স্পষ্ট হয়ে যায়। নারীরা তাদের মেধা ও যোগ্যতা দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে নারীদের অগ্রযাত্রার পরিবেশ তৈরি করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার।

আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে শুক্রবার সকালে নওগাঁর সাপাহার উপজেলা মিলনায়তনে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

মন্ত্রী বলেন, অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য নারীদের স্বাবলম্বী হতে হবে। নারীর ক্ষমতায়নের মূল শক্তি তারা নিজেরাই।

নারীদের মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন উল্লেখ করে সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, বর্তমান সরকারের মন্ত্রিপরিষদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আটজন নারী রয়েছেন। বর্তমানে নয়জন নারী সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। জাতীয় সংসদে স্পিকারের দায়িত্বও পালন করছেন একজন নারী।

তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে নারীর সংখ্যা অর্ধেক নয়, বরং অর্ধেকেরও বেশি। ভোটার তালিকা দেখলে সেটা স্পষ্ট হয়ে যায়। নারীরা তাদের মেধা ও যোগ্যতা দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে।

‘বাংলাদেশে নারীদের অগ্রযাত্রার পরিবেশ তৈরি করে দিয়েছেন বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, কিন্তু কিছু অশুভ শক্তি নারীদের পিছিয়ে দিতে চায়।’

আরও পড়ুন:
স্ত্রী চা বানানোর সময় স্বামী সন্তানদের দেখলে সময় বাঁচে: প্রধানমন্ত্রী
‘কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ বেড়েছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণে নয়’
‘নারীদের ওপর বিনিয়োগ করুন, দ্রুত উন্নতি আনুন’
পাচারের আগ মুহূর্তে উদ্ধার দুই তরুণী, আটক ৬
নারীর প্রতিবাদের ভাষা বাঁকা টিপের সেলফি

মন্তব্য

জীবনযাপন
Husband watches kids while wife makes tea saves time PM

স্ত্রী চা বানানোর সময় স্বামী সন্তানদের দেখলে সময় বাঁচে: প্রধানমন্ত্রী

স্ত্রী চা বানানোর সময় স্বামী সন্তানদের দেখলে সময় বাঁচে: প্রধানমন্ত্রী আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপন উপলক্ষে শুক্রবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: ফোকাস বাংলা
ঘরে-বাইরে নারীদের কাজের বিষয়ে বলতে গিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘মেয়েরা কিন্তু অফিস-আদালত বা যেখানেই কাজ করে, কাজ করার পরে কিন্তু তার আরেকটা কাজ থাকে ঘরে এসে সংসার সামলানো। সেটা আবার হিসাবে ধরা হয় না। সেটা যদি হিসাবে ধরা হয়, তখন দেখা যাবে যে, কর্মক্ষেত্রে মেয়েরা কিন্তু অনেক অনেক বেশি শ্রম দিচ্ছে তারা। এটাও তো শ্রম।’

ঘরের কাজে নারীদের সহায়তার জন্য পুরুষদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, স্বামী ও স্ত্রী মিলেমিশে কাজ করলে সময় বেঁচে যায়।

আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপন উপলক্ষে শুক্রবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে দেয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

ঘরে-বাইরে নারীদের কাজের বিষয়ে বলতে গিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, “মেয়েরা কিন্তু অফিস-আদালত বা যেখানেই কাজ করে, কাজ করার পরে কিন্তু তার আরেকটা কাজ থাকে ঘরে এসে সংসার সামলানো। সেটা আবার হিসাবে ধরা হয় না। সেটা যদি হিসাবে ধরা হয়, তখন দেখা যাবে যে, কর্মক্ষেত্রে মেয়েরা কিন্তু অনেক অনেক বেশি শ্রম দিচ্ছে তারা। এটাও তো শ্রম।

“ধরেন একজন পুরুষ অফিসার, নারী অফিসার; স্বামী, স্ত্রী। দুইজন একই সাথে ঘরে ফিরল। আমরা কী দেখব যে, যিনি পুরুষ, তিনি চেয়ারে বসে পড়লেন বা ইজি চেয়ারেই বসে পড়লেন বা সোফায় বসে পড়লেন। বলে, ‘এক কাপ চা দাও তো।’ আর যিনি মেয়ে অফিসার, তিনি ঘরে যেয়েই আগে পাকের ঘরে ঢুকলেন। চা বানানো, বাচ্চাদের খাওয়ানো, বাচ্চাদের গোসল করানো, বাচ্চাদের দেখা—সবকিছু ব্যবস্থা করা। এই ক্ষেত্রে যদি সবাই একটু একসাথে কাজ করে। কেউ চা বানাল, কেউ বাচ্চাদের দেখল, তাহলে পরে সময়ও বাঁচে।”

ঘরের কাজে নারীদের সহায়তা করতে পুরুষদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মেয়েদের রান্নাও করতে হবে। কারণ এখন তো আসলে আমরা এই যে ভাতা দেয়ার জন্য এখন কাজের লোক তো কম পাওয়া যায়। কাজেই সে দিক থেকে মনে করি, দুজনে মিলে কাজ করলে পরে দ্রুত কাজগুলো শেষ হলো।

‘তারপরে একটু একসাথে বসে গল্প করা যাবে। টেলিভিশন দেখা যায়। সেটা করতে পারে। তো আমাদের পুরুষরা যদি একটু ওই দিকে নজর দেয়, তাহলে জীবনটা কিন্তু আরও সুন্দর হবে।’

আরও পড়ুন:
পাচারের আগ মুহূর্তে উদ্ধার দুই তরুণী, আটক ৬
অবৈধ মুনাফাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে অভিন্ন মুদ্রা চালুর পরামর্শ প্রধানমন্ত্রীর
মিয়ানমারে সংঘাত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন কঠিন করে তুলেছে: প্রধানমন্ত্রী
বিশ্বমানের চৌকস বাহিনী হবে বিজিবি: প্রধানমন্ত্রী

মন্তব্য

জীবনযাপন
Prime Minister Modi announced to reduce the price of cylinders by 100 rupees on womens day

নারী দিবসে গ্যাস সিলিন্ডারের দাম ১০০ রুপি কমানোর ঘোষণা মোদির

নারী দিবসে গ্যাস সিলিন্ডারের দাম ১০০ রুপি কমানোর ঘোষণা মোদির এলপিজি সিলিন্ডার। ছবি: এনডিটিভি
পোস্টে ভারতের প্রধানমন্ত্রী লিখেন, ‘আজ নারী দিবসে আমাদের (বিজেপি নেতৃত্বাধীন) সরকার এলপিজি সিলিন্ডারের দাম ১০০ রুপি কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটি সারা দেশে লাখ লাখ পরিবারের আর্থিক বোঝাকে কমাবে, বিশেষ করে আমাদের নারী শক্তিকে উপকৃত করবে।’

আন্তর্জাতিক নারী দিবসে রান্নায় ব্যবহৃত গ্যাস সিলিন্ডারের দাম ১০০ রুপি কমানোর ঘোষণা দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (একসময়ের টুইটার) শুক্রবার সকালে এক পোস্টে তিনি এ ঘোষণা দেন বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।

পোস্টে ভারতের প্রধানমন্ত্রী লিখেন, ‘আজ নারী দিবসে আমাদের (বিজেপি নেতৃত্বাধীন) সরকার এলপিজি সিলিন্ডারের দাম ১০০ রুপি কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটি সারা দেশে লাখ লাখ পরিবারের আর্থিক বোঝাকে কমাবে, বিশেষ করে আমাদের নারী শক্তিকে উপকৃত করবে।’

তিনি আরও লিখেন, ‘রান্নার গ্যাসকে আরও সাশ্রয়ী করে আমরা বিভিন্ন পরিবারের কল্যাণের জন্য সহায়তার পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত করতে চেয়েছি। নারীর ক্ষমতায়ন ও তাদের জীবনযাপন সহজ করতে আমাদের প্রতিশ্রুতির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে এটি করা হয়েছে।’

এনডিটিভির খবরে বলা হয়, ভারতের রাজধানী শহর দিল্লিতে ১৪ দশমিক ২ কেজির গ্যাস সিলিন্ডার কিনতে খরচ পড়ে প্রায় ৯০০ রুপি।

নারী দিবসের আগের দিন বৃহস্পতিবার ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার প্রধানমন্ত্রীর ‘উজ্জ্বলা ইয়োজানা’ প্রকল্পের আওতায় এলপিজি সিলিন্ডারপ্রতি দরিদ্র নারীদের ৩০০ রুপি ভর্তুকির মেয়াদ আগামী অর্থবছর পর্যন্ত বাড়িয়েছে, যা শুরু হচ্ছে আগামী ১ এপ্রিল।

বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকার ২০২৩ সালের অক্টোবরে ১২টি রিফিল পর্যন্ত ১৪ দশমিক ২ কেজির গ্যাস সিলিন্ডারপ্রতি ভর্তুকি ২০০ রুপি থেকে বাড়িয়ে ৩০০ রুপিতে উন্নীত করে। সিলিন্ডারপ্রতি ৩০০ রুপি ভর্তুকির মেয়াদ ছিল চলতি অর্থবছরের শেষ দিন ৩১ মার্চ পর্যন্ত।

এক্সে অপর এক পোস্টে নাগরিকদের আন্তর্জাতিক নারী দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে মোদি লিখেন, ‘আমরা আমাদের নারী শক্তির শক্তিমত্তা, সাহস ও সহনশীলতাকে স্যালুট জানাই এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাদের অবদানের প্রশংসা করি।

‘আমাদের সরকার শিক্ষা, শিল্পোদ্যোগ, কৃষি, প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীর ক্ষমতায়নে অঙ্গীকারবদ্ধ।’

আরও পড়ুন:
মুসলিম বিয়ে ও তালাক আইন বাতিলের সিদ্ধান্ত আসামের
দুর্ঘটনার ১০ দিন না যেতে সড়কেই প্রাণ গেল তেলেঙ্গানার বিধায়কের
ক্যানসারের উপাদান পাওয়ায় তামিলনাড়ুতে নিষিদ্ধ হাওয়াই মিঠাই
ভোটের প্রচারে বাড়ি বাড়ি গিয়ে গর্ভনিরোধক বিতরণ
ঐশ্বরিয়াকে নিয়ে রাহুলের মন্তব্যের নিন্দা সংগীতশিল্পীর

মন্তব্য

জীবনযাপন
Womens participation has increased in the workplace but not in decision making

‘কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ বেড়েছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণে নয়’

‘কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ বেড়েছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণে নয়’ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম। ফাইল ছবি
‘সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রেই নারীত্ব নিয়ে রাজনীতি হচ্ছে। সেটা পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র, প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাঙ্গন, ভাগ-বাটোয়ারার ক্ষেত্র, এমনকি ধর্মীয়ভাবেও। পৃথিবীতে এমন কোনো ধর্ম খুঁজে পাওয়া যাবে না, যেখানে প্রতিটি ক্ষেত্রে নারীকে সমান অধিকার দেয়া হয়েছে।’

‘কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ বাড়লেও নারীর ক্ষমতায়ন বা সামাজিক মর্যাদা বাড়েনি। দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে সিদ্ধান্ত গ্রহণে নারীর অংশগ্রহণ ও ক্ষমতায়ন জরুরি।

‘অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে রাজনীতিতে নারীদের কথা বলার জায়গাটা তৈরি করে দিতে হবে। সিদ্ধান্ত গ্রহণের জায়গাগুলোতে নারীদের নিয়ে আসতে হবে।’

আন্তর্জাতিক নারী দিবস সামনে রেখে বার্তা সংস্থা ইউএনবিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম।

তিনি বলেন, ‘নারী পরিচয়ের আগে আমার বড় পরিচয় হলো আমি একজন মানুষ। নারী-পুরুষ ভেদাভেদ তৈরি, নারীকে হেয় করা, শারীরিক ও মানসিকভাবে পুরুষের চেয়ে দুর্বল মনে করা হয় আজও।’

পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারীদের মূল্যায়ন সম্পর্কে সাদেকা হালিম বলেন, ‘সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি এমন হয়েছে যে সমাজে নারীকে দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হিসেবে দেখা হয়; যদিও বাংলাদেশের সংবিধানে নারী ও পুরুষ সমান। কিন্তু বাস্তবে কোনো দেশই খুঁজে পাওয়া যাবে না, যেখানে নারীকে পুরুষের সমান ভাবা হয়।’

‘সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রেই নারীত্ব নিয়ে রাজনীতি হচ্ছে। সেটা পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র, প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাঙ্গন, ভাগ-বাটোয়ারার ক্ষেত্র, এমনকি ধর্মীয়ভাবেও। পৃথিবীতে এমন কোনো ধর্ম খুঁজে পাওয়া যাবে না, যেখানে প্রতিটি ক্ষেত্রে নারীকে সমান অধিকার দেয়া হয়েছে।’

‘এমনকি নারীর সন্তান জন্ম দেয়ার বিষয় নিয়েও রাজনীতি করা হয়। সন্তান জন্মের পর পরই সন্তানের অধিকার কিভাবে হবে সেটা আমরা ধর্মীয়ভাবে নির্ধারণ করি। বাবা ও মায়ের অধিকার কতটুকু, আমাদের সিভিল ল’তে কতটুকু, শরিয়া ল’তে কতটুকু- এসব বিষয় অনেকটাই পুরুষকেন্দ্রিক। পুরুষকে সব সময় প্রাধান্য দেয়া হয়। পুরুষরাই এ সমাজে নিয়ন্ত্রকের ভূমিকা পালন করে।’

এই উপমহাদেশে নারীদের ভূমিকা সম্পর্কে ড. সাদেকা হালিম বলেন, ‘ভারত উপমহাদেশে নারীর ক্ষমতায়ন যে এখন হয়েছে তা নয়। অবিভক্ত ভারত উপমহাদেশে নারীরা কিন্তু ইউরোপের নারীদের আগেই ভোটাধিকার পেয়েছিল। ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায় নারীরা যুদ্ধে অংশ নিয়েছে, রানি হয়েছে, ট্যাক্স সংগ্রহ করেছে।

‘আধুনিক রাষ্ট্রে পুঁজিবাদের বিস্তার ঘটার সঙ্গে সঙ্গে নারীদের কাজের পরিধি বেড়েছে, কিন্তু নারীদের পণ্য হিসেবে দেখা হচ্ছে। তার কাজকে কাজ হিসেবে আমরা দেখিনি। নারীরা স্ত্রী, মা বা মেয়ে হিসেবে যে ভূমিকা পালন করে সেটিকেও অবমূল্যায়ন করা হয়।

‘কোনো নারী চাকরি করলেও তাকে আমরা প্রশ্ন করি তার স্বামী কী করে। সে যদি স্বামীর থেকে বেশি বেতন পায়, তাহলে পুরুষও হীনম্মন্যতায় ভোগে।’

সমাজের সাধারণ নারীদের অবস্থা বর্ণনা করতে গিয়ে জবি উপাচার্য বলেন, ‘অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন তো নারীদের অনেকেরই হয়েছে। গার্মেন্ট সেক্টর, চিংড়ি মাছের ঘের, কল-কারখানায় নারীরা কাজ করছে। এটি ভারত বা পাকিস্তানের চেয়ে অনেক বেশি। কিন্তু নারীর সামাজিক মর্যাদা কি বেড়েছে? এটা খুবই জটিল একটি বিষয়।

‘চরম দারিদ্র্যের শিকার নারীরা কোনো কিছু ভাবে না, বা ভাবার সুযোগ পায় না। তারা জানে তাদেরই কাজ করতে হবে, ক্ষুধা মেটাতে হবে। তারাই শিশুদের মুখে খাবার তুলে দিচ্ছে। সাধারণ নারীরা অনেক পরিশ্রমী। সামাজিক সমালোচনা গ্রাহ্য না করে তারা চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করছে। কিন্তু সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ায় তাদের বাদ দেয়া হচ্ছে।’

নারীর সামাজিক নিরাপত্তার বিষয়ে সাদেক হালিম বলেন, ‘আমরা নারীর নিরাপদ চলাচল নিশ্চিত করতে পারিনি। বাংলাদেশে বা প্রবাসে যে পরিমাণ নারী কাজ করে সেখানেও আমরা দেখি যে নারীরা নিরাপদ নয়। এমনকি খুব নিকট আত্মীয়ের মাধ্যমে তারা ধর্ষণের শিকার হয়।’

তিনি বলেন, ‘তবে বাংলাদেশে দীর্ঘ সময় ধরে প্রধানমন্ত্রী নারী, স্পিকার নারী, বিরোধীদলীয় নেত্রী নারী। এবারকার কেবিনেটে একটি উল্লেখযোগ্য অংশ নারী মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী হয়ে আসছেন। এটা ইতিবাচক দিক।

‘সংখ্যার দিক থেকে নারীর অংশগ্রহণ অনেক বেশি, কিন্তু নারীর ক্ষমতায়ন বা সামাজিক মর্যাদার জায়গায় গুণগত মানের দিক থেকে কতটা বদলেছে সেটি বড় বিষয়। যখন নারীরা সিদ্ধান্ত গ্রহণে আসবে, নেতৃত্ব দেবে, তখনই বদলাবে সমাজ।’

আরও পড়ুন:
‘নারীদের ওপর বিনিয়োগ করুন, দ্রুত উন্নতি আনুন’

মন্তব্য

জীবনযাপন
Invest in women to accelerate progress
আন্তর্জাতিক নারী দিবস আজ

‘নারীদের ওপর বিনিয়োগ করুন, দ্রুত উন্নতি আনুন’

‘নারীদের ওপর বিনিয়োগ করুন, দ্রুত উন্নতি আনুন’ আন্তর্জাতিক নারী দিবস আজ। ছবি: পিয়াস বিশ্বাস/নিউজবাংলা
আন্তর্জাতিক নারী দিবসের এ বছরের থিম ‘ইনস্পায়ার ইনক্লুশন’, যার লক্ষ্য হচ্ছে নারীদের জন্য এমন পরিবেশ তৈরি করা, যেখানে তারা সমাজে নিজের জায়গা সম্পর্কে জানতে পারে। এর সঙ্গে এ গল্পগুলো সামঞ্জস্যপূর্ণ।

আন্তর্জাতিক নারী দিবস আজ। প্রতি বছর ৮ মার্চ নারীর উন্নয়ন, ক্ষমতায়ন ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় সারা বিশ্বে দিবসটি পালিত হয়।

এ বছর নারী দিবসে জাতিসংঘের প্রতিপাদ্য হল ‘নারীদের ওপর বিনিয়োগ করুন, দ্রুত উন্নতি আনুন।’ এর মাধ্যমে লিঙ্গ সমতা আনতে যে যথেষ্ট অর্থ বিনিয়োগ করা হচ্ছে না সেই বিষয়টাতে মনোযোগ দেয়া হয়েছে।

আন্তর্জাতিক নারী দিবসের এ বছরের থিম ‘ইনস্পায়ার ইনক্লুশন’, যার লক্ষ্য হচ্ছে নারীদের জন্য এমন পরিবেশ তৈরি করা, যেখানে তারা সমাজে নিজের জায়গা সম্পর্কে জানতে পারে। এর সঙ্গে এ গল্পগুলো সামঞ্জস্যপূর্ণ।

দিবসটির উৎপত্তি ২০ শতকের গোড়ার দিকে, যা উত্তর আমেরিকা এবং ইউরোপের শ্রমিক আন্দোলন থেকে উদ্ভূত হয়েছিল। ১৯০৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম জাতীয় নারী দিবস পালন করা হয়।

পরবর্তীতে ১৯১০ সালে মার্কসবাদী তাত্ত্বিক এবং ‘নারী অধিকার’ আন্দোলনের বিশিষ্ট নেত্রী ক্লারা জেটকিন কোপেনহেগেনে আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলনে আন্তর্জাতিক নারী দিবসের প্রস্তাব করেন। ধারণাটি সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদিত হয়েছিল ১৯১১ সালে। যেখানে ১০ লাখেরও বেশি অংশগ্রহণকারী নারীর অধিকারের পক্ষে ছিলেন।

আন্তর্জাতিক নারী দিবস শুধু নারীদের অর্জন উদযাপনের দিন নয়, এটি লিঙ্গ সমতা, এর প্রতিফলন, সমর্থন, এবং বিশ্বজুড়ে নারী এবং মেয়েদের জন্য বাধাগুলো ভেঙে ফেলার পদক্ষেপকে উৎসাহিত করে।

আরও পড়ুন:
সংরক্ষিত আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেলেন যারা
অভিনেত্রীদের ফরম কেনা নিয়ে আওয়ামী লীগে ক্ষোভ
আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চান ১৫৪৯ নারী
রাজনীতি না করেও এমপি হতে চান অভিনেত্রীরা
নেত্রকোনায় ৩ দিনব্যাপী নারী ইজতেমা সমাপ্ত

মন্তব্য

p
উপরে