× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

জীবনযাপন
Where did I come from?
google_news print-icon

‘এলেম আমি কোথা থেকে’

শিশু
সন্তানের যে কোনো প্রশ্নে অস্বস্তিতে না ভুগে সত্যটি জানানো উচিত। ছবি: নিউজবাংলা
আমরা বলতে যতটা লজ্জা পাই, শিশুরা শুনতে অতটা লজ্জা পায় না। কারণ, সমাজ তার নির্ধারিত ছাঁচে ইতিমধ্যেই আমাকে ‘লজ্জিত ও আড়ষ্ট’ করে গড়ে তুলেছে, আমরা অলরেডি ‘স্পয়েল্ড’। তবে শিশুর মন এখনও স্বচ্ছ ও বিশুদ্ধ।

‘এলেম আমি কোথা থেকে’- এ প্রশ্ন সব শিশুই করে। তবে প্রায় সবাই জীবনের এই প্রথম সরল প্রশ্নের গরল উত্তর পেয়ে আটকে যায় বিভ্রান্ত ধারণায়।

শিশুদের এই প্রশ্নের ক্ষেত্রে বাবা-মা কী করতে পারেন তা নিয়ে এই নিয়ে লেখা।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, প্রশ্ন এড়িয়ে না যাওয়া এবং ভুলভাল উত্তর না দেয়া। মনে রাখতে হবে যৌনতা বা শরীর নিয়ে আলোচনার অস্বস্তি আমাদের বড়দের, শিশুদের নয়।

আমরা বলতে যতটা লজ্জা পাই, শিশুরা শুনতে অতটা লজ্জা পায় না। কারণ, সমাজ তার নির্ধারিত ছাঁচে ইতিমধ্যেই আমাকে ‘লজ্জিত ও আড়ষ্ট’ করে গড়ে তুলেছে, আমরা অলরেডি ‘স্পয়েল্ড’। তবে শিশুর মন এখনও স্বচ্ছ ও বিশুদ্ধ। তাছাড়া তারা মোটেই বোকা নয়। তাদের সঙ্গে সিরিয়াস আলোচনা করা চলে।

সুতরাং মিথ্যা, অবৈজ্ঞানিক তথ্যে তাদের বিভ্রান্ত করার চেয়ে সত্যটি জানিয়ে দেয়াই আমাদের কর্তব্য। অবশ্য তাই বলে সঙ্গম, বীর্যপাত, শুক্রাণু, ডিম্বস্ফোটন ইত্যাদি শব্দও তারা বুঝতে পারবে না। তবে শিশুদের আমরা কতটা বলব, কীভাবে বলব, কতটা শুনলে তারা বিশ্বাস ও সহ্য করতে পারবে, সেটি বিবেচনায় রাখাও দরকার।

বিদেশে দেখেছি বাচ্চাদের জন্য ‘how we were born’ বা ‘what makes a baby’ ধরনের শিশুতোষ বই পাওয়া যায়। বাংলাদেশেও কিছু কিছু পাওয়া যায়। সমস্যা হলো, প্রথমত সেগুলো বয়সভেদে উপযুক্ত নয় এবং দ্বিতীয়ত সেগুলো পড়ার পরেও বাচ্চাদের প্রশ্ন থাকে। সুতরাং শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য প্রতি পরিবারে যৌন-প্রশ্নোত্তরের সহায়ক পরিবেশ থাকা দরকার। সে ক্ষেত্রে নিচের উপায়গুলো বিবেচনা করা যেতে পারে-

শিশুর বয়স, ধারণক্ষমতা ও প্রশ্নের প্রেক্ষাপট বিবেচনা করা: তিন বছরের বাচ্চা আর ছয় বছরের বাচ্চা একই প্রশ্ন করলে একই রকম উত্তর হবে না।

‘আমি কোথা থেকে এলাম’- এই প্রশ্নে একজন হয়তো বুঝিয়েছে কীভাবে পেটের ভিতর থেকে বের হলাম। আরেকজন হয়তো জানতে চাচ্ছে কীভাবে পেটের মধ্যে ঢুকলাম। অতএব, আগে প্রশ্ন বুঝে নেয়া দরকার।

চমকে না যাওয়া: চমকে না গিয়ে বরং এমন ভাব করা যেন এমন প্রশ্ন আর ‘জামাটা কোথায়’ এমন প্রশ্নও একই রকম। এরপর পাল্টা প্রশ্ন করে আলোচনা এগিয়ে নেয়া যেতে পারে।

ধরা যাক বাচ্চা জিজ্ঞেস করল, ‘আমি কোথা থেকে এলাম?’ আমরা জবাবে বলতে পারি, ‘তোমার কী মনে হয় বলো তো? কোথা থেকে এসেছ তুমি?’

ইতিমধ্যে তার মাথায় কোনো ভুল ধারণা চেপে বসে আছে কি না, সেটি এভাবে বোঝার চেষ্টা করা যেতে পারে। অথবা সে আসলে কী এবং কতটুকু জানতে চায়, সে সম্পর্কেও আমরা ধারণা পেতে পারি।

এরপর সিরিয়াসলি জবাবটি শুনে এটা-সেটা না বুঝিয়ে শিশুকে সত্যটি বলা উচিত। যেমন, ‘তুমি এসেছ তোমার মায়ের পেট থেকে।’

এরপর একটু অপেক্ষা করে দেখা সে পাল্টা প্রশ্ন করে কি না। না করলে এই সেশনে আপাতত এটুকুই। এক সেশনে তাকে সব বুঝিয়ে দেয়ার দরকার নেই।

তবে সে যদি জিজ্ঞেস করে, ‘পেট থেকে কীভাবে বের হয়েছি?’- তাহলে বলা যেতে পারে, ‘ডাক্তার পেট থেকে বের করে ছোট্ট পুতুলের মতো বেবিটাকে গোলাপি একটা নরম তোয়ালের মধ্যে করে আমার হাতে দিয়েছিল (আলোচনাটি ডাক্তার, তোয়ালে, গোলাপি, পুতুল ইত্যাদির মধ্যে একটু ডাইভার্ট করে পরের সেশনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা আরকি!)।

সহজ শব্দ বেছে নেয়া: কোনো শব্দ শিশুর অপরিচিত হলে সেই শব্দের মানে বলে দেয়া। তার নিজের ইন্টারপ্রিটেশনের সুযোগ কমিয়ে দেয়া। যেমন: নরমাল ডেলিভারির ব্যাপারটা এড়াতে এমন না বলা যে, ‘মায়ের পেট কেটে বের করেছে তোমাকে।’

এতে সে ভয় পেয়ে যেতে পারে। কারণ, সিজারিয়ান ব্যাপারটা আমরা যেমন বুঝি শিশুরা তেমন বোঝে না। তাই বেলি আর ইউটেরাস বা ওম্ব যে আলাদা তা বুঝিয়ে দেয়া দরকার। নইলে সে ভাবতে পারে পেটের ভিতর খাবার, পানি, মলমূত্রের মধ্যে সে বোধহয় একটা খারাপ অবস্থায় ছিল। এর পরিবর্তে সে যেন বোঝে, তার জন্য মায়ের পেটের মধ্যে একটা বিশেষ আরামদায়ক ও ‘সম্মানজনক’ বাসস্থানের ব্যবস্থা ছিল।

তাড়াহুড়া না করা: প্রশ্নের জবাবে তাড়াহুড়া এড়াতে হবে, তবে ‘পরে বলব’ বলে ঝুলিয়ে রাখাও ঠিক নয়। প্রয়োজনে সময় চেয়ে নেয়া যেতে পারে এবং নিজে থেকেই আবার আলোচনা শুরু করা যেতে পারে।

সৎ থাকা: মনে রাখতে হবে, পুরো ব্যাপারটি অস্বস্তিকর মনে হলেও শেষ বিচারে এখানে শুধু দুটি মানুষ- আমি আর আমার সন্তান। আমার সৎ আচরণ, বাচনভঙ্গি, শব্দচয়ন ও তার ব্যাখ্যা আমার সন্তানকে আশ্বস্ত করবে। সমাজ নয়, ট্যাবু নয়, প্রথাবদ্ধ সংস্কার নয়; দিন শেষে জীবন আমাদের দুজনের। অতএব সব ধরনের অস্বস্তি ঝেড়ে ফেলে সন্তানকে সত্যটি জানানো উচিত। নইলে সে কিন্তু হকারের কাছ থেকে, চটি থেকে, পাকনা বন্ধুদের কাছ থেকে ‘জেনে’ নেবে। আর সেটা মোটেই ভালো হবে না।

উদাহরণের সাহায্য নেয়া: প্রাণীর জন্ম প্রক্রিয়ার সঙ্গে মানুষকে রিলেট করে গল্প করা যেতে পারে। প্রাণীকুলে যাদের বাচ্চা হয় তার ভিডিও একসঙ্গে বসে দেখা যেতে পারে। এ-সংক্রান্ত শিশুতোষ বই পড়ে শোনানো যেতে পারে। এভাবেই আস্তে আস্তে তৈরি করা যায় সন্তানকে।

নেটফ্লিক্সে ‘বেবিজ’ নামে একটা সিরিজ আছে। সুইডিশ ফটোজার্নালিস্টের ফটোবুক A Child Is Born বা আমেরিকান লেখক জোয়ানা কোলের When You Were Inside Mommy বই দুটি বাচ্চার সঙ্গে বসে পড়া যেতে পারে। এতে কাজ সহজ হয়ে যাবে।

এ ছাড়া কারও দ্বিতীয় সন্তান গর্ভে এলে ‘তোমার ভাই বা বোন আসছে, সে কেমন আছে, কবে আসবে, কীভাবে আসবে, তোমার দায়িত্ব কী হবে’ ইত্যাদি বিষয়ে নিয়মিত আপডেট দেয়া যেতে পারে।

শেষ কথা হলো বাবা-মা হিসেবে নিজেদের জানার পরিধিও বাড়ানো প্রয়োজন। আমাদের নিজেদের যৌনজ্ঞান সঠিক কি না সেটি যাচাই করে নেয়াও জরুরি। আমার ভুলের শিকার যেন আমার সন্তান না হয়। শেখার কোনো বয়স নেই, শেখায় লজ্জাও নেই। সুখী যৌন ও পারিবারিক জীবন উপভোগ করা প্রতিটি মানুষের মানবাধিকারের অন্তর্গত।

রবীন্দ্রনাথ ‘জন্মকথা’ নামের এক কবিতায় একটি উপায় বাতলে দিয়েছেন। একটু বড় বাচ্চার সঙ্গে এটা এস্তেমাল করতে পারেন-

খোকা মাকে শুধায় ডেকে-

এলেম আমি কোথা থেকে,

কোন্‌খানে তুই কুড়িয়ে পেলি আমারে।

মা শুনে কয় হেসে কেঁদে

খোকারে তার বুক বেঁধে-

ইচ্ছা হয়ে ছিলি মনের মাঝারে।

সন্তান গর্ভে আসার আগে বাবা-মায়ের ‘ইচ্ছে’ হয়ে মনের মাঝে লুকিয়ে থাকে। সেই ‘ইচ্ছে’র পরিণতিতে নারী-পুরুষের যৌনমিলন এবং তার ফলেই সন্তানের আগমন।

সুতরাং প্রিয় সন্তানকে বলুন, ‘বাজার থেকে কিনে না’, ‘জঙ্গল থেকে কুড়িয়ে না’, ‘হাসপাতাল থেকে চেয়ে না’; তুমি আমাদের ‘ইচ্ছে’র মধ্যে ছিলে। আমরা ভালোবেসে আদর করে সেই ইচ্ছেকে (মানে তোমাকে) নিয়ে এসেছি এই দুনিয়ায়। তুমি আমাদের দুজনের ভালোবাসার, আদরের আর ইচ্ছের যোগফল।

জিভের আর কানের জড়তা ভাঙুক। চলুন বাচ্চাদের সঙ্গে আমরাও বড় হই।

লেখক: জাতিসঙ্ঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর দপ্তরের হিউম্যান রাইটস অফিসার

আরও পড়ুন:
আলো-আঁধারির তান্ত্রিক যৌনতা
দুই শিশুকে নির্যাতন: কারাগারে প্রধান আসামি
নিখোঁজের দুই ঘণ্টা পর গর্ত থেকে শিশুর মরদেহ উদ্ধার
রফিকুল মাদানীর বিচার শুরু
চুম্বন ও আমার বয়ঃসন্ধিকাল

মন্তব্য

আরও পড়ুন

জীবনযাপন
India is in turmoil over the rape and murder of a medical student

মেডিক্যাল ছাত্রীকে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় উত্তাল ভারত

মেডিক্যাল ছাত্রীকে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় উত্তাল ভারত ছবি: সংগৃহীত
মোমবাতি ও পোস্টার হাতে নিয়ে নারীরা কলকাতাসহ ভারতের বিভিন্ন শহরে মিছিল করেছে। কলকাতার আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ব্যাপক ভাঙচুর করে বিক্ষোভকারীরা। বিভিন্ন শহরে সরকারি হাসপাতালের জরুরি বিভাগ ছাড়া সব চিকিৎসাসেবা বন্ধ হয়ে গেছে।

মেডিক্যাল শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের পর হত্যার প্রতিবাদে ভারত জুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। পশ্চিমবঙ্গসহ দেশজুড়ে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। নারীদের বিরুদ্ধে অপরাধের জন্য বিক্ষোভকারীরা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে কঠোর শাস্তির আহ্বান জানিয়েছে।

মোমবাতি ও পোস্টার হাতে নিয়ে নারীরা ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় শহর কলকাতাসহ বিভিন্ন শহরে মিছিল করেছে। কলকাতার আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ব্যাপক ভাঙচুর করে বিক্ষোভকারীরা। সেখানে গত সপ্তাহে একজন শিক্ষানবিশ চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় সহকর্মী চিকিৎসকরা আরও ভাল ও নিরাপদ কর্মপরিবেশের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেছেন।

জুনিয়র ডাক্তাররা নির্যাতিতার ন্যায়বিচারের দাবিতে বাইরে বসে প্রতিবাদ করায় ভারতের বিভিন্ন শহরে অনেক সরকারি হাসপাতালে জরুরি বিভাগ ছাড়া সব চিকিৎসাসেবা স্থগিত রয়েছে।

শুক্রবার ৩১ বছর বয়সী ওই চিকিৎসককে কলকাতার আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। পুলিশ জানিয়েছে যে তাকে ধর্ষণ ও হত্যা করা হয়েছে। এই অপরাধের সঙ্গে জড়িত একজন পুলিশ স্বেচ্ছাসেবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার ভারতের ৭৮তম স্বাধীনতা দিবসে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘আমি এই ক্ষোভের মাধ্যমে অনুভব করতে পারছি যে সমাজে আমাদের মা, কন্যা ও বোনদের ওপর যে অত্যাচার চালানো হচ্ছে তা নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে। এ নিয়ে দেশে ক্ষোভ বিরাজ করছে।’

এই ধর্ষণ ঘটনা ২০১২ সালে নয়াদিল্লির একটি ঘটনাকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছে। সেখানে একদল লোক দিল্লির চলন্ত বাসে ২৩ বছর বয়সী এক ছাত্রীকে ধর্ষণ করে গুরুতর আহত অবস্থায় ফেলে চলে যায়। শেষ পর্যন্ত সেই ছাত্রীর মৃত্যু হয়।

আরও পড়ুন:
ভারি বৃষ্টি: পুনেতে চারজনের মৃত্যু, বন্ধ স্কুল
জম্মু-কাশ্মীরে গোলাগুলিতে মেজরসহ চার ভারতীয় সেনা নিহত
ভারত রাজনৈতিক বন্ধু, চীন উন্নয়নের বন্ধু: কাদের
উত্তর প্রদেশে পদদলিত হয়ে নিহত বেড়ে ১২১
ভারতে ধর্মীয় অনুষ্ঠানে পদদলিত হয়ে নারী-শিশুসহ নিহত ১০৭

মন্তব্য

জীবনযাপন
Writ of mother and child to ensure paternity leave

পিতৃত্বকালীন ছুটি নিশ্চিত করতে মা ও শিশুর রিট

পিতৃত্বকালীন ছুটি নিশ্চিত করতে মা ও শিশুর রিট সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ। ফাইল ছবি
রিটে বাদী হয়েছেন ছয় মাস বয়সী এক শিশু ও তার মা। তবে শিশুটির পক্ষে আইনগত অভিভাবক হিসেবে হলফনামায় সই করেছেন তার বাবা। ২০১৯ সালে ওই শিশুর বড় ভাই নয় মাস বয়সে ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার স্থাপনের নির্দেশনা চেয়ে রিট করেছিল।

সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে পিতৃত্বকালীন ছুটি নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় নীতিমালা করার নির্দেশনা চেয়ে উচ্চ আদালতে রিট করা হয়েছে। রিটে বাদী হয়েছেন ছয় মাস বয়সী এক শিশু ও তার মা। তবে শিশুটির পক্ষে আইনগত অভিভাবক হিসেবে হলফনামায় সই করেছেন তার বাবা।

বুধবার এই রিট করা হয় বলে জানান শিশুটির মা সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইশরাত হাসান।

রিট আবেদনে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, জনপ্রশাসন সচিব, আইন সচিব, সংসদবিষয়ক সচিব, নারী ও শিশুবিষয়ক সচিব, সমাজ কল্যাণ সচিব, স্বাস্থ্য সচিব, শ্রম সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়েছে।

রিটে বলা হয়েছে, নবজাতকের যত্নে কেবল মায়ের ভূমিকা মুখ্য- এ ধারণার পরিবর্তন হয়েছে। বাবার ভূমিকাও দিন দিন বাড়ছে। বিশেষ করে ঢাকার মতো ব্যস্ত শহরে পরিবারের অন্য সদস্যদের সাহায্য নেয়ার সুযোগ সীমিত।

এ ছাড়া সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে শিশু জন্মের হার বাংলাদেশে অনেক বেশি। সিজারের পর মায়ের সুস্থ হয়ে উঠতে সময় লাগে। এ সময়ে নবজাতক ও মায়ের নিবিড় পরিচর্যার প্রয়োজন হয়।

পিতৃত্বকালীন ছুটির সুযোগ না থাকায় যারা নতুন বাবা হন, তাদের স্ত্রী ও নবজাতকের দেখাশোনা করা অত্যন্ত কষ্টসাধ্য হয়। বিশ্বের ৭৮টিরও বেশি দেশে পিতৃত্বকালীন ছুটির বিধান রয়েছে।

২০১৯ সালে ওই শিশুর বড় ভাই নয় মাস বয়সে কর্মক্ষেত্র, শপিংমল, বিমানবন্দর, বাস স্টেশন, রেলওয়ে স্টেশনসহ জনসমাগমস্থওলে ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার স্থাপনের নির্দেশনা চেয়ে রিট করেছিল। ওই রুলের শুনানি শেষে গত বছরের ২ এপ্রিল হাইকোর্ট এ বিষয়ে রায় দেয়।

মন্তব্য

জীবনযাপন
Project of Jago Foundation Trust on Child and Adolescent Protection

শিশু ও কিশোরী সুরক্ষায় জাগো ফাউন্ডেশন ট্রাস্টের প্রকল্প

শিশু ও কিশোরী সুরক্ষায় জাগো ফাউন্ডেশন ট্রাস্টের প্রকল্প কক্সবাজারের বেস্ট ওয়েস্টার্ন অ্যান্ড হেরিটেজ হোটেলে বুধবার প্রকল্পের অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। ছবি: নিউজবাংলা
প্রকল্পটি মূলত কক্সবাজার এলাকায় শিশু ও কিশোরীকেন্দ্রিক সুরক্ষা ব্যবস্থা তথা সেইফগার্ড মেকানিজম প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করবে। তিন বছরের মধ্যে মোট ৩০০ কিশোরী ও তরুণীকে এই প্রকল্পের আওতায় প্রশিক্ষণ দেয়া হবে।

বেকারত্ব, সামাজিক ও জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা এবং যৌন হয়রানির মতো সমস্যার সমাধান এবং সম্ভাব্য সুযোগগুলো কাজে লাগিয়ে শিশু ও কিশোরীদের সুরক্ষার লক্ষ্যে জাগো ফাউন্ডেশন ট্রাস্টের উদ্যোগে কক্সবাজারে ‘স্বপ্নের সারথি- সী-শোর গার্লস প্রজেক্ট’ শুরু হয়েছে।

ইউনিসেফের সহযোগিতা ও অর্থায়নে পরিচালিত প্রকল্পটির অবহিতকরণ সভা বুধবার কক্সবাজারের বেস্ট ওয়েস্টার্ন অ্যান্ড হেরিটেজ হোটেলে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

প্রকল্পটি মূলত কক্সবাজার এলাকায় শিশু ও কিশোরীকেন্দ্রিক সুরক্ষা ব্যবস্থা তথা সেইফগার্ড মেকানিজম প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করবে। এজন্য ইউনিসেফের চাইল্ড প্রটেকশনস স্পোর্টস ফর ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ-এর অধীনে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত এলাকায় একটি সী-শোর গার্লস হাব চালু করা হয়েছে।

প্রকল্পটির আওতায় খেলাধুলা, বিশেষ করে সার্ফিংয়ের মাধ্যমে মেয়েদের মানসিক বিকাশ, জীবন দক্ষতা এবং কর্মসংস্থানের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা সরবরাহ করবে। তিন বছরের মধ্যে মোট ৩০০ কিশোরী ও তরুণীকে এই প্রকল্পের আওতায় প্রশিক্ষণ দেয়া হবে, যাতে তারা নিরাপদ এবং সহায়ক পরিবেশে নিজেদের ক্ষমতায়ন করতে পারে।

ইউনিসেফ বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জেনারেশন আনলিমিটেডের প্রোগ্রাম ম্যানেজার মারিয়ান ওয়েলার্স বলেন, ‘মেয়েদেকে শোষণ এবং সহিংসতা থেকে রক্ষার জন্য তাদের ক্ষমতায়ন করতে হবে। স্বপ্নের সারথি প্রকল্পটি সার্ফিং, লাইফগার্ড প্রশিক্ষণ, প্রাথমিক চিকিৎসা, সাঁতার এবং সফট স্কিলসের মাধ্যমে মেয়েদের দক্ষতা ও ক্ষমতায়ণ বৃদ্ধি করতে কাজ করছে। প্রকল্পটিতে সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা কামনা করছি।’

আরও পড়ুন:
জাগো ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতার হাতে র‌্যামন ম্যাগসাইসাই পুরস্কার

মন্তব্য

জীবনযাপন
Case of inciting job student to commit suicide Assistant proctors bail denied

জবি ছাত্রীকে আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলা: সহকারী প্রক্টরের জামিন নাকচ

জবি ছাত্রীকে আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলা: সহকারী প্রক্টরের জামিন নাকচ জবির সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে আত্মহত্যা নিয়ে স্ট্যাটাস দেয়া জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ছাত্রী অবন্তিকাকে ১৫ মার্চ রাতে মৃত ঘোষণা করেন কুমিল্লা সদর হাসপাতালের চিকিৎসক।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার আত্মহত্যা প্ররোচনার মামলার আসামি সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামের জামিন আবেদন বাতিল করেছে আদালত।

দুই পক্ষের আইনজীবীদের শুনানি শেষে বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কুমিল্লার মুখ্য বিচারিক আদালতের বিচারক আবু বকর সিদ্দিকী জামিন আবেদন বাতিল করেন।

অবন্তিকার আইনজীবী সৈয়দ নুরুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

একদিনের রিমান্ড শেষে মঙ্গলবার সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামকে কারাগারে পাঠায় আদালত।

এদিকে অবন্তিকার সহপাঠী রায়হান সিদ্দিক আম্মানের দুই দিনের রিমান্ড শেষে আজ তাকে কুমিল্লার জুডিসিয়াল ম্যা‌জিস্ট্রেট আদালতে তোলা হয়েছে। বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে প্রিজনভ্যানে করে আম্মানকে কুমিল্লা জেল হাজতে নিয়ে যায় পুলিশ।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে আত্মহত্যা নিয়ে স্ট্যাটাস দেয়া জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ছাত্রী অবন্তিকাকে ১৫ মার্চ রাতে মৃত ঘোষণা করেন কুমিল্লা সদর হাসপাতালের চিকিৎসক।

ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকা নামের ওই ছাত্রী জবির আইন বিভাগের ২০১৭-১৮ বর্ষের শিক্ষার্থী।

কুমিল্লা সদর হাসপাতালের রাত্রিকালীন দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক মো. জুবায়ের বলেন, ‘হাসপাতালে নিয়ে আসার পর তার (অবন্তিকা) গলায় একটি দাগ দেখতে পাই। তার দেহ নিথর অবস্থায় ছিল। আমরা তাকে মৃত অবস্থায় পেয়েছি।’

মৃত্যুর আগে জবির এ ছাত্রী ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন, যাতে তিনি আত্মহত্যা করতে যাচ্ছেন বলে জানান। আত্মহত্যার জন্য সহপাঠী আম্মান ও জাবির সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামকে দায়ী করেন এ শিক্ষার্থী।

অবন্তিকার মৃত্যুর ঘটনায় আম্মান ও দ্বীন ইসলামকে পুলিশ আটক করার কথা শনিবার রাতে জানান ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান।

জবির এ ছাত্রী কুমিল্লা নগরের শাসনগাছা এলাকার প্রয়াত জামাল উদ্দিনের মেয়ে। তার বাবা কুমিল্লা সরকারি কলেজের পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক ছিলেন। তার মা তাহমিনা শবনম কুমিল্লা পুলিশ লাইনস উচ্চ বিদ্যালয়ের খণ্ডকালীন শিক্ষক।

কুমিল্লায় ময়নাতদন্ত শেষে শনিবার বেলা তিনটার দিকে অবন্তিকার প্রথম জানাজা ও বেলা পৌনে চারটার দিকে দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে বাবার কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়।

আরও পড়ুন:
অবন্তিকার মৃত্যুতে অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে মশাল মিছিল
অবন্তিকার আত্মহত্যা: কাগজপত্র হাতে পেল তদন্ত কমিটি
অবন্তিকার ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্তের জন্য অপেক্ষা করতে হবে: জবি উপাচার্য
জবি ছাত্রীর মৃত্যুতে সহপাঠী ও প্রক্টরের সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে পুলিশ
জবি ছাত্রীর মৃত্যু: সহপাঠী ও প্রক্টরের নামে কুমিল্লায় মামলা

মন্তব্য

জীবনযাপন
Womens participation has increased in the workplace but not in decision making

‘কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ বেড়েছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণে নয়’

‘কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ বেড়েছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণে নয়’ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম। ফাইল ছবি
‘সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রেই নারীত্ব নিয়ে রাজনীতি হচ্ছে। সেটা পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র, প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাঙ্গন, ভাগ-বাটোয়ারার ক্ষেত্র, এমনকি ধর্মীয়ভাবেও। পৃথিবীতে এমন কোনো ধর্ম খুঁজে পাওয়া যাবে না, যেখানে প্রতিটি ক্ষেত্রে নারীকে সমান অধিকার দেয়া হয়েছে।’

‘কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ বাড়লেও নারীর ক্ষমতায়ন বা সামাজিক মর্যাদা বাড়েনি। দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে সিদ্ধান্ত গ্রহণে নারীর অংশগ্রহণ ও ক্ষমতায়ন জরুরি।

‘অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে রাজনীতিতে নারীদের কথা বলার জায়গাটা তৈরি করে দিতে হবে। সিদ্ধান্ত গ্রহণের জায়গাগুলোতে নারীদের নিয়ে আসতে হবে।’

আন্তর্জাতিক নারী দিবস সামনে রেখে বার্তা সংস্থা ইউএনবিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম।

তিনি বলেন, ‘নারী পরিচয়ের আগে আমার বড় পরিচয় হলো আমি একজন মানুষ। নারী-পুরুষ ভেদাভেদ তৈরি, নারীকে হেয় করা, শারীরিক ও মানসিকভাবে পুরুষের চেয়ে দুর্বল মনে করা হয় আজও।’

পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারীদের মূল্যায়ন সম্পর্কে সাদেকা হালিম বলেন, ‘সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি এমন হয়েছে যে সমাজে নারীকে দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হিসেবে দেখা হয়; যদিও বাংলাদেশের সংবিধানে নারী ও পুরুষ সমান। কিন্তু বাস্তবে কোনো দেশই খুঁজে পাওয়া যাবে না, যেখানে নারীকে পুরুষের সমান ভাবা হয়।’

‘সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রেই নারীত্ব নিয়ে রাজনীতি হচ্ছে। সেটা পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র, প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাঙ্গন, ভাগ-বাটোয়ারার ক্ষেত্র, এমনকি ধর্মীয়ভাবেও। পৃথিবীতে এমন কোনো ধর্ম খুঁজে পাওয়া যাবে না, যেখানে প্রতিটি ক্ষেত্রে নারীকে সমান অধিকার দেয়া হয়েছে।’

‘এমনকি নারীর সন্তান জন্ম দেয়ার বিষয় নিয়েও রাজনীতি করা হয়। সন্তান জন্মের পর পরই সন্তানের অধিকার কিভাবে হবে সেটা আমরা ধর্মীয়ভাবে নির্ধারণ করি। বাবা ও মায়ের অধিকার কতটুকু, আমাদের সিভিল ল’তে কতটুকু, শরিয়া ল’তে কতটুকু- এসব বিষয় অনেকটাই পুরুষকেন্দ্রিক। পুরুষকে সব সময় প্রাধান্য দেয়া হয়। পুরুষরাই এ সমাজে নিয়ন্ত্রকের ভূমিকা পালন করে।’

এই উপমহাদেশে নারীদের ভূমিকা সম্পর্কে ড. সাদেকা হালিম বলেন, ‘ভারত উপমহাদেশে নারীর ক্ষমতায়ন যে এখন হয়েছে তা নয়। অবিভক্ত ভারত উপমহাদেশে নারীরা কিন্তু ইউরোপের নারীদের আগেই ভোটাধিকার পেয়েছিল। ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায় নারীরা যুদ্ধে অংশ নিয়েছে, রানি হয়েছে, ট্যাক্স সংগ্রহ করেছে।

‘আধুনিক রাষ্ট্রে পুঁজিবাদের বিস্তার ঘটার সঙ্গে সঙ্গে নারীদের কাজের পরিধি বেড়েছে, কিন্তু নারীদের পণ্য হিসেবে দেখা হচ্ছে। তার কাজকে কাজ হিসেবে আমরা দেখিনি। নারীরা স্ত্রী, মা বা মেয়ে হিসেবে যে ভূমিকা পালন করে সেটিকেও অবমূল্যায়ন করা হয়।

‘কোনো নারী চাকরি করলেও তাকে আমরা প্রশ্ন করি তার স্বামী কী করে। সে যদি স্বামীর থেকে বেশি বেতন পায়, তাহলে পুরুষও হীনম্মন্যতায় ভোগে।’

সমাজের সাধারণ নারীদের অবস্থা বর্ণনা করতে গিয়ে জবি উপাচার্য বলেন, ‘অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন তো নারীদের অনেকেরই হয়েছে। গার্মেন্ট সেক্টর, চিংড়ি মাছের ঘের, কল-কারখানায় নারীরা কাজ করছে। এটি ভারত বা পাকিস্তানের চেয়ে অনেক বেশি। কিন্তু নারীর সামাজিক মর্যাদা কি বেড়েছে? এটা খুবই জটিল একটি বিষয়।

‘চরম দারিদ্র্যের শিকার নারীরা কোনো কিছু ভাবে না, বা ভাবার সুযোগ পায় না। তারা জানে তাদেরই কাজ করতে হবে, ক্ষুধা মেটাতে হবে। তারাই শিশুদের মুখে খাবার তুলে দিচ্ছে। সাধারণ নারীরা অনেক পরিশ্রমী। সামাজিক সমালোচনা গ্রাহ্য না করে তারা চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করছে। কিন্তু সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ায় তাদের বাদ দেয়া হচ্ছে।’

নারীর সামাজিক নিরাপত্তার বিষয়ে সাদেক হালিম বলেন, ‘আমরা নারীর নিরাপদ চলাচল নিশ্চিত করতে পারিনি। বাংলাদেশে বা প্রবাসে যে পরিমাণ নারী কাজ করে সেখানেও আমরা দেখি যে নারীরা নিরাপদ নয়। এমনকি খুব নিকট আত্মীয়ের মাধ্যমে তারা ধর্ষণের শিকার হয়।’

তিনি বলেন, ‘তবে বাংলাদেশে দীর্ঘ সময় ধরে প্রধানমন্ত্রী নারী, স্পিকার নারী, বিরোধীদলীয় নেত্রী নারী। এবারকার কেবিনেটে একটি উল্লেখযোগ্য অংশ নারী মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী হয়ে আসছেন। এটা ইতিবাচক দিক।

‘সংখ্যার দিক থেকে নারীর অংশগ্রহণ অনেক বেশি, কিন্তু নারীর ক্ষমতায়ন বা সামাজিক মর্যাদার জায়গায় গুণগত মানের দিক থেকে কতটা বদলেছে সেটি বড় বিষয়। যখন নারীরা সিদ্ধান্ত গ্রহণে আসবে, নেতৃত্ব দেবে, তখনই বদলাবে সমাজ।’

আরও পড়ুন:
‘নারীদের ওপর বিনিয়োগ করুন, দ্রুত উন্নতি আনুন’

মন্তব্য

জীবনযাপন
Garo children received books in their mother tongue

মাতৃভাষায় বই পেল গারো শিশুরা

মাতৃভাষায় বই পেল গারো শিশুরা মাতৃভাষায় বই পেয়ে খুশি গারো শিক্ষার্থীরা। ছবি: নিউজবাংলা
সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী কেবল তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্তই মাতৃভাষায় পড়তে পারবে দেশের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর শিশুরা।

দেশের ক্ষুদ্র ও নৃগোষ্ঠী শিশুদের মাতৃভাষায় পাঠদানের জন্য বই বিতরণ করে আসছে সরকার। সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী কেবল তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্তই মাতৃভাষায় পড়তে পারবে দেশের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর শিশুরা।

এতদিন চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, আচিক ও সাদ্রি- এই পাঁচটি ভাষায় বই বিতরণ হলেও প্রথমবারের মতো এবার গারো শিক্ষার্থীদের জন্য আচিক ভাষায় পাঠ্যবই বিতরণ করা হয়েছে। মাতৃভাষায় পাঠ্যবই পেয়ে আনন্দিত সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলার গারো শিশুরা।

বুধবার জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) প্রণীত আচিক ভাষার পাঠ্যবই শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেয়া হয়।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, মধ্যনগরে ক্ষুদ্র ও নৃগোষ্ঠী অধ্যুষিত বংশীকুন্ডা উত্তর ইউনিয়নের বাঙালভিটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাঙালভিটা মিশন প্রাইমারি স্কুল, কাইটাকোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কাইটাকোনা মিশন প্রাইমারি স্কুল ও ইছামারী মিশন প্রাইমারি স্কুল- এই পাঁচটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠরত গারো শিক্ষার্থীর সংখ্যা দেড় শতাধিক। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রাক-প্রাথমিক থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত মোট ৮৪ জন গারো শিক্ষার্থীর মধ্যে আচিক ভাষার পাঠ্যবই বিতরণ করা হয়েছে।

মাতৃভাষায় বই পেল গারো শিশুরা

কাইটাকোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক তূর্ণা মানকিন বলেন, ‘আজকে শিক্ষার্থীদের মাঝে আচিক ভাষায় প্রণীত বই বিতরণ করতে পেরে খুবই ভালো লাগছে। মনে নতুন আলোর সঞ্চার হলো। আমরা আমাদের অর্থাৎ গারো আদিবাসীর অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখার একটা উপায় পেয়েছি।’

এতে আচিক ভাষার শুদ্ধ ও সঠিক ব্যবহার সম্পর্কে নতুন প্রজন্মের ছেলে-মেয়েরা প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকেই ধারণা লাভ করতে পারবে বলে জানান তিনি।

বাঙালভিটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইয়ূস দাজেল বলেন, ‘আমি নিজেও একজন গারো। দেরিতে হলেও এই প্রথম শিশুদের হাতে মাতৃভাষায় সরকারি পাঠ্যবই তুলে দিতে পেরে আমি গর্ববোধ করছি।’

প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর ঐকান্তিক ইচ্ছায় গারোদের মাতৃভাষায় শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।’

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মানবেন্দ্র দাস বলেন, ‘ক্ষুদ্র ও নৃগোষ্ঠীর গারো শিশু শিক্ষার্থীদের হাতে সরকারি পাঠ্যবই পৌঁছে দিতে পেরে আমি আনন্দিত ও গর্বিত। আমার নিজ খরচে জেলা শহর থেকে এসব বই এনে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সরবরাহ করেছি।’

আরও পড়ুন:
পাঠ্যবইয়ে ‘শরীফার গল্প’ নিয়ে বিভ্রান্তি থাকলে সংশোধন হবে
মৌলভীবাজারে মণিপুরী গারো ও খাসিয়াদের উৎসব, চলছে প্রস্তুতি
পাঠ্যবইয়ের ভুলভ্রান্তি দেখভালে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দুই কমিটি
পাঠ্যবইয়ে হুবহু অনুবাদের দায় স্বীকার জাফর ইকবাল ও হাসিনা খানের
পাঠ্য বইয়ে একের পর এক ভুল

মন্তব্য

জীবনযাপন
Stay at the engineers house to get wifes rights

স্ত্রীর অধিকার পেতে প্রকৌশলীর বাড়িতে অবস্থান

স্ত্রীর অধিকার পেতে প্রকৌশলীর বাড়িতে অবস্থান স্ত্রীর অধিকার দাবিতে কোটালীপাড়ায় এক প্রকৌশলীর বাড়িতে এক নারীর অবস্থান। ছবি: নিউজবাংলা
ওই নারী বলেন, ‘২০২০ সালের ৯ ডিসেম্বর আমার সঙ্গে প্রকৌশলী আহাদ মোল্লার বিয়ে হয়। বিয়ের পর আমরা স্বামী-স্ত্রী হিসেবে ঢাকায় বসবাস করতে থাকি। এ খবর দুই পরিবারে জানাজানি হলে ২০২২ সালের ৯ ডিসেম্বর পুনরায় সামাজিকভাবে আমাদের বিয়ে হয়। কিন্তু সে এখন কোনো যোগাযোগ রাখছে না। এজন্য স্ত্রীর অধিকার পেতে এখানে এসেছি।’

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলায় স্ত্রীর দাবি নিয়ে আহাদ মোল্লা নামে এক প্রকৌশলীর বাড়িতে অবস্থান নিয়েছেন এক নারী। স্ত্রীর স্বীকৃতি না দিলে এখানেই আত্মহত্যা করবেন বলে হুমকি দিয়েছেন তিনি।

অভিযুক্ত আহাদ মোল্লা কোটালীপাড়া উপজেলার সিতাইকুন্ড গ্রামের মোস্তফা মোল্লার ছেলে। তিনি হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের প্রকৌশলী বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী ওই নারী।

বুধবার সন্ধ্যা থেকে ওই নারী প্রকৌশলী আহাদ মোল্লার বাড়ির উঠোনে একটি গাছের নিচে অবস্থান নিয়েছেন।

ওই নারী বলেন, ‘দীর্ঘদিন প্রেম করার পর ২০২০ সালের ৯ ডিসেম্বর আমার সঙ্গে প্রকৌশলী আহাদ মোল্লার বিয়ে হয়। বিয়ের পর আমরা স্বামী-স্ত্রী হিসেবে ঢাকায় বসবাস করতে থাকি। এ খবর দুই পরিবারে জানাজানি হলে ২০২২ সালের ৯ ডিসেম্বর পুনরায় সামাজিকভাবে আমাদের বিয়ে হয়।

‘কিন্তু দ্বিতীয়বার বিয়ের কিছুদিন পর হঠাৎ করে আহাদ আমার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। দীর্ঘ প্রায় এক বছর ধরে সে কোনো যোগাযোগ করছে না। নিরুপায় হয়ে স্ত্রীর দাবি নিয়ে আহাদের বাড়িতে এসে উঠেছি। সে আমাকে স্ত্রীর মর্যাদা না দিলে এ বাড়িতেই আত্মহত্যা করব।’

এদিকে ওই নারী বাড়িতে এসে ওঠার খবর পেয়ে প্রকৌশলী আহাদ মোল্লা ও তার পরিবারের লোকজন অন্যত্র চলে যান।

প্রতিবেশী নেয়ামুল ফকির ও খলিল শেখ বলেন, ‘আহাদ মোল্লার সঙ্গে ওই নারীর সামাজিকভাবে যে বিয়ে হয়েছে তা আমরা সবাই জানি। বিয়ের পর আহাদ মোল্লা তার স্ত্রীকে নিয়ে ঢাকায় বসবাস করত। এখন তাদের মাঝে কী হয়েছে তা আমাদের জানা নেই।’

এ বিষয়ে বক্তব্য জানার জন্য আহাদ মোল্লার বাড়িতে গিয়ে তাদের পরিবারের কাউকে পাওয়া যায়নি। আর আহাদ মোল্লা ঢাকায় থাকায় তার সঙ্গে একাধিক বার মোবাইল ফোনে যোগযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।

মন্তব্য

p
উপরে