ভারতীয় উপমহাদেশে তান্ত্রিক যৌনতার ইতিহাস বহু পুরোনো। বিভিন্ন প্রাচীন গ্রন্থেও এর উল্লেখ পাওয়া যায়। তবে আধুনিক সময়ে এ ধরনের যৌনাচার নিয়ে বিতর্কের অভাব নেই। আধ্যাত্মিকতার আড়ালে ধর্মগুরু বা তান্ত্রিক সাধকেরা এই যৌনতাকে নিজের উদ্দেশ্য পূরণে ব্যবহার করেন- এমন অভিযোগ অসংখ্য।
এর পরও তান্ত্রিক যৌনতা নিয়ে আগ্রহ আছে অনেকের। পশ্চিমা দেশে এটি নিয়ে গবেষণা-অনুসন্ধান চলছে নিয়মিত। কারেন্ট অ্যাফেয়ার্সভিত্তিক সাইট ভাইস সম্প্রতি এই তান্ত্রিক যৌনতার বিভিন্ন দিক নিয়ে নিবন্ধ প্রকাশ করেছে। সেটি অনুবাদ করেছেন রুবাইদ ইফতেখার।
তান্ত্রিক যৌনতার জগতের সঙ্গে প্রেম ভিসমাইয়ের পরিচয় বছর দশেক আগে। ভারতের রহস্যের রাজধানী হিসেবে খ্যাত ঋষিকেষে এক ট্র্যান্স পার্টিতে তিনি প্রথম এ সম্বন্ধে জানতে পারেন। ৪৫ বছরের এ তন্ত্র শিক্ষক বলেন, “ওখানে আমাকে একজন মা আনন্দ সারিতার বই ‘ডিভাইন সেক্সুয়ালিটি: দ্য জয় অফ তন্ত্র’ সম্পর্কে জানান। আমার জন্য ওটাই ছিল টার্নিং পয়েন্ট।”
সে সময়টিতে দ্রুত বীর্যপাত নিয়ে ভিসমাই হতাশায় ভুগছিলেন।
তিনি বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমার প্রচণ্ড হতাশা ছিল। তবে তন্ত্র চর্চার পর আমি এই সমস্যা কাটিয়ে উঠি এবং নিজের যৌন জীবনকে উপভোগ করতে শুরু করি। তান্ত্রিক যৌনতায় বহুগামিতা ও উদ্দাম অর্জির (সংঘবদ্ধ বুনো যৌনাচার) বিষয়টি থাকলেও এগুলোই শেষ কথা নয়। আদতে এটি নিজের পথ খুঁজে পেতে নিজের ওপরেই ভরসা রাখার অন্যতম উপায়।’
পশ্চিমে অনেকের কাছে ‘তন্ত্র’ শব্দটি ৭-৮ ঘণ্টা অবিরত যৌনাচারের ধারণা তুলে ধরে। তবে এই চর্চা হাজার বছর ধরে হিন্দু ও বৌদ্ধ মতাদর্শে চলে আসছে এবং এর আরও অনেকগুলো দিক রয়েছে।
অক্সফোর্ড রিসার্চ এনসাইক্লোপিডিয়া অফ রিলিজিয়নের মতে, তন্ত্র এমন একটি পদ্ধতি যার মাঝে নানা ধরনের গূঢ়, আধ্যাত্মিক ও যৌন শিক্ষা অন্তর্ভুক্ত। এতে বিভিন্ন ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্যের মিশেল রয়েছে এবং আমাদের মুক্তির উপলব্ধি থেকে আনন্দ, হেডোনিজম (আনন্দকে উচ্চমার্গে পৌঁছানো সংক্রান্ত বিদ্যা) ও মৃত্যু পর্যন্ত সবকিছুর সমাধান খোঁজার চেষ্টা করা হয়েছে। তন্ত্রের বিশাল জগতে যৌনতা একটি বিশেষ অংশ।
৪০ বছর বয়সী তন্ত্র শিক্ষক মোহিনী শ্রীসতীর মতে, প্রচলিত ধারণার বাইরে বেরিয়ে তান্ত্রিক যৌনতাকে বোঝার চেষ্টা করতে হবে।
তিনি বলেন, ‘এটা আসলেই জাদুকরী ও পরমাকাঙ্ক্ষিত (এক্সোটিক)। তান্ত্রিক যৌনতা হচ্ছে ধ্যানমূলক যৌনতা। এতে শ্বাস-প্রশ্বাসকে নিয়ন্ত্রণ, বিছানায় নিজের সৃষ্টিশীলতা, শিশুকাল থেকে শিখে আসা যৌনতা ও ধর্মীয় বিষয়গুলো ভুলে যাওয়া এবং নিজের যৌন শক্তিকে ঐশ্বরিক শক্তির সঙ্গে যোগাযোগের একটু মাধ্যম হিসেবে শ্রদ্ধা করার মতো বিষয়গুলোর চর্চা করা হয়।’
মননশীলতার চর্চা থেকে শুরু করে সঙ্গীর সঙ্গে খোলামেলা যোগাযোগের মাধ্যমে ইন্দ্রিয় সম্পর্কে সচেতন হওয়া পর্যন্ত, যৌনতায় ধ্যানশীল, ধীরগতি আনার ধারণাটি তান্ত্রিক যৌনতার কেন্দ্রীয় নীতিগুলোর মধ্যে অন্যতম।
ভারতীয় উপমহাদেশে তান্ত্রিক যৌনতার ইতিহাস বহু সহস্রাব্দের ও প্রাচীন বৌদ্ধ এবং হিন্দু গ্রন্থে উল্লেখ করা হয়েছে। ব্রিটেনের ইন্ডোলজিস্ট (ভারত বিশেষজ্ঞ) জেফ্রি স্যামুয়েল তার বই ‘অরিজিনস অফ ইয়োগা: ইন্ডিজ রিলিজিয়নস টু দ্য থার্টিন্থ সেঞ্চুরি’তে তান্ত্রিক যৌনতাকে ‘সেক্সুয়াল ইয়োগা’ বলে অভিহিত করেছেন, যা তৃতীয় ও পঞ্চম শতাব্দীতে বহুল প্রচলিত ছিল। হিন্দুদের অন্যতম গ্রন্থ উপনিষদেও এ সম্বন্ধে বলা হয়েছে।
তিব্বতের লামা থুবটেন ইয়েশে তার লেখা ‘ইন্ট্রোডাকশন টু তান্ত্রা: দ্য ট্র্যান্সফরমেশন অফ ডিজায়ার’ বইয়ে বলেছেন, তান্ত্রিক যৌনতার মূল ধারণাটি হলো, ‘আকাঙ্ক্ষাগুলোকে পরিপূর্ণ রূপ দেয়া।’
তার মতে, দ্বিতীয় শতাব্দীতে তিব্বতীয় বৌদ্ধ ধর্মের অন্তর্ভুক্ত একই ধরনের ভাবনা থেকে এর জন্ম।
ভাইসের প্রতিবেদনে তান্ত্রিক যৌনতার বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
নকল গুরু থেকে সাবধান
অন্যান্য রহস্যময় ও উত্তুঙ্গ বিষয়ের মতো তান্ত্রিক যৌনতা নিয়েও ব্যবসার পরিমাণ কম নয়। অনেক ‘গুরু’ আছেন যারা বিষয়টিকে কাজে লাগিয়ে দ্রুত অর্থ হাতাতে আগ্রহী। দিল্লির ৩৯ বছর বয়সী যৌনতার প্রশিক্ষক পল্লভি বার্নওয়াল জানান, তান্ত্রিক যৌনতা শিখতে গিয়ে তিনি প্রায় যৌন হয়রানির মুখে পড়েছিলেন।
তিনি বলেন, ‘খুব জনপ্রিয় একজন গুরু ছিলেন। তিনি প্রথম অনলাইন অডিও সেশনে আমাকে আত্ম-সুখের পদ্ধতি হিসেবে বিশেষ এক ধরনের মাস্টারবেশন শেখাতে চান। কয়েক মিনিট পরই আমার অবস্থা জানতে ক্যামেরা অন করতে বলেন।’
বার্নওয়ালের মতে, ভারতের মতো দেশ যেখানে যৌনতা নিয়ে কথা বলা এখনও সহজ নয়, সেখানে এ ধরনের চর্চার ক্ষেত্রে কারও দুর্বলতার সুযোগ নেয়ার মতো অনেকেই আছেন।
তিনি যোগ করেন, ‘একজন সত্যিকারের গুরু কখনোই আপনাকে নগ্ন হয়ে নিজেকে সমর্পণ করতে বলবে না। তান্ত্রিক যৌনতা বোঝার জন্য কোনো গুরুর শয্যাসঙ্গী হতে হবে না।’
ধীরস্থির ও সৃষ্টিশীল হোন
এক দশক ধরে তান্ত্রিক যৌনতার চর্চা করা শ্রীসতীর মতে, দ্রুত সবকিছু করে আপনাকে অর্গাজম অনুভব করতে হবে- এমন ধারণা তন্ত্রর আদর্শের বিপরীত।
তিনি বলেন, ‘তান্ত্রিক যৌনতায় জোর করে বীর্যপাত বা অনুপ্রবেশের কোনো ধারণা নেই। একজন আরেকজনের চোখের দিকে তাকিয়ে বীর্যপাত না ঘটিয়েই অর্গাজমের অনুভূতি পেতে পারেন। মূল বিষয়টি হচ্ছে শুধু যৌনাঙ্গ দিয়ে নয়, ভিন্ন ভিন্ন অর্গাজমের শীর্ষবিন্দুগুলোকে উপভোগ করা।’
অনেকেই ভাবেন, তান্ত্রিক যৌনতার উদ্দেশ্য হচ্ছে অর্গাজম দীর্ঘায়িত করা, তবে সেটা ঠিক নয়।
শ্রীসতীর বলেন, ‘তেমন হলে বিষয়টি দাঁড়ায় যে দেরিতে অর্গাজম করানোটাই মূল চ্যালেঞ্জ, আর এই চ্যালেঞ্জে আপনাকে জিততে হবে। সে ক্ষেত্রে আপনার দেহ একেবারে অনমনীয় হয়ে পড়বে।’
ভিসমাইয়ের মতে, যে স্থানে আপনি ঘনিষ্ঠ হচ্ছেন তাকে ‘শক্তি ও নিরাময়ের ঐশ্বরিক স্থান’ হিসেবে বিবেচনা করাও গুরুত্বপূর্ণ। বিষয়টিকে আরও চটকদার করে তোলার জন্য তিনি পরামর্শ দেন মোমবাতি, ফুল ও হালকা মিউজিক ব্যবহার করতে।
তিনি বলেন, ‘সাদা ও জ্বলজ্বলে লাইট, মোবাইল চার্জার, বিপ করা ঘড়ি বা টাইমার ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন। তন্ত্রের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে আপনার সমস্ত চেতনাকে যৌনতায় নিয়ে আসা এবং এ ক্ষেত্রে কোনো ধরনের উপদ্রব যেন না আসে।’
সঠিক শক্তি নির্বাচন করা
২৯ বছর বয়সী তন্ত্র শিক্ষক আলেসান্দ্রো দি বেনেদিত্তো বলেন, ‘নিজের শক্তিকে নিয়ন্ত্রণ করা এবং নিজের চাহিদা ও আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে একাত্ম হওয়াটাই তান্ত্রিক যৌনতার মূলমন্ত্র। কারও সঙ্গে মিলিত হওয়ার আগে আপনার তার সঙ্গে সংযুক্ত হতে হবে। তার চোখের দিকে তাকান, তাকে বোঝার চেষ্টা করুন ও হাত ধরুন।’
কারও সঙ্গে দেখা হওয়ার পর যদি মনে হয় ছন্দ মিলছে না, তাহলে বেনেদেত্তোর পরামর্শ হলো, সময় নষ্ট না করে এগিয়ে যাওয়া।
তিনি বলেন, ‘ওই ব্যক্তি আপনার সঙ্গে একাত্মতা অনুভব করলে এবং একই সঙ্গে অগ্রসর হতে চাইলে আপনি সম্পর্কটি নিয়ে দ্বিতীয়বার ভাবতে পারেন।’
নিঃশ্বাস ও শব্দ নিয়ে পরীক্ষা করা
তান্ত্রিক যৌনতা শক্তির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কাজ করে। আর তাই শ্রীসতীর পরামর্শ, অভিজ্ঞতার সর্বোত্তম ব্যবহারের জন্য নিঃশ্বাস ও শব্দ নিয়ে খেলতে।
তিনি বলেন, ‘এর অনেক উপায় আছে। কান্না হোক, হাহাকার হোক বা ভিন্ন ভিন্ন পজিশন হোক, নিজেকে ওই মুহূর্তে একেবারে উন্মুক্ত করে দিয়ে অভিজ্ঞতা নিতে হবে। অবস্থান, নিঃশ্বাস ও শব্দ নিয়ে নিরীক্ষা করতে হবে।’
শ্রীসতীর মতে, তান্ত্রিক যৌনতায় শক্তিকে নিয়ন্ত্রণ করতে নিঃশ্বাস খুব গুরুত্বপূর্ণ এক অস্ত্র।
তিনি বলেন, ‘নারীদের কল্পনা করতে হবে, আপনি আপনার যৌনতার চক্র থেকে নিঃশ্বাস নিচ্ছেন এবং হৃদয় চক্র দিয়ে তা ছাড়ছেন। পুরুষদের জন্যও ঠিক একই ব্যাপার। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে যৌন শক্তির প্রতিটি ক্ষুদ্রাংশকে আপনার ভেতরে প্রবাহিত করা। আপনার দেহের প্রতিটি বিন্দু ভালোবাসার কাজে নিযুক্ত, আর তাই এটি আপনার পূর্ণ দৈহিক অর্গাজমে সাহায্য করে।’
তান্ত্রিক যৌনতায় বলা হয়ে থাকে, যৌনতা বা পবিত্রতার চক্র নাভির নিচে অবস্থিত, আর হৃদয় চক্র অবস্থিত হৃৎপিণ্ডে। নিজের নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসকে এ চক্রগুলোর ভেতরে প্রবেশ করা ও বের হওয়ার কল্পনা আপনার অভিজ্ঞতাকে পূর্ণতা দেবে।
শৈশবের শিক্ষাকে ভুলে যাওয়া
২৮ বছর বয়সী বিজনেস অ্যানালিস্ট আনন্দ কুমার বছর দুয়েক ধরে তান্ত্রিক যৌনতার চর্চা করছেন। তিনি জানান, লজ্জা ও আত্মসম্মান বিষয়ে পাওয়া শৈশবের শিক্ষা ভুলতে গুরুর সঙ্গে তাকে বাড়তি কাজ করতে হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমি সব সময় আমার দেহকে একটা রাজনৈতিক ক্ষেত্র হিসেবে দেখে এসেছি, যার সঙ্গে অসংখ্য শর্ত জড়িত ছিল। আমার দেহের রোমশভাবের কারণে ছোট ভাইবোনেরা আমাকে খ্যাপাত। আমি বহু বছর এ নিয়ে বিরক্ত ছিলাম। তবে তান্ত্রিক যৌনতা আমাকে নিজ দেহকে ভালোবাসতে শিখিয়েছে।’
শ্রীসতী বলেন, ‘ছোটকালে নিজের যৌনাঙ্গ স্পর্শ করলেও মা-বাবারা লজ্জা দেন। যে কারণে অনেকেই বড় হওয়ার পর মাস্টারবেশন বা আত্ম-সুখের অন্য কোনো প্রক্রিয়ার পরই অপরাধবোধে ভোগেন।’
শ্রীসতীর মতে, তান্ত্রিক যৌনতার অন্যতম অনুষঙ্গ হচ্ছে মানসিক প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা বিষয়গুলোকে ভুলে যাওয়া।
আসন নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা
বার্নওয়াল তান্ত্রিক যৌনতার সময় ‘ইয়াব-ইউম’ আসন পছন্দ করেন। এ অবস্থানে নারী তার সঙ্গীর কোলে বসে পা দিয়ে পুরুষকে শক্তভাবে পদ্মফুলের মতো আঁকড়ে ধরেন। ঐতিহ্যগতভাবে এটাই এ আসনের বর্ণনা, তবে যেকোনো লিঙ্গের সঙ্গীর সঙ্গেই এটি করা যেতে পারে।
বার্নওয়াল বলেন, ‘এ আসনে আপনার সঙ্গীর চক্রের সঙ্গে আপনার চক্র একেবারে মিলে যায়। শারীরিকভাবে আপনারা একে অপরের কপাল, হৃদয় ও যৌনাঙ্গ স্পর্শ করছেন। এ ঘনিষ্ঠ সংযোগ সারা শরীরে সমানভাবে ছড়িয়ে পড়ে।’
ভিসমাই যোগ করেন, তান্ত্রিক যৌনতায় কোনো ধরনের ‘অ্যাক্রোবেটিক পজিশন’ নেই। পুরো প্রক্রিয়াটাই নিজের মনের হাত থেকে মুক্ত হয়ে দেহের সঙ্গে একাত্ম হওয়ার বিষয়।
তিনি বলেন, ‘ওশোকে (বিতর্কিত আধ্যাত্মিক গুরু) এক আলোচনায় বলতে শুনেছি যে শরীর তার পছন্দের অবস্থান নিজেই খুঁজে নেবে। মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে ভালোবাসার মধ্যে শান্তি ও প্রার্থনার ধারণা নিয়ে আসা। এটা এমন কোনো যান্ত্রিক বিষয় নয় যে সবগুলো শর্ত পূরণ করতেই হবে।’
আরও পড়ুন:পৃথিবীর কাছের কক্ষপথে নতুন একটি কোয়াসি চাঁদের সন্ধান পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, কোয়াসি চাঁদ সাধারণ চাঁদের মতো নয়। এসব চাঁদ সরাসরি পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করার পরিবর্তে সূর্যের চারপাশে এমন একটি কক্ষপথ অনুসরণ করে যা দেখে মনে হয় চাঁদটি আমাদের গ্রহের সঙ্গে অবস্থান পরিবর্তন করছে। নতুন এই কোয়াসি চাঁদের নাম দেওয়া হয়েছে ‘২০২৫ পিএন৭’।
প্ল্যানেটারি সোসাইটির তথ্যমতে, কোয়াসি চাঁদ বা আধা চাঁদ মূলত গ্রহাণু। স্থায়ী চাঁদের মতো আমাদের গ্রহকে প্রদক্ষিণ করছে বলে মনে হলেও কোয়াসি চাঁদ আসলে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে। এ সময় অস্থায়ীভাবে আমাদের গ্রহের পাশাপাশি সৌরজগতের মধ্য দিয়ে চলাচল করে। নতুন কোয়াসি চাঁদ আবিষ্কারের বিষয়ে স্পেনের মাদ্রিদের কমপ্লুটেন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী কার্লোস দে লা ফুয়েন্তে মার্কোস জানান, এই ক্ষুদ্র গ্রহাণু পৃথিবীর সাতটি পরিচিত কোয়াসি চাঁদের মধ্যে সবচেয়ে ছোট ও সবচেয়ে কম স্থিতিশীল।
নতুন কোয়াসি চাঁদের ব্যাস প্রায় ৬২ ফুট বা ১৯ মিটার। বেশ ছোট এই কোয়াসি চাঁদকে দেখতে বেশ ক্ষীণ বলে শুধু উচ্চমানের টেলিস্কোপ ব্যবহার করেই দেখা যায়। কোয়াসি চাঁদ সূর্যের চারপাশে পৃথিবীর মতো একটি কক্ষপথ অনুসরণ করছে। পৃথিবী থেকে ২৮ লাখ থেকে ৩৭ লাখ মাইল দূরে অবস্থান করছে চাঁদটি।
বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, সীমিত দৃশ্যমানের কারণে নতুন কোয়াসি চাঁদটি ছয় দশক ধরে পর্যবেক্ষণের বাইরে ছিল। সম্ভবত আরও ৬০ বছর ধরে বর্তমানের মতোই থাকবে। ২০২৫ পিএন৭ নামের কোয়াসি চাঁদের আবিষ্কারের ফলাফল সম্প্রতি আমেরিকান অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটির রিসার্চ নোটস সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে।
সূত্র: এনডিটিভি
বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় নিউ এনার্জি ভেহিকল (এনইভি) প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান বিওয়াইডি বাংলাদেশের বাজারে তাদের জনপ্রিয় ইলেকট্রিক গাড়ি বিওয়াইডি অ্যাটো ৩-এর নতুন আপগ্রেডেড ভার্সন উন্মোচন করেছে। শনিবার ঢাকার তেজগাঁওয়ে অবস্থিত তাদের ফ্ল্যাগশিপ শোরুমে গাড়িটি উন্মোচন করা হয়।
বিওয়াইডি অ্যাটো ৩-তে ইন্ডাস্ট্রির সেরা লিথিয়াম আয়রন ফসফেট ব্লেড ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়েছে, যা ডিসি ফাস্ট চার্জারের মাধ্যমে মাত্র ৩০ মিনিটে ৩০ থেকে ৮০ শতাংশ চার্জ করতে সক্ষম। গাড়িটিতে পারফরম্যান্স, নিরাপত্তা ও ইন্টেলিজেন্স বাড়াতে ব্যবহার করা হয়েছে ই-প্ল্যাটফর্ম ৩.০। ইউরো এনসিএপি ৫-স্টার সেফটি রেটিং সহ এই গাড়িটিতে আরও রয়েছে ৭টি এয়ারব্যাগ, ভেন্টিলেটেড ফ্রন্ট সিট ও সর্বাধুনিক অ্যাডভান্সড ড্রাইভার অ্যাসিস্ট্যান্স সিস্টেমের (এডিএএস) মতো উন্নত নিরাপত্তা ফিচার।
নতুন আপগ্রেডেড বিওয়াইডি অ্যাটো ৩-তে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন নিয়ে আসা হয়েছে। এর রি-ডিজাইন করা প্রিমিয়াম থমাস ব্ল্যাক ইন্টেরিয়র সহ ভেন্টিলেডেড ফ্রন্ট সিট স্বাচ্ছন্দ্য নিশ্চিত করবে। অন্যদিকে, এর নতুন কালো রঙের হেডলাইট, ১৮ ইঞ্চি টায়ার সহ বোল্ড রিম ডিজাইন ও স্পোর্টিয়ার স্টাইলিং এক্সটেরিয়রকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাবে। আপডেটেড এই ভার্সনটিতে আরও রয়েছে সমৃদ্ধ ১২ভি লো-ভোল্টেজ লিথিয়াম আয়রন ফসফেট ব্যাটারি।
ক্রেতারা এখন দুটি ভ্যারিয়েন্টের মধ্যে গাড়িটি পছন্দ করার সুযোগ পাবেন। একটা হলো স্ট্যান্ডার্ড রেঞ্জ ভার্সন; মাত্র ৪৯.৯০ লাখ টাকা দামের এই গাড়িটি একবার সম্পূর্ণ চার্জে ৩৪৫ কিলোমিটার পর্যন্ত চলতে সক্ষম। আরেকটি হলো এক্সটেন্ডেড রেঞ্জ ভার্সন; মাত্র ৫৫.৯০ লাখ টাকা দামের এই গাড়িটি একবার চার্জে ৪২০ কিলোমিটার পর্যন্ত চলতে সক্ষম। এই আপগ্রেডের সাথে সমন্বয় করে বিওয়াইডি বাংলাদেশ বিস্তৃত ওয়ারেন্টি পলিসি নিয়ে এসেছে। যেখানে ট্র্যাকশন ব্যাটারির জন্য ৮ বছর বা ১,৬০,০০০ কিলোমিটার, মোটর ও মোটর কন্ট্রোলারের জন্য ৮ বছর বা ১,৫০,০০০ কিলোমিটার ও পুরো গাড়ির জন্য ৬ বছর বা ১,৫০,০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত ওয়ারেন্টি পাবেন ক্রেতারা।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিজি রানার বিডি লিমিটেডের চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান খান। এছাড়াও, আয়োজনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিওয়াইডি বাংলাদেশের চিফ মার্কেটিং অফিসার ইমতিয়াজ নওশের, হেড অব সেলস ফাহমিদ ফেরদৌস প্রমুখ। আনুষ্ঠানিক উন্মোচনের আগে অতিথিদের স্বাগত জানানোর পাশাপাশি, উদ্বোধনী বক্তব্য প্রদান করেন বিওয়াইডি বাংলাদেশের স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড ডিজিটাল ম্যানেজার শাহনুমা শারমিন।
এ বিষয়ে বিওয়াইডি বাংলাদেশের চিফ মার্কেটিং অফিসার ইমতিয়াজ নওশের বলেন, “বাংলাদেশ ইলেকট্রিক ভেহিকল গাড়ি ব্যবহারে প্রস্তুত। একইসাথে, বিওয়াইডি বাংলাদেশ সারাদেশে চার্জিং নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণে অংশীদার, স্টেকহোল্ডার ও নীতিনির্ধারকদের সাথে নিবিড়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বিওয়াইডিতে আমরা বিশ্বাস করি, দেশে ইলেকট্রিক ভেহিকলের ব্যবহার বাড়াতে চার্জিং স্টেশন আরও সহজলভ্য হওয়া প্রয়োজন।”
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অতিথিদের জন্য লাইভ ডেমো ও ইন্টারেকটিভ সেশনের ব্যবস্থা করেন বিওয়াইডি বিশেষজ্ঞরা। ফলে, নতুন এই বিওয়াইডি অ্যাটো ৩ সম্পর্কে আরও ভালোভাবে জানার সুযোগ পান অতিথিরা। এর মাধ্যমে টেকসই ও জ্বালানি সাশ্রয়ী স্মার্ট ড্রাইভিং সল্যুশনের দিকে দেশকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে বিওয়াইডি বাংলাদেশ।
২১ থেকে ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিওয়াইডি বাংলাদেশ আয়োজন করতে যাচ্ছে ‘অ্যাটো ৩ উইক’, যেখানে অতিথিরা আপগ্রেডেড অ্যাটো ৩-এর অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ পাবেন।
বিশ্বজুড়ে ব্যবসার ধরন বদলে দিচ্ছে এআই (আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স) এবং আইওটি (ইন্টারনেট অব থিংস) ভিত্তিক সেবা ও বিবিধ পণ্য। আগে ব্যবসা মানেই উৎপাদন, ট্র্যাডিশনাল মার্কেটিং এবং সেলস বুঝালেও এখন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ছাড়া আধুনিক ব্যবসা কল্পনাই করা যায় না। তাই প্রতিটি ব্যবসা ডিজিটাল রূপান্তরের পথে হাঁটছে, যার সঙ্গে জড়িয়ে আছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও আইওটি সার্ভিসগুলো। বাজারে এ ধরনের সল্যুশনের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় সম্প্রতি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও আইওটি কনসালটেন্সি কেন্দ্রিক সেবা চালু করেছে ‘সার্ভিসিং২৪’।
বলাই বাহুল্য যে- বর্তমানে ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডে ডেটার ব্যবহার সর্বত্র। গ্রাহক ও ব্যবসার বৃহৎ ডেটা ভাণ্ডার কাজে লাগিয়ে এআই এবং আইওটি বিভিন্ন প্রযুক্তি ডিভাইস ও সিস্টেমকে রিয়েল-টাইমে মনিটর করে স্মার্ট ডিসিশন নেওয়া, ব্যবসার বিকাশ, অধিক মুনাফা অর্জনে সাহায্য করছে।
তবে একটি প্রতিষ্ঠান চাইলেই এআই এবং আইওটি বিষয়ক সেবার পূর্ণ বেনিফিট নিতে পারে না বরং কিছু প্রস্তুতি নিতে হয়। যেমন- ডেটা সংগ্রহ ও ম্যানেজমেন্টে দক্ষতা অর্জন, সঠিক ইনফ্রাস্ট্রাকচার (সার্ভার, স্টোরেজ, নেটওয়ার্ক) তৈরি, কর্মীদের ডিজিটাল স্কিল উন্নয়ন, সাইবার সিকিউরিটি আপগ্রেড ইত্যাদি।
ব্যবসায়িক ডিজিটালাইজেশনে ইতিবাচক দিক অনেক। কাস্টমার বিহেভিয়ার থেকে শুরু করে প্রোডাকশন প্ল্যান, সবকিছুতে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া, অটোমেশনের মাধ্যমে অল্প জনবল দিয়েই বড় আকারের কাজ সম্পন্ন ইত্যাদি করা সম্ভব। এতে খরচ সাশ্রয় হয় – ম্যানুয়াল ত্রুটি কমে, উৎপাদনশীলতা বাড়ে, সিকিউরিটি শক্তিশালী হয় এবং সাইবার আক্রমণ প্রতিরোধ সহজ হয়। সবমিলিয়ে কাস্টমার এক্সপেরিয়েন্স উন্নত হবার পাশাপাশি গ্রাহক পান নিরবচ্ছিন্ন সেবা।
‘সার্ভিসিং২৪’ এর নতুন চালু এই করা সেবা- ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন পরিকল্পনা তৈরি, এআই-ভিত্তিক ডেটা অ্যানালাইসিস ও অটোমেশন গড়ে তোলা, আইওটি ইন্টিগ্রেশন এর মাধ্যমে সার্ভার, স্টোরেজ ও নেটওয়ার্ককে স্মার্টভাবে সংযুক্ত করা, সাইবার সিকিউরিটি শক্তিশালী করা, ক্লাউড ও হাইব্রিড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ম্যানেজমেন্ট সহজ করা, রিয়েল-টাইমে সিস্টেম ট্র্যাক করা এবং দ্রুত সাপোর্ট ও সমাধান ইত্যাদি বিষয়ে সাহায্য করবে।
এ সম্পর্কে সার্ভিসিং২৪-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) নাসির ফিরোজ বলেন, “এআই এবং আইওটি কনসালটেন্সি সেবার মাধ্যমে আমরা আমাদের গ্রাহকদের ব্যবসার পরিধি বিস্তারে সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারব বলে আশা করি। এতে তাদের খরচ কমে যাবে, মুনাফা বৃদ্ধি পাবে। ফলে ব্যবসা হয়ে উঠবে ফিউচার-রেডি ও প্রতিযোগিতামূলক। নতুন নতুন সেবার মাধ্যমে আমরা সবসময় গ্রাহকদের পাশে থাকতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
মহাবিশ্বের সবচেয়ে পুরোনো ‘ব্ল্যাক হোল’ আবিষ্কার করেছেন বলে দাবি করছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। শক্তিশালী জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ (জেডব্লিউএসটি) থেকে প্রাপ্ত ডেটা বিশ্লেষণ করে তারা জানান, এমন একটি ব্ল্যাক হোলের অস্তিত্বের ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে, যার জন্ম হতে পারে বিগ ব্যাংয়ের মাত্র এক সেকেন্ডেরও কম সময় পরে।
এটি যদি প্রমাণিত হয়, তাহলে এটিই হবে এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত সবচেয়ে প্রাচীন ব্ল্যাক হোল বা সম্ভবত ‘প্রাইমর্ডিয়াল ব্ল্যাক হোল’ বা আদিম ব্ল্যাক হোলের প্রথম প্রত্যক্ষ প্রমাণ। এই ধরনের ব্ল্যাক হোল বিজ্ঞানীদের মধ্যে বহু দশক ধরে বিতর্কের জন্ম দিয়ে আসছে।
আমরা জানি, ব্ল্যাক হোল সাধারণভাবে তৈরি হয় বৃহৎ তারার বিস্ফোরণ বা সুপারনোভা ঘটনার মাধ্যমে। তবে প্রাইমর্ডিয়াল ব্ল্যাক হোলের ধারণা বলে, এই ব্ল্যাক হোলগুলো জন্ম নিয়েছিল মহাবিস্ফোরণের পর পরই, এমন সময়ে যখন কোনো তারা বা গ্যালাক্সি গঠিত হয়নি।
এই ব্ল্যাক হোলগুলো আধুনিক ব্ল্যাক হোলের তুলনায় অনেক ছোট হতে পারে, কোনো গ্রহ বা এমনকি একটি পরমাণুর সমান আকারেরও।
বিজ্ঞানীরা মনে করেন, ‘মহাবিশ্বের শুরুর দিকে যদি কিছু অঞ্চলে পদার্থ অন্য অংশগুলোর তুলনায় অনেক বেশি ঘনভাবে জমা হয়ে থাকত, সেখান থেকেই এমন ব্ল্যাক হোলের জন্ম হতে পারে।’
এই ‘আদিম’ ব্ল্যাক হোলের অস্তিত্ব যদি সত্য হয়, তাহলে তা শুধু আমাদের ব্ল্যাক হোল সম্পর্কে ধারণা পাল্টাবে না, পুরো মহাবিশ্বের বিবর্তন নিয়েই ভাবনার ধারা বদলে দেবে।
নতুন এই আবিষ্কারটি উঠে এসেছে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের মহাকাশবিদ রোবার্তো মাইওলিনো-র নেতৃত্বাধীন একটি গবেষণা থেকে। তিনি যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান–কে বলেন, ‘এই ব্ল্যাক হোলটি প্রায় নগ্ন। এর চারপাশে কোনো গ্যালাক্সির অস্তিত্ব নেই বললেই চলে। এটি প্রচলিত তত্ত্বগুলোকে চ্যালেঞ্জ করছে।’
তবে গবেষকেরা স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, তারা ব্ল্যাক হোলটিকে সরাসরি বিগ ব্যাংয়ের মুহূর্তে দেখেননি। বরং, তারা এটি দেখতে পেয়েছেন বিগ ব্যাংয়ের আনুমানিক ৭০ কোটি বছর পরের অবস্থায়—যা তুলনামূলকভাবে খুবই প্রাচীন।
এই প্রাচীন ব্ল্যাক হোলটির অবস্থান পাওয়া গেছে ‘QSO1’ নামের একটি ‘ছোট লাল বিন্দুতে’। এটি এমন এক ধরনের বস্তু, যেগুলো প্রথম শনাক্ত হয় জেমস ওয়েব চালু হওয়ার পর। এদের দেখা যায় মহাবিশ্বের সেই সময় থেকে, যখন তার বয়স ছিল ১০০ বছরেরও কম।
বিজ্ঞানীরা এখনো নিশ্চিত নন, এই লাল বিন্দুগুলো আসলে কী। কেউ বলেন, এটি ক্ষুদ্র, ঘন গ্যালাক্সি হতে পারে। আবার কারও মতে, এগুলো সুপারম্যাসিভ ব্ল্যাক হোল, যেগুলো আশপাশের পদার্থ গ্রাস করছে।
জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা গ্র্যাভিটেশনাল লেন্সিং-এর মাধ্যমে QSO 1 এর পদার্থের গতির একটি ঘূর্ণন-বক্রতা (rotation curve) নিরূপণ করতে সক্ষম হন। সেখান থেকে হিসাব করে দেখা যায়, এর কেন্দ্রে থাকা ব্ল্যাক হোলের ভর প্রায় ৫ কোটি সৌর ভর—অর্থাৎ সূর্যের ভরের ৫০ লাখ গুণ!
বিস্ময়করভাবে, এর আশপাশের বস্তুর চেয়ে এই ব্ল্যাক হোলটির ভর দ্বিগুণ বেশি। মাইওলিনো বলেন, ‘আমাদের ছায়াপথে মহাবিশ্বে (যেমন: মিল্কিওয়ে), কেন্দ্রীয় ব্ল্যাক হোল গ্যালাক্সির তুলনায় প্রায় হাজার গুণ ছোট। তবে এখানে সম্পূর্ণ উল্টো চিত্র।’
মাইওলিনোর পূর্ববর্তী এক গবেষণায় দেখা গেছে, QSO 1 এর আশপাশের পদার্থে কেবল হাইড্রোজেন ও হিলিয়াম আছে—মহাবিশ্বের প্রথম দিকের মৌল উপাদান। ভারী মৌলগুলো তারার বিস্ফোরণে তৈরি হয়েছিল অনেক পরে।
তাই আশপাশে যদি কোনো গ্যালাক্সির অস্তিত্ব না থাকে, আর কেবল আদিম মৌল থাকে, তবে ধারণা করা যায় এই ব্ল্যাক হোলটি গঠিত হয়েছে গ্যালাক্সির আগে—যা প্রচলিত তত্ত্বে আগে কখনো শোনা যায়নি।
ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মহাকাশবিদ অ্যান্ড্রু পন্টজেন অবশ্য সাবধান করে বলেছেন, ‘এখনো এটা কোনো চূড়ান্ত প্রমাণ নয়। গবেষকেরা নতুন ডেটা ব্যবহার করে প্রাইমর্ডিয়াল ব্ল্যাক হোলের ব্যাখ্যাকে জোরালো করছেন, তবে এটি পরোক্ষ যুক্তির ওপর দাঁড়ানো।’
পন্টজেন আশাবাদী যে, আগামী দশকে পরবর্তী প্রজন্মের মাধ্যাকর্ষণ তরঙ্গ শনাক্তকরণ যন্ত্রসমূহ সারা মহাবিশ্ব জুড়ে ব্ল্যাক হোল খুঁজে বের করতে সক্ষম হবে। আর এভাবে বিতর্কের অবসান ঘটাবে।
তিনি বলেন, ‘দশ বছর পর আমরা হয়তো নিশ্চিতভাবে জানতে পারব, আদিম ব্ল্যাক হোল আসলেই আছে কি না।’
ঢাকা, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ – বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় প্রযুক্তি ব্র্যান্ড অপো তাদের আল্টিমেট ডিউরেবিলিটি চ্যাম্পিয়ন স্মার্টফোন অপো এ৫ এর নতুন ৮ জিবি + ১২৮ জিবি ভ্যারিয়েন্ট বাংলাদেশে নিয়ে এসেছে। আগের ভ্যারিয়েন্টে ব্যবহারকারীদের অনন্য সাড়া পেয়ে অসাধারণ শক্তি, দীর্ঘমেয়াদী সক্ষমতা ও চমৎকার পারফরম্যান্সের নতুন এই সংস্করণটি নিয়ে আসা হয়। ডিভাইসটির মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ২১,৯৯০ টাকা মাত্র; এবং এটি দেশের সকল অনুমোদিত অপো স্টোরে পাওয়া যাচ্ছে।
পানি, ধুলা বা প্রতিদিনের দুর্ঘটনা এড়িয়ে প্রতিকূল পরিবেশের জন্য আরও সক্ষম করে তুলতে অপো এ৫-এ আইপি৬৫ ওয়াটার অ্যান্ড ডাস্ট রেজিজট্যান্স ব্যবহার করা হয়েছে। এটি কঠিন পরিবেশে টিকে থাকার উপযোগী করে ডিজাইন করা হয়েছে, যা প্রতিদিনের ব্যবহারে আপনার উপযুক্ত সঙ্গী হতে পারে। অপো এ৫ ডিভাইসটির মূলে রয়েছে এর অপ্রতিদ্বন্দ্বী টেকসই গঠন। এর ১৪-স্টার মিলিটারি-গ্রেড শক রেজিস্ট্যান্স হুট করে ফোন পড়ে যাওয়া বা এর ক্ষতিকর প্রভাব থেকে সুরক্ষা নিশ্চিত করে; আর এসজিএস গোল্ড সার্টিফিকেশন নিশ্চিত করে উচ্চমানের বিল্ড কোয়ালিটি। ফোনটি কেবল কঠিন মুহূর্তে টিকে থাকার জন্য তৈরি করা হয়নি; বরং একইসাথে, চমৎকার পারফরম্যান্স নিশ্চিত করার জন্যও নিয়ে আসা হয়েছে।
দীর্ঘস্থায়ী পারফরম্যান্সের জন্য ডিজাইন করা এই ডিভাইসটি কোনো প্রকার ঘাটতি বা ক্ষতি ছাড়াই ৫ বছর পর্যন্ত কর্মক্ষম থাকতে সক্ষম। এতে রয়েছে ৬০০০ মিলিঅ্যাম্পিয়ারের সুবিশাল ব্যাটারি ও ৪৫ ওয়াট সুপারভুক ফ্ল্যাশ চার্জ প্রযুক্তি; যা মাত্র ১৯ মিনিটে ৩০% এবং ৩৬ মিনিটে ৫০% চার্জ নিশ্চিত করতে সক্ষম। ফলে, ব্যবহারকারীরা এখন আরও কম সময়ে বেশি গেমিং, স্ট্রিমিং বা কাজের সুযোগ পাবেন।
অপো এ৫ এর সর্বাধুনিক এআই ক্যামেরা সিস্টেম মোবাইল ফটোগ্রাফির নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। ফোনটিতে মাত্র কয়েক ট্যাপে অনাকাঙ্ক্ষিত বস্তু সরাতে সহায়তা করবে এআই ইরেজার ২.০; জুম বা ক্রপ করার সময় যেন কোনো ডিটেইল না হারিয়ে যায়, তা নিশ্চিত করতে ব্যবহার করা হয়েছে এআই ক্ল্যারিটি এনহেন্সার; পাশাপাশি, ছবি কাটা, সম্পাদনা করা বা একত্রিত করাকে আরও দ্রুত ও নিখুঁত করতে রয়েছে এআই স্মার্ট ইমেজ ম্যাটিং ২.০। এই সর্বাধুনিক এআই ফটোগ্রাফি অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করতে ফোনটিতে ৫০ মেগাপিক্সেল মেইন ক্যামেরা ব্যবহার করা হয়েছে, যা অত্যন্ত নিখুঁত ও ঝকঝকে ছবি ধারণ করে। একইসাথে, এতে ২ মেগাপিক্সেল ডেপথ ক্যামেরা ব্যবহার করা হয়েছে, যা পোর্ট্রেটে পেশাদার মানের ব্যাকগ্রাউন্ড ব্লার যোগ করে। পাশাপাশি, এর ৫ মেগাপিক্সেল এআই সেলফি ক্যামেরা আরও উজ্জ্বল, নিখুঁত ও ভারসাম্যপূর্ণ সেলফি নিশ্চিত করে।
মিলিটারি-গ্রেড সক্ষমতার পাশাপাশি, স্টাইলের ক্ষেত্রেও কোনো ছাড় দেয়নি অপো এ৫ (৮ জিবি + ১২৮ জিবি)। এর ১,০০০ নিট আলট্রা-ব্রাইট ডিসপ্লে প্রখর সূর্যালোকেও চমৎকার ও প্রাণবন্ত ভিজ্যুয়াল অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করে। অনন্য ও স্লিক এই স্মার্টফোনটি এখন মিস্ট হোয়াইট ও অরোরা গ্রিন এই দুইটি চমৎকার রঙে পাওয়া যাচ্ছে।
নতুন এই ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে অপো বাংলাদেশ অথোরাইজড এক্সক্লুসিভ ডিস্ট্রিবিউটরের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ডেমন ইয়াং বলেন, “অপোতে আমরা চাই, আমাদের ব্যবহারকারীরা পারফরম্যান্স বা টেকসই গুণগত মানে কোনো প্রকার ছাড় না দিয়েও সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন ব্যবহার করুক। অপো এ৫ এর আগের ভ্যারিয়েন্টে যে প্রত্যাশা তৈরি হয়েছিল, তা এবার আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। এই ডিভাইসটি কেবল আরেকটি স্মার্টফোন নয়; এটি শক্তি ও সহনশীলতার নতুন মানদণ্ড স্থাপন করছে।”
কনটেন্ট ক্রিয়েটর, ব্যস্ত পেশাজীবী ও প্রতিদিনের স্মার্ট ব্যবহারের জন্য একদম উপযুক্ত ডিভাইস অপো এ৫ (৮ জিবি + ১২৮ জিবি) এখন পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ২১,৯৯০ টাকায়। আরও বিস্তারিত জানতে অপো বাংলাদেশের ফেসবুক পেজ facebook.com/OPPOBangladesh বা https://www.oppo.com/bd/smartphones/series-a/a5/ ভিজিট করুন।
বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় নিউ এনার্জি ভেহিকল (এনইভি) উৎপাদক বিওয়াইডি গত ৪ সেপ্টেম্বর ক্রস-কান্ট্রি এন্ড্যুরেন্স ড্রাইভ নিয়ে নতুন এক অভিযানে নেমেছে। এ উদ্যোগের মূল লক্ষ্য সড়কে বিওয়াইডি সিলায়ন ৬ এর সক্ষমতা যাচাই করা। অত্যাধুনিক এই প্লাগ-ইন হাইব্রিড ইলেকট্রিক ভেহিকলটি (পিএইচইভি) ১১০০ কিলোমিটারের সম্ভাব্য রেঞ্জ নিয়ে বাজারে আসে। এই ক্যাম্পেইনের উদ্দেশ্য হলো সিলায়ন ৬ এর সীমানাকে অতিক্রম করে যাওয়া এবং বাস্তবে এটি প্রত্যাশার চেয়েও বেশি পারফরম্যান্স দিতে সক্ষম, তা জানানো।
মোট পাঁচ দিনের এ যাত্রায় বিওয়াইডি সিলায়ন ৬ বাংলাদেশের বিভিন্ন ধরনের সড়কজুড়ে ১ হাজার ৮৬৬ দশমিক ৪ কিলোমিটারের সুবিশাল পথ পাড়ি দিবে। এই যাত্রাপথে থাকছে ঢাকা থেকে বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট; সেখান থেকে আবার ঢাকায় ফেরত আসা। পথে বেশকিছু যাত্রাবিরতি দিয়ে কক্সবাজার, টেকনাফ ও চট্টগ্রামও থাকছে এই ভ্রমণ তালিকায়। এই চ্যালেঞ্জ সিলায়ন ৬ এর স্বামর্থ্য ও সক্ষমতা প্রমাণ করবে; দেখাবে কীভাবে সর্বোচ্চ পারফরম্যান্স ধরে রেখেও সুদীর্ঘ পথ পাড়ি দেয়া যায়।
বেশ কয়েকদিন জুড়ে চলা এই যাত্রার প্রথম ধাপ শুরু ০৪ সেপ্টেম্বর, ঢাকা থেকে বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট (৪৬৪.৭ কিলোমিটার) পর্যন্ত, এরপর আবার তেতুলিয়া থেকে ঢাকা। এরপর এই যাত্রা ৩৯৬ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে কক্সবাজার যাবে, পরদিন যাবে টেকনাফ ও চট্টগ্রাম। এরপর আবার ঢাকায় ফেরার মধ্য দিয়ে শেষ হবে এই চ্যালেঞ্জটি।
এ বিষয়ে বিওয়াইডি বাংলাদেশের স্ট্র্যাটেজি ও ডিজিটাল লিড শাহনুমা শারমিন বলেন, “এই ক্যাম্পেইন কেবল কোনো সাধারণ ড্রাইভ নয়; বরং এটি বিওয়াইডি সিলায়ন ৬ এর অসাধারণ সহনশীলতা ও দক্ষতার সঠিক প্রতিফলন। আমাদের উদ্দেশ্য হলো এই অঞ্চলে পিএইচইভি’র জন্য নতুন মানদণ্ড তৈরি করার মাধ্যমে দেখানো যে গাড়িটি দেশের রাস্তায় প্রত্যাশার চেয়েও ভালো পারফর্ম করতে সক্ষম। আমরা বিশ্বাস করি, এই চ্যালেঞ্জটি সক্ষমতা প্রদর্শন ও পরিবেশ সুরক্ষার পাশাপাশি, টেকসই ও দীর্ঘপথের যাত্রার ক্ষেত্রে সিলায়ন ৬ এর সুনামকে আরও জোরালো করবে।”
স্মার্টফোন ব্র্যান্ড রিয়েলমি গজারিয়ায় অবস্থিত মানা বে ওয়াটার পার্কে ‘৮২৮ ফ্যান ফেস্টিভালের’ আয়োজন করে। রিয়েলমি প্রতিষ্ঠার স্মরণে এই বার্ষিক উদযাপনের দিনটি বাংলাদেশের ফ্যানদের জন্য অত্যন্ত আনন্দ ও উৎসাহের মধ্য দিয়ে পালিত হয়।
ফেস্টিভালে দেশের ৫০ জনেরও বেশি ফ্যান অংশ নেন। দিনব্যাপী নানা আকর্ষণীয় কার্যক্রম, গেমস, রাইড ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মধ্য দিয়ে দিনটি উদযাপন করেন তারা। ব্র্যান্ডের তারুণ্যের শক্তিকে উদযাপন এবং একইসাথে, ফ্যানদের প্রতি রিয়েলমির প্রতিশ্রুতির বহিঃপ্রকাশ হিসেবে এই অনুষ্ঠানটি ডিজাইন করা হয়।
এই অনুষ্ঠানের একটি প্রধান আকর্ষণ ছিল ‘প্রোডাক্ট এক্সপেরিয়েন্স জোন’, যেখানে ব্র্যান্ডটির অন্যান্য জনপ্রিয় পণ্যের পাশাপাশি, জিটি ৭ অ্যাস্টন মার্টিন এডিশন দেখানো হয়। এর মাধ্যমে ফ্যানরা ব্র্যান্ডের প্রিমিয়াম অফারগুলো সম্পর্কে জানার সুযোগ পান। এছারা, সেখানে একটি ‘আফটার-সেলস বুথ’ ছিল, যেখানে একদম ফ্রি ফোন ক্লিনিং সার্ভিস ও অন্যান্য বিশেষ অফার পাওয়ার সুবর্ণ সুযোগ ছিল। অনুষ্ঠানে আকর্ষণীয় কুই প্রতিযোগিতা ও গেমসের আয়োজন করা হয়, যেখানে বিজয়িদের জন্য গিফট ও প্রাইজের ব্যবস্থা ছিল। পাশাপাশি, সোশ্যাল মিডিয়া কনটেস্টে বিজয়ীদের জন্য ক্রেস্ট ও মেডেলের ব্যবস্থা রাখা হয়, যা আয়োজনে বাড়তি আকর্ষণ যোগ করে।
ফ্যান কমিউনিটির সঙ্গে রিয়েলমির তারুণ্য ও প্রতিশ্রুতির নিশ্চয়তার বহিঃপ্রকাশ এই পুরো ফেস্টিভালটি; যেখানে ব্র্যান্ডের কাছাকাছি আসার মধ্য দিয়ে ফ্যানদের জন্য স্মরণীয় মুহূর্ত তৈরি হয় ।
মন্তব্য