প্রেমের সম্পর্কে জড়ালে প্রথমেই মনে রাখতে হবে, এখানে সফলতা এবং ব্যর্থতার হার সমান সমান। তাই প্রেমে ব্যর্থ হলে সেটাকে সহজভাবে মেনে নেয়াই স্বাভাবিক। অনেকেই আছেন যারা এই ব্যর্থতার ধাক্কা সামলাতে পারেন না। ফলে কেউ নিজের ক্ষতি করে, কেউ ঝুঁকে পড়ে মাদকের দিকে অথবা বেছে নেয় আত্মহত্যার মতো ভয়ংকর পথ। এগুলোর কোনোটাই সঠিক পথ নয়।
প্রেমে ব্যর্থ হলে কী করবেন, সেটাই উঠে এসেছে হেডস্পেস ওয়েবসাইটের এক প্রতিবেদনে। চলুন দেখে নেই।
ব্যর্থতা মেনে নিন
প্রেমে ব্যর্থ হলে দোষ যারই হোক না কেন, প্রথমেই ঐ মুহূর্তের পরিস্থিতিকে মেনে নিন। প্রেমে ব্যর্থ হওয়ার যে কষ্ট তা চিরস্থায়ী নয়। ঝড়ের পর সব যেমন শান্ত হয়ে আসে তেমনি এখনকার পরিস্থিতিও শান্ত হয়ে যাবে। শুধু ধৈর্য ধরে কিছুটা সময় নিজে শান্ত থাকার চেষ্টা করুন। মনে রাখবেন, একটি ব্যর্থতা আপনাকে আরও বড় কিছুর জন্য প্রস্তুত করছে।
নিজেকে দোষারোপ করবেন না
প্রেমে ব্যর্থ হয়ে অনেকেই- 'হয়তো আমারই জন্য সম্পর্ক ভেঙে গেল। আমি আরেকটু চেষ্টা করলেই হয়তো সম্পর্কটা টিকিয়ে রাখতে পারতাম' ইত্যাদি বলে শুধু শুধু নিজেকে দোষারোপ করেন। একটা সম্পর্ক ভাঙার পেছনে হাজারটা কারণ থাকতে পারে। সব সময় মনে রাখবেন, একটা সম্পর্ক তার পরিণতি পায়নি ঠিকই, কিন্তু তাই বলে আপনার জীবনটাও শেষ হয়ে যায়নি। প্রেমে ব্যর্থ হওয়ার পর নিজেকে গুটিয়ে রাখবেন না। মনে রাখবেন, প্রত্যাখ্যাত হওয়া কোনো অপরাধ নয়। স্বাভাবিক আচরণ করুন।
প্রাক্তনের সঙ্গে ঝগড়া করবেন না
আপনার যেমন প্রেমের প্রস্তাব দেওয়ার অধিকার আছে, তেমনি বিপরীত জনের তা প্রত্যাখ্যান করার অধিকারও আছে। তাই প্রেমে ব্যর্থ হলে প্রতিশোধ নেওয়ার মতো ঘৃণ্য আচরণ থেকে বিরত থাকুন। আপনি প্রেমে ব্যর্থ হয়েছেন বলে তার নামে অন্যদের কাছে আজেবাজে কথা বলবেন না। আপনি তাকে পছন্দ করেন বলেই যে সেও আপনাকে পছন্দ করবে- এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। তা ছাড়া সম্পর্ক কেন দানা বাঁধল না বলে কৈফিয়ত চাওয়া, কথা-কাটাকাটি, তর্কাতর্কি, ঝগড়াঝাটি করা- এসব করলে শুধু তিক্ততাই বাড়বে। একে অপরের অধিকার বোধ বিষয়ে সচেতন হোন। অপরের প্রতি সম্মান রক্ষা করুন।
নিজেকে সময় দিন
সম্পর্ক ভেঙে গেছে বলে আপনি মন খারাপ করবেন বা আড়ালে গিয়ে কান্না করতেই পারেন। যার সঙ্গে আপনি আপনার পছন্দ-অপছন্দ শেয়ার করেছিলেন, ঘুরে বেড়িয়েছেন, এখন সেই মানুষটি আপনার পাশে নেই, সে জন্য আপনার মন খারাপ হওয়াটা স্বাভাবিক। তাই প্রেমে ব্যর্থ হয়ে আপনার যদি বালিশে মুখ লুকিয়ে সারা দিন কান্না করতে ইচ্ছা করে, তাহলে সেটাই করুন। নিজেকে বাধা দেবেন না।
যদি দেখেন প্রাক্তন নতুন সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছে, তাহলে তার সম্পর্কটি ভাঙার চেষ্টা করবেন না। এতে আপনার কোনো লাভ নেই। বরং অযথাই আপনি মানুষটির চোখে অপরাধী হয়ে যাবেন।
আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নেবেন না
প্রেমে ব্যর্থ হলে আত্মহত্যার মতো সিদ্ধান্ত নেবেন না। পরিস্থিতি ভুলে থাকতে নেশাকে বেছে নেয়া যাবে না। অনেকেই দেখা যায়, প্রেমে ব্যর্থ হলে অস্থির হয়ে উল্টোপাল্টা কাজ করে বসেন। অনেকে ব্লেড দিয়ে হাত-পা কাটা শুরু করে দেন। কেউ ঘুমের ওষুধ খান। নেতিবাচক আচরণের বিপরীতে বেশি বেশি ইতিবাচক আচরণ করে জানান দিন আপনি একজন স্মার্ট পুরুষ বা স্মার্ট নারী। আর একজন স্মার্ট মানুষ প্রেমে ব্যর্থ হলে কখনোই কোনো নেতিবাচক আচরণ করে না।
একটি রিলেশন ভেঙে যাবার পর আপনার প্রাক্তনকে জেলাস করার জন্য বা বন্ধু-বান্ধবদের চাপে তড়িঘড়ি করে অন্য আরেকজনের সঙ্গে রিলেশনে জড়িয়ে পড়বেন না। এক জীবনে সব কিছু চাইলেই পাওয়া যায় না, এটা মনে রাখবেন। নিজেকে একটু সময় দিন, সঠিক মানুষটির জন্য অপেক্ষা করতে শিখুন।
জীবন চলুক তার আপন গতিতে
প্রেমে ব্যর্থ হলে পরিস্থিতিকে মেনে নিয়ে নিজের পথে এগিয়ে যেতে পারার চেয়ে বড় গুণ আর হতে পারে না। সবার আগে নিজেকে ভালোবাসতে শিখুন। প্রাক্তনকে হয়তো খুব তাড়াতাড়ি মন থেকে মুছে ফেলতে পারবেন না, তাই বলে বারবার তার কথা মনে করবেন না। বরং নিজের ভালো লাগার কাজগুলোতে ডুবে গিয়ে নিজেকে ব্যস্ত রাখুন। ধৈর্য হারাবেন না। দেখবেন মনের মধ্যে থাকা হতাশা, মানসিক অবসাদ সব কিছু থেকে মুক্তি পাবেন।
একবার প্রেমে ব্যর্থ হয়েছেন বলে জীবন শেষ? একেবারেই তা নয়! প্রেম-ভালোবাসা থেকে বেরিয়ে যদি জীবনটাকে দেখেন, দেখবেন জীবনে করার কতশত কাজ রয়েছে। নিজের জীবনটাকে ঠিক জায়গায় প্রতিষ্ঠা করুন। নিজের আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করতে শিখুন। আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনুন। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে দৃঢ়ভাবে বলুন, ‘আমার জীবন শেষ হয়ে যায়নি।’
নিজেকে ব্যস্ত রাখুন
প্রেমে ব্যর্থ হলে নিজের দুর্বলতার জায়গাগুলো খুঁজে বের করুন। এরপর এই দুর্বল জায়গাগুলো কিভাবে শক্তিশালী করা যায়, তা বের করুন। প্রয়োজন হলে বন্ধু ও অভিভাবকদের সহায়তা নিন। শুধু নিজেকে নিয়ে থাকবেন না, বরং আপনার চারপাশের ঘটে যাওয়া ঘটনাপ্রবাহের সঙ্গেই চলুন। এ সময়টিতে বেড়াতে যেতে পারেন। লিখতে পারেন কবিতা। যে দক্ষতা কখনোই আপনার ছিল না, সে রকম কিছুতে দক্ষতা অর্জনের চেষ্টা করুন।
সমালোচনা মেনে নিন
প্রেমে ব্যর্থ হয়েছে জানলে বন্ধুরা হয়তো আপনার প্রতি সহানুভূতি দেখাবে বা কেউ উপহাসও করতে পারে। এ সময় হতাশ না হয়ে ধৈর্য ধরুন। কারও সঙ্গে ঝগড়ায় যাবেন না, বরং আপনি ব্যাপারটাকে সহজভাবে নিয়েছেন, সেটাই সবাইকে বুঝান।
আরও পড়ুন:অন্তর্বর্তী সরকারের ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, সরকার এবার স্বাচ্ছন্দ্যে পূজা উদযাপনের উদ্যোগ নিয়েছে। এ বছর আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে সরকারিভাবে চার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় দ্বিগুণ। বিগত সরকারের সময় বরাদ্দ ছিল মাত্র দুই কোটি টাকা। পাশাপাশি পূজামণ্ডপগুলোতে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করারও উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
উপদেষ্টা বলেন, ‘দেশে ৫ আগস্ট-পরবর্তী সময়ে একটি চক্র ধর্ম নিয়ে অপপ্রচার চালিয়েছে, যাতে সত্য বিন্দুমাত্র ছিল না। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় কোনো কোনো জায়গায় কিছু ঘটনা ঘটেছে; তবে তা বিচ্ছিন্ন ঘটনা।’
বুধবার চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসায় দাওরায়ে হাদিস ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রদের এক বিশেষ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ধর্ম উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, ‘আমরা উপদেষ্টারা চেয়ার দখল করে বসে থাকার জন্য ক্ষমতায় আসিনি। রাষ্ট্র, নির্বাচন কমিশন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীসহ রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলোকে সংস্কারপূর্বক মেরামত করে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আসার পর সুষ্ঠু নির্বাচন দিয়ে আমরা সরে যাব। এ জন্য সব রাজনৈতিক দলসহ দেশের প্রতিটি মহলকে সহযোগিতা করা দরকার।’
হেফাজত প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বিগত সরকারের সময় হেফাজতে ইসলামের বিরুদ্ধে যেসব মিথ্যা মামলা রুজু করা হয়েছে তার তালিকাসহ দায়িত্বশীলদের কাছে জানালে এসব মামলা থেকে বা তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রত্যাহার করা হবে।’
হাটহাজারী মাদ্রাসার সিনিয়র শিক্ষক আল্লামা শেখ আহমদের সভাপতিত্বে ও সিনিয়র শিক্ষক মাওলানা আশরাফ আলী নিজামপুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সংবর্ধনা সভায় বক্তব্য দেন মাদ্রাসার মহাপরিচালক আল্লামা খলিল আহমেদ কুরাইশ কাসেমী।
উপস্থিত ছিলেন ইসলামিক ফাউন্ডেশন চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক বোরহান উদ্দীন মো. আবু আহসান, মাদ্রাসার সিনিয়র শিক্ষক আল্লামা মুফতি জসিম উদ্দিন, আল্লামা দিদার কাসেম, আল্লামা সোয়েব জমিরী, মুফতি কেফায়েতুল্লাহ, নাজিরহাট মাদ্রাসার মহাপরিচালক মাওলানা হাবিবুর রহমান কাসেমী ও হাটহাজারী মডেল থানার ওসি হাবিবুর রহমান।
এদিকে হাটহাজারী মাদ্রাসা সংলগ্ন শ্রী শ্রী শীতাকালি মন্দির পরিদর্শন করেন ধর্ম উপদেষ্ঠা। এসময় উপস্থিত মন্দির পরিচালনা কমিটি ও ভক্তদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন তিনি। মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন মুন্সি বিজয় কুমার বণিক। মন্দির পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক উদয় সেনের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন। মন্দির পরিচালনা কমিটির প্রধান উপদেষ্টা শিক্ষক শিমুল কান্তি মহাজন, চবি শিক্ষক শিপক কৃষ্ণ দেবনাথ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। এরপর উপদেষ্টা হাটহাজারী পৌরসভার একটি মাদ্রাসা পরিদর্শন করেন।
চলতি বছরের জুলাই মাসের তুলনায় আগস্টে সার্বিক মূল্যস্ফীতি কমেছে ১ দশমিক ১৭ শতাংশ।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানিয়ে বলা হয়েছে, জুলাইয়ে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল ১১ দশমিক ৬৬ শতাংশ, যা আগস্টে কমে দাঁড়িয়েছে ১০ দশমিক ৪৯ শতাংশ।
এছাড়া আগস্টে খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি নেমে এসেছে ১১ দশমিক ৩৬ শতাংশে, যা জুলাইয়ে ছিল ১৪ দশমিক ১০ শতাংশ।
অন্যদিকে খাদ্যবহির্ভূত খাতে মূল্যস্ফীতি কিছুটা বেড়েছে। জুলাইয়ে এই খাতে মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৬৮ শতাংশ, যা আগস্টে সামান্য বেড়ে ৯ দশমিক ৭৪ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
এর আগে গত জুলাইয়ে মূল্যস্ফীতি ছিল গত ১৩ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। ছাত্রদের কোটা সংস্কার আন্দোলনের মাসে মূল্যস্ফীতি দুই অঙ্ক অতিক্রম করে। ওই মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়ায় ১১ দশমিক ৬৬ শতাংশ। তার আগের মাস জুনে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৭২ শতাংশ।
অন্যদিকে জুলাই মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়ায় ১৪ শতাংশে, যা গত ১৩ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর আগে সবশেষ ২০১১ সালের এপ্রিলে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ১৪ দশমিক ৩৬ শতাংশ। এরপর থেকে খাদ্য মূল্যস্ফীতি কখনোই ১৪ শতাংশের উপরে ওঠেনি।
আরও পড়ুন:পবিত্র রবিউল আউয়াল মাস গণনা করা হবে ৫ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার থেকে। কারণ বুধবার বাংলাদেশের আকাশে আরবি ১৪৪৬ হিজরি সনের পবিত্র রবিউল আউয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেছে। সে হিসাবে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) পালিত হবে আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর সোমবার।
বুধবার সন্ধ্যায় ইসলামিক ফাউন্ডেশন বায়তুল মুকাররম সভাকক্ষে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মু. আ. হামিদ জমাদ্দারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
সভায় ১৪৪৬ হিজরি সনের পবিত্র রবিউল আউয়াল মাসের চাঁদ দেখা সম্পর্কে সব জেলা প্রশাসন, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রধান কার্যালয়, বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়, বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর এবং মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠান থেকে প্রাপ্ত তথ্য পর্যালোচনা করা হয়। তাতে দেখা যায়, বুধবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশের আকাশে পবিত্র রবিউল আউয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেছে।
এ অবস্থায় আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে ১৪৪৬ হিজরি সনের পবিত্র রবিউল আউয়াল মাস গণনা শুরু হবে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আগামী ১২ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি, ১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ খ্রি. সোমবার পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) পালিত হবে।
সভায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) ড. মহা. বশিরুল আলম, সিনিয়র উপ-প্রধান তথ্য কর্মকর্তা মুন্সী জালাল উদ্দিন, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব মু. মাহমুদ উল্লাহ মারুফ, বাংলাদেশ মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠানের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মুহাম্মদ শহিদুল ইসলাম, ঢাকা জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. আমিনুর রহমান, বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. আ. রহমান খান, বাংলাদেশ টেলিভিশনের পরিচালক মো. রুহুল আমিন, বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম মুফতি মাওলানা মুহাম্মদ মিজানুর রহমান, চকবাজার শাহী জামে মসজিদের খতিব মুফতি শেখ নাঈম রেজওয়ান ও লালবাগ শাহী জামে মসজিদের খতিব মুফতি মুহাম্মদ নিয়ামতুল্লাহ উপস্থিত ছিলেন।
গাজীপুরে একটি রিসোর্ট থেকে অবৈধভাবে রাখা একটি কুমির উদ্ধার করেছে বন বিভাগ। কুমিরটির বয়স আনুমানিক ২০ বছর।
মঙ্গলবার দুপুরে গাজীপুর মহানগরের নীলেরপাড়া এলাকায় ‘পাখির স্বর্গ’ রিসোর্টে অভিযান চালিয়ে কুমিরটি উদ্ধার করা হয়।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম জানান, অভিযান চালিয়ে একটি কুমির উদ্ধার করা হয়েছে। এটি স্ত্রী কুমির। রিসোর্ট থেকে উদ্ধারের পর বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের কুমির বেষ্টনীতে এটিকে অবমুক্ত করা হয়েছে।
বন্যপ্রাণী নিয়ে কাজ করে এমন একটি সংগঠনের মাধ্যমে ঢাকা বন বিভাগ জানতে পারে যে পাখির স্বর্গ রিসোর্টে একটি কুমির রয়েছে। পরে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে গাজীপুর সাফারি পার্কের বন্যপ্রাণী কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং সেভ ওয়াইল্ড লাইফ ও নেচার (সোয়ান)-এর সদস্যরা কুমিরটি উদ্ধার করেন।
বন্যপ্রাণী আইন অনুযায়ী লোনা পানির কুমির কোথাও রাখা যাবে না। এখান থেকে যে কুমিরটি উদ্ধার করা হয়েছে সেটি লোন পানির কুমির, যেটি প্রায় ২০ বছর ধরে অবৈধভাবে আটকে রাখা হয়েছিল। উদ্ধার করা কুমিরটি গাজীপুর সাফারি পার্কে বিচরণের জন্য ছেড়ে দেয়া হয়।
এ বিষয়ে সেভ ওয়াইল্ড লাইফ এবং নেচার (সোয়ান) সভাপতি আদনান আজাদ বলেন, ‘আমরা যখন জানতে পারি যে রিসোর্টে অবৈধভাবে একটি কুমির রাখা হয়েছে, তখন খোঁজ-খবর নিয়ে বন বিভাগকে অবগত করি। তাদের সহযোগিতায় কুমিরটি উদ্ধার করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন:কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্সে এবার মিলেছে সাত কোটি ২২ লাখ ১৩ হাজার ৪৬ টাকা। এছাড়াও উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালংকার পাওয়া গেছে।
দিনভর গণনা শেষে কিশোরগঞ্জের আলোচিত মসজিদটিতে এই পরিমাণ অর্থ পাওয়ার কথা শনিবার রাত পৌনে ৮টার দিকে জানান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মিজাবে রহমত।
তিনি জানান, শনিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে মসজিদের নয়টি দানবাক্স খোলার পর টাকাগুলো প্রথমে বস্তুায় ভরে মসজিদের দ্বিতীয় তলার মেঝেতে ঢালা হয়। পরে দিনভর গণনা শেষে সাত কোটি ২২ লাখ ১৩ হাজার ৪৬ টাকা পাওয়া যায়। এ ছাড়াও উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালংকার পাওয়া গেছে।
জেলা শহরের ঐতিহাসিক এই মসজিদের নয়টি দানবাক্স তিন মাস পরপর খোলা হয়। এবার বাক্সগুলো খোলা হয়েছে প্রায় চার মাস পর।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও দানবাক্স খোলা কমিটির আহ্বায়ক মিজাবে রহমতের তত্ত্বাবধানে সেনাবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. তরিকুল ইসলাম, জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ ও পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ রাসেল শেখের উপস্থিতিতে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে দানবাক্সগুলো খোলা হয়।
দানবাক্সগুলো খোলার পর গণনা দেখতে মসজিদের আশপাশে ভিড় করেন উৎসুক মানুষ। তাদের মধ্যে অনেকে আসেন দূর-দুরান্ত থেকে।
মিঠামইন উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামের বাসিন্দা শুভ ভূইয়া সিফাত জানান, টেলিভিশন, পত্রিকা এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পাগলা মসজিদের টাকা গণনা দেখে সরাসরি দেখার ইচ্ছে জাগে তার। সেই ইচ্ছে থেকে আজ দানবাক্স খোলা হয়েছে জেনে গণনা দেখতে এসেছেন তিনি। একসঙ্গে দানের এত টাকা দেখে খুব ভালো লেগেছে বলেও জানান তিনি।
টাকা গণনা কাজে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ছাড়াও মাদ্রাসার ২৪৫ ছাত্র, ব্যাংকের ৭০ জন স্টাফ, মসজিদ কমিটির ৩৪ জন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ১০ জন সদস্য অংশ নেন।
এর আগে চলতি বছরের ২০ এপ্রিল চার মাস ১০ দিন পর দানবাক্সগুলো খোলা হয়। তখন ২৭ বস্তায় দিনভর গণনা শেষে সাত কোটি ৭৮ লাখ ৬৭ হাজার ৫৩৭ টাকা পাওয়া যায়। ঐতিহাসিক এই মসজিদের দানবাক্সে একসঙ্গে এত টাকা আগে পাওয়া যায়নি। এবার বস্তার সংখ্যা বাড়লেও কমেছে টাকার পরিমাণ।
মসজিদে নগদ টাকা ছাড়াও নিয়মিত হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগলসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র দান করেন বিভিন্ন জেলা থেকে আসা অসংখ্য মানুষ। দানবাক্সে টাকার সঙ্গে থাকে বিভিন্ন ধরনের মূল্যবান অলংকারও।
পাগলা মসজিদ কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন ডিসি। আর সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন পৌরসভার মেয়র।
জেলা প্রশাসক জানান, পাগলা মসজিদের দানের টাকায় আন্তর্জাতিক মানের একটি ইসলামি কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হবে। কমপ্লেক্সটি এশিয়া মহাদেশের মধ্যে অন্যতম স্থাপত্য হিসেবে বানানো হবে। এ জন্য আনুমানিক ব্যয় ধরা হয়েছে ১১৫ থেকে ১২০ কোটি টাকা। সেখানে প্রায় ৩৫ হাজার মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারবেন। ২০০ গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা থাকবে। এ ছাড়া একসঙ্গে পাঁচ হাজার নারীর নামাজের জন্য আলাদা ব্যবস্থা থাকবে।
মসজিদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা বীর মুক্তিযোদ্ধা শওকত উদ্দিন ভূইয়া জানান, করোনা ভাইরাস সংক্রমণের শুরুতে মসজিদে মুসল্লির চলাচল এবং নারীদের প্রবেশাধিকার বন্ধ থাকলেও দান অব্যাহত ছিল।
তিনি আরও জানান, পাগলা মসজিদ ও ইসলামি কমপ্লেক্সের খরচ চালিয়ে দানের বাকি টাকা ব্যাংকে জমা রাখা হয়। এ থেকে জেলার বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসা ও এতিমখানায় অনুদান দেয়া হয়। অসহায় ও জটিল রোগে আক্রান্তদের সহায়তাও করা হয়।
তা ছাড়া সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালের করোনা ইউনিটে নিয়োজিত স্বেচ্ছাসেবকদেরও এ দানের টাকা থেকে সহায়তা করা হয়েছে।
মসজিদের পেশ ইমাম মুফতি খলিলুর রহমান জানান, প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ এসে দান করে থাকেন এ মসজিদে। যারা দান করতে আসেন তারা বলে থাকেন, এখানে দান করার পর তাদের আশা পূরণ হয়েছে। তাই এখানে দান করেন তারা।
জেলা শহরের হারুয়া এলাকায় নরসুন্দা নদীর তীরে প্রায় ১০ শতাংশ জমিতে পাগলা মসজিদ গড়ে ওঠে। বর্তমানে সেটি সম্প্রসারিত হয়ে তিন একর ৮৮ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
আরও পড়ুন:উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশ উপকূলে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। এর প্রভাবে সৃষ্ট প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে দেশের অভ্যন্তরীণ নদী বন্দরগুলোতে এক নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত জারি করা হয়েছে।
আজ শনিবার সকালে উপ-পরিচালকের পক্ষে আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক স্বাক্ষরিত এক বিএমডি বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়।
তাতে বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও সিলেটের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
বুলেটিনে বলা হয়, ‘বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও সিলেট অঞ্চলের ওপর দিয়ে দক্ষিণ/দক্ষিণ-পুর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। পাশাপাশি বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে এক নম্বর (পুনঃ) এক নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।’
সাম্যবাদের কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের ৯৮তম জন্মবার্ষিকী বৃহস্পতিবার।
তরুণ এ বিপ্লবী কবি ১৯২৬ সালের ১৫ আগস্ট কলকাতার কালীঘাটের মহিমা হালদার স্ট্রিটে মামা বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম নিবারণ ভট্টাচার্য ও মা সুনীতি দেবী।
‘ছাড়পত্র’, ‘ঘুম নেই’, ‘পূর্বাভাস’, ‘অভিযান’, ‘হরতাল’ কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ। তার রচিত কাব্যগুলো এখনও বিপ্লবীদের অনুপ্রেরণা জোগায়।
ভারতে জন্মগ্রহণ করলেও কবির পূর্বপুরুষের নিবাস গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার আমতলী ইউনিয়নের উনশিয়া গ্রামে। বর্তমানে কবির পিতৃভিটায় তার নামে সরকারিভাবে একটি অডিটোরিয়াম ও লাইব্রেরি করা হয়েছে। কবির পৈতৃক বাড়ি দেখার জন্য দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে দর্শনার্থীরা আসেন।
এ ছাড়াও প্রতি বছর মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে কবির পূর্বপুরুষের ভিটায় পাঁচ দিনব্যাপী গ্রামীণ মেলার আয়োজন করা হয়। এ মেলায় ভারতসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে কবিপ্রেমীরা অংশ নেন, তবে কবির জন্ম ও মৃত্যুর দিনে এ উপজেলায় সরকারি বা বেসরকারিভাবে তেমন কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় না।
কবি মিন্টু রায় বলেন, ‘বাংলা সাহিত্যে অসাধারণ অবদান রেখে গেছেন কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য। কবির স্মরণে প্রতি বছর মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে কোটালীপাড়ায় সুকান্ত মেলা হয়।
‘বছরে একটি মেলার আয়োজন করে কবি সুকান্তকে আগামী প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা সম্ভব নয়। আমি চাইব জাতীয়ভাবে কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকী যেন পালন করা হয়।’
উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী কোটালীপাড়া শাখার সাধারণ সম্পাদক অশোক কর্মকার বলেন, ‘প্রতি বছর আমরা আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে কবির জন্ম ও মৃত্যুদিনে তার ভাস্কর্যে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদনসহ আলোচনা সভার আয়োজন করে থাকি। এ বছর দেশের প্রেক্ষাপট একটু ভিন্ন রয়েছে। তাই কয়েক দিন পরে আমরা কবির জন্মদিন পালন করব।’
কবি সুকান্ত সেবা সংঘের সভাপতি অ্যাডভোকেট দেলোয়ার হোসেন সরদার বলেন, ‘সুকান্তের বাবা নিবারণ ভট্টাচার্য মাদারীপুরে চাকরি করতেন। দেশ বিভক্তের আগেই তিনি কোটালীপাড়ার পৈতৃক ভিটা ফেলে রেখে কলকাতা চলে যান। পরে আমরা মামলা করে কবির পৈতৃক ভিটামাটি অবৈধ দখলদারদের হাত থেকে উদ্ধার করি।
‘কবির স্মৃতি ধরে রাখতে কবির পৈতৃক ভিটায় অডিটোরিয়াম ও লাইব্রেরি নির্মাণ করেছে সরকার। এখানে রয়েছে একটি সংগ্রহশালা। আগামী প্রজন্মের কাছে কবির বিপ্লবী চেতনাকে তুলে ধরতে হবে। তা হলেই নতুন প্রজন্ম কবির জীবন ও আদর্শ সম্পর্কে জানতে পারবে।’
কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য ১৯৪৭ সালের ১৩ মে ২১ বছর বয়সে কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য