কিটোজেনিক ডায়েটে একজন মানুষ তার খাদ্যতালিকা থেকে কার্বোহাইড্রেট যতটা সম্ভব এড়িয়ে ছেঁটে ফেলেন। কিন্তু শরীরের জ্বালানির জোগান তো ঠিক রাখতে হবে। তাই জ্বালানির চাহিদা মেটাতে কার্বোহাইড্রেটের পরিবর্তে ফ্যাট বা চর্বি বেছে নেন তিনি। প্রচলিত অর্থে, চর্বি খাওয়া মানে হলো ওজন কমানো।
কিটোর সুবিধা শুধু ওজন কমানোতে আটকে নেই। এটি মৃগী রোগীদের খিঁচুনি এড়াতেও সাহায্য করে। মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়াতেও কিটো ডায়েটকে উপযোগী মনে করা হয়।
আজকের দিনটি তাদের জন্য, যারা কিটো ডায়েট করেন। তিন বছর ধরে ৫ জানুয়ারি পালিত হচ্ছে কিটো দিবস। যারা এই ডায়েট করার চিন্তাভাবনা করছেন তারা কিটো লাইফস্টাইল শুরু করতে আজকের দিনটিকে বেছে নিতে পারেন।
আরেকটু স্পষ্ট করে বললে, কিটোজেনিক বা কিটো ডায়েট হলো বিশেষ খাদ্যব্যবস্থা, যেখানে শর্করার পরিমাণ কম ও চর্বির পরিমাণ বেশি। সাধারণ খাদ্যতালিকায় কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ থাকে ৫০ থেকে ৬০ ভাগ। কিটো ডায়েটে তা কমে দাঁড়ায় ৫ থেকে ১০ ভাগ। সাধারণ খাদ্যতালিকায় চর্বির পরিমাণ থাকে ২০ থেকে ২৫ শতাংশ। কিটোতে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৭৫ শতাংশ। তবে আমিষ বা প্রোটিনের পরিমাণ সাধারণ তালিকার ২০ থেকে ২৫ শতাংশ।
তবে যারা কিটো শুরু করতে চান তাদের সম্ভাব্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে সচেতন থাকাটা জরুরি, যা ‘কিটো ফ্লু’ নামে পরিচিত। কিটোজেনিক ডায়েট শুরুর ২ থেকে ৭ দিনের মধ্যে কিটো ফ্লু’র উপসর্গ দেখা দেয়। সাধারণত মাথাব্যথা, ঝাপসা দেখা, ক্লান্তি, বিরক্তি, বমি বমি ভাব, ঘুমাতে অসুবিধা ও কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দেয়।
বলা হয়, চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনো ডায়েট শুরু করাটা বোকামি। কারণ চিকিৎসকরা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সার্বিক স্বাস্থ্যের বিষয় জেনেবুঝেই তার খাদ্যতালিকা তৈরি করে দেন।
অবশ্য অনলাইনে কিটো ডায়েট নিয়ে নির্ভরযোগ্য পরামর্শের অভাব নেই। কিম কারদাশিয়ান এবং হ্যালি বেরির মতো জনপ্রিয় হলিউড সেলিব্রিটিরাও এর পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।
আধুনিক স্বাস্থ্য কৌশল হিসেবে কিটোজেনিক ডায়েটের উদ্ভব ১৯২০ সালের দিকে। মূলত শিশু ও প্রাপ্তবয়স্ক মৃগী রোগীদের চিকিৎসা হিসেবে এটি ব্যবহার হতো। পরে খিঁচুনির কার্যকর ওষুধ আবিষ্কার হলে কিটো ডায়েটের প্রভাব কিছুটা কমে আসে।
হাল সময়ে এসে ১৯৯৪ সালে বদলে যায় দৃশ্যপট। হলিউড প্রযোজক জিম অ্যাব্রাহামসের সন্তান কিটো ডায়েট করে মৃগীরোগ নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন। আর তাতেই কিটোজেনিক থেরাপির জন্য চার্লি ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেন অ্যাব্রাহামস।
হলিউডের কিংবদন্তি অভিনেত্রী মেরিল স্ট্রিপকে নিয়ে একটি টিভি চলচ্চিত্রও নির্মাণ করেন অ্যাব্রাহামস। কিটো ডায়েটের গুণগান সংবাদমাধ্যমেও ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়। এরপরই চার্লি ফাউন্ডেশন থেকে প্রকাশিত হয় কেটোজেনিক্সের অত্যাধুনিক বৈজ্ঞানিক গবেষণা। এর মধ্য দিয়ে তা শুধু আমেরিকা নয়, দেশে দেশে ছড়িয়ে পড়ে।
প্রশ্ন আসতেই পারে, ২০ শতকের চিকিৎসকরা কীভাবে জানলেন কার্বোহাইড্রেট কমানো গেলে মৃগী রোগ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব?
প্রকৃত ইতিহাস লুকিয়ে আছে প্রাচীন গ্রিসে। ‘হিপ্পোক্রেটিক কর্পাস’-এ ওই সময়ের চিকিৎসকরা লিখেছিলেন- সাধারণ মানুষ যেভাবেই দেখুক, মৃগী রোগ অতিপ্রাকৃত কিছু নয়। তাদের মতে এটি একটি জৈবিক রোগ, যা কঠোর উপবাসে নিরাময় হয়।
বিংশ শতাব্দীর চিকিৎসা ও গবেষণায় স্নায়ুবিজ্ঞানীরা বুঝতে পেরেছিলেন যে স্টার্চ ও চিনিমুক্ত খাদ্য কঠোর উপবাস থেকে মুক্তি দিতে পারে। নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্য দিয়ে এর বিকল্প হিসেবে তারা দাঁড় করান কিটো ডায়েট।
মস্তিষ্কের কার্যপরিধি বাড়ানোর পাশাপাশি আলঝেইমার, পারকিনসন্স, অনিদ্রাসহ নানা কিছুতে কিটো ডায়েটকে বেশ উপযোগী হিসেবে দেখছেন চিকিৎসকরা।
২০০৭ সাল পর্যন্ত কিটো ডায়েট চর্চা ৪৫টি দেশে সীমাবদ্ধ থাকলেও, এখন তা পৌঁছে গেছে বিশ্বের প্রায় প্রতিটি জনপদে।
গবেষণা বলছে, ওজন কমানো এবং রক্তে সুগার বা শর্করা স্বাভাবিক মাত্রায় রাখার ক্ষেত্রে কিটো ডায়েটের গ্রহণযোগ্যতা সবচেয়ে বেশি। কেটোজেনিক ডায়েট মেনে চললে টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের শরীরে গ্লাইসেমিক নিয়ন্ত্রণে থাকে। রক্তে ভালো মানের কোলেস্টেরল নিশ্চিত করা এবং রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখতেও এই ডায়েট বিশেষ কার্যকর।
কিটো ডায়েটকে আরও জনপ্রিয় করতে ২০১৯ সালের ৫ জানুয়ারি থেকে কিটো দিবস পালন শুরু করে ‘ভিটামিন শপ’। তাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল, কিটোজেনিক ডায়েটের বিষয়ে মানুষকে সচেতন করা এবং এর মাধ্যমে স্বাস্থ্যের ভালো দিকগুলো তুলে ধরে কিটো লাইফস্টাইলে মানুষকে আগ্রহী করে তোলা।
দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ৩১২টি নমুনা পরীক্ষা করে ১৩ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত করা হয়েছে। তবে এ সময়ের মধ্যে কেউ মারা যায়নি। আজ মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সমন্বিত নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে পাঠানো প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়। এ দিন প্রতি ১০০ নমুনায় শনাক্তের হার ৪ দশমিক ১৭ শতাংশ বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ‘২০২০ সালের ১৮ মার্চ থেকে এখন পর্যন্ত দেশে করোনায় মৃত্যু ২৯ হাজার ৫২১ জন। এর মধ্যে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ২২ জনের। এছাড়া ২০২০ সালের ৮ মার্চ থেকে মোট শনাক্ত হয়েছে ২০ লাখ ৫২ হাজার ১২৭ জন। এর মধ্যে গত জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত শনাক্ত হয়েছেন ৫৮২ জন।
এডিশ মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমেই বেড়ে চলেছে। সারা দেশে মশা নিধন কার্যক্রমের দুর্বলতার কারণে ডেঙ্গু পরিস্থিতি উদ্বেগজনক মোড় নিয়েছে। চলতি বছরের মে মাসের তুলনায় জুন মাসে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় তিনগুণ বেড়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেওয়া পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে দেখা যায়, বছরের শুরুর দিকে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম ছিল। জানুয়ারিতে ১,১৬১ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৩৭৪, মার্চে ৩৩৬ এবং এপ্রিলে ৭০১ জন হাসপাতালে ভর্তি হন। তবে মে মাস থেকে পরিস্থিতির অবনতি হতে শুরু করে এবং জুনে এসে তা ভয়াবহ রূপ নেয়। আশঙ্কার বিষয় হলো, ঢাকার বাইরের জেলাগুলোতে, বিশেষ করে বরগুনায়, ডেঙ্গুর প্রকোপ অনেক বেশি।
এদিকে চলতি বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ১০ হাজার ২৯৬ জনে পৌঁছেছে। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ৪২৯ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এ সময়ে কারও মৃত্যু হয়নি।
সোমবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নতুন শনাক্ত ৪২৯ জন ডেঙ্গুরোগীর মধ্যে— বরিশাল বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১৪৯ জন; চট্টগ্রাম বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৫৭ জন; ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৬১ জন; ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ৪২ জন; ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ৪৫ জন; খুলনা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ২১ জন ও রাজশাহী বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৫৪ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছাড়পত্র পেয়েছেন ৩৫৮ জন রোগী। চলতি বছরে এ পর্যন্ত মোট ৯ হাজার ৮৭ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন।
চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্তদের মধ্যে পুরুষ ৫৯ দশমিক ১ শতাংশ এবং নারী ৪০ দশমিক ৯ শতাংশ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে কোনো মৃত্যুর ঘটনা না ঘটলেও চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ৪২ জন মারা গেছেন। মৃতদের মধ্যে একজন রাজশাহী বিভাগের বাসিন্দা।
এদিকে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলছেন, এডিস মশার বিস্তার এখনই নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে পরিস্থিতি নাগালের বাইরে চলে যেতে পারে। বিশেষ করে রাজধানীর বাইরের এলাকাগুলোতে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ববিদ অধ্যাপক কবিরুল বাশার গণমাধ্যমকে বলেন, 'মে মাসের তুলনায় জুনে আক্রান্তের সংখ্যা তিনগুণ হয়েছে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে জুলাইয়ে এ সংখ্যা চার থেকে পাঁচগুণ এবং আগস্টে দশগুণ পর্যন্ত বাড়তে পারে।'
প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ২৯৬ জনে। এর আগে ২০২৩ সালের পুরো বছরে দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হন ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন এবং মারা যান ১ হাজার ৭০৫ জন। ২০২৪ সালের পুরো বছরের (১ জানুয়ারি–৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত) সর্বমোট হিসাব অনুযায়ী, ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১ লাখ ১ হাজার ২১৪ জন এবং মৃতের সংখ্যা ছিল ৫৭৫ জন।
করোনা সংক্রমণের নতুন ঢেউয়ের মধ্যে দেশে আরও ২১ জনের শরীরে প্রাণঘাতী ভাইরাসটি শনাক্ত করা হয়েছে।
রবিবার (২৯ জুন) সকাল ৮টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় এসব শনাক্ত হয়েছে। তবে, নতুন করে কোনো মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি এই সময়ের মধ্যে।
সোমবার (৩০ জুন) স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানিয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৮৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ৫ দশমিক ৪৭ শতাংশ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, এ পর্যন্ত ২০ লাখ ৫২ হাজার ১১৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ২২ জন। আর দেশে ভাইরাসটিতে মোট মৃত্যু হয়েছে ২৯ হাজার ৫২১ জনের।
গত শনিবার সকাল ৮টা থেকে রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত (একদিনে) ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ৩৮৩ জন রোগী। এসব রোগীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১৩৬ জন আক্রান্ত বরিশাল বিভাগে। একইসঙ্গে এই সময়ে ডেঙ্গুতে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে।
রোববার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়েছে, হাসপাতালে নতুন ভর্তিদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে ১৩৬ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৫৫ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৪৮, ঢাকা উত্তর সিটিতে ৩২ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ২৮, খুলনা বিভাগে ৪১ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ১০ জন এবং রাজশাহী বিভাগে ৩৩ জন নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন।
এদিকে গত এক দিনে সারাদেশে ৩৪৯ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। এ নিয়ে চলতি বছর ছাড়পত্র পেয়েছেন ৮ হাজার ৭২৮ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, এবছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত সব মিলিয়ে ৯ হাজার ৮৬৭ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তবে বছরের এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ৪২ জনের।
সারাদেশে করোনা ভাইরাসের নতুন সাব-ভ্যারিয়েন্ট এর সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় পর সিলেট এ ভাইরাসে আক্রান্ত একজনের মৃত্যু হয়েছে।
শনিবার দুপরে এ তথ্যটি নিশ্চিত করেছে সিলেট বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। নতুন করে করোনার আক্রমন শুরুর পর সিলেটে প্রথম এই কোন রোগী মারা গেলেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, করোনায় আক্রান্ত ৬৯ বছর বয়েসি পুরুষ ১৯ জুন শহীদ শামসুদ্দিন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার রাতে মারা যান তিনি। এছাড়া সিলেটে এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ২০ জন বলে জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শহীদ শামসুদ্দিন হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাক্তার মো. মিজানুর রহমান জানান, নিহত ব্যক্তির বাড়ি সিলেট সদর উপজেলায়। তিনি করোনা ছাড়াও আরও অন্যান্য জটিল রোগে আক্রান্ত ছিলেন।
চট্টগ্রামে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে; গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন আরও ছয়জন। এ নিয়ে চলতি জুন মাসেই জেলায় করোনায় মৃতের সংখ্যা সাতজনে দাঁড়াল।
২৮ জুন চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে পাঠানো সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টার প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, জেলার মিরসরাই উপজেলার বাসিন্দা সালেহা বেগম (৪০) নামে এক নারী শুক্রবার নগরের জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। করোনায় আক্রান্ত হওয়ার আগে থেকেই তিনি হৃদরোগসহ নানা জটিলতায় ভুগছিলেন।
এদিকে, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ৯১টি নমুনা পরীক্ষা করে ছয়জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে চারজন নগরের এবং দুজন বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা।
শনাক্ত হওয়া রোগীদের মধ্যে নগরের শেভরন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চারজন এবং এভারকেয়ার হাসপাতালে দুজনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছিল।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, চট্টগ্রামে চলতি জুন মাসে মোট ১৩০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে ৬৬ জন পুরুষ, ৬৩ জন নারী ও একজন শিশু রয়েছে।
মশাবাহীত রোগ ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় বরিশালের দুই জেলায় দুজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময় গোটা বিভাগের সরকারি হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছেন আরও ১০৫ জন আক্রান্ত রোগী। এ নিয়ে বর্তমানে বিভাগের ছয় জেলার সরকারি হাসপাতালগুলোতে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন ৪৩৫ জন। মৃত্যুবরণ করা দুজন হলেন- বরগুনা জেলার বেতাগী উপজেলার কালিকাবাড়ি এলাকার বাসিন্দা আ. করিম (৫০) ও পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার টিয়াখালী ইউনিয়নের রাজপাড়া এলাকার মো. ইউসুফ খন্দকার (৭২)। এর মধ্যে আ. করিম বরিশাল শেরইবাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় হাসপাতালে ও বৃদ্ধ মো. ইউসুফ খন্দকার কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। গতকাল শুক্রবার দুপুরে বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. শ্যামল কৃষ্ণ মণ্ডল এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, বর্তমানে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা উদ্বেগ ও আশঙ্কাজনক। এ পরিস্থিতি থেকে বেরোতে হবে। চিকিৎসার চেয়ে প্রতিরোধ জরুরি। তাই মশার বিস্তার রোধ করতে বাড়ির আশেপাশে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করতে হবে। মশার কামড় থেকে নিজেকে রক্ষায় ব্যবস্থা নিতে হবে।
বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, চলতি বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত বরিশাল বিভাগের ছয় জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন ৪ হাজার ৩০৫ জন। এদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ১১ জনের। বর্তমানে চিকিৎসা নিচ্ছেন ৪৩৫ জন।
বরগুনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। মৃত ১১ জনের মধ্যে ছয়জনেরই বরগুনার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে। শুধু মৃত্যুই নয় এ জেলায় আক্রান্তের সংখ্যাও বেশি, বরগুনা জেলায় এ পর্যন্ত ২ হাজার ৬৩২ জন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
মন্তব্য