যেকোনো তথ্য তাৎক্ষণিক পেতে এখন প্রায় সবার ভরসা অনলাইন। ফেসবুক, টুইটার আসার পর জীবন আরও বেশি অনলাইনকেন্দ্রিক।
দিনে আমরা যতটুকু পড়ি, তার সবটাই প্রায় কম্পিউটার বা মোবাইল ফোনের স্ক্রিনে। ফলে ছাপানো বইয়ের কদর এখন অস্তগামী, ছাপা পত্রপত্রিকাও করছে হাঁসফাঁস।
অনলাইনে পড়ার এই যে প্রবণতা তা কি বইয়ের মতো ছাপ ফেলছে আমাদের মগজে? ডিজিটাল মাধ্যম শেখার জন্য সত্যিই কি কাগজে ছাপা অক্ষরের চেয়ে ভালো?
গবেষণা কিন্তু এমনটা বলছে না। দেখা গেছে, কেউ যখন অনলাইনে বা স্ক্রিন থেকে কিছু পড়েন, তারা কী পড়েছেন সেটা ভালোভাবে বুঝতে পারেন না। এর থেকেও বাজে বিষয়টি হলো, ডিজিটাল মাধ্যমের পাঠকরা বুঝতেই পারেন না যে, তারা পঠিত বিষয়টি ঠিকঠাক বুঝতে পারেননি!
বই থেকে পড়া ও স্ক্রিনে পড়ার (ডিজিটাল রিডিং) তুলনা করে ৫৪টি গবেষণা করেছে স্পেন ও ইসরায়েলের গবেষক দল। ২০১৮ সালে তারা ১ লাখ ৭১ হাজারের বেশি পাঠকের ওপর গবেষণা চালায়।
এতে দেখা গেছে, মানুষ ডিজিটাল টেক্সটের চেয়ে যখন ছাপানো বই পড়েছে, তখন সামগ্রিকভাবে তাদের বোঝার ক্ষমতা বেশি ছিল। গবেষণা ফলাফলটি প্রকাশিত হয়েছে এডুকেশনাল রিসার্চ রিভিউয়ে।
যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অফ ম্যারিল্যান্ডের মনোবিদ প্যাট্রিসিয়া আলেক্সান্ডার মানুষের শিখন পদ্ধতি নিয়ে গবেষণা করেন। আলেক্সান্ডারের মতে, শিক্ষার্থীরা অনেক সময় ভাবেন, স্ক্রিন থেকে পড়লে সহজে শিখতে পারবেন। কিন্তু পরীক্ষায় দেখা গেছে, তারা বইয়ের তুলনায় স্ক্রিন থেকে কম শিখছেন।
কারণ কী?
স্ক্রিন বা বই থেকে পড়ার প্রভাব সাধারণভাবে এক মনে হলেও আসলে বিষয়টি মোটেই তেমন নয়। ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়ার নিউরোসায়েন্টিস্ট ম্যারিয়ান উলফ কাজ করেন মস্তিষ্কের কর্মকাণ্ড নিয়ে। তিনি বলেন, ‘পড়ার বিষয়টি মানুষের সহজাত বৈশিষ্ট্য নয়। আমরা মূলত আশপাশের মানুষের কথা শুনে কথা বলা শিখি। বিষয়টি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ঘটে। কিন্তু পড়তে শেখার জন্য অনেক চেষ্টা করতে হয়।’
উলফ তার গবেষণায় দেখেছেন, মানবমস্তিষ্কে পড়ার জন্য আলাদা কোনো কোষ নেই। এ জন্য পড়ার জন্য মস্তিষ্ক অন্য কাজে ব্যবহৃত স্নায়ু নেটওয়ার্ক থেকে কোষ ধার করে। যেমন, মস্তিষ্কের যে অংশটি অন্যের চেহারা চেনা ও মনে রাখার কাজ করে, সেটা ধার করা হয় পড়ার সময় অক্ষর চেনার কাজে।
এটি অনেকটা নির্দিষ্ট কাজের জন্য ব্যবহৃত যন্ত্র অন্য কোনো কাজে ব্যবহার করার মতো বিষয়। যেমন হ্যাঙ্গার দিয়ে আলমারিতে কোট ঝোলানো হয়, আবার সেটি দিয়ে ফ্রিজের নিচে চলে যাওয়া টেনিস বল বের করাও সম্ভব। পড়ার সময়ই আমাদের মস্তিষ্ক ঠিক এই কাজটিই করে।
গবেষণা বলছে, মস্তিষ্কের এই নমনীতার কারণে আমরা অনেক নতুন জিনিস করতে ও শিখতে পারি। তবে ভিন্ন ধরনের মাধ্যমে লেখাপড়ার ক্ষেত্রে এই নমনীয়তা সমস্যা হয়ে দাঁড়াতে পারে। স্ক্রিন থেকে পড়ার সময় আমাদের মগজ বই পড়ার চেয়ে ভিন্ন ধরনের কোষের সংযোগ তৈরি করে। ফলে স্ক্রিনে পড়ার কাজটি হলেও তথ্যগুলো মাথায় গেঁথে যায় ভাসা ভাসা ভাবে।
বিষয়টি অবশ্য শুধু ডিভাইসের ওপর নির্ভরশীল নয়। আপনি যা পড়বেন সে সম্পর্কে কী অনুমান করছেন, তার ওপরও পড়ার গভীরতার বিষয়টি নির্ভর করে। ওয়াশিংটন ডিসির আমেরিকান ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানী নেওমি ব্যারন এ বিষয়টিকে বলছেন ‘মাইন্ডসেট’।
তিনি বলেন, ‘যে বিষয়টি পড়তে যাচ্ছি, সেটা কতটা সহজ বা কঠিন বলে আগেই আমরা ভেবে নিই তার ওপর নির্ভর করে মাইন্ডসেট। যদি মনে করি এটা সহজ হবে, তাহলে হয়তো খুব বেশি চেষ্টা করা লাগবে না।’
স্ক্রিনে আমরা যা পড়ি, তার অধিকাংশই টেক্সট মেসেজ ও সোশ্যাল মিডিয়ার পোস্ট। এগুলো সহজেই বোঝা যায়।
আলেক্সান্ডার বলেন, ‘এ কারণে মানুষ যখন স্ক্রিনে কিছু পড়েন, তারা সেটা দ্রুত পড়েন। তাদের চোখ বই পড়ার চেয়ে দ্রুতগতিতে স্ক্রিনের পৃষ্ঠাগুলোকে স্ক্যান করে।’
তবে দ্রুত পড়ার সময় সবকিছুর ঠিকঠাক ধারণা আমরা না-ও পেতে পারি। তিনি বলেন, ‘স্ক্রিনে পড়ার সময় দ্রুতগতিতে স্কিমিং (ভাসা ভাসা ভাবে পড়া) একটা অভ্যাসে পরিণত হয়। টিকটকের কোনো পোস্ট দেখার সময় মগজের যে অংশটা স্কিমিংয়ে ব্যবহৃত হয়, সেটি তখন সক্রিয় করে দেয় আপনার মস্তিষ্ক। তবে এই একই প্রক্রিয়া কোনো ক্ল্যাসিক বইয়ের ভাব বুঝতে সহায়ক নয়।’
ডিজিটাল পৃষ্ঠা মানেই গোলকধাঁধা
স্ক্রিনে পড়ার সময় দ্রুতগতি ছাড়াও স্ক্রলিংয়ের সমস্যাও আছে। ছাপা কোনো পৃষ্ঠা পড়ার সময় বা পুরো একটি বই পড়ার সময় আপনি জানেন যে, আপনি কোথায় আছেন। শুধু একটা পৃষ্ঠার কোনো নির্দিষ্ট জায়গা নয়, পুরো বইয়ের অসংখ্য পৃষ্ঠার মধ্যে নির্দিষ্ট ঘটনাটিও মনে রাখতে পারেন।
যেমন আপনি মনে রাখতে পারেন গল্পে একটি কুকুর মারা যাওয়ার কথা লেখা আছে বাম পৃষ্ঠার ওপরের দিকে। কিন্তু যখন ডিজিটাল স্ক্রিনে আপনার সামনে থাকে বিরাট একটি পৃষ্ঠা, এটি স্ক্রল করার সময় কোথায় কী আছে মনে রাখা কঠিন।
গবেষণায় দেখা গেছে, আমরা যখন কিছু শিখি তখন মনে মনে সেটির একটি মানচিত্র তৈরি করে ফেলি। কোনো বইয়ের পৃষ্ঠার এ ধরনের মানচিত্রের কোন অংশে কী তথ্য আছে, সেটি মনে রাখতে আমাদের সুবিধা হয়।
পাশাপাশি একটি স্থির পৃষ্ঠা পড়তে যতটুকু মানসিক পরিশ্রম হয়, তার চেয়ে অনেক বেশি পরিশ্রম যায় একটি পৃষ্ঠাকে স্ক্রল করতে। আমাদের চোখ তখন নির্দিষ্ট কিছুর ওপর ফোকাস করে না। স্ক্রল করার সময় শব্দগুলোর ওপর নজর রাখতে চোখকে ওপর-নিচ করতে হয়।
ইউনিভার্সিটি অফ সাদার্ন ক্যালিফোর্নিয়ার নিউরোসায়েন্টিস্ট ম্যারি হেলেন ইমোরদিনো-ওয়াং কাজ করেন কীভাবে আমরা পড়ি সেটা নিয়ে।
তিনি বলেন, ‘কোনো পৃষ্ঠা যখন স্ক্রল করছেন, তখন আপনার মস্তিষ্ককেও এর সঙ্গে ছুটতে হয়। তখন কী পড়ছেন, সেটা বুঝতে আপনার মস্তিষ্ক খুব বেশি রিসোর্স পায় না। বিশেষ করে আপনি যা পড়ছেন, সেটা যদি দীর্ঘ ও জটিল হয়।
‘স্ক্রল ডাউন করার সময় আপনার দৃষ্টিসীমায় শব্দগুলোকে রাখার জন্য মস্তিষ্ককে চেষ্টা করে যেতে হয়। যে কারণে আপনার পক্ষে একই সঙ্গে শব্দগুলো যে ধারণা দিচ্ছে তা বোঝা কঠিন হয়ে যেতে পারে।’
আলেক্সান্ডার দেখেছেন যে যা পড়ছেন তার দৈর্ঘ্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। অনুচ্ছেদ ছোট থাকলে মানুষ বই বা স্ক্রিনে পড়ার পর সমান মাত্রায় বুঝতে বা শিখতে পারে। তবে অনুচ্ছেদগুলো ৫০০ শব্দের বেশি হয়ে গেলে স্ক্রিনের চেয়ে ছাপা বই থেকে বেশি শিখতে পারে।
যা পড়ছেন সেটার ধরনও (genre) গুরুত্বপূর্ণ। ধরন বলতে কী জাতীয় বই বা আর্টিকল পড়ছেন সেটা। গবেষণায় অংশ নেয়া অধিকাংশ মানুষ বলেছেন, তারা যখন ছাপার অক্ষরে নন-ফিকশন পড়েন, সেটা বুঝতে সুবিধা হয়। ফিকশনের তারা কতটুকু অনুধাবন করতে পারেন, সেটি অবশ্য গবেষণায় পরিষ্কার নয়।
ক্যালিফোর্নিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটির জেনি কন কাজ করেন শিক্ষায় প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে। ডিজিটাল রিডিং নিয়ে তার লেখা বই ‘স্কিম, ডাইভ, সারফেইস’ প্রকাশিত হয় গত জুনে।
তার মতে, স্ক্রিনের শব্দগুলো মূল সমস্যা নয়, বরং অন্যান্য যা কিছু পড়ার ক্ষেত্রে বিঘ্ন ঘটায় সেটি সমস্যাজনক। কয়েক মিনিট পরপর কোনো কিছুর বাধা এলে পড়ায় মনোযোগ দেয়া কঠিন। ই-মেইল, মেসেজ, পপ-আপ অ্যাড বা টিকটকের আপডেটগুলোকে বাধা হিসেবে দেখছেন জেনি।
কোনো লেখার সঙ্গে যুক্ত থাকা লিংক বা বক্সও শেখার ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি করতে পারে। এদের উদ্দেশ্য পড়ায় সহায়তা করা হলেও কিছু ক্ষেত্রে এগুলো মনোযোগ অন্যদিকে সরিয়ে নেয়।
পুরোটাই খারাপ নয়
ল্যাপটপ বা ট্যাব বন্ধ করে হাতে বই তুলে নিলেই যে স্কুলে ভালো করা যাবে, বিষয়টি এত সহজও নয়। স্ক্রিনে পড়ার পেছনে অনেক ভালো যুক্তিও আছে।
মহামারি আমাদের শিখিয়েছে, অনেক সময় আমাদের হাতে আর কোনো বিকল্প থাকে না। লাইব্রেরি, বইয়ের দোকান বন্ধ থাকলে বা সেখানে যাওয়া অনিরাপদ হলে ত্রাতা হয়ে উঠতে পারে ডিজিটাল বই।
খরচেরও একটি বিষয় আছে। ছাপা বইয়ের চেয়ে ডিজিটাল বইয়ের দাম সাধারণত কম। আর ডিজিটাল বইয়ের পরিবেশবান্ধব দিকটিতেও তাকানো দরকার। ডিজিটাল বইয়ের জন্য গাছ কাটতে হয় না।
ডিজিটাল বই পড়ার অন্যান্য সুবিধাও আছে। অন-স্ক্রিনে লেখার আকার, ব্যাকগ্রাউন্ডের রং ও টাইপফেইস বদলে নেয়া যায়। যারা চোখে ভালো দেখেন না, তাদের জন্য এটি বিরাট এক সুবিধা। যাদের প্রতিবন্ধকতা আছে তাদের ক্ষেত্রেও সহায়ক ডিজিটাল বই।
যাদের ডিসলেক্সিয়া আছে তাদের জন্য ‘ওপেন ডিসলেক্সিক’ নামের একটি টাইপফেইসে লেখা বই পড়া সুবিধাজনক। কম্পিউটার, ট্যাবলেট বা কিন্ডলের মতো ডিজিটাল রিডিং ডিভাইসে এ সুবিধা পাওয়া যায়। অনেক ই-রিডার অ্যাপ ট্যাবলেটেও ব্যবহার করা যায়।
অনলাইনে এডিটররা হাইপারলিংক বসাতে পারেন। এটি একজন পাঠককে কোনো নির্দিষ্ট বিষয় বুঝতে, এমনকি নতুন ও বিভ্রান্তিকর শব্দের সংজ্ঞা শিখতে বা মূল বিষয়ের আরও গভীরে যেতে সাহায্য করে।
কানেকটিকাট অঙ্গরাজ্যের নিউ ক্যানান শহরের স্কুলের লাইব্রেরিয়ান মিশেল লুটালা ডিজিটাল কন্টেন্টের সর্বোচ্চ ব্যবহারে সাহায্য করেন। লুটালা ডিজিটাল রিডিং নিয়ে চিন্তিত নন। তার মতে, স্ক্রিনে পড়ার অনেক উপায় আছে।
তিনি বলেন, ‘স্কুলে পড়ানো হয় এমন অনেক ই-টেক্সটবুকে এমন সব টুল থাকে, যা পড়াশোনাকে অনেক সহজ করে তোলে। অনেক ই-বুকে অনুচ্ছেদ হাইলাইট করার ব্যবস্থা আছে, যা কম্পিউটার জোরে পড়ে শোনাবে। কয়েকটি টুল আছে যা আপনি যে অনুচ্ছেদটি পড়ছেন সেটির নোট রেখে দেয় এবং ই-বুকটি ফিরিয়ে দেয়ার পরও নোটটি আপনার জন্য রেখে দেয়। অধিকাংশ বইয়ে পপআপ সংযুক্ত থাকে। কোনোটিতে মানচিত্র, গুরুত্বপূর্ণ শব্দ ও কুইজ যোগ করা থাকে।
লুটালার মতে, এসব টুল ডিজিটাল রিডিংকে অনেক কাজের করে তুলেছে।
ডিজিটাল রিডিংকে আরও কার্যকর করা সম্ভব
বিশেষজ্ঞরা নিশ্চিত, ডিজিটাল রিডিং থেকে পিছিয়ে আসার কোনো সম্ভাবনা নেই। তাই এ থেকে সর্বোচ্চ সুবিধা নেয়ার উপায় খোঁজা উচিত।
এর একটি কার্যকর পদ্ধতি হতে পারে- যে অংশটুকু সাবধানে পড়তে হবে সেটি প্রিন্ট করিয়ে নেয়া।
আমেরিকান ইউনিভার্সিটির ব্যারনের মতে, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে ধীরেসুস্থে পড়া। এটি মানসিকতা বা মাইন্ডসেটের বিষয়। গুরুত্বপূর্ণ কিছু পড়ার ক্ষেত্রে ধীরে ও মনোযোগ দিয়ে পড়া উচিত।
তিনি বলেন, “ডিজিটালি পড়ার সময়েও মনোযোগ দেয়া সম্ভব, কিন্তু সে জন্য আপনাকে পরিশ্রম করতে হবে। নিজেকে বলতে হবে, ‘আমি শুধু পড়ার জন্য আধা ঘণ্টা সময় ব্যয় করব। কোনো মেসেজ বা ইনস্টাগ্রাম আপডেট চেক করব না।’ পড়ার সময় ফোন বা ট্যাবের নোটিফিকেশন বন্ধ করে রাখা যেতে পারে। পড়া শেষে সেটা আবার চালু করলেন।”
ব্যারনের মতে, বই পড়াটি খেলাধুলা বা বাদ্যযন্ত্র বাজানোর মতো। তিনি বলেন, ‘একজন পিয়ানিস্ট বা অ্যাথলিট দৌড়ানোর আগে বা কনসার্টের আগে নিজেদের প্রস্তুত করে নেন। পড়ার ক্ষেত্রেও একই ব্যাপার। কোনো কিছু পড়ায় মনোযোগ দিতে চাইলে আপনাকে মানসিকভাবে প্রস্তুত হতে হবে। কী পড়তে যাচ্ছেন এবং সেটা থেকে কী পেতে চান সে কথা ভাবুন।’
ব্যারনের পরামর্শ, কী পড়ছেন সেটা কাজে লাগানোর জন্য পৃষ্ঠার শব্দগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করুন। এর অন্যতম কৌশল হচ্ছে নোট নেয়া। আপনি যা পড়েছেন তার সারসংক্ষেপ লিখতে পারেন। মূল শব্দগুলোর তালিকা তৈরি করতে পারেন। যা পড়ছেন তার সঙ্গে যুক্ত থাকার সবচেয়ে দরকারী উপায়ের একটি হল প্রশ্ন করা। লেখকের সঙ্গে তর্ক করুন। যদি কিছু অর্থপূর্ণ না হয়, আপনার প্রশ্ন লিখুন। যদি একমত না হন, তবে কেনো সেটা লিখুন। আপনার দৃষ্টিভঙ্গির জন্য যুক্তি তৈরি করুন।
ছাপানো বই পড়লেও কাগজে নোট নিতে পারেন। বইটি আপনার নিজের হলে সরাসরি পৃষ্ঠায় লিখতে পারেন। যখন আপনার ফোন বা ট্যাবলেটে পড়ছেন, তখনও এমনটি করতে পারেন। পড়ার সময় কাছে কাগজের প্যাড রাখুন।
লুটালা বলেন, ‘অনেক অ্যাপ আপনাকে একটি ডিজিটাল ডকুমেন্টে সরাসরি ভার্চুয়াল নোট তৈরির অনুমতি দেয়। কিছু আপনাকে ভার্চুয়াল স্টিকি নোট যোগ করার অনুমতি দেয়। কোনো কোনো অ্যাপে আপনি মার্জিনে লিখতে পারেন ও ভার্চুয়ালি পৃষ্ঠার কোনা ভাঁজ করে রাখতে পারেন।’
স্ক্রিনে পড়ে কী পাচ্ছেন, সেটা নির্ভর করে আপনি কতটুকু মনে রাখার চেষ্টা করছেন তার ওপর।
আলেকজান্ডারের মতে, ছাপার বই বা ডিজিটাল স্ক্রিনের দুটি আলাদা জায়গা আছে। মনে রাখতে হবে, ভালোভাবে শিখতে তাদের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের ধরনটি ভিন্ন হতে পারে।
আরও পড়ুন:গবেষকরা এআইনিয়ন্ত্রিত এমন ক্যালকুলেটর তৈরি করেছেন যা বলে দিতে পারে আপনি আপনার মৃত্যুর ঠিক কতটা কাছে। ল্যানসেট ডিজিটাল হেলথ-এ প্রকাশিত এক গবেষণায় এমনটা জানানো হয়েছে।
এআই-চালিত ইলেক্ট্রোকার্ডিওগ্রাম (AI-ECGs) একজন ব্যক্তির ভবিষ্যতের স্বাস্থ্য সমস্যা এবং এমনকি মৃত্যুর ঝুঁকির পূর্বাভাস দিতে পারে। অবশ্য দৈনন্দিন চিকিৎসা পরিষেবায় সেগুলো এটি ব্যবহার করা হয়নি।
বর্তমানে এআই ক্যালকুলেটরের এই ভবিষ্যদ্বাণী পৃথক রোগীদের জন্য স্পষ্ট কার্যক্রম পরিচালনা করে না। সেসঙ্গে জীববিজ্ঞানের সঙ্গে এর কার্যকারিতা সারিবদ্ধ নয়। এই সমস্যাগুলো মোকাবেলায় ল্যানসেট গবেষকরা AI-ECG রিস্ক এস্টিমেটর (AIRE) নামে একটি নতুন টুল তৈরি করেছেন।
মৃত্যুর পূর্বাভাস দিয়ে AIRE ভবিষ্যতে হৃদযন্ত্র বিকল হওয়ার ভবিষ্যদ্বাণী করতে পারে। এটি এমন একটি অবস্থা যেখানে হৃৎপিণ্ড পাম্প করা বন্ধ করে দেয়, যার ফলে দশটির মধ্যে প্রায় আটটি ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য সমস্যা এবং প্রাথমিকভাবে রোগীর মৃত্যু ঘটে।
গবেষকরা বলছেন, ‘আমরা AI-ECG রিস্ক এস্টিমেটর (AIRE) প্ল্যাটফর্ম তৈরি করে পূর্ববর্তী AI-ECG পদ্ধতির সীমাবদ্ধতাগুলো সমাধানের চেষ্টা করেছি।
যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য সংস্থা ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের অধীনে দুটি হাসপাতাল আগামী বছরের মাঝামাঝি থেকে এই প্রযুক্তি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত। আর বিশেষজ্ঞরা আশা করছেন যে এটি পাঁচ বছরের মধ্যে স্বাস্থ্য পরিষেবা জুড়ে ব্যবহার করা সম্ভব হবে।
হাসপাতালে আসা রোগীরা এআই ‘ডেথ ক্যালকুলেটর’ থেকে আনুমানিক আয়ুষ্কালের পূর্বাভাস পেতে পারে। এই টুলটি একটি একক ইলেক্ট্রোকার্ডিওগ্রাম (ECG) পরীক্ষা ব্যবহার করে, যা কয়েক মিনিটের মধ্যে হার্টের কার্যকলাপ রেকর্ড করে অজানা স্বাস্থ্য সমস্যাগুলো শনাক্ত করতে পারে। AI-ECG বা AIRE নামে পরিচিত এই প্রোগ্রামটি ৭৮ শতাংশ পর্যন্ত নির্ভুলতার সঙ্গে ECG-এর পর ১০ বছরের মধ্যে মৃত্যুর ঝুঁকি সঠিকভাবে শনাক্ত করতে পারে বলে গবেষণায় প্রমাণ হয়েছে।
ল্যানসেট গবেষকরা এক লাখ ৮৯ হাজার ৫৩৯ রোগীর ১ দশমিক ১৬ মিলিয়ন ইসিজি পরীক্ষার ফলাফলের ডেটাসেট ব্যবহার করে প্রযুক্তিটির প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। তারা দেখেছেন, এটি তিন-চতুর্থাংশ (৭৬ শতাংশ) ক্ষেত্রে এবং ভবিষ্যতের এথেরোস্ক্লেরোটিক কার্ডিওভাসকুলার রোগের মতো গুরুতর হৃদযন্ত্রের সমস্যা (যেখানে ধমনি সংকীর্ণ, রক্তপ্রবাহকে কঠিন করে তোলে) দশটির মধ্যে সাতটি ক্ষেত্রে শনাক্ত করেছে।
শুধু রোগ নির্ণয় নয়, ‘এআই ডেথ ক্যালকুলেটর’ স্বাস্থ্য ঝুঁকির একটি পরিসরও জানাবে যা রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, যদি AIRE শনাক্ত করে যে আপনি একটি নির্দিষ্ট হৃদযন্ত্রের ছন্দের সমস্যার উচ্চ ঝুঁকিতে আছেন, তাহলে আপনি এটিকে প্রতিরোধ করতে আরও বেশি সক্রিয় হবেন।
রাষ্ট্রপতি পদে মো. সাহাবুদ্দিনের থাকা বা না-থাকার বিষয় নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদে আলোচনা হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে অন্তর্বর্তী সরকার।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অন্তর্বর্তী সরকারের একটি বিশ্বস্ত সূত্র নিউজবাংলাকে এ তথ্য জানায়।
সূত্র জানায়, উপদেষ্টা পরিষদের বৃহস্পতিবারের বৈঠকে অন্যান্য ইস্যুর পাশাপাশি রাষ্ট্রপতির বিষয়টিও আলোচনায় আসে। এ সময় সিদ্ধান্ত হয় রাষ্ট্রপতি পদত্যাগ করবেন কিনা বা তিনি এ পদে থাকবেন কিনা সে বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে মতামত নেয়া হবে এবং সে অনুযায়ী পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।
প্রসঙ্গত, রাষ্ট্রপতি পদে মো. সাহাবুদ্দিনের থাকা না-থাকা নিয়ে দেশজুড়ে নানা আলোচনার মধ্যে গতকাল বুধবার দেশের অন্যতম প্রধান দল বিএনপির শীর্ষপর্যায়ের তিন নেতা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সঙ্গে দেখা করে তাদের অবস্থান জানিয়েছেন। দলটি এ মুহূর্তে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ চায় না। বিএনপি মনে করে, রাষ্ট্রপতি পদে শূন্যতা হলে সাংবিধানিক ও রাজনৈতিক সংকট তৈরি হবে।
দেশের একটি জাতীয় দৈনিকে রাষ্ট্রপতির ‘ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের দালিলিক প্রমাণ নেই’ মর্মে বক্তব্য প্রকাশ হওয়ার পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রাষ্ট্রপতিকে অপসারণের দাবি তুলে গত মঙ্গলবার ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ করে। ইনকিলাব মঞ্চ নামের একটি সংগঠনের ব্যানারে মঙ্গলবার রাতে বঙ্গভবনের সামনেও বিক্ষোভ করা হয়।
এর আগে গত সোমবার রাষ্ট্রপতির মন্তব্যের ব্যাপারে সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছিলেন, ‘রাষ্ট্রপতি যে বলেছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র পাননি, এটা হচ্ছে মিথ্যাচার এবং এটা হচ্ছে ওনার শপথ লঙ্ঘনের শামিল।
‘কারণ, তিনি নিজেই ৫ আগস্ট রাত ১১টা ২০ মিনিটে পেছনে তিন বাহিনীর প্রধানকে নিয়ে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে বলেছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ওনার কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন এবং উনি তা গ্রহণ করেছেন।’
আরও পড়ুন:জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘরের নতুন মহাপরিচালক (ডিজি) হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (স্রেডা) চেয়ারম্যান (গ্রেড-১) মুনীরা সুলতানা।
এ নিয়োগ দিয়ে সোমবার প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘর ১৯৬৫ সালের ২৬ এপ্রিল প্রতিষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর এটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের আওতায় আসে।
জাদুঘরটি বাংলাদেশের একমাত্র বিজ্ঞান জাদুঘর এবং জাতীয় পর্যায়ে বিজ্ঞান শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে।
প্রোটিন নিয়ে গবেষণা করে ২০২৪ সালে রসায়নে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিন রসায়নবিদ।
নোবেল পুরস্কারের ওয়েবসাইটে বুধবার জানানো হয়, এ বছর তিন গবেষকের মধ্যে একজনকে পুরস্কারের অর্ধেক এবং বাকি দুজনকে অর্ধেক দেয়া হয়েছে।
সাইটে উল্লেখ করা হয়, কম্পিউটেশনাল প্রোটিন ডিজাইন নিয়ে গবেষণার জন্য এ বছর রসায়নে নোবেল পুরস্কার দেয়া হয়েছে ডেভিড বেকারকে। অন্যদিকে প্রোটিনের কাঠামো নিয়ে পূর্বাভাসের জন্য ডেমিস হ্যাসাবিস ও জন এম. জাম্পারকে এ পুরস্কারের অর্ধেক দেয়া হয়।নো হ বু এ
তিন গবেষকের মধ্যে হ্যাসাবিস ও জাম্পার জ্ঞাত প্রায় সব প্রোটিনের কাঠামো নিয়ে পূর্বাভাস দিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে (এআই) সফলভাবে কাজে লাগান। অন্যদিকে ডেভিড বেকার প্রোটিনের বিষয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ জানার পাশাপাশি সম্পূর্ণ নতুন কিছু প্রোটিন উদ্ভাবন করেন।
পদার্থবিজ্ঞানে এবার নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটির গবেষক জন জে. হপফিল্ড ও কানাডার টরন্টো ইউনিভার্সিটির গবেষক জেফরি ই. হিন্টন।
সুইডেনের স্থানীয় সময় বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটের দিকে (বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩টা ৪৫ মিনিট) পদার্থবিজ্ঞানে নোবেলজয়ীর নাম ঘোষণা করে রয়েল সুইডিশ অ্যাকাডেমি।
নোবেল পুরস্কারের ওয়েবসাইটে জানানো হয়, কৃত্রিম স্নায়বিক নেটওয়ার্কের মাধ্যমে মেশিন লার্নিংকে সক্ষম করা মৌলিক আবিষ্কার ও উদ্ভাবনের জন্য ২০২৪ সালের নোবেল পুরস্কার দেয়া হয়েছে জন জে. হপফিল্ড ও জেফরি ই. হিন্টনকে।
এতে উল্লেখ করা হয়, হপফিল্ড একটি কাঠামো নির্মাণ করেন, যেটি তথ্য মজুত ও পুনর্নির্মাণ করতে পারে। অন্যদিকে হিন্টন এমন একটি পদ্ধতি উদ্ভাবন করেন, যা ডেটাতে স্বতন্ত্রভাবে প্রোপার্টি আবিষ্কার করতে পারে। বর্তমানে ব্যবহৃত বৃহদাকার স্নায়বিক নেটওয়ার্কের জন্য এ উদ্ভাবন গুরুত্বপূর্ণ।
পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার দেয়া হচ্ছে ১৯০১ সাল থেকে। আজকের আগে ১১৭ জন এ পুরস্কার পান।
এ শাস্ত্রে সবচেয়ে কম ২৫ বছর বয়সে নোবেল পান লরেন্স ব্র্যাগ, যিনি ১৯১৫ সালে পুরস্কারটি পেয়েছিলেন। সবচেয়ে বেশি ৯৬ বছর বয়সে নোবেল পুরস্কার পান আর্থার অ্যাশকিন। তিনি ২০১৮ সালে পুরস্কারটি পেয়েছিলেন।
আরও পড়ুন:পদার্থবিজ্ঞানে নোবেলজয়ীর নাম ঘোষণা করা হবে মঙ্গলবার।
সুইডেনের স্থানীয় সময় বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩টা ৪৫ মিনিট) পদার্থবিজ্ঞানে নোবেলজয়ীর নাম ঘোষণা করবে রয়েল সুইডিশ অ্যাকাডেমি।
পুরস্কার ঘোষণার সব তথ্য নোবেলপ্রাইজ নামের ওয়েবসাইটে গিয়ে সরাসরি দেখা যাবে। এ বছরের নোবেল পুরস্কারের সমস্ত ঘোষণা nobelprize.org ও নোবেল পুরস্কার কমিটির ইউটিউব চ্যানেলে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।
প্রথা অনুযায়ী অক্টোবরের প্রথম সোমবার হিসেবে এবার ৭ অক্টোবর চিকিৎসাশাস্ত্রে নোবেল পুরস্কার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হবে।
যৌথভাবে ২০২৪ সালের চিকিৎসাশাস্ত্রের নোবেল পুরস্কার জিতে নিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের দুই বিজ্ঞানী ভিক্টর অ্যামব্রোস ও গ্যারি রাভকান।
ক্যারোলিনস্কা ইনস্টিটিউটের নোবেল অ্যাসেম্বলি মাইক্রোআরএনএ আবিষ্কার এবং পোস্ট-ট্রান্সক্রিপশনাল জিন নিয়ন্ত্রণে এর ভূমিকার জন্য তাদের এ পুরস্কার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
নোবেল কমিটির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, করোলিনস্কা ইনস্টিটিউটের নোবেল অ্যাসেম্বলি ‘মাইক্রোআরএনএ আবিষ্কার এবং পোস্ট-ট্রান্সক্রিপশনাল জিন নিয়ন্ত্রণে এর ভূমিকার জন্য’ ভিক্টর অ্যামব্রোস এবং গ্যারি রাভকানকে সোমবার চিকিৎসা বা ওষুধশাস্ত্রে যৌথভাবে নোবেল পুরস্কার-২০২৪ প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
১৯০১ সালে পদার্থ বিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পান জার্মানির নাগরিক ভিলহেল্ম কনরাড রন্টগেন। এক্সরে বা রঞ্জন রশ্মি আবিষ্কার এবং এবং এ ধরনের রশ্মির যথোপযুক্ত ব্যবহারিক প্রয়োগে সফলতা অর্জনের জন্য তিনি এ পুরস্কার পান।
আরও পড়ুন:চলতি বছর চিকিৎসাবিজ্ঞান ও শারীরতত্ত্বে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন বিজ্ঞানী ভিক্টর অ্যামব্রোস ও গ্যারি রাভকুন। দুজনই যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক।
মাইক্রোআরএনএ আবিষ্কার ও জিন নিয়ন্ত্রণে এর ট্রান্সক্রিপশন-পরবর্তী ভূমিকাবিষয়ক গবেষণার জন্য তাদেরকে এই পুরস্কার দেয়া হয়েছে। এই আবিষ্কার কোনো প্রাণীর দেহ গঠন ও কীভাবে কাজ করে তা বুঝতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
বাংলাদেশ সময় সোমবার বিকেল ৩টা ৩০ মিনিটে সুইডেনের স্টকহোমে এ বছরের চিকিৎসাবিজ্ঞান ও শারীরতত্ত্বে নোবেল বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করে দ্য রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অফ সায়েন্সেস।
ভিক্টর অ্যাবব্রোস ১৯৫৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ হ্যাম্পশায়ারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৭৯ সালে ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।
এছাড়া ১৯৭৯ সাল থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত একই প্রতিষ্ঠানে পোস্ট ডক্টরাল গবেষণা করেন। ১৯৮৫ সালে তিনি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়, ক্যামব্রিজ, ম্যাসাচুয়েটসের প্রধান গবেষক হন। বর্তমানে তিনি ম্যাসাচুসেটস মেডিক্যাল স্কুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যাচারাল সায়েন্সের প্রফেসর হিসেবে কাজ করছেন।
নোবেল জয়ী গ্যারি রাভকুন ১৯৫২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৮২ সালে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করেন। তিনি ১৯৮৫ সালে ম্যাসাচুসেটস জেনারেল হাসপাতাল এবং হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুলের প্রধান গবেষক হন। বর্তমানে তিনি এখানেই জেনেটিকসের প্রফেসর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
চিকিৎসাশাস্ত্রে গত বছর নোবেল পুরস্কার জিতেছিলেন ক্যাথলিন কারিকো ও ড্রিউ ওয়েইসম্যান। এমআরএন করোনা টিকা আবিষ্কারের জন্য তাদেরকে পুরস্কার দেয়া হয়েছিল।
প্রসঙ্গত, বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার ‘নোবেল’, যা ১৯০১ সাল থেকে দেয়া হয়ে আসছে। এ পুরস্কারটির নামকরণ করা হয়েছে সুইডিশ বিজ্ঞানী আলফ্রেড নোবেলের নামানুসারে।
উনবিংশ শতকে এই বিজ্ঞানী শক্তিশালী বিস্ফোরক ডিনামাইট আবিষ্কার করে বিপুল অর্থের মালিক হন। তিনি উইল করে যান যে তার যাবতীয় অর্থ থেকে যেন প্রতি বছর পদার্থ, রসায়ন, চিকিৎসা, শান্তি ও সাহিত্য এই পাঁচটি খাতে বিশেষ অবদান রাখা ব্যক্তিদের পুরস্কার দেয়া হয়। ১৯৬৯ সাল থেকে এই পাঁচ বিভাগের সঙ্গে যুক্ত হয় অর্থনীতিও।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য