× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

জীবনযাপন
The risk of pneumonia is increasing due to air pollution
google_news print-icon

বায়ুদূষণে বাড়ছে নিউমোনিয়ার ঝুঁকি

বায়ুদূষণে-বাড়ছে-নিউমোনিয়ার-ঝুঁকি
দেশে ফুসফুস সংক্রমণজনিত রোগ নিউমোনিয়ার ঝুঁকি বাড়ছে পরিবেশ দূষণে। ফাইল ছবি
ইউনিসেফ শঙ্কা প্রকাশ করে বলছে, নিউমোনিয়ার বর্তমান ধারা অব্যাহত থাকলে আগামী দশকজুড়ে বাংলাদেশে প্রতিবছর পাঁচ বছরের কম বয়সী ১ লাখের বেশি শিশু নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা যেতে পারে।

তিন দিন জ্বরে ভোগা সাড়ে তিন বছর বয়সী সাইফুল হোসাইনকে ভর্তি করা হয় চাঁদপুর সদর হাসপাতালে। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে চিকিৎসকরা জানান, শিশুটি আক্রান্ত নিউমোনিয়ায়। এরপর থেকে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে।

উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতালে নিউমোনিয়ার ভালো চিকিৎসা না থাকায় চিকিৎসকরা সাইফুলকে দ্রুত ঢাকা শিশু হাসপাতালে নিতে বলেন।

৬ নভেম্বর দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা শিশু হাসপাতালে ভর্তির পরপরই চিকিৎসক সাইফুলকে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) নেয়ার সুপারিশ করেন। সেই সময় হাসপাতালের শিশু আইসিইউ ফাঁকা ছিল না।

আইসিইউ পেতে হাসপাতালেই তিন ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। শেষ মুহূর্তে আইসিইউ পাওয়া গেলেও বাঁচানো যায়নি সাইফুলকে।

দেড় বছরের শিশু আমীর হামজাকে এক সপ্তাহের জ্বর, শ্বাসকষ্ট ও পাতলা পায়খানা নিয়ে ঠাকুরগাঁও জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তার নিউমোনিয়া ধরা পড়ে। শ্বাসকষ্ট তীব্র হওয়ায় চিকিৎসকরা হামজাকে ঢাকা শিশু হাসপাতাল নেয়ার সুপারিশ করেন।

১ নভেম্বর হামজাকে ঢাকা শিশু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সঙ্গে সঙ্গে অক্সিজেনের ব্যবস্থা হওয়ায় ১০ দিনের চিকিৎসায় হামজার শারীরিক অবস্থা কিছুটা উন্নতির দিকে।

দেশে সাইফুল ও হামজার মতো নিউমোনিয়া আক্রান্ত অর্ধেকের বেশি শিশুর মৃত্যু হয় চিকিৎসা ছাড়াই। জেলা-উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতালগুলোয় নিউমোনিয়া রোগীর চিকিৎসায় ভালো ব্যবস্থাপনা ও প্রশিক্ষিত কর্মী না থাকায় রাজধানীমুখী হচ্ছে রোগী ও স্বজনরা।

ঢাকার হাসপাতালগুলোতে ভিড় বাড়ছে প্রতিনিয়ত। চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে রাজধানীর চিকিৎসকদের।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে ফুসফুস সংক্রমণজনিত রোগ নিউমোনিয়ার ঝুঁকি বাড়ছে পরিবেশ দূষণের কারণে, যার পেছনে দায়ী মূলত বায়ুদূষণ। এ ছাড়া অপর্যাপ্ত ভেন্টিলেশন, ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা, নিরাপদ পানির সংকট, অপুষ্টিও দায়ী।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে নিউমোনিয়া চিকিৎসার ক্ষেত্রে সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচিসহ সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে রোগটির চিকিৎসাব্যবস্থা রয়েছে, কিন্তু পরিবেশ দূষণ ও অব্যবস্থাপনার ফলে বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া ও জীবাণুর মাধ্যমে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে।

বায়ুদূষণে বাড়ছে নিউমোনিয়ার ঝুঁকি

আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) সাম্প্রতিক এক গবেষণা প্রতিবেদন বলছে, দেশে বিভিন্ন রোগে পাঁচ বছরের কম বয়সী যত শিশুর মৃত্যু হচ্ছে, তার ২৮ শতাংশ নিউমোনিয়ায়। প্রতিবছর পাঁচ বছরের কম বয়সী ৮০ হাজার শিশু নিউমোনিয়া আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে, যার মধ্যে মারা যাচ্ছে ৫০ হাজার।

শিশুর সেবা নিশ্চিত করতে দেশের একটি মাত্র বিশেষায়িত স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান ঢাকা শিশু হাসপাতাল। এ হাসপাতালে ১০ দিনে যে পরিমাণ রোগী ভর্তি হয়েছে, তার ২০ শতাংশই চিকিৎসাব্যবস্থা শুরুর আগেই মারা গেছে।

বিশ্বে প্রতিবছর ১০ লাখ শিশু নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়। বাংলাদেশ হেলথ ফ্যাসিলিটি সার্ভে বলছে, দেশে এ রোগে প্রতিদিন ৬৭ শিশুর মৃত্যু হচ্ছে, যার ৫২ শতাংশই চিকিৎসার বাইরে থেকে যাচ্ছে।

সঠিক সময় চিকিৎসাকেন্দ্রে না আসায় ৪৫ শতাংশ শিশুর মৃত্যু হচ্ছে। সচেতনতার অভাবে বাড়িতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হচ্ছে ৩ শতাংশ শিশুর।

এ জরিপেই বলা হচ্ছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী, দেশে জেলা-উপজেলা পর্যায়ে ৯৫ শতাংশ হাসপাতালে নিউমোনিয়া চিকিৎসার সুব্যবস্থাপনা নেই। এ কারণে ফুসফুস সংক্রমণ দেখা দেয়ার পর পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যে ৪২ শতাংশকে চিকিৎসার জন্য আশপাশের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নেয়া হয়। অন্য কোনো চিকিৎসাসেবা না থাকায় ৩৪ শতাংশ শিশুকে অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ দেয়া হয়।

এই জরিপে আরও উঠে এসেছে, বিভিন্ন রোগে বাংলাদেশে যত শিশু মৃত্যুর ঘটনা ঘটে, এর ১৮ শতাংশই নিউমোনিয়ার কারণে। এ ছাড়া বর্তমানে ১ হাজারে ৩৫ জনের মৃত্যু হচ্ছে নিউমোনিয়ায়।

২০২৫ সালের এই মৃত্যুর হার হাজারে ৩ জনে নামিয়ে আনার চেষ্টা করছে সরকার, তবে দৃশ্যমান উদ্যোগ নেই বলে অভিযোগ বিশেষজ্ঞদের।

তারা বলছেন, মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করে নিউমোনিয়ার লক্ষণ দেখা দেয়া মাত্র হাসপাতালে আনলে এই মৃত্যুর হার অনেক কমিয়ে আনা সম্ভব। এই মৃত্যুহার কমিয়ে আনতে শিশুকে ছয় মাস বয়স পর্যন্ত শুধু মায়ের দুধ পান করানো প্রয়োজন। পাশাপাশি পুষ্টিকর খাবার খাওয়াতে হবে। পরিবেশ দূষণ রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

জন হপকিনস ব্লুমবার্গ স্কুল অব পাবলিক হেলথের গবেষণার বরাত দিয়ে শিশুদের নিয়ে কাজ করা জাতিসংঘের সংস্থা ইউনিসেফ একটি আশঙ্কার কথা জানিয়েছে। সংস্থাটি বলছে, নিউমোনিয়ার বর্তমান ধারা অব্যাহত থাকলে আগামী দশকজুড়ে বাংলাদেশে প্রতিবছর পাঁচ বছরের কম বয়সী ১ লাখের বেশি শিশু নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা যেতে পারে।

তবে মানুষের মধ্যে সচেতনতা ও সঠিক সময়ে চিকিৎসা নিশ্চিত করা সম্ভব হলে ৪৮ হাজার শিশুর মৃত্যু এড়ানো সম্ভব।

বাংলাদেশ লাং ফাউন্ডেশনের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জাতীয় বক্ষব্যাধি হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডা. এস কে শাহিনুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বায়ুদূষণ নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার প্রধান কারণগুলোর একটি। বায়ুদূষণে শরীরে, বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের ফুসফুসে ভাইরাস, ব্যাকেটেরিয়া, ফাঙ্গাস প্রভৃতি ইনফেকশন হয়ে থাকে। এ ছাড়া বাসস্থান বা ঘরে অপর্যাপ্ত আলো-বাতাসের ঘাটতিতেও নিউমোনিয়া হয়। বিশেষ করে ঘনবসতি বা বস্তি এলাকার ঘরগুলোতে লোকে গাদাগাদি করে বসবাস করায় সেখানে ভেন্টিলেশন সুবিধা কম থাকে।

‘এতে শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত সমস্যায় হাঁচি-কাশির মাধ্যমে নিউমোনিয়ার ঝুঁকি বাড়ে। মানুষের দৈনন্দিন জীবনে হাতের ব্যবহার বেশি হওয়ার মাধ্যমে রোগ-জীবাণুর সংস্পর্শে আসার সম্ভাবনা থাকে। সাধারণ মানুষের মধ্যে ভালো করে সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ে ওঠেনি। এটিও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে দিচ্ছে।’

তিনি বলেন, নিউমোনিয়ায় মৃত্যুর এক-তৃতীয়াংশ দূষিত বায়ুর কারণে হয়ে থাকে। বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে মাত্রাতিরিক্ত বায়ুদূষণের ফলে নিউমোনিয়ায় মৃত্যুহার বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে বায়ুদূষণ মোকাবিলায় সচেতনতা জরুরি।

এ চিকিৎসক আরও বলেন, ‘বায়ুদূষণ, শিল্প ও ইঞ্জিনচালিত গাড়ি থেকে নির্গত কালো ধোঁয়ার মাধ্যমে বয়স্ক এবং প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে শ্বাস-প্রশ্বাসের স্বাস্থ্যঝুঁকি বেশি। খুব অল্পবয়সী এবং বয়স্ক ব্যক্তিরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।

‘এ ছাড়া যেসব বাড়িতে রান্না, কক্ষের উষ্ণতা এবং আলোর জন্য নিয়মিত দূষণকারী জ্বালানি এবং প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়, সেসব বাড়িতে থাকা শিশুরা বেশি পরিমাণে বায়ুদূষণের শিকার হচ্ছে। গবেষণায় দেখা গেছে, বায়ুদূষণজনিত মৃত্যুর ৯০ শতাংশই ৪০টি নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে।’

এ বিষয়ে ঢাকা শিশু হাসপাতালের সাবেক পরিচালক ও বাংলাদেশ শিশু চিকিৎসক সমিতির (বিপিএ) অধ্যাপক মনজুর হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘করোনার মধ্যে নিউমোনিয়ার টিকা কার্যক্রম কিছুটা হলেও ব্যাহত হয়েছে। এই টিকা কার্যক্রমে গতি আনতে হবে। শিশুর পুষ্টির উন্নতি ঘটাতে কাজ করতে হবে। এই পদক্ষেপগুলো নিউমোনিয়ায় শিশু মৃত্যুর ঝুঁকি কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।’

তিনি বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন ও বায়ুদূষণের কারণে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হতে পারে শিশুরা। বায়ুদূষণের কারণে ফুসফুসের অক্সিজেন ধারণক্ষমতা অনেক কমে যায়। এ সময় নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হলে মৃত্যুহার অনেক বেড়ে যায়।’

আরও পড়ুন:
নিউমোনিয়া: এক সপ্তাহে রোগী সহস্রাধিক শিশু
বাগেরহাটে এক মাসে হাসপাতালে ১০ হাজার শিশু
শীতের বিদায়বেলায় শিশুদের নিউমোনিয়ার প্রকোপ

মন্তব্য

আরও পড়ুন

জীবনযাপন
3 more people

আরো ১৩ জনের করোনা শনাক্ত

আরো ১৩ জনের করোনা শনাক্ত

দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ৩১২টি নমুনা পরীক্ষা করে ১৩ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত করা হয়েছে। তবে এ সময়ের মধ্যে কেউ মারা যায়নি। আজ মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সমন্বিত নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে পাঠানো প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়। এ দিন প্রতি ১০০ নমুনায় শনাক্তের হার ৪ দশমিক ১৭ শতাংশ বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ‘২০২০ সালের ১৮ মার্চ থেকে এখন পর্যন্ত দেশে করোনায় মৃত্যু ২৯ হাজার ৫২১ জন। এর মধ্যে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ২২ জনের। এছাড়া ২০২০ সালের ৮ মার্চ থেকে মোট শনাক্ত হয়েছে ২০ লাখ ৫২ হাজার ১২৭ জন। এর মধ্যে গত জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত শনাক্ত হয়েছেন ৫৮২ জন।

মন্তব্য

জীবনযাপন
The number of people in the dengue is increasing

ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে

একদিনে রেকর্ড ৪২৯ জন শনাক্ত, চলতি বছর ১০ হাজার ছাড়াল
ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে।

এডিশ মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমেই বেড়ে চলেছে। সারা দেশে মশা নিধন কার্যক্রমের দুর্বলতার কারণে ডেঙ্গু পরিস্থিতি উদ্বেগজনক মোড় নিয়েছে। চলতি বছরের মে মাসের তুলনায় জুন মাসে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় তিনগুণ বেড়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেওয়া পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে দেখা যায়, বছরের শুরুর দিকে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম ছিল। জানুয়ারিতে ১,১৬১ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৩৭৪, মার্চে ৩৩৬ এবং এপ্রিলে ৭০১ জন হাসপাতালে ভর্তি হন। তবে মে মাস থেকে পরিস্থিতির অবনতি হতে শুরু করে এবং জুনে এসে তা ভয়াবহ রূপ নেয়। আশঙ্কার বিষয় হলো, ঢাকার বাইরের জেলাগুলোতে, বিশেষ করে বরগুনায়, ডেঙ্গুর প্রকোপ অনেক বেশি।

এদিকে চলতি বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ১০ হাজার ২৯৬ জনে পৌঁছেছে। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ৪২৯ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এ সময়ে কারও মৃত্যু হয়নি।

সোমবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে
অঞ্চলভেদে নতুন শনাক্ত ৪২৯ জন ডেঙ্গু রোগীর তালিকা:

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নতুন শনাক্ত ৪২৯ জন ডেঙ্গুরোগীর মধ্যে— বরিশাল বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১৪৯ জন; চট্টগ্রাম বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৫৭ জন; ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৬১ জন; ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ৪২ জন; ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ৪৫ জন; খুলনা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ২১ জন ও রাজশাহী বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৫৪ জন।

গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছাড়পত্র পেয়েছেন ৩৫৮ জন রোগী। চলতি বছরে এ পর্যন্ত মোট ৯ হাজার ৮৭ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন।

চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্তদের মধ্যে পুরুষ ৫৯ দশমিক ১ শতাংশ এবং নারী ৪০ দশমিক ৯ শতাংশ।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে কোনো মৃত্যুর ঘটনা না ঘটলেও চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ৪২ জন মারা গেছেন। মৃতদের মধ্যে একজন রাজশাহী বিভাগের বাসিন্দা।

এদিকে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলছেন, এডিস মশার বিস্তার এখনই নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে পরিস্থিতি নাগালের বাইরে চলে যেতে পারে। বিশেষ করে রাজধানীর বাইরের এলাকাগুলোতে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ববিদ অধ্যাপক কবিরুল বাশার গণমাধ্যমকে বলেন, 'মে মাসের তুলনায় জুনে আক্রান্তের সংখ্যা তিনগুণ হয়েছে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে জুলাইয়ে এ সংখ্যা চার থেকে পাঁচগুণ এবং আগস্টে দশগুণ পর্যন্ত বাড়তে পারে।'

প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ২৯৬ জনে। এর আগে ২০২৩ সালের পুরো বছরে দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হন ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন এবং মারা যান ১ হাজার ৭০৫ জন। ২০২৪ সালের পুরো বছরের (১ জানুয়ারি–৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত) সর্বমোট হিসাব অনুযায়ী, ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১ লাখ ১ হাজার ২১৪ জন এবং মৃতের সংখ্যা ছিল ৫৭৫ জন।

মন্তব্য

জীবনযাপন
The body of 20 more people in the country

দেশে আরও ২১ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত

দেশে আরও ২১ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত

করোনা সংক্রমণের নতুন ঢেউয়ের মধ্যে দেশে আরও ২১ জনের শরীরে প্রাণঘাতী ভাইরাসটি শনাক্ত করা হয়েছে।

রবিবার (২৯ জুন) সকাল ৮টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় এসব শনাক্ত হয়েছে। তবে, নতুন করে কোনো মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি এই সময়ের মধ্যে।

সোমবার (৩০ জুন) স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানিয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৮৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ৫ দশমিক ৪৭ শতাংশ।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, এ পর্যন্ত ২০ লাখ ৫২ হাজার ১১৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ২২ জন। আর দেশে ভাইরাসটিতে মোট মৃত্যু হয়েছে ২৯ হাজার ৫২১ জনের।

মন্তব্য

জীবনযাপন
Dengue death of 5 more people in a day

একদিনে আরও ৩৮৩ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত, মৃত্যু ১

একদিনে আরও ৩৮৩ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত, মৃত্যু ১

গত শনিবার সকাল ৮টা থেকে রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত (একদিনে) ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ৩৮৩ জন রোগী। এসব রোগীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১৩৬ জন আক্রান্ত বরিশাল বিভাগে। একইসঙ্গে এই সময়ে ডেঙ্গুতে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে।

রোববার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়েছে, হাসপাতালে নতুন ভর্তিদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে ১৩৬ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৫৫ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৪৮, ঢাকা উত্তর সিটিতে ৩২ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ২৮, খুলনা বিভাগে ৪১ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ১০ জন এবং রাজশাহী বিভাগে ৩৩ জন নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন।

এদিকে গত এক দিনে সারাদেশে ৩৪৯ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। এ নিয়ে চলতি বছর ছাড়পত্র পেয়েছেন ৮ হাজার ৭২৮ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, এবছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত সব মিলিয়ে ৯ হাজার ৮৬৭ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তবে বছরের এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ৪২ জনের।

মন্তব্য

সিলেটে করোনায় একজনের মৃত্যু

সিলেটে করোনায় একজনের মৃত্যু

সারাদেশে করোনা ভাইরাসের নতুন সাব-ভ্যারিয়েন্ট এর সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় পর সিলেট এ ভাইরাসে আক্রান্ত একজনের মৃত্যু হয়েছে।

শনিবার দুপরে এ তথ্যটি নিশ্চিত করেছে সিলেট বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। নতুন করে করোনার আক্রমন শুরুর পর সিলেটে প্রথম এই কোন রোগী মারা গেলেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, করোনায় আক্রান্ত ৬৯ বছর বয়েসি পুরুষ ১৯ জুন শহীদ শামসুদ্দিন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার রাতে মারা যান তিনি। এছাড়া সিলেটে এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ২০ জন বলে জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শহীদ শামসুদ্দিন হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাক্তার মো. মিজানুর রহমান জানান, নিহত ব‍্যক্তির বাড়ি সিলেট সদর উপজেলায়। তিনি করোনা ছাড়াও আরও অন‍্যান‍্য জটিল রোগে আক্রান্ত ছিলেন।

মন্তব্য

জীবনযাপন
One more death in Karona in Chittagong is the new identification

চট্টগ্রামে করোনায় আরও একজনের মৃত্যু, নতুন শনাক্ত ৬

চট্টগ্রামে করোনায় আরও একজনের মৃত্যু, নতুন শনাক্ত ৬

চট্টগ্রামে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে; গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন আরও ছয়জন। এ নিয়ে চলতি জুন মাসেই জেলায় করোনায় মৃতের সংখ্যা সাতজনে দাঁড়াল।

২৮ জুন চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে পাঠানো সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টার প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, জেলার মিরসরাই উপজেলার বাসিন্দা সালেহা বেগম (৪০) নামে এক নারী শুক্রবার নগরের জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। করোনায় আক্রান্ত হওয়ার আগে থেকেই তিনি হৃদরোগসহ নানা জটিলতায় ভুগছিলেন।

এদিকে, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ৯১টি নমুনা পরীক্ষা করে ছয়জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে চারজন নগরের এবং দুজন বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা।

শনাক্ত হওয়া রোগীদের মধ্যে নগরের শেভরন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চারজন এবং এভারকেয়ার হাসপাতালে দুজনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছিল।

সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, চট্টগ্রামে চলতি জুন মাসে মোট ১৩০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে ৬৬ জন পুরুষ, ৬৩ জন নারী ও একজন শিশু রয়েছে।

মন্তব্য

জীবনযাপন
Two more deaths in Barisal Dengue

বরিশালে ডেঙ্গুতে আরও ২ জনের মৃত্যু

নতুন আক্রান্ত ১০৫
বরিশালে ডেঙ্গুতে আরও ২ জনের মৃত্যু

মশাবাহীত রোগ ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় বরিশালের দুই জেলায় দুজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময় গোটা বিভাগের সরকারি হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছেন আরও ১০৫ জন আক্রান্ত রোগী। এ নিয়ে বর্তমানে বিভাগের ছয় জেলার সরকারি হাসপাতালগুলোতে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন ৪৩৫ জন। মৃত্যুবরণ করা দুজন হলেন- বরগুনা জেলার বেতাগী উপজেলার কালিকাবাড়ি এলাকার বাসিন্দা আ. করিম (৫০) ও পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার টিয়াখালী ইউনিয়নের রাজপাড়া এলাকার মো. ইউসুফ খন্দকার (৭২)। এর মধ্যে আ. করিম বরিশাল শেরইবাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় হাসপাতালে ও বৃদ্ধ মো. ইউসুফ খন্দকার কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। গতকাল শুক্রবার দুপুরে বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. শ্যামল কৃষ্ণ মণ্ডল এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, বর্তমানে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা উদ্বেগ ও আশঙ্কাজনক। এ পরিস্থিতি থেকে বেরোতে হবে। চিকিৎসার চেয়ে প্রতিরোধ জরুরি। তাই মশার বিস্তার রোধ করতে বাড়ির আশেপাশে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করতে হবে। মশার কামড় থেকে নিজেকে রক্ষায় ব্যবস্থা নিতে হবে।

বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, চলতি বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত বরিশাল বিভাগের ছয় জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন ৪ হাজার ৩০৫ জন। এদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ১১ জনের। বর্তমানে চিকিৎসা নিচ্ছেন ৪৩৫ জন।

বরগুনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। মৃত ১১ জনের মধ্যে ছয়জনেরই বরগুনার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে। শুধু মৃত্যুই নয় এ জেলায় আক্রান্তের সংখ্যাও বেশি, বরগুনা জেলায় এ পর্যন্ত ২ হাজার ৬৩২ জন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

মন্তব্য

p
উপরে