× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

জীবনযাপন
The risk of pneumonia is increasing due to air pollution
google_news print-icon

বায়ুদূষণে বাড়ছে নিউমোনিয়ার ঝুঁকি

বায়ুদূষণে-বাড়ছে-নিউমোনিয়ার-ঝুঁকি
দেশে ফুসফুস সংক্রমণজনিত রোগ নিউমোনিয়ার ঝুঁকি বাড়ছে পরিবেশ দূষণে। ফাইল ছবি
ইউনিসেফ শঙ্কা প্রকাশ করে বলছে, নিউমোনিয়ার বর্তমান ধারা অব্যাহত থাকলে আগামী দশকজুড়ে বাংলাদেশে প্রতিবছর পাঁচ বছরের কম বয়সী ১ লাখের বেশি শিশু নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা যেতে পারে।

তিন দিন জ্বরে ভোগা সাড়ে তিন বছর বয়সী সাইফুল হোসাইনকে ভর্তি করা হয় চাঁদপুর সদর হাসপাতালে। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে চিকিৎসকরা জানান, শিশুটি আক্রান্ত নিউমোনিয়ায়। এরপর থেকে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে।

উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতালে নিউমোনিয়ার ভালো চিকিৎসা না থাকায় চিকিৎসকরা সাইফুলকে দ্রুত ঢাকা শিশু হাসপাতালে নিতে বলেন।

৬ নভেম্বর দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা শিশু হাসপাতালে ভর্তির পরপরই চিকিৎসক সাইফুলকে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) নেয়ার সুপারিশ করেন। সেই সময় হাসপাতালের শিশু আইসিইউ ফাঁকা ছিল না।

আইসিইউ পেতে হাসপাতালেই তিন ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। শেষ মুহূর্তে আইসিইউ পাওয়া গেলেও বাঁচানো যায়নি সাইফুলকে।

দেড় বছরের শিশু আমীর হামজাকে এক সপ্তাহের জ্বর, শ্বাসকষ্ট ও পাতলা পায়খানা নিয়ে ঠাকুরগাঁও জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তার নিউমোনিয়া ধরা পড়ে। শ্বাসকষ্ট তীব্র হওয়ায় চিকিৎসকরা হামজাকে ঢাকা শিশু হাসপাতাল নেয়ার সুপারিশ করেন।

১ নভেম্বর হামজাকে ঢাকা শিশু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সঙ্গে সঙ্গে অক্সিজেনের ব্যবস্থা হওয়ায় ১০ দিনের চিকিৎসায় হামজার শারীরিক অবস্থা কিছুটা উন্নতির দিকে।

দেশে সাইফুল ও হামজার মতো নিউমোনিয়া আক্রান্ত অর্ধেকের বেশি শিশুর মৃত্যু হয় চিকিৎসা ছাড়াই। জেলা-উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতালগুলোয় নিউমোনিয়া রোগীর চিকিৎসায় ভালো ব্যবস্থাপনা ও প্রশিক্ষিত কর্মী না থাকায় রাজধানীমুখী হচ্ছে রোগী ও স্বজনরা।

ঢাকার হাসপাতালগুলোতে ভিড় বাড়ছে প্রতিনিয়ত। চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে রাজধানীর চিকিৎসকদের।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে ফুসফুস সংক্রমণজনিত রোগ নিউমোনিয়ার ঝুঁকি বাড়ছে পরিবেশ দূষণের কারণে, যার পেছনে দায়ী মূলত বায়ুদূষণ। এ ছাড়া অপর্যাপ্ত ভেন্টিলেশন, ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা, নিরাপদ পানির সংকট, অপুষ্টিও দায়ী।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে নিউমোনিয়া চিকিৎসার ক্ষেত্রে সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচিসহ সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে রোগটির চিকিৎসাব্যবস্থা রয়েছে, কিন্তু পরিবেশ দূষণ ও অব্যবস্থাপনার ফলে বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া ও জীবাণুর মাধ্যমে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে।

বায়ুদূষণে বাড়ছে নিউমোনিয়ার ঝুঁকি

আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) সাম্প্রতিক এক গবেষণা প্রতিবেদন বলছে, দেশে বিভিন্ন রোগে পাঁচ বছরের কম বয়সী যত শিশুর মৃত্যু হচ্ছে, তার ২৮ শতাংশ নিউমোনিয়ায়। প্রতিবছর পাঁচ বছরের কম বয়সী ৮০ হাজার শিশু নিউমোনিয়া আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে, যার মধ্যে মারা যাচ্ছে ৫০ হাজার।

শিশুর সেবা নিশ্চিত করতে দেশের একটি মাত্র বিশেষায়িত স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান ঢাকা শিশু হাসপাতাল। এ হাসপাতালে ১০ দিনে যে পরিমাণ রোগী ভর্তি হয়েছে, তার ২০ শতাংশই চিকিৎসাব্যবস্থা শুরুর আগেই মারা গেছে।

বিশ্বে প্রতিবছর ১০ লাখ শিশু নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়। বাংলাদেশ হেলথ ফ্যাসিলিটি সার্ভে বলছে, দেশে এ রোগে প্রতিদিন ৬৭ শিশুর মৃত্যু হচ্ছে, যার ৫২ শতাংশই চিকিৎসার বাইরে থেকে যাচ্ছে।

সঠিক সময় চিকিৎসাকেন্দ্রে না আসায় ৪৫ শতাংশ শিশুর মৃত্যু হচ্ছে। সচেতনতার অভাবে বাড়িতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হচ্ছে ৩ শতাংশ শিশুর।

এ জরিপেই বলা হচ্ছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী, দেশে জেলা-উপজেলা পর্যায়ে ৯৫ শতাংশ হাসপাতালে নিউমোনিয়া চিকিৎসার সুব্যবস্থাপনা নেই। এ কারণে ফুসফুস সংক্রমণ দেখা দেয়ার পর পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যে ৪২ শতাংশকে চিকিৎসার জন্য আশপাশের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নেয়া হয়। অন্য কোনো চিকিৎসাসেবা না থাকায় ৩৪ শতাংশ শিশুকে অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ দেয়া হয়।

এই জরিপে আরও উঠে এসেছে, বিভিন্ন রোগে বাংলাদেশে যত শিশু মৃত্যুর ঘটনা ঘটে, এর ১৮ শতাংশই নিউমোনিয়ার কারণে। এ ছাড়া বর্তমানে ১ হাজারে ৩৫ জনের মৃত্যু হচ্ছে নিউমোনিয়ায়।

২০২৫ সালের এই মৃত্যুর হার হাজারে ৩ জনে নামিয়ে আনার চেষ্টা করছে সরকার, তবে দৃশ্যমান উদ্যোগ নেই বলে অভিযোগ বিশেষজ্ঞদের।

তারা বলছেন, মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করে নিউমোনিয়ার লক্ষণ দেখা দেয়া মাত্র হাসপাতালে আনলে এই মৃত্যুর হার অনেক কমিয়ে আনা সম্ভব। এই মৃত্যুহার কমিয়ে আনতে শিশুকে ছয় মাস বয়স পর্যন্ত শুধু মায়ের দুধ পান করানো প্রয়োজন। পাশাপাশি পুষ্টিকর খাবার খাওয়াতে হবে। পরিবেশ দূষণ রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

জন হপকিনস ব্লুমবার্গ স্কুল অব পাবলিক হেলথের গবেষণার বরাত দিয়ে শিশুদের নিয়ে কাজ করা জাতিসংঘের সংস্থা ইউনিসেফ একটি আশঙ্কার কথা জানিয়েছে। সংস্থাটি বলছে, নিউমোনিয়ার বর্তমান ধারা অব্যাহত থাকলে আগামী দশকজুড়ে বাংলাদেশে প্রতিবছর পাঁচ বছরের কম বয়সী ১ লাখের বেশি শিশু নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা যেতে পারে।

তবে মানুষের মধ্যে সচেতনতা ও সঠিক সময়ে চিকিৎসা নিশ্চিত করা সম্ভব হলে ৪৮ হাজার শিশুর মৃত্যু এড়ানো সম্ভব।

বাংলাদেশ লাং ফাউন্ডেশনের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জাতীয় বক্ষব্যাধি হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডা. এস কে শাহিনুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বায়ুদূষণ নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার প্রধান কারণগুলোর একটি। বায়ুদূষণে শরীরে, বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের ফুসফুসে ভাইরাস, ব্যাকেটেরিয়া, ফাঙ্গাস প্রভৃতি ইনফেকশন হয়ে থাকে। এ ছাড়া বাসস্থান বা ঘরে অপর্যাপ্ত আলো-বাতাসের ঘাটতিতেও নিউমোনিয়া হয়। বিশেষ করে ঘনবসতি বা বস্তি এলাকার ঘরগুলোতে লোকে গাদাগাদি করে বসবাস করায় সেখানে ভেন্টিলেশন সুবিধা কম থাকে।

‘এতে শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত সমস্যায় হাঁচি-কাশির মাধ্যমে নিউমোনিয়ার ঝুঁকি বাড়ে। মানুষের দৈনন্দিন জীবনে হাতের ব্যবহার বেশি হওয়ার মাধ্যমে রোগ-জীবাণুর সংস্পর্শে আসার সম্ভাবনা থাকে। সাধারণ মানুষের মধ্যে ভালো করে সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ে ওঠেনি। এটিও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে দিচ্ছে।’

তিনি বলেন, নিউমোনিয়ায় মৃত্যুর এক-তৃতীয়াংশ দূষিত বায়ুর কারণে হয়ে থাকে। বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে মাত্রাতিরিক্ত বায়ুদূষণের ফলে নিউমোনিয়ায় মৃত্যুহার বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে বায়ুদূষণ মোকাবিলায় সচেতনতা জরুরি।

এ চিকিৎসক আরও বলেন, ‘বায়ুদূষণ, শিল্প ও ইঞ্জিনচালিত গাড়ি থেকে নির্গত কালো ধোঁয়ার মাধ্যমে বয়স্ক এবং প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে শ্বাস-প্রশ্বাসের স্বাস্থ্যঝুঁকি বেশি। খুব অল্পবয়সী এবং বয়স্ক ব্যক্তিরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।

‘এ ছাড়া যেসব বাড়িতে রান্না, কক্ষের উষ্ণতা এবং আলোর জন্য নিয়মিত দূষণকারী জ্বালানি এবং প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়, সেসব বাড়িতে থাকা শিশুরা বেশি পরিমাণে বায়ুদূষণের শিকার হচ্ছে। গবেষণায় দেখা গেছে, বায়ুদূষণজনিত মৃত্যুর ৯০ শতাংশই ৪০টি নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে।’

এ বিষয়ে ঢাকা শিশু হাসপাতালের সাবেক পরিচালক ও বাংলাদেশ শিশু চিকিৎসক সমিতির (বিপিএ) অধ্যাপক মনজুর হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘করোনার মধ্যে নিউমোনিয়ার টিকা কার্যক্রম কিছুটা হলেও ব্যাহত হয়েছে। এই টিকা কার্যক্রমে গতি আনতে হবে। শিশুর পুষ্টির উন্নতি ঘটাতে কাজ করতে হবে। এই পদক্ষেপগুলো নিউমোনিয়ায় শিশু মৃত্যুর ঝুঁকি কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।’

তিনি বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন ও বায়ুদূষণের কারণে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হতে পারে শিশুরা। বায়ুদূষণের কারণে ফুসফুসের অক্সিজেন ধারণক্ষমতা অনেক কমে যায়। এ সময় নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হলে মৃত্যুহার অনেক বেড়ে যায়।’

আরও পড়ুন:
নিউমোনিয়া: এক সপ্তাহে রোগী সহস্রাধিক শিশু
বাগেরহাটে এক মাসে হাসপাতালে ১০ হাজার শিশু
শীতের বিদায়বেলায় শিশুদের নিউমোনিয়ার প্রকোপ

মন্তব্য

আরও পড়ুন

জীবনযাপন
 USA Today featured LabAid leader Sakif Shamim in the headline
“Sakif Shamim: Labaid’s Bold Vision to Revolutionize Healthcare in Bangladesh” শিরোনামে

ল্যাবএইডের কর্ণধার সাকিফ শামীমকে নিয়ে ফিচার করলো ইউএসএ টুডে

ল্যাবএইডের কর্ণধার সাকিফ শামীমকে নিয়ে ফিচার করলো ইউএসএ টুডে

বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা শিল্পের জন্য এক অনন্য ও গৌরবের মুহূর্ত নিয়ে এসেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম প্রভাবশালী প্রকাশনা 'ইউএসএ টুডে'। এই বিশ্বখ্যাত দৈনিকের বিশেষ প্রতিবেদনে ফিচার্ড হয়েছেন ল্যাবএইড ক্যান্সার হাসপাতাল এন্ড সুপার স্পেশালিটি সেন্টারের দূরদর্শী ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ল্যাবএইড গ্রুপের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব সাকিফ শামীম। ইউএসএ টুডে-র মত আন্তর্জাতিক পত্রিকায় বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতকে তুলে ধরা নিঃসন্দেহে দেশের জন্য বিশাল সম্মান এবং বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্যসেবা মানচিত্রে বাংলাদেশকে এক উদীয়মান কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার ক্ষেত্রে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।

ইউএসএ টুডে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বৃহৎ ও সবচেয়ে বেশি প্রচারিত দৈনিক সংবাদপত্র। এর গতিশীল নকশা, সংক্ষিপ্ত, সুস্পষ্ট প্রতিবেদন এবং জনপ্রিয় সংস্কৃতি বিষয়ক গল্প অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে এটি বিশ্বজুড়ে অনেক সংবাদপত্রের শৈলীকে প্রভাবিত করেছে। বিশ্বজুড়ে লক্ষ লক্ষ পাঠকের কাছে পৌঁছানো এই প্রকাশনায় সাকিফ শামীমের সাক্ষাৎকার ও ল্যাবএইডের কার্যক্রম তুলে ধরায় বাংলাদেশের স্বাস্থ্যপ্রযুক্তি এবং চিকিৎসা সক্ষমতা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত হলো।

সাকিফ শামীম বর্তমানে ল্যাবএইড গ্রুপের নেতৃত্ব দিচ্ছেন, যা তাঁর বাবার হাতে ১৯৮৪ সালে যাত্রা শুরু করেছিল। এটি এখন ছয়টি বিশেষায়িত হাসপাতাল, ৪৫টি ডায়াগনস্টিক সেন্টার, একটি মেডিকেল কলেজ, ফার্মাসিউটিক্যালস, রিয়েল এস্টেট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ ১২,০০০-এরও বেশি কর্মচারী নিয়ে দেশের বৃহত্তম স্বাস্থ্যসেবা গ্রুপে পরিণত হয়েছে। তাঁর নেতৃত্বে ল্যাবএইড ক্যান্সার হাসপাতাল এন্ড সুপার স্পেশালিটি সেন্টার বর্তমানে দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় ও এশিয়ার সেরা হাসপাতালগুলোর মধ্যে গণ্য হচ্ছে, যা রোগ নির্ণয় থেকে শুরু করে সমন্বিত ক্যান্সার পরিচর্যা প্রদান করছে।

সাকিফ শামীমের নেতৃত্ব স্বাস্থ্যসেবায় প্রযুক্তিনির্ভর বিপ্লব ঘটিয়েছে। তিনি লাইফপ্লাস বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছেন, যা তিন লাখেরও বেশি সক্রিয় ব্যবহারকারী নিয়ে দেশের বৃহত্তম হেলথটেক কোম্পানিগুলোর একটি। পাশাপাশি, তিনি Labaid GPT নামে একটি জেনারেটিভ এআই প্ল্যাটফর্ম চালু করেছেন, যা ডাক্তার ও রোগীদের জন্য সেকেন্ড অপিনিয়ন প্রদানের লক্ষ্যে তৈরি এবং এটি ল্যাবএইডের বহু বছরের সংরক্ষিত ডেটা দ্বারা চালিত। তাঁর দূরদর্শী উদ্যোগে, ল্যাবএইড গ্রুপ ভার্চু-কেয়ার এআই (Virtuecare AI)-এর মাধ্যমে অগমেন্টেড রিয়্যালিটি (AR) এবং ভার্চুয়াল রিয়্যালিটি (VR) প্রযুক্তির ব্যবহারও শুরু করেছে, যার লক্ষ্য দক্ষিণ এশিয়া, আফ্রিকা এবং অনুরূপ অঞ্চলের মানুষের জন্য উন্নত প্রযুক্তি সাশ্রয়ী ও সহজলভ্য করে তোলা।

ল্যাবএইড গ্রুপের সম্প্রসারণ কৌশল সুদূরপ্রসারী; তারা ঢাকায় ২৫০ মিলিয়ন ডলারের (আনুমানিক ২০০০ কোটি টাকা) একটি ৭৫০ শয্যার সুপার-স্পেশালিটি হাসপাতাল তৈরির পরিকল্পনা করেছে এবং আগামী ৫ থেকে ৭ বছরের মধ্যে দেশজুড়ে ৩০টি ক্যান্সার সেন্টার স্থাপনের পরিকল্পনা নিয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে উদ্ভাবন ও বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়ানোর লক্ষ্যে ল্যাবএইড বাংলাদেশ ছাড়াও সিঙ্গাপুর এবং হংকংয়ে পাবলিক হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতাল এবং হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুলের মত বৈশ্বিক সংস্থাগুলোর সাথেও তাদের কোশলগত অংশীদারিত্ব রয়েছে।

সাকিফ শামীম বলেন, ল্যাবএইড শুধু একটি স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান নয়—এটি রূপান্তরের একটি মঞ্চ। সাকিফ শামীমের চূড়ান্ত লক্ষ্য হলো বাংলাদেশে চিকিৎসা খাতে আমূল পরিবর্তন নিয়ে আসা। তিনি বিশ্বাস করেন, সঠিক অবকাঠামো এবং অংশীদারিত্বের মাধ্যমে বাংলাদেশীদের আর চিকিৎসার জন্য বিদেশমুখী হতে হবে না, বরং বাংলাদেশ পার্শ্ববর্তী দেশগুলো থেকে রোগীদের আকৃষ্ট করতে পারবে। তাঁর উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা হলো আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে ল্যাবএইড গ্রুপকে $১০ বিলিয়ন কর্পোরেশনে রূপান্তরিত করা, যার মাধ্যমে তিন থেকে চার বছরের মধ্যে বছরে প্রায় ৭-৮ মিলিয়ন মানুষের কাছে বিশ্বমানের স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়া যাবে। সাকিফ শামীমের মতে, বিশ্বমানের স্বাস্থ্যসেবা একটি বিলাসিতা নয়, বরং প্রতিটি মানুষের অধিকার।

মন্তব্য

জীবনযাপন
Palestinians are risking medical care from the roof

ছাদ থেকে খসে পড়ছে পলেস্তারা, ঝুঁকি নিয়ে চলছে চিকিৎসাসেবা

কুমিল্লার দাউদকান্দি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স
ছাদ থেকে খসে পড়ছে পলেস্তারা, ঝুঁকি নিয়ে চলছে চিকিৎসাসেবা

চলতি বছরের এপ্রিল মাসেই কুমিল্লার দাউদকান্দি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। ১৯৭২ সালে ২০ শয্যা দিয়ে চালু হয় হাসপাতালটি। বর্তমানে এটি ৫০শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল। ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের পাশে হওয়ায় এর গুরুত্ব অপরিসীম। দাউদকান্দি ছাড়াও আশেপাশের উপজেলা থেকে রোগীরা আসে এ হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা নিতে। পরিত্যক্ত হওয়ায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে এখানকার চিকিৎসক নার্স ও অন্যান্য স্টাফদের। জীবন বাঁচাতে আসা রোগীদের চিকিৎসা নিতে হয় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে।

হাসপাতালের বিভিন্ন কক্ষ ঘুরে দেখা যায়, রোগীর মাথার ওপর পলেস্তারা খসে পড়ছে। পিলার ফেটে বেরিয়ে পড়েছে রট। আতঙ্ক কাজ করে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের মাঝে।

প্রতিদিন এ হাসপাতালের ইমার্জেন্সিতে ১শত ৩০ থেকে ১শত ৫০ জন, ইনডোরে ৫০ থেকে ৬০ জন রোগী ভর্তি থাকেন। নরমাল ডেলিভারি হয় ৪ থেকে ৫ জনের, সিজার হয় ৩ থেকে ৪ জনের। আউটডোরে প্রতিদিন ৭ থেকে ৮ শত রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

উপজেলার থৈরখোলার বাসিন্দা মতিন ভূইয়া তার চিকিৎসারত স্ত্রীকে নিয়ে আছেন হাসপাতালে। কিছুক্ষণ পর পর ছাদ থেকে খসে পড়ছে সিমেন্ট। চোখে-মুখে ঢুকে বালি। তিনি বলেন জানিনা কখন পুরো ছাদটাই ভেঙে পড়বে। সারাক্ষণ ভয়ে থাকি।

গজারিয়া থেকে চিকিৎসা নিতে আসা স্বপ্না বেগম বলেন, এটা হাসপাতাল না যেন মৃত্যুপুরি। ওপর থেকে ভিম ভেঙে পড়েছিল শরীরে। চিকিৎসা নিতে এসে উল্টো আহত হতে হয়েছে।

ওয়ার্ড ইনচার্জ আকলিমা আক্তার বলেন, কিছুদিন আগে ৫ নম্বর বেডের নতুন ফ্যান ছাদসহ ভেঙে এক রোগীর মাথায় পড়ে। প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। আমরা আতঙ্কে কাজ করি। প্রতিদিন মনে হয় কখন ভবনটা ভেঙে পড়ে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. হাবিবুর রহমান বলেন, পরিত্যক্ত ঘোষণার পর এখনও কোনো সংস্কার কাজ শুরু হয়নি। এত ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চিকিৎসা দেওয়া সত্যিই কঠিন। এই হাসপাতালটি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে হওয়ায় আশপাশের অনেক এলাকা থেকে রোগীরা চিকিৎসা নিতে আসেন। আমরা জীবনের ঝুঁকি হলেও চিকিৎসা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। তিনি আরও বলেন বর্ষায় হাসপাতাল প্রাঙ্গণে ড্রেন না থাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দেয়।

স্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ কুমিল্লার সহকারী প্রকৌশলী নূর মোহাম্মদ তালুকদার বলেন, আমরা ভবনটি পরিদর্শন করে দেখেছি। এটি সম্পূর্ণ ব্যবহার অনুপযোগী। তাই পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছি। কাজটি বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে হবে তাই কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে। সরকারের প্রশাসনিক পরিবর্তনের কারণে আপাতত টেন্ডার প্রক্রিয়া স্থগিত রয়েছে। কাজ শুরু হলে কুমিল্লার মধ্যে প্রথমেই দাউদকান্দি হাসপাতালের সংস্কারকাজ শুরু করা হবে। তিনি আরো বলেন, হাসপাতালের যেসব অংশ সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ, সেগুলো সাময়িকভাবে মেরামতের চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি এ হাসপাতালে রোগীর চাপ তুলনামূলক বেশি থাকায় এটিকে ১ শত থেকে দেড়শ শয্যার করার প্রস্তাব ইতোমধ্যে পাঠানো হয়েছে।

মন্তব্য

জীবনযাপন
Cancer Treatment should be created by a specialist physician Health Advisor

ক্যান্সার চিকিৎসায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক তৈরি করতে হবে: স্বাস্থ্য উপদেষ্টা

ক্যান্সার চিকিৎসায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক তৈরি করতে হবে: স্বাস্থ্য উপদেষ্টা

দেশে ক্যান্সার চিকিৎসায় অধিক সংখ্যক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক তৈরির আহ্বান জানিয়েছেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম। ক্যান্সার রোগী বৃদ্ধি পাওয়ার প্রেক্ষিতে উপদেষ্টা এ আহ্বান জানান।
গতকাল সোমবার রাজধানীর ন্যাশনাল বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে স্তন ক্যান্সার সচেতনতা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, শুধু স্তন ক্যান্সার নয়, আমাদের দেশে এখন ক্যান্সারের রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। ক্যান্সার প্রতিরোধে খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করা থেকে শুরু করে আমাদের আরও বেশি স্বাস্থ্য সচেতন হতে হবে।
পাশাপাশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক তৈরির আহ্বান জানান তিনি।
নূরজাহান বেগম আরও বলেন, আমাদেরকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক তৈরি করতে হবে, যাতে করে আমরা ৬৪ জেলায় ক্যান্সার সচেতনতার বিষয়টি পৌঁছে দিতে পারি।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার প্রতিটি বিভাগীয় হাসপাতালে ক্যান্সার, কিডনি ও ডায়ালাইসিস চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছে।
উপদেষ্টা আরো বলেন, ক্যান্সার চিকিৎসার জন্য লিনাগ মেশিন খুবই প্রয়োজনীয়। বর্তমান সরকার ৩৬৩ কোটি টাকা ব্যয়ে আরও ছয়টি লিনাগ মেশিন ক্রয়ের ব্যবস্থা নিয়েছে।
আগামী কয়েক মাসের মধ্যে মেশিন গুলো দেশে আসবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
স্তন ক্যান্সার চিকিৎসায় যুগোপযোগী ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ন্যাশনাল বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, এক্ষেত্রে সব ধরনের সহযোগিতা সরকার অব্যাহত রাখবে।
দেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে আমলাতান্ত্রিক জটিলতাকে দায়ী করে উপদেষ্টা বলেন, আপনারা জানলে অবাক হবেন যে একটি ফাইল একজনের কাছেই ছিল এক মাস দশ দিন। তাহলে বলুন, উন্নয়ন কাজ কিভাবে এগিয়ে নেয়া যায়?
তিনি এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের আরও বেশি আন্তরিক হওয়ার আহ্বান জানান।
নূরজাহান বেগম আরো বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনের পর হয়তো আমরা কেউ থাকব না। তবে আমাদের প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংক ও গ্রামীণ এনজিও আপনাদের পাশে থাকবে সব সময়।
তিনি বলেন, গ্রামীণ ব্যাংকের মাধ্যমে আমরা সাধারণ মানুষের পাশে থাকব এবং আপনারা আমাদেরকে যখনই ডাকবেন, আমরা তখনই আপনাদের ডাকে সাড়া দেব।
উপদেষ্টা বলেন, আমাদের টাকার অভাব রয়েছে। তাই আমরা হয়তো পর্যাপ্ত অভিজ্ঞতা অর্জন করতে সব সময় বিদেশে যেতে পারি না। কিন্তু বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দেশে এনে তো আমরা অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারি। এক্ষেত্রে তো কোন বাধা নাই।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরসহ সকলকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
অনুষ্ঠানের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে মহা-পরিচালক অধ্যাপক ডাক্তার মো. আবু জাফর বলেন, স্তন ক্যান্সার ধরা পড়লে শতভাগ নিরাময় সম্ভব। এজন্য আমাদের লজ্জা বা ভয় না পেয়ে যথাসময়ে স্ক্যানিং করতে হবে।

মন্তব্য

শসার সঙ্গে যে খাবারগুলো খেলে বেশি পুষ্টি পাবেন

শসার সঙ্গে যে খাবারগুলো খেলে বেশি পুষ্টি পাবেন

শসা হলো কম ক্যালোরি সমৃদ্ধ সবজি। এই সবজির প্রায় পুরোটাই পানি (প্রায় ৯৬%)। সকালের নাস্তা থেকে রাতের খাবার পর্যন্ত, বিভিন্ন উপায়ে স্বাস্থ্যকর এবং হাইড্রেটিং খাবার তৈরি করতে শসা ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি ভিটামিন কে, ভিটামিন সি, পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং ফাইবারের মতো প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে, যা হাইড্রেশন ও সুস্থতায় সাহায্য করে। এর উচ্চ ফাইবার এবং জলীয় উপাদান হজমশক্তি উন্নত করে এবং পেট ফাঁপা রোধ করতে সাহায্য করে।

শসায় উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, বিশেষ করে কিউকারবিটাসিন এবং ফ্ল্যাভোনয়েড, প্রদাহের বিরুদ্ধে লড়াই করতে এবং কোষকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। শসা ভিটামিন কে সরবরাহ করে হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখে, যা ক্যালসিয়াম শোষণ এবং হাড় মেরামতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কিছু খাবার রয়েছে যেগুলো শসার সঙ্গে খেলে শসার পুষ্টিগুণ আরও বেড়ে যায়। চলুন জেনে নেওয়া যাক-

টমেটো

গবেষণা অনুসারে, টমেটো লাইকোপিন এবং ভিটামিন সি সমৃদ্ধ, যা অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করে এবং সামগ্রিক ত্বকের স্বাস্থ্য উন্নত করে বলে জানা গেছে। শসা এবং টমেটো অলিভ অয়েল এবং বিভিন্ন ভেষজের সঙ্গে মিশিয়ে স্বাস্থ্যকর সালাদ তৈরি করে খেতে পারেন। যা ডিটক্সিফিকেশন এবং হাইড্রেশনের জন্য উপযুক্ত। চাইলে এই সংমিশ্রণ স্যান্ডউইচ স্টাফিং হিসাবেও ব্যবহার করতে পারেন।

দই

দই প্রচুর প্রোটিন, ক্যালসিয়াম এবং প্রোবায়োটিক যোগ করে এবং শসা থেকে প্রাপ্ত পানির সঙ্গে মিশে এটি অন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য সহায়তা করে। শসার রায়তা বা স্মুদি তৈরি করতে পারেন। যা শীতল, ক্রিমি এবং হজম-বান্ধবও।

ছোলা

ছোলা উদ্ভিজ্জ প্রোটিন, আয়রন এবং ফাইবার সরবরাহ করে বলে জানা গেছে, যা শসার সঙ্গে মিলে আরও বেশি পুষ্টিকর হয়ে ওঠে। এই দুই খাবার একসঙ্গে খেলে তা দীর্ঘ সময় পেট ভরিয়ে রাখে এবং সুষম খাবারের বিকল্প হতে পারে। সেদ্ধ ছোলা, শসা, অলিভ অয়েল, কাঁচা মরিচ এবং পুদিনা পাতা একসঙ্গে মিশিয়ে খেতে পারেন।

পুদিনা বা তুলসী

এই ভেষজগুলো অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ এবং হজমে সহায়তা করে। সেইসঙ্গে এগুলো শসার শীতল প্রকৃতির পরিপূরক। সবচেয়ে জনপ্রিয় পদ্ধতি হলো শসা-পুদিনা মিশ্রিত পানি বা তুলসী-শসার সালাদ যা ওজন কমাতে সাহায্য করে এবং আপনাকে সতেজ বোধ করায়।

মন্তব্য

জীবনযাপন
Dab water or saline which one is more effective in reducing insight?

ডাবের পানি নাকি স্যালাইন—পানিশূন্যতা কমাতে কোনটি বেশি কার্যকর?

ডাবের পানি নাকি স্যালাইন—পানিশূন্যতা কমাতে কোনটি বেশি কার্যকর?

ভরা শরতে হঠাৎ বৃষ্টি আর রোদের পালা বদলে ঘরে ঘরে বাড়ছে জ্বর, সর্দি-কাশি, পেটের সমস্যা। এর সঙ্গে দেখা দিচ্ছে পানিশূন্যতা, যা হতে পারে রোদের তাপে ঘাম, শরীরচর্চা বা পরিশ্রমের পর পর্যাপ্ত পানি না খেলে। গুরুতর ক্ষেত্রে এটি প্রাণঘাতীও হতে পারে।

চিকিৎসকদের মতে, শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দিলে ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্য নষ্ট হয়। শরীর থেকে শুধু পানি নয়, হারিয়ে যায় প্রয়োজনীয় খনিজ পদার্থ যেমন সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম ও ক্লোরাইড। এর ফলেই দেখা দেয় ক্লান্তি, মাথা ধরা, দুর্বলতা— এমনকি শারীরবৃত্তীয় কার্যক্রম ব্যাহত হয়।

ডাবের পানি: প্রাকৃতিক ইলেক্ট্রোলাইট পানীয়
পুষ্টিবিদরা বলেন, ডাবের পানি হলো একেবারে প্রাকৃতিক ইলেক্ট্রোলাইট পানীয়। এতে রয়েছে পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও সোডিয়াম, যা অল্প পানিশূন্যতা দূর করতে কার্যকর। রোদে দীর্ঘক্ষণ হাঁটা, শরীরচর্চা বা উপবাসের পর এক গ্লাস ডাবের পানি শরীরে দ্রুত শক্তি ফিরিয়ে আনে। এতে থাকা প্রাকৃতিক শর্করা ও অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট শরীরকে চাঙ্গা রাখে এবং অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমায়।

স্যালাইন: গুরুতর অবস্থার নির্ভরযোগ্য সমাধান
তবে বমি, ডায়রিয়া বা আন্ত্রিকের কারণে শরীর থেকে অতিরিক্ত পানি ও লবণ বের হয়ে গেলে তখন প্রয়োজন হয় স্যালাইন। এতে নির্দিষ্ট মাত্রায় সোডিয়াম, পটাশিয়াম ও গ্লুকোজ থাকে, যা দ্রুত শরীরের ইলেক্ট্রোলাইট ভারসাম্য ফিরিয়ে আনে।

কতটা খাওয়া উচিত?

  • সাধারণভাবে দিনে এক গ্লাস ডাবের পানি খাওয়া শরীরের জন্য ভালো।
  • বেশি পরিশ্রম বা রোদে থাকার পর দুই গ্লাস খাওয়া যেতে পারে, তবে একসঙ্গে নয়।
  • বমি বা আন্ত্রিকের ক্ষেত্রে দিনে ২০০–৪০০ মিলিলিটার স্যালাইন অল্প অল্প করে খেতে হয়। শিশুদের ক্ষেত্রে চামচে করে দেওয়া যেতে পারে।

বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ:
হালকা পানিশূন্যতায় ডাবের পানি যথেষ্ট কার্যকর। কিন্তু শরীর থেকে অতিরিক্ত পানি ও লবণ বের হতে থাকলে স্যালাইনই সবচেয়ে নিরাপদ বিকল্প। এছাড়া লবণ–চিনি–দইয়ের পাতলা ঘোল বা পাতিলেবুর শরবতও শরীরের পানির ঘাটতি পূরণে সহায়ক।

পুষ্টিবিদদের মতে, শরীরের প্রয়োজন অনুযায়ী সঠিক ইলেক্ট্রোলাইট পানীয় বেছে নিলেই পানিশূন্যতা থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।

মন্তব্য

যেসব খাবার খেলে ফুসফুস ভালো থাকে

যেসব খাবার খেলে ফুসফুস ভালো থাকে

প্রকৃতিতে হেমন্তের বাতাস বইতে শুরু করেছে। এর হাত ধরেই আসবে শুষ্কতার দিন। কারণ দরজার ওপারে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছে শীতকাল। আবহাওয়ার পরিবর্তনে এমন সময় বাড়তে থাকে দূষণের মাত্রাও। বিশেষ করে কমতে থাকে বাতাসের মান। যে কারণে তা আমাদের শ্বাসযন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়ায়। ফুসফুসের যত্ন নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিছু খাবার ও খাদ্যাভ্যাস ফুসফুসের পরিশ্রম কমিয়ে আপনাকে সহজে শ্বাস নিতে সাহায্য করবে। চলুন জেনে নেওয়া যাক-

১. হাইড্রেশন বজায় রাখুন

সুস্থ ফুসফুস বজায় রাখার জন্য পর্যাপ্ত পানি পান করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই অভ্যাস শ্বাসনালীতে শ্লেষ্মা পাতলা রাখতে সাহায্য করে, যা বিষাক্ত পদার্থ বের করে দেওয়া সহজ করে তোলে। ভেষজ চা, মধু দিয়ে গরম পানি এবং গ্রিন টি এক্ষেত্রে বেশ কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারে। আমেরিকান জার্নাল অফ রেসপিরেটরি অ্যান্ড ক্রিটিক্যাল কেয়ার মেডিসিনের একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, গ্রিন টি ফুসফুসের কার্যকারিতা উন্নত করতে সাহায্য করে।

২. অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গ্রহণ করুন

ভিটামিন সি এবং ই-এর মতো অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ ফল এবং শাক-সবজি দূষণের কারণে সৃষ্ট অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে আপনার ফুসফুসকে রক্ষা করতে সাহায্য করতে পারে। কমলা, বেরি, পালং শাক এবং বাদাম অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের চমৎকার উৎস। ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজে প্রকাশিত একটি গবেষণা অনুসারে, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গ্রহণ বৃদ্ধি করলে তা ফুসফুসের কার্যকারিতা উন্নত করে।

৩. ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড

ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড। এই স্বাস্থ্যকর চর্বিতে প্রদাহ-বিরোধী বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এটি প্রদাহ কমিয়ে ফুসফুসের রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে। পুষ্টিবিদরা স্যামন, ম্যাকেরেল, তিসি এবং আখরোটের মতো ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেন।

৪. প্রতিরক্ষার জন্য মসলা

হলুদ, মৌরি, হলুদ এবং আদার মতো মসলা শক্তিশালী প্রদাহ-বিরোধী বৈশিষ্ট্যে ভরপুর। এগুলো শ্বাসনালীতে দূষণকারী পদার্থের প্রদাহের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করতে পারে। আদার মতো মসলা শ্লেষ্মা ভেঙে দেয়, যা আমাদের শ্বাস নেওয়া সহজ করে তোলে। মসলা ফুসফুসে রক্ত ​​সঞ্চালনও উন্নত করে এবং প্রদাহ নিয়ন্ত্রণ করে। বিশেষজ্ঞরা নিয়মিত আদা, রসুন এবং হলুদ খাওয়ার পরামর্শ দেন।

৫. ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার

ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার শরীরকে পরিষ্কার করতে এবং টক্সিন অপসারণে সাহায্য করতে পারে। ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার ফুসফুসের কার্যকারিতা বজায় রাখে। আমেরিকান থোরাসিক সোসাইটির একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, উচ্চ ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার প্রাপ্তবয়স্কদের ফুসফুসের কার্যকারিতা উন্নত করে।

মন্তব্য

জীবনযাপন
To keep the liver good to keep

লিভার ভালো রাখতে যা খাবেন

লিভার ভালো রাখতে যা খাবেন

লিভার শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অভ্যন্তরীণ অঙ্গের মধ্যে একটি। এর কাজ হলো ডিটক্সিফাই করা, চর্বি ভেঙে ফেলা, পুষ্টি প্রক্রিয়াজাত করা এবং সিস্টেমকে সচল রাখা। আমাদের খাদ্যাভ্যাস, পরিবেশগত কারণ ইত্যাদি অনেক সময় লিভারকে অতিরিক্ত চাপে ফেলে। তবে লিভার সঠিকভাবে পরিষ্কার করার জন্য খুব বেশি কিছু করার প্রয়োজন হয় না। প্রক্রিয়াজাত খাবার বাদ দিয়ে সাধারণ কিছু খাবার প্রতিদিন খাওয়া হলে তা লিভারকে ভালোভাবে কাজ করতে সাহায্য করে। চলুন জেনে নেওয়া যাক, লিভার ভালো রাখতে কোন ৫ খাবার প্রতিদিন খেতে হবে-

১. পেঁয়াজ

পেঁয়াজ সালফার যৌগ দিয়ে পূর্ণ যা শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ দূর করতে এনজাইমগুলোকে সক্রিয় করে, বিশেষ করে যখন লিভারের কথা আসে। এতে কোয়ারসেটিন নামে একটি উপকারী যৌগ রয়েছে, যা একটি উদ্ভিদ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট লিভারের কোষকে যেকোনো ধরনের অক্সিডেটিভ ক্ষতি এবং যেকোনো অঙ্গের প্রদাহ থেকে রক্ষা করে। প্রতিদিন পেঁয়াজ খেলে তা লিভারকে বর্জ্য বিপাকে সাহায্য করে এবং ডিটক্সিফিকেশন উন্নত করে।

২. বাঁধাকপি

বাঁধাকপির উপকারিতা জেনে আপনি অবাক হবেন। এটি লিভারের স্বাস্থ্যের জন্য সেরা সবজির মধ্যে একটি। বাঁধাকপি একটি ক্রুসিফেরাস সবজি যা ডিটক্সিফাইং এনজাইম বৃদ্ধি করে। এতে প্রচুর ফাইবার থাকে, যা হজম এবং অন্ত্রের স্বাস্থ্যের উন্নতিতে সহায়তা করে। এতে গ্লুকোসিনোলেট রয়েছে, যা হজম প্রক্রিয়া এবং লিভারকে পরিশোধনকারী এনজাইম নিঃসরণে সহায়তা করে। যদি প্রতিদিন এক বা অন্য আকারে খাওয়া হয় তবে এটি ফ্যাটি লিভার তৈরিতে বাধা দেবে এবং প্রদাহ কমাবে।

৩. বিটেরুটের রস

লিভারের জন্য শক্তিশালী অস্ত্র বিটরুট পুষ্টিতে সমৃদ্ধ এবং লিভারকে ডিটক্সিফাইং করতে সহায়তা করে। বিটের রসে উপস্থিত বিটালাইন এবং নাইট্রেট রক্ত ​​সঞ্চালন উন্নত করে এবং লিভারের অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমায়। এই যৌগগুলো লিভার দ্বারা বিষাক্ত পদার্থ নির্মূল করতে এবং ক্ষতিগ্রস্ত কোষ নিরাময়ে সহায়তা করে। প্রতিদিন বিটের রস খেলে পিত্ত উৎপাদনও ভালো হয়, যা হজম এবং চর্বি বিপাকের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

৪. গ্রিন টি

আমরা সবাই গ্রিন টি-এর ওজন কমানোর উপকারিতা সম্পর্কে জানি, কিন্তু আমরা হয়তো যা জানি না তা হলো, এর মৃদু কিন্তু শক্তিশালী লিভারের স্বাস্থ্য উপকারিতা। এতে ক্যাটেচিন রয়েছে, এই্ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট লিভারে চর্বি জমা কমায় এবং লিভারের এনজাইমের মাত্রা স্বাভাবিক রাখে। বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছেন যে, যারা নিয়মিত গ্রিন টি পান করেন তাদের নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার রোগ হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। গ্রিন টি শক্তিও বাড়ায় এবং বিপাকক্রিয়ায় লিভারের কার্যকারিতা বজায় রাখে।

৫. কুমড়া

​কুমড়া বিটা-ক্যারোটিন, ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে পরিপূর্ণ যা লিভারের টিস্যুকে ক্ষতি থেকে রক্ষা করে। এর কোমল পুষ্টি উপাদান খাবার হজমে সাহায্য করে যার ফলে শরীর সহজেই বিষাক্ত পদার্থ বের করে দিতে পারে। কুমড়ায় থাকা ফাইবার কোলেস্টেরলের মাত্রাও কমায় এবং লিভারে চর্বি জমা কমায়। কুমড়া পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং ফোলেটের একটি ভালো উৎস, এগুলো সবই লিভার-বান্ধব পুষ্টি, যা লিভারের কার্যকারিতায় সহায়তা করে।

মন্তব্য

p
উপরে