× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য ইভেন্ট শিল্প উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ কী-কেন ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও ক্রিকেট প্রবাসী দক্ষিণ এশিয়া আমেরিকা ইউরোপ সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ শারীরিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্য যৌনতা-প্রজনন অন্যান্য উদ্ভাবন আফ্রিকা ফুটবল ভাষান্তর অন্যান্য ব্লকচেইন অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

জীবনযাপন
Men also get breast cancer
google_news print-icon

পুরুষও আক্রান্ত হন স্তন ক্যানসারে

পুরুষও-আক্রান্ত-হন-স্তন-ক্যানসারে
স্তন ক্যানসার নিয়ে নারীর তুলনায় পুরুষের সংকোচ অনেক বেশি। অনেকে এটি স্বীকারই করতে চান না। ফলে তাদের ডায়াগনোসিস করানোর ক্ষেত্রে বেশ জটিলতার মুখোমুখি হন চিকিৎসকেরা। সামাজিকভাবে হেয় হওয়ার ভয়ে পুরুষেরা স্তন ক্যানসারের লক্ষণগুলোকে উপেক্ষা করেন, ফলে অনেক সময়েই রোগটি ধরা পড়ে অনেক দেরিতে।

সাধারণের মাঝে প্রচলিত ধারণা হলো, স্তন ক্যানসারে একমাত্র নারীরাই আক্রান্ত হন। তবে এই ধারণা একেবারেই ঠিক নয়। প্রাণঘাতী স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হতে পারেন পুরুষও।

সংখ্যার দিক থেকে নারীর তুলনায় পুরুষের স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অবশ্য বেশ কম। তবে সব মিলিয়ে সংখ্যাটি একেবারে নগণ্যও নয়। ভারতের হিন্দুস্তান টাইমসের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ ধরনের ক্যানসারে আক্রান্ত মোট রোগীর ১-২ শতাংশ পুরুষ।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্তন ক্যানসার নিয়ে নারীর তুলনায় পুরুষের সংকোচ অনেক বেশি। অনেকে এটি স্বীকারই করতে চান না। ফলে তাদের ডায়াগনোসিস করানোর ক্ষেত্রে বেশ জটিলতার মুখোমুখি হন চিকিৎসকেরা। সামাজিকভাবে হেয় হওয়ার ভয়ে পুরুষেরা স্তন ক্যানসারের লক্ষণগুলোকে উপেক্ষা করেন, ফলে অনেক সময়েই রোগটি ধরা পড়ে অনেক দেরিতে। অত্যন্ত জটিল অবস্থায় পৌঁছে যাওয়ায় নারীর তুলনায় স্তন ক্যানসার আক্রান্ত পুরুষের মৃত্যুঝুঁকি তাই বেশি।

মুম্বাইয়ের ওকহার্ট হসপিটালের কনসালট্যান্ট ব্রেস্ট অ্যান্ড লেপারেস্কোপিক সার্জন ডা. অদিতি আগারওয়াল এ বিষয়ে বলেন, ‘ক্লিনেফেল্টার সিনড্রমে ভোগা পুরুষদের (যারা একটি বাড়তি এক্স ক্রোমোসম নিয়ে জন্মান) স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। কারণ তাদের দেহে অ্যাস্ট্রোজেনের পরিমাণ বেশি থাকে এবং তারা গাইনিকোমাস্টিয়ায় ভোগেন। এতে করে পুরুষের স্তন টিস্যুর সংখ্যা বৃদ্ধি পায়।’

স্তন ক্যানসারের শুরুটা হয় বুকের দুগ্ধনালি ও দুধ তৈরিকারী গ্ল্যান্ড সমৃদ্ধ লবিউলে। বয়ঃসন্ধি পর্যন্ত স্তনবৃন্ত ও অ্যারিওলার নিচে পুরুষ ও নারী স্তনের টিস্যুর কয়েকটি নালি থাকে। বয়ঃসন্ধিকালে নারী দেহে অ্যাস্ট্রোজেনের মতো হরমোনের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। ফলে নালির সংখ্যা বাড়ে ও লবিউল তৈরি হয়। ডা. আগারওয়ালের মতে, পুরুষের মধ্যে এই হরমোনগুলোর নিম্নমাত্রার কারণে, নালি ও লবিউল কম তৈরি হয় এবং চর্বিযুক্ত টিস্যু থাকে।

নারীর ক্ষেত্রে ১২ বছর বয়সের আগে পিরিয়ড শুরু হওয়া ও ৫৫ বছর বয়সের পর মেনোপজ হওয়া, বেশি বয়সে প্রথম সন্তান জন্ম দেয়া বা কখনও সন্তানহীনতা স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়।

ডক্টর আগারওয়াল বলেন, পুরুষ ও নারী উভয়ের ক্ষেত্রেই স্তন ক্যানসারের সাধারণ কারণ হচ্ছে বয়স ও জিনগত বৈশিষ্ট্য। তার মতে, অন্যান্য সাধারণ কারণ- যেমন ধূমপান, রেডিয়েশন থেরাপি, অ্যালকোহল ও ব্যায়ামের অভাবকে ব্যক্তিগতভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে।

পুরুষ ও নারী উভয়ের ক্ষেত্রে প্রধান লক্ষণ

নারী ও পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রেই স্তন ক্যানসারের লক্ষণগুলো হচ্ছে স্তনে গুটলি বা চাকা, এক বা দুটি স্তন ফুলে যাওয়া, নরম বা ব্যথা অনুভব করা, স্তন থেকে তরল নিঃসরণ হওয়া, স্তনবৃন্তের চারদিকে চুলকানো, স্তনবৃন্ত উলটে যাওয়া বা ভেতরে ঢুকে যাওয়া, স্তনের চামড়া মোটা হয়ে যাওয়া ও ব্যথা করা।

ডা. আগারওয়াল বলেন, ‘পুরুষের ক্ষেত্রে স্তন ছোট থাকে বলে ক্যানসারেরও প্রাথমিক লক্ষণ ছোট হয়, কিন্তু তা আশপাশের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।’

নারী ও পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রেই ম্যামোগ্রাম ও বায়োপসি করে কোনো সন্দেহজনক গুটি বা চাকা ক্যানসারপ্রবণ কি না, তা নির্ণয় করা সম্ভব।

স্তন ক্যানসারের চিকিৎসা সম্পর্কে ডা. আগারওয়াল বলেন, ‘ক্যানসারের ধরন, পর্যায় ও জায়গা নিশ্চিত করার পর চিকিৎসক আপনার চিকিৎসা নির্ধারণ করবেন। আপনাকে মাস্টেকটোমি বা লাম্পেকটোমি করার পরামর্শ দেয়া হতে পারে।’

পুরুষের ক্ষেত্রে এ ধরনের রোগ এড়াতে জীবনযাত্রায় বদল আনার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। প্রতিদিন ব্যায়াম করা, ওজন না বাড়ানো ও সবুজ শাকসবজি, ফল, বাদাম, ডাল ও সিরিয়ালযুক্ত সুষম খাবার খাওয়া উচিত। ১৮ বছর বয়স থেকেই নিয়মিত নিজের স্তন পরীক্ষারও পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।

আরও পড়ুন:
জরায়ুমুখের ক্যানসারের ঝুঁকি ৮৭% কমায় এইচপিভি টিকা
ব্রেস্ট ক্যানসার রোধে যুক্তরাষ্ট্রে টিকার ট্রায়াল
পরমাণু প্রযুক্তিতে ২০ হাজার টাকায় ক্যানসার নির্ণয়
জরায়ু ক্যানসারে দেশে মৃত্যুহার বেশি কেন
৯ বছরে ৬ বার পরাজিত ক্যানসার

মন্তব্য

আরও পড়ুন

জীবনযাপন
Female Dog Handler in Police

পুলিশে নারী ডগ হ্যান্ডলার

পুলিশে নারী ডগ হ্যান্ডলার এপিবিএনে যুক্ত হয়েছেন নারী ডগ হ্যান্ডলার। ছবি: নিউজবাংলা
সাতজন নারী পুলিশ সদস্য বেসিক কেনাইন হ্যান্ডলার ট্রেনিং কোর্সে অংশ নিয়ে নতুন যুগের সূচনা করেছেন।

এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটলিয়নে (এপিবিএন) দেশে প্রথমবারের মতো নারী পুলিশ সদস্যদের ডগ হ্যান্ডলার হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে।

সাতজন নারী পুলিশ সদস্য বেসিক কেনাইন হ্যান্ডলার ট্রেনিং কোর্সে অংশ নিয়ে নতুন এ যুগের সূচনা করেছেন।

নারীদের প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করেছেন যুক্তরাজ্য ও নিউজিল্যান্ডের পেশাদার ডগ স্কোয়াড প্রশিক্ষক টনি ব্রাইসন ও মেলিন ব্রডউইক।

ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস ও এয়ারপোর্ট এপিবিএনের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এ প্রশিক্ষণ কর্মসূচিটি নারী পুলিশ সদস্যরা সফলতার সঙ্গে শেষ করেছেন।

প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের হাতে বৃহস্পতিবার সকালে সমাপনী সনদ তুলে দেন এয়ারপোর্ট এপিবিএন অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি তোফায়েল আহম্মদ, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম ও ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা।

এপিবিএনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) মোহাম্মদ জিয়াউল বলেন, ‘২০১৭ সালে দুইটি ল্যাবরেডর, দুইটি জার্মান শেফার্ড ও চারটি বেলজিয়ান ম্যালিনয়েস জাতের কুকুর এবং ১৬ জন হ্যান্ডলার নিয়ে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের কেনাইন ইউনিট যাত্রা শুরু করে। শুধু বিমানবন্দরের নিরাপত্তা রক্ষায় ডেডিকেটেড এই ডগ স্কোয়াড বিমানবন্দরে আসা যাত্রী, সহযাত্রী এবং তাদের ব্যাগেজ স্ক্রিনিংয়ে ব্যবহৃত হচ্ছে। এ ছাড়াও ক্যানোপি নিরাপত্তা, পার্কিং এরিয়া এবং যানবাহনে বিস্ফোরক পদার্থের উপস্থিতি সার্চ, ব্যাগেজ বেল্ট এলাকার নিরাপত্তা রক্ষা এবং ভিভিআইপি নিরাপত্তা রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছে।’

এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের ডগ স্কোয়াডে ২০২৫ সালের মধ্যে কুকুরের সংখ্যা ৬৬টি করার পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে বলে জানান জিয়াউল হক।

তিনি বলেন, ‘তৃতীয় টার্মিনালের সম্ভাব্য বিশাল অপারেশনের কথা মাথায় রেখে এই পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। ২০২৩ সালের মধ্যে ব্রিটেন এবং নেদারল্যান্ডস থেকে আরও অন্তত ১৫টি ডগ এই স্কোয়াডে যুক্ত হবে। বর্তমানে ভগগুলো এক্সপ্লোসিভ সার্চের জন্য প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হলেও অচিরেই নারকোটিকস ডগ, ট্রাকিং ডগ, কারেন্সি শিফিং ডগও এই বহরে যুক্ত হবে। এ সকল ট্রেনিংয়ে কারিগরি ও লজিস্টিক সাপোর্ট দিয়ে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নকে সহায়তা করবে ঢাকার ইউএস অ্যাম্বাসি।’

পরিপূর্ণ ডগ স্কোয়াড বিমানবন্দরে নাশকতা, মাদক চোরাচালান, স্বর্ণ চোরাচালন, মুদ্রা পাচার রোধে অসামান্য ভূমিকা রাখতে পারে বলে জানান অনুষ্ঠানে উপস্থিত আলোচকরা।

মন্তব্য

জীবনযাপন
Cowcart procession on Womens Day

নারী দিবসে গরুর গাড়ির শোভাযাত্রা

নারী দিবসে গরুর গাড়ির শোভাযাত্রা আন্তর্জাতিক নারী দিবসে বুধবার যশোরে বের হয় শোভাযাত্রা। ছবি: নিউজবাংলা
গরুর গাড়ির পেছনে পেছনে নারীরা নিজ নিজ সংগঠনের ব্যানারসহ অধিকার সংবলিত বিভিন্ন প্যানা নিয়ে অংশ নেন। শোভাযাত্রাটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পুনরায় কালেক্টরেট চত্বরে গিয়ে শেষ হয়।

আন্তর্জাতিক নারী দিবসে যশোরে ব্যতিক্রমী গরুর গাড়ির শোভাযাত্রা বের হয়েছে। বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় জেলা সদরের কালেক্টরেট চত্বরে শোভাযাত্রা উদ্বোধন করেন যশোরের জেলা প্রশাসক মো. তমিজুল ইসলাম খান।

জেলা প্রশাসন ও জেলা মহিলা অধিদপ্তর আয়োজিত শোভাযাত্রায় অংশ নেন বিভিন্ন নারী সংগঠনের সদস্যরা। শোভাযাত্রাটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পুনরায় কালেক্টরেট চত্বরে গিয়ে শেষ হয়।

গরুর গাড়ির পেছনে পেছনে নারীরা নিজ নিজ সংগঠনের ব্যানারসহ অধিকার সংবলিত বিভিন্ন প্যানা নিয়ে অংশ নেন। পরে কালেক্টরেট সম্মেলনের অমিত্রাক্ষর সভাকক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

আরও পড়ুন:
নারীর যথাযথ কাজের সুযোগ আজও হয়নি
ট্রান্সজেন্ডার নারীদের নিয়ে নারী দিবসের আয়োজন
নারী নিরাপত্তা ও পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের সম্মান জানাল আইইউবি
নারী দিবসে বিনামূল্যে মেডিক্যাল ক্যাম্প
মেয়েদের ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার বানিয়ে সংবর্ধনা পেলেন গ্রামপুলিশ মা

মন্তব্য

জীবনযাপন
Sabina has won the battle of life by leaving the odds behind

প্রতিকূলতা পেছনে ফেলে জীবনযুদ্ধে জয়ী সাবিনা 

 প্রতিকূলতা পেছনে ফেলে জীবনযুদ্ধে জয়ী সাবিনা  সাবিনা ইয়াসমিন। কোলাজ: নিউজবাংলা
নওগাঁ সদর উপজেলার ইউএনও মির্জা ইমাম উদ্দিন বলেন, ‘সাবিনা ইয়াসমিন জীবনের সব প্রতিবন্ধকতা দূর করে বর্তমানে অদম্য একজন নারী হিসেবে নিজেকে দাঁড় করিয়েছেন এই সমাজে। তিনি নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে প্রতিকূলতাকে জয় করে স্বাবলম্বী নারী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছেন।’

নওগাঁর সদর উপজেলার হাপানিয়া ইউনিয়নের আবাদপুর পূর্বপাড়া গ্রামের সাবিনা ইয়াসমিন তার জীবনের সব প্রতিবন্ধকতা দূর করে বর্তমানে তিনি একজন সফল নারী। হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগল পালন ও বিভিন্ন রকম সবজি চাষ করে তিনি তার ভাগ্য পরিবর্তন করেছেন। সন্তানদের সুশিক্ষিত করে গড়ে তোলাই এখন তার স্বপ্ন।

ইতোমধ্যে সাবিনা ইয়াসমিন ২০২২ সালে ‘জয়িতা অন্বেষণ বাংলাদেশ কার্যক্রমের আওতায়’ উপজেলা পর্যায়ে অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জনকারী ক্যাটাগরিতে পেয়েছেন জয়ীতা সবংর্ধনা।

১২ বছর আগে স্বামী মারা যাওয়ার পর নিঃস্ব হয়ে পড়েছিলেন দুই সন্তানের মা ৩৫ বছর বয়সী সাবিনা ইয়াসমিন। ছেলে ও মেয়েকে নিয়ে শুরু হয় তার টিকে থাকার সংগ্রাম। হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগল পালন ও বিভিন্ন সবজি চাষ শুরু করেন তিনি। আস্তে আস্তে ঘুরে দাঁড়াতে থাকে তার জীবনযুদ্ধের চাকা। তিনি এখন স্বাবলম্বী। তার সাফল্য দেখে স্থানীয়রাও খুশি।

সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ‘আমার স্বামী যখন মারা যায় তখন আমার ছেলে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ত আর মেয়ের বয়স ছিল পাঁচ মাস। স্বামীর চিকিৎসা বাবদ রেখে যাওয়া প্রায় ১০ লাখ টাকা ঋণ। স্বামীর মৃত্যুর পর খুব অভাব-অনটন ছিল সংসারে। কীভাবে সংসার চালাবো এবং ছেলে-মেয়েদের মানুষ করবো এই নিয়ে খুব চিন্তা হত। কি করবো, না করবো কিছু ভেবে পাচ্ছিলাম না। সেই সময় পাশে এসে কেউ দাঁড়ায়নি। বরং অনেকে বলত এত কম বয়সে স্বামীর মৃত্যুর হয়েছে, হয়তো কোথাও চলে যাবো।

‘এত টাকা ঋণ ছিল যে, কেউ নতুন করে আর টাকা ধার দিতে চাইতো না। পরবর্তী সময়ে মন থেকে সব হতাশা ঝেড়ে ফেলে, ছেলে-মেয়েদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে, জীবনের চরম সত্যটাকে মেনে নিয়ে স্বামীর রেখে যাওয়া একটি সোনার চেইন বিক্রি করে দুটি গরু পালন শুরু করি। তিন মাস পর দুটি গরু থেকে প্রায় ১৬ হাজার টাকা লাভ হয়। পরে আরও তিনটি গরু পালনের পাশাপাশি হাঁস-মুরগিসহ বিভিন্ন রকম সবজির চাষ শুরু করি । হাঁস-মুরগির ডিম ও সবজি বিক্রি করে সংসার চলতো। এভাবেই আস্তে আস্তে সংসারে কিছুটা আর্থিক সচ্ছলতা ফিরে।’

সাবিনা ইয়াসমিন আরও বলেন, ‘প্রথমে স্বামীর চিকিৎসা বাবদ বাইরে থেকে ঋণ নেয়া দুই লাখ টাকা পরিশোধ করি। এরপর আস্তে আস্তে আমার স্বামীর তিন বিঘা জমি চিকিৎসার জন্য বন্ধক রাখা হয়েছিল, সেসব জমি ফেরত নিয়েছি। বর্তমানে আরও ৪ বিঘা জমি নিজে বন্ধক নিয়েছি। সংসার চালানো থেকে শুরু করে ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনাসহ সব খরচ বাবদ বছরে প্রায় দুই লাখ টাকা আয় হয়। বলতে গেলে আমি একা একাই স্বাবলম্বী হয়েছি। এখন এলাকার মানুষও সহযোগিতা করে।’

জীবনযুদ্ধে জয়ী এই নারী বলেন, ‘আমার আশা-ভরসা ও নিঃসঙ্গ জীবনে দুই ছেলে-মেয়েই ছিল সব। নিজের সুখকে বিসর্জন দিয়ে সন্তানদের ভবিষ্যৎ গড়তে এবং কারও কাছে যেন হাত পাততে না হয়, সেজন্য পরিশ্রম করে এখন এ পর্যায়ে এসেছি। বর্তমানে ছেলে নওগাঁ সরকারি কলেজে ও মেয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়াশোনা করে। ছেলে-মেয়েরা পড়াশোনা শেষ করে সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে ভালো কোনো সরকারি চাকরি করবে এমনটাই প্রত্যাশা।’

স্থানীয় বাসিন্দা সহিদা বেগম বলেন, ‘স্বামীর মৃত্যুর পর অনেক কষ্ট করেছেন সাবিনা। অনেক কষ্ট করে হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগল পালনের পাশাপাশি বিভিন্ন সবজি চাষ করতেন। এসব করেই স্বামীর বন্ধক রাখা জমি ফেরত নিয়েছেন। আবার অন্যের জমিও বন্ধক নিয়েছেন। এখন স্বাবলম্বী হয়ে ছেলে-মেয়েদের নিয়ে ভালোভাবে চলছে তার সংসার।’

স্থানীয় আরেক বাসিন্দা মতিউর রহমান বলেন, ‘আমার চাচা মারা যাওয়ার পর চাচি দুইটা ছেলে-মেয়েকে নিয়ে অনেক কষ্ট করেছে। এরপর তিনি তার পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে এই জায়গায় এসেছেন।’

নওগাঁ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মির্জা ইমাম উদ্দিন বলেন, ‘সাবিনা ইয়াসমিন জীবনের সব প্রতিবন্ধকতা দূর করে বর্তমানে অদম্য একজন নারী হিসেবে নিজেকে দাঁড় করিয়েছেন এই সমাজে। তিনি নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে প্রতিকূলতাকে জয় করে স্বাবলম্বী নারী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘ইতোমধ্যে সাবিনা ইয়াসমিনকে ‘অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জনকারী’ ক্যাটাগরিতে উপজেলা পর্যায়ে জয়ীতা সবংর্ধনাও দেয়া হয়েছে। তার যদি কোনোরকম সাহায্য সহযোগিতা প্রয়োজন হয় আমাদেরকে জানালে আমাদের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতার চেষ্টা করা হবে।’

আরও পড়ুন:
কর্মক্ষেত্রে লিঙ্গ-বৈষম্য দূর করার তাগিদ
শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে সুপার সিক্সে বাংলাদেশ
অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে বিশ্বকাপ শুরু বাংলাদেশের
সংসারে সবচেয়ে কঠিন কাজ নারীরাই করেন: দীপু মনি
নারীত্ব গোপন করে পুরুষের দুর্বিষহ জীবন জেনেছিলেন যে নোরাহ

মন্তব্য

জীবনযাপন
Digital technology and innovation will eliminate gender discrimination

‘ডিজিটাল প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন, জেন্ডার বৈষম্য করবে নিরসন’

‘ডিজিটাল প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন, জেন্ডার বৈষম্য করবে নিরসন’ আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে রাজধানীর শহীদ মিনারে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করে আমরাই পারি পারিবারিক নির্যাতন প্রতিরোধ জোট। ফাইল ছবি
আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এ উপলক্ষে বুধবার দুপুর আড়াইটায় এক শোভাযাত্রার আয়োজন করেছে। শোভাযাত্রাটি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে শুরু হয়ে বাংলাদেশ শিশু একাডেমি প্রাঙ্গণে এসে শেষ হবে।

‘ডিজিটাল প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন, জেন্ডার বৈষম্য করবে নিরসন’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাংলাদেশেও বুধবার উদযাপিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক নারী দিবস। এ দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আলাদা আলাদা বাণী দিয়েছেন। এ বাণীতে তারা বিশ্বের সব নারীকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন।

আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এ উপলক্ষে বুধবার দুপুর আড়াইটায় এক শোভাযাত্রার আয়োজন করেছে। শোভাযাত্রাটি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে শুরু হয়ে বাংলাদেশ শিশু একাডেমি প্রাঙ্গণে এসে শেষ হবে।

মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, পবিত্র শবে বরাত উপলক্ষে বুধবার সরকারি ছুটি থাকায় এ বছর নির্ধারিত সেমিনারটি পরবর্তীতে অনুষ্ঠিত হবে। খবর বাসস।

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মঙ্গলবার জানানো হয়, বাংলাদেশে নারী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত সংগঠনগুলোর জাতীয় মোর্চা সামাজিক প্রতিরোধ কমিটির উদ্যোগে আয়োজন করা হয়েছে শোভাযাত্রা, সমাবেশ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বৃহস্পতিবার দুপুর ২টা ৩০ মিনিটের দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এটি অনুষ্ঠিত হবে। আন্তর্জাতিক নারী দিবসে সামাজিক প্রতিরোধ কমিটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘ডিজিটাল বিশ্ব হোক সবার নারীর: অধিকার সুরক্ষায় ও সহিংসতা মোকাবিলায় চাই মানবিক দৃষ্টিভঙ্গিসম্পন্ন বৈষম্যহীন সৃজনশীল প্রযুক্তি।’

দিবসটি উপলক্ষে বিনা মূল্যে নারীদের ‘স্তন ও জরায়ুমুখের ক্যান্সার’ পরীক্ষা ও সচেতনতামূলক আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে হেলথ এ্যান্ড হোপ হাসপাতাল। বুধবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত পান্থপথে হেলথ এ্যান্ড হোপ হাসপাতালে এটি অনুষ্ঠিত হবে।

জাতীয় প্রেসক্লাব আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে আয়োজন করছে বিশেষ আলোচনা অনুষ্ঠান। বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে এটি অনুষ্ঠিত হবে।

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি দিবসটি উপলক্ষে দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে সকাল ১০টায় শোভাযাত্রা, নারী দিবসের বার্ষিক সংকলন ‘কন্ঠস্বর’ এর মোড়ক উন্মোচন এবং বেলা ১১টায় আলোচনা সভা।

এসোসিয়েশন অফ ডেভেলপমেন্ট এজেন্সিজ ইন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক কেন্দ্র এবং বাংলাদেশ মানবাধিকার সাংবাদিক ফোরাম আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে আয়োজন করেছে শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভা। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় জাতীয় প্রেসক্লাবে “প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনীতে সম্ভাবনার বাংলাদেশ গড়ি, নারী-পুরুষের সমতা, সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্য বজায় রাখি” শীর্ষক এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।

আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে সাংস্কৃতিক অঙ্গনেও রয়েছে নানা আয়োজন। নাট্য সংগঠন স্বপ্নদল হেলেন কেলার সম্মাননা ও বিশেষ নাটক মঞ্চায়নের উদ্যোগ নিয়েছে। বুধবার সন্ধ্যা সাতটায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির স্টুডিও থিয়েটারে মঞ্চায়িত হবে হেলেন কেলারের জীবন-কর্ম-স্বপ্ন-সংগ্রাম ও দর্শনভিত্তিক বিশেষ নাটক ‘ হেলেন কেলার’। প্রদর্শনীর আগে নিবেদিতপ্রাণ নাট্যজন জয়িতা মহলানবীশকে স্বপ্নদলের ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবস সম্মাননা ২০২৩’ প্রদান করা হবে।

২০১২ সাল থেকে প্রতিবছর আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে ‘স্বপ্নদল’ নারী নাট্যকর্মীদের এ সম্মাননা দিয়ে আসছে। স্বপ্নদলের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।

আরও পড়ুন:
শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে সুপার সিক্সে বাংলাদেশ
অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে বিশ্বকাপ শুরু বাংলাদেশের
সংসারে সবচেয়ে কঠিন কাজ নারীরাই করেন: দীপু মনি
নারীত্ব গোপন করে পুরুষের দুর্বিষহ জীবন জেনেছিলেন যে নোরাহ
নারী যুব বিশ্বকাপের দল ঘোষণা

মন্তব্য

জীবনযাপন
Despite the law womens protection is not being ensured

আইন থাকা সত্ত্বেও নারীর সুরক্ষা নিশ্চিত সম্ভব হচ্ছে না

আইন থাকা সত্ত্বেও নারীর সুরক্ষা নিশ্চিত সম্ভব হচ্ছে না নারীদের অধিকার ও প্রাসঙ্গিক আইন শিরোনামে গোলটেবিল বৈঠক। ছবি: নিউজবাংলা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. নাইমা হক বলেন, ‘পারিবারিক আদালতের বিচারকদের কাউন্সেলিং প্রশিক্ষণ দেয়া প্রয়োজন রয়েছে। কোনো দম্পতি যখন তালাকের আবেদন করেন, তখন তাদের সন্তান থাকলে তাকে কার জিম্মায় দেয়া উচিত, সামাজিক ও মানসিক পরিস্থিতি কী এগুলো বোঝার জন্য বিচারকদের এ ধরনের প্রশিক্ষণের প্রয়োজন রয়েছে। একইসঙ্গে নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় সচেতনতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।’

পর্যাপ্ত আইন থাকা সত্ত্বেও দেশে নারী অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং সুরক্ষা নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না। শুধু আইনের ওপর নির্ভর করাই নয়, নারীদের তাদের অধিকারের বিষয়ে সচেতন করাটাও জরুরি বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে ফাউন্ডেশন ফর ল এ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (ফ্ল্যাড) ও বাংলা ট্রিবিউনের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এসব কথা বলেন। নারীদের অধিকার ও প্রাসঙ্গিক আইন (স্বাধীনতাত্তোর ৫১ বছরের মূল্যায়ন) শিরোনামে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. নাইমা হক বলেন, ‘পারিবারিক আদালতের বিচারকদের কাউন্সেলিং প্রশিক্ষণ দেয়া প্রয়োজন রয়েছে। কোনো দম্পতি যখন তালাকের আবেদন করেন, তখন তাদের সন্তান থাকলে তাকে কার জিম্মায় দেয়া উচিত, সামাজিক ও মানসিক পরিস্থিতি কী এগুলো বোঝার জন্য বিচারকদের এ ধরনের প্রশিক্ষণের প্রয়োজন রয়েছে। একইসঙ্গে নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় সচেতনতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।’

অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র জেলা জজ ড. মো. শাহজাহান বলেন, ‘বিচারের ক্ষেত্রে বিলম্বের কারণে নারীরা বেশি ভুক্তভোগী হন।’

তিনি আরও বলেন, ‘নারী অধিকারের বিষয়ে সচেতন হতে হলে শিক্ষার বিষয়ে জোর দিতে হবে। তবে সেটি যে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা হতে হবে তা কিন্তু না। এছাড়াও এক্সেস টু জাস্টিস নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি আর্থিক সক্ষমতা থাকলে বিচারিক সিস্টেমে আমরা প্রবেশ করতে পারবো। তবে সবকিছুর মূলে আমাদের সচেতন হতে হবে। পত্র-পত্রিকা পড়ার অভ্যাস করতে হবে।’

সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট ফাওজিয়া করিম ফিরোজ বলেন, ‘স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে আমরা অনেক আইন পেয়েছি। মানবপাচার, পারিবারিক সহিংসতা নিরোধসহ প্রভৃতি বিষয়ে অনেক আইন এসেছে। আইনের আওতায় এসেও আমাদের নারী অধিকারের বিষয়ে যতটুকু অর্জন হওয়ার কথা ছিল তা কিন্তু আমরা পাইনি। দেখতে পাচ্ছি সচেতনতার অভাবে অনেকাংশে আমাদের নারীদের অর্জনের জায়গাটিও দিন দিন কর্তন করা হচ্ছে।

‘যৌন হয়রানি রোধে একটি গাইডলাইন ছিল যা আইনে রূপান্তর করা হয়নি। এভাবে অনেক জায়গা রয়েছে যেখানে আমাদের কাজ করার রয়েছে। তাহলেই হয়তো আমরা নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা সম্ভব করতে পারবো।’

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমেদ বলেন, ‘আইন রয়েছে ঠিক। কিন্তু আমরা আমাদের বাবা-ভাই-ছেলেদের থেকেই উপযুক্ত সম্মান পাই না। তাই নারীর প্রতি বৈষম্য হয়তো পুরোপুরি দূর করতে পারবো না। কিন্তু কমিয়ে আনতে পারবো। এজন্য সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। তাই আসুন ঘর থেকেই এই সচেতনতা বৃদ্ধির কাজ শুরু করি।’

বাংলা ট্রিবিউনের বিশেষ প্রতিবেদক উদিসা ইসলাম বলেন, ‘মাঠপর্যায়ে কাজ করার সময় আমরা নির্যাতিত নারীদের দেখতে পাই। আইন আছে বাস্তবায়ন নেই, এ কথাটা সবসময় শুনতে পাই। আমার মনে হয়, এসব বিষয়ে আমাদের করণীয়, সম্ভবপর কাজগুলো কী সে বিষয়ে একসঙ্গে বসে সব ঠিক করা। সেক্ষেত্রে ফ্ল্যাডের সঙ্গে গণমাধ্যমের যুক্ত হওয়ার বিষয়টি সবার কাছে ছড়িয়ে দিতে সহায়ক হবে বলে মনে করছি।’

ফ্লাডের পরিচালক ব্যারিস্টার কাজী মারুফুল আলমের সঞ্চালনা ও ফ্লাডের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ফাওজিয়া করিম ফিরোজের সভাপতিত্বে এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মলয় সাহা। এ সময় অনুষ্ঠানে মানবাধিকার কর্মী ও আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন:
অস্ট্রেলিয়ার হ্যাটট্রিক শিরোপা জয়
‘ওয়াও ফেস্টিভ্যাল বাংলাদেশ’-এর উদ্বোধন শুক্রবার
রিভলবারের বাট দিয়ে নারীর মাথা ফাটালেন বিচারকের দেহরক্ষী
কর্মক্ষেত্রে লিঙ্গ-বৈষম্য দূর করার তাগিদ
শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে সুপার সিক্সে বাংলাদেশ

মন্তব্য

জীবনযাপন
44 women and children were raped in February

ফেব্রুয়ারিতে ধর্ষণের শিকার ৪৪ নারী-শিশু

ফেব্রুয়ারিতে ধর্ষণের শিকার ৪৪ নারী-শিশু প্রতীকী ছবি।
মহিলা পরিষদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফেব্রুয়ারিতে সারাদেশে ২৩২ জন নারী ও কন্যাশিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে। ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৪৪ জন। তাদের মধ্যে দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৭ জন। এক কন্যাশিশুকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে সারাদেশে ২৩২ নারী ও কন্যা শিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে। আর ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৪৪ নারী, যাদের মধ্যে ২৪টি কন্যাশিশু রয়েছে।

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় লিগ্যাল এইড উপ-পরিষদের এক প্রতিবেদনে মঙ্গলবার এমন তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। দেশের ১৩টি দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফেব্রুয়ারি মাসে সারাদেশে ২৩২ জন নারী ও কন্যা নির্যাতনের শিকার হয়েছে। তাদের মধ্যে ১১০ জন কন্যা এবং ১২২ জন নারী। সারা দেশে গত এক মাসে ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৪৪ নারী ও কন্যা। ধর্ষণের শিকার এসব নারীর মধ্যে দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৭ জন। এক কন্যাশিশুকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। এছাড়া ১১ জনকে ধর্ষণের চেষ্টা চালানো হয়েছে।

নিপীড়নের বিষয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফেব্রুয়ারিতে দেশে যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছে ১৬ নারী। উত্ত্যক্তের সম্মুখীন হয়েছে ১১ কন্যাশিশু। আর উত্ত্যক্তের কারণে আত্মহত্যা করেছে ২ জন। নারী ও কন্যাশিশু পাচারের ঘটনা ঘটেছে ৩টি। যৌতুকের কারণে নির্যাতনের শিকার হয়েছে ৭ জন। তাদের মধ্যে ৩ জনকে যৌতুক না দেয়ায় হত্যা করা হয়েছে। শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছে ১৪ নারী।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত এক মাসে পারিবারিক সহিংসতার ঘটনায় শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছে ৩ নারী। ২ জন গৃহকর্মী হত্যার ঘটনা ঘটেছে। বিভিন্ন কারণে ৪০ জন নারীকে হত্যা করা হয়েছে। রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে ১০ নারীর।

এসবের বাইরে গত ফেব্রুয়ারি মাসে ৮ কন্যাসহ ২৪ জন আত্মহত্যা করেছে। অপহরণের শিকার হয়েছে ১০ কন্যাশিশু। ৫ নারী সাইবার অপরাধের শিকার হয়েছে। বাল্যবিয়ের ঘটনা ঘটেছে ১০টি। এর মধ্যে ৮টি প্রতিরোধ করা হয়েছে। এছাড়া ৫ জন নারী বিভিন্নভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছে বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

আরও পড়ুন:
নারী সহকর্মীকে ধর্ষণ মামলায় কনস্টেবল রিমান্ডে
ধর্ষণ মামলায় জামিন নাকচ, সাবেক এমপি আরজু কারাগারে
শিশু ধর্ষণের অভিযোগে সাবেক ইউপি সদস্য গ্রেপ্তার
আবৃত্তির জন্য ডেকে নিয়ে ‘ধর্ষণ’, প্রশিক্ষক গ্রেপ্তার
কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, হোতা গ্রেপ্তার

মন্তব্য

জীবনযাপন
Seattle was the first US city to ban segregation

বর্ণবৈষম্য নিষিদ্ধকারী যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম শহর সিয়াটল

বর্ণবৈষম্য নিষিদ্ধকারী যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম শহর সিয়াটল যুক্তরাষ্ট্রে বর্ণবৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ। ছবি: টুইটার
শহরের বৈষম্যবিরোধী নীতিতে বর্ণবৈষম্যকে রাখার প্রস্তাবটি উত্থাপন করেছিলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত আমেরিকান রাজনীতিক ও অর্থনীতিক কেশামা সাওয়ান্ত। উচ্চ বর্ণের এ হিন্দু রাজনীতিকের প্রস্তাবটি ৬-১ ভোটে পাস করে সিয়াটল সিটি কাউন্সিল।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম শহর হিসেবে বর্ণবৈষম্য নিষিদ্ধ করেছে সিয়াটল।

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সিটি কাউন্সিল এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব পাস করে।

এনডিটিভির প্রতিবেদনে জানানো হয়, শহরের বৈষম্যবিরোধী নীতিতে বর্ণবৈষম্যকে রাখার প্রস্তাবটি উত্থাপন করেছিলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত আমেরিকান রাজনীতিক ও অর্থনীতিক কেশামা সাওয়ান্ত। উচ্চ বর্ণের এ হিন্দু রাজনীতিকের প্রস্তাবটি ৬-১ ভোটে পাস করে সিয়াটল সিটি কাউন্সিল।

এ ভোটের ফল যুক্তরাষ্ট্রে বর্ণবৈষম্য ইস্যুতে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব রাখতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

প্রস্তাব পাস হওয়ার পর সিটি কাউন্সিল সদস্য কেশামা সাওয়ান্ত জানান, তাদের আন্দোলনের ফলে যুক্তরাষ্ট্রে প্রথমবারের মতো বর্ণবৈষম্যবিরোধী প্রস্তাব পাস হয়েছে।

এ আন্দোলনের বিজয়কে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ছড়িয়ে দিতে নতুন আন্দোলন গড়ে তোলা দরকার বলে মত দেন তিনি।

প্রস্তাবটি নিয়ে ভোটাভুটির কয়েক ঘণ্টা আগে যুক্তরাষ্ট্রের আইনসভা কংগ্রেসের ভারতীয় আমেরিকান আইনপ্রণেতা প্রমিলা জয়পাল বর্ণবৈষম্যের বিপক্ষে তার অবস্থান ব্যক্ত করেন।

তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের কোনো সমাজে বর্ণবৈষম্যের স্থান নেই। এ কারণে কিছু কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় একে নিষিদ্ধ করেছে।’

সিয়াটলের কাউন্সিলে প্রস্তাবটি উত্থাপনে মুখ্য ভূমিকা রাখে বর্ণবৈষম্য নিয়ে কাজ করা সংস্থা ইকুয়ালিটি ল্যাবস।

প্রস্তাব পক্ষে যাওয়ার পর সংস্থাটির পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘সিয়াটলে দেশে (যুক্তরাষ্ট্র) প্রথমবারের মতো বর্ণবৈষম্য নিষিদ্ধ হওয়ায় ঘৃণার বিপরীতে ভালোবাসার জয় হয়েছে।’

আরও পড়ুন:
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে লড়বেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত রিপাবলিকান হ্যালি
যুক্তরাষ্ট্রে ইউনিভার্সিটিতে বন্দুক হামলা, নিহত ৩
উড়ন্ত বস্তু ভূপাতিত করেই চলছে যুক্তরাষ্ট্র
এবার কানাডার আকাশ থেকে বেলনাকার বস্তু ভূপাতিত
এবার গাড়ি আকৃতির বস্তু ভূপাতিত যুক্তরাষ্ট্রের

মন্তব্য

p
উপরে