× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য ইভেন্ট শিল্প উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ কী-কেন ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও ক্রিকেট প্রবাসী দক্ষিণ এশিয়া আমেরিকা ইউরোপ সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ শারীরিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্য যৌনতা-প্রজনন অন্যান্য উদ্ভাবন আফ্রিকা ফুটবল ভাষান্তর অন্যান্য ব্লকচেইন অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

কিড জোন
Happy and sad
google_news print-icon

সুখু আর দুখু

সুখু-আর-দুখু
বুড়ি পেঁটরার ঘর দেখাইয়া দিল। য-ত বড় পারিল, এ-ই মস্ত এক পেঁটরা মাথায় করিয়া সুখু বিড় বিড় করিয়া চৌদ্দ বুড়ির মুণ্ডু খাইতে খাইতে রূপে দিক চমকাইয়া বাড়ি চলিল!

এক তাঁতি, তার দুই স্ত্রী। দুই তাঁতি বউর দুই মেয়ে,- সুখু আর দুখু। তাঁতি বড় স্ত্রী আর বড় মেয়ে সুখুকে বেশি বেশি আদর করেন। বড় স্ত্রী বড় মেয়ে ঘর-সংসারের কুটাটুকু ছিঁড়িয়া দুইখানা করে না; কেবল বসিয়া বসিয়া খায়। দুখু আর তার মা সুতা কাটে, ঘর নিকোয়; দিনান্তে চারটি চারটি ভাত পায়, আর সকলের গঞ্জনা সয়।

একদিন তাঁতি মরিয়া গেল। অমনি বড় তাঁতি বউ তাঁতির কড়িপাতি যা ছিল সব লুকাইয়া ফেলিল, আপন মেয়ে নিয়া দুখু আর দুখুর মাকে ভিন্ন করিয়া দিল।

সুখুর মা আজ হাটের বড়মাছের মুড়াটা আনে, কাল হাটের বড় লাউটা আনে, রাঁধে, বাড়ে, সতিন সতিনের মেয়েকে দেখাইয়া দেখাইয়া খায়।

দুখুর মা আর দুখুর দিনে রাত্রে সুতা কাটিয়া কোনো দিন একখানা গামছা, কোন দিন একখানা ঠেঁটী, এই হয়। তাই বেচিয়া একবুড়ি পায়, দেড়বুড়ি পায়, তাই দিয়া মায়ে ঝিয়ে চারিটি অন্ন পেটে দেয়।

একদিন সুতা নাতা ইঁদুরে কাটে, তুলাটুকু নেতিয়ে যায়,-দুখুর মা, সুতা গোছা এলাইয়া দিয়া, তুলা ডালা রোদে দিয়া, ক্ষার কাপড়খানা নিয়া ঘাটে গিয়াছে। দুখু তুলা আগ্‌লাইয়া বসিয়া আছে। এমন সময় এক দমকা বাতাস আসিয়া দুখুর তুলাগুলা উড়াইয়া নিয়া গেল! একটু তুলাও দুখু ফিরাইতে পারিল না; শেষে দুখু কাঁদিয়া ফেলিল!

তখন বাতাস বলিল, 'দুখু কাঁদিস নে, আমার সঙ্গে আয়, তোকে তুলা দেব।' দুখু কাঁদিতে কাঁদিতে বাতাসের পিছু-পিছু গেল।

যাইতে যাইতে পথে এক গাই দুখুকে ডাকে, 'দুখু, কোথা যাচ্ছ-আমার গোয়ালটা কাড়িয়া দিয়া যাবে?'

দুখু চোখের জল মুছিয়া, গাইয়ের গোয়াল কাড়িল, খড় জল দিল; দিয়া আবার বাতাসের পিছু চলিল।

খানিক দূর যাইতেই এক কলাগাছ বলিল, 'দুখু, কোথা যাচ্ছ-আমায় বড় লতাপাতায় ঘিরিয়াছে, এগুলিকে টেনে দিয়ে যাবে?'

দুখু একটু থামিয়া কলাগাছের লতাপাতা ছিঁড়িয়া দিল।

আবার খানিক দূর যাইতে, এক সেওড়া গাছ ডাকিল,-'দুখু, কোথা যাচ্ছ-আমার গুঁড়িটায় বড় জঞ্জাল, ঝাড় দিয়া যাবে?'

দুখু সেওড়ার গুঁড়ি ঝাড় দিল, তলার পাতাকূটা কুড়াইয়া ফেলিল। সব ফিট্‌ফাট্‌ করিয়া দিয়া, আবার দুখু বাতাসের সঙ্গে চলিল।

একটু দূরেই এক ঘোড়া বলিল- 'দুখু, দুখু, কোথা যাচ্ছ,- আমাকে চার গোছা ঘাস দিয়া যাবে?'

দুখু ঘোড়ার ঘাস দিল। তারপর চলিতে চলিতে দুখু বাতাসের সঙ্গে কোথায় দিয়া কোথায় দিয়া এক ধবধবে বাড়িতে গিয়া উপস্থিত!

বাড়িতে আর কেউ নাই; ফিটফাট ঘরদোর, ঝকঝক আঙিনা, কেবল দাওয়ার উপরে এক বুড়ি বসিয়া বসিয়া সুতা কাটিতেছে, সেই সুতায় চক্ষের পলকে পলকে জোড়ায় জোড়ায় শাড়ি হইতেছে।

বুড়ি আর কেউ না, চাঁদের মা বুড়ি! বাতাস বলিল,-'দুখু, বুড়ির কাছে গিয়া তুলা চাও, পাবে।'

দুখু গিয়া বুড়ির পায়ে ঢিপ করিয়া প্রণাম করিল, বলিল,-'দ্যাখ তো আয়ীমা, বাতাস আমার সব তুলা নিয়া আসিয়াছে-মা আমায় বক্‌বে আয়ীমা, আমার তুলা গুনে নিয়ে দাও।'

চুলগুলো যেন দুধের ফেনা, চাঁদের আলো; সেই চুল সরাইয়া চোখ তুলিয়া চাঁদের মা বুড়ি দেখে ছোট্ট খাট্ট মেয়েটি-চিনি হেন মিষ্টি-মধুর বুলি।

বুড়ি বলিল, 'আহা সোনার চাঁদ বেঁচে থাক। ওঘরে গামছা আছে, ওঘরে কাপড় আছে, ওঘরে তেল আছে, ঐ পুকুরে গিয়া দুটো ডুব দিয়া এসো; এসে ওঘরে গিয়া আগে চাট্টি খাও, তারপরে তুলা দেব এখন।'

ঘরে গিয়া দুখু- কত কত ভালো ভালো গামছা, কাপড় দেখে,-তা সব ঠেলিয়া, যা তা ছেঁড়া নাতা গামছা কাপড় নিয়া, যেমন-তেমন একটু তেল মাথায় ছোঁয়াইয়া, এক চিমটি ক্ষার খৈল নিয়া নাইতে গেল।

ক্ষার খৈল টুকু মাখিয়া জলে নামিয়া দুখু ডুব দিল। ডুব দিতেই এক ডুবে দুখুর সৌন্দর্য উথলে পড়ে!-সে কি রূপ!- অত রূপ দেবকন্যারও নাই!-দুখু তা’ জানিতেও পারিল না। আর একডুবে দুখুর গয়না, গায়ে ধরে না, পায়ে ধরে না। সোনাঢাকা অঙ্গ নিয়া আস্তে আস্তে উঠিয়া আসিয়া দুখু খাবার ঘরে গেল।

খাবার ঘরে কত জিনিস, দুখু কি জানে? জন্মেও অত সব দেখে নাই! এক কোণে বসিয়া দুখু চারটি পান্তা খাইয়া আসিল। চাঁদের মা বুড়ি বলিল, -“আমার সোনার বাছা এসেছিস!-ঐ ঘরে যা, পেঁটরায় তুলা আছে, নাও গে!”

দুখু গিয়া দেখিল,-পেঁটরার উপর পেঁটরা- ছোট, বড়, ক-ত রকমের! দুখু এক পাশের ছোট্ট এতটুকু এক খেলনা-পেঁটরা নিয়া বুড়ির কাছে দিল।

বুড়ি বলিল,-“আমার মানিক ধন! আমার কাছে কেন, এখন মা’র কাছে যাও, এই পেঁটরায় তুলা দিয়াছি।”

বুড়ির পায়ের ধূলা নিয়া পেঁটরা কাঁখে, রূপে, গয়নায়, পথ ঘাট আলো করিয়া দুখু বাড়ি চলিল। পথে ঘোড়া বলিল,-“দুখু দুখু, এস এস, আর কি দিব, এই নাও।” ঘোড়া খুব তেজী এক পক্ষীরাজ বাচ্চা দিল।

সেওড়া গাছ বলিল,-“দুখু, দুখু, এস এস, আর কি দিব, এই নাও।” সেওড়া গাছ এক ঘড়া মোহর দিল।

কলাগাছ বলিল,-“দুখু, দুখু, এস এস, আর কি দিব, এই নাও।” কলাগাছ মস্ত এক ছড়া সোনার কলা দিল।

গাই বলিল,- “দুখু, দুখু, এস এস, আর কি দিব, এই নাও।” গাই এক কপিলা-লক্ষণ বক্‌না দিল। ঘোড়ার বাচ্চার পিঠে ঘড়া, ছড়া, তুলিয়া, বক্‌না নিয়া দুখু বাড়ি আসিল।

“দুখু, দুখু, ও পোড়ারমুখী- তুলা নিয়া কোথায় গেলি?-” ডাকিয়া, ডুকিয়া, আনাচে কানাচে, খানা জঙ্গল খুঁজিয়া, মেয়ে না পাইয়া দুখুর মা অস্থির-দুখুর মা ছুটিয়া আসিল, “ও মা, মা আমার, এতক্ষণ তুই কোথায় ছিলি?”-আসিয়া দেখে,-“ও মা! এ কি অন্ধের নড়ি দুঃখিনীর মেয়ে এ সব তুই কোথায় পেলি!”-মা গিয়া দুখুকে বুকে নিল।

মাকে দুখু সব কথা বলিল; শুনিয়া দুখুর মা মনের আনন্দে দুখুকে নিয়া সুখুর মা’র কাছে গেল,-“দিদি, দিদি,- ও সুখু, সুখু, আমাদের দুঃখ ঘুচেছে, চাঁদের মা বুড়ি দুখুকে এই সব দিয়াছে। সুখু কতক নাও, দুখুর কতক থাক।”

চোখ টানিয়া মুখ বাঁকাইয়া-তিন ঝক্‌না ভিরকুট্টি, সুখুর মা বলিল, -“বালাই! পরের কড়ির ভাগ-বাঁটরি-তার কপালে খ্যাংরা মারি! ধুইয়া খা।”

মনে মনে সুখুর মা বিড়্‌ বিড়্‌-“শত্তুরের কপালে আগুন,-কেন, আমার সুখু কি জলে ভাসা মেয়ে? দরদ দেখে মরে যাই! কপালে থাকে তো, সুখু আমার কালই আপনি ইন্দ্রের ঐশ্বর্য লুটে আনবে।” মুখ খাইয়া দুখু দুখুর মা ফিরিয়া আসিল।

রাত্রে পেঁটরা খুলিতেই দুখুর রাজপুত্র-বর বাহির হইল। রাজপুত্র-বর ঘোড়ায় চড়িয়া বেড়ায়, কপিলার দুধে আঁচায়,-দুখু, দুখুর মা,র ঘর-কুঁড়ে আলো হইয়া গেল।

-

রা নাই, শব্দ নাই, সুখুর মা সামনের দুয়ারে খিল দিয়াছে। পরদিন সুখুর মা পিছন দুয়ারে তুলা রোদে দিয়া ‘পিস্‌পিস্‌’ ‘ফিস্‌ফিস্‌’ সুখুকে বসাইয়া ক্ষার কাপড়ে পুঁটলি বাঁধিয়া ঘাটে গেল।

কতক্ষণ পর বাতাস আসিয়া সুখুর তুলা উড়াইয়া নেয়, কুটিকুটি সুখু,-বাতাসের পিছু পিছু ছুটিল!

সেই গাই ডাকিল, 'সুখু, কোথা যাচ্ছ শুনে যাও।'

সুখু ফিরিয়াও দেখিল না। কলাগাছ, সেওড়া গাছ, ঘোড়া সকলেই ডাকিল, দুখু কাহারও কথা কানে তুলিল না। সুখু আরো রাগিয়া গিয়া গালি পাড়ে, 'উঁ! আমি যাবো চাঁদের মা বুড়ির বাড়ি, তোমাদের কথা শুনতে বসি!'

বাতাসের সাথে সাথে সুখু চাঁদের মা বুড়ির বাড়ি গেল। গিয়াই, 'ও বুড়ি, বুড়ি, বসে’ বসে’ কি কচ্ছিস? আমায় আগে সব জিনিস দিয়ে নে, তার পর সুতো কাটিস। হুঁ! উনুনমুখী দুখু, তা’কেই আবার এত সব দিয়েছেন!' বলিয়া, সুখু, বুড়ির চরকা মরকা টানিয়া ভাঙ্গে আর কি!

চাঁদের মা বুড়ি অবাক।–“রাখ্‌ রাখ্‌”-ওমা! এতটুকু মেয়ে তার কাঠ কাঠ কথা, উড়ুনচণ্ডে’ কাণ্ড! বুড়ি চুপ করিয়া রহিল; তারপর বলিল, -“আচ্ছা, নেয়ে খেয়ে নে, তারপর সব পাবি।”

বলতে সয় না, সুখু দুড়্‌দাড়্‌ করিয়া এ ঘর থেকে’ সব্‌বার ভাল গামছা খানা, ওঘরে থেকে, সব্‌বার ভাল শাড়ি খানা, সুবাস তেলের হাঁড়ি চন্দনের বাটি যত কিছু নিয়া ঘাটে গেল।

সাতবার করিয়া তেল মাখে, সাতবার করিয়া মাথা ঘষে, ফিরিয়া ফিরিয়া চায়,-সাতবার করিয়া আর্‌শি ধরিয়া মুখ দেখে,- তবু সুখুর মনের মত হয় না। তিন প্রহর ধরিয়া এই রকম করিয়া শেষে সুখু জলে নামিল।

এক ডুবে সৌন্দর্য! এক ডুবে গহনা!!-আঃ!!!- আর সুখুকে পায় কে? সুখু এদিকে চায়, সুখু ওদিকে চায়, “যত যত ডুব দিব, না জানি আরো কি পাব!”

“আঁই-আঁই-আঁই!!!”- তিন ডুব দিয়া উঠিয়া সুখু দেখে,-গা-ভরা আঁচিল, ঘা পাঁচড়া-এ-ই নখ, শোণের গোছা চুল-কত কদর্য সুখুর কপালে!- “ওঁ মাঁ, মাঁ গোঁ!-কিঁ হঁল গোঁ”-কাঁদিতে কাঁদিতে সুখু বুড়ির কাছে গেল।

দেখিয়া বুড়ি বলিল,-“আহা আহা ছাইকপালি,- তিন ডুব দিয়াছিলি বুঝি?-যা, কাঁদিসনে যা;- বেলা ব’য়ে গেছে, খেয়ে দেয়ে নে!”

বুড়িকে গালি পাড়িতে পাড়িতে সুখু, খাবার ঘরে গিয়া পায়েস পিঠা ভাল ভাল সব খাবার খাবলে খাবলে খাইয়া ছড়াইয়া হাত মুখ ধুইয়া আসিল-“আচ্ছা বুড়ি, মাঁর কাঁছে আঁগে যাঁই!-দেঁ তুঁই পেঁটরা দিঁবি কিঁ না দেঁ।”

বুড়ি পেঁটবার ঘর দেখাইয়া দিল। য-ত বড় পারিল, এ-ই মস্ত এক পেঁটরা মাথায় করিয়া সুখু বিড়্‌ বিড়্‌ করিয়া চৌদ্দ বুড়ির মুণ্ডু খাইতে খাইতে রূপে দিক্‌ চম্‌কাইয়া বাড়ি চলিল!

সুখুর রূপ দেখিয়া শিয়াল পালায়, পথের মানুষ মূর্ছা যায়। পথে ঘোড়া এক লাথি মারিল; সুখু করে-“আঁই আঁই!” সেওড়া গাছের এক ডাল মটাস করিয়া ভাঙ্গিয়া পড়িল, সুখু করে-“মঁলাম! মঁলাম!” কলাগাছের এক কাঁদি কলা ছিঁড়িয়া পিঠে পড়িল; সুখু বলে- “গেঁলাম! গেঁলাম!” শিং বাঁকা করিয়া, গাই তাড়া করিল, ছুটিতে ছুটিতে হাঁপাইয়া আসিয়া সুখু বাড়িতে উঠিল।

দুয়ারে আলপনা দিয়া, ঘট পল্লব বিয়া জোড়া পিঁড়ি সাজাইয়া সুখুর মা বসিয়া ছিল। বারে বারে পথ চায়-

সুখুকে দেখিয়া, সুখুর মা “ও মা! মা! ও মা গো, কি হবে গো! কোথায় যাব গো!”

চোখের তারা কপালে, আছাড় খাইয়া পড়িয়া সুখুর মা মূর্ছা গেল। উঠিয়া সুখুর মা বলে,- “হ’ক হ’ক অভাগী, পেঁটরা নিয়ে ঘরে তোল্‌; দ্যাখ আগে, বর এলে বা সব ভাল হইবে!”

দুইজনে পেঁটরা নিয়া ঘরে তুলিল। রাত্রে পেঁটরা খুলিয়া, সুখুর বর বাহির হইল!- সুখু বলে,-“মা, পা কেন কন্‌ কন্‌?”

মা বলিল,-“মল পর।”

সুখু-“মা, গা কেন ছন্‌ ছন্‌?”

মা-“মা, গয়না পর।”

তারপর সুখুর হাত কট কট, গলা ঘড় ঘড়, মাথা কচ কচ ক-ত করিল,- সুখু হার পরিল, নথ নোলক, সিঁথি পরিয়া টরিয়া সুখু চুপ করিল। মনের আনন্দে, সুখুর মা ঘুমাইতে গেল।

পরদিন সুখু আর দোর খোলে না, “কেন লো,-কত বেলা, উঠবি না?”

নাঃ, নাওয়ার খাওয়ার বেলা হইল, সুখু উঠে না। সুখুর মা গিয়া কবাট খুলিল।– “ও মা রে মা!”-সুখু নাই, সুখুর চিহ্ন নাই-ঘরের মেজেতে হাড় গোড়, অজগরের খোলস!- অজগরে সুখুকে খাইয়া গিয়াছে!!- চেলাকাঠ মাথায় মারিয়া সুখুর মা মরিয়া গেল।

আরও পড়ুন:
শেয়ালের বুদ্ধি
কাযিম আর তার শিক্ষক
তিন মুসাফির
পুতা নিয়ে যাও
ফিরে এলো সাদা পরি

মন্তব্য

আরও পড়ুন

কিড জোন
Sisimpurs special initiative in sign language for hearing impaired children

শ্রবণপ্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য ইশারা ভাষায় সিসিমপুরের বিশেষ উদ্যোগ

শ্রবণপ্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য ইশারা ভাষায় সিসিমপুরের বিশেষ উদ্যোগ শ্রবণপ্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য তৈরি হচ্ছে সিসিমপুরের বিশেষ কিছু পর্ব। ছবি: নিউজবাংলা
২৩ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ ডে। এই দিন থেকে সাইন ল্যাঙ্গুগুয়েজে নির্মিত সিসিমপুরের বিশেষ পর্বগুলো সিসিমপুরের সোশ্যাল ও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলোতে ধারাবাহিকভাবে প্রচার শুরু হবে, যা পরবর্তী পর্যায়ে টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতেও প্রচার হবে।

শ্রবণপ্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য নির্মিত হলো সিসিমপুরের বিশেষ কিছু পর্ব।

উদ্যোগের অংশ হিসেবে সিসিমপুরের জনপ্রিয় ১৩টি পর্বে শ্রবণপ্রতিবন্ধী শিশুদের উপযোগী করে সাইন ল্যাঙ্গুগুয়েজ তথা ইশারা ভাষা যুক্ত করে নতুনভাবে তৈরি করেছে সিসিমপুরের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান সিসেমি ওয়ার্কশপ বাংলাদেশ (এসডব্লিউবি)।

সিসিমপুরের পর্বগুলোকে ইশারা ভাষায় রূপান্তরে সহযোগিতা করেছে শ্রবণপ্রতিবন্ধী মানুষের উন্নয়নে কাজ করা সংগঠন সোসাইটি অব দ্য ডেফ অ্যান্ড সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ ইউজার্স (এসডিএসএল)।

২৩ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ ডে। এই দিন থেকে সাইন ল্যাঙ্গুগুয়েজে নির্মিত সিসিমপুরের বিশেষ পর্বগুলো সিসিমপুরের সোশ্যাল ও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলোতে ধারাবাহিকভাবে প্রচার শুরু হবে, যা পরবর্তী পর্যায়ে টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতেও প্রচার হবে।

বিশেষ এই উদ্যোগ সম্পর্কে সিসিমপুরের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, ‘সিসিমপুরের লক্ষ্য হচ্ছে বাংলাদেশের প্রতিটি শিশুর কাছে পৌঁছানো। তারই অংশ হিসেবে ইতোমধ্যেই আমরা দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য সিসিমপুরের ১০টি গল্পের বই ব্রেইল পদ্ধতিতে প্রকাশ করেছি ও শিশুদের মাঝে বিতরণ করেছি। এবার শ্রবণপ্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য নিয়ে আসছি ১৩ পর্বের বিশেষ সিসিমপুর।

‘ধারাবাহিকভাবে পর্বের সংখ্যা বাড়ানোর ইচ্ছে আছে আমাদের। আমাদের টেলিভিশন অনুষ্ঠান নির্মাণ ও অন্যান্য কার্যক্রম বাস্তবায়নে সহায়তা করার জন্য ইউএসএআইডি বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানাই।’

মন্তব্য

কিড জোন
One day at the police station

এক দিন থানায়

এক দিন থানায়
বন্ধুরা, চাইলে তোমরাও আমাদের কাছে জোকস লিখে পাঠাতে পারো। পাঠানোর ঠিকানা: [email protected]

এক লোককে থানায় ধরে আনা হলো।

ওসি: আপনাকে আজ রাতে থানায় থাকতে হবে।

ভদ্রলোক: চার্জ কী?

ওসি: কোনো চার্জ দিতে হবে না, ফ্রি।

-

বন্ধুরা, চাইলে তোমরাও আমাদের কাছে জোকস লিখে পাঠাতে পারো। পাঠানোর ঠিকানা: [email protected]

আরও পড়ুন:
নতুন সিইও
সাঁতার
পরীক্ষার চাপ
মাছ কথা বলে না
দুই গরু

মন্তব্য

কিড জোন
The wisdom of the lawyer

উকিলের বুদ্ধি

উকিলের বুদ্ধি
উকিল বললেন, "তবে শোন, আমার ফন্দি বলি। যখন আদালতের কাঠগড়ায় গিয়ে দাঁড়াবে, তখন বাপু হে কথাটথা কয়ো না। যে যা খুশি বলুক, গাল দিক আর প্রশ্ন করুক, তুমি তার জবাবটি দেবে না- খালি পাঁঠার মতো 'ব্যা- ' করবে। তা যদি করতে পার, তা হলে আমি তোমায় খালাস করিয়ে দেব।"

গরিব চাষা, তার নামে মহাজন নালিশ করেছে। বেচারা কবে তার কাছে ২৫ টাকা নিয়েছিল, সুদে-আসলে তা এখন ৫০০ টাকায় দাঁড়িয়েছে। চাষা অনেক কষ্টে ১০০ টাকা জোগাড় করেছে; কিন্তু মহাজন বলছে, ‌'৫০০ টাকার এক পয়সাও কম নয়; দিতে না পারো তো জেলে যাও।' সুতরাং চাষার আর রক্ষা নাই।

এমন সময় শামলা মাথায় চশমা চোখে তুখোড় বুদ্ধি উকিল এসে বললেন, 'ওই ১০০ টাকা আমায় দিলে, তোমার বাঁচবার উপায় করতে পারি।'

চাষা তার হাতে ধরল, পায়ে ধরল, বলল, ‌'আমায় বাঁচিয়ে দিন।'

উকিল বললেন, "তবে শোন, আমার ফন্দি বলি। যখন আদালতের কাঠগড়ায় গিয়ে দাঁড়াবে, তখন বাপু হে কথাটথা কয়ো না। যে যা খুশি বলুক, গাল দিক আর প্রশ্ন করুক, তুমি তার জবাবটি দেবে না- খালি পাঁঠার মতো 'ব্যা- ' করবে। তা যদি করতে পারো, তা হলে আমি তোমায় খালাস করিয়ে দেব।"

চাষা বলল, 'আপনি কর্তা যা বলেন, তাতেই আমই রাজি।'

আদালতে মহাজনের মস্ত উকিল, চাষাকে এক ধমক দিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, 'তুমি সাত বছর আগে ২৫ টাকা কর্জ নিয়েছিলে?'

চাষা তার মুখের দিকে চেয়ে বলল, 'ব্যা- '।

উকিল বললেন, 'খবরদার!- বল, নিয়েছিলি কি না।'

চাষা বলল, 'ব্যা- '।

উকিল বললেন, 'হুজুর! আসামির বেয়াদবি দেখুন।'

হাকিম রেগে বললেন, 'ফের যদি অমনি করিস, তোকে আমই ফাটক দেব।'

চাষা অত্যন্ত ভয় পেয়ে কাঁদ কাঁদ হয়ে বলল, 'ব্যা- ব্যা- '।

হাকিম বললেন, 'লোকটা কি পাগল নাকি?'

তখন চাষার উকিল উঠে বললেন, "হুজুর, ও কি আজকের পাগল- ও বহুকালের পাগল, জন্ম-অবধি পাগল। ওর কি কোনো বুদ্ধি আছে, না কাণ্ডজ্ঞান আছে? ও আবার কর্জ নেবে কি! ও কি কখনও খত লিখতে পারে নাকি? আর পাগলের খত লিখলেই বা কী? দেখুন দেখুন, এই হতভাগা মহাজনটার কাণ্ড দেখুন তো! ইচ্ছে করে জেনেশুনে পাগলটাকে ঠকিয়ে নেওয়ার মতলব করেছে। আরে, ওর কি মাথার ঠিক আছে? এরা বলেছে, 'এইখানে একটা আঙ্গুলের টিপ দে'- পাগল কি জানে, সে অমনি টিপ দিয়েছে। এই তো ব্যাপার!"

দুই উকিলে ঝগড়া বেধে গেল।

হাকিম খানিক শুনেটুনে বললেন, 'মোকদ্দমা ডিসমিস্।'

মহাজনের তো চক্ষুস্থির। সে আদালতের বাইরে এসে চাষাকে বললেন, 'আচ্ছা, না হয় তোর ৪০০ টাকা ছেড়েই দিলাম- ওই ১০০ টাকাই দে।'

চাষা বলল, 'ব্যা-!'

মহাজন যতই বলেন, যতই বোঝান, চাষা তার পাঁঠার বুলি কিছুতেই ছাড়ে না। মহাজন রেগেমেগে বলে গেল, 'দেখে নেব, আমার টাকা তুই কেমন করে হজম করিস।'

চাষা তার পোঁটলা নিয়ে গ্রামে ফিরতে চলেছে, এমন সময় তার উকিল এসে ধরল, 'যাচ্ছ কোথায় বাপু? আমার পাওনাটা আগে চুকিয়ে যাও। ১০০ টাকায় রফা হয়েছিল, এখন মোকদ্দমা তো জিতিয়ে দিলাম।'

চাষা অবাক হয়ে তার মুখের দিকে তাকিয়ে বলল, 'ব্যা-।'

উকিল বললেন, 'বাপু হে, ওসব চালাকি খাটবে না- টাকাটি এখন বের করো।'

চাষা বোকার মতো মুখ করে আবার বলল, 'ব্যা-।'

উকিল তাকে নরম গরম অনেক কথাই শোনাল, কিন্তু চাষার মুখে কেবলই ঐ এক জবাব! তখন উকিল বলল, 'হতভাগা গোমুখ্যু পাড়া গেঁয়ে ভূত- তোর পেটে অ্যাতো শয়তানি, কে জানে! আগে যদি জানতাম তা হলে পোঁটলাসুদ্ধ টাকাগুলো আটকে রাখতাম।'

বুদ্ধিমান উকিলের আর দক্ষিণা পাওয়া হলো না।

আরও পড়ুন:
বড় দিদি
লোভী কুকুর
সিন্ড্রেলা
বাবুর্চির বুদ্ধি
সুখু আর দুখু

মন্তব্য

কিড জোন
Smile and Ismail

স্মাইল ও ইসমাইল

স্মাইল ও ইসমাইল
বন্ধুরা, চাইলে তোমরাও আমাদের কাছে জোকস লিখে পাঠাতে পারো। পাঠানোর ঠিকানা: [email protected]

এক ফটো সাংবাদিক রাস্তায় বাচ্চাদের ছবি তুলছেন। সবাইকে একসঙ্গে বসিয়ে বললেন, স্মাইল।

ইসমাইল: জি স্যার?

সাংবাদিক: আরে তুমি দাঁড়াচ্ছ কেন? বসো।

ইসমাইল: ঠিক আছে।

সাংবাদিক: ওকে রেডি, স্মাইল।

ইসমাইল: ডাকলেন কেন স্যার?

সাংবাদিক: আরে বাবা তোমার সমস্যাটা কী? স্মাইল বললেই দাঁড়িয়ে যাচ্ছ কেন?

ইসমাইল: আমি তো বসেই আছি। আপনি আমার নাম ধরে ডাকেন বলেই দাঁড়িয়ে যাই।

-

বন্ধুরা, চাইলে তোমরাও আমাদের কাছে জোকস লিখে পাঠাতে পারো। পাঠানোর ঠিকানা: [email protected]

আরও পড়ুন:
সাঁতার
পরীক্ষার চাপ
মাছ কথা বলে না
দুই গরু
সাদা মুরগি-কালো মুরগি

মন্তব্য

কিড জোন
father and son

বাবা-মেয়ে

বাবা-মেয়ে
বন্ধুরা, চাইলে তোমরাও আমাদের কাছে জোকস লিখে পাঠাতে পারো। পাঠানোর ঠিকানা: [email protected]

মেয়ে: আলুর তরকারিটার স্বাদ কেমন হয়েছে?

বাবা: দারুণ স্বাদ হয়েছে। তুই রান্না করেছিস নাকি?

মেয়ে: না, আলু আমি ছিলেছি।

-

বন্ধুরা, চাইলে তোমরাও আমাদের কাছে জোকস লিখে পাঠাতে পারো। পাঠানোর ঠিকানা: [email protected]

আরও পড়ুন:
পরীক্ষার চাপ
মাছ কথা বলে না
দুই গরু
সাদা মুরগি-কালো মুরগি
ব্যবসা

মন্তব্য

ভুলোমনা

ভুলোমনা
বন্ধুরা, চাইলে তোমরাও আমাদের কাছে জোকস লিখে পাঠাতে পারো। পাঠানোর ঠিকানা: [email protected]

স্ত্রী: কি ব্যাপার, আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে কী দেখছ?

ভুলোমনা স্বামী: এই ভদ্রলোককে খুব চেনা চেনা লাগছে, কিন্তু কোথায় দেখেছি ঠিক মনে করতে পারছিনা।

-

বন্ধুরা, চাইলে তোমরাও আমাদের কাছে জোকস লিখে পাঠাতে পারো। পাঠানোর ঠিকানা: [email protected]

আরও পড়ুন:
মাছ কথা বলে না
দুই গরু
সাদা মুরগি-কালো মুরগি
ব্যবসা
টেলিভিশন এবং সংবাদপত্র

মন্তব্য

নতুন চাকরি

নতুন চাকরি
বন্ধুরা, চাইলে তোমরাও আমাদের কাছে জোকস লিখে পাঠাতে পারো। পাঠানোর ঠিকানা: [email protected]

এক যুবক নতুন চাকরি পেয়েছে। প্রথম দিন অফিসে এসেই কিচেনে ফোন করে বলল, ‘এখনি আমাকে এককাপ কফি দিয়ে যাও! জলদি!’

অন্যদিক থেকে আওয়াজ এল, ‘গর্দভ, তুমি কার সাথে কথা বলছ জান?’

যুবকটি থতমত এবং ভীত হয়ে বলল, ‘না! আপনি কে?’

‘আমি এই কোম্পানির ম্যানেজিং ডিরেক্টর’, রাগী গলায় উত্তর এল।

যুবকটি বলল, ‘আর আপনি জানেন কার সঙ্গে কথা বলছেন?’

‘না’, ওপার থেকে উত্তর এল।

‘বাবারে! বাঁচা গেছে’, বলে যুবকটি ফোন রেখে দিল।

-

বন্ধুরা, চাইলে তোমরাও আমাদের কাছে জোকস লিখে পাঠাতে পারো। পাঠানোর ঠিকানা: [email protected]

আরও পড়ুন:
দুই গরু
সাদা মুরগি-কালো মুরগি
ব্যবসা
টেলিভিশন এবং সংবাদপত্র
আম চোর

মন্তব্য

p
উপরে