তেনালি রামকৃষ্ণ ছিলেন মহারাজা কৃষ্ণদেব রায়ের দরবারের একজন কবি এবং পরামর্শদাতা। তাকে আমরা চিনি তার অসাধারণ রসিকতা, কৌতুক-রসবোধ এবং অসামান্য বুদ্ধিমত্তার জন্য। আজ শুনব তার একটি মজার ঘটনা।
রানির ছবি
রাজা কৃষ্ণদেব রায়ের ইচ্ছা হলো রানির একটা প্রতিকৃতি আঁকাবেন। রানির ছবি বলে কথা! নিখুঁত হতেই হবে। খ্যাতিমান এক চিত্রকরকে এনে রানির ছবি আঁকা হলো। রাজা সভাসদদের জিজ্ঞেস করলেন, 'কেমন হয়েছে?'
প্রধানমন্ত্রী বললেন, 'হুমঁম... ঠিকই আছে। তবে রানির চোখের ঔজ্জ্বল্যটা ঠিকমতো আসেনি।'
রাজগুরু বললেন, 'নাকটা আরো চমৎকার করে আঁকা যেত।'
প্রত্যেকেই সমালোচনা করতে শুরু করলেন। চুল, ঠোঁট, পোশাকের রং, সব কিছুরই কোনো না কোনো খুঁত বের হচ্ছে। বেচারা চিত্রকর মর্মাহত। এত যত্ন, এত পরিশ্রমের কোনো মূল্যই এরা দিল না! পুরোটাই মাঠে মারা গেল!
এতক্ষণ দরবারের এক কোণে বসে চুপচাপ সব দেখছিলেন তেনালি রাম। চিত্রকরের মনটা ভেঙে পড়েছে দেখে বেশ কিছুক্ষণ চিত্রকর্মটির প্রশংসা করলেন তেনালি। তারপর রাজার দিকে ঘুরে বললেন, 'মহারাজ, আমার একটা পরামর্শ আছে।'
রাজা তেনালির দিকে ফিরে বললেন, 'বল, শুনি কী পরামর্শ?'
তেনালি: আমরা বরং ছবিটাকে শহরের মূল রাস্তার মোড়ে টানিয়ে দিই। নগরবাসী এটা দেখুক। তারাই প্রয়োজনীয় অদল-বদলের পরামর্শ দিক। তাহলে চিত্রকর ছবিটি আরো ভালো করে আঁকতে পারবেন।'
যে কথা সেই কাজ। শহরের প্রধান রাস্তায় ছবিটাকে ঝুলিয়ে দেওয়া হলো। ঢাকঢোল পিটিয়ে শহরবাসীকে জানিয়ে দেওয়া হলো, ছবিতে কোথায় কোন ত্রুটি আছে, খুঁজে বের করতে হবে।
রাজার হুকুম বলে কথা! ছবিটার সমালোচনা করতে শহরের কেউ আর বাদ গেল না। কেউ কেউ তো দায়িত্ব পালন করতে দুই-তিনবার করেও গেল। লোকজন ওই মোড়ে যায় আর তুলি দিয়ে ছবিটার সারা গায়ে আঁচড় দিয়ে ভুল চিহ্নিত করতে থাকে। এক সপ্তাহ পর চিত্রকর্ম নিয়ে আসা হলো রাজদরবারে। চিত্রকর তাকিয়ে দেখেন তাঁর সাধের ছবিটি আর চেনাই যায় না, পুরো নষ্ট হয়ে গেছে।
এরপর চিত্রকর আবার শুরু করলেন কাজ। কয়েক সপ্তাহ সময় নিয়ে রানির আরেকটি ছবি আঁকলেন তিনি। আগেরবারের চেয়ে এটি আরো ভালো হলো। সেই ছবি দেখে তিনি নিজেই মুগ্ধ। ছুটে চললেন রাজদরবারে। রাজাসহ সভাসদ সেই ছবি দেখলেন। অন্য কেউ মুখ খোলার আগেই তেনালি রাম বললেন, 'মহারাজ, এ ছবিটাও আমরা আগের জায়গায় টাঙিয়ে দেব। এবার আমরা জনগণকে বলব তারা যেন এর সুন্দর জায়গাগুলো চিহ্নিত করে।'
রাজা বললেন, 'তবে তাই হোক।'
ছবিটাকে শহরের প্রধান মোড়ে টাঙিয়ে দেওয়া হলো। শহরবাসীকে চিত্রকর্মটির সৌন্দর্য চিহ্নিত করতে বলা হলো। সময় এক সপ্তাহ।
এক সপ্তাহ পর দরবারে ফেরত আনা হলো ছবি। রাজা কৃষ্ণদেব রায় বিস্মিত! পুরো ছবির গায়ে একটা আঁচড়ও পড়েনি। শহরবাসী ছবি দেখতে গেছে ঠিকই, কিন্তু কোনো ভালোই খুঁজে পায়নি তারা। রাজা বললেন, 'তাহলে কি আঁকা ভালো হয়নি?'
তেনালি জবাব দিলেন, 'মহারাজ, চিত্রকর্মে কোনো সমস্যা নেই। ঝামেলা হলো আমাদের আচরণে। একটা খুঁত বের করতে বলুন, যে কেউ আপনাকে তা দেখাতে পারবে, দোষ থাকুক বা না থাকুক। কিন্তু একটা ভালো জিনিস চিহ্নিত করতে বলুন, কখনোই পারবে না। মানুষের দৃষ্টিভঙ্গিটাই এ রকম। তারা ভালো কিছু দেখতে পায় না। আমাদের এমন দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে।'
আরও পড়ুন:শ্রবণপ্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য নির্মিত হলো সিসিমপুরের বিশেষ কিছু পর্ব।
উদ্যোগের অংশ হিসেবে সিসিমপুরের জনপ্রিয় ১৩টি পর্বে শ্রবণপ্রতিবন্ধী শিশুদের উপযোগী করে সাইন ল্যাঙ্গুগুয়েজ তথা ইশারা ভাষা যুক্ত করে নতুনভাবে তৈরি করেছে সিসিমপুরের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান সিসেমি ওয়ার্কশপ বাংলাদেশ (এসডব্লিউবি)।
সিসিমপুরের পর্বগুলোকে ইশারা ভাষায় রূপান্তরে সহযোগিতা করেছে শ্রবণপ্রতিবন্ধী মানুষের উন্নয়নে কাজ করা সংগঠন সোসাইটি অব দ্য ডেফ অ্যান্ড সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ ইউজার্স (এসডিএসএল)।
২৩ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ ডে। এই দিন থেকে সাইন ল্যাঙ্গুগুয়েজে নির্মিত সিসিমপুরের বিশেষ পর্বগুলো সিসিমপুরের সোশ্যাল ও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলোতে ধারাবাহিকভাবে প্রচার শুরু হবে, যা পরবর্তী পর্যায়ে টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতেও প্রচার হবে।
বিশেষ এই উদ্যোগ সম্পর্কে সিসিমপুরের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, ‘সিসিমপুরের লক্ষ্য হচ্ছে বাংলাদেশের প্রতিটি শিশুর কাছে পৌঁছানো। তারই অংশ হিসেবে ইতোমধ্যেই আমরা দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য সিসিমপুরের ১০টি গল্পের বই ব্রেইল পদ্ধতিতে প্রকাশ করেছি ও শিশুদের মাঝে বিতরণ করেছি। এবার শ্রবণপ্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য নিয়ে আসছি ১৩ পর্বের বিশেষ সিসিমপুর।
‘ধারাবাহিকভাবে পর্বের সংখ্যা বাড়ানোর ইচ্ছে আছে আমাদের। আমাদের টেলিভিশন অনুষ্ঠান নির্মাণ ও অন্যান্য কার্যক্রম বাস্তবায়নে সহায়তা করার জন্য ইউএসএআইডি বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানাই।’
এক লোককে থানায় ধরে আনা হলো।
ওসি: আপনাকে আজ রাতে থানায় থাকতে হবে।
ভদ্রলোক: চার্জ কী?
ওসি: কোনো চার্জ দিতে হবে না, ফ্রি।
-
বন্ধুরা, চাইলে তোমরাও আমাদের কাছে জোকস লিখে পাঠাতে পারো। পাঠানোর ঠিকানা: [email protected]
আরও পড়ুন:
গরিব চাষা, তার নামে মহাজন নালিশ করেছে। বেচারা কবে তার কাছে ২৫ টাকা নিয়েছিল, সুদে-আসলে তা এখন ৫০০ টাকায় দাঁড়িয়েছে। চাষা অনেক কষ্টে ১০০ টাকা জোগাড় করেছে; কিন্তু মহাজন বলছে, '৫০০ টাকার এক পয়সাও কম নয়; দিতে না পারো তো জেলে যাও।' সুতরাং চাষার আর রক্ষা নাই।
এমন সময় শামলা মাথায় চশমা চোখে তুখোড় বুদ্ধি উকিল এসে বললেন, 'ওই ১০০ টাকা আমায় দিলে, তোমার বাঁচবার উপায় করতে পারি।'
চাষা তার হাতে ধরল, পায়ে ধরল, বলল, 'আমায় বাঁচিয়ে দিন।'
উকিল বললেন, "তবে শোন, আমার ফন্দি বলি। যখন আদালতের কাঠগড়ায় গিয়ে দাঁড়াবে, তখন বাপু হে কথাটথা কয়ো না। যে যা খুশি বলুক, গাল দিক আর প্রশ্ন করুক, তুমি তার জবাবটি দেবে না- খালি পাঁঠার মতো 'ব্যা- ' করবে। তা যদি করতে পারো, তা হলে আমি তোমায় খালাস করিয়ে দেব।"
চাষা বলল, 'আপনি কর্তা যা বলেন, তাতেই আমই রাজি।'
আদালতে মহাজনের মস্ত উকিল, চাষাকে এক ধমক দিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, 'তুমি সাত বছর আগে ২৫ টাকা কর্জ নিয়েছিলে?'
চাষা তার মুখের দিকে চেয়ে বলল, 'ব্যা- '।
উকিল বললেন, 'খবরদার!- বল, নিয়েছিলি কি না।'
চাষা বলল, 'ব্যা- '।
উকিল বললেন, 'হুজুর! আসামির বেয়াদবি দেখুন।'
হাকিম রেগে বললেন, 'ফের যদি অমনি করিস, তোকে আমই ফাটক দেব।'
চাষা অত্যন্ত ভয় পেয়ে কাঁদ কাঁদ হয়ে বলল, 'ব্যা- ব্যা- '।
হাকিম বললেন, 'লোকটা কি পাগল নাকি?'
তখন চাষার উকিল উঠে বললেন, "হুজুর, ও কি আজকের পাগল- ও বহুকালের পাগল, জন্ম-অবধি পাগল। ওর কি কোনো বুদ্ধি আছে, না কাণ্ডজ্ঞান আছে? ও আবার কর্জ নেবে কি! ও কি কখনও খত লিখতে পারে নাকি? আর পাগলের খত লিখলেই বা কী? দেখুন দেখুন, এই হতভাগা মহাজনটার কাণ্ড দেখুন তো! ইচ্ছে করে জেনেশুনে পাগলটাকে ঠকিয়ে নেওয়ার মতলব করেছে। আরে, ওর কি মাথার ঠিক আছে? এরা বলেছে, 'এইখানে একটা আঙ্গুলের টিপ দে'- পাগল কি জানে, সে অমনি টিপ দিয়েছে। এই তো ব্যাপার!"
দুই উকিলে ঝগড়া বেধে গেল।
হাকিম খানিক শুনেটুনে বললেন, 'মোকদ্দমা ডিসমিস্।'
মহাজনের তো চক্ষুস্থির। সে আদালতের বাইরে এসে চাষাকে বললেন, 'আচ্ছা, না হয় তোর ৪০০ টাকা ছেড়েই দিলাম- ওই ১০০ টাকাই দে।'
চাষা বলল, 'ব্যা-!'
মহাজন যতই বলেন, যতই বোঝান, চাষা তার পাঁঠার বুলি কিছুতেই ছাড়ে না। মহাজন রেগেমেগে বলে গেল, 'দেখে নেব, আমার টাকা তুই কেমন করে হজম করিস।'
চাষা তার পোঁটলা নিয়ে গ্রামে ফিরতে চলেছে, এমন সময় তার উকিল এসে ধরল, 'যাচ্ছ কোথায় বাপু? আমার পাওনাটা আগে চুকিয়ে যাও। ১০০ টাকায় রফা হয়েছিল, এখন মোকদ্দমা তো জিতিয়ে দিলাম।'
চাষা অবাক হয়ে তার মুখের দিকে তাকিয়ে বলল, 'ব্যা-।'
উকিল বললেন, 'বাপু হে, ওসব চালাকি খাটবে না- টাকাটি এখন বের করো।'
চাষা বোকার মতো মুখ করে আবার বলল, 'ব্যা-।'
উকিল তাকে নরম গরম অনেক কথাই শোনাল, কিন্তু চাষার মুখে কেবলই ঐ এক জবাব! তখন উকিল বলল, 'হতভাগা গোমুখ্যু পাড়া গেঁয়ে ভূত- তোর পেটে অ্যাতো শয়তানি, কে জানে! আগে যদি জানতাম তা হলে পোঁটলাসুদ্ধ টাকাগুলো আটকে রাখতাম।'
বুদ্ধিমান উকিলের আর দক্ষিণা পাওয়া হলো না।
আরও পড়ুন:এক ফটো সাংবাদিক রাস্তায় বাচ্চাদের ছবি তুলছেন। সবাইকে একসঙ্গে বসিয়ে বললেন, স্মাইল।
ইসমাইল: জি স্যার?
সাংবাদিক: আরে তুমি দাঁড়াচ্ছ কেন? বসো।
ইসমাইল: ঠিক আছে।
সাংবাদিক: ওকে রেডি, স্মাইল।
ইসমাইল: ডাকলেন কেন স্যার?
সাংবাদিক: আরে বাবা তোমার সমস্যাটা কী? স্মাইল বললেই দাঁড়িয়ে যাচ্ছ কেন?
ইসমাইল: আমি তো বসেই আছি। আপনি আমার নাম ধরে ডাকেন বলেই দাঁড়িয়ে যাই।
-
বন্ধুরা, চাইলে তোমরাও আমাদের কাছে জোকস লিখে পাঠাতে পারো। পাঠানোর ঠিকানা: [email protected]
আরও পড়ুন:মেয়ে: আলুর তরকারিটার স্বাদ কেমন হয়েছে?
বাবা: দারুণ স্বাদ হয়েছে। তুই রান্না করেছিস নাকি?
মেয়ে: না, আলু আমি ছিলেছি।
-
বন্ধুরা, চাইলে তোমরাও আমাদের কাছে জোকস লিখে পাঠাতে পারো। পাঠানোর ঠিকানা: [email protected]
আরও পড়ুন:
স্ত্রী: কি ব্যাপার, আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে কী দেখছ?
ভুলোমনা স্বামী: এই ভদ্রলোককে খুব চেনা চেনা লাগছে, কিন্তু কোথায় দেখেছি ঠিক মনে করতে পারছিনা।
-
বন্ধুরা, চাইলে তোমরাও আমাদের কাছে জোকস লিখে পাঠাতে পারো। পাঠানোর ঠিকানা: [email protected]
এক যুবক নতুন চাকরি পেয়েছে। প্রথম দিন অফিসে এসেই কিচেনে ফোন করে বলল, ‘এখনি আমাকে এককাপ কফি দিয়ে যাও! জলদি!’
অন্যদিক থেকে আওয়াজ এল, ‘গর্দভ, তুমি কার সাথে কথা বলছ জান?’
যুবকটি থতমত এবং ভীত হয়ে বলল, ‘না! আপনি কে?’
‘আমি এই কোম্পানির ম্যানেজিং ডিরেক্টর’, রাগী গলায় উত্তর এল।
যুবকটি বলল, ‘আর আপনি জানেন কার সঙ্গে কথা বলছেন?’
‘না’, ওপার থেকে উত্তর এল।
‘বাবারে! বাঁচা গেছে’, বলে যুবকটি ফোন রেখে দিল।
-
বন্ধুরা, চাইলে তোমরাও আমাদের কাছে জোকস লিখে পাঠাতে পারো। পাঠানোর ঠিকানা: [email protected]
আরও পড়ুন:
মন্তব্য