উত্তর দেশের একটি গ্রামে বীরসিংহ ও জ্ঞানপ্রকাশ নামে দুজন যুবক বাস করত। ওদের মধ্যে ছিল গভীর বন্ধুত্ব। কিন্তু স্বভাবে ওরা ছিল পরস্পরের বিপরীত।
জ্ঞানপ্রকাশ ছিল রোগা, দুর্বল, কিন্তু তার বুদ্ধি ছিল তীক্ষ্ণ।
ওদিকে বীরসিংহ ছিল শক্তিশালী, সাহসী আর তড়িঘড়ি করে কাজ করার লোক। ওর বুদ্ধি ছিল কম।
দুই বন্ধু মিলে একবার বেড়াতে বের হলো। সকাল গড়িয়ে দুপুর হতেই বীরসিংহের খিদে পেল। তাদের কাছে খাবার ছিল না।
এ সময় তারা দূরে একটি গ্রাম দেখতে পেল।
‘ওখানে গিয়ে কাউকে খেতে দিতে বলব?’ জিজ্ঞেস করলা বীরসিংহ।
‘আমার অত খিদে নেই। বলা-কওয়া ছাড়া হঠাৎ কারও বাড়ি যেতে ভালা লাগে না। তা ছাড়া আমরা দুজনে একসঙ্গে গেলে খেতে পাব কিনা সন্দেহ। এক কাজ করো, তুমি আগে গিয়ে খেয়ে এসো। তারপর দেখা যাবে’- বলল জ্ঞানপ্রকাশ।
আসল ব্যাপার হলো, জ্ঞানপ্রকাশ ইচ্ছা করে বীরসিংহের সঙ্গে যায়নি। কারণ বীরসিংহ সবার সঙ্গে ঝগড়া করে। আর খিদে পেলে ওর কোনো জ্ঞান থাকে না। মারামারিও করতে পারে।
জ্ঞানপ্রকাশ ভালোভাবেই জানত, ওর সঙ্গে গেলে ভাত তো দূরের কথা, জলও খেতে পাবে না। সেই জন্যই বীরসিংহকে একাই যেতে বলল গ্রামে।
গ্রামে ঢুকেই বীরসিংহ এক চাষিকে দেখতে পেল। ওরা দুপুরের খাবার খাচ্ছিল। বীরসিংহ তাদের সামনে গিয়ে বলল, ‘খিদে পেয়েছে, আমাকেও খেতে দাও।’ জোর করে যেন দাবি করছে সে।
চাষি আর চাষির বউ লোকটার চোটপাট দেখে তো অবাক!
‘হাঁ করে দেখছ কী? তোমাদেরই বলছি। তাড়াতাড়ি খেতে দাও।’ বীরসিংহ চেঁচিয়ে উঠল। এমনভাবে বলল যেন ওদের খাবারগুলো আসলে বীরসিংহের।
‘এত মেজাজ দেখাচ্ছ কেন? তুমি কি আমাদের আত্মীয়? যাও, ভাগো এখান থেকে’- বলল চাষি।
‘এত সাহস তোমার? খেতে দেবে না। আমার হাতের লাঠিটা দেখছ? খাবার না দিলে পিটিয়ে বারোটা বাজিয়ে দিব।’ বীরসিংহ হুংকার দিল।
ওরা দুজনে কথা-কাটাকাটি করছে, এমন সময় চাষির বউ জানালা দিয়ে বেরিয়ে ১০-১২ জনকে ডেকে আনল।
ওদের দেখে বীরসিংহ আরও ক্ষেপে গেল। লাঠি দিয়ে যেই সবাইকে মারতে গেল, অমনি সবাই বীরসিংহকে ধরে আচ্ছামতো পেটাল।
ঘণ্টাখানেক পর জ্ঞানপ্রকাশের কাছে ফিরে এলো সে।
সব কথা শুনে জ্ঞানপ্রকাশ বলল, ‘তুই এই গাছের নিচে বস। আমি এক ঘণ্টার মধ্যে খাবার আনব। তারপর দুজনে মিলে খাব।’
জ্ঞানপ্রকাশও সেই কৃষকের বাড়ি গেল। বীরসিংহকে তাড়ানোর পর তখনও সে ব্যাপারে আলোচনা করছিল গ্রামের লোকজন। এমন সময় জ্ঞানপ্রকাশ গিয়ে খাবার দিতে বলে।
কৃষক রেগে বলল, ‘খাবার-দাবার কিছু হবে না। যাও, না হলে লাঠি খেতে হবে।’
‘আমি ভাত খেতে চাই ঠিকই, কিন্তু তাই বলে লাঠি খেতে চাই না।’ বলল জ্ঞানপ্রকাশ।
তার কথা শুনে সবাই হাসল।
জ্ঞানপ্রকাশ বলল, ‘শুনেছি, এই গ্রামের লোকজন খুব বনেদী। অতিথির আপ্যায়ন করতে ভালোবাসে। যাক সে কথা, আপনার হাঁড়ি আর জল দিলে আমি আপনাদের জন্য চমৎকার একটা খাবার রান্না করে খাওয়াতে পারব।’
গ্রামের লোকের মনে কৌতূহল জাগল। জ্ঞানপ্রকাশ কিষানের কাছ থেকে হাঁড়ি আর জল পেল। একটা গাছের নিচে তিনটি ইট বসিয়ে উনুন বানাল।
এদিক-ওদিক থেকে কয়েকটা কাঠ কুড়িয়ে উনুন ধরাল। উনুনের ওপর জলভর্তি হাঁড়ি বসিয়ে পকেট থেকে একটি পাথরের টুকরা বের করে সেই হাঁড়িতে ফেলল।
ওর এই কাণ্ডকারখানা সবাই দেখল। কিছুক্ষণ পরো ওই হাঁড়ির গরম জল কয়েক ফোঁটা মুখে দিয়ে সুস্বাদু কোনো কিছু খাবার মতো ভঙ্গি করল। বলল, ‘চমৎকার হয়েছে, এতে দু-একটা আলু পড়লে আরও স্বাদ হতো।’
ওখানে যারা ছিল, তাদের মধ্য থেকে একজন দু-তিনটি আলু আনল। ওই আলু হাঁড়িতে দিয়ে কিছুক্ষণ পর সেই জল চেখে জ্ঞানপ্রকাশ বলল, ‘বাহ! চমৎকার হয়েছে! এতে যদি দু-মুঠো চাল পড়ত, তাহলে আরও জমত!’
এভাবে এক এক করে চাল, তরকারি সবই এলো।
গ্রামের ছেলে-বুড়ো সবাই জ্ঞানপ্রকাশকে ঘিরে দাঁড়িয়ে আছে। সব শেষে আবার ওই রান্না করা জিনিস মুখে দিয়ে জ্ঞানপ্রকাশ বলল, ‘এ-হে-হে, মস্ত বড় ভুল হয়ে গেছে। নুন পড়ল না।’
তৎক্ষণাৎ একজন ছুটে গিয়ে নুন আনল।
রান্না শেষে কলাগাছের পাতায় খাবার নিয়ে জ্ঞানপ্রকাশ চলে গেল।
দুই বন্ধু পাতায় মোড়ানো খাবার পেট পুরে খেল।
গল্পের শিক্ষা: শক্তি দিয়ে যে কাজ করা সম্ভব নয়, বুদ্ধি দিয়ে সেটা করা সম্ভব।
আরও পড়ুন:এক লোককে থানায় ধরে আনা হলো।
ওসি: আপনাকে আজ রাতে থানায় থাকতে হবে।
ভদ্রলোক: চার্জ কী?
ওসি: কোনো চার্জ দিতে হবে না, ফ্রি।
-
বন্ধুরা, চাইলে তোমরাও আমাদের কাছে জোকস লিখে পাঠাতে পারো। পাঠানোর ঠিকানা: [email protected]
আরও পড়ুন:
গরিব চাষা, তার নামে মহাজন নালিশ করেছে। বেচারা কবে তার কাছে ২৫ টাকা নিয়েছিল, সুদে-আসলে তা এখন ৫০০ টাকায় দাঁড়িয়েছে। চাষা অনেক কষ্টে ১০০ টাকা জোগাড় করেছে; কিন্তু মহাজন বলছে, '৫০০ টাকার এক পয়সাও কম নয়; দিতে না পারো তো জেলে যাও।' সুতরাং চাষার আর রক্ষা নাই।
এমন সময় শামলা মাথায় চশমা চোখে তুখোড় বুদ্ধি উকিল এসে বললেন, 'ওই ১০০ টাকা আমায় দিলে, তোমার বাঁচবার উপায় করতে পারি।'
চাষা তার হাতে ধরল, পায়ে ধরল, বলল, 'আমায় বাঁচিয়ে দিন।'
উকিল বললেন, "তবে শোন, আমার ফন্দি বলি। যখন আদালতের কাঠগড়ায় গিয়ে দাঁড়াবে, তখন বাপু হে কথাটথা কয়ো না। যে যা খুশি বলুক, গাল দিক আর প্রশ্ন করুক, তুমি তার জবাবটি দেবে না- খালি পাঁঠার মতো 'ব্যা- ' করবে। তা যদি করতে পারো, তা হলে আমি তোমায় খালাস করিয়ে দেব।"
চাষা বলল, 'আপনি কর্তা যা বলেন, তাতেই আমই রাজি।'
আদালতে মহাজনের মস্ত উকিল, চাষাকে এক ধমক দিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, 'তুমি সাত বছর আগে ২৫ টাকা কর্জ নিয়েছিলে?'
চাষা তার মুখের দিকে চেয়ে বলল, 'ব্যা- '।
উকিল বললেন, 'খবরদার!- বল, নিয়েছিলি কি না।'
চাষা বলল, 'ব্যা- '।
উকিল বললেন, 'হুজুর! আসামির বেয়াদবি দেখুন।'
হাকিম রেগে বললেন, 'ফের যদি অমনি করিস, তোকে আমই ফাটক দেব।'
চাষা অত্যন্ত ভয় পেয়ে কাঁদ কাঁদ হয়ে বলল, 'ব্যা- ব্যা- '।
হাকিম বললেন, 'লোকটা কি পাগল নাকি?'
তখন চাষার উকিল উঠে বললেন, "হুজুর, ও কি আজকের পাগল- ও বহুকালের পাগল, জন্ম-অবধি পাগল। ওর কি কোনো বুদ্ধি আছে, না কাণ্ডজ্ঞান আছে? ও আবার কর্জ নেবে কি! ও কি কখনও খত লিখতে পারে নাকি? আর পাগলের খত লিখলেই বা কী? দেখুন দেখুন, এই হতভাগা মহাজনটার কাণ্ড দেখুন তো! ইচ্ছে করে জেনেশুনে পাগলটাকে ঠকিয়ে নেওয়ার মতলব করেছে। আরে, ওর কি মাথার ঠিক আছে? এরা বলেছে, 'এইখানে একটা আঙ্গুলের টিপ দে'- পাগল কি জানে, সে অমনি টিপ দিয়েছে। এই তো ব্যাপার!"
দুই উকিলে ঝগড়া বেধে গেল।
হাকিম খানিক শুনেটুনে বললেন, 'মোকদ্দমা ডিসমিস্।'
মহাজনের তো চক্ষুস্থির। সে আদালতের বাইরে এসে চাষাকে বললেন, 'আচ্ছা, না হয় তোর ৪০০ টাকা ছেড়েই দিলাম- ওই ১০০ টাকাই দে।'
চাষা বলল, 'ব্যা-!'
মহাজন যতই বলেন, যতই বোঝান, চাষা তার পাঁঠার বুলি কিছুতেই ছাড়ে না। মহাজন রেগেমেগে বলে গেল, 'দেখে নেব, আমার টাকা তুই কেমন করে হজম করিস।'
চাষা তার পোঁটলা নিয়ে গ্রামে ফিরতে চলেছে, এমন সময় তার উকিল এসে ধরল, 'যাচ্ছ কোথায় বাপু? আমার পাওনাটা আগে চুকিয়ে যাও। ১০০ টাকায় রফা হয়েছিল, এখন মোকদ্দমা তো জিতিয়ে দিলাম।'
চাষা অবাক হয়ে তার মুখের দিকে তাকিয়ে বলল, 'ব্যা-।'
উকিল বললেন, 'বাপু হে, ওসব চালাকি খাটবে না- টাকাটি এখন বের করো।'
চাষা বোকার মতো মুখ করে আবার বলল, 'ব্যা-।'
উকিল তাকে নরম গরম অনেক কথাই শোনাল, কিন্তু চাষার মুখে কেবলই ঐ এক জবাব! তখন উকিল বলল, 'হতভাগা গোমুখ্যু পাড়া গেঁয়ে ভূত- তোর পেটে অ্যাতো শয়তানি, কে জানে! আগে যদি জানতাম তা হলে পোঁটলাসুদ্ধ টাকাগুলো আটকে রাখতাম।'
বুদ্ধিমান উকিলের আর দক্ষিণা পাওয়া হলো না।
আরও পড়ুন:এক ফটো সাংবাদিক রাস্তায় বাচ্চাদের ছবি তুলছেন। সবাইকে একসঙ্গে বসিয়ে বললেন, স্মাইল।
ইসমাইল: জি স্যার?
সাংবাদিক: আরে তুমি দাঁড়াচ্ছ কেন? বসো।
ইসমাইল: ঠিক আছে।
সাংবাদিক: ওকে রেডি, স্মাইল।
ইসমাইল: ডাকলেন কেন স্যার?
সাংবাদিক: আরে বাবা তোমার সমস্যাটা কী? স্মাইল বললেই দাঁড়িয়ে যাচ্ছ কেন?
ইসমাইল: আমি তো বসেই আছি। আপনি আমার নাম ধরে ডাকেন বলেই দাঁড়িয়ে যাই।
-
বন্ধুরা, চাইলে তোমরাও আমাদের কাছে জোকস লিখে পাঠাতে পারো। পাঠানোর ঠিকানা: [email protected]
আরও পড়ুন:মেয়ে: আলুর তরকারিটার স্বাদ কেমন হয়েছে?
বাবা: দারুণ স্বাদ হয়েছে। তুই রান্না করেছিস নাকি?
মেয়ে: না, আলু আমি ছিলেছি।
-
বন্ধুরা, চাইলে তোমরাও আমাদের কাছে জোকস লিখে পাঠাতে পারো। পাঠানোর ঠিকানা: [email protected]
আরও পড়ুন:
স্ত্রী: কি ব্যাপার, আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে কী দেখছ?
ভুলোমনা স্বামী: এই ভদ্রলোককে খুব চেনা চেনা লাগছে, কিন্তু কোথায় দেখেছি ঠিক মনে করতে পারছিনা।
-
বন্ধুরা, চাইলে তোমরাও আমাদের কাছে জোকস লিখে পাঠাতে পারো। পাঠানোর ঠিকানা: [email protected]
এক যুবক নতুন চাকরি পেয়েছে। প্রথম দিন অফিসে এসেই কিচেনে ফোন করে বলল, ‘এখনি আমাকে এককাপ কফি দিয়ে যাও! জলদি!’
অন্যদিক থেকে আওয়াজ এল, ‘গর্দভ, তুমি কার সাথে কথা বলছ জান?’
যুবকটি থতমত এবং ভীত হয়ে বলল, ‘না! আপনি কে?’
‘আমি এই কোম্পানির ম্যানেজিং ডিরেক্টর’, রাগী গলায় উত্তর এল।
যুবকটি বলল, ‘আর আপনি জানেন কার সঙ্গে কথা বলছেন?’
‘না’, ওপার থেকে উত্তর এল।
‘বাবারে! বাঁচা গেছে’, বলে যুবকটি ফোন রেখে দিল।
-
বন্ধুরা, চাইলে তোমরাও আমাদের কাছে জোকস লিখে পাঠাতে পারো। পাঠানোর ঠিকানা: [email protected]
আরও পড়ুন:এক অভিনেতা তার ভক্তদের অটোগ্রাফ দিতে দিতে বিরক্ত হয়ে শেষে এক ব্যক্তির অটোগ্রাফ বুকে গাধার ছবি এঁকে দিলেন।
ভক্ত: স্যার, আমি তো আপনার অটোগ্রাফ চেয়েছিলাম, ফটোগ্রাফ নয়।
-
বন্ধুরা, চাইলে তোমরাও আমাদের কাছে জোকস লিখে পাঠাতে পারো। পাঠানোর ঠিকানা: [email protected]
মন্তব্য