আমাদের বন্ধুরা সবাই গ্রাম ভালোবাসে।
তাই তো সবাই গ্রামের ছবি আঁকে।
আজকের ছবিটা দেখো।
খুব সুন্দর একটা গ্রাম।
রংবেরঙের তালগাছের নিচে ছোট্ট দুটি বাড়ি।
বাড়ির সামনে একটা দিঘি।
দিঘির পানিতে তালগাছের ছায়া পড়েছে।
দূরে দেখা যাচ্ছে গাছের সারি।
নীল রঙের গাছ, লাল রঙের গাছ, সবুজ রঙের গাছ...আরও অনেক রকমের রং ছড়িয়ে আছে সেখানে।
এই গ্রামটার নাম কী হতে পারে বল তো?
আমার মনে হয়, এর নাম রঙের গ্রাম।
তবে সঠিক উত্তর দিতে পারবে মুইদ।
কারণ এই চমৎকার ছবিটি সেই এঁকেছে।
মো. মুইদ আল হাসান আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে।
বন্ধুরা, চাইলে তোমরাও ছবি এঁকে আমাদের কাছে পাঠাতে পারো। লিখতে পারো ছড়া, গল্প কিংবা কৌতুক। লেখার সঙ্গে অবশ্যই তোমার নাম, স্কুলের নাম, কোন ক্লাসে পড়ো এবং আব্বু বা আম্মুর ফোন নম্বর দেবে।
পাঠানোর ঠিকানা: [email protected]
আরও পড়ুন:যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের একটি বিচারাধীন মামলার নথি থেকে এজাহারের কপি রহস্যজনকভাবে গায়েব হয়ে গেছে। আদালতের নথি থেকে গুরুত্বপূর্ণ এই কাগজ হারিয়ে যাওয়ার ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে আমলে নিয়ে মামলার বেঞ্চ সহকারী হুমায়ুন কবির ও আসামিপক্ষের আইনজীবী আহসান হাবিব মুকুলকে শোকজ করেছেন বিচারক। তাদের তিন কার্যদিবসের মধ্যে এ বিষয়ে ব্যাখা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আদালত সূত্র জানায়, ঘটনাটি ঘটে গত ২২ জুন যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতে। ওই দিন মামলাটির (এসসি-১৬৬৯/২০১৮) সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য নির্ধারিত ছিল। আদালতে আসামি, রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি ও আসামিপক্ষের আইনজীবী—সবাই উপস্থিত ছিলেন।
সাক্ষ্যগ্রহণ চলাকালে বিচারক মো. সালেহুজ্জামান মামলার নথি পর্যবেক্ষণ করে দেখতে পান, নথিতে মামলার এজাহারের কপি নেই। তাৎক্ষণিকভাবে তিনি আদালতের বেঞ্চ সহকারীকে বিষয়টি অবগত করলে তিনি জানান, সাক্ষ্য গ্রহণের আগে আইনজীবী আহসান হাবিব মুকুল তার কাছ থেকে নথি নিয়ে গিয়েছিলেন এবং এজাহার দেখে প্রয়োজনীয় তথ্য লিখে নিয়েছিলেন। এরপর তিনি আবার নথি বিচারকের কাছে জমা দেন।
এরপর এজলাসেই বিচারক আইনজীবীর কাছে জিজ্ঞাসা করলে তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে মন্তব্য করেন। ফলে বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। জেলা আইনজীবী সমিতির নেতারাসহ সিনিয়র আইনজীবীরা এজলাসে হাজির হন। একপর্যায় বিচারক ওই দুইজনকে শোকজ করে আগামী ১৩ আগস্ট মামলার পরবর্তী দিন ধার্য করেন।
বেঞ্চ সহকারী হুমায়ুন কবির বলেন, ‘বিচারক এজলাসে ওঠার আগে আইনজীবী মামলার নথি নিয়েছিলেন। পরে ফেরত দেন। আমি নিজে নথিতে কোনো হেরফের করিনি। আইনজীবী কিংবা আইনজীবীর সহকারীর মাধ্যমে এই ঘটনা ঘটতে পারে।’
অন্যদিকে, আইনজীবী আহসান হাবিব মুকুল জানান, তিনি নথি নিয়েছিলেন ঠিকই, তবে বিচারক এজলাসে চলে আসায় তা যথাযথভাবে বেঞ্চ সহকারীর কাছে ফিরিয়ে দিয়েছেন। তিনি আসামির চালান কপি থেকে তথ্য নিয়েছেন। এজাহার সংক্রান্ত বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না বলেও দাবি করেন।
যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এম এ গফুর বলেন, ‘ঘটনাটি আমাদের নজরে এসেছে। একজন আইনজীবী এমন কাজ করতে পারেন না। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে পর্যবেক্ষণ করছি।’
আদালত ও আইনজীবী সমিতি সূত্র আরও জানায়, আদালতে থাকা মামলার মুল কপি থেকে মামলার এজাহারের কপি সরিয়ে নিয়ে বাড়তি সুবিধা নেওয়ার সুযোগ নেই। এ ছাড়া এজাহার কপি হারিয়ে গেলেও মামলার বিচারের ক্ষেত্রে প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা নেই। কারণ ওই মামলার এজাহারের ফটোকপি রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলির কাছে সংরক্ষিত থাকে। এর বাইরেও অনেক মাধ্যমে মামলার এজাহারের কপি পাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
তবে, মুল নথিতে এজাহারের কপি না থাকাটা সমীচীন নয়। এ বিষয়টি অবশ্যই খতিয়ে দেখা প্রয়োজন বলে জানায় সূত্র।
বাংলাদেশ আজ জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে জর্জরিত। ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, তাপপ্রবাহ এবং মরুকরণের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ এখন নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। এমন পরিস্থিতিতে পরিবেশ রক্ষা ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির গুরুত্ব অপরিসীম। দেশের বেসরকারি খাতের অন্যতম বৃহৎ বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি ‘বনায়ন’ এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় গত ৪৫ বছর ধরে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
জাতিসংঘ পরিবেশ কর্মসূচির (ইউএনইপি) নেতৃত্বে ৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস উদযাপিত হয়, যা সরকার ও অন্যান্য সকল অংশীদারদের জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব রোধে অনুপ্রাণিত ও সচেতন করতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে। বিশ্ব পরিবেশ দিবস উদযাপনের অংশ হিসেবে ‘বনায়ন’ দেশজুড়ে লক্ষাধিক চারা বিতরণ করবে।
১৯৮০ সালে যাত্রা শুরু করা ‘বনায়ন’ পরিবেশের সুরক্ষা ও বৈচিত্র্য নিশ্চিত করতে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এই কর্মসূচির আওতায় এখন পর্যন্ত ১৩ কোটিরও অধিক ফলজ, বনজ ও ঔষধি গাছের চারা বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও, গড়ে তোলা হয়েছে ১১৯টি ঔষধি গাছের বাগান। ঢাকা, ময়মনসিংহ, মানিকগঞ্জ, টাঙ্গাইল, রংপুর, রাজশাহী, লালমনিরহাট, নাটোর, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, মেহেরপুর, যশোর, চট্টগ্রাম, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, কক্সবাজার ও রাঙ্গামাটি সহ দেশের মোট ২৪টি জেলায় ‘বনায়ন’-এর কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। এই উদ্যোগ বার্ষিক ২৫,০০০ এরও অধিক সুবিধাভোগীর কাছে পৌঁছেছে, যা দেশের পরিবেশ পুনরুদ্ধারে এক বিশাল অবদান রাখছে।
রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির এলাকাতেও বনায়নের কার্যক্রম প্রশংসনীয়। প্রায় ১১ লাখ উদ্বাস্তু মানুষের আশ্রয়ের জন্য কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়ায় দেড় হাজার হেক্টর বনভূমি উজাড় হয়েছে, ধ্বংস হয়েছে পাহাড়। এই বিশাল ক্ষতির মুখে, সরকার, রিফিউজি, রিলিফ এবং রিপ্যাট্রিয়েশন কমিশন (আরআরআরসি), ডব্লিউএফপি, এফএও, ব্র্যাক, কারিতাস এবং ‘বনায়ন’ প্রকল্প একসাথে কাজ করছে অত্র এলাকায় সবুজের ছোয়া ফিরিয়ে আনতে। ২০১৮ সাল থেকে এখন পর্যন্ত বনায়ন প্রকল্পের আওতায় কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ৩৩.৭ হেক্টর ব্লক এলাকা ও ১৮.৭ কিলোমিটার রাস্তার পাশ জুড়ে ৩ লাখেরও বেশি চারা রোপণ ও রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়েছে।
জলবায়ু বিপর্যয় মোকাবিলায় ধারাবাহিক প্রচেষ্টা এবং পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় ইতিবাচক ভূমিকা রাখার স্বীকৃতি হিসেবে ‘বনায়ন’ কর্মসূচি বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার অর্জন করেছে। এর মধ্যে রয়েছে পাঁচবার প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরস্কার, প্রধান উপদেষ্টার জাতীয় পুরস্কার, এসডিজি ব্র্যান্ড চ্যাম্পিয়নশিপ অ্যাওয়ার্ড ২০২৩, ‘এন্টারপ্রাইজ এশিয়া’ থেকে গ্রিন লিডারশিপের জন্য ‘এশিয়া রেসপনসিবল অন্ট্রাপ্রনারশিপ অ্যাওয়ার্ড’ এবং এসডিজি ইনক্লুশন ক্যাটাগরিতে ‘বাংলাদেশ ইনোভেশন অ্যাওয়ার্ড ২০২১’।
একটি সম্ভাবনাময় আগামী নিশ্চিত করতে ‘বনায়ন’ কর্মসূচির নিরলস প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব রোধে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসহ সকল অংশীদারের সাথে একযোগে কাজ করার এই অঙ্গীকার বাংলাদেশকে একটি সবুজ ও টেকসই ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। বিগত বছরের ধারাবাহিকতায় এবছরেও বনায়ন ৩০ লাখেরও অধিক চারা বিতরণ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
গত কয়েক মাস ধরে উজান থেকে বয়ে আসা বন্যার পানি আর অতি বৃষ্টিতে মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার লেছড়াগঞ্জ ইউনিয়নের পদ্মার তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। অব্যাহত ভাঙনে এরই মধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে সুতালড়ী, আজিমনগর ও লেছড়াগঞ্জ ইউনিয়নের ঘরবাড়ি ও কয়েকশ বিঘা ফসলি জমিসহ বিভিন্ন স্থাপনা। এরই মধ্যে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে লেছড়াগঞ্জ ইউপির ২নং ওয়ার্ডের হরিহরদিয়া, শ্রীলমপুর গ্রামসহ আশপাশের এলাকা। অসহায় হয়ে ভাঙন আতঙ্কে রয়েছে আশ্রয়নের ঘরে থাকা ১৪০টি পরিবার। স্থানীয়দের ভাষ্যমতে জানা যায়, গত ২৪ বছর ধরে জরাজীর্ণ অবস্থায় আশ্রয়নের ঘরে থাকা বাসিন্দাদের খবর নেয়নি কেউ।
পদ্মার প্রায় ২০০ মিটার কাছে এই আশ্রয়নের ঘরে ভাঙন আতঙ্কে অশ্রুসিক্ত নয়নে ঘুম নেই কারো। ভাঙন আতঙ্কে রয়েছে জয়পুর নতুন হাটবাজার, মসজিদ, কমিউনিটি ক্লিনিকসহ আরও হাজার পরিবার।
পদ্মার ভয়ংকর থাবায় সবকিছু হারিয়ে বাপ-দাদার রেখে যাওয়া মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকু রক্ষায় স্থানীয় নেতাকর্মীসহ সরকারের সহায়তা চেয়েছেন তারা।
সরজমিনে দেখা যায়, হরিরামপুর উপজেলার তিন ইউনিয়নের মধ্যে লেছড়াগঞ্জ ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর এলাকায় ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। ভাঙনের হাত থেকে শেষ রক্ষা পেতে বাড়িঘর সরিয়ে নিচ্ছেন এখানকার বাসিন্দারা। কিন্ত মাথা গোজার ঠাইটুকু মিলছে না করো।
উপজেলার লেছড়াগঞ্জ ইউনিয়নের হরিহরদিয়া গ্রামের আঁখি বেগম জানান, আমার স্বামী রহিজ উদ্দিন ৫ বিঘা জমিতে চাষ করে ভাল ফলন ওইছিলো। এহন চোহের পলকে চইলা গেলো। এহন আমরা কি করুম?
আশ্রয়নে থাকা মেছের জানান, ‘নদীভাঙন বাড়ির কাছে চলে আসায় ঘর সরিয়ে কোথায় নেব? ভাইবা পাইতাছি না। পাশে নটাখোলা এলাকায় এক জায়গায় ৩৮ একর, আরেক জায়গায় ৩৫ একর জায়গা হার সোসাইটি নামের এনজিওর দখলে আছে। কিভাবে তারা ৭৩ একর জায়গা তাদের দখলে আছে, জানি না, তবে সেখানে আপাতত অস্থায়ী হলেও থাকার জায়গা করে দিলে অনেক উপকার হতো। যেভাবে ভাঙন শুরু হয়েছে মনে হয় বাপ-দাদার রেখে যাওয়া ভিটেমাটিটুকুও থাকবে না।’
একই এলাকার আছিয়া বেগম বলেন, ‘এইবারের পদ্মার ভাঙনে শেষ সম্বল যাওয়ার পথে। লোকমুখে শুনছি, সাবেক সংসদ সদস্য, দানবীর মুন্নু মিয়ার সুযোগ্য কন্যা, জেলা বিএনপি আহ্বায়ক রিতা আপা কাউরে ফিরায়ে দেয় না। রিতা আপার কাছে আমগো দাবি- আমগো মাথা গোজার ঠাঁই করে দেন। আমরা পরান ভইরা আপার জন্য দোয়া করুম।
এরমধ্যে মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আফরোজা খানম রিতার নির্দেশে ভাঙন কবলিত এলাকায় পরিদর্শন করে ভাঙন আতঙ্কে থাকা পরিবারের অনত্র সরিয়ে নেয়া এবং পাশে থাকার ঘোষণা দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
হরিরামপুর উপজেলা বিএনপি সভাপতি হান্নান মৃধা জানান, মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির সংগ্রামী আহ্বায়ক আফরোজা খানম রিতা আপার নির্দেশে আমরা পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। বিএনপি সব সময় অসহায় মানুষের পাশে থাকে। তাদের সুখ দুখের ভাগিদার আমরা সবাই।
হরিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার কোহিনুর আক্তার বলেন, আমরা ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।
বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারে এবার বাণিজ্যিক দুই প্রতিষ্ঠান মিলেমিশে বালিয়াড়ি কেটে তৈরি হয়েছে একটি কৃত্রিম খাল। প্রাকৃতিকভাবে পানি চলাচলের স্বাভাবিক পথ বন্ধ করে একটি বাঁধ তৈরি পর কৃত্রিম খালটি খনন করা হয়েছে।
এতে অবিচ্ছিন্ন সৈকত বিচ্ছিন্ন হওয়ার পাশাপাশি বালিয়াড়িতে তীব্র ভাঙ্গনের আশংকা করা হচ্ছে। একই সঙ্গে সৈকত জুড়ে গর্ত ও গুপ্তখাল সৃষ্টি হয়ে পর্যটকদের নিরাপদ সমুদ্রস্নানে প্রতিবন্ধকতারও আশংকা রয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এছাড়া কৃত্রিম খাল দিয়ে হোটেল-মোটেল জোনের ময়লাযুক্ত পানি সরাসরি সাগরে মিশে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ ও প্রতিবেশ; এমনটা মন্তব্য পরিবেশবাদীদের।
গত মঙ্গলবার কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের কলাতলী পয়েন্টসংলগ্ন ডিভাইন ইকো রিসোর্টের পাশ দিয়েই দেখা মিলেছে কৃত্রিম খালটির। আশে পাশের পর্যটন সংশ্লিষ্ট কয়েকজন ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, হোটেল-মোটেল জোনের কিছু অংশের পানি ডিভাইন ইকো রিসোর্টের পিছনের সীমানার পাশ দিয়ে প্রাকৃতিকভাবে তৈরি ছড়া দিয়ে চলাচল করত। ওই ছড়ার পানি প্যাসিফিক বিচ লাউঞ্জ ক্যাফের সামনে দিয়ে সাগরে গিয়ে মিশত। কিন্তু বর্ষা মৌসুমে প্যাসিফিক বিচ লাউঞ্জ ক্যাফে মালিক পক্ষ ছড়াটি বন্ধ করে বালির বস্তা দিয়ে তৈরি করা হয় একটি বাঁধ। এতে বাঁধের কারণে ডিভাইন ইকো রিসোর্টের সামনে পানি জমে বড় ও গভীর ডোবার সৃষ্টি হয়। পরে জমে থাকা নিষ্কাষনের জন্য প্রতিষ্ঠানটির দক্ষিণ-পশ্চিম সীমানার কোণ ঘেঁষে বালিয়াড়ি কেটে তৈরি করা হয় একটি কৃত্রিম খাল। এতে খালটি দিয়ে জমে থাকা পানির পাশাপাশি ভারী বর্ষণে ঢলের পানি খালটি দিয়ে প্রতিনিয়ত সাগরে মিশে যাচ্ছে। আর জোয়ার-ভাটার সময় পানি যাতায়তের কারণে খালটির দিন দিন পরিধি বাড়ছে। এতে ক্রমাগত বিচ্ছিন্ন হতে যাচ্ছে অবিচ্ছিন্ন সৈকত। প্যাসিফিক বিচ লাউঞ্জ ক্যাফে ও ডিভাইন ইকো রিসোর্টের নিয়োগ করা শ্রমিকরা এই কৃত্রিম খালটি খনন করেছেন বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
কক্সবাজার বন ও পরিবেশ সংরক্ষণ পরিষদের সভাপতি দীপক শর্মা দীপু জানিয়েছেন, দুইটি প্রতিষ্ঠান ব্যক্তিগত স্বার্থে এমন বিস্ময়কর ঘটনাটি ঘটিয়েছে। এতে হোটেল-মোটেল জোনের ময়লাযুক্ত পানি প্রতিনিয়ত সাগরে মিশে যাওয়ার পাশাপাশি ভারী বর্ষণের খালটি বড় আকার ধারণ করছে। এ খালের কারণে পর্যটকদের নিরাপদ সমুদ্র স্নানের প্রতিবন্ধকতা তৈরি ছাড়াও প্রাণহানির আশংকা দেখা দিতে পারে।
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে দায়িত্ব পালনকারি সী সেফ লাইফ গার্ড সংস্থার সিনিয়র কর্মী মোহাম্মদ শুক্কুর জানিয়েছেন, সম্প্রতি বর্ষায় সৈকতের বিভিন্ন স্থানে গর্ত এবং গুপ্তখাল সৃষ্টি হয়েছে। এতে সমুদ্র স্নানে যাওয়া ৮ জন পর্যটকের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। স্বাভাবিকভাবে সৃষ্ট গর্ত ও গুপ্তখাল চিহ্নিত করা খুবই কষ্ঠের।
ডিভাইন ইকো রিসোর্টের মালিকপক্ষের প্রতিনিধি মোহাম্মদ সেলিম জানান, প্রাকৃতিকভাবে যে পথে পানি নেমে যেত যেখানে একটি বাঁধ তৈরি হয়েছে। এতে তাদের প্রতিষ্ঠানের সীমানা প্রচীন ভাঙে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। এখন বিকল্প পথে পানি যাচ্ছে। এটি কৃত্রিমভাবে খনন করা হলেও তারা এটার সঙ্গে জড়িত নন। কারা করেছে তাও জানেন না।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহ্উদ্দিন জানান, বিষয়টি দেখভালের দায়িত্ব মূলত কক্সবাজার পৌরসভা ও উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের। তারপরও অবৈধ পন্থায় কেউ কিছু খোঁজ খবর নিয়ে জেলা প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে স্বর্ণ ব্যবসায়ীর বাড়িতে দূর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। সশস্ত্র ডাকাতদল বাড়ির লোকজনকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে নগদ ৪ লক্ষ ২০ হাজার টাকা, ১ভরি স্বর্ণালংকার ও ১০০ ভরি রুপা লুট করে নেয়। সোমবার (২৩ জুন) দিবাগত রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার ফিলিপনগর ইউনিয়নের সিরাজনগর বেলতলীপাড়া গ্রামের স্বর্ণ ব্যবসায়ী হায়দার আলীর বাড়িতে এ দূর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, সিরাজনগর বেলতলীপাড়া গ্রামের স্বর্ণ ব্যবসায়ী হায়দার আলী পাশর্^বতী বাহিরমাদী বাজারে তার স্বর্ণের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা দোকান থেকে ব্যবসার নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে রাত সাড়ে ১০টার দিকে বাড়িতে যান। এসময় পূর্ব থেকে ওৎ পেতে থাকা ৩-৪ জনের একদল সশস্ত্র ডাকাত বাড়িতে প্রবেশ করে ব্যবসায়ী হায়দার আলীর মাথায় পিস্তুল ঠেকিয়ে ও তার স্ত্রীসহ পরিবারের লোকজনকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ব্যাগভর্তি নগদ ৪ লক্ষ ২০ হাজার টাকা, ১ভরি স্বর্ণালংকার ও ১০০ ভরি রুপা লুট করে নেয়। বাড়ির লোকজন চিৎকার ও কান্নাকাটি করতে গেলে ডাকাতদল তাদের প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে ঘটনাস্থল থেকে নির্বিগ্নে চলে যায়।
এ ঘটনায় স্বর্ণ ব্যবসায়ী হায়দার আলী আজ মঙ্গলবার বিকালে দৌলতপুর থানায় অভিযোগ দিয়েছেন।
ডাকাতির ঘটনার বিষয়ে দৌলতপুর থানার ওসি মো. নাজমুল হুদা বলেন, ডাকাতি ঠিক বলা যাবেনা, চুরির ঘটনা ঘটেছে। কিছু জিনিসপত্র নিয়ে গেছে। আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম, তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শ্যামনগরসহ আশপাশের এলাকায় কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে প্রকৃতির এসি খ্যাত ঐতিহ্যবাহী মাটির তৈরি দেয়াল ঘর। উপজেলা সবত্র গ্রামগুলোতে গত কয়েক বছর পুর্বেও মাটির ঘর বা দেয়াল ঘরের বাড়ি ছিল। এসব দেয়াল ঘর বা মাটির ঘরে প্রচণ্ড গরমের মধ্যেও ঘরের ভেতরে বেশ আরামদায়ক ও শীতল আবেশ ছিল। এর বিপরিতে শীতের দিনে ঘরে গরমের পরিবেশ ছিল। কারণ হিসেবে দেখা গেছে, মাটির দেয়াল ঘর এর চতুরপাশ্বের ওয়াল প্রায় দুই থেকে তিন ফুট পুরো ও বিশেষ পক্রিয়ায় মাটির দিয়ে প্রলেপ দেয়ার কারনে এসব ঘরে শীতের বাতাশ বা রুদ্রের তাপ সহজে প্রবেশ করতে না পারায় গরমে শীতল ও শীতে গরম অনুভত হওয়ায় লোকজন বেশ আরামে বসবাস করেছেন। যদিও এটি মাটি দিয়ে তৈরি তারপরও এর নির্মানশৈলী কিন্তু মোটেই সহজ নয়। প্রথমে মাটি কেটে বড় গর্তে ফেলে এটিকে দলাই-মলাইয়ের পর বিশেষ প্রক্রিয়ায় পর্যায়ক্রমে পানি দিয়ে বেশ অনেকদিন কুপিয়ে কুপিয়ে মাটিকে একবারে আঠালো করে পচন পক্রিয়ায় কাচাকাছি নিয়ে অনেকটা তুলতুলে মন্ডার মত করে ঘরের নিদিষ্ট মাপের মধ্যে মাটির কয়েকফুট নিচ থেকে বসিয়ে বিরতি দিয়ে ঘর বানাতেন কারিগড়রা। পরে দেয়াল সাইজ মত কেটে প্রলেপ দিয়ে এটিকে সাজিয়ে তুলতেন। বিত্তবানরা এতে বিভিন্ন নকশা করাতেন। অনেকে মাটির দু-তলাও বানাতেন। এটি অনেক কষ্টকর কাজ ছিল, তবে ঘর বানানোর মেস্তরীর চাহিদাও ছিল ব্যাপক। এক সময় প্রায় সব শ্রেণীর লোকেরাই মাটির ঘরে বসবাস করতেন। অতি ধনাঢ্য লোকেরা টিনের ঘরে বসবাস করতেন। বর্তমানে কালের বিবর্তনে আধুনিকতার ছোঁয়ায় বিলুপ্তি পথে মাটির তৈরি ঘর। এর স্থানে উঠছে রড় রড় দালান বাড়ি। তবে গফরগাঁও উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে এখনো অনেক মাটির ঘর রয়েছে। এমনি ঘরে বাস করা ইমদাদুল হক টুটুল ও মর্জিনা দম্পত্তি সহ অনেকে জানান, এ ঘর অনেকটা এয়ারকন্ডিশনের মতো শীতে গরম থাকে ও গরমে ঠাণ্ডার আবেশে তারা বেশ আরামেই আছেন। প্রতি বছর মাটির সঙ্গে ধানের তুষ দিয়ে প্রলেপ দিলে এসব ঘর অনেক বছর (৪০-৫০)পর্যন্ত টিকে থাকে বলেও জানিয়েছেন। মাটির ঘর নির্মানেও বেশ খরচ হয়। বর্তমানে হোসেনপুর-গফরগাঁওসহ আশপাশের উপজেলার গ্রাম এলাকায় মাটির ঘর খুব কম দেখা যায়। এক সময় এ পেশায় অনেকেই জীবিকা নির্বাহ করতেন। বর্তমানে মানুষের আর্থ সামাজিক অবস্থার উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে জীবন মানের ও উন্নয়ন সাধিত হয়েছে, ফলে মাটির ঘরের স্থানে উঠেছে বড়-বড় ইমারত। এতে হারিয়ে যেতে বসেছে বাঙালিদের চিরচেনা ঐতিহ্যবাহী প্রকৃতির এয়ারকন্ডিশনখ্যাত মাটির ঘর।
বাংলাদেশের মুদ্রার মান দেশীয়ভাবে নির্ধারিত হবে এবং কোনো অযৌক্তিক কারণে এক পয়সাও অবমূল্যায়নের সুযোগ নেই। দুবাই থেকে আমাদের টাকার মান নির্ণয় হবে না বলে মন্তব্য করেছেন গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
তিনি বলেন, আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে, নইলে মধ্যস্বত্বভোগীরা সুযোগ নিতে পারে। বাংলাদেশের সম্ভাবনা সীমাহীন, তবে তা নষ্ট করার সুযোগও সীমাহীন।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর হোটেল ওয়েস্টিনে আয়োজিত গুগল পে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন গভর্নর।
অনুষ্ঠানে বক্তব্যে গভর্নর জানান, ব্যাংক খাতকে সঠিক পথে ফিরিয়ে আনতে আগামী জানুয়ারি থেকে ‘রিস্ক বেজ সুপারভিশন’ চালু করা হবে। ইতোমধ্যে ২০টি ব্যাংকে সুপারভিশন পরিচালনা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, এখানে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ছাড়া কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন সম্ভব নয়। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করাকে তিনি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান দায়িত্ব হিসেবে উল্লেখ করেন।
তার মতে, মূল্যস্ফীতি ধীরে ধীরে নিয়ন্ত্রণে আসছে, তবে সম্পূর্ণ স্বাভাবিক অবস্থায় যেতে আরো সময় লাগবে।
আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতা রক্ষার অংশ হিসেবে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে কয়েকটি ব্যাংককে একীভূত করার পরিকল্পনার কথাও জানান গভর্নর। তিনি আশ্বস্ত করেন, আমানতকারীদের কোনো ধরনের ক্ষতি হবে না। সবাই তাদের বর্তমান ব্যাংকে থেকেই সেবা নিতে পারবেন।
বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করল ‘গুগল পে’
অনুষ্ঠানে গুগলের ডিজিটাল পেমেন্ট সেবা ‘গুগল পে’র আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়েছে। গুগল, মাস্টারকার্ড এবং ভিসার সহায়তায় সেবা চালু করছে ‘সিটি ব্যাংক পিএলসি’, যা দেশের প্রথম কোনো ব্যাংক হিসেবে গুগল পে-র সঙ্গে যুক্ত হলো।
প্রথম পর্যায়ে কেবল সিটি ব্যাংকের ভিসা ও মাস্টারকার্ড গ্রাহকরাই গুগল ওয়ালেটে কার্ড সংযুক্ত করে গুগল পে ব্যবহার করতে পারবেন। পরবর্তী পর্যায়ে অন্যান্য ব্যাংক যুক্ত হলে সেবাটি আরো বিস্তৃত হবে।
গ্রাহকের হাতে আধুনিক ও নিরাপদ পেমেন্ট প্রযুক্তি
গুগল পে ব্যবহারে গ্রাহকেরা দেশে ও বিদেশে যেকোনো POS টার্মিনালে স্মার্টফোন ট্যাপ করেই লেনদেন সম্পন্ন করতে পারবেন, ফলে কার্ড বহনের প্রয়োজন হবে না।
গুগল পে কোনো ট্রানজেকশন ফি নেয় না। নিরাপত্তার জন্য কার্ডের পরিবর্তে ‘টোকেন’ ব্যবহার করে।
গুগল পেমেন্টসের গ্রুপ প্রোডাক্ট ম্যানেজার শাম্মী কুদ্দুস, সিটি ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান হোসেন খালেদ, সিইও মাসরুর আরেফিন, মার্কিন দূতাবাসের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত ট্র্যাসি জ্যাকবসন, মাস্টারকার্ড ও ভিসার দেশের শীর্ষ কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
সিটি ব্যাংকের সিইও মাসরুর আরেফিন বলেন, এই অংশীদারিত্ব বাংলাদেশের ভবিষ্যতমুখী ডিজিটাল পেমেন্ট ইকোসিস্টেম গঠনের প্রতি আমাদের প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন। গুগল পে চালুর মাধ্যমে সিটি ব্যাংক আবারও প্রমাণ করল যে, আমরা ডিজিটাল উদ্ভাবনের অগ্রদূত।
মন্তব্য