১
এক যে ছিল শিয়াল,
তা'র বাপ দিয়েছিল দেয়াল;
তা'র ছেলে সে, কম কিসে?
তা'রও হ'ল খেয়াল!
ইয়া-ইয়া গোঁফে ছাড়া দিয়া, শিয়াল পণ্ডিত শটীর বনে এক মস্ত পাঠশালা খুলিয়া ফেলিল।
চিঁচিঁ পোকা, ঝিঁঝিঁ পোকা, রামফড়িঙ্গের ছা,
কচ্ছপ, কেন্নো হাজার পা,
কেঁচো, বিছে, গুব্রে, আরসুলা, ব্যাং,
কাঁকড়া,- মাকড়া-এই এই ঠ্যাং!
শিয়াল পণ্ডিতের পাঠশালায় এত এত পড়ুয়া।
পড়ুয়াদের পড়ায়
পণ্ডিতের সাড়ায়,
শঁটীর বনে দিন-রাত হট্টগোল।
দেখিয়া শুনিয়া এক কুমীর ভাবিল, `তাই তো! সকলের ছেলেই লেখাপড়া শিখিল, আমার ছেলেরা বোকা হইয়া থাকিবে?'
কুমীর, শিয়াল পণ্ডিতের পাঠশালায় সাত ছেলে নিয়া গিয়া হাতে খড়ি দিল।
ছেলেরা আঞ্জি ক খ পড়ে।
শিয়াল বলিল, `কুমীর মশাই, দেখেন কি! সাতদিন যাইতে না যাইতেই আপনার এক এক ছেলে বিদ্যাগজ্গজ্ ধনুর্ধর হইয়া উঠিবে।'
মহা খুশী হইয়া কুমীর বাড়ী আসিল।
পণ্ডিত মহাশয় পড়ান, রোজ একটি করিয়া কুমীরের ছানা দিয়া জল খান। এই রকম করিয়া ছয় দিন গেল।
কুমীর ভাবিতেছে, `কাল তো আমার ছেলেরা বিদ্যাগজ্গজ্ ধনুর্ধর হইয়া আসিবে। আজ একবার দেখিয়া আসি।’
ভাবিয়া কুমীরাণীকে বলিল, ‘ওগো, ইলিস-খলিসের চচ্চড়ি, রুই-কাতলার গড়গড়ি, চিতল-বোয়ালের মড়মড়ি সব তৈয়ার করিয়া রাখ, ছেলেরা আসিয়া খাইবে।’
বলিয়া, কুমীর, পুরানো চটের থান, ছেঁড়া জালের চাদর, জেলে ডিঙ্গির টোপর পরিয়া একগাল শেওলা চিবাইতে চিবাইতে ভূঁড়িতে হাত বুলাইতে বুলাইতে পণ্ডিত মহাশয়ের কাছে গিয়া উপস্থিত, ‘পণ্ডিত মশাই, পণ্ডিত মশাই। দেখি, দেখি, ছেলেরা আমার কেমন লেখাপড়া শিখিয়াছে।’
তাড়াতাড়ি উঠিয়া পণ্ডিত মহাশয় বলিলেন, ‘আসুন, আসুন, বসুন, বসুন, হ্যাঁরে, গুব্রে তামাক দে, আরে ফড়িঙ্গে, নস্যির ডিবে নিয়ে আয়।’
-হ্যাঁরে, কুমীর-সুন্দরেরা কোথায় গেল রে?
- বসুন, বসুন, আমি ডাকিয়া নিয়া আসি।’
গর্তের ভিতরে গিয়া শিয়াল পণ্ডিত সেই শেষ-একটি ছানাকে উঁচু করিয়া সাতবার দেখাইল। বলিল, ‘কুমীর মশাই, এত খাটিলাম খুঁটিলাম, আর একটুর জন্য কেন খুঁত রাখিবেন? সব ছেলেই বিদ্যাগজ্গজ্ হইয়া গিয়াছে, আর একদিন থাকিলেই একেবারে ধনুর্ধর হইয়া ঘরে যাইতে পারিবে।’
কুমির বলিল, ‘আচ্ছা, আচ্ছা, বেশ, তাহাই হইবে।’
বোকা কুমীর খুশী হইয়া চলিয়া গেল।
পরদিন শিয়াল পণ্ডিত বাকী ছানাটিকে দিয়া সব-শেষ-জলযোগ সারিয়া, পাঠশালা পুঠশালা ভাঙ্গিয়া-পলায়ন!
পিট্টান তো পিট্টান, কুমীর আসিয়া দেখে, পড়ুয়ারা পড়ে না, শিয়াল পণ্ডিত ঘরে নাই, শটীর বন খালি। কুমীর তখন সব বুঝিতে পারিল। গালে চড় মাথায় চাপড়, হাপুস নয়নে কাঁদিয়া, কুমীর বলিল, ‘আচ্ছা পণ্ডিত দাঁড়া-
আর কি কাঁকড়া খাবি না?
আর কি খালে যাবি না?
ওই খালে তো কাঁকড়া খাবি,-
দেখি কি করে,
মুই কুমীরের হাত এড়াবি।’
কুমীর চুপ করিয়া খালের জলে লুকাইয়া রহিল।
ক’দিন যায়; শিয়াল পণ্ডিত খালের ঐ ধারে ধারে ঘুরে, প্রাণন্তেও জলটিতে পা ছোঁয়ায় না। শেষে পেটের জ্বালা বড় জ্বালা; তার উপর, ওপারের চড়ায় কাঁকড়ারা ছায়ে-পোয়ে দলে দলে দাঁড়া বাহির করিয়া ধিড়িং ধিড়িং নাচে; আর কি সয়? সব ভুলিয়া টুলিয়া, যা’ক প্রাণ থা’ক মান-জলে দিলেন ঝাঁপ!
আর কোথা যায়, ছত্রিশ গণ্ডা দাঁতে কুমীর, পণ্ডিতের ঠ্যাংটি ধরিয়া ফেলিল!
টানাটানি হুড়াহুড়ি, পণ্ডিত এক নলখাগড়ার বনে গিয়া ঠেকিলেন। অমনি এক নলের আগা ভাঙ্গিয়া হাসিয়া পণ্ডিত বলিল, ‘হাঃ! কুমীর মশাই এত বোকা তা’ তো জানিতাম না! কোথায়বা আমার ঠ্যাং, কোথায়বা লাঠি! ধরুন ধরুন, লাঠিটা ছাড়িয়া ঠ্যাংটাই ধরিতেন!’
কুমীর ভাবিল, ‘অ্যাঁ, লাঠি ধরিয়াছি?’ ধর্ ধর্! ঠ্যাং ছাড়িয়া কুমীর লাঠিতে কামড় দিল। নল ছাড়িয়া দিয়া পণ্ডিত তিন লাফে পার, ‘কুমীর মশাই, হোক্কা হুয়া! আবার পাঠশালা খুলিব, ছেলে পাঠাইও।’
আবার দিন যায়; শিয়ালের আর লেজটিতেও কুমীর পা দিতে পারে না। শেষে একদিন মনে মনে অনেক যুক্তি বুদ্ধি আঁটিয়া, সটান লেজ, রোদমুখো হাঁ, ঢেঁকি-অবতার হইয়া, কুমীর খালের চড়ায় হাত পা ছড়াইয়া একেবারে মরিয়া পড়িয়া রহিল। শিয়াল পণ্ডিত সেই পথে যায়। দেখিল, ‘বস্! কুমীর তো মরিয়াছে! যাই, শিয়ালীকে নিমন্ত্রণটা দিয়া আসি।’
কিন্তু, পণ্ডিতের মনে-মনে সন্দ। গোঁফে তিন চাড়া দিয়া মুখ চাটিয়া চুটিয়া বলিতেছে, ‘আহা, বড় সাধুলোক ছিল গো! কি হয়েছিল গো! কি করে গেল গো! আচ্ছা, লোকটা যে মরিল তা’র লক্ষণ কি ‘ হুঁ হুঁ!
কান নড়্বে পটাপট
লেজ পড়বে চটাচট
তবে তো মড়া! –এ বেটা এখনো তবে মরে নি!”
কুমীর ভাবিল, কথা বুঝি সত্যি-কান নাই তবু কুমীর মাথা ঘুরাইয়া কান নাড়ে, চট্চট্চট্ লেজ আছাড়ে।
দূরে ছিল কতকগুলি রাখাল-
‘ওরে! ওই সে কুমীর ডাঙ্গায় এল,
যে ব্যাটা সে দিন বাছুর খেল!’
কাস্তে, লাঠি, ইট, পাট্কেল ধড়াধ্বড়্ পড়ে- হৈ হৈ রৈ রৈ করিয়া আসিয়া রাখলের দল কুমীরের পিছনে লাগিয়া গেল।
শিয়াল পণ্ডিত তিন ছুটে চম্পট-
‘হোক্কা হোয়া, কুমীর মশাই!
নমস্কার!-এবার পালাই!’
২
অনেক দূরে আসিয়া শিয়াল পণ্ডিত এক বেগুনের ক্ষেতে ঢুকিলেন।
ক্ষুধায় পেট্টি আনচান, মনের সুখে বেগুন খান;
খেতে খেতে হঠাৎ কখন্ নাকে ফুটল কাঁটা,
‘হ্যাঁচ্-হ্যাঁচ-হ্যাঁচ্-ফ্যাঁচ্-ফ্যাঁচ্-ফ্যাঁচ্’
কিছুতেই কিছু না, রক্তে ভেসে গেল গা-টা।
শেষে, কাবুজাবু হইয়া শিয়াল নাপিতের বাড়ী গেলেন-
‘নরসুন্দর নরের সুন্দর ঘরে আছ হে?
বাইরে একটু এস রে ভাই নরুণখানা নে।’
নাপিত বড় ভাল মানুষ ছিল; নরুণ লইয়া আসিয়া বলিল, ‘কে ভাই, শিয়াল পণ্ডিত? তাই তো, এ কি! আহা-হা নাকটা তো গিয়াছে!’
দু ফোঁটা চোখের জল ফেলিয়া ফুঁপিয়া ফুঁপিয়া শিয়াল বলিল,
‘ওই তো দুঃখে কাঁদি রে ভাই, মন কি আমার আছে?
তুমি ছাড়া আর গতি নাই, এলাম তোমার কাছে।’
নাপিত বড় দয়াল, মন গলিল; বলিল, ‘বস, বস, কাঁটা খুলিয়া দিতেছি।’
একে হ’ল আর, শিয়ালের নাক কেটে গেল, কাঁটা কর্তে বার!
‘উঁয়া, উঁয়া! হুঁয়া, হুঁয়া!- ক্ক্যাঃ-ক্ক্যাঃ!!!-ওরে হতভাগা পাজী পাষণ্ডে নাপ্তে!- দ্যাখ্তো-দ্যাখ্তো কি করেছিস্! দে ব্যাটা আগে আমার নাক জুড়িয়া দে, নইলে তোকে দেখাচ্ছি।‘
ভাল মানুষ নাপিত ভয়ে থতমত, বলিল, ‘দাদা! বড় চুক হইয়া গিয়াছে; মাফ্ কর ভাই, নইলে গরীব প্রাণে মারা যাই।’
শিয়াল বলিল, ‘আচ্ছা যা; যা হইবার তা’তো হইল; তবে তোর নরুণখানা আমাকে দে, তোকে ছাড়িয়া দিতেছি।’
কি করে? নাপিত শেয়ালকে নরুণখানা দিল। নরুণ পাইয়া শিয়াল বলিল, ‘আচ্ছা, তবে আসি।’
শিয়াল এক কুমোরের বাড়ীর সামনে দিয়া যায়; দেখিয়া কুমোর বলিল, ‘কে হে বট ভাই, কে যাচ্ছ? মুখে ওটা কি?’
শিয়াল বলিল, ‘কুমোর ভাই না-কি? ও একটা নরুণ নিয়া যাচ্ছি।’
কুমোরেরও একটা নরুণের বড় দরকার-বলিল, ‘তা, ভাই, দেখি দেখি, তোমার নরুণটা কেমন?’
পরখ করিতে করিতে নরুণটা মট করিয়া ভাঙ্গিয়া গেল; কুমোর বলিল; ‘আঃ-হাঃ!’
চটিয়া উঠিয়া শিয়াল বলিল, ‘আজ্ঞে কুমোরের পো, সেটি হবে না! ভাল চাও তো আমার নরুণটি যোগাইয়া দাও!’
সে গাঁয়ে কামার নাই। নিরুপায় হইয়া কুমোর বলিল, ‘এখন কি করি ভাই, মাফ্ না করিলে যে গরীব মারা যায়!’
শিয়াল বলিল, ‘তবে একটি হাঁড়ি দাও!’
কুমোর একটি হাঁড়ি দিয়া হাঁফ ছাড়িয়া বাঁচিল। হাঁড়ি লইয়া শিয়াল, আবার চলিতে লাগিল।
এক বিয়ের বর যায়! বোম পটকা, আতসবাজি ছুঁড়িতে ছুঁড়িতে সকলে চলিয়াছে। অন্ধকারে, কে জানে?-একটা পটকা ছুটিয়া দিয়া শিয়ালের হাঁড়িতে পড়িল। হাঁড়িটি ফাটিয়া গেল। দুই চোখ ঘুরাইয়া আসিয়া শিয়াল বলিল, ‘কে হে বাপু বড় তুমি বর যাচ্ছ-বাজি পোড়াবার আর জায়গা পাও নাই? ভাল চাও আমার হাঁড়িটি দাও!’
বর ভ্যাবাচ্যাকা খাইয়া গেল। সকলে বলিল, ‘মাফ্ কর ভাই, মাফ্ কর ভাই, নইলে আমরা সব মারা যাই।’
শিয়াল বলিল, ‘সেটি হবে না- কনেটিকে আমাকে দাও, তারপর তোমরা যেখানে খুশী যাও।’
কি আর করে? বর, কনেটি শিয়ালকে দিল।
কনে পাইয়া শিয়াল সেখান হইতে চলিল।
এক ঢুলীর বাড়ী গিয়া শিয়াল বলিল, ‘ঢুলী ভাই, ঢুলী ভাই, তোমরা ক’জন আছ? আমি বিয়ে করিব, সব ঢোল বায়না কর দেখি। কনেটি তোমার এখানে থাকিল, আমি পুরুতবাড়ী চলিলাম।’
ঢুলী ঢোল বায়না করিতে গেল, শেয়াল পুরুতবাড়ী চলিল। ঢুলীবউ কুটনা কাটিতে বসিয়াছে। কনেটি ঝিমাইতে ঝিমাইতে বঁটির উপরে পড়িয়া গিয়া কাটিয়া দুইখানা হইয়া গেল। ভয়ে ঢুলীবউ কনের দুই টুকরা নিয়া খড়ের গাদায় লুকাইয়া রাখিয়া আসিল।
পুরুত নিয়া আসিয়া শিয়াল দেখে, কনে নাই! ‘ভাল চাও তো ঢুলীবউ কনেটি এনে দাও!’
ভয়ে ঢুলীবউ ঘরে উঠিয়া বলে, ‘ও মা, কি হবে গো!’
শিয়াল বলিল, ‘সে সব কথা থাক্, ঢুলীর ঢোলটি দাও তো ছাড়িয়া দিচ্ছি!’
ঢুলিবউ ভাবিল, ‘বাঁচিলাম!-তাড়াতাড়ি ঢোলটি আনিয়া দিয়া ঘরে গিয়া দুয়ার দিল।’
ঢোল নিয়া গিয়া শিয়াল এক তালগাছের উপর উঠিয়া বাজায় আর গায়,
তাক্ ডুমা ডুম্ ডুম্!
বেগুন ক্ষেতে ফুটল কাঁটা-তাক ডুমা ডুম্ ডুম্!
কাঁটা খুলতে কাটল নাক,
নাকুর বদল নরুণ পেলাম,
তাক্ ডুমা ডুম্ ডুম্!
নরুণ দিয়ে হাঁড়ি পেলাম- তাক্ ডুমা ডুম ডুম্!
হাঁড়ির বদল কনে পেলাম- তাক্ ডুমা ডুম্ ডুম্!
ডাগুম ডাগুম ডুগ্ ডুমা ডুম্ !!
ডুম্ ডুমা ডুম্ ডুম্ !!”
মনের আনন্দে শিয়াল সেই নাচিয়া উঠিয়াছে, অমনি পা হড়্কাইয়া গিয়া...।
আরও পড়ুন:শ্রবণপ্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য নির্মিত হলো সিসিমপুরের বিশেষ কিছু পর্ব।
উদ্যোগের অংশ হিসেবে সিসিমপুরের জনপ্রিয় ১৩টি পর্বে শ্রবণপ্রতিবন্ধী শিশুদের উপযোগী করে সাইন ল্যাঙ্গুগুয়েজ তথা ইশারা ভাষা যুক্ত করে নতুনভাবে তৈরি করেছে সিসিমপুরের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান সিসেমি ওয়ার্কশপ বাংলাদেশ (এসডব্লিউবি)।
সিসিমপুরের পর্বগুলোকে ইশারা ভাষায় রূপান্তরে সহযোগিতা করেছে শ্রবণপ্রতিবন্ধী মানুষের উন্নয়নে কাজ করা সংগঠন সোসাইটি অব দ্য ডেফ অ্যান্ড সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ ইউজার্স (এসডিএসএল)।
২৩ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ ডে। এই দিন থেকে সাইন ল্যাঙ্গুগুয়েজে নির্মিত সিসিমপুরের বিশেষ পর্বগুলো সিসিমপুরের সোশ্যাল ও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলোতে ধারাবাহিকভাবে প্রচার শুরু হবে, যা পরবর্তী পর্যায়ে টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতেও প্রচার হবে।
বিশেষ এই উদ্যোগ সম্পর্কে সিসিমপুরের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, ‘সিসিমপুরের লক্ষ্য হচ্ছে বাংলাদেশের প্রতিটি শিশুর কাছে পৌঁছানো। তারই অংশ হিসেবে ইতোমধ্যেই আমরা দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য সিসিমপুরের ১০টি গল্পের বই ব্রেইল পদ্ধতিতে প্রকাশ করেছি ও শিশুদের মাঝে বিতরণ করেছি। এবার শ্রবণপ্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য নিয়ে আসছি ১৩ পর্বের বিশেষ সিসিমপুর।
‘ধারাবাহিকভাবে পর্বের সংখ্যা বাড়ানোর ইচ্ছে আছে আমাদের। আমাদের টেলিভিশন অনুষ্ঠান নির্মাণ ও অন্যান্য কার্যক্রম বাস্তবায়নে সহায়তা করার জন্য ইউএসএআইডি বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানাই।’
এক লোককে থানায় ধরে আনা হলো।
ওসি: আপনাকে আজ রাতে থানায় থাকতে হবে।
ভদ্রলোক: চার্জ কী?
ওসি: কোনো চার্জ দিতে হবে না, ফ্রি।
-
বন্ধুরা, চাইলে তোমরাও আমাদের কাছে জোকস লিখে পাঠাতে পারো। পাঠানোর ঠিকানা: [email protected]
আরও পড়ুন:
গরিব চাষা, তার নামে মহাজন নালিশ করেছে। বেচারা কবে তার কাছে ২৫ টাকা নিয়েছিল, সুদে-আসলে তা এখন ৫০০ টাকায় দাঁড়িয়েছে। চাষা অনেক কষ্টে ১০০ টাকা জোগাড় করেছে; কিন্তু মহাজন বলছে, '৫০০ টাকার এক পয়সাও কম নয়; দিতে না পারো তো জেলে যাও।' সুতরাং চাষার আর রক্ষা নাই।
এমন সময় শামলা মাথায় চশমা চোখে তুখোড় বুদ্ধি উকিল এসে বললেন, 'ওই ১০০ টাকা আমায় দিলে, তোমার বাঁচবার উপায় করতে পারি।'
চাষা তার হাতে ধরল, পায়ে ধরল, বলল, 'আমায় বাঁচিয়ে দিন।'
উকিল বললেন, "তবে শোন, আমার ফন্দি বলি। যখন আদালতের কাঠগড়ায় গিয়ে দাঁড়াবে, তখন বাপু হে কথাটথা কয়ো না। যে যা খুশি বলুক, গাল দিক আর প্রশ্ন করুক, তুমি তার জবাবটি দেবে না- খালি পাঁঠার মতো 'ব্যা- ' করবে। তা যদি করতে পারো, তা হলে আমি তোমায় খালাস করিয়ে দেব।"
চাষা বলল, 'আপনি কর্তা যা বলেন, তাতেই আমই রাজি।'
আদালতে মহাজনের মস্ত উকিল, চাষাকে এক ধমক দিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, 'তুমি সাত বছর আগে ২৫ টাকা কর্জ নিয়েছিলে?'
চাষা তার মুখের দিকে চেয়ে বলল, 'ব্যা- '।
উকিল বললেন, 'খবরদার!- বল, নিয়েছিলি কি না।'
চাষা বলল, 'ব্যা- '।
উকিল বললেন, 'হুজুর! আসামির বেয়াদবি দেখুন।'
হাকিম রেগে বললেন, 'ফের যদি অমনি করিস, তোকে আমই ফাটক দেব।'
চাষা অত্যন্ত ভয় পেয়ে কাঁদ কাঁদ হয়ে বলল, 'ব্যা- ব্যা- '।
হাকিম বললেন, 'লোকটা কি পাগল নাকি?'
তখন চাষার উকিল উঠে বললেন, "হুজুর, ও কি আজকের পাগল- ও বহুকালের পাগল, জন্ম-অবধি পাগল। ওর কি কোনো বুদ্ধি আছে, না কাণ্ডজ্ঞান আছে? ও আবার কর্জ নেবে কি! ও কি কখনও খত লিখতে পারে নাকি? আর পাগলের খত লিখলেই বা কী? দেখুন দেখুন, এই হতভাগা মহাজনটার কাণ্ড দেখুন তো! ইচ্ছে করে জেনেশুনে পাগলটাকে ঠকিয়ে নেওয়ার মতলব করেছে। আরে, ওর কি মাথার ঠিক আছে? এরা বলেছে, 'এইখানে একটা আঙ্গুলের টিপ দে'- পাগল কি জানে, সে অমনি টিপ দিয়েছে। এই তো ব্যাপার!"
দুই উকিলে ঝগড়া বেধে গেল।
হাকিম খানিক শুনেটুনে বললেন, 'মোকদ্দমা ডিসমিস্।'
মহাজনের তো চক্ষুস্থির। সে আদালতের বাইরে এসে চাষাকে বললেন, 'আচ্ছা, না হয় তোর ৪০০ টাকা ছেড়েই দিলাম- ওই ১০০ টাকাই দে।'
চাষা বলল, 'ব্যা-!'
মহাজন যতই বলেন, যতই বোঝান, চাষা তার পাঁঠার বুলি কিছুতেই ছাড়ে না। মহাজন রেগেমেগে বলে গেল, 'দেখে নেব, আমার টাকা তুই কেমন করে হজম করিস।'
চাষা তার পোঁটলা নিয়ে গ্রামে ফিরতে চলেছে, এমন সময় তার উকিল এসে ধরল, 'যাচ্ছ কোথায় বাপু? আমার পাওনাটা আগে চুকিয়ে যাও। ১০০ টাকায় রফা হয়েছিল, এখন মোকদ্দমা তো জিতিয়ে দিলাম।'
চাষা অবাক হয়ে তার মুখের দিকে তাকিয়ে বলল, 'ব্যা-।'
উকিল বললেন, 'বাপু হে, ওসব চালাকি খাটবে না- টাকাটি এখন বের করো।'
চাষা বোকার মতো মুখ করে আবার বলল, 'ব্যা-।'
উকিল তাকে নরম গরম অনেক কথাই শোনাল, কিন্তু চাষার মুখে কেবলই ঐ এক জবাব! তখন উকিল বলল, 'হতভাগা গোমুখ্যু পাড়া গেঁয়ে ভূত- তোর পেটে অ্যাতো শয়তানি, কে জানে! আগে যদি জানতাম তা হলে পোঁটলাসুদ্ধ টাকাগুলো আটকে রাখতাম।'
বুদ্ধিমান উকিলের আর দক্ষিণা পাওয়া হলো না।
আরও পড়ুন:এক ফটো সাংবাদিক রাস্তায় বাচ্চাদের ছবি তুলছেন। সবাইকে একসঙ্গে বসিয়ে বললেন, স্মাইল।
ইসমাইল: জি স্যার?
সাংবাদিক: আরে তুমি দাঁড়াচ্ছ কেন? বসো।
ইসমাইল: ঠিক আছে।
সাংবাদিক: ওকে রেডি, স্মাইল।
ইসমাইল: ডাকলেন কেন স্যার?
সাংবাদিক: আরে বাবা তোমার সমস্যাটা কী? স্মাইল বললেই দাঁড়িয়ে যাচ্ছ কেন?
ইসমাইল: আমি তো বসেই আছি। আপনি আমার নাম ধরে ডাকেন বলেই দাঁড়িয়ে যাই।
-
বন্ধুরা, চাইলে তোমরাও আমাদের কাছে জোকস লিখে পাঠাতে পারো। পাঠানোর ঠিকানা: [email protected]
আরও পড়ুন:মেয়ে: আলুর তরকারিটার স্বাদ কেমন হয়েছে?
বাবা: দারুণ স্বাদ হয়েছে। তুই রান্না করেছিস নাকি?
মেয়ে: না, আলু আমি ছিলেছি।
-
বন্ধুরা, চাইলে তোমরাও আমাদের কাছে জোকস লিখে পাঠাতে পারো। পাঠানোর ঠিকানা: [email protected]
আরও পড়ুন:
স্ত্রী: কি ব্যাপার, আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে কী দেখছ?
ভুলোমনা স্বামী: এই ভদ্রলোককে খুব চেনা চেনা লাগছে, কিন্তু কোথায় দেখেছি ঠিক মনে করতে পারছিনা।
-
বন্ধুরা, চাইলে তোমরাও আমাদের কাছে জোকস লিখে পাঠাতে পারো। পাঠানোর ঠিকানা: [email protected]
এক যুবক নতুন চাকরি পেয়েছে। প্রথম দিন অফিসে এসেই কিচেনে ফোন করে বলল, ‘এখনি আমাকে এককাপ কফি দিয়ে যাও! জলদি!’
অন্যদিক থেকে আওয়াজ এল, ‘গর্দভ, তুমি কার সাথে কথা বলছ জান?’
যুবকটি থতমত এবং ভীত হয়ে বলল, ‘না! আপনি কে?’
‘আমি এই কোম্পানির ম্যানেজিং ডিরেক্টর’, রাগী গলায় উত্তর এল।
যুবকটি বলল, ‘আর আপনি জানেন কার সঙ্গে কথা বলছেন?’
‘না’, ওপার থেকে উত্তর এল।
‘বাবারে! বাঁচা গেছে’, বলে যুবকটি ফোন রেখে দিল।
-
বন্ধুরা, চাইলে তোমরাও আমাদের কাছে জোকস লিখে পাঠাতে পারো। পাঠানোর ঠিকানা: [email protected]
আরও পড়ুন:
মন্তব্য