এক ছিল অহংকারী খরগোশ। দেখতে বেশ নাদুসনুদুস। কচি কচি মুলা খেত। বনবাদাড়ে ঘুরে বেড়াত। আর ধেই ধেই করে নেচে নেচে গান গাইত। লাফিয়ে লাফিয়ে খুব বেগে ছুটতে পারত সে। তাই তার মনে ভারি অহংকার। অন্য খরগোশদের সে গণনায় ধরত না। যাকেতাকে সে শুধু শুধু খোঁচা দিত। ঘোড়াকে গিয়ে বলত, ‘কী তোমার ঠ্যাঙের ছিরি! দাঁড়িয়ে ঘুমাতে হয়।’ গাধাকে দেখে হেসে গড়িয়ে পড়ত খরগোশ। বলত, ‘গাধারে গাধা। তুই এখনো হাঁদাই রয়ে গেলি!’
লম্বা গলা জিরাফকে দেখেও হাসি থামত না খরগোশের।
হাতি তোর গোদা পায়ে লাথি- এই বলে সে হাতি বেচারাকে খ্যাপাত।
গরু, ভেড়া, শজারু, বানর সবাই খরগোশের কথা শুনেছে।
কাউকে খরগোশ পাত্তাই দিত না। সুযোগ পেলেই নিজের গুণগান করত, প্রশংসায় পঞ্চমুখ হতো। আর তার চলনেবলনে ফুটে উঠত অহংকার।
একদিন বনের মাথায় মেঘ কালো করে বৃষ্টি নামল। গাছে গাছে ফুটল বর্ষার ফুল। বনের পাশে শুরু হলো ব্যাঙের গান। খরগোশ থাকত সেই নদীর ধারেই।
ব্যাঙের গান শুনে তার মেজাজ গেল বিগড়ে। কারা এমন বিশ্রীভাবে চিৎকার করছে? ওরা কি জানে না, খরগোশ থাকে আশেপাশেই? মূর্খদের যদি একটু বুদ্ধি থাকত!
অহংকারী খরগোশের ভারি রাগ হলো। কেউ তাকে কোনো দিন অসম্মান করেনি। আর আজ সারা রাত কতগুলো পুঁচকে তাকে হেস্তনেস্ত করে ছাড়ছে। বৃষ্টির রাতে কোথায় আরাম করে ঘুমুবে তা নয়, কানের কাছে টিন পেটানো গান বাজছে!
পরদিন ঘুম ভাঙতেই খরগোশ গেল নদীর ধারে। কচি ঘাসের ডগা চিবুতে চিবুতে সে গিয়ে দাঁড়াল উঁচু একটা ঢিবির ওপর। এদিক-ওদিক তাকাল। খানিক দূরেই গানের জলসা বসিয়েছে কয়েকশ ব্যাঙ। কী কোলাহল তাদের! আনন্দে তারা হাবুডুবু খাচ্ছে।
রাতে ঘুম হয়নি বলে খরগোশের মেজাজ এমনিতে তিরিক্ষি। ব্যাঙদের লাফালাফি দেখে সে আর ঠিক থাকতে পারল না। খরগোশের মনে তখন অহংকার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। তার আশপাশেই ছিল পাথরের টুকরো। তাই তুলে নিয়ে সে ছুড়ে মারতে লাগল ব্যাঙের জলসায়।
ব্যাঙরা প্রথমে হতভম্ব। কী ব্যাপার! অনবরত কে যেন পাথরের টুকরো ছুড়ে মারছে। বেশ কয়েকটা ব্যাঙ আহত হলো। ব্যাঙদের তল্লাটে হুলুস্থুল পড়ে গেল। যে যেদিকে পারল পালাতে চাইল।
ব্যাঙের রাজা তখন দিশেহারা। নিজেদের আবাস ছেড়ে চলে যেতে হবে। কিন্তু কেন? কী তাদের অপরাধ?
অমনি সবার চোখ গিয়ে পড়ল সেই ছোট্ট টিলাটার ওপর। ওখানে দুই ঠ্যাঙে ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে এক নাদুসনুদুস খরগোশ। এখনো তার বাঁ হাতে রয়েছে একটা লম্বা মুলা।
ব্যাঙদের ভিরমি খাওয়ার অবস্থা। এ রকম দেখতে-শুনতে সুন্দর এক খরগোশ কেন অযথা তাদের ঢিল মারছে?
ব্যাঙের রাজা আলাপ করে নিল অন্যদের সঙ্গে। খুব তাড়াতাড়ি এর একটা বিহিত করতে হবে। এরই মধ্যে প্রায় একশ ব্যাঙ আহত হয়েছে।
ব্যাঙের রাজা বলল, ‘আমিই যাব খরগোশের কাছে। গিয়ে জানব কী কারণ, কী বৃত্তান্ত? কেন উনি নির্মমভাবে আমাদের মারছেন।’
মাথা নামিয়ে আস্তে আস্তে একদম টিলার সামনে এসে দাঁড়াল ব্যাঙের রাজা। খরগোশ আবার যেই এক টুকরো পাথর তুলে মারতে গেছে অমনি করজোড়ে মিনতি করল ব্যাঙের রাজা। বলল, ‘বন্ধ করুন আপনার নিষ্ঠুর পাথর ছোড়া। কেন মারছেন আমাদের?’
হো হো করে হেসে উঠল খরগোশ। এই পুঁচকে ব্যাঙ নিশ্চয়ই কিছুই জানে না তার সম্বন্ধে। খরগোশ কচি মুলার ডগা চিবোতে চিবোতে বলল, ‘ওহে পচা ডোবার ব্যাঙ, আমি কে জানিস?’
অবাক হলো ব্যাঙের রাজা। কী বোকার মতো কথা বলছে খরগোশ! বনের রাজা সিংহকেই এখন কেউ চিনতে চায় না! এই খরগোশকে চিনে তার কী লাভ?
ব্যাঙের রাজা বলল, ‘না চিনলেও এখন চিনতে পেরেছি।’
খরগোশ ছাইরঙা লেজটা পেছনে একপাক ঘুরিয়ে নিল।
বলল, ‘আমি হচ্ছি এই বনের সবচেয়ে সুন্দর প্রাণী। আমার নাক, চোখ, মুখ গায়ের রং– সবই চমৎকার। আমি যত সুন্দর করে ছুটতে পারি অন্য কেউ তা পারে না। এসব ভাবলে অহংকারে আমার বুক ফুলে ওঠে। সেই আমি কি না, গত রাতে ঘুমাতে পারিনি। ঝিরঝির করে কাল বৃষ্টি পড়ছিল। ইচ্ছেমতো ঘুমাব, এই ছিল ইচ্ছা। কিন্তু সারা রাত তোমাদের ঘ্যাঙর ঘ্যাং, ঘ্যাঙর ঘ্যাং-এর জন্যে ঘুম আমার আসেনি।’
ব্যাঙের রাজা বুঝল সব। কিন্তু এর একটা সুরাহা করা দরকার। খরগোশের কথায় বোঝা গেল- খুব অহংকারী সে। ব্যাঙদের এই তল্লাট থেকে ভাগিয়ে সে নিশ্চিন্ত হতে চায়।
ব্যাঙদের রাজা হাতজোড় করে বলল, ‘খরগোশ ভাই, আমি অন্যদের সঙ্গে আলাপ করে আসি। তারপর ব্যাপারটার একটা মীমাংসা করব?’
খরগোশ খুশি হলো, না বেজার হলো, বোঝা গেল না। ব্যাঙের রাজা ফিরে এসে সবাইকে জানাল সবকিছু। সবার মাথায় হাত।
শেষে ব্যাঙ বলল, ‘যা হোক একটা কিছু বলে আসি খরগোশকে। পরে আবার আলাপ করা যাবে। কিন্তু আমরা কিছুতেই এ তল্লাট ছাড়ব না। বর্ষা শুরুর গানও আমরা বন্ধ করতে পারি না।’
সবাই হাত তুলে বলল, ‘তাই, তাই। আমরা সইব না এ অন্যায়।’
ব্যাঙের রাজা ফের গেল অহংকারী খরগোশের কাছে। মিনতি করেই খরগোশকে বলল, ‘এ নদীর তীর ছেড়ে আমাদের অন্য কোথাও যাওয়া সম্ভব নয়। আর আমাদের মুখের ভাষা আমরা বন্ধ রাখতে পারব না। কী করব এখন বলুন?’
লাল হয়ে গেল খরগোশের মুখ। এত বড় সাহস পুঁচকে ব্যাঙগুলোর! চেঁচিয়ে উঠল সে, ‘তোমাদের সবাইকে পাথর ছুড়ে ছুড়ে মারব।’
ব্যাঙের রাজার বুক কেঁপে উঠল। তবু সে নরম সুরে জীবন-মরণ বাজি ধরল। বলল, ‘আচ্ছা খরগোশ ভাই, আমরা তো আর এমনি এমনি নদী ছেড়ে চলে যেতে পারি না। আপনি নাকি খুব সুন্দর ছুটতে পারেন। তাহলে আপনার সঙ্গে আমার বাজি হোক। আগামীকাল আমরা দুই জন দৌড় শুরু করব। নদীর বাঁকে যে বটবৃক্ষটা আছে সেখানেই দৌড় শেষ হবে। যে আগে পৌঁছাতে পারবে সেই জিতবে।’
খরগোশ জানতে চাইল, ‘যে বাজি জিতবে তার কী হবে?’
ব্যাঙের রাজা জানাল, ‘আমি হেরে গেলে আমরা সবাই এই তল্লাট ছেড়ে চলে যাব। আর আপনি হেরে গেলে আপনার মাথায় চড়ে পালা করে আমরা সারা বন ঘুরব। রাজি আছেন আপনি?’
খরগোশ মুচকি হেসে রাজি হলো।
ব্যাঙের রাজা বড় মুখে বলে এল দৌড়ের কথা। খরগোশ দৌড়াবে নদীর পার দিয়ে। ব্যাঙ লাফাবে নদীর তীরঘেঁষা পানির মধ্যে দিয়ে। খরগোশ চোখ-কান বন্ধ করেই জিতে যাবে।
শেষে ব্যাঙের রাজা এক বুদ্ধি বের করল। বুদ্ধির প্যাঁচে ফেলেই ঘায়েল করতে হবে খরগোশকে৷ সব ব্যাঙ দেখতে একই রকম। তাই খরগোশ ব্যাঙদের চিনতে পারবে না আলাদা করে। তাই ব্যাঙদের নদীর ধারে বিশ হাত দূরে দূরে লুকিয়ে বসে থাকতে হবে। আর ব্যাঙের রাজা গিয়ে একদম সেই বটগাছের গোড়ায় বসে ঘ্যাঙর ঘ্যাং ঘ্যাঙর ঘ্যাং গান গাইবে। খরগোশ নদীর পাড় দিয়ে দৌড়াবে। সে কিছু বললেই কাছাকাছি ব্যাঙটি জবাব দিয়ে দেবে। এভাবেই কেল্লাফতে হবে। যা বুদ্ধি তাই কাজ।
সারা রাত ব্যাঙরা নদীর তীর ঘেঁষে লুকিয়ে রইল। আর ব্যাঙের রাজা চলে গেল বটগাছটার গোড়ায়। ওখানেই দৌড়ের বাজি শেষ হবে। ব্যাঙ রাজার ছোট ভাই দাঁড়িয়ে রইল দৌড় শুরু করার জন্য। এমন সময় হেলেদুলে এল অহংকারী খরগোশ। পায়ের ওপর পা উঠিয়ে বলল, ‘কী হে ব্যাঙাচি, বাজির কথা মনে আছে তো?’
ব্যাঙ রাজার ছোট ভাই মাথা ঝাঁকিয়ে বলল, ‘হ্যাঁ, আমার মনে আছে।’
খরগোশ কোনো ব্যাঙকে আলাদা করে চিনতে পারবে না। এই এক বাড়তি সুবিধা। কথা আর বাড়াল না।
শুরু হলো দৌড় প্রতিযোগিতা। খরগোশ ছোটে পাগলের মতো। বাতাস কেটে সে যেন উড়ে চলেছে। মাঝেমধ্যে খরগোশ চিৎকার করে ওঠে, ‘ওহে ব্যাঙরাজা, পেছন পেছন আছ তো, নাকি বেমালুম হারিয়ে গেছ?’
তখন লুকিয়ে থাকা কোনো একটা ব্যাঙ তড়াক করে দুকদম লাফিয়ে বলে, ‘হারিয়ে যাব কেন? তোমার সামনেই আছি। আরও জোরে ছুটতে হবে খরগোশ তোমাকে।’
খরগোশ আরও জোরে প্রাণপণ ছোটে। কিন্তু ছুটলে কী হবে। বটগাছের সামনে এসে চক্ষু তার চড়কগাছ। গান গাইছে আর ধেই ধেই করে নাচছে সেই ব্যাঙের রাজা। কীভাবে সে খরগোশের আগে পৌঁছল? অহংকারী খরগোশের সব তালগোল পাকিয়ে গেল।
এখন বাজি জিতেছে ব্যাঙের রাজা। খরগোশের মাথায় চড়ে ব্যাঙরা এখন বনে বনে ঘুরে বেড়াবে। লজ্জায় মাথা কাটা গেল খরগোশের। সব অহংকার তার ধুয়েমুছে গেছে। মাথা নামিয়ে রইল খরগোশ। একটি কথাও সে বলল না।
খরগোশের মাথায় চড়ে দুই দিন দুই রাত বনের এ-মাথা ও-মাথা ঘুরে বেড়াল ব্যাঙরা ।
পরদিন আবার তোড়জোড়ে বৃষ্টি নামল। ফুলে-ফেঁপে উঠল নদীর পানি আর ব্যাঙরা মনের সুখে বর্ষার গান ধরল।
আরও পড়ুন:শ্রবণপ্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য নির্মিত হলো সিসিমপুরের বিশেষ কিছু পর্ব।
উদ্যোগের অংশ হিসেবে সিসিমপুরের জনপ্রিয় ১৩টি পর্বে শ্রবণপ্রতিবন্ধী শিশুদের উপযোগী করে সাইন ল্যাঙ্গুগুয়েজ তথা ইশারা ভাষা যুক্ত করে নতুনভাবে তৈরি করেছে সিসিমপুরের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান সিসেমি ওয়ার্কশপ বাংলাদেশ (এসডব্লিউবি)।
সিসিমপুরের পর্বগুলোকে ইশারা ভাষায় রূপান্তরে সহযোগিতা করেছে শ্রবণপ্রতিবন্ধী মানুষের উন্নয়নে কাজ করা সংগঠন সোসাইটি অব দ্য ডেফ অ্যান্ড সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ ইউজার্স (এসডিএসএল)।
২৩ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ ডে। এই দিন থেকে সাইন ল্যাঙ্গুগুয়েজে নির্মিত সিসিমপুরের বিশেষ পর্বগুলো সিসিমপুরের সোশ্যাল ও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলোতে ধারাবাহিকভাবে প্রচার শুরু হবে, যা পরবর্তী পর্যায়ে টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতেও প্রচার হবে।
বিশেষ এই উদ্যোগ সম্পর্কে সিসিমপুরের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, ‘সিসিমপুরের লক্ষ্য হচ্ছে বাংলাদেশের প্রতিটি শিশুর কাছে পৌঁছানো। তারই অংশ হিসেবে ইতোমধ্যেই আমরা দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য সিসিমপুরের ১০টি গল্পের বই ব্রেইল পদ্ধতিতে প্রকাশ করেছি ও শিশুদের মাঝে বিতরণ করেছি। এবার শ্রবণপ্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য নিয়ে আসছি ১৩ পর্বের বিশেষ সিসিমপুর।
‘ধারাবাহিকভাবে পর্বের সংখ্যা বাড়ানোর ইচ্ছে আছে আমাদের। আমাদের টেলিভিশন অনুষ্ঠান নির্মাণ ও অন্যান্য কার্যক্রম বাস্তবায়নে সহায়তা করার জন্য ইউএসএআইডি বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানাই।’
এক লোককে থানায় ধরে আনা হলো।
ওসি: আপনাকে আজ রাতে থানায় থাকতে হবে।
ভদ্রলোক: চার্জ কী?
ওসি: কোনো চার্জ দিতে হবে না, ফ্রি।
-
বন্ধুরা, চাইলে তোমরাও আমাদের কাছে জোকস লিখে পাঠাতে পারো। পাঠানোর ঠিকানা: [email protected]
আরও পড়ুন:
গরিব চাষা, তার নামে মহাজন নালিশ করেছে। বেচারা কবে তার কাছে ২৫ টাকা নিয়েছিল, সুদে-আসলে তা এখন ৫০০ টাকায় দাঁড়িয়েছে। চাষা অনেক কষ্টে ১০০ টাকা জোগাড় করেছে; কিন্তু মহাজন বলছে, '৫০০ টাকার এক পয়সাও কম নয়; দিতে না পারো তো জেলে যাও।' সুতরাং চাষার আর রক্ষা নাই।
এমন সময় শামলা মাথায় চশমা চোখে তুখোড় বুদ্ধি উকিল এসে বললেন, 'ওই ১০০ টাকা আমায় দিলে, তোমার বাঁচবার উপায় করতে পারি।'
চাষা তার হাতে ধরল, পায়ে ধরল, বলল, 'আমায় বাঁচিয়ে দিন।'
উকিল বললেন, "তবে শোন, আমার ফন্দি বলি। যখন আদালতের কাঠগড়ায় গিয়ে দাঁড়াবে, তখন বাপু হে কথাটথা কয়ো না। যে যা খুশি বলুক, গাল দিক আর প্রশ্ন করুক, তুমি তার জবাবটি দেবে না- খালি পাঁঠার মতো 'ব্যা- ' করবে। তা যদি করতে পারো, তা হলে আমি তোমায় খালাস করিয়ে দেব।"
চাষা বলল, 'আপনি কর্তা যা বলেন, তাতেই আমই রাজি।'
আদালতে মহাজনের মস্ত উকিল, চাষাকে এক ধমক দিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, 'তুমি সাত বছর আগে ২৫ টাকা কর্জ নিয়েছিলে?'
চাষা তার মুখের দিকে চেয়ে বলল, 'ব্যা- '।
উকিল বললেন, 'খবরদার!- বল, নিয়েছিলি কি না।'
চাষা বলল, 'ব্যা- '।
উকিল বললেন, 'হুজুর! আসামির বেয়াদবি দেখুন।'
হাকিম রেগে বললেন, 'ফের যদি অমনি করিস, তোকে আমই ফাটক দেব।'
চাষা অত্যন্ত ভয় পেয়ে কাঁদ কাঁদ হয়ে বলল, 'ব্যা- ব্যা- '।
হাকিম বললেন, 'লোকটা কি পাগল নাকি?'
তখন চাষার উকিল উঠে বললেন, "হুজুর, ও কি আজকের পাগল- ও বহুকালের পাগল, জন্ম-অবধি পাগল। ওর কি কোনো বুদ্ধি আছে, না কাণ্ডজ্ঞান আছে? ও আবার কর্জ নেবে কি! ও কি কখনও খত লিখতে পারে নাকি? আর পাগলের খত লিখলেই বা কী? দেখুন দেখুন, এই হতভাগা মহাজনটার কাণ্ড দেখুন তো! ইচ্ছে করে জেনেশুনে পাগলটাকে ঠকিয়ে নেওয়ার মতলব করেছে। আরে, ওর কি মাথার ঠিক আছে? এরা বলেছে, 'এইখানে একটা আঙ্গুলের টিপ দে'- পাগল কি জানে, সে অমনি টিপ দিয়েছে। এই তো ব্যাপার!"
দুই উকিলে ঝগড়া বেধে গেল।
হাকিম খানিক শুনেটুনে বললেন, 'মোকদ্দমা ডিসমিস্।'
মহাজনের তো চক্ষুস্থির। সে আদালতের বাইরে এসে চাষাকে বললেন, 'আচ্ছা, না হয় তোর ৪০০ টাকা ছেড়েই দিলাম- ওই ১০০ টাকাই দে।'
চাষা বলল, 'ব্যা-!'
মহাজন যতই বলেন, যতই বোঝান, চাষা তার পাঁঠার বুলি কিছুতেই ছাড়ে না। মহাজন রেগেমেগে বলে গেল, 'দেখে নেব, আমার টাকা তুই কেমন করে হজম করিস।'
চাষা তার পোঁটলা নিয়ে গ্রামে ফিরতে চলেছে, এমন সময় তার উকিল এসে ধরল, 'যাচ্ছ কোথায় বাপু? আমার পাওনাটা আগে চুকিয়ে যাও। ১০০ টাকায় রফা হয়েছিল, এখন মোকদ্দমা তো জিতিয়ে দিলাম।'
চাষা অবাক হয়ে তার মুখের দিকে তাকিয়ে বলল, 'ব্যা-।'
উকিল বললেন, 'বাপু হে, ওসব চালাকি খাটবে না- টাকাটি এখন বের করো।'
চাষা বোকার মতো মুখ করে আবার বলল, 'ব্যা-।'
উকিল তাকে নরম গরম অনেক কথাই শোনাল, কিন্তু চাষার মুখে কেবলই ঐ এক জবাব! তখন উকিল বলল, 'হতভাগা গোমুখ্যু পাড়া গেঁয়ে ভূত- তোর পেটে অ্যাতো শয়তানি, কে জানে! আগে যদি জানতাম তা হলে পোঁটলাসুদ্ধ টাকাগুলো আটকে রাখতাম।'
বুদ্ধিমান উকিলের আর দক্ষিণা পাওয়া হলো না।
আরও পড়ুন:এক ফটো সাংবাদিক রাস্তায় বাচ্চাদের ছবি তুলছেন। সবাইকে একসঙ্গে বসিয়ে বললেন, স্মাইল।
ইসমাইল: জি স্যার?
সাংবাদিক: আরে তুমি দাঁড়াচ্ছ কেন? বসো।
ইসমাইল: ঠিক আছে।
সাংবাদিক: ওকে রেডি, স্মাইল।
ইসমাইল: ডাকলেন কেন স্যার?
সাংবাদিক: আরে বাবা তোমার সমস্যাটা কী? স্মাইল বললেই দাঁড়িয়ে যাচ্ছ কেন?
ইসমাইল: আমি তো বসেই আছি। আপনি আমার নাম ধরে ডাকেন বলেই দাঁড়িয়ে যাই।
-
বন্ধুরা, চাইলে তোমরাও আমাদের কাছে জোকস লিখে পাঠাতে পারো। পাঠানোর ঠিকানা: [email protected]
আরও পড়ুন:মেয়ে: আলুর তরকারিটার স্বাদ কেমন হয়েছে?
বাবা: দারুণ স্বাদ হয়েছে। তুই রান্না করেছিস নাকি?
মেয়ে: না, আলু আমি ছিলেছি।
-
বন্ধুরা, চাইলে তোমরাও আমাদের কাছে জোকস লিখে পাঠাতে পারো। পাঠানোর ঠিকানা: [email protected]
আরও পড়ুন:
স্ত্রী: কি ব্যাপার, আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে কী দেখছ?
ভুলোমনা স্বামী: এই ভদ্রলোককে খুব চেনা চেনা লাগছে, কিন্তু কোথায় দেখেছি ঠিক মনে করতে পারছিনা।
-
বন্ধুরা, চাইলে তোমরাও আমাদের কাছে জোকস লিখে পাঠাতে পারো। পাঠানোর ঠিকানা: [email protected]
এক যুবক নতুন চাকরি পেয়েছে। প্রথম দিন অফিসে এসেই কিচেনে ফোন করে বলল, ‘এখনি আমাকে এককাপ কফি দিয়ে যাও! জলদি!’
অন্যদিক থেকে আওয়াজ এল, ‘গর্দভ, তুমি কার সাথে কথা বলছ জান?’
যুবকটি থতমত এবং ভীত হয়ে বলল, ‘না! আপনি কে?’
‘আমি এই কোম্পানির ম্যানেজিং ডিরেক্টর’, রাগী গলায় উত্তর এল।
যুবকটি বলল, ‘আর আপনি জানেন কার সঙ্গে কথা বলছেন?’
‘না’, ওপার থেকে উত্তর এল।
‘বাবারে! বাঁচা গেছে’, বলে যুবকটি ফোন রেখে দিল।
-
বন্ধুরা, চাইলে তোমরাও আমাদের কাছে জোকস লিখে পাঠাতে পারো। পাঠানোর ঠিকানা: [email protected]
আরও পড়ুন:
মন্তব্য