× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য ইভেন্ট শিল্প উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ কী-কেন ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও ক্রিকেট প্রবাসী দক্ষিণ এশিয়া আমেরিকা ইউরোপ সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ শারীরিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্য যৌনতা-প্রজনন অন্যান্য উদ্ভাবন আফ্রিকা ফুটবল ভাষান্তর অন্যান্য ব্লকচেইন অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

কিড জোন
অক্ষয়
google_news print-icon

অক্ষয়

অক্ষয়
অক্ষয়ের মজাই লাগে লুকোচুরি করে ছবি আঁকতে। স্কুল ভালো লাগে তার। সে স্কুলে ছবি আঁকা শেখে, অংক শেখে, বাংলা-ইংরেজি শেখে। কিন্তু তার পরীক্ষা দিতে একদম ভালো লাগে না। তবে পরীক্ষা শেষ হলে অনেক মজা লাগে।

স্কুলে টিফিনের ফাঁকে কিছুক্ষণ দৌড়োদৌড়ি করে এক কোনায় দাঁড়িয়ে থাকে অক্ষয়। ক্লাস টু তে পড়ে সে এখন। স্কুলের আনাচে-কানাচে একদম মুখস্ত।

দেয়ালটা নোংরা হলেও এর মাঝেই ইটের টুকরো দিয়ে ছবি আঁকে অক্ষয়। মানুষের ছবি, প্রকৃতির ছবি, পশুপাখির ছবি।

তবে লুকিয়ে লুকিয়ে ছবি আঁকতে হয় অক্ষয়কে। না হলে স্কুলের পিয়ন দেখে ফেললে হেডস্যারকে বিচার দেবে।

অক্ষয়ের মজাই লাগে লুকোচুরি করে ছবি আঁকতে। স্কুল ভালো লাগে তার। সে স্কুলে ছবি আঁকা শেখে, অংক শেখে, বাংলা-ইংরেজি শেখে। কিন্তু তার পরীক্ষা দিতে একদম ভালো লাগে না। তবে পরীক্ষা শেষ হলে অনেক মজা লাগে।

স্কুলে সে বন্ধুদের সঙ্গে ভ্যানে করে যায় আসে। অনেক মজা হয়। এই তো সেদিন পিপলুর সঙ্গে চকলেট বাজি ধরেছে।

পিপলু বলেছিল, একটা এপিসোডে স্কুবি নাকি হারিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু অক্ষয় বলল, না, ও নিজে থেকে লুকিয়ে ছিল। শেষে দেখা গেল অক্ষয়ের কথাই ঠিক। সে-ই পেল চকলেট।

বাসায় এসে অক্ষয় কার্টুন দেখে। তার প্রিয় কার্টুন ‘স্কুবি ডু’ আর ‘ক্যাপ্টেন প্ল্যানেট’। লেগো খেলা তার পছন্দ। রং-বেরঙের লেগো দিয়ে সে বাড়ি বানায়।

অক্ষয়দের বাসাটা চার তলায়। জানালা দিয়ে নিচে অনেক টিনের চালাঘর দেখা যায়। বৃষ্টি হলে চালের ওপর বৃষ্টির আওয়াজ তার খুব ভালো লাগে।

রুমে একটা চার চাকার সাইকেল আছে। বিকেল হলে ছাদে সাইকেল চালায়। চালাতে গিয়ে মাঝে মাঝে তার পিপলুর কথা মনে পড়ে। পিপলুর খুব ইচ্ছে সাইকেল চালানোর। কিন্তু ওর বাবা এখনও কিনে দেয়নি।

অক্ষয়ের সবচেয়ে প্রিয় কাজ ছবি আঁকা। এ পর্যন্ত সে বেশ কয়েকটা মেডেল জিতেছে কম্পিটিশনে। ঘরের দেয়ালে তার আঁকা অনেক ছবি লাগানো। সবচেয়ে প্রিয় ছবিটা তার বিছানা বরাবর। একটি ছেলে নদীর ধারে গাছের নিচে বসা। ছেলেটিকে সে নিজেকে ভেবেই এঁকেছে।

অক্ষয়ের খুব ইচ্ছে এ রকম একটা জায়গায় গিয়ে বসবে। বাবা বলেছে, গ্রামে এ রকম জায়গা আছে; নিয়ে যাবে তাকে। কিন্তু কবে যে নিয়ে যাবে!

রাতে মাঝে মাঝে মা তাকে পড়ায়, হোমওয়ার্ক করায়।

১০টা বাজলেই অক্ষয় ঘুমিয়ে যায়। এরপর সে আর চোখ খোলা রাখতেই পারে না। তখন ঢুলুঢুলু চোখ আয়নায় দেখে নিজেরই হাসি পায়।

অক্ষয়ের বাসার কাছেই একটা ফাঁকা জায়গা আছে। স্কুলে যাওয়ার সময় প্রায়ই সে জায়গাটা দেখে। এখানে গত বার পূজার মণ্ডপ বসেছিল। কিন্তু সে বার মেসোর বাড়িতে থাকায় সে দেখতে পারেনি। এবার আসবে এই মণ্ডপে।

দেখতে দেখতে ক্লাস টুর ফাইনাল পরীক্ষা হয়ে গেল। রেজাল্ট হলেই থ্রিতে উঠবে। তার চেয়ে বড় কথা, এখন ছুটি। অনেক মজা লাগছে অক্ষয়ের। সে শুধু এখন ছবি আঁকবে। অনেক দৃশ্য জমে আছে মাথায়।

কিন্তু কিছুদিন পর একদিন বাবা হঠাৎ বললেন, ‘শোন অক্ষয়, তুই আপাতত থ্রিতে পড়বি না। কোচিং করে এক বছর পর ভালো স্কুলে ভর্তি হয়ে আবার পড়বি।’

অক্ষয় এ কথা শুনে খুব চমকে গেল। জিজ্ঞেস করল, ‘কেন বাবা? আমি তো স্কুলে পড়ছি। তাহলে আবার অন্য স্কুল কেন?’

বাবা বললেন, ‘বেশি বুঝিস না। তোর মাসি-পিসির ছেলেরা সব ভালো জায়গায় পড়ে, তোকেও পড়তে হবে। যা, ঘরে যা এখন।’

নিজের ঘরে এসে অক্ষয় কেঁদে ফেলল। বালিশে মুখ গুঁজে শুয়ে রইল। তার মাথার সব দৃশ্য যেন এলোমেলো হয়ে গেল।

দুই দিন পর মায়ের সঙ্গে স্কুল থেকে টিসি আনতে গিয়ে সে তার প্রিয় দেয়ালের কাছে এলো। এখানে অক্ষয়ের কত ছবি আঁকা। একটা ছবিতে এক ছেলের হাত মুছে গিয়েছিল। সেটা আবার ঠিক করে দিলো।

এরপর বেশ কয়েক মাস হয়ে গেছে। অক্ষয় আর স্কুলে যায় না, নিয়মিত বিভিন্ন কোচিং সেন্টারে যায়। বাসাতেও এক স্যার এসে পড়িয়ে যান।

এই স্যারকে ভয় লাগে তার। পড়া না পারলে স্কেল দিয়ে হাতে মারেন। এর চেয়ে মায়ের কাছে পড়তেই ভালো লাগত। কিন্তু এখন আর মা পড়ান না।

কোচিংয়ে যাওয়ার সময় প্রায়ই সে তার ভ্যানগাড়ির বন্ধুদের দেখে। পিপলুও থাকে সেখানে। ওরা অক্ষয়কে দেখে হাত নাড়ে। কিন্তু ওদের দেখে মন খারাপ হয়। তাই সে আর ওদের দিকে তাকাত না।

কোচিংয়ে অক্ষয়ের কোনো বন্ধু নেই। দুই-এক জনের সঙ্গে শুধু কথা হয়। ওখানে সবাই চুপচাপ আর পড়াশোনা নিয়ে থাকে। কেউ খেলে না।

সারা দিন কোচিং সেরে বাসায় এসে অক্ষয় আর কার্টুন দেখার সময় পায় না। তার প্রিয় কাজ ছবি আঁকা? গত কয় মাসে সে একটা ছবিও আঁকেনি। সাইকেলটা না চালাতে চালাতে চেইনে জং ধরেছে। ছাদেও যাওয়া হয় না অনেক দিন।

রাতে প্রায়ই ঘুমাতে ঘুমাতে ১২টা বেজে যায়। হোমওয়ার্ক থাকে অনেক। এখন আর অক্ষয় আগের মতো আয়নায় তাকিয়ে তার ঢুলুঢুলু চোখ দেখে না। কেমন যেন কালো দাগ পড়ে গেছে চোখের নিচে। তাই আর দেখতে ভালো লাগে না।

বর্ষাকাল এসে গেছে। ছাতা মাথায় দিয়ে কোচিংয়ে গেলেও প্রায় দিনই বৃষ্টির ছাঁটে গা ভিজে যায়। ভেজা গায়েই ক্লাস করে বাড়ি ফিরতে হয়।

কিন্তু কয়েক দিন ধরে অক্ষয় জ্বরের জন্য কোচিংয়ে যেতে পারছে না। শুরুতে হালকা জ্বর ছিল। তখন নাপা খেয়ে কোচিংয়ে গিয়ে পরীক্ষা দিয়ে এসেছে। কিন্তু তারপর থেকে জ্বর বেড়ে যাওয়ায় বিছানা ছেড়েই আর উঠতে পারছে না।

জ্বরের ঘোরে কী সব বলে অক্ষয়। মাঝে মাঝে জং ধরা সাইকেলের চেনটা দেখে। নিজের আঁকা প্রিয় ছবিটা দেখে। এখন আবার খুব ইচ্ছা করে নদীর ধারে গাছের নিচে বসে থাকার।

সেদিন গলির ফার্মেসির ডাক্তার আঙ্কেল তার আঁকা ছবিটা দেখে বলেন, ‘বাহ, তুমি তো দারুণ আঁকো!’

শুনে অক্ষয়ের খুব ভালো লেগেছে।

এভাবে আরও কয়েক দিন গেল। অক্ষয়ের শরীর আরও খারাপ হয়েছে। ডাক্তার বলেছে নিউমোনিয়া। শেষে হাসপাতালে ভর্তি হতে হলো। খুব শ্বাসকষ্ট। প্রায় সবসময় মুখে অক্সিজেন মাস্ক লাগানো থাকে।

অক্ষয় এটা খুব ভয় পায়। গত বছর দাদুমনির মুখে অক্সিজেন মাস্ক লাগিয়ে দিয়েছিল। তার কয়দিন পরই দাদুমনি মারা যান।

হাসপাতালে তার বিছানার সামনের দেয়ালটা নোংরা। অক্ষয়ের ইচ্ছা করে ওই দেয়ালে ছবি এঁকে সুন্দর করে তুলতে। কিন্তু অক্ষয়ের সব শক্তি তো ক্ষয় হয়ে গেছে।

এদিকে পূজার সময়ও চলে এসেছে। কিন্তু এ বছরও তার সেই মণ্ডপ দেখা হলো না।

এভাবে আরও দুই দিন গেল। সকাল থেকে অক্ষয়ের রুমে ডাক্তার আর নার্সদের ভিড়। তার শ্বাসকষ্ট বেড়ে গেছে। মা দূরে কাঁদছেন। বাবা দরজা ধরে চোয়াল শক্ত করে তাকিয়ে আছেন।

মণ্ডপ থেকে ঢাকের আওয়াজ কানে আসছে। স্কুলের বন্ধুদের কথা মনে পড়ছে। পিপলুকে অক্ষয় তার সাইকেলটা দিয়ে দিতে চায়। চোখের সামনে ভেসে উঠল তার আঁকা প্রিয় ছবিটা। অপলক চোখে সে তাকিয়ে দেখছে। নদীর ধারে, গাছের নিচে অক্ষয় বসে আছে।

ডাক্তার অক্ষয়ের মুখ থেকে মাস্ক খুলে ফেললেন। আলতো করে বন্ধ করে দিলেন চোখের পাতা।

বাইরে বৃষ্টি যেন বেড়ে গেছে। তুমুল বেগে আছড়ে পড়ছে মাটিতে, টিনের চালে।

লেখক: শিক্ষক, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি

মন্তব্য

আরও পড়ুন

কিড জোন
Sisimpurs special initiative in sign language for hearing impaired children

শ্রবণপ্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য ইশারা ভাষায় সিসিমপুরের বিশেষ উদ্যোগ

শ্রবণপ্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য ইশারা ভাষায় সিসিমপুরের বিশেষ উদ্যোগ শ্রবণপ্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য তৈরি হচ্ছে সিসিমপুরের বিশেষ কিছু পর্ব। ছবি: নিউজবাংলা
২৩ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ ডে। এই দিন থেকে সাইন ল্যাঙ্গুগুয়েজে নির্মিত সিসিমপুরের বিশেষ পর্বগুলো সিসিমপুরের সোশ্যাল ও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলোতে ধারাবাহিকভাবে প্রচার শুরু হবে, যা পরবর্তী পর্যায়ে টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতেও প্রচার হবে।

শ্রবণপ্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য নির্মিত হলো সিসিমপুরের বিশেষ কিছু পর্ব।

উদ্যোগের অংশ হিসেবে সিসিমপুরের জনপ্রিয় ১৩টি পর্বে শ্রবণপ্রতিবন্ধী শিশুদের উপযোগী করে সাইন ল্যাঙ্গুগুয়েজ তথা ইশারা ভাষা যুক্ত করে নতুনভাবে তৈরি করেছে সিসিমপুরের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান সিসেমি ওয়ার্কশপ বাংলাদেশ (এসডব্লিউবি)।

সিসিমপুরের পর্বগুলোকে ইশারা ভাষায় রূপান্তরে সহযোগিতা করেছে শ্রবণপ্রতিবন্ধী মানুষের উন্নয়নে কাজ করা সংগঠন সোসাইটি অব দ্য ডেফ অ্যান্ড সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ ইউজার্স (এসডিএসএল)।

২৩ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ ডে। এই দিন থেকে সাইন ল্যাঙ্গুগুয়েজে নির্মিত সিসিমপুরের বিশেষ পর্বগুলো সিসিমপুরের সোশ্যাল ও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলোতে ধারাবাহিকভাবে প্রচার শুরু হবে, যা পরবর্তী পর্যায়ে টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতেও প্রচার হবে।

বিশেষ এই উদ্যোগ সম্পর্কে সিসিমপুরের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, ‘সিসিমপুরের লক্ষ্য হচ্ছে বাংলাদেশের প্রতিটি শিশুর কাছে পৌঁছানো। তারই অংশ হিসেবে ইতোমধ্যেই আমরা দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য সিসিমপুরের ১০টি গল্পের বই ব্রেইল পদ্ধতিতে প্রকাশ করেছি ও শিশুদের মাঝে বিতরণ করেছি। এবার শ্রবণপ্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য নিয়ে আসছি ১৩ পর্বের বিশেষ সিসিমপুর।

‘ধারাবাহিকভাবে পর্বের সংখ্যা বাড়ানোর ইচ্ছে আছে আমাদের। আমাদের টেলিভিশন অনুষ্ঠান নির্মাণ ও অন্যান্য কার্যক্রম বাস্তবায়নে সহায়তা করার জন্য ইউএসএআইডি বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানাই।’

মন্তব্য

কিড জোন
One day at the police station

এক দিন থানায়

এক দিন থানায়
বন্ধুরা, চাইলে তোমরাও আমাদের কাছে জোকস লিখে পাঠাতে পারো। পাঠানোর ঠিকানা: [email protected]

এক লোককে থানায় ধরে আনা হলো।

ওসি: আপনাকে আজ রাতে থানায় থাকতে হবে।

ভদ্রলোক: চার্জ কী?

ওসি: কোনো চার্জ দিতে হবে না, ফ্রি।

-

বন্ধুরা, চাইলে তোমরাও আমাদের কাছে জোকস লিখে পাঠাতে পারো। পাঠানোর ঠিকানা: [email protected]

আরও পড়ুন:
নতুন সিইও
সাঁতার
পরীক্ষার চাপ
মাছ কথা বলে না
দুই গরু

মন্তব্য

কিড জোন
The wisdom of the lawyer

উকিলের বুদ্ধি

উকিলের বুদ্ধি
উকিল বললেন, "তবে শোন, আমার ফন্দি বলি। যখন আদালতের কাঠগড়ায় গিয়ে দাঁড়াবে, তখন বাপু হে কথাটথা কয়ো না। যে যা খুশি বলুক, গাল দিক আর প্রশ্ন করুক, তুমি তার জবাবটি দেবে না- খালি পাঁঠার মতো 'ব্যা- ' করবে। তা যদি করতে পার, তা হলে আমি তোমায় খালাস করিয়ে দেব।"

গরিব চাষা, তার নামে মহাজন নালিশ করেছে। বেচারা কবে তার কাছে ২৫ টাকা নিয়েছিল, সুদে-আসলে তা এখন ৫০০ টাকায় দাঁড়িয়েছে। চাষা অনেক কষ্টে ১০০ টাকা জোগাড় করেছে; কিন্তু মহাজন বলছে, ‌'৫০০ টাকার এক পয়সাও কম নয়; দিতে না পারো তো জেলে যাও।' সুতরাং চাষার আর রক্ষা নাই।

এমন সময় শামলা মাথায় চশমা চোখে তুখোড় বুদ্ধি উকিল এসে বললেন, 'ওই ১০০ টাকা আমায় দিলে, তোমার বাঁচবার উপায় করতে পারি।'

চাষা তার হাতে ধরল, পায়ে ধরল, বলল, ‌'আমায় বাঁচিয়ে দিন।'

উকিল বললেন, "তবে শোন, আমার ফন্দি বলি। যখন আদালতের কাঠগড়ায় গিয়ে দাঁড়াবে, তখন বাপু হে কথাটথা কয়ো না। যে যা খুশি বলুক, গাল দিক আর প্রশ্ন করুক, তুমি তার জবাবটি দেবে না- খালি পাঁঠার মতো 'ব্যা- ' করবে। তা যদি করতে পারো, তা হলে আমি তোমায় খালাস করিয়ে দেব।"

চাষা বলল, 'আপনি কর্তা যা বলেন, তাতেই আমই রাজি।'

আদালতে মহাজনের মস্ত উকিল, চাষাকে এক ধমক দিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, 'তুমি সাত বছর আগে ২৫ টাকা কর্জ নিয়েছিলে?'

চাষা তার মুখের দিকে চেয়ে বলল, 'ব্যা- '।

উকিল বললেন, 'খবরদার!- বল, নিয়েছিলি কি না।'

চাষা বলল, 'ব্যা- '।

উকিল বললেন, 'হুজুর! আসামির বেয়াদবি দেখুন।'

হাকিম রেগে বললেন, 'ফের যদি অমনি করিস, তোকে আমই ফাটক দেব।'

চাষা অত্যন্ত ভয় পেয়ে কাঁদ কাঁদ হয়ে বলল, 'ব্যা- ব্যা- '।

হাকিম বললেন, 'লোকটা কি পাগল নাকি?'

তখন চাষার উকিল উঠে বললেন, "হুজুর, ও কি আজকের পাগল- ও বহুকালের পাগল, জন্ম-অবধি পাগল। ওর কি কোনো বুদ্ধি আছে, না কাণ্ডজ্ঞান আছে? ও আবার কর্জ নেবে কি! ও কি কখনও খত লিখতে পারে নাকি? আর পাগলের খত লিখলেই বা কী? দেখুন দেখুন, এই হতভাগা মহাজনটার কাণ্ড দেখুন তো! ইচ্ছে করে জেনেশুনে পাগলটাকে ঠকিয়ে নেওয়ার মতলব করেছে। আরে, ওর কি মাথার ঠিক আছে? এরা বলেছে, 'এইখানে একটা আঙ্গুলের টিপ দে'- পাগল কি জানে, সে অমনি টিপ দিয়েছে। এই তো ব্যাপার!"

দুই উকিলে ঝগড়া বেধে গেল।

হাকিম খানিক শুনেটুনে বললেন, 'মোকদ্দমা ডিসমিস্।'

মহাজনের তো চক্ষুস্থির। সে আদালতের বাইরে এসে চাষাকে বললেন, 'আচ্ছা, না হয় তোর ৪০০ টাকা ছেড়েই দিলাম- ওই ১০০ টাকাই দে।'

চাষা বলল, 'ব্যা-!'

মহাজন যতই বলেন, যতই বোঝান, চাষা তার পাঁঠার বুলি কিছুতেই ছাড়ে না। মহাজন রেগেমেগে বলে গেল, 'দেখে নেব, আমার টাকা তুই কেমন করে হজম করিস।'

চাষা তার পোঁটলা নিয়ে গ্রামে ফিরতে চলেছে, এমন সময় তার উকিল এসে ধরল, 'যাচ্ছ কোথায় বাপু? আমার পাওনাটা আগে চুকিয়ে যাও। ১০০ টাকায় রফা হয়েছিল, এখন মোকদ্দমা তো জিতিয়ে দিলাম।'

চাষা অবাক হয়ে তার মুখের দিকে তাকিয়ে বলল, 'ব্যা-।'

উকিল বললেন, 'বাপু হে, ওসব চালাকি খাটবে না- টাকাটি এখন বের করো।'

চাষা বোকার মতো মুখ করে আবার বলল, 'ব্যা-।'

উকিল তাকে নরম গরম অনেক কথাই শোনাল, কিন্তু চাষার মুখে কেবলই ঐ এক জবাব! তখন উকিল বলল, 'হতভাগা গোমুখ্যু পাড়া গেঁয়ে ভূত- তোর পেটে অ্যাতো শয়তানি, কে জানে! আগে যদি জানতাম তা হলে পোঁটলাসুদ্ধ টাকাগুলো আটকে রাখতাম।'

বুদ্ধিমান উকিলের আর দক্ষিণা পাওয়া হলো না।

আরও পড়ুন:
বড় দিদি
লোভী কুকুর
সিন্ড্রেলা
বাবুর্চির বুদ্ধি
সুখু আর দুখু

মন্তব্য

কিড জোন
Smile and Ismail

স্মাইল ও ইসমাইল

স্মাইল ও ইসমাইল
বন্ধুরা, চাইলে তোমরাও আমাদের কাছে জোকস লিখে পাঠাতে পারো। পাঠানোর ঠিকানা: [email protected]

এক ফটো সাংবাদিক রাস্তায় বাচ্চাদের ছবি তুলছেন। সবাইকে একসঙ্গে বসিয়ে বললেন, স্মাইল।

ইসমাইল: জি স্যার?

সাংবাদিক: আরে তুমি দাঁড়াচ্ছ কেন? বসো।

ইসমাইল: ঠিক আছে।

সাংবাদিক: ওকে রেডি, স্মাইল।

ইসমাইল: ডাকলেন কেন স্যার?

সাংবাদিক: আরে বাবা তোমার সমস্যাটা কী? স্মাইল বললেই দাঁড়িয়ে যাচ্ছ কেন?

ইসমাইল: আমি তো বসেই আছি। আপনি আমার নাম ধরে ডাকেন বলেই দাঁড়িয়ে যাই।

-

বন্ধুরা, চাইলে তোমরাও আমাদের কাছে জোকস লিখে পাঠাতে পারো। পাঠানোর ঠিকানা: [email protected]

আরও পড়ুন:
সাঁতার
পরীক্ষার চাপ
মাছ কথা বলে না
দুই গরু
সাদা মুরগি-কালো মুরগি

মন্তব্য

কিড জোন
father and son

বাবা-মেয়ে

বাবা-মেয়ে
বন্ধুরা, চাইলে তোমরাও আমাদের কাছে জোকস লিখে পাঠাতে পারো। পাঠানোর ঠিকানা: [email protected]

মেয়ে: আলুর তরকারিটার স্বাদ কেমন হয়েছে?

বাবা: দারুণ স্বাদ হয়েছে। তুই রান্না করেছিস নাকি?

মেয়ে: না, আলু আমি ছিলেছি।

-

বন্ধুরা, চাইলে তোমরাও আমাদের কাছে জোকস লিখে পাঠাতে পারো। পাঠানোর ঠিকানা: [email protected]

আরও পড়ুন:
পরীক্ষার চাপ
মাছ কথা বলে না
দুই গরু
সাদা মুরগি-কালো মুরগি
ব্যবসা

মন্তব্য

ভুলোমনা

ভুলোমনা
বন্ধুরা, চাইলে তোমরাও আমাদের কাছে জোকস লিখে পাঠাতে পারো। পাঠানোর ঠিকানা: [email protected]

স্ত্রী: কি ব্যাপার, আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে কী দেখছ?

ভুলোমনা স্বামী: এই ভদ্রলোককে খুব চেনা চেনা লাগছে, কিন্তু কোথায় দেখেছি ঠিক মনে করতে পারছিনা।

-

বন্ধুরা, চাইলে তোমরাও আমাদের কাছে জোকস লিখে পাঠাতে পারো। পাঠানোর ঠিকানা: [email protected]

আরও পড়ুন:
মাছ কথা বলে না
দুই গরু
সাদা মুরগি-কালো মুরগি
ব্যবসা
টেলিভিশন এবং সংবাদপত্র

মন্তব্য

নতুন চাকরি

নতুন চাকরি
বন্ধুরা, চাইলে তোমরাও আমাদের কাছে জোকস লিখে পাঠাতে পারো। পাঠানোর ঠিকানা: [email protected]

এক যুবক নতুন চাকরি পেয়েছে। প্রথম দিন অফিসে এসেই কিচেনে ফোন করে বলল, ‘এখনি আমাকে এককাপ কফি দিয়ে যাও! জলদি!’

অন্যদিক থেকে আওয়াজ এল, ‘গর্দভ, তুমি কার সাথে কথা বলছ জান?’

যুবকটি থতমত এবং ভীত হয়ে বলল, ‘না! আপনি কে?’

‘আমি এই কোম্পানির ম্যানেজিং ডিরেক্টর’, রাগী গলায় উত্তর এল।

যুবকটি বলল, ‘আর আপনি জানেন কার সঙ্গে কথা বলছেন?’

‘না’, ওপার থেকে উত্তর এল।

‘বাবারে! বাঁচা গেছে’, বলে যুবকটি ফোন রেখে দিল।

-

বন্ধুরা, চাইলে তোমরাও আমাদের কাছে জোকস লিখে পাঠাতে পারো। পাঠানোর ঠিকানা: [email protected]

আরও পড়ুন:
দুই গরু
সাদা মুরগি-কালো মুরগি
ব্যবসা
টেলিভিশন এবং সংবাদপত্র
আম চোর

মন্তব্য

p
উপরে