কথিত মডেল ফারিয়া মাহবুব পিয়াসার কাছ থেকে জব্দ করা বিলাসবহুল গাড়ি দুটির মালিক তিনিই। এর মধ্যে বিএমডব্লিউ এস২০৯ মডেলের সিলভার রঙের গাড়িটি গত বছরের এপ্রিল মাসে আরেকজনের কাছ থেকে কেনেন তিনি। তবে পিয়াসা দীর্ঘদিনেও মালিকানা বদলের আবেদন না করায় বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) সার্ভারে পুরোনো মালিকের প্রতিষ্ঠানের নামই রয়ে গেছে।
আর এ কারণেই ছড়িয়েছে বিভ্রান্তি, সংবাদমাধ্যমের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেও ঘুরপাক খেতে হয়েছে।
অভিযোগ উঠেছে, বিএমডব্লিউ গাড়িটির মালিকানা পরিবর্তনের আবেদন করতে পিয়াসাকে বারবার অনুরোধ করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। সবশেষ গত এপ্রিলে তিনি আবেদনটি করেন। তবে গাড়িটি গত মাসে বিআরটিএতে পিয়াসার নামে রেজিস্ট্রেশন করা হলেও লকডাউনের কারণে সার্ভার আপডেট করা সম্ভব হয়নি, বলছেন কর্মকর্তারা।
পিয়াসা গাড়ি কেনার পর এক বছরেও কেন মালিকানা পরিবর্তনের আবেদন করেননি, তা নিয়ে সন্দিহান বিআরটিএর কর্মকর্তাদের পাশাপাশি গাড়িটির আগের মালিকপক্ষও।
বিআরটিএর সার্ভারে পিয়াসার ব্যবহৃত বিএমডব্লিউ এস২০৯ মডেলের সিলভার রঙের গাড়িটির নিবন্ধন এখনও দ্য রিলায়েবল বিল্ডার্সের নামে। এ তথ্য পাওয়ার পর প্রতিষ্ঠানটি সম্পর্কে খোঁজ নেয় নিউজবাংলা। জানা যায়, ওরিয়েন্ট ট্রেডিং অ্যান্ড বিল্ডার্স লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠানের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান দ্য রিলায়েবল বিল্ডার্স। এর মালিক শফিকুল আলম মিথুন।
বুধবার ‘পিয়াসার বিএমডব্লিউ গাড়ির মালিক কে?’ শিরোনামে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ার পর দ্য রিলায়েবল বিল্ডার্সের মালিক শফিকুল আলম মিথুন নিউজবাংলার সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
তিনি বলেন, ‘ঢাকা মেট্রো-গ-৩৯-৮৫৭৪ নম্বরের বিএমডব্লিউ আমাদেরই ছিল। যেটা আমি ২০১৫ সালে কিনে ব্যবহার শুরু করি। ২০১৮ সালে গাড়িটি আমি আমার আপন ছোট ভাই রিফাত বিন আলমকে দিই। পরে ছোট ভাই সেটা বিক্রি করে দেয়। এরপর আমি আর কিছু জানি না। পিয়াসার গাড়ি জব্দ হওয়ার পরই একবার সন্দেহ হয়েছিল। বুধবার গাড়িটি নিয়ে খবর প্রকাশের পর জানতে পারি, গাড়িটি এখনও আমার প্রতিষ্ঠানের নামেই আছে।’
শফিকুল আলম মিথুনের ছোট ভাই রিফাত বিন আলম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ভাইয়ার কাছ থেকে গাড়িটি নিয়ে আমি দুই বছর ব্যবহার করি। ২০২০ সালের এপ্রিল মাসে বারিধারার ৭১ প্রগতি সরণিতে অবস্থিত নিড ফোর স্পিড নামের একটি গাড়ির দোকানে এটি বিক্রি করে একটি পাজেরো কিনি।
‘সেই ক্রয়-বিক্রয়ের কাগজপত্রও আমার কাছে আছে। এরপর আমি আর কিছু জানি না। হঠাৎ পিয়াসাকে গ্রেপ্তারের পর আমার সেই পুরোনো গাড়ি দেখে আঁতকে উঠি। তখনও ভাবিনি বিআরটিএতে গাড়িটি আমাদের নামেই আছে। গাড়িটির বর্তমান মালিকানার তথ্য আপডেট হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা তো অনেক আগেই নাম পরিবর্তনের কাজ সেরে ফেলেছি। বিআরটিএতে গাড়িটির মালিকানায় এখনও আমাদের নাম কেন আছে বুঝতে পারছি না।’
রিফাত বিন আলমের বক্তব্যের সূত্র ধরে নিউজবাংলা কথা বলেছে নিড ফোর স্পিডের মালিক আতিক রহমান খানের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘পিয়াসাকে বিআরটিএ থেকে নাম পরিবর্তনের জন্য বারবার চাপ দিয়েও কোনো কাজ হচ্ছিল না। একপর্যায়ে ফোনে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন তিনি।’
নিড ফোর স্পিডের মালিক আতিক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা মূলত পুরোনো গাড়ি বেচাকেনার ব্যবসা করতাম, কিন্তু করোনার কারণে আমাদের ব্যবসায় চরম ক্ষতি হয়। তাই গাড়ির ব্যবসা বন্ধ করে অন্য ব্যবসা শুরু করেছি।’
পিয়াসার বিএমডব্লিউ সম্পর্কে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘এটা এক বছর আগের কথা। সম্ভবত ২০২০ সালের এপ্রিল মাসে রিফাত বিন আলম নামের একজনের কাছ থেকে আমরা ঢাকা মেট্রো-গ-৩৯-৮৫৭৪ নম্বরের বিএমডব্লিউ এস২০৯ মডেলের সিলভার রঙের একটি গাড়ি এক্সচেঞ্জ করি।
‘কাগজে-কলমে আমরা তাদের কাছ থেকে একটি বিএমডব্লিউ গাড়ি কিনে আরেকটি পাজেরো গাড়ি তাদের কাছে বিক্রি করি। সে সময়ে রিফাত বিন আলমের সঙ্গে আমরা ১০০ টাকার স্ট্যাম্পে গাড়ি বিক্রির চুক্তিনামাও করি।’
নিড ফোর স্পিডের মালিক আতিক বলেন, ‘আমরা এই বিএমডব্লিউ কেনার কয়েক দিনের মধ্যেই পিয়াসা নামের মেয়েটি লকডাউনের মধ্যেই আমাদের কাছ থেকে গাড়িটি কিনে নেয়। তার কাছে গাড়ি বিক্রির সেই কাগজপত্রও আমাদের কাছে আছে। তখন আমরা পিয়াসাকে বিআরটিএ থেকে নাম পরিবর্তনের জন্য তেমন চাপ দিইনি। কারণ তখন লকডাউন চলছিল।
‘লকডাউন শেষ হলে আমরা পিয়াসাকে চাপ দিতে থাকি, আপনি বিআরটিএ থেকে নাম পরিবর্তন করে নেন। সে আজ করছি, কাল করছি বলে ঘোরাতে থাকে। একটা সময় সে আমাদের ফোন ধরাই বন্ধ করে দেয়। পরে ফোন ধরলেও লকডাউনের দোহাই দিতে থাকে। আমাদের চাপাচাপিতেই এ বছরের এপ্রিল মাসে পিয়াসা বিআরটিএতে আবেদন করে। জুলাই মাসে নাম পরিবর্তন হয়। সেই পরিবর্তনের একটা কপি আমরা রাখি, আরেকটা কপি যিনি মূল বিক্রেতা তাকে দিই।’
তিনি আরও বলেন, ‘এরপর আমরা বিআরটিএতে কথা বলে আপডেট করতে বলি। যেহেতু আমাদের টাকাপয়সা জমা দেয়া আছে, সব কাগজ আপডেট করা আছে। তখন বিআরটিএ থেকে আমাদের জানানো হয়, লকডাউন চললে তাদের সার্ভারও বন্ধ থাকে। তাই লকডাউন উঠে গেলে তারা গাড়ির নাম পরিবর্তন আপডেট করে দেবে। অথচ এই লকডাউনের মধ্যেই এই গাড়ি নিয়ে এত কিছু হয়ে গেল।’
গাড়িটির মালিকানা পরিবর্তনসংক্রান্ত বিআরটিএর একটি অনুলিপি পেয়েছে নিউজবাংলা। এতে দেখা যায়, ফারিয়া মাহবুব পিয়াসা গত ১২ এপ্রিল ঢাকা মেট্রো-গ-৩৯-৮৫৭৪ নম্বরের বিএমডব্লিউ গাড়িটির মালিকানা পরবর্তনের আবেদন করেন। আবেদনে রেজিস্ট্রেশন কর্তৃপক্ষ সই করে ১২ জুলাই। আবেদনে পিয়াসা তার বনানীর বাসার ঠিকানা ব্যবহার করেন। বাবার নাম মাহবুব আলম বলে উল্লেখ করেন।
বিআরটিএর নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের সার্ভারে এখনও ঢাকা মেট্রো-গ-৩৯-৮৫৭৪ নম্বরের বিএমডব্লিউ গাড়িটি দ্য রিলায়েবল বিল্ডার্স নামেই নিবন্ধিত আছে। ২০২০ সালে এটার মালিকানা পরিবর্তন হওয়ার পরেও যদি আমাদের কাছে আসতে এত দিন লাগে, তাহলে বলতে হবে এর জন্য দায়ী তিনি, যিনি গাড়িটি কিনেছেন। কোনো অনিয়ম হলে সেটা পিয়াসা করেছেন। কারণ এতদিন নাম পরিবর্তন না করে তিনি বেআইনি কাজ করেছেন।’
গত মাসে বিএমডব্লিউ গাড়িটি পিয়াসার নামে রেজিস্ট্রেশন হলেও আপনাদের সার্ভারে নেই কেন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘করোনায় আমাদের কার্যক্রম সীমিত আকারে চলছে। লকডাউনে অফিস বন্ধ থাকে। অফিস বন্ধ থাকলে আমাদের সার্ভারেও কোনো কিছু আপডেট করা হয় না।’
তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘পিয়াসা ২০২০ সালে গাড়ি কিনে কেন ২০২১ সালের এপ্রিলে মাসে নিজের নামে রেজিস্ট্রেশনের আবেদন করবে? এতদিন সে কী করেছে? তার মানে গাড়িটি নিয়ে অন্য কোনো উদ্দেশ্য ছিল তার।’
আরও পড়ুন:তিন ওয়ানডে সিরিজে টিকে থাকার লক্ষ্য নিয়ে আগামীকাল শনিবার কলম্বোর আর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় ম্যাচে শ্রীলংকার মুখোমুখি হবে সফরকারী বাংলাদেশ। ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩টায়।
একই ভেন্যুতে শ্রীলংকার কাছে প্রথম ম্যাচে ৭৭ রানে হেরেছে বাংলাদেশ। নিজেদের ইনিংসে ২৬ বলে ৫ রানের মধ্যে ৭ উইকেট হারিয়ে লজ্জার হার নিয়ে মাঠ ছেড়েছে টাইগাররা। দলের এমন অবিশ্বাস্য ব্যাটিং ধস ক্রিকেটারদের পাশাপাশি ভক্তদেরও হতাশ করেছে।
ব্যাটিং ধসের ঘটনা নিয়ে বাংলাদেশ পেসার তাসকিন আহমেদ বলেন, ‘আমি ড্রেসিংরুমে কফি খাচ্ছিলাম এবং হঠাৎ করেই পাঁচ উইকেট পড়ে গেল। আশা করি, পরের ম্যাচেই আমরা ঘুরে দাঁড়াব এবং সবাই ভুল থেকে শিক্ষা নেবে।’
শ্রীলংকার ছুঁড়ে দেওয়া ২৪৫ রানের টার্গেটে ১ উইকেটে ১০০ রান তুলে ভালো অবস্থানে ছিল বাংলাদেশ। এরপর ২৬ বলে ৫ রানের মধ্যে ৭ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ হারে বাংলাদেশ। নাজমুল হোসেন শান্তর রান আউট দিয়ে টাইগাদের ব্যাটির ধস শুরু হয়।
এরপর নিজের প্রথম ওভারে দুই উইকেট শিকার করেন শ্রীলংকার স্পিনার হাসারাঙ্গা ডি সিলভা। লিটন দাসকে শূন্য হাতে এবং বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ রান করা তানজিদ হাসান তামিমকে(৬২) থামান ডি সিলভা।
হাসারাঙ্গার সাথে অন্য প্রান্ত দিয়ে কামিন্দু মেন্ডিসের ঘূর্ণিতে হারের মুখে ছিটকে পড়ে বাংলাদেশ। তানজিদের আউটের পরই বাংলাদেশ আতঙ্কিত হয়ে পড়ে বলে জানান তাসকিন।
৪৭ রানে ৪ উইকেট নিয়ে শ্রীলংকাকে ২৪৪ রানে গুটিয়ে দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করা তাসকিন বলেন, ‘দুর্দান্ত শুরুর পর, আমরা কিছুটা স্বস্তিতে ছিলাম। সবকিছু আমাদের পক্ষেই চলছিল। কিন্তু হঠাৎ সেই রান আউট এবং ক্রিজে সেট ব্যাটার তানজিদ আউট হয়ে গেল। এরপর আমরা কিছুটা আতঙ্কিত হয়ে পড়ি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আমাদের স্বাভাবিক খেলা খেলতে পারিনি এবং চাপের মুখে ভেঙে পড়েছিলাম। পরিসংখ্যান মতে এটি লো স্কোরিং মাঠ। বিশেষ করে দ্বিতীয় ইনিংসে এবং ম্যাচ হারার সম্ভাবনাও বেশি থাকে। তারপরও ম্যাচটি আমাদের হাতে ছিল এবং আমরা আরও ভাল করতে পারতাম।’
সিরিজে সমতা ফেরাতে হলে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে বাংলাদেশের খেলায় উন্নতি দরকার বলে মনে করেন তাসকিন। তিনি বলেন, ‘আমাদের পারফরমেন্সের উন্নতি ঘটানো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সিরিজে টিকে থাকতে হলে এটি অপরিহার্য।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের সেরা ১৫-২০ জন খেলোয়াড় নিয়ে দল গঠিত। বোলিং-ব্যাটিং মিলিয়ে ও খেলার সচেতনতার অভাবে আমরা শীর্ষ দলগুলোর থেকে কিছুটা পিছিয়ে আছি। আমরা একটি ভালো পরিবেশ এবং সংস্কৃতির মাধ্যমে এটি উন্নত করার চেষ্টা করছি।’
এখন পর্যন্ত শ্রীলংকার বিপক্ষে ৫৮ ম্যাচ খেলে মাত্র ১২টি জিতেছে বাংলাদেশ। ৪৪টিতে হার ও দু’টি ম্যাচ বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হয়।
ওয়ানডেতে নিজেদের সর্বশেষ সাত ম্যাচের সবগুলোতেই হেরেছে বাংলাদেশ। গত বছর আফগানিস্তানের কাছে ২-১ ব্যবধানে হারা সিরিজে সর্বশেষ জয় পেয়েছিল টাইগাররা। ঐ সিরিজের শেষ ম্যাচে হারের পর ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে টানা তিন ওয়ানডে এবং এ বছর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ভারত এবং নিউজিল্যান্ডের কাছে হারে তারা।
টুর্নামেন্টে পাকিস্তানের বিপক্ষে গ্রুপের শেষ ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেস্তে যাবার পর শ্রীলংকার কাছে হারে বাংলাদেশ।
শ্রীলংকার মাটিতে বাংলাদেশের ওয়ানডে রেকর্ড হতাশাজনক। ২৫ ম্যাচ খেলে মাত্র ২টিতে জয়, ২১টিতে হার ও ২টি পরিত্যক্ত হয়েছে। সর্বশেষ ২০১৯ সালে শ্রীলংকার মাটিতে দ্বিপাক্ষিক সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল টাইগাররা।
পক্ষান্তরে, সর্বশেষ পাঁচ সিরিজের চারটিতেই জিতেছে শ্রীলংকা। বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচ জিতে আরও একটি সিরিজ জয় নিশ্চিত করার লক্ষ্য থাকবে লংকানদের।
বাংলাদেশ দল : মেহেদি হাসান মিরাজ (অধিনায়ক), তানজিদ হাসান তামিম, পারভেজ হোসেন ইমন, মোহাম্মদ নাইম, নাজমুল হোসেন শান্ত, তাওহিদ হৃদয়, লিটন দাস, জাকের আলী, শামীম পাটোয়ারি, রিশাদ হোসেন, তানভীর ইসলাম, মুস্তাফিজুর রহমান, তানজিম হাসান, তাসকিন আহমেদ, নাহিদ রানা ও হাসান মাহমুদ।
শ্রীলংকা দল : চারিথ আসালাঙ্কা (অধিনায়ক), পাথুম নিশাঙ্কা, আভিস্কা ফার্নান্দো, নিশান মাধুশকা, কুশল মেন্ডিস, সাদিরা সামারাবিক্রমা, কামিন্দু মেন্ডিস, জেনিথ লিয়ানাগে, দুনিথ ওয়েলালাগে, হাসারাঙ্গা ডি সিলভা, মহেশ থিকশানা, জেফরি ভান্ডারসে, মিলান রত্নায়েকে (ফিট থাকা সাপেক্ষে), দিলশান মাধুশঙ্কা, আসিথা ফার্নান্দো ও ইশান মালিঙ্গা।
পাকিস্তান সেনাবাহিনী শুক্রবার জানিয়েছে, তারা গত তিন দিনে আফগানিস্তান থেকে সীমান্ত পেরিয়ে প্রবেশের চেষ্টা করা ৩০ জন জঙ্গিকে হত্যা করেছে। এর আগে গত সপ্তাহে একই সীমান্ত এলাকায় একটি আত্মঘাতী হামলায় ১৬ জন সৈন্য নিহত হয়।
সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘সেনাবাহিনী অসাধারণ পেশাদারিত্ব, সতর্কতা ও প্রস্তুতির পরিচয় দিয়েছে এবং একটি বড় বিপর্যয় রোধ করেছে।’
বিবৃতিতে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতকে জঙ্গিদের মদদ দেওয়ার অভিযোগ করা হয়েছে।
নড়াইল-যশোর-বেনাপোল জাতীয় মহাসড়ক। প্রায় ৭০ কিলোমিটার প্রশস্তকরণ জরুরি হয়ে পড়েছে দাবি স্থানীয়দের। কারণ পদ্মা ও মধুমতি সেতু চালুর পর এই মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বেড়েছে কয়েক গুণ। ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে পার হওয়ার পর নড়াইল-বেনাপোল সড়কের ৭০ কিলোমিটার খুবই সরু। ফলে এ অংশে প্রতিনিয়ত বাড়ছে দুর্ঘটনা। প্রাণ হারাচ্ছেন অনেকে। পঙ্গুত্ববরণ করছেন কেউ কেউ।
নড়াইলের তুলারামপুর হাইওয়ে থানা সূত্রে জানা গেছে, পদ্মা ও মধুমতী সেতু চালুর পর ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত (আড়াই বছর) নড়াইল-বেনাপোল মহাসড়কে ৬৯টি দুর্ঘটনা ঘটেছে এতে ৪১ জন নিহত এবং আহত হয়েছেন ৯৯ জন। কারণ হিসেবে উঠে এসেছে ৭০ কিলোমিটার সড়ক অপ্রশস্ততা এবং মহাসড়কে অবৈধ যান চলাচল।
এ মহাসড়কে পরিবহন চালানো সোলাইমান ও রিপন শেখসহ একাধিক চালক জানান, ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে থেকে নড়াইল-যশোর-বেনাপোল সড়ক প্রশস্ত কম হওয়ায় বিভিন্ন দিক থেকে আসা গাড়ি ক্রসিং করতে হয়। এতে প্রায়ই গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটে।
তুলারামপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ সেকেন্দার আলী জানান, দুর্ঘটনা রোধে নড়াইল-যশোর-বেনাপোল সড়ক প্রশস্তকরণ জরুরি হয়ে পড়েছে। সূত্র জানায়, ২০২২ সালের ১০ অক্টোবর ঢাকা-মাওয়া-নড়াইল-বেনাপোল জাতীয় মহাসড়কের কালনা এলাকায় মধুমতী নদীতে দেশের প্রথম ছয় লেনসেতু উদ্বোধন করা হয়। এরপর থেকেই ঢাকা, যশোর, বেনাপোল, কলকাতা, সাতক্ষীরা, খুলনা, মাগুরা, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়াসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে বাস, পণ্যবাহী ট্রাকসহ বিভিন্ন যাহবাহন পদ্মা ও মধুমতী সেতু দিয়ে নড়াইল রুটে চলাচল করছে। যানবাহনগুলো ক্রসিং কিংবা ওভারটেকিংয়ের সময় পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় পতিত হচ্ছে দুর্ঘটনায়। এ ব্যাপারে নড়াইল সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম বলেন, ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে থেকে নড়াইল হয়ে বেনাপোল পর্যন্ত প্রায় ১৩০ কিলোমিটার সড়ক ছয় লেন করার জন্য ইতোমধ্যে জমি অধিগ্রহণের কাজ চলছে। এ ছাড়া মধুমতী সেতুর নড়াইল প্রান্ত থেকে যশোর পর্যন্ত ২৪ ফুট থেকে দুপাশে আরো ১২ ফুট প্রশস্তকরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বগুড়ায় অপহৃত তিন শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করেছে সেনাবাহিনী। ঘটনায় জড়িত কিশোর গ্যাংয়ের চারজনকে আটক করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে শহরের মালতিনগর এলাকায় অভিযান চালিয়ে অপহৃতদের উদ্ধার এবং জড়িতদের আটক করা হয়।
আটককৃতরা হচ্ছে- আবির হোসেন বিদ্যুৎ (২৭), ওয়াজ মন্ডল (৩৬), মাসুম আলম নাঈম (২৭) ও মেহেদী হাসান (২৩)।
শুক্রবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেন বগুড়া সদর সেনা ক্যাম্পের ক্যাপ্টেন সাজ্জাদ রায়হান আকাশ।
সেনাবাহিনীর এই কর্মকর্তা জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ক্যাপ্টেন সাজ্জাদ রায়হানের নেতৃত্বে একটি টহল দল মালতিনগরে অভিযান চালায়। অপহরণকারীরা ভুক্তভোগীদের পরিবারের কাছ থেকে মুক্তিপণ দাবি করেছিল। অভিযানকালে সেনাবাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে অপহরণকারীরা হতভম্ব হয়ে পড়ে। কোনো সংঘর্ষ ছাড়াই শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়।
অভিযান শেষে সেনাবাহিনী বেশ কিছু সরঞ্জাম জব্দ করে। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে:৭টি দেশীয় ধারালো অস্ত্র, ১৩টি সিমকার্ড, ৩টি ফাঁকা স্ট্যাম্প, ২৭ লাখ ৫০ হাজার টাকার একটি চেক, একটি কম্পিউটার, বিদেশি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মদের বোতল, গাঁজা ও ইয়াবা সেবনের সরঞ্জাম।
তিনি আরো জানান, আটককৃতদের কাছ থেকে জব্দকৃত বিভিন্ন সরঞ্জাম বগুড়া সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, শিল্পী দেবাশিস চক্রবর্তীর আঁকা দশটি পোস্টারে ফুটে উঠবে কেনো জুলাই অনিবার্য হয়ে উঠেছিল এবং জুলাইয়ে কী ঘটেছিল।
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়ার ভেরিফাইড ফেসবুকে এক পোস্টে বলা হয়েছে, ‘জুলাই ২০২৪ এর অন্যতম যোদ্ধা শিল্পী দেবাশিস চক্রবর্তী সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে জুলাই কোমেমোরেশন প্রোগ্রামের অংশ হিসেবে দশটি পোস্টার এঁকেছেন। এই দশটি পোস্টারে ফুটে উঠবে কেনো জুলাই অনিবার্য হয়ে উঠেছিল এবং জুলাইয়ে কী ঘটেছিল। প্রতিদিন ধারাবাহিকভাবে একটি করে পোস্টার প্রকাশ করা হবে।'
আজকে জুলাইয়ের চতুর্থ পোস্টারটি প্রকাশ করা হলো বলে পোস্টে উল্লেখ করা হয়েছে।
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, এটা হাসিনার বাংলাদেশ নয়। এটা গণ অভ্যুত্থানের বাংলাদেশ। তাই আমরা হুঁশিয়ার করে বলতে চাই, যে কোনো মূল্যে সীমান্ত হত্যা বন্ধ করবো।
তিনি বলেন, ‘আমরা ক্ষমতার রাজনীতি করি না। আমরা উন্নয়ন বলতে শুধু ঢাকার উন্নয়ন বুঝি না। আমরা মনে করি, ঠাকুরগাঁওয়ের মতো প্রান্তিক জেলাগুলো দেশের উন্নয়নে একই কাতারে এসে দাঁড়াবে, সেটাই উন্নয়ন। দেশে আঞ্চলিক বৈষম্য রেখে উন্নয়ন কোনো উন্নয়ন নয়।’
নাহিদ ইসলাম আজ দুপুরে ঠাকুরগাঁও বাসস্ট্যান্ড গোলচত্বরে আয়োজিত এনসিপির পদযাত্রা কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ সব কথা বলেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমরা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের প্রথম শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারতের মধ্য দিয়ে এই পদযাত্রা শুরু করেছি। বিচার, সংস্কার এবং নতুন সনদের বাস্তবায়নে জনগণকেই আমাদের একমাত্র শক্তি হিসেবে বিবেচনা করছি।’
তিনি আরও বলেন, ঠাকুরগাঁও কৃষকদের জেলা, দেশে কৃষক নিপীড়ন রয়েছে। আমরা সেই দেশ গড়ে তুলতে চাই, যেখানে কোনো গণনিপীড়ন থাকবে না।
সমাবেশে এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, ঠাকুরগাঁও অঞ্চল দীর্ঘদিন ধরে উন্নয়ন বৈষম্যের শিকার। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, শ্রম- সবক্ষেত্রেই এখানে উপেক্ষা চলছে। কৃষকরা ন্যায্য মূল্য পায় না, শ্রমিকরা পায় না তাদের ন্যায্য মজুরি। বাজেট বরাদ্দেও ঠাকুরগাঁওকে উপেক্ষা করা হয়।
এনসিপির উত্তরাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনে তরুণ সমাজ যে আশা জাগিয়েছিল, তা গত এক বছরে বাস্তব রূপ পায়নি। বিচার, সংস্কার ও নতুন সংবিধান প্রণয়নের মতো মৌলিক দাবিগুলো এখনো অধরা। তাই আমরা ৬৪ জেলায় যাব, জনগণের মত শুনে একটি গণতান্ত্রিক ইশতেহার তৈরি করবো।’
তিনি জানান, শহীদ আবু সাঈদের কবর থেকে শুরু হওয়া এই পদযাত্রায় এনসিপির প্রায় সব কেন্দ্রীয় নেতা অংশ নিয়েছেন। জুলাই সনদ ও সংস্কার বাস্তবায়নের সংগ্রামে আমরা পিছপা হবো না।
সমাবেশে বক্তব্য দেন এনসিপি নেতা রফিকুল ইসলাম কনক, আব্দুল মুনীম, যুগ্ম মুখ্য সংগঠক আসাদুল্লাহ গালিব, শ্রমিক উইং নেতা আকিব উদ্দিন ও যুগ্ম মুখ্য সংগঠক সাদিয়া ফারজানা দিনা প্রমুখ।
কর্মসূচিতে আরও উপস্থিত ছিলেন দলটির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনীম জারা, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদসহ অন্যরা।
সরকারি চাকরি (দ্বিতীয় সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫ এর অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ।
বৃহস্পতিবার (০৩ জুলাই) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের ভেটিং-সাপেক্ষে ‘সরকারি চাকরি (দ্বিতীয় সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ চূড়ান্ত অনুমোদন করা হয়েছে।
এর আগে সকালে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে তাঁর কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
এছাড়া সভায় ‘বিশ্ব প্রতিবন্ধী দিবস’ ১৫ মার্চের পরিবর্তে ৩ ডিসেম্বর, ‘আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস ও জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবস’ ‘খ’ শ্রেণি হিসেবে অন্তর্ভুক্তকরণ এবং ২ এপ্রিল ‘বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস’ ঘোষণার প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে।
পাশাপাশি ওআইসি লেবার সেন্টারের সংবিধিতে সই প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে এবং পারমাণবিক জ্বালানি এবং তেজস্ক্রিয় বর্জ্য ব্যবস্থাপনার নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ) কর্তৃক ১৯৯৭ সালের ৫ সেপ্টেম্বরে গৃহীত ‘ব্যয়িত জ্বালানি ব্যবস্থাপনার নিরাপত্তা এবং তেজস্ক্রিয় বর্জ্য ব্যবস্থাপনার নিরাপত্তা বিষয়ক যৌথ কনভেনশনে’ সইয়ের প্রস্তাবও অনুমোদন করা হয়।
মন্তব্য