হেলেনা জাহাঙ্গীরকে নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা শেষ না হতেই আলোচনায় এসেছেন মো. মনির খান, যিনি বাংলাদেশ জননেত্রী শেখ হাসিনা পরিষদ নামে আরেকটি ভুঁইফোঁড় সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি।
ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনাসহ ক্ষমতাসীন দলটির অনেক নেতার সঙ্গেই তার ‘ওঠা-বসার ছবি’ আছে। অভিযোগ আছে, এর সব ছবিই ফটোশপে কারসাজি করা। তিনি ভুঁইফোঁড় সংগঠনটি খুলে বিএনপি-জামায়াত এবং তাদের ছাত্রসংগঠন ছাত্রদল-ছাত্রশিবিরের অনেক নেতাকে টাকার বিনিময়ে পদ দিয়েছেন। এ ছাড়া জমির দালালি এবং তদবির-বাণিজ্য করে অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন। এখন চাইছেন কেরানীগঞ্জ ও সাভারের অংশবিশেষ নিয়ে গঠিত ঢাকা-২ আসনের এমপি হতে।
আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, বাংলাদেশ জননেত্রী শেখ হাসিনা পরিষদের মতো সংগঠনের সঙ্গে সঙ্গে দলটির কোনো সম্পৃক্ততা নেই। যারা এ ধরনের ভুঁইফোঁড় সংগঠন চালাচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া শুরু হয়েছে।
পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মনির খান প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ছবি কারসাজি করেছেন। তাকে যেকোনো সময় গ্রেপ্তার করা হবে।
তবে মনির খান এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলছেন, তিনি অপপ্রচারের শিকার।
আওয়ামী লীগ এবং দলটির সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতারা জানান, বছর ১৫ আগে রাজধানীর গুলিস্তানে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের প্রধান কার্যালয়ের উল্টো পাশের একটি কাপড়ের দোকানে দরজির কাজ করতেন এই মনির খান। ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর দলটির রাজনীতিতে সক্রিয় হতে শুরু করেন তিনি। মুজিব কোট পরে বিভিন্ন সভা-সমাবেশে যোগ দিতে থাকেন। তবে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের প্রধান কার্যালয়ের চেয়ে তাকে বেশি দেখা যেত ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয়ে। কারণ, বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়েই একসময় দরজির কাজ করতেন মনির খান।
চাকরিজীবী লীগ নামে একটি ভুঁইফোঁড় সংগঠনের জন্ম দিয়ে আলোচনায় আসা হেলেনা জাহাঙ্গীরকে গত ২৯ জুলাই রাতে আটকের পরপরই আলোচনা শুরু হয় এই মনির খানকে নিয়ে। আওয়ামী লীগ এবং এর সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা সরব হন তার বিরুদ্ধে। অনেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্ট্যাটাস দিয়ে তার বিরুদ্ধে আইনি ও সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান।
ছাত্রলীগের সাবেক কর্মী ইয়াসির আরাফত রুবেল ফেসবুকে এক পোস্টে লিখেছেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে ফটো এডিট করে শেখ হাসিনা পরিষদ নামে নামে ভুঁইফোঁড় সংঘঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মনির খান ওরফে দরজি মনিরকে কেন এখনো গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না, মাননীয়রা কি উত্তর দিবেন?”
যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী ছাত্রলীগের সাবেক নেতা গোলাম ইরতেজা মনি প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার সঙ্গে মনির খানের একটি ছবি ফেসবুকে পোস্ট করে লিখেছেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর পাশের চেয়ারে বসা এই ভদ্রলোক কি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বার?’
ইয়াসির আরাফত রুবেল ও গোলাম ইরতেজা মনির মতো ছাত্রলীগ-যুবলীগের আরও অনেক সাবেক ও বর্তমান নেতা মনির খানকে নিয়ে ফেসবুকে এ ধরনের পোস্ট দিয়ে ব্যবস্থা নেয়ার জোর দাবি জানিয়েছেন। একই দাবি জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ সহযোগী সংগঠনগুলোর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।
নাম না প্রকাশের শর্তে আওয়ামী লীগের উপকমিটি ও যুবলীগের একাধিক নেতা নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন, ২০০৪-০৫ সালের দিকে তারা যখন ছাত্রলীগ করতেন, তখন নিয়মিতই বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ের পার্টি অফিসে যেতেন। পার্টি অফিসের ঠিক বিপরীত পাশের একটি কাপড়ের দোকানে দরজির কাজ করতেন এই মনির খান।
‘আমরা ওই দোকানের সামনে যখন চা খেতাম, তখন মাঝে মাঝে মনির খানও আমাদের সঙ্গে এসে আড্ডা দিত। তখন তার ঘাড়ে কাপড় মাপা ফিতা থাকত’, বলেন তাদের একজন।
তিনি আরও বলেন, ‘এরপর হঠাৎ একদিন দেখি ধানমন্ডির আওয়ামী লীগ অফিসে মুজিব কোট গায়ে দিয়ে মনির খান ঘুরে বেড়াচ্ছে। কথা বলে জানতে পারলাম, সে বাংলাদেশ জননেত্রী শেখ হাসিনা পরিষদ নামে একটি সংগঠনের সভাপতি হয়েছে।’
তীব্র হতাশা প্রকাশ করে ছাত্রলীগের সাবেক এই নেতা বলেন, ‘এরপর মনির খানকে আমি মাঝে মাঝেই পার্টি অফিসে বড় বড় নেতার সঙ্গে দেখতাম। নেতারাও আমাদের থেকে তাকেই বেশি মূল্যায়ন করত। মনিরের বেশভূষা দেখেই বোঝা যেত, সে অনেক টাকার মালিক হয়ে গেছে।
‘পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারলাম, মনির খান কেরানীগঞ্জ এলাকায় জমির দালালি করে প্রচুর টাকা বানিয়ে ফেলেছে। তা ছাড়া সে সারা দেশে তার ভুঁইফোঁড় সংগঠনের কমিটি দেয়ার নামে বাণিজ্য করে প্রচুর টাকা কামিয়েছে। বিএনপি-জামায়াত, ছাত্রদল-ছাত্রশিবিরের নেতাদেরও টাকার বিনিময়ে তার বানোনো দলে পদ দিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘শুধু তাই না, এই মনির তার ভুঁইফোঁড় সংঘঠনের নামে জাতীয় প্রেস ক্লাবসহ বিভিন্ন জায়গায় রাজনৈতিক প্রোগ্রাম করে। সেখানে সে আওয়ামী লীগের বড় নেতা ও মন্ত্রীদের প্রধান অতিথি হিসেবে রাখে।
‘এভাবে সে বড় বড় নেতা ও মন্ত্রীর কাছের লোক হয়ে যায়। পরে তাদের কাছে বিভিন্ন তদবির-বাণিজ্য করে। এভাবেই মনির কয়েক বছরে অঢেল অর্থসম্পত্তি বানিয়ে ফেলে এখন ঢাকা-২ আসনের এমপি হতে চাইছে।’
এসব অভিযোগের সত্যতা জানতে নিউজবাংলা রোববার খোঁজ নেয় বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ের সামনের কাপড়ের দোকানগুলোয়। করোনার কারণে লকডাউন চলায় সব দোকান বন্ধ ছিল; তাই দোকানমালিকদের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। পরে মোবাইল ফোনে কথা হয় আওয়ামী লীগের প্রধান কার্যালয়ের বিপরীত পাশের মাদারীপুর বস্ত্র বিতানের মালিক মো. হিরনের সঙ্গে।
হোয়াটসঅ্যাপে মনির খানের ছবি দিয়ে তার সম্পর্কে জানতে চাইলে হিরন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘না, আমি এই মনির খানকে চিনি না। সে আমার দোকানে কোনো দিন কাজ করেনি। তবে আমাদের আশপাশে এই রকম আরও অনেক টেইলার্সের দোকান আছে, সেখানে কাজ করতো কিনা জানি না।’
মনির খানের ফেসবুক ঘেঁটে দেখা গেছে, ১০ হাজারের বেশি ফলোয়ার রয়েছে তার। প্রোফাইল পিকচারে মুজিব কোট ও চাদর পরা একটি ছবি আছে মনির খানের। ওই চাদরে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নির্বাচনি প্রতীক নৌকা এবং সেই নৌকায় বাংলাদেশের জাতীয় পতাকাসংবলিত একটি ব্যাচ রয়েছে। মনির খানের কাভার ফটোতে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সঙ্গে তার একটি ছবি আছে।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আরও কিছু ছবি আছে তার ফেসবুকে। প্রধানমন্ত্রীর ছেলে ও তার তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় এবং তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের সঙ্গেও ছবি দিয়েছেন তিনি।
এ ছাড়া বিভিন্ন মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতার সঙ্গে তার ‘ওঠা-বসার ছবি’ দেখা যায় ফেসকুকে। ছবিগুলো ভালো করে লক্ষ করলে বোঝা যায়, খুব সূক্ষ্মভাবে সম্পাদনার মধ্যমে শীর্ষস্থানীয় নেতাদের ছবির জায়গায় নিজের ছবি বসিয়ে সেগুলো প্রচার করছেন মনির খান। ফটোশপে কারসাজি করা এসব ছবির বেশির ভাগেই তার চেহারা অন্যদের তুলনায় বড় দেখাচ্ছে।
নিউজবাংলা এ ধরনের কয়েকটি ছবি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যপ্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক বি এম মইনুল হোসেনকে দেখিয়ে মন্তব্য জানতে চায়।
তিনি বলেন, ‘অফিশিয়ালভাবে আসলে ছবির ফরেনসিক অ্যানালাইসিস না করে আমরা মন্তব্য করি না। তবে আন-অফিশিয়ালি যদি বলি, তাহলে ছবিগুলো দেখেই বোঝা যাচ্ছে, এগুলো প্রযুক্তির সাহায্যে তৈরি করা। এটা শুধু আমি না, যেকোনো মানুষই এই ছবি দেখলেই বলবে, এগুলো এডিট করে করা।’
ফেসবুক আইডিতে মনির খানের পরিচয় অংশে লেখা আছে, ২০১৩ সালে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটিতে সহ-সম্পাদক ছিলেন তিনি। পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক কেন্দ্রীয় উপকমিটির সদস্য হন। তিনি কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার। এগুলোর মধ্যে রয়েছে বাংলার রূপসী গার্মেন্টস লিমিটেড, যার ব্যবস্থাপক পরিচালক তিনি। বাংলাদেশ সময় প্রতিদিন নামে একটি পত্রিকার প্রধান উপদেষ্টা তিনি।
এ ছাড়া গ্লোবাল ৪১ ইঞ্জিনিরিং অ্যান্ড কনসালটেন্ট লিমিটেড, পোশাক মেলা ফ্যাশন হাউস প্রাইভেট লিমিটেড এবং অটিজম বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল ভয়েস সোসাইটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। ফেসবুকে তিনি তার প্রায় সব পোস্টেই নিজেকে বঙ্গবন্ধুকে কটূক্তিকারী তারেক জিয়ার মামলার বাদী দাবি করেছেন।
মনির খান তার ফেসবুকে লিখেছেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনে ঢাকা-২ আসনে আওয়ামী লীগের এমপি প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র কিনেছিলেন। আরেক জায়গায় তিনি লিখেছেন, ‘এমপি পদপ্রার্থী ঢাকা-২ আসন, আওয়ামী লীগ।’
তার এমন পরিচিতি ও কর্মকাণ্ড সম্পর্কে জানতে নিউজবাংলা কথা বলেছে ঢাকা-২ আসানের সাবেক আরেক এমপি প্রার্থী বর্তমানে কেরানীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান শহীন আহম্মেদের সঙ্গে। মো. মনির খান নাম শুনেই তিনি বলেন, ‘মনির খান নামে আমি কাউকে চিনি না। আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠন যেমন যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ করলে হয়তো তাকে চিনতাম। ভুঁইফোঁড় কোনো সংগঠনের কাউকেই আমি চিনি না।’
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে মনির খান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘রাজনীতি করলে পতিপক্ষ থাকবেই। আমার পতিপক্ষরাই আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। একটা মানুষ তো সবার কাছে ভালো থাকতে পারে না।’
প্রধানমন্ত্রী ও তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের সঙ্গে ছবির বিষয়ে প্রশ্ন করতেই ‘মিটিংয়ে আছি’ বলে সংযোগ কেটে দেন মনির খান।
তার বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে প্রত্যেক নাগরিকের বিধিবদ্ধ সংগঠন করার অধিকার রয়েছে। কিন্তু প্রতারণা করার অধিকার কারও নেই।
‘কতিপয় সুযোগসন্ধানী দুষ্ট ব্যক্তি জাতির পিতা, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের নামের অপব্যবহার করে ফায়দা হাসিল করছে। এদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হয়েছে, আরও জোরদার হবে।’
ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার যুগ্ম কমিশনার হারুন-অর-রশীদ রোববার সন্ধ্যায় নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মনির খান প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন ব্যক্তির ছবির সঙ্গে নিজের ছবি জুড়ে দিয়েছেন। তিনি অসৎ উদ্দেশ্যে এসব ছবি ব্যবহার করেছেন বলে আমরা জানতে পেরেছি। তাকে নজরদারিতে রেখেছি, যে কোনো সময় গ্রেপ্তার করা হবে।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ছাত্রলীগের সাবেক এক নেতা নিউজবাংলাকে জানান, মনিরের গ্রামের বাড়ি মাদরীপুরের কালকিনি উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নে। তার বাবা অনেক আগেই ঢাকার কেরানীগঞ্জ এলাকায় চলে আসেন। সেখানে তিনি মাটি কাটার কাজ করতেন। মনির এখন পরিবারসহ কেরানীগঞ্জ এলাকায় বাসবাস করেন। এই করণেই ওই এলাকার (ঢাকা-২ আসন) এমপি হতে চান। মনিরের বর্তমানে একাধিক স্ত্রী আছেন।
আওয়ামী লীগ নেতারা যা বলছেন, বাংলাদেশ জননেত্রী শেখ হাসিনা পরিষদের মতো ৭২টি ভুঁইফোঁড় সংগঠনের সঙ্গে সঙ্গে আওয়ামী লীগের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তারা বলছেন, আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন হচ্ছে যুবলীগ, মহিলা লীগ, কৃষক লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, যুব মহিলা লীগ, তাঁতী লীগ, আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ ও মৎস্যজীবী লীগ। জাতীয় শ্রমিক লীগ ও ছাত্রলীগ হলো দলটির ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন। আর মহিলা শ্রমিক লীগ ও স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ আওয়ামী লীগের ‘নীতিগত’ অনুমোদিত সংগঠন।
ভুঁইফোঁড় সংগঠনগুলোকে সতর্ক করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা আগেও বলেছি। আমাদের সুনির্দিষ্ট কয়েকটি সহযোগী সংগঠন ছাড়া বাকি যেগুলো আছে, আওয়ামী লীগের নামে বিভিন্নজন করেছে, এগুলোর কোনো সাংগঠনিক ভিত্তি নেই।
‘এরা বেশির ভাগই আওয়ামী লীগের নামটা ব্যবহার করে তাদের সুবিধা ভোগ করার জন্য অবৈধ এ পন্থা অবলম্বন করেছে। এদের বিরুদ্ধে আগেও আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিয়েছিলাম। প্রশাসনকে সে দায়িত্ব দিয়েছিলাম। সে সময় অনেকেই গা ঢাকা দিয়েছিল এবং তাদের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। এখন আবার এ রকম কয়েকটি সংগঠনের নাম শোনা যাচ্ছে।’
রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রস্তাবিত ইলেকট্রোরাল কলেজব্যবস্থাকে সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য বলে মন্তব্য করেছে বিএনপি। দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘জনগণের ভোটাধিকার হরণে এই ব্যবস্থাকে আরেকটি ছলচাতুরী হিসেবে দেখা হচ্ছে।’
গতকাল বুধবার বিকালে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য কমিশনের যে প্রস্তাব তাতে একটা ইলেক্টোরাল কলেজ করা হবে। এবং প্রায় ওনাদের ভাষ্য অনুযায়ী ৭০ হাজারের মতো ভোটার থাকবে। ইউনিয়ন পর্যায় থেকে শুরু করে স্থানীয় সরকার পর্যায়ের প্রতিনিধিগণ এখানে ভোটার হবেন। এবং রাষ্ট্রপতিকে সৎ, দক্ষ ও অভিজ্ঞ একজন ব্যক্তিকে মনোনয়ন দেওয়ার জন্য ওখানে প্রস্তাব করা হয়েছে।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠনের প্রস্তাবে আগের মতোই একমত নয় বিএনপি।
এই কাউন্সিলের জবাবদিহি না থাকায় সমর্থন করে না বিএনপি। এই কাউন্সিলে আরেকটি ভারসাম্যহীন অবস্থা তৈরি হবে বলে মনে করি আমরা।’
স্বাধীন বিচারব্যবস্থার দাবি জানিয়ে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘স্বাধীন বিচারব্যবস্থা হলে ভারসাম্যহীনতা দূর হবে, ফ্যাসিবাদ দমন করবে। প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার ভারসাম্য, অন্য সাংবিধানিক পদ, সংস্থা স্বাধীন করতে পারলে সমস্যা থাকবে না।’
বিএনপি মনে করে সুশাসন নিশ্চিত করতে ন্যায়পাল করা যেতে পারে। বিদ্যমান ব্যবস্থা বজায় রেখে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ হলে তাদের যোগ করা যেতে পারে, বলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন আইন সংশোধন করা যেতে পারে। জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে। বিএনপি মনে করে, দুদক ও মানবাধিকার কমিশনের মতো প্রতিষ্ঠান শক্তিশালী করতে বিদ্যমান আইনগুলো সংস্কারের প্রয়োজন।
কেরানীগঞ্জের শাক্তা ও তারানগর ইউনিয়নের বুক চিরে চলা ভাওয়াল-চন্ডিপুর-অগ্রখোলা সড়কের বেহাল দশায় নিত্যদিন ভোগান্তিতে পড়ছে হাজারো মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের অভাবে সড়কজুড়ে এখন গর্ত আর ধুলাবালি। সামান্য বৃষ্টিতে কাদায় যানবাহন আটকে যায়, আর শুকনো মৌসুমে উড়ে ধূলোর ঝড়।
রাস্তাটির বেহাল অবস্থার কারণে প্রায় প্রতিদিনই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন পথচারী ও যানবাহনের চালকরা। ছোট-বড় গর্তে হোঁচট খেয়ে পড়ে আহত হন অনেক পথচারী। অন্যদিকে, যানবাহন চলাচলের অযোগ্য এই সড়কে প্রতিনিয়তই নষ্ট হয়ে পড়ে ভ্যান, অটোরিকশা, ট্রাকসহ বিভিন্ন গাড়ি। আকিজ ফাউন্ডেশন স্কুল, মেকাইল মাদ্রাসা ও অগ্রখোলা কমিউনিটি হাসপাতালের সামনের অবস্থা এতটাই খারাপ যে মাঝে মাঝেই উল্টে যায় যাত্রী বোঝাই যানবাহন ।
সড়কের করুণ অবস্থার কারণে অনেক চালক ও পথচারী এখন পাশের বেলনা, কলাতিয়া ও নয়াবাজার হয়ে বিকল্প রাস্তায় যাতায়াত করছেন। এতে সময়, অর্থ ও দুর্ভোগ বাড়ছে।
এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন কেরানীগঞ্জ ছাড়াও নবাবগঞ্জ, দোহার, সিরাজদিখানসহ দক্ষিণবঙ্গের হাজার হাজার মানুষ মোহাম্মদপুর হয়ে রাজধানীতে প্রবেশ করে। অথচ বছরের পর বছর ধরে অবহেলায় পড়ে আছে সড়কটি।
স্থানীয় বাসিন্দা কবির হোসেন বলেন, ‘রাস্তাটার অবস্থা এমন যে, অটোরিকশা সিএনজিতে ওঠা মানেই কোমর ভাঙা। মাঝে মাঝেই যানবাহন পড়ে মানুষ আহত হয়। স্কুলের বাচ্চারা পর্যন্ত ভয়ে এই রাস্তায় যেতে চায় না। কোন এমপি-মন্ত্রী একবার এই রাস্তা দিয়ে গেলে বুঝত কষ্টটা কেমন।
একই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পণ্যবাহী ট্রাকচালক রাকিব হাওলাদার। তিনি বলেন, একবার গর্তে পড়লে গাড়ির যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে যায়। ট্রাকে থাকা জিনিসপত্র পড়ে যায়, এভাবে থাকলে এই রাস্তা দিয়ে আর চলাচল করা সম্ভব নয়। এটি দ্রুত সংস্কার করা উচিত।
এ বিষয়ে কেরানীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-প্রকৌশলী আব্দুল লতিফ বলেন, সড়কটি ইতোমধ্যে ডিপিপিতে অনুমোদন পেয়েছে। তাই এখন সংস্কার করা হচ্ছেনা। বছরের শেষ দিকে ২০ ফুট প্রশস্ত করে এবং আরও শক্তিশালী করে কাজ শুরু হবে। তখন রাস্তাটি আরো টেকসই হবে।
এদিকে এলাকাবাসীর দাবি, সংস্কার কাজ শুরুর আগ পর্যন্ত অন্তত গর্ত ভরাট করে সাময়িক চলাচলের উপযোগী করে তুলতে হবে। নইলে প্রতিদিন দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।
একটা ভাঙাচোরা বাইসাইকেলই তার ভরসা। এ সাইকেল চালিয়ে ১৫ কিলোমিটার দুরের দুর্গম খাসিয়া পল্লীতে কাজ করে দুই-আড়াইশ টাকা রোজগার করে কিশোর তোফাজ্জল (১৪)। মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার সীমান্তবর্তী ৯নং ইসলামপুর ইউনিয়নের কাঁঠালকান্দী গ্রামের আলী আহমেদ (৬৫) এর ছেলে তোফাজ্জল হোসেন। পরিবারে সে একমাত্র উপার্জনক্ষম। বাবা হার্টের রোগী, বোন আয়েশা খাতুন (২৫) মানসিক ভারসাম্যহীন আর বয়োবৃদ্ধ দাদী সমিতা বিবি (৮২) দীর্ঘদিন ধরে শয্যাশায়ী।
তোফাজ্জল কান্নাজড়িত কন্ঠে এ প্রতিবেদককে বলেন, প্রতিদিনি সকালে ভাঙাচোরা একটি সাইকেল নিয়ে ১৫ কিলোমিটার দুরের খাসিয়া পল্লীতে কাজে যাই। সন্ধ্যায় ফিরি। যা রোজগার হয়, দুবেলাও খেতে পাইনা। এ দুনিয়ায় আল্লাহ ছাড়া আমাদের আর কেউ নাই। প্রতিবেশী ফজল মিয়া, আবু শহীদ এ পরিবারের দুরাবস্থার কথা জানিয়ে বলেন, প্রকৃতই তারা খুব অসহায় ও মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন। তিনজনই অসুস্থ। মাঝে মধ্যে আমরা যতটা সম্ভব সহযোগিতা করার চেষ্টা করি।
সরেজমিন তোফাজ্জলদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, সরকারি আবাসন প্রকল্পের ছোট্ট একটি ঘরে মেঝেয় জীর্ণ-শীর্ণ কাঁথায় শুয়ে আছেন সমিতা বিবি। অপুষ্টি আর ক্ষুধার যন্ত্রণায় ক্লান্ত। ঠিকমতো কথা বলতে পারছেন না। যা বললেন বোঝা গেলো, ডালভাত খেয়ে ঈদের দিন পার করেছি। ক্ষিদের জ্বালায় রাতে ঘুম আসে না। একরত্তি নাতি আর কিইবা করবে। তবু যা করছে আল্লাহর কাছে শুকরিয়া। চাল ডাল আনলে ওষুধ আনতে পারে না। তবু প্রায়ই অনাহারে থাকতে হয়। ঈদে চান্দে প্রতিবেশীরা কেউ খাবার দেয়, কেউ সামান্য টাকা-পয়সা দেয়। এইভাবেই টিকে আছি।
স্থানীয়দের সহযোগিতাই একমাত্র ভরসা। মানুষের সাহায্যে দুমুঠো ভাত খেতে পারেন, যদি কেউ সাহায্যে না করে তাহলে না খেয়েই থাকতে হয়। তার বিলাপে চোখে জল চলে আসে। এ যেন দারিদ্র্যের এক করুণ চিত্র। এই অসহায় নারীর জীবন কাটছে অভাব আর কষ্টে। পা ভেঙে এক বছর ধরে শয্যাশায়ী। ছেলে আলী আহমেদও হার্টের রোগী। কোন কাজকর্ম করতে পারেন না। তাই ১৩/১৪ বছরের নাতি তোফাজ্জলের কাঁধেই সংসারের ভার। দুর্গম খাসিয়া পুঞ্জিতে কাজ করে দিনে আয় করে দুই-আড়াইশ টাকা মাত্র। এ টাকায় দুবেলা খাবার যোগানোই মুশকিল। তার ওপর অসুস্থ দাদি, বাবা আর মরার উপর খাঁড়ার ঘা মানসিক প্রতিবন্ধী বড় বোন আয়েশা খাতুন।
ইসলামপুর ইউনিয়নের স্থানীয় ইউপি সদস্য ফারুক আহমেদ জানান, একসময় তাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই ছিলো না। কয়েক বছর আগে সরকারি আবাসন প্রকল্পের মাধ্যমে এ পরিবারের জন্য একটি ঘরের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোফাজ্জলদের দুরাবস্থা জেনে অনেকে খাদ্য সামগ্রী দিয়ে তাদের সহায়তা করছেন। তবে বয়োবৃদ্ধ সমিতা বিবি ও মানসিক প্রতিবন্ধী আয়েশা খাতুনের সুচিকিৎসা ও তোফাজ্জলদের আত্মনির্ভরশীল হওয়ার ব্যবস্থা জরুরি।
সরকারিভাবে ওষুধ সরবরাহ না থাকায় ইউনিয়ন পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম ভেঙে পড়েছে। প্রায় সাত-আট মাস কেন্দ্রগুলোতে ওষুধ সরবরাহ বন্ধ থাকায় এতে তৃণমুলে বসবাসকারী অবহেলিত মানুষগুলো স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়বে। এমনটিই আশঙ্কা করছেন সচেতন মহল।
জানা গেছে, নড়াইল জেলার তিনটি উপজেলা ও একটি প্রশাসনিক থানা এলাকায় ৪০টি ইউনিয়ন পরিবারকেন্দ্র এবং মা ও শিশু কল্যাণকেন্দ্র রয়েছে। এর মধ্যে সিভিল সার্জন কর্তৃক সাতটি স্বাস্থ্যসেবাকেন্দ্র পরিচালিত হয় । বাকিগুলো পরিবার পরিকল্পনা কল্যাণ অধিদপ্তর থেকে পরিচালিত হয়ে থাকে।
সিভিল সার্জন কর্তৃক পরিচালিত স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোর মধ্যে সদর উপজেলায় তিনটি, লোহাগড়া উপজেলায় তিনটি এবং কালিয়া উপজেলায় একটি। এসব স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসাসেবার ওপর গ্রামাঞ্চলের নিম্নআয়ের সাধারণ মানুষগুলো সুস্থ ও সবলভাবে বেচে থাকার জন্য অনেকটিই নির্ভর করে। এসব কেন্দ্রগুলোতে সরকারি ওষুধ সরবরাহ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষ । কেন্দ্রগুলোতে ওষুধ সংকটের কথা স্বীকার করেছেন স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা ।
গত মঙ্গলবার ও গতকাল বুধবার জেলার কয়েকটি স্বাস্থ্যসেবাকেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, চিকিৎসাসেবা নিতে আসা গ্রামের অনেক মহিলা চিকিৎসকের কাছ থেকে চিকিৎসাপত্র নিয়ে খালি হাতে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। তাদের মুখখানা ছিল মলিন । আবার অনেক কেন্দ্র ছিল ফাকা। দায়িত্বপ্রাপ্ত মেডিকেল অফিসার একটি কক্ষে বসে গল্পে মেতে আছেন বন্ধুদের সঙ্গে। গত মঙ্গলবার সকাল ১১টায় সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়ন পরিবার কল্যাণকেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেছে, কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার ডা. মো.আলাউদ্দীন কেন্দ্রের একটি কক্ষে চুপচাপ বসে আছেন । জানতে চাইলে তিনি বলেন, আগে আমাদের এখানে ২৫ রকমের ওষুধ বরাদ্দ ছিল। তখন ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম থেকে শিশু-নারী ও পুরুষ স্বাস্থ্যসেবা নিতে জড়ো হতেন। গত সাত-আট মাস হলো কোনো ওষুধ সরবরাহ নেই । ফলে কেন্দ্রে রোগীদের তেমন ভিড়ও নেই। শুধু পরিবার পরিকল্পনা কিছু সামগ্রী আছে তাই দিয়ে সেবা চলছে। তিনি বলেন, এখানে যেসব রোগী আসে তার বেশিরভাগ হচ্ছে শিশু ও নারী। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আগে প্রতিদিন ৬০ থেকে ৭০ জন রোগীকে সেবা দিয়েছি। বর্তমানে ১৫ থেকে ২০ জনের বেশি হয় না।
ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে ওষুধ সরবরাহ বন্ধ হলে তৃণমুলে সাধারণ মানুষ বিপদে এবং স্বাস্থ্যসেবা ঝুঁকিতে পড়বে বলে মনে করেন নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো.রবিউল ইসলাম।
তিনি বলেন, এ ব্যাপারে সরকারের দায়িত্বশীল ভূমিকা নিতে হবে। না হলে গ্রামের কৃষক শ্রেণির মানুষের জীবনের ছন্দ পতন ঘটবে। গতকাল বুধবার দুপুরে লোহাগড়া উপজেলার দিঘলিয়া ইউনিয়নের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, কুমড়ি গ্রাম থেকে ছোট শিশুকে কোলে নিয়ে স্বাস্থ্যসেবা নিতে এসেছেন সালমা আক্তার । তার কোলের শিশুর সর্দি-কাশি দেখা দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘আগে এহেনে ডাক্তার দেহালি ওষুধ দেতো। এহোনে দেচ্ছে না । কাগজে লেহে দিলি আমাগে বাজারের দুয়ানতে কিনে নিতি হচ্ছে। আমরা গরিব মানুষ। অত টায়া পয়সা নাই আমাগে। তিনি সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, সরকাররে কচ্ছি আগের মতো আমাগে মাগনা (বিনা টাকায়) ওষুধ দিতি হবে।’
কালিয়া উপজেলার পহরডাঙ্গা ইউনিয়নের মুলশ্রী গ্রামের দীপ্তি রানী মণ্ডল বুকে ব্যথা অনুভব করলে নিজের ওষুধ নিতে এসেছেন ইউনিয়ন স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে। তিনি বলেন, ‘এহেনের ডাক্তার সাদা কাগজে কী যেন লেহে দেলো। আর কলো এই কাগজ নিয়ে বাজারের দুয়ানেরতে অসুদ কিনতি হবে । কিরাম কতা হলো কওদিন বাপু । আমাগে যদি দুয়ানেরতে অসুদ কিনতি হবে তালি তুমরা এহানে বসে রইছো ক্যান ? আগেতো এমন কতা শুনিনি।’
জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের উপপরিচালক আলিফ নূর বলেন, ‘পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রগুলোতে ওষুধ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে প্রায় সাত থেকে আট মাস। যে কারণে সমাজের তৃণমূল পর্যায়ের মানুষ ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। তিনি দাবি করেন, ইউনিয়ন পর্যায়ের স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলো বন্ধের মধ্যেও খোলা ছিল । ওষুধ না পেলেও চিকিৎসাসেবা বন্ধ ছিল না । যারা গর্ভবতী মা তারা চেকআপের জন্য কেন্দ্রে আসছেন । তাদের প্রয়োজনীয় সেবাও দেওয়া হচ্ছে। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ইউনিয়ন স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে ওষুধ সরবরাহের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে জানানো হয়েছে। আশা করছি খুব দ্রুত সংকট মোচন হবে ।
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা লিভ টু আপিল আগামী রোববার শুনানির জন্য কার্যতালিকায় আসবে।
আসামি পক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির বলেন, আজ জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের বেঞ্চে শুনানির জন্য আপিলটি ছিলো। কিন্তু এই মামলায় হাইকোর্টের অথর জাজ বিচারপতি একেএম আসাদুজ্জামান আজ আপিল বিভাগের বেঞ্চে ছিলেন।
নিয়ম অনুযায়ী হাইকোর্টে রায় দানকারী বিচারপতি একই মামলা আপিল বেঞ্চে শুনানি গ্রহণ করতে পারেন না।
এজন্য আগামী রোববার পুনর্গঠিত বেঞ্চে আপিলটি শুনানির জন্য কার্যতালিকায় আসবে। আদালত বিষয়টিতে আজ নট টুডে আদেশ দিয়েছেন।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর গুলিস্তান এলাকায় আওয়ামী লীগের সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায় ২৪ জন নিহত ও বহু মানুষ আহত হন। ওই গ্রেনেড হামলার ঘটনায় মতিঝিল থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে দুটি মামলা হয়। ২০০৮ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় সিআইডি এই মামলার তদন্ত শেষে অভিযোগপত্র দিলে শুরু হয় বিচার।
তবে, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর এই মামলায় অধিকতর তদন্তে আসামির তালিকায় যুক্ত করা হয় বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ৩০ জনকে।
দীর্ঘ বিচারিক কার্যক্রম শেষে ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন আলোচিত মামলার রায় দেন।
আলোচিত ওই রায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অপর আসামিরা হলেন- আব্দুস সালাম পিন্টুর ভাই মাওলানা তাজউদ্দিন, হুজি’র সাবেক আমির ও ইসলামিক ডেমোক্রেটিক পার্টির আহ্বায়ক মাওলানা শেখ আবদুস সালাম, কাশ্মীরি জঙ্গি আব্দুল মাজেদ ভাট, আবদুল মালেক ওরফে গোলাম মোস্তফা, মাওলানা শওকত ওসমান, মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান, মাওলানা আবু সাঈদ ওরফে ডা. জাফর, আবুল কালাম আজাদ ওরফে বুলবুল, মো. জাহাঙ্গীর আলম, হাফেজ মাওলানা আবু তাহের, হোসাইন আহম্মেদ তামিম, মঈন উদ্দিন শেখ ওরফে মুফতি মঈন, মো. রফিকুল ইসলাম, মো. উজ্জল, এনএসআই-এর সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুর রহিম ও হানিফ পরিবহনের মালিক মোহাম্মদ হানিফ।
বিচারিক আদালতের রায়ে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ১৯ জনের যাবজ্জীবন ও ১১ জনের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। সে রায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত অপর আসামীরা হলেন- খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, বিএনপি’র সাবেক সংসদ সদস্য শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ, হুজি সদস্য হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া, শাহাদাৎ উল্লাহ ওরফে জুয়েল, মাওলানা আবদুর রউফ, মাওলানা সাব্বির আহমেদ, আরিফ হাসান ওরফে সুমন, আবু বকর ওরফে হাফেজ সেলিম মাওলাদার, মো. আরিফুল ইসলাম, মহিবুল মুত্তাকিন ওরফে মুত্তাকিন, আনিসুল মুরছালিন ওরফে মুরছালিন, মো. খলিল ওরফে খলিলুর রহমান, জাহাঙ্গীর আলম বদর, মো. ইকবাল ওরফে ইকবাল হোসেন, লিটন ওরফে মাওলানা লিটন, মুফতি শফিকুর রহমান, মুফতি আব্দুল হাই ও রাতুল আহমেদ ওরফে রাতুল বাবু।
এছাড়া, বিচারিক আদালতের রায়ে পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজি) মো. আশরাফুল হুদা ও শহিদুল হক, বিএনপি চেয়ারপারসন ও তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ভাগ্নে লেফটেন্যান্ট কমান্ডার (অব.) সাইফুল ইসলাম ডিউক, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) সাইফুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার, ডিজিএফআই-এর মেজর জেনারেল (অব.) এটিএম আমিন, ডিএমপি’র সাবেক উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) খান সাঈদ হাসান, আরেক সাবেক উপ-কমিশনার (পূর্ব) ওবায়দুর রহমান খান, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক খোদা বক্স চৌধুরী, সিআইডি’র সাবেক বিশেষ সুপার মো. রুহুল আমিন, সাবেক এএসপি আবদুর রশিদ ও সাবেক এএসপি মুন্সি আতিকুর রহমানকে দুই বছর করে কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাস করে সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
এই মামলার আরেকটি ধারায় খোদা বক্স চৌধুরী, রুহুল আমিন, আবদুর রশিদ ও মুন্সি আতিকুর রহমানকে তিন বছর করে কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ছয় মাস করে কারাদণ্ড দেন আদালত।
বিচারিক আদালতে এই রায়ের দেড় মাসের মাথায় ২০১৮ সালের ২৭ নভেম্বর মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্তদের ডেথ রেফারেন্সসহ মামলার নথি হাইকোর্টে আসে। ২০২২ সালের ৫ ডিসেম্বর থেকে ডেথ রেফারেন্স এবং আসামিদের আপিল ও জেল আপিল শুনানি শুরু হয়। বিচারপতি সহিদুল করিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চে শুনানি চলছিল।
তবে ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পর হাইকোর্ট বেঞ্চ পুনর্গঠন হলে বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানি হয়। শুনানি শেষে গত ১ ডিসেম্বর হাইকোর্ট এই মামলার সব আসামীকে খালাস দিয়ে রায় দেন। সে রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ।
ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে।
ভূমিকম্পটি শুক্রবার দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে অনুভূত হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএসের ডেটা অনুযায়ী, ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল মিয়ানমারের সাগাইংয়ের ১৬ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে।
এ ভূমিকম্পে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত বৃহত্তম জনগোষ্ঠী রোহিঙ্গাদের সাহায্য কমে যাওয়ার ফলে সংকট আরও গভীর হওয়ার উদ্বেগের মধ্যে ট্রাম্প প্রশাসন বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, তারা জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির মাধ্যমে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য ৭৩ মিলিয়ন (সাত কোটি ৩০ লাখ) ডলার নতুন আর্থিক সহায়তা দেবে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস এক্সে একটি পোস্টে বলেন, ‘বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিওইএফ) মাধ্যমে এ খাদ্য ও পুষ্টি সহায়তা ১০ লাখেরও বেশি মানুষের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় খাদ্য ও পুষ্টি সহায়তা প্রদান করবে।
‘এটা গুরুত্বপূর্ণ যে, আমাদের আন্তর্জাতিক অংশীদাররা এ ধরনের জীবন রক্ষাকারী সহায়তার মাধ্যমে বোঝা ভাগ করে নেওয়ার সঙ্গে যুক্ত।’
সিনহুয়া জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং তার প্রশাসন ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ এজেন্ডার অংশ হিসেবে বিদেশি সহায়তায় ব্যাপক কাটছাঁট এবং ফেডারেল ব্যয় ব্যাপকভাবে হ্রাস এবং যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কিছু অংশ ভেঙে ফেলার বিস্তৃত প্রচেষ্টার মধ্যেই এ অনুদান দেওয়া হলো।
জাতিসংঘের দুটি সংস্থা সতর্ক করে দিয়েছিল যে, তহবিলের ঘাটতি গত আট বছর ধরে প্রতিবেশী মিয়ানমারে সহিংসতার কারণে পালিয়ে আসা বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য রেশনের পরিমাণ কমিয়ে দেবে।
রোহিঙ্গারা আশঙ্কা করছেন, তহবিল হ্রাসের ফলে ক্ষুধা পরিস্থিতির অবনতি হবে। গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্যসেবা এবং জ্বালানি হ্রাস পাবে।
পররাষ্ট্র দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সবচেয়ে বড় সহায়তা প্রদানকারী দেশ ছিল। প্রায় ২ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার সহায়তা দিয়ে আসছে দেশটি। কিন্তু জানুয়ারিতে ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার পর সাম্প্রতিক তহবিল স্থগিত করার ফলে কমপক্ষে পাঁচটি হাসপাতাল তাদের সেবা কমিয়ে ফেলতে বাধ্য হয়েছে।
ট্রাম্প ও বিলিয়নেয়ার মিত্র ইলন মাস্ক প্রধান মার্কিন বৈদেশিক সাহায্য সংস্থা ইউএসএআইডি বন্ধ করে দিয়েছেন এবং এর অবশিষ্টাংশগুলোকে পররাষ্ট্র দপ্তরের সঙ্গে একীভূত করেছেন। শত শত কর্মী এবং ঠিকাদারকে বরখাস্ত করেছেন এবং কোটি কোটি ডলারের পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছেন, যার ওপর বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ মানুষ নির্ভরশীল।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ফেব্রুয়ারিতে সমস্ত জীবন রক্ষাকারী সহায়তা এবং এ ধরনের সহায়তা প্রদানের জন্য প্রয়োজনীয় যুক্তিসঙ্গত প্রশাসনিক খরচ মওকুফ করেছিলেন।
ওয়াশিংটন টাইমস জানায়, এ মাসের শুরুতে ইউএসএআইডি ভেঙে দেওয়ার তত্ত্বাবধানকারী ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তা রোহিঙ্গাদের জন্য পর্যায়ক্রমে সাহায্য বন্ধের প্রস্তাব করেছিলেন।
জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরে বসবাসকারী রোহিঙ্গাদের জন্য খাদ্য সহায়তা হ্রাস করার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করেছে।
কক্সবাজার উপকূলের বিভিন্ন শিবিরের বাসিন্দারা এখন জনপ্রতি মাসিক ১২ ডলার করে খাদ্য বরাদ্দ পাবেন, যা আগের ১২ দশমিক ৫০ ডলার থেকে কম।
শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, ‘ডব্লিউএফপি একটি চিঠিতে এই সিদ্ধান্তের কথা আমাদের জানিয়েছে, যা ১ এপ্রিল থেকে কার্যকর হবে।’
তিনি আরও বলেন, ভাসানচরে বসবাসকারী রোহিঙ্গারা জনপ্রতি ১৩ ডলার করে পাবে, যা কক্সবাজারের তুলনায় এক ডলার বেশি।
বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের জন্য খাদ্য সহায়তা কমানোর পরিকল্পনা ডব্লিউএফপি পূর্বে জানানোর পর এ পরিবর্তন এসেছে।
গত ৫ মার্চ বাংলাদেশের শরণার্থী কমিশন ডব্লিউএফপি থেকে একটি চিঠি পায়, যেখানে বলা হয়, তহবিল সংকটের কারণে এপ্রিল থেকে রোহিঙ্গাদের জন্য মাসিক খাদ্য বরাদ্দ জনপ্রতি ১২ দশমিক ৫০ ডলার থেকে কমিয়ে ৬ ডলার করা হবে।
চিঠিতে শরণার্থীদের জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য ব্যবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
গত ১৪ মার্চ জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বাংলাদেশের রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেন।
তার সফরের সময় তাকে ছয় ডলারে রোহিঙ্গারা কী খাবার পাবে তার বিস্তারিত বিবরণ উপস্থাপন করা হয়েছিল। সে সময় অপর্যাপ্ত পরিমাণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য