× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

অনুসন্ধান
সাউথইস্ট ব্যাংক নিয়ে অপপ্রচারের নেপথ্যে কাশেম আজিম সিন্ডিকেট
google_news print-icon

সাউথইস্ট ব্যাংক নিয়ে অপপ্রচারের নেপথ্যে কাশেম-আজিম সিন্ডিকেট

সাউথইস্ট-ব্যাংক-নিয়ে-অপপ্রচারের-নেপথ্যে-কাশেম-আজিম-সিন্ডিকেট
সাউথইস্ট ব্যাংকের দুই পরিচালক এম এ কাশেম ও আজিম উদ্দীন আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত
ব্যাংকটির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অপপ্রচারের পেছনে রয়েছেন ব্যাংকটিরই চারজন পরিচালক। তারা ব্যক্তিগত অসৎ উদ্দেশ্য হাসিল করতে না পেরে অপপ্রচার চালাচ্ছেন। চাইছেন চেয়ারম্যান পদ থেকে আলমগীর কবীরকে সরিয়ে দিতে এবং এ পদে তাদের একজনকে বসাতে। ওই চার পরিচালক হলেন আজিম উদ্দীন আহমেদ ও তার স্ত্রী দুলুমা আহমেদ এবং এম এ কাশেম ও তার স্ত্রী জুসনা আরা কাশেম।

১৯৯৫ সালে বেসরকারি খাতে ব্যাংক স্থাপনের অনুমতির কিছু দিনের মধ্যেই যাত্রা শুরু হয় সাউথইস্ট ব্যাংক লিমিটেডের। সেই সময় সরকারে ছিল খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বিএনপি।

বেসরকারি এই ব্যাংকটির প্রতিষ্ঠাকালীন চেয়ারম্যান ছিলেন এম এ কাশেম। ২০০০ সালে চেয়ারম্যান হন আবদুল্লাহ ইউসুফ হারুন। এরপর আবারও চেয়ারম্যান হন এম এ কাশেম। পরবর্তী সময়ে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পান আজিম উদ্দীন আহমেদ ও রাগীব আলী।

তাদের নেতৃত্বে সংকটে পড়ে ব্যাংকটি। ২০০৪ সালে সেই সংকটের মুহূর্তে হাল ধরেন আলমগীর কবীর। তার দক্ষ ও গতিশীল নেতৃত্বে সব সমস্যা কাটিয়ে সামনে এগিয়ে চলছে সাউথইস্ট ব্যাংক। তার সময়ে মুনাফা বেড়েছে প্রায় সাড়ে ৭ গুণ।

অভিযোগ আছে, গত ১৭ বছরে আলমগীর কবীর যে সফলতা দেখিয়েছেন, তাতে লাগাম টানতে এবং তাকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলতে নানা ধরনের অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে কাশেম-আজিম সিন্ডিকেট।

সাউথইস্ট ব্যাংকের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ব্যাংকটিরই চারজন পরিচালক তাদের ব্যক্তিগত অসৎ উদ্দেশ্য হাসিল করতে না পেরে এই অপপ্রচার চালাচ্ছেন। তারা চাইছেন চেয়ারম্যান পদ থেকে আলমগীর কবীরকে সরিয়ে দিতে এবং এ পদে তাদের একজনকে বসাতে। ওই চার পরিচালক হলেন আজিম উদ্দীন আহমেদ ও তার স্ত্রী দুলুমা আহমেদ এবং এম এ কাশেম ও তার স্ত্রী জুসনা আরা কাশেম।

এদের মধ্যে আজিম উদ্দীন মিউচ্যুয়াল গ্রুপ অব কোম্পানিজের চেয়ারম্যান এবং এম এ কাশেম মিউচ্যুয়াল গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান। তারা দুজনই নর্থ সাউথ ইউনির্ভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিতে রয়েছেন। বোর্ডের চেয়ারম্যান এখন আজিম উদ্দীন।

আজিম ও কাশেমের বিরুদ্ধে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগও রয়েছে। মঙ্গলবার তাদের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিকে দুর্নীতি ও জঙ্গিবাদের কবল থেকে রক্ষার দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণও করা হয়।

সাউথইস্ট ব্যাংকের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা অভিযোগ করেছেন, ২০২০ সালে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে পরিচালক আজিম উদ্দীনের মেয়ে তার এক পরিচিতকে ইভ্যালির মতো কোম্পানি খুলতে ১০ কোটি টাকা ঋণ পাইয়ে দেয়ার তদবির করেন। কিন্তু সেই ঋণ দিতে রাজি হয়নি সাউথইস্ট ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। এ কারণেই চেয়ারম্যান আলমগীর কবীরের ওপর ক্ষুব্ধ আজিম উদ্দীন।

অভিযোগ আছে, মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরোতে না পারা এম এ কাশেম আবারও ব্যাংকটির চেয়ারম্যান হতে চাইছেন। তিনি চেয়ারম্যান থাকার সময় নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে ২৫০ জনকে নিয়োগ দেন। আলমগীর কবীর এদের সবার শিক্ষাগত যোগ্যতা যাচাই করে অর্ধশত কর্মকর্তার ভুয়া সনদ পান। পরবর্তী সময়ে তাদের সবার চাকরি চলে যায়, যারা সবাই ছিলেন কাশেম-আজিম সিন্ডিকেটের আত্মীয়।

আরও অভিযোগ আছে, আরেক পরিচালকের ছেলে একটি কোম্পানিকে সাউথইস্ট ব্যাংক থেকে ৫২ কোটি টাকার ঋণ তুলে দেয়ার কথা বলে বিলাসবহুল গাড়ি নেন। এই ঋণের জন্য আবেদন করা হয় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি। ঝুঁকিপূর্ণ মনে হওয়ায় ঋণ আবেদনটি বাতিল করে দেয় সাউথইস্ট ব্যাংক।

এ ঘটনায়ও চেয়ারম্যান আলমগীর কবীরের ওপর ক্ষুব্ধ কাশেম-আজিম সিন্ডিকেট।

ব্যাংকটি নিয়ে অপপ্রচার ও চেয়ারম্যান আলমগীর কবীরকে সরানোর ষড়যন্ত্র এবং নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে জানতে নিউজবাংলা কথা বলেছে পরিচালক আজিম উদ্দীন ও এম এ কাশেমের সঙ্গে। তারা দুইজনই সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তবে তাদের কথায় চেয়ারম্যান আলমগীর কবীরের বিরুদ্ধে ক্ষোভের বিষয়টি পরিষ্কার হয়েছে।

সাউথইস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এম. কামাল হোসেন বলছেন, সাধারণ মানুষ ও গ্রাহকদের বিভ্রান্ত করে ব্যাংকটির সুনাম ক্ষুণ্ন করতে মনগড়া প্রতিবেদন প্রচার করা হচ্ছে। ব্যবহার করা হয়েছে অসত্য ও বিভ্রান্তিকর সব তথ্য।

সাউথইস্ট ব্যাংক নিয়ে অপপ্রচারের নেপথ্যে কাশেম-আজিম সিন্ডিকেট

ব্যাংকটির কর্মকর্তারা নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন, বিভিন্ন মাধ্যমে সাউথইস্ট ব্যাংক নিয়ে ব্যাপক অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। বলা হচ্ছে, দুর্নীতির উৎসবে যেন গা ভাসিয়েছে পরিচালনা পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ। মালিকদের স্বার্থে নিরাপত্তা সঞ্চিতির খাতাতেও রয়েছে বড় গরমিল; দুর্বল হচ্ছে মূলধন কাঠামো। ফলে ঝুঁকি বাড়ছে গ্রাহকের আমানতে।

তাদের ভাষ্য, প্রণোদনা বিতরণ হয়েছে বড় অনিয়ম করে। বাণিজ্যের কোটা থেকে গ্রাহকের আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ডের বিল গেছে। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে খেলাপি ঋণ। আর সব ছাপিয়ে গেছে পরিচালনা পর্ষদের গৃহবিবাদ।

নিউজবাংলার অনুসন্ধানে দেখা যায়, এসব অভিযোগ করা হচ্ছে সাউথইস্ট ব্যাংক নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের ২০২০ সালের ৩০ জুনের স্থিতিভিত্তিক বিশদ পরিদর্শনের প্রতিবেদনকে ভিত্তি ধরে। এই প্রতিবেদনটি খুবই গোপনীয়, যা শুধু বাংলাদেশ ব্যাংক এবং যে ব্যাংকের ওপর করা সেই বাংকের কাছে সংরক্ষিত থাকে।

এ বিষয়ে সাউথইস্ট ব্যাংকের কর্মকতারা জানিয়েছেন, এটা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিয়মিত কাজ। কোনো ব্যাংক পরিদর্শনে কোনো বিষয় নিয়ে অসামঞ্জস্য দেখা দিলে ব্যাখ্যা চায় বাংলাদেশ ব্যাংক। সেই ব্যাংক সন্তোষজনক ব্যাখ্যা দিলে বিষয়টির সুরাহা হয়ে যায়। আর ব্যাখ্যা সন্তোষজনক না হলে নিজস্ব আইন অনুযায়ীই ব্যবস্থা নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। সাউথইস্ট ব্যাংকের ব্যাখ্যার পর এখনও কোনো প্রশ্ন তোলেনি কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

ক্রেডিট কার্ড ইস্যু

বাণিজ্যের কোটা থেকে গ্রাহকের আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ডের বিল গেছে বলেও অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাউথইস্ট ব্যাংকের পক্ষ থেকে নিউজবাংলাকে বলা হয়, ‘উক্ত কার্ডদ্বয়ের বিপরীতে বৈদেশিক মুদ্রার অংশটুকু তারা ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যেই (তৈরি পোশাকশিল্পের বিদেশি ক্রেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ, তাদের উপহার প্রদান, আপ্যায়ন ও বিদেশে তাদের গোডাউন পরিদর্শন ইত্যাদিতে) খরচ করেছেন বলে আমাদের নিশ্চিত করেছেন।

‘এমতাবস্থায় উক্ত কার্ডদ্বয়ের বৈদেশিক মুদ্রার অংশটুকু (paragraph-28-(A)(i), Chapter-13 of GFET-এ বর্ণিত বিধানের ভিত্তিতে ERQ Account থেকে পরিশোধিত হয়ে থাকে। উল্লেখিত ক্রেডিট কার্ডসমূহ বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য গ্রাহকদ্বয়কে বিশেষ পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে।’

ব্যাংকটির এমডি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘রপ্তানিমুখী প্রতিষ্ঠানের ইআরকিউ হিসাব থেকে গ্রাহকের আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ডের বিল প্রদান একটি অনুমোদিত বিষয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের ফরেন এক্সচেঞ্জ গাইডলাইনের চ্যাপ্টার ১৯ অনুযায়ী একটি রপ্তানিমুখী প্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ তিনজন টপ টায়ার নির্বাহীর নামে আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করা যায় এবং উক্ত কার্ডে কোম্পানির ইআরকিউ হিসাব থেকে অর্থ স্থানান্তর কারা যায়।’

ঋণখেলাপি: বাড়েনি, বরং কমেছে

সাউথইস্ট ব্যাংকের নথি বিশ্লেষণে দেখা যায়, তাদের খেলাপি ঋণ বাড়েনি, বরং কমেছে।

২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর সাউথইস্ট ব্যাংকের মোট শ্রেণিকৃত ঋণের পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৪৩৭ দশমিক ৫৩ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৪ দশমিক ৮৭ শতাংশ। ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর শ্রেণিকৃত ঋণ কমে দাঁড়ায় ৯৯৩ দশমিক ৯৮ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৩ দশমিক ১০ শতাংশ। অর্থাৎ এক বছরে শ্রেণিকৃত ঋণ কমেছে ৩০ দশমিক ৮৬ শতাংশ।

ব্যাংকটির এমডি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘অভিযোগ করা হয়েছে, সাউথইস্ট ব্যাংকের মন্দ ঋণ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু ২০২০ সালের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে পরিলক্ষিত হয় যে, ২০১৯ সালে মন্দ ঋণ ছিল ৪ দশমিক ৮৭ শতাংশ, যা ২০২০ সালে ১ দশমিক ৭৭ শতাংশ হ্রাস পেয়ে ৩ দশমিক ১০ শতাংশে উপনীত হয়।’

মুনাফা বেড়েছে সাড়ে ৭ গুণ

আলমগীর কবীর চেয়ারম্যান হওয়ার পর সাউথইস্ট ব্যাংকের ধারাবাহিক উন্নতির চিত্র পাওয়া গেছে ব্যাংকটির ওয়েবসাইট ঘেঁটেও।

এতে দেখা যায়, ২০০৪ সালে আলমগীর কবীর যখন দায়িত্ব নেন তখন ব্যাংকটির ডিপোজিট ছিল ২ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকা, যা এখন বেড়ে হয়েছে ৩৫ হাজার ৯৫৩ কোটি টাকা। ২০০৪ সালে বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ২০০ কোটি টাকা। ২০২০ সালে ঋণ বিতরণ করা হয়েছে ৩২ হাজার ২২৫ কোটি টাকা। ২০০৪ সালে ব্যাংকটি মুনাফা করেছিল ২৯ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। ২০২০ সালে তা প্রায় সাড়ে ৭ গুণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২১৪ কোটি ৯১ লাখ টাকা।

সংস্থান ঘাটতি নিয়ে অপপ্রচার

ব্যাংকটির এমডি কামাল হোসেন বলছেন, সংস্থান ঘাটতির কারণে সাউথইস্ট ব্যাংক ঝুঁকির মুখে রয়েছে বলে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।

নিউজবাংলাকে কামাল হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলার নং- DOS-01 ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১ অনুযায়ী সংস্থান ঘাটতি থাকলে বাংলাদেশ ব্যাংক নগদ লভ্যাংশ প্রদানের অনুমতি প্রদান করতে পারে না। কিন্তু ২০২০ সালে সাউথইস্ট ব্যাংক ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ প্রদান করে।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শন দল কর্তৃক নিরীক্ষা কার্যক্রম শেষে ২০২০ সালে সাউথইস্ট ব্যাংকের ঋণের বিপরীতে ৫২৭ দশমিক ৪৩ কোটি টাকা অতিরিক্ত সংরক্ষণের পরামর্শ দেয়া হয়, যার মধ্যে ১২৭ দশমিক ৪৩ কোটি টাকা ২০২০ সালে লাভ-ক্ষতি হিসাব থেকে সংরক্ষণ করা হয়।

‘অবশিষ্ট ৪০০ কোটি টাকার মধ্যে ২১৫ কোটি টাকা অবণ্টিত মুনাফা (Retained Earnings) থেকে সাধারণ সংস্থানে স্থানান্তর করা হয়। বাকি ১৮৫ কোটি টাকা সাধারণ সংস্থান থেকে স্থানান্তর করে ঘাটতি সংস্থান পূরণ করা হয়। এমতাবস্থায় ব্যাংকের CRAR (Capital to Risk-weighted Asset Ratio) ১৪ দশমিক ৫০ শতাংশে উপনীত হয় (পরিগণনা সংযুক্ত)।’

কামাল হোসেন আরও বলেন, ‘২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সাউথইস্ট ব্যাংক ঝুঁকি হ্রাসের উদ্দেশ্যে উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশের বিপরীতে ৩৫৬ কোটি টাকা ইতিমধ্যে সংস্থান করেছে এবং সাধারণ সঞ্চিতিতে ২৪ দশমিক ৭৫ কোটি টাকা অতিরিক্ত সংস্থান করা রয়েছে।’

প্রণোদনা বিতরণ

অনিয়ম করে প্রণোদনা বিতরণ হয়েছে বলে যে অভিযোগ করা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে দাবি করেছেন সাউথইস্ট ব্যাংকের এমডি।

নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘প্রণোদনা বিতরণে বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারে বর্ণিত নিয়ম-কানুন পরিপালন করে ইতিমধ্যে ২৩০৬ জন গ্রাহকের অনুকূলে বিভিন্ন প্রণোদনার অর্থ বিনিয়োগ করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে গ্রাহকের প্রকৃত ক্ষতি নিরূপণ ও প্রয়োজনীয়তা যাচাইপূর্বক বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সার্কুলারের নির্দেশনা পূর্ণ প্রতিপালন সাপেক্ষে ঋণ মঞ্জুর করা হয়েছে।’

কাশেম-আজিমের ‘দুর্নীতি’ নিয়ে সংবাদ সম্মেলন

সেগুনবাগিচায় মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনটি করে প্রটেকশন ফর লিগ্যাল হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন নামের একটি সংগঠন।

সাউথইস্ট ব্যাংক নিয়ে অপপ্রচারের নেপথ্যে কাশেম-আজিম সিন্ডিকেট
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ট্রাস্টি আজিম উদ্দীন ও এম এ কাশেমের বিরুদ্ধে দ্রুত তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানানো হয় মঙ্গলবারের সংবাদ সম্মেলনে। ছবি: নিউজবাংলা

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ১৯৯২ সালে যাত্রা শুরু করা নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় দেশের অন্যতম শীর্ষ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হলেও পরিচালনা পর্ষদের দুয়েকজন ব্যক্তির কারণে ডুবতে বসেছে প্রতিষ্ঠানটি। নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত হয় একটি ট্রাস্টি বোর্ডের মাধ্যমে। এই ট্রাস্টি বোর্ড একটি মানবহিতৈষী, দানশীল, জনহিতকর, অরাজনৈতিক, অলাভজনক ও অবাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান।

কিন্তু আজিম উদ্দীন আহমেদ ও এম এ কাশেম মানবহিতৈষী ও অবাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানটিকে বেআইনিভাবে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে রূপদান করে শত শত কোটি টাকা বাণিজ্য করছেন এবং সেই টাকা আত্মসাৎ করেছেন এবং এ ধারা অব্যাহত রেখেছেন।

আরও পড়ুন: ‘দুর্নীতি-জঙ্গিবাদের কবল’ থেকে নর্থ সাউথকে রক্ষার দাবি

সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, রাষ্ট্রের স্বার্থে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটি প্রতিষ্ঠানে এমন লাগামহীন দুর্নীতি ও বিশ্ববিদ্যালয়টিকে জঙ্গি তৈরির কারখানায় রূপান্তর করা দুই ট্রাস্টি আজিম উদ্দীন ও এম এ কাশেমের বিরুদ্ধে দ্রুত তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।

এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতির হাত থেকে প্রতিষ্ঠান ও দেশকে বাঁচানোর দাবি জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।

সংবাদ সম্মেলনে ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা ড. সুফি সাগর সামস্ নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই দুই ট্রাস্টির দুর্নীতির ফিরিস্তি তুলে ধরেন।

সুফি সাগর বলেন, দুই ট্রাস্টি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য আশালয় হাউজিং লিমিটেডের কাছ থেকে জমি কিনে প্রায় ২০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন। ২০১৯ সালে বিলাসবহুল গাড়ি কিনে ২১ কোটি টাকা অপব্যয় ও আত্মসাৎ করেন। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) অনুমোদনের বাইরে ১০টি সেকশন চালু করে অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তিপূর্বক বিশাল অঙ্কের টাকা বাণিজ্য করেন এবং এই টাকা বিভিন্নভাবে আত্মসাৎ করেন।

এসব অভিযোগ নিয়ে নিউজবাংলার প্রশ্নের জবাবে আজিম উদ্দীন বলেন, ‘আমি আর আমার স্ত্রী শুধু ডাইরেক্টরই না, স্পন্সর প্রতিষ্ঠাতা ডাইরেক্টর। আমরা তো কোনো গণমাধ্যমে যাইনি, কে কে গেছে, কেন গেছে, আমরা তো বলতে পারব না।

‘আমরা সেদিন এজিএমে যাইনি। আমরা অনুপস্থিতি ছিলাম। কারণ এটার ভেতরে আমাদের একটা ক্ষোভ ছিল। কারণ কিছু কর্মকাণ্ডের প্রতি আমাদের সমর্থন ছিল না।’

‘ব্যাংকটি কি সঠিক পথেই আছে, নাকি বেঠিক পথে আছে?’

নিউজবাংলার এ প্রশ্নে সাউথইস্ট ব্যাংকের এই পরিচালক বলেন, ‘সঠিক পথেই তো চলে। এর ভেতরে কিছু ব্যত্যয় থাকতে পারে। সেটাই আমরা প্রতিবাদ করেছি। অনিয়ম কিছু আছে। সেটা আমি বিশদভাবে বলতে পারব না।

‘আমাদের চেয়ারম্যান আলমগীর সাহেব এককভাবে ১৭ বছর ধরে ব্যাংকটি চালাচ্ছেন। তাকে আমরা সমর্থন দিয়েছি। তিনি চালিয়েছেন। কিন্তু এর মধ্যে কিছু অভিযোগ, অনিয়মের ঘটনা ঘটেছে বলে আমাদের কানে আসছে। সেটার প্রতিবাদস্বরূপ আমরা সেই এজিএমে যাই নাই।’

‘অভিযোগ আছে, ব্যাংক নিয়ে অপপ্রচারের নেপথ্যে রয়েছেন আপনি আর এম এ কাশেম।’

এ প্রশ্নের জবাবে আজিম উদ্দীন বলেন, ‘আমরা তো কোনো মাধ্যমেই আসি নাই, আমরা তো কিছুই জানি না।’

‘অভিযোগ আছে, আপনার পরিবারের সদস্যরা ঋণের তদবির করে সুবিধা নিয়েছেন। কিন্তু সেই ঋণ আটকে যায়। আর এ কারণে আপনি নাকি চেয়ারম্যানের ওপর ক্ষুব্ধ।’

এ প্রশ্নে আজিম উদ্দীন বলেন, ‘আজ থেকে ২৬ বছর আগে এই ব্যাংক আমরা প্রতিষ্ঠা করি। প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ছিলেন কাশেম সাহেব। আলমগীর সাহেব চাকরি করতেন। এরপর এখানে এসে উনি সবকিছুর মালিক হয়ে গেছেন। আমরা তাকে চালাতে দিয়েছি, তিনি চালিয়ে গেছেন।

‘কিন্তু উনি যে এত নিচে নামতে পারেন, এটা আমাদের ধারণা ছিল না। যেভাবে তিনি আমাদের নিয়ে মিডিয়াতে কথা বলেছেন তা অসত্য।’

তিনি আরও বলেন, ‘কাশেম সাহেবের শিক্ষাগত যোগ্যতা কতটুকু তা উনিই জানেন, আমি জানি না। তবে তিনি এফবিবিসিআইয়ের সভাপতি ছিলেন। তিনি একজন সফল ব্যবসায়ী।’

এম এ কাশেম চেয়ারম্যান থাকার সময় নিয়োগ নিয়ে অনিয়মের প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আজিম উদ্দীন বলেন, ‘সব ব্যাংকেই তো দুই-একটা সার্টিফিকেট এদিক-ওদিক গোলমাল করে। তাই দুয়েকটা ওই রকম তো হতেই পারে।’

এম এ কাশেমের কাছেও এসব অভিযোগ নিয়ে বক্তব্য জানতে চায় নিউজবাংলা। জবাবে তিনি জানান, আজিম উদ্দীন যেসব বক্তব্য দিয়েছেন, একই বক্তব্য তারও।

মন্তব্য

আরও পড়ুন

অনুসন্ধান
Padma Bridge crossing two crore vehicles for two and a half billion crore
উদ্বোধনের তিন বছর

পদ্মা সেতু দিয়ে পারাপার দুই কোটি যানবাহন, আয় আড়াই হাজার কোটি টাকা

পদ্মা সেতু দিয়ে পারাপার দুই কোটি যানবাহন, আয় আড়াই হাজার কোটি টাকা

দেশের দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোর সড়ক যোগাযোগব্যবস্থার আমূল পরিবর্তনকারী অবকাঠামো পদ্মা সেতুতে যান চলাচল শুরুর ৩ বছরপূর্তি ছিল গতকাল বৃহস্পতিবার। ২০২২ সালের ২৬ জুনের এই দিনে বহু প্রতিক্ষিত পদ্মা সেতু যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়। এরপর এক মুহুর্তের জন্য সেতুতে যান চলাচল বন্ধ হয়নি। আর এই তিন বছরে ১ কোটি ৯৪ লাখ ৭১ হাজার ৬৯২টি যান পারাপারে টোল আদায় হয়েছে ২ হাজার ৫ শ’ ৪ কোটি ৬৭ লাখ ৬২ হাজার ৮শ’ টাকা।

পদ্মা সেতু দক্ষিণের মানুষের বিড়ম্বনা লাঘব করে এগিয়ে যাওয়ার প্রতীক এখন। উত্তাল নদী পারপারের ভোগান্তি থেকে শুধু মুক্তিই দেয়নি এই সেতু পাল্টে দিয়েছে দক্ষিণের আর্থ সামাজিক অবস্থাও। উৎপাদিত কৃষিপণ্য বাজারজাত, শিল্প কারখানা, ব্যবসা-বাণিজ্যেও যুগান্তকারী পরিবর্তন। খুলে গেছে সম্ভাবনার নতুন দুয়ার।

সেতুর উপর তলায় সড়ক পথ ও আর নিচ দিয়ে ছুটছে ট্রেন। রাতদিন দ্রত বেগে পদ্মার উপর দিয়ে চলছে ট্রেন ও সড়ক পথের যাত্রা। পদ্মা সেতুর ২০২২ সালের ২৫ জুন উদ্বোধন হলেও পরদিন ২৬ জুন এই দিনে পদ্মা সেতুতে যান চলাচল শুরু হয়। পরের বছর ২০২৩ সালের ১০ অক্টোবর পদ্মা সেতুর রেলপথ উদ্বোধন হয়। পদ্মা সেতু হয়ে চালু হয় ঢাকা-ভাঙ্গা নতুন রেল নেটওয়ার্ক। আর ২০২৪ সালের ২৪ ডিসেম্বর পদ্মা সেতুর রেল লিঙ্ক প্রকল্প পুরোপুরি চালু হয়। এদিন রাজধানী থেকে পদ্মা সেতু দিয়ে ভাঙ্গা হয়ে নতুন পথে নড়াইল ও যশোর অতিক্রম করে খুলনা পর্যন্ত সরাসরি ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। রাজধানী থেকে মাত্র সাড়ে ৩ ঘন্টায় খুলনা ও বেনাপোল পৌছানো যাচ্ছে। তাই এখন দক্ষিণের মানুষ সড়ক ও ট্রেন পথের সুফল পাচ্ছে।

এর আগে ২০২২ সালের ডিসেম্বর পায়রা ও রামপালের বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করা হয় পদ্মা সেতু প্রকল্পের আওতায় নির্মাণ করা খুঁটি ব্যবহার করে। সেতু উপর দিয়ে যাওয়া উচ্চ ক্ষমতার ইন্টারনেট লাইন ব্যবহার হচ্ছে। সেতুতে নির্মাণ করে রাখা গ্যাস লাইন ব্যবহারে আরেক ধাপ এগিয়ে যাবে দক্ষিণের জনপদ, এখন অপেক্ষা এখন। তাই খুশি সবাই।

পদ্মা সেতুর দায়িত্বে থাকা বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু সায়াদ বলেন, কোন হেসেল ছাড়াই টানা দিন বছর সেতুতে নিরবিচ্ছিন্নভাবর যান পারাপার করা হয়। এটি একটি বড় মাইলফলক। পদ্মা সেতুর দায়িত্বে থাকা বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের পরিচালক (প্রশাসন) যুগ্ম সচিব আলতাফ হোসেন সেখ বলেন, দেশের এই অবকাঠামো যেমন মানুষের উপকারে লাগছে, আবার রাজস্ব আয়ও হচ্ছে। সেতু ব্যবহারে টোল আদায় আরও সহজ করা হচ্ছে। অল্প সময়ের মধ্যেই চলন্ত অবস্থায়ই টোল পরিশোধ করা যাবে।

স্বপ্নের সেতু চালুর তিন বছরে পারাপার হয়েছে ১ কোটি ৯৪ লাখ ৭১ হাজার ৬৯২টি। এর মধ্যে মাওয়া দিয়ে প্রবেশ করে ৯৬ লাখ ৭১ হাজার ১১২টি যান। আর ৯৮ লাখ ৫৮০টি যান জাজিরা প্রান্ত দিয়ে পদ্মা সেতুতে প্রবেশ করে। মাওয়া থেকে ১ লাখ ২৯ হাজার ৪শ’৬৮ বেশি যান জাজিরা প্রান্ত দিয়ে প্রবেশ করে পদ্মা সেতু অতিক্রম করে।

গত ৫ জুন পদ্মা সেতুতে এক দিনে রেকর্ড পরিমান ৫ কোটি ৪৩ লাখ ২৮ হাজার টাকার টোল আদায় হয়েছে। এই ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৫২ হাজার ৪৮৭টি যানবাহন পারাপার হয়। পদ্মা সেতুতে একদিনে সর্বোচ্চ টোল আদায় ও যানবাহন পারাপারের নতুন রেকর্ড এটি। এর আগে ২০২২ সালের ২৬ জুন পদ্মা সেতুর যান চলাচলের শুরুর দিনে সর্বোচ্চ ৫১ হাজর ৩১৬টি যানবাহন পারাপারের রেকর্ড ছিল। আর ২০২৪ সালের ৯ এপ্রিল ইদুল ফতরের আগে সর্বোচ্চ টোল আদায়ের রেকর্ড ছিল ৪ কোটি ৮৯ লাখ ৯৪ হাজার ৭শ' টাকা।

নির্বাহী প্রকৌশলী আবু সায়াদ বলেন, সেতু চালুর প্রথম বছর ৫৬ লাখ ৯৪ হাজার ৮৯৯টি যানবাহন পারাপারে টোল আদায় হয়েছে ৭৯৮ কোটি ৬০ লাখ ৯৩ হাজার ৭শ’ টাকা। দ্বিতীয় বছর ৬৮ লাখ ১ হাজার ৩৭৪টি যানের বিপরীতে টোল পাওয়া যায় ৮৫০ কোটি ৪৩ লাখ ৫৬ হাজার ৩শ’ ৫০ টাকা। আর তৃতীয় বছর ২৫ জুন রাত ১২টা পর্যন্ত ৬৯ লাখ ৯৫ হাজার ২২৯টি যান পারাপারে টোল আদায় হয় ৮৬১ কোটি ২২ লাখ ১৮ হাজার ৮৫৯ টাকা। মূল পদ্মা সেতু ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটারের দীর্ঘ। তবে অ্যাপ্রোচসহ প্রায় ১০ কিলোমিটার। সেতু নিরাপত্তাসহ ট্রাফিক আইন মেনে পদ্মা সেতুতে যানাবাহানের নির্বিঘ্ন চলাচলে সেতু এবং দুই প্রান্তের সড়ক জুড়ে অত্যাধুনিক ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। সেতুতে যানবাহানের গতিও বৃদ্ধি করে দুই পারের এক্সপ্রেসওয়ের মতই ঘন্টায় সর্বোচ্চ গতি করা হয়েছে ৮০ কিলোমিটার।

মন্তব্য

অনুসন্ধান
Capital Market Large rise in the index in Dhaka Chittagong has increased transactions

পুঁজিবাজার: ঢাকা-চট্টগ্রামে সূচকের বড় উত্থান, বেড়েছে লেনদেন

পুঁজিবাজার: ঢাকা-চট্টগ্রামে সূচকের বড় উত্থান, বেড়েছে লেনদেন

পুঁজিবাজারে চতুর্থ কার্যদিবসে ঢাকা-চট্টগ্রামের বাজারে সবকটি সূচকের উত্থান হয়েছে, বেড়েছে লেনদেন এবং বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।

সারাদিনের লেনদেনে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৪৯ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরিয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১৫ এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ১৮ পয়েন্ট।

লেনদেনে অংশ নেওয়া ৪০০ কোম্পানির মধ্যে ২৯৫ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৪৬ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৫৯ কোম্পানির শেয়ারের দাম।

এ, বি এবং জেড- তিন ক্যাটাগরিতেই দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির। বিশেষ করে লভ্যাংশ দেওয়া ভালো কোম্পানির এ ক্যাটাগরির ২২০ কোম্পানির মধ্যে ১৫৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।

ডিএসই ব্লক মার্কেটে ২৭ কোম্পানির ২৬ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে। ব্র্যাক ব্যাংক সর্বোচ্চ ১৫ কোটি ১০ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।

সারাদিনে ডিএসইতে ৪১৩ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গতদিন ছিল ৩৭২ কোটি টাকা।

১০ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষে ইন্দো বাংলা ফার্মাসিটিক্যালস এবং ৫ শতাংশ দাম কমে তলানিতে ভ্যানগার্ড এএমএল রুপালি ব্যাংক ব্যালেন্স ফান্ড।

এদিন লেনদেনের শীর্ষে থাকা ১০ প্রতিষ্ঠান হলো- লাভেলো আইসক্রিম, স্কয়ার ফার্মা, ব্রাক ব্যাংক, সী পার্ল, বিচ হ্যাচারি, ইন্দো বাংলা ফার্মা, বিএটিবিসি, এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ, ফাইন ফুডস ও মিডল্যান্ড ব্যাংক।

চট্টগ্রামেও উত্থান

ঢাকার মতো চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচকের উত্থান হয়েছে, সার্বিক সূচক বেড়েছে ২৫ পয়েন্ট।

লেনদেন হওয়া ২৩৩ কোম্পানির মধ্যে ১২১ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৭৯ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম।

সিএসইতে মোট ৪৩ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ২৯ কোটি টাকা।

১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষে কপারটেক ইন্ডাস্ট্রি এবং ৯ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেস।

অনুসন্ধান
The price of lotus gold after the drawn four point rise

টানা চার দফা বাড়ার পর কমল সোনার দাম

টানা চার দফা বাড়ার পর কমল সোনার দাম

দেশের বাজারে ১৪ জুন স্বর্ণের দাম প্রতি ভরিতে বেড়েছিল ২ হাজার ১৯২ টাকা। তবে আবার দাম কমানোর ঘোষণা দিয়েছেন স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা। এ দফায় ভরিতে সর্বোচ্চ দাম কমেছে ১ হাজার ৬৬৮ টাকা। তাতে ভালো মানের অর্থাৎ ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম কমে দাঁড়াবে ১ লাখ ৭২ হাজার ৮৬০ টাকা। নতুন এই দাম গতকাল বুধবার থেকে কার্যকর হবে।

বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস) গত মঙ্গলবার রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে স্বর্ণের দাম কমানোর কথা জানায়। বাজুসের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, স্থানীয় বাজারে বিশুদ্ধ সোনার (পিওর গোল্ড) মূল্য হ্রাস পাওয়ায় নতুন করে দাম সমন্বয় করা হয়েছে।

এর আগে সর্বশেষ ১৪ জুন দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম বেড়েছিল। তাতে ভালো মানের অর্থাৎ ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম বেড়ে হয়েছিল ১ লাখ ৭৪ হাজার ৫২৮ টাকা। গতকাল বুধবার রাত পর্যন্ত এ দামেই স্বর্ণ বিক্রি হয়েছে। এছাড়া গত ২৩ এপ্রিল দেশে স্বর্ণের দাম ভরিতে সর্বোচ্চ ৫ হাজার ৩৪২ টাকা বেড়েছিল। তখন ভালো মানের অর্থাৎ ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম বেড়ে হয়েছিল ১ লাখ ৭৭ হাজার ৮৮৮ টাকা। দেশের বাজারে সেটিই ছিল এখন পর্যন্ত স্বর্ণের সর্বোচ্চ দাম।

বাজুসের নতুন সিদ্ধান্তের ফলে গতকাল বুধবার থেকে দেশের বাজারে হলমার্ক করা প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) ২২ ক্যারেট মানের স্বর্ণ ১ লাখ ৭২ হাজার ৮৬০ টাকা, ২১ ক্যারেট ১ লাখ ৬৪ হাজার ৯৯৯ টাকা এবং ১৮ ক্যারেট ১ লাখ ৪১ হাজার ৪২৬ টাকায় বিক্রি হয় এছাড়া সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম বেড়ে হয়েছে ১ লাখ ১৭ হাজার ২ টাকা।

দেশের বাজারে গত মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত প্রতি ভরি হলমার্ক করা ২২ ক্যারেট স্বর্ণ ১ লাখ ৭৪ হাজার ৫২৮ টাকা, ২১ ক্যারেট ১ লাখ ৬৬ হাজার ৫৯৭ টাকা, ১৮ ক্যারেট ১ লাখ ৪২ হাজার ৮০২ টাকা ও সনাতন পদ্ধতির স্বর্ণ ১ লাখ ১৮ হাজার ১৬৮ টাকায় বিক্রি হয়েছে। সেই হিসাবে ২২ ক্যারেট স্বর্ণ ২ হাজার ১৯২ টাকা, ২১ ক্যারেটে ২ হাজার ১০০ টাকা, ১৮ ক্যারেটে ১ হাজার ৮০৮ টাকা ও সনাতন পদ্ধতির স্বর্ণ ১ হাজার ৫২৮ টাকা দাম বেড়েছে। তবে রুপার দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

মন্তব্য

অনুসন্ধান
Why do Googles digital payment and how to use

গুগলের ডিজিটাল পেমেন্ট কেন ও কিভাবে ব্যবহার করবেন

গুগলের ডিজিটাল পেমেন্ট কেন ও কিভাবে ব্যবহার করবেন

সমূহ সম্ভাবনার প্রত্যাশা নিয়ে দেশে চালু হলো গুগল পে। ২৪ জুন মঙ্গলবার রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেলে প্রযুক্তিগত সেবাটির উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ডক্টর আহসান এইচ মনসুর। ভিসা ও মাস্টারকার্ডের সহযোগিতায় প্রথমবারের মত গুগলের সেবাটি পরিচালনা করবে সিটি ব্যাংক পিএলসি। চলুন, গুগলের ডিজিটাল পেমেন্ট ব্যবস্থাটির সুবিধাব্যবহার পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

গুগল পে কি

বিশ্ব নন্দিত টেক জায়ান্ট গুগলের স্পর্শবিহীন লেনদেন ব্যবস্থার নাম গুগল পে। লেনদেনে ব্যবহারযোগ্য কার্ডের যাবতীয় তথ্যাদি সংরক্ষণের জন্য গুগলের রয়েছে একটি ডিজিটাল মানিব্যাগ। এটি গুগল ওয়ালেট নামে পরিচিত। এই ওয়ালেটে কার্ড সংযুক্ত করে গুগল পে-এর মাধ্যমে দ্রুত ও নিরাপদ উপায়ে লেনদেন করা যায়। এর জন্য সাথে প্লাস্টিক কার্ড বহনের প্রয়োজন পড়ে না; একটি স্মার্টফোন আর নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সংযোগই যথেষ্ট। এভাবে ঘরে বসে কিংবা বাইরে চলাচলে সর্বাবস্থানে যে কোনও সময় সব ধরনের আর্থিক লেনদেন করা সম্ভব।

গুগল পে’র সুবিধাসমূহ

- গুগলের এই পেমেন্ট সিস্টেমে রয়েছে উন্নত এনক্রিপশন প্রযুক্তি। এটি গ্রাহকের তথ্যের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। কোনও রকম ডাটা হ্যাক বা তথ্য চুরির আশঙ্কা নেই।
- নগদ অর্থ বা কার্ড বহনের ক্ষেত্রে প্রায় সময় তা ছিনতাইয়ের ভয় থাকে। এছাড়া অসাবধানতায় হারিয়ে যাওয়ারও ভয় থাকে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে কোনও কাগুজে টাকা বা প্লাস্টিক কার্ড বহনের প্রয়োজন নেই বিধায় সেগুলো হারানোরও ভয় নেই।
- দেশে ও বিদেশে পস বা পিওএস (পয়েন্ট অব সেল) টার্মিনালে অর্থ পরিশোধের জন্য শুধুমাত্র অ্যান্ড্রয়েড ফোন স্পর্শ করলেই হবে। তবে পস টার্মিনালটি অবশ্যই এনএফসি (নিয়ার ফিল্ড কমিউনিকেশন) সমর্থিত হতে হবে।
এই সেবা গ্রহণের জন্য গুগলকে কোনও ফি দিতে হবে না।
- লেনদেনের মাধ্যম যেহেতু সম্পূর্ণ ডিজিটাল, তাই এর জন্য ব্যাংকে যাওয়ার দরকার নেই।
- চিরাচরিত ব্যাংকিং ট্রান্সফার সিস্টেমগুলোর তুলনায় গুগল পে’তে ফান্ড ট্রান্সফার অধিক দ্রুত গতির।
- গুগল পে’র আওতার মধ্যে গ্যাস, বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেটের মত যাবতীয় ইউটিলিটি বিল এবং মোবাইল রিচার্জ অন্তর্ভূক্ত রয়েছে।
- এতে আছে বিভিন্ন উপলক্ষে ক্যাশব্যাক এবং ব্যবহারের উপর রিওয়ার্ড পয়েন্টের সুবিধা। এই পয়েন্টগুলো সেবার ব্যবহারকে আরও লাভজনক করে তোলে।
- গুগল পে’র কিউআর কোড ফিচারটি ছোট-বড় সব ধরনের ব্যবসায়ীদের লেনদেনকে আরও সুবিধাজনক করে তুলবে। একদিকে গ্রাহকদের কাছ থেকে সহজে ও দ্রুত পেমেন্ট নেওয়া যাবে, অন্যদিকে হিসাবে অনাকাঙ্ক্ষিত ভুল হওয়ার আশঙ্কা কমবে।

গুগল পে-এর ব্যবহার পদ্ধতি

- প্রথমে অ্যান্ড্রয়েড ফোনে গুগল প্লে থেকে গুগল পে অ্যাপটি ইন্স্টল করে নিতে হবে।
- এরপর অ্যাপ ওপেন করে গুগল অ্যাকাউন্টে লগ-ইন করতে হবে।
- অতঃপর ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, ডেবিট কিংবা ক্রেডিট কার্ডের তথ্যাদি নির্ভুলভাবে সংযুক্ত করতে হবে।
- সবশেষে কাজ হচ্ছে একটি গোপন পিন এবং বায়োমেট্রিক সুরক্ষা সেট করা।
- এভাবে সেটাপ সংক্রান্ত ধাপগুলো সম্পন্ন হলে সিস্টেমটি লেনদেনের জন্য প্রস্তুত হয়ে যাবে। কম সময়ে লেনদেনের জন্য কিউআর কোড সেট করে নেওয়া যেতে পারে। এছাড়া এর জন্য ফোন নাম্বারও ব্যবহার করা যায়।

শেষাংশ

বাংলাদেশে গুগল পে-এর এই যাত্রা দেশের ভবিষ্যতমুখী আর্থিক পরিমণ্ডল গঠনে এক বিশাল পদক্ষেপ। প্রযুক্তির এই সূচনালগ্নে প্রথম দেশীয় আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে এর সাথে রয়েছে সিটি ব্যাংক। পরবর্তীতে অন্যান্য ব্যাংক যুক্ত হওয়ার মাধ্যমে আরও প্রসারিত ও সহজলভ্য হবে গুগল পে। সর্বসাকূল্যে, এই নিরাপদ, দ্রুত গতি, ও ঝামেলাবিহীন লেনদেন ব্যবস্থায় রচিত হলো উন্নত জীবনধারায় মাইলফলক।

মন্তব্য

অনুসন্ধান
Fuel oil is coming from Chittagong to the pipeline commercially in Dhaka

চট্টগ্রাম থেকে পাইপলাইনে বাণিজ্যিকভাবে ঢাকায় আসছে জ্বালানি তেল

চট্টগ্রাম থেকে পাইপলাইনে বাণিজ্যিকভাবে ঢাকায় আসছে জ্বালানি তেল

চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা অঞ্চলে প্রথমবারের মতো পাইপলাইনে বাণিজ্যিকভাবে জ্বালানি তেল সরবরাহ শুরু হয়েছে। গত রোববার বিকাল ৪টায় শুরু হয়ে গতকাল মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৩টা নাগাদ চট্টগ্রাম থেকে এক কোটি ১২ লাখ লিটার পরিশোধিত ডিজেল নারায়ণগঞ্জের গোদনাইল ডিপোতে পাঠানো হয়েছে।

বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) মহাব্যবস্থাপক (বাণিজ্য ও অপারেশন্স) মণি লাল দাশ গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বিপিসির জ্বালানি বিপণনকারী অঙ্গপ্রতিষ্ঠান পদ্মা অয়েল কোম্পানি, মেঘনা পেট্রোলিয়াম এবং যমুনা অয়েল কোম্পানির চট্টগ্রামের পতেঙ্গা ডিপোর মূল স্থাপনার ট্যাংকগুলো থেকে গোদনাইল ডিপোতে প্রতিষ্ঠানগুলোর ট্যাংকে এই জ্বালানি তেল পাম্প করা হচ্ছে।

মণি লাল দাশ বলেন, প্রথমবারের মতো পাইপলাইনে বাণিজ্যিকভাবে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় জ্বালানি তেল নেওয়া শুরু হয়েছে। গত রোববার সন্ধ্যা থেকে পদ্মা অয়েল কোম্পানির গোদনাইল ডিপোর ট্যাংকে তেল নেওয়া হয়। গত সোমবার বেলা ১১টা থেকে মেঘনা পেট্রোলিয়াম তাদের ডিজেল পাঠাচ্ছে। মেঘনার তেল পাঠানো শেষ হলে যমুনা অয়েল তাদের প্রয়োজনীয় তেল পাঠানো শুরু করবে।

পাইপলাইনটিতে ঘণ্টায় ৩২০ মেট্রিক টন জ্বালানি পাঠানোর সক্ষমতা রয়েছে। তবে প্রাথমিক পর্যায়ে ঘণ্টায় ২৮০ টনের মতো পাঠানো হচ্ছে।

বিপিসির নবগঠিত পেট্রোলিয়াম ট্রান্সমিশন কোম্পানি পিএলসি (পিটিসিপিএলসি) ও প্রকল্পে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলীরা এই জ্বালানি সরবরাহের বিষয়টি তদারকি করছেন বলেও জানান এ কর্মকর্তা।

পদ্মা অয়েল কোম্পানির সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা গনমাধ্যমকে বলেন, রোববার সন্ধ্যা থেকে চট্টগ্রাম থেকে গোদনাইল ডিপোতে পাইপলাইনে তেল পাঠানো শুরু হয়। গত সোমবার বেলা ১১টা পর্যন্ত পদ্মা অয়েলের গোদনাইল ডিপোতে ৬৬ লাখ লিটার ডিজেল পাঠানো হয়েছে।

বিপিসি সূত্রে জানা যায়, বছরে ৫০ লাখ টন জ্বালানি তেল সরবরাহের সক্ষমতাসহ জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, জ্বালানি পরিবহনের সিস্টেম লস কমানো, নৌপথে তেল পরিবহনের বিপুল খরচ সাশ্রয়সহ দ্রুততম সময়ে তেল পৌঁছানোর লক্ষ্যে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা পর্যন্ত আড়াইশো কিলোমিটার পাইপলাইন নির্মাণ করা হয়।

পাইপলাইনের মাধ্যমে জ্বালানি তেল পরিবহনের এ প্রকল্পটি ২০১৮ সালের অক্টোবরে অনুমোদন পায়। শুরুতে ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রকল্পটির মেয়াদ ধরা হয়েছিল। কিন্তু কাজ শুরু করতেই ২০২০ সাল লেগে যায়। পরে প্রথম দফায় ২০২২ সালের ডিসেম্বর এবং দ্বিতীয় দফায় ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানো হয়।

বিপিসির এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড। শুরুতে প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছিল দুই হাজার ৮৬১ কোটি টাকা। পরে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় তিন হাজার ৬৯৯ কোটি টাকায়।

বিপিসির কর্মকর্তারা বলছেন, এই পাইপলাইনের মাধ্যমে বছরে ২৭ লাখ টন ডিজেল সরবরাহ করা হবে। পাইপে পরিবহন শুরু হলে বছরে সাশ্রয় হবে ২৩৬ কোটি টাকা। প্রকল্পের নথিতে বলা হয়েছে, প্রতি বছর প্রকল্প থেকে ৩২৬ কোটি টাকা আয় হবে। পরিচালন, রক্ষণাবেক্ষণ, ফুয়েল, বিদ্যুৎ বিল, জমির ভাড়াসহ আরও কিছু খাতে ব্যয় হবে ৯০ কোটি টাকা। এতে প্রতি বছর সাশ্রয় হবে ২৩৬ কোটি টাকা। আগামী ১৬ বছরের মধ্যে প্রকল্পের বিনিয়োগ উঠে আসবে।

বিপিসি সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে দেশে জ্বালানি তেলের গড় চাহিদা বছরে ৬৫ লাখ টন। সর্বশেষ ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সরবরাহ করা হয়েছে ৬৭ লাখ টন। এর মধ্যে ৭৫ শতাংশই ডিজেল। ঢাকা বিভাগেই জ্বালানি তেলের ব্যবহার মোট চাহিদার ৪০ শতাংশ।

বর্তমানে ঢাকায় তেল পরিবহনের জন্য প্রথমে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থেকে নদীপথে নারায়ণগঞ্জের গোদনাইল ও ফতুল্লা ডিপোতে নেওয়া হয়। এরপর সেখান থেকে সড়কপথে ঢাকায় তেল পরিবহন করা হয়। পরিবহনে ব্যবহৃত হয় প্রতি মাসে প্রায় ১৫০টি ছোট-বড় জাহাজ। এতে বিপুল অর্থ খরচ হচ্ছে। ব্যয় আর ভোগান্তি কমাতেই এ পাইপলাইন তৈরির প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল।

মন্তব্য

অনুসন্ধান
Rupali Bank touched a milestone of Tk 1 billion crore

আমানত ৭৮ হাজার কোটি টাকার মাইলফলক স্পর্শ করেছে রূপালী ব্যাংক

আমানত ৭৮ হাজার কোটি টাকার মাইলফলক স্পর্শ করেছে রূপালী ব্যাংক

সম্প্রতি গ্রাহকদের নিকট আস্থাশীল ব্যাংকসমূহের আমানত বৃদ্ধির ন্যায় রাষ্ট্র মালিকানাধীন রূপালী ব্যাংকেরও আমানতসহ কয়েকটি সূচকে অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। গত ৬ মাসে দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর একটা বৃহৎ অংশকে ব্যাংকিং সেবার আওতায় আনতে পেরেছে। উত্তম সেবার নিশ্চয়তা দিয়ে সারাদেশে শাখা ও উপশাখা নিয়ে গড়ে তুলেছে ব্যাংকটির বিস্তৃত নেটওয়ার্ক। ক্রমশই জনপ্রিয় হচ্ছে রূপালী ব্যাংকের বিভিন্ন সেবা। বিশেষ করে আমানতের ক্ষেত্রে রয়েছে বিভিন্ন আকর্ষণীয় স্কিম। বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী মো. ওয়াহিদুল ইসলাম যোগদান করার পর রূপালী আস্থা, রূপালী শ্রদ্ধা ও রূপালী ডাবল বেনিফিট স্কিম নামে তিনটি আকর্ষণীয় স্কিম চালু করেছেন। ইতোমধ্যে নতুন হিসাব বেড়েছে প্রায় তিন লাখ এবং আমানত বেড়েছে ১০ হাজার কোটি টাকারও বেশি এবং স্পর্শ করেছে ৭৮ হাজার কোটি টাকার আমানতের মাইলফলক।

দক্ষ ব্যাংকার কাজী মো. ওয়াহিদুল ইসলাম আর্থিক খাতে নিজেদের টেকসই অবস্থান নিশ্চিতকরণে খেলাপি ঋণ আদায়, নতুন হিসাব খোলা, সিএমএসএমই ঋণ বিতরণ ও রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। নানা প্রতিকূলতার মাঝেও ভারসাম্য রক্ষা করে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারছে রূপালী ব্যাংকের নেতৃত্ব।

রূপালী ব্যাংকের নেতৃত্বের প্রতি কর্মীদের নিষ্ঠাশীল আনুগত্য ও ব্যাংকের প্রতি গ্রাহকদের আস্থার প্রমাণ পাওয়া যায় গত ৬ মাসে ব্যাংকটির নতুন হিসাব খোলার সংখ্যা বিশ্লেষণে। যেখানে প্রতিষ্ঠার পর থেকে ৫৩ বছরে ব্যাংকটির সক্রিয় অ্যাকাউন্ট ছিল ৩০ লাখ, সেখানে ছয় মাসে নতুন অ্যাকাউন্ট যুক্ত হয়েছে ৩ লাখ। বর্তমানে ৩৩ লাখ গ্রাহকের রূপালী ব্যাংক জাতীয় সঞ্চয়ের বড় অংশীদারে পরিণত হয়েছে। গত ছয় মাসে ৬৮ হাজার কোটি টাকা থেকে ৭৮ হাজার কোটি টাকায় পৌঁছেছে ব্যাংকটির আমানত।

ব্যাংকটির বর্তমান অগ্রগতির কারণ হিসেবে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের দক্ষ ও গতিশীল নেতৃত্বের কথা। ব্যাংকের চেয়ারম্যান মো. নজরুল হুদা বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর ছিলেন। অভিজ্ঞ পর্ষদের দিক নির্দেশনা এবং ২৭ বছরের ব্যাংকিং অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী মো. ওয়াহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে ব্যাংকের একটি শক্তিশালী সিনিয়র ম্যানেজমেন্ট টিম প্রতিটি আর্থিক সূচকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে ব্যাংকটিকে।

দেশীয় ও বৈশ্বিক নানামুখী অর্থনৈতিক প্রতিকূলতার মাঝেও ব্যাংকটির পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত গ্রহণের মাধ্যমে ব্যাংকের আমানত বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন সূচকে অগ্রগতি সাধিত হচ্ছে।

মন্তব্য

অনুসন্ধান
AIIB Agreement Signature will give Bangladesh and 1 million loan

বাংলাদেশকে ৪০ কোটি ডলার ঋণ দেবে এআইআইবি, চুক্তি সই

বাংলাদেশকে ৪০ কোটি ডলার ঋণ দেবে এআইআইবি, চুক্তি সই

বাংলাদেশের জলবায়ু সহনশীলতা এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন জোরদারে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে এশীয় অবকাঠামো বিনিয়োগ ব্যাংকের (এআইআইবি) সঙ্গে ৪০ কোটি ডলারের অর্থায়ন চুক্তি স্বাক্ষর করেছে সরকার।

‘ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্ট ইনক্লুসিভ ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম – সাবপ্রোগ্রাম ২’ বাস্তবায়নের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের আওতায় এই ঋণ বাজেট সহায়তা হিসেবে ব্যবহার করা হবে।

গতকাল সোমবার অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগে (ইআরডি) এ চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হয়।

সরকারের পক্ষে অতিরিক্ত সচিব মিরানা মাহরুখ এবং এআইআইবির পক্ষে রজত মিশ্র চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। রজত মিশ্র এআইআইবির পাবলিক সেক্টর (রিজিয়ন ১) ও ফিন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউশনস অ্যান্ড ফান্ডস (গ্লোবাল) ক্লায়েন্টস বিভাগের অ্যাক্টিং চিফ ইনভেস্টমেন্ট অফিসার ও পরিচালক।

এই ৪০ কোটি ডলারের ঋণ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় নীতিগত সংস্কার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ব্যয় করা হবে।

অর্থ বিভাগ পরিচালিত এই কর্মসূচির মূল লক্ষ্য তিনটি: সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে জলবায়ু অগ্রাধিকার বাস্তবায়নে সহায়ক পরিবেশ তৈরি, অভিযোজনমূলক উদ্যোগ বাস্তবায়ন, এবং জলবায়ু পরিবর্তন প্রশমন কার্যক্রম ত্বরান্বিত করা।

এ উদ্যোগ সরকারের জাতীয় পরিকল্পনা ও উন্নয়নে জলবায়ু সংবেদনশীলতা সংযোজনের প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন। এটি দেশের দীর্ঘমেয়াদি টেকসইতা এবং সামাজিক-অর্থনৈতিক সহনশীলতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।

ঋণের মেয়াদ ৩৫ বছর, যার মধ্যে প্রথম ৫ বছর গ্রেস পিরিয়ড। এ ঋণ সিকিউরড ওভারনাইট ফাইন্যান্সিং রেটভিত্তিক সুদ এবং একটি পরিবর্তনশীল স্প্রেডে নির্ধারিত, যেখানে ফ্রন্ট-এন্ড ফি ০.২৫ শতাংশ; যা এআইআইবির প্রচলিত শর্তানুসারে নির্ধারিত হয়েছে।

উভয় পক্ষের কর্মকর্তারা আশা প্রকাশ করেছেন, এই কর্মসূচির মাধ্যমে বিভিন্ন খাতে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক ও জলবায়ু সচেতন নীতিগত সংস্কারের পথ সুগম হবে।

মন্তব্য

p
উপরে