× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

অনুসন্ধান
সাউথইস্ট ব্যাংক নিয়ে অপপ্রচারের নেপথ্যে কাশেম আজিম সিন্ডিকেট
google_news print-icon

সাউথইস্ট ব্যাংক নিয়ে অপপ্রচারের নেপথ্যে কাশেম-আজিম সিন্ডিকেট

সাউথইস্ট-ব্যাংক-নিয়ে-অপপ্রচারের-নেপথ্যে-কাশেম-আজিম-সিন্ডিকেট
সাউথইস্ট ব্যাংকের দুই পরিচালক এম এ কাশেম ও আজিম উদ্দীন আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত
ব্যাংকটির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অপপ্রচারের পেছনে রয়েছেন ব্যাংকটিরই চারজন পরিচালক। তারা ব্যক্তিগত অসৎ উদ্দেশ্য হাসিল করতে না পেরে অপপ্রচার চালাচ্ছেন। চাইছেন চেয়ারম্যান পদ থেকে আলমগীর কবীরকে সরিয়ে দিতে এবং এ পদে তাদের একজনকে বসাতে। ওই চার পরিচালক হলেন আজিম উদ্দীন আহমেদ ও তার স্ত্রী দুলুমা আহমেদ এবং এম এ কাশেম ও তার স্ত্রী জুসনা আরা কাশেম।

১৯৯৫ সালে বেসরকারি খাতে ব্যাংক স্থাপনের অনুমতির কিছু দিনের মধ্যেই যাত্রা শুরু হয় সাউথইস্ট ব্যাংক লিমিটেডের। সেই সময় সরকারে ছিল খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বিএনপি।

বেসরকারি এই ব্যাংকটির প্রতিষ্ঠাকালীন চেয়ারম্যান ছিলেন এম এ কাশেম। ২০০০ সালে চেয়ারম্যান হন আবদুল্লাহ ইউসুফ হারুন। এরপর আবারও চেয়ারম্যান হন এম এ কাশেম। পরবর্তী সময়ে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পান আজিম উদ্দীন আহমেদ ও রাগীব আলী।

তাদের নেতৃত্বে সংকটে পড়ে ব্যাংকটি। ২০০৪ সালে সেই সংকটের মুহূর্তে হাল ধরেন আলমগীর কবীর। তার দক্ষ ও গতিশীল নেতৃত্বে সব সমস্যা কাটিয়ে সামনে এগিয়ে চলছে সাউথইস্ট ব্যাংক। তার সময়ে মুনাফা বেড়েছে প্রায় সাড়ে ৭ গুণ।

অভিযোগ আছে, গত ১৭ বছরে আলমগীর কবীর যে সফলতা দেখিয়েছেন, তাতে লাগাম টানতে এবং তাকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলতে নানা ধরনের অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে কাশেম-আজিম সিন্ডিকেট।

সাউথইস্ট ব্যাংকের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ব্যাংকটিরই চারজন পরিচালক তাদের ব্যক্তিগত অসৎ উদ্দেশ্য হাসিল করতে না পেরে এই অপপ্রচার চালাচ্ছেন। তারা চাইছেন চেয়ারম্যান পদ থেকে আলমগীর কবীরকে সরিয়ে দিতে এবং এ পদে তাদের একজনকে বসাতে। ওই চার পরিচালক হলেন আজিম উদ্দীন আহমেদ ও তার স্ত্রী দুলুমা আহমেদ এবং এম এ কাশেম ও তার স্ত্রী জুসনা আরা কাশেম।

এদের মধ্যে আজিম উদ্দীন মিউচ্যুয়াল গ্রুপ অব কোম্পানিজের চেয়ারম্যান এবং এম এ কাশেম মিউচ্যুয়াল গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান। তারা দুজনই নর্থ সাউথ ইউনির্ভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিতে রয়েছেন। বোর্ডের চেয়ারম্যান এখন আজিম উদ্দীন।

আজিম ও কাশেমের বিরুদ্ধে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগও রয়েছে। মঙ্গলবার তাদের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিকে দুর্নীতি ও জঙ্গিবাদের কবল থেকে রক্ষার দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণও করা হয়।

সাউথইস্ট ব্যাংকের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা অভিযোগ করেছেন, ২০২০ সালে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে পরিচালক আজিম উদ্দীনের মেয়ে তার এক পরিচিতকে ইভ্যালির মতো কোম্পানি খুলতে ১০ কোটি টাকা ঋণ পাইয়ে দেয়ার তদবির করেন। কিন্তু সেই ঋণ দিতে রাজি হয়নি সাউথইস্ট ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। এ কারণেই চেয়ারম্যান আলমগীর কবীরের ওপর ক্ষুব্ধ আজিম উদ্দীন।

অভিযোগ আছে, মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরোতে না পারা এম এ কাশেম আবারও ব্যাংকটির চেয়ারম্যান হতে চাইছেন। তিনি চেয়ারম্যান থাকার সময় নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে ২৫০ জনকে নিয়োগ দেন। আলমগীর কবীর এদের সবার শিক্ষাগত যোগ্যতা যাচাই করে অর্ধশত কর্মকর্তার ভুয়া সনদ পান। পরবর্তী সময়ে তাদের সবার চাকরি চলে যায়, যারা সবাই ছিলেন কাশেম-আজিম সিন্ডিকেটের আত্মীয়।

আরও অভিযোগ আছে, আরেক পরিচালকের ছেলে একটি কোম্পানিকে সাউথইস্ট ব্যাংক থেকে ৫২ কোটি টাকার ঋণ তুলে দেয়ার কথা বলে বিলাসবহুল গাড়ি নেন। এই ঋণের জন্য আবেদন করা হয় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি। ঝুঁকিপূর্ণ মনে হওয়ায় ঋণ আবেদনটি বাতিল করে দেয় সাউথইস্ট ব্যাংক।

এ ঘটনায়ও চেয়ারম্যান আলমগীর কবীরের ওপর ক্ষুব্ধ কাশেম-আজিম সিন্ডিকেট।

ব্যাংকটি নিয়ে অপপ্রচার ও চেয়ারম্যান আলমগীর কবীরকে সরানোর ষড়যন্ত্র এবং নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে জানতে নিউজবাংলা কথা বলেছে পরিচালক আজিম উদ্দীন ও এম এ কাশেমের সঙ্গে। তারা দুইজনই সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তবে তাদের কথায় চেয়ারম্যান আলমগীর কবীরের বিরুদ্ধে ক্ষোভের বিষয়টি পরিষ্কার হয়েছে।

সাউথইস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এম. কামাল হোসেন বলছেন, সাধারণ মানুষ ও গ্রাহকদের বিভ্রান্ত করে ব্যাংকটির সুনাম ক্ষুণ্ন করতে মনগড়া প্রতিবেদন প্রচার করা হচ্ছে। ব্যবহার করা হয়েছে অসত্য ও বিভ্রান্তিকর সব তথ্য।

সাউথইস্ট ব্যাংক নিয়ে অপপ্রচারের নেপথ্যে কাশেম-আজিম সিন্ডিকেট

ব্যাংকটির কর্মকর্তারা নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন, বিভিন্ন মাধ্যমে সাউথইস্ট ব্যাংক নিয়ে ব্যাপক অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। বলা হচ্ছে, দুর্নীতির উৎসবে যেন গা ভাসিয়েছে পরিচালনা পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ। মালিকদের স্বার্থে নিরাপত্তা সঞ্চিতির খাতাতেও রয়েছে বড় গরমিল; দুর্বল হচ্ছে মূলধন কাঠামো। ফলে ঝুঁকি বাড়ছে গ্রাহকের আমানতে।

তাদের ভাষ্য, প্রণোদনা বিতরণ হয়েছে বড় অনিয়ম করে। বাণিজ্যের কোটা থেকে গ্রাহকের আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ডের বিল গেছে। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে খেলাপি ঋণ। আর সব ছাপিয়ে গেছে পরিচালনা পর্ষদের গৃহবিবাদ।

নিউজবাংলার অনুসন্ধানে দেখা যায়, এসব অভিযোগ করা হচ্ছে সাউথইস্ট ব্যাংক নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের ২০২০ সালের ৩০ জুনের স্থিতিভিত্তিক বিশদ পরিদর্শনের প্রতিবেদনকে ভিত্তি ধরে। এই প্রতিবেদনটি খুবই গোপনীয়, যা শুধু বাংলাদেশ ব্যাংক এবং যে ব্যাংকের ওপর করা সেই বাংকের কাছে সংরক্ষিত থাকে।

এ বিষয়ে সাউথইস্ট ব্যাংকের কর্মকতারা জানিয়েছেন, এটা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিয়মিত কাজ। কোনো ব্যাংক পরিদর্শনে কোনো বিষয় নিয়ে অসামঞ্জস্য দেখা দিলে ব্যাখ্যা চায় বাংলাদেশ ব্যাংক। সেই ব্যাংক সন্তোষজনক ব্যাখ্যা দিলে বিষয়টির সুরাহা হয়ে যায়। আর ব্যাখ্যা সন্তোষজনক না হলে নিজস্ব আইন অনুযায়ীই ব্যবস্থা নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। সাউথইস্ট ব্যাংকের ব্যাখ্যার পর এখনও কোনো প্রশ্ন তোলেনি কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

ক্রেডিট কার্ড ইস্যু

বাণিজ্যের কোটা থেকে গ্রাহকের আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ডের বিল গেছে বলেও অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাউথইস্ট ব্যাংকের পক্ষ থেকে নিউজবাংলাকে বলা হয়, ‘উক্ত কার্ডদ্বয়ের বিপরীতে বৈদেশিক মুদ্রার অংশটুকু তারা ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যেই (তৈরি পোশাকশিল্পের বিদেশি ক্রেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ, তাদের উপহার প্রদান, আপ্যায়ন ও বিদেশে তাদের গোডাউন পরিদর্শন ইত্যাদিতে) খরচ করেছেন বলে আমাদের নিশ্চিত করেছেন।

‘এমতাবস্থায় উক্ত কার্ডদ্বয়ের বৈদেশিক মুদ্রার অংশটুকু (paragraph-28-(A)(i), Chapter-13 of GFET-এ বর্ণিত বিধানের ভিত্তিতে ERQ Account থেকে পরিশোধিত হয়ে থাকে। উল্লেখিত ক্রেডিট কার্ডসমূহ বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য গ্রাহকদ্বয়কে বিশেষ পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে।’

ব্যাংকটির এমডি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘রপ্তানিমুখী প্রতিষ্ঠানের ইআরকিউ হিসাব থেকে গ্রাহকের আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ডের বিল প্রদান একটি অনুমোদিত বিষয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের ফরেন এক্সচেঞ্জ গাইডলাইনের চ্যাপ্টার ১৯ অনুযায়ী একটি রপ্তানিমুখী প্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ তিনজন টপ টায়ার নির্বাহীর নামে আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করা যায় এবং উক্ত কার্ডে কোম্পানির ইআরকিউ হিসাব থেকে অর্থ স্থানান্তর কারা যায়।’

ঋণখেলাপি: বাড়েনি, বরং কমেছে

সাউথইস্ট ব্যাংকের নথি বিশ্লেষণে দেখা যায়, তাদের খেলাপি ঋণ বাড়েনি, বরং কমেছে।

২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর সাউথইস্ট ব্যাংকের মোট শ্রেণিকৃত ঋণের পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৪৩৭ দশমিক ৫৩ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৪ দশমিক ৮৭ শতাংশ। ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর শ্রেণিকৃত ঋণ কমে দাঁড়ায় ৯৯৩ দশমিক ৯৮ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৩ দশমিক ১০ শতাংশ। অর্থাৎ এক বছরে শ্রেণিকৃত ঋণ কমেছে ৩০ দশমিক ৮৬ শতাংশ।

ব্যাংকটির এমডি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘অভিযোগ করা হয়েছে, সাউথইস্ট ব্যাংকের মন্দ ঋণ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু ২০২০ সালের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে পরিলক্ষিত হয় যে, ২০১৯ সালে মন্দ ঋণ ছিল ৪ দশমিক ৮৭ শতাংশ, যা ২০২০ সালে ১ দশমিক ৭৭ শতাংশ হ্রাস পেয়ে ৩ দশমিক ১০ শতাংশে উপনীত হয়।’

মুনাফা বেড়েছে সাড়ে ৭ গুণ

আলমগীর কবীর চেয়ারম্যান হওয়ার পর সাউথইস্ট ব্যাংকের ধারাবাহিক উন্নতির চিত্র পাওয়া গেছে ব্যাংকটির ওয়েবসাইট ঘেঁটেও।

এতে দেখা যায়, ২০০৪ সালে আলমগীর কবীর যখন দায়িত্ব নেন তখন ব্যাংকটির ডিপোজিট ছিল ২ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকা, যা এখন বেড়ে হয়েছে ৩৫ হাজার ৯৫৩ কোটি টাকা। ২০০৪ সালে বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ২০০ কোটি টাকা। ২০২০ সালে ঋণ বিতরণ করা হয়েছে ৩২ হাজার ২২৫ কোটি টাকা। ২০০৪ সালে ব্যাংকটি মুনাফা করেছিল ২৯ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। ২০২০ সালে তা প্রায় সাড়ে ৭ গুণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২১৪ কোটি ৯১ লাখ টাকা।

সংস্থান ঘাটতি নিয়ে অপপ্রচার

ব্যাংকটির এমডি কামাল হোসেন বলছেন, সংস্থান ঘাটতির কারণে সাউথইস্ট ব্যাংক ঝুঁকির মুখে রয়েছে বলে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।

নিউজবাংলাকে কামাল হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলার নং- DOS-01 ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১ অনুযায়ী সংস্থান ঘাটতি থাকলে বাংলাদেশ ব্যাংক নগদ লভ্যাংশ প্রদানের অনুমতি প্রদান করতে পারে না। কিন্তু ২০২০ সালে সাউথইস্ট ব্যাংক ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ প্রদান করে।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শন দল কর্তৃক নিরীক্ষা কার্যক্রম শেষে ২০২০ সালে সাউথইস্ট ব্যাংকের ঋণের বিপরীতে ৫২৭ দশমিক ৪৩ কোটি টাকা অতিরিক্ত সংরক্ষণের পরামর্শ দেয়া হয়, যার মধ্যে ১২৭ দশমিক ৪৩ কোটি টাকা ২০২০ সালে লাভ-ক্ষতি হিসাব থেকে সংরক্ষণ করা হয়।

‘অবশিষ্ট ৪০০ কোটি টাকার মধ্যে ২১৫ কোটি টাকা অবণ্টিত মুনাফা (Retained Earnings) থেকে সাধারণ সংস্থানে স্থানান্তর করা হয়। বাকি ১৮৫ কোটি টাকা সাধারণ সংস্থান থেকে স্থানান্তর করে ঘাটতি সংস্থান পূরণ করা হয়। এমতাবস্থায় ব্যাংকের CRAR (Capital to Risk-weighted Asset Ratio) ১৪ দশমিক ৫০ শতাংশে উপনীত হয় (পরিগণনা সংযুক্ত)।’

কামাল হোসেন আরও বলেন, ‘২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সাউথইস্ট ব্যাংক ঝুঁকি হ্রাসের উদ্দেশ্যে উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশের বিপরীতে ৩৫৬ কোটি টাকা ইতিমধ্যে সংস্থান করেছে এবং সাধারণ সঞ্চিতিতে ২৪ দশমিক ৭৫ কোটি টাকা অতিরিক্ত সংস্থান করা রয়েছে।’

প্রণোদনা বিতরণ

অনিয়ম করে প্রণোদনা বিতরণ হয়েছে বলে যে অভিযোগ করা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে দাবি করেছেন সাউথইস্ট ব্যাংকের এমডি।

নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘প্রণোদনা বিতরণে বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারে বর্ণিত নিয়ম-কানুন পরিপালন করে ইতিমধ্যে ২৩০৬ জন গ্রাহকের অনুকূলে বিভিন্ন প্রণোদনার অর্থ বিনিয়োগ করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে গ্রাহকের প্রকৃত ক্ষতি নিরূপণ ও প্রয়োজনীয়তা যাচাইপূর্বক বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সার্কুলারের নির্দেশনা পূর্ণ প্রতিপালন সাপেক্ষে ঋণ মঞ্জুর করা হয়েছে।’

কাশেম-আজিমের ‘দুর্নীতি’ নিয়ে সংবাদ সম্মেলন

সেগুনবাগিচায় মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনটি করে প্রটেকশন ফর লিগ্যাল হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন নামের একটি সংগঠন।

সাউথইস্ট ব্যাংক নিয়ে অপপ্রচারের নেপথ্যে কাশেম-আজিম সিন্ডিকেট
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ট্রাস্টি আজিম উদ্দীন ও এম এ কাশেমের বিরুদ্ধে দ্রুত তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানানো হয় মঙ্গলবারের সংবাদ সম্মেলনে। ছবি: নিউজবাংলা

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ১৯৯২ সালে যাত্রা শুরু করা নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় দেশের অন্যতম শীর্ষ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হলেও পরিচালনা পর্ষদের দুয়েকজন ব্যক্তির কারণে ডুবতে বসেছে প্রতিষ্ঠানটি। নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত হয় একটি ট্রাস্টি বোর্ডের মাধ্যমে। এই ট্রাস্টি বোর্ড একটি মানবহিতৈষী, দানশীল, জনহিতকর, অরাজনৈতিক, অলাভজনক ও অবাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান।

কিন্তু আজিম উদ্দীন আহমেদ ও এম এ কাশেম মানবহিতৈষী ও অবাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানটিকে বেআইনিভাবে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে রূপদান করে শত শত কোটি টাকা বাণিজ্য করছেন এবং সেই টাকা আত্মসাৎ করেছেন এবং এ ধারা অব্যাহত রেখেছেন।

আরও পড়ুন: ‘দুর্নীতি-জঙ্গিবাদের কবল’ থেকে নর্থ সাউথকে রক্ষার দাবি

সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, রাষ্ট্রের স্বার্থে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটি প্রতিষ্ঠানে এমন লাগামহীন দুর্নীতি ও বিশ্ববিদ্যালয়টিকে জঙ্গি তৈরির কারখানায় রূপান্তর করা দুই ট্রাস্টি আজিম উদ্দীন ও এম এ কাশেমের বিরুদ্ধে দ্রুত তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।

এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতির হাত থেকে প্রতিষ্ঠান ও দেশকে বাঁচানোর দাবি জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।

সংবাদ সম্মেলনে ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা ড. সুফি সাগর সামস্ নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই দুই ট্রাস্টির দুর্নীতির ফিরিস্তি তুলে ধরেন।

সুফি সাগর বলেন, দুই ট্রাস্টি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য আশালয় হাউজিং লিমিটেডের কাছ থেকে জমি কিনে প্রায় ২০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন। ২০১৯ সালে বিলাসবহুল গাড়ি কিনে ২১ কোটি টাকা অপব্যয় ও আত্মসাৎ করেন। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) অনুমোদনের বাইরে ১০টি সেকশন চালু করে অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তিপূর্বক বিশাল অঙ্কের টাকা বাণিজ্য করেন এবং এই টাকা বিভিন্নভাবে আত্মসাৎ করেন।

এসব অভিযোগ নিয়ে নিউজবাংলার প্রশ্নের জবাবে আজিম উদ্দীন বলেন, ‘আমি আর আমার স্ত্রী শুধু ডাইরেক্টরই না, স্পন্সর প্রতিষ্ঠাতা ডাইরেক্টর। আমরা তো কোনো গণমাধ্যমে যাইনি, কে কে গেছে, কেন গেছে, আমরা তো বলতে পারব না।

‘আমরা সেদিন এজিএমে যাইনি। আমরা অনুপস্থিতি ছিলাম। কারণ এটার ভেতরে আমাদের একটা ক্ষোভ ছিল। কারণ কিছু কর্মকাণ্ডের প্রতি আমাদের সমর্থন ছিল না।’

‘ব্যাংকটি কি সঠিক পথেই আছে, নাকি বেঠিক পথে আছে?’

নিউজবাংলার এ প্রশ্নে সাউথইস্ট ব্যাংকের এই পরিচালক বলেন, ‘সঠিক পথেই তো চলে। এর ভেতরে কিছু ব্যত্যয় থাকতে পারে। সেটাই আমরা প্রতিবাদ করেছি। অনিয়ম কিছু আছে। সেটা আমি বিশদভাবে বলতে পারব না।

‘আমাদের চেয়ারম্যান আলমগীর সাহেব এককভাবে ১৭ বছর ধরে ব্যাংকটি চালাচ্ছেন। তাকে আমরা সমর্থন দিয়েছি। তিনি চালিয়েছেন। কিন্তু এর মধ্যে কিছু অভিযোগ, অনিয়মের ঘটনা ঘটেছে বলে আমাদের কানে আসছে। সেটার প্রতিবাদস্বরূপ আমরা সেই এজিএমে যাই নাই।’

‘অভিযোগ আছে, ব্যাংক নিয়ে অপপ্রচারের নেপথ্যে রয়েছেন আপনি আর এম এ কাশেম।’

এ প্রশ্নের জবাবে আজিম উদ্দীন বলেন, ‘আমরা তো কোনো মাধ্যমেই আসি নাই, আমরা তো কিছুই জানি না।’

‘অভিযোগ আছে, আপনার পরিবারের সদস্যরা ঋণের তদবির করে সুবিধা নিয়েছেন। কিন্তু সেই ঋণ আটকে যায়। আর এ কারণে আপনি নাকি চেয়ারম্যানের ওপর ক্ষুব্ধ।’

এ প্রশ্নে আজিম উদ্দীন বলেন, ‘আজ থেকে ২৬ বছর আগে এই ব্যাংক আমরা প্রতিষ্ঠা করি। প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ছিলেন কাশেম সাহেব। আলমগীর সাহেব চাকরি করতেন। এরপর এখানে এসে উনি সবকিছুর মালিক হয়ে গেছেন। আমরা তাকে চালাতে দিয়েছি, তিনি চালিয়ে গেছেন।

‘কিন্তু উনি যে এত নিচে নামতে পারেন, এটা আমাদের ধারণা ছিল না। যেভাবে তিনি আমাদের নিয়ে মিডিয়াতে কথা বলেছেন তা অসত্য।’

তিনি আরও বলেন, ‘কাশেম সাহেবের শিক্ষাগত যোগ্যতা কতটুকু তা উনিই জানেন, আমি জানি না। তবে তিনি এফবিবিসিআইয়ের সভাপতি ছিলেন। তিনি একজন সফল ব্যবসায়ী।’

এম এ কাশেম চেয়ারম্যান থাকার সময় নিয়োগ নিয়ে অনিয়মের প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আজিম উদ্দীন বলেন, ‘সব ব্যাংকেই তো দুই-একটা সার্টিফিকেট এদিক-ওদিক গোলমাল করে। তাই দুয়েকটা ওই রকম তো হতেই পারে।’

এম এ কাশেমের কাছেও এসব অভিযোগ নিয়ে বক্তব্য জানতে চায় নিউজবাংলা। জবাবে তিনি জানান, আজিম উদ্দীন যেসব বক্তব্য দিয়েছেন, একই বক্তব্য তারও।

মন্তব্য

আরও পড়ুন

অনুসন্ধান
Bangladesh Bank has bought and 1 million at auction

নিলামে ৪৭.৫০ মিলিয়ন ডলার কিনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক

নিলামে ৪৭.৫০ মিলিয়ন ডলার কিনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক

ডলারের বাজার স্থিতিশীল রাখতে বিগত তিন অর্থবছর ধরে রিজার্ভ থেকে বিপুল পরিমাণ ডলার বিক্রি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবে ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ভিন্ন পথে হাঁটছে বাংলাদেশ ব্যাংক। চলতি অর্থবছরে এখন পর্যন্ত ছয় দফায় মোট ৬৮ কোটি ডলারের বেশি কিনে নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সবশেষ মঙ্গলবার ৮টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের কাছ থেকে কেনা হয়েছে ৪৭.৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।

গতকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানান, বাজারে বর্তমানে ডলারের চাহিদার তুলনায় সরবরাহ বেশি। এ কারণেই রিজার্ভ থেকে বিক্রি না করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাজার থেকেই ডলার কিনছে। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ভবিষ্যতেও এ প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।

ডলার কেনা হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের ফরেন এক্সচেঞ্জ (এফএক্স) নিলাম কমিটির মাধ্যমে, মাল্টিপল প্রাইস অকশন পদ্ধতিতে। এক ডলারের বিনিময় হার ছিল ১২১ টাকা ৭০ পয়সা থেকে ১২১ টাকা ৭৫ পয়সা পর্যন্ত।

এর আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংক পাঁচ দফায় ডলার কেনে। ১৩ জুলাই ১৮ ব্যাংক থেকে ১২১ টাকা ৫০ পয়সা দরে ১৭ কোটি ১০ লাখ ডলার কেনা হয়। এরপর ১৫ জুলাই একই দরে ৩১ কোটি ৩০ লাখ ডলার, ২৩ জুলাই ১২১ টাকা ৯৫ পয়সা দরে এক কোটি ডলার কেনে বাংলাদেশ ব্যাংক। এছাড়া ৭ আগস্ট ১২১ টাকা ৩৫ পয়সা থেকে ১২১ টাকা ৫০ পয়সা দরে ৪ কোটি ৫০ লাখ ডলার, ১০ আগস্ট ১১ ব্যাংকের কাছ থেকে ১২১ টাকা ৪৭ পয়সা থেকে ১২১ টাকা ৫০ পয়সা দরে মোট ৮ কোটি ৩০ লাখ ডলার কেনা হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, ডলারের দাম হঠাৎ করে অতিরিক্ত বেড়ে যাওয়া বা অস্বাভাবিকভাবে কমে যাওয়া- দুটোই অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর। বর্তমানে দেশে খাদ্যের পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে এবং বিদেশি দায় পরিশোধও সঠিকভাবে সম্পন্ন হয়েছে। ফলে নিকট ভবিষ্যতে ডলারের তীব্র চাহিদা তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা নেই।

তাদের মতে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই ডলার ক্রয় রিজার্ভকে আরও শক্তিশালী করবে। এছাড়া জাতীয় নির্বাচন পরবর্তী রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এলে বিনিয়োগ বাড়বে, ফলে ডলারের চাহিদাও বাড়তে পারে।

মন্তব্য

অনুসন্ধান
Dhaka Chamber calls to set up a commercial court to attract foreign investment

বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে ‘কমার্শিয়াল কোর্ট’ স্থাপন করার আহ্বান ঢাকা চেম্বারের

বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে ‘কমার্শিয়াল কোর্ট’ স্থাপন করার আহ্বান ঢাকা চেম্বারের

ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি তাসকীন আহমেদ বলেছেন, বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে অভিজ্ঞ বিচারকদের নিয়োগের মাধ্যমে একটি ‘কমার্শিয়াল কোর্ট’ স্থাপন করা এবং আইনি প্রক্রিয়ার সংস্কার একান্ত অপরিহার্য।

তিনি বলেন, বাণিজ্য বিরোধ নিষ্পত্তির দীর্ঘসূত্রিতায় বিদেশি বিনিয়োগ ব্যাহত হচ্ছে। এছাড়াও দেশে সামগ্রিক অর্থনৈতিক কার্যক্রম বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ব্যবসায়িক চুক্তি, বিনিয়োগ ও মেধাস্বত্ত্ববিষয়ক বিরোধ ক্রমাগত বাড়ার বিষয়টি পরিলক্ষিত হচ্ছে। এ অবস্থার আলোকে ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগে গতি আনতে একটি আলাদা কমার্শিয়াল কোর্ট স্থাপন এবং আইনি প্রক্রিয়ার সংস্কার একান্ত অপরিহার্য।

মঙ্গলবার রাজধানীর মতিঝিলে ডিসিসিআই অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত ঢাকা চেম্বার আয়োজিত ‘ব্যবসায় বিরোধ নিষ্পত্তি ও চুক্তি প্রয়োগ কার্যক্রমের অগ্রগতি’ শীর্ষক এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।

সেমিনারে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবুর রহমান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়াও বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত ও প্রতিনিধি দলের প্রধান মাইকেল মিলার এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (রপ্তানি) ও ইপিবি’র ভাইস চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. আবদুর রহিম খান অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান বলেন, জনবহুল এদেশে আদালতে মামলার সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে এবং বিচারিক কার্যক্রমের দীর্ঘসূত্রিতার বিষয়টিকে আরো অসহনীয় করে তুলেছে। যার ফলে স্থানীয় বিনিয়োগের পাশাপাশি বৈদেশিক বিনিয়োগ ও বাণিজ্যিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।

তিনি বলেন, ২০০১ সালে আরবিট্রেশন আইন করা হলেও, বাণিজ্যের সহায়ক পরিবেশ তৈরি করা যায়নি। বাণিজ্য বিষয়ক বিরোধসমূহ যদি প্রথাগত আদলতের বাইরে গিয়ে মেটানো যায়, তাহলে একদিকে যেমন আদলতের উপর চাপ কমবে, সেই সঙ্গে বাণিজ্যের পরিবেশেরও উন্নয়ন হবে।

তিনি আরও বলেন, কমার্শিয়াল কোর্ট স্থাপনের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। আগামী এক মাসের মধ্যে এটার খসড়া চূড়ান্ত করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। তিনি বাণিজ্যবিষয়ক আদালতসমূহে বিশেষজ্ঞ বিচারকদের নিয়োগ দেওয়া এবং প্রয়োজনীয় সংষ্কারের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

বাংলাদেশ নিযুক্ত ইইউ রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার বলেন, আইনি প্রক্রিয়ায় সংস্কারের লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে ইইউ নিবিড়ভাবে কাজ করছে। এ ধরনের সংস্কার দেশের মানুষের জীবনমানের উন্নয়নে কার্যকর ভূমিকা পালন করবে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহিম খান বলেন, বাণিজ্য বিরোধ নিষ্পত্তিতে দীর্ঘসূত্রিতার কারণে শুধু যে এফডিআই আকর্ষন ব্যাহত হচ্ছে তা নয়। বরং বিষয়টি আমাদের রপ্তানি সম্প্রসারণেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে এবং সার্বিকভাবে বৈশ্বিক বাণিজ্যিক কার্যক্রমে বাংলাদেশ ক্রমাগত আস্থা হারাচ্ছে।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি ব্যারিস্টার মো. সামীর সাত্তার। তিনি বলেন, স্থানীয় ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের নিকট ব্যবসায়িক চুক্তির প্রয়োগের বিষয়টি একটি গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক, যেখানে আমরা বেশ পিছিয়ে রয়েছি।

অনুষ্ঠানের নির্ধারিত আলোচনায় বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) মহাপরিচালক (যুগ্ম সচিব) মো. আরিফুল হক, ইউএনডিপি বাংলাদেশ-এর উপ আবাসিক প্রতিনিধি সোনালী দা রত্নে, বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল আরবিট্রেশন সেন্টার (বিয়াক)-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কে এ এম মাজেদুর রহমান, সিঙ্গাপুর ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান রাজাহ অ্যান্ড থান-এর কো-হেড ভিকনা রাজা, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের স্পেশাল অফিসার বিচারপতি তারেক মোয়াজ্জেম হোসেন এবং ড. কামাল হোসেন অ্যান্ড এসোসিয়েটস-এর পার্টনার ব্যারিস্টার তানিম হোসেন শাওন অংশগ্রহণ করেন।

মুক্ত আলোনায় ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, বাণিজ্য বিরোধ নিষ্পত্তিতে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করতে সরকারের আন্ত:মন্ত্রণালয় সমন্বয়ের বেশ অভাব রয়েছে এবং এ অবস্থার উন্নয়ন না হলে স্থানীয় ও বিদেশি বিনিয়োগ আসবে না। বাণিজ্যিক বিরোধগুলো সমাধানে আদালতে না গিয়ে, আরবিট্রেশন সেন্টারের মাধ্যমে নিষ্পত্তিতে বেশি মনোযোগী হওয়া প্রয়োজন বলে তিনি মত প্রকাশ করেন।

ডিসিসিআই সহ-সভাপতি মো. সালিম সোলায়মান, পরিচালনা পর্ষদের সদস্যসহ সংশ্লিষ্ট খাতের স্টেকহোল্ডাররা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য

অনুসন্ধান
The price of LP gas has dropped to Rs

এলপি গ্যাসের দাম কমলো ৩ টাকা

এলপি গ্যাসের দাম কমলো ৩ টাকা

ভোক্তা পর্যায়ে ১২ কেজির এলপিজি (তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস) সিলিন্ডারের দাম কমানো হয়েছে ৩ টাকা। নতুন মূল্য অনুযায়ী, চলতি সেপ্টেম্বর মাসে ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার ২৭০ টাকা, যা গত মাসে ছিল ১ হাজার ২৭৩ টাকা।

মঙ্গলবার দুপুরে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ এক সংবাদ সম্মেলনে নতুন দর ঘোষণা করেন। নতুন দাম গতকাল সন্ধ্যা ৬টা থেকে কার্যকর হয়েছে ।

এছাড়া, গাড়িতে ব্যবহৃত অটোগ্যাসের দামও লিটারে ১৩ পয়সা কমিয়ে ৫৮ টাকা ১৫ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে।

বিইআরসির ঘোষণায় বলা হয়, বেসরকারি খাতে ভ্যাটসহ প্রতি কেজি এলপিজির নতুন দাম ১০৫ টাকা ৮৭ পয়সা। সেখান থেকে বিভিন্ন ওজনের সিলিন্ডারের মূল্য নির্ধারিত হবে।

তবে সরকারি কোম্পানির সরবরাহকৃত সাড়ে ১২ কেজির এলপিজি সিলিন্ডারের দাম ৮২৫ টাকা অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। সৌদি আরামকোর প্রপেন ও বিউটেনের আন্তর্জাতিক বাজারদরের সঙ্গে সমন্বয় করে প্রতি মাসে এ দাম নির্ধারণ করে আসছে বিইআরসি। ২০২১ সালের এপ্রিল থেকে এই মূল্য নির্ধারণ কার্যক্রম চালু রয়েছে।

মন্তব্য

অনুসন্ধান
Starts importing tomatoes with the port of Hilli

হিলি বন্দর দিয়ে টমেটো আমদানি শুরু

হিলি বন্দর দিয়ে টমেটো আমদানি শুরু

দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে টমেটো আমদানি শুরু হয়েছে।

চট্টগ্রামের বড় বাজারের একটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ভারতের নাসিক রাজ্য থেকে এসব টমেটো আমদানি করছেন।

মঙ্গলবার দুপুরে হিলি স্থলবন্দর উদ্ভিদ সংগনিরোধ বিভাগের উপসহকারী কর্মকর্তা মো. ইউসুফ আলী এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় ভারত থেকে টমেটো বোঝাই একটি ট্রাক হিলি বন্দরে প্রবেশের মধ্য দিয়ে টমেটো আমদানি কার্যক্রম শুরু হয়। প্রথম দিন ২৮ টন টমেটো আমদানি করা হয়েছে। প্রতিকেজি টমেটো আমদানি করতে শুল্কসহ খরচ গুণতে হচ্ছে ৬১ টাকা।

আমদানিকারক এনামুল হক বলেন, দেশের বাজারে চাহিদা থাকায় ভারতের নাসিক রাজ্য থেকে এসব টমেটো আমদানি করা হচ্ছে। বন্দরে প্রতি কেজি টমেটো ১০০ থেকে ১১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। চাহিদা থাকলে আরও বেশি পরিমাণ টমেটো আমদানি করা হবে।

হিলি কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা নাজমুল হোসেন বলেন, গতকাল মঙ্গলবার হিলি বন্দর দিয়ে এক ট্রাকে ২৮ টন টমেটো আমদানি হয়েছে। আমদানিকৃত এসব টমেটো ৫০০ ডলারে শুল্কায়ণ করা হচ্ছে। যেহেতু টমেটো কাঁচাপণ্য তাই দ্রুত ছাড় করণে আমদানিকারককে সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে।

হিলি স্থলবন্দর উদ্ভিদ সংগনিরোধের তথ্যমতে, গত ২০২২ সালের ৬ আগস্ট সবশেষ এই বন্দর দিয়ে টমেটো আমদানি করা হয়েছিল।

মন্তব্য

অনুসন্ধান
Gold prices reached the record per ounce over and 5

স্বর্ণের দাম রেকর্ড, প্রতি আউন্স পৌঁছেছে ৩৫০০ ডলারের উপরে

স্বর্ণের দাম রেকর্ড, প্রতি আউন্স পৌঁছেছে ৩৫০০ ডলারের উপরে

বিশ্ব অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার মুখে বিনিয়োগকারীরা নিরাপদ আশ্রয়স্থল খুঁজতে থাকায় মঙ্গলবার প্রতি আউন্স সোনার দাম রেকর্ড সর্বোচ্চ ৩ হাজার ৫০০ ডলারের উপরে পৌঁছেছে।
এশিয়ায় প্রাথমিক লেনদেনের সময় মূল্যবান ধাতুটি প্রতি আউন্স ৩,৫০১ দশমিক ৫৯ ডলারে পৌঁছেছে, যা এপ্রিলে এর আগের রেকর্ড ৩,৫০০ দশমিক ১০ ডলারকে ছাড়িয়ে গেছে।
হংকং থেকে এএফপি এ খবর জানায়।
বিনিয়োগকারীরা দুর্বল মার্কিন ডলার ও ফেডারেল রিজার্ভের (ফেড) সুদের হার কমানোর সম্ভাবনার কথা বিবেচনায় নেওয়ায় সোনার দামের এই দরপতন ঘটেছে।
মার্কিন মুদ্রাস্ফীতির একটি মূল্য সূচক দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ায় শুক্রবার ওয়াল স্ট্রিট রেকর্ড সর্বোচ্চ থেকে পিছিয়ে এসেছে। একই সময়ে, ফেডের স্বাধীনতা নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে।
শ্রম দিবসের জন্য সোমবার ওয়াল স্ট্রিট বন্ধ ছিল, তখন প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বীদের তুলনায় ডলার মিশ্র লেনদেন করেছে।
বন্ধকী জালিয়াতির অভিযোগে ফেডের গভর্নরকে তিরস্কার করার পর ট্রাম্প গত মাসে বলেছিলেন, ফেডারেল রিজার্ভের গভর্নর লিসা কুক পদত্যাগ না করলে, তিনি তাকে বরখাস্ত করবেন।
মার্কিন আপিল আদালত ডোনাল্ড ট্রাম্পের অনেক শুল্ক, যা বিশ্ব বাণিজ্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে সেগুলো অবৈধ বলে রায় দেওয়ার পরও এই রেকর্ড প্রকাশিত হয়েছে।
তবে আদালত আপাতত এই ব্যবস্থাগুলো বহাল রাখার অনুমতি দেওয়ায়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট সুপ্রিম কোর্টে লড়াই করার জন্য সময় পেয়েছেন।

মন্তব্য

অনুসন্ধান
Community Bank Startup Entrepreneurs with Bangladesh Bank Signature on Refinenceing Agreement

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে কমিউনিটি ব্যাংকের স্টার্টআপ উদ্যোক্তাদের রিফাইন্যান্সিং সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষর

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে কমিউনিটি ব্যাংকের স্টার্টআপ উদ্যোক্তাদের রিফাইন্যান্সিং সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষর

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে কমিউনিটি ব্যাংকের স্টার্টআপ রিফাইন্যান্স স্কিমের অধীনে অংশীদারত্বমূলক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। বুধবার (২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স সেন্টারে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর নুরুন নাহার এবং নির্বাহী পরিচালক হুসনে আরা শিখার উপস্থিতিতে এই চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে এসএমইএসপিডি বিভাগের পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান এবং কমিউনিটি ব্যাংকের পক্ষে ব্যবস্থাপনা পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) কিমিয়া সাআদত পারস্পরিক অংশীদারত্বমূলক এ চুক্তিটি স্বাক্ষর করেন। এ সময় অনুষ্ঠানে- বাংলাদেশ ব্যাংকের যুগ্ম পরিচালক হাফিয়া তাজরিয়ান, যুগ্ম পরিচালক মো. নুরুল কাওসার সাঈফ এবং কমিউনিটি ব্যাংকের হেড অব কর্পোরেট ব্যাংকিং ও হেড অব বিজনেস (ব্রাঞ্চ) ড. মোঃ আরিফুল ইসলাম, হেড অব এসএমই অ্যান্ড এগ্রিকালচার শরিফ হাসান মামুনসহ উভয় প্রতিষ্ঠানের উর্ব্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য

অনুসন্ধান
Export income in July August is 5 percent growth

জুলাই-আগস্টে রপ্তানি আয়ে ১০.৬১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি

জুলাই-আগস্টে রপ্তানি আয়ে ১০.৬১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি

চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম দুই মাস জুলাই-আগস্টে দেশের রপ্তানি আয় ১০.৬১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে মোট ৮ দশমিক ৬৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) আজ প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, গত অর্থবছরের একই সময়ে (জুলাই-আগস্ট) রপ্তানি আয় ছিল ৭ দশমিক ৮৫ বিলিয়ন ডলার।

তবে, সামগ্রিক এই ইতিবাচক প্রবৃদ্ধির পরও ২০২৫ সালের আগস্ট মাসে বার্ষিক প্রবৃদ্ধি ২ দশমিক ৯৩ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।

২০২৫ সালের আগস্ট মাসে রপ্তানি আয় দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক ৯২ বিলিয়ন ডলার, যা ২০২৪ সালের আগস্টে অর্জিত ৪ দশমিক ০৩ বিলিয়ন ডলারের চেয়ে সামান্য কম।

স্বাভাবিকভাবেই তৈরি পোশাক (আরএমজি) খাত শীর্ষ অবস্থান ধরে রেখেছে। চলতি অর্থবছরের জুলাই-আগস্ট সময়ে এই খাত থেকে আয় হয়েছে ৭ দশমিক ১৩ বিলিয়ন ডলার। যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৯ দশমিক ৬৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

মন্তব্য

p
উপরে