১৯৯৫ সালে বেসরকারি খাতে ব্যাংক স্থাপনের অনুমতির কিছু দিনের মধ্যেই যাত্রা শুরু হয় সাউথইস্ট ব্যাংক লিমিটেডের। সেই সময় সরকারে ছিল খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বিএনপি।
বেসরকারি এই ব্যাংকটির প্রতিষ্ঠাকালীন চেয়ারম্যান ছিলেন এম এ কাশেম। ২০০০ সালে চেয়ারম্যান হন আবদুল্লাহ ইউসুফ হারুন। এরপর আবারও চেয়ারম্যান হন এম এ কাশেম। পরবর্তী সময়ে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পান আজিম উদ্দীন আহমেদ ও রাগীব আলী।
তাদের নেতৃত্বে সংকটে পড়ে ব্যাংকটি। ২০০৪ সালে সেই সংকটের মুহূর্তে হাল ধরেন আলমগীর কবীর। তার দক্ষ ও গতিশীল নেতৃত্বে সব সমস্যা কাটিয়ে সামনে এগিয়ে চলছে সাউথইস্ট ব্যাংক। তার সময়ে মুনাফা বেড়েছে প্রায় সাড়ে ৭ গুণ।
অভিযোগ আছে, গত ১৭ বছরে আলমগীর কবীর যে সফলতা দেখিয়েছেন, তাতে লাগাম টানতে এবং তাকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলতে নানা ধরনের অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে কাশেম-আজিম সিন্ডিকেট।
সাউথইস্ট ব্যাংকের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ব্যাংকটিরই চারজন পরিচালক তাদের ব্যক্তিগত অসৎ উদ্দেশ্য হাসিল করতে না পেরে এই অপপ্রচার চালাচ্ছেন। তারা চাইছেন চেয়ারম্যান পদ থেকে আলমগীর কবীরকে সরিয়ে দিতে এবং এ পদে তাদের একজনকে বসাতে। ওই চার পরিচালক হলেন আজিম উদ্দীন আহমেদ ও তার স্ত্রী দুলুমা আহমেদ এবং এম এ কাশেম ও তার স্ত্রী জুসনা আরা কাশেম।
এদের মধ্যে আজিম উদ্দীন মিউচ্যুয়াল গ্রুপ অব কোম্পানিজের চেয়ারম্যান এবং এম এ কাশেম মিউচ্যুয়াল গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান। তারা দুজনই নর্থ সাউথ ইউনির্ভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিতে রয়েছেন। বোর্ডের চেয়ারম্যান এখন আজিম উদ্দীন।
আজিম ও কাশেমের বিরুদ্ধে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগও রয়েছে। মঙ্গলবার তাদের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিকে দুর্নীতি ও জঙ্গিবাদের কবল থেকে রক্ষার দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণও করা হয়।
সাউথইস্ট ব্যাংকের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা অভিযোগ করেছেন, ২০২০ সালে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে পরিচালক আজিম উদ্দীনের মেয়ে তার এক পরিচিতকে ইভ্যালির মতো কোম্পানি খুলতে ১০ কোটি টাকা ঋণ পাইয়ে দেয়ার তদবির করেন। কিন্তু সেই ঋণ দিতে রাজি হয়নি সাউথইস্ট ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। এ কারণেই চেয়ারম্যান আলমগীর কবীরের ওপর ক্ষুব্ধ আজিম উদ্দীন।
অভিযোগ আছে, মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরোতে না পারা এম এ কাশেম আবারও ব্যাংকটির চেয়ারম্যান হতে চাইছেন। তিনি চেয়ারম্যান থাকার সময় নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে ২৫০ জনকে নিয়োগ দেন। আলমগীর কবীর এদের সবার শিক্ষাগত যোগ্যতা যাচাই করে অর্ধশত কর্মকর্তার ভুয়া সনদ পান। পরবর্তী সময়ে তাদের সবার চাকরি চলে যায়, যারা সবাই ছিলেন কাশেম-আজিম সিন্ডিকেটের আত্মীয়।
আরও অভিযোগ আছে, আরেক পরিচালকের ছেলে একটি কোম্পানিকে সাউথইস্ট ব্যাংক থেকে ৫২ কোটি টাকার ঋণ তুলে দেয়ার কথা বলে বিলাসবহুল গাড়ি নেন। এই ঋণের জন্য আবেদন করা হয় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি। ঝুঁকিপূর্ণ মনে হওয়ায় ঋণ আবেদনটি বাতিল করে দেয় সাউথইস্ট ব্যাংক।
এ ঘটনায়ও চেয়ারম্যান আলমগীর কবীরের ওপর ক্ষুব্ধ কাশেম-আজিম সিন্ডিকেট।
ব্যাংকটি নিয়ে অপপ্রচার ও চেয়ারম্যান আলমগীর কবীরকে সরানোর ষড়যন্ত্র এবং নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে জানতে নিউজবাংলা কথা বলেছে পরিচালক আজিম উদ্দীন ও এম এ কাশেমের সঙ্গে। তারা দুইজনই সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তবে তাদের কথায় চেয়ারম্যান আলমগীর কবীরের বিরুদ্ধে ক্ষোভের বিষয়টি পরিষ্কার হয়েছে।
সাউথইস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এম. কামাল হোসেন বলছেন, সাধারণ মানুষ ও গ্রাহকদের বিভ্রান্ত করে ব্যাংকটির সুনাম ক্ষুণ্ন করতে মনগড়া প্রতিবেদন প্রচার করা হচ্ছে। ব্যবহার করা হয়েছে অসত্য ও বিভ্রান্তিকর সব তথ্য।
ব্যাংকটির কর্মকর্তারা নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন, বিভিন্ন মাধ্যমে সাউথইস্ট ব্যাংক নিয়ে ব্যাপক অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। বলা হচ্ছে, দুর্নীতির উৎসবে যেন গা ভাসিয়েছে পরিচালনা পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ। মালিকদের স্বার্থে নিরাপত্তা সঞ্চিতির খাতাতেও রয়েছে বড় গরমিল; দুর্বল হচ্ছে মূলধন কাঠামো। ফলে ঝুঁকি বাড়ছে গ্রাহকের আমানতে।
তাদের ভাষ্য, প্রণোদনা বিতরণ হয়েছে বড় অনিয়ম করে। বাণিজ্যের কোটা থেকে গ্রাহকের আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ডের বিল গেছে। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে খেলাপি ঋণ। আর সব ছাপিয়ে গেছে পরিচালনা পর্ষদের গৃহবিবাদ।
নিউজবাংলার অনুসন্ধানে দেখা যায়, এসব অভিযোগ করা হচ্ছে সাউথইস্ট ব্যাংক নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের ২০২০ সালের ৩০ জুনের স্থিতিভিত্তিক বিশদ পরিদর্শনের প্রতিবেদনকে ভিত্তি ধরে। এই প্রতিবেদনটি খুবই গোপনীয়, যা শুধু বাংলাদেশ ব্যাংক এবং যে ব্যাংকের ওপর করা সেই বাংকের কাছে সংরক্ষিত থাকে।
এ বিষয়ে সাউথইস্ট ব্যাংকের কর্মকতারা জানিয়েছেন, এটা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিয়মিত কাজ। কোনো ব্যাংক পরিদর্শনে কোনো বিষয় নিয়ে অসামঞ্জস্য দেখা দিলে ব্যাখ্যা চায় বাংলাদেশ ব্যাংক। সেই ব্যাংক সন্তোষজনক ব্যাখ্যা দিলে বিষয়টির সুরাহা হয়ে যায়। আর ব্যাখ্যা সন্তোষজনক না হলে নিজস্ব আইন অনুযায়ীই ব্যবস্থা নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। সাউথইস্ট ব্যাংকের ব্যাখ্যার পর এখনও কোনো প্রশ্ন তোলেনি কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
ক্রেডিট কার্ড ইস্যু
বাণিজ্যের কোটা থেকে গ্রাহকের আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ডের বিল গেছে বলেও অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাউথইস্ট ব্যাংকের পক্ষ থেকে নিউজবাংলাকে বলা হয়, ‘উক্ত কার্ডদ্বয়ের বিপরীতে বৈদেশিক মুদ্রার অংশটুকু তারা ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যেই (তৈরি পোশাকশিল্পের বিদেশি ক্রেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ, তাদের উপহার প্রদান, আপ্যায়ন ও বিদেশে তাদের গোডাউন পরিদর্শন ইত্যাদিতে) খরচ করেছেন বলে আমাদের নিশ্চিত করেছেন।
‘এমতাবস্থায় উক্ত কার্ডদ্বয়ের বৈদেশিক মুদ্রার অংশটুকু (paragraph-28-(A)(i), Chapter-13 of GFET-এ বর্ণিত বিধানের ভিত্তিতে ERQ Account থেকে পরিশোধিত হয়ে থাকে। উল্লেখিত ক্রেডিট কার্ডসমূহ বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য গ্রাহকদ্বয়কে বিশেষ পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে।’
ব্যাংকটির এমডি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘রপ্তানিমুখী প্রতিষ্ঠানের ইআরকিউ হিসাব থেকে গ্রাহকের আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ডের বিল প্রদান একটি অনুমোদিত বিষয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের ফরেন এক্সচেঞ্জ গাইডলাইনের চ্যাপ্টার ১৯ অনুযায়ী একটি রপ্তানিমুখী প্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ তিনজন টপ টায়ার নির্বাহীর নামে আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করা যায় এবং উক্ত কার্ডে কোম্পানির ইআরকিউ হিসাব থেকে অর্থ স্থানান্তর কারা যায়।’
ঋণখেলাপি: বাড়েনি, বরং কমেছে
সাউথইস্ট ব্যাংকের নথি বিশ্লেষণে দেখা যায়, তাদের খেলাপি ঋণ বাড়েনি, বরং কমেছে।
২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর সাউথইস্ট ব্যাংকের মোট শ্রেণিকৃত ঋণের পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৪৩৭ দশমিক ৫৩ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৪ দশমিক ৮৭ শতাংশ। ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর শ্রেণিকৃত ঋণ কমে দাঁড়ায় ৯৯৩ দশমিক ৯৮ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৩ দশমিক ১০ শতাংশ। অর্থাৎ এক বছরে শ্রেণিকৃত ঋণ কমেছে ৩০ দশমিক ৮৬ শতাংশ।
ব্যাংকটির এমডি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘অভিযোগ করা হয়েছে, সাউথইস্ট ব্যাংকের মন্দ ঋণ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু ২০২০ সালের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে পরিলক্ষিত হয় যে, ২০১৯ সালে মন্দ ঋণ ছিল ৪ দশমিক ৮৭ শতাংশ, যা ২০২০ সালে ১ দশমিক ৭৭ শতাংশ হ্রাস পেয়ে ৩ দশমিক ১০ শতাংশে উপনীত হয়।’
মুনাফা বেড়েছে সাড়ে ৭ গুণ
আলমগীর কবীর চেয়ারম্যান হওয়ার পর সাউথইস্ট ব্যাংকের ধারাবাহিক উন্নতির চিত্র পাওয়া গেছে ব্যাংকটির ওয়েবসাইট ঘেঁটেও।
এতে দেখা যায়, ২০০৪ সালে আলমগীর কবীর যখন দায়িত্ব নেন তখন ব্যাংকটির ডিপোজিট ছিল ২ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকা, যা এখন বেড়ে হয়েছে ৩৫ হাজার ৯৫৩ কোটি টাকা। ২০০৪ সালে বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ২০০ কোটি টাকা। ২০২০ সালে ঋণ বিতরণ করা হয়েছে ৩২ হাজার ২২৫ কোটি টাকা। ২০০৪ সালে ব্যাংকটি মুনাফা করেছিল ২৯ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। ২০২০ সালে তা প্রায় সাড়ে ৭ গুণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২১৪ কোটি ৯১ লাখ টাকা।
সংস্থান ঘাটতি নিয়ে অপপ্রচার
ব্যাংকটির এমডি কামাল হোসেন বলছেন, সংস্থান ঘাটতির কারণে সাউথইস্ট ব্যাংক ঝুঁকির মুখে রয়েছে বলে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
নিউজবাংলাকে কামাল হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলার নং- DOS-01 ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১ অনুযায়ী সংস্থান ঘাটতি থাকলে বাংলাদেশ ব্যাংক নগদ লভ্যাংশ প্রদানের অনুমতি প্রদান করতে পারে না। কিন্তু ২০২০ সালে সাউথইস্ট ব্যাংক ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ প্রদান করে।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শন দল কর্তৃক নিরীক্ষা কার্যক্রম শেষে ২০২০ সালে সাউথইস্ট ব্যাংকের ঋণের বিপরীতে ৫২৭ দশমিক ৪৩ কোটি টাকা অতিরিক্ত সংরক্ষণের পরামর্শ দেয়া হয়, যার মধ্যে ১২৭ দশমিক ৪৩ কোটি টাকা ২০২০ সালে লাভ-ক্ষতি হিসাব থেকে সংরক্ষণ করা হয়।
‘অবশিষ্ট ৪০০ কোটি টাকার মধ্যে ২১৫ কোটি টাকা অবণ্টিত মুনাফা (Retained Earnings) থেকে সাধারণ সংস্থানে স্থানান্তর করা হয়। বাকি ১৮৫ কোটি টাকা সাধারণ সংস্থান থেকে স্থানান্তর করে ঘাটতি সংস্থান পূরণ করা হয়। এমতাবস্থায় ব্যাংকের CRAR (Capital to Risk-weighted Asset Ratio) ১৪ দশমিক ৫০ শতাংশে উপনীত হয় (পরিগণনা সংযুক্ত)।’
কামাল হোসেন আরও বলেন, ‘২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সাউথইস্ট ব্যাংক ঝুঁকি হ্রাসের উদ্দেশ্যে উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশের বিপরীতে ৩৫৬ কোটি টাকা ইতিমধ্যে সংস্থান করেছে এবং সাধারণ সঞ্চিতিতে ২৪ দশমিক ৭৫ কোটি টাকা অতিরিক্ত সংস্থান করা রয়েছে।’
প্রণোদনা বিতরণ
অনিয়ম করে প্রণোদনা বিতরণ হয়েছে বলে যে অভিযোগ করা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে দাবি করেছেন সাউথইস্ট ব্যাংকের এমডি।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘প্রণোদনা বিতরণে বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারে বর্ণিত নিয়ম-কানুন পরিপালন করে ইতিমধ্যে ২৩০৬ জন গ্রাহকের অনুকূলে বিভিন্ন প্রণোদনার অর্থ বিনিয়োগ করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে গ্রাহকের প্রকৃত ক্ষতি নিরূপণ ও প্রয়োজনীয়তা যাচাইপূর্বক বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সার্কুলারের নির্দেশনা পূর্ণ প্রতিপালন সাপেক্ষে ঋণ মঞ্জুর করা হয়েছে।’
কাশেম-আজিমের ‘দুর্নীতি’ নিয়ে সংবাদ সম্মেলন
সেগুনবাগিচায় মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনটি করে প্রটেকশন ফর লিগ্যাল হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন নামের একটি সংগঠন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ১৯৯২ সালে যাত্রা শুরু করা নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় দেশের অন্যতম শীর্ষ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হলেও পরিচালনা পর্ষদের দুয়েকজন ব্যক্তির কারণে ডুবতে বসেছে প্রতিষ্ঠানটি। নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত হয় একটি ট্রাস্টি বোর্ডের মাধ্যমে। এই ট্রাস্টি বোর্ড একটি মানবহিতৈষী, দানশীল, জনহিতকর, অরাজনৈতিক, অলাভজনক ও অবাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান।
কিন্তু আজিম উদ্দীন আহমেদ ও এম এ কাশেম মানবহিতৈষী ও অবাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানটিকে বেআইনিভাবে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে রূপদান করে শত শত কোটি টাকা বাণিজ্য করছেন এবং সেই টাকা আত্মসাৎ করেছেন এবং এ ধারা অব্যাহত রেখেছেন।
আরও পড়ুন: ‘দুর্নীতি-জঙ্গিবাদের কবল’ থেকে নর্থ সাউথকে রক্ষার দাবি
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, রাষ্ট্রের স্বার্থে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটি প্রতিষ্ঠানে এমন লাগামহীন দুর্নীতি ও বিশ্ববিদ্যালয়টিকে জঙ্গি তৈরির কারখানায় রূপান্তর করা দুই ট্রাস্টি আজিম উদ্দীন ও এম এ কাশেমের বিরুদ্ধে দ্রুত তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।
এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতির হাত থেকে প্রতিষ্ঠান ও দেশকে বাঁচানোর দাবি জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।
সংবাদ সম্মেলনে ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা ড. সুফি সাগর সামস্ নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই দুই ট্রাস্টির দুর্নীতির ফিরিস্তি তুলে ধরেন।
সুফি সাগর বলেন, দুই ট্রাস্টি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য আশালয় হাউজিং লিমিটেডের কাছ থেকে জমি কিনে প্রায় ২০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন। ২০১৯ সালে বিলাসবহুল গাড়ি কিনে ২১ কোটি টাকা অপব্যয় ও আত্মসাৎ করেন। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) অনুমোদনের বাইরে ১০টি সেকশন চালু করে অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তিপূর্বক বিশাল অঙ্কের টাকা বাণিজ্য করেন এবং এই টাকা বিভিন্নভাবে আত্মসাৎ করেন।
এসব অভিযোগ নিয়ে নিউজবাংলার প্রশ্নের জবাবে আজিম উদ্দীন বলেন, ‘আমি আর আমার স্ত্রী শুধু ডাইরেক্টরই না, স্পন্সর প্রতিষ্ঠাতা ডাইরেক্টর। আমরা তো কোনো গণমাধ্যমে যাইনি, কে কে গেছে, কেন গেছে, আমরা তো বলতে পারব না।
‘আমরা সেদিন এজিএমে যাইনি। আমরা অনুপস্থিতি ছিলাম। কারণ এটার ভেতরে আমাদের একটা ক্ষোভ ছিল। কারণ কিছু কর্মকাণ্ডের প্রতি আমাদের সমর্থন ছিল না।’
‘ব্যাংকটি কি সঠিক পথেই আছে, নাকি বেঠিক পথে আছে?’
নিউজবাংলার এ প্রশ্নে সাউথইস্ট ব্যাংকের এই পরিচালক বলেন, ‘সঠিক পথেই তো চলে। এর ভেতরে কিছু ব্যত্যয় থাকতে পারে। সেটাই আমরা প্রতিবাদ করেছি। অনিয়ম কিছু আছে। সেটা আমি বিশদভাবে বলতে পারব না।
‘আমাদের চেয়ারম্যান আলমগীর সাহেব এককভাবে ১৭ বছর ধরে ব্যাংকটি চালাচ্ছেন। তাকে আমরা সমর্থন দিয়েছি। তিনি চালিয়েছেন। কিন্তু এর মধ্যে কিছু অভিযোগ, অনিয়মের ঘটনা ঘটেছে বলে আমাদের কানে আসছে। সেটার প্রতিবাদস্বরূপ আমরা সেই এজিএমে যাই নাই।’
‘অভিযোগ আছে, ব্যাংক নিয়ে অপপ্রচারের নেপথ্যে রয়েছেন আপনি আর এম এ কাশেম।’
এ প্রশ্নের জবাবে আজিম উদ্দীন বলেন, ‘আমরা তো কোনো মাধ্যমেই আসি নাই, আমরা তো কিছুই জানি না।’
‘অভিযোগ আছে, আপনার পরিবারের সদস্যরা ঋণের তদবির করে সুবিধা নিয়েছেন। কিন্তু সেই ঋণ আটকে যায়। আর এ কারণে আপনি নাকি চেয়ারম্যানের ওপর ক্ষুব্ধ।’
এ প্রশ্নে আজিম উদ্দীন বলেন, ‘আজ থেকে ২৬ বছর আগে এই ব্যাংক আমরা প্রতিষ্ঠা করি। প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ছিলেন কাশেম সাহেব। আলমগীর সাহেব চাকরি করতেন। এরপর এখানে এসে উনি সবকিছুর মালিক হয়ে গেছেন। আমরা তাকে চালাতে দিয়েছি, তিনি চালিয়ে গেছেন।
‘কিন্তু উনি যে এত নিচে নামতে পারেন, এটা আমাদের ধারণা ছিল না। যেভাবে তিনি আমাদের নিয়ে মিডিয়াতে কথা বলেছেন তা অসত্য।’
তিনি আরও বলেন, ‘কাশেম সাহেবের শিক্ষাগত যোগ্যতা কতটুকু তা উনিই জানেন, আমি জানি না। তবে তিনি এফবিবিসিআইয়ের সভাপতি ছিলেন। তিনি একজন সফল ব্যবসায়ী।’
এম এ কাশেম চেয়ারম্যান থাকার সময় নিয়োগ নিয়ে অনিয়মের প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আজিম উদ্দীন বলেন, ‘সব ব্যাংকেই তো দুই-একটা সার্টিফিকেট এদিক-ওদিক গোলমাল করে। তাই দুয়েকটা ওই রকম তো হতেই পারে।’
এম এ কাশেমের কাছেও এসব অভিযোগ নিয়ে বক্তব্য জানতে চায় নিউজবাংলা। জবাবে তিনি জানান, আজিম উদ্দীন যেসব বক্তব্য দিয়েছেন, একই বক্তব্য তারও।
দেশের বাজারে টানা তৃতীয় দিনের মতো কমেছে স্বর্ণের দাম। ভালো মানের অর্থাৎ ২২ ক্যারেট স্বর্ণের দাম ভরিতে কমেছে ৬৩০ টাকা। সে হিসাবে স্বর্ণের ভরি দাঁড়িয়েছে এক লাখ ১৩ হাজার ৫৬১ টাকা। আগের দিন বুধবার তা ছিল এক লাখ ১৪ হাজার ১৯১ টাকা।
বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানানো হয়।
স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের সংগঠনটি জানায়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের দাম কমেছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টা ৫০ মিনিট থেকে স্বর্ণের নতুন নির্ধারিত দাম কার্যকর হবে।
বাজুস এর আগে চলতি এপ্রিল মাসের ৬, ৮ ও ১৮ তারিখ তিন দফা স্বর্ণের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয়। এর মধ্যে ভালো মানের স্বর্ণের ভরিতে ৬ এপ্রিল ১ হাজার ৭৫০ টাকা, ৮ এপ্রিল ১ হাজার ৭৫০ টাকা ও ১৮ এপ্রিল দুই হাজার ৬৫ টাকা বাড়ানো হয়। মাঝে ২০ এপ্রিল ভরিতে ৮৪০ টাকা দাম কমানোর পরদিন ২১ এপ্রিল আবার ৬৩০ টাকা বাড়ায় বাজুস।
এবার শুরু হয় দাম কমানোর পালা। সবশেষ দাম বাড়ানোর দু’দিন পর ২৩ এপ্রিল ভালো মানের স্বর্ণের দাম ভরিতে তিন হাজার ১৩৮ টাকা ও ২৪ এপ্রিল দু’হাজার ৯৯ টাকা কমানোর ঘোষণা দেয় বাজুস। আর বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) ভরিতে ৬৩০ টাকা কমানোর ঘোষণা দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ টানা তিন দিনে স্বর্ণের দাম ভরিতে কমেছে পাঁচ হাজার ৮৬৮ টাকা।
সোনার দামে এমন উত্থান-পতনের কারণ জানতে চাইলে বাজুসের মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান বলেন, ‘আমরা এখন নতুন পদ্ধতি বা পলিসি অনুসরণ করে গোল্ডের দাম নির্ধারণ করি। সেটি হচ্ছে বিশ্ব স্বীকৃত ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিল পলিসি।
‘এতদিন আমরা আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে গোল্ডের দাম নির্ধারণ করতাম। সেক্ষেত্রে বিশ্ববাজারে যখন স্বর্ণের দাম কমত তখন আমরা কমাতাম। আর যখন বাড়ত তখন বাড়াতাম।’
তিরি আরও বলেন, ‘এখন আমরা আমাদের স্বর্ণের সবচেয়ে বড় বাজার তাঁতীবাজারের বুলিয়ান মার্কেট ফলো করে দর নির্ধারণ করি। এই বাজারে স্বর্ণের দাম ঘণ্টায় ঘণ্টায় উঠা-নামা করে। সেটা অনুসরণ করে আমরা নতুন দর নির্ধারণ করে থাকি। সেক্ষেত্রে দিনে দু’বারও গোল্ডের দাম বাড়ানো-কমানো হতে পারে।’
আরও পড়ুন:ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির পরিচালনা পর্ষদ ব্যাংকের শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ২০২৩ সালে ১০ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড সুপারিশ করেছে।
ব্যাংকের ৪১তম বার্ষিক সাধারণ সভার অনুমোদন সাপেক্ষে এ ডিভিডেন্ড প্রদান করা হবে।
ব্যাংকের চেয়ারম্যান আহসানুল আলমের সভাপতিত্বে বুধবার অনুষ্ঠিত পরিচালনা পর্ষদের সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।
সভায় ভাইস চেয়ারম্যান তানভীর আহমেদসহ অন্যান্য পরিচালক, ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও সিইও মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা এবং অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও কোম্পানি সেক্রেটারি জে কিউ এম হাবিবুল্লাহ, এফসিএস উপস্থিত ছিলেন।
আগামী ২৫ জুন ব্যাংকের ৪১তম বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। লভ্যাংশ প্রাপ্তি এবং সাধারণ সভায় যোগদানের ক্ষেত্রে রেকর্ড তারিখ নির্ধারণ করা হয় ১৬ মে।
সভায় অন্যান্য আলোচ্যসূচির সঙ্গে ৩১ মার্চ শেষ হওয়া ২০২৪ সালের প্রথম প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক বিবরণী অনুমোদন করা হয়।
আরও পড়ুন:কোভিড-১৯ মহামারির অভিঘাতে সমগ্র বিশ্ব যখন টালমাটাল পরিস্থিতির মধ্যে পতিত হয়, ঠিক সেই সময় বাংলাদেশের পুঁজিবাজারকে টেনে তুলতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম। তার নেতৃত্বে বিভিন্ন যুগোপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশের পুঁজিবাজার বিশ্বের দরবারে অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে যায়।
যদিও একটি শ্রেণি বাজারে নেতিবাচক ভূমিকা রাখতে বরাবরই সক্রিয় ছিল। তবে দূরদর্শী নেতৃত্বগুণে বিনিয়োগকারীদের অর্থের সুরক্ষা দিতে বারবার বহুমাত্রিক পদক্ষেপ গ্রহণ করে সেই উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন হতে দেননি অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম।
সম্প্রতি বেশ কিছুদিন ধরে বিভিন্ন ইস্যুকে কেন্দ্র করে অস্বাভাবিক আচরণ করছে পুঁজিবাজার। নিয়ন্ত্রক সংস্থাও এ পরিস্থিতি সামাল দিতে এরই মধ্যে অংশীজনদের সঙ্গে বৈঠক করে বাজারকে স্থিতিশীল করতে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এমনকি পরিস্থিতি অনুকূলে আনতে গতকাল ফ্লোর প্রাইসমুক্ত সব শেয়ারে একদিনের দর কমার নিম্নসীমা (সার্কিট ব্রেকার) ৩ শতাংশে বেঁধে দিয়েছে সংস্থাটি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, বিএসইসির সময়োপযোগী এমন পদক্ষেপ বাজারকে আবারও টেনে তুলতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, সাম্প্রতিক সময়ে সন্দেহভাজন বেশকিছু লেনদেন পরিলক্ষিত হয়েছে বাজারে। এতে বিশেষ একটি শ্রেণি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তাদের স্বার্থ হাসিলের জন্য বাজারকে ম্যানিপুলেট করার চেষ্টা করছে। কয়েকটি ব্রোকারেজ হাউসও এতে জড়িত রয়েছে। বাজারে অবাঞ্ছিত বিক্রির আদেশ দিয়ে তারা অস্থিরতা তৈরি করছে। তাছাড়া বিভিন্ন গুজব ছড়িয়ে বাজারে একটা শ্রেণি স্বার্থ আদায়ের চেষ্টা করছে। ফলে বেশ কিছুদিন ধরে বাজার কিছুটা অস্বাভাবিক আচরণ করছে।
এ বিষয়ে বিএসইসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে বেশ কিছু ট্রেডার নিজেদের মধ্যে যোগশাজসের মাধ্যমে প্রথমে কম দরে শেয়ার বিক্রি করত। পরে তাদের দেখাদেখি সাধারণ বিনিয়োগকারীরা যখন প্যানিক হয়ে শেয়ার বিক্রি করত তখন তারা আবার কম দরে শেয়ারগুলো কিনে নিত। এভাবে তারা নিজেদের মধ্যে শেয়ার লেনদেন করে প্যানিক সৃষ্টির মাধ্যমে ভালো শেয়ারগুলোর দাম কমাত। এই কাজে তাদের বেশ কয়েকটি ব্রোকারেজ হাউসও সহযোগিতা করত।’
বাজার বিশ্লেষকদের মতে, বর্তমান পরিস্থিতিতে শেয়ারের দর কমার কথা নয়। গুটি কয়েক অসাধু ট্রেডারের কারসাজিতে বাজারে অস্থিরতা বিরাজ করছে। এতে বড় বড় ব্যবসায়ীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
এ বিষয়ে পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. আল-আমিন বলেন, ‘এক শ্রেণির অসাধু বিনিয়োগকারী চাচ্ছেন বর্তমান কমিশন বিদায় হয়ে নতুন কেউ দায়িত্বে আসুক, যাতে তারা নতুন করে আরও সুযোগ নিতে পারেন। তারাই বিভিন্ন দুর্বল শেয়ারে কারসাজি করে সুবিধা নিচ্ছেন।
‘ফোর্সড সেলের মাধ্যমে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের শেয়ার তারা কম দরে কিনে নিচ্ছেন। কমিশনের উচিত হবে কারসাজিকারীদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনা, যাতে তারা বারবার বাজারকে ম্যানিপুলেট করার সাহস না পায়।’
এদিকে শেয়ারবাজারের সাম্প্রতিক সময়ের টানা পতন ঠেকাতে আবারও শেয়ারের মূল্যসীমায় পরিবর্তন আনা হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে বিএসইসি এ সংক্রান্ত একটি আদেশ জারি করেছে।
ওই আদেশে বলা হয়, এখন থেকে তালিকাভুক্ত কোনো কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের দর এক দিনে ৩ শতাংশের বেশি কমতে পারবে না। বর্তমানে দরভেদে কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ পর্যন্ত দরপতন হতে পারে।
দেশের পুঁজিবাজার ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সুরক্ষায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে আদেশে জানানো হয়েছে। সার্কিট ব্রেকারের এ সিদ্ধান্ত বুধবার থেকে কার্যকর করতে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জকে নির্দেশও দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, ‘আজকের এই সার্কিট ব্রেকার আরোপ বাজারে কারসাজি রোধ করবে। এটি সন্দেহভাজন লেনদেন বন্ধ করবে। আর এ সিদ্ধান্তের ফলে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী ও উচ্চ সম্পদশালী একক বিনিয়োগকারীরা আরও বেশি সক্রিয় হবে বলে আশা করছি।’
তিনি বলেন, ‘অনেক ভালো শেয়ার বর্তমানে আন্ডারভ্যালুতে আছে। এখানে তারা বিনিয়োগ করবে বলে আমাদের প্রত্যাশা।’
সার্কিট ব্রেকার বাজারের দরপতন ফেরাতে ব্যর্থ হলে আবারও ফ্লোর প্রাইস দেয়ার কোনো সিদ্ধান্ত আছে কি না জানতে চাইলে বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘আশা করছি, আমাদের বাজারে আর কখনও ফ্লোর প্রাইস দিতে হবে না। শিগগিরই বাজার একটা স্থিতিশীল অবস্থানে ফিরবে।’
আরও পড়ুন:দেশের পুঁজিবাজারে শেয়ারের দরপতনের গতি কমিয়ে আনার চেষ্টার অংশ হিসেবে এবার মূল্যসীমায় পরিবর্তন আনা হয়েছে। এখন থেকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর শেয়ার আগের দিনের শেষ হওয়া দরের ভিত্তিতে ৩ শতাংশের বেশি কমতে পারবে না।
শেয়ারের দাম কমার ক্ষেত্রে আগে মূল্যসীমা ছিল ১০ শতাংশ। তবে ঊর্ধ্বসীমা অর্থাৎ কোনো শেয়ারের দাম বাড়ার সীমা ১০ শতাংশ অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) বুধবার এ সংক্রান্ত একটি আদেশ জারি করেছে। বৃহস্পতিবার থেকেই এ আদেশ কার্যকর হবে বলে আদেশে জানানো হয়েছে।
বিএসইসি জানিয়েছে, যেসব শেয়ার ফ্লোর প্রাইসের আওতায় আছে সেসব শেয়ারের ক্ষেত্রে নতুন আদেশ প্রযোজ্য হবে না।
বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্যে বাজার সূচকের অবাধ পতন ঠেকাতে এর আগে ২০২২ সালের জুলাই শেষে প্রতিটি শেয়ারের ফ্লোর প্রাইস নির্ধারণ করে দিয়েছিল বিএসইসি। ফ্লোর প্রাইস ছিল ২০২২ সালের ২৮ জুলাই ও তার আগের চার দিনের ক্লোজিং প্রাইসের গড়।
বর্তমানে বেক্সিমকো, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, খুলনা পাওয়ার কোম্পানি, মেঘনা পেট্রোলিয়াম ও শাহজীবাজার পাওয়ার কোম্পানির ক্ষেত্রে ওই ফ্লোর প্রাইস কার্যকর রয়েছে।
আরও পড়ুন:দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম একদিনের ব্যবধানে আরেক দফা কমেছে। সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম ভরিতে দু’হাজার ১৩৯ টাকা কমিয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে এক লাখ ১৪ হাজার ১৫১ টাকা।
বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস) বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়। বলা হয়েছে,
স্থানীয় বাজারে তেজাবী স্বর্ণের (পাকা স্বর্ণ) দাম কমার পরিপ্রেক্ষিতে এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। নতুন নির্ধারিত দাম বুধবার (২৪ এপ্রিল) বিকেল ৪টা ৫০ মিনিট থেকে কার্যকর হবে।
বাজুস এর আগের দিন মঙ্গলবার ঘোষণা দিয়ে ওই দিন থেকে ভালো মানের এক ভরি স্বর্ণের দাম ৩ হাজার ১৩৮ টাকা কমিয়ে ১ লাখ ১৬ হাজার ২৯০ টাকা নির্ধারণ করে। সে হিসাবে দুদিনের ব্যবধানে দেশের বাজারে ভালো মানের স্বর্ণের দাম ভরিতে কমলো ৫ হাজার ২৭৭ টাকা।
নতুন নির্ধারিত মূল্য অনুযায়ী, সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ২ হাজার ১৩৯ টাকা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ১৪ হাজার ১৫১ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ হাজার ৯৯৫ টাকা কমিয়ে ১ লাখ ৯ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এছাড়া ১৮ ক্যারেটের ভরি ১ হাজার ৭১৪ টাকা কমিয়ে ৯৩ হাজার ৪২৯ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির স্বর্ণের দাম ভরিতে ১ হাজার ৩৭৭ টাকা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ৭৫ হাজার ২০৯ টাকা।
অবশ্য স্বর্ণালঙ্কার কেনার ক্ষেত্রে ক্রেতাদের এর চেয়ে বেশি অর্থ গুনতে হবে। কারণ বাজুস নির্ধারণ করা দামের ওপর ৫ শতাংশ ভ্যাট যোগ করে স্বর্ণের গহনা বিক্রি করা হয়। সে সঙ্গে ভরি প্রতি মজুরি ধরা হয় নূন্যতম ৩ হাজার ৪৯৯ টাকা। ফলে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের গহনা কিনতে ক্রেতাদের গুনতে হবে ১ লাখ ২৩ হাজার ৩৫৮ টাকা।
স্বর্ণের দাম কমানো হলেও অপরিবর্তিত রয়েছে রূপার দাম। ২২ ক্যারেটের এক ভরি রূপার দাম ২ হাজার ১০০ টাকা, ২১ ক্যারেট ২ হাজার ৬ টাকা, ১৮ ক্যারেট ১ হাজার ৭১৫ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির রূপার ভরি ১ হাজার ২৮৩ টাকা নির্ধারণ করা আছে।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশের বাজারে গত বছর প্রথমবারের মতো ল্যাপটপ নিয়ে আসে ট্রেন্ডি প্রযুক্তি ব্র্যান্ড ইনফিনিক্স। ইনবুক ওয়াইটু প্লাস নামের ল্যাপটপটি দিচ্ছে চমৎকার ডিজাইন, শক্তিশালী পারফরম্যান্স ও সাশ্রয়ী দামের প্রতিশ্রুতি। অল্প সময়ের মধ্যেই প্রযুক্তিপ্রেমী শিক্ষার্থী ও এক্সিকিউটিভদের নজর কাড়তে সক্ষম হয়েছে এ ল্যাপটপ।
দেখে নেওয়া যাক কী আছে ইনফিনিক্স ইনবুক ওয়াইটু প্লাস ল্যাপটপটিতে। এর ফিচার, পারফরম্যান্স ও ব্যবহারকারীদের অভিজ্ঞতাই বা কেমন।
ডিজাইন ও গঠন
স্লিক ও হালকা ডিজাইনের ইনফিনিক্স ইনবুক ওয়াইটু প্লাস সহজেই সবার মনোযোগ আকর্ষণ করেছে। শিক্ষার্থী ও ব্যস্ত এক্সিকিউটিভদের জন্য এ ল্যাপটপ যথার্থ। এর পরিচ্ছন্ন ও আধুনিক মেটালিক ডিজাইন স্থায়িত্ব নিশ্চিত করে। একই সঙ্গে দেয় প্রিমিয়াম অনুভূতি। স্লিক প্রোফাইল ও প্রাণবন্ত ডিসপ্লের সঙ্গে যুক্ত সরু বেজেল ল্যাপটপটির সৌন্দর্য বাড়িয়ে তোলে। ফলে বাজারের একই ধরনের দামি ল্যাপটপের সমকক্ষ হয়ে ওঠে ওয়াইটু প্লাস।
তা ছাড়া এর মসৃণ এজি গ্লাস টাচ প্যানেলের কারণে সিল্কি-স্মুথ ও স্থায়ী টাচের অভিজ্ঞতা পাওয়া যায়। ১.৫ মিলিমিটার কি ট্র্যাভেল এবং ব্যাকলাইটিংযুক্ত রেসপনসিভ কি-বোর্ড টাইপিংকে করে তোলে সহজ ও আরামদায়ক। তাই কম আলোতেও টাইপ করতে কোনো সমস্যা হয় না।
পারফরম্যান্স ও প্রোডাক্টিভিটি
১১তম প্রজন্মের কোর আই৫ প্রসেসর ও ৮ জিবি র্যাম রয়েছে ইনফিনিক্স ওয়াইটু প্লাসে। স্টোরেজের প্রয়োজন মেটাতে এতে আছে ৫১২ জিবি এনভিএমই পিসিআইই এসএসডি। প্রোডাক্টিভিটি সফটওয়্যার, ওয়েব ব্রাউজ করা কিংবা কনটেন্ট স্ট্রিম করাসহ সব ধরনের উচ্চ চাহিদাসম্পন্ন অ্যাপ্লিকেশন চালানো যায় খুব সহজেই। এর ইন্টিগ্রেটেড ইন্টেল ইউএইচডি গ্রাফিকস সাধারণ গেমিং ও মাল্টিমিডিয়া এডিটিংয়ের জন্য স্বাচ্ছন্দ্যময় গ্রাফিকস পারফরম্যান্স নিশ্চিত করে। উইন্ডোজ ১১ পরিচালিত ইনফিনিক্স ইনবুক ওয়াইটু প্লাসের অপারেটিং সিস্টেম সবার পরিচিত ও ব্যবহার করা সহজ।
ডিসপ্লে ও মাল্টিমিডিয়া অভিজ্ঞতা
উজ্জ্বল রং ও ওয়াইড অ্যাঙ্গেলের সঙ্গে স্পষ্ট ও পরিষ্কার ভিজ্যুয়াল দেয় ১৫.৬ ইঞ্চি ফুল এইচডি আইপিএস ডিসপ্লেযুক্ত ইনবুক ওয়াইটু প্লাস। ৮৫ শতাংশ স্ক্রিন-টু-বডি রেশিওর সঙ্গে চমৎকার মাল্টিমিডিয়া অভিজ্ঞতার জন্য ডিসপ্লেটি দারুণ। কাজেই আপনার প্রিয় নেটফ্লিক্স সিরিজ দেখা কিংবা ফটো এডিট করা— সবই হবে স্বাচ্ছন্দ্যে।
ল্যাপটপটিতে আছে ডুয়েল এলইডি ফ্ল্যাশ ও এআই নয়েজ ক্যান্সেলেশন প্রযুক্তিযুক্ত ১ হাজার ৮০ পিক্সেলের ফুল এইচডি+ ক্যামেরা। এর ফলে ভিডিও কলের অভিজ্ঞতা হবে আরও উন্নত।
ব্যাটারি লাইফ ও চার্জিং
ইনবুক ওয়াইটু প্লাসের ৫০ ওয়াট-আওয়ার ব্যাটারি ক্যাপাসিটি কোনো চার্জ ছাড়াই প্রতিদিনের কাজে আট ঘণ্টা পর্যন্ত ব্যাকআপ দিতে সক্ষম। পাশাপাশি এর ৪৫ ওয়াট টাইপ-সি পোর্টযুক্ত চার্জারে ডিভাইসটি দ্রুত ও সহজেই চার্জ করা যায়। ফলে ভারী চার্জার বহনের প্রয়োজন হয় না।
দাম
ল্যাপটপটির বর্তমান বাজারমূল্য ৫৮ হাজার ৯৯০ টাকা। অনুমোদিত ইনফিনিক্স রিটেইলার থেকে ল্যাপটপটি কেনা যাচ্ছে।
আরও পড়ুন:‘ডিজিটাল আর্কিটেকচার ট্রান্সফরমেশন ইন লোকাল গভর্মেন্টস ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক উদ্যোগের পাইলটিং কার্যক্রম বাস্তবায়নে স্মার্ট সার্ভিস ট্রান্সফরমেশন অ্যান্ড প্রসেস ডিজাইন ও অবহিতকরণ বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয় রাজশাহীতে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক নির্দেশিত স্মার্ট বাংলাদেশ ভিশন-২০৪১ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র জনাব এএইচএম খায়রুজ্জামা (লিটনের) পরামর্শক্রমে বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের (বিএমজিএফ) অর্থায়ন এবং এটুআই, আইসিটি ডিভিশনের বাস্তবায়নে স্থানীয় সরকার ইনস্টিটিউটের ৫টি পাবলিক ফাইন্যানশিয়াল ম্যানেজমেন্ট (হোল্ডিং ট্যাক্স, ট্রেড লাইসেন্স, বিভিন্ন ধরনের সনদ যেমন জাতীয়তা সনদ, রিকশা/ভ্যান লাইসেন্স, বিদ্যুৎ/গ্যাসসহ বিভিন্ন ধরনের বিল) সংক্রান্ত সেবার স্মার্ট রূপান্তরের লক্ষ্যে ‘ডিজিটাল আর্কিটেকচার ট্রান্সফরমেশন ইন লোকাল গভর্মেন্টস ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক উদ্যোগ রাজশাহীতে বাস্তবায়নের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়।
উদ্যোগের পাইলটিং কার্যক্রম বাস্তবায়নের লক্ষ্যে স্মার্ট সার্ভিস ট্রান্সফরমেশন অ্যান্ড প্রসেস ডিজাইন ও অবহিতকরণ কর্মশালায় প্রায় ৬০ জনের অংশগ্রহণে ৩ দিনব্যাপী কর্মশালার প্রথম দিন মঙ্গলবার রাজশাহীতে অনুষ্ঠিত হয়। এ উদ্যোগটি রাজশাহী সিটি করপোরেশন, জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা ও পাঁচটি ইউনিয়ন পরিষদে পাইলটিং কার্যক্রম বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত হয়।
উক্ত উদ্যোগের প্রধান সমন্বায়ক এটুআই, আইসিটি ডিভিশন চিফ ই-গর্ভনেন্স ড. ফরহাদ জাহিদ শেখ বর্ণিত কর্মশালায় স্মার্ট সার্ভিস ট্রান্সফরমেশন অ্যান্ড প্রসেস ডিজাইন এবং পাইলটিং কার্যক্রম সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন।
কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী সিটি করপোরেশন, রাজশাহী জেলা পরিষদ, পবা উপজেলা পরিষদ, চারঘাট পৌরসভা ও উপজেলা পরিষদ, কাটাখালী পৌরসভা ও পারিলা, হরিপুর, হরিয়ান, হুজরীপাড়া ও ইউনিয়নের সম্মানিত মেয়র, চেয়ারম্যান, মেম্বার, কাউন্সিলর, প্রধান প্রকৌশলী, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, সচিব, সিস্টেম অ্যানালিস্ট এবং এটুআই আইসিটি ডিভিশনের কর্মকর্তারা।
মন্তব্য