ঢাকা বোট ক্লাবে হত্যা ও ধর্ষণচেষ্টা নিয়ে নায়িকা পরীমনি যেসব কথা বলেছেন, তার সব সত্য নয়, অনেক কিছুই বানোয়াট। মামলার আসামি ক্লাবের সাবেক সভাপতি ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ এবং পরীমনির সঙ্গী অমির বক্তব্যেও গরমিল পাওয়া গেছে। সেই রাতে তারা সবাই অতিরিক্ত মদপান করেছিলেন। তাই কে কী করেছেন, তার সঠিক চিত্র তারা নিজেরাও ঠিকমতো বলতে পারেননি। পরীমনির সঙ্গী অমি পরদিন ক্লাবে গিয়ে মদের বিল বাবদ লক্ষাধিক টাকা দেন।
সাভার থানায় পরীমনির করা ধর্ষণ-হত্যাচেষ্টা মামলার তদন্ত করতে গিয়ে এসব তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা।
নিউজবাংলাকে তারা জানান, বাদী ও আসামিরা একে অপরের বিরুদ্ধে যেসব কথা বলেছেন, তার কিছু সত্য, কিছু মিথ্যা। কেউই পুরোপুরি সত্য বলছেন না। এ ঘটনায় তৃতীয় পক্ষের ইন্ধন থাকতে পারে, যাদের সঙ্গে পরীমনি ও নাসির উভয়েরই দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের। ধারণা করা হচ্ছে, তাদের কারসাজিতেই বোট ক্লাবে সেই অনকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে।
পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, তদন্তের মূল উদ্দেশ্য পরীমনির অভিযোগের সত্যতা উদঘাটন। তাই তৃতীয় পক্ষকে সামনে আনতে বা তদন্তের অগ্রগতি এখনই খোলাসা করতে চান না তারা।
ঢাকাই চলচ্চিত্রের আলোচিত অভিনেত্রী পরীমনি ১৩ জুন রাতে গণমাধ্যমের কাছে অভিযোগ করেন, ঢাকা বোট ক্লাবে ৯ জুন রাতে তাকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টা করা হয়। এ অভিযোগে সাভার থানায় করা মামলায় ১৪ জুন গ্রেপ্তার করা হয় নাসির ও তার সহযোগী অমিকে। তাদের মধ্যে নাসির জামিন পেয়েছেন সম্প্রতি।
কী ঘটেছিল সেই রাতে
সেই রাতে ঢাকা বোট ক্লাবে প্রকৃতপক্ষে কী ঘটেছিল, তা জানতে তদন্তসংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছে নিউজবাংলা।
তারা জানান, পরীমনির সঙ্গে সেদিন তিনজন ছিলেন। তাদের একজন ব্যবসায়ী অমি। অপর দুজনের একজন তার কস্টিউম ডিজাইনার জুনায়েদ করিম জিমি; অপরজন সম্পর্কে তার বোন বনি। ক্লাবের দোতলায় বসার সময় জিমির ড্রেস কোড নিয়ে আপত্তি তোলা হয়। জিমি শর্ট প্যান্ট, গেঞ্জি ও স্যান্ডেল পরা ছিলেন।
তদন্তসংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, মামলার পর থেকেই দফায় দফায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন তারা। প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য নিয়েছেন। বাদীর সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ কথা বলেছেন। আসামিদের রিমান্ডে নিয়ে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। ঢাকা বোট ক্লাবের বিভিন্ন সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করা হয়েছে। ক্লাব কর্তৃপক্ষের বিভিন্ন নথি বিশ্লেষণ করেছেন।
‘সবাই ছিলেন মাতাল’
এ সব তথ্যের ভিত্তিতে তদন্ত কর্মকর্তারা নিউজবাংলাকে বলেছেন, সেই রাতে পরীমনি ও তার তিন সঙ্গী এবং অভিযুক্তদের সবাই ছিলেন মাতাল। অতিরিক্ত মদপান করে কে কী করেছেন, তার সঠিক চিত্র তারা নিজেরাও ঠিকমতো বলতে পারেননি। প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন ১২-১৪ জন। তাদের মধ্যে যারা মদপান করেননি, মানে স্বাভাবিক ছিলেন, তাদের কাছ থেকে সেই রাতের প্রকৃত ঘটনা জানার চেষ্টা করেছেন তদন্ত কর্মকর্তারা।
‘জোর করে দুই বোতল দামি মদ নিতে চান পরীমনি’
কর্মকর্তারা জানান, পরীমনি ক্লাবে আমন্ত্রিত ছিলেন না। গাড়ি নিয়ে অমির সঙ্গে ঘুরতে ঘুরতে সেই ক্লাবে ঢোকেন। সেখানে গিয়ে ওয়াশরুম ব্যবহার করেন। নাসিরের সঙ্গে তার দেখা ও কথা হয়। সঙ্গীদের নিয়ে তিনি দুই বোতল মদপান করেন।
পরীমনি আরও দুই বোতল দামি মদ জোর করে নেয়ার চেষ্টা করেন। এ নিয়েই ঝগড়া শুরু পরীমনি ও নাসিরের। প্রথমে ধমকাধমকি। তারপর পরীমনিকে চড়-থাপ্পড় মারেন নাসির। অমি নিজেই পরদিন গিয়ে আগের রাতের বিল হিসাবে লক্ষাধিক টাকা পরিশোধ করেন ক্লাবের মেম্বার হিসেবে।
তদন্তসংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, পরীমনি ছিলেন অস্বাভাবিক। তিনি বনানীর বাসা থেকে এক দফা মদপান করেই গিয়েছিলেন সাভারের সেই বোট ক্লাবে। সেখানে দুই বোতল শেষ করার পর আরও দুই বোতল দামি বিদেশি মদ নিতে চাইলে নাসিরের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডা শুরু হয়।
এর জের ধরে পরীমনিকে থাপ্পড় মারেন নাসির। তার দেখাদেখি ক্লাবে উপস্থিত আরেক ব্যক্তি পরীমনি ও তার সঙ্গীদের মারধর করেন। একে তো মদের নেশা, তার ওপর দুজনের মারধরে পরীমনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তারপর সঙ্গীরা ধরাধরি করে তাকে গাড়িতে নিয়ে যান।
তদন্ত কর্মকর্তাদের ভাষ্য, হত্যা ও ধর্ষণচেষ্টা নিয়ে পরীমনি যেসব কথা বলেছেন, তার সব সত্য নয়। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে পরীমনি বুধবার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ক্যামেরার সামনে যেসব কথা বলা সম্ভব হয় নাই, সেগুলো পুলিশের কাছে গিয়ে বলেছি। সেই রাতে কী কী ঘটেছিল, তার বিস্তারিত বলেছি।’
তার দাবি, নাসির তার মোবাইল ফোন দিয়ে সেদিন ভিডিও করেন। ফোনটি পরীক্ষা করলে আসল ঘটনা বেরিয়ে আসবে।
প্রয়োজনে আবারও গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলবেন পরীমনি
পরীমনি জানিয়েছেন, ঘটনার পর থেকে সকাল-বিকেল ভিন্ন ভিন্ন পরিস্থিতির শিকার হচ্ছেন তিনি। কারও কারও ‘জেলাসির’ কারণে তাকে নিয়ে মিডিয়া ট্রায়ালের চেষ্টা চলছে। সব খুলে বলতে প্রয়োজনে আবারও গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলবেন।
পরীমনির সঙ্গী অমি পরদিন লক্ষাধিক টাকার মদের বিল দিয়েছিলেন কি না, তা জানতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নিউজবাংলা কথা বলেছে ঢাকা বোট ক্লাবের নির্বাহী সদস্য বখতিয়ার আহমেদ খানের সঙ্গে।
তিনি বলেন, ‘পুলিশ যেটা বের করেছে, সেটা সত্যিই কারেক্ট। এটা ফেয়ার ইনকোয়ারি। তবে এর বেশি কিছু এখন আমি বলতে পারব না। করোনার কারণে এখন ক্লাব বন্ধ। ক্লাব খুললে দেখে নিশ্চিত করতে পারব।’
গত ১৪ জুন গ্রেপ্তার হওয়ার আগে নাসির গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, তিনি ক্লাব থেকে বের হওয়ার সময় পরীমনিসহ চারজনকে ঢুকতে দেখেন। তখন তাদের কারও ভারসাম্য ছিল না। তারা কাউন্টারে গিয়ে অনেক দামি ড্রিংস জোর করে নিতে চাচ্ছিলেন।
নাসির বলেন, ‘আমি তাদের বলি, এটা নেয়া যাবে না। নিতে হলে ক্লাবের সদস্য হতে হবে। তা ছাড়া তখন আমাদের বারও বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। বাধা দেয়ায় পরীমনি আমাকে হেনস্তা করেন।’
সেদিনের ঘটনার সূত্রপাত কী নিয়ে, তা জানতে চাইলে পরীমনির সঙ্গী জিমি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রথমেই তারা আমার ড্রেস কোড নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিল। আমার গায়ে গেঞ্জি, পায়ে স্যান্ডেল ছিল। এটা নিয়েই আপত্তি ছিল তাদের। এরপর আমরা ক্লাবে বসি।’
হাতাহাতি-মারধরের ঘটনা কীভাবে ঘটল, জানতে চাইলে তিনি এড়িয়ে যান। মদের বিল প্রসঙ্গে কিছু জানেন না বলেও দাবি করেন জিমি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের এক কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘লিখিত অভিযোগে অনেক অসংগতিমূলক তথ্য থাকায় ঘটনার কয়েক দিন পর পরীমনিকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তারা। তাকে পরিষ্কার করে বলা হয়, তিনি ঘটনাস্থলে ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন কি না। তখন পরীমনি বলেন, না।’
পুলিশের ওই কর্মকর্তা জানান, পরীমনিকে যে ব্যক্তি বেশি মারধর করেছেন, তার নাম এজাহারে দেননি তিনি। সেই সময় তার নাম মনে ছিল না বলে জানিয়েছেন পরীমনি। যেখানে ঘটনা ঘটেছে, সেখানে একটি বার ও একটি কার্ড খেলার টেবিল ছিল। আর কোনো রুম ছিল না।
তদন্ত কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা বাদী, সব আসামি ও প্রত্যক্ষদর্শীর সব বক্তব্য শুনেছেন। রেকর্ড করেছেন। সেগুলো বিশ্লেষণ করে তাদের মনে হয়েছে, ঘটনার নেপথ্যে তৃতীয় পক্ষের সংশ্লিষ্টতা আছে।
তৃতীয় পক্ষের সংশ্লিষ্টতা থাকার বিষয়টি মনে হওয়ার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে কর্মকর্তারা বলছেন, পরীমনি হাই প্রোফাইল লোকজনের সঙ্গে ওঠাবসা করেন। একইভাবে নাসির ছিলেন উত্তরা ক্লাবের তিনবারের নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট। ক্লাবের নির্বাচনে তার প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে যারা ছিলেন, তাদের হাত থাকতে পারে ঘটনায়।
নাসিরের সেই ফোন ডিবিতে
পরীমনির দাবি, নাসির তার নিজের মোবাইল ফোন দিয়ে সেই রাতের ঘটনা ভিডিও করেন। সেটি উদ্ধার করে পরীক্ষা করলেই আসল ঘটনা বেরিয়ে আসবে।
তদন্তসংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, নাসিরের সেই ফোনটি পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) কাছে আছে। পরীক্ষাও করা হচ্ছে।
তদন্তের অগ্রগতি জানতে চাইলে ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন সরদার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মামলার তদন্তের স্বার্থে যেসব সাক্ষ্য-প্রমাণ জোগাড় করা দরকার সবই করেছি। কী পেয়েছি, না পেয়েছি তা প্রকাশ করা সমীচীন নয়।’
পরীমনি ও নাসিরের পরস্পরবিরোধী বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ সদর দপ্তরের উপসহকারী মহাপরিদর্শক (মিডিয়া) সোহেল রানা বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নিউজবাংলাকে বলেন, ‘তদন্তে প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।’
আরও পড়ুন:মুক্তির আগ থেকেই তুমুল আলোচনায় ছিল ভারতের দক্ষিণের কন্নড় সিনেমা কেজিএফ চ্যাপ্টার টু।
যেমনটি আলোচনায় ছিল, বাস্তবেও ঠিক তেমনই ঘটছে। গত ১৪ এপ্রিল মুক্তির পর থেকেই বক্স অফিসে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে কেজিএফ টু।
ইতোমধ্যে হিন্দি ভার্সনে রেকর্ড গড়েছে সিনেমাটি। ৭ দিনে ২৫৫ কোটি রুপি আয় করেছে। যা বাহুবলি টুর রেকর্ডও ভেঙেছে।
হিন্দি ছাড়াও সিনেমাটি কন্নড়, তেলেগু, তামিল ও মালায়ালাম ভাষায় মুক্তি পেয়েছে। সব মিলিয়ে প্রথম সপ্তাহের শেষে সিনেমাটি বিশ্বব্যাপী ৭০০ কোটি রুপির বেশি ব্যবসা করেছে।
ভারতীয় চলচ্চিত্র বাণিজ্য বিশ্লেষক মনোবালা বিজয়বালান বৃহস্পতিবার দুপুরে এক টুইটে এ তথ্য জানিয়েছেন।
#KGFChapter2 ZOOMS past ₹700 cr milestone mark.
— Manobala Vijayabalan (@ManobalaV) April 21, 2022
২০১৮ সালের শেষের দিকে মুক্তি পায় প্রশান্ত নীল পরিচালিত এই ফ্র্যাঞ্চাইজির প্রথম সিনেমা কেজিএফ চ্যাপ্টার ওয়ান।
মুক্তির পর শুধু ভারতে নয়, বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে থাকা ভারতীয় সিনেমাপ্রেমীদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছিল এটি। বক্স অফিসে গড়েছিল ইতিহাস।
গ্যাংস্টারদের নিয়ে গল্পের এই সিনেমায় দুর্দান্ত মারকুটে অভিনয় দিয়ে পুরো ভারত মাতিয়েছিলেন কন্নড় সুপারস্টার যশ। শুধু তা-ই নয়, এই সিনেমা দিয়ে দেশের বাইরেও লাখো ভক্ত-অনুরাগী জুটিয়েছেন এই অভিনেতা।
যশ বাদেও কেজিএফ চ্যাপ্টার টু-তে আরেক মুখ্য ভূমিকায় রয়েছেন বলিউড অভিনেতা সঞ্জয় দত্তকে। এ ছাড়া এতে গুরুত্বপূর্ণ সব চরিত্রে অভিনয় করেছেন রাবিনা ট্যান্ডন, প্রকাশ রাজ, শ্রীনিধি শেট্টির মতো তারকারা।
আরও পড়ুন:করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে স্থগিত থাকা ২৭তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব শুরু হচ্ছে আগামী ২৫ এপ্রিল নজরুল মঞ্চে। উৎসব চলবে ১ মে পর্যন্ত।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করবেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বলিউড অভিনেতা ও আসানসোল লোকসভা উপনির্বাচনে বিজয়ী তৃণমূল এমপি শত্রুঘ্ন সিনহা।
আরও উপস্থিত থাকবেন অভিনেতা রঞ্জিত মল্লিক, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়সহ অনেকে।
উৎসব কমিটির চেয়ারম্যান পরিচালক রাজ চক্রবর্তী বলেন, ‘করোনার বিধিনিষেধ শিথিল হলেও আমাদের সাবধানে থাকতে হবে। সাবধানতার কথা বিবেচনা করেই এবার বাইরের কাউকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।’
কিংবদন্তি পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের জন্মশতবর্ষের শ্রদ্ধায় উৎসবের উদ্বোধনী ফিল্ম হিসেবে একই সঙ্গে নজরুল মঞ্চ ও রবীন্দ্র সদনে দেখানো হবে সত্যজিৎ রায় পরিচালিত অরণ্যের দিনরাত্রি।
পরিচালক অরিন্দম শীল সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, ‘সত্যজিৎ রায়ের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে সত্যজিতের সঙ্গে কাজ করা জীবিত শিল্পী ও কলাকুশলীদের এবার সংবর্ধনা দেয়া হবে।
এবার সত্যজিৎ রায় স্মারক বক্তব্য দেবেন পরিচালক সুজিত সরকার। সত্যজিতের জীবন ও কাজের ওপর প্রদর্শনীও থাকছে উৎসবে।
চলচ্চিত্র উৎসবের থিম ‘কান্ট্রি ফিনল্যান্ড’। কলকাতা শহরের ১০ হলে ৪০ দেশের ১৬৩টি সিনেমা দেখানো হবে এবারের উৎসবে।
২৭তম কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবে আটটি বিলুপ্তপ্রায় ভাষার সিনেমা দেখানো হবে। ভাষাগুলো হলো বোরো, টুলু, রাজবংশী, সান্তাড়, ও কোঙ্কনী ও কুড়ুম্বা।
চিদানন্দ দাশগুপ্ত, বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত, দিলীপ কুমার, স্বাতীলেখা সেনগুপ্ত ও নিকোলাস জাঙ্কসোকে নিয়ে প্রদর্শনীর ব্যবস্থা থাকছে।
শিশির মঞ্চে তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরে কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবের প্রস্তুতি নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি দপ্তরের সচিব শান্তনু বসু, মন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা, উৎসব কমিটির চেয়ারম্যান রাজ চক্রবর্তী, পরিচালক গৌতম ঘোষ, পরিচালক অরিন্দম শীল, হরনাথ চক্রবর্তী, অভিনেত্রী জুন মালিয়া।
চলতি বছরের শুরুর দিকে বলিউড অভিনেত্রী প্রিয়াঙ্কা চোপড়া জানান যে, তার এবং নিক জোনাসের জীবনে সন্তান এসেছে। সারোগেসির মাধ্যমে তারা মা-বাবা হয়েছেন। তবে ছেলে না মেয়ে সন্তান তা জানাননি তিনি।
সেসময় বিভিন্ন সূত্রের বরাত দিয়ে ভারতীয় একাধিক সংবাদমাধ্যম জানায়, কন্যা সন্তানের মা-বাবা হয়েছেন তারকা দম্পতি।
কিন্তু কখনো সন্তানের নাম কিংবা ছবি, কোনোটাই প্রকাশ্যে আনেননি অভিনেত্রী।
তবে দেশটির একাধিক সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, প্রিয়াঙ্কা-নিক তাদের মেয়ের নাম কী রেখেছেন তা এবার প্রকাশ্যে। তারকা দম্পতি কন্যার নাম রেখেছেন মালতী মারি চোপড়া জোনাস।
জন্ম সনদও নাকি হাতে পেয়েছে হলিউড কেন্দ্রিক একটি সংবাদ সংস্থা। সেই সূত্রেই জানা গেছে এই নাম।
সংস্কৃত এবং ল্যাটিন দুই শব্দ মিশিয়ে মেয়ের নাম রেখেছেন প্রিয়াঙ্কা-নিক। সংস্কৃতে ‘মালতী’ শব্দের অর্থ হল একরকম সুগন্ধযুক্ত ছোট সাদা ফুল অথবা চাঁদের আলো।
অন্যদিকে ‘মারি’ শব্দের অর্থ সমুদ্রকে রক্ষা করে যে নারী। মূলত মাতা মেরিকে অনেক সময় এই আখ্যা দেয়া হয়। যিশুর মাতা মেরিকে ফ্রাঞ্চে ‘মারি’ বলা হয়।
যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও মেয়ের নাম বা ছবি কোনোটাই প্রকাশ্যে আনেননি তারকা জুটি।
যুক্তরাষ্ট্রের সান দিয়াগো শহরের এক হাসপাতালে গত ১৫ জানুয়ারি জন্ম হয়েছে নিক-প্রিয়াঙ্কার মেয়ের।
এরপর ২২ জানুয়ারি ইনস্টাগ্রামে এক পোস্টে সারোগেসির মাধ্যমে সন্তান হওয়ার কথা প্রকাশ্যে আনেন প্রিয়াঙ্কা।
প্রিয়াঙ্কার হাতে রয়েছে বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক প্রোজেক্ট। এর মধ্যে টেক্স অফ ইউ রয়েছে মুক্তির অপেক্ষায়। পাশাপাশি আমাজনের টিভি সিরিজ সিটাডেল-এর শুটিংও শেষ করেছেন অভিনেত্রী।
সম্প্রতি এক পান মসলার কোম্পানির বিজ্ঞাপন করেন বলিউডের অভিনেতা অক্ষয় কুমার। শাহরুখ খান, অজয় দেবগনের মতো বলিউড তারকারা আগে থেকেই সেই সংস্থার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর।
তবে অক্ষয় এই বিজ্ঞাপনে অংশ হওয়ায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা প্রতিক্রিয়া জানান তার ভক্ত-অনুরাগীরা। তাই তাদের ভাবনাকে সম্মান জানিয়ে ক্ষমা চেয়ে সেই সংস্থা থেকে নিজেকে সরিয়ে নিলেন অভিনেতা।
নিজের স্বাস্থ্য এবং শরীরচর্চা নিয়ে অত্যন্ত সজাগ অক্ষয়। যা তার চারপাশের লোকজন এবং অনুরাগীদেরও অনুপ্রেরণা জোগায়। তাই তিনি এই ধরনের বিজ্ঞাপনে অংশ নেয়ায় রুষ্ট হন অনেকেই।
এ জন্য বুধবার গভীর রাতে এক টুইট বার্তায় বিজ্ঞাপন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা করেন অক্ষয়।
সেই পোস্টে ক্ষমা প্রার্থনা করে অভিনেতা লেখেন, ‘আমি ক্ষমাপ্রার্থী। আমার অনুরাগী, শুভাকাঙ্ক্ষীসহ সবার কাছে ক্ষমা চাচ্ছি। গত কয়েক দিন ধরে আপনাদের কাছে থেকে যে প্রতিক্রিয়া পেয়েছি তা আমাকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছে। আমি তামাকজাত পণ্যের বিজ্ঞাপন কখনই করিনি এবং কোনো দিন করব না। বিমন ইলাইচির সঙ্গে আমার চুক্তি নিয়ে আপনাদের আবেগ বুঝতে পারছি। সেই আবেগকে সম্মান জানিয়েই বিনয়ের সঙ্গে সরে দাঁড়াচ্ছি।’
ওই বিজ্ঞাপন থেকে পাওয়া টাকা সমাজসেবার কাজে দান করে দেবেন বলেও জানিয়েছেন অক্ষয়।
তিনি লেখেন, ‘বিজ্ঞাপনের পারিশ্রমিক বাবদ পাওয়া টাকা দান করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ওই সংস্থা হয়তো বিজ্ঞাপনটির সম্প্রচার চালিয়ে যাবে, অন্তত আইনিভাবে চুক্তির মেয়াদ শেষ না পর্যন্ত। তার দায় আমারই। তবে কথা দিচ্ছি, আগামী দিনে কাজের ব্যাপারে অত্যন্ত সতর্ক থাকব। বিনিময়ে আপনাদের ভালোবাসা এবং শুভেচ্ছা প্রার্থনা করি।’
তবে সংস্থাটির সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ কবে শেষ, তার উল্লেখ করেননি অক্ষয়।
আরও পড়ুন:২০১৮ সালের শেষের দিকে মুক্তি পায় ভারতের দক্ষিণের কন্নড় ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির বিগ বাজেটের সিনেমা কেজিএফ চ্যাপ্টার ওয়ান।
মুক্তির পর শুধু ভারতে নয়, বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে থাকা ভারতীয় সিনেমাপ্রেমীদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছিল এটি। বক্স অফিসে গড়েছিল ইতিহাস।
গ্যাংস্টারদের নিয়ে গল্পের এই সিনেমায় দুর্দান্ত মারকুটে অভিনয় দিয়ে পুরো ভারত মাতিয়েছিলেন কন্নড় রকিং স্টার যশ। শুধু তা-ই নয়, এই সিনেমা দিয়ে দেশের বাইরেও লাখো ভক্ত-অনুরাগী জুটিয়েছেন এই অভিনেতা।
এরপর আবার ১৪ এপ্রিল কেজিএফ চ্যাপ্টার টু মুক্তির পর ঝড় তুলেছে বক্স অফিসে। জনপ্রিয়তা আর খ্যাতির শীর্ষে এখন যশ। তার সঙ্গে যখন অভিনয় করতে মুখিয়ে আছেন একাধিক অভিনেত্রী, কিন্তু তিনি কার সঙ্গে অভিনয় করার অপেক্ষায় রয়েছেন।
সেই অভিনেত্রী আর কেউ নন তিনি বলিউডের মাস্তানি দীপিকা পাডুকোন। ভারতীয় এক সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে এই ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন যশ।
সেই সাক্ষাৎকারে যশ জানান, যদি সুযোগ দেয়া হয় তাহলে দীপিকা পাডুকোনের সঙ্গে কাজ করতে চান তিনি। আর তার বিপরীতে অভিনয় করেই বলিউডে পা রাখতে চান তিনি।
শুধু দর্শকদের নয় অনেক তারকারও পছন্দের অভিনেত্রী দীপিকা। তার সঙ্গে স্ক্রিন শেয়ারের ইচ্ছা প্রকাশ করেন অনেকেই। এবার সেই তালিকায় যোগ হল কেজিএফ তারকা যশ।
আরও পড়ুন:বিগত কয়েক বছরে বলিউডের চেয়ে বেশি সাড়া ফেলছে ভারতের দক্ষিণী সিনেমা। তার উদাহরণ বাহুবলী, পুষ্পা, আরআরআর, কেজিএফসহ অনেক সিনেমা। বর্তমানে বক্স অফিসে চলছে দক্ষিণী কন্নড় সিনেমা কেজিএফ টু-এর ঝড়।
কন্নড়, তেলেগু, তামিল, মালয়ালাম ও হিন্দি ভাষায় মুক্তি পেয়েছে সিনেমাটি। এতে প্রধান ভূমিকায় অভিনয় করেছেন কন্নড় রকিং স্টার যশ। আর অন্যতম আরেক প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন সঞ্জয় দত্ত।
বলিউড ও দক্ষিণী ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে পার্থাক্য কোথায়? সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তা নিজের অভিমত জানিয়েছেন সঞ্জয় দত্ত।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেয়া সেই সাক্ষাৎকারে সঞ্জয় দত্ত বলেন, ‘আমার মনে হয় হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি হিরোইজম ভুলতে বসেছে, কিন্তু দক্ষিণী ইন্ডাস্ট্রি বীরত্বকে এখনও ভুলে যায়নি। আমি বলছি না যে স্লাইস অফ লাইফ খারাপ। কিন্তু আমরা কেন আমাদের উত্তরপ্রদেশ, বিহার, ঝাড়খণ্ড, রাজস্থানের দর্শকদের ভুলে গিয়েছি, যারা আমাদের দর্শকমহলের একটি বড় অংশ।
‘আমি আশা করি, হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে সেই প্রবণতা ফিরে আসবে। আগে আমাদের স্বতন্ত্র প্রযোজক এবং অর্থদাতা ছিল, যা ফিল্ম স্টুডিওগুলোর করপোরেটাইজেশনের অবসান ঘটিয়েছে। করপোরেটাইজেশন ভালো, তবে এটি সিনেমার পছন্দের ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়।’
উদাহরণ দিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘দেখুন এস এস রাজমৌলির নির্দিষ্ট প্রযোজক রয়েছেন, যারা তার দৃষ্টিভঙ্গিতে সম্পূর্ণ বিশ্বাস রাখেন। আমাদের সঙ্গে আগেকার দিনে গুলশান রাই, যশ চোপড়া, সুভাষ ঘাই এবং যশ জোহরের মতো প্রযোজকও ছিলেন। তারা যে সিনেমাগুলো তৈরি করেছেন তা দেখুন। দক্ষিণে তারা কাগজে স্ক্রিপ্ট দেখে, এখানে আমরা কাগজে পরিসংখ্যান দেখি।’
সঞ্জয়কে পরবর্তী সময়ে যশ রাজ ফিল্মসের ব্যানারে নির্মিতব্য পৃথ্বীরাজ সিনেমায় দেখা যাবে। এতে আরও রয়েছেন অক্ষয় কুমার, মানুষী চিল্লার, সাক্ষী তানওয়ার এবং সোনু সুদ। এ ছাড়া শামশেরায় দেখা যাবে তাকে।
আরও পড়ুন:ভারতের দক্ষিণী সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেত্রী কাজল আগারওয়াল মা হয়েছেন। মঙ্গলবার সকালে তার কোলজুড়ে এসেছে ফুটফুটে পুত্রসন্তান। মা ও সন্তান দুজনেই সুস্থ আছেন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে এ তথ্য জানিয়েছেন অভিনেত্রীর বোন নিশা আগারওয়াল।
এটি জীবনের সেরা সুখবর উল্লেখ করেন নিশা। এর আগে তিনি ইনস্টাগ্রামে লিখেছিলেন, ‘এটি একটি আনন্দের দিন, একটি বিশেষ খবর আপনাদের সঙ্গে ভাগ করে নেয়ার অপেক্ষা সইছে না।’
চলতি বছর জানুয়ারিতে অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার খবর জানিয়েছিলেন কাজল। ২০২০ সালের অক্টোবরে প্রেমিক গৌতম কিসলুর সঙ্গে সাত পাকে বাঁধা পড়েন অভিনেত্রী। এবার তাদের পরিবারে এলো নতুন সদস্য। তা নিয়ে ব্যাপক উচ্ছ্বসিত তারকাদম্পতি।
অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় গৌতম কিসলু তাকে যেভাবে দেখভাল করেছেন, তাতে ভীষণ খুশি অভিনেত্রী। গত সপ্তাহে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্বামীকে ধন্যবাদ জানিয়ে একটি আবেগঘন বার্তাও লিখেছিলেন কাজল।
সেখানে তাকে তিনি লিখেছিলেন, ‘আমাদের সন্তান আসার আগে কতটা যত্ন নিচ্ছ আমার, আমি জানতে চাই, তুমি ঠিক কতটা অসাধারণ একজন মানুষ আর কতটা অসাধারণ একজন বাবা হতে চলেছ।’
শিগগিরই কাজলকে দেখা যাবে চিরঞ্জীবী এবং রামচরণ অভিনীত আচার্য সিনেমায়। ২৯ এপ্রিল প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে সিনেমাটি।
মন্তব্য