× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য ইভেন্ট শিল্প উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ কী-কেন ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও ক্রিকেট প্রবাসী দক্ষিণ এশিয়া আমেরিকা ইউরোপ সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ শারীরিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্য যৌনতা-প্রজনন অন্যান্য উদ্ভাবন আফ্রিকা ফুটবল ভাষান্তর অন্যান্য ব্লকচেইন অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

অনুসন্ধান
তিন মৃত্যু বিদ্যুৎস্পর্শে নেতারা বলালেন বজ্রপাত
google_news print-icon

তিন মৃত্যু বিদ্যুৎস্পর্শে, নেতারা বলালেন বজ্রপাত

তিন-মৃত্যু-বিদ্যুৎস্পর্শে-নেতারা-বলালেন-বজ্রপাত
মেয়ে হারানো ময়না বেগম কাঁদতে কাঁদতে বলছিলেন কীভাবে ঘটেছিল মর্মান্তিক সেই তিন মৃত্যু। ছবি: সাইফুল ইসলাম
‘এলাকার নেতা দিয়া আমাগো জোর কইরা বলাইছে, তোরা বল বজ্রপাতে মরছে। তোরা আমাগো কথা শুনলে তোগো আমরা দেখমু। এর লাইগা মামলা করা হয় নাই। থানায় সাইন দেওয়াইছে বজ্রপাতে মরছে কইয়া। বাড়িয়ালির বাসায় গেছি। সে বলে কী, যদি রাস্তাঘাটে এক্সিডেন্ট হইয়া মইরা যাইত! এইডা কী কতা?’

রাজধানীতে একটি বস্তির ফটক বিদ্যুতায়িত হয়ে তিনজনের মৃত্যু হলেও সেটি বজ্রপাতের কারণে হয়েছে বলে চাপ দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। আর চাপের মুখে তিনটি পরিবারই থানায় গিয়ে লিখিত দিয়ে এসেছে যে তাদের মৃত্যু হয়েছে প্রাকৃতিক দুর্যোগে।

তিনটি পরিবারের সঙ্গেই কথা হয়েছে নিউজবাংলার। তারা জানান, তাদের তিনটি কথা বলা হয়েছে এই লিখিত দিতে। প্রথমত, মামলা করে কোনো লাভ হবে না, বিচার পাবে না; দ্বিতীয়ত, মামলা করলে মরদেহ কাটাছেঁড়া করা হবে; তৃতীয়ত, তাদের কথা শুনলে পরে দেখা হবে।

এই পরিবারগুলো থানায় যাওয়ার পর পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখার চেষ্টা না করেই লিখিত নিয়েছে।

আবার একজন শুরুতে শিখিয়ে দেয়া কথা বলতে অস্বীকার করলে থানাতেই তাকে নিয়ে টানাহেঁচড়া করা হয়।

যারা বজ্রপাত বলতে বাধ্য হয়েছেন, তারা জানিয়েছেন, ঘটনাটি ঘটিয়েছেন স্থানীয় নেতারা। তবে তারা কারা, সেটি বলতে পারেননি।

অভিযোগ উঠেছে, বিদ্যুতায়িত হয়ে মৃত্যুর বিষয়টি প্রমাণ হলে অবহেলাজনিত মৃত্যুর অভিযোগ আনা যায় বলে প্রাকৃতিক দুর্যোগের বিষয়টি সামনে আনা হয়েছে।

গত ৫ জুন মালিবাগ চৌধুরীপাড়ার সোনামিয়া গলিতে একটি বস্তিতে ১০ বছর বয়সী সাবিনা আক্তার পাখি, ১২ বছর বয়সী ঝুমুর আক্তার ঝুমা ও ৬৫ বছর বয়সী আব্দুল হকের মৃত্যু হয়।

বস্তিবাসী জানালেন, গেটের পাশে বিদ্যুতের একটি খুঁটি। সেখানে বিদ্যুতের তারগুলো ছিল দুর্বল। বাতাস এলে তার লোহার ফটক ও টিনের চালে প্রায়ই বাড়ি খায়। এর আগেও কয়েকবার ঝড়-বৃষ্টিতে এ ঘটনা ঘটেছে।

সেদিন প্রাণ হারানো নয় বছরের শিশু ঝুমুর আক্তার ঝুমার মা ময়না বেগম ঘটনার যে বর্ণনা দেন, তা হলো ‘যহন আমার মাইয়া গেট ধরছে, তহন বইয়া পইড়া এক্কেবারে জবান বন্ধ হইয়া গ্যাছে গা। আরেকটা যে বাচ্চা মরছে ঢাকা মেডিক্যালে, হ্যায় আমার মাইয়ারে কইছে ঢং করোস। কইয়া একটা লাত্থি মারছে। লগে লগে যাইয়া আমার মাইয়ার উপরে পড়ছে। আবার হ্যারে আবার বাঁচাইতে আসছে যে বুইড়া কাকা, হ্যারো বাঁচাইতে গিয়ে হ্যায়ও তাগো উপড়ে পইড়া রইছে।’

তিনজনের মৃত্যু, তবু কোনো মামলা হয়নি। ভুক্তভোগীরাও এ বিষয়ে উদ্যোগ নেননি, আর পুলিশও তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়নি।

কী বলছে ভুক্তভোগী পরিবারগুলো

নিহতদের স্বজনেরা বলছেন, তাদের নানা ভয়ভীতি দেখিয়ে থানায় নিয়ে বলানো হয়েছে এটা বজ্রপাতে মৃত্যু। তবে বিদ্যুতায়িত হয়ে এই তিনজনের মৃত্যু হয়েছে।

আরও একটি বিষয় কাজে লাগানো হয়েছে। স্বজনদের বলা হয়েছে, মামলা হলে ময়নাতদন্ত হবে আর মরদেহ কাটাছেঁড়া করা হবে। আর সেটাতে রাজি ছিলেন না অভিভাবকরা।

পুলিশ বলছে, মৃতদের স্বজনরা থানায় এসে লিখিত বক্তব্য দিয়েছে যে, বজ্রপাতে তাদের মৃত্যু হয়েছে এবং তারা মরদেহের ময়নাতদন্ত করতে চান না।

সেদিন মারা যাওয়া আব্দুল হকের তিন মেয়ে ও ছোট একটা ছেলে রয়েছে। তিনি ছিলেন বাসার দারোয়ান।

তার মেয়ে কোহিনূর বেগম রাজি ছিলেন না এই ভাষ্য দিতে।

তিন মৃত্যু বিদ্যুৎস্পর্শে, নেতারা বলালেন বজ্রপাত
দুর্ঘটনার দিন আশেপাশের মানুষ ভিড় করে বস্তিতে। তবে যাননি বাড়িওয়ালি

নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘আমার আব্বায় মইরা গেছে। আমারে থানায় লইয়া গেছে। আমারে ডর দেহাইয়া কয় তোমার আব্বারে কাইট্টা ছিঁড়া ফালাইব। আমার আব্বায় মইরা গেছে, ওহন আমি কমু যে বজ্রপাতে মইরা গেছে? প্রথমে থানার মধ্যে কইয়ালাইছি কারেন্টে মরছে। পরে আমারে টাইনা-হ্যাসরাইয়া নিয়া আইছে।’

অভিযোগ আছে এলাকার স্থানীয় ‘নেতাদের’ দিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে তাদের দিয়ে থানায় মিথ্যা বক্তব্য দিতে বাধ্য করা হয়েছে।

কোহিনূর বলেন, ‘এলাকার নেতা দিয়া আমাগো জোর কইরা বলাইছে, তোরা বল বজ্রপাতে মরছে। তোরা আমাগো কথা শুনলে তোগো আমরা দেখমু। এর লাইগা মামলা করা হয় নাই। থানায় সাইন দেওয়াইছে বজ্রপাতে মরছে কইয়া।’

তিনি বলেন, ‘আমরা কাইলকা (১১ জুন) বাড়িয়ালির বাসায় গেছি। সে বলে কী, যদি রাস্তাঘাটে এক্সিডেন্ট হইয়া মইরা যাইত! এইডা কী কতা?’

কথা হয় মৃত ঝুমুর আক্তার ঝুমার মা ময়না বেগমের সঙ্গেও।

থানায় ভুল বুঝিয়ে বক্তব্য দেয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘হ্যারা কইছে ক্যাচাল করলে তো আর মাইয়া পাইতি না। ভক্কোর-চক্কোর কত কথা। তহন আমার হুঁশ আছিল না। তাই সবার নাম চেহারা মনে নাই। তয় আমার লগে সেলিম, আলতাফ গেছিল, তাই ওগো নাম মনে আছে। হ্যারা না করে যেন আমরা কাউরে এই কথা না কই। এই এলাকার মতো এলাকা আমি আর দেহি নাই। এলাকা ভরা ন্যাতা। গরিবের বিচার নাই।’

তিন মৃত্যু বিদ্যুৎস্পর্শে, নেতারা বলালেন বজ্রপাত
হাতিরঝিল থানায় গিয়ে বস্তিবাসী লিখিত দিতে বাধ্য হন যে, সেই তিন মৃত্যু হয়েছে বজ্রপাতে

সাবিনা আক্তার পাখির মা কুলসুম বেগম বলেন, ‘পাখিরে কুমিল্লায় গ্রামের বাড়ি কবর দিছি। হ্যারা (মালিকের লোক) কইছে আমার মাইয়া বজ্রপাতে মইরা গেছে। তহন আমার হুঁশ-জ্ঞান কিচ্ছুই ছিল না। তহন আমারে কয় তোমার থানায় যাইতে হইব। তোমার মাইয়ারে মর্গে নিছে। কাইট্টা ছিঁড়া রাইখ্যা দিবো। থানায় গিয়া বজ্রপাতে মরছে কইলে তোমার মাইয়ারে কাটা-ছিঁড়া করব না।’

তিনি বলেন, ‘এলাকার নেতা-গোতারা কইছে কেস মামলা করলে কী হইব? কিছুই হইব না। তোমরা কইবা বজ্রপাতে মইরা গ্যাছে। এর পরে যা করন লাগে আমরা করমুনে।’

শিখিয়ে দেয়া কথা বলে আসলেও নিজের ভাষ্য নিজেই বিশ্বাস করেন না কুলসুম। তিনি বলেন, ‘এই বাসার কেউ কইতাছে না, বজ্রপাতে মারা গেছে। হ্যারা তিনজন কারেন্টে মরছে। বজ্রপাতে তিনজন মরব ক্যামনে? হ্যারা তো একলগে আছিল না। একজনরে ধরতে গিয়ে আরেকজন মরছে। আর ওই দিন এইহানে এমন কোনো বজ্রপাত হয় নাই।

‘বজ্রপাতে মরলে শুধু আমার মাইয়াডাই মরত। আমার মেয়ে আগে গেছে। আমার বুকটাই খালি হইত। বাকি দুইজন মরত না।

‘বজ্রপাত কি তিনবার পড়ছে? ওইহানে বজ্রপাতের চিহ্ন থাকত না? তিনবার বজ্রপাতে বাড়িডা বাড়ি থাকত?’

কী বলছে পুলিশ

নিহতদের স্বজনদের এই অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে হাতিরঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রশীদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কে বলেছে এই কথা? এটা সত্য না। এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা। ওরা থানায় লিখিত দিয়ে গেছে।’

কী লিখিত দিয়ে গেছে? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ওরা লিখিত দিয়ে গেছে বজ্রপাতে মৃত্যু হয়েছে। তারা কোনো পোস্টমর্টেম করবে না।’

নিহতের পরিবারকে ভুল বুঝিয়ে হুমকি দিয়ে মামলা করতে দেয়া হয়নি- এমন কথার পরিপ্রেক্ষিতে ওসি বলেন, ‘আপনি অভিযোগ পাইছেন সেটা আপনার ব্যাপার। তাদের বক্তব্য রেকর্ড করা আছে আমাদের কাছে। ওকে।’

বস্তিটির মালিক মারা গেছেন। তার ছেলে মাহফুজ আনাম মাসুদও কোনো ভয়ভীতি দেখানোর কথা অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘একটা ঘটনা ঘটার পরে অনেক কথাই উঠবে। এত বড় ঘটনায় আমরা এমনিতেই পেরেশান।’

যেভাবে ঘটেছিল সেই মর্মান্তিক ঘটনা

ওই দিনের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ঝুমার মা ময়না বেগম বলেন, ‘আমার মাইয়া খ্যালতাছিল। এই গেইট আগেই আরথিন (বিদ্যুতায়িত বুঝিয়েছেন) হইছে। সব পোলাপাইন ধরছে, হাতটা খালি ঝিন ঝিন করছে। ওই ঘরের ছেলেডা কইছে ঝুমা গেট ধরিস না, আরথিন হইছে। ওয় কয় খালু আমার সাহস আছে। এই কথা কইয়া গেট ধরা মাত্তর গেটের এই পাশের থেইকা ধইরা ওই পাশে লইয়া গেছে। ওই পাশে নিয়া আমার মাইয়ারে ফালায় নাই। ধইরাই রাখছে।

তিন মৃত্যু বিদ্যুৎস্পর্শে, নেতারা বলালেন বজ্রপাত
বস্তির বিদ্যুৎ সংযোগ নেয়া হয়েছে এই খুঁটি থেকে। সেটি যে দুর্বল ছিল, তা খালি চোখেই বোঝা যায়

‘ছোট মাইয়াডা পাখি যাইয়া কইতাছে, কিরে ঝুমা ঢং করোস? এই কথা কইয়া পানিতে পাড়া দেওনের লগে লগে মাইয়াডা পইড়া গেছে। বুড়া চাচায় ওগো বাঁচাইতে আইসা টান টান হইয়া শুইয়া পড়ছে।’

ময়না বেগম পোশাকশ্রমিক। ঝুমাও কাজ করত কারখানায়। তবে সেদিন অফিস বন্ধ থাকায় সে কাজে যায়নি।

ঘটনার দিন ফায়ার সার্ভিস যা বলছে

ঘটনার দিন ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার (খিলগাঁও) মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগেই বডি তিনটা হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। একটা মেয়ে প্রথমে বিদ্যুতায়িত হয়। তাকে ধরতে গিয়ে আরও দুজন আক্রান্ত হয়। বজ্রপাতের কারণেও বিদ্যুতায়িত হতে পারে। এখনই নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না।’

মেরামত হয়েছে বিদ্যুতের সেই সংযোগ

ঘটনার এক সপ্তাহ পর গত ১২ জুন বিদ্যুতের সেই দুর্বল সংযোগ মেরামত হয়েছে। বাড়িওয়ালার ছেলে নিজে উপস্থিত থেকে কাজ চলার সময় সেখানে ছিল নিউজবাংলাও।

বস্তির সামনেই একটি খুঁটি থেকে নেয়া হয়েছে বিদ্যুৎ-সংযোগ। সেই সংযোগটির তার অনেকটাই নড়বড়ে। ঝোড়ো হাওয়ায় এই তার প্রায়ই বাড়ি খেত লোহার ফটক আর টিনের চালে। তখন বিদ্যুতায়িত হয়ে যেত সেগুলো।

তিন মৃত্যু বিদ্যুৎস্পর্শে, নেতারা বলালেন বজ্রপাত
দুর্ঘটনার এক সপ্তাহ পর গত ১২ জুন বাড়ির মালিকের ছেলে উপস্থিত থেকে সংযোগ মেরামত করান

ওই এলাকায় খুঁটিগুলো থেকে এলোমেলোভাবে নেয়া হয়েছে বিদ্যুতের তার। খালি চোখেই বোঝা যায়, সেগুলো বিপজ্জনক।

মেইন সুইচ বস্তিতে নয়, পাশের বাসায়

পাশাপাশি দুটি টিনশেড বস্তি থাকায় পাশের বাসা থেকে লাইন টানা হয়েছে। বাসার মেইন সুইচ পাশের বাসায়।

নিহতদের পরিবার বলছে, এই বাসায় যদি মেইন সুইচ থাকত, তবে সেটা বন্ধ করে তাদের বাঁচানো সম্ভব হতো।

এই বাড়ির মালিক মারা গেছেন আগেই। বস্তি দুটি ম্যানেজারের মাধ্যমে দেখভাল করেন তার স্ত্রী। ঘটনার পর থেকে তিনি দুই বস্তিতে যাননি বলে আছে ক্ষোভ। তবে তার ছেলে বলছেন, তার মা অসুস্থ।

তবে ঝুমার মা ময়না বেগম বলেন, ‘ওনার ছেলে তো বলবেই অসুস্থ। সে টাকাওয়ালা মানুষ। আমরা গরিব মানুষ, একজনের কিছু হইলে আমরা দৌড়াইয়া যাই।

তিন মৃত্যু বিদ্যুৎস্পর্শে, নেতারা বলালেন বজ্রপাত
দুই বস্তির মেইন সুইচ সেখানে নেই। বস্তিবাসী বলছেন, এটি সেখান থাকলে বিদ্যুৎ বন্ধ করে তিন জনকে বাঁচানো যেত

‘তিনি যতই অসুস্থ হোক, তার বস্তির তিনডা মানুষ মাইরা গ্যাছে। আমার মাইয়ারে এলাকার মানুষ রাস্তার এই মাথা থেইকা ওই মাথা পর্যন্ত সিরিয়াল ধইরা দেখতে আইছে। ওই যে দেহন যায় বাসা। আর সে একবার দ্যাখতে আইতে পারে নাই।’

বজ্রপাত নিয়ে যে দাবি মালিকের ছেলের

বাড়িওয়ালার ছেলে মাহফুজ আনাম মাসুদের দাবি, বজ্রপাত হয়েছে টেলিভিশনের ডিশ সংযোগের তারে। আর সেই তার লাগানো ছিল বস্তির গেটে। আর ডিশের সেই তারের মাধ্যমে বিদ্যুতায়িত হয়েছে সবাই।

তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ওইখানে ছিল ডিশের লাইন। ডিশের লাইনের তার ছিল টিনের সঙ্গে লাগানো। ঠাডা (বজ্রপাত) পড়ছে ডিশের লাইনে। ওখানে লোক ছিল, তাই একটা অ্যাক্সিডেন্ট হয়ে গেছে।’

বিদ্যুতের লাইনে যদি সমস্যা না থাকবে, তাহলে মেরামত করেছেন কেন- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘ঘটনার পরে এই বাসায় ৫ দিন বিদ্যুৎ ছিল না। এই দেখেন তারে কিছু হয় নাই। সরকারি লোক বলছে লাইন চেঞ্জ করতে হবে। তারের কিছু না হলেও আমি নতুন করে আবার তার চেঞ্জ করে দিছি। আজকে সব কাজ শেষ করলাম।’

তিন মৃত্যু বিদ্যুৎস্পর্শে, নেতারা বলালেন বজ্রপাত
স্থানীয়রা বলছেন, কেবল ওই দুটি বস্তিতে নয়, সেই এলাকার অন্য বস্তিগুলোতেও বিদ্যুৎ সংযোগ দুর্বল

ডিশের তারে বজ্রপাত হলে তা নিয়ে বিদ্যুতায়িত হয়ে তিনজনের মৃত্যু সম্ভব কি না- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘পুলিশ এসে তো দেখছে। ইলেকট্রিশিয়ান দেখাইছি। কারেন্টে শর্ট এ রকম কিছু হয় না। বাজ যখন পড়ে, তখন তো কারেন্টে এমনেতেই টানে। বজ্র গেটের ওইখানে পড়ছে। আমি ছিলাম না, শোনা কথা। একজন ওইখানে আটকাইয়া গেছে। মুরব্বি ওই বাচ্চাকে ছুটাইতে গেছে। মুরব্বিকে ধরতে গেছে আরেকজন। এইভাবে তিনজনের মৃত্যু হয়।’

তাহলে তো তারা বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা গেছেন- এমন মন্তব্যের জবাবে তিনি বলেন, ‘না, না ভাইয়া আপনার বুঝতে হবে। (বজ্রপাত) তার হয়ে গেটে পড়ছে। তার পরে ওখানে ডিশের তারগুলো ছিল। বজ্রপাতে এমনিতেও ভোল্টেজ বেড়ে যায়।’

তড়িৎ প্রকৌশলী যা বলছেন

পুরো ঘটনা শুনে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের তড়িৎ প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক এ বি এম হারুন উর রশিদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বজ্রপাত যেকোনো জিনিসের মধ্য দিয়ে যেতে পারে। সেটি টেলিফোনের তারও হতে পারে। তবে সেটি হয় খুবই অল্প সময়ের জন্য। এক সেকেন্ড বা এ রকম সময়ের জন্য।

‘তবে তিনজন একসঙ্গে মারা যাওয়াটা অস্বাভাবিক ব্যাপার। একজন আরেকজনকে সেভ করতে গিয়ে মারা গেলে সেটি অন্য ব্যাপার। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা যেতে পারে।’

আরও পড়ুন:
তিন প্রাণহানির পেছনে ‘বাড়িওয়ালার অবহেলা’
বিদ্যুতায়িত হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু
ট্রাক্টর বিদ্যুতায়িত হয়ে চালকের মৃত্যু

মন্তব্য

আরও পড়ুন

অনুসন্ধান
407 killed on the road during Eid ul Fitr journey is more than last time
যাত্রী কল্যাণ সমিতির তথ্য

ঈদুল ফিতরের যাত্রায় সড়কে নিহত ৪০৭, গতবারের চেয়ে বেশি

ঈদুল ফিতরের যাত্রায় সড়কে নিহত ৪০৭, গতবারের চেয়ে বেশি দুর্ঘটনার শিকার বাস ও পিকআপ ভ্যান। ফাইল ছবি
যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘ঈদযাত্রা শুরুর দিন ৪ এপ্রিল থেকে ঈদ শেষে কর্মস্থলে ফেরা ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত বিগত ১৫ দিনে ৩৯৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪০৭ জন নিহত ও ১ হাজার ৩৯৮ জন আহত হয়েছে। বিগত ২০২৩ সালের ঈদুল ফিতরে ৩০৪টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩২৮ জন নিহত ও ৫৬৫ জন আহত হয়েছিল। বিগত বছরের সঙ্গে তুলনা করলে এবারের ঈদে সড়ক দুর্ঘটনা ৩১ দশমিক ২৫ শতাংশ, প্রাণহানি ২৪ দশমিক ০৮ শতাংশ, আহত ১৪৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ বেড়েছে।’

ঈদুল ফিতরকেন্দ্রিক যাত্রায় দেশের সড়ক-মহাসড়কে ৩৯৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪০৭ জন নিহত ও এক হাজার ৩৯৮ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।

যাত্রীদের স্বার্থ সংরক্ষণ নিয়ে কাজ করা সংস্থাটির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী শনিবার সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য তুলে ধরেন।

ঈদযাত্রায় অন্যান্য পথে দুর্ঘটনার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘একই সময়ে রেলপথে ১৮টি দুর্ঘটনায় ২৪ জন নিহত, ২১ জন আহত হয়েছে। নৌপথে দুটি দুর্ঘটনায় সাতজন নিহত, পাঁচজন আহত হয়েছে।

‘সড়ক, রেল ও নৌপথে সর্বমোট ৪১৯টি দুর্ঘটনায় ৪৩৮ জন নিহত ও ১ হাজার ৪২৪ জন আহত হয়েছে।’

যাত্রী কল্যাণ সমিতির সমিতির সড়ক দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে মোজাম্মেল বলেন, ‘প্রতি বছর ঈদকেন্দ্রিক সড়ক দুর্ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে যাওয়ায় সংগঠনটি ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনা, অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ও যাত্রী হয়রানীর বিষয়টি দীর্ঘদিন যাবত পর্যবেক্ষণ করে আসছে। পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, এবারের ঈদে লম্বা ছুটি থাকায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২০ শতাংশ মানুষের বেশি যাতায়াত হয়েছে। বর্তমান সরকারের বিগত ১৫ বছরে ধারাবাহিক উন্নয়নের ফলে দেশের সড়ক-মহাসড়কের অবস্থা আগের তুলনায় ভালো থাকায় যানবাহনে গতি বেড়েছে।

‘দেশের সবকটি সড়ক-মহাসড়কের পাশাপাশি পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেলের অবাধ চলাচলের কারণে মোট যাত্রীর সাত দশমিক পাঁচ শতাংশ মোটরসাইকেলে যাতায়াত করেছে। সরকারের বিভিন্ন নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মাঠে থাকলেও অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য ও পথে পথে যাত্রী হয়রানি চরমে উঠেছিল। গণপরিবহনগুলোতে ঈদকে কেন্দ্র করে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্যর কারণে বাসের ছাদে, ট্রেনের ছাদে, খোলা ট্রাকে, পণ্যবাহী পরিবহনে যাত্রী হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দরিদ্র লোকজনের ঈদে বাড়ি যেতে হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ঈদযাত্রা শুরুর দিন ৪ এপ্রিল থেকে ঈদ শেষে কর্মস্থলে ফেরা ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত বিগত ১৫ দিনে ৩৯৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪০৭ জন নিহত ও ১ হাজার ৩৯৮ জন আহত হয়েছে। বিগত ২০২৩ সালের ঈদুল ফিতরে ৩০৪টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩২৮ জন নিহত ও ৫৬৫ জন আহত হয়েছিল।

‘বিগত বছরের সঙ্গে তুলনা করলে এবারের ঈদে সড়ক দুর্ঘটনা ৩১ দশমিক ২৫ শতাংশ, প্রাণহানি ২৪ দশমিক ০৮ শতাংশ, আহত ১৪৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ বেড়েছে।’

আরও পড়ুন:
ঝালকাঠিতে দুর্ঘটনা: স্বামী হারিয়ে দিশাহারা হেনারা
মোটরসাইকেলে বাসের ধাক্কায় প্রাণ গেল মামা-ভাগ্নের 
ঝালকাঠিতে সড়ক দুর্ঘটনা: নিহত প্রত্যেকের পরিবার পাবে ৫ লাখ টাকা
সড়কে প্রাণ গেল জনপ্রিয় শিল্পী পাগল হাসানের
মার্চে ৫৫২ সড়ক দুর্ঘটনায় ৫৬৫ জন নিহত

মন্তব্য

অনুসন্ধান
Childrens hospital fire investigation committee sick people are crying on the outside floor in the heat

শিশু হাসপাতালের আগুন তদন্তে কমিটি, বাইরের ফ্লোরে গরমে কাঁদছে অসুস্থরা

শিশু হাসপাতালের আগুন তদন্তে কমিটি, বাইরের ফ্লোরে গরমে কাঁদছে অসুস্থরা আগুনের সময় হুড়োহুড়ি করে অসুস্থ শিশুদের নিয়ে বেরিয়ে আসেন অনেকে। ছবি: নিউজবাংলা
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, আগুন থেকে বাঁচতে ছোটাছুটি করে যে যেভাবে পেরেছেন সেভাবেই তাদের সন্তানদের নিয়ে হাসপাতালের বাইরের ফ্লোরে অবস্থান নিয়েছেন। প্রচণ্ড তাপপ্রবাহের কারণে এমনিতেই বাইরে অসহনীয় গরম। গরম সহ্য করতে না পেরে শিশুরা কান্নাকাটি করছে।

রাজধানীর আগারগাঁওয়ের বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটের পঞ্চম তলায় শিশু হৃদরোগ (কার্ডিয়াক) বিভাগের আইসিইউতে (নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্র) লাগা আগুন পুরোপুরি নিভিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।

শুক্রবার দুপুর দেড়টার কিছু সময় পর ওই আগুন লাগে। পরে ফায়ার সার্ভিসের পাঁচটি ইউনিট প্রায় এক এক ঘণ্টার চেষ্টার পর ২টা ৪০ মিনিটে আগুন নেভাতে সক্ষম হয়। এ ঘটনায় ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, আগুন থেকে বাঁচতে ছোটাছুটি করে যে যেভাবে পেরেছেন সেভাবেই তাদের সন্তানদের নিয়ে হাসপাতালের বাইরের ফ্লোরে অবস্থান নিয়েছেন। প্রচণ্ড তাপপ্রবাহের কারণে এমনিতেই বাইরে অসহনীয় গরম। গরম সহ্য করতে না পেরে শিশুরা কান্নাকাটি করছে।

ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরের গণমাধ্যম কর্মকর্তা তালহা বিন জসিম জানান, আগুন লাগার সংবাদ পেয়ে মোহাম্মদপুর ফায়ার স্টেশনের তিনটি ইউনিট, সিদ্দিক বাজার থেকে একটি ইউনিট, তেজগাঁও থেকে একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। ২টা ৪০ মিনিটে আগুন পুরো নিভিয়ে ফেলা হয়।

তবে বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটে লাগা এই আগুনে রোগীদের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বলে জানিয়েছেন হাসপাতালটির পরিচালক অধ্যাপক ডা. জাহাঙ্গীর আলম।

তিনি বলেন, রোগীদের সবাইকে নিচে নামিয়ে আনা হয়েচে। ইউসিইউতে ১৭ জন রোগী ছিলেন আমরা নামিয়ে এনেছি। কারো কোনো ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।

তিনি বলেন, হাসপাতালের বি ব্লকের ৫ তলার কার্ডিয়াক বিভাগের আইসিইউতে আগুন লেগেছে। আগুনের চেয়ে ধোঁয়া একটু বেশি ছড়িয়েছে। ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে আগুন নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে।

আগুনের সূত্রপাত কীভাবে করা হলো এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এখনও বিস্তারিত কিছু বলতে পারছি না। তবে আশঙ্কা করছি এসি থেকে আগুন লেগে থাকতে পারে।

পরে এক সংবাদ সম্মেলনে শিশু হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. জাহাঙ্গীর আলম জানান, কার্ডিয়াক বিভাগের আইসিইউতে লাগা আগুনের ঘটনায় পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির পাঁচ সদস্যের মধ্যে কার্ডিয়াক আইসিইউ বিভাগের প্রধানকে আহ্বায়ক করা হয়েছে।

এ ছাড়া কমিটিতে একজন মেইনটেইন্যান্স ইঞ্জিনিয়ার, ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার, ওয়ার্ড মাস্টার, একজন নার্স ও ফায়ার সার্ভিসের প্রতিনিধি রয়েছেন। তারা তিন দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবেন।

এদিকে বিকেলে দেখা যায়, আগুন লাগার পর হাসপাপতালের ৫ তলা ও ৪ তলার পুরো ধোঁয়ায় ভরে গেছে। এ সময় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগী ও তাদের স্বজনদের মধ্যে। আগুন থেকে বাঁচতে ছোটাছুটি করে যে যেভাবে পেরেছেন সেভাবেই তাদের সন্তানদের নিয়ে হাসপাতালের বাইরের ফ্লোরে অবস্থান নেন।

প্রচণ্ড তাপপ্রবাহের কারণে এমনিতেই বাইরে অসহনীয় গরম। গরম সহ্য করতে না পেরে শিশুরা কান্নাকাটি করছে। ওপরে সবকিছু কখন ঠিক হবে তা জানেন না এ রোগী ও স্বজনরা। রোগীর অভিভাবক ও স্বজনরা আশঙ্কা করছেন, এমন অবস্থা চলতে থাকলে তাদের বাচ্চারা আরও অসুস্থ হয়ে পড়বে।

প্রচণ্ড জ্বর, সর্দি ও ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে ৭ দিন আগে শিশু হাসপাতাল আইসিইউতে ভর্তি হয় পাঁচ মাসের শিশু রাইয়ান। আগুন লাগার পর শিশুটির মা আতঙ্কে হুড়োহুড়ি করে শিশুটিকে নিয়ে নিচে নামে আসেন। বাচ্চাকে নিয়ে এই অসহনীয় গরমে অবস্থান নিয়েছেন হাসপাতালের বাইরে।

কয়েকজন শিশুর অভিভাবক জানান, পাঁচতলার আইসিইউতে যেসব বাচ্চা ছিল তাদের সমস্যা হচ্ছে। অনেক বাচ্চাকে অক্সিজেন দেয়া হচ্ছিল। তাদের অক্সিজেন ছাড়া নিচে নামানো হয়। তাদের প্রত্যেকের অবস্থা খুবই নাজুক ছিল।

মন্তব্য

অনুসন্ধান
Middlemen should not take advantage Agriculture Minister

মধ্যস্বত্বভোগীরা যেন সুবিধা নিতে না পারে: কৃষিমন্ত্রী

মধ্যস্বত্বভোগীরা যেন সুবিধা নিতে না পারে: কৃষিমন্ত্রী বোরো ধান কাটা উৎসবে কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুস শহীদ। ছবি: নিউজবাংলা
মন্ত্রী বলেন, কৃষকের উৎপাদিত ফসলের সঠিক মূল্য দিতে চায় সরকার। সরকারের সীমাবদ্ধতা রয়েছে। সুনামগঞ্জ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা। এখানে বন্যা দুর্যোগ বেশি হয়। খড়াও হয়। জেলা প্রশাসনকে বলেছি, কৃষকদের ফসলের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে ব্যবস্থা নিতে।

মধ্যসত্ত্বভোগীরা যেন সুবিধা নিতে না পারে, সিন্ডিকেট করে কৃষকদের যেন বিপদে ফেলতে না পারে সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুস শহীদ।

শুক্রবার সকালে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার দেখার হাওরে বোরো ধান কাটা উৎসবে মন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, মধ্যস্বত্বভোগীরা যেন সুবিধা নিতে না পারে, সিন্ডিকেট করে কৃষকদের যেন বিপদে ফেলতে না পারে সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা সজাগ থাকলে কৃষকরা বঞ্চিত হবেন না।

মন্ত্রী বলেন, কৃষকের উৎপাদিত ফসলের সঠিক মূল্য দিতে চায় সরকার। সরকারের সীমাবদ্ধতা রয়েছে। সুনামগঞ্জ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা। এখানে বন্যা দুর্যোগ বেশি হয়। খড়াও হয়। জেলা প্রশাসনকে বলেছি, কৃষকদের ফসলের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে ব্যবস্থা নিতে।

তিনি বলেন, কৃষিকে সরকার সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ। কৃষকের ধানের মূল্য নির্ধারণ করতে আগামী পরশু মিটিং করব। দাম নির্ধারণ করে সরকারের কাছে প্রস্তাবনা পাঠাব।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান, সুনামগঞ্জ ৪ আসনের সংসদ সদস্য ড. মোহাম্মদ সাদিক, ১ আসনের সংসদ সদস্য রনজিত চন্দ্র সরকার, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী।

মন্তব্য

অনুসন্ধান
The fire at the Childrens Hospital was extinguished after an hour

প্রায় এক ঘণ্টা পর নিভল শিশু হাসপাতালের আগুন

প্রায় এক ঘণ্টা পর নিভল শিশু হাসপাতালের আগুন ফায়ার সার্ভিস বেলা একটা ৪৭ মিনিটে হাসপাতালের শিশু হৃদরোগ কেন্দ্রে আগুন ধরার খবর পায়। ছবি: নিউজবাংলা
ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া সেল জানায়, শুক্রবার বেলা দুইটা ৩৯ মিনিটে আগুন নেভানো হয়।

রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটে ধরা আগুন প্রায় এক ঘণ্টা পর নিভিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।

বাহিনীর মিডিয়া সেল জানায়, শুক্রবার বেলা দুইটা ৩৯ মিনিটে আগুন নেভানো হয়।

এর আগে ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণকক্ষের কর্মকর্তা লিমা খানম নিউজবাংলাকে জানান, বেলা একটা ৪৭ মিনিটে হাসপাতালের শিশু হৃদরোগ কেন্দ্রে আগুন ধরার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। এর পরিপ্রেক্ষিতে বাহিনীর পাঁচটি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজ করে।

আগুনে হতাহতের কোনো কোনো খবর পাওয়া যায়নি বলে জানান এ কর্মকর্তা।

তিনি আরও জানান, আগুন ধরার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির বিষয় তদন্তের পর বলা যাবে।

এদিকে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক বার্তায় জানায়, আগুন নিয়ন্ত্রণে যোগ দেয় নৌবাহিনী।

আরও পড়ুন:
এক ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে ফিরিঙ্গি বাজার বস্তির আগুন
সিলেটের কুমারগাঁও বিদ্যুৎকেন্দ্রে অগ্নিকাণ্ড, সরবরাহ বিঘ্নিত
হাজারীবাগে বস্তিতে অগ্নিকাণ্ড
চট্টগ্রামে এস আলম অয়েল মিলের আগুন নিয়ন্ত্রণে
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে প্রাইভেট কারে আগুন

মন্তব্য

অনুসন্ধান
A fire broke out at the capitals childrens hospital

রাজধানীর শিশু হাসপাতালে আগুন

রাজধানীর শিশু হাসপাতালে আগুন বাংলাদেশ শিশু হাসপাতালের আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের তৎপরতা। ছবি: ফায়ার সার্ভিস
ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণকক্ষের ডিউটি অফিসার লিমা খানম দুপুরে নিউজবাংলাকে জানান, বেলা একটা ৪৭ মিনিটে আগুন ধরার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। এর পরিপ্রেক্ষিতে বাহিনীর পাঁচটি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজ করছে।

রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটের কার্ডিওলজি বিভাগে শুক্রবার আগুন ধরেছে।

ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণকক্ষের ডিউটি অফিসার লিমা খানম দুপুরে নিউজবাংলাকে জানান, বেলা একটা ৪৭ মিনিটে আগুন ধরার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। এর পরিপ্রেক্ষিতে বাহিনীর পাঁচটি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজ করছে।

আগুনে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন এ কর্মকর্তা।

তিনি আরও জানান, আগুন ধরার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির বিষয় তদন্তের পর বলা যাবে।

আরও পড়ুন:
সিলেটের কুমারগাঁও বিদ্যুৎকেন্দ্রে অগ্নিকাণ্ড, সরবরাহ বিঘ্নিত
হাজারীবাগে বস্তিতে অগ্নিকাণ্ড
চট্টগ্রামে এস আলম অয়েল মিলের আগুন নিয়ন্ত্রণে
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে প্রাইভেট কারে আগুন
হবিগঞ্জে প্রাণের চিপস ফ্যাক্টরিতে আগুন, নিহত ১

মন্তব্য

অনুসন্ধান
Panthkunj will be an aesthetic garden before July Mayor Tapas

‘পান্থকুঞ্জ জুলাইয়ের আগেই হবে নান্দনিক উদ্যান’

‘পান্থকুঞ্জ জুলাইয়ের আগেই হবে নান্দনিক উদ্যান’ সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। ছবি: নিউজবাংলা
মেয়র তাপস বলেন, পান্থকুঞ্জ উদ্যান এই এলাকার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি উদ্যান। এটা উন্নয়নের জন্য ২০১৭ সালে মেগা প্রকল্পের আওতায় উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক কারণে ঢাকা লিমিটেড এক্সপ্রেসওয়ে এদিক দিয়ে নওয়ার একটি উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। ফলে এই পার্কের উন্নয়ন কাজটা বন্ধ হয়ে যায়।

আসন্ন জুলাইয়ের আগেই পান্থকুঞ্জকে নান্দনিক উদ্যানে পরিণত করা হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।

বুধবার সকালে নগরীতে পান্থকুঞ্জ পার্কের অভ্যন্তরে পান্থপথ বক্স কালভার্টের পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে মেয়র এ কথা জানান।

মেয়র তাপস বলেন, পান্থকুঞ্জ উদ্যান এই এলাকার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি উদ্যান। এটা উন্নয়নের জন্য ২০১৭ সালে মেগা প্রকল্পের আওতায় উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক কারণে ঢাকা লিমিটেড এক্সপ্রেসওয়ে এদিক দিয়ে নওয়ার একটি উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। ফলে এই পার্কের উন্নয়ন কাজটা বন্ধ হয়ে যায়।

তিনি বলেন, আমি দায়িত্ব নেওয়ার পরে তাদের সঙ্গে বিভিন্নভাবে আলোচনা করেছি, দেন-দরবার করেছি। এর ফলশ্রুতিতে তারা সুনির্দিষ্ট জায়গায় কাজ করবে। বাকি জায়গা আমাদেরকে ছেড়ে দিয়েছে। সেই জায়গায় আমরাই কাজ শুরু করেছি। বর্তমানে এটার অবকাঠামো উন্নয়ন চলছে।

মেয়র আরও বলেন, আমরা ঢাকাবাসীকে একটি নান্দনিক উদ্যান উপহার দিতে চাই। যদিও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজের কারণে উদ্যানের বড় একটা অংশ তাদের কাছে চলে যাবে। তারপরও যতটুকু রক্ষা করতে পেরেছি তা ঢাকাবাসীর জন্য অচিরেই উন্মুক্ত করে দিতে পারব। পার্কের উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে। জুলাইয়ের আগে পান্থকুঞ্জকে একটি নান্দনিক উদ্যানে পরিণত করা হবে।

নিউমার্কেট এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনে নতুন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে জানিয়ে মেয়র তাপস বলেন, গত বছর কয়েকটি জায়গায় জলাবদ্ধতা হয়েছে বিশেষ করে নিউমার্কেটের সামনে ও শান্তিনগরে। যেসব কারণে পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল আমরা সেগুলো পরিষ্কার করেছি। আশা করি এবার আর জলাবদ্ধ থাকবে না। নিউমার্কেট এলাকার জন্য নতুন প্রকল্প নিয়েছি।

তিনি বলেন, এর মূল কারণ হচ্ছে পিলখানা ভেতর দিয়ে আগে যে পানি প্রবাহ প্রবাহের নর্দমা ছিল সেগুলো ২০০৯ সালে বন্ধ হয়ে যায়। এজন্য গত বছর সেখানে বড় ধরনের জলবদ্ধতা হয়েছে। আমরা তাদের সঙ্গে আলাপ করেছি এবং সম্মতি পেয়েছি। আমরা পিলখানার ভেতর দিয়ে পানি প্রবাহের বড় নর্দমা করছি। এটা করতে পারলে ওই এলাকায় আর জলাবদ্ধতা থাকবে না। এভাবে প্রত্যেকটা এলাকায় বিচার-বিশ্লেষণ ও পর্যালোচনা করে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

ঢাকায় বিচ্ছিন্ন কয়েকটি জায়গা ছাড়া তেমন কোন জায়গায় এখন দীর্ঘ সময় জলবদ্ধতা থাকে না উল্লেখ করে মেয়র বলেন, প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমের আগে সূচি অনুযায়ী বক্স কালভার্ট, খাল ও নর্দমাগুলো পরিষ্কার করে থাকি। কারণ যাতে করে বর্ষার সময় পানি প্রবাহ স্বাভাবিক থাকে। এছাড়া ঢাকা শহরে আমরা ব্যাপকভাবে নর্দমা অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ চলমান রেখেছি।

পরে মেয়র সায়েদাবাদ টার্মিনাল সংলগ্ন সায়েদাবাদ সুপার মার্কেট, গেন্ডারিয়ার জহির রায়হান সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান কেন্দ্র পাঠাগার ও ওয়ারীর তাজউদ্দীন স্মৃতি পাঠাগার পরিদর্শন করেন।

মন্তব্য

অনুসন্ধান
A coach of Yamuna Express fell in Tejgaon

তেজগাঁওয়ে পড়ে গেছে যমুনা এক্সপ্রেসের বগি

তেজগাঁওয়ে পড়ে গেছে যমুনা এক্সপ্রেসের বগি ফাইল ছবি
দুর্ঘটনার পর ঢাকাগামী ট্রেন আটকে যায়। এ ছাড়া কারওয়ান বাজার রেলক্রসিং এবং মগবাজারে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।

রাজধানীর তেজগাঁও এলাকায় যমুনা এক্সপ্রেস ট্রেনের একটি বগি লাইনচ্যুত হয়েছে।

বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে জামালপুর থেকে ঢাকায় আসার পথে এ দুর্ঘটনায় পড়ে ট্রেনটি।

কমলাপুর রেলওয়ে থানার পরিদর্শক ফেরদৌস আহমেদ বিশ্বাস এসব বিষয় নিশ্চিত করেছেন।

দুর্ঘটনার পর ঢাকাগামী ট্রেন আটকে যায়। এ ছাড়া কারওয়ান বাজার রেলক্রসিং এবং মগবাজারে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।

ফেরদৌস আহমেদ জানান, দ্রুতই উদ্ধারকাজ শুরু হয়। সকাল ১০টার দিকে লাইনচ্যুত বগি ছাড়াই ট্রেনটি গন্তব্যের উদ্দেশে যাত্রা করে।

মন্তব্য

p
উপরে