× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

অনুসন্ধান
তিন মৃত্যু বিদ্যুৎস্পর্শে নেতারা বলালেন বজ্রপাত
google_news print-icon

তিন মৃত্যু বিদ্যুৎস্পর্শে, নেতারা বলালেন বজ্রপাত

তিন-মৃত্যু-বিদ্যুৎস্পর্শে-নেতারা-বলালেন-বজ্রপাত
মেয়ে হারানো ময়না বেগম কাঁদতে কাঁদতে বলছিলেন কীভাবে ঘটেছিল মর্মান্তিক সেই তিন মৃত্যু। ছবি: সাইফুল ইসলাম
‘এলাকার নেতা দিয়া আমাগো জোর কইরা বলাইছে, তোরা বল বজ্রপাতে মরছে। তোরা আমাগো কথা শুনলে তোগো আমরা দেখমু। এর লাইগা মামলা করা হয় নাই। থানায় সাইন দেওয়াইছে বজ্রপাতে মরছে কইয়া। বাড়িয়ালির বাসায় গেছি। সে বলে কী, যদি রাস্তাঘাটে এক্সিডেন্ট হইয়া মইরা যাইত! এইডা কী কতা?’

রাজধানীতে একটি বস্তির ফটক বিদ্যুতায়িত হয়ে তিনজনের মৃত্যু হলেও সেটি বজ্রপাতের কারণে হয়েছে বলে চাপ দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। আর চাপের মুখে তিনটি পরিবারই থানায় গিয়ে লিখিত দিয়ে এসেছে যে তাদের মৃত্যু হয়েছে প্রাকৃতিক দুর্যোগে।

তিনটি পরিবারের সঙ্গেই কথা হয়েছে নিউজবাংলার। তারা জানান, তাদের তিনটি কথা বলা হয়েছে এই লিখিত দিতে। প্রথমত, মামলা করে কোনো লাভ হবে না, বিচার পাবে না; দ্বিতীয়ত, মামলা করলে মরদেহ কাটাছেঁড়া করা হবে; তৃতীয়ত, তাদের কথা শুনলে পরে দেখা হবে।

এই পরিবারগুলো থানায় যাওয়ার পর পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখার চেষ্টা না করেই লিখিত নিয়েছে।

আবার একজন শুরুতে শিখিয়ে দেয়া কথা বলতে অস্বীকার করলে থানাতেই তাকে নিয়ে টানাহেঁচড়া করা হয়।

যারা বজ্রপাত বলতে বাধ্য হয়েছেন, তারা জানিয়েছেন, ঘটনাটি ঘটিয়েছেন স্থানীয় নেতারা। তবে তারা কারা, সেটি বলতে পারেননি।

অভিযোগ উঠেছে, বিদ্যুতায়িত হয়ে মৃত্যুর বিষয়টি প্রমাণ হলে অবহেলাজনিত মৃত্যুর অভিযোগ আনা যায় বলে প্রাকৃতিক দুর্যোগের বিষয়টি সামনে আনা হয়েছে।

গত ৫ জুন মালিবাগ চৌধুরীপাড়ার সোনামিয়া গলিতে একটি বস্তিতে ১০ বছর বয়সী সাবিনা আক্তার পাখি, ১২ বছর বয়সী ঝুমুর আক্তার ঝুমা ও ৬৫ বছর বয়সী আব্দুল হকের মৃত্যু হয়।

বস্তিবাসী জানালেন, গেটের পাশে বিদ্যুতের একটি খুঁটি। সেখানে বিদ্যুতের তারগুলো ছিল দুর্বল। বাতাস এলে তার লোহার ফটক ও টিনের চালে প্রায়ই বাড়ি খায়। এর আগেও কয়েকবার ঝড়-বৃষ্টিতে এ ঘটনা ঘটেছে।

সেদিন প্রাণ হারানো নয় বছরের শিশু ঝুমুর আক্তার ঝুমার মা ময়না বেগম ঘটনার যে বর্ণনা দেন, তা হলো ‘যহন আমার মাইয়া গেট ধরছে, তহন বইয়া পইড়া এক্কেবারে জবান বন্ধ হইয়া গ্যাছে গা। আরেকটা যে বাচ্চা মরছে ঢাকা মেডিক্যালে, হ্যায় আমার মাইয়ারে কইছে ঢং করোস। কইয়া একটা লাত্থি মারছে। লগে লগে যাইয়া আমার মাইয়ার উপরে পড়ছে। আবার হ্যারে আবার বাঁচাইতে আসছে যে বুইড়া কাকা, হ্যারো বাঁচাইতে গিয়ে হ্যায়ও তাগো উপড়ে পইড়া রইছে।’

তিনজনের মৃত্যু, তবু কোনো মামলা হয়নি। ভুক্তভোগীরাও এ বিষয়ে উদ্যোগ নেননি, আর পুলিশও তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়নি।

কী বলছে ভুক্তভোগী পরিবারগুলো

নিহতদের স্বজনেরা বলছেন, তাদের নানা ভয়ভীতি দেখিয়ে থানায় নিয়ে বলানো হয়েছে এটা বজ্রপাতে মৃত্যু। তবে বিদ্যুতায়িত হয়ে এই তিনজনের মৃত্যু হয়েছে।

আরও একটি বিষয় কাজে লাগানো হয়েছে। স্বজনদের বলা হয়েছে, মামলা হলে ময়নাতদন্ত হবে আর মরদেহ কাটাছেঁড়া করা হবে। আর সেটাতে রাজি ছিলেন না অভিভাবকরা।

পুলিশ বলছে, মৃতদের স্বজনরা থানায় এসে লিখিত বক্তব্য দিয়েছে যে, বজ্রপাতে তাদের মৃত্যু হয়েছে এবং তারা মরদেহের ময়নাতদন্ত করতে চান না।

সেদিন মারা যাওয়া আব্দুল হকের তিন মেয়ে ও ছোট একটা ছেলে রয়েছে। তিনি ছিলেন বাসার দারোয়ান।

তার মেয়ে কোহিনূর বেগম রাজি ছিলেন না এই ভাষ্য দিতে।

তিন মৃত্যু বিদ্যুৎস্পর্শে, নেতারা বলালেন বজ্রপাত
দুর্ঘটনার দিন আশেপাশের মানুষ ভিড় করে বস্তিতে। তবে যাননি বাড়িওয়ালি

নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘আমার আব্বায় মইরা গেছে। আমারে থানায় লইয়া গেছে। আমারে ডর দেহাইয়া কয় তোমার আব্বারে কাইট্টা ছিঁড়া ফালাইব। আমার আব্বায় মইরা গেছে, ওহন আমি কমু যে বজ্রপাতে মইরা গেছে? প্রথমে থানার মধ্যে কইয়ালাইছি কারেন্টে মরছে। পরে আমারে টাইনা-হ্যাসরাইয়া নিয়া আইছে।’

অভিযোগ আছে এলাকার স্থানীয় ‘নেতাদের’ দিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে তাদের দিয়ে থানায় মিথ্যা বক্তব্য দিতে বাধ্য করা হয়েছে।

কোহিনূর বলেন, ‘এলাকার নেতা দিয়া আমাগো জোর কইরা বলাইছে, তোরা বল বজ্রপাতে মরছে। তোরা আমাগো কথা শুনলে তোগো আমরা দেখমু। এর লাইগা মামলা করা হয় নাই। থানায় সাইন দেওয়াইছে বজ্রপাতে মরছে কইয়া।’

তিনি বলেন, ‘আমরা কাইলকা (১১ জুন) বাড়িয়ালির বাসায় গেছি। সে বলে কী, যদি রাস্তাঘাটে এক্সিডেন্ট হইয়া মইরা যাইত! এইডা কী কতা?’

কথা হয় মৃত ঝুমুর আক্তার ঝুমার মা ময়না বেগমের সঙ্গেও।

থানায় ভুল বুঝিয়ে বক্তব্য দেয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘হ্যারা কইছে ক্যাচাল করলে তো আর মাইয়া পাইতি না। ভক্কোর-চক্কোর কত কথা। তহন আমার হুঁশ আছিল না। তাই সবার নাম চেহারা মনে নাই। তয় আমার লগে সেলিম, আলতাফ গেছিল, তাই ওগো নাম মনে আছে। হ্যারা না করে যেন আমরা কাউরে এই কথা না কই। এই এলাকার মতো এলাকা আমি আর দেহি নাই। এলাকা ভরা ন্যাতা। গরিবের বিচার নাই।’

তিন মৃত্যু বিদ্যুৎস্পর্শে, নেতারা বলালেন বজ্রপাত
হাতিরঝিল থানায় গিয়ে বস্তিবাসী লিখিত দিতে বাধ্য হন যে, সেই তিন মৃত্যু হয়েছে বজ্রপাতে

সাবিনা আক্তার পাখির মা কুলসুম বেগম বলেন, ‘পাখিরে কুমিল্লায় গ্রামের বাড়ি কবর দিছি। হ্যারা (মালিকের লোক) কইছে আমার মাইয়া বজ্রপাতে মইরা গেছে। তহন আমার হুঁশ-জ্ঞান কিচ্ছুই ছিল না। তহন আমারে কয় তোমার থানায় যাইতে হইব। তোমার মাইয়ারে মর্গে নিছে। কাইট্টা ছিঁড়া রাইখ্যা দিবো। থানায় গিয়া বজ্রপাতে মরছে কইলে তোমার মাইয়ারে কাটা-ছিঁড়া করব না।’

তিনি বলেন, ‘এলাকার নেতা-গোতারা কইছে কেস মামলা করলে কী হইব? কিছুই হইব না। তোমরা কইবা বজ্রপাতে মইরা গ্যাছে। এর পরে যা করন লাগে আমরা করমুনে।’

শিখিয়ে দেয়া কথা বলে আসলেও নিজের ভাষ্য নিজেই বিশ্বাস করেন না কুলসুম। তিনি বলেন, ‘এই বাসার কেউ কইতাছে না, বজ্রপাতে মারা গেছে। হ্যারা তিনজন কারেন্টে মরছে। বজ্রপাতে তিনজন মরব ক্যামনে? হ্যারা তো একলগে আছিল না। একজনরে ধরতে গিয়ে আরেকজন মরছে। আর ওই দিন এইহানে এমন কোনো বজ্রপাত হয় নাই।

‘বজ্রপাতে মরলে শুধু আমার মাইয়াডাই মরত। আমার মেয়ে আগে গেছে। আমার বুকটাই খালি হইত। বাকি দুইজন মরত না।

‘বজ্রপাত কি তিনবার পড়ছে? ওইহানে বজ্রপাতের চিহ্ন থাকত না? তিনবার বজ্রপাতে বাড়িডা বাড়ি থাকত?’

কী বলছে পুলিশ

নিহতদের স্বজনদের এই অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে হাতিরঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রশীদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কে বলেছে এই কথা? এটা সত্য না। এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা। ওরা থানায় লিখিত দিয়ে গেছে।’

কী লিখিত দিয়ে গেছে? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ওরা লিখিত দিয়ে গেছে বজ্রপাতে মৃত্যু হয়েছে। তারা কোনো পোস্টমর্টেম করবে না।’

নিহতের পরিবারকে ভুল বুঝিয়ে হুমকি দিয়ে মামলা করতে দেয়া হয়নি- এমন কথার পরিপ্রেক্ষিতে ওসি বলেন, ‘আপনি অভিযোগ পাইছেন সেটা আপনার ব্যাপার। তাদের বক্তব্য রেকর্ড করা আছে আমাদের কাছে। ওকে।’

বস্তিটির মালিক মারা গেছেন। তার ছেলে মাহফুজ আনাম মাসুদও কোনো ভয়ভীতি দেখানোর কথা অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘একটা ঘটনা ঘটার পরে অনেক কথাই উঠবে। এত বড় ঘটনায় আমরা এমনিতেই পেরেশান।’

যেভাবে ঘটেছিল সেই মর্মান্তিক ঘটনা

ওই দিনের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ঝুমার মা ময়না বেগম বলেন, ‘আমার মাইয়া খ্যালতাছিল। এই গেইট আগেই আরথিন (বিদ্যুতায়িত বুঝিয়েছেন) হইছে। সব পোলাপাইন ধরছে, হাতটা খালি ঝিন ঝিন করছে। ওই ঘরের ছেলেডা কইছে ঝুমা গেট ধরিস না, আরথিন হইছে। ওয় কয় খালু আমার সাহস আছে। এই কথা কইয়া গেট ধরা মাত্তর গেটের এই পাশের থেইকা ধইরা ওই পাশে লইয়া গেছে। ওই পাশে নিয়া আমার মাইয়ারে ফালায় নাই। ধইরাই রাখছে।

তিন মৃত্যু বিদ্যুৎস্পর্শে, নেতারা বলালেন বজ্রপাত
বস্তির বিদ্যুৎ সংযোগ নেয়া হয়েছে এই খুঁটি থেকে। সেটি যে দুর্বল ছিল, তা খালি চোখেই বোঝা যায়

‘ছোট মাইয়াডা পাখি যাইয়া কইতাছে, কিরে ঝুমা ঢং করোস? এই কথা কইয়া পানিতে পাড়া দেওনের লগে লগে মাইয়াডা পইড়া গেছে। বুড়া চাচায় ওগো বাঁচাইতে আইসা টান টান হইয়া শুইয়া পড়ছে।’

ময়না বেগম পোশাকশ্রমিক। ঝুমাও কাজ করত কারখানায়। তবে সেদিন অফিস বন্ধ থাকায় সে কাজে যায়নি।

ঘটনার দিন ফায়ার সার্ভিস যা বলছে

ঘটনার দিন ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার (খিলগাঁও) মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগেই বডি তিনটা হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। একটা মেয়ে প্রথমে বিদ্যুতায়িত হয়। তাকে ধরতে গিয়ে আরও দুজন আক্রান্ত হয়। বজ্রপাতের কারণেও বিদ্যুতায়িত হতে পারে। এখনই নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না।’

মেরামত হয়েছে বিদ্যুতের সেই সংযোগ

ঘটনার এক সপ্তাহ পর গত ১২ জুন বিদ্যুতের সেই দুর্বল সংযোগ মেরামত হয়েছে। বাড়িওয়ালার ছেলে নিজে উপস্থিত থেকে কাজ চলার সময় সেখানে ছিল নিউজবাংলাও।

বস্তির সামনেই একটি খুঁটি থেকে নেয়া হয়েছে বিদ্যুৎ-সংযোগ। সেই সংযোগটির তার অনেকটাই নড়বড়ে। ঝোড়ো হাওয়ায় এই তার প্রায়ই বাড়ি খেত লোহার ফটক আর টিনের চালে। তখন বিদ্যুতায়িত হয়ে যেত সেগুলো।

তিন মৃত্যু বিদ্যুৎস্পর্শে, নেতারা বলালেন বজ্রপাত
দুর্ঘটনার এক সপ্তাহ পর গত ১২ জুন বাড়ির মালিকের ছেলে উপস্থিত থেকে সংযোগ মেরামত করান

ওই এলাকায় খুঁটিগুলো থেকে এলোমেলোভাবে নেয়া হয়েছে বিদ্যুতের তার। খালি চোখেই বোঝা যায়, সেগুলো বিপজ্জনক।

মেইন সুইচ বস্তিতে নয়, পাশের বাসায়

পাশাপাশি দুটি টিনশেড বস্তি থাকায় পাশের বাসা থেকে লাইন টানা হয়েছে। বাসার মেইন সুইচ পাশের বাসায়।

নিহতদের পরিবার বলছে, এই বাসায় যদি মেইন সুইচ থাকত, তবে সেটা বন্ধ করে তাদের বাঁচানো সম্ভব হতো।

এই বাড়ির মালিক মারা গেছেন আগেই। বস্তি দুটি ম্যানেজারের মাধ্যমে দেখভাল করেন তার স্ত্রী। ঘটনার পর থেকে তিনি দুই বস্তিতে যাননি বলে আছে ক্ষোভ। তবে তার ছেলে বলছেন, তার মা অসুস্থ।

তবে ঝুমার মা ময়না বেগম বলেন, ‘ওনার ছেলে তো বলবেই অসুস্থ। সে টাকাওয়ালা মানুষ। আমরা গরিব মানুষ, একজনের কিছু হইলে আমরা দৌড়াইয়া যাই।

তিন মৃত্যু বিদ্যুৎস্পর্শে, নেতারা বলালেন বজ্রপাত
দুই বস্তির মেইন সুইচ সেখানে নেই। বস্তিবাসী বলছেন, এটি সেখান থাকলে বিদ্যুৎ বন্ধ করে তিন জনকে বাঁচানো যেত

‘তিনি যতই অসুস্থ হোক, তার বস্তির তিনডা মানুষ মাইরা গ্যাছে। আমার মাইয়ারে এলাকার মানুষ রাস্তার এই মাথা থেইকা ওই মাথা পর্যন্ত সিরিয়াল ধইরা দেখতে আইছে। ওই যে দেহন যায় বাসা। আর সে একবার দ্যাখতে আইতে পারে নাই।’

বজ্রপাত নিয়ে যে দাবি মালিকের ছেলের

বাড়িওয়ালার ছেলে মাহফুজ আনাম মাসুদের দাবি, বজ্রপাত হয়েছে টেলিভিশনের ডিশ সংযোগের তারে। আর সেই তার লাগানো ছিল বস্তির গেটে। আর ডিশের সেই তারের মাধ্যমে বিদ্যুতায়িত হয়েছে সবাই।

তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ওইখানে ছিল ডিশের লাইন। ডিশের লাইনের তার ছিল টিনের সঙ্গে লাগানো। ঠাডা (বজ্রপাত) পড়ছে ডিশের লাইনে। ওখানে লোক ছিল, তাই একটা অ্যাক্সিডেন্ট হয়ে গেছে।’

বিদ্যুতের লাইনে যদি সমস্যা না থাকবে, তাহলে মেরামত করেছেন কেন- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘ঘটনার পরে এই বাসায় ৫ দিন বিদ্যুৎ ছিল না। এই দেখেন তারে কিছু হয় নাই। সরকারি লোক বলছে লাইন চেঞ্জ করতে হবে। তারের কিছু না হলেও আমি নতুন করে আবার তার চেঞ্জ করে দিছি। আজকে সব কাজ শেষ করলাম।’

তিন মৃত্যু বিদ্যুৎস্পর্শে, নেতারা বলালেন বজ্রপাত
স্থানীয়রা বলছেন, কেবল ওই দুটি বস্তিতে নয়, সেই এলাকার অন্য বস্তিগুলোতেও বিদ্যুৎ সংযোগ দুর্বল

ডিশের তারে বজ্রপাত হলে তা নিয়ে বিদ্যুতায়িত হয়ে তিনজনের মৃত্যু সম্ভব কি না- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘পুলিশ এসে তো দেখছে। ইলেকট্রিশিয়ান দেখাইছি। কারেন্টে শর্ট এ রকম কিছু হয় না। বাজ যখন পড়ে, তখন তো কারেন্টে এমনেতেই টানে। বজ্র গেটের ওইখানে পড়ছে। আমি ছিলাম না, শোনা কথা। একজন ওইখানে আটকাইয়া গেছে। মুরব্বি ওই বাচ্চাকে ছুটাইতে গেছে। মুরব্বিকে ধরতে গেছে আরেকজন। এইভাবে তিনজনের মৃত্যু হয়।’

তাহলে তো তারা বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা গেছেন- এমন মন্তব্যের জবাবে তিনি বলেন, ‘না, না ভাইয়া আপনার বুঝতে হবে। (বজ্রপাত) তার হয়ে গেটে পড়ছে। তার পরে ওখানে ডিশের তারগুলো ছিল। বজ্রপাতে এমনিতেও ভোল্টেজ বেড়ে যায়।’

তড়িৎ প্রকৌশলী যা বলছেন

পুরো ঘটনা শুনে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের তড়িৎ প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক এ বি এম হারুন উর রশিদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বজ্রপাত যেকোনো জিনিসের মধ্য দিয়ে যেতে পারে। সেটি টেলিফোনের তারও হতে পারে। তবে সেটি হয় খুবই অল্প সময়ের জন্য। এক সেকেন্ড বা এ রকম সময়ের জন্য।

‘তবে তিনজন একসঙ্গে মারা যাওয়াটা অস্বাভাবিক ব্যাপার। একজন আরেকজনকে সেভ করতে গিয়ে মারা গেলে সেটি অন্য ব্যাপার। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা যেতে পারে।’

আরও পড়ুন:
তিন প্রাণহানির পেছনে ‘বাড়িওয়ালার অবহেলা’
বিদ্যুতায়িত হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু
ট্রাক্টর বিদ্যুতায়িত হয়ে চালকের মৃত্যু

মন্তব্য

আরও পড়ুন

অনুসন্ধান
Many students could not vote in Chaksu elections despite being a student

ছাত্র হয়েও ভোট দিতে পারেননি চাকসু নির্বাচনে অনেক শিক্ষার্থী

ছাত্র হয়েও ভোট দিতে পারেননি চাকসু নির্বাচনে অনেক শিক্ষার্থী

দীর্ঘ ৩৬ বছর পর অনুষ্ঠিত হচ্ছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচন, হল ও হোস্টেল সংসদ নির্বাচন। এ নির্বাচনকে ঘিরে বুধবার সকাল থেকেই চবিতে ঈদের উৎসব বিরাজমান। শিক্ষার্থীরা দলে দলে শাটলে ও বাসে এসে সবুজের রাজ্য খ্যাত চবি ক্যাম্পাসে নামছেন। সকাল নয়টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে এখনো চলমান রয়েছে। ভোট প্রদানের পর শিক্ষার্থীরা স্মার্টফোন হাতে ছবি, ভিডিও নিয়ে উল্লাসে মেতে ওঠেছেন। তবে এসব আনন্দের অংশ হতে পারেনি ২৪২ জন ভোটার।

দীর্ঘ ৩৬ বছর পর অনুষ্ঠিত হচ্ছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচন এবং হল ও হোস্টেল সংসদ নির্বাচন। এ নির্বাচনের কারণে বুধবার সকাল থেকেই চবি ক্যাম্পাসে উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়ে। শাটল ট্রেন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে করে দলে দলে শিক্ষার্থীরা ছুটে আসেন সবুজে ঘেরা ক্যাম্পাসে।

ছাত্র হয়েও ভোট দিতে পারেননি চাকসু নির্বাচনে অনেক শিক্ষার্থী

সকাল ৯টা থেকে শুরু হওয়া ভোটগ্রহণ দুপুর পর্যন্ত উৎসবমুখর পরিবেশে চলতে থাকে। ভোট প্রদান শেষে শিক্ষার্থীরা স্মার্টফোনে ছবি ও ভিডিও ধারণ করে আনন্দ-উচ্ছ্বাস ভাগাভাগি করেন।

তবে এই আনন্দের অংশ হতে পারেননি ২৪২ জন শিক্ষার্থী, যারা বৈধ ছাত্র হয়েও ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।

চাকসু নির্বাচনে এবার ২৭ হাজার ৫০০ ভোটারের মধ্যে ২৪২ জন ভোটার রয়েছে পিএইচডি ও এমফিল গবেষক শিক্ষার্থী। যারা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন বলে একটি সূত্র জানিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ায় নির্বাচন পরিচালনার সঙ্গেও তারা যুক্ত আছেন। এতে নৈতিকতার দিক থেকে ভোট প্রদান করতে পারবেন না তারা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক জানান, “চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট ২৭ হাজার ৫০০ ভোটারের মধ্যে ২৪২ জন পিএইচডি ও এমফিল পর্যায়ের শিক্ষার্থী। নিয়ম অনুযায়ী তারাও এবার ভোটার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। ফলে এসব শিক্ষকদেরও ভোটার হিসেবে ধরা হয়েছে, যেহেতু তারা এখনো শিক্ষার্থী হিসেবে নিবন্ধিত।

তবে আমি নিজেও নির্বাচন পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত রয়েছি। ভোটকেন্দ্রের বাইরে নিরাপত্তা, হোস্টেল, হল ও প্রবেশপথসহ বিভিন্ন পয়েন্টে শিক্ষকরা দায়িত্ব পালন করছেন। তাই আমি মনে করি, ভোটার তালিকায় নাম থাকলেও আমাদের ভোট প্রদান করা নৈতিক হবে না। এ কারণেই সংশ্লিষ্ট সবাই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে আমি বিশ্বাস করি।”

মন্তব্য

অনুসন্ধান
Teachers at Shaheed Minar withdraws from Press Club on Sound Grenade

সাউন্ড গ্রেনেডে উত্তেজনা, প্রেস ক্লাব থেকে সরে শহীদ মিনারে শিক্ষকরা

সাউন্ড গ্রেনেডে উত্তেজনা, প্রেস ক্লাব থেকে সরে শহীদ মিনারে শিক্ষকরা

২০ শতাংশ বাড়ি ভাড়ার দাবিতে দেশের বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের চলমান আন্দোলনে পুলিশের সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে রাজধানীর প্রেস ক্লাব এলাকায়। পুলিশের বাধার মুখে সেখান থেকে সরে তারা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান নিয়েছেন।

রোববার (১২ অক্টোবর) দুপুরে সেখানে সরে গিয়ে ওই স্থান থেকেই তারা লাগাতার কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ দেলাওয়ার হোসেন আজিজী বলেন, জনদুর্ভোগ এড়াতে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমাদের লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি এখন থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে চলবে। প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়া পর্যন্ত আমরা এখান থেকেই কর্মসূচি চালিয়ে যাব।

তিনি আরও বলেন, আমাদের শীর্ষ নেতারা এরইমধ্যে শহীদ মিনারে অবস্থান নিয়েছেন। যারা এখনো প্রেস ক্লাবে আছেন, তাদের অনুরোধ করছি মিছিলসহ শহীদ মিনারে চলে আসতে। আমরা এখান থেকেই আমাদের আন্দোলন পরিচালনা করব এবং বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে লাগাতার আন্দোলনকে সাজাবো ইনশাআল্লাহ।

অধ্যক্ষ আজিজী বলেন, আমরা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি—যতক্ষণ পর্যন্ত জাতীয়করণের প্রজ্ঞাপন জারি না হবে, আমরা শহীদ মিনার ছাড়ব না, ঢাকার রাজপথও ছাড়ব না। আলোচনার মাধ্যমে, সহযোগিতার মাধ্যমে প্রজ্ঞাপন নিয়েই বিজয়ী বেশে আমরা শ্রেণিকক্ষে ফিরব।

অন্যদিকে প্রেস ক্লাব এলাকা থেকে শিক্ষক নেতাদের সরাতে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। এতে শিক্ষকরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। অনেকেই আবার প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টাও করেন। তবে এখন পর্যন্ত বড় ধরনের কোন সংঘর্ষের খবর পাওয়া যায়নি।

মন্তব্য

অনুসন্ধান
Sarah Cook recycled the UK support for a fair election in Bangladesh

বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যুক্তরাজ্যের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত সারাহ কুকের

বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যুক্তরাজ্যের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত সারাহ কুকের

ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দিনের সাথে বৈঠক করেন। ছবি: ফেসবুক

বাংলাদেশে আগামী বছর একটি অবাধ, সুষ্ঠু, বিশ্বাসযোগ্য এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য যুক্তরাজ্যের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক।

আজ সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সাথে বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

সারাহ কুক বলেন, ‘যুক্তরাজ্য কয়েক মাস আগে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার জাতীয় নির্বাচনের ঘোষণাকে স্বাগত জানায়। প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সাথে বৈঠকে খুব ভালো আলোচনা হয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে আগামী বছর বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু, বিশ্বাসযোগ্য এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য যুক্তরাজ্যের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছি।'

তিনি বলেন, 'নির্বাচন কমিশন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এবং আমাদের আন্তর্জাতিক অংশীদারদের প্রচেষ্টার প্রশংসা করি। যুক্তরাজ্য বিশেষ করে জাতীয় নাগরিক শিক্ষা কর্মসূচির মাধ্যমে, বিশেষ করে দেশের দুর্বল গোষ্ঠীগুলির জন্য এবং ভোটগ্রহণ কর্মীদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা করছে। তাই আমাদের এজেন্ডা ছিল নির্বাচন কমিশনের সাথে যুক্তরাজ্যের সমর্থন নিয়ে আলোচনা করা। যেমনটি আমি বলেছি, জাতীয় নাগরিক শিক্ষা এবং ভোটগ্রহণ কর্মীদের প্রশিক্ষণের জন্যও আমরা কাজ করছি। এই বিষয়গুলো নিয়ে আজ নির্বাচন কমিশনের সাথে আলোচনা করেছি।'

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি বলেছি যে যুক্তরাজ্য আগামী বছর বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু, বিশ্বাসযোগ্য এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচনকে সমর্থন করছে।’

মন্তব্য

উত্তরায় বাসের ধাক্কায় মোটরবাইক চালকের মৃত্যু

উত্তরায় বাসের ধাক্কায় মোটরবাইক চালকের মৃত্যু

রাজধানীর উত্তরার কবি জসীমউদ্দীন রোডে যাত্রীবাহী বাসের ধাক্কায় এক মোটরবাইক চালক নিহত হয়েছেন। মোহাম্মদ আরমান মির্জা (২১) নামের ওই তরুণ কলেজ শিক্ষার্থী ছিলেন।

সোমবার ভোররাত ৪টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। পথচারীরা আহত আরমানকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভোর সাড়ে ৬ টার দিকে মারা যান।

নিহতের খালা নাজনীন আক্তার জানান, ‘খবর পেয়ে ঢাকা মেডিকেল জরুরি বিভাগে এসে আমার ভাগিনা আরমানের মরদেহ দেখতে পাই। সে আব্দুল্লাহপুরের নবাব হাবিবুল্লাহ কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেছে। গভীর রাতে আরমান মোটরবাইক চালিয়ে যাওয়ার সময় জসিম উদ্দিন রোডে বেপরোয়া গতির একটি বাসের ধাক্কায় গুরুতর আহত হয়।

তিনি আরও জানান, আরমানের বাড়ি চাঁদপুর জেলার হাজিগঞ্জ থানার পূর্ব হাতিআলা গ্রামে।

ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মোহাম্মদ ফারুক বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ ঢাকা মেডিকেল মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানাকে জানানো হয়েছে।

মন্তব্য

অনুসন্ধান
Dhaka South City Corporation is working to reduce temporary waterlogging caused by thunderstorms with thunderstorms

বজ্রসহ মুষলধারার বৃষ্টিপাতে সৃষ্ট অস্থায়ী জলাবদ্ধতা নিরসনে কাজ করছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন

বজ্রসহ মুষলধারার বৃষ্টিপাতে সৃষ্ট অস্থায়ী জলাবদ্ধতা নিরসনে কাজ করছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন

উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় সৃষ্টিতব্য লঘূচাপের প্রভাবে রাজধানী ঢাকায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি এবং ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। ইতোমধ্যে, রাত হতে রাজধানীতে বজ্রসহ মুষলধারে বৃষ্টির ফলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের বেশ কিছু এলাকায় অস্থায়ী জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।

বজ্রসহ মুষলধারার বৃষ্টিপাতে সৃষ্ট অস্থায়ী জলাবদ্ধতা নিরসনে কাজ করছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের আওতাভুক্ত এলাকায় জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রতিটি ওয়ার্ডে ডিএসসিসির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের কর্মীরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়া, ওয়ার্ডভিত্তিক ইমার্জেন্সি রেসপন্স টিম (Emergency Response Team) কাজ করে চলেছে। গ্রীন রোড, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা, শান্তিনগর, বেইলি রোড, কাকরাইল, পল্টন, সাত মসজিদ রোড, ধানমণ্ডি এলাকার জলাবদ্ধতা ইতোমধ্যে সমাধান হয়েছে। তবে, পানি নির্গমনের আউটলেট অংশ এবং খাল-নদীর অংশের পানির লেভেল প্রায় একই হওয়ার ফলে পানি নিষ্কাশনের ধীরগতি বিদ্যমান থাকায় কিছু এলাকার পানি নামতে আরও কয়েক ঘণ্টা সময় লাগতে পারে। এ সব এলাকা থেকে অস্থায়ী পোর্টেবল পাম্পের মাধ্যমে দ্রুত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া, কমলাপুরে স্থাপিত হাই প্রেসার ভার্টিক্যাল পাম্পের মাধ্যমে দ্রুত পানি নামানোর কাজ চলমান রয়েছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ০১৭০৯৯০০৮৮৮ (01709900888) মাধ্যমে সার্বিক পরিস্থিতি তদারকি অব্যাহত রয়েছে।

মন্তব্য

অনুসন্ধান
Rains from night

রাত থেকে বৃষ্টি, রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে পানি

রাত থেকে বৃষ্টি, রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে পানি

রাজধানীতে গতকাল রাত থেকে শুরু হয়েছে ভারী বৃষ্টি। মধ্যরাত থেকে শুরু হওয়া অবিরাম বৃষ্টি আজ সোমবার সকালেও থামেনি। বৃষ্টির সঙ্গে ছিলো বজ্রপাতও। মুষলধারে হওয়া এই বৃষ্টিতে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে পানি জমেছে। ফলে সড়কে আটকে আছে গণপরিবহন। এতে সাতসকালেও ঘর থেকে কাজে বের হওয়া লোকজন পরেছেন ভোগান্তিতে।

এদিন সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ধানমন্ডি, আসাদগেট, কলাবাগান, মোহাম্মদপুর, মিরপুর ১০, মিরপুর শেওড়াপাড়া, নিউমার্কেট, মগবাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় রাস্তায় পানি জমতে দেখা যায়। এসব এলাকায় কোথাও হাঁটুপানি পরিমাণ জমলেও আসাদগেট, মগবাজার, মিরপুরের শেওড়াপাড়ায় ছিল কোমরসমান পানি।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, রোববার দিবাগত রাত ১২টা থেকে সোমবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ৩৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে রাজধানীতে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মৌসুমি বায়ুর অক্ষের বর্ধিতাংশ উত্তর প্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারী অবস্থায় রয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে একটি লঘূচাপ সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। পূর্ব মধ্যে বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর আরেকটি লঘূচাপ সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে এবং এটি ঘণীভূত হতে পারে।

এদিকে রাজধানীতে সকালে হঠাৎ বৃষ্টি হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন কর্মজীবী মানুষ। শ্যামলী থেকে তেজগাঁও সাতরাস্তায় আসতে গিয়ে আসাদগেট কোমরসমান পানিতে আটকা পড়েন ওবায়দুর রহমান। তিনি বলেন, সকালে বাসা থেকে অফিসে যাওয়ার জন্য রেডি হয়ে বের হলেও বৃষ্টির কারণে সময়মত অফিসের জন্য বের হতে পারিনি। কোনোভাবে যাও বের হয়েছিলাম, তা পথের বিভিন্ন জায়গায় হাঁটুসমান থেকে কোমরসমান পানির জন্য আটকে থাকতে হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, রাস্তায় পানি জমে গণপরিবহন চলাচল বন্ধ হয়ে পরেছে। অফিসগামী লোকজনদের পরতে হয়েছে দুর্ভোগে।

এছাড়া শেওড়াপাড়া থেকে ফাহিম নামের এক তরুণ বলেন, বৃষ্টির কারণে গাড়ি পাচ্ছি না। রাস্তায় এত পরিমাণ পানি জমেছে যে, হেঁটে যাওয়ারও কোনো উপায় নেই। রিকশায়ও ভাড়া অনেক বেশি চাচ্ছে।

রোববার সন্ধ্যা ৬টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারী ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে।

সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

প্রসঙ্গত, গতকয়েক দিন ধরেই রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় প্রচণ্ড ভ্যাপসা গরম ছিল। এ অবস্থায় গত শনিবার ও রোববার রাজধানীর আকাশ খানিকটা ঘোলাটে ছিল। তবে আজ সোমবার থেকে বৃষ্টি বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছিল।

মন্তব্য

অনুসন্ধান
The Grand Opening of Tripology began in Dhaka

ট্রিপোলজির জমকালো যাত্রা শুরু, গ্র্যান্ড ওপেনিং অনুষ্ঠিত হলো ঢাকায়

ট্রিপোলজির জমকালো যাত্রা শুরু, গ্র্যান্ড ওপেনিং অনুষ্ঠিত হলো ঢাকায়

রাজধানীর বনানীতে যাত্রা শুরু করলো ভ্রমণ ও পর্যটনভিত্তিক নতুন প্রতিষ্ঠান ট্রিপোলজি। শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জুই গার্ডেনে অবস্থিত ট্রিপোলজির অফিসে জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে এর উদ্বোধন করা হয়।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী তাসনিয়া ফারিন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ট্রাভেল ব্লগার শিশির দেব। অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে আরও যোগ দেন ইউনিভার্সেল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা: আশীষ কুমার চক্রবর্ত্তী এবং কোরিওগ্রাফার গৌতম সাহা।

উদ্বোধনী আয়োজনে ছিল রিবন কাটিং, অফিসিয়াল ফটো সেশন এবং দর্শকদের জন্য বিশেষ মিট অ্যান্ড গ্রিট সেশন। অনুষ্ঠান ঘিরে ভ্রমণপ্রেমীদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ লক্ষ্য করা যায় এবং তারা বাংলাদেশের ভ্রমণ শিল্পে ট্রিপোলজির সম্ভাবনা নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

ট্রিপোলজির কো-ফাউন্ডার তাজরিন আখতার, আবু বক্কর সিদ্দিক ও তৌহিদুল ইসলাম জানান, তাদের লক্ষ্য হলো আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে বাংলাদেশে ট্রাভেল ইন্ডাস্ট্রিকে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দেওয়া। কোম্পানির সিইও ইমতিয়াজ কাইসুল বলেন, “ট্রিপোলজি শুধুমাত্র একটি ট্রাভেল এজেন্সি নয়; আমরা চাই মানুষ যেন ভ্রমণের প্রতিটি ধাপে নিশ্চিন্ত সেবা পায়। ভিসা প্রসেসিং থেকে শুরু করে এয়ার টিকিট, হোটেল বুকিং ও হলিডে প্যাকেজ সবকিছুতেই আমরা সর্বোচ্চ পেশাদার মান নিশ্চিত করতে চাই।”

ট্রিপোলজি বর্তমানে প্রথম বিশ্বের দেশগুলোর ভিসা প্রসেসিংয়ে বিশেষ দক্ষতা অর্জন করেছে। পাশাপাশি সব ধরনের দেশি-বিদেশি হলিডে প্যাকেজ, এয়ার টিকিট, হোটেল বুকিং, থার্ড ওয়ার্ল্ড ভিসা প্রসেসিং ও স্টুডেন্ট ভিসা সংক্রান্ত সেবা দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীরা আশা প্রকাশ করেন, ট্রিপোলজির উদ্যোগ বাংলাদেশের ভ্রমণশিল্পকে আরও গতিশীল করবে।

ঠিকানা: জুই গার্ডেন, হাউস ২/এ, লেভেল-৭, ব্লক এল, রোড ২/১, বনানী-১২১৩, ঢাকা।

মন্তব্য

p
উপরে