প্রাপ্তবয়স্ক নারীর ক্ষেত্রে ‘বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ’ এর মতো অভিযোগ বিভিন্ন সময়ে আলোচিত হলেও এ ধরনের ঘটনাকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা যায় কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে আইন বিশেষজ্ঞদের।
এমনকি দেশের হাইকোর্টও একাধিক রায় দিয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে ১৬ বছরের ঊর্ধ্বে কোনো নারীর সম্মতিতে তার সঙ্গে কারও যৌন সম্পর্ক হলে সেটিকে ধর্ষণ হিসেবে বিবেচনা করা যাবে না। এসব রায়ে আদালত ‘বিয়ের প্রলোভন’ এর অভিযোগকেও খারিজ করেছে। আইনজীবীরা বলছেন, হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে কোনো আপিল না হওয়ায় আইনি দৃষ্টিকোণ থেকে আদেশগুলো কার্যকর রয়েছে।
পাশের দেশ ভারতের উচ্চ আদালতও বলেছে, কোনো নারী স্বেচ্ছায় দীর্ঘদিন ধরে কারো সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক বজায় রাখার পর ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে ‘বিয়ের প্রলোভন’ দেখিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ আনতে পারবেন না।
আরও পড়ুন: ‘বিয়ের প্রলোভনে যৌন সম্পর্ক সব সময় ধর্ষণ নয়’
এমন প্রেক্ষাপটে আলোচিত এই বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধান চালিয়েছে নিউজবাংলা। এতে দেখা গেছে, দেশের উচ্চ আদালত এ বিষয়ে একাধিক রায় দিলেও সেটি তেমনভাবে সংবাদ মাধ্যমে গুরুত্ব পায়নি।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, বিষয়টি নিয়ে ৩০ বছর আগে ১৯৯১ সালে হাইকোর্ট বিভাগ লুকুছ মিয়া বনাম রাষ্ট্র মামলায় একটি পর্যবেক্ষণ দেয়।
বিচারপতি আব্দুল বারী সরকার ও বিচারপতি হাবিবুর রহমান খানের হাইকোর্ট বেঞ্চ লুকুছ মিয়ার বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণের অভিযোগ খারিজ করে বলে, ‘এটি অপরাধের মধ্যে পড়ে না। তার কারণ অভিযোগকারী নারী স্বেচ্ছায় যৌন সম্পর্কে অংশ নিয়েছেন। এর ফলে তার একটি সন্তানও হয়েছে। সব কিছু বিবেচনায় লুকুছ মিয়ার আপিল মঞ্জুর এবং অভিযোগ থেকে তাকে খালাস দেয়া হলো।’
মৌলভীবাজারের ছিকার আলীর ছেলে লুকুছ মিয়ার বিরুদ্ধে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ধর্ষণের অভিযোগটি দায়ের করেছিলেন এক নারী। এ মামলায় জেলা ও দায়রা জজ আদালত লুকুছকে ১৪ বছর সশ্রম কারাদণ্ড দেয়। তবে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন লুকুছ মিয়া। ওই আপিল শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট তাকে খালাস দেয়।
এছাড়া ২০০৭ সালে মনোয়ার মল্লিক বনাম রাষ্ট্র মামলায় বিচারপতি ছিদ্দিকুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি রেজাউল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ একটি রায় দিয়েছিল। এতে বলা হয়, ‘অভিযোগকারী নারী বিয়ের প্রতিশ্রুতিতে স্বেচ্ছায় যৌন মিলনে সম্মত হয়েছেন। তবে এ কারণে আসামিকে ধর্ষণের অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করা যায় না।’
আদালত রায়ে আরও বলে, ‘আমরা কোনো সাক্ষ্যপ্রমাণ পাইনি, যার ভিত্তিতে ট্রাইব্যুনাল তাকে (মনোয়ার) সাজা দিতে পারে। তাই ট্রাইব্যুনালের রায় বহাল রাখা আমাদের জন্য কঠিন।’
এছাড়া, ২০১৬ সালে নাজিম উদ্দিন বনাম রাষ্ট্র মামলায় বিচারপতি মো. এমদাদুল হক ও বিচারপতি আশীষ রঞ্জন দাসের হাইকোর্ট বেঞ্চও একই ধরনের রায় দেয়।
রায়ে হাইকোর্ট বলে, ‘সার্বিক পরিস্থিতি এবং সাক্ষ্য প্রমাণে এটা প্রমাণিত হয় না যে, এখানে এক পক্ষ দোষী। বরং এ কাজে দুই জনের সমান অংশগ্রহণ রয়েছে। সব কিছু বিবেচনায় দেখা যায়, ধর্ষণের জন্য শুধু পুরুষ সঙ্গীকে দায়ী করা যায় না।’
কী আছে আইনে
আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশের বিদ্যমান আইনেও প্রাপ্তবয়স্ক নারীর ক্ষেত্রে ‘বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ’ এর মতো অভিযোগ মিমাংসা করায় জটিলতা রয়েছে।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর ধর্ষণ, ধর্ষণজনিত কারণে মৃত্যু ইত্যাদির শাস্তি অংশের ৯ (১) ধারায় বলা হয়েছে, ‘যদি কোনো পুরুষ কোনো নারী বা শিশুকে ধর্ষণ করেন, তাহা হইলে তিনি [মৃত্যুদণ্ডে বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডে] দণ্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অর্থদণ্ডেও দণ্ডনীয় হইবেন।’
এর ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, ‘যদি কোনো পুরুষ বিবাহ বন্ধন ব্যতীত [ষোল বৎসরের] অধিক বয়সের কোনো নারীর সহিত তাহার সম্মতি ব্যতিরেকে বা ভীতি প্রদর্শন বা প্রতারণামূলকভাবে তাহার সম্মতি আদায় করিয়া, অথবা [ষোল বৎসরের] কম বয়সের কোনো নারীর সহিত তাহার সম্মতিসহ বা সম্মতি ব্যতিরেকে যৌন সঙ্গম করেন, তাহা হইলে তিনি উক্ত নারীকে ধর্ষণ করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবেন।’
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধন) আইন ২০২০ এও এই ধারাটি রয়েছে।
আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধারার ব্যাখ্যায় প্রাপ্ত বয়স্কের ক্ষেত্রে ‘প্রতারণামূলকভাবে সম্মতি’ আদায়ের বিষয়টিকে ‘ধর্ষণ’ বলে গণ্য করার কথা থাকলেও আদালতে ‘বিয়ের প্রলোভনকে’ প্রতারণা হিসেবে প্রমাণ করা বেশ কঠিন।
হাইকোর্টের রায় নিয়ে আইনজীবীদের অভিমত
সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘হাইকোর্ট যদি এ ধরনের রায় দিয়ে থাকে, তাহলে সেটি সবার ক্ষেত্রেই কার্যকর থাকবে। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে বলা আছে, প্রতারণা করে ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক যৌন মিলন করলে সেটি ধর্ষণ হিসেবে বিবেচিত হবে। তবে দুইজন যদি প্রাপ্তবয়স্ক হয়, সম্মতিতে মিলন হয়, তাহলে সেটি ধর্ষণ হবে না।’
সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী, মানবাধিকার কর্মী অ্যাডভোকেট ফাওজিয়া করিম ফিরোজ নিউজবাংলকে বলেন, ‘আদালত ঠিক রায়ই দিয়েছে। এ ধরনের অভিযোগে মামলা হলে সেটি ধর্ষণের মামলা হওয়া উচিত না।’
তিনি বলেন, ‘আমি আইনজীবী হিসেবে দেখেছি অনেক ক্ষেত্রে দুই পক্ষের সম্মতিতেই সম্পর্ক হয়ে থাকে। পরে কোনো এক পর্যায়ে দেখে যে সুবিধা হচ্ছে না, তখনই মামলা মোকদ্দমা করা হয়। ধরেন কোনো পুরুষ সম্পর্কে জড়ানোর পরে যদি সে তার পছন্দসই অন্য কাউকে বিয়ে করতে চায়, কিংবা তার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে, তখনই নারী তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করে দেন। এক্ষেত্রে আমার অভিমত হলো, এখানে ধর্ষণের অভিযোগে নয়, প্রতারণা বা প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের অভিযোগে মামলা হওয়া উচিত।’
এ অভিমতের সঙ্গে একমত পোষণ করছেন ব্যারিস্টার রাশনা ইমাম। তবে তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আইনে ১৬ বছর উল্লেখ আছে, এ ক্ষেত্রে এটি ১৮ বছর করা উচিত ছিল।’
রাশনা ইমাম বলেন, ‘এমনিতেই ধর্ষণের মামলা অনেকভাবে টেকে না। তার মধ্যে প্রথমত অনেক নারী অভিযোগ দায়ের করতে চান না। দ্বিতীয়ত, থানায় গেলেও দেখা যায় ভিকটিম উল্টো হয়রানি শিকার হন। তৃতীয়ত সাক্ষ্য প্রমাণের অভাবে অনেক সময় আসামি খালাস পেয়ে যায়। এসব বিবেচনায় নিয়ে পুরো আইনটিই সংশোধন ও সময়োপযোগী করা উচিত।’
যা বলেছে ভারতের আদালত
ভারতের দিল্লি হাইকোর্ট গত বছর একটি মামলার রায়ের পর্যবেক্ষণে বলে, কোনো নারী স্বেচ্ছায় দীর্ঘদিন ধরে কারো সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক বজায় রাখার পর ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে তিনি ‘বিয়ের প্রলোভন’ দেখিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ আনতে পারবেন না।
মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তিকে খালাস দিয়ে আদালত বলে, ‘বিয়ের প্রতিশ্রুতিকে কোনোভাবেই দীর্ঘায়িত ও একান্ত যৌন সম্পর্কের প্ররোচনা হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে না।’
পর্যবেক্ষণে বিচারপতি বিভু বাখ্রু বলেন, ‘অভিযোগকারী নারী যদি কিছু সময়ের জন্য নিজেকে অভিযুক্তের যৌন কামনার শিকার বলে মনে করেন, সেক্ষেত্রে বিষয়টিকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে প্ররোচিত করার মতো অভিযোগ হিসেবে গ্রহণ করা যেতে পারে।
‘এ ধরনের সুনির্দিষ্ট ক্ষেত্রে একপক্ষ মানসিকভাবে রাজি না থাকার পরেও অন্য পক্ষের বিয়ের প্রতিশ্রুতির ভিত্তিতে যৌন সম্পর্ক তৈরিতে সম্মতি দিতে পারে।’
আদালত বলে, স্বল্প সময়ের এই ‘সম্মতি’র ক্ষেত্রে বিয়ের প্রলোভনের মতো বিষয়টি প্রযোজ্য হতে পারে। এ ক্ষেত্রে কোনো একটি পক্ষ অপর পক্ষের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যমূলক সম্মতি আদায়ের অভিযোগ তুলতে পারবে এবং ভারতীয় ফৌজদারি দণ্ডবিধির ৩৭৫ ধারায় ধর্ষণের মামলা করা যাবে।
“তবে একটি পক্ষ অপরপক্ষের সঙ্গে ধারাবাহিক সম্পর্কের মধ্যে থাকলে এবং দীর্ঘদিন ধরে তাদের শারীরিক সম্পর্ক বজায় থাকলে, বিষয়টিকে বিয়ের প্রলোভনের কারণে ‘অনিচ্ছুক শারীরিক সম্পর্ক’ হিসেবে বিবেচনা করা যায় না।”
এর আগে ২০১৯ সালে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট একটি রায়ে বলেছিল, শারীরিক সম্পর্কের পর বিয়ের প্রতিশ্রুতি না রাখার প্রতিটি ঘটনাকেই ‘বিয়ের প্রলোভন’ দেখিয়ে ধর্ষণ হিসেবে বিবেচনা করা যায় না।
সবশেষ গত মার্চে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট একটি রায়ে বলে, একসঙ্গে থাকা নারী-পুরুষের ক্ষেত্রে পুরুষ পরে বিয়ের প্রতিশ্রুতি না রাখলে ধর্ষণের অভিযোগ আনা যাবে না। আদালত বলেছে, ‘বিয়ের মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দেয়া ঠিক নয়। এমনকি একজন নারীর ক্ষেত্রেও বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে পরে সম্পর্ক ভেঙে দেয়া উচিত নয়। তবে এর মানে এই নয় যে, দীর্ঘদিনের সম্পর্কের ক্ষেত্রে যৌনমিলনকে ধর্ষণ হিসেবে অভিহিত করা যাবে।’
আরও পড়ুন:মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, সারা দেশে দেশীয় মাছের সংকট প্রকট হয়ে উঠছে। এই সংকট নিরসনে উন্মুক্ত জলাশয়ের কোন বিকল্প নাই। সরকার দেশের নদ-নদীতে মাছের অভয়ারণ্য তৈরি করতে কার্যক্রম গ্রহণ করছে।
উপদেষ্টা আজ সকালে কুড়িগ্রামে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা, জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান,নারী কৃষক এবং স্হানীয় এনজিও প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। জেলা প্রশাসন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর আলোচনা সভার আয়োজন করে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, বন্যায় নদীগুলোতে পলি পরার কারণে নাব্যতা হ্রাস, পানি দূষণ, চায়না জাল ব্যবহার ও ইলেকট্রিক শর্ট দিয়ে মাছ কারণে দিনদিন মাছের পরিমাণ কমছে। জোরালো অভিযান চালিয়ে এসব অবৈধ মাছ ধরার যন্ত্রপাতি উদ্ধার করতে হবে। অভিযান চলমান রাখতে নদীগুলোতে স্পীড বোটের ব্যবহার করা হবে।
চরাঞ্চলের মানুষের জীবনমান প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন, যোগাযোগ ব্যবস্থার অপ্রতুলতার কারণে তারা সরকারি অনেক সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এছাড়া তিনি প্রতিটি মন্ত্রণালয়কে এই অঞ্চলের মানুষের জন্য বিশেষ কর্মপরিকল্পনা গ্রহণের আহ্বান জানান।
খামারিদের উৎপাদিত দুধ সংরক্ষণ বিষয়ে প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, যথাযথ সংগ্রহ ও সংরক্ষণের অভাবে খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তাই এই অঞ্চলে চিলিং সেন্টার স্থাপনের প্রকল্প গ্রহণ করা হবে।
জুলাই যোদ্ধাদের আত্মত্যাগ প্রসঙ্গে বলেন, জুলাই যোদ্ধাগণ অনেকে জীবন উৎসর্গ করেছেন আবার অনেকে পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন। তাদের এই ঋণ ভুলবার নয়। এজন্য তিনি সরকারি ও এনজিওর উদ্যোগে তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে আহ্বান জানান।
কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক সিফাত মেহনাজের সভাপতিত্বে আরো উপস্হিত ছিলেন সিভিল সার্জন ডা. স্বপন কুমার বিশ্বাস, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোক্তাদির খান, জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. হাবিবুর রহমান, কৃষি সম্প্রসারণের অতিরিক্ত উপপরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ রানাসহ জেলা প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।
এরপর উপদেষ্টা কুড়িগ্রাম সদরের পাঁচগাছি ইউনিয়নের ছড়ারপাড় গ্রামে নারী কৃষকের বাড়ি পরিদর্শন করেন।
সরকার দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীকে প্রেস কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে মনোনীত করেছে। বৃহস্পতিবার তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপসচিব খাদিজা তাহের ববির সই করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘প্রেস কাউন্সিলের ৫ নম্বর ক্রমিকের প্রতিনিধি নিউএজ পত্রিকার সম্পাদক নুরুল কবীর পদত্যাগ করায় তার পরিবর্তে সংবাদপত্র ও সংবাদ সংস্থার সম্পাদক সমিতির প্রতিনিধি হিসেবে দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীকে প্রেস কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে মনোনয়ন প্রদান করা হলো।’
বর্তমান কাউন্সিলের অবশিষ্ট মেয়াদের জন্য এ মনোনয়ন কার্যকর থাকবে। জনস্বার্থে জারিকৃত এ প্রজ্ঞাপন অবিলম্বে কার্যকর হবে বলেও প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে।
প্রেস কাউন্সিলের বর্তমান চেয়ারম্যান বিচারপতি একেএম আব্দুল হাকিম, সচিব (উপসচিব) মো. আব্দুস সবুর।
এছাড়া ১২ জন সদস্য হচ্ছেন—১. বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন, ২. ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি মিস দৌলত আকতার মালা, ৩. ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম, ৪. ডেইলি স্টারের সম্পাদক ও প্রকাশক মাহফুজ আনাম, ৫. দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, ৬. দৈনিক বণিক বার্তার প্রকাশক ও সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ, ৭. দ্য ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ, ৮. দৈনিক পূর্বকোণের সম্পাদক ডা. রমিজ উদ্দিন চৌধুরী, ৯. নিউজপেপার্স ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (নোয়ার) উপদেষ্টা আখতার হোসেন খান, ১০. বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম, ১১. বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সচিব ড. মো. ফখরুল ইসলাম এবং ১২. বার কাউন্সিলের ভাইস-চেয়ারম্যান জয়নুল আবেদীন।
অন্তর্বর্তী সরকারের ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী মিয়া শাহবাজ শরিফের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন। পাকিস্তানের ইসলামাবাদে পিএম হাউসে উভয়ের এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।
বৃহস্পতিবার ধর্ম মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ধর্ম উপদেষ্টা ও তার প্রতিনিধিদলকে স্বাগত জানিয়ে পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক এবং সখ্যের বন্ধনে আবদ্ধ। এ সম্পর্ক আগামী দিনগুলোতে আরও জোরদার হবে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নিউইয়র্ক ও কায়রোতে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে অনুষ্ঠিত বৈঠকের কথা উল্লেখ করে দূরদর্শী নেতৃত্ব এবং দারিদ্র্য দূরীকরণে তার অবদানের প্রশংসা করেন। এছাড়া তিনি পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সম্পর্ককে শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে প্রধান উপদেষ্টার আকাঙ্ক্ষাকে সাধুবাদ জানান।
এদিকে ধর্ম উপদেষ্টা বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের একটি পত্র পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন।
পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রীকে লেখা এ পত্রে প্রধান উপদেষ্টা পাকিস্তানে নজিরবিহীন বন্যায় সে দেশের সরকার ও জনগণের প্রতি গভীর সহমর্মিতা ও আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং ভয়াবহ এ দুর্যোগে নিহতদের পরিবার ও ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
এ পত্রে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, কঠিন এ সময়ে বাংলাদেশের জনগণ পাকিস্তানের ভ্রাতৃপ্রতিম জনগণের পাশে রয়েছে। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আপনার সুদক্ষ নেতৃত্বে পাকিস্তানের জনগণ তাদের অসাধারণ ধৈর্য ও সহনশীলতার মাধ্যমে এ চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করবে। প্রয়োজনে ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রমে বাংলাদেশ সর্বাত্মক সহযোগিতা ও সহায়তা প্রদানে প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।
সাক্ষাৎকালে ঢাকা ও করাচীর মধ্যে সরাসরি বিমান চলাচল দ্রুত পুনঃস্থাপনের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করা হয়। এছাড়া কৃষি, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, ধর্মতত্ত্ব ও চিকিৎসা বিষয়ে উভয়দেশের শিক্ষার্থী বিনিময়ে বৃত্তি প্রদানের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার, প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ, ধর্মবিষয়ক ও আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি মন্ত্রী সরদার ইউসুফ খান, তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী আতা তারার, ইসলামাবাদে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. ইকবাল হোসেন খান, উপদেষ্টার একান্ত সচিব ছাদেক আহমদ ও শরীফ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের প্রভাষক মুফতি জাহিদ হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
পুলিশের একটি স্বাধীন তদন্ত সার্ভিস গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আজ বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সভায় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস সভাপতিত্ব করেন।
পরে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘উপদেষ্টা পরিষদ সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশের একটি স্বাধীন তদন্ত সার্ভিস গঠন করা হবে, যাতে কোনো রাজনৈতিক বা অন্য কোনো প্রভাব ছাড়াই তদন্ত সম্পন্ন করা যায়।’ এর পাশাপাশি পুলিশের ভেতরে অভ্যন্তরীণ অভিযোগ যাচাইয়ের জন্য একটি কমিশন গঠনের বিষয়েও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও জানান, ‘এই দুই সিদ্ধান্ত দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য আইন মন্ত্রণালয় কাজ করবে। এ কাজে উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, আদিলুর রহমান খান এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বখশ চৌধুরী যুক্ত থাকবেন।’
সভায় স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করার বিষয়েও গুরুত্ব দেওয়া হয়। প্রেস সচিব বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা বারবার জোর দিয়েছেন যে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও ক্ষমতায়িত করতে হবে। ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, জেলা পরিষদ, পৌরসভা ও সিটি করপোরেশন যেন নিজস্ব তহবিল সংগ্রহ ও স্বচ্ছভাবে পরিচালনা করতে পারে সে বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’
স্বাস্থ্য খাত নিয়েও সভায় আলোচনা হয়। শফিকুল আলম জানান, ‘কিছু মেডিকেল কলেজে যোগ্য শিক্ষকের সংকট রয়েছে। তাই অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের পরামর্শক বা অন্যভাবে সম্পৃক্ত করে শিক্ষা কার্যক্রমের মান উন্নত করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।’
নেপালে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের বিষয়েও সভায় আলোকপাত করা হয়। প্রেস সচিব বলেন, ‘নেপালে অবস্থানরত বাংলাদেশিরা ভালো আছেন, দূতাবাস তাদের দেখভাল করছে। ইতিমধ্যে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর বিশেষ ফ্লাইটে জাতীয় ফুটবল দলকে দেশে আনার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।’
এ বৈঠক প্রসঙ্গে শফিকুল আলম আরও বলেন, ‘আজকের বৈঠকের প্রতিটি সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের অর্থনীতি, শাসনব্যবস্থা ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আমাদের অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করবে।’
ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।
ক্যাডার কর্মকর্তাদের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণের মেয়াদ ছয় মাস থেকে কমিয়ে চার মাস করা হয়েছে। এর মধ্যে তিন মাস প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে এবং এক মাস মাঠপর্যায়ে ওরিয়েন্টেশন ও গ্রাম সংযুক্তি অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
আজ বুধবার প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে জাতীয় প্রশিক্ষণ কাউন্সিলের নবম সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোখলেস উর রহমান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান উপস্থিত ছিলেন।
সভায় আরও সিদ্ধান্ত হয়, কর্মকর্তাদের মাস্টার্স ও পিএইচডি কোর্সে ভর্তির সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৪৫ থেকে বাড়িয়ে ৪৭ বছর করা হবে। পিএইচডি কোর্সে অধ্যয়নকালে প্রতি বছর তত্ত্বাবধায়কের অগ্রগতিমূলক প্রত্যয়ন মন্ত্রণালয়ে জমা দিতে হবে, অন্যথায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বেতন বন্ধ রাখা হবে।
সভায় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘সরকারি যত প্রশিক্ষণ কেন্দ্র আছে সেগুলোর ওপর মূল্যায়ন করতে হবে। কী ধরনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে, প্রশিক্ষণের ধরন-মান ইত্যাদির মানদণ্ড নির্ধারণ করে ক্যাটাগরিভিত্তিক প্রতিটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রকে র্যাংকিং করতে হবে এবং নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘একটি স্বাধীন ইউনিট গঠন করতে হবে। তারা সমস্ত গবেষণা প্রতিষ্ঠানের ওপর পদ্ধতিগতভাবে, স্বাধীনভাবে মূল্যায়ন করবে। গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর সামগ্রিক দর্শন জানতে হবে। সেগুলো সঠিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে কি না দেখতে হবে। সরকারি কর্মকর্তারা যারা বিদেশ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে এসেছেন তাদের তথ্য সেখানে থাকবে।’
সভায় সঞ্জীবনী প্রশিক্ষণের নাম পরিবর্তন করে ‘দক্ষতা নবায়ন প্রশিক্ষণ’ করার সিদ্ধান্ত হয়। এ প্রশিক্ষণ হালনাগাদকৃত কারিক্যুলামে মাঠপর্যায়ে সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে আয়োজন করা হবে। এছাড়া উচ্চশিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে কর্মকর্তারা আংশিক বৃত্তিপ্রাপ্ত হলেও প্রেষণ অনুমোদন করা যাবে।
কর্মচারীদের সততা ও নৈতিকতা বিকাশ এবং দুর্নীতি বিরোধী মনোভাব তৈরিতে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কোর্সে সদ্গুণ, নৈতিকতা, আচরণবিজ্ঞান ও আচরণবিধি অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত হয়। পাশাপাশি প্রশিক্ষণ ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানগুলোর সার্বিক মূল্যায়ন এবং প্রশিক্ষণ বিষয়ক সিদ্ধান্ত গ্রহণের লক্ষ্যে গবেষণা, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন কার্যক্রম পরিচালনারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদকে সভাপতি করে একটি নির্বাহী কমিটি (ইসিএনটিসি) গঠন করা হয়।
জাতীয় লেখক ফোরাম আয়োজিত সাপ্তাহিক সাহিত্য আড্ডা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাজধানীর ধানমন্ডিতে হওয়া এ সাহিত্য আড্ডায় উপস্থিত ছিলেন সংগঠেনর সভাপতি ড. দেওয়ান আযাদ রহমান, মহাসচিব কবি-কথাসাহিত্যিক জাহাঙ্গীর হোসাইন এবং উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য মো. আবদুল মান্নানসহ বাংলাদেশের খ্যাতিমান লেখকরা। অনুষ্ঠানটি একটি সাধারণ প্রাণবন্ত আড্ডার মধ্যেই শুরু হয়। অনুষ্ঠানটি ৩টি পর্বে সাজানো হয়েছে। প্রতি পর্বে চারজন কবিকে মঞ্চে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তারা তাদের গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য এবং কবিতা পাঠ করেছেন। পুরো অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেছেন কবি-কথা সাহিত্যিক জাহাঙ্গীর হোসাইন।
শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি পরিশোধের জন্য সরকার প্রদত্ত সুদমুক্ত ঋণ যথাসময়ে ফেরত না দিলে সংশ্লিষ্ট শিল্প কারখানার মালিকদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
বুধবার সচিবালয়ে আয়োজিত এক সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব, ব্যাংকিং ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিনিধি, বিজিএমইএ-এর সভাপতি এবং সংশ্লিষ্ট ঋণগ্রহীতা কারখানার মালিকদের নিয়ে এ সভার আয়োজন করা হয়।
ড. এম সাখাওয়াত হোসেন জানান, বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিকরা শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় শ্রম অসন্তোষ নিরসনের লক্ষ্যে সরকার বার্ডস গ্রুপ, টিএনজেড গ্রুপ, বেক্সিমকো গ্রুপ, ডার্ড গ্রুপ, নায়াগ্রা টেক্সটাইলস লিমিটেড, রোয়ার ফ্যাশন লিমিটেড, মাহমুদ জিন্স লিমিটেড, স্টাইল ক্রাফট লিমিটেড এবং গোল্ডস্টার গার্মেন্টস লিমিটেডকে অর্থ বিভাগ এবং কেন্দ্রীয় তহবিল, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় থেকে সুদমুক্ত ঋণ প্রদান করে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো ঋণ চুক্তির আওতায় উক্ত অর্থ পরিশোধ করছেন না।
তিনি বলেন, তাদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর অবস্থানে যাবে। তাদের পাসপোর্ট জব্দের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
ইতোমধ্যে কয়েকজন পলাতক মালিকের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
তিনি পলাতক মালিক ও প্রতিষ্ঠানের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের পাসপোর্ট স্থগিত রাখার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশনা দেন।
উপদেষ্টা বলেন, "এই ঋণের টাকা শ্রমিকের টাকা এবং জনগণের ট্যাক্সের টাকা। এ টাকা আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে।"
তিনি বলেন, এই ক্ষেত্রে কোনোরকম ছাড় দেওয়া হবে না।
তিনি সংশ্লিষ্ট শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিক ও প্রতিনিধিদের সংশ্লিষ্ট লিয়েন ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা করে প্রতিষ্ঠানের জমি, কারখানা, যন্ত্রপাতি বিক্রি করে হলেও ডিসেম্বর মাসের মধ্যে ঋণের সকল টাকা পরিশোধ করতে বলেন।
এ বিষয়ে বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ-কে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান তিনি।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ও শিল্প প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা সভায় উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য