নেই ডাক্তার, নেই প্যাথলজিস্ট। এমনকি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লাইসেন্সও নেই। তবু দেদার দিয়ে যাচ্ছে প্যাথলজিক্যাল রিপোর্ট, যা বিশ্বাস করে প্রতারিত হচ্ছেন সন্তানের জন্য পাগলপ্রায় অনেকে।
রাজধানীর পান্থপথ মোড়ের গাজী টাওয়ারের চতুর্থ তলায় অবস্থিত হার্টবিট ফার্টিলিটি অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার বেশ কয়েক মাস ধরে এমন প্রতারণা করে আসছে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা রোগীদের সঙ্গে।
বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগীর অভিযোগের ভিত্তিতে গত তিন মাস অনুসন্ধান চালিয়েছে নিউজবাংলা।
অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে শামীম আহম্মদ নামে এক লোক হার্টবিট ফার্টিলিটি অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার খুলে বসেন পান্থপথে, যার আসলে চিকিৎসা পেশায় কোনো অভিজ্ঞতাই নেই।
ভুঁইফোঁড় এই প্রতিষ্ঠানটি এমন সব দম্পতিকে টার্গেট করে, যাদের অনেক দিনেও সন্তান হয়নি। এরপর তাদের আসলে কী কী সমস্যা রয়েছে, সেসব পরীক্ষার জন্য নমুনা নেয়। প্রতিটি নমুনা পরীক্ষার জন্য রয়েছে আলাদা ফি। সিমেন অ্যানালাইসিসের ফি এক হাজার টাকা।
অধিকাংশ রোগীই এই পরীক্ষার জন্য নমুনা দেন। তবে কোনো ধরনের পরীক্ষা না করেই ভুয়া রিপোর্ট দিয়ে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। আবার এই টেস্ট রিপোর্টও দেয়া হচ্ছে গ্রিন রোডেরই আরেকটি প্রতিষ্ঠানের নামে, যেটি গত বছর থেকে বন্ধ রয়েছে।
অনুসন্ধানে আরও জানা গেছে, প্রতিষ্ঠানটি পাঁচ মাস আগে চালু হলেও এখনো স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে লাইসেন্সই পায়নি তাদের কর্যক্রম চালানোর জন্য।
ভুক্তভোগীদের একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মোহাম্মাদ রুবেল হোসেন। থাকেন রাজধানীর বসিলা এলাকায়। পাঁচ বছর আগে বিয়ে করলেও তাদের কোনো সন্তান হয়নি।
নিউজবাংলাকে রুবেল জানান, কয়েক বছর ধরে একটি সন্তানের আশায় সামর্থ্য অনুযায়ী সব ধরনের চেষ্টাই করেছেন তিনি। এ-ডাক্তার থেকে ও-ডাক্তারের কাছে গেছেন। তারা একেকজন একেক ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পাঠিয়েছেন। কিন্তু সেসব পরীক্ষা করে ডাক্তারের পরামর্শ মেনে চলেও সন্তানের মুখ দেখতে পাননি তিনি।
এরই এক পর্যায়ে এক ডাক্তারের পরামর্শে রুবেল তার সিমেন পরীক্ষার জন্য গত ২৪ মার্চ সকালে গ্রিন রোডের হার্টবিট ফার্টিলিটি অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যান।
সকাল ১০টায় টেস্টের জন্য সিমেন দেন রুবেল। তাকে বলা হয় দুই ঘণ্টা অপেক্ষা করতে। দুপুর ১২টার মধ্যেই তাকে রিপোর্ট দিয়ে দেন রিসিপশনিস্ট। কিন্তু রিপোর্ট দেখেই চমকে যান তিনি।
নিউজবাংলাকে রুবেল বলেন, ‘টেস্টের রিপোর্ট হাতে পেয়েই আমার সন্দেহ হয়। কারণ আমি যেখানে টেস্ট করতে গেলাম, সেই প্রতিষ্ঠানের নাম হার্টবিট ফার্টিলিটি অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার। কিন্তু টেস্টের রিপোর্টের ওপরে লেখা আছে গ্রিন ইনফার্টিলিটি সেন্টার। তার মানে রিপোর্টটি হার্টবিট ফার্টিলিটি অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের না।
‘আমার মনে আরও প্রশ্ন দেখা দিল, মাত্র দুই ঘণ্টার মধ্যেই আরেক জায়গা থেকে কীভাবে রিপোর্ট করা সম্ভব? তখন আমার সন্দেহ হয়; এখানে নিশ্চয়ই কোনো ঝামেলা আছে। তখনই আমি রিপোর্টের নিচে যে ডাক্তারের সই আছে, সেই ডাক্তার রুবায়েতুল জান্নাতের সঙ্গে দেখা করতে চাই। কিন্তু রিসিপশনিস্ট বলেন এখন তো ডাক্তার স্যার নেই।’
রুবেল জানান, তখন তার মনে প্রশ্ন আসে, ডাক্তার রুবায়েতুল জান্নাত না থাকলে তার সইটা করল কে?
এমন পরিস্থিতিতে রুবেলের কথার সূত্র ধরে অনুসন্ধানে নামে নিউজবাংলা। দুই সন্তানের পিতা মুক্তার উদ্দিনকে (ছদ্মনাম) নিঃসন্তান সাজিয়ে গত ৩ এপ্রিল সিমেন অ্যানালাইসিসের টেস্ট করতে তাকে পাঠানো হয় হার্টবিট ফার্টিলিটি অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। সঙ্গে ছিল নিউজবাংলা।
মুক্তার উদ্দিন দুপুর ১২টায় সিমেনের নমুনা দিয়ে পরীক্ষার ফল পেয়ে যান বেলা ২টার মধ্যেই। রিপোর্টটি হাতে পাওয়ার পর বসিলার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী রুবেলের অভিযোগের অক্ষরে অক্ষরে মিল পায় নিউজবাংলা। রুবেলের মতো তার রিপোর্টও গ্রিন ইনফার্টিলিটি সেন্টারের প্যাডে দেয়া হয়েছে। রিপোর্টের নিচেও সেই ডাক্তার রুবায়েতুল জান্নাতের সই রয়েছে।
যদিও এই দুই-আড়াই ঘণ্টায় হার্টবিট ফার্টিলিটি অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে কোনো ডাক্তার বা প্যাথলজিস্টকে ঢুকতে বা বের হতে দেখা যায়নি। পুরোটা সময় সেন্টারে ছিলেন শুধু একজন রিসিপশনিস্ট ও দুজন অফিস সহকারী।
তাহলে ডাক্তার রুবায়েতুল জান্নাত কই, রিপোর্টে তার সই কীভাবে এল এবং গ্রিন ইনফার্টিলিটি সেন্টারইবা কোথায়? এমন সব প্রশ্ন নিয়ে নিউজবাংলা কথা বলতে চায় রিসিপশনিস্টের সঙ্গে।
টেস্ট রিপোর্টে স্বাক্ষরকারী ডাক্তার রুবায়েতুল জান্নাত কি সেন্টারে আছেন- জানতে চাইলে এই তরুণী বলেন, ‘ডাক্তার স্বাক্ষর করে চলে গেছেন।’
এ সময় নাম জানতে চাইলে বিরক্ত হন ওই রিসিপশনিস্ট। বলেন, ‘আমার নাম দিয়ে আপনারা কী করবেন? আপনাদের যা বলার আমাদের মালিক শামীম আহম্মদকে বলবেন।’
এরপর দীর্ঘদিন হার্টবিট ফার্টিলিটি অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নজর রেখেও শামীম আহম্মদ কখন সেখানে ঢুকছেন-বেরোচ্ছেন তা নিশ্চিত হতে পারেনি নিউজবাংলা। এদিকে করোনা বাড়তে থাকায় শুরু হয় লকডাউন; থেমে যায় নিউজবাংলার নজরদারিও।
লকডাউন কিছুটা শিথিল হওয়ার পর আবারও হার্টবিট ফার্টিলিটি অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নজর রাখা শুরু করে নিউজবাংলা। এরই ধারাবাহিকতায় ৩ জুন বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে সেন্টারেই দেখা মেলে মালিক শামীম আহম্মদের।
হার্টবিট ফার্টিলিটি অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পরীক্ষা করালে গ্রিন ইনফার্টিলিটি সেন্টারের প্যাডে রিপোর্ট দেয়া হয় কেন, জানতে চাইলে প্রথমেই বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি। বলেন, ‘এ রকম কাজ আমরা কখনোই করি না। এটা সম্ভব না।’
এরপর তাকে জানানো হয়, আমরাই একজনকে রোগী সাজিয়ে এখানে পাঠিয়েছিলাম। তার ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছে। এ কথা শোনার পর বিব্রত হয়ে পড়েন হার্টবিট ফার্টিলিটি অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক শামীম। সুর পাল্টে বলেন, ‘হয়তো ভুল করে এমন হতে পারে।’
তখন শামীম আহম্মদের কাছে জানতে চাওয়া হয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে তার এই প্রতিষ্ঠানের নামে নিবন্ধন নেয়া হয়েছে কি না? নিবন্ধন নম্বর কত?
জবাবে প্রথমে তিনি বলেন, ‘আমার সব লাইসেন্সই আছে।’ দেখতে চাইলে কিছুক্ষণ পর তিনি বলেন, ‘আবেদন করেছি। কিছুদিনের মধ্যেই পেয়ে যাব।’
লাইসেন্স ছাড়া কীভাবে প্রতিষ্ঠান চালাচ্ছেন, জানতে চাইলে তিনি কোনো উত্তর দিতে পারেননি।
এদিকে ৩ জুন বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট ঘেঁটে দেখা গেছে, নিবন্ধন পেতে গত ২৭ মে আবেদন করেছে হার্টবিট ফার্টিলিটি অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, যা পেন্ডিং রয়েছে।
অধিদপ্তরের হাসপাতাল শাখার এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘হার্টবিট ফার্টিলিটি অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার নামে একটি প্রতিষ্ঠানের অনুমতির জন্য আমাদের কাছে আবেদন করা হয়েছিল। তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা পরিদর্শনে অসংখ্য ত্রুটি পাই। তাই আমরা তাদের লাইসেন্স দিই নাই।’
হার্টবিট ফার্টিলিটি অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক শামীমের সঙ্গে কথা বলার সময় টেস্টের রিপোর্টে সই থাকা ডাক্তার রুবায়েতুল জান্নাতের পরিচয় জানতে চায় নিউজবাংলা। তখন তিনি শুধু তার মোবাইল ফোন নম্বর দেন।
সেখান থেকে বেরিয়ে ফোন দিলে ডাক্তার রুবায়েতুল জান্নাত জানান, তিনি বারডেম হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগের আবাসিক চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত আছেন।
আপনি পার্টটাইম চাকরি করেন হার্টবিট ফার্টিলিটি অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। কিন্তু গ্রিন ইনফার্টিলিটি সেন্টারের প্যাডে আপনার সই কেন?
নিউজবাংলার এমন প্রশ্নে রুবায়েতুল জান্নাত বলেন, ‘আমি ওইখানে কাজ করি ঠিক আছে। কিন্তু আপনারা যে স্বাক্ষরের কথা বলছেন সেটা আমার না। কারণ আমি স্বাক্ষর করি হার্টবিট ফার্টিলিটি অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের টেস্ট রিপোর্টে; গ্রিন ইনফার্টিলিটি সেন্টারের প্যাডে না। তা ছাড়া আমি রোজার আগেই হার্টবিট ফার্টিলিটি অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের চাকরি ছেড়ে দিয়েছি।’
রুবায়েতুল জান্নাতের সঙ্গে কথা বলার পর নিউজবাংলা যায় পান্থপথের রূপায়ণ প্রাইম টাওয়ারে অবস্থিত গ্রিন ইনফার্টিলিটি সেন্টারে, যে প্রতিষ্ঠানের প্যাড ব্যবহার করে টেস্ট রিপোর্ট দেয় শামীম আহম্মদের হার্টবিট ফার্টিলিটি অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার।
সেখানে গিয়ে কথা হয় গ্রিন ইনফার্টিলিটি সেন্টারের মালিক ডাক্তার নাবিদ তওসিফ হোসাইনের সঙ্গে। তিনি জানান, তার প্রতিষ্ঠানটি গত জানুয়ারি মাসেই বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
কেন বন্ধ করে দিয়েছেন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখনকার হার্টবিট ফার্টিলিটি অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক শামীম আহম্মদ আর আমি গত বছর এই গ্রিন ইনফার্টিলিটি সেন্টার প্রতিষ্ঠা করি।
‘কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই দেখি শামীম আহম্মদ ডাক্তারদের স্বাক্ষর নকল করে রোগীদের সব ধরনের প্যাথলজিক্যাল রিপোর্ট দিচ্ছেন। এ নিয়ে তার সঙ্গে কথা বলতে গেলে ঝামেলা শুরু হয়। এরপর আমি আমার মানসম্মানের কথা চিন্তা করে নিজেই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে চিঠি দিয়ে আমাদের প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করে দিই।’
হার্টবিট ফার্টিলিটি অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে গ্রিন ইনফার্টিলিটি সেন্টারের প্যাডে টেস্ট রিপোর্ট দেয়া হচ্ছে, জানালে ডাক্তার নাবিদ তওসিফ হোসাইন বলেন, ‘বিষয়টি আমি বেশ কিছু রোগীর বরাতে জানতে পেরেছি। বিষয়টা আমার জন্য বিব্রতকর। কারণ ওই সব রোগীর কোনো ক্ষতি হলে তার দায়ভার তো আমার ওপরেও পড়বে। সে জন্য আমি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে অবহিত করেছি।’
এ ধরনের রিপোর্টের ফলে রোগী কী ধরনের ক্ষতির মুখে পড়তে পারেন, তা জানতে নিউজবাংলা কথা বলেছে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের গাইনি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ডা. ফাতেমা আশরাফের সঙ্গে।
তিনি বলেন, ‘এটা তো একটা প্রতারণা। সবার চোখের সামনে লাইসেন্স ছাড়া, ডাক্তার ছাড়া নন-মেডিক্যাল মানুষ দিয়ে একটা ডায়াগনস্টিক সেন্টার চলছে কীভাবে?
‘সাধারণ মানুষ সন্তান না হওয়ার কষ্ট নিয়ে এখানে এসে প্রতারিত হচ্ছেন। কিন্তু তারা জানতেও পারছে না তারা প্রতারিত হচ্ছেন। আমি একজন চিকিৎসক হিসেবে এর কঠিন শাস্তি চাই।’
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক জয় চৌধুরীর নেতৃত্বে গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন সাংবাদিকরা।
টেলিভিশন ক্যামেরাম্যান জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের (টিসিএ) উদ্যোগে বুধবার দুপুরে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএফডিসি) সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন বিএফইউজে সভাপতি ওমর ফারুক, মহাসচিব দীপ আজাদ, ডিইউজে সভাপতি সাজ্জাদ আলম তপু ও সোহেল হায়দার চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম মুজতবা ধ্রুব, বাচসাস সভাপতি রাজু আলীম, সাধারণ সম্পাদক রিমন মাহফুজ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান বাবু প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, সাংবাদিকরা নানা ক্ষেত্রে আজ নির্যাতিত। তারা পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নানাভাবে বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন। চলচ্চিত্রে যারা অভিনয় করেন তাদেরকে আমরা মননশীল মনে করি। কিন্তু তারা যখন মাস্তানের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন, তখন তারা সমাজে কী বার্তা দেন?
নারকীয় এই হামলায় নেতৃত্ব দেয়া জয় চৌধুরী, শিবা শানু ও আলেকজান্ডার বোসহ হামলায় জড়িত সবাইকে শিল্পী সমিতির সদস্যপদ বাতিলসহ আইনের আওতায় আনার দাবি জানান বক্তারা।
মানববন্ধনে আরও অংশ নেন বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত বিনোদন বিটের সাংবাদিকরা।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার বিকেলে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নবনির্বাচিত কমিটির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান শেষে শিবা শানু, জয় চৌধুরী ও আলেকজান্ডার বোর নেতৃত্বে সাংবাদিকদের ওপর হামলা করা হয়। এতে প্রায় ২০ জন সাংবাদিক আহত হন। হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন চারজন।
তদন্ত কমিটি
এদিকে হামলার ঘটনা তদন্তে ১১ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি ও সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে পাঁচ জন করে রাখা হয়েছে। আর উপদেষ্টা হিসেবে আছেন প্রযোজক আরশাদ আদনান।
দশজনের তদন্ত কমিটিতে সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে লিমন আহমেদ, রাহাত সাইফুল, আহমেদ তৌকির, বুলবুল আহমেদ জয় ও আবুল কালাম এবং শিল্পী সমিতির পক্ষ থেকে মিশা সওদাগর, ডি এ তায়েব, নানাশাহ, রুবেল ও রত্না রয়েছেন।
আরও পড়ুন:উপজেলা নির্বাচন থেকে মন্ত্রী ও এমপিদের স্বজনরা সরে না দাঁড়ালে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে বুধবার দলের সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন।
কাদের বলেন, ‘দলীয় সংসদ সদস্য এবং মন্ত্রীদের নিকটাত্মীয় এবং স্বজনদের প্রার্থী না হতে দলীয় যে নির্দেশনা, তা না মানলে সময়মতো সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উপজেলা নির্বাচনের প্রথম পর্যায়ে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় পেরিয়ে গেছে। এদের মধ্যে অনেকেই বলেছেন যে, আমরা বিষয়টি আরও আগে অবহিত হলে আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে সুবিধা হতো। তারপরও কেউ কেউ প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন, কেউ কেউ করেননি।
‘নির্বাচন কমিশনে সময়সীমা শেষ হয়ে গেলে কেউ ইচ্ছা করলে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করতে পারেন। এ বিষয়টা চূড়ান্ত হতে নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। এখানে কেউ অমান্য করলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ আছে দলে; সময়মতো সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের বিষয়ে কাদের বলেন, ‘আমাদের দলে ডিসিপ্লিনারি অ্যাকশনের বিষয়টি আছে। দল যার যার কর্মকাণ্ড বিবেচনায় বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কৌশলে ডিসিপ্লিনারি অ্যাকশন নিয়ে থাকে। চূড়ান্ত পর্যায়ে যারা প্রত্যাহার করবে না, এ ব্যাপারে দলের সিদ্ধান্ত সময়মতো নেয়া হবে।’
চূড়ান্ত পর্যায়ে এসেও কেউ প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করলে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে কি না, এমন প্রশ্নে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘সাধারণ ক্ষমা একটা বিশেষ পরিস্থিতিতে দলীয় রণকৌশল। সেটা হতেই পারে। সেটা দলের সভাপতি নিতে পারেন। নির্বাচন হওয়া পর্যন্ত প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সুযোগ আছে।’
বিএনপির সমাবেশের দিনে আওয়ামী লীগেরও সমাবেশ থাকে—সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপির সন্ত্রাস থেকে জনগণকে রক্ষায় কর্মসূচি দেয় আওয়ামী লীগ। বিএনপি একতরফা সমাবেশ করতে গেলে সন্ত্রাস, আগুন সন্ত্রাসের আশঙ্কা থেকেই যায়। জনগণের জানমাল রক্ষায় সরকারি দল হিসেবে আমাদের দায়িত্ব আছে।
‘আমরা মাঠে থাকলে তারা এসব অপকর্ম করতে মানসিকভাবে চাপে থাকবে। সে জন্য আমরা কর্মসূচি দিই। বিএনপির চোরাগোপ্তা হামলা প্রতিহত করতে জনগণের স্বার্থে আমাদের কর্মসূচি থাকা উচিত।’
আরও পড়ুন:গ্যাস পাইপলাইনের জরুরি কাজের জন্য বুধবার তিন ঘণ্টা রাজধানীর কয়েকটি এলাকায় গ্যাস থাকবে না।
এদিন দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত এ অবস্থা বিরাজ করবে।
তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের তথ্য অনুযায়ী, যেসব এলাকায় সব শ্রেণির গ্রাহকদের গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে সেগুলো হলো- শনির আখড়া, বড়ইতলা, ছাপড়া মসজিদ, দনিয়া, জুরাইন, ধোলাইরপাড় ও কদমতলী।
আশপাশের এলাকায় গ্যাস সরবরাহে চাপ কম থাকতে পারে জানিয়ে গ্রাহকদের সাময়িক অসুবিধার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে তিতাস গ্যাস।
রাজধানীর সদরঘাটের শ্যামবাজার ঘাটে একটি লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।
মঙ্গলবার দুপুর ১২টা ৫৫ মিনিটে ওই আগুনের খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। এমভি বাঙালি নামের লঞ্চটিতে কোনো যাত্রী ছিল না।
ফায়ার সার্ভিসের গণমাধ্যম কর্মকর্তা তালহা বিন জসিম জানিয়েছেন, দুপুর ১টা ৫ মিনিটে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় চারটি ইউনিট। পরে যোগ দেয় আরও একটি ইউনিট।
তিনি জানান, দুপুর পৌনে ২টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। লঞ্চটির তৃতীয় তলায় আগুনের সূত্রপাত। আগুনের কারণ ও বিস্তারিত তথ্য তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, লঞ্চটি নোঙর করা ছিল। হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে (পিএমও) গেছেন কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি।
মঙ্গলবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পৌঁছালে শেখ হাসিনা আমিরকে টাইগার গেটে ফুলের তোড়া দিয়ে স্বাগত জানান। খবর বাসসের
তারা সেখানে একান্ত বৈঠকেও মিলিত হবেন। পরে তারা দুই দেশের মধ্যে চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর প্রত্যক্ষ করবেন।
পিএমও ত্যাগের আগে আমির টাইগার গেটে রক্ষিত ভিজিটরস বুকেও সই করবেন। এরপর তিনি বঙ্গভবনে যাবেন যেখানে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন কাতার আমিরের সম্মানে মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করেছেন।
সন্ধ্যায় আমির একটি বিশেষ বিমানে কাতারের উদ্দেশে যাত্রা করবেন।
রাষ্ট্রপতি মো.সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ আমন্ত্রণে কাতারের আমির সোমবার দু দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ঢাকা এসেছেন।
আগামী ২৬ এপ্রিলের (শুক্রবার) শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ স্থগিত করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। পুলিশের অনুমতি না পাওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক মো. রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সমাবেশের অনুমতি চেয়ে পুলিশের কাছে আবেদন করা হয়েছিল, কিন্তু অনুমতি দেয়া হয়নি। ফলে সমাবেশ আপাতত স্থগিত। শান্তি সমাবেশের তারিখ পরে জানানো হবে।’
প্রসঙ্গতঃ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের আয়োজনে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে এ শান্তি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।
রোববার (২১ এপ্রিল) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশের ঘোষণা দেয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) বেলা ৩টা থেকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করা হবে।
অবশ্য এর আগে গত শনিবার (২০ এপ্রিল) চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ দলের নেতা-কর্মীদের মুক্তির দাবিতে ২৬ এপ্রিল বিকেলে নয়াপল্টনে সমাবেশ ডেকেছিল বিএনপি। পরে তাপপ্রবাহের কারণ দেখিয়ে সোমবার তা স্থগিত করে দলটি।
রাজধানীর গুলিস্তানে গোলাপ শাহ মাজারের সামনে থেকে অজ্ঞাত এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
সোমবার সকাল ৯টার দিকে ৪০ বছর বয়সী ওই ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মর্গে পাঠানো হয়।
শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ আরিফ নেওয়াজ বলেন, আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থল গোলাপ শাহ মাজার সংলগ্ন ফুটপাত থেকে ওই মরদেহ উদ্ধার করি,পরে আইনি প্রক্রিয়া শেষে ঢাকা মেডিক্যালের মর্গে পাঠানো হয়।
তিনি বলেন, আশেপাশের লোকদের সাথে কথা বলে জানতে পারি, মৃত ব্যক্তি ভবঘুরে প্রকৃতির ছিলেন। ভিক্ষাবৃত্তি করতেন এবং সেখানে ঘুমাতেন। তার পরিচয় এখনো জানা যায়নি তবে জানার চেষ্টা চলছে।
এসআই বলেন, সিআইডির ক্রাইম সিনকে খবর দেয়া হয়েছে। ফিঙ্গারপ্রিন্টের মাধ্যমে হয়তো তার পরিচয় জানা যেতে পারে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ হাসপাতালের জরুরি বিভাগ মর্গে রাখা হয়েছে।
মন্তব্য