দেশের বৃহত্তম বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানি ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি)। গ্রাহকদের নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহে জীবন বাজি রেখে রাত-দিন কাজ করতে হয় এখানকার লাইনম্যানদের। অভিযোগ আছে, ব্যাংকে নির্দিষ্ট সেলারি অ্যাকাউন্ট থাকলেও মাস শেষে যে টাকা ঢোকে, তার পুরোটা তুলতে পারেন না এই বিদ্যুৎযোদ্ধারা।
নিউজবাংলার অনুসন্ধানে জানা গেছে, ব্যাংক থেকে এসএমএস দিয়ে তাদের যে টাকা ঢোকার কথা জানানো হয়, আসলে তার অর্ধেকটা পান তারা। সে টাকাও তাদের নিতে হয় কয়েক দিন পর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে হাতে হাতে। রক্ত পানি করা পরিশ্রমের টাকার অর্ধেকটা পেলেও বিষয়টি নিয়ে মুখ খোলার সাহস পান না এসব লাইনম্যান।
এই বঞ্চনার কথা সাহস করে নিয়োগদাতা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বললে তাদের বলা হয়, ‘এটাই সিস্টেম। চাকরি করলে করো, না হলে চলে যাও।’ বিষয়টি নিয়ে ডিপিডিসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে গিয়েও কোনো লাভ হয়নি বলে বলছেন লাইনম্যানরা।
উদাহরণ দিয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন লাইনম্যান নিউজবাংলাকে জানান, এই চাকরিতে ঢুকতে অন্তত ৫০ হাজার টাকা ঘুষ দিতে হয়। শুরুতে প্রত্যেক লাইনম্যানকে নিয়োগ দেয়া হয় ১৪ হাজার টাকা মাসিক বেতনে। কয়েক বছর কঠোর পরিশ্রমের পর বেতন বাড়ে এক-দুই হাজার টাকা।
তারা জানান, ধরেন, কোনো লাইনম্যান কয়েক বছর কাজ করার পর তার বেতন হয়েছে ১৭ হাজার টাকা। ব্যাংক থেকে তার কাছে ১৭ হাজার টাকা ঢোকার এসএমএস এলেও তিনি পান সর্বোচ্চ ৯ হাজার টাকা। এটাই এখানকার অলিখিত নিয়মে পরিণত হয়েছে।
লাইনম্যানদের এমন শাসন ও শোষণের বিষয়টি নিউজবাংলা সম্প্রতি জানতে পেরেছে কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে, যারা এর প্রমাণ হিসেবে তাদের ব্যাংক চেক, সেলারির এসএমএস দিয়েছেন এই প্রতিবেদককে।
লাইনম্যানদের কাছে এসব অভিযোগের তথ্য-প্রমাণ পাওয়ার পর রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাব-সংলগ্ন বিদ্যুৎ ভবনের চতুর্থ তলায় ডিপিডিসির অফিসে গিয়ে খোঁজ নেয় নিউজবাংলা।
সেখানকার কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ডিপিডিসির আওতায় লাইনম্যান হিসেবে কাজ করেন ৪৫০ জন। লাইনম্যানদের এই সংখ্যা ঠিক হলে মাসে জনপ্রতি সর্বনিম্ন ৭ হাজার টাকা আত্মসাৎ করা হলেও মোট টাকার পরিমাণ দাঁড়ায় ৩১ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
ডিপিডিসির ভুক্তভোগী এক লাইনম্যান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের মতো লাইনম্যানদের চাকরি হয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে। ডিপিডিসির আন্ডারে আমরা আউটসোর্সিংয়ে কাজ করি। নিয়োগ দেয় ডিপিডিসির ঠিকাদাররা।
‘চাকরিতে আমাদের স্টার্টিং বেতন ধরে ১৪ হাজার টাকা। অ্যাকাউন্টে এসএমএস আসে ১৪ হাজারের। কিন্তু আমরা ওই বেতনটা পাই না। আমার ১৭ হাজার টাকা বেতন। আমার নামে ব্যাংক অ্যাকাউন্টও খুলে দিছে অফিস। ব্যাংক থেকে মেসেজ আসে ১৭ হাজার টাকাই ঢুকছে। এই দেখেন মেসেজ। মাসের ৩ তারিখ মেসেজ আসছে। কিন্তু মাসের ১২ তারিখ আমারে ধরিয়ে দিল ৯ হাজার টাকা।’
অ্যাকাউন্ট আপনাদের নামে; অন্যরা টাকা তুলছেন কীভাবে- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘প্রথম দিকে আমাদের কারও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ছিল না। ঠিকাদার যারা আমাদের চাকরি দিত, তাদের হাত থেকেই টাকা নিতে হতো। তখনও আমাদের সবার বেতনের টাকা মারা হতো।
‘এগুলো নিয়ে বলাবলি হওয়ার কারণে সরকার বলছে, আমাদের নামে অ্যাকাউন্ট খুলে যেন টাকা দেয়া হয়। তাই বছর দু-এক হলো আমাদের অ্যাকাউন্ট হয়েছে। কিন্তু সে অ্যাকাউন্টে যে বেতন ঢোকে, তার সব টাকা আমাদের কপালে জোটে না। হাতে হাতেই বেতন দেয় ঠিকাদার, তাও অর্ধেক।’
আরেকজন ভুক্তভোগী বলেন, ‘লাইনম্যানের এই চাকরিতে ঢুকতে ৫০ হাজার নেয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। সবার কাছ থেকে নেয় কি না জানি না। আমি যাদের চিনি, সবার কাছ থেকেই ৫০ হাজার নিছে। তারপরও আমাদের ঠকায়।’
কীভাবে ঠকাচ্ছে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যে ঠিকাদার আমাদের চাকরি দিছে, তারা ব্লাংক চেকে আমাদের সই নিয়ে নেয়। একেকবার তিনটা করে চেকে সই নেয়। ওই তিনটা শেষ হওয়ার আগেই আরও তিনটায় সই নেয়। এই দেখেন, চেকের ছবি তুলে আনতে বলছিলেন, আনছি। ওরা আমাদের কারেন্টের মতো করে রক্ত চুষে খায়। আমরা কেউ কিছু কইতে পারি না চাকরি হারানোর ভয়ে।’
ভুক্তভোগী এসব লাইনম্যান বলছেন, চুক্তির যে বেতন তার অর্ধেক টাকা কেন দেয়া হয়- সে অভিযোগ করলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বলে, ‘এটাই সিস্টেম। চাকরি করলে করো, না হলে যাও।’ আর ডিপিডিসির স্যারদের বললে, তারা কোনো সাড়া দেন না।
সহকর্মীদের কথায় সাহস পেয়ে নিউজবাংলার কাছে মুখ খোলেন ডিপিডিসির আরও একজন লাইনম্যান। বলেন, ‘আমরা ডিপিডিসির কর্মী। কিন্তু আমাদের চাকরের সমান দামও নেই। আমাদের রক্ত পানি করা বেতন মেরে খায় ওরা। পিলারে পিলারে জীবন হাতে নিয়ে কাজ করি। তারপরও যদি আমাদের বেতনের টাকা মেরে খায়, তাহলে কেমন লাগে বলেন? ৪ তারিখের মধ্যে সেলারির এসএমএস আসে। কিন্তু ঠিকাদার হাতে টাকা দেয় ১০ তারিখের পর, তাও অর্ধেক।’
বিষয়টি নিয়ে নিউজবাংলার সঙ্গে কথা হয়েছে আরও একজন লাইনম্যানের। আক্ষেপ করে তিনি বলেন, ‘এমনতিই আমাদের মতো লাইনম্যানদের বেতন কম। তারপর টাকা মেরে খায়। এ জন্য অনেকে খারাপ কাজ করে ফেলে।’
উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি কয়েকজন লাইনম্যানের চাকরি গেছে। বলা হচ্ছে, তারা কেব্ল চুরি করেছে, তাই চাকরি গেছে।’
এ সময় তিনি তীব্র ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, ‘বেতনের টাকা মেরে খেলে চুরি করবে না তো কী করবে? সংসার চালাবে কীভাবে? নিজে চলবে কীভাবে।’
লাইনম্যানদের পরিচয়পত্র ও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ঘেঁটে দেখা যায়, জেডএফ এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দিয়েছে তাদের।
লাইনম্যানদের অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার মোকলেসুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আপনি যেসব বিষয়ে বলছেন, এগুলো সত্য না।’
তাহলে সত্য কী- জানতে চাইলে তিনি আর কথা বলতে চাননি।
এ ব্যাপারে ডিপিডিসি অফিসে কথা হয় সেখানকার চিফ কো-অর্ডিনেশন অফিসার জুলফিকার আলীর সঙ্গে। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘এগুলো হয়ে থাকতে পারে। অভিযোগের তথ্য-প্রামণ থাকলে অসৎ লোকদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া দরকার। এর সঙ্গে যদি ডিপিডিসির লোকও জড়িত থাকে, ছাড় দেয়া হবে না।’
ডিপিডিসির ঠিকাদার নিয়োগ শাখার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (কন্ট্রাক্ট অ্যান্ড প্রকিউরমেন্ট) সালেক মাহমুদের কাছে অভিযোগের ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে এ ব্যাপারে কেউ অভিযোগ করেনি। এমন কোনো প্রমাণ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
ডিপিডিসির উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) নিহার রঞ্জন সরকার বলেন, ‘মানুষ নিয়ে যারা ব্যবসা করে, তারা তো ব্লাড সাকার। ওরা তো মানুষের রক্তই চুষবে।’
আক্ষেপ করে তিনি বলেন, ‘কী আর বলব। বিষয়টি খতিয়ে দেখা উচিত।’
ডিপিডিসির ডিজিএম নিহার রঞ্জন সরকারের পর নিউজবাংলা কথা বলে প্রতিষ্ঠানটির আরেক কর্মকর্তার সঙ্গে, যিনি তার পরিচয় প্রকাশ করতে রাজি হননি।
এই লুটপাটে ডিপিডিসির লোকজনও জড়িত ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘ঠিকাদারদের বাপের ক্ষমতা আছে টাকা একা খাওয়ার? কারও ভাগ কেউ ছাড়ে না। এবার বুঝে নেন। দেখেন না, সবাই চুপ। এতই যদি ব্যবস্থা নেয়, শ্রমিকরা যখন অভিযোগ করে তখন তারা কই যায়?’
সিলেটে মধ্যরাতে খোলা মাঠ থেকে একটি স্থানীয় দৈনিক পত্রিকার কম্পিউটার ইনচার্জের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
নগরের হাজারিবাগ এলাকার পেছনের মাঠ থেকে বৃহস্পতিবার রাত ২টার দিকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
প্রাণ হারানো অমিত দাস শিবু স্থানীয় দৈনিক উত্তরপূর্বর কম্পিউটার ইনচার্জ হিসেবে কর্মরত ছিলেন। শিবুর গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জে। তিনি নগরের বাগবাড়ি নরসিংটিলা এলাকায় পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন।
সিলেট মহানগর পুলিশের (এসএমপি) এয়ারপোর্ট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) দেবাংশু কুমার দে এসব তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘রাতে কাজ শেষে অফিস থেকে বাসায় ফিরছিলেন অমিত। তার মৃত্যু রহস্যজনক মনে হচ্ছে। পাশেই তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেল রাখা ছিল।’
তিনি জানান, রাত ২টার দিকে স্থানীয় লোকজন মরদেহ দেখে থানা পুলিশকে ঘটনাটি জানায়।
এসএমপির উপপুলিশ কমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ বলেন, ‘আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসি। তার মরদেহের পাশে মোটরসাইকেলটি চাবি লাগানো অবস্থায় রাখা ছিল, তবে মোবাইল ফোন পাওয়া যায়নি। কিন্তু তার মোবাইলের শেষ লোকেশন ঘটনাস্থলেই দেখাচ্ছে।’
আজবাহার বলেন, ‘অমিতের দেহে কোনো আঘাতের চিহ্ন মেলেনি। এরপরও ঘটনাটিকে রহস্যজনক ধরে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ওসমানী হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।’
আরও পড়ুন:দেশের দুটি জেলায় অতি তীব্র ও ১৬টিতে তীব্র দাবদাহ চলছে জানিয়ে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, সেটি অব্যাহত থাকতে পারে।
রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এমন তথ্য জানিয়েছে।
পূর্বাভাসে সিনপটিক অবস্থা নিয়ে বলা হয়, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে।
বৃষ্টিপাতের বিষয়ে জানানো হয়, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দুই-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। একই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যান্য জায়গায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
তাপপ্রবাহ বা দাবদাহ নিয়ে বলা হয়, চুয়াডাঙ্গা ও যশোর জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, রাজশাহী, পাবনা, দিনাজপুর ও নীলফামারী জেলা এবং খুলনা বিভাগের অন্যান্য জেলার (১০ জেলার মধ্যে বাকি আটটি) ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। ঢাকা, মাদারীপুর, কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী, বগুড়া, নওগাঁ, সিরাজগঞ্জ, রংপুর, কুড়িগ্রাম, পঞ্চগড়, ময়মনসিংহ, মৌলভীবাজার, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, ফেনী ও বান্দরবান জেলাসহ বরিশাল বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।
দেশের কোনো অঞ্চলের তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে সেখানে মৃদু তাপপ্রবাহ বা দাবদাহ বইছে ধরা হয়।
তাপমাত্রা ৩৮ থেকে ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রির মধ্যে থাকলে মাঝারি এবং ৪০ থেকে ৪১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে তীব্র দাবদাহ ধরা হয়। অন্যদিকে তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার বেশি হলে বলা হয় অতি তীব্র দাবদাহ।
তাপমাত্রার বিষয়ে অধিদপ্তর জানায়, সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিভাব বিরাজমান থাকতে পারে।
আরও পড়ুন:রাজধানীর মুগদায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের একটি ময়লার গাড়ির ধাক্কায় এক শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে।
মুগদার বড়বাজারের সামনে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
প্রাণ হারানো মাহিন আহমেদ (১৩) মতিঝিল সরকারি আইডিয়াল স্কুলের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র ছিল। সে পরিবারের সঙ্গে উত্তর মুগদার মদিনাবাগে একটি বাসায় থাকত।
মাহিনের খলাত ভাই হিমেল জানান, মাহিনের বাবা একটি পোশাক কারখানায় কাজ করেন। দুই ভাই এক বোনের মধ্যে মাহিন দ্বিতীয়। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিল মাহিন, ওই সময় ময়লার গাড়িটি তাকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়।
পরে গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানে মাহিনের মৃত্যু হয়।
ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত ইনচার্জ সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মাসুদ মিয়া জানান, ময়নাতদন্তের জন্য শিশুটির মরদেহ ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মর্গে রাখা হয়েছে এবং বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানাকে জানানো হয়েছে।
এ ঘটনায় সিটি করপোরেশনের ময়লার গাড়িটি জব্দ করে চালককে আটক করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন:থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে যোগ দিতে শুক্রবার গভর্নমেন্ট হাউসে (থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়) পৌঁছেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ইউএনবি জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকাল সাড়ে ১০টার দিকে গভর্নমেন্ট হাউসে পৌঁছালে তাকে স্বাগত জানান থাই প্রধানমন্ত্রী।
বার্তা সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়, দুই পক্ষ পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ও আঞ্চলিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের কর্মকর্তারা।
বৈঠকের পর দুই প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে এশিয়ার দুই দেশের মধ্যে কিছু ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদারের লক্ষ্যে বেশ কয়েকটি দ্বিপক্ষীয় নথিতে সই করা হবে। দুই নেতার মধ্যে প্রায় ১৫ মিনিট একান্ত বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
গভর্নমেন্ট হাউসে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী থাই সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দলের দেয়া গার্ড অফ অনার পরিদর্শন করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গভর্নমেন্ট হাউসের অতিথি বইয়ে সই করার আগে স্রেথা থাভিসিন তার মন্ত্রিসভার সদস্যদের সঙ্গে তাকে পরিচয় করিয়ে দেন।
গভর্নমেন্ট হাউস ত্যাগ করার আগে শেখ হাসিনা সেখানে মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেবেন।
থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে ছয় দিনের সরকারি সফরে বুধবার ব্যাংককে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আরও পড়ুন:গাজীপুরের শ্রীপুরে বহুতল ভবনের ফ্ল্যাট থেকে এক দম্পতির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ সময় টেবিলের ওপরে একটি চিরকুট পাওয়া যায়।
উপজেলার মুলাইদ গ্রামের ফারুক খানের বহুতল ভবনের নিচ তলার একটি ফ্ল্যাট থেকে শুক্রবার সকালে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
প্রাণ হারানো ইসরাফিল (১৭) শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতি থানান হলদি গ্রামের বাসিন্দা ও তার স্ত্রী রোকেয়া খাতুনের (১৫) বাবার বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার ঈশ্বরগঞ্জ থানার পস্তারি গ্রাম।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে গত সাত থেকে আট মাস আগে তারা পরিবারের অমতে বিয়ে করেন। তারা দুজনই শ্রীপুরের মুলাইদ গ্রামের ফারুক হোসেনের বহুতল ভবনে ভাড়া থাকতেন। ইসরাফিল স্থানীয় একটি ওয়ার্কসপে ও রোকেয়া স্থানীয় একটি কারখানায় কাজ করতেন।
রোকেয়ার ভাই বোরহান উদ্দিন বলেন, ‘সাত থেকে আট মাস আগে পরিবারের অমতে তারা বিয়ের সম্পর্কে জড়িয়েছিল। বিয়ের পর তাদের সম্পর্ক ভালোই চলছি। সম্প্রতি ইসরাফিল তার বাবা-মায়ের সঙ্গে ঝগড়া করে বাড়ি থেকে চলে গিয়েছিল। পরে বৃহস্পতিবার তাদের বুঝিয়ে বাসায় আনা হয়। সকালে তাদের মৃত্যুর খবর পাই।’
ইসরাফিলের বাবা মফিজুল হক জানান, পাশাপাশি ফ্ল্যাটে বসবাস করতেন তারা। পরিবারের রান্নার কাজ তারা ইসরাফিলের ফ্ল্যাটে করতেন। শুক্রবার সকালে তাদের ফ্ল্যাটের দরজা খোলা দেখতে পেয়ে ভেতরে যান এবং ইসরাফিলকে ওড়নায় পেঁচানো ঝুলন্ত অবস্থায় এবং রোকেয়ার মরদেহ খাটের ওপর বিছানায় দেখতে পান।
শ্রীপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাখাওয়াত হোসেন জানান, ‘খবর পেয়ে একটি ফ্ল্যাট থেকে স্বামী-স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, প্রথমে স্ত্রী আত্মহত্যা করে। স্ত্রীর আত্মহত্যার বিষয়টি স্বামী সইতে না পেরে তিনিও আত্মহত্যা করেন।’
এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন:পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগর মোহনায় জেলের জালে এবার ধরা পড়েছে ২৬ কেজি ২৫০ গ্রাম ওজনের একটি কোরাল মাছ।
পরে সেই মাছটি কুয়াকাটা পৌর মাছ বাজারে বিক্রি করা হয়েছে ৩২ হাজার ৭৫০ টাকায়।
কুয়াকাটা পৌর মাছ বাজারের ‘কুয়াকাটা ফিস পয়েন্টের’ পরিচালক নাসির উদ্দিন বৃহস্পতিবার দুপুরে মাছটি কেনেন।
তিনি বলেন, ‘সাগর মোহনায় সচরাচর এত বড় মাছ পাওয়া যায় না। আজ দুপুরে মাছটি মার্কেটে আসার পর এক হাজার ২৫০ টাকা কেজি দরে কিনে নেই।’
স্থানীয় জেলেরা জানান, গত মঙ্গলবার কুয়াকাটার বাবলাতলা এলাকার জেলে রাসেল ‘মায়ের দোয়া’ নামের তার ট্রলারটি নিয়ে গভীর সমুদ্রে ইলিশ মাছ ধরতে রওনা হন। পরবর্তীতে বলেশ্বর নদীর সাগর মোহনায় রাত ২টার দিকে রাসেলের জালে এ বিশাল কোরাল মাছটি ধরা পড়ে।
রাসেল বলেন, ‘তীব্র তাপদাহ শুরুর পর থেকে সাগরে মাছ পড়ে না। ভাগ্য সহায় বলে এত বড় মাছ আল্লাহ দিয়েছেন। মাছটি তীরে নিয়ে আসলে স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ীরা মাছটি ক্রয় করতে চেয়েছেন। পরে কুয়াকাটা মাছ বাজারে এক হাজার ২৫০ টাকা কেজি দরে মাছটি বিক্রি করেছি।’
জানতে চাইলে কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা জানান, নদ-নদী এবং সাগরে বিভিন্ন মাছ পাওয়া যায়। সব সময় বড় মাছ ধরা পড়ছে না। সামুদ্রিক কোরাল এর চেয়েও অনেক বড় হয়।
সরকারের দেয়া ৬৫ দিন সাগরে সব ধরনের মাছ ধরার সফল কার্যক্রমের কারণেই এ ধরনের মাছ জেলেদের জালে ধরা পড়ছে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন:পাবনার সাঁথিয়ায় অগ্রণী ব্যাংকের কাশিনাথপুর শাখার ভল্ট থেকে ১০ কোটি ১৩ লাখ ৬২ হাজার ৩৭৮ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় ওই ব্যাংকের প্রধান তিন কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
অগ্রণী ব্যাংকের কাশিনাথপুর শাখা থেকে বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে তিনজনকে আটক করা হয়। দিনভর নানা তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ ও জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রাতে তাদের সাঁথিয়া থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। তিনজনকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
গ্রেপ্তার তিনজন হলেন অগ্রণী ব্যাংক কাশিনাথপুর শাখার প্রিন্সিপাল অফিসার আবু জাফর, ব্যবস্থাপক হারুন বিন সালাম ও ক্যাশিয়ার সুব্রত চক্রবর্তী, যাদের বাড়ি পাবনার বিভিন্ন উপজেলায়।
পুলিশের ভাষ্য, টাকা আত্মসাতের কথা স্বীকার করেছেন ক্যাশিয়ার সুব্রত চক্রবর্তী।
সাঁথিয়া থানা ও অগ্রণী ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পেয়ে অগ্রণী ব্যাংক রাজশাহী বিভাগীয় ও পাবনা আঞ্চলিক শাখা থেকে পাঁচ কর্মকর্তা বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে আকস্মিক অডিটে আসেন অগ্রণী ব্যাংক কাশিনাথপুর শাখায়। অডিট শেষে সেখানে ১০ কোটি ১৩ লাখ ৬২ হাজার ৩৭৮ টাকার আর্থিক অনিয়ম দেখতে পান তারা। পরে অডিট কর্মকর্তা সাঁথিয়া থানাকে অবহিত করলে পুলিশ অভিযুক্ত তিনজনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
এ ঘটনায় অগ্রণী ব্যাংক পাবনা আঞ্চলিক শাখার উপমহাব্যবস্থাপক রেজাউল শরীফ বাদী হয়ে সাঁথিয়া থানায় অভিযোগ করেন।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার সকালে বিভাগীয় অফিস থেকে পাঁচ সদস্যের অডিট টিম ব্যাংকে অডিট শুরু করে। ওই টিমের পাশাপাশি পুলিশ সদস্যরা দিনভর জিজ্ঞাসাবাদ করে তিনজনের কাছ থেকে নানা তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেন। পরে রাতে তিনজনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
সাঁথিয়া থানার ওসি আনোয়ার হোসেন জানান, আটককৃতদের ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শুক্রবার তাদের আদালতে পাঠানো হবে।
তিনি আরও বলেন, অর্থ আত্মসাতের বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য