× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

অনুসন্ধান
কেমন আছেন সেই রিতা মিতা
google_news print-icon

কেমন আছেন সেই রিতা-মিতা

কেমন-আছেন-সেই-রিতা-মিতা
কেক কাটছেন রিতা,বেলুন হাতে মিতা, দাঁড়িয়ে হেনা।
নিউজবাংলার কাছে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে রিতা-মিতার ভাগনি বলেন, ‘কিছু মানুষ ফেসবুকে প্রচার চালাচ্ছেন আমার বাবা জমি দখলের জন্য খালাদের লন্ডনে পাঠিয়ে দিয়েছেন। সবচেয়ে বড় কথা, আমাদের পরিবারের মধ্যে একজনকেও পাওয়া যাবে না যে লন্ডনে থাকে। তাহলে খালাদের লন্ডনে কার কাছে পাঠাব?’ তিনি বলেন, ‘আমি বাবা-মাকে বলেছি মিরপুরের ওই জায়গায় ঘর করে ভাড়া দিয়ে দাও। কারণ আল্লাহ না করুক বাবা-মা না থাকলে আমিসহ খালাদের নিয়ে চলব কী করে?’

শারীরিকভাবে কিছুটা সুস্থ থাকলেও মানসিকভাবে আবারও অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বহুল আলোচিত দুই বোন রিতা-মিতা। তাদের মধ্যে নুরুন নাহার মিতা ছিলেন ইঞ্জিনিয়ার; আইনুন নাহার রিতা ছিলেন চিকিৎসক। তারা দুজনই সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত।

২০০৫ সালের ৭ জুলাই রাজধানীর মিরপুর ৬ নম্বর সেকশনের সি ব্লকের ৯ নম্বর সড়কের ১ নম্বর বাড়ি থেকে এই দুই বোনকে উদ্ধার করে একটি মানবাধিকার সংগঠন। সে সময় বাড়িটি ‘ভূতের বাড়ি’ নামেই পরিচিত ছিল। বাসার দরজা-জানালা বন্ধ করে থাকতেন তারা। কারও সঙ্গে মিশতেন না, কথাও বলতেন না। একপর্যায়ে তাদের সঙ্গে থাকা তাদের মা বিনা চিকিৎসায় মারা যান। দুই বোন মায়ের লাশ ঘরেই রেখে দেন। কাউকে না জানিয়ে মধ্যরাতে হারিকেন নিয়ে তারা ঘরের বাইরে মায়ের লাশ কবর দিতে চেয়েছিলেন। তখন প্রতিবেশীরা দেখে ফেললে জানাজানি হয়ে যায়। পরে তাদের উদ্ধার করে চিকিৎসা দিলে তারা কিছুটা সুস্থ হন।

তারা সুস্থ হওয়ার পর বেশ কিছুদিন তাদের নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। ২০১৩ সালে কাউকে না বলে তারা বগুড়ায় চলে গেলে ফের আলোচনা শুরু হয়। সেখান থেকে তাদের উদ্ধার করে রাখা হয় বড় বোন কামরুননাহার হেনার বাসায়।

রিতা-মিতার সর্বশেষ অবস্থা জানতে সম্প্রতি নিউজবাংলার পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয় তাদের বড় বোন কামরুন নাহার হেনার সঙ্গে। কথা হয় হেনা ও তার একমাত্র মেয়ে সামিনা তুন নুরের সঙ্গে।

বড় বোন হেনা জানান, রিতা-মিতা বর্তমানে তার ধানমন্ডির বাসায় আছেন। শারীরিক ও মানসিকভাবে তারা মোটামুটি ভালোই ছিলেন। কিন্তু করোনার শুরুর দিকেই রিতা-মিতা সব ধরনের ওষুধ খাওয়া বন্ধ করে দেন, যে কারণে আস্তে আস্তে তারা মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন; আবার আগের মতো আচরণ করছেন।

তিনি বলেন, ‘এখন তারা অপরিচিত কারও সঙ্গে দেখা করে না। করোনার কারণে আমরাও কারও বাসায় নিয়ে যাই না।’

ইদানীং ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রিতা-মিতাকে নিয়ে নানা ধরনের গুজব চলছে বলে অভিযোগ করেন তাদের বড় বোন হেনা। বলেন, ‘এসব শুধুই গুজব। রিতা-মিতা আমার বাসাতেই আছে এবং তাদের মিরপুরের জায়গা কেউ দখল করেনি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমার নিজের দুটি ফ্ল্যাট একসঙ্গে তৈরি করা। কিন্তু আমাদের প্রধান দরজা একটা। ভেতরে একটা ফ্ল্যাটে আমরা স্বামী-স্ত্রী মেয়েকে নিয়ে থাকি। আরেকটি ফ্ল্যাটে আমার ছোট দুই বোন রিতা-মিতা থাকে।’

রিতা-মিতার কারণে সামজিকভাবে নানা ধরনের হয়রানির শিকার হচ্ছেন বলে দাবি করেন তাদের বড় বোন। বলেন, ‘বাইরে কোথাও বেড়াতে গেলে আমার চেহারা রিতার মতো হওয়ায় মানুষ আমাকে নানা ধরনের প্রশ্ন করে। এতে আমার স্বাভাবিক চলাচলে বিঘ্ন ঘটে।’

‘জমি দখলের প্রশ্নই ওঠে না’

রিতা-মিতার বড় বোন হেনা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মিরপুরের জমির মালিক এখন আমরা তিন বোন। আমার মা-বাবা বেঁচে নেই। আমার কোনো ভাইও নেই। যেহেতু মিরপুরের জমির মালিক আমিও, তাই সেই জমি আমি দখল করব কেন?

‘তাছাড়া রিতা-মিতা বিয়েও করেনি। তাদের কোনো সন্তানও নেই। তাই ওই জমি তো একসময় আমার মেয়ে সামিনার নামে হয়ে যাবে। তাই প্রশ্নই ওঠে না ওই জামি দখল করার। তাছাড়া আমার স্বামীর ধানমন্ডিতে নিজস্ব ফ্ল্যাট আছে। যেখানে আমি আমার বোন রিতা-মিতাসহ একসঙ্গে আছি। আমার আসলে কোনো আর্থিক সংকট নেই।’

রিতা-মিতার বড় বোন কামরুন নাহার হেনা কিছুটা অসুস্থ থাকায় তিনি বেশি কথা বলতে চাননি। বলেন মেয়ে সামিনা তুন নুরের সঙ্গে কথা বলতে। পরদিন সামিনা তার পরিবার ও তার দুই খালার বিষয়ে কথা বলেন।

নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘ডাক্তার বলছে, ওষুধ খেলে খালারা ভালো থাকবে। কিন্তু তারা কিছুদিন ওষুধ খায়; তারপর আবার ছেড়ে দেয়। ওষুধ খেলে ছয়-সাত মাস তারা ভালো থাকে। খাওয়া ছেড়ে দিলে আবার আগের মতো মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে; উল্টাপাল্টা কথা বলে।’

উল্টাপাল্টা কী বলে এমন প্রশ্নে সামিনা বলেন, এই যেমন বলে, ‘আমি তো পুরা বাংলাদেশের মালিক। আমিই এই দেশ চালাব। এই পুরা বিশ্বব্রহ্মাণ্ড আমার। আমাদের কাছে আল্লাহর বাণী আসছে।’ তারা বসে বসে শুধু বিভিন্ন কোড বানায় আর বিড়বিড় করতে থাকে। এসব আমরা বুঝি না। তবে তারা দিনে সময় করে কোরআন তেলাওয়াত করে এবং বাংলায় অর্থসহ পড়ে।’

তিনি বলেন, ‘তারা এতটাই উল্টাপাল্টা বলে যে মাঝে মাঝে আমাকেই বলে তুমি তো আগে ছেলে ছিলা, এখন মেয়ে হলা কীভাবে? আমার বাবা-মাকে বলে তোদের ছেলে কই? এই মেয়ে কে? অথচ আমার কোনো ভাই নেই, আমিই একমাত্র মেয়ে।’

রিতা-মিতার একমাত্র ভাগনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন তারা নিয়মিত ওষুধ খেত। সমস্যা হয়নি। কিন্তু করোনার শুরুর দিকে তারা সব ধরনের ওষুধ খাওয়া ছেড়ে দেয়। এখন আমরা ইচ্ছা করলেই তাদের জোর করে ওষুধ খাওয়াতে পারি না।

‘তারা গোপনে সব ওষুধ নিয়ে জানালা দিয়ে বাইরে ফেলে দেয়। প্রতিবেশীরা দেখে আমার মাকে সে কথা জানান। আর এই ওষুধ খাওয়া ছেড়ে দেয়ার পর থেকেই খালারা শারীরিকভাবে সুস্থ থাকলেও মানসিকভাবে সেই আগের মতো অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তাদের আচার-আচরণ আগের জায়গায় চলে গেছে।’

সামিনা জানান, আগে মাঝে মাঝে তার খালারা রাস্তায় হাঁটতে বের হতেন। কিন্তু সমস্যা হলো তাদের তো অনেকেই চেনে। তাদের দেখলেই অনেকে দাঁড়িয়ে যায়। তারপর নানা ধরনের প্রশ্ন করতে থাকে।

‘আপনাদের এই রোগ কীভাবে হলো, আপনারা উল্টাপাল্টা কাজ করেন কেন- এ ধরনের বিব্রতকর কথা বলে মানুষ। এতে খালারা মানসিকভাবে আরও অসুস্থ হয়ে পড়ত। একপর্যায়ে বাইরে বের হওয়া বন্ধ করে দেয়’, বলেন তিনি।

সামিনা আরও বলেন, ‘তারপরও খালারা আমাদের সঙ্গে আড্ডা দিত, টিভি দেখত, গান গাইত। কিন্তু করোনার প্রথম দিকে তারা পুরোপুরি ওষুধ খাওয়া বন্ধ করে দেয় এবং আস্তে আস্তে মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে।

‘এখন তারা কারও সঙ্গে দেখা করে না, ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া করে না। উদ্ভট-উদ্ভট কথা বলে। মাঝে মাঝেই আমাদের গালিগালাজ করে। সব সময় ঘরের লাইট বন্ধ রাখে।’

রিতা-মিতাকে সর্বশেষ ২০১৭ সালে হাসপাতালে নেয়া হয় জানিয়ে তাদের ভাগনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এরপর ধীরে ধীরে তারা সুস্থ হয়ে ওঠে। কয়েক বছর মোটামুটি ভালোই ছিল। কিন্তু এখন তারা আগের মতোই হয়ে গেছে।

‘কিন্তু করোনার কারণে হাসপাতালে নিতে পারছি না। কারণ এমনিতেই খালারা বয়স্ক মানুষ। এক রোগ থেকে মুক্তির জন্য নিলে যদি আরেক রোগে আক্রান্ত হয়- সে ভয়ে হাসপাতালে নিচ্ছি না। করোনা পরিস্থিতি একটু ভালো হলেই তাদের হাসপাতালে নিয়ে যাব।’

কেন তারা ওষুধ খাওয়া বন্ধ করে দেন- জানতে চাইলে সামিনা বলেন, ‘গত বছর হঠাৎ করে তারা বলে আমরা ওষুধ খাব না। আল্লাহর ওহি আমাদের কাছে আসছে। আমাদের ওষুধ খেতে নিষেধ করা হয়েছে। শুধু ওষুধই নয়, তারা মাঝে মাঝে সব ধরনের খাওয়া-দাওয়াই বন্ধ করে দেয়। আল্লাহর ওহিতে নাকি তাদের সব খাওয়া-দাওয়া বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়। তার পর আমরা সবাই মিলে জোর করে ধরে খাওয়াই।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সামিনা বলেন, ‘একটা মানুষ অসুস্থ হলে তাদের আত্মীয়স্বজন সেবা-যত্ন করে। কিন্তু আমার নানিবাড়ির কেউ নেই। তাদের জন্য কিছু করার মতো আমার মা, বাবা আর আমি ছাড়া আর কেউ নেই। আর আমার বাবার বাড়ির আত্মীয়স্বজন আছে। কিন্তু তারা কেন খালাদের জন্য কিছু করবে? তারা হয়তো আমার মা, বাবা আর আমার জন্য করতে পারে।’

রিতা-মিতার ভাগনি বলেন, ‘রাতের বেলা যখন আমি পানি খেতে উঠি, তখন মাঝে মাঝে দেখি খালাদের রুম থেকে আওয়াজ আসছে। তারা তখন রুমের লাইট বন্ধ করে দিয়ে গান গায়। পুরোনো দিনের বাংলা সিনেমার গান গায়। দুজনে মিলে হাসিঠাট্টা করে। তারা আমাদের সামনে তেমন কথা না বললেও নিজেরা নিজেরা অনেক গল্প করে, গান গায়।’

আইসক্রিম আর রেস্টুরেন্টের খাবার খুব পছন্দ রিতা-মিতার

রিতা-মিতার খাদ্য তালিকায় কী কী আছে জানতে চাইলে তাদের ভাগনি বলেন, ‘আমরা যা খাই তারাও তাই খায়। সকালবেলা রুটি, আলুভাজি, ডিমভাজি অথবা তরকারি- আমরা যেটা খাই। আর দুপুরে ভাত, মাছ, মুরগির মাংস। আব্বু-আম্মুর ডায়াবেটিস। রাতে তারা রুটি খান; আমি আর খালারা ভাত খাই। মোট কথা, আমরা যা খাই তারাও তাই খায়।

‘তারা যখন খেতে চায় না তখন অন্য বিষয় থাকে; অসুস্থতার কারণে খেতে চায় না। এ ছাড়া তারা খাওয়া নিয়ে কোনো রকম জ্বালায় না। তারা খুব লক্ষ্মী। তবে খালারা আইসক্রিম খেতে খুব পছন্দ করে। তাই তাদের জন্য বাসায় প্রায় সব সময় আইসক্রিম কিনে রাখা হয়। দিনে অথবা রাতে তাদের যখন ইচ্ছে হয় তারা ফ্রিজ থেকে নিয়ে আইসক্রিম বের করে খায়।’

সামিনা জানান, সকাল ৭-৮টার মধ্যে তার খালারা নাশতা করেন। দুপুরে একটা-দেড়টার দিকে খাবার খান। আর রাতে ৮টার মাধ্যে রাতের খাবার শেষ করেন। গভীর রাতে দুধ, পাউরুটি আর আইসক্রিম খান তারা।

‘খালারা রেস্টুরেন্টের খাবার খুব পছন্দ করে। তাই আমি মাঝে মাঝেই খালাদের জন্য রেস্টুরেন্ট থেকে খাবার আনি। তারা খুব পছন্দ করে খায়’, বলেন তিনি।

সামিনা আরও জানান, আসলে তার খালারা প্রচুর রাত জাগেন। তারা রাত জেগে একেবারে সকাল ৭-৮টার দিকে নাশতা করে ঘুমান। তবে একেক দিন একেক রকম। কোনো দিন রাতে ঘুমান আবার কোনো দিন দিনে ঘুমান। তারা প্রচুর লেখাপড়ে করেন।

সামিনা বলেন, ‘তারা ডিকশনারি পড়ে। একেকটা করে ওয়ার্ড মুখস্ত করে। আর তাদের মাথায় যা আসে সেটা ফিজিক্সের কোডের মতো করে লেখে। উল্টাপাল্টা যা মনে আসে তাই লেখে। একজন সাধারণ মানুষ সেই লেখা দেখলে কিছুই বুঝতে পারবে না।

‘আমরাও তাদের লেখা বুঝতে পারি না। খালারা আগে নিয়মিত টিভি দেখত। এখন আর টিভি দেখে না। এখন তারা কাউকেই পছন্দ করে না। যেই কাছে যায় তাকে গালাগালি করা শুরু করে।’

আক্ষেপ করে সামিনা বলেন, ‘খালাদের আত্মীয়স্বজন বলতে এখন একমাত্র আমরাই আছি। এ ছাড়া আর আপন বলে কেউ নেই। আমরা ছেড়ে দিলে তারা মারাই যেত। আমার খুব হিসাব করে চলতে হয়। আমার মা-বাবার বয়স হয়ে গেছে। তারা মাঝে মাঝে অসুস্থ থাকে। খালারাও অসুস্থ। বাসায় আমি একা সুস্থ মানুষ। আর কেউ নেই।

‘যখন তারা সবাই অসুস্থ থাকে তখন আমাকেই পুরা পরিবার সামলাতে হয়। আমার বন্ধুরা যখন-তখন বেড়াতে যেতে পারে, কিন্তু আমি পারি না। কারণ খালাদের কে কখন ওষুধ খাবে বা খাবার খাবে সেটাও আমাকে ভাবতে হয়।’

রিতা-মিতার ভাগনি জানান, তার লেখাপড়া শেষ দিকে। কিন্তু পুরো পরিবারের যে অবস্থা তাতে কাকে তিনি বিয়ে করবেন তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন।

সামিনা বলেন, ‘আমার লেখাপড়া শেষের দিকে। এখন আমি কাকে বিয়ে করব- সেটা নিয়েও আমাকে ভাবতে হয়। কারণ আমার স্বামী যিনি হবেন তাকে অবশ্যই আমাদের বাসায় থাকতে হবে। এবং আমার মা-বাবা, আর দুই খালাকে দেখতে হবে। আমি ছাড়া তো এদের আর কেউ নেই।

‘নিজের জীবনের এতটা সংগ্রাম করেও যখন মানুষের মুখে শুনতে হয় আমরা মিরপুরের জমি দখল করেছি অথবা আমরা খালাদের লন্ডনে পাঠিয়ে দিয়েছি তখন কেমন লাগে বলেন তো?’

তিনি বলেন, ‘আমার বাবার বয়স ৭৫। প্রায় সময়ই অসুস্থ থাকে। তারপরও বাবা খালাদের অনেক খেয়াল রাখে। খালারাও বড় দুলাভাই হিসেবে বাবার কাছে অনেক আবদার করে- এটা খাব ওটা খাব। বাবাও সেটা পূরণ করে।’

এ সময় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে রিতা-মিতার ভাগনি বলেন, ‘আর কিছু মানুষ ফেসবুকে প্রচার চালাচ্ছেন আমার বাবা জমি দখলের জন্য খালাদের লন্ডনে পাঠিয়ে দিয়েছেন। সবচেয়ে বড় কথা, আমাদের পরিবারের মধ্যে একজনকেও পাওয়া যাবে না যে লন্ডনে থাকে। তাহলে খালাদের লন্ডনে কার কাছে পাঠাব? খালাদের তো পাসপোর্টও নেই।

‘আমি বাবা-মাকে বলেছি মিরপুরের ওই জায়গায় ঘর করে ভাড়া দিয়ে দাও। কারণ আল্লাহ না করুক বাবা-মা না থাকলে আমিসহ খালাদের নিয়ে চলব কী করে? তাদের যেন চিকিৎসা করাতে পারি।’

মন্তব্য

আরও পড়ুন

আমের পচন রোগে চাষি ও ব‍্যাবসায়ীদের মাথায় হাত

আমের পচন রোগে চাষি ও ব‍্যাবসায়ীদের মাথায় হাত

চলতি মৌসুমের শুরুতে না থাকলেও মৌসুমের শেষ দিকে এসে কৃষি নির্ভর মেহেরপুর জেলার আমে অজানা এক পচন রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে।

পরিপক্ব আম গাছ থেকে সংগ্রহ করার ২-৩ দিনের মধ্যেই ডাঁটার (বোটার) দিক থেকে পচতে শুরু করছে, ফলে আম দ্রুতই খাওয়ার অযোগ্য হয়ে পড়ছে।

এতে আম চাষী ও ব‍্যাবসায়ীদের মাঝে দেখা দিয়েছে চরম হতাশা ও উদ্বেগ।

কৃষি বিভাগ বলছে, এই রোগটিকে ছত্রাকজনিত ‘স্টেম-এন্ড রট’ বলে ধারণা করা হচ্ছে। “গাছ থেকেই এমন পচন শুরু হচ্ছে, যা আগে কখনও এ অঞ্চলে এমনটি দেখা যায়নি।”

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, মেহেরপুরে মোট ২৩৬৬ হেক্টর জমিতে আমের চাষ হয়ে থাকে এবং এ বছর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪৫,৫১০ মেট্রিক টন। এরমধ্যে যদি মাত্র এক হাজার মেট্রিক টন আমও পচে যায়, তাহলে প্রতি মনের দাম ১৫০০ টাকা ধরলে ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় দেড়শ কোটি টাকা।

আম চাষিদের সাথে কথা বলে জানা যায়,সপ্তাহ খানেক হচ্ছে গাছ থেকে আম সংরক্ষণের দুই দিনের মধ্যেই পচে যাচ্ছে।” তিনি ধারণা করছেন এটি আবহাওয়াজনিত কোনো ভাইরাস বা ছত্রাকের সংক্রমণ।

বিভিন্ন বাজার ও বাড়িতে দেখা যাচ্ছে, আম কিনে নিয়ে যাওয়ার দুইদিন পরই পচন ধরা শুরু হচ্ছে। অনেকেই আম ফেলে দিচ্ছেন। শহরের গড়পাড়া এলাকার বাসিন্দা শিখা বেগম জানান, “বাজার থেকে হিমসাগর আম কিনে এনেছিলাম, দু’দিনের মাথায় সব পচে যায়। শেষে বাধ্য হয়ে ডাস্টবিনে ফেলতে হয়েছে।”

কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে প্রিয়জনদের কাছে পাঠানো আমও নষ্ট হয়ে গেছে বলে অভিযোগ করেছেন অনেক ভোক্তা।

জেলার গাংনী উপজেলার নিশিপুর গ্রামের আম বাগান মালিক হোসেন আলী বলেন, আম গাছে থাকা অবস্থায় গায়ে কালো আবরন পড়ে যাচ্ছে। আর সেই আম গাছ থেকে পাড়ার পরে রেখে দিলেই দুই এক দিনের মধ‍্যে পচে যাচ্ছে। আর সব আম এক সাথেই পেকে যাচ্ছে। যার ফলে শেষ সময়ে আমের দাম একটু বাড়তি পাবো ভেবে ছিলাম এখন দেখি উল্টো আম পচে সব নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এই আম বাগান থেকে হেঠাতে পারলি বাচি।

আম ব‍্যাবসায়ী সিহাব বলেন,আমরা বাগান মালিকদের কাছ থেকে আম সংগ্রহ করে থাকি। বতর্মানে এলাকার বাগান গুলোতে এখন হিমসাগর,ন‍্যাংড়া,আম্রপালি আম পাওয়া যাচ্ছে। তবে তা নিয়ে এসে বিক্রি করতে গেলে লোকশানে পড়তে হচ্ছে। আম এক থেকে দুইদিন রাখতেই সব পচে কালো হয়ে গলে যাচ্ছে। বিশ কেজি আমে দুই কেজি পচা আম বের হচ্ছে। এমন ভাবে আসলে ব‍্যাবসা করা কঠিন।

আম ক্রেতা রাজিবুল হক বলেন, আমি বাড়ির জন‍্য তিনদিন আগে দশ কেজি কাচা-পাকা মিলিয়ে আম কিনে গিয়েছিলাম। সেগুলোর মধ‍্যে অধিকাংশই আধাপাকা ছিলো অথচ আম না পেকে পচন ধরতে শুরু করে।তিনদিন পরে দেখি অধিকাংশ আম পচে শেষ।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সামসুল আলম বলেন, আবহাওয়াজনিত ছত্রাকবাহিত (স্টেম-এন্ড রট) রোগে এমনটা হয়ে থাকতে পারে। তবে আম সংগ্রহের অন্তত ১৫ দিন আগে গাছে ওষুধ ব্যবহার বন্ধ রাখতে হয়। তিনি আরও বলেন, “কোনো চাষি বা ভোক্তা থেকে লিখিত অভিযোগ না পাওয়ায় এখনো মাঠপর্যায়ে কারিগরি টিম প্রেরণ করা হয়নি। তবে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এখনই দ্রুত রোগনির্ণয় ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে পরবর্তী মৌসুম গুলোতেও আম উৎপাদন হুমকির মুখে পড়বে। প্রয়োজন মাঠ পর্যায়ে নজরদারি, কৃষকদের প্রশিক্ষণ ও সচেতনতামূলক কর্মসূচি গ্রহণ। যেহেতু এ অঞ্চলের হিমসাগর আম এখন জিআই পণ‍্য হিসেবে শিকৃতি লাভ করেছে। দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে আম রপ্তানির শুরুতেই হোচট খাবে।

মন্তব্য

অনুসন্ধান
Meeting rally in the NBR area from the capital of the capital

রাজধানীর শিশুমেলা থেকে এনবিআর এলাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ

রাজধানীর শিশুমেলা থেকে এনবিআর এলাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ

রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানার শিশুমেলা থেকে আগারগাঁও রোডের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কার্যালয় ও আশপাশের এলাকায় সব ধরনের সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

আগামীকাল রবিবার (২২ জুন) থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই নির্দেশনা কার্যকর হবে। শনিবার (২১ জুন) ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) এক গণবিজ্ঞপ্তিতে এমন তথ্য দেওয়া হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, ‘শেরেবাংলা নগর থানার অন্তর্গত শিশুমেলা থেকে আগারগাঁও রোডে অবস্থিত এনবিআর কার্যালয় (জাতীয় রাজস্ব বোর্ড), বিডা কার্যালয় (বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ) ও আশেপাশের এলাকায় সব ধরনের সভা, সমাবেশ, মিছিল, শোভাযাত্রা ও বিক্ষোভ প্রদর্শন ইত্যাদি নিষিদ্ধ করা হলো।’

ডিএমপি জানিয়েছে, জনশৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অধ্যাদেশের ২৯ ধারায় অর্পিত ক্ষমতাবলে আগামী রবিবার (২২ জুন) সকাল ৬টা থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই নির্দেশনা কার্যকর থাকবে।

গণবিজ্ঞপ্তিতে সই করেন ডিএমপি কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী।

মন্তব্য

অনুসন্ধান
Foreign investment in the country has decreased by 5 percent

দেশে বিদেশি বিনিয়োগ কমেছে ১৩ শতাংশ

দেশে বিদেশি বিনিয়োগ কমেছে ১৩ শতাংশ

দেশে ২০২৪ সালে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ—এফডিআই আগের বছরের চেয়ে ১৩ শতাংশ কমেছে। গত বছর প্রকৃত এফডিআই এসেছে ১২৭ কোটি ডলার। স্থানীয় মুদ্রায় যা প্রায় সাড়ে ১৫ হাজার কোটি টাকার সমপরিমাণ। ২০২৩ সালে নিট এফডিআই ছিল ১৪৬ কোটি ৪০ লাখ ডলার।

গত বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়নবিষয়ক সংস্থা আঙ্কটাডের বিশ্ব বিনিয়োগ রিপোর্টে বিদেশি বিনিয়োগ আসার ওই পরিসংখ্যান প্রকাশ করা হয়েছে।

বাংলাদেশে ২০২৪ সাল শেষে বিদেশি বিনিয়োগের স্থিতি ১ হাজার ৮২৯ কোটি ডলার, যা দেশের জিডিপির মাত্র ৪ শতাংশ। দক্ষিণ এশিয়ায় এ ক্ষেত্রে গড় হার ১৩ শতাংশ।

ভারতের হার ১৪ শতাংশ। ভুটানের মতো দেশে এ হার ১৭ শতাংশ। বাংলাদেশে ২০২৪ সালে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের নতুন প্রকল্পে বিনিয়োগে অর্থের ঘোষণার পরিমাণও কমেছে।

ঘোষিত অর্থের পরিমাণ ১৭৫ কোটি ডলার। গত বছরের তুলনায় যা ৩৫ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। ২০২৪ সালে বাংলাদেশ থেকে বৈধভাবে বিদেশে মাত্র ৭০ লাখ ডলারের বিনিয়োগ হয়েছে। স্থানীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ৮৫ কোটি টাকা।

গত পাঁচ বছরের মধ্যে ২০২১ সালে দেশের বাইরে সর্বাধিক ৮ কোটি ডলারের বিনিয়োগ করেন বাংলাদেশি উদ্যোক্তারা।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্ব যখন আরো গভীর সহযোগিতা ও বিস্তৃত সুযোগ সৃষ্টির দিকে এগিয়ে যাওয়ার কথা, তখন ঘটছে তার বিপরীত। ২০২৪ সালে বৈশ্বিকভাবে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) ১১ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১ দশমিক ৫ ট্রিলিয়ন ডলার, যা বৈশ্বিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য একটি বড় ধাক্কা। অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগে মন্দা, শিল্প খাতে চাপ এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোর প্রতি কম মনোযোগ উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। বাণিজ্য উত্তেজনা, নীতিগত অনিশ্চয়তা এবং ভূরাজনৈতিক বিভাজন বৈশ্বিক বিনিয়োগ পরিবেশকে আরো জটিল করে তুলছে।

তবে অন্ধকারে কিছুটা আশার আলোও রয়েছে। ডিজিটাল অর্থনীতিকে সম্ভাবনাময় খাত হিসেবে চিহ্নিত করা হলেও এর প্রবৃদ্ধি এখনো অসম। ডিজিটাল বিভাজন দূর করতে ডিজিটাল পরিকাঠামোয় বিনিয়োগ অত্যন্ত জরুরি। কারণ, ডিজিটাল সংযুক্তি হতে পারে অন্তর্ভুক্তিমূলক অগ্রগতির একটি শক্তিশালী চালিকাশক্তি, যদি তা সবার কাছে পৌঁছানো যায়। প্রতিবেদনটি সরকারগুলোকে আন্তর্জাতিক বিনিয়োগের মাধ্যমে গ্লোবাল ডিজিটাল কমপ্যাক্ট এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজিএস) অর্জনে সহায়তা করার বিষয়ে ব্যবহারিক নির্দেশনা দিয়েছে। এ সময়টাই সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন একসঙ্গে কাজ করার, যাতে আরো সহনশীল ও টেকসই বিশ্ব গড়ে তোলা যায়। সে লক্ষ্যে প্রতিবেদনটি বিভিন্ন নীতিগত ধারণা ও পরামর্শ তুলে ধরেছে।

উল্লেখ্য, গত বছরের আগস্টে বাংলাদেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তন এবং এর আগ থেকে জ্বালানি সংকটের কারণে বিদেশি বিনিয়োগে নেতিবাচক প্রভাব তৈরি করে। যার প্রভাব কিছুটা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করা হলেও সেটি বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য সন্তোষজনক নয় বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

ওয়ার্ল্ড ইনভেস্টমেন্ট রিপোর্ট ২০২৪ এ প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, ২০২০ সালের চেয়ে ২০২১ সালে এফডিআই প্রবাহ বেড়েছিল ১২ দশমিক ৯৪ শতাংশ। ২০২২ সালে প্রবাহ ২০ দশমিক ১৬ শতাংশ বেড়ে ছিল ৩৪৮ কোটি ডলার। ২০২৩ সালে ১৩ দশমিক ৬৭ শতাংশ কমে প্রবাহ হয়েছে ৩০০ কোটি ৪০ লাখ ডলারের। ২০২২ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে ভিয়েতনামে বেড়েছে ৩ দশমিক ৩৫ শতাংশ। কম্বোডিয়ায় এফডিআই প্রবৃদ্ধি ২০২৩ সালে হয়েছে ১০ দশমিক ৬১ শতাংশ। পাকিস্তানে এফডিআই প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৪ দশমিক ৩৫ শতাংশ।

২০২৩ সালে ৪৫টি স্বল্পোন্নত দেশে (এলডিসি) এফডিআই ১৭ শতাংশ বেড়ে ৩১ বিলিয়ন ডলারে দাড়িয়েছে। এর প্রায় ৫০ শতাংশ প্রবাহ কেন্দ্রীভূত ছিল কম্বোডিয়া, ইথিওপিয়া, বাংলাদেশ, উগান্ডা এবং সেনেগাল—এ পাঁচ দেশে। গত এক দশকে স্বল্পোন্নত দেশের বহিঃখাতগুলোয় অর্থায়নের অন্যান্য উৎসের তুলনায় এফডিআই প্রবৃদ্ধিই পিছিয়ে আছে। সামগ্রিকভাবে উন্নয়ন সহায়তা এবং রেমিট্যান্স হার স্বল্পোন্নত দেশের তুলনায় উন্নয়নশীল অর্থনীতিগুলোর তুলনায় বেশি। ওই বছর বৈশ্বিকভাবে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) প্রবাহ ১০ শতাংশের বেশি কমে ১ দশমিক ৩ ট্রিলিয়ন ডলারে স্থবির ছিল।

মন্তব্য

অনুসন্ধান
Coppy lamp is the only reliance on 3 year old Kashem

কুপি বাতিই একমাত্র ভরসা ৯৩ বছরের কাশেমের !

মুক্তিযুদ্ধের আগে থেকে বসবাস, তবু নেই বিদ্যুৎ
কুপি বাতিই একমাত্র ভরসা ৯৩ বছরের কাশেমের !

তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে যখন দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত পৌঁছে গেছে বিদ্যুৎ ও আধুনিক সুযোগ-সুবিধা, তখনও শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতী উপজেলার সদর ইউনিয়নের সারিকালীনগর গ্রামের নামাপাড়ায় কিছু মানুষ বাস করছেন বিদ্যুৎবিহীন অন্ধকারে। ওই গ্রামের ৯৩ বছর বয়সি বৃদ্ধ আবুল কাশেম এবং তার বাড়ির তিনটি পরিবার আজও কুপি বাতি ও হারিকেনের আলোতেই দিন কাটাচ্ছেন। ২০২৫ সালে দাঁড়িয়ে এই বাস্তবতা যেন এক অসম্ভব কাহিনী।

এই তিনটি পরিবার বছরের পর বছর ধরে বিদ্যুৎ ছাড়াই জীবন যাপন করছেন। ঘরে নেই একটি বৈদ্যুতিক বাল্ব, নেই সৌর প্যানেল, এমনকি নেই চলাচলের উপযোগী রাস্তা পর্যন্ত। বর্ষা মৌসুমে ঘরবাড়ি পানিতে তলিয়ে যায়। জলাবদ্ধ অবস্থায় কেটে যায় দিনের পর দিন। বিশুদ্ধ পানি ও স্বাস্থ্যসম্মত শৌচাগারেরও নেই কোনো ব্যবস্থা।

বৃদ্ধ আবুল কাশেম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন,
‘৯৩ বছর বয়স আমার। মুক্তিযুদ্ধের আগ থেইকা এইখানে আছি। কিন্তু এখনও নিজের ঘরে বিদ্যুতের আলো দেখিনাই। হারিকেনেই চলি। রাস্তা না থাকায় অন্যের জমির আইল দিয়া হাটতে হয়। আমার বড় পোলা মারা গেল, কিন্তু জায়গা না থাকায় ঘরের মেঝেতেই কবর দিছি। মানুষজন ছবি তুলে যায়, কিন্তু আর কোনো খোঁজ নেয় না।’

চরম জমির সংকটে পড়া এই পরিবারে মৃত্যুর পর মরদেহ দাফনের জন্য পর্যন্ত জায়গা মেলে না। কাশেমের বড় ছেলের মৃত্যুর পর ভাঙা ঘরের মেঝে খুঁড়ে তাকে দাফন করতে হয়েছে। এখন আর দাফনের মতোও কোনো স্থান অবশিষ্ট নেই। জীবনে যেমন আলো নেই, মৃত্যুতেও নেই নিজের জায়গায় কবরের নিশ্চয়তা।

এই পরিবারে কেউই শিক্ষা লাভ করতে পারেনি। ছোট-বড় সবার জীবন কেটে যায় কুপি বাতির আলোয়। রান্না, সেলাই, গৃহস্থালির প্রতিটি কাজ চলে কেরোসিন-জ্বালানো হারিকেনের আলোতে। রাতে নিয়ম করে হারিকেন পরিষ্কার, কেরোসিন ভরা, রেশা বদলানোর কাজ করতে হয়—এ যেন কুড়ি বছরের পুরোনো গ্রামীণ জীবনের প্রতিচ্ছবি।

এ বিষয়ে ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুল আলম রাসেল বলেন,
‘ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। দ্রুত খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ওই পরিবারগুলো যেন বিদ্যুৎ, রাস্তা ও পানির সুবিধা পায়, তা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে জানানো হবে।’

এদিকে সেচ্ছাসেবী ও তরুণ সমাজও এই পরিবারটির পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন।
‘ব্লাডচাই’-এর প্রতিষ্ঠাতা শান্ত শিফাত বলেন,
‘আমরা যখন উন্নয়নের গল্প বলি, তখন এমন একটি পরিবার বিদ্যুৎহীন অন্ধকারে বাস করছে—এটা মেনে নেওয়া যায় না। দ্রুত সেখানে বিদ্যুৎ ও মৌলিক সেবা পৌঁছে দিতে হবে।’

স্বেচ্ছাসেবী মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন,
‘ওই পরিবার কেবল আলো থেকেই নয়, বেঁচে থাকার মৌলিক অধিকার থেকেও বঞ্চিত। এটা কেবল সামাজিক নয়, সরকারি হস্তক্ষেপের দাবিও রাখে।’

স্থানীয় তরুণ শুভ বলেন,
‘শৈশব থেকেই দেখে আসছি ওই বাড়িতে কুপি বাতি জ্বলছে। বিদ্যুৎ সংযোগ নেওয়ার মতো সামর্থ্যও নেই ওই বৃদ্ধের। আমরা চাই, এই অবহেলা অবিলম্বে বন্ধ হোক।’

এক সময় গ্রামীণ জীবনের চিরচেনা দৃশ্য ছিল কুপি বাতি ও হারিকেন। অথচ আজও নামাপাড়ার এই পরিবারগুলো সেই আলো আঁকড়ে বাঁচতে বাধ্য হচ্ছে। উন্নয়নের জোয়ারে এগিয়ে যাওয়া ঝিনাইগাতীর বুকে এমন একটি নিভৃত অন্ধকার যেন এক নির্মম বাস্তবতার প্রতিচ্ছবি।

মন্তব্য

অনুসন্ধান
Sherpur is popular in Sherpur

শেরপুরে দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে ষাড়ের মই দৌড় খেলা

আনন্দে মেতে উঠে সব বয়সী মানুষ
শেরপুরে দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে ষাড়ের মই দৌড় খেলা

কৃষকের অন্যতম জনপ্রিয় খেলা হচ্ছে ষাড়ের মই দৌড় প্রতিযোগিতা। কিন্তু নানা কারণে এ খেলাটি দিন দিন হারিয়ে যেতে বসেছে। তবে শুকনো মৌসুমে শেরপুর জেলার বিভিন্ন স্থানে আয়োজন করা হয়ে থাকে এ খেলা। শেরপুর সদরের চরশেরপুর নাগপাড়ায় মই দৌড় খেলার আনন্দে মেতে উঠে কৃষক সহ সাধারণ মানুষ।

শেরপুর জেলার কৃষকদের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা হচ্ছে ষাড়ের মই দৌড় খেলা। শুকনো মৌসুমে মাঝে মাঝেই জেলার বিভিন্ন স্থানে আয়োজন করা হয় ষাড়ের মই দৌড় প্রতিযোগিতা। যেখানেই আয়োজন করা হয় এ মই দৌড় খেলা, সেখানেই হাজির হয় হাজার হাজার বয়স্ক, যুবক শিশু-কিশোরসহ সর্বস্তরের মানুষ।

গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী এ খেলাকে অনেকেই এখনো দেখেই নি। নতুন করে এ খেলা দেখে তারা খুব আনন্দ পেয়ে থাকে। যে এলাকায়ই ষাড়ের মই দৌড় খেলা অনুষ্ঠিত হয় সেখানেই উৎসবের আমেজ বয়ে যায়। ১৯ জানুয়ারি এমনই এক খেলার আয়োজন করে উৎসবে মেতে উঠে শেরপুর সদরের চরশেরপুর নাগপাড়া এলাকার মানুষ।

একটি মইয়ে ৪টি ষাড় গরু থাকে। আর এরকম দুটি করে মই দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। অনেক সময় নির্ধারিত দাগের বাইরে চলে যায় ষাড়ের মই। এতে আউট ধরা হয় ওই মইকে। এখানে থাকে দুজন মইয়াল। আরো থাকে ৩ জন ধরাল। রেফারীরর বাশিঁ ফুকানোর সঙ্গে সঙ্গেই মইগুলোর ষাড়েরা দৌড়ানো শুরু করে। যে মই বিজয়ী হয় তখন তারা মেতে ওঠে আনন্দে। আর চারদিকে দাঁড়িয়ে থাকা হাজার হাজার নারী, পুরুষ, শিশুর উল্লাস ধ্বনিতে মূখরিত হয়ে ওঠে পুরো এলাকা। এ খেলা দেখাতে পেরে ময়ালরাও অনেক খুশি।

গ্রামবাংলার ষাড়ের দৌড় খেলা হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে এবং নতুন প্রজন্মকে জানান দিতে নাগপাড়ায় প্রথমবারের মতে এ খেলার আয়োজন করা হয়। স্থানীয়দের আগ্রহের কারণে পরবর্তীতেও আয়োজন করা হবে ঐতিহ্যবাহী ষাড়ের মই দৌড় প্রতিযোগিতা। এমনটাই জানালেন আয়োজকরা।

বিভিন্ন স্থান থেকে ৮টি মই দৌড় দল এ খেলায় অংশ গ্রহণ করে। এতে জামালপুর জেলা ইসলামপুরের চন্দনপুরের হাবু বেপারি চ্যাম্পিয়ন হয়।

খেলাশেষে বিজয়ী ও বিজিতদের মাঝে পুরষ্কার বিতরণ করবে ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী। সফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানে জেলা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব সোহানুর রহমান সাইম, শিক্ষক আসমত আলীসহ আরো অনেকে।

আয়োজক আসমত আলী বলেন, ‘এ খেলার প্রতি কৃষক শ্রমিক মেহনতি মানুষের আগ্রহ আছে, তাই আমরা প্রতিবছর এ খেলার আয়োজন করব।’

মন্তব্য

অনুসন্ধান
The price of chicken and eggs but the rice market

মুরগি ও ডিমের দাম কমলেও চালের বাজার চড়া

মুরগি ও ডিমের দাম কমলেও চালের বাজার চড়া

কোরবানি ঈদের পর বাজারে মুরগি ও ডিমের দাম কিছুটা কমেছে। সবজির দামও আগের মতোই। তবে চালের দাম কিছুটা বেড়েছে।

গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।

বাজারগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঈদের আগের তুলনায় বর্তমানে খুচরায় মোটা চাল (বিআর-২৮, পারিজা) মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ৫৮ থেকে ৬২ টাকা প্রতি কেজিতে। সরু চালের মধ্যে জিরাশাইল বিক্রি হচ্ছে ৭৪ থেকে ৭৮ টাকা, মিনিকেট ৭৬ থেকে ৮০ টাকা এবং কাটারিভোগ ৭০ থেকে ৭৫ টাকা কেজি দরে।

পুরান ঢাকার নয়াবাজারের পাইকারি চাল ব্যবসায়ী নিজাম জানান, ঈদের পর থেকে চালের দাম বস্তাপ্রতি ৫০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। তিনি বলেন, ‘মিল মালিকদের দাবি অনুযায়ী, ধানের দাম বৃদ্ধির ফলে চালের দাম বেড়েছে এবং ভবিষ্যতে তা আরও বাড়তে পারে।’

অলিগলির ছোট মুদি দোকানগুলোতে চালের দাম কিছুটা বেশি দেখা গেছে। বংশাল এলাকার মুদি দোকানদার মজিদ মিয়া বলেন, ‘এই ধরনের দোকানে বাকির পরিমাণ বেশি। আমাদের বেশি ইনভেস্ট করতে হয়, তাই কিছুটা বাড়তি দামে চাল বিক্রি করি।’

চালের উচ্চমূল্য ক্রেতাদের মাঝে অস্বস্তি সৃষ্টি করলেও মুরগি, ডিম ও সবজির দাম কিছুটা কমে ক্রেতাদের স্বস্তি দিয়েছে। মুদি পণ্যগুলোর দামেও তেমন কোনও উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি দেখা যায়নি। পেঁয়াজ, আলু ও অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রীও কম দামে বিক্রি হচ্ছে।

এক সপ্তাহ ধরে ব্রয়লার মুরগির দাম প্রতি কেজি ১৫০ টাকায় নেমে এসেছে, যেখানে ঈদের আগে তা ছিল ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা। ডিমের দামও কমে প্রতি ডজন ১২০ থেকে ১৩০ টাকায় এসেছে। বিক্রেতারা বলছেন, ঈদের পর বাজারে ক্রেতার সংখ্যা কম এবং চাহিদা হ্রাস পাওয়ায় দাম কমেছে।

বাজারে আগত বেশ কয়েকজন ক্রেতা জানান, কোরবানির ঈদের পর অনেক ঘরেই এখনো মাংস রয়েছে। ফলে ডিম ও মুরগির চাহিদা কম। তবে তারা আশঙ্কা করছেন, কিছু দিন পর চাহিদা বাড়লে মুরগির দাম আবারও বেড়ে যেতে পারে।

পুরান ঢাকার রায় সাহেব বাজার ও নয়াবাজারে দেখা গেছে, ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একইসঙ্গে সোনালি মুরগির দামও কিছুটা কমেছে—বর্তমানে তা প্রতি কেজি ২৬০ থেকে ২৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে মাছের বাজারে উল্লেখযোগ্য কোনও পরিবর্তন দেখা যায়নি; বড় ইলিশসহ অন্যান্য মাছের দাম তুলনামূলক বেশি।

সবজির বাজারেও দেখা গেছে ইতিবাচক প্রবণতা। পুঁইশাক, বেগুন, পেঁপে, চিচিঙ্গা, ঝিঙ্গে ও মিষ্টি কুমড়ার মতো সবজি ৫০ থেকে ৬০ টাকার মধ্যেই বিক্রি হচ্ছে। ঈদের আগে এসব সবজির দাম কেজিতে ১০ থেকে ৪০ টাকা বেশি ছিল। বড় বাজারের তুলনায় ভ্রাম্যমাণ দোকানগুলোতে দাম আরও কিছুটা কম।

মন্তব্য

শ্যামনগরে অনলাইন জুয়ার ছোবল

বিপর্যস্ত পরিবার-যুবসমাজ
শ্যামনগরে অনলাইন জুয়ার ছোবল

প্রযুক্তির অপব্যবহারে শ্যামনগরের যুবসমাজ আজ অনলাইন জুয়ার ভয়াল ফাঁদে বন্দি। ঘরে বসেই মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সহজেই জড়িয়ে পড়ছে এই নিষিদ্ধ খেলায়। দিন দিন বেড়েই চলেছে আসক্তির মাত্রা। নষ্ট হচ্ছে সময়, টাকা আর সম্পর্ক।

জানা গেছে, অনলাইন জুয়া এখন শুধুই তাস বা ক্যাসিনো নয়। পরিবর্তনশীল গেমের ধরনে যুক্ত হয়েছে ক্রিকেট, ফুটবল বেটিং, তিন পাত্তি, রামি, রঙের খেলা, এভিয়েটর গেম এমনকি জনপ্রিয় লুডুও। এসব গেমে প্রতিদিন বাজি ধরছে হাজার হাজার টাকা। জেতার আনন্দে শুরু হলেও এক সময় তা ভয়াবহ আসক্তিতে পরিণত হয়, যার শেষ পরিণতি প্রায়শই ঋণ, মানসিক বিপর্যয় ও সামাজিক ভাঙন।

স্থানীয়ভাবে জানা গেছে, ‘এসব জুয়ার আসর বসছে গ্রামের চায়ের দোকান, চালের দোকান বা সুতার দোকানে। দিনের বেলায় সাধারণ ব্যবসার আড়ালে, আর রাতে দোকান বন্ধের পর শুরু হয় মোবাইলের স্ক্রিনে টাকার লড়াই। আড্ডার ছলে একে একে হাজির হয় নির্দিষ্ট গেমাররা, চোখ থাকে মোবাইলের পর্দায়—আর বাজি চলতে থাকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে বছরের পর বছর চলছে এই নিষিদ্ধ কর্মকাণ্ড।

অনলাইন জুয়ায় আসক্ত একজন যুবক (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) বলেন,
‘প্রথমে বন্ধুদের দেখে খেলতে শুরু করি। লুডু দিয়ে শুরু, পরে দিনে দিনে হাজার টাকার বাজি লাগত। এখন প্রায় ৫০ হাজার টাকার ঋণে জর্জরিত, ঘুম পর্যন্ত হারাম হয়ে গেছে।’

সবচেয়ে বিপর্যয়ে পড়ছে পরিবারগুলো। ঘরে অশান্তি, বাবা-মায়ের সঙ্গে সন্তানের দূরত্ব, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সন্দেহ, ভাইয়ের সঙ্গে ভাইয়ের সম্পর্ক ছিন্ন—এ যেন সম্পর্ক নষ্ট হওয়ার চক্র।
সন্তানরা পড়ালেখার পরিবর্তে দিনভর মোবাইলেই মুখ গুঁজে থাকে। যুবকরা হারাচ্ছে কাজের আগ্রহ, মুছে যাচ্ছে ভবিষ্যতের স্বপ্ন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ‘অনলাইন জুয়ার এই ভয়াবহ বিস্তার রোধে এখনই কঠোর আইন প্রণয়ন ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি, না হলে অচিরেই ধ্বংসের মুখে পড়বে দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম।

মন্তব্য

p
উপরে