× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

অনুসন্ধান
দূরপাল্লার নিষিদ্ধ বাসের যাত্রী নিউজবাংলার প্রতিবেদক
google_news print-icon

দূরপাল্লার ‘নিষিদ্ধ’ বাসের যাত্রী নিউজবাংলার প্রতিবেদক

দূরপাল্লার-নিষিদ্ধ-বাসের-যাত্রী-নিউজবাংলার-প্রতিবেদক
রাতের বেলায় সাভারের হেমায়েতপুর থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে যায় যাত্রী বোঝাই বাস। ছবি: নিউজবাংলা
ঢাকার মূল শহরের বাইরে হেমায়েতপুর থেকে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যের উদ্দেশে ছেড়ে যাচ্ছে যাত্রীবাহী বাস। সন্ধ্যা পার হওয়ার পর শুরু হয়ে যাত্রা। এমনই একটি বাসে পরিচয় গোপন করে যাত্রী হয়েছেন নিউজবাংলার দুই প্রতিবেদক। দেখা গেছে, মহাসড়কে পুলিশ চেকপোস্টে টাকার বিনিময়ে ছাড় পাচ্ছে দূরপাল্লার বাস।

করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় গত ৫ এপ্রিল সারা দেশে লকডাউন ঘোষণা করে সরকার। সেদিন থেকে বন্ধ রয়েছে দূরপাল্লার বাস চলাচল।

গত ৬ মে সিটি ও জেলা শহরে গণপরিবহন চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হলেও দূরপাল্লার বাসে কোনো ছাড় দেয়া হয়নি। তবে ঈদের আগে ঘরমুখী মানুষের চাপ আর শ্রমিকদের নিরুপায় অবস্থার মধ্যে সরকারের সেই নিষেধাজ্ঞার বাস্তব চিত্র কী, তা অনুসন্ধান করেছে নিউজবাংলা।

নিউজবাংলার কাছে তথ্য রয়েছে, সূর্য ডুবলেই এক জেলা থেকে অন্য জেলায় চলছে বাস। ঢাকা থেকে দ্বিগুণ ভাড়া দিলেই নির্বিবাদে যাওয়া যাচ্ছে দেশের যে কোনো গন্তব্যে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজর এড়িয়ে কীভাবে যাচ্ছে দূরপাল্লার বাস, যাত্রী হচ্ছেন কারা, স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে কতটা, এসব সরেজমিন অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় নিউজবাংলা। পরিচয় গোপন করে একটি দূরপাল্লার রুটের বাসে যাত্রী হন দুই প্রতিবেদক।সম্পাদকীয় নীতিমালা অনুযায়ী, এই প্রতিবেদনে কোনো বাস কোম্পানি বা সংশ্লিষ্টদের পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।

প্রতিবেদনটির একমাত্র উদ্দেশ্য, সরকারের নির্দেশনা মাঠ পর্যায়ে কতটা কার্যকর হচ্ছে, সেটি অনুসন্ধান করা।

ঢাকা থেকে লালমনিরহাটের বুড়িমারী পর্যন্ত যেতে একটি বাস কোম্পানির এক কর্মীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ হয় নিউজবাংলার দুই প্রতিবেদকের।

বৃহস্পতিবার দুপুরে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে ওই কর্মীর কাছে জানতে চাওয়া হয়, বাসে করে লালমনিরহাট যাওয়ার কোনো উপায় আছে কিনা। তিনি কোম্পানির আরেক জনের সঙ্গে কথা বলার জন্য সময় নেন। কিছুক্ষণ পর কল করে জানান, যাওয়া যাবে। রাতে তাদেরই কোম্পানির একটি বাস হেমায়েতপুর থেকে ছেড়ে যাবে।

ওই কর্মী এক জনের ফোন নম্বর দিয়ে তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। ওই ব্যক্তিকে ফোন করে জানা যায়, হেমায়েতপুর পার হয়ে একটি সিএনজি স্টেশন রয়েছে। সেখান থেকেই তাদের পরিবহনের একটি নন এসি বাসে করে লালমনিরহাট যাওয়া যাবে।

ভাড়ার বিষয়ে ওই ব্যক্তি বলেন, জনপ্রতি ১৩০০ টাকা করে লাগবে। সন্ধ্যা ৭টার দিকে ওই সিএনজি স্টেশনে গিয়ে যাওয়ার ভাড়া বুঝিয়ে দিতে হবে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, স্বাভাবিক সময়ে এ ধরনের বাসে লালমনিরহাটের বুড়িমারী পর্যন্ত ভাড়া ৬০০ টাকার মতো।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে নিউজবাংলা কার্যালয় থেকে হেমাযেতপুরের উদ্দেশে বের হন দুই প্রতিবেদক। হেমায়েতপুরের ওই সিএনজি স্টেশনে তারা পৌঁছান ৭টা ১০ মিনিটে। তবে তখনও নির্ধারিত বাস ও ফোনে যোগাযোগ হওয়া ব্যক্তি সেখানে আসেননি।

ফোন করা হলে তিনি জানান, গাড়ি আসতে আরও সময় লাগবে।

দূরপাল্লার ‘নিষিদ্ধ’ বাসের যাত্রী নিউজবাংলার প্রতিবেদক

বাসের চালক এখন চালাচ্ছেন ট্রাক

এক মাসের বেশি সময় ধরে দূরপাল্লার বাস বন্ধ থাকায় চরম আর্থিক সংকটে পড়েছেন বহু পরিবহন শ্রমিক। তাদের অনেকে বাধ্য হয়ে ট্রাকসহ বিভিন্ন ছোট যান চালাচ্ছেন।

এমনই একজন আনোয়ার হোসেন। হেমায়েতপুরের সিএনজি স্টেশনে নিউজবাংলার দুই প্রতিবেদককে তিনি বলেন, ‘গাড়ি না চালাইলে আমার ইনকাম বন্ধ। আমি বাস চালাইতাম। একমাস হয় বাস বন্ধ। এখন বাস ছেড়ে ট্রাক চালাই।

‘গরিবের ঘরে এক মাস চলার খোরাকি থাকে না। বাধ্য হয়েই রাস্তায় নামতে হয়।’ ।

ঢাকা থেকে বগুড়া যাওয়ার জন্য একটি পিকআপ ভ্যানে চড়ে বসেছেন রাজু ও তার স্ত্রী আকলিমা। রাজু থাকেন মিরপুরে। কাজ করতেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। গত মাসেই তার চাকরি চলে যায়। এপ্রিল মাস জুড়ে চাকরি খুঁজে ব্যর্থ হয়ে পরিবার নিয়ে গ্রামে ফিরে যাচ্ছিলেন রাজু।

তিনি বলেন, ‘ট্রাক ও পিকআপে করে ঢাকার বাইরে যাওয়া যায়। আমার এক আত্মীয়ও গতকাল ঢাকা থেকে বগুড়া গিয়েছে। তার কথা মতো আমরা আমিন বাজার ব্রিজ পার হয়ে এই পিকআপ ভ্যান পেয়েছি।’

দূরপাল্লার বাস না থাকায় বিকল্প এই পথ ধরা ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না বলে বলে জানান রাজু।

দূরপাল্লার ‘নিষিদ্ধ’ বাসের যাত্রী নিউজবাংলার প্রতিবেদক

বিভিন্ন গন্তব্যে ছাড়ছে বাস

সিএনজি স্টেশনে তখন আরও অনেক যাত্রী অপেক্ষারত। একেক জনের গন্তব্য উত্তরবঙ্গের একেক জায়গায়। তাদের নির্ধারিত বাসগুলোও ছাড়বে এখান থেকেই।

এক ঘণ্টার মধ্যে দুটি বাস যাত্রী বোঝাই করে ছেড়ে যায় বগুড়ার উদ্দেশে। এর মধ্যে একটি বাসের সুপারভাইজার জানান, বগুড়া পর্যন্ত যেতে ভাড়া লাগবে জনপ্রতি ১২০০ টাকা, স্বাভাবিক সময়ে এই ভাড়া ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। এসব বাসে প্রতিটি আসনেই রয়েছে যাত্রী, এক সিট ফাঁকা রেখে যাত্রী বসানোর তোয়াক্কাও নেই রাতের আঁধারে ঢাকা ছেড়ে যাওয়া বাসগুলোতে।

বাড়তি ভাড়া নেয়ার কারণ হিসেবে কয়েকটি বাসের চালকেরা জানান, পথে পথে চেকপোস্টে পুলিশ গাড়ি আটকায়। প্রতিটি চেকপোস্টে ৩০০ থেকে ১৫০০ টাকা পর্যন্ত পুলিশকে দিতে হয়। এই টাকা পেলে রাতের আধাঁরে চলা যাত্রীবাহী বাসগুলো পুলিশ ছেড়ে দেয়।

তারা জানান, মির্জাপুরের আগে ও যমুনা সেতুর কাছে চেকপোস্ট আছে। এছাড়া, অস্থায়ী কিছু চেকপোস্ট হঠাৎ হঠাৎ বসায় হাইওয়ে পুলিশ।

নিউজবাংলার দুই প্রতিবেদকের বাস তখনও আসেনি। তবে রাত সাড়ে ৮টার দিকে ফোন করা হলে আশ্বস্ত করেন বাসটির ওই ব্যক্তি। তিনি বলেন, আর ১০ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে।

রাত ঠিক ৮টা ৪৫ মিনিটে কাঙ্ক্ষিত সেই বাস এসে পৌঁছায় সিএনজি স্টেশনে। দেখা হয় ফোনে যোগাযোগ হওয়া সেই ব্যক্তির সঙ্গে। সিগারেট ফুঁকতে ফুঁকতে জানান, তিনিই এই গাড়ির মালিক। তার আরও নয়টি গাড়ি রয়েছে।

ওই ব্যক্তি বলেন, ‘আপনারা দেরি করে যোগাযোগ করছেন, তাই সামনের দিকে সিট দেয়া যাবে না।’

তবে হাতে বাড়তি কিছু টাকা গুঁজে দিতেই তিনি উৎসাহ নিয়েই নিউজবাংলার দুই প্রতিবেদককে বাসের দ্বিতীয় সারিতেই বসার ব্যবস্থা করে দেন।

দূরপাল্লার ‘নিষিদ্ধ’ বাসের যাত্রী নিউজবাংলার প্রতিবেদক

পরিচয় ‘ধান কাটা শ্রমিক’, সামনের আসনে নারী যাত্রী নয়

বাস মালিক জানান, ঝামেলা এড়াতে বাস চলাচলের অনুমতি নেয়া হয়ছে ধান কাটা শ্রমিক পরিবহনের জন্য। এজন্য সামনের দিকের দুই সারির আসনে নারী যাত্রীদের বসা নিষিদ্ধ।

বাস মালিক বলেন, ‘এখন ধান কাটার মৌসুম চলছে। গাড়িতে ধান কাটার শ্রমিক রয়েছে বলে প্রশাসনের লোকদের একটা বুঝ দেয়া হয়। এটা বলার জন্যই বলা।’

তিনি বলেন, ‘রাস্তায় আটকালে যাত্রীরা ধান কাটা শ্রমিক না ঘরমুখী মানুষ, তা চেক করে না পুলিশ। তবে, গাড়ি আটকালে এটা বলে একটা অজুহাত সামনে আনা হয়। পুলিশও জানে, এতে ধান কাটা শ্রমিক নেই। সেজন্য চেক না করলেও গাড়ি আটকালে টাকা দিতে হয়।’

দূরপাল্লার ‘নিষিদ্ধ’ বাসের যাত্রী নিউজবাংলার প্রতিবেদক

উত্তরের পথে যাত্রা শুরু

রাত ৮টা ৫০ এ সিএনজি স্টেশন থেকে যাত্রা শুরু করে বাসটি। ওই স্টেশন থেকে নিউজবাংলার দুই প্রতিবেদক ছাড়াও ওঠেন আরও ২০ যাত্রী। এরপর হেমায়েতপুর থেকে সাভারের জিরানীবাজার যাওয়ার মধ্যেই ৫২ আসনের প্রতিটি যাত্রীতে পূর্ণ হয়ে যায়। জনপ্রতি ভাড়া ১২০০ টাকা থেকে ১৫০০ টাকা পর্যন্ত।

দরজার পাশের সুপারভাইজারের ছোট আসনে বাসের সেই মালিকও আছেন। গল্পছলে তিনি দুই প্রতিবেদককে বলেন, ‘টেকনিক করে এখন গাড়ি চালাতে হচ্ছে। রাস্তায় কেউ গাড়ি আটকালে মন্ত্রী-এমপির পরিচয় দিতে হয়। আবার কখনও ধান কাটা শ্রমিক পরিবহনের কথা বলি। তবে যত কৌশলই ব্যবহার করা হোক পুলিশ আটকালে টাকা ছাড়া রেহাই নাই।’

অন্ধকার মহাসড়কের বুক চিরে একের পর এক ছুটে যাচ্ছে মালবাহী ট্রাক, পিকআপ ভ্যান, প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস। প্রতিটিতেই আছে উত্তরবঙ্গমুখী সাধারণ মানুষ। নিউজবাংলার দুই প্রতিবেদক যে বাসে চড়েছেন, সেটিকে ওভারটেক করে একের পর এক যাত্রীবাহী বাসও ছুটে যাচ্ছিল যমুনা সেতুর দিকে।

দূরপাল্লার ‘নিষিদ্ধ’ বাসের যাত্রী নিউজবাংলার প্রতিবেদক

চলাচল ঠেকাতে নয়, টাকার জন্য চেকপোস্ট

দূরপাল্লার বাসের এই ‘নিষিদ্ধ’ যাত্রার সুযোগ ষোলআনাই নিচ্ছে পুলিশ। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, দূরপাল্লার বাস বন্ধ করার জন্য নয়, বরং সেগুলো থেকে টাকা নিতে থামানো হচ্ছে বিভিন্ন চেকপোস্টে।

সাভারের বাইশমাইল এলাকায় প্রথমবার পুলিশ থামায় নিউজবাংলার দুই প্রতিবেদকের বাসটিকে। তাদের থামানোর সংকেত দেখেই তৎপর হয়ে ওঠেন বাসের মালিক। গাড়ি থেকে নেমে পুলিশের একজন লাইনম্যানের কাছে তিন শ টাকা বুঝিয়ে দেন, এরপর আবার যাত্রা শুরু।

পুলিশের পরবর্তী চেকপোস্ট সম্পর্কে রাস্তায় সতর্ক দৃষ্টি রাখছেন বাস মালিক। তার নির্দেশনা মেনেই বাস চালাচ্ছেন চালক। কোথাও থামার সংকেত পেলে নিজেই নেমে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে ‘রফা’ করছেন।

রাত ১০ টা ৪৫ মিনিটে দ্বিতীয়বারের মতো মির্জাপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের সামনে বাসটি থামায় হাইওয়ে পুলিশ। এখানে ৫০০ টাকার বিনিময়ে মিলল ছাড়।

কিছুদূর যাওয়ার পর টাঙ্গাইলের নগর জালৈফ বাইপাস এলাকায় আবার চেকপোস্ট। বাসটি থামিয়ে হাইওয়ে পুলিশের একজন সদস্য দরজায় উঠে দাঁড়ান। বাসটি কিছুদূর নিয়ে গিয়ে একপাশে থামানোর পর পুলিশের সেই সদস্যের সঙ্গে শুরু হয় বাস মালিকের দেনদরবার।

দেখা যায়, গাড়ি ছেড়ে দিতে বাস মালিক টাকা গুঁজে দিচ্ছেন পুলিশ সদস্যের হাতে, তবে তিনি বারবার গাড়ির কাগজ চাচ্ছেন। সময় গড়ানোর সঙ্গে টাকার অংকও বাড়ছে। এক সময় ওই পুলিশ সদস্য ‘উপযুক্ত’ টাকা পেয়ে বাস ছেড়ে দিতে রাজি হন। বিজয়ীর হাসি দিয়ে ফিরে আসের বাস মালিক।

এতক্ষণের দেনদরবারে যাত্রীরা কিছুটা আতঙ্কে পড়িছেলেন। তবে বাস মালিক ফিরে এসে সবাইকে আশ্বস্ত করে বলেন, ‘আপনাদের কিছু হবে না, টেনশন নিয়েন না।’

নিউজবাংলার দুই প্রতিবেদককে বাস মালিক বলেন, ‘প্রথমে ৫০০ দিছি, মানে না। কাগজ চায়। কইলাম, সংসার চালাইতে হইব, আমাদের একটু চলতে দেন। এই বইলা আরও ২০০ দিলাম। তাও মানে না। বলে, কাগজ নিয়া নিচে নাম। নামছি না দেখে এক হাজার মিলাই দিতে বলল।

‘তখন তার পায়ে হাত রেখে বললাম, মাফ করেন, আমাদের বাঁচান। এই বলে আরও ১০০ টাকা দিয়া কইলাম, স্যার এইবার যাইতে দেন, তারপর ছাইড়া দিলো।’

বাসটি এবার বিনা বাধায় পার হয়ে যায় যমুনা সেতু। যমুনার ওপারের সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা এলাকায় একটি হোটেলে যাত্রাবিরতি। রাত তখন ১টা পার হয়ে গেছে। নিউজবাংলার দুই প্রতিবেদক উত্তরের দিকে আর না এগোনোর সিদ্ধান্ত নেন।

এই হোটেলে সাধারণত ট্রাক চালকেরা যাত্রাবিরতি করেন। তবে গভীর রাতের নিষিদ্ধ যাত্রীবাহী বাসও এখন থামছে এখানে। হোটেলটিতে প্রায় দুই ঘণ্টা অপেক্ষা করে বেশকিছু যাত্রীবাহী বাসের চালক, যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেছেন নিউজবাংলার দুই প্রতিবেদক। এ সময়ে দেখা গেছে, বাস, মাইক্রোবাস, প্রাইভেট কারের পাশাপাশি ট্রাক, পিকআপেও ঢাকা ছাড়ছে অসংখ্য মানুষ।

ঢাকা ফেরার উপায় ওই শেষ রাতে বের করা ছিল কঠিন। হোটেলের কর্মীরা জানান, ঢাকা থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে পৌঁছানোর পর বাসগুলো আমার ফিরতি যাত্রা করে দুপুরের দিকে। সন্ধ্যার পর সেগুলো ঢাকায় পৌঁছে রাতে আবার বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে যায়।

তবে প্রাইভেট কার ও মাইক্রোবাসে ঢাকা ফেরা সম্ভব যে কোনো সময়েই। তেমনই একটি প্রাইভেট কারে শুক্রবার সকালে ঢাকা ফেরেন নিউজবাংলার দুই প্রতিবেদক।

দূরপাল্লার ‘নিষিদ্ধ’ বাসের যাত্রী নিউজবাংলার প্রতিবেদক

পুলিশ যা বলছে

হাইওয়ে পুলিশের বগুড়া অঞ্চলের পুলিশ সুপার মুহম্মদ শামসুল আলম সরকারের কাছে মহাসড়কে দূরপাল্লার বাস চলাচলের বিষয়ে জানতে চেয়েছে নিউজবাংলা। তিনি বলেন, ‘রাতের আঁধারে কোনো বাস চললে বা যাত্রী পরিবহন করলে আমরা প্রত্যেকটা গাড়ির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি এবং তাদের ফিরিয়ে দিচ্ছি। সরকারি প্রজ্ঞাপনে উল্লেখিত বিধিনিষেধ মেনে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।’

নিউজবাংলার দুই প্রতিবেদকের অভিজ্ঞতা জানানো হলে শামসুল আলম বলেন, ‘ধান কাটা শ্রমিক ও রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের লোকজন পরিবহনের জন্য কিছু বাস চলছে।’

যাত্রাপথে বেশ কয়েক জায়গায় পুলিশকে টাকা দিতে হয়েছে, এমন তথ্য জানালে হাইওয়ে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘এ ধরনের কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব।’

আরও পড়ুন:
বাস চলাচলে খুশি শ্রমিকরা, অস্বস্তিতে যাত্রীরা
চাপের কারণে শহরে গণপরিবহন চালু: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
কম যাত্রী, বেশি ভাড়ায় রাজধানীতে চলছে বাস

মন্তব্য

আরও পড়ুন

অনুসন্ধান
Another 120 people from Libya have been brought back home

লিবিয়া থেকে আরও ১২৩ জনকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে

লিবিয়া থেকে আরও ১২৩ জনকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে

লিবিয়া থেকে স্বেচ্ছায় দেশে ফেরার আগ্রহ প্রকাশ করা আরও ১২৩ অনিবন্ধিত বাংলাদেশি নাগরিককে গতকাল বৃহস্পতিবার দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এসব বাংলাদেশির সবাই বুরাক এয়ারের একটি বিশেষ চার্টার্ড ফ্লাইটে (ইউজেড ০২২২) সকাল ৯টা ৫০ মিনিটে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান।

উল্লেখ্য, প্রত্যাগতদের অধিকাংশই মানবপাচারের শিকার। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে, ত্রিপোলিতে বাংলাদেশ দূতাবাস, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) সমন্বিত উদ্যোগে প্রত্যাবাসন কার্যক্রমটি বাস্তবায়িত হয়েছে।

দেশে ফেরার পর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং আইওএম-এর প্রতিনিধিরা তাদের স্বাগত জানান ।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অধিকাংশ বাংলাদেশি সমুদ্রপথে ইউরোপে পৌঁছানোর উদ্দেশে অনিবন্ধিতভাবে লিবিয়ায় প্রবেশ করেছিলেন। লিবিয়ায় অবস্থানকালে তাদের অনেকেই মানব পাচারকারীদের দ্বারা অপহরণ ও নির্যাতনের শিকার হন।

সরকারি কর্মকর্তারা এসব অভিবাসীকে পরামর্শ দেন, যেন তারা অন্যদের এই ধরনের বিপজ্জনক ও অবৈধ পথে বিদেশ গমনের ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন করেন এবং ভবিষ্যতে এমন যাত্রা থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেন।

পুনর্বাসন সহায়তার অংশ হিসেবে আইওএম প্রত্যেককে নগদ ৬ হাজার টাকা, জরুরি খাদ্য সহায়তা, প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা এবং প্রয়োজনে অস্থায়ী আবাসনের ব্যবস্থা করেছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, বর্তমানে লিবিয়ার বিভিন্ন বন্দিশিবিরে আটক থাকা অন্যান্য বাংলাদেশির নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের কাজ চলছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ত্রিপোলিতে বাংলাদেশ দূতাবাস, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং আইওএম যৌথভাবে এ বিষয়ে কাজ করে যাচ্ছে।

মন্তব্য

তদন্ত কমিশনের সংবাদ সম্মেলন

গুমের শিকার ব‍্যক্তিদের চার ধরনের পরিণতি হতো

গুমের শিকার ব‍্যক্তিদের চার ধরনের পরিণতি হতো

রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই গুম করা হতো বলে জানিয়েছেন গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিটির সভাপতি বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী। গুমের শিকার ব্যক্তিদের সম্ভাব্য ৪ ধরনের পরিণতি হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর গুলশানে সংবাদ সম্মেলনে গুমসংক্রান্ত তদন্ত কমিটির সভাপতি এসব তথ্য জানান। কমিশনে দাখিল করা অভিযোগ বিশ্লেষণে এসব তথ্য দেন তিনি।

তিনি বলেন, গুমের শিকার ব্যক্তিদের সম্ভাব্য যে ৪ ধরনের পরিণতি হয়েছে, তা হলো: ১. গুমের শিকার ব্যক্তিকে হত্যা করা। ২. বিচারের আগেই মিডিয়ার সামনে উপস্থাপন করে জঙ্গি তকমা দিয়ে বাংলাদেশেই বিচারাধীন বা নতুন ফৌজদারি মামলায় গ্রেফতার দেখানো।৩. তাকে সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাঠিয়ে সে দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের মাধ্যমে গ্রেপ্তারের ব্যবস্থা করা। ৪. ভাগ্য সুপ্রসন্ন হলে, অল্পসংখ্যক ক্ষেত্রে মামলা না দিয়ে ছেড়ে দেওয়া।

গুম কমিশনের ২য় অন্তর্বর্তী প্রতিবেদন গত ৪ জুন প্রধান উপদেষ্টা বরাবর জমা দেওয়ার পর আজ দুপুরে রাজধানীর গুলশানে গুম সংক্রান্ত কমিশন অফ ইনকোয়ারির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মইনুল ইসলাম চৌধুরী এ সব কথা বলেন।

গুম কমিশনের সভাপতি বলেন, বিগত কর্তৃত্ববাদী সরকারের আমলে বিরোধী রাজনৈতিক শক্তি এবং ভিন্ন মতাবলম্বীদের বিরুদ্ধে পদ্ধতিগত দমননীতির অংশ হিসেবে গুমকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিল।

তিনি বলেন, ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পরেও বহু অপরাধী ও তাদের শুভাকাঙ্ক্ষীরা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার কেন্দ্রে থাকায় অনেক জোরালো প্রমাণ ও নিদর্শন ধ্বংস, অনেক ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক অসহযোগিতা, সাক্ষীদের ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ নানারকম ভীতিকর ও আতঙ্কজনক পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। তবুও বহু ভুক্তভোগী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তাদের অভিযোগ ও অভিজ্ঞতা জানিয়েছেন। তারা দেশীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বিস্তারিতভাবে সে কাহিনি তুলে ধরেছেন।

গুম সংক্রান্ত কমিশন অফ ইনকোয়ারির সভাপতি আরো বলেন, বিগত সরকারের শাসনামলে গুম একটি সুশৃঙ্খল ও প্রাতিষ্ঠানিক রূপে ‘জঙ্গিবাদবিরোধী’ অভিযানের ছায়াতলে ইসলামি উগ্রবাদের হুমকিকে ব্যবহার করে রাজনৈতিক ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত করা, আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জন ও শাসন দীর্ঘায়িত করার উদ্দেশে পরিচালিত হয়েছিল। ভুক্তভোগীদের মধ্যে ছিলেন- মেধাবী শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক কর্মী ও সাংবাদিক থেকে সাধারণ জনগণ।

মইনুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, এ প্রক্রিয়ায় তারা ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থাকে অস্ত্র বানিয়েছিল। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও নিরাপত্তা বাহিনীকে রাজনৈতিক প্রভাবাধীন করে এবং নির্যাতন ও গোপন আটকের সংস্কৃতি প্রাতিষ্ঠানিকভাবে চালু করেছিল। এমনকি সাধারণ নাগরিকদের বেআইনি পন্থায় বারবার ভারতীয় বাহিনীর হাতেও তুলে দেওয়া হয়েছিল।

কমিশন অফ ইনকোয়ারি অ্যাক্টের ধারা ১০ এ(১) ও (২) অনুযায়ী কমিশনে দাখিলকৃত ১৩১টি অভিযোগের বিষয়ে আইন মোতাবেক জিডি রেকর্ডপূর্বক ভিকটিমদের সন্ধান ও উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য পুলিশ মহাপরিদর্শক বরাবর প্রেরণ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, গোপন আটক কেন্দ্রের অস্তিত্ব এখন আর অস্বীকার করা যায় না। সকল ক্ষেত্রেই ভুক্তভোগীরা প্রায় একই ধরনের প্রক্রিয়ার শিকার হয়েছেন। পদ্ধতিগত নির্যাতন, সন্ত্রাসী হিসেবে প্রচার, একই ধরনের আইন অনুযায়ী অভিযোগ দায়ের ও একই ধরনের ভাষায় বর্ণনা। বিভিন্ন পটভূমি থেকে আসা ব্যক্তিদের অভিজ্ঞতার এই সামঞ্জস্য রাজনৈতিক উদ্দেশ্যকে স্পষ্ট করে।

তিনি বলেন, প্রতিবেদনে ১৯ শতাংশ ফেরত না আসা ১২ জন ভিকটিমের বিষয়ে অগ্রগতি তুলে ধরেছি, যাদের বিষয়ে প্রাথমিকভাবে অনুসন্ধান সম্পন্ন হয়েছে। তাদের গুমের জন্য কারা দায়ী, তা প্রাথমিকভাবে আমরা শনাক্ত করতে পেরেছি। চলমান অনুসন্ধানের স্বার্থে এই মুহূর্তে এর চেয়ে বেশি প্রকাশ করা সম্ভব হচ্ছে না।

ফিরে না আসা ভিকটিমদের বিষয়ে অপরাধী ও গুমের অপরাধ সংঘটনের স্থানসহ নানাবিধ বিষয়ে তথ্যের ঘাটতি বা পুরোনো কললিস্ট না পাওয়াসহ নানারকম বিলম্বঘটিত প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হলেও কমিশন আন্তরিকতার সঙ্গে অনুসন্ধান কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে বলেও জানান তিনি।

প্রতিবেদনে কমিশন সন্ত্রাসবিরোধী যে সব মামলায় অপব্যবহার হয়েছে, তা ন্যায় বিচারের মানদণ্ড বিবেচনায় নিয়ে দ্রুত নিষ্পত্তির ব্যবস্থা এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতনের সঙ্গে আলোচনার প্রেক্ষিতে মালয়েশিয়া-ইন্দোনেশিয়ার মতো উপযুক্ত কাউন্টার টেরোরিজম মেথড বের করার জন্য দুটি সুপারিশ করা হয়।

এ সময় গুম সংক্রান্ত কমিশন অফ ইনকোয়ারির সদস্য অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত বিচারক মো. ফরিদ আহমেদ শিবলী, মানবাধিকার কর্মী নূর খান, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কমিশনের সদস্য নাবিলা ইদ্রিস, মানবাধিকার কর্মী ও কমিশনের সদস্য সাজ্জাদ হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য

অনুসন্ধান
The accused in the murder case

আদালত থেকে পালাল হত্যা মামলার আসামি

আদালত থেকে পালাল হত্যা মামলার আসামি

ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের এজলাস থেকে হাজতখানায় নেওয়ার পথে পুলিশকে মারধর করে পালিয়েছেন হত্যা মামলার এক আসামি।

আসামি শরিফুল ইসলাম (২২) দিনাজপুর জেলার নবাবগঞ্জ থানার হরিপুর গ্রামের মৃত শফিক আহম্মেদের ছেলে। তিনি রাজধানীর খিলগাঁও থানার জিসান হোসেন (১৪) হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি। মামলাটি বর্তমানে সাক্ষ্যগ্রহণের পর্যায়ে রয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১ টার পর সংশ্লিষ্ট আদালতের দায়িত্বে থাকা পুলিশ কনস্টেবল শহিদুল্লাহকে মারধর করে ছুটে পালিয়ে যান আসামি শরিফুল। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের হাজতখানার ইনচার্জ এসআই রিপন।

তিনি বলেন, আসামিকে আদালত থেকে হাজতখানায় নেওয়ার সময় পুলিশকে আঘাত করে তিনি পালিয়ে যায় আসামি শহিদুল।

ডিএমপির প্রসিকিশন বিভাগের এডিসি মাইন উদ্দিন বলেন, আসামির হাতে হাতকড়া পরানো ছিল। তিনি ধাতব কিছু দিয়ে হাতকড়া ঢিলা করে কৌশলে খুলে ফেলে। পরে পুলিশ কনস্টেবলের হাতে আঘাত করে পালিয়ে যায়।

তিনি বলেন, আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছি। কোতোয়ালি থানাকে জানানো হয়েছে আসামিকে গ্রেপ্তারের জন্য। তার বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলমান।

মন্তব্য

অনুসন্ধান
The 5th Annual Senate Meeting in the BUP

বিইউপিতে ১৭তম বার্ষিক সিনেট সভা অনুষ্ঠিত

বিইউপিতে ১৭তম বার্ষিক সিনেট সভা অনুষ্ঠিত

১৯ জুন ২০২৫ তারিখে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি) এর ১৭তম বার্ষিক সিনেট সভা বিইউপির বিজয় অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিইউপির উপাচার্য ও সিনেট চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মোঃ মাহ্বুব-উল আলম, বিএসপি, এনডিসি, এএফডব্লিউসি, পিএসসি, এমফিল, পিএইচডি।

সভার শুরুতে বিইউপির উপাচার্য ও সিনেট চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মোঃ মাহ্বুব-উল আলম বিদায়ী সদস্যদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন এবং নবনিযুক্ত সদস্যদের স্বাগত জানান। পরে বিইউপির ট্রেজারার এয়ার কমডোর মোঃ রেজা এমদাদ খান, জিইউপি, বিইউপি, এনডিসি, পিএসসি, জিডি(পি), ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেট ১৩৪ কোটি ৮ লক্ষ টাকা ও ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের ১৩৪ কোটি ৯৭ লক্ষ টাকার বাজেট উপস্থাপন করেন।

সিনেট সদস্যগণ ট্রেজারার এর বক্তৃতার ওপর আলোচনা করেন এবং সর্বসম্মতিক্রমে বাজেট প্রস্তাব অনুমোদন করেন। এছাড়াও সিনেট সভায় ১৭তম বার্ষিক প্রতিবেদন উপস্থাপিত ও সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদিত হয়। ১৭তম বার্ষিক সিনেট সভাটি সার্বিকভাবে সঞ্চালনা করেন বিইউপির রেজিস্ট্রার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ রাব্বি আহসান, এনডিসি, পিএসসি।

সভায় সিনেট চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মাহ্বুব তাঁর বক্তব্যে বলেন, বিইউপি বয়সে নবীন হলেও এর শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও গবেষকগণের বিভিন্ন প্রতিযোগিতা, সেমিনার, ওয়ার্কশপ ও গবেষণা ভিত্তিক কার্যক্রমের অর্জনসমূহ জাতীয় আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে সুনাম বয়ে আনছে। যুগোপযোগী শিক্ষা প্রদান, গবেষণা ও উদ্ভাবনী কার্যক্রমে বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নিত হওয়ার লক্ষ্যে অত্র বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক একটি সুনির্দিষ্ট Academic Strategic Plan –২০৫০ প্রণয়ন করা হয়েছে।

Academic Strategic Plan এর মাধ্যমে পাঠ্যক্রমের আধুনিক মান নির্ধারণ, Outcome Based Education (OBE) কারিকুলাম প্রনয়ণ, গবেষণা, উদ্ভাবন, প্রকাশনা ও গবেষণা সহায়তার সক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

মাননীয় উপাচার্য সকলকে অবহিত করেন যে বিইউপি’র গবেষণাভিত্তিক অগ্রযাত্রায় BUP Research Centre (BRC) অংঙ্গীভূত ফ্যাকাল্টি ও অধিভুক্ত প্রতিষ্ঠানসমূহে গবেষণা, উদ্ভাবন ও পরামর্শমূলক কার্যক্রমে গতিশীলতা আনার লক্ষ্যে কাজ করছে। 'Inspiring Innovation for Advancing Knowledge' শ্লোগানকে ধারণ করে, BUP Research Centre, গবেষকদের মানসম্মত গবেষণায় উৎসাহ দিচ্ছে এবং শিল্প-প্রতিষ্ঠান ও একাডেমিয়ার মধ্যে সংযোগ স্থাপনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

এছাড়াও তিনি উল্লেখ করেন, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক গবেষকদের গবেষণালব্ধ জ্ঞান প্রসারের উদ্দেশ্যে বিইউপি থেকে ৫টি জার্নাল প্রতিবছর নিয়মিত প্রকাশিত হচ্ছে যা সকলের মাঝে সমাদৃত। সিনেট চেয়ারম্যান আরও উল্লেখ করেন যে, শিক্ষার্থীদের শিক্ষার পাশাপাশি একজন সুশৃঙ্খল, নৈতিকতা সম্পন্ন সু-নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে বিইউপি বদ্ধপরিকর এবং সে লক্ষ্যে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের চারিত্রিক গুণাবলি ও আত্মিক উন্নয়নের লক্ষ্যে সকল প্রোগ্রামের পাঠ্যক্রমে নৈতিক শিক্ষা অন্তর্ভুক্ত করার মাধ্যমে Need Based Education - কেও গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা হচ্ছে। তিনি বলেন যে, আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষার্থীদের মানসম্মত কারিকুলাম ও শিক্ষা পরিবেশের পাশাপাশি বৈচিত্র‍্যময় সাংস্কৃতিক সান্নিধ্যের গুরুত্বকে সামনে রেখে বিইউপি'তে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তির প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এছাড়া, নবপ্রজন্মের মধ্যে নৈতিক মূল্যবোধ, সততা, চরিত্র গঠন ও সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা এবং দেশপ্রেম জাগ্রত করতে পড়াশোনার পাশাপাশি বাংলাদেশের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য, জাতীয় দিবসগুলোর তাৎপর্য ও মাহাত্ম্য তুলে ধরে বিইউপি’র বিভিন্ন আলোচনা সভা, সিম্পোজিয়াম, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজনের কথা উল্লেখ করেন।

এই সিনেট সভায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ সশস্ত্রবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এবং বিইউপির উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য

অনুসন্ধান
BNP does not support the electoral college in the presidential election

রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ইলেকট্রোরাল কলেজব্যবস্থা সমর্থন করে না বিএনপি

রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ইলেকট্রোরাল কলেজব্যবস্থা সমর্থন করে না বিএনপি

রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রস্তাবিত ইলেকট্রোরাল কলেজব্যবস্থাকে সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য বলে মন্তব্য করেছে বিএনপি। দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘জনগণের ভোটাধিকার হরণে এই ব্যবস্থাকে আরেকটি ছলচাতুরী হিসেবে দেখা হচ্ছে।’

গতকাল বুধবার বিকালে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য কমিশনের যে প্রস্তাব তাতে একটা ইলেক্টোরাল কলেজ করা হবে। এবং প্রায় ওনাদের ভাষ্য অনুযায়ী ৭০ হাজারের মতো ভোটার থাকবে। ইউনিয়ন পর্যায় থেকে শুরু করে স্থানীয় সরকার পর্যায়ের প্রতিনিধিগণ এখানে ভোটার হবেন। এবং রাষ্ট্রপতিকে সৎ, দক্ষ ও অভিজ্ঞ একজন ব্যক্তিকে মনোনয়ন দেওয়ার জন্য ওখানে প্রস্তাব করা হয়েছে।

সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠনের প্রস্তাবে আগের মতোই একমত নয় বিএনপি।

এই কাউন্সিলের জবাবদিহি না থাকায় সমর্থন করে না বিএনপি। এই কাউন্সিলে আরেকটি ভারসাম্যহীন অবস্থা তৈরি হবে বলে মনে করি আমরা।’

স্বাধীন বিচারব্যবস্থার দাবি জানিয়ে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘স্বাধীন বিচারব্যবস্থা হলে ভারসাম্যহীনতা দূর হবে, ফ্যাসিবাদ দমন করবে। প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার ভারসাম্য, অন্য সাংবিধানিক পদ, সংস্থা স্বাধীন করতে পারলে সমস্যা থাকবে না।’

বিএনপি মনে করে সুশাসন নিশ্চিত করতে ন্যায়পাল করা যেতে পারে। বিদ্যমান ব্যবস্থা বজায় রেখে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ হলে তাদের যোগ করা যেতে পারে, বলেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন আইন সংশোধন করা যেতে পারে। জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে। বিএনপি মনে করে, দুদক ও মানবাধিকার কমিশনের মতো প্রতিষ্ঠান শক্তিশালী করতে বিদ্যমান আইনগুলো সংস্কারের প্রয়োজন।

মন্তব্য

অনুসন্ধান
Bhawal Chandipur Agrakhola road is like a death

ভাওয়াল-চন্ডিপুর-অগ্রখোলা সড়ক যেন মরণফাঁদ

চরম দুর্ভোগে এলাকাবাসী   
ভাওয়াল-চন্ডিপুর-অগ্রখোলা সড়ক যেন মরণফাঁদ

কেরানীগঞ্জের শাক্তা ও তারানগর ইউনিয়নের বুক চিরে চলা ভাওয়াল-চন্ডিপুর-অগ্রখোলা সড়কের বেহাল দশায় নিত্যদিন ভোগান্তিতে পড়ছে হাজারো মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের অভাবে সড়কজুড়ে এখন গর্ত আর ধুলাবালি। সামান্য বৃষ্টিতে কাদায় যানবাহন আটকে যায়, আর শুকনো মৌসুমে উড়ে ধূলোর ঝড়।

রাস্তাটির বেহাল অবস্থার কারণে প্রায় প্রতিদিনই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন পথচারী ও যানবাহনের চালকরা। ছোট-বড় গর্তে হোঁচট খেয়ে পড়ে আহত হন অনেক পথচারী। অন্যদিকে, যানবাহন চলাচলের অযোগ্য এই সড়কে প্রতিনিয়তই নষ্ট হয়ে পড়ে ভ্যান, অটোরিকশা, ট্রাকসহ বিভিন্ন গাড়ি। আকিজ ফাউন্ডেশন স্কুল, মেকাইল মাদ্রাসা ও অগ্রখোলা কমিউনিটি হাসপাতালের সামনের অবস্থা এতটাই খারাপ যে মাঝে মাঝেই উল্টে যায় যাত্রী বোঝাই যানবাহন ।

সড়কের করুণ অবস্থার কারণে অনেক চালক ও পথচারী এখন পাশের বেলনা, কলাতিয়া ও নয়াবাজার হয়ে বিকল্প রাস্তায় যাতায়াত করছেন। এতে সময়, অর্থ ও দুর্ভোগ বাড়ছে।

এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন কেরানীগঞ্জ ছাড়াও নবাবগঞ্জ, দোহার, সিরাজদিখানসহ দক্ষিণবঙ্গের হাজার হাজার মানুষ মোহাম্মদপুর হয়ে রাজধানীতে প্রবেশ করে। অথচ বছরের পর বছর ধরে অবহেলায় পড়ে আছে সড়কটি।

স্থানীয় বাসিন্দা কবির হোসেন বলেন, ‘রাস্তাটার অবস্থা এমন যে, অটোরিকশা সিএনজিতে ওঠা মানেই কোমর ভাঙা। মাঝে মাঝেই যানবাহন পড়ে মানুষ আহত হয়। স্কুলের বাচ্চারা পর্যন্ত ভয়ে এই রাস্তায় যেতে চায় না। কোন এমপি-মন্ত্রী একবার এই রাস্তা দিয়ে গেলে বুঝত কষ্টটা কেমন।

একই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পণ্যবাহী ট্রাকচালক রাকিব হাওলাদার। তিনি বলেন, একবার গর্তে পড়লে গাড়ির যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে যায়। ট্রাকে থাকা জিনিসপত্র পড়ে যায়, এভাবে থাকলে এই রাস্তা দিয়ে আর চলাচল করা সম্ভব নয়। এটি দ্রুত সংস্কার করা উচিত।

এ বিষয়ে কেরানীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-প্রকৌশলী আব্দুল লতিফ বলেন, সড়কটি ইতোমধ্যে ডিপিপিতে অনুমোদন পেয়েছে। তাই এখন সংস্কার করা হচ্ছেনা। বছরের শেষ দিকে ২০ ফুট প্রশস্ত করে এবং আরও শক্তিশালী করে কাজ শুরু হবে। তখন রাস্তাটি আরো টেকসই হবে।

এদিকে এলাকাবাসীর দাবি, সংস্কার কাজ শুরুর আগ পর্যন্ত অন্তত গর্ত ভরাট করে সাময়িক চলাচলের উপযোগী করে তুলতে হবে। নইলে প্রতিদিন দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।

মন্তব্য

অনুসন্ধান
Twenty four bucks the family of four runs a family of four

আড়াইশ টাকা আয়ে চারজনের সংসার চালায় কিশোর তোফাজ্জল!

আড়াইশ টাকা আয়ে চারজনের সংসার চালায় কিশোর তোফাজ্জল!

একটা ভাঙাচোরা বাইসাইকেলই তার ভরসা। এ সাইকেল চালিয়ে ১৫ কিলোমিটার দুরের দুর্গম খাসিয়া পল্লীতে কাজ করে দুই-আড়াইশ টাকা রোজগার করে কিশোর তোফাজ্জল (১৪)। মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার সীমান্তবর্তী ৯নং ইসলামপুর ইউনিয়নের কাঁঠালকান্দী গ্রামের আলী আহমেদ (৬৫) এর ছেলে তোফাজ্জল হোসেন। পরিবারে সে একমাত্র উপার্জনক্ষম। বাবা হার্টের রোগী, বোন আয়েশা খাতুন (২৫) মানসিক ভারসাম্যহীন আর বয়োবৃদ্ধ দাদী সমিতা বিবি (৮২) দীর্ঘদিন ধরে শয্যাশায়ী।

তোফাজ্জল কান্নাজড়িত কন্ঠে এ প্রতিবেদককে বলেন, প্রতিদিনি সকালে ভাঙাচোরা একটি সাইকেল নিয়ে ১৫ কিলোমিটার দুরের খাসিয়া পল্লীতে কাজে যাই। সন্ধ্যায় ফিরি। যা রোজগার হয়, দুবেলাও খেতে পাইনা। এ দুনিয়ায় আল্লাহ ছাড়া আমাদের আর কেউ নাই। প্রতিবেশী ফজল মিয়া, আবু শহীদ এ পরিবারের দুরাবস্থার কথা জানিয়ে বলেন, প্রকৃতই তারা খুব অসহায় ও মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন। তিনজনই অসুস্থ। মাঝে মধ্যে আমরা যতটা সম্ভব সহযোগিতা করার চেষ্টা করি।

সরেজমিন তোফাজ্জলদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, সরকারি আবাসন প্রকল্পের ছোট্ট একটি ঘরে মেঝেয় জীর্ণ-শীর্ণ কাঁথায় শুয়ে আছেন সমিতা বিবি। অপুষ্টি আর ক্ষুধার যন্ত্রণায় ক্লান্ত। ঠিকমতো কথা বলতে পারছেন না। যা বললেন বোঝা গেলো, ডালভাত খেয়ে ঈদের দিন পার করেছি। ক্ষিদের জ্বালায় রাতে ঘুম আসে না। একরত্তি নাতি আর কিইবা করবে। তবু যা করছে আল্লাহর কাছে শুকরিয়া। চাল ডাল আনলে ওষুধ আনতে পারে না। তবু প্রায়ই অনাহারে থাকতে হয়। ঈদে চান্দে প্রতিবেশীরা কেউ খাবার দেয়, কেউ সামান্য টাকা-পয়সা দেয়। এইভাবেই টিকে আছি।

স্থানীয়দের সহযোগিতাই একমাত্র ভরসা। মানুষের সাহায্যে দুমুঠো ভাত খেতে পারেন, যদি কেউ সাহায্যে না করে তাহলে না খেয়েই থাকতে হয়। তার বিলাপে চোখে জল চলে আসে। এ যেন দারিদ্র্যের এক করুণ চিত্র। এই অসহায় নারীর জীবন কাটছে অভাব আর কষ্টে। পা ভেঙে এক বছর ধরে শয্যাশায়ী। ছেলে আলী আহমেদও হার্টের রোগী। কোন কাজকর্ম করতে পারেন না। তাই ১৩/১৪ বছরের নাতি তোফাজ্জলের কাঁধেই সংসারের ভার। দুর্গম খাসিয়া পুঞ্জিতে কাজ করে দিনে আয় করে দুই-আড়াইশ টাকা মাত্র। এ টাকায় দুবেলা খাবার যোগানোই মুশকিল। তার ওপর অসুস্থ দাদি, বাবা আর মরার উপর খাঁড়ার ঘা মানসিক প্রতিবন্ধী বড় বোন আয়েশা খাতুন।

ইসলামপুর ইউনিয়নের স্থানীয় ইউপি সদস্য ফারুক আহমেদ জানান, একসময় তাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই ছিলো না। কয়েক বছর আগে সরকারি আবাসন প্রকল্পের মাধ্যমে এ পরিবারের জন্য একটি ঘরের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোফাজ্জলদের দুরাবস্থা জেনে অনেকে খাদ্য সামগ্রী দিয়ে তাদের সহায়তা করছেন। তবে বয়োবৃদ্ধ সমিতা বিবি ও মানসিক প্রতিবন্ধী আয়েশা খাতুনের সুচিকিৎসা ও তোফাজ্জলদের আত্মনির্ভরশীল হওয়ার ব্যবস্থা জরুরি।

মন্তব্য

p
উপরে