× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

আন্তর্জাতিক
Refuge in Myanmar is the only solution to the Rohingya crisis the chief adviser
google_news print-icon

মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনই রোহিঙ্গা সংকটের একমাত্র সমাধান: প্রধান উপদেষ্টা

জাতিসংঘের সম্মেলনে সাত দফা প্রস্তাব পেশ
মিয়ানমারে-প্রত্যাবাসনই-রোহিঙ্গা-সংকটের-একমাত্র-সমাধান-প্রধান-উপদেষ্টা-

দীর্ঘস্থায়ী রোহিঙ্গা সংকটের একমাত্র শান্তিপূর্ণ সমাধান হলো তাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস সংকট নিরসনে সাত দফা পদক্ষেপের প্রস্তাব করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে রাখাইন রাজ্যে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করে নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের জন্য একটি বাস্তবসম্মত রোডম্যাপ প্রণয়ন। তিনি বলেন, ‘অর্থায়ন কমে আসছে। একমাত্র শান্তিপূর্ণ পথ হচ্ছে তাদের প্রত্যাবাসন শুরু করা।’
গতকাল মঙ্গলবার জাতিসংঘ সদর দপ্তরে ‘মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিম ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি’ বিষয়ক উচ্চপর্যায়ের সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রধান উপদেষ্টা এই প্রস্তাব দেন।
তিনি বলেন, ‘গণহত্যা শুরুর আট বছর পরও রোহিঙ্গাদের দুর্দশা অব্যাহত রয়েছে। সংকট নিরসনে কার্যকর উদ্যোগ নেই। আন্তর্জাতিক অর্থায়নও মারাত্মক ঘাটতিতে ভুগছে।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, রোহিঙ্গা সংকটের উৎপত্তি মিয়ানমারে এবং সমাধানও সেখানেই নিহিত।
রোহিঙ্গাদের ওপর নিপীড়ন বন্ধ এবং দ্রুত প্রত্যাবাসন শুরু করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে মিয়ানমার সরকার ও আরাকান আর্মির ওপর কার্যকর চাপ প্রয়োগ করতে হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
ড. ইউনূস বলেন, ‘এটাই সংকটের একমাত্র সমাধান। মিয়ানমারের সার্বিক সংস্কার প্রক্রিয়ায় জিম্মি করে রাখা উচিত নয়।’
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক সুরক্ষা অব্যাহত রাখার তুলনায় প্রত্যাবাসনে অনেক কম সম্পদের প্রয়োজন হবে। রোহিঙ্গারা বরাবরই নিজ মাতৃভূমিতে ফিরে যেতে চেয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সাম্প্রতিক সংঘাত থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের অবিলম্বে প্রত্যাবাসনের সুযোগ দিতে হবে।
তিনি উল্লেখ করেন, ‘বাংলাদেশ সংকটের শিকার। আমাদের সামাজিক, পরিবেশগত ও আর্থিকভাবে বিপুল চাপ সহ্য করতে হচ্ছে।’
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের মাধ্যমে মাদক পাচারসহ নানা অপরাধমূলক কার্যক্রম বাংলাদেশের সামাজিক কাঠামোকে হুমকির মুখে ফেলছে। আমাদের উন্নয়ন চ্যালেঞ্জ—যেমন বেকারত্ব ও দারিদ্র্য—বিবেচনায় দেশে রোহিঙ্গাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ দেওয়া সম্ভব নয়।’
টেকসই সমাধানের জন্য প্রধান উপদেষ্টা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সাত দফা পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তাব দেন—
প্রথমত, রাখাইন অঞ্চলে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করে নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের জন্য একটি বাস্তবসম্মত রোডম্যাপ প্রণয়ন।
দ্বিতীয়ত, মিয়ানমার ও আরাকান আর্মির ওপর চাপ সৃষ্টি করে রোহিঙ্গাদের ওপর সহিংসতা বন্ধ এবং সম্প্রতি বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ও অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুতদের টেকসই প্রত্যাবাসন শুরু।
তৃতীয়ত, রাখাইনে স্থিতিশীলতা আনতে আন্তর্জাতিক সহায়তা জোগাড় এবং তা পর্যবেক্ষণে আন্তর্জাতিক বেসামরিক উপস্থিতি নিশ্চিত করা।
চতুর্থত, রোহিঙ্গাদের রাখাইন সমাজ ও শাসনব্যবস্থায় স্থায়ী অন্তর্ভুক্তির জন্য আস্থা গড়ে তোলার পদক্ষেপ গ্রহণ।
পঞ্চমত, যৌথ প্রতিক্রিয়া পরিকল্পনায় (Joint Response Plan) অর্থদাতাদের পূর্ণ সহায়তা নিশ্চিত করা।
ষষ্ঠত, জবাবদিহি ও পুনর্বাসনমূলক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা।
সপ্তম, মাদক অর্থনীতি ভেঙে দেওয়া এবং আন্তঃসীমান্ত অপরাধ দমন করা।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বিশ্ব আর রোহিঙ্গাদের নিজ মাতৃভূমিতে ফেরার জন্য অপেক্ষায় রাখার সামর্থ্য রাখে না।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আজ আমাদের সংকট সমাধানে একযোগে কাজ করার অঙ্গীকার করতে হবে। বাংলাদেশ এ লক্ষ্যে পূর্ণ সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত।’

সূত্র : বাসস

মন্তব্য

আরও পড়ুন

পেরুতে জেন-জি ঢেউ, চাপে প্রেসিডেন্ট

পেরুতে জেন-জি ঢেউ, চাপে প্রেসিডেন্ট জেন-জি বিক্ষোভে উত্তাল পেরু। ছবি: সংগৃহীত

ইনকা সাম্রাজ্য, আন্দেস পর্বতমালা বা মাচু পিচুর জন্য বারবার বিশ্ব মিডিয়ার খবরে আসা পেরু জেন-জি বিক্ষোভে উত্তাল। কয়েক দিন ধরে চলা বিক্ষোভ দ্রুত ব্যাপক জনবিস্ফোরণের দিকে এগোচ্ছে। পরিস্থিতির প্রকৃতি বুঝে পতনের চাপে রয়েছেন রাষ্ট্রপতি দিনা বলুয়ার্তে।

কর্তৃপক্ষ এবং মানবাধিকার কর্মীদের মতে, পেরুর রাষ্ট্রপতি দিনা বলুয়ার্তে এবং কংগ্রেসের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চলাকালীন একজন পুলিশ অফিসারসহ কমপক্ষে ১৯ জন আহত হয়েছেন। আন্দোলনকারী আহতের খবর ছড়িয়ে পড়লে জেন-জিরা আরও বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। সপ্তাহান্তে শত শত মানুষ কেন্দ্রীয় লিমায় সরকারের বিরুদ্ধে মিছিল করে। সড়কে পুলিশের বিশাল উপস্থিতিও তাদের দমাতে পারছে না।

তরুণদের একটি দল আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে লক্ষ্য করে পাথর, পেট্রোল বোমা এবং আতশবাজি ছুড়ে মারে। পুলিশ টিয়ার গ্যাস এবং রাবার বুলেট দিয়ে জবাব দেয়।

মানবাধিকার জোট জাতীয় মানবাধিকার সমন্বয়কারী গত রোববার জানিয়েছে, সংঘর্ষে একজন সাংবাদিকসহ ১৮ জন আহত হয়েছেন। বিভিন্ন গোষ্ঠীর দ্বারা আয়োজিত ‘মার্চের’ সময় মোলোটভ ককটেল হামলায় একজন পুলিশ অফিসার ভয়াবহ মাত্রায় দগ্ধ হন। পুলিশ এ তথ্য জানিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় সংঘর্ষের ছবি শেয়ার করেছে।

কিন্তু মানবাধিকার গোষ্ঠী সহিংসতার জন্য পুলিশকে দায়ী করেছে। গোষ্ঠীটির আইনজীবী মার পেরেজ বলেছেন, আমরা পুলিশকে প্রতিবাদ করার অধিকারকে সম্মান করার আহ্বান জানাচ্ছি। জনগণের ওপর আক্রমণ করা তো দূরের কথা, বিপুল পরিমাণে টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপের কোনো যুক্তিসংগত কারণ ছিল না।

শনিবারের বিক্ষোভে সহিংসতার পরও রোববার রাতে মিছিল বের করে শত শত পরিবহন শ্রমিক এবং জেনারেশন জেড যুব সংঘের আন্দোলনকারীরা। তারা দুর্নীতি ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে প্রতিবাদী স্লোগান দেন। ওই সময় কয়েক ডজন পুলিশ অফিসার কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

২৮ বছর বয়সি প্রকৌশলী আদ্রিয়ানা ফ্লোরেস রোববার এএফপি সংবাদ সংস্থাকে বলেন, ‘আমরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে, জীবনের জন্য এবং সেই অপরাধের বিরুদ্ধে মিছিল করছি, যা আমাদের প্রতিদিন হত্যা করছে।’

চাকরির অনিশ্চয়তা এবং ৭০ শতাংশেরও বেশি অনানুষ্ঠানিক কর্মসংস্থানের হার সত্ত্বেও গত ৫ সেপ্টেম্বর বোলুয়ার্ট সরকার একটি আইন পাস করে। এরপর থেকে সামাজিক অস্থিরতা বৃদ্ধি পায়। জেন-জিরা এ আইন অমান্যের ঘোষণা দিয়ে রাস্তায় নেমে আসে।

মেয়াদের শেষ প্রান্তে বলুয়ার্তে। আগামী বছরের ২৮ জুলাই তা শেষ হতে চলেছে। চূড়ান্ত পর্যায়ে এসে তার জনপ্রিয়তা দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে। তার জারি করা নতুন আইন অনুযায়ী, তরুণদের ব্যক্তিগত পেনশন তহবিলে অবদান রাখতে হবে। তরুণরা বলছেন, রাষ্ট্র তরুণদের চাকরি দিতে ব্যর্থ হলেও নিবর্তনমূলক আইন করতে এক ধাপ এগিয়ে।

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
Trumps 20 point proposal to end the war in Gaza

গাজায় যুদ্ধ অবসানে ট্রাম্পের ২০ দফা প্রস্তাবে যা আছে

গাজায় যুদ্ধ অবসানে ট্রাম্পের ২০ দফা প্রস্তাবে যা আছে যুদ্ধ বিধ্বস্ত গাজা উপত্যকা। ছবি: সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধ বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০ দফা প্রস্তাবে সমর্থন জানিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।

গত সসোমবার হোয়াইট হাউস থেকে এ প্রস্তাব প্রকাশ করা হয়। এটি গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধ তাৎক্ষণিকভাবে থামাতে পারে বলে দাবি করেছে হোয়াইট হাউস।

যদি উভয় পক্ষ এই পরিকল্পনা বা প্রস্তাব গ্রহণ করে, তবে যুদ্ধ তাৎক্ষণিক শেষ হবে। এর ফলে গাজায় বন্দি থাকা জীবিত ও নিহতদের মরদেহ ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ফিরিয়ে দেওয়া হবে এবং ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি দেওয়া হবে। এছাড়া গাজা অস্থায়ীভাবে একটি ফিলিস্তিনি সরকার দ্বারা পরিচালিত হবে, যেখানে হামাসের কোনো ভূমিকা থাকবে না। ইসরায়েল গাজাকে অধিগ্রহণ করবে না।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ট্রাম্পের প্রস্তাব গ্রহণ করলেও এখনো আনুষ্ঠানিক কিছু জানায়নি হামাস। হামাসের কর্মকর্তা মাহমুদ মারদাউই আল জাজিরাকে জানিয়েছেন, গাজায় শান্তি পরিকল্পনার ট্রাম্পের লিখিত প্রস্তাব তারা এখনো পাননি।

ট্রাম্পের ২০ দফা প্রস্তাব-

১. গাজা উগ্রবাদমুক্ত ও সন্ত্রাসমুক্ত এলাকা হবে, যা এর প্রতিবেশীদের জন্য হুমকি তৈরি করবে না।

২. গাজার জনগণের কল্যাণের জন্য গাজা পুনর্গঠিত হবে, যারা যথেষ্ট কষ্ট ভোগ করেছেন।

৩. যদি উভয় পক্ষ এই প্রস্তাবে সম্মত হয়, তবে যুদ্ধ তাৎক্ষণিক শেষ হবে। ইসরায়েলি বাহিনী বন্দি মুক্তির প্রস্তুতির জন্য নির্ধারিত সীমান্তে প্রত্যাহার করবে। এই সময়ে সব সামরিক কার্যক্রম স্থগিত থাকবে, যার মধ্যে রয়েছে বায়ু ও আর্টিলারি হামলা।

৪. এই চুক্তি গ্রহণের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ইসরায়েলের সব বন্দি, জীবিত ও মৃতদেহ ফেরত পাঠাতে হবে।

৫. সব বন্দি মুক্তি পাওয়ার পর ইসরায়েল ২৫০ জন বন্দিসহ এক হাজার ৭০০ গাজাবাসীকে মুক্তি দেবে, যারা ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের পরে আটক হন। এর মধ্যে নারী ও শিশু অন্তর্ভুক্ত থাকবে। প্রতিটি ইসরায়েলি বন্দির মরদেহ ফেরত দিলে ইসরায়েল ১৫ জন মৃত গাজাবাসীর মরদেহ ফিরিয়ে দেবে।

৬. বন্দিদের ফেরত দেওয়ার পর হামাসের যারা শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান এবং অস্ত্র সমর্পণ করতে রাজি হবে তাদের ক্ষমা করে দেওয়া হবে। এছাড়া হামাসের যেসব সদস্য গাজা ছাড়তে চান তাদের নিরাপদভাবে গন্তব্য দেশে যেতে দেওয়া হবে।

৭. এই চুক্তি গ্রহণের সঙ্গে সঙ্গে গাজায় পূর্ণ সাহায্য অবিলম্বে পাঠানো হবে। যার মধ্যে রয়েছে অবকাঠামোর পুনর্বাসন, হাসপাতাল ও বেকারি পুনর্গঠন, ধ্বংসাবশেষ অপসারণ এবং রাস্তা খোলার জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম প্রবেশের ব্যবস্থা।

৮. গাজায় মানবিক সহায়তা জাতিসংঘ, রেড ক্রিসেন্ট ও অন্য আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে পরিচালিত হবে, যেগুলো উভয় পক্ষের সঙ্গে কোনোভাবে সম্পর্কিত নয়। রাফাহ ক্রসিং খোলা থাকবে, যে বিষয়ে চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি চুক্তি হয়েছিল।

৯. গাজা একটি প্রযুক্তিনির্ভর, অরাজনৈতিক ফিলিস্তিনি কমিটির অস্থায়ী শাসনের অধীনে পরিচালিত হবে। গাজার জনগণের দৈনন্দিন জনসেবা ও পৌরসভার কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্বে থাকবে তারা। এই কমিটিতে যোগ্য ফিলিস্তিনি এবং আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা থাকবেন। এর তদারকি ও নজরদারি করবে একটি নতুন আন্তর্জাতিক অস্থায়ী প্রতিষ্ঠান ‘পিস বোর্ড’, যার নেতৃত্ব ও সভাপতিত্ব করবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। অন্যান্য সদস্য ও রাষ্ট্রপ্রধানদের নাম পরে ঘোষণা করা হবে, এর মধ্যে থাকবেন ব্রিটেনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার।

১০. গাজা পুনর্গঠনে একটি অর্থনৈতিক উন্নয়ন পরিকল্পনা তৈরি করা হবে। এতে এমন বিশেষজ্ঞদের একটি প্যানেল গঠন করা হবে যারা মধ্যপ্রাচ্যের কিছু উন্নত ও সমৃদ্ধ শহরের সূচনা করেছিলেন।

১১. গাজায় একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করা হবে। এ বিষয়ে আগ্রহী দেশগুলোর সঙ্গে শুল্ক ও প্রবেশাধিকার হার নিয়ে আলোচনা ও চুক্তি করা হবে।

১২. গাজা থেকে কাউকে জোরপূর্বক বের করে দেওয়া হবে না। তবে যারা যেতে চান তারা নিজের ইচ্ছায় যেতে পারবেন এবং ফিরে আসতেও পারবেন।

১৩. হামাস এবং অন্যান্য গোষ্ঠী গাজার শাসনে সরাসরি, পরোক্ষভাবে বা কোনোভাবে অংশ নেবে না বলে সম্মত হয়েছে। সব সামরিক, সন্ত্রাস ও আক্রমণাত্মক অবকাঠামো ধ্বংস করা হবে, যার মধ্যে সুড়ঙ্গ এবং অস্ত্র উৎপাদন সুবিধা অন্তর্ভুক্ত। নতুন গাজা সমৃদ্ধ অর্থনীতি গড়ে তোলায় এবং তাদের প্রতিবেশীদের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে পূর্ণভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকবে।

১৪. আঞ্চলিক অংশীদাররা এ বিষয় নিশ্চিত করবে যে, হামাস এবং অন্যান্য গোষ্ঠী প্রতিবেশী দেশ বা তার জনগণের জন্য কোনো হুমকি তৈরি করবে না।

১৫. যুক্তরাষ্ট্র আরব ও আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করবে একটি অস্থায়ী আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা বাহিনী (আইএসএফ) গড়ে তোলার জন্য, যা অবিলম্বে গাজায় মোতায়েন হবে। আইএসএফ গাজার ফিলিস্তিনি পুলিশ বাহিনীর প্রশিক্ষণ দেবে এবং তাদের সহায়তা করবে। এই বাহিনী গাজায় দীর্ঘমেয়াদি অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তায় কাজ করবে। ইসরায়েল ও মিসরের সঙ্গে মিলিতভাবে সীমান্ত এলাকায়ও কাজ করবে এই বাহিনী।

১৬. ইসরায়েল গাজা দখল বা অধিগ্রহণ করবে না। আইএসএফ যখন নিয়ন্ত্রণ ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা করবে, তখন ইসরায়েলি সেনাবাহিনী প্রত্যাহার করা হবে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী তাদের দখল করা গাজা এলাকা ধাপে ধাপে আইএসএফের কাছে হস্তান্তর করবে।

১৭. যদি হামাস এই প্রস্তাব বিলম্বিত বা প্রত্যাখ্যান করে, তাহলে উপরোক্ত পদক্ষেপগুলো সেই এলাকায় বাস্তবায়িত হবে- যা ইসরায়েলি সেনাবাহিনী আইএসএফের কাছে হস্তান্তর করেছে।

১৮. ধৈর্য ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের ভিত্তিতে একটি আন্তঃধর্মীয় সংলাপ প্রক্রিয়া গড়ে তোলা হবে, যাতে ফিলিস্তিনি ও ইসরায়েলিদের মানসিকতার পরিবর্তনের চেষ্টা করা যায়।

১৯. এসব উদ্যোগে ফিলিস্তিনিদের আত্মনিয়ন্ত্রণ এবং রাষ্ট্রীয় মর্যাদার জন্য একটি বিশ্বাসযোগ্য পথ তৈরি হতে পারে। ফিলিস্তিনের জনগণের আকাঙ্ক্ষা হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র যা স্বীকৃতি দেয়।

২০. শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ সহাবস্থানের জন্য রাজনৈতিক ঐকমত্যে পৌঁছাতে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে সংলাপের আয়োজন করবে যুক্তরাষ্ট্র।

ট্রাম্পের গাজা পরিকল্পনাকে স্বাগত জানালেন মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপীয় নেতারা

ট্রাম্পের গাজা পরিকল্পনাকে স্বাগত জানালেন মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপীয় নেতারা। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, হামাস এ পরিকল্পনা গ্রহণ না করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ট্রাম্প ও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সমঝোতায় তৈরি এই পরিকল্পনায় তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতি, হামাসের হাতে আটক ২০ জন জীবিত ইসরায়েলি জিম্মি ও অন্তত দুই ডজন নিহত জিম্মির মরদেহ ফেরত দেওয়া এবং এর বিনিময়ে শত শত বন্দি ফিলিস্তিনিকে মুক্তির প্রস্তাব রাখা হয়েছে।

পরিকল্পনা অনুযায়ী, হামাস গাজার শাসন থেকে সম্পূর্ণভাবে দূরে থাকবে। এতে ভবিষ্যতে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠনের সম্ভাবনার কথাও উল্লেখ আছে, যদিও নেতানিয়াহু পরবর্তীতে তা নাকচ করেছেন।

হোয়াইট হাউসে এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প একে ‘ঐতিহাসিক শান্তির দিন’ বলে আখ্যা দেন। তিনি বলেন, হামাস পরিকল্পনা না মানলে যুক্তরাষ্ট্র হামাসকে ধ্বংস করার ব্যাপারে ইসরায়েলকে পূর্ণ সমর্থন দেবে।

নেতানিয়াহুও বলেন, হামাস প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলে ইসরায়েল ‘শেষ পর্যন্ত লড়বে’। পরে ভিডিওবার্তায় ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেন, তিনি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের বিরোধী। যদিও পরিকল্পনায় ইসরায়েলি সেনাদের গাজা থেকে ধাপে ধাপে সরে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে।

ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ ট্রাম্পের প্রচেষ্টাকে ‘আন্তরিক ও দৃঢ়’ আখ্যা দিয়েছে। তাদের সরকারি বার্তা সংস্থা ‘ওয়াফা’ জানায়, যুক্তরাষ্ট্রসহ আঞ্চলিক রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে যৌথভাবে যুদ্ধের অবসান, গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়া এবং বন্দি বিনিময়ে তারা কাজ চালিয়ে যাবে।

এছাড়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব, কাতার, মিশর, জর্ডান, তুরস্ক, ইন্দোনেশিয়া ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা এক যৌথ বিবৃতিতে ট্রাম্পের নেতৃত্ব ও আন্তরিক প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানান। তারা বলেন, এই চুক্তি ‘দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের পথ তৈরি করবে, যেখানে গাজা ও পশ্চিম তীর মিলিত হয়ে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠন করবে।

ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট আন্তোনিও কস্তা বলেন, নেতানিয়াহুর ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া তাকে উৎসাহিত করেছে। তিনি সব পক্ষকে এই সুযোগ কাজে লাগানোর আহ্বান জানান।

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টার্মার বলেছেন, সব পক্ষকে একসঙ্গে বসে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কাজ করে এ চুক্তিকে বাস্তবায়ন করতে হবে। হামাস এখনই অস্ত্র ফেলে সব জিম্মিকে মুক্তি দিয়ে কষ্টের অবসান ঘটানো উচিত।

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
Maduro is preparing to announce the US attack in Venezuela

ভেনিজুয়েলায় মার্কিন হামলার শঙ্কা, জরুরি অবস্থা ঘোষণার প্রস্তুতি মাদুরোর

ভেনিজুয়েলায় মার্কিন হামলার শঙ্কা, জরুরি অবস্থা ঘোষণার প্রস্তুতি মাদুরোর নিকোলাস মাদুরো

মার্কিন হামলার পরিপ্রেক্ষিতে জরুরি অবস্থা ঘোষণার প্রস্তুতির কথা জানিয়েছেন ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো। গত সোমবার টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে এ কথা বলেন।

প্রেসিডেন্ট মাদুরো বলেন, ‘যদি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভেনেজুয়েলায় সামরিক হামলা চালায়, তবে আমাদের জনগণ, শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষার জন্য আমি জরুরি অবস্থা ঘোষণা করবো।’

মাদকবিরোধী অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে প্রেসিডেন্ট মাদুরো বলেন, ‘তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ‘ঐতিহাসিক ও শান্তিপূর্ণ’ সম্পর্ক চান।’

এর আগে দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট ডেলসি রদ্রিগেজ জানান, ‘প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো একটি ডিক্রিতে স্বাক্ষর করেছেন। যাতে রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা বিষয়ে বিশেষ ক্ষমতা গ্রহণের কথা উল্লেখ আছে। এ ক্ষমতা দিয়ে তিনি সারাদেশে সেনা মোতায়েন এবং সরকারি সেবা ও তেল শিল্পের ওপর সামরিক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে পারবেন। মাদুরোর স্বাক্ষরিত ডিক্রির আওতায় প্রদত্ত বিশেষ ক্ষমতা ৯০ দিনের জন্য বলবত থাকবে এবং সংবিধান অনুযায়ী আরও ৯০ দিন নবায়নযোগ্য ।’

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ক্যারিবীয় সাগরে আটটি যুদ্ধজাহাজ, একটি পারমাণবিক সাবমেরিন এবং এফ-৩৫ স্টিলথ যুদ্ধবিমান মোতায়েন করেছে। ফলে ওই অঞ্চলে মার্কিন নৌবাহিনীর অন্যতম বৃহত্তম মোতায়েন বলে মনে করা হচ্ছে।

মার্কিন বাহিনী ভেনিজুয়েলার আন্তর্জাতিক জলসীমায় অন্তত তিনটি বোটে হামলা চালিয়েছে। বোটের মাধ্যমে মাদক পরিবহনের অভিযোগের দাবি করে যুক্তরাষ্ট্র। এসব হামলায় অন্তত ১৭ জন নিহত হয়েছে। ভেনেজুয়েলা একে ‘অঘোষিত যুদ্ধ’ বলে উল্লেখ করেছে। যদিও ট্রাম্প প্রশাসন দাবি করছে, এসব অভিযান মাদকবিরোধী প্রচেষ্টার অংশ। জাতিসংঘ ও মার্কিন তথ্য অনুসারে, ‘ভেনিজুয়েলা যুক্তরাষ্ট্রে কোকেন সরবরাহের প্রধান উৎস নয়।’

ভেনিজুয়েলায় মার্কিন আগ্রাসনের কারণে আন্তর্জাতিক অঙ্গণে সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে। জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা মার্কিন এই হামলাকে ‘বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। অন্যদিকে এনবিসি নিউজের বরাতে জানা গেছে, হোয়াইট হাউস ভেনেজুয়েলার অভ্যন্তরে বিমান হামলার পরিকল্পনা করছে।

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
Netanyahu apologized for the attack on Qatar

কাতারে হামলার জন্য ক্ষমা চাইলেন নেতানিয়াহু

কাতারে হামলার জন্য ক্ষমা চাইলেন নেতানিয়াহু বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু

কাতারে বিমান হামলার জন্য অনুতপ্ত ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। দেশটির প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মেদ বিন আবদুল রহমান আল থানির কাছে ক্ষমা চাওয়ার পাশাপাশি ভবিষ্যতে কাতারে আর কখনও হামলা করা হবে না বলে প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন তিনি।

অন্যদিকে কাতারের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান আল থানি নেতানিয়াহুর এ পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন। খবর আনাদোলু এজেন্সি

গত সোমবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে হোয়াইট হাউস। সেখানে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের সময় তার উপস্থিতিতে কাতারের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে টেলিফোনে কথা হয় নেতানিয়াহুর। সে সময় কাতারে হামলার জন্য ক্ষমা চান নেতানিয়াহু।

‘কাতারে হামাসকে লক্ষ্য করে পরিচালিত হামলায় কাতারি নিরাপত্তাকর্মী নিহতের ঘটনায় দেশটির প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান আল থানির কাছে গভীর শোক প্রকাশ ও ক্ষমা চেয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। এছাড়া ইসরায়েলি জিম্মিদের হামাসের আলোচনা চলার সময় পরিচালিত এই হামলার মাধ্যমে কাতারের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘনের জন্য অনুতাপও প্রকাশ করেছেন তিনি।’

‘কাতারের প্রধানমন্ত্রী আল থানি ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে বলেছেন, আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা রক্ষার জন্য অর্থপূর্ণ ভূমিকা রাখতে কাতার সবসময়েই প্রস্তুত।’

কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও গত সোমবার এক বার্তায় টেলিফোনে আল থানি ও নেতানিয়াহুর ফোনালাপের তথ্য নিশ্চিত করেছে।

গত ৯ অক্টোবর বিকেলের দিকে কাতারের রাজধানী দোহায় একটি আবাসিক ভবনে বিমান অভিযান পরিচালনা করে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। ওই ভবনটিতে গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাসের বর্তমান শীর্ষ নেতা খলিল আল হায়া এবং গোষ্ঠীটির অন্যান্য নেতারা গাজায় যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত ট্রাম্পের খসড়া প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করছিলেন।

খলিল আল হায়া এবং হামাসের অন্যান্য শীর্ষ নেতাদের হত্যার উদ্দেশে এ হামলা চালিয়েছিল আইডিএফ। হামলায় ৬ জন নিহত হয়েছেন এবং নিহতদের মধ্যে একজন কাতারি নিরাপত্তারক্ষীও ছিলেন। তবে খলিল কিংবা হামাসের অন্য কোনো জ্যেষ্ঠ নেতার কোনো ক্ষতি হয়নি।

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
Hamas has not yet responded to Trumps Gaza plan

ট্রাম্পের গাজা পরিকল্পনার বিষয়ে হামাসের এখনো কোনো সাড়া নেই

ট্রাম্পের গাজা পরিকল্পনার বিষয়ে হামাসের এখনো কোনো সাড়া নেই

হামাস মঙ্গলবার গাজা নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরিকল্পনার বিষয়ে এখনো কোনো সাড়া দেয়নি অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্টকে সমর্থন দেওয়ার পর ইসরাইলি সেনাবাহিনী বেশিরভাগ ভূখণ্ডে অবস্থান করবে।

এই পরিকল্পনায় যুদ্ধবিরতি ৭২ ঘন্টার মধ্যে হামাস কর্তৃক জিম্মিদের মুক্তি, হামাসের নিরস্ত্রীকরণ এবং গাজা থেকে ধীরে ধীরে ইসরাইলি সেনা প্রত্যাহারের আহ্বান জানানো হয়েছে। পরে ট্রাম্পের নেতৃত্বে একটি যুদ্ধ-পরবর্তী অন্তর্বর্তীকালীন কর্তৃপক্ষ গঠন করা হবে।

জেরুজালেম থেকে এএফপি এ খবর জানায়।

সোমবার হামাসের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, তাদের দল এখনো ২০-দফা পরিকল্পনাটি পায়নি, তবে বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত একজন কর্মকর্তা পরে এএফপি’কে বলেছেন, কাতারি এবং মিশরীয় মধ্যস্থতাকারীরা হামাসের সাথে দেখা করে তাদের নথিটি সরবরাহ করেছেন।

কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আব্দুল রহমান আল থানি এবং মিশরের গোয়েন্দা প্রধান হাসান মাহমুদ রাশাদ ‘হামাসের আলোচকদের সাথে দেখা করেছেন এবং ২০-দফা পরিকল্পনা ভাগ করে নিয়েছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্রটি জানিয়েছে, হামাসের আলোচকরা বলেছেন, তারা সরল বিশ্বাসে এটি পর্যালোচনা করবেন এবং একটি প্রতিক্রিয়া জানাবেন’।

ট্রাম্পের সাথে যৌথ সংবাদ সম্মেলনের পর তার টেলিগ্রাম চ্যানেলে পোস্ট করা একটি ভিডিও বিবৃতিতে নেতানিয়াহু বলেছেন, গাজার বেশিরভাগ অংশে সেনাবাহিনী থাকবে এবং ট্রাম্পের সাথে আলোচনার সময় তিনি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের সাথে একমত নন বলেও জানান।

তিনি বলেছেন, যখন ইসরাইলি সামরিক বাহিনী গাজা উপত্যকার বেশিরভাগ অংশে থাকবে, ‘আমরা আমাদের সকল জিম্মিকে জীবিত এবং সুস্থভাবে উদ্ধার করব’।

তবুও, নেতানিয়াহুর জোট সরকারের সদস্য, ইসরাইলের অতি-ডানপন্থী অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ এই পরিকল্পনাকে ‘মারাত্মক কূটনৈতিক ব্যর্থতা’ বলে অভিহিত করেছেন।

তিনি বলেছেন, ‘আমার ধারণা, এর সমাপ্তি কান্নায় হবে। আমাদের সন্তানরা আবার গাজায় যুদ্ধ করতে বাধ্য হবে’।

‘পূর্ণ সমর্থন’

সোমবার ওয়াশিংটনে ট্রাম্প জোর দিয়ে বলেছেন, যে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ‘খুব কাছাকাছি’ এবং ঘোষণাটিকে ‘একটি সুন্দর দিন - সম্ভাব্যভাবে সভ্যতার সর্বকালের সেরা দিনগুলোর মধ্যে একটি’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন।

তার পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে একটি ‘অস্থায়ী আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা বাহিনী’ মোতায়েন করা এবং ট্রাম্পের নেতৃত্বে এবং সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারসহ একটি অন্তর্বর্তীকালীন কর্তৃপক্ষ তৈরি করা।

২০০৩ সালের ইরাক যুদ্ধে তার ভূমিকার জন্য মধ্যপ্রাচ্যে এখনো ব্যাপকভাবে ঘৃণিত ব্লেয়ার ‘সাহসী এবং বুদ্ধিমান’ পরিকল্পনার প্রশংসা করেছেন।

এই চুক্তিতে হামাস যোদ্ধাদের সম্পূর্ণ নিরস্ত্রীকরণ এবং ভবিষ্যতে সরকারে ভূমিকা থেকে বাদ দেওয়ার দাবি করা হবে, তবে যারা ‘শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে’ সম্মত হবেন তাদের সাধারণ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।

সংবাদ সম্মেলনে নেতানিয়াহু সন্দেহ প্রকাশ করেন, অধিকৃত পশ্চিম তীর নামমাত্রভাবে পরিচালিত ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে গাজার শাসনব্যবস্থায় ভূমিকা রাখার অনুমতি দেওয়া হবে কি-না।

ট্রাম্প উল্লেখ করেছেন, তাদের বৈঠকে নেতানিয়াহু যেকোনো ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের তীব্র বিরোধিতা করেছিলেন যাতে মার্কিন পরিকল্পনায় স্থান পেয়েছে।

নেতানিয়াহু বলেছেন, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধের আপনার পরিকল্পনাকে আমি সমর্থন করি, যা আমাদের যুদ্ধের লক্ষ্য অর্জন করবে’।

নেতানিয়াহু ট্রাম্পকে উদ্দেশ করে বলেছেন, মিঃ প্রেসিডেন্ট, ‘যদি হামাস আপনার পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করে অথবা যদি তারা এটি গ্রহণ করে এবং তারপর মূলত এটির বিরুদ্ধে সবকিছু করে, তাহলে ইসরাইল নিজেই কাজটি শেষ করবে।’

ট্রাম্প বলেছেন, হামাস যদি চুক্তিটি মেনে না নেয়, তাহলে ইসরাইলের প্রতি তার ‘পূর্ণ সমর্থন’ থাকবে।

বিশ্বব্যাপী প্রতিক্রিয়া ছিল দ্রুত এবং দ্রুত। মধ্যস্থতাকারী মিশর এবং কাতারসহ গুরুত্বপূর্ণ আরব ও মুসলিম দেশগুলো গত সপ্তাহে ট্রাম্পের সাথে তাদের নিজস্ব আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে চুক্তির ‘আন্তরিক প্রচেষ্টার’ প্রশংসা করেছে।

ওয়াশিংটনের ইউরোপীয় মিত্ররা তাৎক্ষণিকভাবে সমর্থন জানায়, ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি এবং ইতালির নেতারা এই পরিকল্পনার প্রতি জোরালো সমর্থন প্রকাশ করেন।

এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রধান আন্তোনিও কস্তা সকল পক্ষকে ‘শান্তির জন্য একটি প্রকৃত সুযোগ দেওয়ার জন্য এই মুহূর্তটিকে কাজে লাগানোর’ আহ্বান জানিয়েছেন।

‘অবাস্তব’

কিন্তু গাজায় মানুষ সন্দেহ প্রকাশ করেছে।

দক্ষিণ গাজার তথাকথিত মানবিক অঞ্চল আল-মাওয়াসিতে আশ্রয়স্থল থেকে ৩৯ বছর বয়সী ইব্রাহিম জুদেহ এএফপি’কে বলেছেন, ‘এটা স্পষ্ট যে এই পরিকল্পনাটি অবাস্তব’।

মে মাসে শুরু হওয়া সামরিক অভিযানে বিধ্বস্ত দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফাহ থেকে আসা এই কম্পিউটার প্রোগ্রামার বলেছেন, ‘এটি এমন শর্ত দিয়ে তৈরি করা হয়েছে যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরাইল জানে হামাস কখনই মেনে নেবে না। আমাদের জন্য এর অর্থ হল যুদ্ধ এবং দুর্ভোগ অব্যাহত থাকবে’।

গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থা এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, মঙ্গলবারও গাজা জুড়ে ইসরাইলি বিমান হামলা এবং গোলাবর্ষণ অব্যাহত ছিল।

ইসরাইলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তাদের বাহিনী সমগ্র অঞ্চল জুড়ে অভিযান চালাচ্ছে বিশেষ করে গাজা সিটিতে, যেখানে তারা সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে একটি বড় আক্রমণ চালিয়েছে।

সামরিক বাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘গত দিনে, আইএএফ (বিমান বাহিনী) গাজা উপত্যকা জুড়ে ১৬০ টিরও বেশি সন্ত্রাসী স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে সন্ত্রাসী, অস্ত্র সংরক্ষণের সুযোগ, পর্যবেক্ষণ পোস্ট এবং সন্ত্রাসী অবকাঠামোগত স্থান’।

পশ্চিম তীরে অবস্থিত কিন্তু যুদ্ধ-পরবর্তী গাজা সরকারে ভূমিকা রাখার জন্য নির্ধারিত হতে পারে এমন ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ ট্রাম্পের ‘আন্তরিক এবং দৃঢ় প্রচেষ্টা’কে স্বাগত জানিয়েছে।

অন্যদিকে, হামাসের মিত্র ইসলামিক জিহাদ বলেছে, এই পরিকল্পনা ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে আরো আগ্রাসনকে ইন্ধন জোগাবে।

গ্রুপটি এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘এর মাধ্যমে, ইসরাইল-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মাধ্যমে যুদ্ধের মাধ্যমে যা অর্জন করতে পারেনি তা চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে’।

এএফপি’র ইসরাইলি সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের ইসরাইলে আক্রমণের ফলে গাজা যুদ্ধের সূত্রপাত হয়। এই আক্রমণে ১,২১৯ জন নিহত হন, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক।

জাতিসংঘের বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে করা হামাস-নিয়ন্ত্রিত ভূখণ্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান অনুসারে, ইসরাইলি আক্রমণের ফলে গাজার বেশিরভাগ অংশ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে এবং ৬৬,০৫৫ জন বেসামরিক ফিলিস্তিনি নাগরিক নিহত হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
The high level conference on the UN is the Rohingya situation today

জাতিসংঘে রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে উচ্চপর্যায়ের সম্মেলন আজ

জাতিসংঘে রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে উচ্চপর্যায়ের সম্মেলন আজ প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। ফাইল ছবি

জাতিসংঘ সদর দপ্তরের সাধারণ পরিষদ হলে আজ মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হচ্ছে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিম ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি নিয়ে উচ্চপর্যায়ের আন্তর্জাতিক সম্মেলন।

প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার জানিয়েছেন, সম্মেলনে অন্তত ৭৫টি দেশ ও সংস্থার প্রতিনিধির অংশগ্রহণ নিশ্চিত হয়েছে। তাঁদের মধ্যে কয়েকজন রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানও রয়েছেন।

নিউইয়র্ক স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় (বাংলাদেশ সময় রাত ৮টা) শুরু হবে এই সম্মেলন।

জাতিসংঘ আয়োজিত এ সম্মেলনের লক্ষ্য রোহিঙ্গা সংকটের প্রতি রাজনৈতিক সমর্থন জোরদার করা, আন্তর্জাতিক মনোযোগ ধরে রাখা, সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা এবং মানবাধিকারসহ সংকটের মূল কারণগুলো মোকাবিলায় উদ্যোগ গ্রহণ।

সম্মেলনে মিয়ানমারের বাস্তব পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে একটি সার্বিক, সুনির্দিষ্ট ও সময়সীমাবদ্ধ পরিকল্পনা প্রণয়ন নিয়ে আলোচনা হবে। অগ্রাধিকার পাবে রোহিঙ্গা মুসলিমদের নিরাপদ, স্বেচ্ছা ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের বিষয়টি।

উদ্বোধনী অধিবেশনে বক্তৃতা করবেন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

এ সম্মেলনে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) প্রতিনিধিত্ব করবে তুরস্ক এবং উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদের (জিসিসি) প্রতিনিধিত্ব করবে কুয়েত।

সম্মেলনের আগে সোমবার হোটেলে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করেছেন জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্রান্ডি, মিয়ানমার বিষয়ক মহাসচিবের বিশেষ দূত জুলি বিশপ এবং ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথরিন রাসেল। বৈঠকগুলোতে রোহিঙ্গা সংকটের নানা দিক নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

পরে হোটেলে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, আলোচনায় রাখাইন রাজ্যের গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতি, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের পথনকশা, শিবিরে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের জন্য অর্থায়ন বৃদ্ধি এবং রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তোলার বিষয় গুরুত্ব পেয়েছে।

মন্তব্য

p
উপরে