ইনকা সাম্রাজ্য, আন্দেস পর্বতমালা বা মাচু পিচুর জন্য বারবার বিশ্ব মিডিয়ার খবরে আসা পেরু জেন-জি বিক্ষোভে উত্তাল। কয়েক দিন ধরে চলা বিক্ষোভ দ্রুত ব্যাপক জনবিস্ফোরণের দিকে এগোচ্ছে। পরিস্থিতির প্রকৃতি বুঝে পতনের চাপে রয়েছেন রাষ্ট্রপতি দিনা বলুয়ার্তে।
কর্তৃপক্ষ এবং মানবাধিকার কর্মীদের মতে, পেরুর রাষ্ট্রপতি দিনা বলুয়ার্তে এবং কংগ্রেসের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চলাকালীন একজন পুলিশ অফিসারসহ কমপক্ষে ১৯ জন আহত হয়েছেন। আন্দোলনকারী আহতের খবর ছড়িয়ে পড়লে জেন-জিরা আরও বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। সপ্তাহান্তে শত শত মানুষ কেন্দ্রীয় লিমায় সরকারের বিরুদ্ধে মিছিল করে। সড়কে পুলিশের বিশাল উপস্থিতিও তাদের দমাতে পারছে না।
তরুণদের একটি দল আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে লক্ষ্য করে পাথর, পেট্রোল বোমা এবং আতশবাজি ছুড়ে মারে। পুলিশ টিয়ার গ্যাস এবং রাবার বুলেট দিয়ে জবাব দেয়।
মানবাধিকার জোট জাতীয় মানবাধিকার সমন্বয়কারী গত রোববার জানিয়েছে, সংঘর্ষে একজন সাংবাদিকসহ ১৮ জন আহত হয়েছেন। বিভিন্ন গোষ্ঠীর দ্বারা আয়োজিত ‘মার্চের’ সময় মোলোটভ ককটেল হামলায় একজন পুলিশ অফিসার ভয়াবহ মাত্রায় দগ্ধ হন। পুলিশ এ তথ্য জানিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় সংঘর্ষের ছবি শেয়ার করেছে।
কিন্তু মানবাধিকার গোষ্ঠী সহিংসতার জন্য পুলিশকে দায়ী করেছে। গোষ্ঠীটির আইনজীবী মার পেরেজ বলেছেন, আমরা পুলিশকে প্রতিবাদ করার অধিকারকে সম্মান করার আহ্বান জানাচ্ছি। জনগণের ওপর আক্রমণ করা তো দূরের কথা, বিপুল পরিমাণে টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপের কোনো যুক্তিসংগত কারণ ছিল না।
শনিবারের বিক্ষোভে সহিংসতার পরও রোববার রাতে মিছিল বের করে শত শত পরিবহন শ্রমিক এবং জেনারেশন জেড যুব সংঘের আন্দোলনকারীরা। তারা দুর্নীতি ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে প্রতিবাদী স্লোগান দেন। ওই সময় কয়েক ডজন পুলিশ অফিসার কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
২৮ বছর বয়সি প্রকৌশলী আদ্রিয়ানা ফ্লোরেস রোববার এএফপি সংবাদ সংস্থাকে বলেন, ‘আমরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে, জীবনের জন্য এবং সেই অপরাধের বিরুদ্ধে মিছিল করছি, যা আমাদের প্রতিদিন হত্যা করছে।’
চাকরির অনিশ্চয়তা এবং ৭০ শতাংশেরও বেশি অনানুষ্ঠানিক কর্মসংস্থানের হার সত্ত্বেও গত ৫ সেপ্টেম্বর বোলুয়ার্ট সরকার একটি আইন পাস করে। এরপর থেকে সামাজিক অস্থিরতা বৃদ্ধি পায়। জেন-জিরা এ আইন অমান্যের ঘোষণা দিয়ে রাস্তায় নেমে আসে।
মেয়াদের শেষ প্রান্তে বলুয়ার্তে। আগামী বছরের ২৮ জুলাই তা শেষ হতে চলেছে। চূড়ান্ত পর্যায়ে এসে তার জনপ্রিয়তা দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে। তার জারি করা নতুন আইন অনুযায়ী, তরুণদের ব্যক্তিগত পেনশন তহবিলে অবদান রাখতে হবে। তরুণরা বলছেন, রাষ্ট্র তরুণদের চাকরি দিতে ব্যর্থ হলেও নিবর্তনমূলক আইন করতে এক ধাপ এগিয়ে।
জাতিসংঘ সদর দপ্তরের সাধারণ পরিষদ হলে আজ মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হচ্ছে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিম ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি নিয়ে উচ্চপর্যায়ের আন্তর্জাতিক সম্মেলন।
প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার জানিয়েছেন, সম্মেলনে অন্তত ৭৫টি দেশ ও সংস্থার প্রতিনিধির অংশগ্রহণ নিশ্চিত হয়েছে। তাঁদের মধ্যে কয়েকজন রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানও রয়েছেন।
নিউইয়র্ক স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় (বাংলাদেশ সময় রাত ৮টা) শুরু হবে এই সম্মেলন।
জাতিসংঘ আয়োজিত এ সম্মেলনের লক্ষ্য রোহিঙ্গা সংকটের প্রতি রাজনৈতিক সমর্থন জোরদার করা, আন্তর্জাতিক মনোযোগ ধরে রাখা, সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা এবং মানবাধিকারসহ সংকটের মূল কারণগুলো মোকাবিলায় উদ্যোগ গ্রহণ।
সম্মেলনে মিয়ানমারের বাস্তব পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে একটি সার্বিক, সুনির্দিষ্ট ও সময়সীমাবদ্ধ পরিকল্পনা প্রণয়ন নিয়ে আলোচনা হবে। অগ্রাধিকার পাবে রোহিঙ্গা মুসলিমদের নিরাপদ, স্বেচ্ছা ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের বিষয়টি।
উদ্বোধনী অধিবেশনে বক্তৃতা করবেন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
এ সম্মেলনে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) প্রতিনিধিত্ব করবে তুরস্ক এবং উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদের (জিসিসি) প্রতিনিধিত্ব করবে কুয়েত।
সম্মেলনের আগে সোমবার হোটেলে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করেছেন জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্রান্ডি, মিয়ানমার বিষয়ক মহাসচিবের বিশেষ দূত জুলি বিশপ এবং ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথরিন রাসেল। বৈঠকগুলোতে রোহিঙ্গা সংকটের নানা দিক নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
পরে হোটেলে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, আলোচনায় রাখাইন রাজ্যের গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতি, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের পথনকশা, শিবিরে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের জন্য অর্থায়ন বৃদ্ধি এবং রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তোলার বিষয় গুরুত্ব পেয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটল হিলে হামলার পর প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অ্যাকাউন্ট স্থগিত করাকে কেন্দ্র করে মামলার নিষ্পত্তিতে ২ কোটি ৪৫ লাখ ডলার দিতে সম্মত হয়েছে ইউটিউব। গতকাল সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের এক আদালতে এ-সংক্রান্ত নথি দাখিল করা হয়েছে।
২০২১ সালে ইউটিউব ও আলফাবেটের প্রধান নির্বাহী সুন্দর পিচাইয়ের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন ট্রাম্প। মামলায় তিনি অভিযোগ করেন, ইউটিউব ‘অভূতপূর্ব ক্ষমতা, বাজার দখল এবং জাতীয় জনমত নিয়ন্ত্রণের সক্ষমতা’ অর্জন করেছে। ইউটিউব জানিয়েছিল, তাদের প্ল্যাটফর্মে সহিংসতা উসকে দেওয়ার নীতিমালা লঙ্ঘনের কারণে ট্রাম্পের চ্যানেল স্থগিত করা হয়েছিল।
মামলা নিষ্পত্তি হওয়ায় এটি এখন আনুষ্ঠানিকভাবে খারিজ হয়েছে। তবে গুগলের পক্ষ থেকে এখনো এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য জানানো হয়নি।
এদিকে মাত্র এক সপ্তাহ আগেই ইউটিউব ঘোষণা দেয়, যারা কোভিড-১৯ এবং ২০২০ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের তথ্য বিভ্রান্তি ছড়ানোর জন্য নিষিদ্ধ হয়েছিলেন, তাদের চ্যানেল পুনরায় চালু করার সুযোগ দেওয়া হবে। সে সময় ইউটিউব জানিয়েছিল, তারা রক্ষণশীল কণ্ঠকে স্বাগত জানায় এবং অ্যাকাউন্ট স্থগিত করার সিদ্ধান্তটি মূলত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসনের চাপের ফল।
এর আগে চলতি বছরের জানুয়ারিতে ফেসবুক-মালিক মেটা একই ধরনের আরেকটি মামলায় ট্রাম্পকে ২ কোটি ৫০ লাখ ডলার ক্ষতিপূরণ দেয়। আর ফেব্রুয়ারিতে এক্স (সাবেক টুইটার) ১ কোটি ডলার ক্ষতিপূরণ দিয়ে মামলা নিষ্পত্তি করে। মেটার দেওয়া অর্থের বেশির ভাগই ট্রাম্পের প্রেসিডেনশিয়াল লাইব্রেরি তহবিলে যাবে। আর ইউটিউবের দেওয়া ২ কোটি ৪৫ লাখ ডলারের মধ্যে ২ কোটি ২০ লাখ ডলার যাবে ন্যাশনাল মল সংরক্ষণ এবং হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের প্রস্তাবিত ২০ কোটি মিলিয়ন ডলারের বলরুম নির্মাণ প্রকল্পে।
এই তিনটি মামলাই প্রথম দায়ের করেন ট্রাম্পের আইনজীবী ও রাজনৈতিক মিত্র জন কোয়েল। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের বরাতে জানা যায়, ট্রাম্পের হোয়াইট হাউসে প্রত্যাবর্তন এসব নিষ্পত্তিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। কোয়েল বলেন, ‘যদি তিনি (ট্রাম্প) পুনর্নির্বাচিত না হতেন, আমরা হাজার বছর ধরে আদালতেই পড়ে থাকতাম।’
বর্তমানে ইউক্রেন ও বেলারুশে ট্রাম্পের ডেপুটি স্পেশাল এনভয় হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন কোয়েল।
গার্ডিয়ানকে দেওয়া এক ইমেইলে কোয়েল ট্রাম্পকে ‘আদর্শ মক্কেল’ বলে আখ্যা দেন। তিনি আরও লেখেন, ‘২০২১ সালের জুলাইয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষ থেকে আমি যে মামলাগুলো করেছিলাম, সেগুলো সব মিলিয়ে ৬০ মিলিয়ন ডলারে নিষ্পত্তি হয়েছে। আমরা কেবল অর্থ পাইনি, প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর আচরণও বদলাতে বাধ্য করেছি।’
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালে মামলাটি বন্ধ হয়ে গেলেও ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট পদে বিজয়ের পর তাঁর আইনজীবীরা মামলাটি পুনরুজ্জীবিত করার আবেদন করেন। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগপর্যন্ত সব মামলাই ছিল কঠিন আইনি চ্যালেঞ্জের মুখে। ২০২২ সালে এক ফেডারেল বিচারক টুইটারের বিরুদ্ধে করা মামলা খারিজ করে দেন। মেটা ও ইউটিউবের মামলাগুলো তখন স্থগিত ছিল। পরে ট্রাম্পের আইনজীবীরা আপিল করে মামলাগুলো পুনরায় চালুর চেষ্টা করেন।
২০২১ সালের ১২ জানুয়ারি ইউটিউব প্রথম ট্রাম্পের চ্যানেল সাত দিনের জন্য স্থগিত করে। সে সময় তিনি একটি ভিডিও পোস্ট করেছিলেন, যেখানে ৬ জানুয়ারির ভাষণকে তিনি ‘সম্পূর্ণ উপযুক্ত’ বলে দাবি করেছিলেন। ইউটিউব জানায়, ‘সহিংসতা ছড়ানোর সম্ভাবনা’ থাকার কারণে চ্যানেলটি অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হয়।
অবশেষে ২০২৩ সালের মার্চে ট্রাম্প পুনরায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঘোষণা দেওয়ার পর ইউটিউব তার চ্যানেল পুনরায় চালু করে। ইউটিউব এক বিবৃতিতে জানায়, ‘বাস্তব জগতের সহিংসতার ঝুঁকি ও জনগণের নির্বাচনের আগে প্রধান প্রার্থীদের কথা শোনার অধিকারের ভারসাম্য রক্ষা করে’ সিদ্ধান্তটি নেওয়া হয়েছে।
চ্যানেল ফিরে পেয়েই ট্রাম্প একটি পোস্ট করেন। সেই পোস্টে লেখেন ‘আই অ্যাম ব্যাক’ (আমি ফিরে এসেছি)। এর সঙ্গে ছিল ১১ সেকেন্ডের একটি ভিডিও।
তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান
ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে দখলদার ইসরায়েল। সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) গাজা যুদ্ধ বন্ধ ও জিম্মিদের মুক্তি সংক্রান্ত ২০ দফা প্রস্তাব প্রকাশ করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এতে সম্মতি জানিয়েছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু।
এখন সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের অনুমোদনের জন্য অপেক্ষা করা হবে।
প্রস্তাব অনুযায়ী, হামাস এতে সম্মতি জানালে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে জীবিত ও মৃত সব জিম্মি মুক্তি পাবেন।
অপরদিকে হামাস গাজার নিয়ন্ত্রণ ছেড়ে দেবে। সেখানে আমেরিকান, ইউরোপ ও আরব দেশগুলো নিয়ে একটি অন্তর্বর্তী প্রশাসন গঠন করা হবে, যেটির মূল দায়িত্বে থাকবেন ট্রাম্প।
এ ছাড়া গাজার মানুষ গাজাতেই থাকবেন। তাদের অন্য কোনো দেশে জোরপূর্বক পাঠানোর চেষ্টা করা হবে না।
হামাসের ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির মাধ্যমে গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতি শুরু হবে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জানিয়েছেন, গাজা ও হামাসকে সম্পূর্ণ নিরস্ত্রকরণ করা হবে। আর এ কাজে সহায়তা করবে আরব দেশগুলো। তারা হামাসকে নিরস্ত্রকরণে সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বলেও দাবি করেছেন তিনি। এ ছাড়া সুড়ঙ্গসহ হামাসের সব অবকাঠামো ধ্বংস করা হবে।
গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে ৮ মুসলিম দেশের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন ট্রাম্প। ওই সময় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ট্রাম্প হুমকি দিয়েছেন, আরব দেশগুলো যদি হামাস ও গাজাকে নিরস্ত্র করতে ব্যর্থ হয় তাহলে ইসরায়েল যে কাজ করবে, যেটিতে যুক্তরাষ্ট্র পূর্ণ সমর্থন দেবে।
হামাসকে হুমকি দিয়ে তিনি বলেন, তারা যদি আজকের প্রস্তাব গ্রহণ না করে এবং গ্রহণ করেও যদি আবার এ থেকে সরে যায় অর্থাৎ নিজেদের পুনর্গঠনের চেষ্টা করে তাহলে ইসরায়েল তাদের নির্মূলের কাজ শেষ করবে।
ট্রাম্প বলেন, ‘ইসরায়েল হামাসকে নির্মূল করবে। এটি সহজ উপায়ে করা যাবে। আবার কঠিন উপায়ে করা যাবে। তবে এটি করতে হবে। আমরা সহজ উপায়কে প্রাধান্য দেব।’
২০২৬ সালে ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সে নির্বাচনকে সামনে রেখে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছে। গত শনিবার কারুর রোড মহাসড়কের ভেলুসামাইপুরামে তেমনই একটি জনসভার আয়োজন করেছিল তামিলাগা ভেত্রি কাজাগম (টিভিকে) নামের নতুন দলটি। ওই সমাবেশ চলাকালে পদদলিত হয়ে ৪০ জন নিহত হন। তামিল চলচ্চিত্র অভিনেতা থেকে রাজনীতিবিদ বনে যাওয়া থালাপতি বিজয় ওই জনসভায় উপস্থিত ছিলেন।
থালাপতি বিজয় তামিল চলচ্চিত্রের অন্যতম বড় তারকা। তার পারিবারিক নাম জোসেফ বিজয় চন্দ্রশেখর। ভক্তদের কাছে তিনি থালাপতি নামে বেশি পরিচিত। তামিল ভাষায় থালাপতি শব্দটির অর্থ ‘কমান্ডার’। অর্থাৎ ভক্তদের কাছে তার নেতৃত্বের গুরুত্ব কতটুকু, তা এ থালাপতি নামের মধ্য দিয়েই বোঝা যায়।
বিজয়ের জন্ম ১৯৭৪ সালের ২২ জুন, চেন্নাইয়ে। তার বাবা এস এ চন্দ্রশেখর একজন পরিচালক। আর মা শোভা চন্দ্রশেখর একজন প্লেব্যাক শিল্পী। বিজয়ের স্ত্রীর নাম সংগীতা স্বর্ণালিঙ্গম। বিজয় চেন্নাইয়ের লয়োলা কলেজ থেকে ভিজ্যুয়াল কমিউনিকেশনে স্নাতক করেছেন।
থালাপতি বিজয় ভারতের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক পাওয়া অভিনেতাদের একজন। তিন দশক ধরে ৬৮টির বেশি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন এ তারকা। দাতব্য কার্যক্রম ও সামাজিক কল্যাণমূলক উদ্যোগগুলোর জন্যও সুপরিচিত তিনি।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া ডটকমের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ছোট বেলা থেকেই অভিনয়ের প্রতি ঝোঁক ছিল বিজয়ের। ১৯৮৪ সালে পি এস ভীরাপ্পা প্রযোজিত তামিল চলচ্চিত্র ভেত্রিতে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে শিশুশিল্পী হিসেবে চলচ্চিত্রে পা রাখেন। তখন তার বয়স ছিল মাত্র ১০ বছর।
বিজয় শিশুশিল্পী হিসেবে বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। ১৯৮৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘নান সিগাপ্পু মানবন’ ছবিতে রজনীকান্তের সঙ্গে শিশুশিল্পী হিসেবে পর্দা ভাগাভাগি করেন।
বিজয় তার ১৮ বছর বয়সে ‘নালাইয়া থির্পু’ ছবিতে প্রথমবারের মতো মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেন। ১৯৯২ সালে চলচ্চিত্রটি মুক্তি পায়। এরপর তিনি অভিনয় করেন ‘সেন্থুরাপান্ডি’, ‘রাসিগান’, ‘দেবা’ ও ‘কোয়েম্বাটুর মাপ্পিল্লাই’ ছবিতে। এগুলোর সবই ব্যবসা সফল।
২০০৩ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত সময়ে বিজয় দৃঢ়ভাবে নিজেকে তামিল চলচ্চিত্রের প্রধান নায়ক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন। ২০০৩ সালে তার অভিনীত ‘তিরুমালাই’ ছবিটি বিরাট সাফল্য পেয়েছিল। এটি ছিল প্রথম তামিল ছবি, যা ঘরোয়া বক্স অফিসে ৫০ কোটি রুপির বেশি আয় করে। একই সঙ্গে এটি মুক্তির প্রথম সপ্তাহেই সর্বাধিক দর্শক পাওয়ার রেকর্ড গড়ে।
ক্রমেই বিজয় আকাশছোঁয়া তারকাখ্যাতি পান। তার অভিনীত চলচ্চিত্রের টিকিট কিনতে ভক্তরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইন দিতে থাকেন। থালাপতি বিজয়ই ভারতের প্রথম কোনো অভিনেতা, যিনি একটি চলচ্চিত্রের জন্য ২০০ কোটি রুপি পারিশ্রমিক নিয়েছেন।
একবার এক সাক্ষাৎকারে প্রযোজক অর্চনা কালপাঠি জানান, ‘দ্য গ্রেটেস্ট অব অল টাইম’ ছবিতে থালাপতি বিজয়ের পারিশ্রমিক ছিল ২০০ কোটি রুপি। এর মধ্য দিয়ে তিনি ভারতের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিকপ্রাপ্ত অভিনেতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। পারিশ্রমিকের দিক দিয়ে শাহরুখ খান, সালমান খান, প্রভাস, আল্লু অর্জুন, রজনীকান্ত ও আমির খানকেও পেছনে ফেলে দেন তিনি।
তবে এরই মধ্যে আস্তে আস্তে বিজয়ের রাজনীতির প্রতি আগ্রহ বাড়তে থাকে। তিনি চলচ্চিত্রজগৎকে বিদায় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। থালাপতি বিজয়ের শেষ ছবি হলো ‘জনা নায়াগন’। ছবিটি ২০২৬ সালে পোঙ্গল উৎসবের সময় বড় পর্দায় মুক্তি পাবে।
২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিজয় আনুষ্ঠানিকভাবে চলচ্চিত্র থেকে অবসরের ঘোষণা দেন। এরপর তামিলাগা ভেত্রি কাজাগম নামের একটি রাজনৈতিক দল গঠন করেন। দলের সদর দপ্তরের অবস্থান চেন্নাইতে। দলটি ২০২৬ সালে অনুষ্ঠেয় তামিলনাড়ু বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঘোষণা দিয়েছে আর দলটির নেতা বিজয় হবেন মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী।
ধর্মনিরপেক্ষ সামাজিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করাটাই টিভিকে দলের ভাবাদর্শের ভিত্তি, যা আম্বেদকারবাদ, পেরিয়ারবাদ ও মার্কসবাদ দ্বারা অনুপ্রাণিত।
রাজনীতিতে পা রাখার পর ২০২৪ সালের অক্টোবরে বিজয় প্রথম সমাবেশটি করেন। সেখানে আট লাখের বেশি মানুষ উপস্থিত ছিলেন। বিজয় বিজেপি দলটিকে তার টিভিকে দলের মতাদর্শগত শত্রু এবং ডিএমকে–কে রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী বলে ঘোষণা করেন। তিনি পরিবারকেন্দ্রিক রাজনীতি ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করার প্রতিশ্রুতি দেন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ওয়ান ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়, টিভিকে গঠনের পর থেকেই থালাপতি বিজয় সদস্য সংগ্রহ অভিযানে নামেন। অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, তরুণ ও নানা পেশাজীবীকে তিনি নেতৃত্বের ভূমিকায় নিয়ে আসেন। ২০২৬ সালের নির্বাচন সামনে রেখে দলটি ইতোমধ্যেই ৭০ হাজার বুথ এজেন্ট নিয়োগ দিয়েছে, যা শক্তিশালী সাংগঠনিক প্রস্তুতির ইঙ্গিত দেয়।
তামিলনাড়ু যখন ২০২৬ সালের নির্বাচনের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত, তখন বিজয়ের দল টিভিকে–কে ঘিরে ব্যাপক আগ্রহ তৈরি হয়েছে। ভক্তদের অগাধ ভালোবাসাকে তিনি রাজনৈতিক শক্তিতে রূপ দিতে পারবেন কি না, সেটিই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। যদি সফল হন, তবে বিজয় হয়তো কিংবদন্তি এম জি রামাচন্দ্রন (এমজিআর) ও জয়ললিতার পথ অনুসরণ করে তামিলনাড়ুর রাজনীতির ভবিষ্যৎ নতুনভাবে গড়ে তুলতে পারেন।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে ২০১৭ সালে রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিতাড়নের পর দেশটির সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের গ্রাম ও মসজিদ ধ্বংস করেছে। রোহিঙ্গাদের জায়গা দখল করে সেখানে নিরাপত্তাচৌকি তৈরি করেছে তারা। জাতিসংঘের উদ্যোগে পরিচালিত একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে এ চিত্র উঠে এসেছে। গতকাল সোমবার প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে।
রাখাইনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চৌকিতে হামলার পর মিয়ানমার সেনাবাহিনী দমন অভিযান শুরু করলে ২০১৭ সালের আগস্টে রোহিঙ্গাদের ওপর ব্যাপক সহিংসতা হয়। উপকূলীয় রাজ্যটি থেকে লাখ লাখ রোহিঙ্গা নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়।
এর পর থেকে বাংলাদেশের জনাকীর্ণ শরণার্থীশিবিরগুলোতে প্রায় ১৩ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী বসবাস করছে। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ওই দমন অভিযানকে ‘জাতিগত নিধনের আদর্শ উদাহরণ’ হিসেবে বর্ণনা করে জাতিসংঘ।
জাতিসংঘের উদ্যোগে ২০১৮ সালে গঠিত ইনডিপেনডেন্ট ইনভেস্টিগেটিভ মেকানিজম ফর মিয়ানমারের (আইআইএমএম) ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘মিয়ানমারের কর্তৃপক্ষ পরিকল্পিতভাবে রোহিঙ্গাদের গ্রাম, মসজিদ, কবরস্থান ও কৃষি জমি ধ্বংস করেছে। তারা সরকারি নথির মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের জমির অধিকার ও মালিকানা সম্পর্কে অবগত ছিল।’
ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে মিয়ানমারে ২০১১ সাল থেকে সংঘটিত গুরুতর আন্তর্জাতিক অপরাধ সম্পর্কে অনুসন্ধান চালানোর জন্য ২০১৮ সালে আইআইএমএম গঠন করে জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদ।
প্রত্যক্ষদর্শীর বক্তব্য, স্যাটেলাইট ছবি, ভিডিও ফুটেজ ও সরকারি নথির ভিত্তিতে এ প্রতিবেদন তৈরি করেছে আইআইএমএম। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর একজন মুখপাত্রের কাছে প্রতিবেদনটি সম্পর্কে বক্তব্য জানতে চেয়েছিল রয়টার্স। তবে তিনি তাতে সাড়া দেননি।
মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এর আগে বলেছিল, ২০১৭ সালের অভিযানে তারা রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা চালায়নি। তবে ব্যক্তিগত পর্যায়ে অপরাধ সংঘটিত হয়ে থাকতে পারে।
রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের উচ্চপর্যায়ের বৈঠকের আগের দিন এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। ওই বৈঠকে বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরে ক্রমবর্ধমান সংকট এবং রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনপ্রক্রিয়ার অচলাবস্থা নিয়ে আলোচনা হবে।
আইআইএমএমের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, রোহিঙ্গাদের গ্রামগুলো গুঁড়িয়ে দেওয়ার জন্য রাষ্ট্রীয় চুক্তির আওতায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা যন্ত্রপাতি ও শ্রমিক সরবরাহ করার মধ্য দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
উদাহরণ হিসেবে প্রতিবেদনে ইন দিন গ্রামের কথা বলা হয়েছে। সেখানে মিয়ানমার সেনাবাহিনী নতুন স্থাপনা তৈরি করতে বসতি ধ্বংস করেছে। ২০১৮ সালে গ্রামটিতে ১০ জন রোহিঙ্গাকে হত্যার খবর প্রকাশ করেছিল রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘ইন দিনের মতো গ্রামগুলোতে ধ্বংসাবশেষের ওপর ঘাঁটি গড়ে তোলা হয়। সেখানে জমি খালি করে সেসব জায়গায় নতুন সড়ক, স্থায়ী ভবন, সুরক্ষিত কম্পাউন্ড ও দুটি হেলিপ্যাড তৈরি করা হয়।’
মিয়ানমারে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সেনাবাহিনী নোবেলজয়ী অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন বেসামরিক সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকে দেশটিতে রাজনৈতিক অস্থিরতা শুরু হয়। এরপর শুরু হয় গৃহযুদ্ধ।
বর্তমানে রাখাইন রাজ্যে সংঘাত তীব্র হওয়ায় রোহিঙ্গারা আবারও সহিংসতা ও বাস্তুচ্যুত হওয়ার হুমকির মুখে পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে সংখ্যালঘু এই সম্প্রদায়ের কিছু সদস্য অস্ত্র হাতে তুলে নিচ্ছেন।
সূত্র: রয়টার্স
ভবিষ্যতে চীনের সাথে সম্ভাব্য সংঘাতের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের হাতে থাকা কম অস্ত্রের মজুত নিয়ে শঙ্কিত যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা সদর দপ্তর পেন্টাগন। এ কারণে ১২টি গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্রের ওপর জোর দিয়ে উৎপাদন হার দ্বিগুণ বা এমনকি চারগুণ বাড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, বিশেষ করে ক্ষেপণাস্ত্র। গতকাল সোমবার এক প্রতিবেদনে বিষয়টি সম্পর্কে অবগত ব্যক্তিদের বরাতে ওয়াল স্টিট জার্নাল এমনটাই জানিয়েছে।
কর্মকর্তারা বলছেন, সর্বোচ্চ চাহিদাসম্পন্ন গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্রের উৎপাদন দ্রুত ত্বরান্বিত করার জন্য পেন্টাগনের নেতারা এবং বেশ কয়েকটি মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের জ্যেষ্ঠ প্রতিনিধিদের মধ্যে উচ্চ-স্তরের বৈঠকের মাধ্যমে উদ্যোগটি কার্যকর হয়েছে।
ওয়াল স্টিট জার্নাল জানায়, এই প্রচেষ্টা শুরু করার জন্য জুন মাসে পেন্টাগনে এক গোলটেবিল বৈঠকে শীর্ষ ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহকারীদের ডেকে পাঠানো হয়েছিল। যুদ্ধমন্ত্রী পিট হেগসেথ এবং জয়েন্ট চিফ অব স্টাফের চেয়ারম্যান জেনারেল ড্যান কেইন এতে উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে বেশ কয়েকটি অস্ত্র নির্মাতা, আন্দুরিল ইন্ডাস্ট্রিজের মতো বাজারে নতুন প্রবেশকারী এবং রকেট প্রোপেলান্টের মতো গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশের সরবরাহকারীদের নির্বাহীরাও উপস্থিত ছিলেন।
পেন্টাগনের মুখপাত্র শন পার্নেলকে এই প্রচেষ্টা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং যুদ্ধমন্ত্রী হেগসেথ আমাদের সামরিক শক্তি বৃদ্ধি ও যুদ্ধাস্ত্র উৎপাদন ত্বরান্বিত করার জন্য অসাধারণ উপায়গুলো অন্বেষণ করছেন। এই প্রচেষ্টা প্রতিরক্ষা শিল্পের নেতা এবং পেন্টাগনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মধ্যে সহযোগিতার মাধ্যমে সম্পন্ন হয়েছে।’
সরকারের ভেতরে এবং বাইরে এই প্রচেষ্টার সাথে জড়িত কিছু ব্যক্তি উদ্বিগ্ন যে, সরকারের লক্ষ্যগুলো বাস্তবসম্মত নয়। ক্ষেপণাস্ত্রগুলো সম্পূর্ণরূপে একত্র হতে দুই বছর সময় লাগতে পারে। নতুন সরবরাহকারীদের কাছ থেকে প্রাপ্ত অস্ত্রগুলো মার্কিন পরিষেবায় ব্যবহারের জন্য যথেষ্ট নিরাপদ এবং নির্ভরযোগ্য কি না, তা পরীক্ষা করতে হবে।
উৎপাদন ত্বরান্বিত করার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ নিয়েও প্রশ্ন আছে। গত জুলাই মাসে সই করা ট্রাম্প প্রশাসনের বিগ বিউটিফুল বিলটিতে পাঁচ বছরের জন্য অতিরিক্ত ২৫ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র তহবিল দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বিশ্লেষকরা বলছেন, পেন্টাগনের আরও কয়েক বিলিয়ন ডলার বেশি খরচ করতে হবে।
ওয়াল স্টিট জার্নালের প্রতিবেদন অনুসারে, রাশিয়ার তীব্র বোমাবর্ষণ থেকে ইউক্রেনকে রক্ষা করার জন্য প্যাট্রিয়টসহ ব্যয়বহুল ইন্টারসেপ্টরের ক্রমবর্ধমান ব্যবহারের সাথে তাল মিলিয়ে ওঠা যাচ্ছে না। অর্থাৎ শেষ হওয়ার পরও নতুন ক্ষেপণাস্ত্র অর্ডার ব্যর্থ হয়েছে।
মার্কিন কর্মকর্তারা প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের আশেপাশের ঘাঁটি এবং মিত্রদের সুরক্ষার জন্য এই ইন্টারসেপ্টর ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর আরও বেশি ব্যবহার চান। জুনের মধ্যে ট্রাম্প প্রশাসন আরও আক্রমণাত্মক উৎপাদন লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিল। এরপর ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে ১২ দিনের সংঘর্ষের সময় আমেরিকা শত শত উচ্চমানের ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে, ফলে তাদের ক্ষেপণাস্ত্র ভাণ্ডার আরও কমে যায়।
মার্কিন সংবাদপত্রিটি আরও জানায়, চীনের সাথে সম্ভাব্য সংঘর্ষের জন্য পেন্টাগন যে ১২টি অস্ত্রের ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করছে, তার মধ্যে রয়েছে: প্যাট্রিয়ট ইন্টারসেপ্টর, লং রেঞ্জ অ্যান্টি-শিপ মিসাইল, স্ট্যান্ডার্ড মিসাইল-৬, প্রিসিশন স্ট্রাইক মিসাইল এবং জয়েন্ট এয়ার-সারফেস স্ট্যান্ডঅব মিসাইল। এর মধ্যে প্যাট্রিয়ট একটি বিশেষ অগ্রাধিকার।
গাজার সবচেয়ে বড় হাসপাতালে একের পর এক হামলা চালাচ্ছে। পাশাপাশি আশপাশের আবাসিক এলাকাকে সম্পূর্ণ মাটির সাথে মিশিয়ে দিচ্ছে। হামলার কারণে আতঙ্কিত রোগীরা অসুস্থ অবস্থায় নিরাপদ স্থানে পালিয়ে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।
গাজানগরী দখলের জন্য স্থল অভিযান অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। এরই অংশ হিসেবে এসব স্পর্শকাতর স্থাপনায় হামলা চালানো হচ্ছে।
গাজার সবচেয়ে বড় হাসপাতাল আল-শিফার চিকিৎসকরা গত রোববার ইসরায়েলি হামলার ‘ভয়াবহ দৃশ্যের’ বর্ণনা দিয়েছেন। হাসপাতালের চিকিৎসা পরিচালক হাসান আল-শাইর বলেন, কঠোর পরিস্থিতি ও আতঙ্কের মধ্যেই চিকিৎসক ও চিকিৎসাকর্মীরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে অন্তত ১০০ রোগীকে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে। হাসপাতালে রোগীর চাপে জীবনরক্ষাকারী ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জামের ঘাটতি দেখা দিয়েছে।
প্যালেস্টিনিয়ান সেন্টার ফর হিউম্যান রাইটসের গবেষকরা নিশ্চিত করেছেন, হামলার ক্ষেত্রে ইসরায়েল এমন দাহ্য অস্ত্র ব্যবহার করছে, যা নির্দিষ্ট একটি এলাকা পুড়িয়ে দিতে সক্ষম। সেনারা হাসপাতালের চারপাশে বিস্ফোরকবাহী গাড়ি মোতায়েন করেছে।
ফিলিস্তিনি সংবাদ সংস্থা ওয়াফাকে চিকিৎসা-সংশ্লিষ্ট এক সূত্র জানিয়েছে, ইসরায়েলি সেনারা আল-হেলু হাসপাতালেও বোমা হামলা চালিয়েছে। সেখানে ক্যান্সার ও নবজাতক বিভাগে অপরিপক্ব অবস্থায় জন্ম নেওয়া ১২টি শিশু চিকিৎসাধীন।
চিকিৎসাকর্মীরা ওয়াফা সংবাদ সংস্থাকে বলেছেন, আল-হেলু হাসপাতালে ৯০ জনের বেশি চিকিৎসক, নার্স ও রোগী আটকে আছেন। ইসরায়েলি ট্যাংক হাসপাতালের চারপাশে অবস্থান নিয়েছে। ঢোকা ও বের হওয়ার পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
ইসরায়েলি সেনারা গত রোববার মক্কা টাওয়ার নামের একটি বহুতল ভবনে বোমাবর্ষণ করেছে। এর আগে রেমাল ও সাবরা অঞ্চলের বাসিন্দাদের নিরাপদে এলাকা ছেড়ে দিতে সতর্ক করা হয়েছিল। সাম্প্রতিক সপ্তাহে গাজা নগরীর অন্তত ৫০টি বহুতল ভবন ধ্বংস করেছে ইসরায়েল।
আল-জাজিরার সাংবাদিক হানি মাহমুদ হামলার বর্ণনা দিয়ে বলেছেন, ব্যাপক ও বেপরোয়াভাবে হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। ভারী গোলাবারুদ, ড্রোন এবং বোমা ব্যবহার করে ভবনের ভিত্তি পর্যন্ত ধ্বংস করা হচ্ছে।
মন্তব্য