মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে ২০১৭ সালে রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিতাড়নের পর দেশটির সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের গ্রাম ও মসজিদ ধ্বংস করেছে। রোহিঙ্গাদের জায়গা দখল করে সেখানে নিরাপত্তাচৌকি তৈরি করেছে তারা। জাতিসংঘের উদ্যোগে পরিচালিত একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে এ চিত্র উঠে এসেছে। গতকাল সোমবার প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে।
রাখাইনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চৌকিতে হামলার পর মিয়ানমার সেনাবাহিনী দমন অভিযান শুরু করলে ২০১৭ সালের আগস্টে রোহিঙ্গাদের ওপর ব্যাপক সহিংসতা হয়। উপকূলীয় রাজ্যটি থেকে লাখ লাখ রোহিঙ্গা নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়।
এর পর থেকে বাংলাদেশের জনাকীর্ণ শরণার্থীশিবিরগুলোতে প্রায় ১৩ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী বসবাস করছে। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ওই দমন অভিযানকে ‘জাতিগত নিধনের আদর্শ উদাহরণ’ হিসেবে বর্ণনা করে জাতিসংঘ।
জাতিসংঘের উদ্যোগে ২০১৮ সালে গঠিত ইনডিপেনডেন্ট ইনভেস্টিগেটিভ মেকানিজম ফর মিয়ানমারের (আইআইএমএম) ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘মিয়ানমারের কর্তৃপক্ষ পরিকল্পিতভাবে রোহিঙ্গাদের গ্রাম, মসজিদ, কবরস্থান ও কৃষি জমি ধ্বংস করেছে। তারা সরকারি নথির মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের জমির অধিকার ও মালিকানা সম্পর্কে অবগত ছিল।’
ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে মিয়ানমারে ২০১১ সাল থেকে সংঘটিত গুরুতর আন্তর্জাতিক অপরাধ সম্পর্কে অনুসন্ধান চালানোর জন্য ২০১৮ সালে আইআইএমএম গঠন করে জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদ।
প্রত্যক্ষদর্শীর বক্তব্য, স্যাটেলাইট ছবি, ভিডিও ফুটেজ ও সরকারি নথির ভিত্তিতে এ প্রতিবেদন তৈরি করেছে আইআইএমএম। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর একজন মুখপাত্রের কাছে প্রতিবেদনটি সম্পর্কে বক্তব্য জানতে চেয়েছিল রয়টার্স। তবে তিনি তাতে সাড়া দেননি।
মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এর আগে বলেছিল, ২০১৭ সালের অভিযানে তারা রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা চালায়নি। তবে ব্যক্তিগত পর্যায়ে অপরাধ সংঘটিত হয়ে থাকতে পারে।
রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের উচ্চপর্যায়ের বৈঠকের আগের দিন এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। ওই বৈঠকে বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরে ক্রমবর্ধমান সংকট এবং রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনপ্রক্রিয়ার অচলাবস্থা নিয়ে আলোচনা হবে।
আইআইএমএমের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, রোহিঙ্গাদের গ্রামগুলো গুঁড়িয়ে দেওয়ার জন্য রাষ্ট্রীয় চুক্তির আওতায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা যন্ত্রপাতি ও শ্রমিক সরবরাহ করার মধ্য দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
উদাহরণ হিসেবে প্রতিবেদনে ইন দিন গ্রামের কথা বলা হয়েছে। সেখানে মিয়ানমার সেনাবাহিনী নতুন স্থাপনা তৈরি করতে বসতি ধ্বংস করেছে। ২০১৮ সালে গ্রামটিতে ১০ জন রোহিঙ্গাকে হত্যার খবর প্রকাশ করেছিল রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘ইন দিনের মতো গ্রামগুলোতে ধ্বংসাবশেষের ওপর ঘাঁটি গড়ে তোলা হয়। সেখানে জমি খালি করে সেসব জায়গায় নতুন সড়ক, স্থায়ী ভবন, সুরক্ষিত কম্পাউন্ড ও দুটি হেলিপ্যাড তৈরি করা হয়।’
মিয়ানমারে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সেনাবাহিনী নোবেলজয়ী অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন বেসামরিক সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকে দেশটিতে রাজনৈতিক অস্থিরতা শুরু হয়। এরপর শুরু হয় গৃহযুদ্ধ।
বর্তমানে রাখাইন রাজ্যে সংঘাত তীব্র হওয়ায় রোহিঙ্গারা আবারও সহিংসতা ও বাস্তুচ্যুত হওয়ার হুমকির মুখে পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে সংখ্যালঘু এই সম্প্রদায়ের কিছু সদস্য অস্ত্র হাতে তুলে নিচ্ছেন।
সূত্র: রয়টার্স
২০২৬ সালে ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সে নির্বাচনকে সামনে রেখে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছে। গত শনিবার কারুর রোড মহাসড়কের ভেলুসামাইপুরামে তেমনই একটি জনসভার আয়োজন করেছিল তামিলাগা ভেত্রি কাজাগম (টিভিকে) নামের নতুন দলটি। ওই সমাবেশ চলাকালে পদদলিত হয়ে ৪০ জন নিহত হন। তামিল চলচ্চিত্র অভিনেতা থেকে রাজনীতিবিদ বনে যাওয়া থালাপতি বিজয় ওই জনসভায় উপস্থিত ছিলেন।
থালাপতি বিজয় তামিল চলচ্চিত্রের অন্যতম বড় তারকা। তার পারিবারিক নাম জোসেফ বিজয় চন্দ্রশেখর। ভক্তদের কাছে তিনি থালাপতি নামে বেশি পরিচিত। তামিল ভাষায় থালাপতি শব্দটির অর্থ ‘কমান্ডার’। অর্থাৎ ভক্তদের কাছে তার নেতৃত্বের গুরুত্ব কতটুকু, তা এ থালাপতি নামের মধ্য দিয়েই বোঝা যায়।
বিজয়ের জন্ম ১৯৭৪ সালের ২২ জুন, চেন্নাইয়ে। তার বাবা এস এ চন্দ্রশেখর একজন পরিচালক। আর মা শোভা চন্দ্রশেখর একজন প্লেব্যাক শিল্পী। বিজয়ের স্ত্রীর নাম সংগীতা স্বর্ণালিঙ্গম। বিজয় চেন্নাইয়ের লয়োলা কলেজ থেকে ভিজ্যুয়াল কমিউনিকেশনে স্নাতক করেছেন।
থালাপতি বিজয় ভারতের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক পাওয়া অভিনেতাদের একজন। তিন দশক ধরে ৬৮টির বেশি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন এ তারকা। দাতব্য কার্যক্রম ও সামাজিক কল্যাণমূলক উদ্যোগগুলোর জন্যও সুপরিচিত তিনি।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া ডটকমের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ছোট বেলা থেকেই অভিনয়ের প্রতি ঝোঁক ছিল বিজয়ের। ১৯৮৪ সালে পি এস ভীরাপ্পা প্রযোজিত তামিল চলচ্চিত্র ভেত্রিতে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে শিশুশিল্পী হিসেবে চলচ্চিত্রে পা রাখেন। তখন তার বয়স ছিল মাত্র ১০ বছর।
বিজয় শিশুশিল্পী হিসেবে বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। ১৯৮৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘নান সিগাপ্পু মানবন’ ছবিতে রজনীকান্তের সঙ্গে শিশুশিল্পী হিসেবে পর্দা ভাগাভাগি করেন।
বিজয় তার ১৮ বছর বয়সে ‘নালাইয়া থির্পু’ ছবিতে প্রথমবারের মতো মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেন। ১৯৯২ সালে চলচ্চিত্রটি মুক্তি পায়। এরপর তিনি অভিনয় করেন ‘সেন্থুরাপান্ডি’, ‘রাসিগান’, ‘দেবা’ ও ‘কোয়েম্বাটুর মাপ্পিল্লাই’ ছবিতে। এগুলোর সবই ব্যবসা সফল।
২০০৩ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত সময়ে বিজয় দৃঢ়ভাবে নিজেকে তামিল চলচ্চিত্রের প্রধান নায়ক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন। ২০০৩ সালে তার অভিনীত ‘তিরুমালাই’ ছবিটি বিরাট সাফল্য পেয়েছিল। এটি ছিল প্রথম তামিল ছবি, যা ঘরোয়া বক্স অফিসে ৫০ কোটি রুপির বেশি আয় করে। একই সঙ্গে এটি মুক্তির প্রথম সপ্তাহেই সর্বাধিক দর্শক পাওয়ার রেকর্ড গড়ে।
ক্রমেই বিজয় আকাশছোঁয়া তারকাখ্যাতি পান। তার অভিনীত চলচ্চিত্রের টিকিট কিনতে ভক্তরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইন দিতে থাকেন। থালাপতি বিজয়ই ভারতের প্রথম কোনো অভিনেতা, যিনি একটি চলচ্চিত্রের জন্য ২০০ কোটি রুপি পারিশ্রমিক নিয়েছেন।
একবার এক সাক্ষাৎকারে প্রযোজক অর্চনা কালপাঠি জানান, ‘দ্য গ্রেটেস্ট অব অল টাইম’ ছবিতে থালাপতি বিজয়ের পারিশ্রমিক ছিল ২০০ কোটি রুপি। এর মধ্য দিয়ে তিনি ভারতের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিকপ্রাপ্ত অভিনেতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। পারিশ্রমিকের দিক দিয়ে শাহরুখ খান, সালমান খান, প্রভাস, আল্লু অর্জুন, রজনীকান্ত ও আমির খানকেও পেছনে ফেলে দেন তিনি।
তবে এরই মধ্যে আস্তে আস্তে বিজয়ের রাজনীতির প্রতি আগ্রহ বাড়তে থাকে। তিনি চলচ্চিত্রজগৎকে বিদায় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। থালাপতি বিজয়ের শেষ ছবি হলো ‘জনা নায়াগন’। ছবিটি ২০২৬ সালে পোঙ্গল উৎসবের সময় বড় পর্দায় মুক্তি পাবে।
২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিজয় আনুষ্ঠানিকভাবে চলচ্চিত্র থেকে অবসরের ঘোষণা দেন। এরপর তামিলাগা ভেত্রি কাজাগম নামের একটি রাজনৈতিক দল গঠন করেন। দলের সদর দপ্তরের অবস্থান চেন্নাইতে। দলটি ২০২৬ সালে অনুষ্ঠেয় তামিলনাড়ু বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঘোষণা দিয়েছে আর দলটির নেতা বিজয় হবেন মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী।
ধর্মনিরপেক্ষ সামাজিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করাটাই টিভিকে দলের ভাবাদর্শের ভিত্তি, যা আম্বেদকারবাদ, পেরিয়ারবাদ ও মার্কসবাদ দ্বারা অনুপ্রাণিত।
রাজনীতিতে পা রাখার পর ২০২৪ সালের অক্টোবরে বিজয় প্রথম সমাবেশটি করেন। সেখানে আট লাখের বেশি মানুষ উপস্থিত ছিলেন। বিজয় বিজেপি দলটিকে তার টিভিকে দলের মতাদর্শগত শত্রু এবং ডিএমকে–কে রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী বলে ঘোষণা করেন। তিনি পরিবারকেন্দ্রিক রাজনীতি ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করার প্রতিশ্রুতি দেন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ওয়ান ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়, টিভিকে গঠনের পর থেকেই থালাপতি বিজয় সদস্য সংগ্রহ অভিযানে নামেন। অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, তরুণ ও নানা পেশাজীবীকে তিনি নেতৃত্বের ভূমিকায় নিয়ে আসেন। ২০২৬ সালের নির্বাচন সামনে রেখে দলটি ইতোমধ্যেই ৭০ হাজার বুথ এজেন্ট নিয়োগ দিয়েছে, যা শক্তিশালী সাংগঠনিক প্রস্তুতির ইঙ্গিত দেয়।
তামিলনাড়ু যখন ২০২৬ সালের নির্বাচনের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত, তখন বিজয়ের দল টিভিকে–কে ঘিরে ব্যাপক আগ্রহ তৈরি হয়েছে। ভক্তদের অগাধ ভালোবাসাকে তিনি রাজনৈতিক শক্তিতে রূপ দিতে পারবেন কি না, সেটিই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। যদি সফল হন, তবে বিজয় হয়তো কিংবদন্তি এম জি রামাচন্দ্রন (এমজিআর) ও জয়ললিতার পথ অনুসরণ করে তামিলনাড়ুর রাজনীতির ভবিষ্যৎ নতুনভাবে গড়ে তুলতে পারেন।
ভবিষ্যতে চীনের সাথে সম্ভাব্য সংঘাতের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের হাতে থাকা কম অস্ত্রের মজুত নিয়ে শঙ্কিত যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা সদর দপ্তর পেন্টাগন। এ কারণে ১২টি গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্রের ওপর জোর দিয়ে উৎপাদন হার দ্বিগুণ বা এমনকি চারগুণ বাড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, বিশেষ করে ক্ষেপণাস্ত্র। গতকাল সোমবার এক প্রতিবেদনে বিষয়টি সম্পর্কে অবগত ব্যক্তিদের বরাতে ওয়াল স্টিট জার্নাল এমনটাই জানিয়েছে।
কর্মকর্তারা বলছেন, সর্বোচ্চ চাহিদাসম্পন্ন গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্রের উৎপাদন দ্রুত ত্বরান্বিত করার জন্য পেন্টাগনের নেতারা এবং বেশ কয়েকটি মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের জ্যেষ্ঠ প্রতিনিধিদের মধ্যে উচ্চ-স্তরের বৈঠকের মাধ্যমে উদ্যোগটি কার্যকর হয়েছে।
ওয়াল স্টিট জার্নাল জানায়, এই প্রচেষ্টা শুরু করার জন্য জুন মাসে পেন্টাগনে এক গোলটেবিল বৈঠকে শীর্ষ ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহকারীদের ডেকে পাঠানো হয়েছিল। যুদ্ধমন্ত্রী পিট হেগসেথ এবং জয়েন্ট চিফ অব স্টাফের চেয়ারম্যান জেনারেল ড্যান কেইন এতে উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে বেশ কয়েকটি অস্ত্র নির্মাতা, আন্দুরিল ইন্ডাস্ট্রিজের মতো বাজারে নতুন প্রবেশকারী এবং রকেট প্রোপেলান্টের মতো গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশের সরবরাহকারীদের নির্বাহীরাও উপস্থিত ছিলেন।
পেন্টাগনের মুখপাত্র শন পার্নেলকে এই প্রচেষ্টা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং যুদ্ধমন্ত্রী হেগসেথ আমাদের সামরিক শক্তি বৃদ্ধি ও যুদ্ধাস্ত্র উৎপাদন ত্বরান্বিত করার জন্য অসাধারণ উপায়গুলো অন্বেষণ করছেন। এই প্রচেষ্টা প্রতিরক্ষা শিল্পের নেতা এবং পেন্টাগনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মধ্যে সহযোগিতার মাধ্যমে সম্পন্ন হয়েছে।’
সরকারের ভেতরে এবং বাইরে এই প্রচেষ্টার সাথে জড়িত কিছু ব্যক্তি উদ্বিগ্ন যে, সরকারের লক্ষ্যগুলো বাস্তবসম্মত নয়। ক্ষেপণাস্ত্রগুলো সম্পূর্ণরূপে একত্র হতে দুই বছর সময় লাগতে পারে। নতুন সরবরাহকারীদের কাছ থেকে প্রাপ্ত অস্ত্রগুলো মার্কিন পরিষেবায় ব্যবহারের জন্য যথেষ্ট নিরাপদ এবং নির্ভরযোগ্য কি না, তা পরীক্ষা করতে হবে।
উৎপাদন ত্বরান্বিত করার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ নিয়েও প্রশ্ন আছে। গত জুলাই মাসে সই করা ট্রাম্প প্রশাসনের বিগ বিউটিফুল বিলটিতে পাঁচ বছরের জন্য অতিরিক্ত ২৫ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র তহবিল দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বিশ্লেষকরা বলছেন, পেন্টাগনের আরও কয়েক বিলিয়ন ডলার বেশি খরচ করতে হবে।
ওয়াল স্টিট জার্নালের প্রতিবেদন অনুসারে, রাশিয়ার তীব্র বোমাবর্ষণ থেকে ইউক্রেনকে রক্ষা করার জন্য প্যাট্রিয়টসহ ব্যয়বহুল ইন্টারসেপ্টরের ক্রমবর্ধমান ব্যবহারের সাথে তাল মিলিয়ে ওঠা যাচ্ছে না। অর্থাৎ শেষ হওয়ার পরও নতুন ক্ষেপণাস্ত্র অর্ডার ব্যর্থ হয়েছে।
মার্কিন কর্মকর্তারা প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের আশেপাশের ঘাঁটি এবং মিত্রদের সুরক্ষার জন্য এই ইন্টারসেপ্টর ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর আরও বেশি ব্যবহার চান। জুনের মধ্যে ট্রাম্প প্রশাসন আরও আক্রমণাত্মক উৎপাদন লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিল। এরপর ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে ১২ দিনের সংঘর্ষের সময় আমেরিকা শত শত উচ্চমানের ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে, ফলে তাদের ক্ষেপণাস্ত্র ভাণ্ডার আরও কমে যায়।
মার্কিন সংবাদপত্রিটি আরও জানায়, চীনের সাথে সম্ভাব্য সংঘর্ষের জন্য পেন্টাগন যে ১২টি অস্ত্রের ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করছে, তার মধ্যে রয়েছে: প্যাট্রিয়ট ইন্টারসেপ্টর, লং রেঞ্জ অ্যান্টি-শিপ মিসাইল, স্ট্যান্ডার্ড মিসাইল-৬, প্রিসিশন স্ট্রাইক মিসাইল এবং জয়েন্ট এয়ার-সারফেস স্ট্যান্ডঅব মিসাইল। এর মধ্যে প্যাট্রিয়ট একটি বিশেষ অগ্রাধিকার।
গাজার সবচেয়ে বড় হাসপাতালে একের পর এক হামলা চালাচ্ছে। পাশাপাশি আশপাশের আবাসিক এলাকাকে সম্পূর্ণ মাটির সাথে মিশিয়ে দিচ্ছে। হামলার কারণে আতঙ্কিত রোগীরা অসুস্থ অবস্থায় নিরাপদ স্থানে পালিয়ে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।
গাজানগরী দখলের জন্য স্থল অভিযান অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। এরই অংশ হিসেবে এসব স্পর্শকাতর স্থাপনায় হামলা চালানো হচ্ছে।
গাজার সবচেয়ে বড় হাসপাতাল আল-শিফার চিকিৎসকরা গত রোববার ইসরায়েলি হামলার ‘ভয়াবহ দৃশ্যের’ বর্ণনা দিয়েছেন। হাসপাতালের চিকিৎসা পরিচালক হাসান আল-শাইর বলেন, কঠোর পরিস্থিতি ও আতঙ্কের মধ্যেই চিকিৎসক ও চিকিৎসাকর্মীরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে অন্তত ১০০ রোগীকে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে। হাসপাতালে রোগীর চাপে জীবনরক্ষাকারী ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জামের ঘাটতি দেখা দিয়েছে।
প্যালেস্টিনিয়ান সেন্টার ফর হিউম্যান রাইটসের গবেষকরা নিশ্চিত করেছেন, হামলার ক্ষেত্রে ইসরায়েল এমন দাহ্য অস্ত্র ব্যবহার করছে, যা নির্দিষ্ট একটি এলাকা পুড়িয়ে দিতে সক্ষম। সেনারা হাসপাতালের চারপাশে বিস্ফোরকবাহী গাড়ি মোতায়েন করেছে।
ফিলিস্তিনি সংবাদ সংস্থা ওয়াফাকে চিকিৎসা-সংশ্লিষ্ট এক সূত্র জানিয়েছে, ইসরায়েলি সেনারা আল-হেলু হাসপাতালেও বোমা হামলা চালিয়েছে। সেখানে ক্যান্সার ও নবজাতক বিভাগে অপরিপক্ব অবস্থায় জন্ম নেওয়া ১২টি শিশু চিকিৎসাধীন।
চিকিৎসাকর্মীরা ওয়াফা সংবাদ সংস্থাকে বলেছেন, আল-হেলু হাসপাতালে ৯০ জনের বেশি চিকিৎসক, নার্স ও রোগী আটকে আছেন। ইসরায়েলি ট্যাংক হাসপাতালের চারপাশে অবস্থান নিয়েছে। ঢোকা ও বের হওয়ার পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
ইসরায়েলি সেনারা গত রোববার মক্কা টাওয়ার নামের একটি বহুতল ভবনে বোমাবর্ষণ করেছে। এর আগে রেমাল ও সাবরা অঞ্চলের বাসিন্দাদের নিরাপদে এলাকা ছেড়ে দিতে সতর্ক করা হয়েছিল। সাম্প্রতিক সপ্তাহে গাজা নগরীর অন্তত ৫০টি বহুতল ভবন ধ্বংস করেছে ইসরায়েল।
আল-জাজিরার সাংবাদিক হানি মাহমুদ হামলার বর্ণনা দিয়ে বলেছেন, ব্যাপক ও বেপরোয়াভাবে হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। ভারী গোলাবারুদ, ড্রোন এবং বোমা ব্যবহার করে ভবনের ভিত্তি পর্যন্ত ধ্বংস করা হচ্ছে।
ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতির পক্ষে কথা বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। একইসঙ্গে যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় ইসরায়েলের অব্যাহত হামলার কড়া সমালোচনা করেছেন তিনি।
সিএনএনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওবামার কার্যালয় থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘গাজায় যে মানবিক সংকট চলছে, তা উপেক্ষা করা অগ্রহণযোগ্য। উভয়পক্ষকে এমন একটি সমাধানের পথ খুঁজে বের করতে হবে, যেখানে একটি নিরাপদ ইসরায়েলের পাশাপাশি একটি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র এবং স্বায়ত্তশাসন বিদ্যমান থাকবে।’
গাজা যুদ্ধ নিয়ে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিরল মন্তব্য এমন সময় এলো, যখন নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশন এই ইস্যুতে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে।
সাবেক এ মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমি মনে করি, আমাদের জন্য এটা গুরুত্বপূর্ণ আমরা যারা সহিংসতার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত নই তাদের এটা বলা, এই মুহূর্তে শিশুদের অনাহারে থাকতে দেওয়া যেতে পারে না। এরই মধ্যে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া গাজা উপত্যকাকে আরও গুঁড়িয়ে দেওয়ার কোনো সামরিক যুক্তি নেই।’
শুক্রবার আয়ারল্যান্ডের ডাবলিনে এক অনুষ্ঠানে ওবামা বলেন, ইসরায়েলের সব নীতিতে একমত না হওয়ায় দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ঘনিষ্ঠ বন্ধু হতে পারিনি।
জাতিসংঘের অধিবেশনে শুক্রবার নেতানিয়াহুর ভাষণের শুরুতে অনেক দেশের প্রতিনিধি প্রতিবাদ জানিয়ে অধিবেশন কক্ষ বর্জন করেন। বক্তব্যে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেওয়ায় কড়া প্রতিক্রিয়া দেখান নেতানিয়াহু।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে জটিল সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে ওবামা বলেন, আমরা সব সময় সব বিষয়ে একমত ছিলাম না। দুঃখজনকভাবে, অনেক সময় নেতৃত্ব এবং রাজনীতিবিদরা এমন একটি স্বার্থপর সম্পর্ক বজায় রাখেন এটা শুধু ‘আমরা বনাম তারা’। কারণ, এতে তাদের ক্ষমতায় টিকে থাকা সহজ হয়। এটা একটি প্রলোভনমূলক খেলা। আমি আমার প্রেসিডেন্সির সময় লক্ষ্য করেছি, আমি ওই অঞ্চলে জনপ্রিয় ছিলাম না। কারণ, আমি তাদের এ ব্যাপারে সমালোচনা করতাম। ফলে আমি এবং ইসরায়েলের তৎকালীন ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলাম না।
এর আগেও ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় ‘প্রতিরোধযোগ্য’ দুর্ভিক্ষ বন্ধে অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান ওবামা।
তিনি বলেন, যদিও গাজা সংকটের স্থায়ী সমাধানের জন্য সব জিম্মিকে ফিরিয়ে দেওয়া এবং ইসরায়েলি সামরিক অভিযান বন্ধ করা আবশ্যক। এই নিবন্ধগুলো নিরীহ মানুষের মৃত্যু রোধে অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজনীয়তাকে আন্ডারস্কোর করে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, গাজা উপত্যকার মানুষের কাছে সাহায্য পৌঁছানোর ‘অনুমতি দিতে হবে’।
সাবেক এ মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, ‘বেসামরিক মানুষদের থেকে খাবার এবং পানি দূরে রাখার কোনো যুক্তি নেই।’
যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানে একটি চার্চে বন্দুকধারীর গুলি ও ভবনে আগুন লাগিয়ে দেয়ার ঘটনায় কমপক্ষে চারজন নিহত ও আরও কয়েকজন আহত হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। ওই বন্দুকধারী গাড়ি চালিয়েই গির্জাটির ভেতরে ঢুকে পড়েছিল। কর্মকর্তারা বলছেন, চার্চ অব জিসাস ক্রাইস্ট অব ল্যাটার-ডে সেইন্টস গির্জাটির অবস্থান ডেট্রয়েট থেকে একশ কিলোমিটার উত্তরপশ্চিমের একটি শহরে। হামলাটি হয়েছে রবিবারের প্রার্থনার সময় যেখানে কয়েকশ মানুষ অংশ নিয়েছিলেন।
সন্দেহভাজন হামলাকারী মিশিগানের বার্টনের থমাস জ্যাকব স্যানফোর্ড। তিনি গির্জারই কার পার্ক এলাকায় পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন। কর্তৃপক্ষ এ ঘটনার তদন্ত করছে। তারা বলছেন, হামলার উদ্দেশ্য এখনো তাদের কাছে পরিষ্কার নয়। নিহতদের মধ্যে দুজন গুলিতে আহত হয়ে মারা গেছে বলে এক সংবাদ সম্মেলনে সেখানকার পুলিশ প্রধান উইলিয়াম রেনেই জানিয়েছেন। তিনি জানান, গির্জাতে আগুন ধরে গেলে তাতে গির্জার ভবনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে এবং কিছু লোক এখনো নিখোঁজ আছে।
এর আগে তিনি বলেছিলেন বন্দুকধারী যখন গাড়ি চালিয়ে ভবনে ভেতরে ঢুকে পড়ে তখন গির্জার প্রার্থনায় অংশ নিচ্ছিলেন কয়েক শত মানুষ। এরপর এক অ্যাসল্ট স্টাইলের রাইফেল দিয়ে তিনি গুলি চালাতে শুরু করেন। ‘গির্জার ভেতরেই কয়েকজনকে লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলি চালানো হয়,’ বলছিলেন পুলিশ প্রধান।
পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় জানিয়ে তিনি বলেন গুলিবিনিময়ের পর হামলাকারীকে নিরস্ত্র করা হয়। গোলাগুলির আট মিনিট পর ওই ব্যক্তি মারা যায়। ‘আমরা এখনো চেষ্টা করছি কখন হামলা শুরু হলো এবং গুলি কখন বন্ধ হলো তা নির্ধারণের জন্য। আমাদের বিশ্বাস সন্দেহভাজন ব্যক্তি পরিকল্পিতভাবেই এটি করেছে,’ বলেছেন তিনি।
হামলার মোটিভ বোঝার জন্য তদন্তকারীরা সন্দেহভাজনক ব্যক্তির বাড়িতে তল্লাশি ও তার ফোন রেকর্ডস পরীক্ষা করছেন। এফবিআই এই তদন্তে নেতৃত্ব দিচ্ছে। তারা ইতোমধ্যেই ক্রাইসিস রেসপন্স টিম, বোমা বিশেষজ্ঞসহ অন্যদের মোতায়েন করেছে বলে এফবিআইয়ের ডেট্রয়েট ফিল্ড অফিস জানিয়েছে।
মিশিগান রাজ্য পুলিশের মুখপাত্র কিম ভেট্টের সাংবাদিকদের বলেছেন, আরও কয়েকটি জায়গায় বোমার হুমকির বিষয়টি নিয়েও কর্মকর্তারা কাজ করেছেন। ‘সেসব জায়গা আমরা ক্লিয়ার করেছি,’ বলেছেন তিনি। ওদিকে গির্জার পক্ষ থেকে দেওয়া বিবৃতিতে প্রার্থনা চলাকালে বন্দুকধারীর গুলি চালানোর খবর নিশ্চিত করে বলা হয়েছে, ‘বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। আমরা শান্তি ও সবার সুস্থতা কামনা করি।’ বিবৃতিতে বলা হয়েছে।
পুলিশ আরও জানিয়েছে যে, তদন্তে সহায়তার জন্য একশ এফবিআই এজেন্ট মোতায়েন করা হয়েছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন গির্জায় গুলির বিষয়ে তাকে অবহিত করা হয়েছে এবং তিনি এফবিআইয়ের নেতৃত্বে তদন্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। সোশ্যাল মিডিয়া ট্রুথে তিনি একে ‘আমেরিকায় আবারো খ্রিস্টানদের লক্ষ্য করে পরিকল্পিত হামলা’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি জেনারেল প্যাম বন্ডি গির্জায় প্রার্থনার সময় হামলাকে হৃদয়বিদারক হিসেবে উল্লেখ করেছেন। মিশিগানের গভর্নর গ্রেচেন হুইটমের ঘটনার নিন্দা করে বলেছেন, ‘যেকোনো জায়গায় সহিংসতা, বিশেষ করে প্রার্থনাস্থলে- অগ্রহণযোগ্য’।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক সিনেটর মিট রমনি দেশটির অন্যতম সুপরিচিত মরমন রাজনীতিক। তিনি এই ঘটনাকে ট্রাজেডি হিসেবে বর্ণনা করে বলেছেন, ‘আমার ভাই ও বোনেরা এবং তাদের গির্জা সহিংসতার লক্ষ্যবস্তু হয়েছে।’
অধিকৃত পশ্চিমতীরে গুলিবিদ্ধ হয়ে এক ইসরাইলি সেনা নিহত হয়েছেন। রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) জিত জংশনে ঘটে যাওয়া এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ফিলিস্তিনি নাগরিককে গুলি করে হত্যা করেছে দখলদার বাহিনী। ঘটনার পর ওই অঞ্চল ঘিরে নিরপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
ইসরাইলি সেনাবাহিনী (আইডিএফ) বিবৃতিতে জানায়, নিহত সেনার নাম স্টাফ সার্জেন্ট ইনবার আব্রাহাম কাভ (২০)। তিনি প্যারাট্রুপার ব্রিগেডের ৮৯০তম ব্যাটালিয়নের সদস্য এবং উত্তর ইসরাইলের লোটেম শহরের বাসিন্দা ছিলেন।
প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এক ফিলিস্তিনি ট্রাকচালক হঠাৎ গতিবেগ বাড়িয়ে জিত জংশনে অবস্থানরত ইসরাইলি সেনাদের দিকে ধেয়ে আসে এবং কাভকে ধাক্কা মারে। এরপর ট্রাকটি আরেকটি গাড়ির সঙ্গে ধাক্কা খায়। এই সময় সেনারা চালকের দিকে গুলি চালায়, যাতে তিনি ঘটনাস্থলেই নিহত হন।
তবে গুলিবর্ষণের সময় নিজের সহযোদ্ধাদের গুলিতেই কাভ মাথায় গুলিবিদ্ধ হন। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে মাগেন ডেভিড আদমের সহযোগিতায় পেতাহ টিকভার বেইলিনসন হাসপাতালে নেওয়া হয়, যেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
হামলাকারীর পরিচয় প্রকাশ করেছে ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী। তিনি নাবলুস শহরের বাসিন্দা। ঘটনার পর সেনারা নাবলুস শহর ও আশপাশের গ্রামগুলোর প্রবেশপথ বন্ধ করে দেয়। ফিলিস্তিনি গণমাধ্যম জানায়, ক্যালকিলিয়া শহরের প্রবেশপথ এবং নাবলুসের সঙ্গে রুট ৫৫ ধরে সংযুক্ত সব গ্রামেও অবরোধ আরোপ করা হয়েছে।
সূত্র: টাইমস অব ইসরাইল
মন্তব্য