× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

google_news print-icon

গাজায় ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ

গাজায়-ভয়াবহ-দুর্ভিক্ষ
* ২০ লাখ মানুষ চরম খাদ্য সংকটে * মায়ের চোখের সামনেই মরছে ক্ষুধার্ত শিশু

মার্কিন শীর্ষ দূতের ইউরোপ সফরের আগে শতাধিক আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থা গত বুধবার সতর্ক করে বলেছে, গাজায় ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ ছড়িয়ে পড়ছে। এই সফরে যুদ্ধবিরতি ও ত্রাণ করিডোর নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।

২১ মাস ধরে চলা সংঘাতে ইসরাইলের বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টি হচ্ছে। গাজার ২০ লাখের বেশি মানুষ চরম খাদ্য সংকটসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের ঘোর ঘাটতির মুখে পড়েছে।

জাতিসংঘ গত মঙ্গলবার জানিয়েছে, গত মে মাসের শেষ দিকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল সমর্থিত ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ)’ নামে নতুন সহায়তা উদ্যোগ চালুর পর থেকে জাতিসংঘের ত্রাণ কার্যক্রম প্রায় অচল হয়ে পড়ে।

সংস্থাটি জানায়, জিএইচএফ থেকে ত্রাণ নিতে গিয়ে ইসরাইলি বাহিনীর গুলিতে এক হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

সেইভ দ্য চিলড্রেন, অক্সফাম, ডাক্তারি সাহায্য সংস্থা এমএসএফসহ ১১১টি সংস্থা এক যৌথ বিবৃতিতে সতর্ক করে বলেছেন, ‘আমাদের সহকর্মীরা এবং যাদের আমরা সেবা দিচ্ছি, তারা না খেয়ে শুকিয়ে যাচ্ছেন।’

তারা অবিলম্বে একটি সমঝোতার ভিত্তিতে যুদ্ধবিরতি, সব স্থল পথ খুলে দেওয়া ও জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে মানবিক সহায়তা চালু করার দাবি জানায়।

এর একদিন আগেই যুক্তরাষ্ট্র জানায়, তাদের দূত স্টিভ উইটকফ এ সপ্তাহে ইউরোপে যাচ্ছেন গাজা ইস্যুতে আলোচনা করতে। এরপর তিনি মধ্যপ্রাচ্য সফরেও যেতে পারেন।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস সাংবাদিকদের বলেন, উইটকফ ‘জোরালো আশা’ নিয়ে যাচ্ছেন যে, উভয় পক্ষের সম্মতিতে একটি নতুন যুদ্ধবিরতি এবং সহায়তা প্রবাহে একটি মানবিক করিডোর গঠনের পথ বেরিয়ে আসবে।

গত মে মাসের শেষ দিকে ইসরায়েল দুই মাসেরও বেশি সময়ের সহায়তা অবরোধ কিছুটা শিথিল করলেও, গাজার মানুষ এখনো খাদ্য ও মৌলিক চাহিদার ঘাটতির মধ্যে রয়েছেন।

জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস গত মঙ্গলবার জানান, গাজায় ইসরায়েলি সামরিক হামলার মুখে ফিলিস্তিনিরা যে ‘ভয়াবহতা’র মধ্যে রয়েছে, তা সাম্প্রতিক ইতিহাসে নজিরবিহীন।

মানবাধিকার সংস্থাগুলো তাদের বিবৃতিতে জানিয়েছে, গাজা সীমান্তের ভেতরে ও বাইরে টনকে টন সহায়তা সামগ্রী গুদামে পড়ে আছে, কিন্তু সেগুলো গাজাবাসীদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার সুযোগ মিলছে না।

মায়ের চোখের সামনেই মরছে ক্ষুধার্ত শিশু

ফিলিস্তিনের গাজার কেন্দ্রীয় হাসপাতালের চিকিৎসকরা প্রতি ঘণ্টায় অপুষ্টির রোগী পাচ্ছেন। গাজা শহরের একটি ৩৫ দিনের শিশু ও দেইর এল-বালাহতে চার মাস বয়সী এক শিশু আল-আকসা শহীদ হাসপাতালে অপুষ্টিতে মারা গেছে। হাসপাতালে এক মা তাঁর সন্তানের শরীর ছুঁয়ে আর্তনাদ করছিলেন, ‘আমি দুঃখিত, আমি তোমাকে খাওয়াতে পারিনি। আমার চোখের সামনে তোমাকে মরতে দেখা ছাড়া আমার আর কোনো উপায় ছিল না।’ প্রতিনিয়ত শিশুদের এমন মৃত্যু দেখতে হচ্ছে গাজার মায়েদের।

এই দুটি ঘটনাই কেবল নয়। গত ৭২ ঘণ্টায় আরও বেশি ঘটনা ঘটেছে। হাসপাতালের চিকিৎসকদের মতে, প্রতি ঘণ্টায় অপুষ্টিতে ভোগা শিশু ভর্তি হচ্ছে হাসপাতালে।

শিশুদের অনাহার থেকে বাঁচাতে বাবা-মায়েরা মার্কিন-ইসরায়েলের তৈরি জিএইচএফ বিতরণ কেন্দ্রে যেতে বাধ্য হন। কারণ, তাদের সামনে আর কোনো বিকল্প নেই। বাবা-মায়েরা বলছেন, নারী-শিশুসহ তারা সবাই ক্ষুধার্ত এবং তারা নিজ সন্তানদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করতে অক্ষম। অনেক শিশুকে শুধুই পানি খাইয়ে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা হচ্ছে। কারণ, আটা কেনার সাধ্য তাদের নেই।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় ৫৪ ত্রাণপ্রত্যাশীসহ কমপক্ষে ১৩০ জন নিহত এবং ৪৯৫ জন আহত হয়েছেন। গত ২১ মাসে দখলদার বাহিনীর হামলায় এ পর্যন্ত ৫৮ হাজার ৮৯৫ জন ও ১ লাখ ৪০ হাজার ৯৮০ জন আহত হয়েছেন।

আলজাজিরা জানায়, আরও এক ইসরায়েলি সৈনিক আত্মহত্যা করেছেন। দখলদার বাহিনী জানিয়েছে, এ নিয়ে গত দুই সপ্তাহে চারজন সেনার আত্মহত্যার ঘটনা ঘটল। নরওয়ের বাসিন্দা ও প্রশিক্ষণরত সৈনিকের নাম ড্যান ফিলিপসন। দক্ষিণ ইসরায়েলের একটি প্রশিক্ষণ ঘাঁটিতে গুলি চালিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। পরে হাসপাতালে মারা যান। ইসরায়েলি গণমাধ্যমের মতে, বছরের শুরু থেকে এ পর্যন্ত ১৯ জন এবং গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ২১ মাসে ৪২ জন সৈন্য আত্মহত্যা করেছেন।

গাজা যুদ্ধের নামে ‘বর্বরতার’ অবসানের আহ্বান জানিয়েছেন পোপ লিও। গত বৃহস্পতিবার গাজার একমাত্র ক্যাথলিক গির্জায় ইসরায়েলি হামলার পর গতকাল রোববার এক প্রার্থনা সভায় পোপ লিও এই আহ্বান জানান। ইসরায়েলি রাজনৈতিক বিশ্লেষক গিডিয়ন লেভি সরকারকে গাজায় জাতিগত নির্মূলের পরিকল্পনার অভিযোগ করেছেন। অন্যদিকে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজার মধ্যাঞ্চলের একটি জনাকীর্ণ অংশ থেকে লোকজনকে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ জারি করেছে। যুক্তরাজ্যে নিষিদ্ধ ঘোষিত মানবাধিকার সংগঠন প্যালেস্টাইন অ্যাকশন গ্রুপের ৫৫ জন সদস্যকে আটক করা হয়েছে।

মন্তব্য

আরও পড়ুন

আন্তর্জাতিক
US supported Assistance Center Death trap in Gaza Human Rights Watch

গাজায় মার্কিন-সমর্থিত সহায়তা কেন্দ্র মৃত্যু ফাঁদ : হিউম্যান রাইটস ওয়াচ

গাজায় মার্কিন-সমর্থিত সহায়তা কেন্দ্র মৃত্যু ফাঁদ : হিউম্যান রাইটস ওয়াচ

যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় মার্কিন-সমর্থিত সহায়তা কেন্দ্রগুলোর বাইরে ইসরায়েলি বাহিনী ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের নিয়মিতভাবে হত্যা করছে বলে শুক্রবার অভিযোগ তুলেছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, ক্ষুধাকে যুদ্ধাস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

জেরুজালেম থেকে এএফপি জানায়, হিউম্যান রাইটস ওয়াচের সংকট ও সংঘাতবিষয়ক সহপরিচালক বেলকিস উইলে বলেন, গাজায় ‘মার্কিন-সমর্থিত ইসরাইলি বাহিনী ও বেসরকারি ঠিকাদাররা একটি ত্রুটিপূর্ণ, সামরিক নিয়ন্ত্রিত ত্রাণ বিতরণ ব্যবস্থা চালু করেছে, যা সহায়তা বিতরণকে নিয়মিত রক্তপাতের ঘটনায় পরিণত করেছে।’

প্রায় ২২ মাস ধরে গাজায় ইসরাইলি বাহিনী ও হামাসের মধ্যে চলমান যুদ্ধের ফলে জাতিসংঘ নিযুক্ত বিশেষজ্ঞদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে এবং বেসামরিক মানুষেরা অনাহারে মৃত্যুবরণ করছে।

ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্র গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ)-এর পরিচালিত একটি বেসরকারি ত্রাণ উদ্যোগকে সমর্থন দিয়েছে, যা গাজার অভ্যন্তরে চারটি স্থানে পরিচালিত হচ্ছে। এসব কেন্দ্রে মার্কিন সামরিক ঠিকাদার ও ইসরাইলি সেনাবাহিনী নিরাপত্তা দিচ্ছে।

জিএইচএফ তাদের কার্যক্রম শুরু করে মে মাসের শেষ দিকে। এর ফলে দীর্ঘদিন ধরে পরিচালিত জাতিসংঘ-নেতৃত্বাধীন মানবিক সহায়তা ব্যবস্থাকে পাশ কাটিয়ে যাওয়া হয়।

তখনই ইসরাইল দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা খাদ্য ও প্রয়োজনীয় দ্রব্যের অবরোধ কিছুটা শিথিল করতে শুরু করে।

তথাপি, এরপর থেকে গাজার ভেতরে এএফপি প্রতিবেদক, সিভিল ডিফেন্স সংস্থা ও প্রত্যক্ষদর্শীরা বারবার এমন ঘটনার কথা জানিয়েছে, যেখানে সহায়তার আশায় জিএইচএফ কেন্দ্রের কাছে জড়ো হওয়া অসহায় ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলি সেনারা গুলি চালিয়েছে।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২৭ মে থেকে ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে অন্তত ৮৫৯ জন ফিলিস্তিনি জিএইচএফ-এর ত্রাণকেন্দ্রগুলোর আশেপাশে খাদ্য সংগ্রহের চেষ্টা করার সময় নিহত হয়েছেন— যাদের অধিকাংশই ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর গুলিতে মারা গেছেন।

এইচআরডব্লিউ-এর বেলকিস উইলে বলেন, ‘ইসরাইলি বাহিনী শুধু ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের ইচ্ছাকৃতভাবে অনাহারে রাখছে না, বরং তারা এখন প্রায় প্রতিদিনই ওই মানুষগুলো যখন তাদের পরিবারের জন্য খাবার সংগ্রহের চেষ্টা করছে তখন তাদের গুলি করে হত্যা করছে।’

এইচআরডব্লিউ-এর প্রতিবেদনের বিষয়ে এএফপির অনুরোধে ইসরাইলি সামরিক বাহিনী তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি।

তবে তারা পূর্বে দাবি করেছে, তারা নিরস্ত্র বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্য করে না এবং দুর্ঘটনাজনিত হতাহত এড়াতে যথাসাধ্য চেষ্টা করে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য দূত স্টিভ উইটকফ শুক্রবার গাজায় জিএইচএফ-এর অন্তত একটি খাদ্য বিতরণ কেন্দ্র পরিদর্শনে যাচ্ছেন, এমন সময় যখন এই ক্ষুধা সংকট নিরসনে আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ছে।

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
Canadian Prime Minister disappointed in increasing US new tariffs

মার্কিন নতুন শুল্ক বৃদ্ধিতে হতাশ কানাডার প্রধানমন্ত্রী

মার্কিন নতুন শুল্ক বৃদ্ধিতে হতাশ কানাডার প্রধানমন্ত্রী

কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কারনি শুক্রবার বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কানাডার পণ্যের ওপর শুল্ক ৩৫ শতাংশে উন্নীত করার সিদ্ধান্তে তার সরকার ‘হতাশ’ হয়েছে।

ট্রাম্প আগেই সতর্ক করেছিলেন যে কানাডা যদি আগামী সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পরিকল্পনা এগিয়ে নেয়, তাহলে এর জন্য বাণিজ্যিক পরিণতি ভোগ করতে হবে।

অটোয়া থেকে এএফপি জানায়, এক নির্বাহী আদেশে ট্রাম্প এই শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩৫ শতাংশ করেন।

তবে ২০২০ সালে স্বাক্ষরিত যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো-কানাডা চুক্তি (ইউএসএমসিএ)-র আওতায় থাকা অনেক পণ্য এই নতুন হারে শুল্কের বাইরে থাকবে।

‘কানাডার সরকার এই পদক্ষেপে হতাশ,’ এক বিবৃতিতে বলেন কারনি।

ট্রাম্পের আদেশে বলা হয়, কানাডা ‘ফেন্টানিল ও অন্যান্য নিষিদ্ধ মাদকের স্রোত ঠেকাতে সহযোগিতায় ব্যর্থ’ হয়েছে এবং তার পদক্ষেপগুলোর বিরুদ্ধে ‘প্রতিশোধমূলক’ আচরণ করেছে।

কারনি জানান, ফেন্টানিল নিয়ন্ত্রণে কানাডা কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে এবং সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদার করছে।

‘মার্কিন ফেন্টানিল আমদানির মাত্র এক শতাংশই কানাডা থেকে আসে এবং আমরা এই পরিমাণ আরও কমাতে জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি,’ তিনি বলেন।

প্রধানমন্ত্রী জানান, কানাডা-যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো চুক্তি (ইউএসএমসিএ)-তে অটল আছে অটোয়া।

‘ইউএসএমসিএ অনুসারে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য কানাডার পণ্যের গড় শুল্কহার এখনো তাদের সব বাণিজ্য অংশীদারের মধ্যে সর্বনিম্ন,’ বলেন তিনি।

‘তবে আমাদের অর্থনীতির অন্য খাত- যেমন কাঠ, ইস্পাত, অ্যালুমিনিয়াম ও মোটরগাড়ি। তবে মার্কিন শুল্ক ও ডিউটির কারণে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
Trumps strict action in restructuring world trade

বিশ্ব বাণিজ্য পুনর্গঠনে ট্রাম্পের কঠোর পদক্ষেপ

বিশ্ব বাণিজ্য পুনর্গঠনে ট্রাম্পের কঠোর পদক্ষেপ

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিশ্ব বাণিজ্য ব্যবস্থাকে আমূল পুনর্গঠনের লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার বেশ কয়েকটি বাণিজ্য

অংশীদার দেশের ওপর পুনরায় শুল্ক আরোপের নির্দেশ দিয়েছেন।

এই পদক্ষেপকে তিনি মার্কিন উৎপাদন শিল্পের সুরক্ষা ও রপ্তানি সক্ষমতা বৃদ্ধির কৌশল হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন।

ওয়াশিংটন থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ সংবাদ জানিয়েছে।

হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, এসব শুল্ক কার্যকর হবে এক সপ্তাহের মধ্যে। যদিও শুরুতে ধারণা করা হয়েছিল শুক্রবার থেকেই এটি চালু হবে।

ট্রাম্পের মতে, এই শুল্ক ব্যবস্থা মার্কিন রপ্তানিকারকদের জন্য আরও শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করবে এবং বিদেশি আমদানির প্রবাহ কমিয়ে দেশীয় শিল্পকে উৎসাহিত করবে।

তবে অর্থনীতিবিদ ও বিশ্লেষকরা সতর্ক করে দিচ্ছেন, এই পদক্ষেপ বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনৈতিক দেশ যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতির ঝুঁকি তৈরি করতে পারে এবং অন্যান্য নেতিবাচক অর্থনৈতিক প্রভাবও ফেলতে পারে।

নতুন নির্বাহী আদেশে প্রায় ৭০টি দেশের ওপর শুল্ক বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে, যাতে এপ্রিল মাসে ঘোষিত ১০ শতাংশ হার থেকে বাড়িয়ে সর্বোচ্চ ৪১ শতাংশ পর্যন্ত করা হয়েছে।

দেশভেদে শুল্ক বৃদ্ধির এই হার ভিন্ন ভিন্ন হলেও, বেশ কয়েকটি দেশের জন্য তা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।

উদাহরণস্বরূপ, সুইজারল্যান্ডের জন্য শুল্ক হার বেড়ে ৩৯ শতাংশ হয়েছে। অন্যদিকে থাইল্যান্ডের জন্য শুল্ক হার কমে ১৯ শতাংশে এবং তাইওয়ানের জন্য এই হার কমে হয়েছে ২০ শতাংশ।

যদিও তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট লাই চিং-তে এই হার আরও কমানোর আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেছেন।

কানাডিয়ান পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়িয়ে ৩৫ শতাংশ করা হয়েছে।

তবে এনবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প জানিয়েছেন, কানাডার সঙ্গে আরও আলোচনার সুযোগ রয়েছে। কানাডা ও মেক্সিকোর জন্য আলাদা শুল্ক ব্যবস্থা প্রযোজ্য থাকবে এবং উত্তর আমেরিকান মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির আওতায় কিছু আমদানির ওপর ছাড় থাকবে।

এশিয়া সোসাইটি পলিসি ইনস্টিটিউটের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও বাণিজ্য বিশ্লেষক ওয়েন্ডি কাটলার বলেন, ‘নিঃসন্দেহে এই নির্বাহী আদেশ এবং গত কয়েক মাসে স্বাক্ষরিত সংশ্লিষ্ট চুক্তিগুলো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী আন্তর্জাতিক বাণিজ্য শাসনকে চ্যালেঞ্জ করেছে।’

বর্ধিত শুল্কের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগেও ওয়াশিংটন দু’বার এ সিদ্ধান্ত পিছিয়ে নেয়। এ সময়ে তীব্র আলোচনা, নতুন শুল্ক ঘোষণা এবং বিভিন্ন দেশের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর হয়।

বৃহস্পতিবার ট্রাম্প ঘোষণা দেন যে, মেক্সিকান পণ্যের ওপর শুল্ক ২৫ শতাংশেই থাকছে এবং পূর্বঘোষিত বৃদ্ধি ৯০ দিনের জন্য স্থগিত থাকবে। মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট

ক্লাউদিয়া শেইনবামের সঙ্গে বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্ত হয়।

৭৯ বছর বয়সী ট্রাম্প বাণিজ্যে ‘সংরক্ষণবাদী’ নীতির প্রতীক হয়ে উঠেছেন।

বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, ‘শুল্ক ছাড়া আমাদের অর্থনীতির টিকে থাকার কিংবা সফলতার কোনো সুযোগ নেই।’

তবে তার এই নীতি নিয়ে আইনি চ্যালেঞ্জ দেখা দিয়েছে।

একটি নিম্ন আদালত ইতোমধ্যে মত দিয়েছে যে, ট্রাম্প তার ক্ষমতার সীমা ছাড়িয়ে গেছেন। এখন বিষয়টি মার্কিন আপিল আদালতে শুনানির পর্যায়ে রয়েছে।

ট্রাম্প তার পক্ষে যুক্তি দিয়েছেন যে, শুল্কের কারণে রাজস্ব উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।

তবে অর্থনীতিবিদরা আশঙ্কা করছেন যে, এর প্রভাবে মূল্যস্ফীতি বাড়তে পারে এবং এর ফলে দীর্ঘমেয়াদে ভোক্তা ও উৎপাদক— দুই পক্ষেই নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

যেসব দেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তিতে পৌঁছেছে এবং শুল্ক বৃদ্ধি এড়াতে পেরেছে, তাদের মধ্যে রয়েছে- ভিয়েতনাম, জাপান, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন, দক্ষিণ কোরিয়া ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন।

যুক্তরাজ্যও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি চুক্তি করেছে, যদিও তাদের ওপর শুরুতে উচ্চ ‘পাল্টা’ শুল্ক আরোপের লক্ষ্য ছিল না।

কানাডার ক্ষেত্রে হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, অন্য দেশের মাধ্যমে কানাডা থেকে পণ্য ট্রান্সশিপ করে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হলে আরও বেশি শুল্ক আরোপ করা হবে।

ট্রুডোর স্থলাভিষিক্ত প্রধানমন্ত্রী মার্ক কারনির জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণার পর ওয়াশিংটন-অটোয়া বাণিজ্য সম্পর্ক নতুন করে চাপে পড়েছে।

নতুন শুল্ক ব্যবস্থায় এপ্রিল মাসে তালিকাভুক্ত না থাকা দেশগুলোকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। যেমন- ইকুয়েডর, ঘানা ও আইসল্যান্ডের ওপর এখন ১৫ শতাংশ হার প্রযোজ্য হবে।

চীন যদিও এই ঘোষণার মধ্যে ছিল না, তার পরেও তাদের ওপর শুল্ক সংক্রান্ত নতুন সিদ্ধান্ত আসছে ১২ আগস্টে। তখন দ্বিপাক্ষিক শুল্ক হারে আবারও বড় পরিবর্তন আসতে পারে।

চীন ও যুক্তরাষ্ট্র ইতঃপূর্বেই পাল্টা শুল্ক আরোপ করে একাধিকবার শতকরা তিন অঙ্কে পৌঁছে যায়, তবে বর্তমানে উভয় দেশ এই হার সাময়িকভাবে কমিয়ে একটি বাণিজ্য যুদ্ধবিরতি বজায় রাখছে এবং আলোচনার মাধ্যমে সেটি বাড়ানোর চেষ্টা চলছে।

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
The United States has reduced tariffs on Bangladesh

বাংলাদেশের ওপর ১৫ শতাংশ শুল্ক কমালো যুক্তরাষ্ট্র

বাংলাদেশের ওপর  ১৫ শতাংশ শুল্ক কমালো যুক্তরাষ্ট্র

বাংলাদেশ থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর পাল্টা শুল্ক ৩৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
স্থানীয় সময় গতকাল বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনান্ড ট্রাম্পের এক নির্বাহী আদেশে নতুন এই শুল্ক হার ঘোষণা করা হয়।

এর আগে ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য সংস্থা 'ইউএস ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভ (ইউএসটিআর)' এর মধ্যে চূড়ান্ত দফার আলোচনা হয়।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বার্তায় বাংলাদেশ থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক কমানোর কথা জানানো হয়েছে।

বার্তায় বলা হয়, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যিক চুক্তি চূড়ান্ত করার আগ মুহূর্তে ৩১ জুলাই বৃহস্পতিবার ৭০টি দেশের আমদানি পণ্যের ওপর সর্বোচ্চ ৪১ শতাংশ পর্যন্ত নতুন শুল্কহার ঘোষণা করেছেন। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি চূড়ান্ত করার জন্য ১ আগস্ট পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।

বাংলাদেশের ওপর  ১৫ শতাংশ শুল্ক কমালো যুক্তরাষ্ট্র

বার্তায় উল্লেখ করা হয় -এই চুক্তিগুলো শুধু শুল্ক সমন্বয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; বরং ট্রাম্প প্রশাসনের মতে, বাণিজ্য ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি করে এমন অভ্যন্তরীণ নীতিগত সংস্কারও এর অন্তর্ভুক্ত। এগুলো অর্থনৈতিক এবং জাতীয় নিরাপত্তা সম্পর্কিত উদ্বেগের দিকগুলোকেও অন্তর্ভুক্ত করেছে। আলোচনার অংশ হিসেবে, দেশগুলোকে মার্কিন পণ্য কেনার বিষয়ে স্পষ্ট প্রতিশ্রুতি দিতে বলা হয়েছিল, যাতে বাণিজ্য ঘাটতি কমে আসে।

বিষয়গুলোর পরিধি বিবেচনা করলে, আলোচনা প্রক্রিয়া জটিল এবং সময়সাপেক্ষ ছিল। শুল্ক ছাড় শুধুমাত্র মার্কিন রপ্তানির ওপর শুল্ক কমানোর সাথে যুক্ত ছিল না; বরং একটি দেশ যুক্তরাষ্ট্রের অশুল্ক বাধা দূর করতে কতটা প্রস্তুত, বাণিজ্য ভারসাম্য এবং নিরাপত্তা সংক্রান্ত উদ্বেগ মোকাবেলা করতে কতটা আন্তরিক—সেটার ওপরও নির্ভর করেছে।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রতিটি দেশের শুল্কহার নির্ধারিত হয়েছে এসব বিষয়ে তাদের প্রতিশ্রুতির গভীরতার ভিত্তিতে।

প্রেস উইং ওই বার্তায় উল্লেখ করে, বাংলাদেশ ২০ শতাংশ শুল্কহার পেয়েছে—যা তার মূল পোশাক খাতের প্রতিযোগীদের (যেমন শ্রীলঙ্কা, ভিয়েতনাম, পাকিস্তান এবং ইন্দোনেশিয়া, যারা ১৯ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক পেয়েছে) অনুরূপ। এর ফলে, পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশের আপেক্ষিক প্রতিযোগিতা অক্ষুণ্ন থাকছে। অপরদিকে, ভারত একটি বিস্তৃত চুক্তিতে পৌঁছাতে ব্যর্থ হওয়ায় ২৫ শতাংশ শুল্ক পেয়েছে।

বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের প্রধান আলোচক ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান বলেন, 'আমরা অত্যন্ত সতর্কভাবে আলোচনা করেছি, যাতে আমাদের প্রতিশ্রুতি আমাদের জাতীয় স্বার্থ ও সক্ষমতার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়। আমাদের পোশাক শিল্পকে রক্ষা করাই ছিল আমাদের শীর্ষ অগ্রাধিকার, তবে আমরা মার্কিন কৃষিপণ্য কেনার প্রতিশ্রুতির দিকেও মনোযোগ দিয়েছি। এটি আমাদের খাদ্য নিরাপত্তার লক্ষ্য পূরণে সহায়তা করবে এবং যুক্তরাষ্ট্রের কৃষিপ্রধান রাজ্যগুলোর সঙ্গে সৌহার্দ্য তৈরি করবে।'

'খলিলুর রহমান আরো বলেন, ‘আজ আমরা একটি সম্ভাব্য ৩৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক এড়াতে সক্ষম হয়েছি। এটি আমাদের পোশাক খাত এবং এর ওপর নির্ভরশীল লাখ লাখ মানুষের জন্য সুখবর। আমরা আমাদের বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা অক্ষুণ্ন রেখেছি এবং বিশ্বের বৃহত্তম ভোক্তা বাজারে প্রবেশের নতুন সুযোগ তৈরি করতে পেরেছি'।

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
Three Palestinians died while taking relief

ত্রাণ নিতে গিয়ে প্রাণ গেল আরও ৪৮ ফিলিস্তিনির

ত্রাণ নিতে গিয়ে প্রাণ গেল আরও ৪৮ ফিলিস্তিনির

গাজা উপত্যকায় ত্রাণ নিতে গিয়ে আরও অন্তত ৪৮ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন আরও অনেকে। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৩০) এ হতাহতের তথ্য জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

এই হামলা ও হতাহতের ঘটনা এমন এক সময়ে ঘটেছে, যখন চলমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য ইসরায়েল সফরে যাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত স্টিফ উইটকফ।

গাজা শহরের শিফা হাসপাতাল জানিয়েছে, নিহত ও আহতরা জিকিম ক্রসিং এলাকায় জড়ো হয়েছিলেন। এটি উত্তর গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশের প্রধান পথ। তবে কে গুলি চালিয়েছে, তা তাৎক্ষণিকভাবে স্পষ্ট হয়নি এবং ওই ক্রসিংয়ের নিয়ন্ত্রণে থাকা ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকেও কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

এদিকে, আল-সারায়া ফিল্ড হাসপাতাল জানিয়েছে, তাদের হাসপাতালে শতাধিক আহত ও নিহতদের নিয়ে আসা হয়েছে।

গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জরুরি বিভাগের প্রধান ফারেস আওয়াদ জানান, কিছু লাশ অন্য হাসপাতালেও নেওয়া হয়েছে। এ কারণে নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের মতে, মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত ইসরায়েলি বিমান হামলা ও গুলিতে অন্তত ৪৬ ফিলিস্তিনি নিহত হন, যাদের বেশিরভাগই খাবারের খোঁজে জড়ো হয়েছিলেন।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এই হামলাগুলোর বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি। সেনাবাহিনীর দাবি, তারা কেবল যোদ্ধাদের লক্ষ্য করেই হামলা চালায়। তাছাড়া বেসামরিক মৃত্যুর জন্য হামাসকেই দায়ী করে। কারণ তাদের ভাষ্যে, হামাসের যোদ্ধারা ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় অবস্থান নেন।

গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য মতে, অনাহারে এক শিশুসহ আরও সাত ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে অনাহারে ৮৯ শিশু প্রাণ হারিয়েছে। প্রাপ্তবয়স্ক ৬৫ ফিলিস্তিনি মারা গেছেন।

ত্রাণ প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করলেও রয়ে গেছে বাধা

গাজায় ত্রাণ প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার কারণে উপত্যকাটি ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের মুখে পড়েছে। একের পর এক অনাহারে মৃত্যুর পর আন্তর্জাতিক চাপের কারণে গাজায় ত্রাণ প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা কিছুটা শিথিল করেছে ইসরায়েল।

তবে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর দাবি, গাজায় যে পরিমাণ ত্রাণ প্রয়োজন, তা সম্পূর্ণভাবে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশে কাজ করা ইসরায়েলি সামরিক সংস্থা কোগাট জানিয়েছে, মঙ্গলবার গাজায় ২২০টিরও বেশি ট্রাক প্রবেশ করেছে।

তবে চলতি বছরের শুরুর দিকে যুদ্ধবিরতির সময় প্রতিদিন গড়ে জাতিসংঘের ৫০০–৬০০ ট্রাক ত্রাণ প্রবেশ করত। সে তুলনায় বর্তমানে পর্যাপ্ত ত্রাণ পাচ্ছেন না গাজাবাসী। তাছাড়া এখনো গাজায় প্রবেশ করা সহায়তা যথাযথভাবে বিতরণে হিমশিম খাচ্ছে জাতিসংঘ। কারণ অধিকাংশ ট্রাক ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায় ভিড় করা জনতার মাধ্যমে খালাস হয়ে যাচ্ছে।

অন্যদিকে, ইসরায়েল-সমর্থিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) থেকে খাবার নিতে গিয়ে মে থেকে এ পর্যন্ত অন্তত এক হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন।

দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানে এবার কানাডা ও মাল্টার সম্মতি

এদিকে, গাজায় ইসরায়েলের ক্রমাগত হামলা ও অনাহারে একের পর এক মৃত্যুতে নড়েচড়ে বসেছে পশ্চিমা বিশ্বও।

দ্বি-রাষ্ট্র ভিত্তিক সমাধানের ভিত্তি ক্রমেই জোরালো হচ্ছে। ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যের পর আগামী সেপ্টেম্বরে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে কানাডা ও মাল্টা।

কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কারনি মন্ত্রিসভার এক বৈঠক শেষে এই ঘোষণা দেন। এর আগে মাল্টার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী সচিব ক্রিস্টোফার কুটাজার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানবিষয়ক অধিবেশনে মাল্টার অবস্থান ঘোষণা করেন।

তবে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার অর্থ হামাসের ‘সন্ত্রাসবাদ’ পুরস্কৃত করার শামিল হবে বলে মন্তব্য করেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার কথা জানালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে নেতানিয়াহু লেখেন, ‘আজ ইসরায়েলের সীমান্তে একটি জিহাদি রাষ্ট্র গড়া হলে, কাল সেটি আপনাদের জন্যেই হুমকি হয়ে দাঁড়াবে।’

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
Trumps personal lawyer Emil Bov appointed Justice

ট্রাম্পের ব্যক্তিগত আইনজীবী এমিল বোভ বিচারপতি নিযুক্ত

ট্রাম্পের ব্যক্তিগত আইনজীবী এমিল বোভ বিচারপতি নিযুক্ত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাবেক ব্যক্তিগত আইনজীবী এমিল বোভকে যুক্তরাষ্ট্রের থার্ড সার্কিট কোর্ট অব অ্যাপিলস-এর ফেডারেল আপিলেট বিচারপতি হিসেবে নিযুক্ত করেছে মার্কিন সিনেট।

ওয়াশিংটন থেকে এএফপি জানায়, মঙ্গলবার সিনেটে ৫০-৪৯ পার্টিজান (দলীয় বিভক্তি) ভোটে আজীবন মেয়াদে এই পদে তার নিয়োগ নিশ্চিত করা হয়। ডেমোক্র্যাটরা তীব্র আপত্তি জানিয়ে এ মাসের শুরুতে সিনেট কমিটির একটি বৈঠক থেকে ওয়াকআউট করেন।

আলাস্কার লিসা মারকউস্কি এবং মেইনের সুসান কলিন্স- এই দুই রিপাবলিকান সিনেটর বোভের মনোনয়নের বিপক্ষে ভোট দিলেও রিপাবলিকানদের ৫৩-৪৭ সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় মনোনয়ন অনুমোদন হয়।

৪৪ বছর বয়সী এমিল বোভ একজন সাবেক ফেডারেল প্রসিকিউটর এবং বিচার বিভাগে তৃতীয় সর্বোচ্চ পদে থাকার সময় ট্রাম্প তাকে মনোনয়ন দেন।

তবে তার মনোনয়ন ঘিরে ব্যাপক বিতর্ক ও সমালোচনা সৃষ্টি হয়। সিনেট জুডিশিয়ারি কমিটির ডেমোক্র্যাট সদস্য সিনেটর ডিক ডারবিন মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে বলেন, ‘বোভের প্রধান যোগ্যতা হলো এই প্রেসিডেন্টের প্রতি তার অন্ধ আনুগত্য।’

তিনি আরও অভিযোগ করেন, বোভ ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারির ক্যাপিটল হামলায় অংশগ্রহণকারীদের পক্ষে অবস্থান নেন এবং যারা তাদের বিচারের আওতায় এনেছিলেন, তাদের বরখাস্ত করেন।

বোভের বিচারিক এলাকা হবে ডেলাওয়ার, নিউ জার্সি এবং পেনসিলভানিয়া- এই তিনটি পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য।

নিউ জার্সির সিনেটর কোরি বুকার এবং অ্যান্ডি কিম এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, ‘বোভের পেশাগত রেকর্ডে অসদাচরণ, নৈতিক লঙ্ঘন এবং বিচার বিভাগের নীতি-নৈতিকতার প্রতি অসম্মানের প্রমাণ রয়েছে।’

বোভের মনোনয়নের বিরুদ্ধে আইনজীবী মহলে জোরালো প্রতিবাদ গড়ে ওঠে।

৯০০-র বেশি সাবেক বিচার বিভাগীয় আইনজীবী সিনেট কমিটিতে একটি চিঠি দিয়ে বলেন, ‘যিনি বিচার বিভাগকে অপমান করেন, তার উচ্চ আদালতে নিযুক্তি আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।’

একইসাথে ৭৫ জনেরও বেশি অবসরপ্রাপ্ত বিচারক আরেকটি চিঠিতে বলেন, ‘একজন প্রেসিডেন্টের পক্ষে তার নিজস্ব অপরাধ মামলার আইনজীবীকে বিচারপতি হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া অত্যন্ত অনুচিত।’

বোভ ট্রাম্পের হয়ে নিউ ইয়র্কে ৩৪টি ব্যবসায়িক রেকর্ড জালিয়াতির মামলায় সাফাই পেশ করেন, যা এক পর্নোতারকাকে ঘুষ প্রদান কেলেঙ্কারি ঢাকতে করা হয়েছিল।

এছাড়া তিনি ট্রাম্পের বিরুদ্ধে দুটি ফেডারেল ফৌজদারি মামলা পরিচালনা করেন, যা ২০২৪ সালের নির্বাচনে ট্রাম্প জেতার পর বন্ধ হয়ে যায়।

চলতি বছর, বোভ নিউ ইয়র্ক সিটি মেয়র এরিক অ্যাডামস এর বিরুদ্ধে থাকা ঘুষ ও জালিয়াতির অভিযোগ প্রত্যাহার করার নির্দেশ দেন, যার ফলে ম্যানহাটন ইউএস অ্যাটর্নি অফিস ও ওয়াশিংটনের বিচার বিভাগে ব্যাপক পদত্যাগ শুরু হয়।

বোভ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন যে, ট্রাম্পের অভিবাসন নীতিতে মেয়রের সমর্থনের বিনিময়ে তিনি মামলাটি প্রত্যাহার করেন।

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
Trump hinted not to attend the G20 conference in South Africa

দক্ষিণ আফ্রিকায় জি২০ সম্মেলনে যোগ না দেওয়ার ইঙ্গিত দিলেন ট্রাম্প

দক্ষিণ আফ্রিকায় জি২০ সম্মেলনে যোগ না দেওয়ার ইঙ্গিত দিলেন ট্রাম্প

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মঙ্গলবার বলেছেন, তার আগামী নভেম্বরে দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠেয় জি২০ সম্মেলনে যোগ দেওয়ার কোনো পরিকল্পনা নেই।

তিনি দক্ষিণ আফ্রিকায় শ্বেতাঙ্গ নাগরিকদের ‘পদ্ধতিগতভাবে নিপীড়ন ও হত্যার’ বিতর্কিত বিষয়গুলো পুনরায় উত্থাপন করেন।

বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, এয়ার ফোর্স ওয়ানে থাকা অবস্থায় এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, আমি অন্য কাউকে পাঠাতে পারি। কারণ আমার দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে আমার অনেক সমস্যা রয়েছে।

তিনি বলেন, ওখানে কিছু খুব খারাপ নীতি চালু আছে। অনেক মানুষ মারা গেছে। তাই আমার মনে হয় না আমি যাব। আমি যেতে চাই, কিন্তু সম্ভবত যাব না।

প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদের শুরুতে ট্রাম্প দক্ষিণ আফ্রিকার বিষয়ে মনোযোগ দেন। বিশেষ করে তার তৎকালীন মিত্র এবং দক্ষিণ আফ্রিকায় জন্ম নেওয়া ইলন মাস্কের উত্থাপিত দাবির ভিত্তিতে দেশটির বিরুদ্ধে তিনি শ্বেতাঙ্গ নাগরিকদের পদ্ধতিগত নিপীড়নের অভিযোগ তুলেন।

ওয়াশিংটন চলতি বছরের জানুয়ারিতে দক্ষিণ আফ্রিকার একটি ভূমি বাজেয়াপ্তকরণ আইনের বেশ সমালোচনা করেছে। এ আইনের লক্ষ্য ছিল শ্বেতাঙ্গ সংখ্যালঘু শাসনের সময়কার বৈষম্য দূর করা।

তবে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা যুক্তরাষ্ট্রের সেই দাবিকে প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, এই আইন ইচ্ছাকৃতভাবে শ্বেতাঙ্গ মালিকানাধীন জমি জোরপূর্বক দখলের উদ্দেশ্যে নয়।

গত মে মাসে হোয়াইট হাউজে এক বৈঠকে ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট রামাফোসাকে চাপে ফেলেন এবং উপস্থিত সাংবাদিকদের সামনে একটি ভিডিও প্রচার করেন। এর মাধ্যমে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকায় শ্বেতাঙ্গ সংখ্যালঘুর ওপর ‘গণহত্যা’ চলছে বলে দাবি করেন।

এই নিপীড়নের অভিযোগ করে ট্রাম্প প্রশাসন দক্ষিণ আফ্রিকার শেতাঙ্গ সংখ্যালঘুদের আশ্রয় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। পাশাপাশি, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দক্ষিণ আফ্রিকার ওপর ৩০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন। এ শুল্ক আগামী ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে।

এছাড়া, চলতি বছরের শুরুর দিকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও জোহানেসবার্গে অনুষ্ঠিত জি২০ পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠক বর্জন করেন।

মন্তব্য

p
উপরে