পূর্ব ইউক্রেনের কৌশলগত শহর পোকরভস্ক দখলের চেষ্টার অংশ হিসেবে রাশিয়া সেখানে ১ লাখ ১০ হাজার সেনা মোতায়েন করেছে বলে জানিয়েছেন ইউক্রেনের সেনাপ্রধান জেনারেল ওলেকসান্দর সিরস্কি। তার মতে, এই বিপুল রুশ সেনা মোতায়েন স্পষ্টভাবে ইঙ্গিত দেয়, পোকরভস্ককে ঘিরে রাশিয়া তাদের আক্রমণাত্মক তৎপরতা জোরদার করছে। অঞ্চলটি দোনেৎস্ক অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ একটি শহর এবং দীর্ঘদিন ধরেই রুশ বাহিনীর নজরে রয়েছে।
সেনাপ্রধান সিরস্কি শুক্রবার জানান, ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলজুড়ে ১ হাজার ২০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সামরিক ফ্রন্টলাইনের মধ্যে সবচেয়ে উত্তপ্ত লড়াই চলছে পোকরভস্ক ঘিরে। সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, পোকরভস্ক দখলের লক্ষ্যে এক বছর ধরে একের পর এক হামলা চালিয়ে আসছে রুশ বাহিনী। তবে প্রচুর পরিমাণে সেনা ও অস্ত্র মোতায়েন করলেও এখন পর্যন্ত এটি দখল করতে পারছে না মস্কো।
ইউক্রেনের প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং শহরটির প্রতিরক্ষাবলয়কে এর কারণ হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকেরা। পূর্ব ইউক্রেনের পোকরভস্ক শহরকে কৌশলগত লক্ষ্য মনে করে মস্কো। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, তার লক্ষ্য হলো দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক—এই দুই পূর্বাঞ্চলীয় অঞ্চল পুরোপুরিভাবে রুশ নিয়ন্ত্রণে আনা, যেগুলোর কিছু অংশ এরই মধ্যে রুশ বাহিনীর দখলে রয়েছে।
সম্প্রতি ইউক্রেন ও এর পশ্চিমা মিত্ররা রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের বিরুদ্ধে শান্তি উদ্যোগ ইচ্ছাকৃতভাবে বিলম্বিত করার অভিযোগ এনেছেন। তাদের দাবি, এই বিলম্ব কৌশলগত; এর মাধ্যমে রুশ বাহিনী আরও ইউক্রেনীয় ভূখণ্ড দখলের চেষ্টা করছে।
যদিও পোকরভস্ক বড় কোনো শহর নয়, তবুও এটি পূর্ব ইউক্রেনে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে। শহরটি এমন এক প্রধান সড়ক ও রেলপথের সংযোগস্থলে অবস্থিত, যা অঞ্চলটির অন্যান্য সামরিক কেন্দ্রের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে।
পোকরভস্ক, কোস্তিয়ান্তিনিভকা, ক্রামাতোরস্ক ও স্লোভিয়ানস্ক—এই চার শহর মিলে দোনেৎস্কের কিয়েভ-নিয়ন্ত্রিত অংশে ইউক্রেনের প্রধান প্রতিরক্ষাবলয় গড়ে তুলেছে। পোকরভস্ক শহরে একসময় প্রায় ৬০ হাজার মানুষ বাস করতেন। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার পূর্ণমাত্রার আগ্রাসন শুরুর পর গত তিন বছরে তাদের বেশির ভাগই এলাকা ছেড়ে চলে গেছেন।
এই পোকরভস্কেই ছিল ইউক্রেনের শেষ সক্রিয় কোকিং কয়লাখনি। কোকিং একধরনের বিশেষ কয়লা, যা উচ্চ তাপে তাপ দেওয়ার পর কোকে পরিণত হয়। কোক প্রধানত ইস্পাত উৎপাদনে ব্যবহার করা হয়। যুদ্ধ শুরু হলেও ওই খনির শ্রমিকের অনেকে শহর ছেড়ে যাননি, কারণ এটি সচল রাখতে তাদের দরকার ছিল। তবে চলতি বছরের শুরুতে খনিটি বন্ধ হয়ে গেলে তারাও একে একে শহর ত্যাগ করতে শুরু করেন।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংঘাত পর্যবেক্ষণ সংস্থা ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অব ওয়ার (আইএসডব্লিউ) গত বছরের শেষ দিকে জানিয়েছিল, পোকরভস্কে ইউক্রেনীয় প্রতিরক্ষামূলক তৎপরতা এতটাই শক্তিশালী যে, রুশ বাহিনী শহরটি সরাসরি আক্রমণের মাধ্যমে দখলের প্রাথমিক পরিকল্পনা থেকে সরে আসতে বাধ্য হয়।
সামনাসামনি হামলা করে পোকরভস্ক দখলের পরিকল্পনা ব্যর্থ হওয়ায়, রাশিয়া তাই এখন বিকল্প কৌশল গ্রহণ করেছে।
ব্রিটেনের বেশ কয়েকটি অঞ্চলে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূতদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই সম্প্রসারণের পেছনে অভ্যন্তরীণ স্থানান্তরের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অভিবাসনেরও প্রভাব রয়েছে। দেশটির জাতীয় পরিসংখ্যান কার্যালয়ের (অফিস ফর ন্যাশনাল স্ট্যাটিসটিকস বা ওএনএস) সাম্প্রতিক প্রকাশিত তথ্য অনুসারে এই খবর জানা গেছে।
২০২২ সালের মাঝামাঝি পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে পরবর্তী দশ বছরের একটি পূর্বাভাস দিয়েছে ওএনএস। সেখানে দেখা গেছে, লন্ডনের টাওয়ার হ্যামলেটস এলাকায় ২০৩২ সাল নাগাদ প্রায় ২০ দশমিক ৩৮ শতাংশ জনসংখ্যা বৃদ্ধি হতে পারে। সে অনুযায়ী, ২০২২ সালে জরিপকৃত জনসংখ্যা তিন লাখ ২৩ হাজার ৮৫৪ জন থেকে বৃদ্ধি পেয়ে তা তিন লাখ ৮৯ হাজার ৮৪৫ জনের পৌঁছাতে পারে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, এখানে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত প্রায় ৩৩ শতাংশ মানুষের বাস।
টাওয়ার হ্যামলেটসের বাইরেও লন্ডনের অন্যান্য ঐতিহ্যবাহী ব্রিটিশ বাংলাদেশি অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। আর্সেনাল ফুটবল ক্লাবের জন্য বিখ্যাত ইসলিংটনে ১৩ দশমিক ১ শতাংশ জনসংখ্যা বৃদ্ধির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে, যা ২০২২ সালের মাঝামাঝি সময়ে দুই লাখ ১৯ হাজার ৫৯৪ থেকে বেড়ে ২০৩২ সালের মাঝামাঝি সময়ে দুই লাখ ৪৮ হাজার ৮১৮ জনে উন্নীত হবে। ২০২১ সালের ওএনএস তথ্য অনুসারে, ইসলিংটনের ২ দশমিক ৮ শতাংশ বাসিন্দা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত।
একইভাবে, প্রাণবন্ত বাজারের জন্য পরিচিত ক্যামডেনের জনসংখ্যা ১৩ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে বলে অনুমান করা হচ্ছে, যা ২০২২ সালে দুই লাখ ১৭ হাজার ৩৬৫ থেকে বেড়ে ২০৩২ সালের মধ্যে দুই লাখ ৪৫ হাজার ৬৫১ জনে দাঁড়াবে। ২০২১ সালে সেখানকার ২ দশমিক ৮ শতাংশ ছিলেন বাংলাদেশি।
বৃদ্ধির নেপথ্যে জন্মহার এবং ইউরোপীয় অভিবাসন
ব্রিটিশ বাংলাদেশি বংশোদ্ভূতদের বৃদ্ধির পেছনে একাধিক কারণ রয়েছে। যদিও যুক্তরাজ্যে ব্রিটিশ বাংলাদেশি জাতিগোষ্ঠীর নির্দিষ্ট জন্মহারের বিস্তারিত তথ্য সরকারিভাবে প্রকাশিত ওএনএস ডেটাতে ধারাবাহিকভাবে পাওয়া যায় না, তবে বৃহত্তর পরিসংখ্যান একটি চিত্র তুলে ধরে। ২০২২ সালে, যুক্তরাজ্যে জন্ম নেওয়া সাত হাজার সাতটি নবজাতকের মা ছিলেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত। জন্মসূত্রে যুক্তরাজ্যের নাগরিক নন, এমন মায়েদের তালিকার বাংলাদেশের অবস্থান ষষ্ঠ। ইংল্যান্ড ও ওয়েলসে মোট জন্মের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ তাদের দ্বারা হয়েছে। এটি যুক্তরাজ্যের অন্যান্য কিছু জনসংখ্যাগত গোষ্ঠীর তুলনায় তুলনামূলকভাবে উচ্চ জন্মহার নির্দেশ করে।
২০২১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী, ইংল্যান্ড ও ওয়েলসের মোট জনসংখ্যার মাত্র ১ দশমিক ১ শতাংশ বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক হলেও তাদের সংখ্যাটি ছয় লাখ ৪৪ হাজার ৮৮১ জন। ২০০১ সালে যা ছিল দুই লাখ ৮৩ হাজার ৬৩ জন। অর্থাৎ বাংলাদেশি বংশোদ্ভূতদের সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে।
এই বৃদ্ধির পেছনে আরেকটি কারণ হলো ইউরোপের অন্যান্য দেশ থেকে যুক্তরাজ্যে বসতি স্থাপনকারী বাংলাদেশিদের সংখ্যা বৃদ্ধি। ব্রেক্সিট (ইউরোপীয় ইউনিয়ন বা ইইউ থেকে ব্রিটেনের বেরিয়ে যাওয়া) পূর্ববর্তী ইইউ'র অবাধ চলাচল এবং ইইউ সেটেলমেন্ট স্কিমে জাতিগত ভিত্তিতে তথ্য বিভাজন না করায় এই নির্দিষ্ট অভিবাসন পথের সঠিক ও হালনাগাদ পরিসংখ্যান পাওয়া কঠিন। তবে, পূর্ববর্তী প্রতিবেদনগুলো একটি উল্লেখযোগ্য প্রবণতা নির্দেশ করে।
উদাহরণস্বরূপ, ২০১৮ সালের কিছু বিশ্লেষণে বলা হয়েছিল যে গত পাঁচ বছরে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে ৫০ হাজারের বেশি বাংলাদেশি বংশোদ্ভূতরা যুক্তরাজ্যে বসতি স্থাপন করেছেন, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশ। এদের মধ্যে প্রায় ৩০ হাজার এসেছেন ইতালি থেকে। এই প্রবণতা প্রায়শই উন্নত সুযোগ এবং যুক্তরাজ্যে প্রতিষ্ঠিত সম্প্রদায়ের নেটওয়ার্কের সন্ধানে চালিত হয়েছিল। এদের মধ্যে অনেকেই ইইউ সেটেলমেন্ট স্কিমের অধীনে সেটলড বা প্রি-সেটলড স্ট্যাটাসের জন্য আবেদন করেছেন।
২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত, ইইউ সেটেলমেন্ট স্কিমে ৬৩ লাখ ব্যক্তির জন্য ৮৪ লাখ আবেদন জমা পড়েছে, যার মধ্যে ৪১ লাখকে সেটলড স্ট্যাটাস এবং ২৯ লাখকে প্রি-সেটলড স্ট্যাটাস দেওয়া হয়েছে। যদিও এই পরিসংখ্যান আবেদনকারীদের জাতিসত্তা অনুসারে বিভক্ত নয়, তবে এটা বোঝা যায় যে ইউরোপীয় পাসপোর্টধারী উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্যক্তি এই আবেদন প্রক্রিয়ার অংশ ছিলেন।
ওএনএস আরও উল্লেখ করে যে, যদিও ইংল্যান্ডের বেশিরভাগ অংশে অভ্যন্তরীণ অভিবাসন জনসংখ্যা পরিবর্তনের প্রধান কারণ, তবে লন্ডনের মতো অনেক শহুরে এলাকায় আন্তর্জাতিক অভিবাসনই মূল চালিকাশক্তি। এটি টাওয়ার হ্যামলেটসের পূর্বাভাসের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ, যেখানে বেশিরভাগ জনসংখ্যা বৃদ্ধি বিদেশ থেকে আসা মানুষের কারণে ঘটছে।
ওএনএসের পূর্বাভাস অনুসারে, লন্ডনে তরুণদের অনুপাত কমতে থাকবে, যখন প্রাপ্তবয়স্ক অভিবাসীদের সংখ্যা বাড়বে। এই জনসংখ্যাগত পরিবর্তন ইতোমধ্যেই লন্ডনের জুড়ে পরিকল্পিত স্কুল বন্ধের ঘটনায় দেখা যাচ্ছে, যার মধ্যে ইসলিংটনে দুটি, ল্যাম্বেথে চারটি এবং হ্যাকনিতে ছয়টি স্কুল বন্ধ রয়েছে, যা মূলত শিক্ষার্থী সংখ্যা হ্রাসের কারণে ঘটছে। এটি টাওয়ার হ্যামলেটস, ক্যামডেন এবং ইসলিংটনের মতো দ্রুত বর্ধনশীল ব্রিটিশ বাংলাদেশি জনগোষ্ঠী অধ্যুষিত এলাকায় পরিবার এবং প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য পরিষেবাগুলোর চলমান চাহিদার বিপরীত চিত্র তুলে ধরে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শুক্রবার দাবি করেছেন, তিনি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে হত্যার হাত থেকে রক্ষা করেছেন। কিন্তু তার কৃতজ্ঞতার অভাব দেখিয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি বলেন, যদি ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির দিকে অগ্রসর হয়, তাহলে আবারও বোমা হামলা চালানো হবে।
ওয়াশিংটন থেকে এএফপি জানায়, ট্রাম্পের নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ দেওয়া এক বিস্ফোরক বিবৃতিতে তিনি তেহরানের ‘যুদ্ধজয়’ দাবি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা শিথিলের কাজ বন্ধ করার ঘোষণা দেন।
এই বক্তব্য এমন এক সময়ে এসেছে, যখন ইরান ইসরাইলের সঙ্গে ১২ দিনের যুদ্ধে নিহত প্রায় ৬০ জন পারমাণবিক বিজ্ঞানী ও শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তার জন্য রাষ্ট্রীয়ভাবে শেষকৃত্যানুষ্ঠানের প্রস্তুতি নিচ্ছিল।
ইরান বলেছে, নিহত বিজ্ঞানীদের সঙ্গে আরও অন্তত ৬২৭ জন বেসামরিক নাগরিকও এই যুদ্ধে প্রাণ হারিয়েছেন।
ট্রাম্প বলেন, ‘ইরান সামরিক মানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতে সক্ষম হয়েছে, এমন কোনো গোয়েন্দা তথ্য পাওয়া গেলে যুক্তরাষ্ট্র অবশ্যই আবার ‘বিনা প্রশ্নে’ বোমা হামলা চালাবে।’
যদিও ইরান সব সময়ই পরমাণু অস্ত্র তৈরির অভিপ্রায় অস্বীকার করে আসছে।
ট্রাম্প বলেন, খামেনেয়ী যুক্তরাষ্ট্রকে ‘চড়’ মারার কথা বলেছেন এবং পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ক্ষয়ক্ষতি ‘অতিরঞ্জিত’ বলেই দাবি করেছেন। এ প্রসঙ্গে ট্রাম্প অভিযোগ করেন, খামেনেয়ী তার প্রতি অকৃতজ্ঞ আচরণ করেছেন।
তিনি লেখেন, ‘আমি জানতাম তিনি কোথায় আশ্রয় নিয়েছিলেন, এবং আমি ইসরইল কিংবা নিঃসন্দেহে পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী যুক্তরাষ্ট্রের সশস্ত্র বাহিনীর হাতে তার জীবন শেষ হতে দিইনি।’
‘আমি তাকে এক জঘন্য ও অপমানজনক মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচিয়েছি। এবং তিনি আমাকে ‘ধন্যবাদ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প!’ বলতেই চাইলেন না।’
ট্রাম্প আরও জানান, তিনি সাম্প্রতিক দিনগুলোতে ইরানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়টি বিবেচনা করছিলেন। কিন্তু এখন তা থেকে সরে এসেছেন।
তিনি বলেন, ‘কিন্তু না, বরং আমি পেয়েছি ক্ষোভ, ঘৃণা ও ঘৃণাসূচক বক্তব্য এবং সঙ্গে সঙ্গে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের কাজসহ সব কিছু বন্ধ করে দিয়েছি।’ তিনি ইরানকে পুনরায় আলোচনার টেবিলে ফিরতে আহ্বান জানান।
ট্রাম্প দাবি করেন, ইরানের সঙ্গে আবারও পরমাণু আলোচনা শুরু হতে যাচ্ছে। তবে ইরান সরকার তা অস্বীকার করেছে।
জাতিসংঘের পরমাণু পর্যবেক্ষক সংস্থা আইএইএর প্রধান রাফায়েল গ্রোসি ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের বোমা হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত স্থাপনাগুলো পরিদর্শনের অনুরোধ জানিয়েছিলেন। কিন্তু ইরান তা প্রত্যাখ্যান করে জানায়, এতে ‘অসৎ উদ্দেশ্য’র ইঙ্গিত রয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি গ্রোসিকে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করে এক্স (পূর্বতন টুইটার)-এ বলেন, হামলার বিরুদ্ধে গ্রোসি কোনো মন্তব্য না করায় তিনি তার দায়িত্বের ‘রীতিমতো বিশ্বাসঘাতকতা’ করেছেন।
শুক্রবার হোয়াইট হাউস সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্পকে জিজ্ঞাসা করা হয়, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি বন্ধ না হলে তিনি কি আবারও বিমান হামলার কথা বিবেচনা করবেন? জবাবে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই, নিঃসন্দেহে।’
তিনি আরও বলেন, ‘খামেনেয়ী এবং ইরানকে আমরা দফায় দফায় পরাজিত করেছি।’
এমন উত্তপ্ত বাক্যযুদ্ধের মধ্যেই ইরান-ইসরাইল যুদ্ধের পর সম্পাদিত অস্ত্রবিরতির বাস্তবায়ন চলছে।
অস্ত্রবিরতির পর খামেনেয়ীর প্রথম প্রকাশ্য বক্তব্য ছিল বৃহস্পতিবারের এক টেলিভিশন ভাষণ।
সেখানে খামেনেয়ী বলেন, ইসরাইলের বিরুদ্ধে ইরান বিজয় অর্জন করেছে এবং তিনি কখনও যুক্তরাষ্ট্রের চাপে নতি স্বীকার করবেন না।
তিনি বলেন, ‘আমেরিকার প্রেসিডেন্ট যেভাবে ঘটনাবলী অতিরঞ্জিত করেছেন, তা প্রমাণ করে যে তিনি নিজেই এই অতিরঞ্জনের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছেন।’
মার্কিন প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর ওপর ‘অন্যায় কর’ আরোপের অভিযোগ এনে কানাডার সঙ্গে চলমান বাণিজ্য আলোচনা বাতিলের ঘোষণা দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কানাডার নতুন এই ডিজিটাল করকে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর সরাসরি ও প্রকাশ্য আক্রমণ বলে অভিহিত করেছেন তিনি।
২৭ জুন রাতে ট্রাম্প ব্যক্তিগত সামাজিকমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালের এক পোস্টে বলেন, ‘কানাডা খুবই কঠিন এক বাণিজ্যিক অংশীদার। এখন দেশটি আমাদের প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর ওপর ডিজিটাল কর বসাচ্ছে। এটি আমাদের দেশের ওপর সরাসরি ও স্পষ্ট আক্রমণ।’
তিনি বলেন, ‘তারা ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের (ইউ) পথ অনুসরণ করছে। ইউ একই কাজ করেছিল এবং বর্তমানে তাদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আমাদের আলোচনা চলছে। এই অনৈতিক করের কারণে, আমরা কানাডার সঙ্গে সমস্ত বাণিজ্য আলোচনা এখনই বাতিল করছি। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রবেশে তাদের কী পরিমাণ শুল্ক দিতে হবে, তা আগামী সাত দিনের মধ্যে কানাডাকে জানিয়ে দেওয়া হবে।’
যুক্তরাষ্ট্র চীনের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ দুর্লভ খনিজ সরবরাহ নিয়ে সফল চুক্তির ঘোষণা দেওয়ার ঘোষণা দেওয়ার পরেই দেশটির শেয়ার বাজারে ব্যপক উন্নতি দেখা গেছে। এর মাঝেই ট্রাম্পের কানাডা বিষয়ক ঘোষণাটি এল।
এর আগে, কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি চলতি মাসে অ্যালবার্টায় অনুষ্ঠিত জি৭ সম্মেলনে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের পর বলেছিলেন, ‘আগামী ৩০ দিনের মধ্যে একটি বাণিজ্য চুক্তির জন্য আলোচনা এগিয়ে নিতে দুই দেশই সম্মত হয়েছে।’
তবে আগামী সোমবার থেকে কার্যকর হতে যাওয়া কানাডার নতুন ডিজিটাল সার্ভিসেস ট্যাক্স নিয়ে আলোচনার অগ্রগতি থমকে গেছে। এতে গুগলের মূল প্রতিষ্ঠান অ্যালফাবেট, অ্যামাজন, মেটাসহ মার্কিন প্রযুক্তি জায়ান্টদের বছরে আনুমানিক ৩০০ কোটি ডলার গুনতে হতে পারে।
ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তে উত্তর আমেরিকার দুই বড় অর্থনীতি ও অন্যতম প্রধান বাণিজ্যিক সহযোগী বা অংশীদারের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হলো বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, তার বিশ্বাস এক সপ্তাহের মধ্যেই ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে গাজা যুদ্ধবিরতি হতে পারে।
শুক্রবার (২৮ জুন) সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এই কথা জানান ট্রাম্প। তার দাবি, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে আলাপের পর যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা নিয়ে তিনি আশাবাদী।
ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা মনে করি, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই যুদ্ধবিরতি হতে পারে।’ তবে তিনি কার সঙ্গে কথা বলেছেন, এ সময় তা প্রকাশ করেননি।
ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফের দপ্তর অবশ্য গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে এখনো কোনো নিশ্চিত তথ্য দিতে পারছে না।
বাইডেন সরকারের সময় গাজায় যে যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময় চুক্তি হয়েছিল, সেটির অন্যতম মধ্যস্থতাকারী ছিলেন উইটকফ। তবে, মার্চে ইসরায়েল চুক্তি লঙ্ঘন করে আকস্মিক বিমান হামলা শুরু করলে সেই চুক্তি ভেঙে যায়।
এদিকে, কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদক নুর ওদ শুনিয়েছেন ভিন্ন কথা। তিনি জানান, ট্রাম্পের এই মন্তব্য গাজার ক্ষুধার্ত ও নিপীড়িত জনগণের জন্য আশার বাণী হতে পারে। তবে, বাস্তবে এই মুহূর্তে কোথাও কোনো আনুষ্ঠানিক আলোচনা হচ্ছে না।
তিনি বলেন, ‘ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে সাম্প্রতিক যুদ্ধবিরতির পর এই আলোচনা কিছুটা বেড়েছে। তবে ইসরায়েল এখনই গাজায় যুদ্ধ থামানোর কথা আলোচনা করতে চায় না।’
এই বিশ্লেষকের মতে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এই মুহূর্তে গাজায় যুদ্ধবিরতির কথা বললে উল্টো তিনিই রাজনৈতিকভাবে বড়সড় ঝুঁকিতে পড়তে পারেন।
বিভিন্ন সূত্রের বরাতে ওদ আরও বলেন, ‘আরব দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে চাইলে নেতানিয়াহুকে কোনো না কোনোভাবে যুদ্ধবিরতিতে সম্মতি দিতে হতে পারে। এই সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ প্রচেষ্টা মূলত ট্রাম্প প্রশাসনই এগিয়ে নিচ্ছে।’
অন্যদিকে হামাস বলছে, ইসরায়েলকে গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধ করতে হবে এবং তারা মার্চ থেকে যেসব অঞ্চল দখল করেছে, তা ছেড়ে দিতে হবে। এরপরই তারা যুদ্ধবিরতিতে যাবে।
হামাসের দাবি, যুদ্ধবিরতির পরবর্তী আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে অবশ্যই নিশ্চয়তা দিতে হবে। পাশাপাশি ইসরায়েল যেন পুনরায় যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করতে না পারে, তারও নিশ্চয়তা চেয়েছে এই সংগঠনটি।
ইসরায়েলের কৌশল-বিষয়ক মন্ত্রী রন ডারমার আগামী সপ্তাহে ওয়াশিংটনে যাওয়ার কথা রয়েছে। এই সফরে তিনি ট্রাম্প প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে গাজা, ইরান ও নেতানিয়াহুর সম্ভাব্য যুক্তরাষ্ট্র সফর নিয়ে আলোচনা করবেন বলে একটি সূত্র জানিয়েছে।
গাজায় গণহত্যা চলছেই
এক দিকে, ট্রাম্প যুদ্ধবিরতির বাণী দিলেও গাজায় দীর্ঘদিন ধরে চলা আগ্রাসনে ক্লান্ত-যুদ্ধপীড়িত-নিপীড়িত মানুষের ওপর গণহত্যা থামায়নি ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনী (আইডিএফ)। আইডিএফের বিরুদ্ধে বর্তমানে ক্ষুধাঅস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে।
এরই মধ্যে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে ত্রাণ সহায়তা নিতে যাওয়া শত শত নিরস্ত্র ফিলিস্তিনির নিহত হওয়ার খবর আন্তর্জাতিক মহলে তীব্র সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম হারেৎজের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের ক্ষুধার্ত ও নিরস্ত্র মানুষদের লক্ষ্য করে গুলি চালানোর আদেশ দেওয়া হয়েছিল, যা যুদ্ধাপরাধের শামিল।
তবে, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ অবশ্য এই প্রতিবেদন অস্বীকার করেছেন।
কিন্তু গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত মে মাসের শেষের দিক থেকে এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল-সমর্থিত খাদ্য সহায়তা কেন্দ্রগুলোতে ত্রাণ নিতে গিয়ে ৫৫০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
এ বিষয়ে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস দুঃখপ্রকাশ করে বলেছেন, ‘মানুষ শুধু নিজেদের আর পরিবারের জন্য খাবারের খোঁজে বের হচ্ছে, আর সেই খোঁজটাই হয়ে উঠছে তাদের মৃত্যুদণ্ড।’
গুতেরেস স্পষ্টভাবে বলেছেন, ‘খাদ্যের খোঁজ কখনো মৃত্যুর কারণ হতে পারে না।’
আন্তর্জাতিক চিকিৎসা সংস্থা ডক্টরস উইদাউট বর্ডার্স (এমএসএফ) একে ‘মানবিক সহায়তার নামে গণহত্যা’ বলে আখ্যা দিয়েছে।
পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে দেশের রাজনীতি থেকে সরিয়ে দেওয়ার ‘সমন্বিত ষড়যন্ত্র’ চলছে বলে অভিযোগ করেছে দলটি। এই ষড়যন্ত্রের সঙ্গে তার নিজ দলের অনেকই জড়িত বলে জানা গেছে। তবে এ ধরনের তৎপরতা মেনে নেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন পিটিআইয়ের অন্য নেতারা।
পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী আলি আমিন গানদাপুর অভিযোগ করেছেন, গভর্নরের শাসন জারি ও ইমরান খানকে রাজনীতি থেকে ছিটকে দেওয়ার একটি পরিকল্পনা চলছে। তিনি এ ধরনের উদ্যোগকে ‘ষড়যন্ত্র’ বলে অভিহিত করেছেন।
পিটিআইয়ের অভ্যন্তরে বিভাজনের অভিযোগ
পিটিআইয়ের অভ্যন্তরে ভাঙন ধরানোর ষড়যন্ত্র করার অভিযোগ উঠেছে পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) নেত্রী আজমা বুখারি ও তার মিত্রদের বিরুদ্ধে। কিন্তু আজমা’র দাবি, ইমরানকে তার নিজের বোন আলিমা খান ও দলের সদস্যরাই কোণঠাসা করে ফেলেছেন। আলিমার সঙ্গে পিটিআইয়ের সোশ্যাল মিডিয়া ইউনিটও নাকি ইমরান খানের বিরুদ্ধ একই অভিযানে যুক্ত।
আজমা বুখারি বলেন, যিনি (ইমরান) একদিন নওয়াজ শরিফকে ‘সাইডলাইন’ করার চেষ্টা করেছিলেন, আজ তিনি নিজেই তার ঘরে ও দলে অবাঞ্ছিত হয়ে গেছেন।
আজমা আরও দাবি করেন, পিটিআই এখন কেন্দ্রীয় পর্যায়ে তিনটি ও প্রাদেশিক পর্যায়ে আরও তিনটি ভিন্ন গোষ্ঠীতে বিভক্ত। খাইবার পাখতুনখোয়ায় একদিকে জুনায়েদ আকবর, অন্যদিকে আতিফ খান ও আরেকটি গ্রুপ বিদ্রোহী সদস্যদের নিয়ে গঠিত।
পিটিআইয়ের তীব্র প্রতিক্রিয়া
আজমার বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় পিটিআই মুখপাত্র শেখ ওয়াকাস আকরাম বলেন, ইমরান খানকে বাদ দেওয়ার এই ষড়যন্ত্রে সরকার নিজেই অপমানিত ও নগ্ন হয়েছে। তিনি বলেন, আল্লাহর রহমতে ইমরান খানকে মাইনাস নয়, বরং তার অবস্থান আরও কয়েকগুন শক্তিশালী করা হয়েছে। জাতি তাকে সবার ওপরে স্থান দিয়েছে।
ওয়াকাস আকরাম দাবি করেন, গত তিন বছরে একাধিকবার পিটিআইকে বিভক্ত করার ষড়যন্ত্র হয়েছে, কিন্তু সবই ব্যর্থ হয়েছে। ‘ইমরান শুধু পিটিআইয়ের নেতা নন, তিনি জাতির নেতা। তার জনপ্রিয়তা, দমন-পীড়নের মধ্যেও বেড়েই চলেছে।
পাঞ্জাব সরকারকে দুর্নীতির অভিযোগে একহাত নিয়ে তিনি বলেন, পাঞ্জাবের এই ‘চুরি করা ম্যান্ডেট’ এখন এক লাখ কোটি রুপি লোপাটের কলঙ্কে কলুষিত। আজমা বুখারিকে বলা উচিত, ‘পানামা কুইনের’ অধীনে কীভাবে জনগণের সম্পদ লুট হচ্ছে।
এদিকে, সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে খাইবার পাখতুনখোয়ার মুখ্যমন্ত্রী গানদাপুর বলেন, ইমরান খানই দলের নেতা। যদি তিনি বলেন, আমি এক মিনিটেই এই সরকার ছেড়ে দেব। সরকারটি তারই। তাকে বাদ দেওয়ার চেষ্টা মানে দলের অস্তিত্বের ওপর আঘাত হানা।
তিনি অভিযোগ করেন, ইমরানের পরামর্শ ছাড়াই বাজেট পাশ করানো হয়েছিল ও পরিকল্পিতভাবে দলের ভেতরের আলোচনা বাধাগ্রস্ত করা হয়েছে। আলোচনা বাধাগ্রস্ত করে সরকার হাইজ্যাক করার একটি প্রচেষ্টা ছিল, যা ব্যর্থ হয়েছে।
গানদাপুর বলেন, খাইবার পাখতুনখোয়ায় অর্থনৈতিক জরুরি অবস্থা জারি করে গভর্নরের শাসন চাপিয়ে দেওয়ার একটি ষড়যন্ত্র চলছে। এটি মূলত ইমরান খানকে বাজেট প্রক্রিয়া থেকে বাদ দেওয়ার কৌশল।
তিনি আরও জানান, ইমরান খান মুক্তি পেলেই দলের ভেতরের ষড়যন্ত্রকারীরা জনসম্মুখে উন্মোচিত হবেন। দেখা যাবে কারা ইমরানকে দুর্বল করতে চাইছে, আর জনতা তাদের বিচার করবে।
পিটিআই কি বিভক্ত হয়ে যাচ্ছে?
এই মুহূর্তে পিটিআই যে একাধিক গোষ্ঠীতে বিভক্ত হয়ে পড়েছে- তা খোদ ক্ষমতাসীন দলের নেতারাই বলছেন। দলটির কৌশলগত সংকট স্পষ্ট হয়ে উঠছে কেন্দ্রে ও প্রাদেশিক পর্যায়ে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, পিটিআইয়ের মধ্যে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব ও বহিরাগত চাপ- উভয়ই একত্রে কাজ করছে। ইমরান খানের অনুপস্থিতিতে দল নেতৃত্বহীন অবস্থায় নানা চাপ মোকাবিলা করছে এবং তার ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব ও নিয়ন্ত্রণের প্রশ্ন এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে।
চলতি সপ্তাহে মালয়েশিয়ার পুলিশ এক অভিযানে ৩৬ বাংলাদেশি নাগরিককে আটক করেছে। সেখানকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযোগ, তাদের চরমপন্থি মতাদর্শ ও সহিংস চিন্তাধারায় পরিচালিত একটি জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে জড়িত বলে শনাক্ত করা হয়েছে।
মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দাতুক সেরি সাইফুদ্দিন নাসুশন ইসমাইল জানান, ২৪ এপ্রিল শুরু হওয়া অভিযানটি সেলাঙ্গর ও জোহর অঞ্চলে তিন ধাপে পরিচালিত হয়। তাদের মধ্যে পাঁচজনের বিরুদ্ধে শাহ আলম ও জোহর বারুর সেশন আদালতে সন্ত্রাসবাদ সংশ্লিষ্ট অপরাধের ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
তিনি বলেন, ১৫ জনের বিরুদ্ধে দেশে ফেরত পাঠানোর (ডিপোর্টেশন) আদেশ জারি করা হয়েছে এবং ১৬ জনের বিরুদ্ধে এখনো তদন্ত চলছে। গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, দলটি মালয়েশিয়ায় আইএসের মতাদর্শ ছড়িয়ে দিয়েছিল এবং নিজেদের কমিউনিটির ভেতরেই নিয়োগ সেল গঠন করেছিল।
সাইফুদ্দিন ইসমাইল বলেন, সেলগুলোর উদ্দেশ্য ছিল উগ্র মতাদর্শ প্রচার, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য অর্থ সংগ্রহ এবং শেষ পর্যন্ত নিজ দেশের বৈধ সরকার উৎখাত করা। মালয়েশিয়া কখনো কোনো বিদেশি উগ্রবাদী আন্দোলনের জন্য নিরাপদ আশ্রয়স্থল হবে না।
মন্ত্রী বলেন, আমরা স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করব, যেন মালয়েশিয়া শান্তিপূর্ণ, স্থিতিশীল এবং সন্ত্রাসী হুমকি থেকে মুক্ত থাকে। এই দেশকে কোনো সন্ত্রাসী সংগঠনের অপারেশনাল ঘাঁটি বা ট্রানজিট পয়েন্ট হিসেবে ব্যবহারের চেষ্টা করলে কঠোর, দ্রুত ও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার খবর প্রচারের জন্য ট্রাম্প প্রশাসন বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক অবস্থান নিয়েছে।
তারা জোর দিয়ে বলেছে, অভিযানটি সম্পূর্ণ সফল।
তারা সন্দেহ জাগিয়ে তোলা একটি গোয়েন্দা মূল্যায়নের প্রতিবেদনের জন্য সাংবাদিকদের তিরস্কার করেছে।
ওয়াশিংটন থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।
গত সপ্তাহান্তে আমেরিকান বি-২ বোমারু বিমান দুটি ইরানি পারমাণবিক স্থাপনায় বিশাল জিবিইউ-৫৭ বাঙ্কার-বাস্টার বোমা হামলা চালিয়েছে। অন্যদিকে একটি গাইডেড মিসাইল সাবমেরিন টমাহক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে তৃতীয় স্থানে আঘাত করেছে।
পেন্টাগনে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী পিট হেগসেথ ইসরামফল ও ইরানের মধ্যে ১২ দিনের সংঘাতের কথা উল্লেখ করে বলেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘যুদ্ধ শেষ করার জন্য পরিস্থিতি তৈরি করেছেন, ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতা ধ্বংস করে করে দিয়েছেন।’
ট্রাম্প নিজেই এই হামলাগুলোকে ‘অসাধারণ সামরিক সাফল্য’ বলে অভিহিত করে বারবার বলেছেন, তারা পারমাণবিক স্থাপনাগুলোকে ‘নিশ্চিহ্ন’ করেছে।
‘কিন্তু মার্কিন গণমাধ্যম এই সপ্তাহের শুরুতে একটি প্রাথমিক আমেরিকান গোয়েন্দা মূল্যায়ন প্রকাশ করেছে। যেখানে বলা হয়েছে যে, এই হামলাগুলো ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে কয়েক মাস পিছিয়ে দিয়েছে।
হেগসেথ ও অন্যান্যরা এই প্রতিবেদনের তীব্র সমালোচনা করেছেন।
হগসেথ বলেন, সিএনএন, এমএসএনবিসি বা নিউ ইয়র্ক টাইমস, যাই হোক না কেন, প্রাথমিক মূল্যায়নের ভুয়া খবর প্রচার করা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘এই নথিটি ফাঁস হয়েছে, কারণ কারোর উদ্দেশ্য ছিল জল ঘোলা করা এবং এই ঐতিহাসিক হামলা সফল হয়নি বলে দেখানো’।
ট্রাম্প ব্যক্তিগতভাবে গোয়েন্দা প্রতিবেদনের কভারেজের নিন্দা করেছেন। সাংবাদিকদের চাকরি হারানোর আহ্বান জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবার ডেমোক্র্যাটদের মূল্যায়ন ফাঁস করার জন্য অভিযুক্ত করেছেন এবং বলেছেন যে, তাদের বিচার করা উচিত।
মন্তব্য