গত ১২ দিন ধরে মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধের দামামা বাজার পর অবশেষে পরিস্থিতি কিছুটা স্থিতিশীল হয়েছে। ইরান-ইসরায়েল এগিয়েছে একটি ভঙ্গুর অস্ত্রবিরতির দিকে।
ইরানের পারমাণু কর্মসূচি বন্ধের নামে গত ১৩ জুন ইরানে হামলা চালায় ইসরায়েল। ইরানও শুরু করে পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা। এরপর তেল আবিবের সঙ্গে যুক্ত হয়ে ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। এর প্রতিশোধ নিতে কাতারের মার্কিন ঘাঁটিতে হামলা চালায় তেহরান।
এরপর পরিস্থিতি যেন আরও খারাপ না হয়, এজন্য এরই মধ্যে শুরু হয়ে যায় যুদ্ধবিরতির আলোচনা। অবশেষে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিহিত ‘১২ দিনের যুদ্ধ’ আপাতত বন্ধ হয় যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে।
যুদ্ধবিরতির কার্যকারিতা নিয়ে সংশয় থাকলেও আপাতদৃষ্টিতে ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে সেই সংঘাত আপাতত শেষ হয়েছে।
এদিকে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও ইরানের নেতারা সবাই এ যুদ্ধে নিজেদের জয়ী দেখাতে উঠে পড়ে লেগেছেন। তাছাড়া ট্রাম্পসহ সবার দাবি, যুদ্ধবিরতির এই মুহূর্তটি ঘটেছে তাদের নিজ নিজ শর্তে।
এখন প্রশ্ন হলো— বাস্তবতা আসলে কী? ইসরায়েল কী অর্জন করল? ইরান কি তাদের কৌশলগত সম্পদ রক্ষা করতে পারল? আর এই যুদ্ধবিরতি কি সত্যিই শান্তির পথে নিয়ে যেতে পারে?
ঘটনাগুলো কীভাবে ঘটল?
রবিবার (২২ জুন) ভোরে ইসরায়েলের অনুরোধে ইরানের ফোরদো, নাতাঞ্জ ও ইসফাহান পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র।
ট্রাম্পের ভাষ্যে, তাদের হামলায় এসব স্থাপনা ‘সম্পূর্ণভাবে’ ধ্বংস করা হয়েছে।
এর জবাবে, সোমবার (২৩ জুন) কাতারের আল-উদেইদ মার্কিন ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে ইরান। এটি মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে বড় মার্কিন সামরিক ঘাঁটি।
মধ্যপ্রাচ্যে একটি বড় ও দীর্ঘ যুদ্ধের আশঙ্কা তখন আরও তীব্র হয়ে ওঠে। তবে এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ট্রাম্প তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ঘোষণা দেন, ‘ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে সম্পূর্ণ ও পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে।’
তিনি এটিকে ১২ দিনের যুদ্ধ বলে অভিহিত করেন। এই যুদ্ধ বছরের পর বছর চলতে পারত এবং পুরো মধ্যপ্রাচ্যকে ধ্বংস করে দিত বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
তবে যুদ্ধবিরতির ঘোষণার চার ঘণ্টা পরই ইরান থেকে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর দাবি করে ইসরায়েল। পাল্টা হামলায় তেহরানের কাছে একটি রাডার স্টেশন ধ্বংস করে তেলর আবিব।
এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘ইসরায়েল যে আজ সকালেই বেরিয়ে পড়েছে, তাতে আমি খুবই অসন্তুষ্ট। দুটি দেশ যারা এতদিন ধরে লড়াই করেছে, তারা জানে না কী করছে!’
ইরান অবশ্য ওই ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের অভিযোগ অস্বীকার করে। এরপর স্থানীয় সময় বেলা সাড়ে ১১টায় যুদ্ধবিরতি পুনরায় কার্যকর হয় এবং ট্রাম্প নেতানিয়াহুর সঙ্গে কথা বলেন।
পরে ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প লেখেন, “ইসরায়েল আর ইরানে হামলা করবে না। সব বিমান ফিরে আসবে এবং ইরানকে একটি ‘বন্ধুত্বপূর্ণ উড়ন্ত অভিবাদন’ জানাবে। কেউ আহত হবে না, যুদ্ধবিরতি কার্যকর রয়েছে!”
ইসরায়েল কী অর্জন করল?
ইসরায়েল বহুদিন ধরে দাবি করে আসছে, ইরান তাদের অস্তিত্বের জন্য প্রধান হুমকি। তবে এর আগে কখনো ইরানের মূল পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে হামলা চালায়নি তেল আবিব।
১৩ জুন ইসরায়েল সেই সীমারেখা অতিক্রম করে নাতাঞ্জের ফুয়েল এনরিচমেন্ট প্ল্যান্ট ও ইসফাহান পারমাণবিক প্রযুক্তি কমপ্লেক্সে হামলা চালায়। জবাবে ইরানও ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে ইসরায়েলের দিকে।
এর ফলে সিরিয়া ও ইরাকে পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালালেও এবার আরও দূরবর্তী ও জটিল অভিযানে সফল হয়েছে ইসরায়েল।
আন্তর্জাতিক আইনি বৈধতা নিয়ে সমালোচনার মুখেও নিজেদের সিদ্ধান্তে অটল থেকেছে তারা। ইসরায়েল দাবি ছিল, এই হামলা একটি আত্মরক্ষামূলক পদক্ষেপ।
যদিও ইরান পারমাণবিক অস্ত্র বানাচ্ছে বা সেটি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ব্যবহার করতে যাচ্ছিল বলে অভিযোগ করেছে তেল আবিব, তবে অনেকেই তা বিশ্বাস করেন না।
এখানে আরেকটি বিষয় লক্ষণীয়, তা হলো— এই অভিযানে এটি প্রমাণিত হয়েছে যে, ইসরায়েল চাইলে যুক্তরাষ্ট্রকে এমন অভিযানেও জড়াতে পারে যেখানে তারাই প্রথম আঘাত হেনেছে।
১৯৬৭ ও ১৯৭৩ সালের যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র শুধু উপকরণ সরবরাহ করেছিল; সরাসরি অংশ নেয়নি।
ট্রাম্পের এই ভূমিকার জন্য অবশ্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতেও কার্পণ্য করেনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী। তাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন নেতানিয়াহু।
ইসরায়েল ইরানে পরিচালিত ওই হামলার নাম দিয়েছে ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’। এমন এক সময় এই অপারেশেন চালানো হয়, যখন ইসরায়েল ইতোমধ্যে ইরানের আঞ্চলিক মিত্র—হুথি, হামাস ও হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে লড়াই করে আসছে।
ইরান কি পারমাণবিক কর্মসূচি রক্ষা করতে পেরেছে?
ইসরায়েল দৃশ্যত ইরানের ভূ-উপরিভাগের স্থাপনাগুলোতে বড় ক্ষতি করেছে, আর যুক্তরাষ্ট্র দাবি করেছে তারা ভূগর্ভস্থ পারমাণবিক স্থাপনাগুলো ধ্বংস করেছে।
উপগ্রহ চিত্রে ক্ষেপণাস্ত্র লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার চিহ্ন দেখা গেলেও, সত্যিকারের ক্ষয়ক্ষতি কতটা হয়েছে তা নিরপেক্ষভাবে যাচাই করা যায়নি। এর জন্য ওইসব স্থাপনা পরিদর্শনের প্রয়োজন হবে।
সোমবার আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) প্রধান রাফায়েল গ্রোসি বলেন, ‘এই মুহূর্তে কেউ, এমনকি আইএইএ-ও ফোরদোয় ভূগর্ভস্থ ক্ষয়ক্ষতির পূর্ণ মূল্যায়ন করতে পারেনি। তবে বিস্ফোরণের মাত্রা ও সেন্ট্রিফিউজের স্পর্শকাতরতা বিবেচনায় যথেষ্ট ক্ষতি হয়েছে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।’
এই ঘটনাপ্রবাহের মধ্যে আরও একটি প্রশ্ন রয়ে গেল— ইরানের ৪০০ কেজি উচ্চমাত্রায় সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম কোথায় আছে?
আইএইএ বলেছে, এই মজুদের অবস্থান তারা জানে না।
ইরানের পরমাণু শক্তি সংস্থার প্রধান মোহাম্মদ ইসলামি দাবি করেছেন, তাদের কর্মসূচিতে কোনো ব্যাঘাত ঘটবে না এবং কারণ হামলার আগেই তাদের প্রস্তুতি নেওয়া ছিল।
এদিকে, যুদ্ধবিরতির সাড়ে তিন ঘণ্টা পর ইসরায়েল যে দুটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের কথা বলেছে, সেগুলোর উৎস নিয়েও ধোঁয়াশা রয়ে গেছে। কারণ ইরান আনুষ্ঠানিকভাবে এর দায় অস্বীকার করেছে।
তাহলে প্রশ্ন থেকে যায়— কে ছুঁড়ল সেগুলো? সেগুলো কি ভুলবশত ছোড়া হয়েছিল?
কিন্তু এখন পর্যন্ত ইরান কঠোর অবস্থানে রয়েছে।
সোমবার (২৩ জুন) ইরানের সংসদের জাতীয় নিরাপত্তা কমিটি একটি বিল অনুমোদন করেছে, যেখানে আইএইএয়ের সঙ্গে তেহরানের সহযোগিতা সম্পূর্ণভাবে স্থগিত করার আহ্বান জানানো হয়েছে। বিলটি এখন প্লেনারি অধিবেশনে অনুমোদনের অপেক্ষায়।
তবে মঙ্গলবার ট্রাম্প ফের ঘোষণা দিয়েছেন, ‘ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি পুনরায় শুরু করতে দেওয়া হবে না।’
এ পরিস্থিতিতে বলা চলে, মূল উত্তেজনা যদি বজায় থাকে, তবে নতুন করে পাল্টা-পাল্টি হামলা কেবল সময়ের ব্যাপার মাত্র।
ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রীর বরাত দিয়ে দেশটির গণমাধ্যমে জানানো হয়েছে, ১৩ জুন থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলের হামলায় অন্তত ৬০৬ জন মানুষ নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৫ হাজারেরও বেশি মানুষ। বর্তমানে তারা চিকিৎসাধীন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ রেজা জাফারঘানি আরও জানান, গত ২৪ ঘণ্টাই ছিল হামলার দিক থেকে সবচেয়ে ভয়াবহ। এই একদিনেই প্রাণ গেছে ১০৭ জনের।
তবে ইরানের ভেতর থেকে স্বাধীনভাবে তথ্য সংগ্রহ কঠিন হয়ে পড়েছে। সরকারি নিয়ন্ত্রণের কারণে বিবিসি-সহ বিদেশি সংবাদমাধ্যমের পক্ষে নিশ্চিতভাবে ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা নির্ধারণ করা যাচ্ছে না।
এদিকে ইরানে মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা ‘হিউম্যান রাইটস অ্যাকটিভিস্ট ইন ইরান’ জানিয়েছে, নিহতের প্রকৃত সংখ্যা সরকারের ঘোষিত সংখ্যার প্রায় দ্বিগুণ হতে পারে।
বিবিসি জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইসরায়েলকে কঠোর বার্তা দিয়েছেন। তিনি ট্রুথ সোশ্যালে লিখেছেন, ‘ইসরায়েল, বোমা ফেলো না। যদি ফেলো, এটা হবে এক বিশাল লঙ্ঘন। তোমাদের পাইলটদের এখনই ঘরে ফিরিয়ে নাও।’
এর আগে, গতকাল মঙ্গলবার সকালে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেন ট্রাম্প। এ অবস্থায় ইসরায়েল জানিয়েছিল, তারা ট্রাম্পের প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। আর ইরান বলেছে, যদি ইসরায়েল হামলা বন্ধ রাখে, তারাও হামলা বন্ধ করবে।
তবে ওই ঘোষণার পরও ইসরায়েলের সেনাবাহিনী দাবি করে, তারা ইরান থেকে ছোড়া একটি ক্ষেপণাস্ত্র মাঝপথে ধ্বংস করেছে। কিন্তু তেহরান নতুন করে কোনো হামলা চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছে। বহু বিশ্লেষক বলছেন, যুদ্ধবিরতির ঘোষণার মধ্যেও হামলা ও পাল্টা অভিযোগ পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে।
মাটি থেকে উড্ডয়নের কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই ভেঙে পড়েছিল বিমান। এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান বোয়িং ড্রিমলাইনার ৭৮৭-এর দুর্ঘটনার কথা এখনো ভুলতে পারেনি ভারতবাসী। গত ১২ জুন এই বিমান দুর্ঘটনায় মৃত্যু ২৭০ জনের। এখনো সব মানুষের দেহ শনাক্তও করা হয়নি। কিন্তু সদ্য এমন একটি তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে, যা জেনে কার্যত চমকে ওঠেছেন সবাই। সদ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিও ঘিরে তাই দেশজুড়ে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। ওই ভিডিওতে দেখা গেছে, সংস্থার গুরুগ্রামের দপ্তরে ডিজে পার্টিতে উদ্দাম নাচে মেতেছেন এয়ার ইন্ডিয়া স্যাটস (এআইএসএটিএসের) শীর্ষ কর্তারা। ঘটনাটি ২০ জুনের। যার মাত্র আটদিন আগেই আমেদাবাদে দুর্ঘটনা ঘটেছিল। (এআইএসএটিএস) হলো এমন একটি কোম্পানি যারা বিমানকে গ্রাউন্ড সার্ভিসের সুবিধাগুলো প্রদান করে। এই কোম্পানির অর্ধেক মালিকানা এয়ার ইন্ডিয়া লিমিটেড অর্থাৎ টাটা গ্রুপের। বাকি অর্ধেকের মালিকানা স্যাটস লিমিটেডের। বিমানবন্দরের খাবারের ব্যবস্থা ও অন্যান্য বিভিন্ন ব্যবস্থার দেখাশোনা করে এই কোম্পানি। বোয়িং ড্রিমলাইনার ৭৮৭-এর গ্রাউন্ড সার্ভিসের দায়িত্ব ছিল এই সংস্থারই হাতে। ভিডিওতে দেখা গেছে, গুরুগ্রামের দপ্তরে ডিজে বাজছে। নাচে ব্যস্ত নানা স্তরের কর্মী-আধিকারীরা। যাদের মধ্যে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে (এআইএসএটিএসের) চিফ অপারেটিং অফিসার আব্রাহাম জাকারিয়া, সংস্থার চিফ ফিন্যান্সিয়াল অফিসার এবং বেঙ্গালুরু ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট লিমিটেডের জিএম সম্প্রীতি কোটিয়ানকে। এই ভিডিও ক্ষোভ তৈরি করেছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। যখন নিহতদের পরিবারের পাশাপাশি গোটা দেশ গভীর শোকে রয়েছে, তখন বিমানবন্দরের কর্মীদের এই ধরনের উদ্যাপন দৃষ্টিকটূ লেগেছে সবারই। ভিডিও সামনে আসতেই এক সংস্থার তরফ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, (এআইএসএটিএস) সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত একটি ভিডিও সম্পর্কে অবগত, যা দুর্ভাগ্যবশত সম্পূর্ণরূপে প্রাসঙ্গিক নয়। তবুও ফলে যে মানসিক অস্বস্তির সৃষ্টি হয়েছে, তার জন্য আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখিত। যদিও তাতে চিড়ে ভিজছে না। অনেকেরই মত, এই ক্ষমা চাওয়া হাস্যকর ও মূল্যহীন। কেউ কেউ বলছেন, এই বিমান দুর্ঘটনায় যারা তাদের প্রিয়জনকে হারিয়েছেন, তাদের কাছে এই ভিডিও প্রহসন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেওয়ার পর গতকাল মঙ্গলবার এশিয়ার শেয়ারবাজারগুলো ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। পাশাপাশি, জ্বালানি তেলের বাজারে বড় ধরনের সংকটের আশঙ্কা হ্রাস পাওয়ায় তেলের দাম কিছুটা কমে গেছে।
টোকিও থেকে এএফপি জানায়, ইরান যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার প্রতিশোধ নিতে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ হরমুজ প্রণালীতে তেল পরিবহন বন্ধ না করায় বিনিয়োগকারীরা স্বস্তি পেয়েছেন। ইরান গত সোমবার কাতারে একটি গুরুত্বপূর্ণ মার্কিন ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করার দাবি করে। যদিও কাতার পরিস্থিতিকে ‘স্থিতিশীল’ বলে আখ্যা দেয়।
বিশ্লেষকরা জানান, এতে তেলক্ষেত্র বা জ্বালানি অবকাঠামোর কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
এসপিআই অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের স্টিফেন ইনেস বলেন, ‘তেহরান অনেকটা ঠাণ্ডা মাথায় প্রতিক্রিয়া দিয়েছে। তাদের ‘প্রতিশোধ’ কাতারের মার্কিন ঘাঁটিতে আঘাত করেছে। শিরোনাম পাওয়ার জন্য যথেষ্ট জোরে, কিন্তু তেলবাজারকে না নাড়িয়ে দেওয়ার মতোই শান্তভাবে।
তিনি আরও বলেন, ‘যখন এটা পরিষ্কার হয়ে গেল, তখনই যুদ্ধজনিত প্রিমিয়াম হঠাৎ করেই তেলের দাম থেকে ঝরে পড়ে। ফলে গত সোমবার রাতে ব্রেন্ট ও ডব্লিউটিআই দুই চুক্তির দামই ৭ শতাংশের বেশি হ্রাস পায়।
গতকাল মঙ্গলবার সকাল নাগাদ উভয় তেল চুক্তির দাম ২ শতাংশের বেশি হ্রাসে ছিল।
এশিয়ান বাজারে বিনিয়োগকারীদের মনোভাব ছিল ইতিবাচক। টোকিও ও হংকং সূচক বেড়েছে ১.৪ শতাংশ করে।
সাংহাই ০.৮ শতাংশ এবং সিউল ২.৭ শতাংশ উত্থানে ছিল। সিঙ্গাপুর ০.৭ শতাংশ, সিডনি ১.১ শতাংশ এবং তাইপেই ১.৮ শতাংশ বেড়েছে, তবে জাকার্তা ১.৭ শতাংশ কমেছে।
ট্রাম্প জানান, ইরান ও ইসরাইল একটি ধাপে ধাপে বাস্তবায়নযোগ্য যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। যা তাদের সংঘাতের ‘আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি’ নিয়ে আসবে। যদিও তেহরানে এখনও কিছু হামলা চলছে।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মঙ্গলবার বলেন, ইসরায়েল যদি হামলা বন্ধ করে, তবে তেহরানও আর আঘাত চালাবে না।
এমইউএফিজ-এর বিশ্লেষক মাইকেল ওয়ান লিখেছেন, যুদ্ধবিরতির সুনির্দিষ্ট বিবরণ এখনো পরিষ্কার নয়। তাই, শান্তি ও উত্তেজনা প্রশমনের বিষয়টি এখনো চূড়ান্ত নয়।
তিনি আরও বলেন, ‘তবে সাম্প্রতিক প্রতিবেদনগুলো ইঙ্গিত করছে যে ইরান যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। যদি তা সত্য হয়, তাহলে সম্ভাব্য তেল সরবরাহ বিঘ্নের ভয়াবহ ঝুঁকিগুলো অনেকটাই হ্রাস পেয়েছে।
বৈদেশিক মুদ্রা বাজারে, ডলারের দরপতন হয়েছে। কারণ, ফেডারেল রিজার্ভের গভর্নর মিশেল বোম্যান জানিয়েছেন, জুলাই মাসের বৈঠকে মুদ্রাস্ফীতি স্থির থাকলে তিনি সুদের হার কমাতে সমর্থন দেবেন। বর্তমানে বাজারে প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে যে সেপ্টেম্বরে সুদের হার হ্রাস আবার শুরু হতে পারে।
ওয়ান বলেন, বোম্যান ইঙ্গিত দিয়েছেন যে শুল্ক আলোচনায় চলমান অগ্রগতি নীতিমালা সামঞ্জস্য করার জন্য একটি কম ঝুঁকিপূর্ণ অর্থনৈতিক পরিবেশ প্রদান করছে’ এবং ডলারকে দুর্বল করে দিচ্ছে।
ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। উভয় পক্ষই লক্ষ্য অর্জনের দাবি করছে। এই ১২ দিনের যুদ্ধের জয়-পরাজয় ও বিভিন্ন পক্ষের অর্জন নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের ভূ-রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতামত এখন আলোচনার কেন্দ্রে।
তেহরানের সেন্টার ফর মিডল ইস্ট স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের গবেষণা ফেলো আবাস আসলানি সতর্ক করে বলেছেন, ইরান এই যুদ্ধ বিরতিকে সতর্কতার সঙ্গে দেখছে, কারণ গাজা ও লেবাননে যুদ্ধবিরতি চুক্তি মেনে চলার ক্ষেত্রে ইসরায়েলের অতীত রেকর্ড ভালো নয়।
আল-জাজিরাকে আসলানি বলেন, ‘এ কারণেই তেহরান সতর্ক এবং কর্মকর্তারা আনুষ্ঠানিকভাবে এটি নিশ্চিত করতে আসেননি। যদি সময় মতো কোনো লঙ্ঘন না হয়, আমি মনে করি ইরান যুদ্ধবিরতি মেনে চলবে।’
আসলানি আরও বলেন, এটি ছিল ইরান এবং ইসরায়েল ও তার সহযোগী যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে একটি যুদ্ধ। দুই মিত্র তাদের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিল ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ধ্বংস করা এবং ইরানে ‘শাসন পরিবর্তন’, যা অর্জন করা যায়নি।
তিনি বলেন, ‘আমরা ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর কিছু ক্ষতি দেখেছি, কিন্তু দেশটির পারমাণবিক কর্মসূচি কেবল সেই স্থাপনা এবং সরঞ্জামই নয়। ইরান তার পারমাণবিক উপাদান একটি সুরক্ষিত স্থানে সরিয়ে নিয়েছে। তাদের জ্ঞান ও দক্ষতা তো অক্ষত রয়েছে!’ আসলানি আরও যোগ করেন, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতাও ধ্বংস হয়নি, তারা যুদ্ধবিরতি ঘোষণার ঠিক আগেও ইসরায়েলে আঘাত হেনেছে।
আসলানি বলেন, স্বল্পমেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ‘অর্থপূর্ণ’ আলোচনা হতে পারে না, কারণ পারমাণবিক আলোচনা চলাকালীনই যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল ইরানে আক্রমণ করেছে।
ইসরায়েলের দাবি: লক্ষ্য অর্জিত হয়েছে
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকারের পক্ষে দেওয়া এক বিবৃতিতে ইসরায়েল জানিয়েছে, তারা ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক সাফল্যের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব মেনে নিয়েছে।
যুদ্ধবিরতি সম্পর্কে ইসরায়েলের প্রথম আনুষ্ঠানিক মন্তব্যে বলা হয়েছে, প্রায় দুই সপ্তাহ ইরান আক্রমণের পর ইসরায়েল তার সমস্ত লক্ষ্য এবং ‘তার চেয়েও বেশি’ অর্জন করেছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইসরায়েল একটি তাৎক্ষণিক এবং দ্বৈত অস্তিত্বের হুমকি দূর করেছে। পারমাণবিক এবং ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র—এই দুই হুমকির দিকে ইঙ্গিত করেছে ইসরায়েল।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, যুদ্ধের মধ্যে আইডিএফ তেহরানের আকাশের ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ অর্জন করেছে, ইরানি সামরিক নেতৃত্বের ওপর তীব্র আঘাত হেনেছে এবং ইরানের ডজনখানেক মূল শাসন লক্ষ্যবস্তু ধ্বংস করেছে।
ইসরায়েল ‘ইরানি পরমাণু হুমকি দূর করতে’ সামরিক সহযোগিতার জন্য ট্রাম্প এবং যুক্তরাষ্ট্রকে ধন্যবাদ জানিয়েছে।
অতি-ডানপন্থি অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোত্রিচ বলেছেন, ইসরায়েল ‘ইরানের বিরুদ্ধে অভিযানে একটি অসাধারণ বিজয়’ অর্জন করেছে যা ইসরায়েল রাষ্ট্রের ইতিহাসের পাতায় গৌরবময় অধ্যায় হিসেবে লিপিবদ্ধ থাকবে। স্মোত্রিচ বলেন, ‘একটি সম্যক হুমকি’ দূর করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘এখন আমাদের সমস্ত শক্তি দিয়ে গাজায় যেতে হবে, হামাসকে ধ্বংস করতে এবং আমাদের জিম্মিদের ফিরিয়ে আনতে হবে।’
হুমকিতে ট্রাম্পের ভাবমূর্তি
আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে, ইরানের ইসলামি প্রজাতন্ত্রের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের বিবাদের সবচেয়ে খারাপ সংকটকাল থেকে একটি জয় নিয়ে বেরিয়ে এসেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে মার্কিন হামলার জবাবে কাতার মার্কিন ঘাঁটিতে তেহরানের মাঝারি মাত্রার ক্ষেপণাস্ত্র হামলাকে উত্তেজনা প্রশমনের একটি লক্ষণ হিসেবে ধরে নিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। গত সোমবার তিনি ট্রুথ সোশ্যালে পোস্ট করেছেন: ‘অভিনন্দন বিশ্ব, এখন শান্তির সময়!’
ট্রাম্পের এই উচ্ছ্বাস ইঙ্গিত দেয়, তিনি এই সংঘাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যুক্ত থাকার প্রয়োজন আপাতত শেষ বলে মনে করছেন।
মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধবিরতি প্রায়শই ভঙ্গুর এবং ক্ষণস্থায়ী হয়। যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগেও ইসরায়েল এবং ইরান উভয় পক্ষের ভয়াবহ হামলা সেদিকেই ইঙ্গিত করে। কিন্তু মার্কিন স্টিলথ বোমারু বিমানগুলো ইরানে আঘাত করার মাত্র ৪৮ ঘণ্টা পরেই প্রেসিডেন্ট নিজেকে একজন শান্তি স্থাপনকারী এবং দক্ষ চুক্তি সম্পাদনকারী হিসেবে জাহির করতে শুরু করেন।
গত সোমবার রাতে এনবিসি নিউজকে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি মনে করি যুদ্ধবিরতি অনির্দিষ্টকাল থাকবে। এটি চিরকাল চলবে।’ তিনি ভবিষ্যদ্বাণী করেন, ইসরায়েল এবং ইরান আর কখনো পরস্পরের দিকে গোলা ছুড়বে না।
মধ্যপ্রাচ্যকে ‘আমেরিকান প্রেসিডেন্টের জন্য কবরস্থান’ বলা হয়। যেই অঞ্চলের এমন কুখ্যাতি আছে, সেখানে ট্রাম্পের এমন দাবি সত্যিই সাহসী! ট্রাম্পের সমস্ত বিপণন দক্ষতা সত্ত্বেও, আগামী দিনের ঘটনাপ্রবাহই শেষ পর্যন্ত বলে দেবে, ট্রাম্পের এই যুগান্তকারী পদক্ষেপটি বাস্তব নাকি কেবল আরেকটি বিভ্রম।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ইসরায়েলের ওপর আমি সন্তুষ্ট নই।
নির্ধারিত সময়সীমার পরও দুই দেশের হামলা বন্ধ না হওয়া নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে মঙ্গলবার (২৪ জুন) ভোরে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
ট্রাম্প বলেন, ‘ইসরায়েল ও ইরান উভয় দেশই যুদ্ধবিরতির শর্ত লঙ্ঘন করেছে।’
ন্যাটো সম্মেলনে যোগ দিতে নেদারল্যান্ডসের হেগ শহরে রওনা হওয়ার আগে হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প বলেন, ‘তারা (ইরান) লঙ্ঘন করেছে, একইভাবে ইসরায়েলও লঙ্ঘন করেছে।’
এর আগে, সোমবার (২৩ জুন) সামাজিকমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দুইদেশের সংঘাতকে ‘১২ দিনের যুদ্ধ’ দাবি করে বলেন, ‘ইরান ও ইসরায়েল সম্পূর্ণ ও পুরোপুরি যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে।’
যুদ্ধবিরতির প্রাথমিক ঘোষণায় তিনি বলেছিলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া ঘোষণার প্রায় ছয় ঘণ্টা পর যুদ্ধবিরতি শুরু হবে, সে অনুযায়ী যুদ্ধবিরতির সময় আনুমানিক রাত ১২টা (ইস্টার্ন টাইম)।
তবে, ইরান-ইসরায়েল দুইদেশই একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ করেছে।
এ দিন, ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত্ব সংবাদ সংস্থা ইরনার তথ্য মতে, রাজধানী তেহরানের নিকটবর্তী কারাজ শহরে ইসরায়েলের ক্ষেপনাস্ত্র হামলায় ইরানের অভিজাত বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) দুই জেনারেলসহ বাহিনীটির মোট ৭ জন নিহত হয়েছেন।
এদিকে, ইরানের উত্তরাঞ্চলীয় কাস্পিয়ান সাগরতীরবর্তী গিলান প্রদেশে ইসরায়েলি হামলায় ৯ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। প্রদেশের এক উপ-গভর্নরের বরাতে দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম এ তথ্য জানিয়েছে।
যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে ইরানে হামলায় চালিয়েছে ইসরায়েল। মঙ্গলবার (২৪ জুন) রাজধানী তেহরানের নিকটবর্তী কারাজ শহরে এ হামলায় চালানো হয়।
ইরানের রাষ্ট্রাত্ত্ব সংবাদ সংস্থা ইরনার তথ্য মতে, এ দিন ইসরায়েলের ক্ষেপনাস্ত্র হামলায় ইরানের অভিজাত বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) দুই জেনারেলসহ বাহিনীটির মোট ৭ জন নিহত হয়েছেন।
এর আগে, ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ বিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে আবারও হামলা শুরুর নির্দেশ দেন ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরাইল কাটজ। আজ (মঙ্গলবার) সকালে তিনি বলেন, ‘তেহরানের কেন্দ্রবিন্দুতে বিভিন্ন নিশানায় তীব্র হামলা চালাতে সামরিক বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’
এদিকে, ইরানের উত্তরাঞ্চলীয় কাস্পিয়ান সাগরতীরবর্তী গিলান প্রদেশে ইসরায়েলি হামলায় ৯ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। প্রদেশের এক উপ-গভর্নরের বরাতে দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম এ তথ্য জানিয়েছে।
তবে হামলার নির্দিষ্ট সময় ও স্থান সম্পর্কে বিস্তারিত জানায়নি দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম। ইসরায়েলি সশস্ত্র বাহিনী (আইডিএফ) অভিযোগ করে, ‘যুদ্ধবিরতির মারাত্মক লঙ্ঘন করেছে ইরানি সরকার। আমরা তার জোরালো জবাব দেব।’
তবে, যুদ্ধবিরতির পর ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের কথা অস্বীকার করেছে ইরান। তবে ফের ইসরায়েল আগ্রাসন চালালে, চূড়ান্ত, দৃঢ় ও যথাযথ জবাব দেওয়া হবে বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে ইরানের সুপ্রিম ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিল।
এর আগে, সোমবার (২৩ জুন) সামাজিকমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দুইদেশের সংঘাতকে ‘১২ দিনের যুদ্ধ’ দাবি করে বলেন, ‘ইরান ও ইসরায়েল সম্পূর্ণ ও পুরোপুরি যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে।’
যুদ্ধবিরতির আলোচনা চলার মধ্যেই ইসরায়েলে ফের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছিল ইরান। দক্ষিণ ইসরায়েলের বেয়ার শেভা শহরের একটি আবাসিক ভবনে তেহরানের ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে চারজন নিহত হয়েছেন।
এ বিষয়ে, ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানায়, ইরান থেকে ইসরায়েলের দিকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করেছে তারা এবং বাসিন্দাদের আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
ইরান যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে অভিযোগ তুলে তার জোরালো জবাব দিতে সামরিক বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়ার কথা জানিয়েছেন ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরাইল কাটজ।
মঙ্গলবার (২৪ জুন) তিনি বলেন, ‘তেহরানের কেন্দ্রবিন্দুতে বিভিন্ন নিশানায় তীব্র হামলা চালাতে সামরিক বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’
ইসরায়েলি সশস্ত্র বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, ‘যুদ্ধবিরতির মারাত্মক লঙ্ঘন করেছে ইরানি সরকার। আমরা তার জোরালো জবাব দেব।’
যুদ্ধবিরতির পর ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের কথা অস্বীকার করেছে ইরান। তবে ফের যদি ইসরায়েল কোনো আগ্রাসন চালায়, তাহলে চূড়ান্ত, দৃঢ় ও যথাযথ জবাব দেওয়া হবে বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে ইরানের সুপ্রিম ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিল।
এ সময়ে সচেতনতা, সহনশীলতা ও ঐক্যবদ্ধ থাকার জন্য ইরানের জনগণের প্রশংসা করা হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, ইরানীয়দের অবিচল সংকল্প, কৌশলগত ধৈর্য, অবমাননা কিংবা একতরফা অবমাননা মেনে নিতে অস্বীকৃতি থেকে সরিয়ে আনতে পারেনি শত্রুরা।
মন্তব্য