ইরান সফরে যাওয়া হামাসের প্রধান ইসমাইল হানিয়াকে বুধবার ভোরে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
বার্তা সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়, হানিয়ার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে ফিলিস্তিনের গাজার শাসক দল হামাস বলেছে, রাজনৈতিক ব্যুরোর প্রধানের ওপর হামলাটি ছিল ‘মারাত্মক তীব্রতা বৃদ্ধি’। হামলার উদ্দেশ্য পূরণ হবে না।
ইরানের বিপ্লবী গার্ডও হানিয়ার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছে, ঘটনার তদন্ত চলছে।
দেশটির নতুন প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে প্রাণঘাতী হামলার শিকার হন হানিয়া।
হামাসের প্রধান নিহত হওয়ার বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেনি ইসরায়েলের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দপ্তর হোয়াইট হাউসও এ বিষয়ে রয়টার্সের কাছে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
ইসরায়েলের দখলকৃত গোলান উপত্যকায় প্রাণঘাতী হামলার জন্য দায়ী মনে করা হিজবুল্লাহ কমান্ডারকে হত্যার ইসরায়েলি দাবির ২৪ ঘণ্টার কম সময়ে হানিয়া নিহত হওয়ার খবরটি এলো।
এমন বাস্তবতায় গাজায় শিগগিরই কোনো যুদ্ধবিরতি চুক্তির সম্ভাবনা নষ্ট হয়ে গেল বলে মনে করা হচ্ছে।
‘ইসরায়েলি দখলদার কর্তৃক হানিয়া ভাইকে এ গুপ্তহত্যা গুরুতর তীব্রতা বৃদ্ধি, যার উদ্দেশ্য হামাসের ইচ্ছাশক্তি গুঁড়িয়ে দেয়া’, রয়টার্সকে বলেন হামাসের জ্যেষ্ঠ নেতা সামি আবু জুহরি।
হামাস একই পথে চলা অব্যাহত রাখবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা বিজয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী।’
আরও পড়ুন:বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্ব গ্রহণ করায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে অভিনন্দন জানিয়েছেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) প্রেসিডেন্ট শেখ মোহাম্মেদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের বরাত দিয়ে বাসস জানায়, বুধবার টেলিফোনে আলাপকালে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস এবং অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশকে সমৃদ্ধির দিকে নিয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন শেখ মোহাম্মেদ।
বার্তা সংস্থাটির খবরে উল্লেখ করা হয়, অধ্যাপক ইউনূস অভিনন্দন জানানোর জন্য ইউএই প্রেসিডেন্টকে ধন্যবাদ জানান। একই সঙ্গে উপসাগরীয় দেশটিকে পৃথিবীর অন্যতম সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করার জন্য মোহাম্মেদের দূরদৃষ্টিসম্পন্ন নেতৃত্বের প্রশংসা করেন।
অধ্যাপক ইউনূস বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় বাংলাদেশের পাশের দাঁড়ানোর জন্য ইউএইকে ভালো বন্ধু হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, উপসাগরীয় দেশটিতে বাংলাদেশের লাখ লাখ মানুষ কর্মরত। দেশটি বাংলাদেশের প্রবাসী আয়ের গুরুত্বপূর্ণ উৎস।
দুই নেতা কর্মসংস্থান, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণসহ দ্বিপক্ষীয় স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়েও মতবিনিময় করেন।
জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা ইউনেসকোর বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় নতুন করে স্থান করে নিয়েছে সৌদি আরবের প্রত্নতত্ত্ব সমৃদ্ধ অঞ্চল আল-ফাও।
নতুন অঞ্চলের মধ্য দিয়ে দেশটিতে ইউনেসকো স্বীকৃত বিশ্ব ঐতিহ্যের সংখ্যা দাঁড়াল আটটি।
সৌদি আরবের ঐতিহ্য ও প্রাচীন ইতিহাস পশ্চিম ও পূর্বাঞ্চলের সংস্কৃতির এক অসাধারণ মেলবন্ধন। বাণিজ্যপথ হিসেবে বরাবরই এ অঞ্চলটি যথেষ্ট গুরুত্ব বহন করে এসেছে। মানুষের হাজার বছরের আবাস রয়েছে এ প্রাচীন ভূমিতে।
সৌদির বিভিন্ন অঞ্চলে প্রাচীন সভ্যতা সমৃদ্ধি লাভ করেছে, যার অনেক কিছুই এখনও অজানা। ওই অঞ্চলের বিশেষত্ব হলো সেটি এখনও অতীত দিয়ে অনেকটাই প্রভাবিত।
প্রত্নতত্ত্ব সমৃদ্ধ আল-ফাও অঞ্চল
আল-ফাও প্রত্নতাত্ত্বিক এলাকা ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক দিক থেকে অত্যন্ত সমৃদ্ধ। আবিষ্কারের অপেক্ষায় রহস্যঘেরা কারইয়াত আল-ফাউ শহরের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে সেখানে। সৌদির কেন্দ্রস্থল আল-ফাও পঞ্চম শতাব্দীতে এসে রহস্যজনকভাবে পরিত্যক্ত হয়।
সৌদি আরবের সমৃদ্ধ ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির এক অসাধারণ ঐতিহাসিক নিদর্শন আল-ফাও। এখানে প্রায় ১২ হাজার প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন পাওয়া গেছে, যা প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে শেষ প্রাক-ইসলামিক যুগ পর্যন্ত বিস্তৃত। এসব নিদর্শন প্রমাণ করে ছয় যে, হাজার বছরেরও বেশি সময় ধরে অন্তত তিনটি ভিন্ন জনগোষ্ঠীর বসতি ছিল।
যেভাবে যাওয়া যাবে আল-ফাও এলাকায়
আল ফাও প্রত্নতাত্ত্বিক অঞ্চল সৌদির রাজধানী রিয়াদ থেকে প্রায় ৬৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত। এটি ওয়াদি আল-ডাওয়াসির থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দক্ষিণে, এম্পটি কোয়ার্টারের উত্তর-পশ্চিমে এবং টুওয়াইক পর্বতমালার কাছে অবস্থিত।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং প্রত্নতাত্ত্বিক ঐতিহ্যে আল-ফাও দর্শনীয় স্থান। আল-ফাওয়ের ধ্বংসাবশেষের মধ্যে প্রাচীন বাণিজ্য কেন্দ্রের জীবনযাপনের ছোঁয়া রয়েছে। এর সৌন্দর্য কালের স্রোতে অপরিবর্তিত থেকে গেছে।
ভ্রমণপিপাসুরা সেখানে প্রতি পদক্ষেপেই ইতিহাস আর ঐতিহ্যকে আবিষ্কার করতে পারবেন, যা ভ্রমণ অভিজ্ঞতাকে আরও সমৃদ্ধ করবে।
প্রত্যন্ত অঞ্চলে অবস্থিত হওয়ায় আল-ফাও এলাকা সংরক্ষণ ছিল যথেষ্ট দুরূহ। বর্তমানে যোগাযোগ ব্যবস্থার অত্যন্ত উন্নতির ফলে সহজেই পর্যটকরা তা ঘুরে আসতে পারবেন। একসময় সেখানে উট বা ঘোড়া ছাড়া যাওয়ার চিন্তাও করা যেত না।
রিয়াদ এবং জেদ্দা থেকে নাজরান বিমানবন্দরে নিয়মিত ফ্লাইট চলে। সড়কপথে নাজরান থেকে আল-ফাওয়ের দূরত্ব দুই ঘণ্টার। সৌদিয়া, ফ্লাইনাস ও ফ্লাইআইডিলের মতো বিমান সংস্থা নিয়মিত তাদের ফ্লাইট পরিচালনা করে।
নাজরান থেকে আপনি একটি গাড়ি ভাড়া করতে পারেন অথবা আল-ফাওয়ের একটি ট্যাক্সি নিতে পারেন। আল-ওয়েফাক রেন্ট-এ-কার এবং লুমিরেন্টাল থেকেও আপনি গাড়ি ভাড়া করতে পারবেন।
থাকবেন কোথায়
আল-ফাওয়ের কাছে থাকার জন্য পাওয়া যাবে বেশ কিছু গেস্টহাউজ, যেগুলোতে স্থানীয় ঐতিহ্য, খাবার ও সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত হতে পারবেন। আর যদি রিয়াদে থাকেন তবে, সে সুযোগে সৌদি রাজধানী এবং এর আশেপাশের এলাকা ঘুরে দেখতে পারেন।
‘দ্য সিটি অফ আর্থ’ নামে পরিচিত দিরিয়াহ ১৭২৭ সালে সৌদি রাজ্যের জন্মস্থান হিসেবে খ্যাত। এখানে আত তুরাইফের ইউনেসকো স্বীকৃত বিশ্ব ঐতিহ্যে তালিকাভুক্ত স্থান রয়েছে, যা সৌদি সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
অত্যাধুনিক বুজাইরি টেরাসে বিভিন্ন দেশের রেস্তোরাঁ রয়েছে। চার তারকা রেস্তোরাঁগুলোতে সৌদি খাবারের স্বাদ নিতে পারবেন সহজেই।
স্থানীয় ক্যাফেগুলোতে সৌদি কফির প্রকৃত স্বাদ উপভোগ করতে ভুলবেন না।
রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা নিতে চাইলে ‘দ্য এজ অফ দ্য ওয়ার্ল্ড’-এর শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানে বেড়িয়ে পড়তে পারেন। গাড়িতে গেলে এটি রাজধানী শহর থেকে খুব বেশি দূরে নয়।
রাজধানী রিয়াদে পছন্দসই বাজেটে নানা রকম ট্যুর প্যাকেজ ও আবাসিক হোটেলে থাকতে পারবেন। এখানে বিলাসবহুল থাকার ব্যবস্থাও রয়েছে।
রিটজ-কার্লটন রিয়াদ, কিংডম সেন্টারের ফোর সিজন হোটেল রিয়াদ, র্যাডিসন ব্লুসহ আরও অনেক হোটেল রয়েছে, যেখানে একা কিংবা পরিবার নিয়ে নিরাপদে থাকা যাবে।
সহজ অনলাইন ই-ভিসা ব্যবস্থা
কিছুদিন আগেও সৌদি ভ্রমণ খুব সহজ ছিল না। এখন ৬৬টি দেশের নাগরিক ই-ভিসার মাধ্যমে অনলাইনে আবেদন করে দ্রুত ও সহজে ভিসা পেতে যান। জি-সি-সিভুক্ত দেশ, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র বা শেনজেন ভিসাধারী এবং যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র বা ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাসিন্দারা তাৎক্ষণিক ই-ভিসা পেতে পারেন।
ভ্রমণের সময় যেকোনো সমস্যায়, ‘ভিজিট সৌদি’ ট্যুরিস্ট হেল্পলাইন ৯৩০ থাকবে আপনার পাশে।
আরও পড়ুন:ইরানে ইসমাইল হানিয়া খুন হওয়ার পর নতুন নেতার নাম ঘোষণা করেছে ফিলিস্তিনের গাজার শাসক দল হামাস।
উপত্যকায় হামাসের দায়িত্বে থাকা ইয়াহইয়া সিনওয়ারকে রাজনৈতিক ব্যুরোর প্রধান করা হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রতিরোধ আন্দোলনটি।
আল জাজিরা জানায়, গত ৩১ জুলাই হানিয়া নিহত হওযার পর মঙ্গলবার নতুন নেতা নির্বাচনের কথা জানায় হামাস।
৬১ বছর বয়সী সিনওয়ারকে গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে ঢুকে হামাসের সামরিক শাখা কাসাম ব্রিগেডের হামলার নেপথ্যের ব্যক্তি হিসেবে দেখে ইসরায়েল।
ওই হামলায় এক হাজার এক শর বেশি ইসরায়েলি নিহত হয়। হামাস যোদ্ধারা ওই দিন দুই শতাধিক ইসরায়েলিকে জিম্মি করেন।
হামাসের হামলার জবাবে একই দিনে গাজায় নজিরবিহীন আক্রমণ শুরু করে ইসরায়েল।
সামরিকভাবে বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী দেশটির প্রায় নিরবচ্ছিন্ন হামলায় এখন পর্যন্ত প্রায় ৪০ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়, যাদের বিশাল অংশ নারী ও শিশু।
ইসরায়েলি হামলায় বাস্তুচ্যুত হয়েছে গাজার ২৩ লাখ বাসিন্দার প্রায় সবাই। একই সঙ্গে এ অভিযান উপত্যকায় ব্যাপক ক্ষুধার পাশাপাশি মানবসৃষ্ট অনেক দুর্যোগ নিয়ে এসেছে।
আরও পড়ুন:ইরানে হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর প্রধান ইসমাইল হানিয়াকে হত্যার পর তেহরান ও তার মিত্র সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর বদলার হুমকির মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যে নৌবাহিনীর আরও রণতরি এবং যুদ্ধবিমান মোতায়েন করা হবে বলে শুক্রবার জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
আমেরিকার প্রতিরক্ষা সদরদপ্তর পেন্টাগনের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানায় রয়টার্স।
বার্তা সংস্থাটির খবরে বলা হয়, হামাসের প্রধান হত্যার পর ইরানের পাল্টা হামলার জন্য প্রস্তুত রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপে আরও নেভি ক্রুজার ও ডেস্ট্রয়ার মোতায়েনের অনুমোদন দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন, যেগুলো ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করতে পারবে। এ ছাড়া মধ্যপ্রাচ্যে আরও যুদ্ধবিমান পাঠাচ্ছে দেশটি।
পেন্টাগনের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ভূমিভিত্তিক আরও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মোতায়েনে তৎপরতা বাড়াবে যুক্তরাষ্ট্র।
গত ১৩ এপ্রিল ইসরায়েলি ভূখণ্ডে ইরানের ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার আগেও একইভাবে সামরিক প্রস্তুতি জোরদার করেছিল আমেরিকা।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের বর্ধিত প্রস্তুতির মধ্যেও ইসরায়েলের জন্য অনন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে লেবাননভিত্তিক হিজবুল্লাহ। ইসরায়েল সীমান্তের কাছে অবস্থান নেয়া সংগঠনটির হাতে আছে ব্যাপক অস্ত্র।
আরও পড়ুন:ইরানের রাজধানী তেহরানে বুধবার ফিলিস্তিনের গাজার শাসক দল হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর প্রধান ইসমাইল হানিয়াকে হত্যার ঘটনায় ইসরায়েলকে শাস্তি দেয়া হবে বলে জাতিসংঘকে জানিয়েছে ইসলামি প্রজাতন্ত্রটি।
হানিয়া হত্যার পরের দিন বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে ফোনালাপে ইরানের অন্তর্বর্তীকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাঘেরি কানি এ বার্তা দেন বলে জানায় প্রেস টিভি।
বাঘেরির বরাত দিয়ে ইরানের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যমটির খবরে বলা হয়, ইসরায়েল কর্তৃক হানিয়াকে হত্যার পর আত্মরক্ষার সহজাত অধিকার এবং পাল্টা ব্যবস্থা নেয়ার সহজাত অধিকার আছে ইরানের।
‘তেহরানে জায়নবাদী (ইসরায়েল) সরকার কর্তৃক ইসমাইল হানিয়াকে গুপ্তহত্যার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড শুধু ইসলামি প্রজাতন্ত্রের আঞ্চলিক অখণ্ডতা ও জাতীয় সার্বভৌমত্বই লঙ্ঘন করেনি, এটি একই সঙ্গে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক শান্তি ও স্থিতিশীলতাকে বিপন্ন করেছে’, গুতেরেসকে ফোনে বলেন বাঘেরি।
‘অপরাধী জায়নবাদীদের শাস্তি দিতে আত্মরক্ষা এবং বিপরীত ব্যবস্থা নেয়ার সহজাত অধিকার পরিহার করবে না ইরান’, যোগ করেন ইরানের অন্তর্বর্তীকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
জাতিসংঘের মহাসচিবের সঙ্গে আলাপ করা ইরানের শীর্ষ কূটনীতিক ইসরায়েলের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড মোকাবিলায় ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের জরুরি বৈঠক আয়োজনের ওপরও গুরুত্ব দেন।
আরও পড়ুন:ফিলিস্তিনের গাজার শাসক দল হামাসের প্রধান ইসমাইল হানিয়াকে ‘প্রিয় অতিথি’ আখ্যা দিয়ে তার হত্যার বদলা নেয়ার বিষয়ে ইসরায়েলকে বুধবার সতর্ক করে দিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি।
দেশটির রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম প্রেস টিভি অনলাইনের প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েল সরকারকে ‘কঠোর জবাব’ দেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে আয়াতুল্লাহ বলেন, ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলনের নেতার রক্তের বদলা নেয়া ইসলামি প্রজাতন্ত্রের দায়িত্ব।
ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে দেশটির রাজধানী তেহরানে এসে বুধবার ভোরে হামলায় নিহত হন ইসমাইল হানিয়া।
হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর প্রধানের নিহত হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর ইসরায়েলকে হুঁশিয়ারি দেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা।
‘অপরাধী ও সন্ত্রাসী জায়নবাদী (ইসরায়েল) সরকার আমাদের মাতৃভূমিতে প্রিয় অতিথিকে শহিদ করে আমাদের শোকাহত করেছে, তবে এটি (ইসরায়েল) একই সঙ্গে তার কঠোর শাস্তির ভিত্তি তৈরি করেছে’, বলেন খামেনি।
ইসরায়েলের দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে দীর্ঘকাল হানিয়ার সংগ্রামের প্রশংসা করে আয়াতুল্লাহ বলেন, শাহাদাত বরণের জন্য প্রস্তুত ছিলেন হামাসের প্রধান, যিনি এ পথে নিজের সন্তান ও পরিবারকে উৎসর্গ করেছেন।
ওই সময় মুসলিম উম্মাহ, প্রতিরোধ অক্ষ, ফিলিস্তিনের জনগণ, হানিয়ার পরিবার এবং হামাসের প্রধানের সঙ্গে নিহত তার এক সঙ্গীর প্রতি শোক প্রকাশ করেন খামেনি।
আরও পড়ুন:ফিলিস্তিনিদের সহায়তার লক্ষ্যে তুরস্ক ইসরায়েলে প্রবেশ করতে চায় বলে রোববার জানিয়েছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান।
নিজ এলাকা রিজেতে ক্ষমতাসীন একে পার্টির এক বৈঠকে এরদোয়ান এ কথা জানান বলে উল্লেখ করেছে রয়টার্স।
বার্তা সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়, লিবিয়া ও নাগোরনো-কারাবাখের সংঘাতে তুরস্ক যেভাবে প্রবেশ করেছিল, ইসরায়েলেও সেভাবে ঢুকতে চান বলে জানান এরদোয়ান, তবে দেশটিতে কী ধরনের হস্তক্ষেপ করতে চান, সে বিষয়ে কিছু স্পষ্ট করেননি তিনি।
গাজায় ৯ মাসের বেশি সময় ধরে চালানো ইসরায়েলের হামলার কট্টর সমালোচক এরদোয়ান।
নিজ দেশের প্রতিরক্ষা শিল্পের প্রশংসা করতে গিয়ে তিনি গাজায় যুদ্ধ নিয়ে কথা বলেন।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই অনেক বেশি শক্তিশালী হতে হবে, যাতে করে ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে এমন হাস্যকর বিষয়গুলো করতে না পারে ইসরায়েল। যেভাবে আমরা কারাবাখে প্রবেশ করেছিলাম, যেভাবে আমরা লিবিয়ায় প্রবেশ করেছিলাম, তাদের ক্ষেত্রেও আমরা একই কাজ করতে পারি।’
টেলিভিশনে দেয়া ওই বক্তব্যে এরদোয়ান আরও বলেন, ‘আমাদের এমনটা (ইসরায়েলে প্রবেশ) করতে না পারার কোনো কারণ নেই…আমাদের অবশ্যই শক্তিশালী হতে হবে, যাতে করে আমরা এসব পদক্ষেপ নিতে পারি।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য