চলতি বছরের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। আর সেই ভোটকে সামনে রেখে প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্কে অংশ নিতে যাচ্ছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
বৃহস্পতিবার আটলান্টায় অনুষ্ঠেয় বিতর্কটি এবারের নির্বাচনে জয়ের ক্ষেত্রে উভয় প্রার্থীর জন্যই সম্ভাব্য বিপদ বা সুবর্ণ সুযোগ তৈরি করে দিতে পারে।
এক বিশ্লেষণে এমনটা দাবি করেছে এনবিসি নিউজ। তারা বলছে, এই বিতর্ক দুই দলের সমর্থক-ভোটারদের বাইরে ক্ষুদ্র পরিমাণ নিরপেক্ষ ভোটারের ওপর কীরকম প্রভাব ফেলবে তার ওপরই অনেকটা নির্ভর করতে পারে এবারের নির্বাচনে জয়-পরাজয়ের বিষয়টি।
বৃহস্পতিবারের বিতর্কের নিয়মকানুন ভোটারদের সামনে তাদের পারফরম্যান্সকে কীভাবে তুলে ধরছে সেটিও একটি লক্ষণীয় ব্যাপার হবে।
এর আগে ২০২০ সালেও জো বাইডেন ও ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্কে অংশ নেন। ওই নির্বাচনি বিতর্কের প্রথমটিতে উভয় পক্ষের মধ্যে বেশ উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ওই নির্বাচনের পরবর্তী বিতর্কটিতে প্রত্যেক প্রার্থী দুই মিনিট করে নিজের বক্তব্য দেয়ার পর অন্য প্রার্থী কথা বলার সময় তার মাইক্রোফোন বন্ধ করে রাখা হয়। উদ্দেশ্য, কেউ কথা বলার সময় যেন অপরজন বাধা সৃষ্টি করতে না পারেন এবং সম্ভাব্য বিশৃঙ্খলা এড়ানো সম্ভব হয়।
এবারের প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্কেও এই নিয়ম বলবৎ থাকার বিষয়টি কতটুকু প্রভাব ফেলবে তাও দেখার বিষয়।
তবে সবকিছুর চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্ক ভোটারদেরকে নির্বাচনে লড়াই করা প্রার্থীদের সম্পর্কে আরও গভীরভাবে জানার সুযোগ করে দেয় এবং যেসব ভোটার সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগে থাকেন তাদেরকে একটি সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে সহায়তা করে থাকে।
এনবিসির দৃষ্টিতে এবারের প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্ক যে পাঁচটি কারণে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে সেগুলো হলো:
১. উত্তেজিত নাকি শান্ত- কোন ট্রাম্পকে দেখা যাবে বিতর্কের মঞ্চে?
২০২০ সালের প্রথম নির্বাচনি বিতর্কে বিধ্বংসী রূপে দেখা দিয়েছিলেন ট্রাম্প। এই নির্বাচনের বিতর্কের আগেও সেজন্য একটি প্রশ্নটিই সবার মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে- এবারও কি একই রূপে দেখা দেবেন ট্রাম্প?
আগের দফায় ট্রাম্পের মিত্ররা দ্বিতীয় বিতর্কে তাকে আরও সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানান এবং তিনি তা করতে সমর্থও হন।
বৃহস্পতিবার আটলান্টায় অনুষ্ঠিতব্য এবারের প্রথম নির্বাচনি বিতর্কেও ট্রাম্পকে তার দলের অভ্যন্তর থেকে সংযত হওয়ার জন্যই বলা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
রিপাবলিকান পার্টির সদস্যদের ধারণা, বেশিক্ষণ ধরে বাইডেনকে কথা বলার সুযোগ দিলেই তার দুর্বলতার দিকটি দর্শকদের সামনে স্পষ্ট হয়ে উঠবে এবং বাইডেন যে আরও এক মেয়াদ ক্ষমতায় থাকার জন্য উপযুক্ত নন সেটিও বুঝতে পারবেন ভোটাররা।
ট্রাম্পের উপদেষ্টারা তাকে বাইডেনকে অর্থনীতি ও সীমান্ত সংক্রান্ত বিষয়ে বিতর্কে আক্রমণের উপদেশও দিয়েছেন।
২. বাইডেন কি নিজেকে উপযুক্ত প্রমাণ করতে পারবেন?
বাইডেনের শীর্ষ সহযোগীরা বিশ্বাস করেন যে, সন্দেহপ্রবণ ভোটারদের কাছে আরও চার বছর নিজেকে দেশ চালানোর উপযুক্ত হিসেবে প্রমাণ করতে বৃহস্পতিবার বাইডেনকে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে।
ফক্স নিউজের সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা গেছে, মাত্র ৪৩ শতাংশ ভোটার বাইডেনকে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালনের জন্য শক্তসমর্থ মনে করেন। অন্যদিকে ট্রাম্পের পক্ষে এক্ষেত্রে সমর্থনের হার ৫৩ শতাংশ।
৩. সাম্প্রতিক মামলার বিষয়ে প্রশ্নে ট্রাম্প কেমন প্রতিক্রিয়া দেখাবেন?
ট্রাম্প সম্প্রতি হাশ মানি মামলায় তার বিরুদ্ধে আনীত ৩৪টি অভিযোগের সবক’টিতেই দোষী সাব্যস্ত হন। এরপর প্রথমবারের মতো ট্রাম্পকে ‘দণ্ডপ্রাপ্ত অপরাধী’ হিসেবে উল্লেখ করে সরাসরি তার বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক বক্তব্য দেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। এই ইস্যুর ওপর জোর দিয়েই ট্রাম্প যে ক্ষমতায় আসার যোগ্য নন- বিতর্কে বাইডেনকে এটি প্রমাণ করার তাগিদ দিয়েছেন দলীয় নেতাকর্মীরা।
বিতর্কে বাইডেন এমন অবস্থান নিলে ট্রাম্প এর বিপরীতে কেমন প্রতিক্রিয়া দেখাবেন সেটি নিয়ে ভোটারদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে।
৪. মুদ্রাস্ফীতি সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাব বাইডেন কীভাবে দেবেন?
ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় দেশে চরম মুদ্রাস্ফীতি পুনরায় নির্বাচনে অংশগ্রহণের আগে বাইডেনের অবস্থানকে যে দুর্বল করে তুলেছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। ২০২১ সালের পর মুদ্রাস্ফীতির হার সবচেয়ে কম হিসেবে ৩ দশমিক ৩ শতাংশ হলেও অনেকেই মনে করছেন যে দ্রব্যমূল্য এখনও অনেক বেশি।
এ সংক্রান্ত বিষয়ে বিভিন্ন র্যালি ও জনসভায় বাইডেন স্বীকার করেছেন যে মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধি জনসাধারণের জীবনযাপনের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে। একইসঙ্গে তিনি বলেছেন যে আগের চেয়ে অবস্থার উন্নতি হচ্ছে।
সাম্প্রতিক কিছু জরিপে দেখা গেছে, মাত্র ৩৯ শতাংশ ভোটার বাইডেনের পক্ষে মত দিলেও ৬৩ শতাংশ ভোটার বলছেন যে, তাদের পারিবারিক আয়ের চেয়ে জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ট্রাম্প বিভিন্ন নির্বাচনি প্রচারণায় দেশের অর্থনীতিকে আবারও সচল করার জন্য বেশ কিছু প্রস্তাব তুলে ধরেছেন।
বাইডেনও তার নির্বাচনি প্রচারণায় বলেছেন যে, দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় এলে দ্রব্যমূল্য কমানোর জন্য নীতি প্রণয়ন করবেন তিনি।
প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্কে উভয় প্রার্থীকেই অর্থনীতি ও মূল্যস্ফীতি সংক্রান্ত প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হবে। কিন্তু নিজের শাসনামলে ব্যাপক মুদ্রাস্ফীতি সংক্রান্ত প্রশ্নের মুখোমুখি হলে বাইডেন কীভাবে তা সামাল দেবেন সেটিই দেখার বিষয়।
৫. গর্ভপাত অধিকারের বিষয়ে ট্রাম্পের বক্তব্য কী হবে?
এবারের নির্বাচনে অন্যতম এক্স ফ্যাক্টর হতে যাচ্ছে গর্ভপাতের অধিকারের বিষয়টি। জরিপে দেখা গেছে, গুরুত্বপূর্ণ স্বতন্ত্র ভোটাররা ছাড়াও গর্ভপাতের অধিকারের বিষয়টিকে সমর্থন করেন বেশিরভাগ আমেরিকান নাগরিক।
গর্ভপাতের বিষয়ে ট্রাম্পের বক্তব্য হলো, এর অধিকার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা রাজ্যগুলোর হাতে ছেড়ে দেয়া উচিত। পুনরায় নির্বাচিত হলে ট্রাম্প তার এই অবস্থান ধরে না-ও রাখতে পারেন- ভোটারদেরকে বার বার এটি বোঝাতে চাইছেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। তিনি আরও বলেছেন, গর্ভপাতের অধিকারের ওপর ফেডারেল নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারেন ট্রাম্প।
নির্বাচনি বিতর্কে এই ইস্যুটি উঠলে ট্রাম্প কীভাবে এ সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাব দেন তা-ও নজরে থাকবে সবার।
আরও পড়ুন:ইউক্রেনে তিন বছর ধরে চলা সংঘাত বন্ধে সৌদি আরবে সোমবার অনুষ্ঠেয় আলোচনায় কিছুটা অগ্রগতি হবে বলে আশা প্রকাশ করছেন রাশিয়ার একজন আলোচক।
তিনি রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমকে বলেন, এ বৈঠকের আগে যুক্তরাষ্ট্র পৃথকভাবে ইউক্রেন ও রাশিয়ার উভয়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।
মস্কো থেকে এএফপি এ খবর জানায়।
বার্তা সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের প্রস্তাবিত পূর্ণ ও নিঃশর্ত ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতি প্রত্যাখ্যান করেছে মস্কো। এর পরিবর্তে রাশিয়া শুধু জ্বালানি অবকাঠামোর ওপর বিমান হামলা বন্ধের প্রস্তাব দিয়েছে।
সেই প্রস্তাব সত্ত্বেও উভয় পক্ষই আলোচনার আগে বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। শুক্রবার রাতে দক্ষিণ ইউক্রেনের জাপোরিঝিয়া শহরে রাশিয়ার হামলায় একটি পরিবারের তিনজন নিহত হয়, যা ইউক্রেনীয় কর্মকর্তাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।
ইউক্রেনের জরুরি পরিষেবা রবিবার ভোরে জানায়, রাশিয়া কিয়েভে ড্রোন হামলা চালিয়েছে। এগুলো ভবনগুলোতে আঘাত করেছে এবং আগুন লেগে কমপক্ষে দুইজন নিহত হয়েছে।
কিয়েভের মেয়র ভিটালি ক্লিটসকো বলেন, শত্রুদের বিশাল আক্রমণে শহরের বেশ কয়েকটি জেলায় ধ্বংসাবশেষ পড়ে আছে এবং সাতজন আহত হয়েছেন।
সৌদি আরবে সোমবার ইউক্রেনীয় ও রুশ প্রতিনিধিদের সঙ্গে আমেরিকান আলোচকরা আলাদাভাবে বৈঠক করবেন, যাকে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত কিথ কেলগ হোটেলকক্ষের মধ্যে ’শাটল কূটনীতি’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
রুশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন রাশিয়ার সিনেটর গ্রেগরি কারাসিন।
তিনি বলেন, ‘আমরা অন্তত কিছুটা অগ্রগতি আশা করছি।"
আরও পড়ুন:ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা শিন বেতের প্রধান রোনেন বারকে শুক্রবার বরখাস্ত করা হয়েছে।
বরখাস্ত করার কয়েক দিন আগে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলাকে ঘিরে রোনেন বারের ব্যর্থতা এবং বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেছিলেন, তাকে আর বিশ্বাস করা যায় না।
জেরুজালেম থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।
ইসরায়েল সরকারের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আইএসএ পরিচালক রোনেন বারকে বরখাস্তে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়েছে।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, রোনেন বারের উত্তরসূরি নিযুক্ত হওয়ার পর অথবা ১০ এপ্রিলের মধ্যে তিনি পদত্যাগ করবেন।
এর আগে গত রবিবার নেতানিয়াহু বলেন, তার ওপর আস্থার অভাব রয়েছে। তাকে এ পদে রাখা যাবে না। তাই বারকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বার ১৯৯৩ সালে শিন বেতে যোগ দিয়েছিলেন।
বারের মেয়াদ আগামী বছর শেষ হওয়ার কথা ছিল। ২০২১ সালের অক্টোবরে পূর্ববর্তী ইসরায়েলি সরকার শিন বেতের প্রধান হিসেবে তাকে নিযুক্ত করেছিল। কিন্তু নেতানিয়াহুর সরকার এক বছর আগেই তাকে পদ থেকে বরখাস্ত করল।
ইসরায়েলে হামাসের হামলা চালানোর আগে থেকেই রোনেন বারের সঙ্গে নেতানিয়াহুর সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছিল। গত ৪ মার্চ হামাসের হামলার ওপর শিন বেতের অভ্যন্তরীণ প্রতিবেদন প্রকাশের পর সম্পর্কের আরও অবনতি ঘটে।
আরও পড়ুন:মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) নির্দেশে ফিলিপাইনের সাবেক প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতার্তেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ম্যানিলার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে মঙ্গলবার তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
ফিলিপাইন সরকার তাকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে।
দেশটির প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোসের কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, হংকং থেকে দেশে আসার পর আইসিসির নির্দেশে পুলিশ দুতার্তেকে গ্রেপ্তার করেছে। অবৈধ মাদকের বিরুদ্ধে সাবেক এ প্রেসিডেন্টের চালানো অভিযানে ব্যাপক হত্যাকাণ্ডের তদন্ত চলছে।
আইসিসি দুতার্তের শাসনামলে মাদক নির্মূলের নামে চালানো অভিযানে হত্যাকাণ্ডগুলোকে সম্ভাব্য মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে তদন্ত করছে। এর মধ্যে ২০১১ সালের ১ নভেম্বর থেকে ২০১৯ সালের ১৬ মার্চ পর্যন্ত দেশটির প্রেসিডেন্ট ও দক্ষিণাঞ্চলের শহর দাভাওয়ের মেয়র থাকার সময় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, হত্যাকাণ্ডের দায় এড়াতে ২০১৯ সালে ফিলিপাইনকে রোম সংবিধি থেকে প্রত্যাহার করে নেন দুতার্তে।
দুতার্তে প্রশাসন ২০২১ সালের শেষের দিকে আন্তর্জাতিক আদালতের তদন্ত স্থগিত করার পদক্ষেপ নিয়েছিল। আইসিসির আদালত হলো সর্বশেষ অবলম্বন।
আইসিসির আর বিচার করার এখতিয়ার নেই—এমন যুক্তি দিয়ে সে সময় তার প্রশাসন বলেছিল, ফিলিপাইন কর্তৃপক্ষ এরই মধ্যে একই অভিযোগ খতিয়ে দেখছে।
আরও পড়ুন:স্কটল্যান্ডে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের টার্নবেরি গলফ রিসোর্টে হামলার ঘটনা ঘটেছে।
গাজা উপত্যকা থেকে ফিলিস্তিনিদের অন্যত্র সরাতে ট্রাম্পের পরিকল্পনার প্রতিবাদে ফিলিস্তিনপন্থি ‘প্যালেস্টাইন অ্যাকশন‘ নামের একটি সংগঠন এ হামলার দায় স্বীকার করেছে।
স্থানীয় সময় শনিবার এক বিবৃতির মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করে সংগঠনটি।
অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) খবরে জানানো হয়, ট্রাম্পের গাজা নিয়ে একের পর এক বিতর্কিত মন্তব্য ও পরিকল্পনার কারণে ক্ষুব্ধ ফিলিস্তিনি মানুষ ও তাদের সমর্থকরা। এরই জেরে এ হামলা ঘটিয়েছে বলে বিবৃতিতে জানিয়েছে প্যালেস্টাইন অ্যাকশন সংগঠনের সদস্যরা।
টার্নবেরি রিসোর্টটি ভাঙচুর করার পাশাপাশি রিসোর্টের দেয়ালে লাল রং দিয়ে ফিলিস্তিনের সমর্থনে বিভিন্ন গ্রাফিতি অংকন করা হয়েছে। রিসোর্টের সবুজ মাঠে লাল রং দিয়ে লেখা হয়েছে ‘গাজা বিক্রির জন্য নয়’।
সংগঠনটির কর্মীরা জানান, ট্রাম্প গাজাকে নিজের সম্পত্তির মতো মনে করে, যা খুশি তাই করতে পারে না। তারই প্রতিবাদ এটা।
তারা বলেন, ‘আমরা ট্রাম্পকে স্পষ্ট করে বুঝিয়ে দিতে চাই, আমাদের প্রতিরোধ থেকে তার নিজের সম্পত্তিও নিরাপদ নয়।’
ফিলিস্তিনিনের এই হামলাকে ট্রাম্প ‘শিশুসুলভ, অপরাধমূলক’ কার্যক্রম হিসেবে অভিহিত করে বলেন, এ ধরনের কর্মকাণ্ডে তার পরিকল্পনায় কোনো পরিবর্তন আসবে না।
আরও পড়ুন:দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে রাজনৈতিক সমীকরণ ঢেলে সাজাতে উঠেপড়ে লেগেছেন যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার এ উদ্যোগ পৌঁছেছে ইরানের দ্বারপ্রান্তেও।
ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আলোচনার আহ্বান জানিয়ে দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে চিঠি পাঠিয়েছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট। আলোচনায় না বসলে সামরিক অভিযানের হুমকিও দিয়েছেন ট্রাম্প।
স্থানীয় সময় শুক্রবার সন্ধ্যায় ফক্স বিজনেস নেটওয়ার্কে এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প জানান, তিনি ইরানের নেতাদের উদ্দেশে চিঠি পাঠিয়েছেন।
ওয়াশিংটন থেকে এএফপি এ খবর জানায়।
ট্রাম্প বলেন, ‘আমি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আলী খামেনির উদ্দেশে বলেছি, আশা করি আপনি আলোচনায় বসবেন। কারণ, এটি ইরানের জন্য ভালো হবে।’
একই সঙ্গে হুঁশিয়ারি দিয়ে ট্রাম্প বলেন, আলোচনায় বসতে অস্বীকৃতি জানালে বিষয়টিতে সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে বাধ্য হবে যুক্তরাষ্ট্র। এ অবস্থায় তেহরানের কল্যাণে সমঝোতাই যুক্তিসঙ্গত হবে।
যদিও ট্রাম্পের এই দাবি অস্বীকার করেছে জাতিসংঘে ইরানের স্থায়ী মিশন। তারা জানিয়েছে, এমন কোনো চিঠির বিষয়ে অবগত নয় তারা।
এদিকে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে ট্রাম্পের চিটি পাঠানোর বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না।
তিনি শুক্রবার এএফপিকে বলেন, শক্তি প্রয়োগ করলে তারা পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন না।
আরও পড়ুন:ইরান ও রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেল আমদানি বাড়াবে চীন।
নতুন টার্মিনাল ও জাহাজ চালু হওয়ায় মার্চ থেকে চীন তেল আমদানি বৃদ্ধি করবে বলে খবর পাওয়া গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগের নীতি সত্ত্বেও চীন এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছে ‘অয়েল প্রাইস’ নামের ওয়েবসাইট।
অয়েল প্রাইসের তথ্য অনুযায়ী, ইরান ও রাশিয়া থেকে চীনের তেল আমদানি দিন দিনই বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ওয়েবসাইটটির উদ্ধৃতি দিয়ে চীনের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়া শনিবার এ খবর জানায়।
কয়েকজন বিশ্লেষক ও ব্যবসায়ী বার্তা সংস্থা সিনহুয়াকে জানান, চীন তেল ট্যাংকারগুলোতে পরিবর্তন এনেছে যাতে সেগুলো আর নিষেধাজ্ঞার আওতায় না থাকে। এর ফলে রাশিয়া এবং ইরানের সঙ্গে তেল বাণিজ্য সম্প্রসারণ করতে পারবে বেইজিং। ফলে ২০২৫ সালের মার্চ মাসে এই দুই দেশ থেকে চীন বেশি পরিমাণে অপরিশোধিত তেল আমদানি করতে পারবে। এ আমদানি ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে দুই বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন ছিল।
নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকা চীনা তেল ট্যাংকারগুলো এরই মধ্যে তৎপরতা শুরু করেছে বলে বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে।
ইরান ও রাশিয়ার বিরুদ্ধে কঠোরতম নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র।
আরও পড়ুন:ইরানের সিস্তান ও বালুচিস্তান প্রদেশের চবাহার কাউন্টিতে ইসলামি বিপ্লবী হাউজিং ফাউন্ডেশনের সদরদপ্তরে বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করেছে পাকিস্তানভিত্তিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠী জয়শুল আজল।
স্থানীয় সময় শনিবার সকালে বিস্ফোরণের এ ঘটনা ঘটে।
ইরানের ইসলামি বিপ্লবী হাউজিং ফাউন্ডেশন সমাজের নিম্ন আয়ের মানুষদের জন্য আবাসন তৈরি এবং হাউজিং ইউনিট নির্মাণ করে।
দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ইরনার উদ্ধৃতি দিয়ে এএফপি এ খবর জানায়।
পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠনটি সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে ইসলামি বিপ্লবী হাউজিং ফাউন্ডেশনের দপ্তরে সাউন্ড বোমা বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করে।
প্রাদেশিক প্রসিকিউটর মেহদি শামসাবাদি জানান, শনিবার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ওই বিস্ফোরণ ঘটে। তবে এতে কেউ হতাহত হয়নি।
তিনি জানান, নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা বাহিনীগুলো এ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
বিস্ফোরণে ভবনটির একাংশের ক্ষতি হয়েছে।
পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী ইরানের সিস্তান ও বালুচিস্তান প্রদেশে বিগত বছরগুলোতে সামরিক ও বেসামরিক স্থাপনায় অনেকবার সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়। যেসব গোষ্ঠী এসব হামলা চালিয়েছে, তাদের সঙ্গে বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সম্পর্ক রয়েছে বলে ব্যাপকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
গত বছরের ২৬ অক্টোবর সিস্তান ও বালুচিস্তান প্রদেশের তাফতান কাউন্টির গোহার কুহ এলাকায় সন্ত্রাসী হামলায় ১০ পুলিশ সদস্য নিহত হন। ওই হামলারও দায় এ সংগঠন স্বীকার করে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য