জাপানের মধ্যাঞ্চলে শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
দেশটির ইশিকাওয়া প্রিফেকচারের নোটো উপদ্বীপ এলাকায় স্থানীয় সময় সোমবার সকালে ৫ দশমিক ৯ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে বলে জানায় দ্য জাপান টাইমসসহ আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো।
জাপানের আবহাওয়া সংস্থা বলছে, নোটো উপদ্বীপের উত্তর-পূর্ব উপকূলে সুজু শহরে সোমবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে কম্পন অনুভূত হয়, তবে এ কম্পনের জেরে সুনামির কোনো সতর্কতা জারি করা হয়নি।
তাৎক্ষণিক ক্ষয়ক্ষতির কোনো খবর পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
এর আগে ১ জানুয়ারি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে জাপানের ইশিকাওয়া অঞ্চলের নোটো এলাকায়। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের তীব্রতা ছিল ৭ দশমিক ৬।
ওই সময় ভূমিকম্পে অনেক ভবন ধ্বংস হয়ে যায়, কয়েক হাজার বাড়ির বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়। কিছু উপকূলীয় অঞ্চলে বাসিন্দাদের সরিয়ে নেয়া হয়।
জাপানে আঘাত হানা ভূমিকম্পটি দেশটির পশ্চিম উপকূল এবং প্রতিবেশী দক্ষিণ কোরিয়া বরাবর প্রায় ১ মিটার জল তরঙ্গ ছড়ায়।
আর কয়েক ঘণ্টা পরই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু হবে।
আগামী চার বছর যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ নীতিসহ বিশ্ব রাজনীতির মেরুকরণে কে করবে প্রভাব বিস্তার, এমন প্রশ্ন নিয়ে বিশ্ববাসীর নজর এখন এই নির্বাচনের দিকে।
ডেমোক্রেটিক পার্টির ‘গাধা’ আর রিপাবলিকান পার্টির ‘হাতি’ প্রতীকে এ ভোট-প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত ফল পেতে অবশ্য কয়েক দিন সময় লেগে যাবে। ঘটনাচক্রে তা একটু দীর্ঘও হতে পারে।
দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যগুলোতে শেষ মুহূর্তের প্রচারে ব্যস্ত দুই প্রার্থী কমলা হ্যারিস ও ডনাল্ড ট্রাম্প।
এর মধ্যে রোববার (৩ নভেম্বর) মিশিগানে প্রচারের সময় গাজায় যুদ্ধ বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন কমলা হ্যারিস। আরব-আমেরিকান ভোটারদের সমর্থন পেতেই তিনি এমন প্রতিশ্রুতি দেন।
কমলা বলেন, গাজায় মৃত্যু ও ধ্বংসের মাত্রা এবং লেবাননে বেসামরিক হতাহত ও বাস্তুচ্যুত পরিস্থিতির কারণে এ বছরটি কঠিন ছিল।
ক্ষমতায় এলে গাজায় যুদ্ধ বন্ধে সর্বোচ্চ চেষ্টার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
গাজা যুদ্ধ বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিলেও ইসরায়েলের নিরাপত্তার কথাও উঠে আসে কমলার বক্তব্যে।
একই দিন পেনসিলভানিয়া ও নর্থ ক্যারোলিনায় প্রচার চালান রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডনাল্ড ট্রাম্প।
জো বাইডেনের শাসনামলে যুক্তরাষ্ট্র একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে মন্তব্য করে ট্রাম্প বলেন, ব্যর্থতার জন্য ডেমোক্র্যাটদের লজ্জিত হওয়া উচিত।
রিপাবলিকান পার্টি জিতলে আগামী চার বছর স্বর্ণযুগে পরিণত করার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কমলা হ্যারিস ও রিপাবলিকান প্রার্থী ডনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে ভোটের লড়াইটা তীব্র হবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এই লড়াইয়ে বিজয়ী কে হবেন তা জানতে কয়েক দিন লেগে যেতে পারে। তবে সব পূর্বাভাসই হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, জাতীয় ও সুইং স্টেট বা দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যগুলোতে জোর লড়াই হবে। কয়েকটি এলাকায় ব্যবধান খুবই কম হতে পারে। ফলে পুনরায় ভোট গণনারও প্রয়োজন পড়তে পারে। আর ভোটের ব্যবধান খুব কম হলে বা কোনো প্রার্থী নির্বাচনি জালিয়াতির অভিযোগ আনলে ফল ঘোষণায় আরও বেশি সময় লাগতে পারে।
জরিপ যা বলছে
জাতীয়ভাবে ভোটারদের নিয়ে যেসব জরিপ হয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে গড়ে ট্রাম্পের চেয়ে অল্প ব্যবধানে এগিয়ে আছেন কমলা। জুলাইয়ে কমলা হ্যারিস ডেমোক্র্যাটদের প্রার্থী হওয়ার পর থেকে ট্রাম্পের চেয়ে এগিয়ে আছেন।
জাতীয়ভাবে যেসব জনমত জরিপ হয়েছে, তার গড় করে দেখা যাচ্ছে, রোববার পর্যন্ত কমলা হ্যারিসের পক্ষে সমর্থন ৪৮ শতাংশের। আর ট্রাম্পের সমর্থন ৪৭ শতাংশ।
ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হওয়ার পর নির্বাচনি প্রচার শুরুর প্রথম দিকের সপ্তাহগুলোতে কমলা হ্যারিসের দিকে সমর্থন বেশি ছিল। আগস্টের শেষে দেখা গিয়েছিল, ট্রাম্পের চেয়ে প্রায় চার পয়েন্টে এগিয়ে কমলা।
সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরের শুরুর দিক পর্যন্ত সেই অবস্থান ধরে রেখেছিলেন কমলা হ্যারিস, তবে শেষ কয়েক সপ্তাহে দেখা গেছে, জরিপে কমলার সঙ্গে ট্রাম্পের ব্যবধান কমে এসেছে।
একজন প্রেসিডেন্ট প্রার্থী গোটা দেশে কতটা জনপ্রিয়, তা জানার জন্য জাতীয়ভাবে করা জরিপগুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ, কিন্ত নির্বাচনে ফলাফল অনুমানের জন্য জাতীয় জরিপই সবচেয়ে ভালো উপায় নয়। এর কারণ, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয় ইলেকটোরাল কলেজ ভোটের মাধ্যমে। এ পদ্ধতিতে জনসংখ্যার ওপর ভিত্তি করে প্রতিটি অঙ্গরাজ্যের জন্য পৃথক ইলেকটোরাল কলেজ ভোট বরাদ্দ থাকে।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ইলেকটোরাল কলেজের ভোট আছে ৫৩৮টি। এর মধ্যে ২৭০টি প্রয়োজন জয়ের জন্য। এক রাজ্যে যে প্রার্থী বেশি ভোট পাবেন, সব ইলেকটোরাল কলেজ ভোট তিনিই পাবেন।
নির্বাচনে চূড়ান্ত ফল নির্ধারণী দোদুল্যমান সাত রাজ্যে শেষ সময়ের জরিপে রিপাবলিকান দলীয় প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থনে চমক দেখা গেছে। সোমবার ব্রাজিল-ভিত্তিক জরিপ সংস্থা অ্যাটলাস ইনটেলের জনমত জরিপের ফলে বলা হয়েছে, দোদুল্যমান সাত রাজ্যের সবক’টিতে কমলা হ্যারিসের চেয়ে এগিয়ে আছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। যদিও তাদের ব্যবধান একেবারে সামান্য।
রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প আর ডেমোক্র্যাট দলীয় কমলা হ্যারিসের মাঝে ব্যাপক হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস পাওয়া যাচ্ছে অন্যান্য জনমত জরিপেও। অ্যাটলাস ইনটেলের জরিপে দেখা গেছে, দোদুল্যমান রাজ্য অ্যারিজোনায় জরিপে অংশ নেওয়াদের মধ্যে ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষে ৫২ দশমিক ৩ শতাংশ এবং হ্যারিসের প্রতি ৪৫ দশমিক ৮ শতাংশ মানুষ সমর্থন জানিয়েছেন।
দোদুল্যমান আরেক রাজ্য নেভাদায় জরিপে অংশ নেওয়া ৫১ দশমিক ২ শতাংশ মানুষ ডোনাল্ড ট্রাম্পকে এবং ৪৬ শতাংশ হ্যারিসকে সমর্থন জানিয়েছেন। এ ছাড়া নর্থ ক্যারোলিনায় ট্রাম্প ৫০ দশমিক ৫ শতাংশ এবং কমলা হ্যারিস পেয়েছেন ৪৭ দশমিক ১ শতাংশ জনসমর্থন।
অ্যাটলাস ইনটেলের জনমত জরিপ অনুযায়ী জর্জিয়া রাজ্যেও এগিয়ে আছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই রাজ্যে ৫০ দশমিক ১ শতাংশ মানুষ ডোনাল্ড ট্রাম্পকে এবং ৪৭ দশমিক ৬ শতাংশ মানুষ হ্যারিসকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দেখতে চান বলে জানিয়েছেন।
মিশিগানে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি ৪৯ দশমিক ৭ শতাংশ এবং হ্যারিসের প্রতি ৪৮ দশমিক ২ শতাংশ মানুষ সমর্থন জানিয়েছেন।
এছাড়া পেনসিলভানিয়ায় ট্রাম্প ৪৯ দশমিক ৬ ও কমলা হ্যারিস ৪৭ দশমিক ৮ শতাংশ এবং উইসকনসিনে ট্রাম্প ৪৯ দশমিক ৭ ও হ্যারিস ৪৮ দশমিক ৬ শতাংশ জনসমর্থন পেয়েছেন।
কমলার আলোচিত বক্তব্য
ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডে অবিরাম হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। টানা ১৩ মাস ধরে চালানো এই হামলায় এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৪৩ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি। বর্বর এই আগ্রাসনের জেরে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে বাড়ছে ক্ষোভ। এ বিষয়ে ডেমোক্র্যাট পার্টির প্রার্থী কমলা হ্যারিস বলেছেন, গাজায় চলমান যুদ্ধের অবসান ঘটাতে তিনি তার ক্ষমতার সব কিছু করবেন। সোমবার এই তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।
ট্রাম্পের আলোচিত বক্তব্য
যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের সমালোচনা করে রিপাবলিকান দলীয় প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, নির্বাচিত হলে সীমান্ত খুলে দেবেন কমলা হ্যারিস, যাতে অভিবাসী, সংঘবদ্ধ গ্যাং ও অপরাধীরা অনুপ্রবেশ করতে পারে।
দেশটির নর্থ ক্যারোলিনা অঙ্গরাজ্যের কিনস্টনে রিপাবলিকান পার্টির এক সমাবেশে এই মন্তব্য করেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, কমলা হ্যারিসের কোনো রূপকল্প নেই, কোনো ধারণা নেই এবং কোনো সমাধান নেই। তার একমাত্র বার্তা হলো বিভিন্ন সমস্যার জন্য তিনি নিজেকে দোষারোপ করছেন।
আর কে কে লড়ছেন এই নির্বাচনে?
যুক্তরাষ্ট্রে এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী কমলা হ্যারিস ও ডোনাল্ড ট্রাম্প ছাড়া আরও চারজন প্রেসিডেন্ট প্রার্থী রয়েছেন।
রবার্ট জুনিয়র কেনেডি
এবারের নির্বাচনে অন্যতম আলোচিত ব্যক্তি রবার্ট কেনেডি জুনিয়র। তার পক্ষে এবারের নির্বাচনে ৫-৭ শতাংশ সমর্থন ছিল। কিন্তু গত আগস্ট মাসে তিনি ট্রাম্পকে সমর্থন দিয়ে নির্বাচন থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন। তবে কয়েকটি অঙ্গরাজ্য তার নাম ব্যালট থেকে সরাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। ট্রাম্পের পক্ষে ব্যাপক প্রচার চালানো কেনেডি নির্বাচনে কতটা প্রভাব ফেলবেন তা স্পষ্ট নয়।
কর্নেল ওয়েস্ট
গ্রিন পার্টির নেতা, বর্ণবাদবিরোধী ৭১ বছর বয়সী কর্নেল ওয়েস্ট একজন শিক্ষাবিদ। তিনি স্বতন্ত্রভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। বাইডেনকে ‘যুদ্ধাপরাধী’ ও ট্রাম্পকে ‘নব্য ফ্যাসিস্ট’ বলে মনে করেন কর্নেল ওয়েস্ট। তিনি ১২টিরও বেশি অঙ্গরাজ্যে লড়ছেন। তার সমর্থন অল্প হলেও ডেমোক্র্যাট শিবিরের জন্য তিনি বড় দুশ্চিন্তার নাম।
চেজ অলিভার
লিবার্টারিয়ান পার্টির নেতা চেজ অলিভার ২০২০ সালের নির্বাচনেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। সে সময় ১ শতাংশের কিছু বেশি ভোট পেয়েছিলেন। এ বছর যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি অঙ্গরাজ্যের প্রায় সব কটিতেই লড়ছেন তিনি। তাকে এবারের নির্বাচনের সম্ভাব্য অঘটন সৃষ্টিকারী ব্যক্তি হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছে। সাবেক ডেমোক্র্যাট ৩৯ বছর বয়সী অলিভার মুক্তবাণিজ্য ও ছোট আকারের সরকার ব্যবস্থার পক্ষে প্রচার চালান।
জিল স্টেইন
বামপন্থী এ নেতা গ্রিন পার্টির প্রেসিডেন্ট। পেশায় চিকিৎসক ও পরিবেশকর্মী। বর্তমানে তার বয়স ৭৪ বছর। এর আগে ২০১২ ও ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। ওই সময় তিনি যথাক্রমে দশমিক ৪ শতাংশ ও ১ শতাংশ করে ভোট পেয়েছিলেন।
শিকাগো শহরে জন্ম নেয়া জিল স্টেইন এবার ৪০টি অঙ্গরাজ্যে লড়ছেন। তাকে নিয়ে সবচেয়ে বেশি মাথাব্যথা ডেমোক্র্যাট শিবিরে। কারণ তিনি কমলা হ্যারিসের গুরুত্বপূর্ণ অনেক ভোট তার পক্ষে টানতে পারেন।
আরও পড়ুন:বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর দেশ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ৫ সেপ্টেম্বর (বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার রাতে)। ইতোমধ্যে নির্বাচনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে দেশটি। ২৫ কোটি ভোটারের জন্য সর্বোচ্চ সুবিধা নিশ্চিত করতে ভোটের ব্যালট পেপারে রাখা হয়েছে নানা ভাষার সুবিধা। স্থান পেয়েছে বাংলা ভাষাও।
নিউ ইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের ব্যালট পেপারে বাংলা ভাষা থাকছে বলে জানিয়েছে দেশটির নির্বাচন কমিশন। এক বিবৃতিতে তারা জানিয়েছে, নিউ ইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের ব্যালট পেপারে ইংরেজি ছাড়াও চারটি ভাষা থাকবে। এর মধ্যে একটি হলো বাংলা।
স্থানীয় সময় সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন পরিচালনাকারী সংস্থা বোর্ড অফ ইলেকশন্সের নিউ ইয়র্ক শাখার নির্বাহী পরিচালক মাইকেল জে রায়ান এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।
মাইকেল জে রায়ান বলেন, ইংরেজি ছাড়াও আরও চারটি ভাষায় সেবা দেয়া হবে। এশীয় ভাষা হিসেবে চীনা, কোরিয়ান ও বাংলা থাকবে। আরেকটি ভাষা থাকবে, তা হলো স্প্যানিশ।
জানা গেছে, ব্যালট পেপারে বাংলা ভাষার অন্তর্ভুক্তি শুধু সৌজন্যের জন্য নয়। এটি আইনি বাধ্যবাধকতাও বটে। আইন অনুযায়ী, নিউ ইয়র্ক সিটি নির্দিষ্ট কিছু ভোটকেন্দ্রে বাংলায় ভোটগ্রহণ সামগ্রী সরবরাহ করতে বাধ্য। বাংলাভাষী ভোটারদের জন্য ভোটদান সহজ করতে এটি করা হয়।
মাইকেল জে রায়ান বলেন, আমি নিজে ইংরেজি ভাষায় দক্ষ। তবে এখানে আমাদের কমিউনিটিতে এমন অনেক মানুষ আছেন, যারা বাংলা ভাষার ব্যালট পেপার দেখলে স্বস্তি বোধ করবেন। ভোটকেন্দ্রে এটি তাদের জন্য সহায়ক হবে।
আরও পড়ুন:ভারতের উত্তরাখণ্ড রাজ্যে একটি বাস সড়ক থেকে উল্টে গভীর খাদে পড়ে কমপক্ষে ৩৬ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এই দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন।
রাজ্য সরকারের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা দীপক রাওয়াত জানান, সোমবার উত্তরাখণ্ডের পার্বত্য এলাকা আলমোড়ায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। এ সময় বাসটিতে প্রায় ৬০ জন যাত্রী ছিলেন। তাদের মধ্যে ৩৬ জন নিহত এবং ২০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন।
উদ্ধার ও ত্রাণকর্মীরা ভেতরে আটকা পড়া যাত্রীদের উদ্ধারে কাজ করছেন। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালে থাকা সাত যাত্রীর অবস্থা আশঙ্কাজনক।
রাজ্য সরকারের কর্মকর্তা বিনীত পাল জানান, রাজ্য সরকার দুর্ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। প্রাথমিক তথ্যে ধারণা করা হচ্ছে, জরাজীর্ণ বাসটি ৬০ মিটার (২০০ ফুট) গভীর গিরিখাতে পড়ে যাওয়ার আগে এটির চাকা পিছলে যায়।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি বলেন, ‘বেশ কয়েকজন যাত্রী বাস থেকে বের হতে সক্ষম হন। আর কিছু যাত্রী বাসটি থেকে ছিটকে পড়েন। আহত যাত্রীদের দ্রুত চিকিৎসার জন্য নিকটবর্তী স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। গুরুতর আহতদের হেলিকপ্টারে করে উন্নত চিকিৎসার জন্য নিতে কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।’
লক্কড়ঝক্কড় বাসটি সড়কে চলাচলের অনুমোদন দেয়ায় দুই পরিবহন কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।
ভারতে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর হার বিশ্বের মধ্যে সর্বোচ্চ। বেশিরভাগ দুর্ঘটনা বেপরোয়া গাড়ি চালানো, রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বেহাল রাস্তা এবং পুরনো যানবাহনের কারণে হয়ে থাকে।
গত জুলাইয়ে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি দোতলা যাত্রীবাহী বাস ও দুধবাহী ট্রাকের সংঘর্ষে অন্তত ১৮ জনের মৃত্যু হয়। এর আগে মে মাসে ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে হিন্দু তীর্থযাত্রীদের বহনকারী একটি বাস পাহাড়ি মহাসড়কে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গভীর খাদে পড়ে গিয়ে ২১ জন প্রাণ হারান।
ইন্দোনেশিয়ার দক্ষিণ সুলাওয়েসি প্রদেশে আশ্রয়কেন্দ্রের ওপর একটি বিশাল গাছ ভেঙে পড়ায় নয়জন নিহত হয়েছেন।
এ ঘটনায় আরও আটজন আহত হন।
স্থানীয় সময় রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে প্রদেশের সোপ্পেং জেলার মাত্তাবুলু গ্রামের বুলু মাতানরে সাংস্কৃতিক অঞ্চলে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
তীব্র বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়া থেকে বাঁচতে ওই আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছিলেন দর্শনার্থীরা।
সোপ্পেংয়ের পুলিশপ্রধান ইউসুফ উসমান এক লিখিত বিবৃতিতে হতাহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ‘বর্তমানে মৃতের সংখ্যা নয়জন এবং আহত হয়েছেন আটজন।’
আহত লোকজনকে স্থানীয় হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।
প্রচণ্ড ঝোড়ো বাতাসে পুরোনো গাছটি উপড়ে গিয়ে ছোট ঘরগুলোর ওপর পড়ে, যেখানে মানুষজন আশ্রয় নিয়েছিলেন।
দুর্ঘটনার পর পুলিশ ঘটনাস্থল ঘিরে ফেলে এবং উদ্ধারকাজ শুরু করে।
আরও পড়ুন:যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও আসন্ন নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট নমিনি কমলা হ্যারিস বৃহস্পতিবার সাবেক প্রেসিডেন্ট ও রিপাবলিকান প্রতিদ্বন্দ্বী ডোনাল্ড ট্রাম্পের নারী সম্পর্কিত বক্তব্য ‘অত্যন্ত আপত্তিকর’ উল্লেখ করে নিন্দা করেছেন।
নির্বাচনের চূড়ান্ত সময়ে গর্ভপাতের অধিকারকে সামনে নিয়ে আসায় এবং এদিকে অভিবাসীদের অপমান ও হেয় করে দেয়া ট্রাম্পের বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করেন হ্যারিস।
বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, বুধবার এক সমাবেশে ট্রাম্প ‘আমেরিকার নারীদের সুরক্ষা দিতে চাই’ মন্তব্য করার পরিপ্রেক্ষিতে হ্যারিস এই বক্তব্যকে সবার জন্য আপত্তিকর বলে উল্লেখ করেছেন।
ফিনিক্সে বৃহস্পতিবার নির্বাচনি সমাবেশে হ্যারিস বলেন, নারীদের তাদের নিজ দেহ সম্পর্কিত সিদ্ধান্ত ও কর্তৃত্ব থাকা উচিত- ট্রাম্প তা বিশ্বাস করেন না। ট্রাম্প সেই ব্যক্তি যিনি ‘নারীদের তাদের পছন্দের জন্য শাস্তি দেয়া উচিত’ এমন উক্তিও করেছেন। তিনি স্প্যানিস স্লোগান ‘সি সে পুয়েদে’ অর্থাৎ আমরাও পারি’ উচ্চারণ করে বলেন, ‘তবে আমরা নারীদের বিশ্বাস করি।’
উভয় প্রার্থী হোয়াইট হাউসের দৌড়ে যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিমাঞ্চলীয় অঙ্গরাজ্যগুলোতে ভোট-যুদ্ধের প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন এবং ৫ নভেম্বর ভোট শেষ হওয়ার পাঁচ দিন আগে ল্যাটিনো ভোটারদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন।
ওদিকে কালো ওভারকোট ও কালো ‘মেক আমেরিকা গ্রেট এগেন’ লিখিত ক্যাপ পরিহিত ট্রাম্প সীমান্ত রাজ্য নিউ মেক্সিকোতে সমর্থকদের উদ্দেশে বক্তব্যে অভিবাসন দৌড়ের এক অন্ধকার চিত্র তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘অভিবাসীরা আমেরিকা জুড়ে হিংসাত্মক হত্যাকাণ্ড চালাচ্ছে।’
ডেমোক্র্যাটিক ভাইস প্রেসিডেন্ট ও রিপাবলিকান সাবেক প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগ মুহূর্তে দোদুল্যমান ভোটারদের সিদ্ধান্ত পক্ষে টানতে সাতটি সুইং স্টেটে একে অপরকে তাড়া করছেন।
নেভাদার লাস ভেগাসে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পপ আইকন জেনিফার লোপেজ তার তারকা শক্তিকে মঞ্চে নিয়ে আসবেন বলে হ্যারিস আরও একটি উৎসাহী বার্তা দিচ্ছেন।
আরও পড়ুন:গর্ভপাত নিষিদ্ধ হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের নারীরা মেক্সিকোকে বেছে নিয়েছেন গর্ভপাতের জন্য। দেশটির গাইনোকোলজিস্টদের পরামর্শে তারা গিয়ে ঢুকছেন অপারেশন থিয়েটারে।
টেক্সাসের হিউস্টন থেকে মেক্সিকোতে এসেছেন স্যান্ড্রা নামের এক নারী। যুক্তরাষ্ট্রের ওই রাজ্যে ইচ্ছাকৃত গর্ভপাত সম্পূর্ণভাবে অবৈধ। তাই তিনি বাধ্য হয়ে গর্ভপাতের জন্য মেক্সিকো এসেছেন।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে মেক্সিকোর সুপ্রিম কোর্ট গর্ভপাতকে বৈধ ঘোষণা করে। এই ঘোষণার পর এখন পর্যন্ত দেশটির ১৫টি রাজ্য গর্ভপাতকে বৈধতা দিয়েছে।
মেক্সিকোর নারীবাদী সংগঠনগুলো গর্ভপাত বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নারীদের পাশে দাঁড়িয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্ত থেকে দুশ’ কিলোমিটার দূরের জনপদ মন্টারের বাসিন্দা স্যান্ড্রা কারদোনা ও ভ্যানেসা গিমেনেয। এই দুই নারী গর্ভপাত করাতে আসা আমেরিকান নারীদের তাদের বাসায় স্বাগত জানান।
সীমান্ত সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা এই নারীরা যুক্তরাষ্ট্রে গর্ভপাতে ইচ্ছুক নারীদের জন্য অবৈধ পথে গর্ভপাতে ব্যবহৃত কিট সরবরাহ করছেন। তবে এসব কিট মেইলের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো অসম্ভব। তাই অবৈধ পথে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে তারা এসব কিট যুক্তরাষ্ট্রে পাঠিয়ে থাকেন। উদ্দেশ্য, এসব কিট ব্যবহার করে নারীরা যেন নিজ বাসায়ই সহজে গর্ভপাত করাতে পারেন।
যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের শেষ মুহূর্তে ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান দলের প্রচারণায় উঠে এসেছে গর্ভপাতের মতো গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক বিষয়টি। অনুমান করা যায়, বিশেষ করে নারী ভোটারদের কাছে এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে গর্ভপাতের বিষয়টি প্রাধান্য পাবে।
পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে পুলিশ কর্মকর্তাদের বহনকারী একটি গাড়ির কাছে মোটরসাইকেলের সঙ্গে সংযুক্ত শক্তিশালী বোমা বিস্ফোরণে পাঁচ শিশুসহ সাতজন নিহত হয়েছে।
শুক্রবার বেলুচিস্তানের মাসতুং জেলায় এই বোমা হামলার ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় পুলিশ প্রধান ফতেহ মোহাম্মদের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এপি জানায়, বেলুচিস্তান প্রদেশের মাসতুং জেলায় এই হামলা চালানো হয়। বোমা হামলার সময় স্কুলের বাচ্চাদের বহনকারী একটি মোটরচালিত রিকশা কাছাকাছি অবস্থানে ছিল। বোমার বিস্ফোরণে পাঁচ শিশু, একজন পুলিশ কর্মকর্তা ও একজন পথচারী নিহত হন।
তাৎক্ষণিকভাবে কেউ এ হামলার দায় স্বীকার না করলেও সাম্প্রতিক মাসগুলোতে নিরাপত্তা বাহিনী ও বেসামরিক লোকজনকে টার্গেট করে হামলা জোরদার করেছে বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলো। তাই তাদেরকেই এই হামলার জন্য সন্দেহ করা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও বেলুচিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী সরফরাজ বুগতি বোমা হামলার নিন্দা জানিয়েছেন। একইসঙ্গে বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীদের দেশ থেকে নির্মূল না করা পর্যন্ত তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন তারা।
বেলুচিস্তানে দীর্ঘদিন ধরেই বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলো প্রধানত নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর হামলা চালিয়ে আসছে। বেলুচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) ও অন্য গোষ্ঠীগুলো কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে স্বাধীনতা দাবি করছে।
বিএলএ বিদেশি নাগরিকদের ওপর হামলা চালাচ্ছে। গত মাসে দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর করাচির একটি বিমানবন্দরের বাইরে চীনা নাগরিকদের লক্ষ্য করে বোমা হামলায় চীনের দুই শ্রমিক নিহত ও আটজন আহত হন। পরে বিএলএ ওই হামলার দায় স্বীকার করে।
বেইজিংয়ের বহু বিলিয়ন ডলারের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের অংশ হিসেবে হাজার হাজার চীনা শ্রমিক পাকিস্তানে বড় অবকাঠামো প্রকল্প নির্মাণ করছে।
বেইজিং বার বার পাকিস্তানে তার নাগরিকদের জন্য উন্নত নিরাপত্তার দাবি জানিয়ে আসছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য