যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সামনের বছর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দেড় কোটি ভোট পাওয়ার ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন।
রিপাবলিকান দল থেকে প্রেসিডেন্ট পদে আবারও মনোনয়নপ্রত্যাশী ট্রাম্প স্থানীয় সময় বুধবার ফক্স চ্যানেল আয়োজিত এক ইভেন্টে দর্শক-সমর্থকদের সামনে এ কথা বলেন। খবর এনডিটিবির।
তিনি সমর্থকদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমি প্রেসিডেন্ট থাকতে আপনাদের সঙ্গে নিয়ে যা করেছি তা আর কাউকে করতে দেখিনি। আমি মনে করি ৭৫ লাখ নয়, দেড় কোটি ভোটার আমার সঙ্গে আছে।’
ট্রাম্প দর্শকদের ইঙ্গিত করে বলেন, ‘নিরাপদ সীমান্ত, শক্তিশালী সামরিক বাহিনী, কম ট্যাক্স ও কম খরচ সবারই চাওয়া, যা আমি করেছি এবং করব। আপনি নিশ্চয়ই খুব সহজে কম মূল্যে নিজের বাড়িটি কিনতে চাইবেন।’
২০২৪ এর নির্বাচনে ট্রাম জিতে গেলে যুক্তরাষ্ট্র একজন স্বৈরাচারি শাসক পাবে বলে বেশ কয়েকদিন যাবত ভোটারদের সর্তক করে আসছেন বিরোধী ডেমোক্র্যাট ও তার দলের কিছু রিপাবলিকান রাজনৈতিক কর্মী ও বিশ্লেষকরা।
এ বিষয় তিনি ভোটারদের আশ্বস্ত করে বলেন, ‘আমি কখনোই স্বৈরশাসক হব না।’
ডোনাল্ড ট্রাম্প রিপাবলিকান দলের প্রার্থী হিসেবে ২০১৭ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হয়ে ২০২১ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন কিন্তু পরবর্তী নির্বাচনে বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে হেরে যান।
দেশটির আইন অনুযায়ী একজন ব্যক্তি দুই মেয়াদে প্রেসিডেন্টের দায়িত্বে থাকতে পারেন। তাই ট্রাম্পের আরও একবার এ পদে দায়িত্ব পালনের সুযোগ আছে।
কানাডাকে আবারও যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম অঙ্গরাজ্য হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
স্থানীয় সময় রবিবার ফ্লোরিডার পাম বিচ থেকে এএফপি জানায়, নিজের ট্রুথ সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে ট্রাম্প এ প্রস্তাব দেন।
ট্রাম্প দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্র প্রতি বছর ‘কানাডাকে শত শত বিলিয়ন ডলার’ ভর্তুকি দেয়। এটি ছাড়া কানাডা একটি কার্যকর দেশ হিসেবে টিকে থাকতে পারবে না।
তিনি বলেন, ‘কানাডার আমাদের প্রিয় ৫১তম অঙ্গরাজ্য হওয়া উচিত, যা কানাডার জনগণের জন্য অনেক কম কর ও আরও ভালো সামরিক সুরক্ষা নিশ্চিত করবে এবং কোনো শুল্ক থাকবে না।’
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার মধ্যে বাণিজ্য নিয়ে উত্তেজনার মধ্যে ট্রাম্প এ মন্তব্য পুনর্ব্যক্ত করলেন।
ট্রাম্প প্রশাসন কানাডা থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছে, যা কানাডার অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে।
এর প্রতিক্রিয়ায় কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ২৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন, যা আমেরিকান পণ্যের (বিয়ার, ওয়াইন, ফল, জুস, পোশাক, খেলাধুলার সরঞ্জাম এবং গৃহস্থালি যন্ত্রপাতি) ওপর প্রযোজ্য হবে।
এ ছাড়া কানাডার অন্টারিও প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ডগলাস ফোর্ড ২৭ ফেব্রুয়ারি আগাম নির্বাচনের ডাক দিয়েছেন, যাতে তিনি ট্রাম্পের প্রস্তাবিত শুল্কের বিরুদ্ধে শক্তিশালী ম্যান্ডেট পেতে পারেন।
ফোর্ড সতর্ক করে বলেন, এ শুল্ক অন্টারিওর অর্থনীতিতে গুরুতর প্রভাব ফেলতে পারে এবং হাজার হাজার চাকরি হুমকির মুখে পড়বে।
ট্রাম্পের প্রস্তাবের প্রতিক্রিয়ায় কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেলানি জোলি এ মন্তব্যকে ‘কানাডার শক্তির প্রকৃতি সম্পর্কে সম্পূর্ণ অজ্ঞতা’ বলে আখ্যায়িত করেন।
ট্রাম্পের এ প্রস্তাব এবং সাম্প্রতিক বাণিজ্যিক উত্তেজনা যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার দীর্ঘস্থায়ী মিত্রতার মধ্যে নতুন চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এর আগেও একাধিকবার কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম অঙ্গরাজ্য হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন।
জানুয়ারি মাসে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর পদত্যাগের ঘোষণা দেওয়ার পর ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে পোস্ট করে বলেন, ‘কানাডার অনেক মানুষ আমাদের ৫১তম অঙ্গরাজ্যের অংশ হতে চায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘যদি কানাডা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একীভূত হয়, তাহলে কোনো শুল্ক থাকবে না, কর অনেকটাই কমে যাবে এবং তারা রাশিয়ান ও চীনা জাহাজের হুমকি থেকে সম্পূর্ণ নিরাপদ থাকবে।’
এর আগে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে ফ্লোরিডায় অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে ট্রাম্প কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোকে প্রস্তাব দেন যে, কানাডা চাইলে যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম অঙ্গরাজ্য হতে পারে। তবে প্রস্তাবটি হাস্যরসের ছলে করা হয়েছিল বলে খবর পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন:মেক্সিকো, কানাডা ও চীনের ওপর চড়া শুল্কারোপ করে একটি আদেশে সই করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
এতে উত্তর আমেরিকার দুই প্রতিবেশী দেশের কাছ থেকেও তাৎক্ষণিক পাল্টা পদক্ষেপ এসেছে। এর মধ্য দিয়ে দীর্ঘ সময়ের মিত্র মেক্সিকো ও কানাডার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের অনেকটা বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে।
সামাজিকমাধ্যমে এক পোস্টে ট্রাম্প বলেন, ‘আমেরিকাকে সুরক্ষায় এই শুল্কারোপ অপরিহার্য ছিল।’
অবৈধ ফেনটানিল উৎপাদন ও রপ্তানি বন্ধে এ তিন দেশকে আরও অনেক জোর দিতে হবে বলেও জানান তিনি।
পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ অভিবাসী কমিয়ে আনতে কানাডা ও মেক্সিকোকে জোরালো পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান ট্রাম্প।
তবে এই শুল্কারোপ ট্রাম্পের জন্য হিতে-বিপরীতও ঘটতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রে যদি মুদ্রাস্ফীতি বেড়ে যায়, তাহলে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য, পেট্রল, আসবাবপত্রসহ অন্যান্য পণ্য কম দামে পেতে ট্রাম্পের ওপর যে আস্থা মার্কিন ভোটাররা রেখেছিলেন, সেটা ঝুঁকিতে পড়বে।
এর মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় মেয়াদে শপথ নেওয়ার মাত্র দুই সপ্তাহের মধ্যে বৈশ্বিক রাজনীতি ও অর্থনীতিকে নতুন এক অস্থিরতায় ছুড়ে দিয়েছেন তিনি। চীনা থেকে আমদানি করা সব পণ্যে ১০ শতাংশ ও মেক্সিকো-কানাডীয় পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্কারোপ করতে অর্থনৈতিক জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন ট্রাম্প।
মেক্সিকো, কানাডা থেকে যে জ্বালানি তেল, গ্যাস ও বিদ্যুৎ আমদানি করা হয়, তাতে ১০ শতাংশ হারে শুল্কারোপের ঘোষণা দিয়েছেন রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট। দেশগুলো পাল্টা পদক্ষেপ নিলে শুল্কারোপ আরও বাড়িয়ে দেওয়ার একটি কৌশল অন্তর্ভুক্ত করেছেন তার আদেশে। এতে ব্যাপক অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের শঙ্কা রয়েছে।
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেন, ‘আজ ট্রাম্প যে পদক্ষেপ নিয়েছেন, তাতে আমাদের একত্রিত করার বদলে বিচ্ছিন্ন করে দিল হোয়াইট হাউস।’
কানাডা অ্যালকোহল ও ফলসহ আমেরিকান পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্কারোপের ঘোষণা দিয়েছে। অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ এক লাখ ৫৫ হাজার ডলারের শুল্কারোপ করা হয়েছে।
মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লদিয়া সেইনবামও একই ঘোষণা দেন। কিন্তু চীনের তরফ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো সাড়া মেলেনি।
আরও পড়ুন:যুক্তরাষ্ট্রের ফিলাডেলফিয়ার একটি ব্যস্ত শহরতলীতে শুক্রবার ছয় আরোহীসহ একটি ছোট উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়েছে।
এ দুর্ঘটনায় সৃষ্ট অগ্নিকাণ্ডে ভবন ও যানবাহন পুড়ে গেছে।
স্থানীয় কর্মকর্তারা এ তথ্য জানিয়েছেন বলে ফিলাডেলফিয়া থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে।
ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন এএফপিকে জানায়, লিয়ারজেট বিমানে ছয় আরোহী ছিলেন। তবে কেউ বেঁচে আছেন কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
যুক্তরাষ্ট্রের মধ্য আকাশে বুধবার রাতে সেনাবাহিনীর একটি হেলিকপ্টার ও আমেরিকান এয়ারলাইনসের যাত্রীবাহী বিমানের সংঘর্ষের পর আনুষ্ঠানিক ব্রিফিং করেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
ব্রিফিংয়ে তিনি জনবল নিয়োগের ক্ষেত্রে বারাক ওবামা ও জো বাইডেন-সমর্থিত বৈচিত্র্যকে বিমান নিরাপত্তার মান কমানোর জন্য দায়ী করেছেন।
ওয়াশিংটন টাইমস এ খবর জানিয়েছে।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার ব্রিফিংয়ে ট্রাম্প জানান, বুধবার রাতে যাত্রীবাহী উড়োজাহাজের সঙ্গে সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারের সংঘর্ষের কারণ এখনও জানা যায়নি। তবে কারণ জানতে তদন্ত চলছে।
কারণ জানা না গেলেও এ দুর্ঘটনার জন্য তিনি তার পূর্বসূরিদের জাতি বা লিঙ্গভিত্তিক অগ্রাধিকারের উদ্যোগকে দায়ী করেছেন।
তিনি বলেছেন, এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের জন্য যাদের নিয়োগ করা হয়েছে, তারা সবসময় যে যোগ্য লোক, তা কিন্তু নয়।
ট্রাম্পের অভিযোগ, ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্টদের আমলে নিয়োগের ক্ষেত্রে যে বৈচিত্র্য আনা হয়েছিল, তাতেই বিমান চলাচলে নিরাপত্তার মান কমেছে। আর সেটিই এ মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনার কারণ।
এ দুর্ঘটনায় উড়োজাহাজের ৬৭ আরোহীর সবাই নিহত হন।
ট্রাম্প বলেন, ‘আমি নিরাপত্তাকে সবার ওপরে রাখি, কিন্তু বারাক ওবামা, জো বাইডেন আসলে আরও বেশি শ্বেতাঙ্গ নিয়োগ দিতে চেয়েছেন।
‘ডেমোক্র্যাটরা এই নীতিকে প্রথমে রাখে। কিন্তু আমরা সবসময় যোগ্য লোকদের চাই।’
ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে ব্রিফিং শুরুর আগে ওয়াশিংটনের মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনায় নিহত এবং তাদের পরিবারের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন।
তিনি আরও জানান, ফেডারেল অ্যাভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের ভারপ্রাপ্ত প্রশাসক ক্রিস রোচেলোকে ঘটনা তদন্তে নিয়োগ করা হয়েছে।
স্থানীয় সময় বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ওয়াশিংটনের রিগ্যান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টের রানওয়ে ৩৩-এর কাছাকাছি যাত্রীবাহী বিমান ও সামরিক হেলিকপ্টারের সংঘর্ষ হয়।
যাত্রীবাহী উড়োজাহাজটিতে ৬০ জন যাত্রী ও ৪ জন ক্রু ছিলেন। আর সামরিক হেলিকপ্টারটিতে তিনজন সেনা ছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে ২০ বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে এটি ছিল সবচেয়ে মারাত্মক উড়োজাহাজ দুর্ঘটনা।
আরও পড়ুন:যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে বুধবার রাতে মধ্য আকাশে ৬৪ আরোহী থাকা একটি উড়োজাহাজের সঙ্গে সামরিক হেলিকপ্টারের সংঘর্ষ হয়েছে।
হোয়াইট হাউস থেকে মাত্র পাঁচ কিলোমিটার দূরের এ ঘটনায় পটোম্যাক নদী থেকে উদ্ধার করা হয়েছে কমপক্ষে ১৮ জনের মরদেহ।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানায়, বিভিন্ন ফুটেজে দেখা যায়, উড়োজাহাজ ও হেলিকপ্টারের সংঘর্ষে রাতের আকাশে আতশবাজির মতো আলোর ঝলক দেখা যায়। দুর্ঘটনার পর আকাশযান দুটি গিয়ে পড়ে ওয়াশিংটনের পটোম্যাক নদীতে।
আমেরিকান ঈগল এয়ারলাইনসের ৫৩৪২ ফ্লাইটটি ৬০ যাত্রী ও চার ক্রু নিয়ে কানসাস অঙ্গরাজ্য থেকে ওয়াশিংটন ডিসিতে যাচ্ছিল বলে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। অন্যদিকে ব্ল্যাকহক হেলিকপ্টারে তিনজন সেনা ছিলেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
তাদের ভাষ্য, হেলিকপ্টারটিতে জ্যেষ্ঠ কোনো কর্মকর্তা ছিলেন না।
যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ এফএএ জানায়, স্থানীয় সময় বুধবার রাত ৯টার দিকে বিমানবন্দরের কাছাকাছি এলাকায় পিএসএ এয়ারলাইনস পরিচালিত ফ্লাইটটির সঙ্গে সিকরস্কি ইউএইচ-৬০ হেলিকপ্টারের সংঘর্ষ হয়।
আরও পড়ুন:যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত চীনের অর্থনীতিকে আরও চাপে ফেলতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
তারা বলছেন, এ শুল্ক নীতি চীনের মুদ্রা ইউয়ানের মান আরও কমিয়ে দিতে পারে, যা অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের প্রচেষ্টা ব্যাহত করবে।
ট্রাম্প তার দ্বিতীয় মেয়াদ শুরু করেই ঘোষণা দিয়েছেন, ১ ফেব্রুয়ারি থেকে সব চীনা পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবেন। যদিও আলোচনা চালানোর সুযোগ এখনও খোলা রেখেছেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুল্ক কার্যকর হলে ইউয়ানের মান আরও দুর্বল হতে পারে, যা চীনের ভঙ্গুর অর্থনীতির জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। বর্তমানে চীন অভ্যন্তরীণ ভোগব্যয়ের মন্দা ও রিয়েল এস্টেট খাতে ঋণের সংকট মোকাবিলা করছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ২০২৫ সালে ইউয়ানের মান দুই দশকের মধ্যে সবচেয়ে কম হতে পারে।
মুডি’স অ্যানালিটিকসের অর্থনীতিবিদ হ্যারি মারফি ক্রুজ বলেন, ‘নতুন শুল্ক, শিথিল মুদ্রানীতি এবং যুক্তরাষ্ট্রে ধীর সুদহার কমানোর প্রবণতা ইউয়ানকে দুর্বল করবে।’
তবে দুর্বল ইউয়ান রপ্তানিকারকদের জন্য কিছুটা সুবিধা এনে দেবে। কারণ এর ফলে বিদেশে চীনা পণ্যের দাম কমবে।
একদিকে ইউয়ানের মান কমলে চীনের রপ্তানি বাড়তে পারে, অন্যদিকে এটি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক আরও খারাপ করতে পারে।
বিশ্লেষকরা সতর্ক করেছেন, ইউয়ানের দ্রুত পতন হলে ২০১৫ সালের মতো পুঁজির বহির্গমন ঘটতে পারে।
চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং একটি শক্তিশালী মুদ্রার পক্ষে থাকলেও বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ইউয়ানের মান ধরে রাখাকে আরও কঠিন করে তুলেছে।
চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ইউয়ানের মান স্থিতিশীল রাখতে বিদেশি মুদ্রাবাজারে হস্তক্ষেপ করবে। তবে বেশি পতন ঠেকাতে এটি সীমিত মাত্রায় হবে।
বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন, ২০২৫ সালের শেষে ডলারের বিপরীতে ইউয়ানের মান ৭.৪৫-এ নেমে যেতে পারে।
এ ছাড়া চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক হংকংয়ে ৬০ বিলিয়ন ইউয়ানের কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিল জারি এবং বাজারে বড় আকারে তহবিল সরবরাহ করছে। যদিও এ পদক্ষেপ অভ্যন্তরীণ অর্থনীতিতে তারল্য বাড়ানোর প্রচেষ্টার সঙ্গে সাংঘর্ষিক হতে পারে।
চীনের অভ্যন্তরীণ অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে সরকার ভর্তুকি ও প্রণোদনা দেওয়ার পরিকল্পনা করছে। কিন্তু আমেরিকান শুল্ক নীতির কারণে ভোক্তাদের আস্থা ফিরে আসা কঠিন হতে পারে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, চীনের জন্য সামনের দিনগুলোতে অর্থনীতিকে স্থিতিশীল রাখা এবং আমেরিকার বাণিজ্য উত্তেজনা সামাল দেওয়া বেশ চ্যালেঞ্জিং হবে।
আরও পড়ুন:রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধ এক নিমেষে বন্ধ করতে পারে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরব। দেশটির এক সিদ্ধান্তেই ‘সঙ্গে সঙ্গে’ যুদ্ধ বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
এমনটাই দাবি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
এতদিন কেন সেটা ঘটল না, তা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন তিনি।
পূর্ব ইউরোপের যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য সৌদি আরবের কী করা উচিত, সেটাও বলে দিয়েছেন ট্রাম্প।
তিনি বলেছেন, সৌদি আরব ও তেল রপ্তানিকারী অন্য দেশগুলোর উচিত অবিলম্বে তেলের দাম কমিয়ে দেওয়া। তা হলেই রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ হয়ে যাবে।
আল জাজিরার উদ্ধৃতি দিয়ে ওয়াশিংটন থেকে এএফপি এ খবর জানায়।
সুইজারল্যান্ডের পার্বত্য শহর দাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের বার্ষিক সভা চলছে। সেখানেই স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে ফোরামের ব্যবসায়ী নেতাদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন ট্রাম্প।
তিনি বলেন, তেল রপ্তানিকারী দেশগুলো যে এখনও তেলের দাম কমায়নি, তাতে তিনি বিস্মিত।
তার মতে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের অনেক আগেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত ছিল সৌদিসহ অন্যদের।
পেট্রোলিয়াম রপ্তানিকারক দেশগুলোর সংস্থা ওপেকের সদস্যদের উদ্দেশে ট্রাম্প বলেন, ‘সৌদি ও ওপেকের সবাইকে আমি বলব, তেলের দাম কমান। আপনাদের এটা করতেই হবে।
‘সত্যি কথা বলতে, এখনও যে এটা করা হয়নি, তাতে আমি অবাক। তেলের দাম কমলে রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ সঙ্গে সঙ্গে বন্ধ হয়ে যাবে।’
ট্রাম্প আরও বলেন, ‘খনিজ তেলের দাম এখন অনেক বেশি। তাই যুদ্ধ চলবে। যুদ্ধ বন্ধ করতে চাইলে আপনাদের তেলের দাম কমাতে হবে।
‘যা হচ্ছে, তার জন্য ওই দেশগুলো অনেকাংশে দায়ী। এত মানুষ মারা যাচ্ছে! তেলের দাম কমার পর আমি সুদের হারও কমাতে বলব।’
ইউক্রেনে ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি বিশেষ সামরিক অভিযানের নির্দেশ দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এরপর প্রায় তিন বছর ধরে চলছে রক্তক্ষয়ী এ সংঘাত।
দীর্ঘ এ সময়ে দুই পক্ষের পাল্টা হামলায় হাজার হাজার মানুষের প্রাণহানির পাশাপাশি লক্ষাধিক মানুষ বাস্তুচ্যুত হন।
ক্ষমতার বাইরে থাকার সময় থেকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে কথা বলে আসছেন ট্রাম্প।
তিনি প্রায়ই বলতেন, ক্ষমতায় থাকলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ সমাধান করে ফেলতেন।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর সম্প্রতি ট্রাম্প বলেন, ইউক্রেন সংঘাত নিয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন তিনি। বৈঠকের আয়োজন চলছে।
গত ২০ জানুয়ারি দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতা গ্রহণ করেন ট্রাম্প। এরপর অবিলম্বে এ সংঘাতের সমাধান দাবি করেন তিনি।
শুধু তাই নয়, যুদ্ধ বন্ধ না করলে রাশিয়া নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হবে বলেও হুঁশিয়ারি করে দিয়েছেন আমেরিকার নতুন প্রেসিডেন্ট।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য