ভারতের উত্তরাখণ্ডে নির্মাণাধীন সুড়ঙ্গ ধসে আটকা পড়া ৪১ শ্রমিককে এখনও উদ্ধার করা যায়নি। পাইপ দিয়ে দেয়া হচ্ছে তাদের খাবার-পানি।
সুড়ঙ্গের ওই স্বল্প পরিসরেই হাঁটাহাটি করছেন তারা। পরিবারের সঙ্গে তাদের কথা বলানো হচ্ছে প্রযুক্তির মাধ্যমে। তবে এত কিছুর পরও গত ১২ নভেম্বর থেকে আটকে থাকা শ্রমিকরা কেমন আছেন, তা নিয়ে সংশয় রয়েই গেছে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বলছে, এরই মধ্যে সুড়ঙ্গের মধ্যে ৬ ইঞ্চি পাইপ ঢুকিয়ে খিচুড়ি, পানি দেয়া হয়েছে। এতদিন শ্রমিকরা ভাত, ছানা ও শুকনো ফল খেয়েই বেঁচে ছিলেন। কিন্তু সোমবার পাইপের মাধ্যমে শ্রমিকদের কাছে কলা, আপেলের টুকরো, ডালিয়া এবং খিচুড়ি সরবরাহ করা হয়েছে। এই খাবারে বদল আনার কথাও ভাবছে প্রশাসন।
আটকে পড়া শ্রমিকদের মানসিক স্বাস্থ্যের তত্ত্বাবধানে সরকার-নিযুক্ত মনোরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অভিষেক শর্মা তাদের বেঁচে থাকার জন্য ইচ্ছাশক্তির ওপর জোর দিচ্ছেন।
তিনি বলেছেন, ‘আমরা শ্রমিকদের সঙ্গে ক্রমাগত যোগাযোগ রেখেছি, মনোবল বজায় রাখার জন্য যোগব্যায়াম, হাঁটাচলা এবং তাদের মধ্যে কথোপকথনকে উৎসাহিত করছি। ভেতরে আটকে পড়াদের মধ্যে একজন গব্বর সিং নেগি, যিনি আগেও একই রকম অবস্থায় ছিলেন। তাদের মধ্যে গব্বরই সবচেয়ে বয়স্ক, গব্বর বলেছেন আটকে পড়াদের আত্মবিশ্বাস যথেষ্ট।’
খুব শিগগিরই আটকে পড়া শ্রমিকদের কাছে মোবাইল ফোন ও চার্জার পৌঁছে দেয়া হতে পারে। প্রশাসন পাইপের মাধ্যমে ভিজ্যুয়াল সংযোগ স্থাপনের জন্য এন্ডোস্কোপিতে ব্যবহৃত ক্যামেরাও আনছে।
প্রশানের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আটকে পড়া শ্রমিকরা তাদের প্রাতঃকৃত্যর জন্য ওই সুড়ঙ্গের ধ্বংসাবশেষ থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে একটি এলাকা নির্ধারণ করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সুড়ঙ্গের মধ্যে বিরাট ফাঁকা এলাকা রয়েছে। সেখানে প্রায় ২ কিলোমিটার জুড়ে হাঁটাহাটির জায়গা আছে।
ন্যাশনাল হাইওয়ে অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেডের ডিরেক্টর আংশু মনীশ খালখো বলেছেন, ‘আমরা প্রতি আধঘণ্টা অন্তর খাবার দিচ্ছি এবং প্রতি ২-৩ ঘণ্টায় যোগাযোগ বজায় রাখছি। বিভিন্ন রাজ্যের আধিকারিক, আত্মীয়স্বজন এবং চিকিৎসকরাও নিয়মিত ওদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন, আমাদের চ্যানেলের মাধ্যমে দ্বিমুখী যোগাযোগকে উৎসাহিত করা হচ্ছে।’
সুড়ঙ্গে বদ্ধ স্থান হওয়ায় সেখানে ঠান্ডা রয়েছে, তবে মশা সংক্রান্ত কোনো সমস্যা নেই। শ্রমিকদের স্নান বা পোশাক পরিবর্তনে কোনো বিকল্প আছে? একজন কর্মকর্তা এ নিয়ে বলেন, ‘স্নান করা বা কাপড় পরিবর্তন সম্ভবত এখন আটকে পড়া শ্রমিকদের বিবেচনায় নেই।’
উত্তরাখণ্ডের সিল্কিয়ারা থেকে উত্তরকাশীর দণ্ডালগাঁওয়ের মধ্যে সংযোগ রক্ষার জন্য তৈরি করা হচ্ছে এই সুড়ঙ্গ। চারধাম প্রকল্পের আওতায় নির্মাণাধীন এ টানেলটির নির্মাণকাজ সম্পন্ন হলে উত্তরকাশী থেকে যমুনোত্রী ধাম যাওয়ার দূরত্ব কমবে ২৬ কিলোমিটার।
চার কিলোমিটার দৈর্ঘ্যর এ টানেলের ১৫০ মিটার দীর্ঘ একটি অংশ গত ১২ নভেম্বর ভোর ৪টার দিকে ভেঙে পড়ে। বিষয়টি জানতে পেরে থানায় খবর দেয় স্থানীয় প্রশাসন। এরপর পুলিশের সঙ্গে উদ্ধারকাজে হাত দেয় রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী।
আরও পড়ুন:সাম্প্রতিক গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনসহ যা কিছু হচ্ছে তা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় এবং এ নিয়ে ভারতের মন্তব্য করা ঠিক হবে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রতিবেশী দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির তৃতীয় মেয়াদের ১০০ দিন পূর্তি উপলক্ষে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এস জয়শঙ্কর এসব কথা বলেন বলে মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমটি।
নরেন্দ্র মোদির ‘প্রতিবেশী প্রথম’ নীতি এবং বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে জয়শঙ্কর বলেন, ‘সবসময় সবকিছু নিজের অনুকূলে থাকে না। কোথাও না কোথাও থেকে কিছু কথা আসতে থাকে। কেউ না কেউ কিছু একটা বলে ফেলে বা করে ফেলে। এটা হয়, স্বাভাবিক।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে যা হয়েছে সেটা তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। তাদের নিজস্ব রাজনীতি রয়েছে। আমরা বর্তমান সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাব। তারা তাদের অবস্থান বুঝে নিক, সম্পর্কের মহত্ব বুঝুক। তাহলে প্রতিবেশীদের মধ্যকার সম্পর্কের মান ও মাত্রা অন্যরকম হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিবেশী উভয়েই উভয়ের ওপর নির্ভরশীল হয়। আমাদের অন্য প্রতিবেশী দেশগুলোতেও আগে যেসব রাজনৈতিক ঘটনা ঘটেছে, সেগুলোর পরিস্থিতি স্থিতিশীল হয়ে গেছে। বাংলাদেশেও অভ্যন্তরীণভাবে যা হওয়ার হবে। সেটা নিয়ে আমাদের মন্তব্য করা ঠিক হবে না।
‘তবে দুই দেশের সম্পর্ক আমাদের দিক থেকে স্থিতিশীল রাখতে চাই, সামনে এগিয়ে নিতে চাই। আমাদের পারস্পরিক ভালো সহযোগিতা রয়েছে, আমাদের ভালো বাণিজ্য রয়েছে। জনগণের সঙ্গে জনগণের ভালো সহযোগিতা রয়েছে। আমরা সেই পথ ধরেই এগিয়ে যেতে চাই।’
ভারতের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক এক প্রশ্নের জবাবে জয়শঙ্কর বলেন, 'ভারতের উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা পররাষ্ট্রনীতির মাধ্যমে কীভাবে এগিয়ে নেয়া যায়, আমাদের কূটনীতি ও অন্যান্য আলোচনা সেটাকে কেন্দ্র করেই হয়। সেসঙ্গে এটা আমাদেরও দায়িত্ব যে পৃথিবীতে শান্তি বজায় থাকুক। এটা আমাদের জন্যও প্রয়োজন।'
আরও পড়ুন:আফগানিস্তানের মধ্যাঞ্চলীয় দাইকুন্দি প্রদেশে বন্দুকধারীদের গুলিতে ১৪ জন নিহত ও চারজন আহত হয়েছেন।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম টোলো নিউজ বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানায়।
হামলায় হতাহত লোকজন দাইকুন্দি প্রদেশের বাসিন্দা ছিলেন। হজযাত্রীদের স্বাগত জানাতে গিয়েছিলেন তারা।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মুফতি আবদুল মতিন কানি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন।
তিনি এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি।
এদিকে বিদ্রোহী গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস) এ হামলার দায় স্বীকার করে।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশের কাছে ইলিশ চেয়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে চিঠি দিয়েছেন ভারতের ব্যবসায়ীরা। বুধবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতি বছর সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকেই ভারতে বাংলাদেশের ইলিশ আসতে থাকে। তবে এবার তাতে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। এমন অবস্থায় ফিশ ইমপোর্টার অ্যাসোসিয়েশন ইলিশ রপ্তানির জন্য বাংলাদেশ সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, পদ্মার ইলিশ এপারে এলে খুশি হন মৎস্য ব্যবসায়ীরাও। কারণ এই ইলিশ বিক্রি করে তাদের অনেকটাই লাভ হয়। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে গোটা বিষয়টিতে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
হিন্দুস্তান টাইমস আরও জানিয়েছে, গত পাঁচ বছর ধরে বাংলাদেশ থেকে ভারতে ইলিশ আমদানি হয়েছে। এবারও সেই রীতি মেনে ভারতে ইলিশ পাঠানোর জন্য বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের কাছে আবেদন করেছে ফিশ ইমপোর্টার অ্যাসোসিয়েশন।
এদিকে পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি ত্রিপুরা এবং আসামেও বাংলাদেশের ইলিশ রপ্তানি হয়ে এসেছে। বছর ভর এপার বাংলার মানুষ বাংলাদেশের ইলিশের জন্য মুখিয়ে থাকেন। আর বাংলাদেশের ইলিশ হলে তাদের পূজার আয়োজন একেবারে জমে যায়। গত বছরও এক হাজার ৩০০ টন ইলিশ গেছে বাংলাদেশ থেকে। তবে এবার কতটা ইলিশ আসবে, এমনকি আদৌ আসবে কিনা তা নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা।
বাংলাদেশের উন্নয়নে ভারতীয় লাইন অফ ক্রেডিট (এলওসি) প্রকল্পগুলো গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় এগুলো অব্যাহত থাকবে বলে পুনর্ব্যক্ত করেছেন অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
মঙ্গলবার সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মার সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এ কথা বলেন।
ড. সালেহউদ্দিন বলেন, ‘এগুলো গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প এবং আমরা এগুলো অব্যাহত রাখব।’
উপদেষ্টা এই প্রকল্পগুলো অগুরুত্বপূর্ণ মনে হওয়ার কোনো অবকাশ রাখেননি।
আলোচনাকালে ড. সালেহউদ্দিন ভারতীয় হাইকমিশনারকে আশ্বস্ত করে বলেন, ‘বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ একটি আকর্ষণীয় গন্তব্য।’
ভারতের পক্ষ থেকে বিষয়টি স্বীকার করে সহযোগিতা অব্যাহত রাখার ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে বলে জানান অর্থ উপদেষ্টা।
কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে ড. সালেহউদ্দিন ভবিষ্যতে সহযোগিতার পারস্পরিক সুবিধার কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘আমরা সহযোগিতা বাড়বে এ প্রত্যাশায় রয়েছি।’
ভারতের বিদ্যমান তিনটি এলওসি প্রকল্পের বাস্তবায়ন ও বিতরণ চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে উপদেষ্টা উল্লেখ করেন, এই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে এবং ভারতীয় পক্ষ এ বিষয়ে মতামত নিয়েছে।
ভারতকে প্রতিবেশী ও গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার উল্লেখ করে ড. সালেহউদ্দিন বলেন, দুই দেশ তাদের অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও জোরদার করার উপায় খুঁজছে।
ভারতের অর্থায়নে পরিচালিত প্রকল্পগুলোর গুরুত্ব তুলে ধরে ড. সালেহউদ্দিন জোর দিয়ে বলেন, এগুলো বাংলাদেশের চাহিদার আলোকে শুরু করা হয়েছে। যদিও কিছু বিতরণ সমস্যা রয়েছে, আমরা সেগুলো সমাধানের চেষ্টা করছি।’
ভবিষ্যতের জন্য ভারতীয় অর্থায়নের আওতায় নতুন প্রকল্পগুলোর সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করেন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘আমাদের যা আছে তা নিয়ে আমরা থেমে থাকব না। ভবিষ্যৎ প্রকল্প, সেগুলোর অর্থায়ন ও বাস্তবায়ন নিয়ে আলোচনা চলছে।’
দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ভারসাম্যহীনতার বিষয়টি স্বীকার করে এটি মোকাবিলা করা যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন উপদেষ্টা।
তিনি আরও জানান, ভারতীয় হাইকমিশনার তাকে আশ্বাস দিয়েছেন যে উভয় পক্ষেরই যেন সুবিধা হয় এমনভাবে বাংলাদেশ থেকে ভারতে আরও মানসম্পন্ন রপ্তানিকে উৎসাহিত করার প্রচেষ্টা চলছে।
বাণিজ্যের পাশাপাশি বাংলাদেশকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, বৈজ্ঞানিক গবেষণা এবং গবেষণাগারের উন্নয়নে সহায়তা দিয়ে থাকে ভারত।
ভারত বাংলাদেশে তাদের কোনো এলওসি প্রকল্প বন্ধ করেনি জানিয়ে ভারতীয় হাইকমিশনার বলেন, ‘এই প্রকল্পগুলো চলমান এবং বিভিন্ন খাতে বিস্তৃত বড় উদ্যোগ। ঠিকাদাররা আবার কাজে ফিরবেন।’
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে ভারতের সম্পৃক্ততার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে ভার্মা বলেন, 'আমরা সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত রয়েছি এবং উপদেষ্টার সঙ্গে আমার বৈঠক তার প্রমাণ।’
প্রকল্প বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জগুলো তুলে ধরে হাইকমিশনার বলেন, ভারতের পক্ষ থেকে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে এগুলো সমাধান করা হবে।
ভারতীয় অর্থায়নে বেশ কয়েকটি প্রকল্পের অগ্রগতি নিয়ে উপদেষ্টার সামনে তুলে ধরেন হাইকমিশনার এবং এই প্রকল্পগুলো এগিয়ে নেয়ার ব্যাপারে জোর অঙ্গীকার জানান।
বাংলাদেশ ও ভারত এ পর্যন্ত তিনটি লাইন অফ ক্রেডিট চুক্তি সই করেছে। প্রথমটি ৮৬২ মিলিয়ন ডলারের, যা ২০১০ সালের আগস্টে সই হয়। দ্বিতীয়টি দুই বিলিয়ন ডলারের, যা ২০১৬ সালের মার্চে সই হয় এবং তৃতীয়টি সাড়ে চার বিলিয়ন ডলারের, যা ২০১৭ সালের মার্চে সই হয়।
আরও পড়ুন:যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে যেকোনো বৈঠক আয়োজনের ক্ষেত্রে নিয়মিত প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূসের বৈঠকের সম্ভাব্যতা নিয়ে এক সাংবাদিক জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যে প্রক্রিয়া আছে, সে অনুযায়ী আমরা এগোব।’
তিনি বলেন, ‘এমন নয় যে তারা এক মাস আগে এ ধরনের বৈঠক চাইবে; বরং একটি পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে।’
উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘তারা ১০০ শতাংশ নিশ্চিত নন যে মোদি ইউএনজিএতে (জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশন) থাকবেন। আসলে তারা যদি দেখা করতে না চায়, তাহলে কিছু করার নেই।’
এর আগে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস দাবি করেছিল, চলতি সপ্তাহের শুরুতে বাংলাদেশ এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক অনুরোধ করেছে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রতিনিধি দলের ব্যাপারে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, প্রতিনিধি দলের সদস্য ১০ থেকে ১২ জনের বেশি হবে না।
কিছু সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত তালিকার বাইরেও আরেকটি তালিকা রয়েছে বলে জানান তিনি।
উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে যাচ্ছি।’
আগামী ২২ সেপ্টেম্বর নিউ ইয়র্কে পা রাখবেন প্রধান উপদেষ্টা। ২৯ সেপ্টেম্বর তার দেশে ফেরার কথা রয়েছে।
আগামী ১০ সেপ্টেম্বর শুরু হবে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশন। আর উচ্চ পর্যায়ের সাধারণ বিতর্ক শুরু হবে ২৪ সেপ্টেম্বর।
এর আগে ২২ ও ২৩ সেপ্টেম্বর সামিট অব দ্য ফিউচার অনুষ্ঠিত হবে।
এই সামিটে সব বয়সী নেতা, বিশেষজ্ঞ ও কর্মীরা একত্রিত হবেন। আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা কীভাবে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের চাহিদা আরও ভালোভাবে মেটাতে পারে, তা নিয়ে এতে আলোচনা হবে।
আরও পড়ুন:ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুরে নতুন করে সহিংসতায় অন্তত ছয়জন নিহত হয়েছেন।
অল ইন্ডিয়া রেডিও শনিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায়।
মণিপুরের রাজধানী ইম্ফল থেকে প্রায় ২২৯ কিলোমিটার পশ্চিমে জিরিবাম জেলার নুংচাপ্পি গ্রামে শনিবার ঘুমন্ত অবস্থায় এক বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করা হয়। পরে নুংচেপি এলাকায় দুই গ্রুপের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধে চারজন নিহত হয়।
এর আগে শুক্রবার বিষ্ণুপুর জেলার মৈরাং শহরে বোমা বিস্ফোরণে এক বেসামরিক নাগরিক নিহত ও ছয়জন আহত হন।
বিপুলসংখ্যক মানুষ শুক্রবার রাতে একত্রিত হয়ে মণিপুর রাইফেলসের আলাদা দুটি ব্যাটালিয়ন ঘেরাও করে অস্ত্র ও গোলাবারুদ লুটের চেষ্টা করে। তাদের ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয় সরকারি বাহিনী।
সুবিধাবঞ্চিত আর্থ-সামাজিক গোষ্ঠীগুলোর শিক্ষা ও সরকারি চাকরির জন্য যে তফসিলি জনগোষ্ঠীর মর্যাদা দেয়া হয়, সে তালিকায় মেইতেই সম্প্রদায়কে অন্তর্ভুক্ত করার প্রতিবাদে গত বছরের ৩ মে থেকে মণিপুরে বড় আকারের সহিংসতা শুরু হয়।
সহিংসতায় এখন পর্যন্ত ২০০ জনেরও বেশি নিহত এবং ১ হাজার ১০০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হন। বাস্তুচ্যুত হন ৬০ হাজারেরও বেশি মানুষ।
সহিংসতার মধ্যে রাজ্যের বিভিন্ন থানা ও পুলিশের কাছ থেকে পাঁচ হাজারের বেশি অস্ত্র লুট হয়।
আরও পড়ুন:সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের হাতে বাংলাদেশিদের হত্যাকাণ্ডকে নির্মমতা হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
হত্যা কোনো সমাধান নয় উল্লেখ করে তা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
ঢাকায় রাষ্ট্রীয় বাসভবনে ভারতভিত্তিক সংবাদ সংস্থা প্রেস ট্রাস্ট অফ ইন্ডিয়াকে (পিটিআই) দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ভারতের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে থাকা তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি নিয়ে মতপার্থক্য নিরসনের চেষ্টা করবে। এটি বছরের পর বছর বিলম্বিত হলে কারও উদ্দেশ্য সাধন হবে না।
সীমান্ত হত্যার নিন্দা জানিয়ে ড. ইউনূস বলেন, হত্যা কোনো সমাধান নয়।
তিনি বলেন, ‘কাউকে হত্যা করা কোনো সমাধান নয়। কারণ এটি মোকাবিলা করার আইনি উপায় রয়েছে। এটি পরিচালনা করার জন্য একটি স্থল প্রক্রিয়া এবং আইনি পদ্ধতি থাকতে হবে। এটা একতরফা ব্যাপার।
‘দেশ দখলের জন্য কেউ সীমান্ত অতিক্রম করছে না। যারা গুলি করে হত্যা করছে, তারা শুধুই নির্লজ্জ। এটা উদাসীনতা। এটা বন্ধ করতে হবে।’
দুই দেশের মধ্যে পানিবণ্টন সমস্যা অবশ্যই আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুযায়ী সমাধান করতে হবে উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, বাংলাদেশের মতো অববাহিকার দেশগুলোর সুনির্দিষ্ট অধিকার রয়েছে, যা তারা সংরক্ষণ করতে চায়।
তিনি বলেন, ‘এই ইস্যু (পানিবণ্টন) নিয়ে বসে এটা কোনো উদ্দেশ্য সাধন করছে না। কতটুকু পানি পাব জেনে যদি খুশি না হয়েও সই করি, তবুও ভালো হয়। এই সমস্যার সমাধান করতে হবে।’
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি নিয়ে সমস্যা সমাধানে যত দ্রুত সম্ভব চাপ দেবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নতুন সরকার তা অনুসরণ করবে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য