অ্যামাজন নদীর গোলাপী ও ধূসর রঙের ডলফিন একটি বিপন্ন প্রায় প্রজাতি। পৃথিবীতে পাওয়া কয়েকটি স্বাদু পানির ডলফিনের মধ্যে এটি অন্যতম।
গত সপ্তাহে ব্রাজিলের অ্যামাজন নদীর একটি উপনদীতে ১২০টি ডলফিনের মৃতদেহ ভাসতে দেখা গেছে। বিশেষজ্ঞরা সন্দেহ করছেন, মারাত্মক খরা এবং তীব্র গরমে তাদের মৃত্যু হয়েছে।
ব্রাজিলের বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন মন্ত্রণায়ের একটি গবেষণা সংস্থা মামিরাউয়া ইনস্টিটিউট জানিয়েছে, সোমবার টেফে লেকের আশেপাশে আরও দুটি মৃত ডলফিন পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে ইনস্টিটিউটের সদস্য মরিয়ম মারমনটেল বলেন, ‘আমরা গত সপ্তাহে ১২০টি মৃত ডলফিনের তথ্য নথিভুক্ত করেছি।’
বিশেষজ্ঞদের ধারণা, পানির উচ্চ তাপমাত্রাই ডলফিনগুলোর মৃত্যুর কারণ। গত সপ্তাহ থেকে টেফে লেক অঞ্চলের তাপমাত্রা ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১০২ ফারেনহাইট) ছাড়িয়ে গেছে৷
তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে ওই এলাকার জলাশয়গুলোও হাজার হাজার মাছও মারা গেছে বলে জানিয়েছে সেখানকার স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমগুলো।
অ্যামাজন নদীতে ডলফিন এমন একটি প্রজাতি যা পৃথিবীতে অবশিষ্ট অল্প কিছু মিঠা পানির ডলফিন প্রজাতির মধ্যে পড়ে। বিলুপ্তপ্রায় এ প্রাজাতিটিকে বাঁচাতে জীবিত ডলফিনগুলিকে উদ্ধার করতে পশুচিকিত্সক এবং জলজ স্তন্যপায়ী বিশেষজ্ঞদের দল পাঠানো হয়েছে। ব্রাজিলের চিকো মেন্ডেস ইনস্টিটিউট ফর বায়োডাইভারসিটি কনজারভেশনের পক্ষ থেকে একটি বিশেষজ্ঞ দল ডলফিনগুলো উদ্ধারে গিয়েছে বলে জানা গেছে।
তবে শুধু খরা ও উচ্চতাপই যে ডলফিনগুলোর মৃত্যুর কারণ, এ বিষয়ে এখনও পুরোপুরি নিশ্চিত হতে পারেননি বিজ্ঞানীরা। অন্যান্য সম্ভাব্য কারণ খতিয়ে দেখার চেষ্টা করছেন তারা। ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের ফলেও ডলফিনগুলোর মৃত্যু হতে পারে ধারণা তাদের।
গত সপ্তাহের শেষের দিকে লেক টেফের পানির তাপমাত্রা ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছায়, যা বছরের এই সময়ের গড় তাপমাত্রা থেকে ১০ ডিগ্রি বেশি। পানির তাপমাত্রা কয়েক দিনের জন্য মাঝে কিছুটা কমলেও রোববার তা আবার বেড়ে ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস হয়। সে সময় লেকে অন্তত ৭০টি মৃত ডলফিন দেখা যায়।
এ ঘটনার জন্য পরিবেশকর্মীরা অস্বাভাবিক গরমের জন্য জলবায়ু পরিবর্তনকে দায়ী করেছেন।
মামিরাউয়া ইনস্টিটিউটের ভূ-স্থানিক সমন্বয়কারী আয়ান ফ্লিসম্যান বলেন, ‘খরা অ্যামাজন অঞ্চলের নদী তীরবর্তী সম্প্রদায়গুলোর ওপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলছে। ভাল মানের পর্যাপ্ত পানি থাকায় অনেক সম্প্রদায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে।’
টেফ ৬০ হাজার বাসিন্দার শহর। তবে এখন নদীগুলো শুকনো থাকায় তার সরকার বিচ্ছিন্ন সম্প্রদায়গুলোকে সরাসরি খাবারও সরবরাহ করতে পারছেন না।
পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে ভারত থেকে আমদানির জন্য ঋণপত্র (এলসি) খোলা ৫২ হাজার টন পেঁয়াজ দ্রুত দেশে আনার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
এ লক্ষ্যে ভারতে বাংলাদেশ দূতবাসকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় রোববার চিঠি পাঠিয়েছে। এ ছাড়া দেশে যৌক্তিক মূল্যে পেঁয়াজ বিক্রি নিশ্চিত করতে কঠোর মনিটারিং করার জন্য সব জেলা প্রশাসক নির্দেশ দওয়া হয়েছে। খবর বাসসের
গত বৃহস্পতিবার ভারত পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার পরিপ্রেক্ষিতে দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যায়। তবে এই নিষেধাজ্ঞা আরোপের আগে সেখান থেকে বাংলাদেশে ৫২ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির জন্য এলসি খোলা হয়। এখন এই পেঁয়াজ দ্রুত দেশে আনার প্রক্রিয়া শুরু করেছে সরকার।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, ‘ভারত রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা আরোপের আগেই সেখান থেকে আমদানির জন্য ৫২ হাজার টন পেঁয়াজের এলসি খোলা হয়। এই পেঁয়াজ দ্রুত দেশে আনার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে আমরা বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। কিভাবে বিকল্প দেশ থেকে পেঁয়াজের আমদানি বাড়ানো যায়, সে চেষ্টা চলছে। একইসঙ্গে টিসিবির মাধ্যমে স্বল্প আয়ের মানুষের মাঝে পেঁয়াজ বিক্রি অব্যাহত থাকবে। দেশের সর্বত্র যৌক্তিক মূল্যে পেঁয়াজ বিক্রি নিশ্চিত করতে জেলা প্রশাসকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
দেশের মানুষ কষ্ট পায় এমন কিছু করা ঠিক হবে না উল্লেখ করে তিনি ব্যবসায়ীদের আরও দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানান।
সরকারের এই জ্যেষ্ঠ সচিব বলেন, কেবল সরকার সব ঠিক করে দেবে এমন ভাবাটা ঠিক নয়। ব্যবসায়ীদের বুঝতে হবে দেশের জনগনের জন্যই ব্যবসা।
তিনি বলেন, ভারত সরকার পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করল আর দেশে একদিনের ব্যবধানে পণ্যটির দাম হঠাৎ করে বেড়ে গেল! এটা ব্যবসায়ীদের দায়িত্বশীল আচরণ নয় বলে তিনি মন্তব্য করেন।
রোববার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ভ্যাট দিবসের সেমিনারে তপন কান্তি ঘোষ তার বক্তব্যে একদিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম ৮০ টাকা বাড়ে কীভাবে- এমন প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘যিনি একদিন আগে ১২০ টাকা কেজিতে পেঁয়াজ বিক্রি করলেন, পরদিন কীভাবে সেটার দাম ২০০ টাকা হয়ে গেলো? দাম বাড়তে তো সময় লাগার কথা। কিন্তু এক্ষেত্রে ব্যবসায়ীরা বাড়তি লাভের আশায় কোনো নৈতিকতা দেখালেন না।’
তিনি বলেন, ‘নিত্যপণ্যের সংকট তৈরি হলেই অনেক ব্যবসায়ী এর সুযোগ নিয়ে থাকেন। শনিবার হঠাৎ করে পেঁয়াজের দাম ৭০ থেকে ৮০ টাকা বেড়ে গেছে। এটা অবশ্যই দায়িত্বশীল আচরণ নয়।’
এদিকে পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণ এবং সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে সারাদেশে অভিযান পরিচালনা করছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
আরও পড়ুন:অস্ট্রেলিয়ায় যেসব বিদেশিরা বাড়ি কিনে তা খালি রাখবেন তাদের ওপর কর বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির সরকার।
স্কাই নিউজ অস্ট্রেলিয়াকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে কোষাধ্যক্ষ জিম চালমারস জানান, বাড়ি ভাড়ার সংকট কমানোর চেষ্টায় ও ধনী শহরতলিতে তথাকথিত ‘ভূতের বাড়ি’ (খালি বাড়ি) থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য রোববার এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়ার অনেক বাসিন্দাদের থাকার জন্য বাড়ির প্রয়োজন, কিন্তু সে অনুযায়ী পর্যাপ্ত বাড়ি নেই শহরে।’
বিদেশিদের ইতোমধ্যেই অস্ট্রেলিয়ায় প্রতিষ্ঠিত বাড়ি কেনার থেকে নিষেধ করা হয়েছে, যদি না তারা কাজ বা অধ্যয়নের জন্য সেখানে থাকেন। তারা যখন চলে যান, তখন তাদের সাধারণত বাড়ি বিক্রি করতে হয়।
এ ছাড়া বিদেশি বিনিয়োগকারীরা যারা ভাড়া দেয়ার জন্য অস্ট্রেলিয়ায় বাড়ি তৈরি করতে চান তাদের দ্বারা প্রদত্ত ফি কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
নতুন আইনে ‘ভূতের বাড়ির’ বিদেশি মালিকদের জন্য কর তিনগুণ বৃদ্ধি করা হবে বলে জানান জিম চালমারস।
আরও পড়ুন:জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের তীব্র চাপের মধ্যে শুক্রবার গাজা বিষয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ বৈঠকে বসতে যাচ্ছে। কয়েক সপ্তাহের ধ্বংসাত্মক যুদ্ধের পর অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানোর বিষয়ে বৈঠকে ভোট গ্রহণ করা হবে।
ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে বেসামরিক মানুষের মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে এবং ইসরায়েলের বোমাবর্ষণের মধ্যে জীবনযাত্রার অবস্থাকে বিপর্যয়কর হিসেবে বর্ণনা করা সত্ত্বেও সেশনের ফলাফল সম্পর্কে বলা যাচ্ছে না। খবর এএফপির
বুধবার কাউন্সিলের কাছে একটি চিঠিতে, গুতেরেস জাতিসংঘের সনদের আর্টিকেল ৯৯ আহ্বান করার অসাধারণ পদক্ষেপ নেয়, যেখানে বলা হয়েছে আন্তর্জাতিক রক্ষণাবেক্ষণের এবং শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য হুমকি হতে পারে তার মতে এমন যে কোনও বিষয় মহাসচিব কাউন্সিলের নজরে আনতে পারেন। বিগত কয়েক দশক ধরে নিয়োজিত থাকা কোনো মহাসচিব এ জাতীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।
গুতেরেস লিখেছেন, ‘ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনীর ক্রমাগত বোমাবর্ষণের মধ্যে, এবং আশ্রয় বা বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র না থাকায় আমি আশঙ্কা করছি যে মরিয়া পরিস্থিতির কারণে জনশৃঙ্খলা শিগগিরই সম্পূর্ণভাবে ভেঙে পড়বে, এমনকি সীমিত মানবিক সহায়তাও অসম্ভব হয়ে উঠবে।’
তিনি ফিলিস্তিনিদের জন্য সম্ভাব্য অপরিবর্তনীয় প্রভাব এবং সমগ্র মধ্যপ্রাচ্যে এক বিপর্যয় প্রতিরোধে ‘মানবিক যুদ্ধবিরতির’ আহ্বান জানান।
কাউন্সিল গুতেরেসের জরুরি আবেদনে মনোযোগ দেবে বলে জাতিসংঘ মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক আশা প্রকাশ করেছেন।
ডুজারিক বলেন, বুধবার থেকে জাতিসংঘ প্রধান যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন, ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরুন এবং অন্যান্য বেশ কটি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে কথা বলেছেন।
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি সেনাদের সঙ্গে হামাসের চলা তুমুল লড়াইয়ের মধ্যে সামজিক যোগাযোগমাধ্যমে আসা ভিডিও ফুটেজে বেশ কিছু পুরুষকে তাদের অন্তর্বাস খুলে মাটিতে হাঁটু গেড়ে বসা অবস্থায় দেখা গেছে।
উপত্যকাটির সুদূর উত্তরে বেইট লাহিয়ায় ওই ব্যক্তিদের আটক করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাদের মধ্যে অবশ্য কয়েকজনকে ছেড়েও দেয়া হয়েছে।
বিবিসি ফুটেজ যাচাই করে এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছে। ভিডিও ফুটেজ সম্পর্কে ইসরায়েলি সরকারের একজন মুখপাত্র বলেছেন, তাদের যে এলাকা থেকে আটক করা হয়েছে, ওই এলাকা থেকে বেসামরিক লোকজনকে সপ্তাহ আগেই সরিয়ে নেয়ার কথা ছিল।
ভিডিও ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, তাদের অন্তর্বাস খুলে মাটিতে হাঁটু গেড়ে বসে আছেন বেশ কয়েকজন পুরুষ এবং ইসরায়েলি সেনারা তাদের পাহারা দিচ্ছে।
আরেক ভিডিওতে কয়েক ডজন পুরুষকে একটি ফুটপাতে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। তাদের পাহারা দিচ্ছিল ইসরায়েলি সেনারা, সঙ্গে ছিল সাঁজোয়া যান।
অন্য কয়েকটি ছবিতে দেখা যাচ্ছে, কয়েকজন পুরুষকে সামরিক ট্রাকে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ইসরায়েলি গণমাধ্যমে এসব বন্দিদের আত্মসমর্পণকারী হামাস যোদ্ধা হিসেবে বর্ণনা করা হচ্ছে।
ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্সেস (আইডিএফ) সরাসরি ফুটেজ ও ছবিগুলো নিয়ে মন্তব্য করেনি, তবে মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি বলেছেন, সন্দেহভাজনদেরকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তাদের মধ্যে অনেকেই গত ২৪ ঘন্টায় আমাদের বাহিনীতে যোগ দিয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে যে তথ্য এসেছে তা যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার জন্য ব্যবহার করা হবে।
শুক্রবার, ইসরায়েলি সরকারের মুখপাত্র আইলন লেভি বলেছেন, যে লোকদের উত্তর গাজার জাবালিয়া এবং শেজাইয়াতে আটক করা হয়েছে ওই এলাকাগুলো হামাসের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত।
যাদের আটক করা হয়েছে তাদের মধ্যে একজনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তিনি সুপরিচিত ফিলিস্তিনি সাংবাদিক দিয়া আল-কাহলুত, কাজ করেন আল-আরাবি আল-জাদেদের সংবাদদাতা হিসেবে।
গাজার অবস্থা জানিয়ে রয়টার্স বলছে, টানা বিমান হামলার পর দক্ষিণ গাজায় স্থলপথে অভিযান চালাচ্ছে ইসরায়েলের সেনারা। দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসের উত্তরাঞ্চলে এই অভিযান চলছে ব্যাপকভাবে। ইসরায়েল কর্তৃপক্ষের ধারণা, হামাস নেতৃত্বের সদস্যরা খান ইউনিস শহরে লুকিয়ে আছে।
হামলায় বহু প্রাণহানির পর সাত দিনের জন্য ছিল যুদ্ধবিরতি, তবে সেই বিরতি শেষ হওয়ায় গাজায় ফের ইসরায়েলি হামলা শুরু হয় গত ১ ডিসেম্বর।
উত্তর গাজায় হামলা শুরুর পর এক পর্যায়ে সাধারণ মানুষকে দক্ষিণ গাজায় চলে যেতে বলা হয়। এখন সেই দক্ষিণ গাজাতে হামলা হচ্ছে। বিমান হামলা হয়েছে খান ইউনিস শহরে, এই হামলার যে তীব্রতা; যুদ্ধ শুরুর পর তা কখনও দেখা যায়নি।
ইসরায়েলে ঢুকে হামাস গত ৭ অক্টোবর আকস্মিক হামলা চালায়। ওই হামলার প্রতিক্রিয়ায় গাজায় টানা হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। হামলা শুরুর পর ৯ অক্টোবর গাজায় সর্বাত্মক অবরোধের ঘোষণা দিয়েছে দেশটি।
টানা হামলার শিকার গাজায় খাবার, পানি, ওষুধ ও জ্বালানির সংকট দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় কদিন আগে মিশরের রাফা ক্রসিং দিয়ে কয়েকটি ত্রাণবাহী ট্রাক ঢুকেছে ওই উপত্যকতায়।
এতদিন গাজায় জ্বালানি প্রবেশে ইসরায়েলের অনুমতি ছিল না। বিভিন্ন সংস্থা ও আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে সম্প্রতি শুধু হাসপাতাল ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলোর জন্য জ্বালানির অনুমতি দেয়া হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সেখানে ঢুকেছে কয়েকটি জ্বালানিবাহী ট্রাক।
এ অবস্থায় গাজায় জিম্মি ব্যক্তিদের মুক্তি ও ইরসায়েলের কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনিদের মুক্তির বিনিময়ে ও গাজায় মানবিক সহায়তায় পাঠানোর শর্তে গত ২৪ নভেম্বর প্রথম দফার যুদ্ধবিরতি শুরু হয়।
এরপর এই যুদ্ধবিরতি চলে সাত দিন। এই সাত দিনে হামাস ১১০ জনকে এবং ইসরায়েল মুক্তি দিয়েছে ২৪০ জনকে। আন্তর্জাতিক নানা মহলের চেষ্টা সত্ত্বেও শেষ পর্যন্ত এই যুদ্ধবিরতির মেয়াদ আর বাড়েনি।
আরও পড়ুন:ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় টানা হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। উত্তর গাজার পর এবার দক্ষিণ গাজাতেও চালানো তাণ্ডবে প্রতিদিনই প্রাণ যাচ্ছে বহু মানুষের। নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য এ অঞ্চলের বাসিন্দারা জায়গা খুঁজছেন, তবে তা মিলছে না।
গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় মূল শহর খান ইউনিসে হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলি সেনাদের তুমুল লড়াই চলছে। গাজার দ্বিতীয় এই বৃহত্তম শহরে বিমান হামলার পর এখন স্থল অভিযান চালাচ্ছে ইসরায়েল। বুলডোজার ও ট্যাংক নিয়ে অভিযান অব্যাহত রেখেছে তারা।
ইতোমধ্যে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা সেখান থেকে নতুন করে পালাতে বাধ্য হচ্ছে বলে বৃহস্পতিবারের রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
এদিকে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের দুমাস পরে চলমান ভয়াবহ সংঘাত সম্পর্কে জাতিসংঘ সতর্ক করে বলেছে, গাজার আইনশৃঙ্খলা একেবারে ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে।
ফিলিস্তিনের আরেক গ্রুপ ইসলামিক জিহাদ ও হামাস সূত্রে বলা হয়েছে, শহরের ভেতরে ইসরায়েলি সৈন্যকে ঢুকতে না দেয়ার জন্যে তারা লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু ইসরায়েলের সেনাবাহিনী বলছে, তারা প্রতিরক্ষা লাইন ভেঙে শহরের কেন্দ্রস্থলে অভিযান চালিয়েছে। তারা ৩০টি সুড়ঙ্গ ধ্বংসের দাবি করেছে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এক ভিডিও বিবৃতিতে বলেছেন, ইসরায়েলি সৈন্যরা হামাস প্রধান ইয়াহিয়া সিনাওয়ারের বাড়ির কাছে পৌঁছে গেছে। তার এক মুখপাত্র বলেছেন, তার বাড়িটি খান ইউনিস এলাকার ভূগর্ভে রয়েছে।
খান ইউনিসের এক বাসিন্দা অমল মাহদি বলেছেন, আমরা বিধ্বস্ত। মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। এ পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্যে একটি সমাধান পেতে আমাদের কাউকে দরকার।
গাজায় ইসরায়েল হামলা শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত ১৬ হাজার ২৪৮ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন বলে হামাস সরকার জানিয়েছে।
এএফপি বলছে, ইসরায়েলি আহ্বানের পরিপ্রেক্ষিতে ফিলিস্তিনিরা কিছুদিন আগে উত্তর গাজা ছেড়ে দক্ষিণে আশ্রয় নিয়েছিলেন। এখন তাদের দক্ষিণের শহর খান ইউনিসও ছাড়তে হচ্ছে। তাদের নেই খাবার, নেই আশ্রয়। তারা বন্ধ থাকা রাফা সীমান্তের দিকে ছুটছে। তাদের তাড়া করে ফিরছে ইসরায়েলি বোমা।
ইসরায়েলে ঢুকে হামাস গত ৭ অক্টোবর আকস্মিক হামলা চালায়। ওই হামলার প্রতিক্রিয়ায় গাজায় টানা হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। হামলা শুরুর পর ৯ অক্টোবর গাজায় সর্বাত্মক অবরোধের ঘোষণা দিয়েছে দেশটি।
টানা হামলার শিকার গাজায় খাবার, পানি, ওষুধ ও জ্বালানির সংকট দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় কদিন আগে মিশরের রাফা ক্রসিং দিয়ে কয়েকটি ত্রাণবাহী ট্রাক ঢুকেছে ওই উপত্যকতায়।
এতদিন গাজায় জ্বালানি প্রবেশে ইসরায়েলের অনুমতি ছিল না। বিভিন্ন সংস্থা ও আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে সম্প্রতি শুধু হাসপাতাল ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলোর জন্য জ্বালানির অনুমতি দেয়া হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সেখানে ঢুকেছে কয়েকটি জ্বালানিবাহী ট্রাক।
এ অবস্থায় গাজায় জিম্মি ব্যক্তিদের মুক্তি ও ইরসায়েলের কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনিদের মুক্তির বিনিময়ে ও গাজায় মানবিক সহায়তায় পাঠানোর শর্তে গত ২৪ নভেম্বর প্রথম দফার যুদ্ধবিরতি শুরু হয়।
এরপর এই যুদ্ধবিরতি চলে সাত দিন। এই সাত দিনে হামাস ১১০ জনকে এবং ইসরায়েল মুক্তি দিয়েছে ২৪০ জনকে। আন্তর্জাতিক নানা মহলের চেষ্টা সত্ত্বেও শেষ পর্যন্ত এই যুদ্ধবিরতির মেয়াদ আর বাড়েনি।
আরও পড়ুন:ফিলিপাইনের মধ্যাঞ্চলে একটি যাত্রবাহী বাস পাহাড়ি রাস্তা থেকে ছিটকে খাদে পড়ার ঘটনায় ২৯ জন নিহত হয়েছেন।
বুধবার কর্মকর্তারা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
প্রাদেশিক দুর্যোগ সংস্থার প্রধান রডারিক ট্রেন এএফপিকে বলেন, ‘বাসটি মঙ্গলবার বিকেলে অ্যান্টিক প্রদেশের হ্যামটিক পৌরসভায় যাওয়ার সময় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে।’
৫৩ জন যাত্রী নিয়ে বাসটি ইলোইলো সিটি থেকে প্রাচীন প্রদেশের সান জোসে দে বুয়েনাভিস্তা যাচ্ছিল। এ সময় রাস্তার কংক্রিটের বেষ্টনীর সঙ্গে ধাক্কা লেগে হ্যামটিক শহরের পাশে ১৫ মিটার গভীর খাদে পড়ে যায়।
প্রাদেশিক তথ্য দপ্তরের প্রধান জুনলি সায়লো রেডিওকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, ঘটনাস্থলেই ২৫ জন এবং স্থানীয় একটি হাসপাতালে আরও চারজন মারা গেছেন।
স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম এবিএস-সিবিএন জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে বাসচালক এবং তার সহকারীও রয়েছেন।
প্রাচীন প্রাদেশিক সরকারের বরাত দিয়ে আঞ্চলিক সংবাদপত্র পানায় নিউজ জানিয়েছে, কেনিয়ার এক ব্যক্তিসহ গুরুতর আহত দুই যাত্রীকে চিকিৎসার জন্য ইলোইলো সিটির একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
জরুরি কর্মীরা জীবিতদের উদ্ধার করছে এবং খাদে পড়ে থাকা লোকজনের লাশ উদ্ধার কাজ চলছে।
গভর্নর রোডোরা কাদিয়াও স্থানীয় বেতার কেন্দ্র ডিজেডআরএইচকে বলেছেন, যাত্রীর মধ্যে চারজন কেনিয়ার নাগরিক ছিল। এদের বেশিরভাগই অ্যান্টিক প্রদেশের বাসিন্দা।
আরও পড়ুন:ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা দ্বীপের মাউন্ট মারাপি আগ্নেয়গিরিতে অগ্ন্যুৎপাতের ফলে ১১ হাইকারের মৃত্যু হয়েছে।
আগ্নেয়গিরিটিতে রোববার এ অগ্ন্যুৎপাত শুরু হয়।
সোমবার পাদদাং অনুসন্ধান এবং উদ্ধার সংস্থার কর্মকর্তারা জানান, নিখোঁজদের খুঁজে বের করতে সেখানে অনুসন্ধান অভিযান চালিয়ে আরও তিনজনকে উদ্ধার করা হয়েছে। খবর এএফপির
সুমাত্রা দ্বীপের মাউন্ট মারাপি আগ্নেয়গিরি থেকে ছাইভস্ম আকাশের প্রায় ৩ হাজার মিটার ওপর পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে এবং এসব ছাইভস্ম আশপাশের গ্রামগুলোতে পড়ে।
স্থানীয় এবং জাতীয় সংস্থার কর্মকর্তারা সপ্তাহান্তে পর্বতে ভ্রমণকারীর সংখ্যা সংশোধন করে ৭৫ জনের কথা জানিয়েছেন। কিন্তু অনুসন্ধান দল সোমবার সকালে অগ্নিমুখের কাছ থেকে ১১ জনকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করেছে।
অগ্ন্যুৎপাত শুরু হওয়ার একদিন পর পাদদাং অনুসন্ধান এবং উদ্ধার সংস্থার প্রধান আব্দুল মালিক বলেন, ‘সেখানে থাকা ২৬ জনকে সরিয়ে নেয়া হয়নি। আমরা তাদের মধ্যে ১৪ জনকে খুঁজে পেয়েছি। এদের মধ্যে তিনজনকে জীবিত এবং ১১ জনকে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে।’
তিনি বলেন, ‘২৬ জনের মধ্যে ১২ জন এখনও নিখোঁজ রয়েছে। এ ছাড়া ৪৯ জন পাহাড় থেকে নেমে এসেছে। তাদের কয়েকজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘জীবিত অবস্থায় তিন ব্যক্তিকে অগ্নিমুখের কাছে পাওয়া যায়। তাদের অবস্থা দুর্বল ছিল এবং শরীরের কিছু অংশ পুড়ে গেছে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য