যুক্তরাষ্ট্রের আইনসভা কংগ্রেসে শনিবার রাতে আপৎকালীন তহবিল বিল পাসের মধ্য দিয়ে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারের শাটডাউন বা অচল হয়ে পড়া ঠেকিয়েছেন আইনপ্রণেতারা।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়, এক দশকের মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের চতুর্থ আংশিক শাটডাউন এড়াতে উত্থাপিত বিলে ডেমোক্রেটিক পার্টি নিয়ন্ত্রিত কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটে ভোট পড়ে ৮৮টি। এর বিপরীতে ভোট দেন ৯ আইনপ্রণেতা। পরে সেই বিলকে আইনে পরিণত করতে নির্ধারিত সময়সীমা শনিবার রাত ১২টা ১ মিনিটের আগেই প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে পাঠানো হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভসের রিপাবলিকান পার্টি থেকে নির্বাচিত স্পিকার কেভিন ম্যাককার্থি ভোটাভুটির ক্ষেত্রে দলীয় কট্টরপন্থি আইনপ্রণেতাদের মতামতকে অগ্রাহ্য করেন।
আগামী ১৭ নভেম্বর নাগাদ কেন্দ্রীয় সরকার পরিচালনার অর্থ জোগাতে নিম্নকক্ষে ৩৩৫-৯১ ভোটে বিল পাস হয়। এতে রিপাবলিকানদের চেয়ে ডেমোক্রেটিক পার্টির আইনপ্রণেতাদের ভোট বেশি ছিল।
এর আগে সপ্তাহের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারে শাটডাউন অনিবার্য মনে হচ্ছিল। শাটডাউন হলে সরকারের অধীনে কাজ করা ৪০ লাখ কর্মীর বেশির ভাগের বেতন হতো না। তারা কাজ করলেও পারিশ্রমিক পেতেন না।
শাটডাউনে বন্ধ হয়ে যেতে জাতীয় পার্ক থেকে আর্থিক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠানের মতো অনেক দপ্তরের সেবা। সম্ভাব্য শাটডাউনের কথা মাথায় রেখে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় বিভিন্ন সংস্থা কোন কোন সেবা বন্ধ হবে এবং কোনগুলো চালু থাকবে, তার তালিকাও করে রেখেছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শুক্রবার এক নির্বাহী আদেশে সে দেশে আমেরিকান সহায়তা বন্ধ করে দিয়েছেন।
ওয়াশিংটন থেকে এএফপি এ কথা জানায়।
ট্রাম্প অভিযোগ করেছেন, দক্ষিণ আফ্রিকার আইন সাদা মানুষদের (কৃষকদের) জমি দখলে দক্ষিণ আফ্রিকার কর্তৃপক্ষকে বৈধতা দেয়। যদিও দক্ষিণ আফ্রিকার কর্তৃপক্ষ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এ অভিযোগ মানতে নারাজ।
জমির মালিকানা দক্ষিণ আফ্রিকার একটি বিতর্কিত ইস্যু।
এএফপির প্রতিবেদন অনুযায়ী, সেখানকার বেশির ভাগ কৃষি জমির মালিক সাদা চামড়ার মানুষরা। অর্থাৎ দক্ষিণ আফ্রিকাতে সাদা মানুষদের শাসন অবসানের তিন দশক পরও মালিকানা সেটলারদের হাতে, যে জন্য দক্ষিণ আফ্রিকার সরকার ভূমি সংস্কারে চাপের মধ্যে আছে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ প্রযুক্তি মোগল ইলন মাস্ক বর্ণবাদী আইন থাকার কারণে দক্ষিণ আফ্রিকার রামাফোসা সরকারকে অভিযুক্ত করেছেন।
কিউবান বংশোদ্ভূত যুক্তরাষ্টের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও জানান, দক্ষিণ আফ্রিকার আমেরিকাবিদ্বেষী এজেন্ডার কারণে দেশটিতে জি-২০ আলোচনায় তিনি যোগ দেবেন না।
আরও পড়ুন:যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কার নোমগামী একটি ছোট যাত্রীবাহী বিমান বিধ্বস্ত হয়ে অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছেন।
স্থানীয় সময় শুক্রবার বিমানটি সমুদ্রের বরফের ওপর বিধ্বস্ত হয়ে পড়ায় আরোহীদের সবাই নিহত হন।
গত ২৫ বছরের মধ্যে রাজ্যটির সবচেয়ে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম।
উদ্ধারকারীরা হেলিকপ্টার দিয়ে তল্লাশির মাধ্যমে নোমের দক্ষিণ-পূর্বে বিমানটির ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পান।
কোস্ট গার্ডের তোলা ছবিতে দেখা যায়, বিধ্বস্ত বিমান ও হতাহতরা বরফের ওপর ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। জরুরি উদ্ধারকর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন।
নোমের মেয়র জন হ্যান্ডেল্যান্ডকে আবেগপ্রবণ দেখা গেছে। তিনি ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় সম্প্রদায়ের স্থিতিশীলতার ওপর জোর দেন।
তিনি জানান, নিহত যাত্রীদের স্মরণে প্রার্থনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।
বৈরী পরিবেশ, জমে থাকা বরফ এবং খারাপ আবহাওয়ার কারণে পুনরুদ্ধার প্রচেষ্টা কঠিন হয়ে পড়েছে।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, হতাহতদের নিরাপদে উদ্ধার কাজ করার জন্য সময় খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
এর আগে বেরিং এয়ারের সেসনা ক্যারাভান ৯ জন যাত্রী ও একজন পাইলটকে নিয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে উনালাকলেট থেকে উড্ডয়ন করলেও এক ঘণ্টার মধ্যে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। কর্মকর্তারা হঠাৎ উচ্চতা এবং গতি হ্রাসের কথা উল্লেখ করেছেন। তবে দুর্ঘটনার কারণটি নির্ধারণ করতে পারেননি তারা।
এমনকি কোনো বিপদের সংকেতও শনাক্ত করা যায়নি।
আলাস্কার দুর্গম ভূখণ্ড এবং পরিবহনের জন্য ছোট বিমানের ওপর নির্ভরতা অত্যাবশ্যক, তবে তা ঝুঁকিপূর্ণ।
ওয়াশিংটন ডিসি ও ফিলাডেলফিয়ায় প্রাণঘাতী দুর্ঘটনার পর যুক্তরাষ্ট্রে এক সপ্তাহের মধ্যে এটি তৃতীয় বড় ধরনের বিমান দুর্ঘটনা।
আরও পড়ুন:কানাডাকে আবারও যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম অঙ্গরাজ্য হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
স্থানীয় সময় রবিবার ফ্লোরিডার পাম বিচ থেকে এএফপি জানায়, নিজের ট্রুথ সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে ট্রাম্প এ প্রস্তাব দেন।
ট্রাম্প দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্র প্রতি বছর ‘কানাডাকে শত শত বিলিয়ন ডলার’ ভর্তুকি দেয়। এটি ছাড়া কানাডা একটি কার্যকর দেশ হিসেবে টিকে থাকতে পারবে না।
তিনি বলেন, ‘কানাডার আমাদের প্রিয় ৫১তম অঙ্গরাজ্য হওয়া উচিত, যা কানাডার জনগণের জন্য অনেক কম কর ও আরও ভালো সামরিক সুরক্ষা নিশ্চিত করবে এবং কোনো শুল্ক থাকবে না।’
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার মধ্যে বাণিজ্য নিয়ে উত্তেজনার মধ্যে ট্রাম্প এ মন্তব্য পুনর্ব্যক্ত করলেন।
ট্রাম্প প্রশাসন কানাডা থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছে, যা কানাডার অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে।
এর প্রতিক্রিয়ায় কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ২৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন, যা আমেরিকান পণ্যের (বিয়ার, ওয়াইন, ফল, জুস, পোশাক, খেলাধুলার সরঞ্জাম এবং গৃহস্থালি যন্ত্রপাতি) ওপর প্রযোজ্য হবে।
এ ছাড়া কানাডার অন্টারিও প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ডগলাস ফোর্ড ২৭ ফেব্রুয়ারি আগাম নির্বাচনের ডাক দিয়েছেন, যাতে তিনি ট্রাম্পের প্রস্তাবিত শুল্কের বিরুদ্ধে শক্তিশালী ম্যান্ডেট পেতে পারেন।
ফোর্ড সতর্ক করে বলেন, এ শুল্ক অন্টারিওর অর্থনীতিতে গুরুতর প্রভাব ফেলতে পারে এবং হাজার হাজার চাকরি হুমকির মুখে পড়বে।
ট্রাম্পের প্রস্তাবের প্রতিক্রিয়ায় কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেলানি জোলি এ মন্তব্যকে ‘কানাডার শক্তির প্রকৃতি সম্পর্কে সম্পূর্ণ অজ্ঞতা’ বলে আখ্যায়িত করেন।
ট্রাম্পের এ প্রস্তাব এবং সাম্প্রতিক বাণিজ্যিক উত্তেজনা যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার দীর্ঘস্থায়ী মিত্রতার মধ্যে নতুন চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এর আগেও একাধিকবার কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম অঙ্গরাজ্য হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন।
জানুয়ারি মাসে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর পদত্যাগের ঘোষণা দেওয়ার পর ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে পোস্ট করে বলেন, ‘কানাডার অনেক মানুষ আমাদের ৫১তম অঙ্গরাজ্যের অংশ হতে চায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘যদি কানাডা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একীভূত হয়, তাহলে কোনো শুল্ক থাকবে না, কর অনেকটাই কমে যাবে এবং তারা রাশিয়ান ও চীনা জাহাজের হুমকি থেকে সম্পূর্ণ নিরাপদ থাকবে।’
এর আগে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে ফ্লোরিডায় অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে ট্রাম্প কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোকে প্রস্তাব দেন যে, কানাডা চাইলে যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম অঙ্গরাজ্য হতে পারে। তবে প্রস্তাবটি হাস্যরসের ছলে করা হয়েছিল বলে খবর পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন:মেক্সিকো, কানাডা ও চীনের ওপর চড়া শুল্কারোপ করে একটি আদেশে সই করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
এতে উত্তর আমেরিকার দুই প্রতিবেশী দেশের কাছ থেকেও তাৎক্ষণিক পাল্টা পদক্ষেপ এসেছে। এর মধ্য দিয়ে দীর্ঘ সময়ের মিত্র মেক্সিকো ও কানাডার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের অনেকটা বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে।
সামাজিকমাধ্যমে এক পোস্টে ট্রাম্প বলেন, ‘আমেরিকাকে সুরক্ষায় এই শুল্কারোপ অপরিহার্য ছিল।’
অবৈধ ফেনটানিল উৎপাদন ও রপ্তানি বন্ধে এ তিন দেশকে আরও অনেক জোর দিতে হবে বলেও জানান তিনি।
পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ অভিবাসী কমিয়ে আনতে কানাডা ও মেক্সিকোকে জোরালো পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান ট্রাম্প।
তবে এই শুল্কারোপ ট্রাম্পের জন্য হিতে-বিপরীতও ঘটতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রে যদি মুদ্রাস্ফীতি বেড়ে যায়, তাহলে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য, পেট্রল, আসবাবপত্রসহ অন্যান্য পণ্য কম দামে পেতে ট্রাম্পের ওপর যে আস্থা মার্কিন ভোটাররা রেখেছিলেন, সেটা ঝুঁকিতে পড়বে।
এর মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় মেয়াদে শপথ নেওয়ার মাত্র দুই সপ্তাহের মধ্যে বৈশ্বিক রাজনীতি ও অর্থনীতিকে নতুন এক অস্থিরতায় ছুড়ে দিয়েছেন তিনি। চীনা থেকে আমদানি করা সব পণ্যে ১০ শতাংশ ও মেক্সিকো-কানাডীয় পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্কারোপ করতে অর্থনৈতিক জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন ট্রাম্প।
মেক্সিকো, কানাডা থেকে যে জ্বালানি তেল, গ্যাস ও বিদ্যুৎ আমদানি করা হয়, তাতে ১০ শতাংশ হারে শুল্কারোপের ঘোষণা দিয়েছেন রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট। দেশগুলো পাল্টা পদক্ষেপ নিলে শুল্কারোপ আরও বাড়িয়ে দেওয়ার একটি কৌশল অন্তর্ভুক্ত করেছেন তার আদেশে। এতে ব্যাপক অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের শঙ্কা রয়েছে।
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেন, ‘আজ ট্রাম্প যে পদক্ষেপ নিয়েছেন, তাতে আমাদের একত্রিত করার বদলে বিচ্ছিন্ন করে দিল হোয়াইট হাউস।’
কানাডা অ্যালকোহল ও ফলসহ আমেরিকান পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্কারোপের ঘোষণা দিয়েছে। অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ এক লাখ ৫৫ হাজার ডলারের শুল্কারোপ করা হয়েছে।
মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লদিয়া সেইনবামও একই ঘোষণা দেন। কিন্তু চীনের তরফ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো সাড়া মেলেনি।
আরও পড়ুন:যুক্তরাষ্ট্রের ফিলাডেলফিয়ার একটি ব্যস্ত শহরতলীতে শুক্রবার ছয় আরোহীসহ একটি ছোট উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়েছে।
এ দুর্ঘটনায় সৃষ্ট অগ্নিকাণ্ডে ভবন ও যানবাহন পুড়ে গেছে।
স্থানীয় কর্মকর্তারা এ তথ্য জানিয়েছেন বলে ফিলাডেলফিয়া থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে।
ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন এএফপিকে জানায়, লিয়ারজেট বিমানে ছয় আরোহী ছিলেন। তবে কেউ বেঁচে আছেন কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
যুক্তরাষ্ট্রের মধ্য আকাশে বুধবার রাতে সেনাবাহিনীর একটি হেলিকপ্টার ও আমেরিকান এয়ারলাইনসের যাত্রীবাহী বিমানের সংঘর্ষের পর আনুষ্ঠানিক ব্রিফিং করেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
ব্রিফিংয়ে তিনি জনবল নিয়োগের ক্ষেত্রে বারাক ওবামা ও জো বাইডেন-সমর্থিত বৈচিত্র্যকে বিমান নিরাপত্তার মান কমানোর জন্য দায়ী করেছেন।
ওয়াশিংটন টাইমস এ খবর জানিয়েছে।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার ব্রিফিংয়ে ট্রাম্প জানান, বুধবার রাতে যাত্রীবাহী উড়োজাহাজের সঙ্গে সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারের সংঘর্ষের কারণ এখনও জানা যায়নি। তবে কারণ জানতে তদন্ত চলছে।
কারণ জানা না গেলেও এ দুর্ঘটনার জন্য তিনি তার পূর্বসূরিদের জাতি বা লিঙ্গভিত্তিক অগ্রাধিকারের উদ্যোগকে দায়ী করেছেন।
তিনি বলেছেন, এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের জন্য যাদের নিয়োগ করা হয়েছে, তারা সবসময় যে যোগ্য লোক, তা কিন্তু নয়।
ট্রাম্পের অভিযোগ, ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্টদের আমলে নিয়োগের ক্ষেত্রে যে বৈচিত্র্য আনা হয়েছিল, তাতেই বিমান চলাচলে নিরাপত্তার মান কমেছে। আর সেটিই এ মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনার কারণ।
এ দুর্ঘটনায় উড়োজাহাজের ৬৭ আরোহীর সবাই নিহত হন।
ট্রাম্প বলেন, ‘আমি নিরাপত্তাকে সবার ওপরে রাখি, কিন্তু বারাক ওবামা, জো বাইডেন আসলে আরও বেশি শ্বেতাঙ্গ নিয়োগ দিতে চেয়েছেন।
‘ডেমোক্র্যাটরা এই নীতিকে প্রথমে রাখে। কিন্তু আমরা সবসময় যোগ্য লোকদের চাই।’
ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে ব্রিফিং শুরুর আগে ওয়াশিংটনের মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনায় নিহত এবং তাদের পরিবারের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন।
তিনি আরও জানান, ফেডারেল অ্যাভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের ভারপ্রাপ্ত প্রশাসক ক্রিস রোচেলোকে ঘটনা তদন্তে নিয়োগ করা হয়েছে।
স্থানীয় সময় বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ওয়াশিংটনের রিগ্যান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টের রানওয়ে ৩৩-এর কাছাকাছি যাত্রীবাহী বিমান ও সামরিক হেলিকপ্টারের সংঘর্ষ হয়।
যাত্রীবাহী উড়োজাহাজটিতে ৬০ জন যাত্রী ও ৪ জন ক্রু ছিলেন। আর সামরিক হেলিকপ্টারটিতে তিনজন সেনা ছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে ২০ বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে এটি ছিল সবচেয়ে মারাত্মক উড়োজাহাজ দুর্ঘটনা।
আরও পড়ুন:যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে বুধবার রাতে মধ্য আকাশে ৬৪ আরোহী থাকা একটি উড়োজাহাজের সঙ্গে সামরিক হেলিকপ্টারের সংঘর্ষ হয়েছে।
হোয়াইট হাউস থেকে মাত্র পাঁচ কিলোমিটার দূরের এ ঘটনায় পটোম্যাক নদী থেকে উদ্ধার করা হয়েছে কমপক্ষে ১৮ জনের মরদেহ।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানায়, বিভিন্ন ফুটেজে দেখা যায়, উড়োজাহাজ ও হেলিকপ্টারের সংঘর্ষে রাতের আকাশে আতশবাজির মতো আলোর ঝলক দেখা যায়। দুর্ঘটনার পর আকাশযান দুটি গিয়ে পড়ে ওয়াশিংটনের পটোম্যাক নদীতে।
আমেরিকান ঈগল এয়ারলাইনসের ৫৩৪২ ফ্লাইটটি ৬০ যাত্রী ও চার ক্রু নিয়ে কানসাস অঙ্গরাজ্য থেকে ওয়াশিংটন ডিসিতে যাচ্ছিল বলে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। অন্যদিকে ব্ল্যাকহক হেলিকপ্টারে তিনজন সেনা ছিলেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
তাদের ভাষ্য, হেলিকপ্টারটিতে জ্যেষ্ঠ কোনো কর্মকর্তা ছিলেন না।
যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ এফএএ জানায়, স্থানীয় সময় বুধবার রাত ৯টার দিকে বিমানবন্দরের কাছাকাছি এলাকায় পিএসএ এয়ারলাইনস পরিচালিত ফ্লাইটটির সঙ্গে সিকরস্কি ইউএইচ-৬০ হেলিকপ্টারের সংঘর্ষ হয়।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য