ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে পাকিস্তানের বেলুচিস্তানের মাস্তুং জেলায় শুক্রবার মসজিদের কাছে জশনে জুলুসে সমবেত হওয়া লোকজনের ওপর আত্মঘাতী বিস্ফোরণে কমপক্ষে ৫২ জন নিহত ও ৫০ জনের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।
পাকিস্তানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডনের প্রতিবেদনে জানানো হয়, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা হামলাকে আত্মঘাতী বিস্ফোরণ বলে মনে করছেন।
মাস্তুং জেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (ডিএইচও) আবদুল রাজ্জাক শাহি ডনকে অর্ধশতাধিক মানুষের প্রাণহানির বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
জেলা শহরের স্টেশন হাউস অফিসার (এসএইচও) মোহাম্মদ জাভেদ লেহরি জানান, প্রাণ হারানো ব্যক্তিদের মধ্যে এক পুলিশ কর্মকর্তাও আছেন।
এর আগে শহিদ নওয়াব গউস বকশ রাইসানি মেমোরিয়াল হসপিটালের প্রধান নির্বাহী ডা. সাইদ মিরওয়ানি ডনকে জানিয়েছিলেন, বিস্ফোরণে ৩৪ জন নিহত ও ১৩০ জনের বেশি মানুষ আহত হন।
তিনি পরবর্তী সময়ে জানান, তার পরিচালনাধীন হাসপাতালে ২৮টি মরদেহ আনা হয়েছে। অন্যদিকে ২২টি মরদেহ নেয়া হয় মাস্তুং জেলা হাসপাতালে।
মিরওয়ানি আরও জানান, শহিদ নওয়াব গউস বকশ রাইসানি হাসপাতালে অনেককে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। আহত ২০ জনের বেশি মানুষকে কুয়েটায় পাঠানো হয়েছে।
এর আগে মাস্তুংয়ের সহকারী কমিশনার (এসি) আত্তাহুল মুনিম জানান, বিস্ফোরণে ১৫ জন নিহত ও ৫০ জনের বেশি মানুষ আহত হন।
তিনি জানান, আলফালাহ সড়কের মদিনা মসজিদের কাছে জশনে জুলুসের জন্য জড়ো হতে থাকা লোকজনের ওপর বিস্ফোরণ হয়।
আরও পড়ুন:ভারতের মধ্যাঞ্চলে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে অন্তত ১২ মাওবাদী বিদ্রোহী নিহত হয়েছেন।
নয়াদিল্লি মাওবাদীদের দীর্ঘস্থায়ী সহিংসতা দমনে পদক্ষেপ জোরদার করেছে। শুক্রবার পুলিশ এই খবর জানায়।
কয়েক দশকের মাওবাদী সহিংসতায় ১০ হাজারেরও বেশি লোক নিহত হন।
বিদ্রোহীদের দাবি, তারা প্রান্তিক আদিবাসীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন।
সহিংসতার প্রাণকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত ছত্রিশগড়ের বিজাপুর জেলার বন-জঙ্গলে বৃহস্পতিবার এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে।
জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা সুন্দররাজ পি. এএফপিকে বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি, নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ১২ মাওবাদী নিহত হয়েছে।’
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, গত বছর নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে দুই শতাধিক মাওবাদী বিদ্রোহী নিহত হন।
ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, সরকার আশা করছে ২০২৬ সালের মধ্যে বিদ্রোহীদের দমন করা সম্ভব হবে।
বিদ্রোহীরা গত কয়েক বছরে সরকারি সেনাদের টার্গেট করে বেশ কিছু প্রাণঘাতী হামলা চালায়।
চলতি মাসের গোডার দিকে রাস্তায় পুঁতে রাখা বোমা বিস্ফোরণে ৯ ভারতীয় সেনা নিহত হন।
আরও পড়ুন:ভারতের মুম্বাইয়ে নিজ বাসায় অনুপ্রবেশকারীর ছুরিকাঘাতে আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা সাইফ আলী খান।
স্থানীয় সময় বুধবার গভীর রাতে এ ঘটনা ঘটে।
এনডিটিভির খবরে বলা হয়, রাত আড়াইটায় একজন অনুপ্রবেশকারী বাসায় ঢুকে সাইফ আলীকে ছয়বার ছুরিকাঘাত করে। বর্তমানে মুম্বাইয়ের লীলাবতী হাসপাতালে তার অস্ত্রোপচার চলছে।
হাসপাতালকর্মীরা বলছেন, সাইফ আলী খান এখন বিপদমুক্ত। রাতে তার নিউরো সার্জারি করা হয়েছে। বর্তমানে প্লাস্টিক সার্জারি চলছে।
এ ঘটনায় বান্দ্রা থানায় একটি এজাহার করা হয়েছে। তাতে বলা হয়, সাইফ আলী যখন বাসায় ঘুমিয়ে ছিলেন, তখন একজন অনুপ্রবেশকারী চুপিসারে তার বাসায় ঢোকেন। এ সময়ে ওই ব্যক্তির সঙ্গে সাইফের হাতাহাতি হয়।
এরপর সাইফ আলী খানকে ছয়বারের বেশি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যান অনুপ্রবেশকারী।
এক বিবৃতিতে লীলাবতী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, ছয়টি আঘাতের মধ্যে দুটি তার মেরুদণ্ডের কাছে গভীর ক্ষত তৈরি করেছে।
এরই মধ্যে তার বাসার তিন পরিচালককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। এ বিষয়ে তদন্ত করছে মুম্বাই ক্রাইম ব্রাঞ্চ।
এক বিবৃতিতে সাংবাদিক ও ভক্তদের ধৈর্য ধারণ করতে বলেছে সাইফ আলী খান টিম।
এতে বলা হয়, ‘এটি এখন পুলিশের কাজ। আমরা আপনাদের হালানাগাদ তথ্য জানিয়ে দেব।’
কারিনা কাপুর খান টিমও একই বিবৃতি দিয়ে বলেছে, ‘পরিবারের অন্য সদস্যরা ভালো আছেন।’
আরও পড়ুন:নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী মালালা ইউসুফজাই শনিবার বলেছেন, তিনি তার জন্মভূমি পাকিস্তানে ফিরে আসতে পেরে ‘অভিভূত’ ও ‘আনন্দিত’।
ইসলামি বিশ্বে নারী শিক্ষাবিষয়ক বিশ্বব্যাপী এক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে তিনি এখন পাকিস্তানে অবস্থান করছেন।
ইসলামাবাদ থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, ২০১২ সালে স্কুলছাত্রী মালালাকে পাকিস্তানি তালেবানরা গুলি করে এবং এরপর তিনি বিদেশে চলে যান। বিদেশে যাওয়ার পর মাত্র কয়েকবার তিনি দেশে আসেন।
রাজধানী ইসলামাবাদে সম্মেলনে পৌঁছে তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানে ফিরে আসতে পেরে আমি সত্যিই সম্মানিত, অভিভূত ও আনন্দিত।’
প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ দুই দিনব্যাপী এ শীর্ষ সম্মেলন উদ্বোধন করেন শনিবার সকালে। এতে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর প্রতিনিধিরা একত্রিত হবেন।
স্থানীয় সময় রোববার ইউসুফজাইয়ের সম্মেলনে ভাষণ দেওয়ার কথা রয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ প্ল্যাটফর্ম এক্সে শুক্রবার তিনি বলেন, ‘আমি সকল মেয়ের স্কুলে যাওয়ার অধিকার রক্ষার বিষয়ে কথা বলব। আফগান নারী ও মেয়েদের বিরুদ্ধে অপরাধের জন্য কেন তালেবান নেতাদের জবাবদিহি করতে হবে, সে ব্যাপারেও বলব।'
দেশটির শিক্ষামন্ত্রী খালিদ মকবুল সিদ্দিকী এএফপিকে জানান, আফগানিস্তানের তালেবান সরকারকে এ সম্মেলনে যোগদানের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে তালেবান ইসলামাবাদের এ আমন্ত্রণে কোনো সাড়া দেয়নি।
আফগানিস্তান বিশ্বের একমাত্র দেশ, যেখানে মেয়ে ও নারীদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে যেতে বাধা দেওয়া হয়। ২০২১ সালে ক্ষমতায় ফিরে আসার পর থেকে তালেবান সরকার আফগানিস্তানে কঠোরভাবে ইসলামী আইন আরোপ করেছে। জাতিসংঘ একে ‘লিঙ্গ বর্ণবাদ’ বলে অভিহিত করেছে।
সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, পাকিস্তান তীব্র শিক্ষা সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে। দেশটিতে দুই কোটি ৬০ লাখের বেশি শিশু স্কুলের বাইরে রয়েছে। তাদের অধিকাংশই দারিদ্র্যের কারণে স্কুলে ভর্তি হওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
প্রত্যন্ত সোয়াত উপত্যকার একটি স্কুল বাসে ২০১২ সালে পাকিস্তান তালেবান জঙ্গিদের হামলার পর ইউসুফজাই বিশ্বব্যাপী পরিচিত হয়ে ওঠেন। এরপর তাকে যুক্তরাজ্যে পাঠানো হয়।
পরবর্তী সময়ে তিনি নারী শিক্ষার জন্য বিশ্বব্যাপী প্রবক্তা হয়ে ওঠেন। ১৭ বছর বয়সে সর্বকনিষ্ঠ হিসেবে নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী হন তিনি।
আরও পড়ুন:আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের দিন ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পালিয়ে ভারতে যাওয়া ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণের বিষয়ে আবারও মন্তব্য থেকে বিরত থেকেছে নয়াদিল্লি।
সাপ্তাহিক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে বৃহস্পতিবার এক সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে প্রত্যর্পণের বিষয়ে মন্তব্য করেননি ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল।
তিনি বলেন, ‘আপনি জানেন যে, এক সপ্তাহ আগে আমি নিশ্চিত করেছিলাম যে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিষয়ে বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলোর কাছ থেকে আমাদের কাছে যোগাযোগ করা হয়েছে। এর বাইরে এ বিষয়ে আমার যোগ করার কিছু নেই।’
এর আগে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম গত রোববার বলেছিলেন, তারা শুনেছেন যে, শেখ হাসিনাকে ফেরত দেবে না ভারত।
‘আমাদের পর্যবেক্ষণ হলো তারা একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, তারা তাকে (হাসিনা) ফেরত দেবে না। আমরা এমনটাই শুনছি।’
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, শেখ হাসিনাকে ফেরতের বিষয়ে নয়াদিল্লির কাছ থেকে কোনো উত্তর না পেলে নির্দিষ্ট সময় পর বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দেবে ঢাকা।
আরও পড়ুন:ভারতের অর্থনৈতিক সংস্কার কর্মসূচি ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সই করা ঐতিহাসিক পরমাণু চুক্তির স্থপতি হিসেবে পরিচিত ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং মারা গেছেন, যার বয়স হয়েছিল ৯২ বছর।
হাসপাতালের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বাড়িতে হঠাৎ জ্ঞান হারিয়ে শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় বৃহস্পতিবার রাতে তাকে নয়াদিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেসে ভর্তি করা হয়।
‘বাড়িতে তাৎক্ষণিকভাবে চিকিৎসার ব্যবস্থা শুরু করা হয়েছিল। রাত আটটা ছয় মিনিটে তাকে মেডিক্যাল ইমার্জেন্সিতে নিয়ে আসা হয়, কিন্তু সমস্ত প্রচেষ্টা সত্ত্বেও তাকে বাঁচানো যায়নি এবং রাত ৯টা ৫১ মিনিটে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।’
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, ‘বয়সজনিত অসুস্থতা নিয়ে সিংয়ের চিকিৎসা চলছিল।’
একজন মৃদুভাষী টেকনোক্র্যাট মনমোহন সিং ১০ বছরের জন্য ভারতের সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদি প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন। দুর্দান্ত ব্যক্তিগত সততার মানুষ হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। সোনিয়া গান্ধী ২০০৪ সালে তাকে এ দায়িত্ব পালন করার জন্য বেছে নিয়েছিলেন, কিন্তু মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে তার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে।
২০১০ সালের কমনওয়েলথ গেমস আয়োজন নিয়ে আর্থিক কেলেঙ্কারি ও দুর্নীতির অভিযোগে জর্জরিত সিং ২০০৯ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত দ্বিতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। এর ফলে ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে হিন্দু জাতীয়তাবাদী ভারতীয় জনতা পার্টির কাছে কংগ্রেস পার্টির শোচনীয় পরাজয় হয়।
প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়ার পর মনমোহন সিং সাধারণ জীবনযাপন শুরু করেন।
২০১৪ সালে মনমোহনের স্থলাভিষিক্ত হওয়া প্রধানমন্ত্রী মোদি তাকে ভারতের অন্যতম ‘বিশিষ্ট নেতা’ বলে অভিহিত করেন, যিনি নম্র উৎস থেকে উঠে এসেছেন এবং বছরের পর বছর ধরে আমাদের অর্থনৈতিক নীতিতে একটি শক্তিশালী ছাপ রেখে গেছেন।
সোশ্যাল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে মোদি বলেন, ‘আমাদের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি (মনমোহন সিং) মানুষের জীবনযাত্রার উন্নতির জন্য ব্যাপক প্রচেষ্টা চালিয়েছেন।’
তিনি আইনপ্রণেতা হিসেবে সংসদে মনমোহনের হস্তক্ষেপকে ‘অন্তর্দৃষ্টিপূর্ণ’ বলে অভিহিত করেন।
আরও পড়ুন:গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর সহিংসতা নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশ করা তথ্য বিভ্রান্তিকর ও অতিরঞ্জিত বলে উল্লেখ করেছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং ফ্যাক্টস। একইসঙ্গে এ ধরনের অপরাধ নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য দেয়া থেকে বিরত থাকতে সবার প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং ফ্যাক্টসের ফেসবুকের ভেরিফায়েড পেজে শুক্রবার রাতে দেয়া এক পোস্টে এ কথা বলা হয়। এতে বলা হয়, ‘ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে ইন্ডিয়া টুডে, আনন্দবাজারসহ একাধিক ভারতীয় গণমাধ্যম আজ (শুক্রবার) জানিয়েছে- হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশে ২০২২ সালে ৪৭টি, ২০২৩ সালে ৩০২টি এবং ২০২৪ সালে ২ হাজার ২০০টি সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে।
‘তথ্যটি বিভ্রান্তিকর এবং অতিরঞ্জিত। স্বাধীন মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিস কেন্দ্রের মতে, ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংস ঘটনার সংখ্যা ১৩৮টি, যাতে ৩৬৮টি বাড়িঘরে হামলা এবং ৮২ জন আহত হয়েছে।’
প্রেস উইং ফ্যাক্টসের পোস্টে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিটি ঘটনার তদন্ত করছে এবং দোষীদের আইনের আওতায় আনতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ৪ আগস্ট থেকে ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে অন্তত ৯৭টি মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার অভিযোগে ৭৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
ফেসবুক পোস্টে আরও উল্লেখ করা হয়, ‘এসব ঘটনার বেশিরভাগই ৫ আগস্ট থেকে ৮ আগস্টের মধ্যে ঘটেছে, যখন দেশে কোনো সরকার ছিল না। এসব হামলার বেশিরভাগই ঘটেছে রাজনৈতিক কারণে।’
১৯৪৭-পূর্ববর্তী সময়ে অখণ্ড বাংলার মানচিত্র প্রকাশ করে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের ফেসবুক পোস্টের ‘তীব্র প্রতিবাদ’ জানিয়েছে ভারত সরকার।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল শুক্রবার নয়াদিল্লিতে সাপ্তাহিক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এই প্রতিবাদ জানান।
মাহফুজ আলমের যে পোস্ট নিয়ে আলোচনা হচ্ছে সেটি দেয়ার কিছুক্ষণ পরই তিনি ওয়াল থেকে ডিলিট করেছিলেন।
এক প্রশ্নের জবাবে ভারতের মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশ সরকারের কাছে বিষয়টি তুলে ধরেছি; তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছি। তা ছাড়া আপনি যে পোস্টের কথা বলছেন, তা সরিয়ে ফেলা হয়েছে বলেও জেনেছি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা সংশ্লিষ্ট প্রত্যেককে তাদের জনসমক্ষে মন্তব্যের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকার বিষয় স্মরণ করিয়ে দিতে চাই।’
জয়সওয়াল বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ ও অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের বিষয়ে ভারত যখন বার বার আগ্রহের ইঙ্গিত দিয়েছে, তখন জনসমক্ষে এ ধরনের বক্তব্য দেয়ার ক্ষেত্রে দায়িত্বশীলতা দেখানো দরকার।’
গত ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের রাতে উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ফেসবুক পোস্টে বাংলাদেশের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, ত্রিপুরা, মণিপুরসহ উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোকে যুক্ত করে একটি মানচিত্র প্রকাশ করেন।
১৯৪৭ সালে বাংলা ভাগের ধারাবাহিকতায় যে বাংলাদেশ হয়েছে, সেই ভূখণ্ডকে ‘খণ্ডিত’ বলে উল্লেখ করেন তিনি। কয়েক ঘণ্টা পর পোস্টটি ডিলিট করে দেয়া হয়। উপদেষ্টা মাহফুজ বা অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।
আরেক প্রশ্নে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রির সাম্প্রতিক ঢাকা সফরের প্রসঙ্গ টেনে রণধীর জয়সওয়াল বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি খুব স্পষ্ট। আমরা বলেছি- গণতান্ত্রিক, স্থিতিশীল, শান্তিপূর্ণ, প্রগতিশীল ও অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশকে আমরা সমর্থন করি।
‘আমরা পারস্পরিক আস্থা, সম্মান এবং একে অপরের উদ্বেগ ও স্বার্থের বিষয়ে পারস্পরিক সংবেদনশীলতার ভিত্তিতে বাংলাদেশের সঙ্গে ইতিবাচক ও গঠনমূলক সম্পর্ক গড়ার বিষয়ে ইচ্ছা পুনর্ব্যক্ত করেছি। আমরা আরও জোর দিয়েছি, বাংলাদেশের জনগণই ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের প্রধান অংশীজন।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য