মরক্কোতে ছয় দশকের বেশি সময়ের সবচেয়ে প্রাণঘাতী ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দুই হাজার ছাড়িয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের রোববারের প্রতিবেদনে জানানো হয়, ওই ভূমিকম্পের এক দিন পর অ্যাটলাস পর্বত এলাকায় খোলা আকাশের নিচে রাত্রিযাপন করতে হয়েছে বেঁচে যাওয়া লোকজনকে।
প্রতিবেশীরা এখনও পাহাড়ের ঢালে চাপা পড়া জীবিত লোকজনের খোঁজ করছেন, যেখানে বাড়িগুলো বানানো হয়েছে মাটির তৈরি ইট, পাথর ও কাঠ দিয়ে।
গত শুক্রবার রাতের ভূমিকম্পে ভেঙে পড়ে মসজিদের মিনার। এতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় পর্যটন নগরী মারাকেশের ঐতিহাসিক প্রাচীন শহরের।
মরক্কোর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২ হাজার ১২ জনে দাঁড়িয়েছে। আহত হয়েছে ২ হাজার ৫৯ জন, যাদের মধ্যে ১ হাজার ৪০৪ জনের অবস্থা সংকটাপন্ন।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস জানায়, ৬.৮ মাত্রার ওই ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল মারাকেশের ৭২ কিলোমিটারের মতো দক্ষিণ-পশ্চিমে।
উৎপত্তিস্থলের কাছে আমিজমিজ গ্রামে উদ্ধারকর্মীরা খালি হাতেই ধ্বংসাবশেষ সরানোর কাজ করছেন। ওই এলাকায় ধসে যাওয়া স্থাপনাগুলোর কারণে সংকীর্ণ রাস্তা চলাচলের অনুপযোগী হয়ে গেছে।
আইভরি কোস্টের ডালোয়া-ইসিয়া সড়কে দুটি মিনিবাসের সংঘর্ষে অনেকে হতাহত হন। ছবি: এএফপি
আইভরি কোস্টের পশ্চিমাঞ্চলে শুক্রবার দুটি মিনিবাসের সংঘর্ষে কমপক্ষে ২৬ জন নিহত ও ২৮ জন আহত হয়েছেন।
পরিবহন মন্ত্রণালয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে এএফপি এ খবর জানায়।
সড়ক পরিবহনের মহাপরিচালক ওমর সাকো এক বিবৃতিতে বলেন, ডালোয়া-ইসিয়া সড়কে দুটি মিনিবাসের সংঘর্ষে ২৬ জন নিহত ও ২৮ জন আহত হন। নিহত যাত্রীদের মধ্যে ১০ জন দগ্ধ হয়ে প্রাণ হারান।
বিবৃতিতে আর বলা হয়, ‘দুর্ঘটনাস্থলে মন্ত্রণালয়ের একটি দলকে তদন্ত করার জন্য পাঠানো হয়েছে এবং তদন্ত শুরু হয়েছে।’
কিছু রাস্তা ও যানবাহনের খারাপ অবস্থার কারণে এবং চালকরা ড্রাইভিং পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হওয়ায় আইভরি কোস্টে প্রায়ই মারাত্মক সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে ৷
গত মাসে গাগনোয়া শহরের কাছে দুর্ঘটনায় ২০ জন নিহত হয়। গত সেপ্টেম্বরে আইভরি কোস্টের উত্তরে একটি গাড়ি ও একটি ট্যাংকারের সংঘর্ষে ১৩ জন দগ্ধ হন।
পরিবহন মন্ত্রণালয়ের মতে, আইভরি কোস্টে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতি বছর গড়ে ১ থেকে দেড় হাজার মানুষের মৃত্যু হয়।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সরকার চালকদের লাইসেন্সের পয়েন্ট, পাঁচ বছরের বেশি পুরোনো গাড়ি আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা, রাস্তার রক্ষণাবেক্ষণ এবং ভিডিও ক্যামেরা স্থাপনসহ মারাত্মক দুর্ঘটনা কমাতে একাধিক ব্যবস্থা চালু করেছে।
আরও পড়ুন:
নৌকাডুবির ঘটনায় নিখোঁজ রয়েছে শতাধিক যাত্রী, যাদের বেশির ভাগই নারী। ছবি: এএফপি
নাইজেরিয়ার উত্তরাঞ্চলে নাইজার নদীতে শুক্রবার ২০০ যাত্রীবাহী নৌকা ডুবে ২৭ জনের প্রাণহানি হয়েছে।
এ ঘটনায় নিখোঁজ রয়েছে শতাধিক যাত্রী, যাদের বেশির ভাগই নারী।
নাইজেরিয়ার আবুজা থেকে এএফপি এ খবর জানায়।
নাইজার স্টেট ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সির মুখপাত্র ইব্রাহিম অদু এএফপিকে জানান, নৌকাটি কোগি রাজ্য থেকে পাশের নাইজার রাজ্যের একটি বাজারে যাওয়ার পথে ডুবে যায়।
কোগি রাজ্যের জরুরি পরিষেবার মুখপাত্র সান্দ্রা মুসা জানান, উদ্ধারকারীরা শুক্রবার সন্ধ্যায় নদী থেকে ২৭ জনের মরদেহ উদ্ধার করে। নিখোঁজদের উদ্ধারে ডুবুরিরা তল্লাশি চালাচ্ছে।
তিনি আরও জানান, ১২ ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে জীবিত কাউকে পাওয়া যায়নি।
কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করে বলতে পারেনি কী কারণে নৌকাটি ডুবে গেছে, তবে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ধারণক্ষমতার বাইরে অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাইয়ের কারণে নৌকাটি ডুবে যায়।
নাইজেরিয়ার প্রত্যন্ত অঞ্চলে ভালো সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় নৌকাই ওইসব অঞ্চলের চলাচলের একমাত্র বাহন।
আরও পড়ুন:
সুদানের একটি শিশুকে দেয়া হচ্ছে স্বাস্থ্যসেবা। ছবি: ইউএনবি
উত্তর আফ্রিকার দেশ সুদানে পাঁচ বছরের কম বয়সী অন্তত ৩৪ লাখ শিশু মারাত্মক মহামারি রোগের উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক তহবিল ইউনিসেফ।
এক বিবৃতিতে সুদানে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট মঙ্গলবার জানান, ভারি বৃষ্টিপাত ও বন্যার কারণে কলেরা, ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু জ্বর, হাম ও রুবেলার মতো রোগ আরও দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং আক্রান্ত রাজ্য ও এর বাইরে শিশুদের অবস্থা মারাত্মকভাবে খারাপ হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, চলমান অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে টিকাদানের হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাওয়া এবং স্বাস্থ্য, পানি, স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যবিধি অবকাঠামো ধ্বংসের কারণে এ সংকট দেখা দিয়েছে। সুদানের অনেক শিশুর পুষ্টির অবস্থার অবনতি তাদের আরও বেশি ঝুঁকিতে ফেলেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ইউনিসেফ গত ৯ সেপ্টেম্বর সুদানে ৪ লাখ ৪ হাজার ডোজ ওরাল কলেরা টিকা সরবরাহ করে। অভ্যন্তরীণ সংঘাতের কারণে সুদানে টিকা দেয়া ৮৫ শতাংশ থেকে প্রায় ৫০ শতাংশে নেমে এসেছে।
এতে বলা হয়, সংঘাতপূর্ণ এলাকাগুলোর ৭০ শতাংশের বেশি হাসপাতালেই কার্যকম বন্ধ রাখতে হয়েছে। কয়েক মাস ধরে বেতনও পাচ্ছেন না স্বাস্থ্যসেবা কর্মীরা।
গত বছরের এপ্রিলে সুদানের সশস্ত্র বাহিনী এসএএফ এবং র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) মধ্যে লড়াই শুরুর পর থেকে কমপক্ষে ১৬ হাজার ৬৫০ জন মারা গেছে এবং লক্ষ লক্ষ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এ সময় কলেরা, ম্যালেরিয়া, হাম ও ডেঙ্গু জ্বরের মতো মহামারি রোগ ছড়িয়ে পড়েছে, যেসব রোগের কারণেও অনেক মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
গত ১৭ আগস্ট দেশটিতে কলেরার প্রাদুর্ভাব ঘোষণা করেন সুদানের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হাইথাম মোহাম্মদ ইব্রাহিম। কলেরা ছড়িয়ে পড়ার জন্য সংঘাতের কারণে সৃষ্ট পরিবেশগত অবস্থার অবনতি এবং অপরিষ্কার পানির ব্যবহারকে দায়ী করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয়টি মঙ্গলবার জানায়, গত ১৫ জুলাই থেকে ১৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশটিতে ৩২৮ জনের মৃত্যুসহ ১০ হাজার ২২ জন কলেরায় আক্রান্ত হয়েছে।
আরও পড়ুন:
কেনিয়ার নিয়েরি কাউন্টির হিলসাইড এনদারাশা একাডেমি। ছবি: বিবিসি
কেনিয়ার মধ্যাঞ্চলে একটি বোর্ডিং স্কুলের ছাত্রাবাসে আগুনে ১৭ শিক্ষার্থীর প্রাণহানি ও ১৩ জন গুরুতর আহত হয়েছে বলে শুক্রবার জানিয়েছে আল জাজিরা।
স্থানীয় পুলিশের বরাতে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যমটি জানায়, নিয়েরি কাউন্টির হিলসাইড এনদারাশা একাডেমি নামের বিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসে আগুনে মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে। আহতদের একাধিক হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
আগুনে হতাহতদের পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি, তবে তাদের বেশির ভাগ শিশু বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
প্রাথমিক স্কুলটিতে আট শর মতো শিক্ষার্থী আছে, যাদের বয়স পাঁচ থেকে ১২ বছর।
পুলিশের মুখপাত্র রেসিলা ওনিয়াঙ্গো জানান, বৃহস্পতিবার রাতের আগুনের কারণ জানতে তদন্ত চলছে। এ বিষয়ে ‘প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা’ নেয়া হবে।
তিনি বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান, ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা মরদেহগুলো এমনভাবে পুড়ে গেছে যে, সেগুলো দেখে শনাক্তের উপায় নেই।
কেনিয়ার হট ৯৬ নামের এফএম রেডিওকে ওনিয়াঙ্গো জানান, আগুনে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে ঘটনাস্থলে কাজ করছে সরকারের একটি দল।
পূর্ব আফ্রিকার দেশটির প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম রুটো আগুনে প্রাণহানির খবরে দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আরও পড়ুন:
মালিতে দুর্ঘটনায় বিধ্বস্ত গাড়ি। ছবি: ইউএনবি
পশ্চিম আফ্রিকার দেশ মালিতে দুটি গাড়ির সংঘর্ষে ১৪ জন নিহত ও ২৯ জন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে ইউএনবি।
বার্তা সংস্থাটির খবরে বলা হয়, বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় ভোর ছয়টার দিকে দেশটির মধ্যাঞ্চলীয় ফুগানি গ্রামের কাছে ৬ নম্বর জাতীয় সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
মালির পরিবহন ও অবকাঠামো মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, রাজধানী বামাকোর দিকে যাওয়ার সময় বিপরীত দিক থেকে আসা ট্রেইলার ট্রাকের সঙ্গে একটি গাড়ির সংঘর্ষ হয়। এতে হতাহতদের সবাইকে ফানা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়।
ইউএনবির খবরে আরও জানানো হয়, দুর্ঘটনার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতি নির্ধারণে তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে মালির পরিবহন ও অবকাঠামো মন্ত্রণালয়।
সড়কের দুরাবস্থা ও নিম্নমানের যানবাহনের কারণে মালিতে প্রায়ই সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
সুদানের উত্তরাঞ্চলীয় আবু হামদান শহরের কাছে জমে থাকা বন্যার পানি। ছবি: এপি
উত্তর আফ্রিকার দেশ সুদানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে একটি বাঁধ ধসে কমপক্ষে ৬০ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো।
সুদানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের রোববার রাতের বিবৃতির বরাত দিয়ে আল জাজিরার খবরে বলা হয়, পোর্ট সুদানের উত্তরে আরবাত বাঁধ ধসের ফলে বন্যার পানিতে চারজন নিহত হন; ভেসে যায় ঘরবাড়ি।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, বন্যায় আটকে পড়া লোকজনকে উদ্ধারে জনবল মোতায়েন করা হয়েছে।
স্থানীয় কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে আল-তাঘির ও মেদামিকসহ কয়েকটি সংবাদমাধ্যম জানায়, বাঁধ ধসে প্রাণহানি বেড়ে কমপক্ষে ৬০ জনে দাঁড়িয়েছে।
বাঁধ দুর্ঘটনায় অনেকেই নিখোঁজ হয়েছেন।
জাতিসংঘের ভাষ্য, ধসের ঘটনায় ২০টি গ্রাম ধ্বংস হয়েছে। একই সঙ্গে ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৫০ হাজার মানুষের ঘরবাড়ি।
আলি ইসা নামের স্থানীয় এক বাসিন্দা আল জাজিরাকে জানান, বন্যার পানির কারণে লোকজনের গাড়িতে আটকা পড়ার বার্তা পেয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন:
স্কুলের কার্যক্রম চলাকালে ভবনটি ধসে পড়ে। ছবি: স্কাই নিউজ
নাইজেরিয়ার প্লাটো রাজ্যে দুই তলা স্কুলের ভবন ধসে ২২ জন নিহত হয়েছে বলে শনিবার জানিয়েছে স্কাই নিউজ।
সংবাদমাধ্যমটির খবরে বলা হয়, ভবনের ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েছিল ১৫৪ জন মানুষ। তাদের মধ্যে প্রাণ হারানো ২২ জন বাদে বাকি সবাইকে উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশের এক মুখপাত্রের বরাতে স্কাই নিউজের খবরে বলা হয়, উদ্ধারকৃতদের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
নাইজেরিয়ার জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা এনইএমএ এক ফেসবুক পোস্টে জানায়, এখনও হাসপাতালে আছেন ৩০ জন।
সংস্থাটি আরও জানায়, উদ্ধার তৎপরতা শেষ হয়েছে। দুর্ঘটনাস্থল পরিষ্কার করা হয়েছে।
প্লাটো রাজ্যের জস উত্তর জেলার বুসা বুজি সম্প্রদায়ের সেন্ট অ্যাকাডেমির নিয়ন্ত্রণাধীন ছিল দুই তলা স্কুল ভবনটি। স্কুলের কার্যক্রম চলাকালে ভবনটি ধসে পড়ে।
নিরাপত্তা তদারকিতে শৈথিল্য ও মানহীন নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের কারণে নাইজেরিয়ায় প্রায়ই ভবন ধসে পড়ে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য