চলমান বেশকিছু সাম্প্রদায়িক অসন্তোষের জেরে ভারতে হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গার শঙ্কা বাড়ছে।
৩১ জুলাই একটি ধর্মীয় শোভাযাত্রায় বাধা দেয়ার ঘটনায় অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছে হরিয়ানার গুরুগ্রাম জেলা ও নুহ। ওই ঘটনায় এ পর্যন্ত সাতজন নিহত হয়েছে, আহত হয়েছে অন্তত ৭০ জন।
ঘটনার ধারাবাহিকতায় ৩১ জুলাই রাতেই গুরুগ্রামের সেক্টর-৫৭-এর একটি মসজিদে হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। সে সময় মসজিদটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়; গুলিও চালায় দৃষ্কৃতকারীরা। ঘটনার সময় মসজিদের ইমাম নিহত হন।
২০১৫ সালের পর আবারও ওই অঞ্চলে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টির উপক্রম হয়েছে। ২০১৪ সালে বিজেপি হরিয়ানার ক্ষমতায় আসার এক বছর পর অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে রাজ্যটি।
এদিকে এ বছরের শুরুর দিকে দুই মুসলিম যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় ওই অঞ্চলে উত্তেজনা ছড়ায়। ঘটনার প্রধান অভিযুক্তকে ধরতে ব্যর্থ হয় পুলিশ। এতে পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়।
পরে প্রধান অভিযুক্ত বজরং দলকর্মী মনু মানেসার নামের ওই যুবক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করা এক ভিডিওতে ঘোষণা দেন, তিনি সোমবারের (হিন্দু) শোভাযাত্রায় অংশ নেবেন। এতে আবারও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে গুরুগ্রামের পরিস্থিতি।
সোমবারের ঘটনায় মনু মানেসারকে শোভাযাত্রায় দেখেই উত্তেজিত হয়ে সংঘর্ষে জড়ায় বলে দাবি স্থানীয়দের। তবে পুলিশ বলছে, তিনি (মনু) সেখানে যাননি।
এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে হরিয়ানার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল বিজ রয়টার্সকে বলেন, ‘দুই সম্প্রদায়ের মাঝে অবিশ্বাস ও অনাস্থার কারণে কিভাবে বিদ্বেষ ছড়িয়ে পড়তে পারে, তার বহিঃপ্রকাশ সোমবারের শোভাযাত্রায় সংঘর্ষ।
‘পরিস্থতি এখন স্বাভাবিক রয়েছে। এলাকার নিরাপত্তাও জোরদার করা হয়েছে। তবে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ফেরাতে আরও সময় লাগবে।’
গত ফেব্রুয়ারিতে ভিওয়ানিতে দুই মুসলিম যুবককে হত্যার ঘটনার পর থেকে মনু পলাতক। সেই মনু ভিডিও পোস্ট করে দাবি করেন, ধর্মীয় শোভাযাত্রায় তিনি থাকবেন। এই আবহে সোমবার (৩১ জুলাই) গুরুগ্রাম অলওয়ার মহাসড়কে শোভাযাত্রা থামান কয়েকজন। এরপরই মিছিলকে লক্ষ্য করে পাথর ছোঁড়া হয়। সরকারি ও বেসরকারি গাড়ি হয় হামলাকারীদের প্রধান লক্ষ্য। সে সময় পাশের এক শিবমন্দির চত্বরে আশ্রয় নেন প্রায় ২৫০০ মানুষ।
পরে সন্ধ্যার দিকে গুরুগ্রামের সোহনা মহাসড়কে ছড়িয়ে পড়ে দাঙ্গা। একাধিক গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় দাঙ্গাকারীরা। বেশকিছু বাড়িঘর, দোকানেও আগুন দেয়া হয়। ধর্মীয় উপাসনালয়ে হামলা হয়। পুলিশকে লক্ষ্য করে চলে ইট-পাটকেল বর্ষণ।
দাঙ্গায় দুই নিরাপ্তাকর্মীসহ অন্তত তিনজনের মৃত্যু হয়। আহত হন আরও অন্তত ২০০ জন। পরে দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের এলাকাতেও। দাঙ্গায় এখন পর্যন্ত হরিয়ানায় ৬ জন নিহত হয়েছেন।
এর মধ্যেই সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মোহরলাল খট্টর।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন। গুজব ও প্ররোচনা ঠেকাতে মোবাইল ও ইন্টারনেট পরিষেবা সাময়িক বন্ধ রাখা হয়েছে। সার্বক্ষণিক টহলে রয়েছে সশস্ত্র পুলিশ বাহিনী।
ভারতে সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দুদের সঙ্গে ধর্মীয় সংখ্যালঘু মুসলিমদের সংঘর্ষ নতুন কিছু নয়। তবে ২০১৪ সালে বিজেপি দেশটির ক্ষমতায় আসার পর থেকে এমন ঘটনা বেড়েছে।
এর আগে শুক্রবার খোলা জায়াগায় জুমার নামাজ পড়া নিয়ে এবং হিন্দু উৎসবের সময় মাংস বিক্রি নিয়ে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়ায়। হিন্দুদের ধর্মীয় অনুভূতি রক্ষার্থে স্থানীয় সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দু জনগোষ্ঠী এগুলো নিষিদ্ধও করতে চেয়েছে।
মুসলিম সম্প্রদায়ের দাবি, বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর দলটির হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির কারণে কট্টর হিন্দুত্ববাদীরা আরও সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এ অবস্থায় ভয়ের মধ্যে বসবাস করছে তারা।
তবে হিন্দু যুব বাহিনী নেতা প্রবীণ বাব্বারের অভিযোগ, ‘মুসলিমরা হিন্দুদের ওই শোভাযাত্রায় হামলা করে আমাদের অনেককে হত্যা করেছে।’
হুমকি দিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘সবসময় শুধু সমান জবাব নয়, কখনও কখনও আরও বেশি প্রতিক্রিয়া দেখানো হবে।’
এ ঘটনায় পুলিশকে দায়ী করেছেন কংগ্রেসের নুহের আইন প্রণেতা আফতাব আহমেদ। তার দাবি, হিন্দু নেতাদের উস্কানিমূলক বিবৃতির বিষয়ে সতর্ক করার পরও পুলিশ কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি।
তবে অভিযোগ খারিজ করে দিয়ে হরিয়ানা পুলিশ বলছে, খবর পেয়ে দ্রুতই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এ ছাড়া দাঙ্গা নিয়ন্ত্রণে তারা যথেষ্ট চেষ্টা করেছে। ওই ঘটনায় পুলিশের দুই সদস্য নিহত হয়েছে বলেও জানিয়েছে তারা।
গুরুগ্রাম আগে গুরুগাঁও নামে পরিচিত ছিল। ভারতের রাজধানী দিল্লির সীমান্তে অবস্থিত এই জেলায় ১৫ লাখ মানুষের বসবাস।
রাজধানীর পাশে হওয়ায় গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক এলাকায় পরিণত হয়েছে ওই এলাকা। গড়ে উঠেছে সুউচ্চ বাণিজ্যিক ভবন, বিলাসবহুল হোটেল, শপিং মল। ছোট ছোট উদ্যোক্তা থেকে শুরু করে বহুজাতিক বাণিজ্যিক সংস্থার কেন্দ্রে পরিণত হচ্ছে এই অঞ্চল। গুগল, আমেরিকার এক্সপ্রেস, ডেল, স্যামসাং, আর্নস্ট অ্যান্ড ইয়াং এবং ডেলয়েটের মতো আন্তর্জাতিক সংস্থার কার্যালয় এ এলাকাতেই। এ ছাড়া বিখ্যাত জাপানি গাড়ি নির্মাতা কোম্পানি সুজুকির প্রধান কারখানাও গুরুগ্রামের কাছে।
সহিংসতা ছড়ানোর পর মঙ্গলবার থেকে অনেক প্রতিষ্ঠান তার কর্মীদের বাসায় অবস্থান করে কাজ করার পরামর্শ দিয়েছে। সোমবারের ওই ঘটনার পর স্কুল-কলেজও বন্ধ করে দেয় স্থানীয় প্রসাশন। বুধবার থেকে সেগুলো অবশ্য আবার খুলতে শুরু করেছে।
রাজধানীর পাশেই এমন উত্তেজনাকর পরিস্থিতি নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ বাস্তবায়নে আন্তর্জাতিক অঙ্গন থেকে যে পরিমাণ বিনিয়োগ সরকার আশা করছে, তা ঝুঁকিতে ফেলেছে হরিয়ানার এমন পরিস্থিতি।
দিল্লির ইনস্টিটিউট অফ পিস অ্যান্ড কনফ্লিক্ট স্টাডিজের ফেলো তারা কার্থা বলেন, ‘দৃষ্কৃতকারীদের লক্ষ্য উত্তর ভারতের এই বাণিজ্যিক কেন্দ্র (হরিয়ানা)। সরকারের উচিত যেকোনো মূল্যে এই রাজ্যকে রক্ষা করা।’
আরও পড়ুন:‘আমি বাংলায় গান গাই’ গানের প্রখ্যাত শিল্পী প্রতুল মুখোপাধ্যায় আর নেই, যার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে শনিবার তার মৃত্যু হয়।
গত সপ্তাহ থেকেই এ শিল্পী হাসপাতালটির নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ছিলেন। জানুয়ারিতে হাসপাতালে ভর্তি করানোর সময় তার নাক দিয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। তাই স্নায়ু এবং নাক-কান ও গলা বিশেষজ্ঞদের পর্যবেক্ষণে চিকিৎসা হয় তার।
ফেব্রুয়ারির শুরুতে হঠাৎ শ্বাসকষ্ট শুরু হলে চিকিৎসকেরা পরীক্ষা করে জানান, প্রতুলের হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। দ্রুত তাকে কার্ডিওলজি বিভাগে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসা চলাকালে শিল্পীর ফুসফুসেও সংক্রমণ দেখা দেয়। দ্রুতই শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকে।
প্রতুলের গাওয়া অন্যতম জনপ্রিয় গান হলো ‘আমি বাংলায় গান গাই’, ‘ডিঙ্গা ভাসাও সাগরে সাথী রে’। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও তার গানের গুণমুগ্ধ ছিলেন। মমতার তত্ত্বাবধানেই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল তাকে।
বাংলাদেশের বরিশাল জেলায় ১৯৪২ সালে জন্মগ্রহণ করেছিলেন প্রতুল মুখোপাধ্যায়। বাবা ছিলেন সরকারি স্কুলের শিক্ষক। শৈশব থেকেই গান লিখে তাতে সুর দিয়ে গাওয়ার ঝোঁক ছিল তার।
প্রতুল মুখোপাধ্যায়কে পাদপ্রদীপের আলোয় আনে তার গাওয়া ‘আমি বাংলায় গান গাই’। এ ছাড়া সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের গল্প অবলম্বনে তৈরি ‘গোঁসাইবাগানের ভূত’ ছবির নেপথ্য শিল্পী ছিলেন তিনি।
তার মতে, সৃষ্টির মুহূর্তে লেখক-শিল্পীকে একা হতে হয়। তারপর সেই সৃষ্টিকে যদি মানুষের সঙ্গে মিলিয়ে দেওয়া যায়, কেবল তাহলেই সেই একাকিত্বের সার্থকতা। সেই একক সাধনা তখন সকলের হয়ে ওঠে।
আরও পড়ুন:পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় হারনাই জেলায় শুক্রবার শ্রমিক বহনকারী গাড়ি লক্ষ্য করে বোমা বিস্ফোরণে কমপক্ষে ১০ জন নিহত হয়েছেন।
দেশটির কোয়েটা থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।
জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তা শাহজাদ জাহরি এএফপিকে জানান, হারনাই জেলায় এ বোমা বিস্ফোরণে ১০ খনিশ্রমিক নিহত হন।
একই জেলার আরেক জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তা সেলিম তারিন এএফপিকে বলেন, ‘শ্রমিকরা কাজের জায়গা থেকে বাজারে কেনাকাটার জন্য যাচ্ছিলেন। ঠিক তখনই তাদের গাড়িটি আক্রমণের শিকার হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘এটি ছিল একটি আইইডি বিস্ফোরণ।আমরা হামলার তদন্ত করছি।’
হারনাই দক্ষিণ-পশ্চিম পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশের রাজধানী কোয়েটা থেকে ১৬০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত একটি জেলা।
কোনো গোষ্ঠী এ হামলার দায় স্বীকার করেনি, তবে বেলুচ লিবারেশন আর্মি প্রায়ই অন্যান্য প্রদেশের নিরাপত্তা বাহিনী বা পাকিস্তানিদের, বিশেষ করে বেলুচিস্তানের পাঞ্জাবিদের বিরুদ্ধে মারাত্মক হামলার দাবি করে।
আরও পড়ুন:পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে সেনাবাহিনীর আলাদা তিন অভিযানে অন্তত ৩০ জন নিহত হয়েছেন।
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গণমাধ্যম শাখা আন্তবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) শনিবার এক বিবৃতিতে জানায়, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে নিরাপত্তা বাহিনী প্রদেশের লাক্কি মারওয়াত, কারাক ও খাইবার জেলায় অভিযান চালায়।
এতে আরও বিবৃতিতে বলা হয়, লাক্কি মারওয়াতে অভিযানে ১৮ সন্ত্রাসী নিহত ও ছয়জন আহত হন। কারাক জেলায় আরও ৮ সন্ত্রাসী নিহত হন।
সেনাবাহিনী আরও বলেছে, তাদের তৃতীয় অভিযানটিতে গোষ্ঠীটির নেতাসহ ৪ সন্ত্রাসী নিহত ও দুজন আহত হন।
অভিযানে বিপুল পরিমাণ সমরাস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে আইএসপিআর।
এলাকায় অন্য সন্ত্রাসীদের উপস্থিতি নির্মূল করতে একটি ক্লিয়ারেন্স অপারেশন চালানো হচ্ছে।
সেনাবাহিনী বলেছে, দেশ থেকে সন্ত্রাসবাদের বিপদ নির্মূল করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী।
আরও পড়ুন:ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের বেঙ্গালুরুতে ২৮ বছর বয়সী বাংলাদেশি এক নারীর মরদেহ পাওয়া গেছে।
তাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে বলে পুলিশ ধারণা করছে।
পুলিশ জানায়, একটি অ্যাপার্টমেন্টে গৃহকর্মীর কাজ করতেন ওই নারী। বৃহস্পতিবার কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে এ ঘটনা ঘটে।
বাহিনীটি আরও জানায়, শুক্রবার সকালে স্থানীয়রা একটি নির্জন এলাকায় নারীর মৃতদেহ দেখতে পান। তারা তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশকে খবর দেন।
কর্ণাটক থেকে পিটিআই শনিবার এ খবর জানায়।
এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, প্রাণ হারানো নারী বাংলাদেশি নাগরিক, যিনি ছয় বছর ধরে ভারতে বসবাস করছিলেন।
তার কোনো বৈধ কাগজপত্র ছিল না। তবে তার স্বামীর বৈধ পাসপোর্ট রয়েছে এবং তিনি মেডিক্যাল ভিসায় ভারতে প্রবেশ করেছিলেন।
ওই নারী বৃহস্পতিবার তার সহকর্মীকে বলেছিলেন, তার কিছু ব্যক্তিগত কাজ আছে এবং দেরি হতে পারে। তাই সহকর্মীকে বলেন তাকে ছাড়াই চলে যেতে। তবে বাড়ি ফিরতে নারীর দেরি হলে তার স্বামী রামমূর্তি নগর থানায় অভিযোগ করেন।
পুলিশ কর্মকর্তা আরও জানান, ধারণা করা হচ্ছে, ওই নারী স্বেচ্ছায় কোনো নির্জন জায়গায় গিয়েছিলেন পরিচিত কারও সঙ্গে দেখা করার জন্য। শুক্রবার সকালে তার মরদেহ পাওয়া যায়। তার মাথায় গুরুতর জখমের চিহ্ন ছিল।
তথ্য পাওয়ার পর ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ ও ডগ স্কোয়াড নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন পূর্ব বিভাগ পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (ডিসিপি) দেবরাজ।
আরও পড়ুন:ভারতের মধ্যাঞ্চলে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে অন্তত ১২ মাওবাদী বিদ্রোহী নিহত হয়েছেন।
নয়াদিল্লি মাওবাদীদের দীর্ঘস্থায়ী সহিংসতা দমনে পদক্ষেপ জোরদার করেছে। শুক্রবার পুলিশ এই খবর জানায়।
কয়েক দশকের মাওবাদী সহিংসতায় ১০ হাজারেরও বেশি লোক নিহত হন।
বিদ্রোহীদের দাবি, তারা প্রান্তিক আদিবাসীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন।
সহিংসতার প্রাণকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত ছত্রিশগড়ের বিজাপুর জেলার বন-জঙ্গলে বৃহস্পতিবার এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে।
জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা সুন্দররাজ পি. এএফপিকে বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি, নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ১২ মাওবাদী নিহত হয়েছে।’
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, গত বছর নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে দুই শতাধিক মাওবাদী বিদ্রোহী নিহত হন।
ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, সরকার আশা করছে ২০২৬ সালের মধ্যে বিদ্রোহীদের দমন করা সম্ভব হবে।
বিদ্রোহীরা গত কয়েক বছরে সরকারি সেনাদের টার্গেট করে বেশ কিছু প্রাণঘাতী হামলা চালায়।
চলতি মাসের গোডার দিকে রাস্তায় পুঁতে রাখা বোমা বিস্ফোরণে ৯ ভারতীয় সেনা নিহত হন।
আরও পড়ুন:ভারতের মুম্বাইয়ে নিজ বাসায় অনুপ্রবেশকারীর ছুরিকাঘাতে আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা সাইফ আলী খান।
স্থানীয় সময় বুধবার গভীর রাতে এ ঘটনা ঘটে।
এনডিটিভির খবরে বলা হয়, রাত আড়াইটায় একজন অনুপ্রবেশকারী বাসায় ঢুকে সাইফ আলীকে ছয়বার ছুরিকাঘাত করে। বর্তমানে মুম্বাইয়ের লীলাবতী হাসপাতালে তার অস্ত্রোপচার চলছে।
হাসপাতালকর্মীরা বলছেন, সাইফ আলী খান এখন বিপদমুক্ত। রাতে তার নিউরো সার্জারি করা হয়েছে। বর্তমানে প্লাস্টিক সার্জারি চলছে।
এ ঘটনায় বান্দ্রা থানায় একটি এজাহার করা হয়েছে। তাতে বলা হয়, সাইফ আলী যখন বাসায় ঘুমিয়ে ছিলেন, তখন একজন অনুপ্রবেশকারী চুপিসারে তার বাসায় ঢোকেন। এ সময়ে ওই ব্যক্তির সঙ্গে সাইফের হাতাহাতি হয়।
এরপর সাইফ আলী খানকে ছয়বারের বেশি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যান অনুপ্রবেশকারী।
এক বিবৃতিতে লীলাবতী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, ছয়টি আঘাতের মধ্যে দুটি তার মেরুদণ্ডের কাছে গভীর ক্ষত তৈরি করেছে।
এরই মধ্যে তার বাসার তিন পরিচালককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। এ বিষয়ে তদন্ত করছে মুম্বাই ক্রাইম ব্রাঞ্চ।
এক বিবৃতিতে সাংবাদিক ও ভক্তদের ধৈর্য ধারণ করতে বলেছে সাইফ আলী খান টিম।
এতে বলা হয়, ‘এটি এখন পুলিশের কাজ। আমরা আপনাদের হালানাগাদ তথ্য জানিয়ে দেব।’
কারিনা কাপুর খান টিমও একই বিবৃতি দিয়ে বলেছে, ‘পরিবারের অন্য সদস্যরা ভালো আছেন।’
আরও পড়ুন:নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী মালালা ইউসুফজাই শনিবার বলেছেন, তিনি তার জন্মভূমি পাকিস্তানে ফিরে আসতে পেরে ‘অভিভূত’ ও ‘আনন্দিত’।
ইসলামি বিশ্বে নারী শিক্ষাবিষয়ক বিশ্বব্যাপী এক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে তিনি এখন পাকিস্তানে অবস্থান করছেন।
ইসলামাবাদ থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, ২০১২ সালে স্কুলছাত্রী মালালাকে পাকিস্তানি তালেবানরা গুলি করে এবং এরপর তিনি বিদেশে চলে যান। বিদেশে যাওয়ার পর মাত্র কয়েকবার তিনি দেশে আসেন।
রাজধানী ইসলামাবাদে সম্মেলনে পৌঁছে তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানে ফিরে আসতে পেরে আমি সত্যিই সম্মানিত, অভিভূত ও আনন্দিত।’
প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ দুই দিনব্যাপী এ শীর্ষ সম্মেলন উদ্বোধন করেন শনিবার সকালে। এতে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর প্রতিনিধিরা একত্রিত হবেন।
স্থানীয় সময় রোববার ইউসুফজাইয়ের সম্মেলনে ভাষণ দেওয়ার কথা রয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ প্ল্যাটফর্ম এক্সে শুক্রবার তিনি বলেন, ‘আমি সকল মেয়ের স্কুলে যাওয়ার অধিকার রক্ষার বিষয়ে কথা বলব। আফগান নারী ও মেয়েদের বিরুদ্ধে অপরাধের জন্য কেন তালেবান নেতাদের জবাবদিহি করতে হবে, সে ব্যাপারেও বলব।'
দেশটির শিক্ষামন্ত্রী খালিদ মকবুল সিদ্দিকী এএফপিকে জানান, আফগানিস্তানের তালেবান সরকারকে এ সম্মেলনে যোগদানের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে তালেবান ইসলামাবাদের এ আমন্ত্রণে কোনো সাড়া দেয়নি।
আফগানিস্তান বিশ্বের একমাত্র দেশ, যেখানে মেয়ে ও নারীদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে যেতে বাধা দেওয়া হয়। ২০২১ সালে ক্ষমতায় ফিরে আসার পর থেকে তালেবান সরকার আফগানিস্তানে কঠোরভাবে ইসলামী আইন আরোপ করেছে। জাতিসংঘ একে ‘লিঙ্গ বর্ণবাদ’ বলে অভিহিত করেছে।
সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, পাকিস্তান তীব্র শিক্ষা সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে। দেশটিতে দুই কোটি ৬০ লাখের বেশি শিশু স্কুলের বাইরে রয়েছে। তাদের অধিকাংশই দারিদ্র্যের কারণে স্কুলে ভর্তি হওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
প্রত্যন্ত সোয়াত উপত্যকার একটি স্কুল বাসে ২০১২ সালে পাকিস্তান তালেবান জঙ্গিদের হামলার পর ইউসুফজাই বিশ্বব্যাপী পরিচিত হয়ে ওঠেন। এরপর তাকে যুক্তরাজ্যে পাঠানো হয়।
পরবর্তী সময়ে তিনি নারী শিক্ষার জন্য বিশ্বব্যাপী প্রবক্তা হয়ে ওঠেন। ১৭ বছর বয়সে সর্বকনিষ্ঠ হিসেবে নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী হন তিনি।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য