কাঁচা মাছ খাওয়ার পাশাপাশি বৃষ্টির পানি পান করে প্রশান্ত মহাসাগরে দুই মাস প্রাণ রক্ষা করেছেন অস্ট্রেলিয়ার এক নাবিক।
সিডনির বাসিন্দা ৫১ বছর বয়সী টিম শ্যাডক বর্তমানে স্থিতিশীল ও খুব ভালো আছেন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়, পোষা কুকুর বেলাকে নিয়ে চলতি বছরের এপ্রিলে মেক্সিকো থেকে ফ্রেঞ্চ পলিনেশিয়ার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন শ্যাডক। কয়েক সপ্তাহ পর ঝড়ে তাদের নৌকাটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
হেলিকপ্টার থেকে শ্যাডক ও বেলার অবস্থান শনাক্তের পর চলতি সপ্তাহে ট্রলারে করে তাদের উদ্ধার করা হয়।
টুনা মাছ ধরার ওই ট্রলারে উদ্ধারকারীদের সঙ্গে যাওয়া চিকিৎসক অস্ট্রেলিয়াভিত্তিক সংবাদমাধ্যম নাইননিউজকে জানান, নাবিকের শরীরের তাপমাত্রা, হৃৎস্পন্দন, শ্বাস-প্রশ্বাসের হার ও রক্তচাপ স্বাভাবিক আছে।
বিবিসি জানায়, শ্যাডক তার ৬ হাজার কিলোমিটারের বেশি দূরত্বের নৌপথ যাত্রাটি শুরু করেন মেক্সিকোর লা পাজ শহর থেকে, তবে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কবলে পড়ে তার নৌযানটি বিকল হয়ে পড়লে কুকুরসহ সাগরে আটকা পড়েন তিনি।
বিশাল ও ঝুঁকিপূর্ণ উত্তর প্রশান্ত মহাসাগরে দুই মাস ভেসে থাকার পর শ্যাডকের সন্ধান মেলে মেক্সিকো উপকূলের কাছে। তাকে অনেক বেশি কৃশকায় ও বড় দাড়ি গজানো অবস্থায় পাওয়া যায়।
শ্যাডক নাইননিউজকে বলেন, ‘সাগরে খুবই কঠিন পরীক্ষার মধ্য দিয়ে গেছি।’
তিনি বলেন, ‘সাগরে একাকী দীর্ঘদিন পার করায় আমার বিশ্রাম ও ভালো খাবার দরকার। এর বাইরে আমার স্বাস্থ্যের অবস্থা খুবই ভালো।’
আরও পড়ুন:ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা দ্বীপের মাউন্ট মারাপি আগ্নেয়গিরিতে অগ্ন্যুৎপাতের ফলে ১১ হাইকারের মৃত্যু হয়েছে।
আগ্নেয়গিরিটিতে রোববার এ অগ্ন্যুৎপাত শুরু হয়।
সোমবার পাদদাং অনুসন্ধান এবং উদ্ধার সংস্থার কর্মকর্তারা জানান, নিখোঁজদের খুঁজে বের করতে সেখানে অনুসন্ধান অভিযান চালিয়ে আরও তিনজনকে উদ্ধার করা হয়েছে। খবর এএফপির
সুমাত্রা দ্বীপের মাউন্ট মারাপি আগ্নেয়গিরি থেকে ছাইভস্ম আকাশের প্রায় ৩ হাজার মিটার ওপর পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে এবং এসব ছাইভস্ম আশপাশের গ্রামগুলোতে পড়ে।
স্থানীয় এবং জাতীয় সংস্থার কর্মকর্তারা সপ্তাহান্তে পর্বতে ভ্রমণকারীর সংখ্যা সংশোধন করে ৭৫ জনের কথা জানিয়েছেন। কিন্তু অনুসন্ধান দল সোমবার সকালে অগ্নিমুখের কাছ থেকে ১১ জনকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করেছে।
অগ্ন্যুৎপাত শুরু হওয়ার একদিন পর পাদদাং অনুসন্ধান এবং উদ্ধার সংস্থার প্রধান আব্দুল মালিক বলেন, ‘সেখানে থাকা ২৬ জনকে সরিয়ে নেয়া হয়নি। আমরা তাদের মধ্যে ১৪ জনকে খুঁজে পেয়েছি। এদের মধ্যে তিনজনকে জীবিত এবং ১১ জনকে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে।’
তিনি বলেন, ‘২৬ জনের মধ্যে ১২ জন এখনও নিখোঁজ রয়েছে। এ ছাড়া ৪৯ জন পাহাড় থেকে নেমে এসেছে। তাদের কয়েকজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘জীবিত অবস্থায় তিন ব্যক্তিকে অগ্নিমুখের কাছে পাওয়া যায়। তাদের অবস্থা দুর্বল ছিল এবং শরীরের কিছু অংশ পুড়ে গেছে।’
আরও পড়ুন:টানা বিমান হামলার পর এবার ফিলিস্তিনের দক্ষিণ গাজায় স্থলপথে অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েলের সেনারা।
দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসের উত্তরাঞ্চলে তিন দিনের বিমান হামলার পর এই অভিযান শুরু হয় বলে সোমবার ইসরায়েলের সেনাবাহিনী পরিচালিত রেডিওর বরাতে জানিয়েছে বিবিসি।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) বলছে, ইসরায়েলি সেনারা দক্ষিণ গাজায় ‘দৃঢ় ও পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে’ অভিযানে অংশ নিয়েছে।
আইডিএফ প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল হেরজি হালেভি বলেছেন, আমরা উত্তর গাজায় জোরালো ও পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যুদ্ধ করেছি। এখন করছি দক্ষিণ গাজায়।
আইডিএফের একজন মুখপাত্র নিশ্চিত করেছেন, ইসরায়েল গাজায় মুখোমুখি যুদ্ধসহ স্থলপথে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।
ইসরায়েল কর্তৃপক্ষের ধারণা, হামাস নেতৃত্বের সদস্যরা খান ইউনিস শহরে লুকিয়ে আছে। তাদের দাবি, গাজা নগরীতে হামাসের একজন কমান্ডারকে হত্যা করা হয়েছে। ওই ব্যক্তি গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলার পেছনে জড়িত।
টানা হামলায় বহু প্রাণহানির পর সাত দিনের জন্য ছিল যুদ্ধবিরতি, তবে সেই বিরতি শেষ হওয়ায় ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ফের ইসরায়েলি হামলা শুরু হয়েছে শুক্রবার।
উত্তর গাজায় হামলা শুরুর পর এক পর্যায়ে সাধারণ মানুষকে দক্ষিণ গাজায় চলে যেতে বলা হয়। এখন সেই দক্ষিণ গাজাতে হামলা হচ্ছে। বিমান হামলা হয়েছে খান ইউনিস শহরে, এই হামলার যে তীব্রতা; যুদ্ধ শুরুর পর তা কখনও দেখা যায়নি।
ইসরায়েলি হামলায় সবমিলিয়ে গাজায় নিহতের সংখ্যা ১৫ হাজার ৫০০ ছাড়িয়েছে বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
এর আগে শনিবার সন্ধ্যায় এক ব্রিফিংয়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু হামাসকে নির্মূল এবং জিম্মিদের মুক্তি নিশ্চিত করার অঙ্গীকার করেন। তিনি বলেন, লক্ষ্য অর্জন না করা পর্যন্ত ইসরায়েলি সামরিক অভিযান চলবে।
নেতানিয়াহু বলেন, একটি কঠিন যুদ্ধ আমাদের সামনে।
খান ইউনিস এবং রাফাহ শহর মিশরের সীমান্তে। ভারী বিমান হামলায় ওই এলাকার এখন ভয়াবহ অবস্থা। ইসরায়েল উত্তর গাজায় হামলার পর এখন দক্ষিণের এই শহুরে তাণ্ডব শুরু করেছে।
ইসরায়েলে ঢুকে হামাস গত ৭ অক্টোবর আকস্মিক হামলা চালায়। ওই হামলার প্রতিক্রিয়ায় গাজায় টানা হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। হামলা শুরুর পর ৯ অক্টোবর গাজায় সর্বাত্মক অবরোধের ঘোষণা দিয়েছে দেশটি।
টানা হামলার শিকার গাজায় খাবার, পানি, ওষুধ ও জ্বালানির সংকট দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় কদিন আগে মিশরের রাফা ক্রসিং দিয়ে কয়েকটি ত্রাণবাহী ট্রাক ঢুকেছে ওই উপত্যকতায়।
এতদিন গাজায় জ্বালানি প্রবেশে ইসরায়েলের অনুমতি ছিল না। বিভিন্ন সংস্থা ও আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে সম্প্রতি শুধু হাসপাতাল ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলোর জন্য জ্বালানির অনুমতি দেয়া হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সেখানে ঢুকেছে কয়েকটি জ্বালানিবাহী ট্রাক।
এ অবস্থায় গাজায় জিম্মি ব্যক্তিদের মুক্তি ও ইরসায়েলের কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনিদের মুক্তির বিনিময়ে ও গাজায় মানবিক সহায়তায় পাঠানোর শর্তে গত ২৪ নভেম্বর প্রথম দফার যুদ্ধবিরতি শুরু হয়।
এরপর এই যুদ্ধবিরতি চলে সাত দিন। এই সাত দিনে হামাস ১১০ জনকে এবং ইসরায়েল মুক্তি দিয়েছে ২৪০ জনকে। আন্তর্জাতিক নানা মহলের চেষ্টা সত্ত্বেও শেষ পর্যন্ত এই যুদ্ধবিরতির মেয়াদ আর বাড়েনি। এরই প্রেক্ষাপটে শুক্রবার ফের গাজায় হামলা শুরু করে ইসরায়েল।
আরও পড়ুন:ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে আইফেল টাওয়ারের কাছে পর্যটকদের ওপর হামলায় একজন নিহত ও দুজন আহত হয়েছেন।
স্থানীয় সময় শনিবার সন্ধ্যায় ওই হামলার ঘটনা ঘটে বলে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেরাল্ড দারমানিনের বরাতে জানিয়েছে বিবিসি।
দারমানিন সাংবাদিকদের বলেছেন, পুলিশ দ্রুত একটি টেজার স্টানগান ব্যবহার করে ২৬ বছর বয়সী একজন ফরাসি নাগরিককে গ্রেপ্তার করেছে।
তিনি জানান, সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে ২০১৬ সালে আরেকটি হামলার পরিকল্পনা করার জন্য চার বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছিল। তিনি ফরাসি নিরাপত্তা পরিষেবার ওয়াচ লিস্টে ছিলেন। তার মানসিক অসুস্থতা রয়েছে।
বিবিসি বলছে, সন্দেহভাজন ব্যক্তি একটি পর্যটক দম্পতির কাছে গিয়ে এক জার্মান নাগরিককে ছুরিকাঘাত করেন। হামলাকারীকে গ্রেপ্তার করার আগে তিনি হাতুড়ি দিয়ে আরও দুইজনকে আক্রমণ করেন। আহতদের জরুরি সেবা দিয়ে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন:
ফিলিপাইনের দক্ষিণের মিন্দানাও অঞ্চলে ৭ দশমিক ৬ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। ভূমিকম্পের পর মিন্দানাও দ্বীপে সুনামি সতর্কতা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সুনামি সতর্কতা ব্যবস্থা। তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনও জানা যায়নি।
শনিবার স্থানীয় সময় রাত ১০টা ৩৭ মিনিটে এ কম্পন অনুভূত হয়। যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস জানায়, ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল ফিলিপাইনের হিনাতুয়ান শহরের ২১ কিলোমিটার উত্তরপূর্বে। ভূপৃষ্ঠের ৩২ দশমিক ৮ কিলোমিটার গভীরে।
অন্যদিকে, মিন্দানাওয়ে আঘাত হানা ভূমিকম্পের মাত্রা ৭ দশমিক ৫ ছিল বলে জানিয়েছে ইউরোপীয়-ভূমধ্যসাগরীয় ভূমিকম্প কেন্দ্র (ইএমএসসি)। তাদের তথ্যানুযায়ী, ভূমিকম্পটির উৎপত্তি ভূপৃষ্ঠ থেকে ৬৩ কিলোমিটার গভীরে।
ফিলিপাইনের উপকূলীয় শহর হিনাতুয়ানের পুলিশ প্রধান রেমার্ক জেনতালান বলেছেন, ভূমিকম্পের পর শহর এবং আশেপাশের এলাকার বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। তবে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা দল এখনও কোথাও হতাহত হওয়া বা ক্ষয়ক্ষতির কোনো খবর পায়নি।
ভূমিকম্পের পর ফিলিপাইনের সিসমোলজিক্যাল এজেন্সি-ফিভল্ক্স থেকে দেশটিতে সুনামির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ওই সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় মধ্যরাতে সুনামি আঘাত হানতে পারে এবং তা কয়েকঘণ্টা স্থায়ী হতে পারে।
এ ঘটনায় জাপানের দক্ষিণ-পশ্চিমের উপকূলীয় অঞ্চলেও সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
জাপানের টেলিভিশন এনএইচকে থেকে প্রকাশিত সতর্কতামূলক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভূমিকম্প আঘাত হানার প্রায় আধাঘণ্টা পর (জাপানের স্থানীয় সময় রোববার ১:৩০ মিনিট) সমুদ্র থেকে প্রায় এক মিটার উঁচু ঢেউ জাপানের দক্ষিণপশ্চিম উপকূলে উঠে আসতে পারে।
এর আগে, গত ১৭ নভেম্বর ফিলিপাইনের দক্ষিণাঞ্চলে ৬ দশমিক ৭ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। ওই ভূমিকম্পে দেশটির সারাঙ্গানি, কোটাবাটো এবং দাভাও প্রদেশে অন্তত আট প্রাণহানি ঘটে, আহত হন আরও ১৩ জন। ভূমিকম্পে দেশটিতে অর্ধ-শতাধিক বাড়িঘর এবং অন্যান্য ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
প্রশান্ত মহাসাগরীয় ‘রিং অব ফায়ারে’ অবস্থিত ফিলিপাইনে প্রায়শই ভূমিকম্প হয়। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপসংস্থা রিং অব ফায়ারকে বিশ্বের সবচেয়ে সক্রিয় আগ্নেয়গিরি ও ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চল হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
আরও পড়ুন:আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের আগে নেতৃত্বে বড় পরিবর্তন এনেছে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)। ইমরান খানের পর এবার দলটির নতুন চেয়ারম্যান হয়েছেন ব্যারিস্টার গহর আলী খান। ইমরান খান নিজেই ব্যারিস্টার খানকে চেয়ারম্যান পদে মনোনীত করার কয়েকদিন পর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হলেন তিনি।
শনিবার তার দায়িত্ব গ্রহণের বিষয়টি জানায় পাকিস্তানের ইংরেজি দৈনিক ডন। এ ছাড়া বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দলটির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন ওমর আইয়ুব খান।
দলের কয়েকটি পদে নেতাদের দায়িত্ব দিতে শনিবার পিটিআইয়ে ভোটাভুটি হয়। পরে পিটিআইয়ের প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিয়াজুল্লাহ নিয়াজি নির্বাচিতদের নাম ঘোষণা করেন।
পিটিআই চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর পেশাওয়ারে এক ভাষণে গহর আলী খান বলেন, ‘ইমরান খানের প্রতিনিধি হিসেবে আমি আমার দায়িত্ব পালন করে যাব।’
এ সময় তিনি বলেন, ‘১৯৬০ সাল থেকে পাকিস্তানে বিদ্যমান ১৭৫টি রাজনৈতিক দলের সবাই পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনকে তাদের আন্তঃদলীয় নির্বাচনের বিবরণ প্রদান করে আসছে। তবে কোনো নির্বাচনে কোনো দলকে পিটিআইয়ের মতো এতটা চুলচেরা যাচাই করা হয়নি।
‘জনগণ সবই দেখছে; তারাই এ নিপীড়নের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে। যেকোনো মূল্যে আমাদের দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। এ লক্ষ্যেই সংগ্রাম করে যাচ্ছে পিটিআই এবং এই সংগ্রাম করতে গিয়েই আজ কারাগারে বন্দি ইমরান খান।’
তিনি আশা প্রকাশ করেন, ‘নির্বাচনে আমরা সবাইকে পরাজিত করব।’
কেন্দ্রীয় দুই নেতার পাশাপাশি কয়েকটি প্রদেশেও নেতৃত্বে পরিবর্তন এনেছে দলটি। এর মধ্যে বালুচিস্তান প্রদেশে পিটিআইয়ের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন মুনির আহমেদ বালুচ, সিন্ধ প্রদেশে হালীম আদিল শেখ, পাখতুনখাওয়া প্রদেশে আলী আমিন গেন্দাপুর খাইবার এবং পিটিআইয়ের পাঞ্জাব প্রদেশের সভাপতি হয়েছেন ইয়াসমিন রশিদ।
পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটে হেরে ২০২২ সালের এপ্রিলে ক্ষমতাচ্যুত হন পিটিআই চেয়ারম্যান ইমরান খান। ক্ষমতা হারিয়েই দুর্নীতি ও সন্ত্রাসবাদসহ বিভিন্ন অভিযোগে শতাধিক মামলার শিকার হন তিনি। এর মধ্যে তোশাখানা দুর্নীতি মামলায় এ বছরের ৫ আগস্ট তিন বছরের কারাদণ্ড হয় ইমরানের। যদিও এ মামলায় তার সাজা স্থগিত রয়েছে, তবে কূটনৈতিক তারবার্তা ফাঁসের আরেক মামলায় বর্তমানে কারাবন্দি তিনি।
আগামী বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। নির্বাচনের আগে ইমরানের মুক্তি পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকায় তার নেতৃত্বে পিটিআইয়ের নির্বাচনে অংশ নেয়া-না নেয়া নিয়ে সংশয় দেখা দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে গহর খানকে দলটির দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন:ব্রাজিলে এক নারীকে হাসপাতাল থেকে মৃত বলে জানানোর পর তাকে মর্গে জীবিত অবস্থায় পাওয়া যায়। এ ঘটনার দুইদিন পর তাকে ফের মৃত বলে জানান চিকিৎসক।
সান জোসে শহরে শনিবার এ ঘটনা ঘটে বলে ব্রাজিলের একটি মিডিয়া আউটলেটের বরাত দিয়ে নিউ ইয়র্ক পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়।
ব্রাজিলের এক সমাধিস্থানকর্মী জানান, গত ২৫ নভেম্বর (শনিবার) হাসপাতালের কর্মীরা ৯০ বছর বয়সী নরমা সিলভেরা দা সিলভাকে মৃত ঘোষণা করেন। এর কয়েক ঘণ্টা পর তিনি মরদেহ সংগ্রহ করতে মর্গে গেলে বডি ব্যাগের মধ্যে সিলভাকে জীবিত অবস্থায় পান।
সিলভার বন্ধু জেসিকা মার্টিন্স সিলভি পেরেইরা জানান, সিলভাকে গত ২৪ নভেম্বর (শুক্রবার) খুব খারাপ অবস্থায় সাও হোসের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরদিন শনিবার রাতে সিলভার মৃত্যু হয় বলে হাসপাতালের কর্মীরা নিশ্চিত করেন। এর পর রাত ১১টা ৪০ মিনিটে মৃত্যু সনদ দিয়ে তার মরদেহ মর্গে পাঠানো হয়।
রাত দেড়টার দিকে সমাধিস্থানকর্মী মরদেহ সংগ্রহ করতে গেলে তিনি ব্যাগটি খুলে দেখেন সিলভা খুব দুর্বলভাবে শ্বাস নিচ্ছিলেন এবং কিছুটা নড়ছিলেন।
এ ঘটনার পর সিলভাকে আবারও হাসপাতালের কক্ষে নেয়া হয়, তবে ২৭ নভেম্বর (সোমবার) সকালে তার মৃত্যু হয় বলে নিশ্চিত করেন চিকিৎসক।
আরও পড়ুন:সাত দিনের বিরতির পর ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ফের হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল। শুক্রবার সকাল থেকে উপত্যকায় অনবরত বোমা হামলায় কমপক্ষে ১০৯ ফিলিস্তিনি নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া আহত হয়েছেন আরও অনেকে।
হামাসের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ডা. আশরাফ আল-কুদরা বলেছেন, শুক্রবার সকাল থেকেই গাজায় তীব্র বোমাবর্ষণ শুরু করে ইসরায়েল। হামলায় এখন পর্যন্ত ১০৯ জন নিহত এবং শতাধিক আহত হয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে রয়টার্স জানিয়েছে, দক্ষিণ গাজা উপত্যকার খান ইউনিস এবং রাফাহ অঞ্চলে সবচেয়ে তীব্র হামলা চলছে। ওই অঞ্চলে কয়েক লাখ ফিলিস্তিনি গাজার উত্তরাঞ্চল থেকে এসে আশ্রয় নিয়েছে। এ ছাড়া গাজার মধ্য ও উত্তরাঞ্চলের বাড়িঘরগুলোও বোমা হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি শেষে দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসের পূর্বাঞ্চলে অনবরত বোমাবর্ষণ শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। শুক্রবার ভোর থেকেই আকাশ ধোঁয়ায় ছেয়ে যায় বলে রয়টার্সের সাংবাদিকরা জানিয়েছেন।
তাদের বর্ণনা অনুসারে, প্রাণ বাঁচাতে স্থানীয় বাসিন্দারা পশ্চিমাঞ্চলে পালাতে শুরু করেছে। ভোর থেকেই গাড়িতে জিনিসপত্র বোঝাই করে তারা রাস্তায় নেমে পড়ে।
উপত্যকার উত্তরাঞ্চল, যে জায়গা থেকে হামলার শুরু, সেখানে পুনরায় হামলা করতে দেখা গেছে। বোমা হামলার সঙ্গে সেখানে গোলাগুলির শব্দও শোনা গেছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স। এমনকি কয়েকবার রকেট হামলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা।
এ ঘটনার কারণ হিসেবে ইসরায়েলি ভূখণ্ডে রকেট ছুড়ে হামাস যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করছে বলে অভিযোগ করেছে ইসরায়েল।
গত শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) চার দিনের সাময়িক যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয় হামাস ও ইসরায়েল। দুই পক্ষের কাছে জিম্মিদের মুক্তি, গাজায় ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশ ও বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার সুযোগ দিতে এ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় তারা।
কাতার ও মিশরের মধ্যস্ততায় এবং রেড ক্রসের সহযোগিতায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়।
চার দিনের ওই বিরতি পরে আরও দুইদিন বাড়ানো হয়। পরে তা বাড়ে আরও একদিন। সেটিকে স্থায়ী রূপ দিতে চাপ দিচ্ছিল জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মহল। তবে বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বৃদ্ধির চুক্তিতে একমত হতে পারেনি হামাস-ইসরায়েল। এরপর শুক্রবার সকাল থেকেই উপত্যকায় নির্বিচারে হামলা শুরু করে দখলদার ইসরায়েলি সেনারা।
সাত দিনের এই যুদ্ধবিরতিকালে মোট ১০৫ জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। এর মধ্যে রয়েছে ইসরায়েলি নাগরিক, বিদেশি নাগকি ও দ্বৈত নাগরিক। অন্যদিকে ২৪০ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে ইসরায়েল।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে ঢুকে আকস্মিক হামলা চালায় হামাস। ওই হামলার প্রতিক্রিয়ায় গাজায় টানা হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। হামলা শুরুর পর ৯ অক্টোবর গাজায় সর্বাত্মক অবরোধের ঘোষণা দেয় দখলদার ইসরায়েল।
টানা হামলার শিকার গাজায় খাবার, পানি, ওষুধ ও জ্বালানির সংকট দেখা দেয়। এ অবস্থায় যুদ্ধবিরতি চলাকালে মিশরের রাফা ক্রসিং দিয়ে কয়েকটি ত্রাণবাহী ট্রাক ঢোকে উপত্যকতায়। তবে যুদ্ধবিরতির সাত দিনে যে পরিমাণ চিকিৎসা সরঞ্জাম গাজায় পৌঁছেছে, সেগুলো দিয়ে আহতদের আর মাত্র একদিন চিকিৎসা সেবা দেয়া যাবে বলে জানিয়েছে হামাস সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। চিকিৎসা সামগ্রী প্রবেশে রাফাহ ক্রসিং খুলে দেয়ার অনুরোধও জানিয়েছে তারা।
এতদিন গাজায় জ্বালানি প্রবেশে ইসরায়েলের অনুমতি ছিল না। বিভিন্ন সংস্থা ও আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে সম্প্রতি শুধু হাসপাতাল ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলোর জন্য জ্বালানির অনুমতি দেয়া হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সেখানে ঢুকেছে কয়েকটি জ্বালানিবাহী ট্রাক।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসে বিমান হামলার পর থেকে এ পর্যন্ত ১ হাজার ২০০ ইসরায়েলির নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। অন্যদিকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নারী ও শিশুসহ ১৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
ভূমধ্যসাগরের তীরবর্তী গাজার সীমান্তের বড় অংশই ইসরায়েলের সঙ্গে, বাকিটা মিশরের সঙ্গে। এর দৈর্ঘ্য ৪১ কিলোমিটার এবং প্রশস্ত ১০ কিলোমিটার।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য