কিশোর হত্যাকাণ্ডে বিক্ষোভে উত্তাল ফ্রান্সের দাঙ্গা স্তিমিত হয়ে আসছে। সহিংসতা শুরুর পাঁচ দিন পর দেশটির পরিস্থিতি শান্ত হওয়ার আভাস মিলছে। নাতির মৃত্যুতে দেশের পরিস্থিতি এমন উত্তাল হয়ে ওঠায় বিব্রত হয়ে পড়েছেন নাহেলের দাদীও। বিক্ষোভকারীদের শান্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
রোববার ফ্রান্সের এফএম টিভিকে দেয়া সাক্ষাতকারে নাহেলের দাদী নাদিয়া বলেন, ‘বিক্ষেভের নামে যারা ভাংচুর করছে, তারা আসলে নাহেলের মৃত্যুকে অজুহাত বানিয়ে এগুলো করছে। আমি তাদের বলছি, এগুলো বন্ধ করুন।’
নাদিয়া বলেন, ‘প্রাইভেট কারগুলো তো কারও কিছু করেনি। বাসগুলোও নির্দোষ। আপনারা দয়া করে স্কুলগুলোর ক্ষতি করবেন না। যে বাসগুলো ভাঙছেন, সেগুলোতে স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের মায়েরা চলাফেরা করেন।’
নাহেল হত্যাকাণ্ডে তার ও তার মেয়ের (নাহেলের মা) ভবিষ্যৎ অন্ধকার হয়ে গেলেও ওই পুলিশ সদস্যদের কোনো অমঙ্গল তিনি চাননি বলে জানান।
নাতি হত্যায় ন্যায়বিচার চেয়েছিলেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘দেশের বিচার ব্যবস্থার প্রতি আমার আস্থা আছে। এমন নৃশংস কাজ যে পুলিশ অফিসার করেছে, তার অবশ্যই বিচার হওয়া উচিত। তাই বলে দেশের পুরো পুলিশ বিভাগকে এর জন্য দায়ী করা উচিত নয়।’
‘এ ঘটনায় আমি সত্যিই ব্যথিত!’
সোমবার এক প্রতিবেদনে বিবিসি জানায়, পুলিশের ওপর হামলা, নাশকতা, লুটপাট এবং সরকারি-বেসরকারি সম্পত্তির ক্ষতিসাধনে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে রোববার রাতেও ১৫০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ফ্রান্সের পুলিশ। শনিবার গ্রেপ্তার করা হয়েছিল ৭০০ জনকে।
রোববার প্যারিসের একটি সড়কে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে থাকা গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে দাঙ্গাকারীরা। ওই আগুন নেভাতে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের একজন কর্মী পুড়ে মারা যান।
এর কিছুক্ষণের মধ্যেই পরিস্থিতি মোকাবেলায় বৈঠক করেন প্যারিসের মেয়ররা। পরে এক যৌথ বিবৃতিতে সাধারণ জনগণকে দাঙ্গাবিরোধী মিছিলে নামার আহ্বান জানান তারা।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘গত পাঁচদিন ধরে ভয়াবহ সহিংসতা হচ্ছে দেশজুড়ে। দাঙ্গাকারীরা চুড়ান্ত সহিংস মনোভাব নিয়ে প্রজাতন্তের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রতীক ধ্বংসের নেশায় মেতে উঠেছে।
‘আমরা স্বীকার করছি, দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা এখনও সমাজ থেকে বৈষম্য নির্মূল করতে পারিনি। কিন্তু এটাও সত্য— দাঙ্গাকারীদের হাতে আমরা দেশকে ধ্বংস হতে দিতে পারি না। ফ্রান্সের শান্তিকামী জনগণ নিশ্চয়ই সেটি চায় না।’
২৭ জুন ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের উপশহর নতেঁ পুলিশের গুলিতে নিহত হয় ১৭ বছর বয়সী তরুণ নাহেল এম.। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, ছেলেটি বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালানোয় পুলিশের নজরে পড়ে। সে সময় তাকে থামার ইঙ্গিত দিলেও সে ট্রাফিক চৌকি অতিক্রমের চেষ্টা করে। তারপর চৌকির এক পুলিশ সদস্যের গুলিতে নিহত হয় নাহেল।
নাহেল নিহতের ঘটনায় সেদিন থেকেই শহরটিতে বিক্ষোভ দানা বাঁধতে শুরু করে। সেদিন বিকেলে এক ভিডিওবার্তায় নাহেলের মা মুনিয়া তার ছেলেকে হত্যাকারী পুলিশ সদস্যের বিচার দাবি করেন। ফ্রান্সের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে মুহূর্তেই সেই ভিডিও ভাইরাল হয়ে যায়। পরে রাজধানী প্যারিসসহ দেশটির বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে দেশজুড়ে ৪৫ হাজার পুলিশ মোতায়েন করে ফ্রান্স সরকার, কিন্তু বিক্ষোভ দাঙ্গায় রূপ নিলে ওই বাহিনীও অপর্যাপ্ত বলে মনে হয়।
পুলিশের বরাতে বিবিসির তথ্য অনুযায়ী, বিক্ষোভের পাঁচ দিনে দাঙ্গাকারীরা অন্তত ১০টি শপিং মল, ২০০ সুপারমার্কেট, ২৫০টি তামাকজাত পণ্যের দোকান, ২৫০টি ব্যাংক ও শত শত সরকারি ভবনে হামলা-ভাংচুর ও লুটাপাট চালিয়েছে।
এর মধ্যে শনিবার রাত দেড়টার দিকে প্যারিসের আরেক উপশহর লিলেস রোজেসের মেয়র ভিনসেন্ত জ্যঁব্রুনের বাসভবনে হামলা চালায় একদল দাঙ্গাকারী। গেট ভেঙে মেয়রের বাড়িতে ঢুকে প্রথমে তারা গাড়ি ভাংচুর করে, তারপর বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে।
সেসময় এক জরুরি বৈঠকে টাউন হলে ছিলেন মেয়র। বাড়িটিতে ৫ ও ৭ বছর বয়সী দুই সন্তানসহ ঘুমিয়েছিলেন তার স্ত্রী। দাঙ্গাকারীদের উপস্থিতি টের পেয়ে সন্তানদের নিয়ে বাড়ির পেছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় এক সন্তান ও তিনি আহত হন।
বিবৃতিতে ঘটনাটি উল্লেখ করে বলা হয়, ‘ফ্রান্স আজ বিপন্ন। দেশের শান্তিকামী জনগণের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, আপনারা দাঙ্গাবিরোধী শান্তিকামী মিছিল বের করুন।’
মেয়রদের ওই বিবৃতির পর বিক্ষোভ খানিকটা শান্ত হয়ে এসেছে। বৃহস্পতিবার রাতে যেখানে ১৯০০ গাড়ি জ্বালিয়েছিল বিক্ষোভকারীরা, সেখানে রোববার রাতে গাড়ি জ্বালানোর সংখ্যা নেমে আসে ২৯৭টিতে। বৃহস্পতিবার ৫০০টি ভবনে ভাংচুর ও জ্বালাও-পোড়াও হলেও রোববার ৩৪টি ভবনে ভাংচুর চালায় দাঙ্গাকারীরা।
নতেঁ উপশহরটিতে মূলত আলজেরিয়া, তিউনিসিয়া ও মরক্কো থেকে আসা অভিবাসীদের বাস। নাহেল ও তার মা মুনিয়াও আলজেরীয় বংশোদ্ভূত মুসলিম। দুই-তিন প্রজন্ম ধরে ফ্রান্সে বসবাস করলেও এ অভিবাসীদের বরাবরের অভিযোগ- তারা বৈষমের শিকার।
আরও পড়ুন:ইসলামের পবিত্র গ্রন্থ কোরআন পোড়ানোকে অবৈধ ঘোষণা করে একটি বিল পাস করেছে ডেনমার্কের পার্লামেন্ট।
বিভিন্ন সময় কোরআন অবমাননাকে কেন্দ্র করে মুসলিম দেশগুলোর ক্ষোভের পরিপ্রেক্ষিতে দেশটি এ পদক্ষেপ নিয়েছে।
আল জাজিরার শুক্রবারের প্রতিবেদনে বলা হয়, ডেনমার্কের পার্লামেন্টে বৃহস্পতিবার এই আইনের পক্ষে ভোট পড়ে ৯৪টি। আর বিপক্ষে পড়ে ৭৭ ভোট।
এ আইন পাসের পর কেউ পবিত্র কোরআন পোড়ালে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে এবং অপরাধীকে সর্বোচ্চ দুই বছরের সাজা ভোগ করতে হবে। পাশাপাশি জরিমানাও করা হবে।
দেশটির বিচার মন্ত্রণালয় জানায়, এ আইন পাসের অন্যতম উদ্দেশ্য হলো ডেনমার্কে উগ্রবাদী কর্মকাণ্ড মোকাবিলা করা।
ডেনমার্ক এবং প্রতিবেশী সুইডেনে সাম্প্রতিক সময়ে ইসলাম বিরোধী কর্মকাণ্ড ও কোরআন অবমানাকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ হয়েছে।
এর আগে গত আগস্টে ডেনমার্কের সরকার জানায়, আগুনে পুড়িয়ে বা অন্য কোনো উপায়ে কেউ যেন পবিত্র কোরআন অবমাননা না করতে পারেন সে জন্য একটি আইন প্রস্তাব করতে যাচ্ছে তারা।
আরও পড়ুন:যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ছেলে হান্টার বাইডেনের বিরুদ্ধে নতুন করে আরও একটি ফৌজদারি মামলা করা হয়েছে।
এবিসি নিউজের বরাতে জানা যায়, ফেডারেল প্রসিকিউটররা স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার রাতে তার বিরুদ্ধে কর ফাঁকির মামলা করেছেন।
হান্টারের বিরুদ্ধে ৫৬ পৃষ্টার অভিযোগপত্রে বলা হয়, তিনি ইউক্রেন, চীন, রোমানিয়াসহ অন্য দেশে ব্যবসা ও স্কিম চালিয়ে প্রচুর সম্পদ আয় করে বিলাসবহুল জীবনযাপন করলেও ২০১৬ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত তার ফেডারেল ট্যাক্স অন্তত ১.৪ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করেননি। তার বিরুদ্ধে কর না দেয়া, ভুয়া করের রিটার্ন দাখিল, সঠিকভাবে কর না ধার্য করাসহ মোট ৯টি অভিযোগ আনা হয়েছে।
অভিযোগগুলো প্রমাণিত হলে হান্টার বাইডেনের ১৭ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে বলে জানিয়েছে দেশটির বিচার বিভাগ।
এর আগে, আইনজীবী ও ব্যবসায়ী ৫৪ বছর বয়সী হান্টার বাইডেনকে গত সেপ্টেম্বরে আগ্নেয়াস্ত্র মামলায় অভিযুক্ত করা হয়।
যুক্তরাজ্যের অভিবাসনমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন রবার্ট জেনরিক।
দেশটির নথিপত্রবিহীন অভিবাসনপ্রত্যাশীদের রুয়ান্ডা পাঠানোর বিষয়ে যুক্তরাজ্য সরকারের করা চুক্তিতে মতানৈক্য থাকায় তিনি বুধবার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়।
রবার্ট জেনরিক বলেন, ‘অভিবাসন সংক্রান্ত সরকারের নীতির নির্দেশনার সঙ্গে মতানৈক্য থাকলে তিনি তার অবস্থানে থাকতে পারবেন না।’
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকে লেখা এক চিঠিতে তিনি বলেন, ‘আমি এমন একজন রাজনীতিবিদ হতে অস্বীকার করি, যে ব্রিটিশ জনসাধারণের কাছে অভিবাসনের বিষয়ে প্রতিশ্রুতি দিলেও সেগুলো পালন করতে পারেন না।’
এর আগে নথিপত্রবিহীন অভিবাসীপ্রত্যাশীদের রুয়ান্ডায় স্থানান্তরের জন্য দেশটির সরকারের সঙ্গে চুক্তি করে যুক্তরাজ্য। মঙ্গলবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভিনসেন্ট বাইরুতার সঙ্গে এ বিষয়ক একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেন ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লেভারলি।
চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, নিজ দেশের অভিবাসী কেন্দ্রগুলো থেকে সব অভিবাসনপ্রত্যাশীকে রুয়ান্ডা পাঠাবে ব্রিটেন। সেই সঙ্গে ব্রিটেন থেকে যাওয়া অভিবাসীদের অন্য কোনো দেশে পাঠানো যাবে না বলে রুয়ান্ডারকে শর্ত দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন:যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সামনের বছর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দেড় কোটি ভোট পাওয়ার ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন।
রিপাবলিকান দল থেকে প্রেসিডেন্ট পদে আবারও মনোনয়নপ্রত্যাশী ট্রাম্প স্থানীয় সময় বুধবার ফক্স চ্যানেল আয়োজিত এক ইভেন্টে দর্শক-সমর্থকদের সামনে এ কথা বলেন। খবর এনডিটিবির।
তিনি সমর্থকদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমি প্রেসিডেন্ট থাকতে আপনাদের সঙ্গে নিয়ে যা করেছি তা আর কাউকে করতে দেখিনি। আমি মনে করি ৭৫ লাখ নয়, দেড় কোটি ভোটার আমার সঙ্গে আছে।’
ট্রাম্প দর্শকদের ইঙ্গিত করে বলেন, ‘নিরাপদ সীমান্ত, শক্তিশালী সামরিক বাহিনী, কম ট্যাক্স ও কম খরচ সবারই চাওয়া, যা আমি করেছি এবং করব। আপনি নিশ্চয়ই খুব সহজে কম মূল্যে নিজের বাড়িটি কিনতে চাইবেন।’
২০২৪ এর নির্বাচনে ট্রাম জিতে গেলে যুক্তরাষ্ট্র একজন স্বৈরাচারি শাসক পাবে বলে বেশ কয়েকদিন যাবত ভোটারদের সর্তক করে আসছেন বিরোধী ডেমোক্র্যাট ও তার দলের কিছু রিপাবলিকান রাজনৈতিক কর্মী ও বিশ্লেষকরা।
এ বিষয় তিনি ভোটারদের আশ্বস্ত করে বলেন, ‘আমি কখনোই স্বৈরশাসক হব না।’
ডোনাল্ড ট্রাম্প রিপাবলিকান দলের প্রার্থী হিসেবে ২০১৭ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হয়ে ২০২১ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন কিন্তু পরবর্তী নির্বাচনে বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে হেরে যান।
দেশটির আইন অনুযায়ী একজন ব্যক্তি দুই মেয়াদে প্রেসিডেন্টের দায়িত্বে থাকতে পারেন। তাই ট্রাম্পের আরও একবার এ পদে দায়িত্ব পালনের সুযোগ আছে।
আরও পড়ুন:যুক্তরাষ্ট্রের নেভাদা অঙ্গরাজ্যে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে বন্দুকধারীর গুলিতে তিনজন নিহত ও একজন আহত হয়েছেন।
স্থানীয় সময় বুধবার লাস ভেগাস শহরে ইউনিভার্সিটি অফ নেভাদায় এই ঘটনা ঘটে বলে পুলিশের বরাতে জানিয়েছে বিবিসি।
পুলিশ বলেছে, ওই তিনজন নিহতের পাশাপাশি সন্দেহভাজন হামলাকারীও নিহত হয়েছেন। আর যিনি আহত হয়েছেন, তার অবস্থা গুরুতর।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্টে জানায়, ক্যাম্পাসে বন্দুকধারীদের হামলার পর তা মোকাবিলা করছে পুলিশ। পরে ক্যাম্পাস পুলিশও এতে যোগ দেয়।
ঘটনাস্থল থেকে তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানায় লাস ভেগাসের মেট্রোপলিটন পুলিশ বিভাগ।
ইউনিভার্সিটির পুলিশ প্রধান অ্যাডাম গার্সিয়া বলেছেন, ক্যাম্পাসের দুই কর্মকর্তা সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে গুলিবিদ্ধ করে হত্যা করেছে। ওই ব্যক্তি হামলা চালিয়েছে।
তবে এই হামলার কারণ নিশ্চিত করে কিছু জানাতে পারেনি লস ভেগাস পুলিশ।
ফিলিপাইনের মধ্যাঞ্চলে একটি যাত্রবাহী বাস পাহাড়ি রাস্তা থেকে ছিটকে খাদে পড়ার ঘটনায় ২৯ জন নিহত হয়েছেন।
বুধবার কর্মকর্তারা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
প্রাদেশিক দুর্যোগ সংস্থার প্রধান রডারিক ট্রেন এএফপিকে বলেন, ‘বাসটি মঙ্গলবার বিকেলে অ্যান্টিক প্রদেশের হ্যামটিক পৌরসভায় যাওয়ার সময় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে।’
৫৩ জন যাত্রী নিয়ে বাসটি ইলোইলো সিটি থেকে প্রাচীন প্রদেশের সান জোসে দে বুয়েনাভিস্তা যাচ্ছিল। এ সময় রাস্তার কংক্রিটের বেষ্টনীর সঙ্গে ধাক্কা লেগে হ্যামটিক শহরের পাশে ১৫ মিটার গভীর খাদে পড়ে যায়।
প্রাদেশিক তথ্য দপ্তরের প্রধান জুনলি সায়লো রেডিওকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, ঘটনাস্থলেই ২৫ জন এবং স্থানীয় একটি হাসপাতালে আরও চারজন মারা গেছেন।
স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম এবিএস-সিবিএন জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে বাসচালক এবং তার সহকারীও রয়েছেন।
প্রাচীন প্রাদেশিক সরকারের বরাত দিয়ে আঞ্চলিক সংবাদপত্র পানায় নিউজ জানিয়েছে, কেনিয়ার এক ব্যক্তিসহ গুরুতর আহত দুই যাত্রীকে চিকিৎসার জন্য ইলোইলো সিটির একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
জরুরি কর্মীরা জীবিতদের উদ্ধার করছে এবং খাদে পড়ে থাকা লোকজনের লাশ উদ্ধার কাজ চলছে।
গভর্নর রোডোরা কাদিয়াও স্থানীয় বেতার কেন্দ্র ডিজেডআরএইচকে বলেছেন, যাত্রীর মধ্যে চারজন কেনিয়ার নাগরিক ছিল। এদের বেশিরভাগই অ্যান্টিক প্রদেশের বাসিন্দা।
আরও পড়ুন:ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলা শুরুর পর থেকে প্রাণ গেছে ৭ হাজার শিশুসহ ১৬ হাজারের বেশি মানুষের। আহত হয়েছেন ৪৩ হাজারের ওপরে, নিখোঁজ রয়েছেন প্রায় ৮ হাজার।
গত ৭ অক্টোবর থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত হিসাবে অবরুদ্ধ উপত্যকাটির শাসক দল হামাসের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
হামাস বলছে, ইসরায়েল টানা হামলা চালাচ্ছে। এতে এখন পর্যন্ত ৭ হাজারের বেশি শিশু ও ৫ হাজারের মতো নারীসহ নিহত হয়েছেন ১৬ হাজার ২৪৮ জন।
এ ছাড়া আহত হয়েছেন ৪৩ হাজার ৬১৬ জন এবং নিখোঁজ রয়েছেন ৭ হাজার ৬০০ জনের মতো বলেও জানিয়েছে তারা।
গাজার সর্বশেষ অবস্থা জানিয়ে রয়টার্স বলছে, টানা বিমান হামলার পর দক্ষিণ গাজায় স্থলপথে অভিযান চালাচ্ছে ইসরায়েলের সেনারা। দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসের উত্তরাঞ্চলে তিন দিনের বিমান হামলার পর এই অভিযান শুরু হয়।
ইসরায়েল কর্তৃপক্ষের ধারণা, হামাস নেতৃত্বের সদস্যরা খান ইউনিস শহরে লুকিয়ে আছে। তাদের দাবি, গাজা নগরীতে হামাসের একজন কমান্ডারকে হত্যা করা হয়েছে। ওই ব্যক্তি গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলার পেছনে জড়িত।
হামলায় বহু প্রাণহানির পর সাত দিনের জন্য ছিল যুদ্ধবিরতি, তবে সেই বিরতি শেষ হওয়ায় গাজায় ফের ইসরায়েলি হামলা শুরু হয় গত শুক্রবার।
উত্তর গাজায় হামলা শুরুর পর এক পর্যায়ে সাধারণ মানুষকে দক্ষিণ গাজায় চলে যেতে বলা হয়। এখন সেই দক্ষিণ গাজাতে হামলা হচ্ছে। বিমান হামলা হয়েছে খান ইউনিস শহরে, এই হামলার যে তীব্রতা; যুদ্ধ শুরুর পর তা কখনও দেখা যায়নি।
ইসরায়েলে ঢুকে হামাস গত ৭ অক্টোবর আকস্মিক হামলা চালায়। ওই হামলার প্রতিক্রিয়ায় গাজায় টানা হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। হামলা শুরুর পর ৯ অক্টোবর গাজায় সর্বাত্মক অবরোধের ঘোষণা দিয়েছে দেশটি।
টানা হামলার শিকার গাজায় খাবার, পানি, ওষুধ ও জ্বালানির সংকট দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় কদিন আগে মিশরের রাফা ক্রসিং দিয়ে কয়েকটি ত্রাণবাহী ট্রাক ঢুকেছে ওই উপত্যকতায়।
এতদিন গাজায় জ্বালানি প্রবেশে ইসরায়েলের অনুমতি ছিল না। বিভিন্ন সংস্থা ও আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে সম্প্রতি শুধু হাসপাতাল ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলোর জন্য জ্বালানির অনুমতি দেয়া হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সেখানে ঢুকেছে কয়েকটি জ্বালানিবাহী ট্রাক।
এ অবস্থায় গাজায় জিম্মি ব্যক্তিদের মুক্তি ও ইরসায়েলের কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনিদের মুক্তির বিনিময়ে ও গাজায় মানবিক সহায়তায় পাঠানোর শর্তে গত ২৪ নভেম্বর প্রথম দফার যুদ্ধবিরতি শুরু হয়।
এরপর এই যুদ্ধবিরতি চলে সাত দিন। এই সাত দিনে হামাস ১১০ জনকে এবং ইসরায়েল মুক্তি দিয়েছে ২৪০ জনকে। আন্তর্জাতিক নানা মহলের চেষ্টা সত্ত্বেও শেষ পর্যন্ত এই যুদ্ধবিরতির মেয়াদ আর বাড়েনি।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য