মস্কোর ৪০০ কিলোমিটারের মধ্যে পৌঁছে গেছে ওয়াগনার বাহিনী। শুক্রবার ওয়াগনার সেনাদের ওপর রুশ সেনারা রকেট হামলা চালায় বলে দাবি করেন বাহিনীটির প্রধান ইয়েভগিনি প্রিগোজিন। এর জবাবে ক্রেমলিনের সামরিক নেতৃবৃন্দকে ক্ষমতাচ্যুত করার হুমকি দিয়ে নিজ সেনাদের মস্কোর দিকে পাঠান তিনি।
শুক্রবার রাতেই ইউক্রেন থেকে রাশিয়ার রোস্তোভ প্রদেশে প্রবেশ করে ওয়াগনার সেনারা। রাতারাতি ইউক্রেন সীমান্ত পেরিয়ে শনিবার ভোররাতে ওয়াগনার বাহিনী রাশিয়ার রোস্তোভ অঞ্চলে প্রবেশ করে এবং রোস্তোভ-অন-ডন নগরীর দখল নেয়। এসময় পুরো বাহিনীর নেতৃত্ব দেন প্রিগোজিন নিজে।
প্রথমে তারা রোস্তোভের সেনাবাহিনীর সদর দপ্তর দখল করে নেয়। ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলে পরিচালিত রুশ বাহিনীর সামরিক অভিযান রোস্তোভের এ সদর দপ্তর থেকেই পরিচালনা করা হতো।
পরে তারা সেখান থেকে ভোরোনেজ ও লিপিয়েৎস্ক নগরীর ওপর দিয়ে উত্তর দিক হয়ে মস্কোর দিকে অগ্রসর হতে শুরু করে।
রয়টার্স জানিয়েছে, ওয়াগনার বাহিনীর বহরটি প্রথমে রোস্তোভ থেকে ভোরোনেজে আসে। এরপর তারা লিপিয়েৎস্ক অঞ্চল অতিক্রম করছে বলে নিশ্চিত করেছেন ওই অঞ্চলের গভর্নর আইগর আরতেমোনোভ। ওই বহরটিতে সাঁজোয়া যান এবং অন্তত একটি ট্যাংক রয়েছে বলে জানান তিনি।
এক টুইটে গভর্নর বলেন, ‘ওয়াগনার বাহিনী এ অঞ্চল অতিক্রম করছে। তবে জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। পরিস্থিতি এখনও নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।’
স্থানীয় বাসিন্দাদের সতর্ক করে দিয়ে আরতেমোনোভ বলেন, ‘আপনাদের সতর্ক করে বলা হচ্ছে- ঘরের বাইরে বের হবেন না এবং সব ধরনের ভ্রমণ এড়িয়ে চলবেন।’
লিপিয়েৎস্ক থেকে উত্তরে ৪০০ কিলোমিটারের মধ্যে রাশিয়ার রাজধানী মস্কো।
এর মধ্যে ওয়াগনার বাহিনী ভোরোনেজ অতিক্রমের সময় তাদের ওপর হেলিকপ্টার থেকে গোলাবর্ষণ করেছে রাশিয়ার বিমানবাহিনী। তাতেও দমানো যায়নি তাদের। রাশিয়ার বেসামরিক মানুষ দেশটির বিমানবাহিনীর লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন প্রিগোজিন।
এদিকে ওয়াগনার সেনারা যাতে কোনোভাবেই রাজধানী শহরে প্রবেশ করতে না পারে, সেজন্য মস্কোতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। লোহার ব্যারিকেড দেয়া হয়েছে মস্কোর বিখ্যাত রেড স্কয়ারে।
এছাড়াও ঝুঁকি কমাতে সোমবার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছেন মস্কোর মেয়র সের্গেই সোবিয়ানিন। মস্কোর বাসিন্দাদের যতদূর সম্ভব ভ্রমণ এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, ‘সবগুলো নাগরিক পরিষেবা প্রতিষ্ঠানকে উচ্চ সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে।’
তবে এতকিছুর মধ্যেও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন কোথায় অবস্থান করছেন, তা নিয়ে চলছে জোর জল্পনা।
অবশ্য ক্রেমলিন মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ শনিবার রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা তাসকে বলেছেন, প্রেসিডেন্ট মস্কোয় তার বাসভবন ক্রেমলিনে আছেন এবং সেখান থেকেই কাজ করছেন। তবে পুতিন ইতোমধ্যে বিশেষ বিমানে করে মস্কো ত্যাগ করেছেন বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে পড়েছে।
ফ্লাইট ট্র্যাকিং ওয়েবসাইট ফ্লাইটরাডার টোয়েন্টিফোরের বরাত দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কিছু পোস্টে বলা হয়েছে, পুতিনের বিশেষ এয়ারক্র্যাফট ‘দ্বিতীয়-৯৬-৩০০পিইউ’ শনিবার স্থানীয় সময় বেলা ২টা ১৬ মিনিটে মস্কো থেকে উত্তর-পশ্চিম দিকে চলে গেছে। বিশেষ ওই উড়োজাহাজ তেবর শহরের কাছে গিয়ে ট্র্যাকিং সার্ভিসের আওতার বাইরে চলে যায়।
অবশ্য এই তথ্যের যথার্থতা নিশ্চিত করতে পারেনি কোনো সংবাদমাধ্যম। পুতিন ওই এয়ারক্র্যাফটে ছিলেন কি না তা-ও জানা যায়নি।
টুইটারে ভাইসগ্রাড টোয়েন্টিফোর নামের একটি অ্যাকাউন্ট থেকে ফ্লাইটরাডারে পুতিনের এয়ারক্র্যাফটের মস্কো ত্যাগের একটি স্ক্রিনশট শেয়ার করা হয়েছে। পোস্টে বলা হয়, সেন্ট পিটার্সবার্গের উদ্দেশে মস্কো ত্যাগ করেছে পুতিনের বিমান। ওয়াগনার গ্রুপের সামরিক বহর এগিয়ে আসায় তিনি পালিয়ে যাচ্ছেন বলে মনে হচ্ছে।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কয়েক মাস ধরে দ্বন্দ্ব চলছিল ওয়াগনারপ্রধান প্রিগোজিনের। শুক্রবার তার সেনাদের ওপর প্রাণঘাতী ক্ষেপণাস্ত্র হামলার অভিযোগ এনে রুশ হামলার বদলা নেয়ার অঙ্গীকার করেন প্রিগোজিন।
ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে নিজের ভাড়াটে বাহিনীর এমন বিদ্রোহে বেকায়দায় পড়ে গেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন।
এই বাহিনী এতদিন ধরে ইউক্রেনে সামরিক অভিযানে মস্কোর হয়ে লড়ছিল। কিন্তু শনিবার ওয়াগনারপ্রধানের রুশ সামরিক নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণার পর পাল্টে গেছে দৃশ্যপট। হঠাৎ এই বিদ্রোহকে ‘পিঠে ছুরি মারা হয়েছে’ বলে আখ্যা দিয়েছেন পুতিন।
টেলিভিশনে দেয়া বক্তব্যে পুতিন বলেন, ‘অতি উচ্চাভিলাষ ও কায়েমি স্বার্থ বিশ্বাসঘাতকতায় রূপ নিয়েছে। এটা রাশিয়া ও আমাদের জনগণের ওপর আঘাত। এ ধরনের হুমকির বিরুদ্ধে পিতৃভূমিকে রক্ষায় আমাদের কর্মকাণ্ড হবে কঠোর।’
তবে বিদ্রোহকারীদের ‘শায়েস্তা’ করার ঘোষণা দিলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পুতিনকে নিয়ে ছড়াচ্ছে ভিন্ন খবর। খোদ পুতিনই নাকি মস্কো ছেড়ে কোথাও চলে গেছেন।
এদিকে বিদ্রোহের ঘোষণা দিয়ে প্রিগোজিন বলেছেন, তার লক্ষ্য ‘সামরিক অভ্যুত্থান ঘটানো নয়, বরং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা।’
রাশিয়ার নাগরিকদের ওয়াগনারে যোগ দেয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রিগোজিন মস্কোর সামরিক নেতৃত্বকে শাস্তির আওতায় আনার তাগিদ দেন।
এক অডিও বার্তায় তিনি জানান, বিশ্বাসঘাতকতা সম্পর্কে পুতিনের ভুল ধারণা রয়েছে। তিনি ও তার বাহিনী বিশ্বাসঘাতক নন, দেশপ্রেমিক।
ইউক্রেনে ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়া রুশ সামরিক অভিযানকে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
রুশ সামরিক বাহিনীর সঙ্গে ওয়াগনারপ্রধানের এই বিরোধ নতুন নয় বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার সামরিক নেতারা ওয়াগনার যোদ্ধাদের যথেষ্ট অস্ত্রশস্ত্র দিচ্ছে না বলে অভিযোগ করে আসছিলেন প্রিগোজিন। তবে শুক্রবারের হামলার পর যুদ্ধে তাদের অবস্থান পাল্টে যায়।
তবে ওয়াগনার গ্রুপের সশস্ত্র বিদ্রোহকে এখন পর্যন্ত সামরিক অভ্যুত্থান বলে মনে হচ্ছে না। কারণ, সরকারের ভেতর থেকে এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষ ক্ষমতা দখলের চেষ্টা করেনি। কিন্তু এটা রাশিয়ার শীর্ষস্থানীয় সামরিক ব্যক্তিদের ক্ষমতা থেকে সরানোর চেষ্টা এবং সে হিসেবে এই সশস্ত্র বিদ্রোহ প্রেসিডেন্ট পুতিনের কর্তৃত্বের বিরুদ্ধেও চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে।
আরও পড়ুন:ইউক্রেনে তিন বছর ধরে চলা সংঘাত বন্ধে সৌদি আরবে সোমবার অনুষ্ঠেয় আলোচনায় কিছুটা অগ্রগতি হবে বলে আশা প্রকাশ করছেন রাশিয়ার একজন আলোচক।
তিনি রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমকে বলেন, এ বৈঠকের আগে যুক্তরাষ্ট্র পৃথকভাবে ইউক্রেন ও রাশিয়ার উভয়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।
মস্কো থেকে এএফপি এ খবর জানায়।
বার্তা সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের প্রস্তাবিত পূর্ণ ও নিঃশর্ত ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতি প্রত্যাখ্যান করেছে মস্কো। এর পরিবর্তে রাশিয়া শুধু জ্বালানি অবকাঠামোর ওপর বিমান হামলা বন্ধের প্রস্তাব দিয়েছে।
সেই প্রস্তাব সত্ত্বেও উভয় পক্ষই আলোচনার আগে বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। শুক্রবার রাতে দক্ষিণ ইউক্রেনের জাপোরিঝিয়া শহরে রাশিয়ার হামলায় একটি পরিবারের তিনজন নিহত হয়, যা ইউক্রেনীয় কর্মকর্তাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।
ইউক্রেনের জরুরি পরিষেবা রবিবার ভোরে জানায়, রাশিয়া কিয়েভে ড্রোন হামলা চালিয়েছে। এগুলো ভবনগুলোতে আঘাত করেছে এবং আগুন লেগে কমপক্ষে দুইজন নিহত হয়েছে।
কিয়েভের মেয়র ভিটালি ক্লিটসকো বলেন, শত্রুদের বিশাল আক্রমণে শহরের বেশ কয়েকটি জেলায় ধ্বংসাবশেষ পড়ে আছে এবং সাতজন আহত হয়েছেন।
সৌদি আরবে সোমবার ইউক্রেনীয় ও রুশ প্রতিনিধিদের সঙ্গে আমেরিকান আলোচকরা আলাদাভাবে বৈঠক করবেন, যাকে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত কিথ কেলগ হোটেলকক্ষের মধ্যে ’শাটল কূটনীতি’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
রুশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন রাশিয়ার সিনেটর গ্রেগরি কারাসিন।
তিনি বলেন, ‘আমরা অন্তত কিছুটা অগ্রগতি আশা করছি।"
আরও পড়ুন:ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা শিন বেতের প্রধান রোনেন বারকে শুক্রবার বরখাস্ত করা হয়েছে।
বরখাস্ত করার কয়েক দিন আগে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলাকে ঘিরে রোনেন বারের ব্যর্থতা এবং বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেছিলেন, তাকে আর বিশ্বাস করা যায় না।
জেরুজালেম থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।
ইসরায়েল সরকারের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আইএসএ পরিচালক রোনেন বারকে বরখাস্তে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়েছে।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, রোনেন বারের উত্তরসূরি নিযুক্ত হওয়ার পর অথবা ১০ এপ্রিলের মধ্যে তিনি পদত্যাগ করবেন।
এর আগে গত রবিবার নেতানিয়াহু বলেন, তার ওপর আস্থার অভাব রয়েছে। তাকে এ পদে রাখা যাবে না। তাই বারকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বার ১৯৯৩ সালে শিন বেতে যোগ দিয়েছিলেন।
বারের মেয়াদ আগামী বছর শেষ হওয়ার কথা ছিল। ২০২১ সালের অক্টোবরে পূর্ববর্তী ইসরায়েলি সরকার শিন বেতের প্রধান হিসেবে তাকে নিযুক্ত করেছিল। কিন্তু নেতানিয়াহুর সরকার এক বছর আগেই তাকে পদ থেকে বরখাস্ত করল।
ইসরায়েলে হামাসের হামলা চালানোর আগে থেকেই রোনেন বারের সঙ্গে নেতানিয়াহুর সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছিল। গত ৪ মার্চ হামাসের হামলার ওপর শিন বেতের অভ্যন্তরীণ প্রতিবেদন প্রকাশের পর সম্পর্কের আরও অবনতি ঘটে।
আরও পড়ুন:মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) নির্দেশে ফিলিপাইনের সাবেক প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতার্তেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ম্যানিলার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে মঙ্গলবার তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
ফিলিপাইন সরকার তাকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে।
দেশটির প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোসের কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, হংকং থেকে দেশে আসার পর আইসিসির নির্দেশে পুলিশ দুতার্তেকে গ্রেপ্তার করেছে। অবৈধ মাদকের বিরুদ্ধে সাবেক এ প্রেসিডেন্টের চালানো অভিযানে ব্যাপক হত্যাকাণ্ডের তদন্ত চলছে।
আইসিসি দুতার্তের শাসনামলে মাদক নির্মূলের নামে চালানো অভিযানে হত্যাকাণ্ডগুলোকে সম্ভাব্য মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে তদন্ত করছে। এর মধ্যে ২০১১ সালের ১ নভেম্বর থেকে ২০১৯ সালের ১৬ মার্চ পর্যন্ত দেশটির প্রেসিডেন্ট ও দক্ষিণাঞ্চলের শহর দাভাওয়ের মেয়র থাকার সময় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, হত্যাকাণ্ডের দায় এড়াতে ২০১৯ সালে ফিলিপাইনকে রোম সংবিধি থেকে প্রত্যাহার করে নেন দুতার্তে।
দুতার্তে প্রশাসন ২০২১ সালের শেষের দিকে আন্তর্জাতিক আদালতের তদন্ত স্থগিত করার পদক্ষেপ নিয়েছিল। আইসিসির আদালত হলো সর্বশেষ অবলম্বন।
আইসিসির আর বিচার করার এখতিয়ার নেই—এমন যুক্তি দিয়ে সে সময় তার প্রশাসন বলেছিল, ফিলিপাইন কর্তৃপক্ষ এরই মধ্যে একই অভিযোগ খতিয়ে দেখছে।
আরও পড়ুন:স্কটল্যান্ডে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের টার্নবেরি গলফ রিসোর্টে হামলার ঘটনা ঘটেছে।
গাজা উপত্যকা থেকে ফিলিস্তিনিদের অন্যত্র সরাতে ট্রাম্পের পরিকল্পনার প্রতিবাদে ফিলিস্তিনপন্থি ‘প্যালেস্টাইন অ্যাকশন‘ নামের একটি সংগঠন এ হামলার দায় স্বীকার করেছে।
স্থানীয় সময় শনিবার এক বিবৃতির মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করে সংগঠনটি।
অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) খবরে জানানো হয়, ট্রাম্পের গাজা নিয়ে একের পর এক বিতর্কিত মন্তব্য ও পরিকল্পনার কারণে ক্ষুব্ধ ফিলিস্তিনি মানুষ ও তাদের সমর্থকরা। এরই জেরে এ হামলা ঘটিয়েছে বলে বিবৃতিতে জানিয়েছে প্যালেস্টাইন অ্যাকশন সংগঠনের সদস্যরা।
টার্নবেরি রিসোর্টটি ভাঙচুর করার পাশাপাশি রিসোর্টের দেয়ালে লাল রং দিয়ে ফিলিস্তিনের সমর্থনে বিভিন্ন গ্রাফিতি অংকন করা হয়েছে। রিসোর্টের সবুজ মাঠে লাল রং দিয়ে লেখা হয়েছে ‘গাজা বিক্রির জন্য নয়’।
সংগঠনটির কর্মীরা জানান, ট্রাম্প গাজাকে নিজের সম্পত্তির মতো মনে করে, যা খুশি তাই করতে পারে না। তারই প্রতিবাদ এটা।
তারা বলেন, ‘আমরা ট্রাম্পকে স্পষ্ট করে বুঝিয়ে দিতে চাই, আমাদের প্রতিরোধ থেকে তার নিজের সম্পত্তিও নিরাপদ নয়।’
ফিলিস্তিনিনের এই হামলাকে ট্রাম্প ‘শিশুসুলভ, অপরাধমূলক’ কার্যক্রম হিসেবে অভিহিত করে বলেন, এ ধরনের কর্মকাণ্ডে তার পরিকল্পনায় কোনো পরিবর্তন আসবে না।
আরও পড়ুন:দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে রাজনৈতিক সমীকরণ ঢেলে সাজাতে উঠেপড়ে লেগেছেন যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার এ উদ্যোগ পৌঁছেছে ইরানের দ্বারপ্রান্তেও।
ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আলোচনার আহ্বান জানিয়ে দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে চিঠি পাঠিয়েছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট। আলোচনায় না বসলে সামরিক অভিযানের হুমকিও দিয়েছেন ট্রাম্প।
স্থানীয় সময় শুক্রবার সন্ধ্যায় ফক্স বিজনেস নেটওয়ার্কে এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প জানান, তিনি ইরানের নেতাদের উদ্দেশে চিঠি পাঠিয়েছেন।
ওয়াশিংটন থেকে এএফপি এ খবর জানায়।
ট্রাম্প বলেন, ‘আমি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আলী খামেনির উদ্দেশে বলেছি, আশা করি আপনি আলোচনায় বসবেন। কারণ, এটি ইরানের জন্য ভালো হবে।’
একই সঙ্গে হুঁশিয়ারি দিয়ে ট্রাম্প বলেন, আলোচনায় বসতে অস্বীকৃতি জানালে বিষয়টিতে সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে বাধ্য হবে যুক্তরাষ্ট্র। এ অবস্থায় তেহরানের কল্যাণে সমঝোতাই যুক্তিসঙ্গত হবে।
যদিও ট্রাম্পের এই দাবি অস্বীকার করেছে জাতিসংঘে ইরানের স্থায়ী মিশন। তারা জানিয়েছে, এমন কোনো চিঠির বিষয়ে অবগত নয় তারা।
এদিকে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে ট্রাম্পের চিটি পাঠানোর বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না।
তিনি শুক্রবার এএফপিকে বলেন, শক্তি প্রয়োগ করলে তারা পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন না।
আরও পড়ুন:ইরান ও রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেল আমদানি বাড়াবে চীন।
নতুন টার্মিনাল ও জাহাজ চালু হওয়ায় মার্চ থেকে চীন তেল আমদানি বৃদ্ধি করবে বলে খবর পাওয়া গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগের নীতি সত্ত্বেও চীন এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছে ‘অয়েল প্রাইস’ নামের ওয়েবসাইট।
অয়েল প্রাইসের তথ্য অনুযায়ী, ইরান ও রাশিয়া থেকে চীনের তেল আমদানি দিন দিনই বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ওয়েবসাইটটির উদ্ধৃতি দিয়ে চীনের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়া শনিবার এ খবর জানায়।
কয়েকজন বিশ্লেষক ও ব্যবসায়ী বার্তা সংস্থা সিনহুয়াকে জানান, চীন তেল ট্যাংকারগুলোতে পরিবর্তন এনেছে যাতে সেগুলো আর নিষেধাজ্ঞার আওতায় না থাকে। এর ফলে রাশিয়া এবং ইরানের সঙ্গে তেল বাণিজ্য সম্প্রসারণ করতে পারবে বেইজিং। ফলে ২০২৫ সালের মার্চ মাসে এই দুই দেশ থেকে চীন বেশি পরিমাণে অপরিশোধিত তেল আমদানি করতে পারবে। এ আমদানি ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে দুই বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন ছিল।
নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকা চীনা তেল ট্যাংকারগুলো এরই মধ্যে তৎপরতা শুরু করেছে বলে বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে।
ইরান ও রাশিয়ার বিরুদ্ধে কঠোরতম নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র।
আরও পড়ুন:ইরানের সিস্তান ও বালুচিস্তান প্রদেশের চবাহার কাউন্টিতে ইসলামি বিপ্লবী হাউজিং ফাউন্ডেশনের সদরদপ্তরে বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করেছে পাকিস্তানভিত্তিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠী জয়শুল আজল।
স্থানীয় সময় শনিবার সকালে বিস্ফোরণের এ ঘটনা ঘটে।
ইরানের ইসলামি বিপ্লবী হাউজিং ফাউন্ডেশন সমাজের নিম্ন আয়ের মানুষদের জন্য আবাসন তৈরি এবং হাউজিং ইউনিট নির্মাণ করে।
দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ইরনার উদ্ধৃতি দিয়ে এএফপি এ খবর জানায়।
পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠনটি সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে ইসলামি বিপ্লবী হাউজিং ফাউন্ডেশনের দপ্তরে সাউন্ড বোমা বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করে।
প্রাদেশিক প্রসিকিউটর মেহদি শামসাবাদি জানান, শনিবার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ওই বিস্ফোরণ ঘটে। তবে এতে কেউ হতাহত হয়নি।
তিনি জানান, নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা বাহিনীগুলো এ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
বিস্ফোরণে ভবনটির একাংশের ক্ষতি হয়েছে।
পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী ইরানের সিস্তান ও বালুচিস্তান প্রদেশে বিগত বছরগুলোতে সামরিক ও বেসামরিক স্থাপনায় অনেকবার সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়। যেসব গোষ্ঠী এসব হামলা চালিয়েছে, তাদের সঙ্গে বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সম্পর্ক রয়েছে বলে ব্যাপকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
গত বছরের ২৬ অক্টোবর সিস্তান ও বালুচিস্তান প্রদেশের তাফতান কাউন্টির গোহার কুহ এলাকায় সন্ত্রাসী হামলায় ১০ পুলিশ সদস্য নিহত হন। ওই হামলারও দায় এ সংগঠন স্বীকার করে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য