যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন কলাম লেখকের চাকরি নিয়েছেন। তিনি প্রতি সপ্তাহে ডেইলি মেইল পত্রিকার জন্য একটি কলাম লেখবেন।
স্থানীয় সময় শুক্রবার বরিস জনসন ও পত্রিকাটির পক্ষ থেকে আলাদাভাবে এ ঘোষণা আসে।
ওই দিন বিকেলেই তার একটি কলাম পত্রিকাটির অনলাইনে প্রকাশ করা হয়।
যুক্তরাজ্যের সাংবাদিকতার জগতে ডেইলি মেইল বরিস জনসনের কট্টর সমর্থক হিসেবে পরিচিত। প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে তার পক্ষে অবস্থান নেয় পত্রিকাটি। ওই সময় বরিসের সমর্থনে বিভিন্ন বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ করে ডেইলি মেইল।
তবে বরিস জনসনের চাকরিতে যোগদানকে সংসদীয় আচরণবিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বলছে পার্লামেন্টের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
কারণ হিসেবে বলা হয়, সংবাদটি দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়ার মাত্র আধঘণ্টা আগে তিনি কমিটিকে জানান।
বরিস সোমবার সংসদ সদস্যের পদ থেকে পদত্যাগ করেন। এর আগে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে বিতর্কের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়েন।
যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের আচরণবিধি অনুযায়ী বরিস নতুন চাকরিতে যোগদানে এখনও সংশ্লিষ্ট কমিটির অনুমোদন নিতে বিধিবদ্ধ।
বিধি অনুযায়ী সাবেক মন্ত্রীরা দুই বছরের মধ্যে নতুন চাকরিতে যোগ দিতে চাইলে অ্যাডভাইজরি কমিটি অন বিজনেস অ্যাপয়েন্টমেন্টকে জানাতে হয়।
এক বিবৃতিতে কমিটি জানায়, বিধি লঙ্ঘনের জবাব চেয়ে বরিস জনসনকে চিঠি দেয়া হয়েছে।
সাবেক এ প্রধানমন্ত্রীর এক মুখপাত্র বিবিসিকে বলেন, ‘কমিটিকে তিনি আগেই জানিয়েছেন। স্বাভাবিক প্রক্রিয়াতেই তিনি চাকরিতে যোগ দেন।’
অবশ্য ওই কমিটির বিচারিক বা প্রশাসনিক ক্ষমতা নেই। কমিটি কেবল সাবেক মন্ত্রীদের নতুন চাকরি সম্পর্কে জেনে পরামর্শ দিতে পারে।
ওই পরামর্শ বাস্তবায়নে চাপ দিতে পারে না। কেউ এ আচরণবিধি অমান্য করলে তাকে শাস্তি দেয়ারও ক্ষমতা নেই কমিটির। তবে জনসাধারণের উদ্দেশ্যে তিরস্কার জারি করতে পারে।
কমিটির এক মুখপাত্র বিবিসিকে বলেন, ‘সংবাদপত্রে কলাম লেখার চাকরি বড় কোনো সমস্যা হিসেবে দেখা হয় না। কিন্তু কথা হলো বরিস আবারও আইন ভঙ্গ করলেন। কমিটির পরামর্শ নেওয়াটা তার জন্য এখনও বিধিবদ্ধ।’
আরও পড়ুন:প্রিন্সেস ডায়ানার পরিহিত একটি ব্লাউজ নিলামে উঠছে।
ব্রিটিশ রাজপ্রাসাদ ১৯৮১ সালে প্রিন্সেস অফ ওয়েলস ডায়ানার বাগদানের ঘোষণা দিয়ে তার একটি ছবি প্রকাশ করে। ওই ছবিতে ডায়ানাকে গোলাপি রঙের সিল্ক শিফনের ব্লাউজটি পরা দেখা যায়।
জুলিয়ান্স অকশনস অফ বেভারলি হিলস প্রতিষ্ঠানটি ব্লাউজটি বিক্রির জন্য নিলামে তুলছে।
জুলিয়ান নিলামের সভাপতি ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বলছেন, এটির মূল্য দুই লাখ ডলার পর্যন্ত উঠতে পারে। ব্লাউজটি প্রিন্সের ডায়ানার পরা প্রথম কোনো উচ্চমানের কাস্টম তৈরি পোশাক।
ন্যাশনাল পোর্ট্রেট গ্যালারির তথ্য অনুযায়ী, ব্লাউজটির ডিজাইন করেছিলেন ডেভিড ও এলিজাবেথ এমানুয়েল।
২০১৯ সালে লন্ডনে কেনসিংটন প্রাসাদে ‘ডায়ানা: হার ফ্যাশন স্টোরি’ শীর্ষক এক প্রদর্শনীতেও ব্লাউজটি রাখা হয়।
আগামী ১৪ থেকে ১৭ ডিসেম্বর বেভারলি হিলসে এবং অনলাইনে ‘জুলিয়েনস অকশনস অ্যান্ড টিসিএম প্রেজেন্ট: হলিউড লেজেন্ডস’ নিলাম অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে ডায়ানার পরা আরও একটি পোশাকসহ বিভিন্ন হলিউড তারকাদের পরা পোশাকও ওই নিলামে তোলা হবে।
যুক্তরাজ্যের বিতর্কিত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুয়েলা ব্রাভারম্যানকে সোমবার বরখাস্ত করেছেন মন্ত্রিসভায় রদবদল শুরু করা প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম সিএনবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লেভারলিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ব্রাভারম্যানের স্থলাভিষিক্ত করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। এ ছাড়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনকে নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঘোষণা করা হয়েছে।
২০১০ থেকে ২০১৬ সাল নাগাদ যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ক্যামেরন। তিনি পার্লামেন্টের নির্বাচিত সদস্য নন। এ কারণে যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ হাউস অফ লর্ডসে লাইফ পিরেজ দিয়ে তাকে এ পদে আসীন করা হয়।
গত সপ্তাহে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে বিক্ষোভকারীদের প্রতি লন্ডন পুলিশের পক্ষপাতদুষ্টতার অভিযোগ করে ব্যাপক সমালোচনায় পড়েন সদ্য বরখাস্তকৃত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ব্রাভারম্যান।
দীর্ঘদিন ধরেই বিতর্কিত ভূমিকায় ছিলেন ব্রাভারম্যান। আচরণবিধির গুরুতর লঙ্ঘনের কারণে ঋষি সুনাকের পূর্বসূরি লিজ ট্রাসের মন্ত্রিসভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি।
লন্ডনে ফিলিস্তিনের পক্ষে জমায়েতগুলোকে বারবার ‘ঘৃণার জমায়েত’ হিসেবে আখ্যা দেন ব্রাভারম্যান।
আরও পড়ুন:ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধে সহিংসতা বৃদ্ধি ও বেসামরিক নাগরিক হতাহতের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে গাজায় দ্রুত যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
ক্রেমলিনের বরাত দিয়ে আল জাজিরার বুধবারের প্রতিবেদনে বলা হয়, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের সঙ্গে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ফোনে ইসরায়েল ও গাজায় বেসামরিক নাগরিক নিহত হওয়ার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। দুই নেতাই যুদ্ধবিরতির প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা করেন।
এদিকে এ যুদ্ধের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ব্যর্থতাকে দায়ী করেছেন পুতিন।
রাশিয়ায় সফররত ইরাকের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ আল-সুদানির সঙ্গে মঙ্গলবার আলোচনায় পুতিন এ কথা বলেন বলে আল জাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়।
পুতিন ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের বিষয়ে এ প্রথম কোনো মন্তব্য করলেন। তিনি এ যুদ্ধকে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির ব্যর্থতা হিসেবে দাবি করেন।
পুতিন বলেন, ‘অনেকে আমার সঙ্গে একমত হবেন যে, এটি মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের নীতির ব্যর্থতার একটি স্পষ্ট উদাহরণ।’
আলোচনায় তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র সংঘাতকে একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছিল, কিন্তু দুঃখজনকভাবে সমঝোতার বিষয়ে তারা এমন কিছু করতে পারেনি, যা দুই পক্ষের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়।’
ফিলিস্তিনি জনগণের স্বার্থ বিবেচনায় নিতে যুক্তরাষ্ট্র ব্যর্থ হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন পুতিন।
ইসরায়েলের ভূখণ্ডে ঢুকে ফিলিস্তিনের গাজার শাসক দল হামাসের ৭ অক্টোবরের হামলার পর দুই পক্ষের সংঘর্ষে বুধবার সকাল ছয়টা পর্যন্ত ৯০০ ফিলিস্তিনি ও এক হাজার ২০০ ইসরায়েলি নিহত হয়েছে।
আরও পড়ুন:নাগরিকদের স্বার্থে ভারত স্বতন্ত্রভাবে কাজ করছে মন্তব্য করে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, মস্কো ও নয়াদিল্লির মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি করতে পশ্চিমা দেশগুলোর যেকোনো চেষ্টা অর্থহীন।
রাশিয়ার কৃষ্ণসাগরীয় অবকাশের শহর সোচিতে এক অনুষ্ঠানে মূল বক্তব্যে পুতিন এ কথা বলেন বলে এনডিটিভির শুক্রবারের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
পশ্চিমাদের উদ্দেশে রুশ বলেন, ‘পশ্চিমা বিশ্ব তাদের একাধিপত্যের সঙ্গে দ্বিমত পোষণকারী প্রত্যেকের মধ্যে শত্রুতা সৃষ্টির চেষ্টা করছে, প্রত্যেকেই ঝুঁকিতে আছে। এমনকি ভারতও, তবে ভারতের নেতারা জাতির স্বার্থে স্বতন্ত্রভাবে কাজ করছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘রাশিয়ার কাছ থেকে ভারতকে দূরে সরানোর চেষ্টা অর্থহীন। ভারত স্বাধীন রাষ্ট্র।’
ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের পরিপ্রেক্ষিতে রাশিয়ার ওপর পশ্চিমা দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও দেশটি থেকে ছাড়কৃত মূল্যে ভারতের প্রতিষ্ঠানগুলোর তেল আমদানি নিয়ে সমালোচনার মধ্যে উল্লিখিত কথাগুলো বললেন পুতিন।
গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে হামলা শুরুর পর রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের ২৭ দেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক জোট ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
বক্তব্যে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রশংসা করে পুতিন বলেন, মোদির নেতৃত্বে ভারত উত্তরোত্তর শক্তিশালী হচ্ছে।
আরও পড়ুন:ইউক্রেনের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় একটি গ্রামের ক্যাফে ও মুদি দোকানে বৃহস্পতিবার রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ৫১ জন নিহত হয়েছেন।
দেশটির কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়, রাশিয়ার সঙ্গে চলমান যুদ্ধে প্রাণ হারানো ইউক্রেনীয় এক সেনার স্মরণসভায় ওই হামলা চালানো হয়।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলদিমির জেলেনস্কি ঘটনাটিকে বেসামরিক লোকজনের ওপর ‘ইচ্ছাকৃত হামলা’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন।
দেশটির খারকিভ অঞ্চলের ফ্রোজা গ্রামে বৃহস্পতিবার বিকেলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়। হামলাস্থলে ইটের বিশাল স্তূপ, ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা ধাতু ও নির্মাণসামগ্রী দেখা যায়।
আঞ্চলিক এক কর্মকর্তা রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম সুসপিলনিকে বলেন, ইউক্রেনে ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়া রুশ সামরিক অভিযানের পর খারকিভ অঞ্চলে বৃহস্পতিবারের হামলাটি ছিল সবচেয়ে প্রাণঘাতী।
রাশিয়ার একক কোনো হামলায় সবচেয়ে বেশি বেসামরিক মানুষের মৃত্যুর ঘটনাও মনে করা হচ্ছে একে।
আঞ্চলিক পুলিশ জাতীয় টেলিভিশনকে জানায়, হামলায় প্রাণহানি হয় ৫১ জনের। এর বাইরে ছয়জন আহত ও তিনজন নিখোঁজ রয়েছেন।
প্রাণ হারানো ব্যক্তিদের মধ্যে নিহত সেনার স্মরণসভা শেষে ক্যাফেতে জড়ো হওয়া কিছু মানুষও ছিলেন।
আরও পড়ুন:যুক্তরাজ্যে ঊর্ধ্বতনের যৌন নিপীড়নে মানসিক পীড়া থেকে ১৯ বছর বয়সী নারী এক সৈনিক আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করছেন তদন্তকারীরা।
দেশটির সেনাবাহিনীর তদন্ত প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বিবিসির প্রতিবেদনে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
সেনাবাহিনীর তদন্তে থেকে জানা যায়, ১৯ বছর বয়সী নারী সৈনিক রয়্যাল আর্টিলারি গানার জেসলি বেক তার ঊর্ধ্বতন একজনের মাধ্যমে যৌন নিপীড়নের শিকার হন।
উইল্টশায়ারের লারখিল ক্যাম্পে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় বেককে।
এ নারী সৈনিকের মৃত্যু নিয়ে করা তদন্ত প্রতিবেদন বুধবার প্রকাশ হয়। এতে বলা হয়, মৃত্যুর আগের দুই মাস বেককে যৌন নিপীড়ন করা হয়েছে, যা তার মানসিক স্থিতি ও সুস্থতার ওপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলে।
আদালতের দেয়া পরবর্তী তারিখে বেককে যৌন হেনস্তাকারীর বিষয়ে তদন্ত শুরু হবে।
প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, বেককে তার ঊর্ধ্বতন একজনই যৌন নিপীড়ন করেছিলেন।
প্রতিবেদনে হেনস্তাকারীর নাম প্রকাশ করা হয়নি। এতে বলা হয়, হেনস্তাকারী বেককে ২০২১ সালের অক্টোবরে এক হাজারেরও বেশি হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ ও ভয়েস মেইল পাঠান। পরের মাসে তার মেসেজের পরিমাণ বেড়ে হয় সাড়ে তিন হাজার।
প্রতিবেদনে স্পষ্ট করে বলা হয়, বেক এ সম্পর্কের বিষয়ে আগ্রহী ছিলেন না এবং ওই হেনস্তাকারীকে তা জানিয়ে দিয়েছিলেন। এমনকি তার মৃত্যুর আগে বসকে মেসেজে বলেছিলেন, ‘আমি আর এসব নিতে পারছি না। বিষয়গুলো আমাকে ভারাক্রান্ত করছে।’
হেনস্তাকারী তাকে ও বেককে যেন একসঙ্গে কাজ দেয়া হয়, তা নিশ্চিত করতেন।
এসব ঘটনার একপর্যায়ে বেক তার পরিবারকে বিষয়গুলো জানান। বেকের মা লেইহান ম্যাকক্রিডি জানান, তার মেয়ে ১৬ বছর বয়সে সেনাবাহিনীতে যোগ দেয়।
তিনি বলেন, ‘আপনাদের কাছে হয়তো মনে হতে পারে আমার মেয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ওই লোককে ব্লক করে দিলেই পারত, কিন্তু একবার ভেবে দেখবেন, নিজের বসকে কীভাবে এত সহজে ব্লক করে দেয়া যায়!’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার মেয়ে ওই হেনস্তাকারীর আচরণে প্রতিনিয়ত হতাশ হয়ে পড়ছিল। সে যেখানে কাজ করতে এত ভালবাসত, সেই কাজেই সে আর মন দিতে পারছিল না।’
বেক তার অন্য এক সিনিয়রের মাধ্যমে যৌন নিপীড়নের কথাও জানিয়েছিলেন পরিবারকে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সেনাবাহিনীর চেইন অফ কমান্ড ঘটনাটিকে গুরুত্ব সহকারে নিয়েছে, কিন্তু অবস্থাদৃষ্টে বোঝা যায়, এ বিষয়ে জানানোর সঠিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি।
সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্র বলেন, ‘এই কঠিন সময়ে বেকের পরিবার ও বন্ধুদের প্রতি আমরা সহানুভূতিশীল। আমরা যত দ্রুত সম্ভব এ ঘটনার সঠিক বিচার করার চেষ্টা করছি।’
আরও পড়ুন:হিজাব পরেই মুসলিম নারী খেলোয়াড়রা বিশ্বের সবচেয়ে ঐতিহ্যবাহী ক্রীড়া আসর অলিম্পিকে অংশ নিতে পারবেন বলে স্পষ্ট করে দিয়েছে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি।
আগামী বছরের জুলাইয়ে প্যারিসে অনুষ্ঠেয় অলিম্পিক আসরে নিজ দেশের খেলোয়াড়দের হিজাব পরার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় ফ্রান্স। স্বাগতিক দেশের এ সিদ্ধান্তের পরের দিন অলিম্পিক কমিটি এর বিপরীত সিদ্ধান্তের কথা জানায় বলে শুক্রবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
ফ্রান্সের ক্রীড়ামন্ত্রী এমিলি কাসতেরা গত রোববার ধর্মনিরপেক্ষতার কারণ দেখিয়ে প্যারিস অলিম্পিকে ফ্রান্সের নারী মুসলিম খেলোয়াড়দের হিজাব নিষিদ্ধের পক্ষে যুক্তি দেখান।
যদিও অলিম্পিক কমিটির একজন মুখপাত্র মন্ত্রীর এ মন্তব্যকে সরাসরি নাকচ করে দিয়ে বলেন, ‘অলিম্পিক ভিলেজে শুধু অলিম্পিক কমিটির নিয়মই চলবে। আর আমরা হিজাবসহ প্রত্যেক ধর্ম ও সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল।’
যেকোনো আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা তার নিয়ন্ত্রক সংস্থার নিয়মেই চলে বলে জানান তিনি।
ফ্রান্সের ক্রীড়া কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনার সুযোগ রয়েছে জানিয়ে ওই মুখপাত্র বলেন, ‘যদিও এ আইনটি শুধু ফ্রান্সের নারী খেলোয়ারদের জন্য করা হয়েছিল, তবে এখানে সবাইকে একইভাবে সুযোগ দিতে হবে।’
৩২টি ভিন্ন ইভেন্টে প্রায় ১০ হাজার খেলোয়াড় অলিম্পিক আসরে অংশ নেবেন, যেখানে তারা পারস্পরিক সংস্কৃতি বিনিময় করবেন বলে জানান এ মুখপাত্র।
ফ্রান্সের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ
এদিকে হিজাব নিষিদ্ধ নিয়ে ফ্রান্সের সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে দেশটির মুসলিমদের সংগঠন ও মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা পক্ষগুলো। তাদের ভাষ্য, ফ্রান্স প্রশাসন এ সিদ্ধান্তের মাধ্যমে মুসলিম নারীদের ধর্মীয় স্বাধীনতা খর্বের পাশাপাশি তাদের হেনস্তার সুযোগ করে দিচ্ছে।
চলতি সপ্তাহে জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তরে ফ্রান্সের নতুন এ হিজাববিরোধী আইনটি সমালোচনার মুখোমুখি হয়েছে।
ইউরোপে ফ্রান্সেই সংখ্যালঘু হিসেবে সর্বোচ্চ মুসলিম জনগোষ্ঠীর বসবাস। যদিও প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁর নেতৃত্বাধীন প্রশাসন ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই মুসলিমদের বিরুদ্ধে নানা আইন জারি করে চলেছে।
ফ্রান্সে ইসলামি মতাদর্শ ছড়িয়ে পড়া নিয়ে ইতোপূর্বে মন্তব্য করে বিতর্ক সৃষ্টি করেছিলেন মাখোঁ। এ ছাড়াও মাঁখোর আমলে মহানবীকে (সা.) নিয়ে সাময়িকীতে অবমাননাকর কার্টুন প্রকাশ ও ইসলাম নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের কারণে আরবসহ মুসলিম বিশ্বে প্রতিবাদ ও পণ্য বর্জনের ঘটনা ঘটেছিল।
মন্তব্য