কয়েক মাস রাশিয়ার দখলে থাকার পর ইউক্রেন ফের বাখমুত দখলে নেয়ার খবর পাওয়া গেছে।
ইউক্রেনের উপ-প্রতিরক্ষামন্ত্রী হান্না মালিয়ার বলেছেন, ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী বাখমুতে এক সপ্তাহে দুই কিলোমিটার অগ্রসর হয়েছে।
ইউক্রেনের এই দাবি বাখমুতে যুদ্ধ পরিস্থিতির গতি পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিলেও এ বিষয়ে সুস্পষ্ট কোনো প্রমাণ নেই বলে বিবিসির একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
রাশিয়া অবশ্য ইউক্রেনের এ দাবি অস্বীকার করেছে। তারা বলছে, রাশিয়ার সেনাবাহিনী একটি এলাকায় পুনরায় সংগঠিত হচ্ছে।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, বাখমুতের দক্ষিণ-পশ্চিমে রাশিয়ার সেনাবাহিনীর ইউনিটগুলো মালোইলিনিভকা এলাকায় আরও ভালো অবস্থান নিয়েছে। কারণ ওই এলাকায় বার্খিভকা জলাধারের পাশের জায়গাগুলো লড়াইয়ের জন্য বেশি ‘উপযুক্ত’।
তবে রাশিয়ার বেসরকারি ভাড়াটে বাহিনী ভাগনার গ্রুপের প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোশিন বলেছেন, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় (রাশিয়া) যা বলছে তা ‘পুনরায় সংগঠিত’ হওয়া নয়; সহজ ভাষায় তাকে ‘পালানো’ বলা হয়।
গত কয়েক মাসের লড়াইয়ে বাখমুত কৌশলগতভাবে বেশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। যুদ্ধে এখানকার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও অনেক বেশি। যুদ্ধে দুই পক্ষই হাজারো সেনা হারিয়েছে।
বাখমুতে রাশিয়ার হয়ে লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিচ্ছে ভাগনার।
যুদ্ধ শুরুর আগে শহরটিতে প্রায় ৭০ হাজার মানুষের বসবাস ছিল। তবে সাম্প্রতিক সময়ে ভাগনার এবং রুশ সামরিক বাহিনীর মধ্যে দ্বন্দ্ব প্রকাশ পাচ্ছে।
আরও পড়ুন:ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে পাকিস্তানের বেলুচিস্তানের মাস্তুং জেলায় শুক্রবার মসজিদের কাছে জশনে জুলুসে সমবেত হওয়া লোকজনের ওপর আত্মঘাতী বিস্ফোরণে কমপক্ষে ৫২ জন নিহত ও ৫০ জনের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।
পাকিস্তানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডনের প্রতিবেদনে জানানো হয়, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা হামলাকে আত্মঘাতী বিস্ফোরণ বলে মনে করছেন।
মাস্তুং জেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (ডিএইচও) আবদুল রাজ্জাক শাহি ডনকে অর্ধশতাধিক মানুষের প্রাণহানির বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
জেলা শহরের স্টেশন হাউস অফিসার (এসএইচও) মোহাম্মদ জাভেদ লেহরি জানান, প্রাণ হারানো ব্যক্তিদের মধ্যে এক পুলিশ কর্মকর্তাও আছেন।
এর আগে শহিদ নওয়াব গউস বকশ রাইসানি মেমোরিয়াল হসপিটালের প্রধান নির্বাহী ডা. সাইদ মিরওয়ানি ডনকে জানিয়েছিলেন, বিস্ফোরণে ৩৪ জন নিহত ও ১৩০ জনের বেশি মানুষ আহত হন।
তিনি পরবর্তী সময়ে জানান, তার পরিচালনাধীন হাসপাতালে ২৮টি মরদেহ আনা হয়েছে। অন্যদিকে ২২টি মরদেহ নেয়া হয় মাস্তুং জেলা হাসপাতালে।
মিরওয়ানি আরও জানান, শহিদ নওয়াব গউস বকশ রাইসানি হাসপাতালে অনেককে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। আহত ২০ জনের বেশি মানুষকে কুয়েটায় পাঠানো হয়েছে।
এর আগে মাস্তুংয়ের সহকারী কমিশনার (এসি) আত্তাহুল মুনিম জানান, বিস্ফোরণে ১৫ জন নিহত ও ৫০ জনের বেশি মানুষ আহত হন।
তিনি জানান, আলফালাহ সড়কের মদিনা মসজিদের কাছে জশনে জুলুসের জন্য জড়ো হতে থাকা লোকজনের ওপর বিস্ফোরণ হয়।
আরও পড়ুন:ভারতের পাঞ্জাবে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে এক ব্যক্তির পেট থেকে ইয়ারফোন, লকেট, স্ক্রুসহ প্রায় ১০০টি ধাতব বস্তু বের করা হয়েছে।
রাজ্যের মোগার একটি হাসপাতালে বৃহস্পতিবার এ ঘটনা ঘটে।
এনডিটিভির শুক্রবারের প্রতিবেদনে বলা হয়, ৪০ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি দুই দিনেরও বেশি সময় ধরে অসুস্থতা ও পেটে ব্যথা অনুভব করছিলেন। পরে তাকে পাঞ্জাবের মোগার মেডিসিটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
ব্যথার কারণ নির্ধারণের জন্য চিকিৎসক তার পেটে এক্সরে স্ক্যান করার সিদ্ধান্ত নেন। এক্সরে রিপোর্টে অস্বাভাবিক কিছু ধরা পড়ে।
রিপোর্টে দেখা যায়, ওই ব্যক্তির পেটের ভেতরে বেশ কিছু ধাতব বস্তু রয়েছে। এরপর তিন ঘণ্টার দীর্ঘ অস্ত্রোপচারের পর চিকিৎসকরা সফলভাবে তার শরীর থেকে জিনিসগুলো বের করন।
পেট থেকে বের করা প্রায় ১০০ জিনিসের মধ্যে ছিল ইয়ারফোন, ওয়াশার, নাট-বোল্ট, তার, রাখি, লকেট, বোতাম, মোড়ক ও সেফটি পিন।
হাসপাতালের পরিচালক ডা. আজমির কালরা বলেন, ‘এই প্রথম এমন ঘটনার মুখোমুখি হয়েছি। লোকটি দুই বছর ধরে পেটের সমস্যায় ভুগছিলেন। শরীর থেকে জিনিসগুলো সরানো হলেও লোকটির অবস্থা স্থিতিশীল নয়। ধাতব বস্তুগুলো দীর্ঘদিন ধরে তার পেটে ছিল, যা অন্যান্য স্বাস্থ্যগত সমস্যা সৃষ্টি করেছে।’
অস্ত্রোপচার করা ব্যক্তির পরিবার সূত্রে জানা যায়, তিনি কখন জিনিসগুলো খেয়েছেন, তা কেউ জানে না, তবে তিনি মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন।
এর আগে তাকে বেশ কয়েকজন চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়, কিন্তু কেউই তার ব্যথার কারণ নির্ণয় করতে পারেননি।
আরও পড়ুন:আগামী সপ্তাহে ভারতে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় আসর আইসিসি বিশ্বকাপ ক্রিকেট ২০২৩। বিশ্বকাপের আয়োজক দেশ ভারতসহ অংশ নেয়া সবগুলো দেশ ও ক্রিকেট ভক্তদের মাঝে এ নিয়ে উত্তেজনা, পরিকল্পনার শেষ নেই। বিশ্বকাপ উপলক্ষে চারদিকে সাজ সাজ রব। এরই মাঝে উড়ে এলো ভারতে হামলার হুমকি।
কানাডার শিখ সম্প্রদায়ের অন্যতম নেতা এবং কথিত খালিস্তানি বিচ্ছিন্নতাবাদী হরদীপ সিং নিজ্জর হত্যাকাণ্ডের বদলা নিতে বিশ্বকাপের স্টেডিয়ামে ওই হামলা চালানো হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে ভারতে নিষিদ্ধ শিখ সম্প্রদায়ের সংগঠন ‘শিখস ফর জাস্টিস’ (এসএফজে)।
আগামী ৫ অক্টোবর গুজরাটের আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার ম্যাচ দিয়ে ক্রিকেট বিশ্বকাপের এবারের আসরের পর্দা উঠবে। ওই ম্যাচের দিনই স্টেডিয়ামে হামলা চালানো হবে বলে এক অডিও বার্তায় জানিয়েছেন এসএফজে নেতা গুরপতবন্ত পান্নুন।
পান্নুনের ওই অডিও ক্লিপটি এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল।
ওই বার্তায় তাকে বলতে শোনা গেছে, ‘৫ অক্টোবর থেকে ক্রিকেট বিশ্বকাপ নয়, বিশ্ব সন্ত্রাসবাদ কাপ শুরু হতে চলেছে।’
হরদীপ হত্যাকাণ্ডে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে সরাসরি দায়ী করে তিনি বলেছেন, ‘দিল্লি খালিস্তান হয়ে যাবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, হরদীপ সিং নিজ্জর হত্যার জন্য আপনি দায়ী এবং শিখ ফর জাস্টিস এই হত্যার প্রতিশোধ নেবে। আহমেদাবাদে ৫ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া আইসিসি বিশ্বকাপ আমাদের লক্ষ্য।
‘তোমাদের বুলেটের বদলে আমাদের ব্যালট চলবে। হিংসার জবাব আমরা ভোটের মাধ্যমে দেব।’
ভারতের শিখ ধর্মাবলম্বী ও খালিস্তান আন্দোলনের প্রতি সহমর্মী জনগণকে শিখদের স্বাধীন রাষ্ট্র খালিস্তান কায়েম হওয়ার আগ পর্যন্ত বিশ্বকাপ বর্জনের আহ্বানও জানিয়েছেন পান্নুন।
কানাডাভিত্তিক একজন আইনজীবী মনে করা হয় পান্নুনকে। ২০২০ সালে ভারত সরকার তাকে ‘সন্ত্রাসী’ হিসেবে অ্যাখ্যা দেয়। এমনকি সন্ত্রাসবাদ ও রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে তাকে ইন্টারপোলের ‘ওয়ান্টেড’ তালিকায়ও রাখা হয়েছিল।
শিখস ফর জাস্টিসের প্রতিষ্ঠাতাদের একজন তিনি। এসএফজের কানাডা বিভাগের দায়িত্বে ছিলেন হত্যার শিকার হওয়া নিজ্জর। পান্নুনের দল ‘এসএফজে’র মতাদর্শ প্রচারের দায়িত্বে ছিল নিহত নিজ্জরের সংগঠন ‘খালিস্তান টাইগার ফোর্স’। এই দুই সংগঠনই ভারতে নিষিদ্ধ।
ভারতে এই বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীটি ‘খালিস্তান’ নামে শিখদের জন্য আলাদা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পক্ষে সোচ্চার।
ভারতে পান্নুনের বিরুদ্ধে ১৬টি ফৌজদারি মামলা চলছে। সম্প্রতি পাঞ্জাবে তার বেশ কিছু সম্পত্তিও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
বিশ্বকাপ আয়োজন উপলক্ষে এমনিতেই দেশজুড়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে ভারত। বিশ্ব ক্রিকেটের মহা আয়োজন শুরু হওয়ার আগমুহূর্তে এমন হুমকি বার্তা পেয়ে তাই নড়েচড়ে বসেছে দেশটির সরকার।
গুজরাটের যে স্টেডিয়ামে প্রথম ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে সেটির নামকরণ করা হয়েছে দেশটির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নামে। আবার নরেন্দ্র মোদি নিজেও গুজরাটের বাসিন্দা। তাই ভারতের প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আক্রোশ থেকে এমন হামলার সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দিচ্ছেন না কূটনীতিকরা।
ইতোমধ্যে গুজরাটের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও সতর্কতা আরও জোরদার করা হয়েছে। সরকারি সূত্রের বরাতে ভারতের গণমাধ্যমগুলো বলছে, এনআইএ ওই অডিও ক্লিপটির সত্যতা যাচাই করছে।
ওই বার্তায় এ-ও বলা হয়, ভারত নাকি কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোকে অপমান করেছে। এসএফজে এর বদলা নেবে। ভারতকে ফল ভোগ করতে হবে।
‘আমরা পরামর্শ দিচ্ছি অটোয়াতে ভারতীয় দূতাবাস বন্ধ করে দিন, নয়ত রাষ্ট্রদূতকে ফিরিয়ে নিন।’
এ কথায় পান্নুনের সংগঠনের সঙ্গে কানাডা সরকারের সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে বলে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোতে ফলাও করে প্রচার করা হয়েছে।
গত ১৮ জুন কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়া প্রদেশের ভ্যাঙ্কুভার শহরের একটি গুরুদুয়ারার (শিখ ধর্মাবলম্বীদের উপাসনালয়) কাছে আততায়ীর গুলিতে নিহত হন হরদীপ সিং নিজ্জর। দুই অজ্ঞাতপরিচয় আততায়ী ৪৬ বছরের নিজ্জরকে গুলি করে হত্যা করেন।
শুরু থেকেই কানাডা সরকারের দাবি, এই হত্যাকাণ্ডে ভারতের ‘হাত’ রয়েছে। পরে পার্লামেন্টের জরুরি অধিবেশনে প্রথম ভারতের এজেন্টদের জড়িত থাকার ব্যাপারে সরাসরি অভিযোগ তোলেন ট্রু়ডো। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ভারতীয় এক কূটনীতিককে বহিষ্কারও করে ট্রুডো সরকার।
তবে ভারত কানাডার এ অভিযোগকে ‘অযৌক্তিক’ বলে অভিহিত করেছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি বলেছেন, ‘কানাডা যে অভিযোগ করেছে, কিন্তু আমাদের মনে হয়েছে, এ অভিযোগ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আমরা মনে করি, তাদের অভিযোগ পক্ষপাতপূর্ণ।’
এমনকি কানাডা খালিস্তানপন্থী আন্দোলনকারীদের সমর্থন করে তাদের আশ্রয় দেয় বলেও অভিযোগ ভারতের। গত ২০ সেপ্টেম্বর বিচ্ছিন্নতাবাদী এবং দুষ্কৃতি নেটওয়ার্কে জড়িত ৪৩ জনের তালিকা কানাডা সরকারকে পাঠিয়েছে ভারত। এতে অভিযোগ করা হয়েছে, ভারতে ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ তালিকায় থাকা অনেকেই কানাডায় গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন।
উল্লেখ্য, কানাডায় বহু ভারতীয় বাস করেন। দেশটির মোট জনসংখ্যা ৩ কোটি ৭০ লাখ। তার মধ্যে অন্তত ১৪ লাখ ভারতীয় রয়েছেন। উচ্চশিক্ষা কিংবা চাকরির সূত্রে ভারত থেকে তারা কানাডায় গেছেন।
কানাডায় প্রবাসী ভারতীয়র সংখ্যা দেশটির মোট জনসংখ্যার ৩.৭ শতাংশ। কানাডায় প্রবাসী ভারতীয়দের মধ্যে অনেকেই শিখ ধর্মাবলম্বী। সেখানে ৭ লাখ ৭০ হাজার শিখ রয়েছেন, যা দেশটির মোট জনসংখ্যার ২ শতাংশ।
ভারতে শিখদের অনুপাত কানাডার চেয়েও কম। ভারতের মোট জনসংখ্যার বিচারে শিখদের সংখ্যা মাত্র ১.৭ শতাংশ।
কানাডার সরকার গঠনে তাই শিখদের একটি বড় ভূমিকা রয়েছে। কানাডার রাজনীতিতেও তারা যথেষ্ট সক্রিয়। কানাডার হাউস অব কমন্সে ১৮ জন শিখ সাংসদ রয়েছেন, শতাংশের বিচারে যা ভারতের চেয়েও বেশি। তাই ট্রুডো বা কানাডার সব রাজনৈতিক দলই শিখদের নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে।
ভারতের নয়াদিল্লিতে এক যুবককে বেঁধে মারধর করার পর তার মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
পূর্ব দিল্লির সুন্দরনগরী এলাকায় বুধবার এই ঘটনা ঘটে বলে বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে হিন্দুস্তান টাইমস।
নিহতের পরিবার বলছে, 'হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের দেবতা গণেশের প্রসাদ চুরি করে খাওয়ার অভিযোগে ইসার আহমেদকে বেঁধে বেদম মারধর করা হয়। আর এই নির্যাতনে তার মৃত্যু হয়েছে।’
পুলিশ বলছে, এটি বিচ্ছিন্ন একটি ঘটনা। এতে সাম্প্রদায়িকতার কোনো ব্যাপার নেই।
এদিকে ২৬ বছর বয়সী ইসার আহমেদের মৃত্যতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। পুরো ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
উত্তর-পূর্ব দিল্লির পুলিশের ডেপুটি কমিশনার জয় তিরকে বলেন, 'এটি কোনো সাম্প্রদায়িক ঘটনা নয়। সংশ্লিষ্টরা দেখতে পান যে যুবকটি আশপাশে ঘুর ঘুর করছেন। তারা তাকে চোর সন্দেহে ধরেন। তারপর তাকে বেঁধে মারধর করা হয়েছে। ওই ঘটনায় জড়িতদের বেশ কয়েকজনকে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
ইসার গণেশের প্রসাদ চুরি করেছেন বা করতে গিয়েছিলেন, এমন কোনো তথ্য আছে কি না- এমন প্রশ্নে পুলিশ বলছে, মামলাটি ‘সন্দেহ বিষয়ক’।
পুলিশ জানিয়েছে, জেরার মুখে অভিযুক্তরা জানিয়েছেন, ইসার এলাকায় ঘোরাফেরা করছিলেন। তখন তাদের সন্দেহ হয়, ইসার গণেশের প্রসাদ চুরি করবেন। সেই সন্দেহের জেরেই তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
জেরার মুখে অভিযুক্তরা জানিয়েছেন, ইসারকে তারা প্রশ্ন করেন, কেন সেখানে ঘোরাফেরা করছেন তিনি।
পুলিশ বলছে, প্রশ্নের সঠিক জবাব ইসার দিতে পারেননি। কারণ তিনি মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন ছিলেন।
আরও পড়ুন:বিতর্কিত নাগোর্নো-কারাবাখ এলাকা আজারবাইজানের দখলে যাওয়ার পর থেকে অসংখ্য জাতিগত আর্মেনীয় ওই এলাকা ছেড়েছেন।
গত কয়েকদিনে এলাকাটি ছেড়ে যাওয়া মানুষের সংখ্যা এতই বেশি যে, তা মোট বাসিন্দাদের অর্ধেক বলে বৃহস্পতিবার জানিয়েছে সিএনএন।
হাজার হাজার আর্মেনিয়ান এ ছিটমহল ছেড়ে আর্মেনিয়ায় পাড়ি জমিয়েছেন। এখনও পরিবার নিয়ে এলাকা ছাড়ছে বহু মানুষ।
আর্মেনিয়ার সরকারি কর্মকর্তাদের মতে, আজারবাইজান ছিটমহলকে আর্মেনিয়ার সঙ্গে সংযোগকারী একমাত্র সড়ক থেকে ১০ মাসের অবরোধ তুলে নেয়ার পর বুধবার সকাল পর্যন্ত ১৭ হাজার শিশুসহ ৫০ হাজারের বেশি মানুষ পালিয়েছে।
এ এলাকায় এক লাখ ২০ হাজার জাতিগত আর্মেনিয়ানের বাস ছিল। আর্মেনিয়ার সরকার যুদ্ধের কারণে বাস্তুহারা মানুষকে স্থানান্তরের পরিকল্পনা ঘোষণা করার পর থেকেই তারা এলাকা ছাড়তে শুরু করেন।
আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ওই এলাকায় জাতিগত নিধন চলছে।
আজারবাইজান গত সপ্তাহে বলেছে, নাগর্নো-কারাবাখের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধার করা হয়েছে। আজারবাইজানের সীমানার মধ্যে অবস্থিত এলাকাটি কয়েক দশক ধরে নিজস্ব একটি সরকারের অধীনে স্বায়ত্তশাসিতভাবে পরিচালিত হয়েছে।
দেশটি বলছে, কেউ যদি আজারবাইজানীয় নাগরিকত্ব গ্রহণ করে তবে তারা এই অঞ্চলে থাকতে পারে।
তবে অনেকেই এই ঘোষণার পক্ষে মত না দিয়ে বরং বাড়ি ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। তাদের মতে, কেউই এ সিদ্ধান্ত মেনে নেবে না।
বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়, নাগোর্নো-কারাবাখ দক্ষিণ ককেসাস এলাকার একটি পাহাড়ি এলাকা। এটি আজারবাইজানের অংশ হিসেবে বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। তবে তিন দশক ধরে এটি জাতিগত আর্মেনিয়ানরা নিয়ন্ত্রণ করে আসছে।
এই ছিটমহলের প্রতি আর্মেনিয়া এবং তাদের মিত্র রাশিয়ার সমর্থন ছিল। বছরের পর বছর ধরে সেখানে শত শত রুশ সেনা ছিল।
গত সপ্তাহে আজারবাইজানের সেনারা আক্রমণ চালালে রাশিয়ার পাঁচজন শান্তিরক্ষী এবং ২০০ জন জাতিগত আর্মেনিয়ান এবং কয়েক ডজন আজারবানি সেনা নিহত হন।
আর্মেনয়িয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ান সাংবাদিকদের বলেন, বর্তমানে সেখানে এটাই চলছে এবং এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক, কারণ এ বিষয়ে আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে অনুরোধ জানানোর চেষ্টা করছি।
আজারবাইজান বলেছে, তারা জাতিগত আর্মেনিয়ানদেরকে ‘সমান নাগরিক’ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে চায়।
মানুষের ঘর-বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার কারণে আর্মেনিয়ার সীমান্তে যানবাহনের দীর্ঘ লাইন তৈরি হয়েছে।
আর্মেনিয়ার গোরিস শহরে যেসব শরণার্থীরা এসে আশ্রয় নিয়েছেন এমন কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলেছে বিবিসি। এই শহরটি কারাবাখের সীমান্তের কাছাকাছি অবস্থিত।
এক ব্যক্তি বলেন, আমি আমার সারা জীবন আমার মাতৃভূমির প্রতি উৎসর্গ করেছি। এভাবে পালিয়ে আসার চেয়ে তারা যদি আমাকে মেরে ফেলতো তাহলে বেশি ভালো হতো।
বিয়ে নিয়ে আগ্রহের কমতি নেই মানুষের, কোথাও কোথাও তো বছরের কোনো নির্দিষ্ট সময়ে বিয়ের ‘মৌসুমও’ হয়ে ওঠে কয়েকটি দিন। চীনেও আছে এমন এক সময়। তবে এবার সে মৌসুম উযদাপনে সাড়া মেলেনি।
বছরের সপ্তম মাসের সপ্তম দিনে ওক্সি ফেস্টিভল নামে এক উৎসব হয় চীনে। বিশ্ব ভালোবাসা দিবসের মতোই হয় এর আয়োজন। আয়োজনের দিনে অনেক তরুণ-তরুণী বসেন বিয়ের পিঁড়িতে। তবে এ বছরের আয়োজন উদযাপনে আয়োজকরা বরং ক্ষতির মুখেই পড়েছেন।
এর কারণ হিসেবে উঠে এসেছে, বিয়েতে আগ্রহ হারিয়েছেন চীনের বাসিন্দারা। তার চেয়ে বরং লিভ টুগেদার বা সিঙ্গেল থাকতে চান তারা। কেউ কেউ তো বলেই ফেলেছেন, বিয়ের আরেক নাম হলো মৃত্যু।
আল জাজিরা বলছে, গত ২২ আগস্ট ওক্সি ফেস্টিভলের দিনে সিচুয়ান প্রদেশের মিয়ানয়াং শহরের একটি বিবাহ নিবন্ধন অফিস বিবাহ নিবন্ধন সরাসরি সম্প্রচার করার সিদ্ধান্ত নেয়। তবে ওই দিন সে এলাকায় বিয়ে করতে আসেন খুব জুটিই।
শেষ পর্যন্ত অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচার করতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ। বিয়ে নিবন্ধন হলের অনুষ্ঠানের পরিবর্তে লাইভে দেখানো হয় শহরের মনোরম দৃশ্য।
এ ঘটনাটি নিয়ে চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে আলোচনা হচ্ছে। বিয়েতে অনাগ্রহের পেছনের কারণও বেরিয়ে আসছে অনেক।
বিয়েতে উদ্বুদ্ধ করতে সরকার নানা উৎসাহমূলক পদক্ষেপ নিলেও কয়েক বছর ধরে চীনে বিয়েতে আগ্রহ কমছে মানুষের।
এক হিসাবে দেখা গেছে, ২০১৩ সালে বার্ষিক প্রায় সাড়ে ১ কোটি ৩৫ লাখের মতো বিয়ে হয়েছে চীনে, অথচ গত বিয়ের বিয়ে হয়েছে প্রায় ৭০ লাখ।
এসব পরিসংখ্যান ইঙ্গিত করে, চীনের বাসিন্দারাও পরে বিয়ে করছেন। বিবাহবিচ্ছেদের হার বাড়ছে এবং সিঙ্গেল থাকতে চাওয়া মানুষের সংখ্যাও বাড়ছে।
চীনা তরুণরা মনে করছেন, বিয়ে তাদের আধুনিক জীবনের সঙ্গে বেমানান। সাংহাইয়ের বাসিন্দা বছর বয়সী ইউ ঝাং আল বলেছেন, ‘চীনে বিয়ে এক প্রকারের মৃত্যু।’
পেশায় ল্যাবরেটরি টেকনিশিয়ান এই যুবক বলেন, দুই বছর ধরে আমি আমার প্রেমিকার সঙ্গে এক সঙ্গে আছি। আমরা প্রায়ই বিয়ের কথা আলোচনা করেছি। তবে সবসময় একই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি- বিয়ে করার চিন্তা করলে দেখি সেটি আমাদের সুখের চেয়ে চাপই বেশি দেয়।
চীনের বিবাহযোগ্য অনেকে মনে করেন, দুটি পরিবারের এক হওয়ার পাশাপাশি বিয়ের মাধ্যমে একটি বাড়ি কিনে সংসারও শুরু করতে হয়। এই মুহূর্তে, এই তিনটি লক্ষ্য অবাস্তব বলে মনে হচ্ছে।
বিয়েতে আগ্রহ বাড়াতে প্রচারণা চালাচ্ছে চীন। এ লক্ষ্যে গত মে মাসে ২০ টিরও বেশি চীনা শহরে ঘোষণা করা নতুন পদক্ষেপ। ঝেজিয়াং প্রদেশের একটি কাউন্টি গত মাসে ঘোষণা করেছে, পাত্রীর বয়স ২৫ বা তার কম হলে তারা আর্থিক পুরস্কার পাবেন।
এ ছাড়া কর্মকর্তারা জনসাধারণকে ‘সঠিক বয়সে’ বিয়ে করতে এবং সন্তান ধারণের জন্য জনসাধারণকে উৎসাহিত করেছেন। সাম্প্রতিক টিভি শো এবং ফ্যাশন শোতে বিয়ের গুরুত্ব তুলে ধরা হচ্ছে।
গুয়াংজু শহরের জেসিকা ফু বিশ্বাস করেন, বিয়ের প্রতি যে মনোযোগ দেয়া হয়েছে তা দেশের জন্মহার বাড়ানোর সরকারের লক্ষ্যের সঙ্গে যুক্ত। তবে কোনো কিছুতেই সংকট কাটছে না।
অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অফ নিউ সাউথ ওয়েলসের চীনা ও এশিয়ান স্টাডিজের সিনিয়র লেকচারার প্যান ওয়াংয়ে মতে, ব্যক্তিগত পছন্দের আবির্ভাব চীনা সমাজে বিয়ের গতিপথ বদলে দিয়েছে।
তিনি বলেন, বিবাহিত জীবন আজ অনেকগুলি জীবনধারার বিকল্পগুলোর মধ্যে একটি মাত্র।
আরও পড়ুন:যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কুকুর আবারও কামড়ে সংবাদের শিরোনাম হয়েছে। এবার যে কুকুরটি এক কর্মীকে কামড়েছে, সেই কুকুরটি এর মধ্যদিয়ে এমন ঘটনা ঘটাল ১১তম বার।
সর্বশেষ সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের সিক্রেটে সার্ভিস এজেন্টের কর্মীকে বাইডেনের দুই বছর বয়সী জার্মান শেফার্ড কমান্ডার কামড়ে দিয়েছে বলে সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
সিক্রেট সার্ভিস এজেন্সির প্রধান অ্যান্টনি গুগলিয়েলমি মঙ্গলবার বিবৃতিতে বলেছেন, রাত 8টার দিকে একজন সিক্রেট সার্ভিস ইউনিফর্মড ডিভিশনের পুলিশ অফিসারকে কামড় দিয়েছে কমান্ডার। তাকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
আহত ওই কর্মীর অবস্থা এখন ভালো বলে জানিয়েছেন তিনি।
প্রতিবেদেন বলা হয়েছে, কমান্ডার হোয়াইট হাউসে এবং ডেলাওয়্যারে কমপক্ষে ১১টি কামড়ের ঘটনায় জড়িত। ২০২২ সালের নভেম্বরের এক ঘটনায় এই কুকুরের কামড়ে আহত একজন কর্মকর্তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।
গত জুলাইয়ে হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তারা বলেছিলেন, বাইডেন পরিবারের পোষা প্রাণীদের জন্য নতুন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এর আগে বাইডেন পরিবারের আরেক জার্মান শেফার্ড মেজরও হোয়াইট হাউসে কামড়ে দিয়েছিল বেশ কয়েকজনকে। প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে ডেলাওয়্যারে তার পৈতৃক বাড়িতে ছিল এই মেজর। সময়ের পরিক্রমায় বাইডেন প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর তিন বছর বয়সী কুকুরটিকে নিয়ে আসেন হোয়াইট হাউজে।
১৮ একরের এই কমপ্লেক্সে এসে বিচরণের বিশাল জায়গা পায় মেজর ও কমান্ডার। কিন্তু নতুন পরিবেশকে আপন করে নিতে পারেনি এই দুই প্রাণী। এর প্রমাণ মিলছে হোয়াইট হাউজের কর্মীদের কামড়ে দেয়ার ঘটনায়।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য